WBBSE Class 7 Sahityamela “সাহিত্য়মেলা” Answer (Bengali Medium) | একুশের কবিতা Chapter Answer

Class 7 Sahityamela

একুশের কবিতা

অধ্যায়  ৬

একুশের কবিতা

• কবি পরিচিতি

বাংলা প্রবন্ধ সাহিত্যের জগতে অত্যন্ত একটি উল্লেখযোগ্য নাম। হলো-আশরাফ সিদ্দিকী। তিনি প্রাবন্ধিক হিসেবে যেমন পরিচিত তেমনই কবিতা ও গল্প পরিচিত লেখার জন্য। লোকসাহিত্য-নিয়ে তাঁর অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ রয়েছে।

আশরাফ সিদ্দিকীর জন্ম ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে টাঙ্গাইলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে এম.এ পাস করেন। বাংলা ভাষার পাশাপাশি অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন উর্দু ভাষাতেও। মাতৃভাষার সমর্থনে যে আন্দোলন হয়েছিল, তিনি সেই আন্দোলনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন।

পাক্ষিক ‘মুকুল’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তাঁর রচিত কাব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘বিষকন্যা’, ‘উত্তর আকাশের তারা’, ‘কাগজের নৌকা’ প্রভৃতি।

• কবিতার বিষয়বস্তু

কবি আশরাফ সিদ্দিকী মদনমোহন তর্কালঙ্কারের লেখা ‘প্রভাত বর্ণন’ কবিতার পঙ্ক্তি ‘পাখি সব করে রব’ দিয়ে কবিতাটি শুরু করেছেন। ওই পক্তিগুলিকে কবি বলেছেন ‘সুর নয় স্মৃতির মধুভান্ডার…’। কবির হৃদয়াকাশে উদিত হয়েছে গ্রামের কত টুকরো টুকরো স্মৃতি; সেই কবির দেশের মাঠ-বন-নদী আর কবির মায়ের অর্থাৎ দেশমাতার মুখে মিশে থাকা জারি-সারি- ভাটিয়ালি-মুর্শিদির মতো কত সুরের প্রলেপ।

শুধু তাই নয়, সেই বিষাদময় দিনটির কথাও কবি ভোলেননি। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২১ শে ফেব্রুয়ারি বিন্নিধানের মাঠের পারে হঠাৎ গুলির শব্দ সঙ্গে ভাষা আন্দোলনের শরিক পাখি অর্থাৎ আন্দোলনকারীর গান শেষ না হতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে মাটিতে ঝরে পড়ে। আর এই শোকে সমগ্র দেশজুড়ে বিপ্লবীদের সমর্থনে যেন কালবৈশাখির ঝড় ওঠে। মাঠ, ঘাট, বাট, হাট, বন, মন, সমস্ত কিছুই কেঁপে ওঠে। মাতৃভাষাকে যাঁর ভালোবেসে আন্দোলন করেছিলেন পশ্চিমপাকিস্তানের পুলিশ বাহিনীর গুলিতে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। কবি তাঁদের কথা ‘একুশের কবিতা’ নামাঙ্কিত কবিতাটিতে স্মরণ করেছেন। ফলে এই কবিতাটি স্বাধীন বাংলাদেশ কীভাবে গঠিত হয়েছিল, তার নেপথ্য ইতিহাসকে মনে করিয়ে দিয়েছে।

• নামকরণের সার্থকতা

পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার উর্দুভাষাকে জোর করে চাপিয়ে দিয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের উপরে। পূর্ব পাকিস্তানের মাতৃভাষা ছিল বাংলা। ফলে দেশের মানুষ বাংলা ভাষাকে কখনও ত্যাগ করতে চায়নি। এই বিষয়কে সামনে রেখে দেখা যায়, পশ্চিম পাকিস্তানের পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। মারা যান আব্দুস সালাম, রফিক-উদ্দিন আহমেদ, সফিউর রহমান, আবুল বরকত এবং আব্দুল জব্বার। বলতে দ্বিধা নেই যে, শহিদের আত্মদানের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ নতুন রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়। ইতিহাসের পাতায় ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখ চিহ্নিত হয়েছে অমর একুশে নামে। সেই বিষয়কে মাথায় রেখে আলোচ্য কবিতার নামকরণ সার্থক হয়েছে।

সঠিক অর্থবিধান

রব- শব্দ, ধ্বনি। জারি-বাংলার মুসলমানি পল্লিসংগীত বিশেষ। পোহাইল-শেষ হল। সারি-মাঝি-মাল্লাদের গান বিশেষ। কানন- উদ্যান, বাগান। ভাটিয়ালি-সংগীতের রাগিণী বিশেষ। কুসুম কলি- পুষ্প কলিকা, ফুলের কুঁড়ি। মুর্শিদি বাস্তব বিষয়ক দেহতত্ত্বের গান। মন্ত্র-পবিত্র শব্দ বা বাক্য। গানের কলি-গানের চরণ বা পদ। কালবৈশাখী-চৈত্র-বৈশাখ মাসের বিকালের ঝড়বৃষ্টি। কথকতা-পাঠ বা ব্যাখ্যা। মিছিল-শোভাযাত্রা। রাখাল-গো-রক্ষক, গোরু চরানো ও তত্ত্বাবধান যার কাজ। বিন্নি ধান-জমা জলে জন্মানো এক প্রকার আউশ ধান, এই ধানের খই ভালো হয়। পাঠ- পঠন, অধ্যয়ন, পাঠ্য বিষয়।

হা তে ক ল মে

১. এই কবিতায় কিছু কিছু চন্দ্রবিন্দু-যুক্ত শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ‘কাঁপলো’ এবং ‘দাঁড়িয়েছেন’। প্রসঙ্গত দুটি শব্দই ক্রিয়া। চন্দ্রবিন্দু দিয়ে শুরু এমন পাঁচটি বাক্য লেখো। একটি করে দেওয়া হল, ‘হাঁটা’। রাস্তা দিয়ে দেখে হাঁটতে হয়।

১. বাঁটা-এখনও মায়েরা বাটনা বেঁটে রান্না করে।

২. খাঁটা-না খাঁটলে উন্নতি করা যায় না।

৩. ছোঁড়া-অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়া উচিত নয়।

৪. কাঁদা-অত্যন্ত দুঃখ পেলে মানুষ কাঁদে।

৫. ছাঁটা-অবশেষে ভাঙা ডাল ছেঁটে দেওয়া হলো।

২. গুনগুন: মৌমাছি যেভাবে ডানার একটানা আওয়াজ করে, তাকে

‘গুনগুন’ বলে। বাস্তব ধ্বনির অনুকরণে তৈরি হওয়া এই ধরনের শব্দকে বলে অনুকারী বা ধ্বন্যাত্মক শব্দ। নীচে কয়েকটি ধ্বন্যাত্মক শব্দ শিখে নিতে  পারবে 

মছিটা            বাসনগুলো ঝন ঝন করে ভেঙে গেল।         

হাওয়া            পড়ল কড় কড় শব্দ করে।

নদী               বন বন করে ঘুরছে

   ক                     খ

কাঁচের           সন সন করে বইছে। 

বাজ               পড়ল ধুপধাপ করে। 

পটকা             ফরফর করে ছিঁড়ে গেল। 

বৃষ্টি                   পড়ছিল ঝরঝর করে। 

কাগজটা           ভনভন করে উড়ছিল। 

কয়েকটা তাল    ফাটছিল দুমদাম করে।

উত্তর:

___________________________________________________________________________

৩. ‘আমার মায়ের গাওয়া কতনা গানের কলি’-এখানে ‘মায়ের গাওয়া’ শব্দবন্ধটি একটি বিশেষণের কাজ করছে। এরকম আরও অন্তত পাঁচটি তৈরি করো।-একটি করে দেওয়া হলো, ‘মায়ের দেওয়া মোটা কাপড়’।

____________________________________________________________________________

উত্তর :

___________________________________________________________________________

৪. নীচের বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণে ও বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে পরিবর্তন করে বাক্য রচনা করো।

___________________________________________________________________________

বিশেষ্য –  বিশেষণ –  বাক্য রচনা

সুর – সুরেলা – জারি গানের সুরেলা ছন্দ মানুষকে মোহিত  করে

দেশ – দেশীয় – দেশীয় দ্রব্যাদির মাধুর্য অতুলনীয়।

মাঠ – মেঠো – রাখাল মেঠো সুরে গান ধরেছে।

বন – বন্য – বন্য জীবজন্তুর অস্তিত্ব সংকটাপন্ন।

মিষ্টতা – মিষ্ট – তোমার কথার মধ্যে মিষ্টতা আনতে হবে।            

মুখর – মুখরিত – দেশের জয়গাথা সর্বত্র মুখরিত হচ্ছে।                                                                       

ইতিহাস – ঐতিহাসিক – মুর্শিদাবাদ একটি ঐতিহাসিক স্থান।

ফুল – ফুলেল  – ফুলেল তেল মাথায় দিয়ে মেয়েটি কাঁচা রাস্তা ধরে হেঁটেচলেছে।

৫  ‘রব’ শব্দটিকে একবার বিশেষ্য এবং একবার ক্রিয়া হিসাবে দুটি আলাদা বাক্যে ব্যবহার করে দেখাও।

১. রব উঠেছে অশিক্ষা তলিয়ে যাবে। (বিশেষ্য)

২. পাখিরা সুন্দর সুরে রব করছে। (ক্লিয়া)

_________________________________________________________________

৬. ‘কলি’, ‘সুর’, ‘পাল’ শব্দগুলিকে দুটি করে ভিন্ন অর্থে ব্যবহার করে আলাদা বাক্যে লেখো।

কলি- মনে পড়ে যায় আমার প্রথম গানের কলি। কুসুম কলির সুন্দর গন্ধ আছে। সুর-কোকিলের মিষ্টি সুর ভালো লাগে। সুর আর অসুরের চিরদিন বিবাদের সম্পর্ক।

পাল- এক পাল গোরু মাঠে চরছে। নৌকায় পাল থাকে।

৭. ‘মুখ’ শব্দটিকে পাঁচটি আলাদা অর্থে ব্যবহার করে পাঁচটি আলাদা বাক্য লেখো।

১. আমরা মুখের দ্বারা কথা বলি। (অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অর্থে)

২. গঙ্গোত্রী গঙ্গানদীর মুখ। (উৎস অর্থে)

৩. বাংলাভাষার জয়গাথায় চতুর্দিক মুখরিত। (প্রচারিত অর্থে)

৪. আমি কখনোই তাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারি না। (দিকে অর্থে)

৫. অজয় অন্যায় করে নতমুখে দাঁড়িয়ে রইল। (লজ্জিত অর্থে)

৮. প্রত্যয় নির্ণয় করো।

কথকতা- কথ-অক+তা প্রত্যয়।।

মুর্শিদি- মুর্শিদ+ই প্রত্যয়।

 মুখর – মুখ+র প্রত্যয়।

পোহাইল– প্র-ভা+ইল প্রত্যয়।

ভাটিয়ালি- ভাটিয়াল+ই প্রত্যয়।

৯. নিম্নরেখ অংশগুলির কারকবিভক্তি নির্ণয় করো।

৯.১ পাখি সব করে রব।

উত্তর:

৯.২ কাননে কুসুমকলি সকলি ফুটিল।

উত্তর:

৯.৩ তাইতো সহস্র পাখির কলতানে আজ দিগন্ত মুখর।

উত্তর:

৯.৪ তিনি বাংলা ভাষায় কথা বলতে বড়ো ভালোবাসেন।

উত্তর:

৯.৫ রাখাল গোরুর পাল লয়ে যায় মাঠে।

উত্তর:

১০ একটি-দুটি বাক্যে উত্তর দাও:

১০.১ ‘পাখি সব করে রব’-উদ্ধৃতাংশটি কার লেখা কোন্ কবিতার

অংশ? কবিতাটি তাঁর লেখা কোন বইতে রয়েছে?

উত্তর:

 ১০.২ এই পঙক্তিটি পাঠের সুরকে ‘মন্ত্রের মতো’ বলা হয়েছে কেন?

উত্তর:

১০.৩ এই সুরকে কেন ‘স্মৃতির মধুভাণ্ডার’ বলা হয়েছে? তা কবির

মনে কোন্ স্মৃতি জাগিয়ে তোলে ?***

উত্তর:

১০.৪ ‘সেই আমার দেশ-মাঠ-বন-নদী’-দুই বঙ্গ মিলিয়ে তিনটি অরণ্য ও পাঁচটি নদীর নাম লেখো।

উত্তর:

১০.৫ টীকা লেখো: জারি, সারি, ভাটিয়ালি, বিন্নি ধান, কথকতা,

রূপকথা, মুর্শিদি।***

জারি: পারসি ‘জারি’ অর্থাৎ শোকপালন এবং বাংলা ‘গান’ এর সমন্বয়ে ‘জারিগান’ কথাটির উৎপত্তি। জারিগানের অর্থ শোক সংগীত। কারবালার প্রান্তরে হজরত মহম্মদের দৌহিত্র হোসেনের এবং পরিবারের অন্যদের শোচনীয় মৃত্যুকে উপলক্ষ্য করে জারিগান রচিত হয়। সপ্তদশ শতাব্দীর সূচনা থেকেই জারিগান রচনার প্রমাণ পাওয়া যায়। মুর্শিদাবাদে এই গান এখনও সমানভাবেই প্রচলিত।

সারি: বাংলা লোকসংগীতের একটি অন্যতম শ্রেণি হল সারিগান। এই গানের বৈশিষ্ট্য হল- ১. মাঝি-মাল্লারা নৌকা করে যখন মাছ শিকারে যায়, বা পারাপারের

কাজ করে তখন তারা এই গান মনের আপন খেয়ালে গায়। 

২. এই গানের কোনো নির্দিষ্ট সুর বা তাল নেই।

* ভাটিয়ালি: বাংলা লোকসংগীতের অন্যতম জনপ্রিয় রূপ ভাটিয়ালি

গান। পূর্ববাংলার নীচু অংশ অর্থাৎ ভাটির দিকে নদনদী-প্লাবিত অঞ্চলেই ভাটিয়ালি গানের উদ্ভব ও বিকাশ। যে সব মাঝি মাল্লারা এই অঞ্চলে নৌকা চালায় তারাই এই গান গায়। গায়কের একক অন্তরের আশা-নিরাশা, প্রেমভাবনা এই গানের বিষয়। এর বিশেষত্ব হলো অন্যান্য লোক সংগীতের মতো সুর ধীরে ধীরে ওঠা নামা করে না। চড়া থেকে খাদে নেমে আসে আকস্মিকভাবে। কথা অপেক্ষা ভাটিয়ালি গানে সুরের প্রাধান্য দেখা যায়।

বিন্নিধান: বাংলাদেশের নীচু জমিতে, জমা জলে এই ধান চাষ

হয়। এটি বিশেষ একপ্রকার আউশ ধান। এই ধানের খইয়ের প্রশংসা খুব শোনা যায়। বিভিন্ন লোকছড়ার মধ্যে এই বিন্নিধানের খইয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়।

কথকতা: কথকতা হল বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের পাঠ ও ব্যাখ্যা। রামায়ণ, মহাভারত বা বিভিন্ন পুরাণ কাহিনির বিভিন্ন ঘটনা বা কাহিনির উদাহরণসহ পাঠ ও ব্যাখ্যা করেন কথক। কোনো বাড়িতে বিশেষ বিশেষ কিছু পার্বণ উপলক্ষ্যে কথকতার প্রচলন আছে। এছাড়া অনেক ব্রাহ্মণ বিভিন্ন তীর্থস্থানে এই কথকতা আশ্রয় করেই জীবিকা নির্বাহ করে।

রূপকথা: রূপকথা হলো ছেলে ভুলানো নানাকরম কাল্পনিক কাহিনি।যেখানে রাক্ষস, খোকোস, দৈত্য প্রভৃতির সঙ্গে রাজকুমার লড়াই করে

কোনো দূর দ্বীপে বন্দি রাজকুমারীকে উদ্ধার করে। এই রূপকথা আমাদের বাংলা লোকসাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। 

* মুর্শিদি: মুর্শিদি প্রধানত ইসলামীয় সাধনতত্ত্বের গান। তবে এই সাধনতত্ত্বে সহজিয়া সাধনতত্ত্বের প্রভাব আছে। বাস্তব ঘটনাকে অবলম্বন

করে দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান, যা মুর্শিদ অর্থাৎ গুরু পরম্পরার মধ্য দিয়ে বহমান থাকে।

১০.৬ তোমার জানা দুটি পৃথক লোকসংগীতের ধারার নাম লেখো।

উত্তর:

 ১০.৭ ‘ইতিহাস থমকে দাঁড়িয়ে লিখে নিল সব’ ‘সব’ বলতে এখানে

কী কী বোঝান হয়েছে?***

উত্তর:

১০.৮ ‘তাই তো সহস্র পাখির কলতানে আজ দিগন্ত মুখর’- ‘সহস্র

পাখি’ কাদের বলা হয়েছে?

উত্তর:

_____________________________________

১১. ব্যাখ্যা করো।

____________________________________

১১.১ ‘কয়েকটি পাখির গান শেষ না হতেই তারা ঝরে গেলো পড়ে

গেল মাটিতে’।***

উৎস:

১১.২ ‘সেই শোকে কালবৈশাখীর ঝড় উঠলো আকাশে।’

উৎস:

১১.৩ ‘কথায় কথায় কথকতা কতো রূপকথা’।

উৎস: কবি ও প্রাবন্ধিক আশরাফ সিদ্দিকীর লেখা ‘একুশের কবিতা’

থেকে এই উক্তিটি সংগৃহীত হয়েছে।

প্রসঙ্গ: কবি বাংলাভাষার স্বরূপ বলতে গিয়ে উক্ত প্রসঙ্গটি করেছেন।

 ব্যাখ্যা: রূপকথা হলো লোককথারই একটি অংশ। বাংলাভাষার মধ্যে যে ছড়িয়ে রয়েছে কত ধরনের রূপকথা তার বলে শেষ করা যায় না। মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে পূর্ববাংলা তথা বাংলাদেশের বিপ্লবীরা যে আত্মত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা রূপকথার মতোই শোনায়। সেই কথাটি বলতে গিয়ে কবি উপরের উদ্ধৃতিটি করেছেন।

১১.৪ ‘তাই তো আজ দ্যাখো এ মিছিলে এসে দাঁড়িয়েছেন আমার

উৎস : আশরাফ সিদ্দিকীর লেখা ‘একুশের কবিতা’ থেকে আলোচ্য

অংশটি নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গ: বর্তমানে বা ২১ ফেব্রুয়ারির পরবর্তী সময়ের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে কবি উক্ত মন্তব্যটি করেছেন।

ব্যাখ্যা: ১৯৫২-র ২১ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সময়ে যখন পূর্ববঙ্গে বাংলাভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় তখন বাংলার সমস্ত জনগণ প্রাণ খুলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। তারা বাংলাভাষায় নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারে।

কবির মনে হয়েছে, সেই আনন্দে রাস্তায় তখন দেশমাতাও মিছিলে এসে দাঁড়িয়েছে।

১২. আট-দশটি বাক্যে উত্তর দাও:

১২.১ এই কবিতায় ‘পাখি’ শব্দের ব্যবহার কতখানি সার্থক হয়েছে, তা কবিতার বিভিন্ন 

পড়ক্তি উদ্ধৃত করে আলোচনা করো 

(Open-Ended Question)

উত্তর:

১২.২ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

উত্তর:

_______________________________________________________________________

১৩. শুধু মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়বদ্ধতার প্রকাশ নয়, এই

________________________________________________________________________

কবিতায় রয়েছে আবহমানের ও অমরতার প্রতি বিশ্বাস’-পাঠ্য কবিতাটি অবলম্বনে উপরের উদ্ধৃত্তিটি আলোচনা করো।

উত্তর:

১৪. মনে করো তুমি এমন কোনো জায়গায় দীর্ঘদিনের জন্য যেতে বাধ্য হয়েছো যেখানে কেউ তোমার মাতৃভাষা বোঝেন না। নিজের ভাষায় কথা বলতে না পারার যন্ত্রণা জানিয়ে বন্ধু একটি চিঠি লেখো

(Open-Ended Question)

দীপক ঘোষ

নিউ ইয়র্ক

আমেরিকা

প্রিয় বন্ধু দিব্যেন্দু,

তুই কেমন আছিস? অনেকদিন তোর কোনো খবর পাইনি। তুহয়তো জানিস না আমি এখন আর খিদিরপুরে থাকি না। আমি এখন আমেরিকার একটি শহরে থাকি। বাবার হঠাৎ করে একটা চাকরি হয়ে গেল আমেরিকায়। তাই মাস তিনেক আমরা সপরিবারে এখানে চলে আসি।

কিন্তু এখানে আসার পর আমার মন ভালো নেই। এখানে আমার কোনো বন্ধু, আত্মীয় কেউ নেই। সব থেকে বড়ো কথা এখানে আমার মাতৃভাষায় কেউ কথা বলে না। আমার ভাষা কেউ বোঝে না। আমি যন্ত্রণায় ছটফট করি। বারবার বাংলাভাষার কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে বাংলায় পড়া ছোটো ছোটো ছড়া, কবিতা, গল্পের কথা। অনেক সময় তাই আমি নিজে নিজেই বাংলা আওড়াতে থাকি।

বুকের মধ্যে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে খুঁজে ফিরি কোনো বাঙালিকে। বাংলাভাষা যে কত মধুর তা আমি এখন অনুভব করতে পারছি। তাই বর্তমানে বুকে অসহ্য ব্যথা নিয়ে বাংলাভাষায় তোকে চিঠি লিখছি। আশা করি তুই আমার অবস্থা বুঝতে পারছিস। আর কিছু লিখছি না। তুই অবশ্যই চিঠি দিস।

ইতি তোর বন্ধু

 দীপক ঘোষ

দিব্যেন্দু পালধি

ডাকবাংলো মোড়

 মেদিনীপুর

পশ্চিমবঙ্গ

১৫. তোমার বিদ্যালয়ে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ কীভাবে পালিত হয়ে থাকে, তা জানিয়ে প্রিয় বন্ধুকে চিঠি লেখো।***

(Open-Ended Question)

প্রিয় বান্ধবী শিল্পী,

ভাষার জন্যে মানুষ কতখানি আত্মত্যাগ করতে পারে তার প্রমাণ দিয়ে গিয়েছেন পূর্ববঙ্গ ও আসামের বঙ্গভাষী মানুষ। সেই কবে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন ‘মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধসম’। সুতরাং ভাষা আমাদের মা, মায়ের অস্তিত্বের সঙ্গে আমাদের প্রাণের বন্ধন। ১৯৫২, ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্ববাংলার মানুষ পশ্চিমপাকিস্তানের বিরুদ্ধে সসম্মানে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। বিনিময়ে প্রাণ দিয়েও মাতৃভাষাকে বাঁচিয়ে তাঁরা প্রমাণ করেছিলেন-আমার ভাষা, আমার মা। আমরা প্রতি বছর আমাদের বিদ্যালয়ে মাতৃভাষা দিবস পালন করি। শহিদ বেদীতে ফুলের মালা দিয়ে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রতিবছর ভাষাপ্রেমী, সাহিত্যিক, গুণীজন বাংলাভাষা নিয়ে মনমুগ্ধকর আলোচনা করেন। তোর স্কুলেও আশা রাখি এমনটি হয়ে থাকে। ভালো থাকিস।

ইতি তোর বন্ধু 

মৌমিতা সিনহা

শিল্পী সিনহা

গ্রাম ও পোস্ট: খাঁটুরা

জেলা: উত্তর চব্বিশ পরগনা

সংযোজিত প্রশ্ন

একটি বাক্যে উত্তর দাও: 

____________________________________________________________

১. “মিশে আছে আমার মায়ের মুখ।”-‘মা’ কে? তিনি কোথায়

মিশে আছেন?***ইও _______________________________________________________________

উত্তর:

২. ‘তারা ঝরে গেল।’-‘তারা’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে?

‘তারা’ ঝরে গেল কেন?***

উত্তর:

৩. ‘কত না গানের কলি!’ গানের কলি কার মুখে শোভা পেত?

উত্তর:

৪. দিগন্ত কীসে মুখর হয়ে উঠেছে বলে কবি মনে করেন?

উত্তর:

৫. “যিনি এখনো এ মিছিলে”-মিছিলে এসে কে দাঁড়িয়েছেন?

উত্তর:

৬. কোথায় গুলির আওয়াজ শোনা গিয়েছিল?

উত্তর: ।

৭. “পড়ে গেল মাটিতে”-কারা মাটিতে পড়ে গেল?

  • উত্তর:

সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও:

___________________________________________________________________________১. “সেই শোকে কালবৈশাখীর ঝড় উঠল আকাশে”- কোন্ শোকের কথা বলা হয়েছে? ‘কালবৈশাখীর ঝড়’ কীভাবে আকাশে উঠেছিল?***

_________________________________________________________________________

উত্তর:

২. ‘একুশের কবিতা’ রচনার প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।

উত্তর: