WBBSE Class 6 Bangla Chapter 13 Solution | Sahityamela “সাহিত্যমেলা” Bengali Medium

Class 6 Chapter 13 Solution

ফাঁকি

Very Short Question Answer

1)বাড়ি করার জন্যে কত টাকা দরে জমি কেনা হয়েছিল? 

উত্তর:বাড়ি করার জন্য আটশো টাকা গুষ্ঠ দরে জমি কেনা হয়েছিল।

2)গোপালের বাবা কোথায় কলমির গাছ করেছিল?

উত্তর: গোপালের বাবা বিরিবাটির বাগানে কলমির গাছ করেছিল।

3)কীসে করে আমের চারা এসেছিল?

উত্তর:ছোটো একটি হাঁড়ির মধ্যে করে আমের চারা এসেছিল।

4)আমগাছ রক্ষণের জন্যে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল? 

উত্তর:আমগাছ রক্ষণের জন্যে কঞ্চি দিয়ে বেড়া দেওয়া হল।

5)গোপালের বাড়ির নিশানা ঠিক করা হয় কী দিয়ে?

উত্তর: গোপালের বাড়ির নিশানা ঠিক করা হয় আমগাছ দিয়ে।

6)পিঁপড়ে মারার জন্য কী ব্যবহার করা হয়েছিল?

উত্তর: পিঁপড়ে মারার জন্য ডিডিটি ব্যবহার করা হয়েছিল।

7)র খুন্টুনি দিয়ে আম পাড়া হবে কেন?

উত্তর:গাছ থেকে আম নীচে পড়লে থেঁতলে যাবে, সেই ভয়ে খুন্টুনি দিয়ে পাড়ার কথা বলা হয়েছে।

8) আমগাছে কোন্ কোন্ পাখি এসে বসে?

উত্তর: আমগাছে কাক, বেনেবউ, কালোপেঁচা প্রভৃতি পাখি এসে বসে।

9)খবরের কাগজে কী ছাপা হয়েছিল?

উত্তর:খবরের কাগজে ছাপা হয়েছিল কটকে অর্ধরাত্রে ভীষণ ঝড়- বৃষ্টির ফলে, শহরের ভিতরে পুরীঘাটে আম গাছ উপড়ে পড়েছে।

10)কোন্ ঝড় পুরীঘাটের আমগাছ ফেলার পরাক্রম দেখিয়েছিল?

উত্তর:আষাঢ়ের ঝড় পুরীঘাটের আম গাছ ফেলার পরাক্রম দেখিয়েছিল।

11)ফল ছাড়া আমগাছ আর কী কী কাজে লাগে?

উত্তর:আমগাছের আঠা, ছাল নানারকম ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। কচিপাতা ডালসমেত পূজার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তা ছাড়া আমের আঁটি দিয়ে ভেঁপু তৈরি হয়।

12)পুজো, বিবাহবাড়ি-সব কাজে গোপালের কাছে কীসের অনুরোধ আসে?

উত্তর: শহরে সব জায়গায় আমগাছ পাওয়া যায় না। তাই সব কাজে গোপালবাবুর কাছে আমের পাতা, আমের ডাল পুজো বা অনুষ্ঠানবাড়ির ইত্যাদির জন্য অনুরোধ আসে।

13) সকালে সকলের মুখে উদ্বেগ কেন?

উত্তর: সকালে সবাই ঘুম থেকে উঠে দেখে, চারদিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন। ফলে ঠান্ডা বাতাসে মটরদানার মতো আমের বোেল ঝরে পড়ছে এবং আগুন লাগানো পিঁপড়েগুলি সব বোল খেয়ে ফেলছে।

14)’ট্রেঞ্চ’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: ‘ট্রেঞ্চ’ কথার অর্থ হল গর্ত বা সুড়ঙ্গ বা নালা। গল্পে সরকারের লোকেরা বোমার ভয়ে আমগাছের গোড়া পর্যন্ত নালা কেটে গিয়েছিল।

15)কটক কোন্ নদীর তীরে অবস্থিত? ওড়িশার আরও একটি নদীর নাম লেখো।
উত্তর: কটক মহানদীর তীরে অবস্থিত। ওড়িশার আরও একটি নদী হল-কাঠজোড়ি।

Short Question Answer

1)”একটু জমি খালি রাখা যাক”- প্রস্তাবটি কে দিয়েছিলেন? কেন তিনি এমন প্রস্তাব দিয়েছিলেন?

উত্তর: প্রস্তাবটি দিয়েছিলেন, রাজকিশোর পট্টনায়কের লেখা ‘ফাঁকি’ গল্পের কিশোর গোপালের বাবা।

উত্তর: তিনি সেই ফাঁকা অংশে বাগান করতে চেয়েছিলেন। কারণ সেখানকার প্রকৃতি ছিল মরুভূমির মতো, চারদিকে ছিল পাথরের মতো শুকনো মাটি। সেখানে বাগান করলে একটু শান্তি ও ছায়ার আশ্রয় পাওয়া যাবে-এই কথা ভেবেই তিনি এমন প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

2)“গোপাল মুখ তুলে সন্দিগ্ধভাবে বাবার মুখের দিকে তাকাল।” -তার এই সন্দেহের কারণ কী?

উত্তর:  গোপালের বাবা গোপালকে জানান যে, এক টুকরো জমির সেই বাগানে তিনি আমগাছ লাগাতে চান। তিনি নিজের হাতে কলম বানিয়েছিলেন। কলমটি ছিল ভাগলপুর থেকে আনা ভালো জাতের ল্যাংড়া আমের চারা। বাবার তৈরি করা কলমে কেমন গাছ হবে, সেই সন্দেহ মনে উঁকি দেওয়াতেই গোপাল সন্ধিগ্ধভাবে বাবার দিকে তাকায়।

3)”তুই করবি বাগান!”-বাবা কেন এমন মন্তব্য করেন?

উত্তর:  গোপাল নিজের হাতে জল তুলে স্নানটুকুও নিজে করতে পারত না। অথচ বাগান করতে গেলে নিয়মমতো তার পরিচর্যা করা প্রয়োজন। গোপালের পক্ষে এ কাজ কখনই সম্ভব নয় ভেবে তার বাবা এমন মন্তব্য করেন।

4) “গাছটাকে আর দু-হাত ভিতরে লাগালে কত ভালো হত”-কোন্ গাছ? কেন বক্তার এমন মনে হয়েছে?

উত্তর: রাজকিশোর পট্টনায়ক-এর লেখা ‘ফাঁকি’ গল্পে গোপালের বাবার বাগানে বসানো আমগাছটির কথা বোঝানো হয়েছে।

উত্তর: বক্তা এখানে গোপাল। তার এমন মনে হওয়ার কারণ হল-আমগাছটি যখন বড়ো হবে, তখন তার ডালপালা পাঁচিল ডিঙিয়ে বাইরে চলে যাবে। রাস্তার ছেলেরাও হয়তো উৎপাত করবে। এমনকি ওই গাছের জন্যে ঝগড়াও হবে। বাইরের ঝগড়া বাড়ির মানুষকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলবে। এই কারণেই গোপাল ভেবেছিল, গাছটিকে আরও দু-হাত ভিতরে লাগাতে পারলে ভালো হত।

 5)আমগাছটি কীভাবে গোপালদের বাড়ির নিশানা হয়ে উঠেছিল?

উত্তর: কেউ গোপালের থেকে তার বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইলে সে বাড়ির চিহ্নিতকরণের নিশানা হিসেবে বোঝাত যে, কাঠজোড়ি নদীর ধার বরাবর পুরীঘাট পুলিশের ফাঁড়ির পশ্চিমে যেখানে পাঁচিলের মধ্যে আম গাছ দেখা যাবে, ঠিক সেইখানে তাদের বাড়ি। এইভাবে আমগাছটি গোপালদের বাড়ির নিশানা হয়ে উঠেছিল।

6) গোপালের বাবা প্রথমে কেন বাগানে ফুলগাছ লাগাতে চাননি?

উত্তর: গোপালের বাবা প্রথমে বাগানে ফুলগাছ লাগাতে চাননি, কারণ সেখানকার বেলে মাটিতে জল দেওয়ার সুবিধাও ছিল না। তা ছাড়া গোপাল যে গাছে জল দিতে পারবে-এ ব্যাপারে তাঁর বাবার ভরসাও ছিল না। কেন-না, গোপাল কোনোদিন নিজের হাতে জল তুলে স্নানটুকুও করত না।

 7)আমগাছে কেন ঠেকো দিতে হয়েছিল?

উত্তর: যুদ্ধের সময় উড়োজাহাজ থেকে যদি বোমা পড়ে, তবে তার হাত থেকে বাঁচানোর জন্যে সরকারের লোক একেবারে আমগাছের গোড়া পর্যন্ত ট্রেঞ্চ (গর্ত) খুঁড়েছিল। সেই কারণে, আমগাছটি পুব দিকে হেলে গিয়েছিল। ফলে গাছটি দুর্বল হয়ে যাতে পড়ে না-যায়, সেইজন্যে আমগাছে ঠেকো দিতে হয়েছিল।

8)গাছটিকে উইয়ে খেয়ে ফেলল কীভাবে?

উত্তর:গোপাল ডিডিটি দিয়ে আমগাছের সব পিঁপড়ে মেরে ফেলেছিল। তার ফলে উইনিধনকারী সব পিঁপড়ে মারা গেল, কিন্তু সেই সুযোগে উইপোকা ভিতর থেকে গাছটিকে খেয়ে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল।

9)গল্প অনুসারে কটকের খবরের কাগজে আমগাছটিকে নিয়ে কী সংবাদ বেরিয়েছিল?

উত্তর: কটকের খবরের কাগজে আমগাছটিকে নিয়ে নিম্নোক্ত সংবাদটি বেরিয়েছিল-

“কটকে অর্ধরাত্রে ভীষণ ঝড়-বৃষ্টি। শহরের ভিতরে পুরীঘাটে আম গাছ উপড়ে পড়েছে।”

Long Question Answer

1)গাছটি কীভাবে তাদের সাহায্য করেছিল বুঝিয়ে লেখো। 

উত্তর: মানুষের জীবনে নানাভাবেই গাছ উপকার করে থাকে।  আলোচ্য ‘ফাঁকি’ গল্পের আমগাছটি নানাভাবে গোপাল ও তার পরিবারকে সাহায্য করেছিল। প্রথমত, আমগাছটি তিন বছরে একবার ভালো ফলন দিত। সমস্ত আম যত্ন করে ঘরে তুলে গোনাগুনতি দু-চারটে করে আম বিলোনো হত আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে। গাছটি এভাবে পরিবারের একজন হয়ে উঠেছিল। অন্যদিকে, কাঠবেড়ালি আর বাদুড়রাও সে গাছের আম খেত। এরই পাশাপাশি গাছটি গোপালবাবুদের বাড়ির নিশানা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে অতিথিদের ঠিকানা পেতে সাহায্য করত। বাইরের লোককে পথ দেখানোর জন্যে বাইরের বিজলি আলো জ্বালিয়ে দিলে গাছ তা আড়াল করে দিত। শুধু তাই নয়, ওই গাছই বাড়ির ভিতরের কথা লুকিয়ে রাখত বাইরের লোকের কাছে। বছরের পর বছর সে ফল, পাতা দিত, আশ্রয়ও দিত। তার ডালে শিশুরাও দোলনা টাঙিয়ে দোল খেত।

2)”ঠিক বন্ধুর মতই গাছ সব কথা লুকিয়ে রেখেছে।” -গাছটি কীভাবে গোপালের ‘বন্ধু’ হয়ে উঠেছিল? কোন্ সব কথা সে লুকিয়ে রেখেছিল?

উত্তর: রাজকিশোর পট্টনায়কের ‘ফাঁকি’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র আমগাছ ঠিক বন্ধুর মতো সব কথা লুকিয়ে রেখেছিল। তাদের সাধের আমগাছটি রাস্তার ওপর এমনভাবে ঝুঁকে পড়েছিল যে, যেতে-আসতে মাথায় লাগত। বৃষ্টির সময় পাতার জলে ভিজে যেত পথিকের গা। তাই মায়ের নিষেধ অগ্রাহ্য করে গোপাল সেই গাছের কয়েকটি সরু ডাল চুপিসারে কেটে ফেলেছিল। এরপরই কাটা ডালগুলিকে একেবারে বাইরে ফেলে দিয়ে এসেছিল যাতে তার মা টের না-পায়। গাছটিও তার ক্ষতচিহ্ন সব পাতার আড়ালে লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিল গোপালকে বকুনির হাত থেকে বাঁচাবার জন্যে। গোপালের জন্যেও গাছটির গভীর মায়া ছিল। বন্ধু যেমন বিপদে-আপদে বন্ধুর সঙ্গে থাকে, গাছটিও চেয়েছিল যাতে গোপাল মায়ের কাছে সে বকুনি না-খায়। এইভাবে গাছটি গোপালের ‘বন্ধু’ হয়ে উঠেছিল।

বাড়ির সদস্যদের পরিচর্যায় আমগাছটি ক্রমশ বাড়ির একটি অঙ্গ হয়ে উঠেছিল। বাইরের লোককে পথ দেখানোর জন্যে বাইরের বিজলি আলো জ্বালিয়ে রাখলে, গাছ তা আড়াল করে দিত। আবার বাইরের লোকের কাছে ভিতরের কথা লুকিয়েও

রাখত। এভাবেই বাইরের লোককে নিজের আড়ালের ওপাশে রাখত। এমনকি সে তার শরীরে উই ধরার যন্ত্রণা চেপে রেখে ভিতরে ভিতরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে গিয়েছিল তাও হয়েছিল সকলের অজান্তেই।

3)বিভিন্ন ঋতুতে আম গাছটির যে-ছবি গল্পে ফুটে উঠেছে, তা আলোচনা করো।

উত্তর: রাজকিশোর পট্টনায়ক-এর ‘ফাঁকি’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিল একটি আমগাছ। আমগাছটিকে বাড়ির বাগানে লাগানোর পর থেকে বিভিন্ন ঋতুতে আমগাছকে কেন্দ্র করে নানা ছবি গল্পে উদ্ভাসিত হয়েছে। শিশু আম গাছটিকে যেদিন বসানো হয়, তার পরের দিনই সকালে দেখা যায়, গাছটিকে সতেজ থাকতে। গ্রীষ্মে নদীর ধারের গরম বাতাস সে বুক দিয়ে ঠেকায়। কাঠজোড়া নদীর দিক থেকে ছুটে আসা গরম বালির ঝাপটা নিজের দেহ দিয়ে সে আটকে রাখে। গ্রীষ্মকালে আমগাছটি এমন শীতল ছায়াময় আশ্রয় জোগান দেয়, যেন মনে হয় তার তলায় বসে ইচ্ছেমতো বই লেখা যায়। শীতকালে যখন খুব কুয়াশা প্রকৃতিকে ঢেকে ফেলে, সেই কুয়াশার কারণে মটর দানার মতো আমের বোল তার শরীর থেকে ঝরে পড়ে। গ্রীষ্মকালে আবার আমগাছটি নিজের শাখাপ্রশাখায় আম ভরিয়ে নিয়ে উপহার দেওয়ার প্রতীক্ষা করে। যুদ্ধের সময় ট্রেঞ্চ খোড়ার কারণে আমগাছটি কিছুটা কমজোরি হয়ে পুবদিকে হেলে পড়ে। আবার বর্ষার সময় বৃষ্টিস্নাত আমগাছটি বিন্দু বিন্দু জলকণা তার পাতার শরীর থেকে পথচারীদের গায়ে-মাথায় ঝরিয়ে দেয়। এমনকি, রাতের বেলাতেও বিজলিবাতির আলোক ধারণ করে পথিককে পথ দেখানোর ভূমিকা নেয় সেই গাছ। ঝড়বৃষ্টির সময় সে ঝরিয়ে দেয় ফুল, ফল, কুঁড়ি ও পাতা। পাখি, পিঁপড়ে, কাঠবিড়ালি-মানবেতর প্রাণীদের সে সময়ে-অসময়ে আশ্রয় দেয়। নানা ঋতুতে আম গাছটির উপকারী নানা ছবিই এভাবে গল্পে ফুটে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *