WBBSE Class 10 Geography Chapter 2 Solution | Bengali Medium

Class 10 Geography Solution

বায়ুমণ্ডল

1. MCQs Question Answer

1. বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ হল- 

a) 20.94 শতাংশ    ✔

b) 20.27 শতাংশ

 c) 20.86 শতাংশ

d) 20.98 শতাংশ

2. বায়ুমণ্ডলের যে গ্যাসটির পরিমাণ সর্বাধিক,তা হল- 

a) অক্সিজেন 

b) নাইট্রোজেন   ✔

c) কার্বন ডাইঅক্সাইড

d) আর্গন  

3. বায়ুমণ্ডলে ওজোন গ্যাস___ স্তরে ঘনীভূত অবস্থায় থাকে। 

a) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার   ✔

b) মেসোস্ফিয়ার 

c) ট্রপোস্ফিয়ার 

d)  আয়নোস্ফিয়ার

4. ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্যবর্তী সীমাকে বলে- 

a) ট্রপোপজ    ✔

b) স্ট্যাটোপজ 

c) মেসোপজ 

d)আয়নোপজ

5. ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে বায়ুমণ্ডল প্রায় কত কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত?

a) 1000 কিমি

b) 5000 কিমি 

c) 10000 কিমি    ✔

d)100000 কিমি

6. মেসোস্ফিয়ার স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উয়তা-

a) বাড়ে

b) কমে    ✔

c) একই থাকে 

d) এগুলির কোনোটিই নয়

7. ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে প্রায় কত কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত স্তরটিকে হোমোস্ফিয়ার বলা হয়?

a) 60 কিলোমিটার

b) 90 কিলোমিটার   ✔

c) 120 কিলোমিটার 

d) 110 কিলোমিটার

৪. বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত কোন্ উপাদানের জন্য আকাশ নীল দেখায়?

a) ওজোন 

b) অক্সিজেন

c) ধূলিকণা 

d) নাইট্রোজেন   ✔

9. বৈপরীত্য উত্তাপ লক্ষ করা যায় বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে, সেটি হল- 

a) আয়নোস্ফিয়ার 

b)  ট্রপোস্ফিয়ার   ✔

c) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

d) মেসোস্ফিয়ার 

10. সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে-

a)  ওজোন   ✔

b) আর্গন 

c) জেনন

d) ক্রিপ্টন  

11. স্বাভাবিক উন্নতা হ্রাসের হার পরিলক্ষিত হয়- 

a) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে 

b) থার্মোস্ফিয়ারে 

c)  ট্রপোস্ফিয়ারে   ✔

d)  মেসোস্ফিয়ারে

12. বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেনের শতকরা পরিমাণ হল-

a) 20.19 শতাংশ 

b) 79.09 শতাংশ 

c) 78.08 শতাংশ   ✔

d) 20.50 শতাংশ

13. একটি গ্রিনহাউস গ্যাসের উদাহরণ হল- 

a) অক্সিজেন

b) নাইট্রোজেন 

c) কার্বন ডাইঅক্সাইড   ✔

d) হাইড্রোজেন

14. বায়ুমন্ডলের শীতলতম স্তর- 

a) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার 

b) মেসোস্ফিয়ার  

c) ট্রপোস্ফিয়ার 

d) থার্মোস্ফিয়ার

15. বায়ুমন্ডলের যে স্তরে দৈনিক আবহাওয়া পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে তার নাম- 

a) ট্রপোস্ফিয়ার    ✔

b) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার 

c) এক্সোস্ফিয়ার 

d) আয়নোস্ফিয়ার 

16. বায়ুমন্ডলের যে স্তরে মহাকাশ থেকে আগত উল্কাপিণ্ড পুড়ে ছাই হয়ে যায়, তার নাম- 

a) ট্রপোস্ফিয়ার 

b) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার 

c) মেসোস্ফিয়ার   ✔

d) আয়নোস্ফিয়ার  

17. অতিবেগুনি রশ্মি শোষিত হয়- 

a) মেসোস্ফিয়ারে 

b) ট্রপোস্ফিয়ারে 

c) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে   ✔

d) আয়নোস্ফিয়ারে

18. বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে অরোরা বা মেরুজ্যোতি দেখা যায়- 

a) আয়নোস্ফিয়ারে   ✔

b) ম্যাগনেটোস্ফিয়ারে 

c) এক্সোস্ফিয়ারে

d) মেসোস্ফিয়ারে  

19. বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে ওপরে যে স্তর রয়েছে, তা হল- 

a) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার   ✔

b) আয়নোস্ফিয়ার

c) এক্সোস্ফিয়ার

d) ট্রপোস্ফিয়ার

20. ওজোন গহ্বর তৈরি হয়েছে-

a) নিরক্ষীয় অঞ্চলে 

b) উপক্রান্তীয় অঞ্চলে 

c) কুমেরু অঞ্চলে   ✔

d) ক্রান্তীয় অঞ্চলে

21. বেতার বা রেডিয়ো তরঙ্গ কোন্ স্তর থেকে ফিরে আসে?-

a) আয়নোস্ফিয়ার   ✔

b) এক্সোস্ফিয়ার

c) ট্রপোস্ফিয়ার

d) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

22. বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ-

a) 0.03 শতাংশ   ✔

b) 0.01 শতাংশ 

c) 0.02 শতাংশ

d) 0.33 শতাংশ

23. বায়ুমন্ডলের নীচের স্তরে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ 

a) কম 

b) সবচেয়ে বেশি   ✔

c) সবচেয়ে কম 

d) বেশি

24. হেটেরোস্ফিয়ারের উচ্চতম স্তরটি হল-

a) হাইড্রোজেন স্তর   ✔

b) হিলিয়াম স্তর

c) পারমাণবিক অক্সিজেন স্তর 

d) আণবিক নাইট্রোজেন স্তর 

25. ওজোন ধ্বংসকারী মূল গ্যাস হল-

a) CFC   ✔ 

b) CO₂

c) N₂ 

d) S2  

26. হেটেরোস্ফিয়ারের নিম্নতম স্তরটি হল-

a) হিলিয়াম স্তর 

b) হাইড্রোজেন স্তর 

c) আণবিক নাইট্রোজেন স্তর   ✔

d) পারমাণবিক অক্সিজেন স্তর 

27. বায়ুমণ্ডলের গ্যাসীয় উপাদানগুলির মধ্যে পরিমাণে দ্বিতীয়- 

a) কার্বন ডাইঅক্সাইড 

b)  অক্সিজেন   ✔

c)  হিলিয়াম 

d) হাইড্রোজেন  

28. ওজোন গহ্বর সেখানে সৃষ্টি হয় যেখানে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোনের ঘনত্ব থাকে-

a) 220 ডবসন ইউনিটের কম

b) 220 ডবসন ইউনিট

c) 200 ডবসন ইউনিটের কম   ✔

d) 200 ডবসন ইউনিট 

29. বায়ুমণ্ডলের একটি কঠিন উপাদান হল- 

a) ওজোন 

b) লবণকণা   ✔

c) শিশির 

d)মেঘ  

30. ওজোন গহ্বরের অস্তিত্ব প্রথম ধরা পড়ে

a) অস্ট্রেলিয়ায় 

b) আফ্রিকায় 

c) আলজিরিয়ায় 

d) অ্যান্টার্কটিকায়    ✔

31. ‘প্রাকৃতিক সৌরপর্দা’ বলা হয়- 

a) ট্রপোস্ফিয়ারকে 

b) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারকে 

c) ওজোনোস্ফিয়ারকে   ✔

d) মেসোস্ফিয়ারকে 

32. ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব তুলনায় বেশি হয় যে অঞ্চলে-

a) নিরক্ষীয় 

b) ক্রান্তীয়

c) নাতিশীতোয়

d) মেরু অঞ্চলে   ✔

33. পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা হল-

a) 10°সে

b) 15°সে

c) 20°সে

d) 5°সে

34. পৃথিবীর অ্যালবেডোর পরিমাণ প্রায়

a) 32%

b) 33%

c) 34%

d) 38%

35. যে পরিমাণ সৌরশক্তি বায়ুমণ্ডল ও ভূপৃষ্ঠ সরাসরি মহাশূন্যে ফিরিয়ে দেয়, তা হল 

a) 30%

b) 32%

64%

c) 35%

d) 35%

36. নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর দিকে যে সমোয়রেখাকে উল্লমণ্ডলের সীমারেখা ধরা হয়, তা হল-

a) 27°সে

b) 30°সে

c) 32°সে 

d) 35°সে

37. পৃথিবী আগত সূর্যরশ্মির প্রত্যক্ষভাবে শোষণ করে 

a) 14 ভাগ

b) 47 ভাগ

c) 23 ভাগ

d) 5 ভাগ

38. পৃথিবীর সৌর ধ্রুবকের পরিমাণ প্রতি মিনিটে 

a) 19.5 ক্যালোরি/বর্গসেমি  

b) 1.94 ক্যালোরি/বর্গসেমি 

c)  2.5 ক্যালোরি/বর্গসেমি

d) 20.5 ক্যালোরি/বর্গসেমি 

39. সমগ্র সৌরশক্তির মধ্যে কার্যকরী সৌরশক্তি হল-

a) 60% 

b) 65% 

c) 56% 

d) 76%

40. গ্রিনহাউস এফেক্ট কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন

a) জে. ফোরিয়ার

b) ডেভিস

c) কোপেন

d) ফারমেন 

41. সারাদিনে সবচেয়ে কম উয়তা থাকে

a) দুপুরে 

b) বিকালে

c) সন্ধ্যাবেলা

d) ভোরবেলা

42. সূর্যের আলো লম্বভাবে পড়লে তাপমাত্রা 

a) বেড়ে যায়

b) কমে যায় 

c) একই থাকে 

d) এগুলির কোনোটিই নয়

 43. ভূপৃষ্ঠের সমান উয়তাবিশিষ্ট স্থানগুলিকে যুক্ত করে যে রেখা, তাকে বলে- 

a) সমোন্নতিরেখা

b) সমোন্নরেখা

c) সমপ্রেষরেখা 

d) সমআর্দ্ররেখা

44. সমোয়রেখাগুলির বক্রতা বেশি-

a) উত্তর গোলার্ধে 

b) দক্ষিণ গোলার্ধে 

c) পূর্ব গোলার্ধে 

d) পশ্চিম গোলার্ধে

45. ভূপৃষ্ঠ সূর্য থেকে সর্বাধিক তাপ শোষণ করে

a) সকালে 

b) দুপুরে

c)  বিকেলে 

d) সন্ধ্যায়

46. বার্ষিক উন্নতার সর্বনিম্ন প্রসর পরিলক্ষিত হয় যে জলবায়ু অঞ্চলে 

a) নিরক্ষীয়

b) মৌসুমি 

c) উয় মরু  

d) ভূমধ্যসাগরীয়

47. বৈপরীত্য উত্তাপের জন্য ভোরবেলায় উপত্যকাগুলি 

a) ধোঁয়ায় ঢেকে যায়

b) কুয়াশায় ঢেকে যায়

c) বরফে ঢেকে যায় 

d) মেঘে ঢেকে যায়

48. দিল্লির তুলনায় দার্জিলিঙের তাপমাত্রা 

a) যথেষ্ট বেশি 

b) বেশ কম

c) একই থাকে

d) এগুলির কোনোটিই নয়

49. সূর্যরশ্মি পৃথিবীতে আসে- 

a) বৃহৎ তরঙ্গরূপে

b) ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে

c) মাঝারি তরঙ্গরূপে 

d) এগুলির কোনোটিই নয়

50. সমোয়রেখাগুলি বিস্তৃত থাকে- 

a) উত্তর-দক্ষিণে

b) পূর্ব-পশ্চিমে

c) দক্ষিণ-পশ্চিমে 

d) উত্তর-পূর্বে

51. প্রতি 1000 মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর উয়তা হ্রাসের হার

a) 4.6°সে 

b) 10°সে 

c) 6.4°সে 

d) 3.9°সে

52. প্রদত্ত কোন্টি বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার পদ্ধতি নয়? 

a) পরিবহণ 

b) অধঃক্ষেপণ 

c) বিকিরণ 

d)পরিচলন

53. বৈপরীত্য উন্নতা সৃষ্টি হয়- 

a) সমভূমিতে 

b) মরুভূমি অঞ্চলে 

c) পার্বত্য অঞ্চলে 

d) উপকূলীয় অঞ্চলে

54. সূর্যের মোট শক্তির 200 কোটি ভাগের কত ভাগ পৃথিবীতে এসে পৌঁছোয়?-

a) 1 ভাগ

b) 2 ভাগ 

c) 3 ভাগ  

d) 41 ভাগ

55. সূর্য থেকে পৃথিবীর দিকে আসা রশ্মির যে অংশ পৃথিবীকে উত্তপ্ত না করে পুনরায় মহাশূন্যে ফেরত যায়, তাকে কী বলে? 

a) অ্যালবেডো 

b) ইনসোলেশন 

c) বিকিরণ 

d) পরিচলন

56. বায়ুমণ্ডল সর্বাধিক উন্ন হয় যে পদ্ধতিতে সেটি হল- 

a) পরিচলন 

b) পরিবহণ 

c) বিকিরণ

d) অ্যাডভেকশন 

57. গ্রিনল্যান্ডের অ্যালবেডোর পরিমাণ

a)  35% 

b) 50% 

c) 60% 

d) 75% 

58. সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ- 

a) 1013.2 মিলিবার

b) 1013.5 মিলিবার 

c) 1013.8 মিলিবার 

d) 1013.9 মিলিবার  

59. ভূপৃষ্ঠে কয়টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয় রয়েছে?

a) তিনটি 

b) চারটি 

c) পাঁচটি 

d) সাতটি

60. অশ্ব অক্ষাংশ অঞ্চলটি দেখা যায়- 

a) 20° – 30° উ. অক্ষাংশে 

b)  25° – 35° উ. ও দ. অক্ষাংশে

c) 35° – 45° দ . অক্ষাংশে

d) 40°-50° দ. অক্ষাংশে

61. মেরুবৃত্ত প্রদেশে বিরাজ করে 

a) উচ্চচাপ 

b) নিম্নচাপ 

c) চাপহীন অবস্থা 

d) এগুলির কোনোটিই নয়

62. জলীয় বাষ্পপূর্ণ আর্দ্র বায়ুর চাপ শুষ্ক বায়ুর তুলনায় 

a) কম হয় 

b) বেশি হয় 

c) একই হয় 

d) মাঝারি হয়

63. বিমানে যে বায়ুচাপ মাপক যন্ত্র থাকে, তার নাম- 

a) অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার 

 b) ফর্টিন-এর ব্যারোমিটার

c) ব্যারোগ্রাফ 

d) সাধারণ ব্যারোমিটার  

64. নিরক্ষরেখা বরাবর বিরাজ করে- 

a) নিম্নচাপ 

b) উচ্চচাপ 

c) সমচাপ 

d) এগুলির কোনোটিই নয়

65. ডোলড্রাম সৃষ্টি হয়-

a)  নিরক্ষীয় মণ্ডলে 

b) কর্কটীয় মণ্ডলে 

c) সুমেরুবৃত্তীয় মণ্ডলে 

d) মকরীয় মন্ডলে

66. নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপের প্রধান কারণ- 

a) পৃথিবীর আবর্তন

b)  অধিক আর্দ্রতা 

c) অধিক উন্নতা 

d) পৃথিবীর বৃহত্তম পরিধি 

67. কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়টি বিস্তৃত- 

a) 25  – 35 উ. অক্ষাংশে 

b) 60°-65° দ. অক্ষাংশে 

c) 25° – 35° দ. অক্ষাংশে 

d) 60° – 65° উ. অক্ষাংশে

68. বায়ুচাপের একক হল- 

a) মিলিবার 

b) মিলিমিটার 

c) মিলিগ্রাম 

d) মিটার

69. ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুচাপ 

a) বাড়ে 

b) কমে 

c) একই থাকে 

d) কোনোটিই নয়

70. উচ্চচাপ বলয়টি বিস্তৃত- 

a) নিরক্ষীয় অঞ্চলে 

b) সুমেরুবৃত্ত অঞ্চলে 

c) কর্কটীয় অঞ্চলে 

d) কুমেরুবৃত্ত অঞ্চলে

72. চিনসাগরে বিধ্বংসী ঝড়কে বলে- 

a) হ্যারিকেন 

b) সাইক্লোন 

c) টাইফুন 

d) উইলি উইলি 

73. বায়ুচাপ বলয়ের সীমানা পরিবর্তন হওয়ার কারণ- 

a) পৃথিবীর আবর্তন 

b) সূর্যের আপাতগতির পরিবর্তন

c) বায়ুপ্রবাহের তারতম্য 

d) অনুসূর অপসূর

74. কোরিওলিস বল সবথেকে বেশি অনুভূত হয়-

a)  নিরক্ষরেখায় 

b) মধ্য অক্ষাংশে 

c) ক্রান্তীয়রেখায় 

d) মেরুতে

75. বায়ুর শক্তিমাত্রা নির্ণায়ক স্কেল হল

a)  বিউফোর্ট স্কেল

b)  রিখটার স্কেল 

c) ভার্নিয়ার স্কেল 

d) মার্কালি স্কেল

78. বায়ুচাপ মানচিত্রে সমচাপ রেখাগুলি যত কাছাকাছি বায়ুচাপ ঢাল- 

a) তত কমে 

b) তত বাড়ে 

c) একই থাকে 

d) মৃদু  হয় 

79. পৃথিবীর বড়ো বড়ো মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে- 

a) আয়ন বায়ুর গতিপথের পশ্চিমে

b)  মেরু বায়ুর প্রবাহপথে                                           

c)  পশ্চিমা বায়ুর পথে

d)   লু-এর পথে 

80. ITCZ বলা হয়- 

a) ক্রান্তীয় অঞ্চলকে 

b) উপক্রান্তীয় অঞ্চলকে

c) নিরক্ষীয় অঞ্চলকে

d)  মেরু অঞ্চলকে               

81. সমচাপরেখার পার্থক্যকে বলে- 

a) বায়ুচাপ কক্ষ 

b) বায়ুচাপ

c) সমচাপ অঞ্চল

d) বায়ুচাপের ঢাল

2. Very Short Question Answer

1. বায়ুমণ্ডলের উর্ধ্বসীমা কত?

▶ প্রায় 10000 কিমি

2. নিরক্ষীয় অঞ্চলে ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চতা কত?

▶ 16-18 কিমি

3. মেরু অঞ্চলে ট্রপোস্ফিয়ার কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত?

▶ 8-9 কিমি পর্যন্ত

4. বায়ুমন্ডলের হেটেরোস্ফিয়ারে সবচেয়ে ওপরে কোন্ গ্যাসের স্তর রয়েছে?

▶ হাইড্রোজেন গ্যাসের

5. ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব কোন্ এককে মাপা হয়?

▶ ডবসন এককে

6. বিশুদ্ধ বায়ু কেমন হয়?

▶ বর্ণ ও গন্ধহীন হয়

7. বৃষ্টিপাত ঘটার জন্য বায়ুমণ্ডলের কোন্ উপাদান খুব দরকারি?

▶ জলীয় বাষ্প ও কঠিন কণা

৪. বায়ুমণ্ডলের দুটি নিষ্ক্রিয় গ্যাসের নাম লেখো।

▶ আর্গন ও নিয়ন

9. জেট বিমানগুলি কোন্ স্তরের মধ্য দিয়ে উড়ে যায়?

অথবা, বায়ুমন্ডলের কোন্ স্তরে জেট বিমান যাতায়াত করে?

▶ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

10. কোন্ স্তরকে ‘পৃথিবীর ছাতা’ বলা হয়?

▶ ওজোনস্তরকে

11. বায়ুমণ্ডলের কোন্ গ্যাসের প্রভাবে লোহায় মরচে ধরে?

▶ অক্সিজেন গ্যাসের

12. মেসোস্ফিয়ারের সর্বাধিক উচ্চতা কত?

▶ ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে প্রায় ৪০ কিমি পর্যন্ত

13. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে তাপমাত্রা খুব দ্রুত বেড়ে যায়?

▶ থার্মোস্ফিয়ার

14. ট্রপোস্ফিয়ারে ল্যাপস রেট কত?

▶ প্রতি 1000 মিটার উচ্চতায় 6.4° সে

15. ওজোনস্তরকে নষ্ট করছে এমন দুটি গ্যাসের নাম লেখো।

▶ ক্লোরোফ্লুরোকার্বন এবং নাইট্রাস অক্সাইড

16. বর্তমানে কোথায় ওজোনস্তরের ক্ষয়জনিত বিপদ সবথেকে বেশি?

▶ অ্যান্টার্কটিকায়

17. ওজোনস্তরের ক্ষয় হলে মূলত কী ঘটবে?

▶ অতিবেগুনি রশ্মি ভূপৃষ্ঠে এসে পড়বে, ফলে জীবকূলের মারাত্মক ক্ষতি হবে ও বিশ্ব উন্নায়ন ঘটবে

18. ম্যাগনেটোপজ অন্য কী নামে পরিচিত?

▶ ভ্যান অ্যালেন বিকিরণ বলয়

19. ওজনস্তরটির ঘনত্ব কোথায় সবচেয়ে বেশি রয়েছে?

▶ 20-40 কিমি উচ্চতায়

20. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে মেরুজ্যোতির সৃষ্টি হয়?

▶ আয়নোস্ফিয়ার স্তরে

21. রাসায়নিক গঠন অনুসারে বায়ুমণ্ডলকে কী কী স্তরে ভাগ করা যায়?

▶ হোমোস্ফিয়ার এবং হেটেরোস্ফিয়ার স্তরে

22. লা নিনা শব্দের অর্থ কী?

▶ ছোট্ট মেয়ে

23. যে সৌরশক্তি পৃথিবীর দিকে আসে, তাকে কী বলে?

▶ ইনসোলেশন

24. কোথায় একটানা ছয় মাস দিন ও রাত্রি হয়?

▶ উত্তরমেরুতে ও দক্ষিণমেরুতে

25. বায়ুর উয়তার স্বাভাবিক হ্রাসের হার কত?

► প্রতি 1000 মিটার উচ্চতায় 6.4 deg C7

26. কোথায় সারাবছর তাপমাত্রা বেশি থাকে?

▶ নিরক্ষীয় অঞ্চলে

27. দক্ষিণ গোলার্ধে পর্বতের কোন্ ঢাল বেশি উয় থাকে?

▶ উত্তর ঢাল

28. এল নিনো কথার অর্থ কী?

▶ শিশু খ্রিস্ট

29. হিমমণ্ডলের গড় উন্নতা কত?

▶ 0 deg সে-এর কম

30. পার্বত্য উপত্যকায় কোন্ সময়ে বৈপরীত্য উত্তাপ পরিলক্ষিত হয়?

▶ ভোরবেলা

31. দুই ক্রান্তীয় রেখার মধ্যবর্তী তাপমণ্ডলকে কী বলে?

▶ উয়মণ্ডল

32.ফারেনহাইট স্কেলে জলের স্ফুটনাঙ্ক কত?

▶ 212°ফা

33. ফারেনহাইট স্কেলে জলের হিমাঙ্ক কত?

▶ 32 °ফা

34. 1°সেন্টিগ্রেড কত ডিগ্রি ফারেনহাইটের সমান?

▶ 33.8° ফারেনহাইট

35. জলাভূমি থেকে কী ধরনের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়?

▶ মিথেন

36. এসি মেশিন, ফ্রিজ থেকে কোন্ ধরনের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়?

▶ ক্লোরোফ্লুরোকার্বন

37. উয় নাতিশীতোয়মণ্ডলে বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?

▶ বিশ্ব উন্নায়ন

38. পেরু, ইকুয়েডরে প্রবল বৃষ্টির কারণ কী?

 ▶ এল নিনো

39. উয়তার প্রসর কী?

▶ সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য

40. বিশ্ব উয়ায়নের জন্য দায়ী গ্রিনহাউস গ্যাসের যে-কোনো দুটির নাম লেখো।

▶ কার্বন ডাইঅক্সাইড ও মিথেন

41. কোন্ পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডল সর্বাধিক উয় হয়?

▶ পরিচলন পদ্ধতিতে

42. INSOLATION কী?

▶ পৃথিবীতে আগত সৌরশক্তি বা Incoming Solar Radiation

43. পার্থিব বিকিরণের শতকরা হার কত?

▶ 65%

44. বায়ুর চাপ নির্দেশক রেখাগুলিকে কী বলে?

▶ সমপ্রেষরেখা/সমচাপরেখা

45. কোন্ অক্ষাংশকে ‘অশ্ব অক্ষাংশ’ বলে?

▶ উভয় গোলার্ধে 25°-35° অক্ষরেখার মধ্যবর্তী অংশকে

46. 0°-5° অক্ষাংশের মধ্যে কী ধরনের বায়ুচাপ বিরাজ করে?

▶ নিম্নচাপ

47. বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম কী?

▶ সাইক্লোন

48. বায়ুচাপ মাপার একক কী?

▶ মিলিবার

49. ব্যারোমিটার কে আবিষ্কার করেন?

► টরিসেলি

50. স্থলবায়ু কখন প্রবাহিত হয়? 

► রাতের বেলা

51. সমুদ্রবায়ু কখন প্রবাহিত হয়?

▶ দিনের বেলা

52. কোন্ সময় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়?

▶ গ্রীষ্ম ঋতুতে

53. ফেরেলের সূত্র অনুযায়ী বায়ু দক্ষিণ গোলার্ধে কোন্ দিকে প্রবাহিত হয়?

▶ বামদিকে

54. কোন্ যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুপ্রবাহের দিনির্ণয় করা হয়?

▶ বাতপতাকার সাহায্যে

55. পৃথিবীর কোন্ অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ সবচেয়ে বেশি?

▶ 40°-60° দক্ষিণ অক্ষাংশে

56. বিউফোর্ট স্কেলে কী পরিমাপ করা যায়?

▶ বায়ুপ্রবাহের শক্তির মাত্রা

57. গর্জনশীল চল্লিশা কী?

► দক্ষিণ গোলার্ধে 40° অক্ষরেখা

58. মৌসুমি বায়ু কোন্ ধরনের বায়ুপ্রবাহ?

▶ সাময়িক বায়ু

59. বায়ুর গতিবেগ পরিমাপের এককের নাম কী?

▶ নট

60. একটি নিয়ত বায়ুর নাম লেখো।

▶ পশ্চিমা বায়ু

61. একটি আকস্মিক বায়ুর নাম লেখো।

▶ ঘূর্ণবাত

62. সমুদ্রবায়ুর বেগ কখন বৃদ্ধি পায়? 

▶ সন্ধ্যাবেলায়

63. ভারতের একটি স্থানীয় বায়ুর নাম লেখো।

▶ লু

64. একটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম লেখো।

▶ টাইফুন

65. ফেরেলের সূত্রটি কোন্ সালে আবিষ্কৃত হয়?

▶ 1855 সালে

67. বাইস ব্যালটের সূত্রটি কোন্ সালে আবিষ্কৃত হয়?

▶ 1857 সালে

68. বায়ুর অনুভূমিক স্রোত পরিলক্ষিত হয় না কোন্ অঞ্চলে?

▶ নিরক্ষীয় অঞ্চলে (শান্তবলয়ে)/ক্রান্তীয় শান্তবলয়ে

69. পৃথিবীর অধিকাংশ উয় মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে কোথায়?

▶ ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে

70. উত্তর গোলার্ধে বায়ুচাপ কক্ষ বেশি সৃষ্টি হয়েছে কেন?

▶ স্থলভাগ বেশি বলে

71. পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের নাম লেখো।

► টর্নেডো

72. সমপ্রেষরেখা কী দেখায়?

▶ সমান বায়ুচাপবিশিষ্ট স্থানসমূহ

73. একটি অত্যাধুনিক বায়ুচাপ মাপার যন্ত্রের নাম করো।

▶ ব্যারোগ্রাফ

74. পাহাড়ে খাবার ভালো সিদ্ধ হয় না কেন?

▶ বায়ুর চাপ কম বলে

75. পৃথিবীর আবর্তনের জন্য কোন্ বলের সৃষ্টি হয়?

▶ কোরিওলিস বলের

76. আল্পস পর্বতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত উয় বায়ুর নাম কী?

►ফন

77. একটি ঋতুভিত্তিক সাময়িক বায়ুর উদাহরণ দাও।

▶ মৌসুমি বায়ু

78. শীতকালে ভারতের ওপর দিয়ে কোন্ জেট বায়ু প্রবাহিত হয়।

▶ উপক্রান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়ু

79. বর্ষাকালে ভারতের ওপর দিয়ে কোন্ জেট বায়ু প্রবাহিত হয়?

▶ ক্রান্তীয় বা পুবালি জেট বায়ু

3. Short Question Answer

1. বায়ুমণ্ডল বলতে কী বোঝ?

উত্তর :ধারণা: পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 10000 কিমি উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত যে অদৃশ্য গ্যাসীয় আবরণ পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে, সেই গ্যাসীয় আবরণকে বলা হয় বায়ুমণ্ডল।

উপাদান: বায়ুমণ্ডল নাইট্রোজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, অক্সিজেন, হিলিয়াম, নিয়ন, জেনন, ক্রিপটন, ওজোন প্রভৃতি গ্যাস, জলীয় বাষ্প এবং এরোসল বা বিভিন্ন ধরনের কণার একটি যান্ত্রিক মিশ্রণ।

2 .বায়ুমণ্ডলের ঊর্ধ্বসীমা বা বিস্তৃতি কত দূর?

উত্তর :বায়ুমণ্ডলের বিস্তৃতি: বিজ্ঞানীদের মতে, বায়ুমন্ডলের ঊর্ধ্বসীমা ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে প্রায় 10000 কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে অত উঁচু পর্যন্ত বিস্তৃত থাকলেও বায়ুমণ্ডলের মোট ভরের শতকরা প্রায় 97 ভাগ ভূপৃষ্ঠ থেকে 29 কিমির মধ্যে থাকে। কারণ এই অংশে মাধ্যাকর্ষণের টান – বেশি এবং ঊর্ধ্বাকাশের বায়ুমণ্ডলের চাপ এসে পড়ে। ফলে এই অংশে বায়ুর ঘনত্ব বেড়ে যায়।

3. বায়ুমণ্ডলের উপাদানসমূহ কী?

উত্তর: বায়ুমণ্ডলের উপাদানসমূহ: বায়ুমণ্ডলে তিন ধরনের উপাদান আছে 1)গ্যাসীয় উপাদান, জলীয় বাষ্প এবং ও) ধূলিকণা।

বায়ুমণ্ডলে যেসব গ্যাসীয় উপাদান আছে সেগুলির মধ্যে নাইট্রোজেন (শতকরা 78.08 ভাগ) এবং অক্সিজেন (শতকরা 20.94 ভাগ) প্রধান। এই দুটি গ্যাসীয় উপাদান ছাড়া বায়ুমণ্ডলে খুব অল্প মাত্রায় আর্গন (শতকরা 0.93 ভাগ), কার্বন ডাইঅক্সাইড (শতকরা 0.033 ভাগ), হিলিয়াম, হাইড্রোজেন, ক্রিপটন, মিথেন, নিয়ন, ওজোন, জেনন প্রভৃতি গ্যাসীয় উপাদান আছে। এ ছাড়া জলীয় বাষ্প, সামান্য ধূলিকণা, লবণের কণা, উল্কাভস্ম, ধাতবকণা প্রভৃতি বায়ুমণ্ডলে ভাসমান অবস্থায় থাকে।

4. এরোসল কী?

উত্তর :সংজ্ঞা: বায়ুতে ভাসমান বিভিন্ন প্রকার ধূলিকণা, কয়লার কণা, লবণকণা, জৈব পদার্থের কণা প্রভৃতিকে এককথায় এরোসল বলে। গঠন: সাধারণত আগ্নেয়গিরির উৎক্ষিপ্ত ছাই, উল্কার ধ্বংসাবশেষ, কলকারখানার পোড়া ছাই ও ধোঁয়া, গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া, মরুভূমির ধুলোবালি, সমুদ্রোপকূলের লবণ, ফুলের রেণু প্রভৃতি সূক্ষ্ম কণা হিসেবে বায়ুতে মিশে এই এরোসল সৃষ্টি করে।

5. বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের গুরুত্ব লেখো।

উত্তর: বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের গুরুত্ব: ① অধঃক্ষেপণে: বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প আছে বলেই মেঘ, বৃষ্টি, কুয়াশা, শিলাবৃষ্টি, তুষার প্রভৃতি সৃষ্টি হয়। ② উয়তা নিয়ন্ত্রণে: জলীয় বাষ্প তাপশোষণ করে বায়ুমণ্ডলের উন্নতা নিয়ন্ত্রণ করে।3) আবহাওয়ার পরিবর্তনে: ঊর্ধ্বাকাশে জলীয় বাষ্পের ঘনীভবনে উৎপন্ন লীনতাপে আবহাওয়া পরিবর্তিত হয়। ④ জীবনের অস্তিত্ব রক্ষায়: জলীয় বাষ্প তথা জল ছাড়া পৃথিবীতে জীবনের কোনো অস্তিত্বই থাকত না।

6. হোমোস্ফিয়ার বা সমমণ্ডল কী? 

উত্তর: সংজ্ঞা: ইংরেজি শব্দ হোমোস্ফিয়ারের বাংলা প্রতিশব্দ সমমণ্ডল। ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে প্রায় 90 কিমি পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে বিভিন্ন উপাদান প্রায় সম-অনুপাতে থাকে, সেই স্তরকে সমমণ্ডল বলে। বৈশিষ্ট্য: ① বায়ুমণ্ডলের প্রায় 99% গ্যাসীয় উপাদান এই স্তরে থাকে। ② এই স্তরে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, আর্গন, হিলিয়াম প্রভৃতি বিভিন্ন গ্যাসের অনুপাত প্রায় একই ধরনের থাকে।

7. নিম্ন বায়ুমণ্ডল বলতে কী বোঝ?

উত্তর ধারণা: ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 90 কিমি উচ্চতা পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের গ্যাসীয় উপাদানের অনুপাত প্রায় একই থাকে। এই উচ্চতা পর্যন্ত বায়ুস্তর নিম্ন বায়ুমণ্ডল নামে পরিচিত। 

বৈশিষ্ট্য: ① বায়ুর ঘনত্ব: এখানে পৃথিবীর – মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টান বেশি বলে বায়ুর ঘনত্ব সবথেকে বেশি। ② বায়ুমণ্ডলের ভর: পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মোট ভরের প্রায় 97 ভাগ ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 29 কিমি উচ্চতার মধ্যে অবস্থান করে।

8. হাইড্রোজেন স্তর বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ধারণা: ভূপৃষ্ঠের ওপরে বায়ুমন্ডলের ঊর্ধ্বস্তরে 3500 কিমি থেকে 10000 কিমি পর্যন্ত অঞ্চলটি প্রধানত হাইড্রোজেন পরমাণু দিয়ে গঠিত। তাই এই স্তরকে হাইড্রোজেন স্তর বলে। বৈশিষ্ট্য: এই স্তর থেকে যত ওপরে ওঠা যায় ততই এই স্তর পাতলা হতে থাকে এবং চাপ ক্রমশ কমতে থাকে।

9. ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমণ্ডল কী?

উত্তর: ধারণা: বায়ুমন্ডলের একেবারে নীচের স্তরের যে অংশটিতে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে তাপমাত্রা কমতে থাকে, সেই স্তরটি ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমণ্ডল নামে পরিচিত।

 বিস্তৃতি: এই স্তরের বিস্তৃতি নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় 16-18 কিমি এবং মেরু অঞ্চলে প্রায় 8-9 কিমি। 

বৈশিষ্ট্য: ① উয়তা: সাধারণভাবে দেখা যায়, এই স্তরে প্রতি 1000 মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে  6.4°সে হারে উন্নতা কমে। ② বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ: বায়ুমণ্ডলের এই অংশে বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান, জলীয় বাষ্প, ধূলিকণা ইত্যাদি যথেষ্ট পরিমাণে থাকে এবং বায়ুপ্রবাহ, মেঘ, ঝড়, বজ্রপাত প্রভৃতি এই স্তরেই সৃষ্টি হয়। এজন্য এই স্তরের আর-এক নাম ক্ষুব্ধমণ্ডল।

10. ট্রপোপজ কাকে বলে? 

উত্তর :সংজ্ঞা: বায়ুমণ্ডলের একেবারে নীচের স্তরের নাম ট্রপোস্ফিয়ার। এই স্তরের ঊর্ধ্বসীমায় (নিরক্ষরেখার ওপর প্রায় 16-18 কিমি উচ্চতায় এবং মেরু অঞ্চলের ওপর প্রায় 8-9 কিমি উচ্চতায়) যেখানে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাপমাত্রা কমেও না বা বাড়েও না অর্থাৎ প্রায় ধ্রুবক থাকে (হিমাঙ্কের নীচে-55° সে), তাকে ট্রপোপজ বলা হয়।

বিস্তৃতি: ট্রপোস্ফিয়ারের ওপর । ট্রপোপজের বিস্তৃতি প্রায় আড়াই-তিন কিলোমিটার। 

বৈশিষ্ট্য: ① উন্নতা: এই স্তরের উয়তা নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায়-৪০° সে, আর মধ্য অক্ষাংশের উন্নতা-58° সে হয়ে থাকে। ② জেট বায়ু : প্রবল গতিবেগসম্পন্ন জেট বায়ু এই স্তরের মধ্য দিয়েই প্রবাহিত হয়।

11. ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চতা কত?

উত্তর : ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চতা: বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে নীচের স্তর ট্রপোস্ফিয়ার। এই স্তরটির উচ্চতা কিন্তু সব জায়গায় সমান নয়। নিরক্ষীয় অঞ্চলে এর উচ্চতা 16-18 কিমি, কিন্তু মেরু অঞ্চলে এর উচ্চতা 8-9 কিমি। সুতরাং ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমা নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে মেরু অঞ্চলের দিকে ঢালু।

12. উয়তা হ্রাসের স্বাভাবিক হার কাকে বলে?

 উত্তর : সংজ্ঞা: সূর্যতাপে প্রথমে ভূপৃষ্ঠ উয় হয় এবং তারপর ওই ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপে বায়ুমণ্ডল উন্ন হয়। এজন্য ভূপৃষ্ঠ থেকে ক্রমশ ওপরের দিকে অর্থাৎ উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উয়তা হ্রাস পায়। বায়ুমণ্ডলের একেবারে – নীচের অংশ অর্থাৎ ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে উচ্চতা বাড়ার সাথে উন্নতা হ্রাসের এই হার প্রতি কিমিতে 6.4°সে উন্নতা কমতে থাকে। একে স্বাভাবিক উন্নতা হ্রাসের হার বলে।

13. পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তরের বিনাশ ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়?

উত্তর: ওজোনস্তরের বিনাশ ঠেকানোর উপায়: রেফ্রিজারেটর, বডি স্প্রে, এয়ারকন্ডিশনার, প্রসাধনী দ্রব্য, কীটনাশক স্প্রেতে প্রচুর ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ব্যবহার করা হয়। এগুলিই ওজোন ধ্বংসের মূল উৎস। উ এগুলির ব্যবহার বন্ধ করে দিলে ওজোনস্তর অনেকটা সুরক্ষিত থাকতে নি পারে।

14. ওজোনস্তর ধ্বংসকারী গ্যাসগুলির নাম লেখো।

উত্তর: ওজোনন্তর ধ্বংসকারী গ্যাস: ওজোনস্তর ধ্বংসকারী গ্যাসগুলি । হল- ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC), হ্যালন, কার্বন টেট্রাক্লোরাইড (CCI), মিথাইল ব্রোমাইড (CH₃Br), নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O), মিথেন (CH₄) প্রভৃতি।

15. মৌক্তিক বা শুক্তি মেঘ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ধারণা: অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের ওপর ঊর্ধ্ব স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে 15-25 কিমি উচ্চতায় শীতকালে মাঝে মাঝে সামান্য মেঘের সঞ্চার ঘটে, এই মেঘকে মৌক্তিক মেঘ বা শুক্তি মেঘ (noctilucent cloud) বলে।

 বৈশিষ্ট্য: ① এই মেঘে বৃষ্টিপাত প্রায় ঘটেই না।পৃথিবীর অন্যান্য অংশের উর্ধ্ব স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারেও মাঝে মাঝে এই মেঘ দেখা যায়।

16. মেসোস্ফিয়ার বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ধারণা: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওপর (ভূপৃষ্ঠ থেকে) প্রায় ৪০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত যে বায়ুস্তর আছে, সেই স্তর মেসোস্ফিয়ার নামে পরিচিত।

 বৈশিষ্ট্য: ① তাপমাত্রা: এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর তাপমাত্রা কমতে থাকে। ② মেসোপজ: মেসোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমাকে মেসোপজ বলে। এখানে বায়ুর তাপমাত্রা কমে হয় প্রায় 93°সে। ③ উল্কাপিণ্ড ভস্ম: মহাকাশ থেকে যেসব উল্কা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে, সেগুলি বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণে এই মেসোস্ফিয়ারের মধ্যে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

17. আয়নোস্ফিয়ার বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ধারণা: থার্মোস্ফিয়ারের নীচের অংশকে আয়নোস্ফিয়ার বলা হয়।

 বৈশিষ্ট্য: ① তড়িৎগ্রস্ত কণার উপস্থিতি: অসংখ্য ধনাত্মক ও ঋণাত্মক তড়িৎগ্রস্ত কণা বা আয়ন থাকায় এই স্তরকে আয়নোস্ফিয়ার বলে। ② মেরুজ্যোতি: মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা এই বায়ুস্তরেই দেখা যায়।

28. আয়নোস্ফিয়ারের গুরুত্ব কী?

উত্তর: আয়নোস্ফিয়ারের গুরুত্ব: আয়নোস্ফিয়ারের গুরুত্বগুলি হল- ① ক্ষতিকারক স্বল্প দৈর্ঘ্যের তরঙ্গের শোষণ: সূর্য থেকে প্রতিনিয়ত বিচ্ছুরিত ক্ষতিকারক স্বল্প দৈর্ঘ্যের তরঙ্গগুলি আয়নোস্ফিয়ারে শোষিত হয়। ② বেতারসংযোগ রক্ষা: এই স্তরের জন্যই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে বেতারসংযোগ রক্ষা করা সম্ভব হয়। ③ মেরুপ্রভা সৃষ্টি: আয়নোস্ফিয়ারে চৌম্বক বিক্ষেপজনিত কারণে সৃষ্ট অসংখ্য মুক্ত ইলেকট্রন কণা দ্বারা প্রতিফলিত তরঙ্গ সুমেরুতে সুমেরুপ্রভা এবং কুমেরুতে কুমেরুপ্রভা নামের মেরুজ্যোতির সৃষ্টি করে।

4. Long Question Answer

1• বায়ুমণ্ডল কী কী উপাদানে গঠিত আলোচনা করো।

উত্তর: বায়ুমণ্ডলের উপাদান: বায়ুমণ্ডল নানা ধরনের উপাদানে গঠিত। এই উপাদানগুলি হল—

1. গ্যাসীয় উপাদান: বায়ুমণ্ডলে যেসব গ্যাসীয় উপাদান আছে সেগুলির মধ্যে নাইট্রোজেন (শতকরা 78.08 ভাগ) এবং অক্সিজেন (শতকরা 20.94 ভাগ) প্রধান। এই দুটি গ্যাস ছাড়া বায়ুমণ্ডলে খুব অল্পমাত্রায় আর্গন (শতকরা 0.93 ভাগ), কার্বন ডাইঅক্সাইড (শতকরা 0.03 ভাগ), হিলিয়াম, হাইড্রোজেন, ক্রিপটন, মিথেন, নিয়ন, ওজোন, জেনন প্রভৃতি গ্যাস আছে। এদের মধ্যে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন ও আর্গন বায়ুমণ্ডলের শতকরা প্রায় 99.95 ভাগ স্থান দখল করে আছে।

2. জলীয় বাষ্প: জলের গ্যাসীয় অবস্থাকে বলা হয় জলীয় বাষ্প। এই  

উপাদানটি সাগর, মহাসাগর, নদনদী, হ্রদ এবং অন্যান্য জলাশয়, গাছপালা প্রভৃতি থেকে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে বায়ুমন্ডলে মেশে। বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ যদিও খুব সামান্য থাকে তবুও ঋতুভেদে বা অঞ্চলভেদে এই পরিমাণের কিছুটা তারতম্য হয়। যেমন-নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ুতে সারাবছর জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে এবং মেরু অঞ্চলে প্রচণ্ড ঠান্ডায় বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অত্যন্ত কম। আবার যে-কোনো স্থানে বর্ষাকালে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি থাকে।

3. ধূলিকণা: বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরে যথেষ্ট পরিমাণে ধূলিকণা থাকে এবং অন্যান্য গ্যাসীয় অণুর মতো ধূলিকণাও বাতাসে ভেসে বেড়ায়। শুষ্ক মরু অঞ্চল বা সমুদ্রতীরের ধুলোবালি, লবণকণা, কলকারখানার পোড়া কয়লার ছাই প্রভৃতি সূক্ষ্ম ধূলিকণারূপে বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এগুলিকে একত্রে অ্যারোসল বলে। মেরু অঞ্চলে এর পরিমাণ কম থাকে, শুষ্ক মরু অঞ্চলে এর পরিমাণ বেশি থাকে।

2. বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানের প্রভাব বর্ণনা করো।

উত্তর: বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানের প্রভাব: বায়ুমণ্ডলের প্রায় প্রতিটি উপাদানই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করে, যেমন-

1. নাইট্রোজেন (78.08%): ① মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে: শুঁটি-জাতীয় উদ্ভিদের মূলে বসবাসকারী কতকগুলি ব্যাকটেরিয়া (যেমন-রাইজোবিয়াম) বায়ুমণ্ডল থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে মাটির উর্বরাশক্তি বাড়িয়ে দেয়। ② সার উৎপাদনে: বর্তমানে বায়ুমণ্ডল থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে সার উৎপাদনের কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে। ও নাইট্রোজেনের চাহিদা পূরণে: বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন পরোক্ষভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণীর শরীরে নাইট্রোজেনের চাহিদা পূরণ করে।

2. অক্সিজেন (20.94%): ① শ্বাসকার্যে: অক্সিজেন ছাড়া জীবজগতের অস্তিত্বই অসম্ভব। কারণ, অক্সিজেন ছাড়া শ্বাসকার্য সম্ভব নয় বলে বেঁচে থাকার জন্য সকল প্রাণীই অক্সিজেনের ওপর নির্ভরশীল। ② শিলার আবহবিকারে: অক্সিজেন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিলার আবহবিকার বা বিচূর্ণীভবন (জারণ) ঘটায়। ও) দহন ক্রিয়ায়: কেবল অক্সিজেনের উপস্থিতিতেই দহনক্রিয়া সম্ভব। ④ লোহার ক্ষয়সাধনে: জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে অক্সিজেন মরিচা সৃষ্টির মাধ্যমে লোহার ক্ষয় সাধন করে।

3. কার্বন ডাইঅক্সাইড (0.03%): ① সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায়: কার্বন ডাইঅক্সাইড ছাড়া উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করতে পারে না (উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় বায়ুর কার্বন ডাইঅক্সাইডের সাহায্যে খাদ্য প্রস্তুত করে)। আর প্রাণীজগৎ খাদ্যের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল। ② তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে: বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও এই গ্যাসটির বিশেষ ভূমিকা আছে। ও) রাসায়নিক  ক্ষয়সাধনে: কার্বন ডাইঅক্সাইড শিলার রাসায়নিক আবহবিকারে (কার্বনেশন) সাহায্য করে

④ আবহবিকার দ্বারা বিভিন্ন ভূমিরূপ সৃষ্টিতে: কার্বন ডাইঅক্সাইড চুনাপাথর ও ডলোমাইট শিলায় রাসায়নিক আবহবিকার ঘটিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভূমিরূপ (স্ট্যালাকটাইট, স্ট্যালাগমাইট প্রভৃতি) গঠন করে। ⑤ খনিজ পদার্থ গঠনে: অঙ্গারময় খনিজ এবং চুন-জাতীয় খনিজ গঠনে কার্বন ডাইঅক্সাইডের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

4. ওজোন: ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে 24-40 কিমির মধ্যে যে ওজোন গ্যাসের স্তর পৃথিবীকে বেষ্টন করে রয়েছে, তার জন্যেই সূর্য থেকে ছুটে আসা ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোতে পারে না। ফলে পৃথিবী ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে।

5. জলীয় বাষ্প: ① মেঘ সৃষ্টিতে: বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প আছে বলেই মেঘ সৃষ্টি হয় এবং ওই মেঘ থেকেই বৃষ্টি হয়। ② জীবনের অস্তিত্ব রক্ষায়: জলের অপর নাম জীবন। জলীয় বাষ্প তথা জল না থাকলে পৃথিবীতে জীবনের কোনো অস্তিত্ব থাকত না। ③ শিশির, কুয়াশা প্রভৃতি সৃষ্টিতে: জলীয় বাষ্পের জন্যই পৃথিবীতে শিশির, কুয়াশা, তুহিন ও তুষার সৃষ্টি হয়।

6. ধূলিকণা: ① মেঘ ও কুয়াশা সৃষ্টিতে: বায়ুমণ্ডলে ভাসমান ধূলিকণাকে আশ্রয় করেই জলীয় বাষ্প জলবিন্দুতে পরিণত হয় বা মেঘ ও কুয়াশা সৃষ্টি হয়। ② উত্তাপের বণ্টনে: বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণাসমূহ সূর্যরশ্মি দ্বারা সরাসরি উত্তপ্ত হয়ে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে এবং পৃথিবীতে সৌরতাপ বণ্টনের প্রভাব বিস্তার করে। ও) সূর্যের আলোর বিচ্ছুরণে: ধূলিকণার দ্বারা সূর্যের আলো বিচ্ছুরিত হয়ে দিনের বেলা পৃথিবীকে আলোকিত করে রাখে। ④ উষা ও গোধূলি সৃষ্টিতে: বায়ুমণ্ডলে ধূলিকণার উপস্থিতির জন্য উষা ও গোধূলির সৃষ্টি হয়। ⑤ আকাশের বর্ণ নির্ধারণে: বায়ুমন্ডলে ধূলিকণা থাকায় আকাশ নীল দেখায়।

3. বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাসের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। অথবা, তাপমাত্রার তারতম্য অনুসারে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস করো। 

উত্তর: বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস: তাপমাত্রার তারতম্য অনুসারে বায়ুমণ্ডলকে ছয়টি স্তরে ভাগ করা যায়, যেমন-

1. ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুষ্ণমণ্ডল

অবস্থান: বায়ুমণ্ডলের একেবারে নীচের সর্বাধিক ঘনত্বযুক্ত স্তরটির নাম ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমণ্ডল। ইংরেজি ‘ট্রপোস্ফিয়ার’ শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘ট্রপো’ (যার অর্থ ‘পরিবর্তন’ বা ‘অশান্ত’) এবং ‘স্ফিয়ার’ (যার অর্থ ‘অঞ্চল’) থেকে উদ্ভূত।

বিস্তার: নিরক্ষীয় অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠ থেকে 16-18 কিমি ও মেরু অঞ্চলে 8-9 কিমি (গড় উচ্চতা 12 কিমি) উচ্চতা এই স্তর পর্যন্ত বিস্তৃত।

বৈশিষ্ট্য: [i] উয়তা: এই স্তরে প্রতি 1000 মিটার উচ্চতায় বায়ুর উন্নতা 6.4° সে হারে কমতে থাকে। এই কারণে ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্ব বা শেষ সীমায় বায়ুর উন্নতা কমে হয় প্রায় -55 °সে থেকে -66 °সে। [ii] ভর: বায়ুমণ্ডলের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এই স্তরে বায়ুমণ্ডলের মোট ভরের তিন-চতুর্থাংশ পাওয়া যায়। [iii] আবহাওয়ার গোলযোগ: বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান, জলীয় বাষ্প, ধূলিকণা ও লবণের কণা থাকে। মেঘের সৃষ্টি ও বায়ুপ্রবাহ প্রধানত এই স্তরেই দেখা যায়। ঘূর্ণবাত, টর্নেডো, বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত প্রভৃতি ঘটনা ট্রপোস্ফিয়ারেই কেবল ঘটে। তাই ট্রপোস্ফিয়ারকে ক্ষুব্ধমণ্ডল বলা হয়। [iv] ট্রপোপজ: ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমাকে বলে ট্রপোপজ। এখানে উন্নতা কমেও না বা বাড়ে না অর্থাৎ প্রায় ধ্রুবক থাকে।

2. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডল

অবস্থান: ট্রপোস্ফিয়ারের ঠিক ঊর্ধ্বে বায়ুমণ্ডলের দ্বিতীয় স্তরটির নাম স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডল। ইংরেজি ‘স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার’ শব্দটি গ্রিক ‘স্ট্র্যাটো’ (যার অর্থ ‘শান্ত’ অথবা ‘স্থির’) এবং ‘স্ফিয়ার’ (যার অর্থ ‘অঞ্চল’) থেকে উদ্ভূত।

বিস্তার: ট্রপোস্ফিয়ারের ওপর 12 থেকে 50 কিমি উচ্চতা পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত।

বৈশিষ্ট্য: [i] ওজোনোস্ফিয়ার: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের 24-40 কিমি উচ্চতার মধ্যে ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব খুব বেশি থাকে। এই কারণে এই অংশের নাম ওজোনোস্ফিয়ার। এই স্তর সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে জীবজগতকে ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে। [ii] মুক্তা মেঘ: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে মেঘ ও বায়ুপ্রবাহ বিশেষ থাকে না। তবে মেরু অঞ্চলে নিম্ন স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে বরফের কেলাস দিয়ে গঠিত মুক্তা মেঘ নামে একপ্রকার মেঘ দেখা যায়। [iii] বিমান চলাচল: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে বায়ুপ্রবাহ না থাকায় ঘর্ষণজনিত বাধাও খুব কম। এজন্য এই স্তর দিয়ে জেট বিমান চলাচল করে। [iv] উদ্বৃতা: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর উয়তা 50 কিমি উচ্চতায় বেড়ে হয় প্রায় ০°সে। প্রধানত ওজোনের অণুগুলি দ্বারা অতিবেগুনি রশ্মি শোষিত হওয়ার কারণে এই স্তরে উন্নতা বাড়ে। [v] স্ট্র্যাটোপজ: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমার নাম স্ট্র্যাটোপজ।

4. ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে বায়ুর উন্নতার তারতম্যের কারণগুলি সংক্ষেপে লেখো।

অথবা, বায়ুমণ্ডলের উন্নতা কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়?

উত্তর: বায়ুমণ্ডলে উন্নতার তারতম্যের কারণ: ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে

বায়ুর উন্নতায় অনেক পার্থক্য দেখা যায়। বায়ুর উন্নতার এই তারতম্যের নিয়ন্ত্রকগুলি হল-

1. অক্ষাংশ: অক্ষাংশ অনুসারে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে সূর্যরশ্মির পতনকোণের তারতম্য ঘটে, ফলে উয়তারও পার্থক্য হয়। নিরক্ষরেখা থেকে মেরু অঞ্চলের দিকে সূর্যরশ্মি ক্রমশ তির্যকভাবে পড়ে। লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মির তুলনায় তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ কম হয়। এর কারণগুলি হল- তির্যক রশ্মিকে বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে তুলনামূলকভাবে অধিক দূরত্ব অতিক্রম করতে হয় এবং তির্যক রশ্মি ভূপৃষ্ঠে বেশি জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং, নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর ও দক্ষিণে তাপমাত্রাও ক্রমশ কমতে থাকে। 

উদাহরণ: 34°5′ উত্তর অক্ষাংশে অবস্থিত শ্রীনগরের তুলনায় নিরক্ষরেখার নিকটবর্তী তিরুবনন্তপুরম ( 8°31′ উ: অক্ষাংশ) অনেক বেশি উন্ন। আর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে অক্ষাংশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলেই অক্ষাংশের ভিত্তিতে ভূপৃষ্ঠে তিনটি প্রধান তাপমণ্ডলের সৃষ্টি হয়েছে।

2. উচ্চতা: সাধারণভাবে দেখা যায় প্রতি 1000 মিটার উচ্চতায় প্রায় 6.4° সে হারে তাপমাত্রা হ্রাস পায়। তাই একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও সমতল স্থানের তুলনায় উঁচু স্থানের তাপমাত্রা কম হয়। উদাহরণ: উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা ( 0°20’ উত্তর, উচ্চতা 1190 মি) এবং ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো ( 0°11′ দক্ষিণ, উচ্চতা 2850 মি) মোটামুটি একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও উচ্চতার পার্থক্যের জন্য কাম্পালার (গড় বার্ষিক তাপমাত্রা 19°সে) তুলনায় কুইটোর তাপমাত্রা (গড়ে 8.5° সে) অনেক কম।

3. সালভাগ ও জলভাগের বণ্টন: জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ দিনের বেলা তাড়াতাড়ি গরম হয় এবং রাতে তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয়। একইভাবে গ্রীষ্মকালে স্থলভাগ যতটা উন্ন হয় পার্শ্ববর্তী জলভাগ ততটা হয় না বা শীতকালে স্থলভাগ যতটা শীতল হয় সংলগ্ন জলভাগ ততটা শীতল হয় না। এজন্য সমুদ্র থেকে দূরে মহাদেশের অভ্যন্তরে জলবায়ু চরম বা মহাদেশীয় প্রকৃতির হয়। কিন্তু সমুদ্রসংলগ্ন স্থানে সামুদ্রিক প্রভাবের জন্য উয়তা কখনোই খুব বেশি বা কম হয় না। জলবায়ু সমভাবাপন্ন হয়।

 উদাহরণ: সমুদ্র থেকে দূরে দেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত বলে দিল্লির জলবায়ু চরম বা মহাদেশীয় প্রকৃতির। আবার, সামুদ্রিক প্রভাবের জন্য মুম্বাইয়ের জলবায়ু সমভাবাপন্ন।

4. ভূমির ঢাল: ভূমির যে ঢালের ওপর সূর্যালোক বেশি খাড়াভাবে পড়ে। সেই ঢালে উয়তা অপেক্ষাকৃত বেশি হয়। এর বিপরীত ঢালে সূর্যালোক তির্যকভাবে পড়ে ও উন্নতা তুলনামূলকভাবে কম হয়। উদাহরণ: উত্তর গোলার্ধে হিমালয়, আল্পস প্রভৃতি পর্বতশ্রেণির উত্তর ঢালের তুলনায় দক্ষিণ ঢালের তাপমাত্রা বেশি। আবার দক্ষিণ গোলার্ধের পর্বতশ্রেণিসমূহের উত্তর ঢাল দক্ষিণ ঢালের তুলনায় বেশি উয়।

5. বায়ুপ্রবাহ: বায়ুপ্রবাহ তাপ বহন করে। তাই কোনো অঞ্চলের ওপর দিয়ে উয় বায়ু প্রবাহিত হলে সেখানকার তাপমাত্রা বাড়ে এবং শীতল বায়ুপ্রবাহে তাপমাত্রা কমে। উদাহরণ: শীতকালে সুমেরুর ঠান্ডা বাতাস উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অভ্যন্তরে বহুদূর পর্যন্ত চলে আসে। এজন্য আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যভাগে শীতকালে তীব্র শীত পড়ে এবং তুষারপাত হয়। আবার উয় চিনুক বায়ুর প্রভাবে ওই দেশটিরই প্রেইরি অঞ্চলে শীতকালে বরফ গলে যায়।

6. মেঘাচ্ছন্নতা ও অধঃক্ষেপণ: আকাশে ঘন মেঘের আবরণ একদিকে যেমন দিনের বেলা সৌরশক্তিকে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোতে বাধা দেয়, অপরদিকে রাত্রি বেলা ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপকেও মহাশূন্যে পৌঁছোতে দেয় না। ফলে মেঘের আবরণ থাকলে দিনের বেলা উত্তাপ কমে, আর রাত্রিবেলা উত্তাপ বাড়ে। এই কারণে মেঘশূন্য রাত্রির তুলনায় মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি অনেক গরম হয়। বৃষ্টিপাত, শিলাবৃষ্টি, তুষারপাত প্রভৃতি বিভিন্ন প্রকার অধঃক্ষেপণে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা 

হ্রাস পায়। এজন্য বৃষ্টিহীন রাজস্থান মরু অঞ্চলের তুলনায় বৃষ্টিপাত অধ্যুষিত চেরাপুঞ্জির 

তাপমাত্রা অনেক কম। আবার, বৃষ্টিপাতের তুলনায় শিলাবৃষ্টি এবং শিলাবৃষ্টির তুলনায় তুষারপাতে তাপমাত্রা হ্রাস পায়।

5. পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের তাপবলয়গুলির পরিচয় দাও।

উত্তর: পৃথিবীর তাপবলয়: তাপমাত্রার তারতম্য অনুসারে ভূপৃষ্ঠকে মোট পাঁচটি তাপবলয় বা তাপমণ্ডলে ভাগ করা যায়। এগুলি হল-

1. উয়মণ্ডল বা গ্রীষ্মমণ্ডল

অবস্থান: নিরক্ষরেখার উত্তরে ও দক্ষিণে 23½° অক্ষরেখা পর্যন্ত বিস্তৃত স্থানে অর্থাৎ কর্কটক্রান্তিরেখা ও মকরক্রান্তিরেখার মধ্যবর্তী অঞ্চলকে উয়ুমণ্ডল বা গ্রীষ্মমণ্ডল বলে। 27°সে বা 80°ফা সমোয়রেখাকে অনেকসময় উন্নমণ্ডলের সীমারেখা ধরা হয়। সেক্ষেত্রে নিরক্ষরেখার উত্তরে ও দক্ষিণে 30° অক্ষরেখা পর্যন্ত বিস্তৃত স্থানসমূহ উন্নমণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত বলে ধরা হয়।

কারণ: [i] সূর্যরশ্মির পতন: এখানকার প্রতিটি স্থানে বছরে অন্তত দু-দিন মধ্যাহ্ন সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে এবং বছরের অন্যান্য দিনও সূর্যরশ্মি এখানে বেশি তির্যকভাবে পড়ে না। [ii] দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি: সারাবছর এখানে দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি খুব কম হয়। তাই সারাবছর এখানকার বায়ুর তাপমাত্রা অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি। এজন্য এই অঞ্চলটির নাম উয়মণ্ডল বা গ্রীষ্মমণ্ডল।

বৈশিষ্ট্য: [i] পর্যাপ্ত সূর্যরশ্মি: উয়মণ্ডলে সারাবছর যথেষ্ট পরিমাণে সূর্যরশ্মি পাওয়া যায়। [ii] গড় তাপমাত্রা: এখানকার গড় তাপমাত্রা সারাবছর বেশি (প্রায় 27°সে) থাকে। এ ছাড়া, শীত ও গ্রীষ্মের উয়তার পার্থক্যও কম হয়।

 [iii] দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের পার্থক্য: এখানে সারাবছর দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যে খুব বেশি তারতম্য হয় না। [iv] ঋতুপরিবর্তন: এই অঞ্চলের মধ্যভাগে ঋতুপরিবর্তন হয় না বললেই চলে।

2.-3. উত্তর নাতিশীতোয়ুমণ্ডল এবং দক্ষিণ নাতিশীতোয়মণ্ডল

অবস্থান: কর্কটক্রান্তিরেখা এবং মকরক্রান্তিরেখা থেকে যথাক্রমে সুমেরুবৃত্ত এবং কুমেরুবৃত্ত পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলটির নাম নাতিশীতোয়মণ্ডল। এর মধ্যে কর্কটক্রান্তিরেখা (23/½° উ.) থেকে সুমেরুবৃত্ত (66½° উ.) পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলটির নাম উত্তর নাতিশীতোয়মণ্ডল এবং মকরক্রান্তিরেখা (23/½° দ.) থেকে কুমেরুবৃত্ত (66½° দ.) পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলটির নাম দক্ষিণ নাতিশীতোয়মণ্ডল। সমোয়রেখার হিসাবে 27°সে থেকে ০°সে সমোয়রেখার মাঝখানের স্থানসমূহ নাতিশীতোয়মন্ডলের অন্তর্গত।

কারণ: [i] সূর্যরশ্মির পতন: সূর্যরশ্মি এখানে খুব বেশি তির্যকভাবে পড়ে না। উয়মণ্ডলের তুলনায় সূর্যরশ্মি কম পাওয়া গেলেও হিমমন্ডলের তুলনায় বেশি পাওয়া যায়। [ii] দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি: দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি মাঝামাঝি ধরনের হয়। এজন্য এই অঞ্চলে উন্নতাও খুব বেশি বা কম হয় না, মধ্যম প্রকৃতির হয়। ফলে এখানে বছরের অধিকাংশ সময় নাতিশীতোয় অবস্থা বিরাজ করে।

বৈশিষ্ট্য: [i] গড় উয়তা: সারাবছর এখানকার গড় উয়তা ০°সে থেকে 27° সে-এর মধ্যে থাকে। [ii] ঋতুর তীব্রতা: এখানে গ্রীষ্মকাল ও শীতকাল কোনোটিই তীব্র নয়।

উপবিভাগ: উন্নতার তারতম্য অনুসারে এই নাতিশীতোয়মণ্ডলকে দুটি বিভাগে ভাগ করা যায়- [i] উয় নাতিশীতোয়মণ্ডল: নাতিশীতোয়- মণ্ডলের যে অংশটি উয়মণ্ডলসংলগ্ন অর্থাৎ কর্কটক্রান্তিরেখা ও মকরক্রান্তিরেখার দিকে থাকে (30° থেকে 45° অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত স্থানসমূহ), সেখানে উয়তা অপেক্ষাকৃত বেশি বলে ওই অংশটিকে উন্ন নাতিশীতোয়মণ্ডল বলে। [ii] শীতল নাতিশীতোয়মণ্ডল: নাতিশীতোয়মণ্ডলের যে অংশটি হিমমণ্ডলসংলগ্ন (45°-662° অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত স্থানসমূহ), অর্থাৎ মেরুবৃত্তের দিকে থাকে, সেখানে উন্নতা অপেক্ষাকৃত কম বলে ওই অংশটিকে শীতল নাতিশীতোয়মণ্ডল বলে।

4.-5. উত্তর হিমমণ্ডল এবং দক্ষিণ হিমমণ্ডল

অবস্থান: উভয় গোলার্ধে দুই মেরুবৃত্ত থেকে মেরুবিন্দু পর্যন্ত অঞ্চলকে বলে হিমমণ্ডল। এর মধ্যে সুমেরুবৃত্ত (66½° উ.) থেকে সুমেরুবিন্দু (90° উ.) পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলের নাম উত্তর হিমমণ্ডল এবং কুমেরুবৃত্ত (66½° দ.) থেকে কুমেরুবিন্দু (90° দ.) পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলের নাম দক্ষিণ হিমমণ্ডল।

কারণ: উভয় মেরুর চারদিকে সূর্যরশ্মি অত্যন্ত তির্যকভাবে পড়ে এবং বছরের বেশ কিছুটা সময় সূর্যরশ্মি একেবারেই পাওয়া যায় না। এজন্য এই অঞ্চলের উয়তা খুবই কম এবং বছরের 

অধিকাংশ সময় ভূমি হিমময় বা বরফাবৃত থাকে। তাই এই অঞ্চলের নাম হিমমণ্ডল। হিমমন্ডলের সীমারেখা ০°সে সমোয়রেখা থেকে দুই মেরুবিন্দু পর্যন্ত বিস্তৃত।

বৈশিষ্ট্য: [i] দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের তারতম্য: হিমমণ্ডলে দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের তারতম্য অত্যন্ত বেশি। দুই মেরুবিন্দুতে একটানা ছয় মাস দিন ও ছয় মাস রাত হয়। [ii] বায়ুমণ্ডলের উত্তপ্ততা: সূর্যরশ্মি অত্যন্ত তির্যকভাবে পড়ায় একটানা ছয় মাস দিন থাকার সময়ও বায়ুমণ্ডঞ্জ বিশেষ একটা উত্তপ্ত হয় না। [iii] বার্ষিক গড় তাপমাত্রা: এখানকার বেশিরভাগ জায়গায় বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ০° সে-এর কম থাকে এবং বছরের অধিকাংশ সময় তুষারপাত হয়।

6. চিত্র-সহ বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার পদ্ধতিগুলি আলোচনা করো।

উত্তর: বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার পদ্ধতি: বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার পদ্ধতিগুলি হল-

1. বিকিরণ পদ্ধতি: যে পদ্ধতিতে কোনো মাধ্যম ছাড়াই বা মাধ্যম থাকলেও তাকে উত্তপ্ত না করে তাপ এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে চলে যায়, সেই পদ্ধতিকে বিকিরণ পদ্ধতি বলে। সূর্যতাপে ভূপৃষ্ঠ উয় হয় এবং ওই উয় ভূপৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করে। বায়ুমণ্ডলের একেবারে নীচের স্তর ওই বিকীর্ণ তাপ গ্রহণ করে উত্তপ্ত হয়।

2. পারিবহণ পদ্ধতি: যে পদ্ধতিতে কোনো পদার্থের উন্নতর অংশ থেকে শীতলতর অংশে তাপ সঞ্চলিত হয় কিন্তু পদার্থের অণুগুলি স্থান পরিবর্তন করে না, সেই পদ্ধতিকে পরিবহণ পদ্ধতি বলে। যেমন- সূর্যতাপে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয় এবং ওই উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন

বায়ুস্তর উত্তপ্ত হয়। আবার ওই উত্তপ্ত বায়ুর উত্তাপ শীতল বায়ুতে সঞ্চলিত হয় এবং এইভাবে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়।

3. পরিচলন পদ্ধতি: ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ু উত্তপ্ত হওয়ার ফলে প্রসারিত ও হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। তখন চারদিক থেকে ঠান্ডা ভারী বাতাস ওই ফাঁকা স্থানে ছুটে আসে এবং ওই বাতাসও ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে ওপরে উঠে যায়। এরকম উল্লম্বভাবে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরে উত্তাপ ছড়িয়ে যায় এবং বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়। বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার এই পদ্ধতির নাম পরিচলন পদ্ধতি।

4. অ্যাডভেকশন: এক জায়গার উত্তাপ বায়ুর মাধ্যমে যখন ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে অনুভূমিকভাবে অন্য জায়গায় চলে যায়, তার নাম অ্যাডভেকশন (অর্থাৎ এটি পরিচলন পদ্ধতির ঠিক বিপরীত। পরিচলন পদ্ধতিতে উত্তাপ উল্লম্বভাবে যায় কিন্তু অ্যাডভেকশন পদ্ধতিতে অনুভূমিকভাবে যায়)। উদাহরণ-নিম্ন অক্ষাংশের বেশি উয়তা বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে উচ্চ অক্ষাংশের বায়ুমণ্ডলে স্থানান্তরিত হয়।

5. সূর্যরশ্মির প্রত্যক্ষ শোষণ: সূর্যরশ্মি যখন বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আসে তখন তার কিছু অংশ বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদান, যেমন-কার্বন ডাইঅক্সাইড, জলীয় বাষ্প, ধূলিকণা প্রভৃতি সরাসরি শোষণ করে বায়ুমণ্ডলকে সামান্য উত্তপ্ত করে।

7. বিশ্ব উয়ায়নের কারণগুলি লেখো।

উত্তর:বিশ্ব উন্নায়নের কারণ: কোনোরূপ প্রাকৃতিক কারণ ছাড়াই প্রধানত মানুষের নানাপ্রকার অবিবেচনাপ্রসূত কাজের ফলে বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরের ক্রমবর্ধমান ও অস্বাভাবিক উন্নতা বৃদ্ধিকে বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদগণ বিশ্ব উন্নায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং নামে অভিহিত করেছেন।

এই বিশ্ব উন্নায়নের কারণগুলি হল-

1. অতিরিক্ত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার: তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, লৌহ-ইস্পাত শিল্পে এবং যানবাহনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বাতাসে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাইঅক্সাইড মিশছে, যা পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী।

2. মিথেন গ্যাসের নির্গমন: মিথেন একটি অন্যতম গ্রিনহাউস গ্যাস। বিভিন্ন জলাজমি, ধানখেতের জমে থাকা জল থেকে মিথেন গ্যাস নির্গত হয়। এ ছাড়া, পচনশীল জৈব আবর্জনা, গবাদিপশুর মল থেকেও প্রচুর মিথেন গ্যাস বাতাসে মেশে, যা পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির সহায়ক।

3. অরণ্যচ্ছেদন: পৃথিবীজুড়ে নানা কারণে অরণ্য ধ্বংস হয়ে চলেছে। এতে বায়ুতে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। কার্বন ডাইঅক্সাইড তাপমাত্রা বৃদ্ধির সহায়ক।

4. নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন: কৃষিজমিতে নাইট্রোজেন সারের ব্যবহারের মাধ্যমে বা অরণ্যে দাবানলের সৃষ্টি হলে বায়ুতে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) মেশে, যা বিশ্ব উন্নায়নের সহায়ক।

5. CFC গ্যাসের নির্গমন: রেফ্রিজারেটার, এয়ারকন্ডিশনার, বডি স্প্রে প্রভৃতি ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাসে CFC গ্যাস নির্গত হয়। এ ছাড়া ইলেকট্রনিকস শিল্প, রং শিল্প, বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী সামগ্রী প্রস্তুত করতেও ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) ব্যবহৃত হয়, যা বিশ্ব উন্নায়নের

অন্যতম কারণ। এ ছাড়া  6. বিপুল পরিমাণে জ্বালানি কাঠের দহন, 7. পচা ও জৈব আবর্জনা বৃদ্ধি, ৪. জনবিস্ফোরণ প্রভৃতিও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিশ্ব উন্নায়নের সহায়ক হয়েছে।

8. বিশ্ব উন্নায়নের প্রভাবগুলি আলোচনা করো।

উত্তর: বিশ্ব উন্নায়নের প্রভাব: মানুষের বিভিন্ন প্রকার অবিবেচনাপ্রসূত ক্রিয়াকলাপের কারণে পৃথিবীর স্বাভাবিক উন্নতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই এই ক্রমবর্ধমান ও অস্বাভাবিক উন্নতা বৃদ্ধিকেই বলে বিশ্ব উয়ায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং। এর উল্লেখযোগ্য প্রভাবগুলি হল-

1. জলবায়ু পরিবর্তন: পৃথিবীর উয়তা ক্রমশ বেড়ে যাওয়ার জন্য শীতের তুলনায় গ্রীষ্মের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, প্রায় প্রতিটি ঋতুর আগমন অনিয়মিত ও বিলম্বিত হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং খরার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।

2. হিমবাহের মাত্রাতিরিক্ত গলন: ভূমণ্ডলের উয়তা বেড়ে যাওয়ার জন্য অ্যান্টার্কটিকা ও গ্রিনল্যান্ডের অসংখ্য হিমবাহ ও বিশালাকৃতি বরফের চাদর (ice sheet) সহ পৃথিবীর বিভিন্ন পার্বত্য হিমবাহ গলে যাওয়ার জন্য ক্রমশই সংকুচিত হচ্ছে অর্থাৎ এদের আয়তন হ্রাস পাচ্ছে। যেমন-হিমালয়ের গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী প্রভৃতি হিমবাহ।

3. নদনদীতে জলের পরিমাণ হ্রাস: পার্বত্য হিমবাহগুলি ক্রমশ সংকুচিত হওয়ার ফলে হিমবাহসৃষ্ট নদনদীতে জলের পরিমাণ ক্রমশ কমে আসছে। এর ফলে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, সিন্ধু প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ নদনদী ধীরে ধীরে ক্ষীণকায় হতে থাকবে এবং তার ফলে ভারত,চিন,পাকিস্তান, বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জলাভাবজনিত নানা ধরনের সমস্যা ভয়ংকর রূপ নেবে।

4. সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি: মেরু অঞ্চল এবং পার্বত্য অঞ্চলেরহিমবাহ দ্রুত গলে যাওয়ার জন্য সমুদ্রের জলতলের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। বিগত শতাব্দীতে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা 0.9°সে বৃদ্ধির জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রায় 10-12 সেমি বেড়ে গেছে। এজন্য সমুদ্র উপকূলের নীচু অংশগুলি জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে।

5 . অধঃক্ষেপণের প্রকৃতি পরিবর্তন: বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বাষ্পীভবনের হার ও বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, তুষারপাত ইত্যাদির তীব্রতা বেড়েছে। অধঃক্ষেপণের বণ্টনে যথেষ্ট অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হয়েছে, অর্থাৎ শুষ্ক অঞ্চলগুলিতে বন্যা এবং আর্দ্র অঞ্চলগুলিতে খরা দেখা দিচ্ছে।

9. সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটার যন্ত্রটির পরিচয় দাও।

উত্তর: সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটার: দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উন্নতা পরিমাপ করার জন্য যে তাপমান যন্ত্রটি ব্যবহৃত হয়, তার নাম সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটার (Six’s Maximum and Minimum Thermometer)। জেমস সিক্স (James Six) এই তাপমান যন্ত্রটি তৈরি করেন। এই যন্ত্রটির সাহায্যে যেমন দিনের (24 ঘণ্টার) সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উয়তা নথিভুক্ত করা যায়, তেমন নথিভুক্ত উয়তার সাহায্যে দৈনিক গড় উন্নতা, মাসিক গড় উন্নতা এবং বার্ষিক গড় উয়তা নিরূপণ করাও সম্ভব হয়।

থার্মোমিটারের পরিচয়: ① এই থার্মোমিটারটি দেখতে অনেকটা ইংরেজি অক্ষর U-এর মতো, যেটি একটি ফ্রেমের মধ্যে খাড়াভাবে আটকে রাখা থাকে। ওই U-আকৃতির থার্মোমিটারটি হল প্রকৃতপক্ষে দুটি বাহু এবং সমব্যাসের সূক্ষ্ম ছিদ্রযুক্ত কাচের নল বা টিউব। ওই দুই বাহুর ওপর দুটি বাল্ব বা কুণ্ড (চিত্রে A এবং B) লাগানো থাকে। এই কাচের নল বা টিউবটির দুই বাহুর একটি নির্দিষ্ট অংশ (চিত্রে C এবং D) পর্যন্ত পারদপূর্ণ এবং বাকি অংশ (বামদিকের বাহুর C থেকে A এবং ডানদিকের বাহুর D থেকে P পর্যন্ত) অ্যালকোহলপূর্ণ থাকে। দুই বাহুর পারদপ্রান্তের ঠিক নির্দেশ করে। পারদের তুলনায় সূচক দুটি হালকা বলে পারদের ওপ সহজেই ভেসে থাকে। সূচক দুটির সঙ্গে স্প্রিং লাগানো থাকে। তাই নলের মধ্যে যখন পারদের উচ্চতা বাড়ে সূচক দুটি ওপরে উঠে যায়, কিন্তু পারদের উচ্চতা কমলেও সূচক দুটি নীচে নামে না। এর কারণ, স্প্রিং লাগানো থাকে বলে সহজেই নলের গায়ে আটকে যায়। U-আকৃতির ওই কাচের নলের দুই বাহুর দু-দিকে সেলসিয়াস ও ফারেনহাইট স্কেল আঁকা থাকে। এর মধ্যে বামদিকের নলের অর্থাৎ লঘিষ্ঠ থার্মোমিটারের দু-দিকের তাপমান স্কেল ওপর থেকে নীচের দিকে বাড়ে এবং ডানদিকের নলে বা গরিষ্ঠ থার্মোমিটারের তাপমান স্কেল নীচে থেকে ওপরের দিকে বাড়ে।  

সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন উয়তা নথিভুক্ত করার পদ্ধতি: U-আকৃতির কাচের নল বা টিউবটির ডানদিকের বাহুর অর্থাৎ গরিষ্ঠ থার্মোমিটারের সূচকটির ( I2)     নিম্নপ্রান্তের অবস্থান দেখে সর্বোচ্চ উয়তা ও বামদিকের বাহুর অর্থাৎ লঘিষ্ঠ থার্মোমিটারের সূচকটির (I1) নিম্নপ্রান্তের অবস্থান দেখে সর্বনিম্ন উন্নতা নথিভুক্ত করা হয়। সাধারণত প্রতি 24 ঘণ্টা অন্তর নির্দিষ্ট সময়ে বায়ুমণ্ডলের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উন্নতা নথিভুক্ত করা হয়। প্রতিদিন এভাবে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উয়তা নথিভুক্ত করার পর, পরের দিনের সঠিক উয়তা পাবার জন্য চুম্বকের সাহায্যে সূচক দুটিকে ( I1 এবং I2 ) দুই বাহুর পারদপ্রান্তে লাগিয়ে দিতে হয়।

10. ভূমির উচ্চতা কীভাবে বায়ুর তাপ নিয়ন্ত্রণ করে? অথবা, উচ্চস্থান শীতল হয় কেন? অথবা, নিম্নের সমভূমি অপেক্ষা ওপরের পার্বত্য অঞ্চল শীতলতম কেন?

উত্তর: বায়ুর তাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমির উচ্চতার প্রভাব: বায়ুমণ্ডলের সর্ব নিম্নস্তরে অর্থাৎ ট্রপোস্ফিয়ারের মধ্যে ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে বায়ুর তাপমাত্রা হ্রাস পায়। বায়ুর তাপমাত্রার এই হ্রাসকে বলা হয় তাপমাত্রার স্বাভাবিক হ্রাস হার (normal lapse rate of temperature)। 

 তাপমাত্রা হ্রাসের এই হার হল প্রতি 1000 মিটারে প্রায় 6.4°সে। এজন্য একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও সমতল স্থানের তুলনায় উঁচু স্থানের তাপমাত্রা কম হয়। উদাহরণ-উগান্ডার রাজধানী কাম্পালা (উচ্চতা 1190 মি) এবং ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো (উচ্চতা 2850 মি) প্রায় একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও উচ্চতা বেশি হওয়ায় কাম্পালার চেয়ে কুইটোর গড় তাপমাত্রা 8.5°সে কম। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণগুলি হল-

1. ওপরে বিকিরণ কম: সূর্যতাপে বায়ুমণ্ডল সরাসরি বিশেষ উয় হয় না। সূর্যতাপে প্রথমে ভূপৃষ্ঠ উয় হয় এবং পরে ওই উয় ভূপৃষ্ঠ থেকে তাপ বিকিরণের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল উয় হয়। এজন্য ভূপৃষ্ঠ থেকে ক্রমশ ওপরের দিকে তাপমাত্রা কমে যায়।

2. বায়ুর ঘনত্ব কম: ভূপৃষ্ঠ থেকে যত ঊর্ধ্বে ওঠা যায় তত বায়ুমণ্ডলীয় ভর কমে। বায়ুস্তরের ঘনত্ব কমে যাওয়ার জন্য বায়ুর তাপ ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পায়। এর ফলে তাপমাত্রা কম হয়।

 3.বিকীর্ণ তাপ কম পৌঁছোয়: ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপের খুব কম অংশই ওপরে পৌঁছোয়।

4. তাপশোষণ কম: ওপরের বায়ুতে ধূলিকণা ও জলীয় বাষ্প কম থাকে বলে ওই বায়ুর তাপ শোষণ ও সংরক্ষণ ক্ষমতাও কম।

5. পাতলা বায়ুস্তর: বায়ুস্তর ক্রমশ ওপরের দিকে পাতলা হয়ে যায়। তাই ঊর্ধ্বের বায়ু তাড়াতাড়ি প্রসারিত হয় এবং তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়। এর ফলে উচ্চস্থান শীতল হয় এবং সুউচ্চ পর্বতশিখর তুষারাবৃত থাকে।

11. কী কারণে বায়ুমণ্ডল উয় হয়?

উত্তর: বায়ুমণ্ডল উয় হওয়ার কারণ: বায়ুমণ্ডলের তাপের প্রধান উৎস সূর্য। সূর্যের তাপ ও ভিন্ন আরও কারণে বায়ুমণ্ডল উয় হয়। এই কারণগুলি হল-

① ইনসোলেশন: ইনসোলেশনের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠের জলভাগ ও স্থলভাগ উত্তপ্ত হয় এবং উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে এসে বায়বীয় কণাগুলিও উত্তপ্ত হয়।

② ভূপৃষ্ঠের তাপ বিকিরণ: ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরণের প্রভাবে নির্গত উত্তাপও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে।

③ ওজোনোস্ফিয়ারের উপস্থিতি: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বাংশের ওজোনোস্ফিয়ারে ওজোন কর্তৃক সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির শোষণের ফলেও বায়ুমণ্ডল উয় হয়।

④ তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ বিকিরণ: ভূপৃষ্ঠ থেকে ইউরেনিয়াম,থোরিয়াম প্রভৃতি তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ বিকিরণের ফলে বায়ুমণ্ডল উয় হয়।

এ ছাড়া, ⑤ আগ্নেয়গিরি, ⑥ প্রস্রবণ প্রভৃতির মাধ্যমে নির্গত ভূগর্ভের তাপ,  ⑦ শিলার রাসায়নিক আবহবিকার,  ⑧ প্রাণীদেহ থেকে নির্গত তাপ প্রভৃতি বায়ুমণ্ডলে মিশে উয়তা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

12. কোনো স্থানের উয়তা নির্ণয়ের পদ্ধতিগুলি কী?

উত্তর: কোনো স্থানের উয়তা নির্ণয়ের পদ্ধতি: বায়ুর উয়তা পরিমাপক যন্ত্র হল থার্মোমিটার। সাধারণ সিক্সের লঘিষ্ঠ ও গরিষ্ঠ থার্মোমিটারের সাহায্যে কোনো স্থানের দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উয়তা, দৈনিক, মাসিক ও বার্ষিক গড় উন্নতা, উয়তার প্রসর ইত্যাদি নির্ণয় করা হয় এবং এগুলি নির্ণয়ের পদ্ধতি হল-

① কোনো স্থানে দিনের গড় উয়তা

= দিনের সর্বোচ্চ উয়তা + ওই দিনের সর্বনিম্ন উয়তা /2

② কোনো স্থানে মাসিক গড় উয়তা = প্রতিদিনের গড় উয়তার সমষ্টি / মাসের দিনসংখ্যা 

③ কোনো স্থানে বার্ষিক গড় উয়তা = 12 মাসের গড় উন্নতার সমষ্টি / 12

 ④ উয়তার প্রসর = সর্বোচ্চ উয়তা – সর্বনিম্ন উয়তা

13. বায়ুর উয়তা পরিমাপ করা হয় কীভাবে?

উত্তর: বায়ুর উয়তা পরিমাপের পদ্ধতি: বায়ুর উন্নতা পরিমাপ করা হয় থার্মোমিটার বা তাপমান যন্ত্রের সাহায্যে। এই তাপমান যন্ত্রে ফারেনহাইট স্কেল এবং সেলসিয়াস স্কেল-উভয় পদ্ধতিতেই উন্নতা পরিমাপ করা যায়। ফারেনহাইট থার্মোমিটারের হিমাঙ্ক 32°ফা এবং স্ফুটনাঙ্ক 212°ফা। সেলসিয়াস থার্মোমিটারের হিমাঙ্ক ০°সে এবং স্ফুটনাঙ্ক 100°সে। দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উন্নতা পরিমাপ করার জন্য গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়। কোনো দিনের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন উন্নতা থেকে ওই দিনের গড় উয়তা নির্ধারণ করা যায়। একইভাবে, 30/31 দিনের গড় উন্নতা থেকে মাসের গড় উয়তা এবং 12 মাসের গড় উয়তা থেকে বছরের গড় উন্নতা নির্ধারণ করা যায়।

14. পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বায়ুর উয়তার কী কী বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়?

উত্তর:পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বায়ুর উয়তার বৈশিষ্ট্য: পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বায়ুর উয়তার কতকগুলি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। এই বৈশিষ্ট্যগুলি হল-

① অঞ্চলভেদে উয়তার পার্থক্য: নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুর উয়তা সবচেয়ে বেশি এবং মেরু অঞ্চলে উয়তা সবচেয়ে কম।

② অঞ্চলভেদে উয়তার প্রসর: নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারাবছর উন্নতা প্রায় সমান থাকে, ফলে উয়তার প্রসর নেই বললেই চলে। কিন্তু মেরু অঞ্চলে শীতকাল ও গ্রীষ্মকালের মধ্যে উন্নতার পার্থক্য খুব বেশি।

③ পৃথিবীর বার্ষিক গতির প্রভাব: পৃথিবীর বার্ষিক গতির জন্য জানুয়ারি মাসে দক্ষিণ গোলার্ধে এবং জুলাই মাসে উত্তর গোলার্ধে উয়তা বেশি হয়।

④ উচ্চতার তারতম্য: উচ্চতার তারতম্যের জন্য বায়ুর উন্নতার তারতম্য ঘটে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড়ে প্রতি 1 কিমি উচ্চতায় প্রায় 6.4° সে হারে উন্নতা কমে যায়।

⑤ উয় ও শীতল স্রোত প্রবাহের প্রভাব: উয় সমুদ্রস্রোতসংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলে বায়ুর উয়তা বেশি এবং শীতল সমুদ্রস্রোতসংলগ্ন অঞ্চলে বায়ুর উন্নতা কম হয়।

⑥ উয় ও শীতল বায়ুপ্রবাহের প্রভাব: কোনো অঞ্চলের ওপর দিয়ে উয় বায়ু প্রবাহিত হলে স্থানটির উয়তা বৃদ্ধি পায় এবং শীতল বায়ু প্রবাহিত হলে উন্নতা হ্রাস পায়।

15. সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল?

উত্তর: সূর্যরশ্মির তাপীয় ফলের নির্ভরশীল বিষয়: সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল কতকগুলি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, যেমন-

① সূর্যরশ্মির পতনকোণ: পৃথিবীর নিম্ন অক্ষাংশে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে বলে সেখানে তাপীয় ফল বেশি, কিন্তু উচ্চ অক্ষাংশগুলিতে সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পড়ে বলে সেখানে তাপীয় ফল কম।

② পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে দূরত্ব: পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথের জন্য বছরের বিভিন্ন সময়ে পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে দূরত্বের যে হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে, তার ফলে সূর্যরশ্মির তাপীয় ফলের হ্রাসবৃদ্ধি হয়।

③ সূর্যালোকের স্থিতিকাল: পৃথিবীর যে সমস্ত জায়গায় বেশিক্ষণ ধরে সূর্যালোক পড়ে সেখানকার তাপীয় ফল বেশি, আর যেখানে সূর্যালোক পাওয়া যায় না বা কম পাওয়া যায় সেখানে তাপীয় ফল কম।

④ বায়ুমণ্ডলের স্বচ্ছতা,

 ⑤ সৌরধ্রুবক,

 ⑥ সৌরকলঙ্ক প্রভৃতি বিষয়গুলি সূর্যরশ্মির তাপীয় ফলকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করে।

16. তাপমণ্ডল বা তাপবলয় বলতে কী বোঝ? ভূপৃষ্ঠে কী কী তাপমণ্ডল আছে?

উত্তর: তাপমণ্ডল বা তাপবলয়: নিরক্ষরেখা থেকে দুই মেরুর দিকে সূর্যরশ্মির পতনকোণ ও সূর্যরশ্মির স্থায়িত্বকালের পার্থক্যের জন্য তাপমাত্রার তারতম্য হয়। উচ্চ অক্ষাংশে কম তাপমাত্রা এবং নিম্ন অক্ষাংশে বেশি তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হয়। এইভাবে অক্ষাংশভেদে তাপমাত্রার তারতম্য হয় বলে অক্ষাংশ বরাবর গোলাকার পৃথিবীকে কয়েকটি সমতাপযুক্ত অঞ্চলে ভাগ করা হয়, যেগুলি বলয়ের আকারে পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে। সেই সমতাপযুক্ত অঞ্চলগুলিকেই বলে তাপমণ্ডল বা তাপবলয়।

[◆ তাপমণ্ডলের শ্রেণিবিভাগ: ভূপৃষ্ঠে মোট পাঁচটি তাপমণ্ডল আছে, এগুলি হল-উয়মণ্ডল (0°-23/½° উ. ও দ.), উত্তর নাতিশীতোয়মণ্ডল (23/½°-66½° উ.), দক্ষিণ নাতিশীতোয়মণ্ডল (23/½°-66½° দ.),উত্তর হিমমণ্ডল (66½°-90° উ.) এবংদক্ষিণ হিমমণ্ডল (66½°-90°দ.)।

Topic-B-র দীর্ঘ উত্তরধর্মী ও নং প্রশ্নের উত্তরের চিত্রটি দ্যাখো।

17. পৃথিবীকে বিভিন্ন তাপমণ্ডলে ভাগ করো।

উত্তর: পৃথিবীর তাপমণ্ডল: Topic-B-র দীর্ঘ উত্তরধর্মী ২নং প্রশ্নের উত্তরটি সংক্ষেপে লেখো।

18. উয়মণ্ডল সৃষ্টির কারণ নির্দেশ করো।

উত্তর: উল্লমণ্ডল সৃষ্টির কারণ: নিরক্ষরেখার উভয় দিকে 23½° অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত স্থান অর্থাৎ কর্কটক্রান্তিরেখা ও মকরক্রান্তিরেখার মধ্যবর্তী অঞ্চল উন্নমণ্ডল নামে পরিচিত। এই উন্নমণ্ডল সৃষ্টির কারণগুলি হল-

① সূর্যরশ্মির পতনকোণের পার্থক্য: এখানকার প্রতিটি স্থানে বছর অন্তত দু-দিন মধ্যাহ্নে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে এবং বছরের অন্যায় দিনেও সূর্যরশ্মি বেশি তির্যকভাবে পড়ে না। প্রকৃতপক্ষে এই অণ্য সূর্যরশ্মির পতনকোণ 43°-90° থাকায় তাপীয় ফলের পরিমাণ ভূপুজে সুর্যর 

যে-কোনো অঞ্চলের তুলনায় বেশি। সূর্যরশ্মি যত লম্বভাবে বৃদ্ধ পতিত হয় ততই সেই রশ্মি 

বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে কম দূরত্ব অতিক্র করে এবং এর ফলে বায়ুর বিভিন্ন উপাদান দ্বারা ওই রশ্মির প্রতিফল্মও বিচ্ছুরণ ও শোষণ কম হয়। এজন্য সূর্যতাপে এই অঞ্চল বেশি উন্ন হা

② দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি: এই অঞ্চলে সারাবছর দিনরাজি দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি খুব কম হয়। তাই সারাবছর এই অঞ্চলে বায়ুর উন্নয় অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি থাকে এবং এজন্যই এই অঞ্চলটির নও উয়মণ্ডল বা গ্রীষ্মমণ্ডল। সারাবছর এখানকার গড় তাপমাত্রা থাকে প্রয় 27°সে। এজন্য 27° সমোয়রেখাকে অনেকসময় উল্লমণ্ডলে সীমারেখা ধরা হয়। সেক্ষেত্রে নিরক্ষরেখার উত্তরে ও দক্ষিণে 30° অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত স্থানসমূহও উয়মণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত হবে।

19. এল নিনো বলতে কী বোঝ? পৃথিবীব্যাপী তার প্রভাব কতখানি?

উত্তর: এল নিনো: স্পেনীয় শব্দ ‘এল নিনো’র ইংরেজি অর্থ ‘Chris Child’ এবং বাংলায় ‘শিশু খ্রিস্ট’। অনেকে আবার একে ‘Little boy’ ‘ছোট্ট ছেলে’ বলেন। সাধারণভাবে বলা যায়, ক্রান্তীয় প্রশান্ত মহাসাগরে পূর্বপ্রান্তে পেরু, ইকুয়েডরের পশ্চিম উপকূল দিয়ে কোনো কোনো বন্ধ ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে, বিশেষত ক্রিসমাসের সময় উত্তরমুখী শীতল দে স্রোতের পরিবর্তে যে উয় বিপরীতমুখী বা দক্ষিণমুখী স্রোত প্রবাহিত হয় তাকে এল নিনো বলে। এল নিনোর ফলে বায়ুমণ্ডলের উয়তা বেড়ে যায়। 

• পৃথিবীব্যাপী এল নিনোর প্রভাব

① বন্যার সৃষ্টি: এল নিনোর প্রভাবে পেরু ও ইকুয়েডরে প্রচুর বৃষ্টিপায় হয়। যার ফলে সেখানে বন্যার সৃষ্টি হয়।

② মরুভূমির আবহাওয়া বদল: চিলির আটাকামা মরুভূমিতে এল নিনোর প্রভাবে শুষ্ক আবহাওয়ার বদলে সেখানে আর্দ্র আবহাওয়া বিরাজ করে। 

 ③ দাবানলের সৃষ্টি: আমাজন নদী অববাহিকা, মধ্য আমেরিকা,অস্ট্রেলিয়ায় শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে বলে দাবানলের সৃষ্টি হয়।

④ খরার প্রাদুর্ভাব: এল নিনোর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সম্পর্ক রয়েছে বলে আবহবিদগণ মনে করেন। তাই যে বছরগুলিতে এল নিনো হয় সেই বছরগুলিতে ভারতে খরা দেখা দেয়।

⑤ প্রবাল কীটের উপর প্রভাব: এল নিনোর প্রভাবে মধ্য ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলে অধিকাংশ প্রবাল কীটের মৃত্যু হয়।

20. লা নিনা বলতে কী বোঝ? এর প্রভাব লেখো।

উত্তর: লা নিনা: স্পেনীয় শব্দ ‘লা নিনা’র ইংরেজি অর্থ ‘The little girl’, বাংলায় ‘ছোটো মেয়ে’, যা El Nino (The little boy)-র ঠিক বিপরীত। কোনো কোনো বছর প্রশান্ত মহাসাগরের পেরু উপকূলে স্বাভাবিক। পেরু বা হামবোল্ড স্রোতের পরিবর্তে অতিশীতল উত্তরমুখী স্রোতের আবির্ভাব ঘটে। এই অতিশীতল সমুদ্রস্রোতকে ‘লা নিনা’ বলা হয়। লা নিন পেরু উপকূলে বায়ুর উচ্চচাপকে শক্তিশালী করে থাকে।

লা নিনার প্রভাব

① প্রবল বৃষ্টিপাত: লা নিনার প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমভাগ-সহ দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায় প্রবল বৃষ্টিপাত হয়।

② খরার প্রাদুর্ভাব: দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে লা নিনার প্রভাবে খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

③ শুষ্ক আবহাওয়া: আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিমভাগে লা নিনার প্রভাবে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে।

④ শীতের তীব্রতা: লা নিনার প্রভাবে কানাডায় শীতের তীব্রতা বাড়ে এবং প্রচুর তুষারপাত হয়।

⑤ ঘূর্ণবাতের সংখ্যা: লা নিনার প্রভাবে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায় ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের সংখ্যা বাড়ে।

21. বিশ্ব উন্নায়ন বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ধারণা: সৌরশক্তি ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে বায়ুমণ্ডল ভেদ করে ভূপৃষ্ঠে এসে পড়ে এবং তার ফলে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়। এরপর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত ও বিকিরিত সূর্যরশ্মি দীর্ঘ তরঙ্গরূপে মহাশূন্যে ফিরে যায়। Doy’? এইভাবে পৃথিবীতে তাপের একটা সমতা তৈরি হয়। কিন্তু মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত ক্রিয়াকলাপের ফলে বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, ওজোন, নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতি গ্রিনহাইস গ্যাসের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্তভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সৌররশ্মি দীর্ঘ তরঙ্গরূপে মহাশূন্যে ফেরার সময় এই গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির দ্বারা শোষিত হওয়ায় নিম্ন বায়ুমণ্ডলের উন্নতা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর স্বাভাবিক উন্নতা অপেক্ষা এরূপ ক্রমবর্ধমান ও অস্বাভাবিক উয়তা বৃদ্ধিকে বিজ্ঞানীরা বিশ্ব উন্নায়ন বা Global Warming নামে অভিহিত করেছেন।

22. বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস এফেক্ট কীভাবে সৃষ্টি হয়?

উত্তর: বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস এফেক্ট সৃষ্টির পদ্ধতি: শীতপ্রধান নি দেশগুলিতে উয়মণ্ডলের ফসল চাষের জন্য খোলা বাগানের মধ্যে স্বচ্ছ কাচের যে ঘর তৈরি করা হয়, তার নাম গ্রিনহাউস। ক্ষুদ্র তরঙ্গের মাধ্যমে আসা সূর্যরশ্মি গ্রিনহাউসের কাচের দেয়াল দিয়ে সহজে ভেতরে প্রবেশ করলেও দীর্ঘ তরঙ্গরূপে প্রতিফলিত সূর্যরশ্মি কাচ ভেদ করে বেরিয়ে যেতে

পারে না। ফলে গ্রিনহাউসের মধ্যে উচ্চ তাপমাত্রা বজায় থাকে। একই রকমভাবে তাপমাত্রা ধরে রাখে বলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে একটি বিশাল গ্রিনহাউসরূপে কল্পনা করা যায়। সেক্ষেত্রে বায়ুমন্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, জলীয় বাষ্প প্রভৃতি গ্যাসগুলি (গ্রিনহাউসের কাচের দেয়ালের মতো) উয়তা ধরে রাখতে পারে বলে ভূপৃষ্ঠের তাপীয় বিকিরণকে বাধা দেয় এবং এইভাবে বায়ুমণ্ডলের উয়তা বৃদ্ধি ঘটিয়ে গ্রিনহাউস এফেক্ট সৃষ্টি করে। এজন্য এই গ্যাসগুলিকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলে। আর তাই বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, জলীয় বাষ্প, নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতি গ্যাসের জোগান তথা ঘনত্ব যত বাড়ে, বিশ্বের গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধিও তত দ্রুত হয় অর্থাৎ গ্রিনহাউস এফেক্টও তীব্র হয়।

23. সমোয়রেখা কাকে বলে ও এর বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: সংজ্ঞা: ভূপৃষ্ঠের একই তাপমাত্রাবিশিষ্ট স্থানগুলিকে মানচিত্রে যে রেখা দ্বারা যুক্ত করা হয়, তাকে সমোয়রেখা বলে। সমোয়রেখা অঙ্কনের সময় প্রতিটি স্থানের তাপমাত্রাকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উন্নতায় পরিবর্তিত করা হয়। এজন্য উঁচুতে অবস্থিত স্থানগুলির উয়তার সঙ্গে প্রতি হাজার মিটার উচ্চতায় 6.4°সে হারে উয়তা যোগ করা হয়।

সমোয়রেখার বৈশিষ্ট্য: ① একই অক্ষাংশ বরাবর সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল প্রায় একইরকম হয় বলে সমোয়রেখাগুলি সাধারণত অক্ষরেখার কে সমান্তরালে বিস্তৃত হয়।

 ② নিরক্ষরেখা থেকে দুই মেরুর দিকে তাপমাত্রা ভা। ক্রমশ কমতে থাকে বলে সমোয়রেখার মানও ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। এর

 ③ সমুদ্রের ওপর দিয়ে প্রসারিত সমোয়রেখাগুলি সাধারণত একে অপরের এন সমান্তরালে এবং স্থলভাগের ওপর খানিকটা এঁকেবেঁকে বিস্তৃত হয়। এর

 ④ উয়তম ও শীতলতম মাসের তাপমাত্রা বোঝাতে মানচিত্রে সাধারণত প জুলাই ও জানুয়ারি মাসের সমোয়রেখা আঁকা হয়।

24. বৈপরীত্য উত্তাপ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: স্বাভাবিক ধারণা: বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে অর্থাৎ ট্রপোস্ফিয়ারে ভূপৃষ্ঠ থেকে ক্রমশ ওপরের দিকে অর্থাৎ উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে তাপমাত্রা হ্রাস পায় (প্রতি 1000 মিটার উচ্চতায় প্রায় 6.4 °সে হারে)। তাপমাত্রার এই হ্রাসকে তাপমাত্রার স্বাভাবিক হ্রাসের হার (Normal lapse rate of temperature) বলা হয়।

বিপরীত ধারণা: কিন্তু কোনো কোনো সময় উচ্চতা বাড়লেও উয়তা না কমে বরং বেড়ে যায়। একে বলা হয় বৈপরীত্য উত্তাপ (Inversion of ■temperature)।

কারণ: সাধারণত পার্বত্য উপত্যকার শান্ত মেঘমুক্ত রাতে পর্বতের ওপর । একই অংশের বায়ু দ্রুত তাপ বিকিরণ করে খুব ঠান্ডা ও ভারী হয় এবং মাধ্যাকর্ষণ বিশাল শক্তির প্রভাবে পর্বতের ঢাল বরাবর নীচের উপত্যকায় নেমে আসে। (এই বায়ুকে বলা হয় ক্যাটাবেটিক বায়ু)। অন্যদিকে, সারাদিন ধরে উয় হওয়া পর্বত পাদদেশের বায়ু হালকা হয়ে উপত্যকার ঢাল বেয়ে ঊর্ধ্বগামী হয়। (এই বায়ুকে বলা হয় অ্যানাবেটিক বায়ু)। ফলে, উপত্যকার নীচু অংশের উত্তাপ পর্বতের ওপর অংশের তুলনায় অনেক কম হয়।

প্রভাব: এজন্য ইউরোপের অনেক জায়গায় লোকবসতি ও কৃষিকাজ উপত্যকার নীচের দিকে না হয়ে পর্বতের ওপরের ঢালে হতে দেখা যায়।

25. পৃথিবীতে তাপের অনুভূমিক বণ্টন সম্পর্কে কী জান?

উত্তর: পৃথিবীতে তাপের অনুভূমিক বণ্টন: বছরের বিভিন্ন সময়ে ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে সূর্যের পতনকোণের পার্থক্য, অক্ষাংশের তারতম্য ইত্যাদি কারণের ওপর পৃথিবীর তাপের অনুভূমিক বণ্টন নির্ভর করে। জানুয়ারি এবং জুলাই মাসে উন্নতার চরমভাব লক্ষ করা যায়। সে কারণে পৃথিবীর নানা জায়গায় এই দুটি মাসের সমোন্নরেখা বিশ্লেষণ করে উয়তার অনুভূমিক বণ্টন সম্পর্কে জানতে পারা যায়। যেমন-নিম্ন অক্ষাংশে গড় বার্ষিক উয়তা সবচেয়ে বেশি এবং মেরুর দিকে সবচেয়ে কম হয়। উত্তর গোলার্ধে জানুয়ারি মাসে তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে। দক্ষিণ গোলার্ধে একই সময় তাপমাত্রা বেশি থাকে।দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হয় জুলাই মাসে কুমেরু মহাদেশে। এই সময় উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে। উত্তর গোলার্ধে জুলাই মাসে সর্বাধিক তাপমাত্রা হয় উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে। উত্তর গোলার্ধে জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন উয়তা পরিলক্ষিত হয় উত্তর আমেরিকার উত্তরাংশে, গ্রিনল্যান্ডে এবং রাশিয়ার পূর্বভাগে সাইবেরিয়ায়।

26. উয় মরু অঞ্চলে দিনের বেলায় প্রচণ্ড উত্তাপ ও রাতের বেলা খুত্ব হয়। কম উত্তাপ থাকে কেন?

উত্তর: উয় মরু অঞ্চলে দিনের বেলায় প্রচণ্ড উত্তাপ ও রাতের বেলা খুদ্ধ কম উত্তাপ থাকার কারণ: সাধারণভাবে বলা যায়, আকাশে মেঘের আবর না থাকলে দিনের বেলা সূর্যরশ্মি বায়ুমণ্ডল ভেদ করে ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে তোলে এবং রাতের বেলা আবার ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত এই তাপ দীর্ঘতরঙ্গরূপে মহাশূন্যে ফিরে যায়। অর্থাৎ দিনের বেলা যেমন উত্তাপ বাড়ে তেমনই রাতের বেলা উত্তাপ কমে। যেমন-উয় মরু মেয়ে বায়ুমণ্ডল দিনের বেলা প্রচন্ড উত্তপ্ত হয় কিন্তু রাতের বেলা সেখানে উত্তাপ পরি খুব কম থাকে। এর কারণগুলি হল-(1) আকাশে মেঘ না থাকার জন্য দিনের বেলা সূর্যরশ্মি সরাসরি ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। ফলে মরুভূমির বালি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে যে তাপ বিকিরণ করে। আর তাতে বায়ুমণ্ডল প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয়ে যায়। সূর্যাস্তের পর মরুভূমির বালি দ্রুত তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয় এক আকাশে মেঘ না থাকার জন্য ওই বিকীর্ণ তাপ সরাসরি মহাশূন্যে চলে যায়। ফলে রাতে উত্তাপ খুবই কম থাকে এবং ঠান্ডাভাব অনুভূত হয়।  

27. মেঘাচ্ছন্ন রাত্রির তুলনায় মেঘমুক্ত রাত্রি শীতল হয় কেন?

উত্তর: মেঘাচ্ছন্ন রাত্রির তুলনায় মেঘমুক্ত রাত্রি শীতল হওয়ার কারণ

 ① দিনের বেলা আকাশে মেঘের আবরণ সূর্যরশ্মিকে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোতে বাধ দেয় এবং রাতে ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপকে মহাশূন্যে অর্থাৎ পৃথিবীর আবহমণ্ডলের বাইরে পৌঁছোতে দেয় না। ফলে, আকাশে মেঘের আবরণ থাকলে দিনের বেলা উত্তাপ কমে এবং রাতে উত্তাপ বাড়ে।কিন্তু রায়ে আকাশ যদি মেঘমুক্ত হয় তাহলে দিনের বেলা আগত তাপের পুরোটা ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত হয়ে মহাশূন্যে অর্থাৎ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে চলে যেতে পারে। এর ফলে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুস্তরও শীতল হয়। এই কারণে মেঘাচ্ছন্ন রাত্রির তুলনায় মেঘমুক্ত রাত্রি শীতল হয়।

28. নিরক্ষরেখায় অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও সাউথ কিলিমাঞ্জারোতে বরফ জমে কেন? ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটোকে ‘চিরবসন্তের দেশ’ বলে কেন? 

উত্তর: পূর্ব আফ্রিকার কিলিমাঞ্জারো পর্বত শৃঙ্গটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 5895 মিটার বা 5.89 কিমি উচ্চতায় এবং কুইটো শহরটি প্রায় 2850 মিটার বা, 2.85 কিমি ওপরে অবস্থিত। আমরা জানি, প্রতি 1000 মিটার বা 1 কিমি উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে প্রায় 6.4° সেলসিয়াস হারে তাপমাত্রা কমতে থাকে এবং নিরক্ষীয় অঞ্চলে গড় বার্ষিক তাপমাত্রা 27°সে। সুতরাং, [1] কিলিমাঞ্জারো পর্বতে 27°সে- (6.4×5.89) = -10.44°সে বা হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা থাকে। সেইজন্য কিলিমাঞ্জারো পর্বতশৃঙ্গ সবসময় বরফে ঢাকা থাকে। আবার, [2] কুইটো তার শহরে 27 °সে- (6.4 × 2.85) = 8.8 °সে তাপমাত্রা থাকে, অর্থাৎ সারাবছর ধরে এখানে মৃদু শীতল আবহাওয়া বিরাজ করে বলে একে ক্ষিণ চিরবসন্তের দেশ বলা হয়।

29. একই অক্ষরেখা বরাবর অবস্থান করা সত্ত্বেও শীতকালে বাল্টিক। উত্তর সাগরের জল বরফে পরিণত হয় কিন্তু ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পার্শ্ববর্তী সাগরের। অধিক জল জমে যায় না কেন?

 উত্তর: ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জেরসংলগ্ন সাগরের জল এবং বাল্টিক সাগর উভয়ে অনিম্ন যে অক্ষাংশে অবস্থিত তাতে সেখানে শীতকালে বরফ জমে যাওয়ার কথা। এবং কিন্তু ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পাশ দিয়ে সর্বদা উয় উপসাগরীয় স্রোত প্রবাহিত হয়। বলে, এই স্রোত ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পার্শ্ববর্তী অংশকে অনেকাংশে উয় রাখে তাই শীতকালে উত্তর সাগরের জল বরফে পরিণত হয় না। অন্যদিকে, বাল্টিক সাগর স্থলভাগ দ্বারা আবদ্ধ হওয়ার জন্য সেখানে কোনো উন্ন সমুদ্রস্রোত প্রবেশ করতে পারে না। তাই শীতকাল ওই অঞ্চলে তীব্র থাকে এবং সাগরের জল জমে যায়।

30. জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ তাড়াতাড়ি গরম হয় কেন?

উত্তর: জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ তাড়াতাড়ি গরম হওয়ার কারণ:

জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ তাড়াতাড়ি গরম হয়, এর কারণগুলি হল-

① পরিচলন পদ্ধতির প্রভাব: জলের উত্তাপ পরিচলন পদ্ধতিতে জলের উত্ত গভীরে চলে যায় কিন্তু স্থলভাগের উত্তাপ পরিচলন পদ্ধতিতে চলাচল করে না, ওপরেই সঞ্চিত থাকে।

② বিচ্ছুরণের পার্থক্য: জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ থেকে সূর্যরশ্মি কম বিচ্ছুরিত হয়, ফলে স্থলভাগ তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়।

③ তাপগ্রহণ ক্ষমতার পার্থক্য: নির্দিষ্ট ঘন একক আয়তনের জলকে 1°সে উত্তপ্ত করতে যে পরিমাণ তাপ প্রয়োজন হয়, একই বর্গ একক স্থলভাগকে 1°সে উত্তপ্ত করতে ওই তাপের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ প্রয়োজন। অর্থাৎ, স্থলভাগের তুলনায় জলভাগের তাপগ্রহণ ক্ষমতা বেশি হয়।

 ④ স্বচ্ছতার পার্থক্য: স্থলভাগ অস্বচ্ছ কিন্তু জল স্বচ্ছ, ফলে সূর্যরশ্মি জলের নীচে প্রায় 200 মিটার পর্যন্ত চলে যায়। তাই জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ দ্রুত উত্তপ্ত হয়।

31. শীতকালে মুম্বাইয়ের রাত্রির তুলনায় দিল্লির রাত্রি অধিকতর শীতল হয় কেন?

উত্তর: শীতকালে মুম্বাইয়ের রাত্রির তুলনায় দিল্লির রাত্রি অধিকতর শীতল হওয়ার কারণ: শীতকালে মুম্বাইয়ের রাত্রির তুলনায় দিল্লির রাত্রি অধিকতর শীতল হয়। এর কারণগুলি হল-

① স্থলভাগ ও জলভাগের উত্তাপের পার্থক্য: স্থলভাগের তুলনায় জলভাগ দেরিতে গরম হয় এবং দেরিতে ঠান্ডা হয়, অর্থাৎ স্থলভাগ দ্রুত গরম হয় এবং দ্রুত ঠান্ডা হয়। এজন্য সমুদ্রসংলগ্ন স্থানের আবহাওয়া সমভাবাপন্ন হয় এবং সমুদ্র থেকে দূরে আবহাওয়ার চরমভাব লক্ষ করা যায়। অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরম এবং শীতকালে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হয়। মুম্বাই আরব সাগরের তীরে অবস্থিত কিন্তু দিল্লির অবস্থান সাগর থেকে বহুদূরে। এজন্য মুম্বাইয়ের তুলনায় দিল্লির শীতকাল অনেক তীব্র।

 ② অক্ষাংশভেদে সূর্যকিরণের পার্থক্য: মুম্বাইয়ের অক্ষাংশ 19°05′ উত্তর এবং দিল্লির অক্ষাংশ 28°42′ উত্তর। অর্থাৎ অক্ষাংশ অনুসারে মুম্বাইয়ের তুলনায় দিল্লি কিছুটা উত্তরে অবস্থিত। সূর্যের আপাতগতি অনুসারে যেহেতু এই সময় সূর্য নিরক্ষরেখার দক্ষিণে লম্বভাবে কিরণ দেয় তাই উত্তর গোলার্ধের যে স্থান নিরক্ষরেখা থেকে যত দূরে থাকে সেখানে সূর্যতাপও তত কম পাওয়া যায়। মুম্বাইয়ের তুলনায় দিল্লি কিছুটা উত্তরে অবস্থিত হওয়ায় শীতকালে স্বাভাবিকভাবেই দিল্লিতে সূর্যতাপ কিছুটা কম পাওয়া যায়। তাই দিল্লির রাত্রি মুম্বাইয়ের রাত্রির তুলনায় অধিকতর শীতল হয়।

32. পার্থক্য লেখো-উয়মণ্ডল ও হিমমণ্ডল।

উত্তর: উয়মণ্ডল ও হিমমণ্ডলের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল-

বিষয়উয়মণ্ডলহিমমণ্ডল
বিস্তারনিরক্ষরেখার উভয় পার্শ্বে 23½° অক্ষাংশ অর্থাৎ কর্কটক্রান্তিরেখা (23/½° উঃ) মকরক্রান্তিরেখা (23/½° দঃ)-র মধ্যবর্তী অংশে উল্লমণ্ডল বিস্তৃত।উত্তর গোলার্ধে সুমেরুবৃত্ত থেকে (66/½° উঃ-90° দঃ)-এর মধ্যে হিমমণ্ডল বিস্তৃত।
সৃষ্টির কারণসারাবছর ধরে সূর্য মোটামুটি লম্বভাবে কিরণ দেয় বলে তাপমাত্র বেশি থাকে। আবার দিন-রাতের দৈর্ঘ্যের পার্থক্যও খুব-একটা বেশি দেখা যায় না।সারাবছর ধরে অতি তির্যকভাবে সূর্যকিরণ পায়। দুই মেরুতে 6 মাস সূর্য কিরণ পায় আবার 6 মাস সূর্যকিরণ একটানা পায় না। দিন-রাতের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য সবথেকে বেশি।
অধঃক্ষেপণবৃষ্টিপাত খুব বেশি হয়। অনেকক্ষেত্রে শিলাবৃষ্টি হয়।বৃষ্টিপাত স্পল্প হয়, তুলনায় তুষারপাত অনেক বেশি হয়। কখনও-বা স্লিট ঘটে থাকে।
উপবিভাগপ্রকৃতি অনুসারে উন্নমণ্ডল ① নিরক্ষীয়মণ্ডল এবং ② ক্রান্তীয়মণ্ডল-এই দুই উপবিভাগে বিভক্ত।গোলার্ধ অনুসারে- ① উত্তর হিমমণ্ডল ও ② দক্ষিণ হিমমণ্ডল এই দুইভাগে বিভক্ত। আবার প্রকৃতি অনুসারে- ① তুন্দ্রামণ্ডল ও ② চিরতুষারাবৃতমণ্ডল এই দুইভাগে বিভক্ত।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নাবলি

10. পৃথিবীর উত্তাপের সমতা কীভাবে বজায় থাকে?

উত্তর: পৃথিবীর উত্তাপের সমতা বজায় থাকার পদ্ধতি: সূর্য থেকে পৃথিবীতে আগত সৌররশ্মির বা সূর্যরশ্মির তাপীয় ফলের 35% (ভিন্ন ময়ে ঔপক্ষ) পৃথিবীকে উত্তপ্ত না করেই মহাশূন্যে ফিরে যায়। বাকি 65% (ভিন্ন 34%) পৃথিবীরশ্মি বা কার্যকারী সৌরবিকিরণ পৃথিবীকে ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে উত্তপ্ত করলেও রাতের বেলা পুনরায় দীর্ঘ তরঙ্গরূপে মহাশূন্যে ফিরে যায়। এর ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রার হ্রাসবৃদ্ধি হয় না ও পৃথিবীতে উত্তাপের

সমতা বজায় থাকে।  

11. উয়তার নিয়ন্ত্রক বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ধারণা: পৃথিবীপৃষ্ঠের তাপমাত্রা সর্বত্র সমান নয়। অনেকগুলি বিষয়ের ওপর পৃথিবীর নানা স্থানের তাপমাত্রা নির্ভরশীল। এইসব বিষয়গুলিকে একত্রে উয়তার নিয়ন্ত্রক বলে। উয়তার বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক: অক্ষাংশ, ভূমির উচ্চতা, বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত প্রভৃতি ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশের উয়তার নিয়ন্ত্রক।

12. কোনো স্থানের বায়ুর উয়তার তারতম্যের যে-কোনো ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ কারণ উল্লেখ করো।

উত্তর: বায়ুর উয়তার তারতম্য হওয়ার কারণ: বায়ুর উন্নতার তারতম্য হয় বিভিন্ন কারণে। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি কারণ হল- ① অক্ষাংশ, ② ভূমির উচ্চতা, ও) স্থলভাগ ও জলভাগের বণ্টন, ④ বায়ুপ্রবাহ, ⑤ সমুদ্রস্রোত এবং ভূমির ঢাল।

13. উন্নতা পরিমাপের এককগুলি কী?

উত্তর: উয়তা পরিমাপের একক: উয়তা পরিমাপের প্রধান এককগুলি হল-① ডিগ্রি সেলসিয়াস (°সে) এবং ② ডিগ্রি ফারেনহাইট (°ফা)।

14. ‘উয়তার স্বাভাবিক হ্রাস হার’ বা ‘উয়তা হ্রাসের স্বাভাবিক হার’ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: উয়তার স্বাভাবিক হ্রাসের হার: সূর্যতাপে প্রথমে ভূপৃষ্ঠ উয় হয় এবং তারপর ওই উয় ভূপৃষ্ঠ থেকে তাপ বিকির্ণ হয়ে বায়ুমণ্ডলকে উয় করে। এজন্য ভূপৃষ্ঠ থেকে ক্রমশ ওপরের দিকে উয়তা হ্রাস পায়। অর্থাৎ উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উয়তার এই হ্রাসকে উয়তার স্বাভাবিক হ্রাস হার (normal lapse rate of temperature) বলা হয়। উন্নতার স্বাভাবিক হ্রাসের হার প্রতি 1000 মিটার বা 1 কিলোমিটার উচ্চতায় প্রায় 6.4°সে। উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উন্নতা হ্রাস পায় বলেই উচ্চস্থান শীতল হয় এবং সুউচ্চ পর্বতশিখর তুষারাবৃত থাকে । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য়, উষনতার স্বাভাবিক হ্রাস হার কেবল বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে পরিলক্ষিত হয়। 

 15. উদ্বৃতার প্রসর বলতে কী বোঝ?

 উত্তর: ধারণা: কোনো স্থানে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উন্নতার পার্থক্যকে এর যায় উন্নতার প্রসর বলে। দৈনিক উন্নতার প্রসর: কোনো দিনের সর্বোচ্চ ও ত্তাপের সর্বনিম্ন উন্নতার পার্থক্যকে দৈনিক উন্নতার প্রসর বলে। মাসিক উয়তার প্রসর: একইভাবে মাসিক গড় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উয়তার পার্থক্যকে মাসিক উন্নতার প্রসর বলে। বার্ষিক উয়তার প্রসর: কোনো বছরের গড় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উয়তার মান দুটির পার্থক্যকে বার্ষিক উয়তার প্রসর বলে।

16. তাপমাত্রার প্রসরের বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: তাপমাত্রা প্রসরের বৈশিষ্ট্য: তাপমাত্রার প্রসরের বৈশিষ্ট্যগুলি হল- নিরক্ষীয় অঞ্চলে পৃথিবীর তাপমাত্রার প্রসর সবচেয়ে কম। উচ্চ অক্ষাংশে তাপমাত্রার প্রসর সবচেয়ে বেশি। ও) একই অক্ষাংশে জলভাগের ওপর তাপমাত্রার প্রসর কম কিন্তু স্থলভাগের ওপর তাপমাত্রার প্রসর বেশি হয়।

17. দৈনিক গড় উন্নতা বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ধারণা: কোনো স্থানে দিনের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন উয়তার যোগফলকে 2 দিয়ে ভাগ করলে যে ভাগফল পাওয়া যায়, সেই ভাগফলই হল ওই স্থানের দৈনিক গড় উন্নতা, অর্থাৎ এটি হল দিনের সর্বোচ্চ উয়তা ও সর্বনিম্ন উয়তার মধ্যমান। উদাহরণ: কোনো দিনের সর্বোচ্চ উয়তা 30 °সে এবং সর্বনিম্ন উয়তা 16°সে, তবে সেখানকার গড় উন্নতা হবে

30+16 2 =   46 2  =  23°সে। 

18. দৈনিক গড় উয়তার সূত্রটি লেখো।

উত্তর: দৈনিক গড় উন্নতার সূত্র:

দৈনিক গড় উয়তা = দিনের সর্বোচ্চ উয়তা দিনের সর্বনিম্ন উন্নতা2

উদাহরণ: কোনো স্থানে কোনো দিনের সর্বোচ্চ উয়তা হল 36°সে এবং সর্বনিম্ন উয়তা 24° সে। সুতরাং স্থানটির সেই দিনের গড় উয়তা বা দৈনিক গড় উন্নতা হল = (36°সে+24°সে)2 = 30° সে।

19. সিক্সের লঘিষ্ঠ ও গরিষ্ঠ থার্মোমিটার বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ধারণা: সিক্সের লঘিষ্ঠ এবং গরিষ্ঠ থার্মোমিটারের সাহায্যে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং দিনের, মাসের, বছরের গড় তাপমাত্রা ও তাপমাত্রার প্রসার নির্ণয় করা যায়। আবিষ্কার: বৈজ্ঞানিক জেমস সিক্স এই থার্মোমিটারটি তৈরি করেন।

20. বৈপরীত্য উয়তা কাকে বলে? 

উত্তর: ধারণা: Topic-B-র সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক 15নং প্রশ্নের উত্তরটি সংক্ষেপে লেখো।

21. সৌরকলঙ্ক কী?

 উত্তর: সংজ্ঞা: সূর্য একটি জ্বলন্ত গ্যাসীয়পিণ্ড। পৃথিবী থেকে মাঝে মাঝে এই সূর্যপৃষ্ঠে কিছু কালো দাগ দেখা যায়। সেই কালো দাগগুলিকেই বলে সৌরকলঙ্ক। সৌরকলঙ্ক দেখা যাওয়ার কারণ: সূর্যের অভ্যন্তরের উন্নতা প্রায় 1.5 কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং পৃষ্ঠদেশের উন্নতা প্রায় 6000° সেলসিয়াস। এজন্য ওই প্রচণ্ড উত্তপ্ত অভ্যন্তর থেকে অনবরত উত্তপ্ত গ্যাসের স্রোত বাইরের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে যেসব জায়গায় সূর্যের চুম্বকীয় ক্ষেত্র খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠে, সেখানে ওই বহির্মুখী উত্তপ্ত গ্যাসের স্রোত বাধা পায়। ফলে সেখানে উত্তাপ কিছুটা কমে যায় এবং ওই কম উত্তাপের জায়গাগুলিই পৃথিবী থেকে কালো দেখায়। যাদের সৌরকলঙ্ক নামে অভিহিত করা হয়।

22. সৌর ধ্রুবক বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ধারণা: পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বহিপ্রান্তে প্রতি একক ক্ষেত্রফলে ও নির্দিষ্ট সময়ে সূর্য থেকে যে পরিমাণ বিকিরিত শক্তি গ্রহণ করে, তাকে ■। সৌর ধ্রুবক বলে। বৈশিষ্ট্য: সৌর ধ্রুবকের পরিমাপ ল্যাঙলেতে প্রকাশ করা হয়। । ল্যাঙলে = প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে 1 ক্যালোরি। কিন্তু প্রতি লিবর্গসেন্টিমিটারে প্রতি মিনিটে 1.94 ল্যাঙলে থেকে 2.04 ল্যাঙলে পর্যন্ত বিকিরণ মাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সুতরাং সঠিক অর্থে ‘সৌর ধ্রুবক’ কোনো শ ধ্রুবক নয়।

 23. তাপ বিষুবরেখা কাকে বলে?

উত্তর: সংজ্ঞা: কোনো নির্দিষ্ট সময়ের প্রতিটি দ্রাঘিমারেখায় প্রাপ্ত সর্বোচ্চ উয়তাকে মানচিত্রে বসিয়ে যোগ করলে যে রেখা সৃষ্টি হয়, সেই রেখাকে ই তাপ বিষুবরেখা বলে। 

বৈশিষ্ট্য: যেহেতু নিরক্ষরেখা বরাবর উন্নতা সর্বাধিক তা হয়, তাই তাপ বিষুবরেখাও প্রায় নিরক্ষরেখা বরাবর প্রসারিত হয়। তবে ■ সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সময় এই রেখাটিও সামান্য উত্তর বা দক্ষিণে ব সরে যায়।

24. পৃথিবীর উয়মণ্ডল কোন্টি?

উত্তর: পৃথিবীর উল্লমণ্ডল: পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে 23/½° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যের অংশটি উয়মণ্ডলের অন্তর্গত। 

বৈশিষ্ট্য: এখানকার প্রত্যেকটি স্থানে বছরে অন্তত দু-দিন মধ্যাহ্ন সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে এবং বছরের অন্যান্য দিনেও সূর্যরশ্মি এখানে বেশি তির্যকভাবে পড়ে না। তাই এই অঞ্চলে সারাবছর বায়ুর উয়তা অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি থাকে। এখানকার গড় উন্নতা 27°সে।

 25. নাতিশীতোয়মণ্ডল কোন্টি?

উত্তর: নাতিশীতোয়মণ্ডল: পৃথিবীর 23/½°উ. ও দ. থেকে 66½° উ. ও দ. পর্যন্ত অংশকে নাতিশীতোয়মণ্ডল বলে। এখানকার গড় তাপমাত্রা 0°সে-27°সে-এর মধ্যে। 

বৈশিষ্ট্য: এই অংশকে উত্তর গোলার্ধে উত্তর – নাতিশীতোয়মণ্ডল এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ নাতিশীতোয়মণ্ডল বলা হয়। – আবার এই অংশকে উয় নাতিশীতোয়মণ্ডল ও শীতল – নাতিশীতোয়মণ্ডল-এই দুই ভাগেও ভাগ করা হয়।

26. পৃথিবীর কোন্ অংশটি হিমমণ্ডল?

উত্তর: পৃথিবীর হিমমণ্ডল: উভয় গোলার্ধে 66½° উ. ও দ. থেকে 90° উ. ও দ. পর্যন্ত অংশ হিমমণ্ডলের অন্তর্গত। বৈশিষ্ট্য: এই অংশের গড় উয়তা ০°সে-এর কম থাকে। এখানে ঋতুপরিবর্তন তেমন উল্লেখযোগ্য নয়।

27. সমোয়রেখা কাকে বলে?

 উত্তর: সংজ্ঞা: কোনো নির্দিষ্ট সময়ে ভূপৃষ্ঠের যেসকল স্থানের উয়তা এক রকম থাকে, সেই স্থানগুলিকে আবহ-মানচিত্রে যে রেখা দ্বারা যুক্ত করা হয়, সেই রেখাকে সমোয়রেখা বলে। সমোয়রেখা আঁকার সময় যে স্থানের উচ্চতা বেশি তার তাপমাত্রাকে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রায় পরিবর্তিত করে তার ভিত্তিতে সমোয়রেখা আঁকা হয়।

28. এল নিনো কী?

উত্তর: সংজ্ঞা: দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে পেরু ও ইকুয়েডরের উপকূলে কোনো কোনো বছর ক্রিসমাসের সময় শীতল পেরু স্রোতের পরিবর্তে যে দুর্বল প্রকৃতির উন্ন সমুদ্রস্রোতের আবির্ভাব ঘটে, সেই ঘটনাকে এল নিনো বলে। 

বৈশিষ্ট্য: এল নিনোর প্রভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের আবহাওয়ায় অস্বাভাবিক গোলযোগ দেখা যায়।

29. গ্রিনহাউস প্রভাব কী?

উত্তর: সংজ্ঞা: বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন প্রকার গ্রিনহাউস গ্যাসের উপস্থিতির জন্য পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনাকে গ্রিনহাউস প্রভাব বলে।

গ্রিনহাউস গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাব: বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, ক্লোরোফ্লুরোকার্বন প্রভৃতি গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি পৃথিবী থেকে প্রতিফলিত সুভ দীর্ঘ তরঙ্গের পার্থিব রশ্মিগুলিকে শোষণ করে এবং তারই প্রভাবে নিম্ন বায়ুমণ্ডলীয় তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

30. কয়েকটি গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম লেখো।

উত্তর: গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম: কয়েকটি গ্রিনহাউস গ্যাস হল-

কার্বন ডাইঅক্সাইড,মিথেন,ক্লোরোফ্লুরোকার্বন, কার্বন মনোক্সাইড, 5) নাইট্রাস অক্সাইড,জলীয় বাষ্প প্রভৃতি। এর মধ্যে কার্বন ডাইঅক্সাইড সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রিনহাউস গ্যাস।

3. কলকাতা থেকে লন্ডনের উন্নতা কম হয় কেন?

উত্তর: কলকাতা থেকে লন্ডনের উন্নতা কম হওয়ার কারণ: কলকাতার অক্ষাংশগত অবস্থান 22°34′ উত্তর এবং লন্ডনের অক্ষাংশগত অবস্থান 51°30′ উত্তর। লন্ডন 

কলকাতা শহরের তুলনায় উচ্চ অক্ষাংশে অবস্থিত হওয়ায় লন্ডনে কলকাতার তুলনায় তির্যকভাবে সূর্যরশ্মি পতিত হয়। সেই কারণে লন্ডনের উয়তা কলকাতার উন্নতার তুলনায় কম হয়।

32. ধরা যাক, কোনো বছরে কলকাতা শহরের মে মাসের প্রতিদিনের গড় উয়তার সমষ্টি 1078.6° সে। এর থেকে কলকাতা শহরের মাসিক গড় উয়তা নির্ণয় করো।

উত্তর: কোনো এক বছরের মে মাসের গড় উন্নতা নির্ণয়: 

আমরা জানি, মাসিক গড় উয়তা

=  প্রতিদিনের গড় উয়তার সমষ্টি মাসের দিনসংখ্যা

= 1078.6/31 = 34.79°সে             [: মে মাসের দিনসংখ্যা = 31 ] 

= 34.79°সে

সুতরাং, কলকাতার মে মাসের মাসিক গড় উন্নতা 34.79° সে।

33. কোনো স্থানের একটি দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে 38 deg সে ও 26 deg সে হলে, দৈনিক তাপমাত্রার প্রসর নির্ণয় করো।

উত্তর: কোনো এক স্থানের দৈনিক তাপমাত্রার প্রসর নির্ণয়: 

আমর জানি, দৈনিক তাপমাত্রার প্রসর 

= (সর্বোচ্চ তাপমাত্রা – সর্বনিম্ন তাপমাত্রা) 

= (38 – 26)° সে 

=12°সে 

 সুতরাং, ওই স্থানের দৈনিক তাপমাত্রার প্রসর 12°সে।

34. সিউড়ির এপ্রিল মাসের 12 তারিখের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 35° সে  এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 28°সে। এখন দৈনিক গড় তাপমাত্রা নির্ণয় করো।

উত্তর: সিউড়ির এপ্রিল মাসের 12 তারিখের দৈনিক গড় তাপমাত্রা হল- নির্ণয়: আমরা জানি, দৈনিক গড় তাপমাত্রা 

দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা + সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 2

 =  35+282 °সে

 =31.5°সে

 সুতরাং, সিউড়ির 12 তারিখের দৈনিক গড় তাপমাত্রা 31.5°সে।

35. গ্রীষ্মকালে সমুদ্রসংলগ্ন মুম্বাইয়ের তুলনায় দিল্লির উন্নতা বেশি সেই কেন হয়?

উত্তর: গ্রীষ্মকালে মুম্বাইয়ের তুলনায় দিল্লির গ্রীষ্মকাল উয় হওয়ার ভার কারণ: জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ দ্রুত গরম ও দ্রুত ঠান্ডা হয়, অর্থাৎ জলভাগ দেরিতে গরম ও দেরিতে ঠান্ডা হয়। এজন্য সমুদ্রোপকূলবর্তী স্থানের জলবায়ু সমভাবাপন্ন হয় এবং সমুদ্র থেকে যতই দেশের অভ্যন্তরভাগে প্রবেশ করা যায় জলবায়ুর চরমভাব তত বাড়তে থাকে। মুম্বাই সমুদ্রের ধারে অবস্থিত এবং দিল্লি সমুদ্র থেকে বহুদূরে ভারতের অভ্যন্তরভাগে অবস্থিত। এই কারণে গ্রীষ্মকালে সমুদ্রসংলগ্ন মুম্বাইয়ের তুলনায় দেশের অভ্যন্তরভাগে অবস্থিত দিল্লিতে উন্নতার চরমভাব বেশি লক্ষ করা যায়, অর্থাৎ উন্নতা বেশি হয়।

36. চিত্র সহযোগে পৃথিবীর বায়ুচাপ বলয়গুলির পরিচয় দাও। অথবা, পৃষ্ঠে কয়টি চাপ বলয় আছে? এগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

অথবা, পৃথিবীর বায়ুচাপ বলয়গুলির সৃষ্টির কারণ আলোচনা করো।

উত্তর: পৃথিবীর বায়ুচাপ বলয়: পৃথিবীতে মোট সাতটি বায়ুচাপ বলয় আছে। এদের মধ্যে ওটি নিম্নচাপ বলয় ও 4টি উচ্চচাপ বলয়। এই বায়ুচাপ বলয়গুলি হল-

এই সাতটি বায়ুচাপ বলয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল-

37. নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়

অবস্থান: নিরক্ষরেখার উভয়দিকে 5° অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত।

অপর নাম: নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রাম।

সৃষ্টির কারণ: [i] সূর্যরশ্মির লম্বকিরণ: এই অঞ্চলে সারাবছর সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে বলে বায়ু সারাবছরই উয় ও হালকা হয়।

 [ii] বায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি: এখানে জলভাগের পরিমাণ বেশি বলে বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে, ফলে বায়ু হালকা হয়।

[iii] পৃথিবীর আবর্তনের গতিবেগ: পৃথিবীর আবর্তন গতিবেগ নিরক্ষীয় অঞ্চলে সর্বাধিক হয় বলে বায়ু উত্তর ও দক্ষিণে বিক্ষিপ্ত হয়,অর্থাৎ বায়ুর ঘনত্ব কমে যায়। এর ফলে নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে।

38. – 3. কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় এবং মকরীয় উচ্চচাপ বলয়

অবস্থান: নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের উভয়দিকে প্রায় 25° থেকে 35° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত।

অপর নাম: উপক্রান্তীয় শান্তবলয়

সৃষ্টির কারণ: [i] নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ু: নিরক্ষীয় অঞ্চলের উয় ও আর্দ্র বায়ু ওপরে উঠে মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় উচ্চতার প্রভাবে ধীরে ধীরে শীতল ও সংকুচিত হয়ে 25° থেকে 35 ° অক্ষরেখা বরাবর নীচের দিকে নেমে আসে বলে এই অংশে বায়ুর ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। [ii] কোরিওলিস বলের প্রভাব: কোরিওলিস বলের প্রভাবে মেরু প্রদেশের বায়ু বিক্ষিপ্ত হয়ে উপক্রান্তীয় অঞ্চলে চলে আসে। [iii] শীতল ও ভারী বায়ু: নিরক্ষীয় অঞ্চলে এবং মেরু অঞ্চলের দিক থেকে বিক্ষিপ্ত হয়ে আসা বায়ু শীতল ও ভারী হয়ে কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তিরেখার নিকট নেমে আসে। বায়ু শীতল ও ভারী হওয়ায় এর ঘনত্বও বেশি। ফলে উচ্চচাপ তৈরি করে।

39. – 5. সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় এবং কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়

অবস্থান: দুই মেরুপ্রদেশের নিকটবর্তী অঞ্চলে অর্থাৎ 60°থেকে 90° অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত।

সৃষ্টির কারণ: [i] পৃথিবীর আবর্তনের গতিবেগ: পৃথিবীর আবর্তন বেগ দুই মেরুর তুলনায় মেরুবৃত্ত প্রদেশে অপেক্ষাকৃত বেশি। এজন্য এই অঞ্চলের বায়ু বেশি পরিমাণে বিক্ষিপ্ত হয়। ফলে বায়ুর ঘনত্ব হ্রাস পায়। [ii] বায়ুর উন্নতা বৃদ্ধি: দুই মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল ও ভারী বায়ু মেরুবৃত্ত অঞ্চলে পৌঁছালে উন্নতা বৃদ্ধির কারণে আয়তনে বেড়ে যায়। এজন্য দুই মেরুবৃত্ত প্রদেশে বায়ুর ঘনত্ব ও চাপ কম হয়।

40. – 7. সুমেরু উচ্চচাপ বলয় এবং কুমেরু উচ্চচাপ বলয় :

অবস্থান: উত্তরমেরু ও দক্ষিণমেরু সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত।

সৃষ্টির কারণ: [i] প্রবল ঠান্ডা: প্রচন্ড ঠান্ডার জন্য এই অঞ্চলের বায়ু শীতল ও ভারী হয়।

 [ii] বায়ুতে জলীয় বাষ্পের অভাব: বাষ্পীভবন খুব কম হয় বলে বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম থাকে।

[iii] বায়ুর ঘনত্ব ও চাপের বৃদ্ধি: পার্শ্ববর্তী মেরুবৃত্ত অঞ্চলের নিম্নচাপ বলয় থেকে ঊর্ধ্বগামী বায়ুর কিছু অংশ শীতল হয়ে এই অংশে নেমে আসে বলে বায়ুর ঘনত্ব ও চাপ বৃদ্ধি পায়।

42. বায়ুমণ্ডলে বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণগুলি কী কী?

উত্তর: বায়ুমণ্ডলে বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণসমূহ: বায়ুমণ্ডলে বায়ুর চাপের তারতম্য যে কারণগুলির জন্য ঘটে, সেগুলি হল-

1. উয়তার প্রভাব: ① উয়তা বৃদ্ধি ও বায়ুর চাপ: বায়ু উয় হলে প্রসারিত হয়। ফলে তার ঘনত্ব কমে যায় অর্থাৎ চাপ হ্রাস পায়। এই কারণে নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুর চাপ কম হয়। ② উন্নতা হ্রাস ও বায়ুর চাপ: উয়তা কমলে বায়ু সংকুচিত হয়, ফলে তার ঘনত্ব বাড়ে। সুতরাং, চাপও বৃদ্ধি পায়। উভয় মেরু অঞ্চলে অতিরিক্ত ঠান্ডার জন্য বায়ুর চাপ বেশি হয়।

2. বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ: জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু শুষ্ক বায়ুর তুলনায় হালকা হয় বলে এর চাপও কম হয়। এজন্য যেসব অঞ্চলের বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে সেখানে বায়ুর চাপ কম হয়।

3. উচ্চতার প্রভাব: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে উঠলে, বায়ুস্তরের গভীরতা বা বায়ুমণ্ডলীয় ভর ক্রমশ কমে যায় এবং এর ফলে বায়ুর চাপও হ্রাস পায়। এজন্য দুটি ভিন্ন উচ্চতায় অবস্থিত স্থানের মধ্যে যেটির উচ্চতা বেশি সেখানে বায়ুর চাপও অপেক্ষাকৃত কম হয়। যেমন-অসমের শিবসাগর ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং প্রায় একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও বেশি উচ্চতার জন্য দার্জিলিঙে বায়ুর চাপ শিবসাগরের তুলনায় অনেক কম থাকে।

4. পৃথিবীর আবর্তন গতির প্রভাব: পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্যও বায়ুচাপের তারতম্য হয়। যেমন- পৃথিবীর আবর্তনের গতিবেগ দুই মেরুর তুলনায় মেরুবৃত্তপ্রদেশে বেশি বলে মেরুবৃত্তপ্রদেশের বায়ু বেশি পরিমাণে বিক্ষিপ্ত হয়। এর ফলে বায়ুর ঘনত্ব কমে গিয়ে মেরুবৃত্তপ্রদেশে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে।

5. সালভাগ ও জলভাগের বণ্টন: স্থলভাগ ও জলভাগের বিপরীতধর্মী চরিত্রের প্রভাবেও বায়ুর চাপের তারতম্য হয়। দিনের বেলা জলভাগ অপেক্ষা স্থলভাগ তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়। এর ফলে ভূপৃষ্ঠের বায়ু উত্তপ্ত ও হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায় ও নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। আবার রাতেরবেলায় স্থলভাগ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়ে পড়ে এবং উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়। এইভাবে স্থলভাগ ও জলভাগের বণ্টনের জন্য চাপের তারতম্য ঘটে।

43. বায়ুর উন্নতা ও বায়ুর চাপের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: বায়ুর উয়তা ও বায়ুর চাপের সম্পর্ক: বায়ুর উন্নতা ও বায়ুর চাপ উভয়ই আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান হলেও উভয়ের মধ্যে এক বিপরীত সম্পর্ক লক্ষ করা যায়। সেগুলি হল-

1. বায়ুর উন্নতা বৃদ্ধির ফল: বায়ু যখন উয় হয় তখন তার আয়তন বাড়ে বা প্রসারিত হয়। বায়ু যখন প্রসারিত হয় তখন তার ঘনত্ব হ্রাস পায়, ফলে চাপও কমে। সুতরাং, বায়ু উয় হলে তার চাপ কমে। যেমন-নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারাবছরই সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয় বলে অঞ্চলটিতে সর্বদাই বায়ুর উয়তা বেশি থাকে। এজন্য এখানকার বায়ু প্রসারিত ও হালকা হয়ে ঊর্ধ্বগামী হয়। এর ফলে নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলে স্থায়ীভাবে নিম্নচাপ বিরাজ করে, যাকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় বলা হয়।

2. বায়ুর উম্লতা হ্রাসের ফল: বায়ুর উয়তা কমলে বায়ু সংকুচিত হয়। বায়ু যতই সংকুচিত হয়, ততই তার ঘনত্ব বাড়ে, ফলে চাপও বৃদ্ধি পায়।

সুতরাং, বায়ুর উয়তা কমলে বায়ুর চাপ বাড়ে। যেমন-সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চলে সূর্যরশ্মি অত্যন্ত তির্যকভাবে পড়ে বলে এখানে বায়ু অত্যন্ত শীতল ও সংকুচিত অবস্থায় থাকে। ফলে সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চলে বায়ুর ঘনত্ব ও চাপ খুবই বেশি হয় এবং এই অঞ্চল দুটিতে স্থায়ী উচ্চচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে। একে মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় বলা হয়।

3. বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা ও তার ফল: বায়ু উয় হলে তার জলীয় বাষ্প ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু শুষ্ক বায়ুর তুলনায় হালকা বলে বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে গেলে বায়ুর চাপ কমে যায়। যেমন-বায়ুতে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প থাকে বলে বর্ষাকালে বায়ুর চাপও কম হয়। অর্থাৎ বায়ুর উয়তা ও বায়ুর চাপের সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতিক।

44. মৌসুমি বায়ুর সাথে জেট বায়ুর সম্পর্ক কীরূপ?

অথবা, জেট বায়ুর সঙ্গে ভারতীয় মৌসুমি বায়ুর সম্পর্ক উল্লেখ করো। 

অথবা, মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে জেট বায়ুর সম্পর্ক আলোচনা করো।

উত্তর: মৌসুমি বায়ুর সাথে জেট বায়ুর সম্পর্ক: জেট বায়ু ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চ অংশ (9-12 কিমি) দিয়ে আঁকাবাঁকা বা সর্পিলাকার পথে প্রবাহিত অত্যন্ত দ্রুতগামী একটি উচ্চমণ্ডলীয় বায়ুপ্রবাহ। অন্যদিকে  মৌসুমি বায়ু ভারতীয় উপমহাদেশের ওপর প্রভাববিস্তারকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সাময়িক বায়ুপ্রবাহ। আবহবিদদের মতে এই মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে জেট বায়ুর নিবিড় একটি সম্পর্ক আছে।

1. দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ও জেট বায়ুর সম্পর্ক: ভারতে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রবেশের ওপর দুই প্রকার জেট বায়ুর প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। যথা- ক্রান্তীয় পুবালি জেট বায়ু এবং উপক্রান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়ু।

ভারতীয় উপমহাদেশে গ্রীষ্মকালে প্রবল দাবদাহের ফলে যখন একটি নিম্নচাপ অক্ষ তৈরি হয় সেইসময় মোটামুটি জুন মাস নাগাদ 12° থেকে 15° উত্তর অক্ষাংশ বরাবর একটি পুবালি জেট বায়ুর আগমন ঘটে যা প্রায় আগস্ট মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই পুবালি জেটের গতিবেগ মাত্র 100-200 কিমি/ঘণ্টা হয়। ঠিক একই সময়ে হিমালয় পর্বতের উত্তর দিক দিয়ে একটি শক্তিশালী উপক্রান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়ু তিব্বত মালভূমির ওপর দিয়ে চিনসাগর অভিমুখে প্রবাহিত হয়। অথচ এই উপক্রান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়ু অন্যসময়ে হিমালয়ের দক্ষিণ দিকে থাকে। ভারতীয় ভূখণ্ডের ওপর পুবালি জেট বায়ুর আগমন এবং উপক্রান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়ুর হিমালয়ের উত্তর দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাওয়া এই দুই ঘটনাবলি মৌসুমি বায়ুকে আহ্বান করে থাকে। পুবালি জেটের আগমন দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর ভারতে প্রবেশের পথ প্রশস্ত করে এবং মৌসুমি বিস্ফোরণ ঘটাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে উপক্রান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়ু হিমালয়ের উত্তরে সরে গিয়ে সমগ্র ভারতে মৌসুমি বায়ুর আধিপত্য কায়েম করার পথ প্রস্তুত করে দেয়। দেখা গেছে উপক্রান্তীয় পশ্চিমি জেট দেরি করে হিমালয়ের উত্তর দিকে গেলে ভারতে মৌসুমি বায়ু থমকে যায়।

2. উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু ও জেট বায়ুর সম্পর্ক: উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর আগমন এবং স্থায়িত্ব পুরোপুরিভাবে উপক্রান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়ুর সঙ্গে সম্পর্কিত। ভারতে মোটামুটিভাবে অক্টোবর-নভেম্বর মাস নাগাদ উপক্রান্তীয় জেট বায়ু পশ্চিম দিকে দিল্লি থেকে পূর্বদিকে গুয়াহাটি পর্যন্ত এলাকাজুড়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নেয়। আর এর ঠিক সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে এবং প্রত্যাবর্তনকারী মৌসুমি বায়ু হিসেবে ফিরে যায় এবং তার স্থানে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু ভারতে প্রবেশ করে। ওই উপক্রান্তীয় পশ্চিমি জেট বায়ুর সক্রিয়তার কারণে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয় 

যা উত্তর-পশ্চিম ভারতে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা হিসেবে প্রবেশ করে। দেখা গেছে উপক্রান্তীয় জেট বায়ু ভারতীয় ভূখণ্ডে মোটামুটিভাবে মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত অত্যন্ত সক্রিয় থাকে, তারপর দুর্বল হতে থাকে। মে মাসের পর এটি দুর্বল হয়ে পুনরায় হিমালয় অতিক্রম করে উত্তর পার্শ্বে চলে যায়। এভাবে দেখা যায় ভারতে বিশেষত মৌসুমি বায়ুর ওপর জেট বায়ু গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।

45. চিত্র-সহ ভূপৃষ্ঠের নিয়ত বায়ুগুলির পরিচয় দাও।

অথবা, পৃথিবীর নিয়ত বায়ুপ্রবাহগুলির উৎপত্তি ও গতিপথ চিত্র-সহ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: নিয়ত বায়ুপ্রবাহ: পৃথিবীতে ওটি স্থায়ী নিম্নচাপ ও 4টি স্থায়ী উচ্চচাপ বলয় থাকার জন্য কতকগুলি বায়ু সারাবছর ধরে ওই উচ্চচাপ বলয়গুলি থেকে নিম্নচাপ বলয়গুলির দিকে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথে প্রবাহিত হয়। এদের বলে নিয়ত বায়ু।

নিয়ত বায়ু প্রধানত তিনপ্রকার-

1.আয়ন বায়ু: উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের যথাক্রমে কর্কটীয় ও মকরীয় বা উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে যে দুটি বায়ু সারাবছর নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়, তাদের বলা হয় আয়ন বায়ু।

শ্রেণিবিভাগ: আয়ন বায়ু দু-প্রকার-[i] উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু: উত্তর গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় ফেরেলের সূত্র অনুসারে ডান দিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়। একে বলা হয় উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু। 

[ii] দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু: দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে আয়ন বায়ু নিয়মিতভাবে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় ফেরেলের সূত্র অনুসারে বাম দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়। তাই এই বায়ুর নাম দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু। 

বৈশিষ্ট্য: [i] বায়ুর গতিবেগ: উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগ বেশি বলে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ একটু কম, ঘণ্টায় 15-25 কিলোমিটার। দক্ষিণ গোলার্ধে জলভাগ বেশি থাকায় দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু ঘণ্টায় 25-35 কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হয়। [ii] প্রবাহ অঞ্চল: আয়ন বায়ু সাধারণত নিরক্ষরেখার দু-দিকে 5° থেকে 25° অক্ষরেখার মধ্যে সারাবছর প্রবাহিত হয়। [iii] প্রভাব: আয়ন বায়ুর প্রবাহপথে মহাদেশগুলির পশ্চিম দিকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পৃথিবীর বড়ো বড়ো মরুভূমিগুলি (যেমন-সাহারা, থর, কালাহারি, আটাকামা প্রভৃতি) সৃষ্টি হয়েছে।

2. পশ্চিমা বায়ু: উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে যে বায়ু দুই মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় (সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় ও কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয়)-এর দিকে সারাবছর নির্দিষ্ট পথে নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হয়, তাদের বলা হয় পশ্চিমা বায়ু।

শ্রেণিবিভাগ: পশ্চিমা বায়ু দু-প্রকার- [i] দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু: উত্তর গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে পশ্চিমা বায়ু সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় ফেরেলের সূত্রানুসারে ডান দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়। তাই এই বায়ুকে বলা হয় দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু। [ii] উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু: দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে পশ্চিমা বায়ু ফেরেলের সূত্রানুসারে বাম দিকে বেঁকে

উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। তাই এই বায়ুকে বলা হয় উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু। 

বৈশিষ্ট্য: [i] নামকরণ: পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ু পশ্চিমা বায়ু নামে পরিচিত। 

[ii] নিম্নচাপ বলয় অভিমুখী প্রবাহ: উত্তর ও দক্ষিণ উভয় গোলার্ধে 35°-60° অক্ষাংশের মধ্যে উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় অভিমুখে পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়।

[iii] বৃষ্টিপাতের আধিক্য: পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পশ্চিম অংশে বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। 

[iv] নাতিশীতোয় তৃণভূমির অবস্থান: পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পূর্বাংশে বৃষ্টির পরিমাণ ক্রমশ কমে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ নাতিশীতোয় তৃণভূমির সৃষ্টি হয়েছে। 

[v] গতিবেগ: এই বায়ুর গতিবেগ উত্তর গোলার্ধের থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে (জলভাগের বণ্টন বেশি থাকার কারণে) বেশি।

3. মেরু বায়ু: সুমেরু ও কুমেরু উচ্চচাপ বলয় থেকে যে বায়ু নিয়মিতভাবে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়, তাদের মেরু বায়ু বলে।

শ্রেণিবিভাগ: মেরু বায়ু দু-প্রকার-[i] উত্তর-পূর্ব মেরু বায়ু: উত্তর গোলার্ধের মেরু বায়ু সুমেরু দেশীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে ফেরেলের সূত্রানুসারে ডান দিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে সুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়। এর নাম উত্তর-পূর্ব মেরু বায়ু। [ii] দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু: দক্ষিণ গোলার্ধের মেরু বায়ু কুমেরু দেশীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে কুমেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে ধাবিত হওয়ার সময় ফেরেলের সূত্রানুসারে বাম দিকে বেঁকে দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু নামে প্রবাহিত হয়।

বৈশিষ্ট্য: [i] শুষ্ক প্রকৃতি: মেরু বায়ু অতিশীতল ও শুষ্ক প্রকৃতির। [ii] শীতকালীন প্রাধান্য: এই বায়ুর প্রভাব বছরের অন্য সময়ের তুলনায় শীতকালে বেশি পরিলক্ষিত হয়। [iii] তুষারপাত  ও বৃষ্টিপাত: মেরু বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পূর্ব অংশে তুষারপাত ও সামান্য বৃষ্টিপাত হয় এবং দুই মেরুবৃত্তে ভয়াবহ তুষারঝড়ের সৃষ্টি হয়।

46. বিভিন্ন প্রকার সাময়িক বায়ুপ্রবাহের পরিচয় দাও।

উত্তর: বিভিন্ন প্রকার সাময়িক বায়ুপ্রবাহ: সাময়িক বায়ু প্রধানত চারপ্রকার-

1. সমুদ্রবায়ু: জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ দ্রুত উয় ও শীতল হয় বলে দিনেরবেলা সমুদ্র অপেক্ষা সংলগ্ন স্থলভাগ বেশি উয় হয়। 

এজন্য স্থলভাগের বায়ু দ্রুত হালকা ও প্রসারিত হয়ে ঊর্ধ্বগামী হয়। এর ফলে স্থলভাগের ওপর বায়ুচাপ হ্রাস পায় এবং সমুদ্রের ওপর বায়ুচাপ কিছুটা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ স্থলভাগের ওপর সৃষ্টি হয় নিম্নচাপ এবং সমুদ্রের ওপর উচ্চচাপ। এর ফলে সমুদ্রের ওপর থেকে অপেক্ষাকৃত শীতল যে বায়ু স্থলভাগের ওই নিম্নচাপ পূরণ করার জন্য স্থলভাগের দিকে ছুটে আসে, তাকে বলা হয় সমুদ্রবায়ু।

বৈশিষ্ট্য: সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে দিনের বেলায় এই ধরনের বায়ু প্রবাহিত হয়। বিকাল ও সন্ধ্যার দিকে এর গতিবেগ সবথেকে বেশি হয়।

2.স্থালবায়ু: রাতে স্থলভাগ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে শীতল হলেও জলভাগ তখনও উয় থাকে। তাই স্থলভাগের ওপর তখন উচ্চচাপ এবং সমুদ্রের ওপর নিম্নচাপ বিরাজ করে। ওই নিম্নচাপ পূরণ করার জন্য স্থলভাগ থেকে অপেক্ষাকৃত শীতল যে বায়ু সমুদ্রের দিকে ছুটে যায়, তাকে বলা হয় স্থলবায়ু।

বৈশিষ্ট্য: এই বায়ু সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে মাঝরাতের পর বিশেষ করে শেষরাতের দিকে বা ভোরবেলা প্রবলভাবে প্রবাহিত হয়।

3. মৌসুমি বা ঋতুভিত্তিক বায়ু: গ্রীষ্ম ও শীত ঋতুতে জলভাগ ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুর উয়তা ও বায়ুচাপের পার্থক্যের জন্য যথাক্রমে জলভাগ থেকে স্থলভাগের দিকে এবং স্থলভাগ থেকে জলভাগের দিকে যে বায়ু প্রবাহিত হয় সেই বায়ুকে বলা হয় ঋতুভিত্তিক বায়ু। মৌসুমি বায়ু হল এই ধরনের সাময়িক বায়ু বা ঋতুভিত্তিক বায়ু। প্রকৃতপক্ষে এই বায়ু সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর বৃহৎ সংস্করণ।

বৈশিষ্ট্য: ভারতে গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বা গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু এবং শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু বা শীতকালীন মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়।

4.পার্বত্য ও উপত্যকা বায়ু: পার্বত্য অঞ্চলে রাতের বেলা পার্বত্য বায়ুত এবং দিনের বেলা উপত্যকা বায়ু প্রবাহিত হয়।

পার্বত্য বায়ু: শান্ত মেঘমুক্ত রাত্রিতে পর্বতের ওপর অংশের বায়ু দ্রুত তাপ বিকিরণ করে শীতল ও ভারী হয় এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে

পর্বতের ঢাল বরাবর নীচে নেমে উপত্যকার মধ্যভাগে সঞ্চিত হয়। একে বলে পার্বত্য বায়ু। ঢাল বরাবর নিম্নগামী এই পার্বত্য বায়ুকে ক্যাটাবেটিক বায়ু (Katabatic Wind, গ্রিক শব্দ Kata= down বা নীচের দিকে)-ও বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য: [i] গতিবেগ: সাধারণত রাতের বেলা এই বায়ু প্রবাহিত হলেও ভোরবেলা এর গতিবেগ সবচেয়ে বেশি হয়। [ii] বৈপরীত্য উত্তাপ: এই নিম্নগামী শীতল বায়ুর প্রভাবে উপত্যকার উপরিভাগের তুলনায় নিম্ন অংশে শীতের তীব্রতা বাড়ে, ফলে সেখানে বৈপরীত্য উত্তাপ সৃষ্টি হয়।

উপত্যকা বায়ু: দিনের বেলা সূর্যতাপে উত্তপ্ত উপত্যকার দু-দিকের ঢালের ওপরের বায়ু যে পরিমাণ উত্তপ্ত হয়, উপত্যকার মধ্যভাগের বায়ু ততটা উত্তপ্ত হয় না। এই বায়ু শীতল থাকে এবং তার ফলে উচ্চচাপের সৃষ্টি করে ও ভারী হয়ে নীচের দিকে নামে। এই নিম্নগামী বায়ুর চাপে তখন উপত্যকার দু-দিকের ঢালের বায়ু ওপরের দিকে প্রবাহিত হয়। এই ঊর্ধ্বঢাল প্রবাহী বায়ুকে বলে উপত্যকা বায়ু। এর আর এক নাম অ্যানাবেটিক বায়ু (Anabatic Wind, গ্রিক শব্দ Ana = up বা ওপরের দিকে)।

বৈশিষ্ট্য: [i] বিপরীতমুখী: উপত্যকা বায়ু হল পার্বত্য বায়ুর ঠিক বিপরীত। [ii] উচ্চ অংশে জনবসতি: ইউরোপের অনেক জায়গায় উপত্যকা বায়ুর প্রভাবে লোকবসতি ও কৃষিকাজ উপত্যকার নীচের দিকে না হয়ে পর্বতের ওপরের ঢালে গড়ে ওঠে।

47. আকস্মিক বা অনিয়মিত বায়ু সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

 অথবা, ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাত কী? এগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।  

উত্তর: আকস্মিক বা অনিয়মিত বায়ু: কোনো স্বল্প পরিসর স্থানে যদি খুব অল্প সময়ের মধ্যে বা হঠাৎই বায়ুর চাপ অত্যধিক কমে যায় বা বৃদ্ধি পায়, তাহলে সেখানে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে যেসব বায়ুপ্রবাহ হঠাৎই সেখানে আবির্ভূত হয়ে প্রবল বেগে বইতে শুরু করে; সেই সকল বায়ুপ্রবাহ কিছু সময় অবস্থানের পর হঠাৎই অন্তর্হিত হয়। এই বায়ুপ্রবাহকে আকস্মিক বা অনিয়মিত বায়ুপ্রবাহ বলে।

শ্রেণিবিভাগ

এই বায়ু প্রধানত দু-ধরনের-ঘূর্ণবাত এবং প্রতীপ ঘূর্ণবাত।

1. ঘূর্ণবাত: কোনো স্থান হঠাৎ বেশি উত্তপ্ত হলে সেখানে গভীর নিম্ন- চাপের সৃষ্টি হয়। তখন চারিদিক (উচ্চচাপযুক্ত স্থান) থেকে অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বায়ু প্রবল বেগে ওই নিম্নচাপযুক্ত কেন্দ্রের দিকে ছুটে যায় এবং ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপ কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করে। তবে কেন্দ্রে পৌঁছানোর আগেই ওই বায়ু ঊর্ধ্বগামী হয়। এই প্রবল গতিবেগ সম্পন্ন কেন্দ্রমুখী ঘূর্ণায়মান ঊর্ধ্বগামী বায়ুপ্রবাহকে বলে ঘূর্ণবাত।

বৈশিষ্ট্য: [i] বায়ুপ্রবাহের দিক: ঘূর্ণবাতের বায়ু উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার গতির বিপরীতে বা বামাবর্তে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার গতির দিকে বা দক্ষিণাবর্তে ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হয়। [ii] উপবিভাগ: গঠন ও উৎসস্থানের পার্থক্য অনুসারে ঘূর্ণবাতকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়- [a] ক্রান্তীয় অঞ্চলের ঘূর্ণবাত: উভয় গোলার্ধের ক্রান্তীয় অঞ্চলে, বিশেষত 10° অক্ষাংশ থেকে 30° অক্ষাংশের মধ্যে সাগর-মহাসাগরীয় জলভাগের ওপর উয়তা খুব বেশি বেড়ে গেলে মাঝে মাঝে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এর ফলে তখন চারপাশের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বায়ু ওই নিম্নচাপের দিকে প্রবল বেগে ছুটে যায় এবং ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে প্রবেশের চেষ্টা করে। তবে নিম্নচাপের কেন্দ্রভাগ উয় বলে আগত ওই বায়ুও ক্রমশ উয় হয়ে ওপরে উঠে যায়। এই প্রবল গতিবেগসম্পন্ন (নিম্নচাপের) কেন্দ্রমুখী ঘূর্ণায়মান ঊর্ধ্বগামী বায়ুপ্রবাহকে বলা হয় ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত। এই প্রকার ঘূর্ণবাত বঙ্গোপসাগরে সাইক্লোন, দক্ষিণ ও পূর্ব চিন সাগরে টাইফুন, ক্যারিবিয়ান সাগরে হারিকেন নামে পরিচিত। [b] নাতিশীতোয় অঞ্চলের ঘূর্ণবাত: নিরক্ষরেখার উভয়দিকে 35° থেকে 65° অক্ষাংশের মধ্যে যখন দুটি বিপরীতধর্মী বায়ু অর্থাৎ একটি উয় বায়ু

এবং অপরটি শীতল বায়ু দু-দিক থেকে ছুটে আসে, তখন দুই বায়ুর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ যখন তীব্র হয়, সংঘর্ষস্থান বা সীমান্ত ক্রমশই সংকুচিত হতে হতে শেষে, শীতল বায়ু ভারী বলে নীচের দিকে নেমে উয় বায়ুর স্থান দখল করে নেয়। এর ফলে তখন উয় বায়ু বক্রাকারে শীতল বায়ুর মধ্যে প্রবেশ করে এবং প্রবল বেগে ঘুরতে ঘুরতে ওপরে উঠে যায়। একে নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাত বলা হয়।

2. প্রতীপ ঘূর্ণবাত: অনেকসময় নাতিশীতোয়মণ্ডল ও হিমমন্ডলের কোনো স্বল্প পরিসর স্থানে তীব্র শৈত্যের জন্য প্রবল উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়। যেহেতু ওই উচ্চচাপের বাইরের দিকে থাকে নিম্নচাপ, তাই ওই উচ্চচাপযুক্ত কেন্দ্র থেকে শীতল ও শুষ্ক বায়ু বাইরের নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবল বেগে কুণ্ডলীর আকারে প্রবাহিত হয়। উচ্চচাপ কেন্দ্র থেকে বাইরের নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে এইভাবে প্রবাহিত বায়ুর নাম প্রতীপ ঘূর্ণবাত। বায়ুপ্রবাহের দিক: এই বায়ুপ্রবাহের গতি থাকে ঘূর্ণবাতের বিপরীত দিকে অর্থাৎ বহির্মুখী ও অধঃগামী এবং উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণাবর্তে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার গতির দিকে আর দক্ষিণ গোলার্ধে বামাবর্তে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার গতির বিপরীত দিকে।

9 নিয়ত বায়ু বলতে কী বোঝ? যে-কোনো একটি নিয়ত বায়ুপ্রবাহের পরিচয় দাও।  

উত্তর: নিয়ত বায়ু: ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে কতকগুলি স্থায়ী উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ বলয় থাকার জন্য কতকগুলি বায়ুও সারাবছর ধরে ওই উচ্চচাপ বলয়গুলি থেকে নিম্নচাপ বলয়গুলির দিকে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্টপথে প্রবাহিত হয়। এদের বলে নিয়ত বায়ু। ভূপৃষ্ঠে তিন প্রকার নিয়ত বায়ুপ্রবাহ লক্ষ করা যায়। এগুলি হল-① আয়ন বায়ু, ② পশ্চিমা বায়ু এবং ও মেরু বায়ু।

আয়ন বায়ু: উভয় গোলার্ধের উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে যে দুটি বায়ু সারাবছর ধরে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে প্রবাহিত হয়, সেই বায়ু দুটিকে বলা হয় আয়ন বায়ু।

অন্য নাম

‘আয়ন’ কথাটির অর্থ ‘পথ’। আগেকার দিনে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথ ধরে এই বায়ুপ্রবাহের সাহায্যে পালতোলা জাহাজে বাণিজ্য করার সুবিধা হত বলে এই বায়ুপ্রবাহকে আয়ন বায়ু বা বাণিজ্য বায়ু বলা হয়।

শ্রেণিবিভাগ

আয়ন বায়ু দু-প্রকার-

1. উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু: উত্তর গোলার্ধের উপক্রান্তীয় বা কর্কটীয় উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ছুটে যাওয়ার সময় ফেরেল-এর সূত্রানুসারে একটু ডানদিকে বেঁকে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়। একে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু বলা হয়।

2. দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু: দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় বা মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে আয়ন বায়ু নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে ছুটে যাওয়ার সময় ফেরেল-এর সূত্রানুসারে একটু বামদিকে বেঁকে দক্ষিণ- পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে একে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য

1. উত্তর গোলার্ধে প্রবাহের গতিবেগ: উত্তর গোলার্ধে স্থলভাগ বেশি থাকায় (বেশি বাধাপ্রাপ্ত হয় বলে) উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ একটু কম, ঘণ্টায় 15-25 কিলোমিটার।

2. দক্ষিণ গোলার্ধে প্রবাহের গতিবেগ: দক্ষিণ গোলার্ধে জলভাগ বেশি থাকায় (কম বাধাপ্রাপ্ত হয় বলে) দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ একটু বেশি, ঘণ্টায় 25-35 কিলোমিটার।

3. প্রবাহ অঞ্চল: আয়ন বায়ু সাধারণত নিরক্ষরেখার দু-দিকে 5° থেকে 25° অক্ষাংশের মধ্যে (অর্থাৎ দুটি গোলার্ধ মিলে 50° থেকে 60° অক্ষরেখা জুড়ে) সারাবছর প্রবাহিত হয়।

4. উন্নতা ও জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা: ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে অর্থাৎ কম উন্ন অঞ্চল থেকে বেশি উন্ন অঞ্চলে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ুর উন্নতা ও জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

জলবায়ুতে প্ৰভাৰ

1. স্থলভাগের উপর প্রবাহের জন্য উত্তর গোলার্ধে এই বায়ু বৃষ্টিপাত ঘটায় না।

2. অপেক্ষাকৃত শীতল অঞ্চল থেকে উয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয় বলে আয়ন বায়ু ক্রমশ উয় হয়। তাই আয়ন বায়ুর গতিপথে মহাদেশসমূহের পশ্চিমভাগে বৃষ্টিপাত হয় না, বড়ো বড়ো মরুভূমি (সাহারা, কালাহারি, আটাকামা, আরবীয় মরুভূমি প্রভৃতি) সৃষ্টি হয়েছে। দরকীয়

3. দক্ষিণ গোলার্ধের যেসব অংশে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু সমুদ্রের ওপর দিয়ে বয়ে আসে, সেখানে বৃষ্টিপাত হয়।

48. স্থানীয় বায়ু কাকে বলে? কয়েকটি স্থানীয় বায়ুর পরিচয় দাও।

উত্তর: স্থানীয় বায়ু: ভূপৃষ্ঠের একটি নির্দিষ্ট স্থানে যখন ভূপ্রকৃতি, মৃত্তিকা, শিলার প্রকৃতি, উদ্ভিদের আচ্ছাদন, বায়ুর উন্নতা প্রভৃতির তারতম্যে স্থানীয়ভাবে বায়ুচাপের তারতম্য হয়, তখন সেখানকার উচ্চচাপ এলাকা থেকে নিম্নচাপ এলাকার দিকে এক ধরনের বায়ু প্রবাহিত হয়। স্থানীয় কারণে উৎপত্তি হয় বলে এদের স্থানীয় বায়ু বলা হয়। বায়ুর প্রকৃতি অনুসারে স্থানীয় বায়ুকে দু-ভাগে ভাগ করা যায়-উয় বায়ু এবং শীতল বায়ু।

কয়েকটি স্থানীয় বায়ু: কয়েকটি স্থানীয় বায়ু হল

1. লু: গ্রীষ্মকালে দিনেরবেলা উত্তর-পশ্চিম ভারতের ভূভাগ যখন প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয়, তখন ওই উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে এসে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুও প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয়ে প্রবল বেগে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয়। এইরূপ প্রচণ্ড উয় ও শুষ্ক বাতাসকে বলা হয় লু। সাধারণত এই বায়ুর উন্নতা থাকে 43° সে-48° সে। গ্রীষ্মের দুপুরে বা অপরাহ্নে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যে এই ‘লু’ তাপপ্রবাহ রূপে বয়ে যায়। সন্ধ্যার পর এই বায়ুর তীব্রতা অনেক কমে যায়। তবে প্রচণ্ড উত্তপ্ত এই বায়ুর প্রভাবে মানুষ-সহ বহু গবাদিপশু মারা যায়।

2. ফন: ইউরোপের আল্পস পার্বত্য অঞ্চলের উত্তর (অনুবাত) ঢাল বেয়ে যে উয় ও শুষ্ক বায়ু নীচের দিকে নেমে রাইন নদী উপত্যকার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকেই বলে ফন বায়ু। এর ফলে কোনো কোনো সময়ে উপত্যকার উন্নতা 24 ঘণ্টার মধ্যে প্রায় 15° সে-20° সে পর্যন্ত বেড়ে যায়। এই উন্ন বায়ুর সংস্পর্শে পর্বতের বরফ গলে যায় এবং ওই বরফগলা জলে পার্বত্য উপত্যকায় তৃণভূমির সৃষ্টি হয়।

3. চিনুক: উত্তর আমেরিকার রকি পার্বত্য অঞ্চলের পূর্ব ঢাল থেকে যে উয় ও শুষ্ক বায়ু প্রেইরি সমভূমিতে নেমে আসে তার নাম চিনুক। ইংরেজি ‘chinook’ শব্দের অর্থ ‘snow eater’ বা ‘তুষার ভক্ষক’। শীতকালে এই বায়ুর প্রভাবে রকি পর্বতের পাদদেশ-সহ সমগ্র অঞ্চলের তুষার গলে যায় বলে প্রেইরি অঞ্চলে বিস্তীর্ণ তৃণভূমি সষ্টি হয়েছে।

4. সিরোক্কো: গ্রীষ্মকালে আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির উত্তরাংশ থেকে একপ্রকার অতি উয়, শুষ্ক ও ধুলোপূর্ণ বায়ু উৎপন্ন হয়ে উত্তরে ভূমধ্যসাগরের দিকে প্রবাহিত হয় এবং তারপর ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করে ইউরোপের দক্ষিণ প্রান্তে পৌঁছে যায়। ইটালির সিসিলিতে এই বায়ুকে বলে সিরোক্কো। আফ্রিকার উত্তর উপকূল পর্যন্ত এই বায়ু উয় ও শুষ্ক থাকলেও ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করার পর যথেষ্ট আর্দ্র ও মনোরম হয়ে যায় (ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করার আগে মিশরে এই বায়ুটিকেই বলে খামসিন।)

5. মিস্ট্রাল: শীতকালে ইউরোপের আল্পস পর্বত থেকে দক্ষিণে ফ্রান্সের রোন নদী উপত্যকার দিকে যে শীতল ও শুষ্ক বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে বলে মিস্ট্রাল। এটি অত্যন্ত শীতল ও শুষ্ক বায়ু। তাই এই বায়ুর প্রভাবে রোন উপত্যকার তাপমাত্রা যথেষ্ট কমে যায় এবং কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন তখন বিপর্যস্ত হয়।

6. বোরা: শীতকালে ইউরোপের আল্পস পর্বতের দক্ষিণ ঢাল বেয়ে নীচের দিকে নেমে যে শীতল ও শুষ্ক বায়ু দক্ষিণ ইটালির অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের উপকূল অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকে বলে বোরা। এই শীতল ও শুষ্ক বায়ুটির প্রভাবে অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলে তীব্র শৈত্য প্রবাহের সৃষ্টি হয় এবং তার ফলে স্বাভাবিক জনজীবন বিঘ্নিত হয়।

7. অন্যান্য স্থানীয় বায়ু: দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ অংশে আন্দিজ পর্বতের পূর্ব ঢাল থেকে যে শীতল ও শুষ্ক বায়ু পম্পাস তৃণভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকে বলে পাম্পেরো। আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিম উপকূলে যে উয়, শুষ্ক ও ধূলিপূর্ণ বায়ু প্রবাহিত হয় তাকে হারমাট্টান বলে।

49. নিয়ত বায়ু বলতে কী বোঝ? পশ্চিমা বায়ুপ্রবাহের পরিচয় দাও। 

উত্তর: নিয়ত বায়ু: ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে কতকগুলি স্থায়ী উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ বলয় থাকার জন্য কতকগুলি বায়ুও সারাবছর ধরে ওই উচ্চচাপ বলয়গুলি থেকে নিম্নচাপ বলয়গুলির দিকে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্টপথে প্রবাহিত হয়। এদের বলে নিয়ত বায়ু।

ভূপৃষ্ঠে তিনপ্রকার নিয়ত বায়ুপ্রবাহ লক্ষ করা যায়। এগুলি হল-  আয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু এবং ও) মেরু বায়ু।

পশ্চিমা বায়ু: উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের দুই উপক্রান্তীয় (কর্কটীয় ও মকরীয়) উচ্চচাপ বলয় থেকে দুই মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে সারাবছর নির্দিষ্ট পথে নিয়মিতভাবে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে পশ্চিমা বায়ু বলে।

শ্রেণিবিভাগ: পশ্চিমা বায়ু দু-প্রকার, যথা-

① দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু: উত্তর গোলার্ধের উপক্রান্তীয় (কর্কটীয়) উচ্চচাপ বলয় থেকে পশ্চিমা বায়ু সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের  দিকে ছুটে যাওয়ার সময় ফেরেল-এর সূত্রানুসারে সামান্য ডানদিকে বেঁকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়। এই বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু নামে পরিচিত।

② উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু: দক্ষিণ গোলার্ধের উপক্রান্তীয় (মকরীয়) উচ্চচাপ বলয় থেকে পশ্চিমা বায়ু কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে ছুটে যাওয়ার সময় ফেরেল-এর সূত্রানুসারে সামান্য বাঁদিকে বেঁকে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয়। এই বায়ু উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু নামে পরিচিত।

বৈশিষ্ট্য: পশ্চিমা বায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি হল-

① নামকরণ: পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ু পশ্চিমা বায়ু নামে পরিচিত।

② প্রবাহ অঞ্চল: উভয় গোলার্ধে 35°-60° অক্ষাংশের মধ্যে উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় অভিমুখে অর্থাৎ দুটি গোলার্ধ মিলে প্রায় 50° অক্ষরেখা জুড়ে পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়।

③ বায়ুর গতিবেগ ও তাদের নাম: উত্তর গোলার্ধের তুলনায় দক্ষিণ গোলার্ধে বাধা কম (জলভাগ বেশি) বলে পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগও বেশি। এজন্য দক্ষিণ গোলার্ধে সারাবছরই পশ্চিমা বায়ু প্রবল গতিতে প্রবাহিত হয়। একে বলে প্রবল বা সাহসী পশ্চিমা বায়ু। উন্মুক্ত মহাসাগরের ওপর দিয়ে প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ার সময় দক্ষিণ গোলার্ধের বিভিন্ন অক্ষরেখায় পশ্চিমা বায়ুর বিভিন্ন প্রকার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আওয়াজ শোনা যায়। এই ভিত্তিতে চল্লিশের অক্ষরেখাকে গর্জনশীল চল্লিশা, পঞ্চাশের অক্ষরেখাকে ভয়ংকর পঞ্চাশ বা পঞ্চাশিয়া এবং ষাটের অক্ষরেখাকে তীক্ষ্ণ চিৎকারকারী ষাট নামে অভিহিত করা হয়।

জলবায়ুতে প্রভাব: জলবায়ুর ওপর পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবগুলি হল-

① ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি: পশ্চিমা বায়ুর দ্বারা প্রভাবিত অঞ্চলে বেশি ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়।

② ঝড়ঝঞ্ঝার প্রভাব: সমুদ্রের ওপর দিয়ে বয়ে আসে বলে পশ্চিমা বায়ু গ্রীষ্মকালের তুলনায় শীতকালে বেশি শক্তিশালী থাকে। এই কারণে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর শীতকালে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা ঝড়ঝঞ্ঝাসংকুল অঞ্চলরূপে পরিচিত।

③ বৃষ্টিপাতের সৃষ্টি: সমুদ্রের ওপর দিয়ে বয়ে আসে বলে পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পশ্চিম দিকে বৃষ্টিপাত হয়।

④ তৃণভূমির সৃষ্টি: পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে মহাদেশগুলির পূর্বাংশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ক্রমশ কমে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ নাতিশীতোয় তৃণভূমির সৃষ্টি হয়েছে।

50. ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত কীভাবে সংঘটিত হয়?

উত্তর: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাতের পদ্ধতি: উভয় গোলার্ধের 5°-20° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যবর্তী বিস্তৃত অঞ্চলে যে ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত হয়, সেই বৃষ্টিপাত ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত নামে পরিচিত। ক্রান্তীয় অঞ্চলের সাগর-মহাসাগরের পৃষ্ঠদেশে বেশি সূর্যতাপের কারণে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। ওই নিম্নচাপের দিকে চারপাশের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে শীতল ও ভারী বায়ু ছুটে আসে। কেন্দ্রে বায়ুচাপ খুব কম থাকায় বায়ু

নিম্নচাপ কেন্দ্রে প্রবেশ না করে ঘুরতে ঘুরতে ওপরে উঠে যায়। এইরকম ঊর্ধ্বগামী বায়ু যতই ওপরে ওঠে ততই প্রসারিত ও শীতল হয় এবং শেষে ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। নিম্নচাপ যত গভীর হয় ততই বায়ুর গতি বাড়তে থাকে অর্থাৎ ঝড় সৃষ্টি হয়।। এই ঝড়ের কেন্দ্র বা চক্ষু একটি ক্ষুদ্র অঞ্চলজুড়ে অবস্থান করে। এই অঞ্চলটি শান্ত থাকে, কিন্তু এর চারিদিকে বায়ু তীব্র গতিতে প্রবাহিত হয়ে ঝড়ের সৃষ্টি করে এবং বৃষ্টিপাত ঘটায়। মুশলধারে আবার বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমনে দুর্বল ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত হয়। উয়-আর্দ্র মৌসুমি বায়ু শুষ্ক স্থলবায়ুর সংস্পর্শে এলে এই ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়। এই ধরনের দুর্বল ঘূর্ণবাত থেকে কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত হতে পারে।

উদাহরণ: 2009 সালের আয়লা, 2013 সালের ফাইলিন, 2019 সালের ফণী প্রভৃতি ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছিল।

51.পরিচলন, শৈলোৎক্ষেপ ও ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাতের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তর: পরিচালন, শৈলোৎক্ষেপ ও ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাতের মধ্যে পার্থক্য: পরিচলন, শৈলোৎক্ষেপ ও ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাতের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল-

বিষয়পরিচলন বৃষ্টিপাতশৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত
ধারণাআর্দ্র বায়ু উয় ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে এলে পরিচলন পদ্ধতিতে ওপরে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, সেই বৃষ্টিপাত পরিচলন বৃষ্টিপাত নামে পরিচিত।জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু পর্বতের গায়ে প্রতিহত হয়ে পর্বতের গা বেয়ে ওপরে উঠে গিয়ে ক্রমশ শীতল ও ঘনীভূত হয়ে পর্বতের প্রতিবাত ঢালে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, সেই বৃষ্টিপাত শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত নামে পরিচিত।নাতিশীতোয় অঞ্চলে উয় ও আর্দ্র বায়ু এবং শীতল বায়ুর সংঘর্ষে সীমান্তে অথবা ক্রান্তীয় অঞ্চলে গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের চারপাশে ঘূর্ণায়মান ঊর্ধ্বমুখী বায়ু ওপরে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায় তাকে ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত বলে।
অঞ্চলনিরক্ষীয় অঞ্চলে সারাবছর এবং ক্রান্তীয় ও নাতিশীতোয় অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে মাঝে মাঝে এই বৃষ্টিপাত হয়।যেসব অঞ্চলে পার্বত্যভূমি আছে, সেখানে এই বৃষ্টিপাত হয়।ক্রান্তীয় ও নাতিশীতোয় অঞ্চলে এই বৃষ্টিপাত হয়।
উৎপত্তির কারণযেসব অঞ্চলে জলভাগ বেশি সেখানে বেশি পরিমাণে সৌরতাপ পাওয়া গেলে জলের বাষ্পীভবনও অধিক হয় এবং তা ঊর্ধ্বগামী হয়ে পরিচলন বৃষ্টিপাত সৃষ্টি করে।জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু তার প্রবাহপথে পর্বতশ্রেণি দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হলে এই বৃষ্টিপাত হয়।নাতিশীতোয় অঞ্চলে উয়-আর্দ্র এবং শীতল-এই দুই বিপরীতধর্মী ও পরস্পর অভিমুখী বায়ুর মধ্যে সংঘর্ষ এবং ক্রান্তীয় অঞ্চলের বিস্তৃত জলভাগে হঠাৎ গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়।
সময়কালপ্রায় প্রতিদিন বিকেলে এই বৃষ্টিপাত হয়।বছরের বিশেষ বিশেষ সময়ে, বিশেষত আর্দ্র ঋতুতে এই বৃষ্টিপাত হয়।নাতিশীতোয় অঞ্চলে শীতকালে এবং ক্রান্তীয় অঞ্চলে শরৎকালে এই বৃষ্টিপাত বেশি হয়।
বৃষ্টিপাতের ধরনকিছুক্ষণ মুশলধারে বৃষ্টিপাত হয়ে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায়।কখনও অল্প, আবার কখনও অনেকক্ষণ ধরে ভারী বৃষ্টি হয়, এমনকি একটানা এক-দুই দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।এই বৃষ্টিপাত দীর্ঘস্থায়ী এবং বেশিরভাগ সময় ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়, আর বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো বাতাস বয়।
চিত্রTopic-D-র দীর্ঘ উত্তরধর্মী ও নং প্রশ্নের উত্তরের ‘পরিচলন বৃষ্টিপাত’, ‘শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত’ ও ‘ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত’ -এর চিত্রগুলি দ্যাখো।

52. ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান এবং জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

উত্তর: ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান: ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান আলোচনা করা হল-

অক্ষাংশগত অবস্থান: ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের 30°-40° অক্ষাংশের মধ্যে মহাদেশসমূহের পশ্চিমভাগে পরিলক্ষিত হয়।

মহাদেশগত অবস্থান: এই জলবায়ুর অন্তর্গত দেশ বা অঞ্চলগুলি হল-① ইউরোপ: পোর্তুগাল, স্পেন, ইটালি, গ্রিস প্রভৃতি দেশের ভূমধ্যসাগরসংলগ্ন অঞ্চলসমূহ।② এশিয়া: পশ্চিম তুরস্ক, লেবানন, ইজরায়েল, সিরিয়া প্রভৃতি দেশ। ③ আফ্রিকা: মিশর, লিবিয়া, মরক্কো, আলজিরিয়া প্রভৃতি দেশের ভূমধ্যসাগরসংলগ্ন অঞ্চলসমূহ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ উপকূল। ④ উত্তর আমেরিকা: দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া। ⑤ দক্ষিণ আমেরিকা: মধ্য চিলি। ⑥ ওশিয়ানিয়া: অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল এবং নিউজিল্যান্ডের উত্তর দ্বীপ।

ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য: ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি হল- 1. জলবায়ু: সারাবছর মাঝারি উয়তা এবং সমভাবাপন্ন জলবায়ু বিরাজ করে। 2. উল্লতা: গ্রীষ্মকালে এখানে 20° সেলসিয়াস থেকে 27 °সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকে। শীতকালে এই অঞ্চলে উয়তা থাকে 5° সেলসিয়াস থেকে 15 °সেলসিয়াস। 3. বার্ষিক উন্নতার প্রসর: এখানে বার্ষিক উন্নতার প্রসর হয় 15 °সেলসিয়াস থেকে 17° সেলসিয়াস। 4. আকাশের অবস্থা: গ্রীষ্মকাল এখানে শুষ্ক এবং এইসময় এখানকার আকাশ পরিষ্কার থাকে। এখানে ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত হয়।  5. বৃষ্টিপাত: শীতকালে আর্দ্র পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 35 থেকে 65 সেমি। 6. তুষারপাত: শীতকালে কোনো কোনো স্থানে তুষারপাত হয়।

 54. নিরপেক্ষ বা চরম বা বিশুদ্ধ আর্দ্রতা এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা বা সাপেক্ষ আর্দ্রতা কাকে বলে?

উত্তর: নিরপেক্ষ বা চরম বা বিশুদ্ধ আর্দ্রতা: একটি নির্দিষ্ট উন্নতায় নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে জলীয় বাষ্পের মোট পরিমাণকে বলা হয় নিরপেক্ষ বা চরম বা বিশুদ্ধ আর্দ্রতা।

একক: নিরপেক্ষ আর্দ্রতা গ্রাম/ঘনমিটার এককে প্রকাশ করা হয়।

আপেক্ষিক আর্দ্রতা: কোনো নির্দিষ্ট উয়তায় নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের পরিমাণ এবং ওই একই উয়তায় ওই একই আয়তনের বায়ুর সর্বোচ্চ জলীয় বাষ্প গ্রহণ করার ক্ষমতা-এই দুয়ের অনুপাতকেই বলা হয় আপেক্ষিক বা সাপেক্ষ আর্দ্রতা। আপেক্ষিক আর্দ্রতা শতকরা (%) হিসাবে এবং কাছাকাছি পূর্ণমানে প্রকাশ করা হয়। সুতরাং-

আপেক্ষিক =   নির্দিষ্ট উয়তায় নির্দিষ্ট পরিমাণ বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ (চরম আর্দ্রতা)ওই পরিমাণ উন্নতায় বায়ুকে পরিপৃক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় জলীয় বাষ্পের পরিমাণ 

আর্দ্রতা                   × 100

একক: আপেক্ষিক আর্দ্রতা একটি আনুপাতিক প্রকাশ হওয়ায় এর কোনো একক হয় না।

55. নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টি হয় কেন?

উত্তর: নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণ: ভূপৃষ্ঠ অত্যধিক উয় হলে পরিচলন পদ্ধতিতে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু দ্রুত ওপরে উঠে শীতল বায়ুর সংস্পর্শে এসে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, তাকে পরিচলন বৃষ্টিপাত বলা হয়। নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রতিদিন বিকেলে পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়। এই বৃষ্টিপাতকে 4 o’clock rain বলে। এর প্রধান কারণগুলি হল-

① জলভাগের প্রাধান্য: নিরক্ষীয় অঞ্চলে জলভাগ বেশি বলে বায়ুতে জলীয় বাষ্পও বেশি থাকে। জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু শুষ্ক বায়ু অপেক্ষা হালকা, তাই দিনের বেলা জলভাগ থেকে সূর্যতাপে উৎপন্ন জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু সোজা ওপরে উঠে শীতল হয় ও ঘনীভূত হয়ে পরিচলন বৃষ্টিপাত ঘটায়।

② সূর্যরশ্মির লম্বভাবে পতন: নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সারাবছর লম্বভাবে পরার ফলে জল অধিক পরিমাণে বাষ্পীভূত হয়ে পরিচলন বৃষ্টিপাত ঘটায়।

56. পৃথিবীর নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চল কোথায় কোথায় রয়েছে?

উত্তর: নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান: অক্ষাংশগত অবস্থান: নিরক্ষরেখার উভয় দিকে 0° থেকে 5° বা 10° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে নিরক্ষীয় জলবায়ু পরিলক্ষিত হয়।

মহাদেশগত অবস্থান: নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত অঞ্চল বা দেশগুলি হল-① এশিয়া: ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব শ্রীলঙ্কা, ফিলিপিনস প্রভৃতি দেশ। ② আফ্রিকা: কঙ্গো অববাহিকা, গ্যাবন, গিনি উপকূল, ক্যামেরুন, নাইজিরিয়া প্রভৃতি দেশ। ③ দক্ষিণ আমেরিকা: আমাজন অববাহিকা, বলিভিয়া,

পেরু, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা প্রভৃতি দেশ। ④ মধ্য আমেরিকা: হন্ডুরাস, নিকারাগুয়া, পানামা, কোস্টারিকা প্রভৃতি দেশ।

57. নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর: নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য: নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি হল-① বাষিক গড় উন্নতা: সারাবছর প্রায় একই রকম উন্নতা থাকে। বার্ষিক গড় উয়তা প্রায় 27°সে। ② বার্ষিক উয়তার পার্থক্য: উন্নতার প্রসর খুব কম। বার্ষিক উন্নতার পার্থক্য 2° সেলসিয়াস থেকে 3° সেলসিয়াস। ③ ঋতু পরিবর্তন: নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে ঋতুপরিবর্তন হয় না। ④ 4 o’clock Rain: বিকেলের দিকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে ও প্রতিদিন বিকালের দিকে 4টে নাগাদ পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়। এই বৃষ্টিপাতকে 4 o’clock Rain বলে। ⑤ ক্রান্তীয় শীতকাল: অপরাহ্নে বৃষ্টিপাত হয় বলে রাতে বেশ আরামদায়ক আবহাওয়া বিরাজ করে। এজন্য এখানকার রাত ক্রান্তীয় শীতকাল নামে পরিচিত। ⑥ বৃষ্টিপাত: এখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের 

পরিমাণ প্রায় 250 সেমি। ⑦ শান্তাবস্থা: বিপরীতধর্মী বায়ুর প্রাধান্য না থাকায় এখানে তেমন কোনো ঝড় হয় না। ফলে এখানে শান্তাবস্থা বিরাজ করে। ও আর্দ্রতা: এই অঞ্চলে সারাবছরই বায়ুর আর্দ্রতা খুব বেশি (80%-90%) থাকে।

5. Fill in The Blanks

1. ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমাকে_____ বলে।

উত্তর:  ট্রপোপজ

2. বায়ুমণ্ডলের _____ স্তরে ‘মাদার অফ পার্ল ক্লাউড’ দেখা যায়।

উত্তর: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

3. জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলে ভাসমান ______ কে আশ্রয় করে মেঘ ও কুয়াশার সৃষ্টি করে।

উত্তর: ধূলিকণা

4. বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তরটির নাম______

উত্তর: ট্রপোস্ফিয়ার

5. মহাকাশ থেকে আগত উল্কা ______ স্তরে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

উত্তর: মেসোস্ফিয়ার

6. মেঘ, ঝড়-বৃষ্টি, বিদ্যুৎ-বজ্রপাত _____ সৃষ্টি হয়।

উত্তর: ট্রপোস্ফিয়ারে

7. বায়ুমণ্ডলের _____ স্তরের বায়ু আয়নিত অবস্থায় থাকে।

উত্তর: আয়নোস্ফিয়ার

৪. মেসোস্ফিয়ারের অবস্থান _____ স্তরের ওপর।

উত্তর: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

9. _____ স্তরকে প্রাকৃতিক সৌরপর্দা বলে।

উত্তর: ওজোন

10. রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহারের ফলে বায়ুমণ্ডলে______ গ্যাস নির্গত হয়।

উত্তর: CFC

11. ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বাড়লে উন্নতা_____ পায়।

উত্তর: হ্রাস

12. হেটেরোস্ফিয়ারের আর-এক নাম_____

উত্তর: বিষমমণ্ডল

13. রসভি তরঙ্গ বায়ুমন্ডলের _____ স্তরে সৃষ্টি হয়।

উত্তর:  ঊর্ধ্ব ট্রপোস্ফিয়ার

14. জেট প্লেন যাতায়াত করে ____ স্তর দিয়ে।

উত্তর: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

15. বায়ুর গ্যাসীয় উপাদানগুলির মধ্যে প্রধান হল _____ ও ______

উত্তর: নাইট্রোজেন, অক্সিজেন

16. বৃষ্টিপাত ঘটানোর জন্য বায়ুমণ্ডলে_____ থাকা একান্ত প্রয়োজনীয়।

উত্তর: জলীয় বাষ্প

17. অশান্তমণ্ডল বলা হয়_____ স্তরকে।

উত্তর:  ট্রপোস্ফিয়ার

18. হিলিয়াম স্তরটি রয়েছে_____ কিমি পর্যন্ত।

উত্তর: 1100-3500

19. বায়ুমণ্ডলের______ ভর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 29 কিমি উচ্চতার মধ্যে পাওয়া যায়।

উত্তর: 97%

20. পৃথিবীর চৌম্বক বর্ম বলা হয়_____

উত্তর: ম্যাগনেটোস্ফিয়ারকে

21. ______আর-এক নাম ক্ষুব্ধমণ্ডল।

উত্তর: ট্রপোস্ফিয়ারের

22. পৃথিবীর_____ শক্তির প্রভাবে বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর গায়ে লেগে আছে। 

উত্তর: মাধ্যাকর্ষণ

23. দক্ষিণ গোলার্ধে মেরুজ্যোতিকে বলে____

উত্তর: কুমেরুপ্রভা

24. সূর্যরশ্মির যতটা অংশ ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলকে উন্ন করে, তাকে____ বলে।

উত্তর: কার্যকরী সৌরশক্তি

25. _____ অক্ষরেখায় সূর্যরশ্মি সারাবছর লম্বভাবে পড়ে।

উত্তর:

26. বায়ুর উন্নতার তারতম্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ_____

উত্তর: অক্ষাংশ

27. 30° অক্ষাংশের তুলনায় 40° অক্ষাংশের উন্নতা _____

উত্তর: কম

28. জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ থেকে সূর্যরশ্মি _____ বিচ্ছুরিত হয়।

উত্তর: কম

29. উন্নতার যে হ্রাসবৃদ্ধি আমরা ত্বকের মাধ্যমে অনুভব করতে পারি, তাকে বলে____ উন্নতা।

উত্তর: ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য

30. ঊর্ধ্বাকাশে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হলে _____ ত্যাগ করে।

উত্তর: লীনতাপ

31. সমোয়রেখাগুলি প্রায় ______ রেখার সমান্তরাল হয়।

উত্তর: অক্ষ

32. পৃথিবীতে সৌর বিকিরণের______ % হল কার্যকরী সৌর বিকিরণ।  

উত্তর: 65

33. ভূপৃষ্ঠে _____ টি তাপমণ্ডল আছে।

উত্তর: 5

34. নাতিশীতোয়মণ্ডলের গড় উন্নতা ০°সে থেকে ______ এর মধ্যে হয়।

উত্তর: 27°সে

35. পলিমাটি থেকে লালমাটির উয়তা দিনের বেলা _______ হয়।

উত্তর: বেশি

36. পৃথিবী থেকে বিকিরিত সূর্যরশ্মি _____ তরঙ্গের হয়।

উত্তর: দীর্ঘ

37. বার্ষিক উন্নতার প্রসর সবচেয়ে বেশি হয় ______ অঞ্চলে।

উত্তর: মেরু/মরু

38. সমুদ্রতলে হ্রাসপ্রাপ্ত একই উয়তাবিশিষ্ট স্থানগুলির ওপর দিয়ে যে রেখা মানচিত্রে টানা হয় তাকে______ বলে।

উত্তর:  সমোয়রেখা

39. সমুদ্র থেকে যত দূরে যাওয়া যায় ততই জলবায়ু ____ প্রকৃতির হয়।

উত্তর: চরমভাবাপন্ন

40. সমুদ্রসংলগ্ন এলাকার জলবায়ু _____ প্রকৃতির।

উত্তর: সমভাবাপন্ন

41. কর্কটীয় শান্তবলয়কে _______ অক্ষাংশ বলে।

উত্তর: অশ্ব

42. সমচাপরেখাগুলি চক্রাকারে খুব কাছাকাছি অবস্থান করলে _______ এর সম্ভাবনা থাকে।

উত্তর: ঝড়

43. উন্নতা কমে গেলে বায়ুর চাপ_______

 উত্তর: বাড়ে

44. বায়ুচাপের ঢাল বাড়লে বায়ুর গতিবেগ  ________

উত্তর: বাড়ে

45.______ বায়ুকে বাণিজ্য বায়ু বলে।

উত্তর: আয়ন

46. নিরক্ষরেখায় কোরিওলিস বলের মান________।

উত্তর: শূন্য

47. ITCZ দেখা যায়______ বরাবর।

উত্তর: নিরক্ষরেখা

48. _______ সঙ্গে কোরিওলিস বল সমকোণে কাজ করে।

উত্তর: বায়ুপ্রবাহের

49. ঊর্ধ্বমুখী উপত্যকা বায়ুকে ______ বায়ু বলে।

উত্তর: অ্যানাবেটিক

50. টাইফুনের উৎপত্তি _______ সাগরে।

উত্তর: দক্ষিণ চিন

51. মেরু অঞ্চলের বায়ুতে জলীয় বাষ্প কম থাকে তাই বায়ুর চাপ_______ হয়।

 উত্তর: বেশি

52. যে শীতল বাতাস পর্বতের ঢাল বেয়ে উপত্যকায় নেমে আসে, তাকে ______ বলে।  

উত্তর: ক্যাটাবেটিক বায়ু

53. উচ্চতা অনুসারে বায়ুর চাপ ______ পায়।

 উত্তর: হ্রাস

54. ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রকে______ নামে অভিহিত করা হয়।

উত্তর:  চক্ষু

55. টেবিল ঘড়ির মতো দেখতে বায়ুচাপ মাপার যন্ত্রটির নাম _______ ব্যারোমিটার।

উত্তর:  অ্যানিরয়েড

56. বায়ুপ্রবাহের দিনির্ণয় করা হয়________ সাহায্যে।

উত্তর:  বাতপতাকার

57. প্রথম বায়ুচাপ মাপার যে যন্ত্রটি আবিষ্কার হয়, তার নাম ________ ব্যারোমিটার।

উত্তর:  টরিসেলির

58. ফর্টিনের ব্যারোমিটারের সাথে স্কেল ______ যুক্ত থাকে।

উত্তর: ভার্নিয়ার

59. ব্যারোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুর______ মাপা হয়।

উত্তর: চাপ

60. পর্বতের উঁচু অংশে বায়ুচাপ মাপা হয় যে যন্ত্রের সাহায্যে, সেটির নাম______

উত্তর:  প্রেশার অল্টিমিটার

61. ______ বেলায় সমুদ্রবায়ু প্রবাহিত হয়।

 উত্তর: দিনের

60. স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ু বায়ুর_______ উদাহরণ।

উত্তর: সাময়িক

63. ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বস্তরে পশ্চিম দিক থেকে যে বায়ু খুব দ্রুত প্রবাহিত হয়, তাকে ______ বায়ু বলে।

উত্তর: জেট

64. মিস্ট্রাল একটি _______ বায়ুপ্রবাহ।

উত্তর: স্থানীয়

65. চিনুক কথাটির অর্থ________

উত্তর: তুষার খাদক

66. ক্যালিফোর্নিয়ায় যে উন্ন বায়ু শীতকালে প্রবাহিত হয় তার নাম______

উত্তর:  তুষার খাদক

67. পার্বত্য বায়ু প্রবাহ_______ বায়ু নামে পরিচিত।

উত্তর: ক্যাটাবেটিক

68. বর্ষাকালে ভারতে যে জেট বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে _____বায়ু বলে।

উত্তর: পুবালি জেট 

69. _____ পর্বতে চিনুক বায়ু প্রবাহিত হয়।

উত্তর: রকি

70. রোন উপত্যকার একটি স্থানীয় বায়ুর নাম_______।

উত্তর: মিস্ট্রাল

6. True And False

নীচের বাক্যগুলি শুদ্ধ হলে ‘শু’ এবং অশুদ্ধ হলে ‘অ’ লেখো

1. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কমে।

উত্তর:

2. ধূলিকণার জন্য আকাশে বর্ণবৈচিত্র্য দেখা যায়।

উত্তর: শু

3. নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন নিয়ে বায়ুমণ্ডলের প্রায় 99.9 শতাংশ গঠিত।

উত্তর:

4. হেটেরোস্ফিয়ারে বিভিন্ন গ্যাসের অনুপাত একই থাকে।

উত্তর:

5. মেসোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমার নাম মেসোপজ।

উত্তর: শু

6. মিথেন একটি গ্রিনহাউস গ্যাস।

উত্তর: শু

7. হিলিয়াম একটি সক্রিয় গ্যাস।

উত্তর:

৪. থার্মোস্ফিয়ারের নীচের অংশকে বলে আয়নোস্ফিয়ার।

উত্তর: শু

9. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের একটি বায়ুপ্রবাহ হল জেট স্ট্রিম।

উত্তর:

10. ট্রপোস্ফিয়ারে ওজোন গ্যাসের সবচেয়ে বেশি সঞ্চয় দেখা যায়।

উত্তর:

11. শান্তমণ্ডলে বিমান চলাচল করে।

উত্তর: শু

12. বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ খুব কম হলেও তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা প্রধান।

উত্তর: শু

13. ট্রপোস্ফিয়ারে ধূলিকণার উপস্থিতি সর্বাধিক।

উত্তর: শু

14. বায়ুমণ্ডলীয় মোট ভরের প্রায় 75 শতাংশ রয়েছে ট্রপোস্ফিয়ারে।

উত্তর: শু

15. ট্রপোস্ফিয়ারের আর-এক নাম শান্তমন্ডল।

উত্তর:  অ

16. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উন্নতা বৃদ্ধির মূল কারণ ওজোন গ্যাস।

উত্তর: শু

17. ঝড়ঝঞ্ঝা স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে হয় বলে এই স্তরকে ক্ষুদ্ধমণ্ডল বলে।

উত্তর:

18. ওজোনস্তরের বিনাশ পৃথিবীর উন্নায়নের কারণ।

উত্তর: শু

19. ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে 90 কিমি পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের স্তরকে বলে হেটেরোস্ফিয়ার।

উত্তর:

20. বায়ুমন্ডলের যে স্তরে মেরুপ্রভা সৃষ্টি হয়, তার নাম আয়নোস্ফিয়ার।

উত্তর: শু

21. ওজোনের ঘনত্ব মাপা হয় ডবসন এককে।

উত্তর: শু

22. ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার এই দুটি বায়ুস্তরের সীমা নির্দেশক সংযোগস্থলকে ট্রপোপজ বলে।

উত্তর: শু

23. ট্রপোস্ফিয়ারে প্রতি 1000 মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে 6.4°সে হারে উন্নতা হ্রাস পায়।

উত্তর: শু

24. উল্কা পুড়ে ছাই হয়ে যায় ট্রপোস্ফিয়ারে।

উত্তর:

25. ভ্যান অ্যালেন বিকিরণ বলয় অবস্থিত আয়নোস্ফিয়ারে।

উত্তর:

26. ওজোন গ্যাসের অস্তিত্বের কথা প্রথম বলেন ফারমেন।

উত্তর:

27. ওজোন হল হালকা নীল রঙের গ্যাস।

উত্তর: শু

28. জমিতে রাসায়নিক নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করলে ওজোনস্তরের ক্ষতি হয়।

উত্তর: শু

29. আয়নোস্ফিয়ারে বস্তুকণা আয়নিত অবস্থায় আছে বলে এই স্তর থেকে বেতারতরঙ্গ ফিরে আসে।

উত্তর: শু

30. যত বেশি বডি স্প্রে, প্রসাধন ব্যবহার করা হবে ততই ওজোনস্তরের ক্ষতি হবে।

উত্তর: শু

31. ওজোন হল অক্সিজেনের আইসোটোপ।

উত্তর:

32. ট্রপোস্ফিয়ারে ধূলিকণার উপস্থিতি সর্বাধিক।

উত্তর: শু

33. পৃথিবীর গড় উন্নতা 1°সে বেড়ে গেলে সমুদ্রজলের উচ্চতা বেড়ে যায় 10-12 সেমি।

উত্তর:

34. তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মির তুলনায় উন্ন।

উত্তর: শু

35. তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস উৎপাদিত হয়।

উত্তর: শু

36. মিথেন এমন গ্রিনহাউস গ্যাস যা সবচেয়ে বেশি পৃথিবীকে উত্তপ্ত করছে।

উত্তর:

37. বিশ্ব উন্নায়নে প্রকৃতির ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।

উত্তর:

38. উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণমুখী ঢালের উন্নতা উত্তরমুখী ঢালের তুলনায় কম।

উত্তর:

39. উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠ ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে তাপ বিকিরণ করে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে।

উত্তর:

40. মেঘমুক্ত রাত্রিতে শিশির বেশি পড়ে।

উত্তর: শু

41. নিরক্ষীয় ও মেরু অঞ্চলে ঋতুপরিবর্তন হয় না।

উত্তর: শু

42. সেলসিয়াস থার্মোমিটারে হিমাঙ্ক তাপমাত্রা 32° সে।

উত্তর:

43 এল নিনো শব্দের অর্থ দুষ্টু শয়তান।

উত্তর:

44. লা নিনা একধরনের উন্ন সমুদ্রস্রোত।

উত্তর:

45. স্থলভাগের তুলনায় জলভাগ দ্রুত উয় হয় এবং দ্রুত তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয়।

উত্তর:

46. উদ্ভিদহীন অঞ্চলে বায়ুর উন্নতা চরম প্রকৃতির হয়।

উত্তর: শু

47. উয়ুমণ্ডলের গড় উন্নতা প্রায় 27°সে।

উত্তর: শু

48. বৈপরীত্য উত্তাপ পার্বত্য উপত্যকার শান্ত আবহাওয়ায় দেখা যায়।

উত্তর: শু

49. অক্ষাংশের মান বাড়লে সূর্যরশ্মির পতনকোণ বাড়তে থাকে।

 উত্তর:  শু

50. দিনের বেলা দুপুর 2 টোর সময় সবচেয়ে বেশি তাপ থাকে।

উত্তর: শু

51. সূর্যের তরঙ্গদৈর্ঘ্য মাপার একক হল মাইক্রন।

উত্তর: শু

52. বায়ুমণ্ডল তাপের সুপরিবাহী।

উত্তর: শু

53. উন্নতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার অনুযায়ী যত উচ্চতা বাড়ে ততই তাপমাত্রা কমে যায়।

উত্তর: শু

54. সূর্যপৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় 6000°সে।

উত্তর: শু

55. সমুদ্রের ধারে বলেই মুম্বাইয়ের জলবায়ু সমভাবাপন্ন।

উত্তর: শু

56. জুন-জুলাই মাসে চাপবলয়গুলি দক্ষিণ দিকে স্থান পরিবর্তন করে।

উত্তর:

57. পশ্চিমা বায়ুর অন্য নাম প্রত্যয়ন বায়ু।

উত্তর: শু

58. আয়ন বায়ু 35°-60° দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে প্রবাহিত হয়।

উত্তর:

59. 50° দক্ষিণ অক্ষাংশ থেকে প্রবাহিত পশ্চিমা বায়ুকে তীক্ষ্ণ চিৎকারকারী ষাট বলে।

উত্তর:

60. মেরুবায়ুর গতিপথে মহাদেশের পশ্চিমে মরুভূমি দেখা যায়।

উত্তর:

61. পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতকে হারিকেন বলে।

উত্তর: শু

62. 40° দক্ষিণ অক্ষাংশে বায়ু প্রবল বেগে ও সশব্দে প্রবাহিত হয় বলে, তাকে ‘অশ্ব অক্ষাংশ’ বলে।

উত্তর:

63. জেট বায়ু একধরনের জিওস্ট্রফিক বায়ু।

উত্তর: শু

64. পুবালি জেট বায়ুর জন্য ভারতে মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে।

উত্তর: শু

65. লা নিনার প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলে খরার সৃষ্টি হয়।

উত্তর: শু

66. মেরুবায়ুর প্রবাহপথে শৈত্যপ্রবাহ ও তুষারপাত হয়।

উত্তর: শু

67. স্থলবায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে।

 উত্তর:

68. গ্রীষ্মকালে বায়ুর চাপ বেশি এবং শীতকালে বায়ুর চাপ কম হয়।

 উত্তর:

69. বায়ুর উন্নতা এবং চাপের সম্পর্ক বিপরীতমুখী।

উত্তর: শু

70. পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্যই মেরুবৃত্ত প্রদেশে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে।

উত্তর: শু

71. সমচাপরেখাগুলি দূরে দূরে থাকলে ঝড়ের সম্ভাবনা বাড়ে।

উত্তর:

72. নিরক্ষীয় শান্তবলয় বরাবর বায়ু সবসময় ঊর্ধ্বমুখী হয়।

উত্তর: শু

73. সাইক্লোন একটি নিয়ত বায়ুপ্রবাহ।

 উত্তর:

74. পশ্চিমা বায়ুর জন্য শীতকাল অপেক্ষা গ্রীষ্মকালে বৃষ্টিপাত বেশি হয়।

উত্তর:

75. আয়ন বায়ুকে জেট বায়ু বলে।

উত্তর: