WBCHSE Class 12 Educational Science Chapter 11 Solution | Bemgali Medium

Class 12 Educational Science Solution

শিক্ষায় বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি

1. MCQs Question Answer

1. নীচের কোন্টি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা?

(a) UNO

(b) WHO

(c) UNICEF

(d) ওপরের সবগুলি  ✔

2. শিক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যাবলি নীচের কোন সংস্থাটির এক্তিয়ারভুক্ত?

(a) WHO

(b) UNICEF

(c) UNESCO  ✔

(d) ওপরের সবগুলি

3. UNESCO কোন্ সময়ে স্থাপিত হয়?

(a) 16 নভেম্বর 1945  ✔

(b) 16 অক্টোবর 1945

(c) 16 অক্টোবর 1946

(d) 16 নভেম্বর 1946

4. UNESCO নীচের কোন্ শব্দগুলির সংক্ষিপ্তকরণ?

(a) United Nations Educational, Scientific and Cultural Organisation  ✔

(b) United Nations Educational and Social Company

(c) United Nations Educational and Organisations Cultural

(d) United Nations Educational and Scientific Company

5. নীচের কোন্টি UNESCO-র উদ্দেশ্য নয়?

(a) শিক্ষার অধিকার প্রসার

(b) শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন

(c) দারিদ্র্য দূরীকরণ

(d) ওপরের কোনোটিই নয়  ✔

6. শিক্ষায় বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে নীচের কোন্টি বিশেষভাবে সক্রিয়?

(a) UNESCO  ✔

(b) UNO

(c) WHO

(d) UNICEF

7. UNESCO-র হেডকোয়ার্টার কোথায় অবস্থিত?

(a) আমেরিকায়

(b) ইংল্যান্ডে

(c) ইটালিতে

(d) ফ্রান্সে  ✔

8. UNESCO কোন্ স্তরের শিক্ষার ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছে?

(a) প্রাথমিক শিক্ষা

(b) মাধ্যমিক শিক্ষা

(c) উচ্চশিক্ষা

(d) ওপরের সবগুলি  ✔

9. 1972 সালের এডগার ফাউরের কমিশন কী নামে প্রকাশিত হয়? নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক শিক্ষা

(a) লার্নিং: দি ট্রেজার উইদিন

(b) লার্নিং টু বি  ✔

(c) লার্নিং টু নো

(d) লাইফ লং এডুকেশান

10. একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষার ওপর যে আন্তর্জাতিক কমিশন গঠিত হয়, তার নেতৃত্বে কে ছিলেন?

(a) এডগার ফাউরে

(b) জ্যাক ডেলরস্  ✔

(c) এডগার ডব্লিউ হেনকিন্স

(d) এঁদের কেউই নন

11. জ্যাক ডেলরস্ কোন্ দেশের অধিবাসী ছিলেন?

(a) ফ্রান্সের  ✔

(b) আমেরিকার

(c) ইংল্যান্ডের

(d) মেক্সিকোর

12. জ্যাক ডেলরস্ কমিশনে কতজন সদস্য ছিলেন?

(a) 13 জন

(b) 16 জন

(c) 14 জন  ✔

(d) 20 জন

13. ডেলরস্ কমিশনে (Delors Commission) শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। 

(a) দুইটি

(b) তিনটি

(c) চারটি  ✔

(d) পাঁচটি

14. জানার জন্য শিক্ষার ভিত্তি কী?

(a) মনঃসংযোগ

(b) স্মৃতিশক্তি

(c) চিন্তনক্ষমতা

(d) ওপরের সবগুলি  ✔

15. ‘শিক্ষণের জন্য শিক্ষা’- কোন্ স্তম্ভের অন্তর্ভুক্ত?

(a) কর্মের জন্য শিক্ষা

(b) মানুষ হওয়ার শিক্ষা

(c) জানার জন্য শিক্ষা  ✔

(d) একত্রে বসবাসের শিক্ষা

16. ‘ব্যাপক সাধারণ শিক্ষা এবং অল্প বিষয়ের ওপর গভীর শিক্ষা’-শিক্ষার কোন্ স্তম্ভের অন্তর্ভুক্ত?

(a) মানুষ হওয়ার শিক্ষা

(b) একত্রে বসবাসের শিক্ষা

(c) কর্মের জন্য শিক্ষা

(d) জানার জন্য শিক্ষা  ✔

17. জ্ঞানার্জনের শিক্ষার তাৎপর্য কী?

(a) জ্ঞান শিক্ষার অন্যান্য উদ্দেশ্যগুলি পূরণ করতে সাহায্য করে

(b) পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনে সাহায্য করে

(c) পরিবর্তনগুলি বিশ্বের ভালোমন্দ দিকগুলির মূল্যায়নে সাহায্য করে

(d) ওপরের সবগুলি  ✔

18. কর্মের জন্য শিক্ষা বলতে কী বোঝায়?

(a) নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা

(b) বিভিন্ন পরিস্থিতিতে উৎকর্ষের সঙ্গে কাজ করা

(c) দলবদ্ধভাবে কাজ করা

(d) ওপরের সবগুলি ✔ 

19. কর্মের জন্য শিক্ষা কোন্ কমিশনে বিশদভাবে উল্লেখ আছে?

(a)মুদালিয়র কমিশন

(b) কোঠারি কমিশন  ✔

(c) জাতীয় শিক্ষানীতি

(d) রেড্ডি কমিটি

20. কর্মের জন্য শিক্ষার শিক্ষাগত তাৎপর্য কী?

(a) দেহ-সঞ্চালনমূলক দক্ষতা অর্জন

(b) সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ

(c) দৈহিক সুস্থতা

(d) ওপরের সবগুলি ✔ 

21. কর্মের জন্য শিক্ষা প্রধানত কী ধরনের শিখন?

(a) জ্ঞানমূলক মাত্রার শিখন

(b) অনুভূতিমূলক মাত্রার শিখন

(c) মনশ্চালকমূলক মাত্রার শিখন  ✔

(d) ওপরের সবগুলি

22. একত্রে বসবাসের শিক্ষা কী ধরনের শিক্ষা?

(a) আন্তর্জাতিক শিক্ষা  ✔

(b) জাতীয় সংহতির শিক্ষা

(c) সামাজিক শিক্ষা

(d) ওপরের কোনোটিই নয়

23. কোন্ কমিশনে একত্রে বসবাসের শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?

(a) মুদালিয়র কমিশন

(b) রাধাকৃয়ণ কমিশন

(c) কোঠারি কমিশন  ✔

(d) রেড্ডি কমিশন

24. একত্রে বসবাসের শিক্ষার শিক্ষাগত তাৎপর্য কী?

(a) আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃত্ববোধ

(b) বিশ্বব্যাপী সংকটের মোকাবিলা

(c) শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান

(d) ওপরের সবগুলি  ✔

25. নীচের কোল্টিন্ট মানুষ হওয়ার শিক্ষার ধারণার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়?

(a) শৈল্পিক ক্ষমতার বিকাশ

(b) শারীরিক দক্ষতা

(c) যোগাযোগ দক্ষতা

(d) ওপরের কোনোটিই নয়  ✔

26. মানুষ হওয়ার শিক্ষার শিক্ষাগত তাৎপর্য কী?

(a) বিজ্ঞানমনস্কতা

(b) সৃজনশীলতা

(c) জ্ঞান ব্যবহারের ক্ষমতা

(d) ওপরের সবগুলি ✔ 

27. ডেলরস্ কমিশনের প্রস্তাবিত শিক্ষার চারটি স্তম্ভের মধ্যে কী ধরনের সম্পর্ক লক্ষ করা যায়?

(a) পারস্পরিক গভীর সম্পর্ক দেখা যায়  ✔

(b) কেবল জানার জন্য শিক্ষা এবং কর্মের জন্য শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক দেখা যায়

(c) জানার জন্যে শিক্ষা, কর্মের জন্য শিক্ষা এবং একত্রে বসবাসের শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক দেখা যায়

(d) প্রকৃতপক্ষে আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই

28. ডেলরস্ কমিশনের প্রতিবেদনটি হল-

(a) Education for All

(b) Learning: The Treasure within  ✔

(c) Education and National Development

(d) Learning to be

29. কমিশনের চারটি উদ্দেশ্যপূরণ করার জন্য প্রয়োজন?

(a) প্রতিটি উদ্দেশ্যের প্রেক্ষিতে পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন

(b) জানার জন্য শিক্ষা এবং কর্মের জন্য শিক্ষার জন্য পাঠক্রমিক কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন

(c) একত্রে বসবাসের শিক্ষা’ এবং মানুষ হওয়ার শিক্ষার জন্য সহপাঠক্রমিক কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন

(d) এমন সব পাঠক্রমিক এবং সহপাঠক্রমিক কর্মসূচি গ্রহণ করা প্রয়োজন যা চারটি উদ্দেশ্যই পূরণ করতে পারে  ✔

30. ‘জানার জন্য শিক্ষা’-এই উদ্দেশ্যপূরণের জন্য বিদ্যালয়ের অন্যতম কর্মসূচি কোন্টি?

(a) ব্যাপক সাধারণ শিক্ষা

(b) সীমিত বিষয়ে গভীর জ্ঞান

(c) (A) ও (B) উভয়ই  ✔

(d) শুধুমাত্র (A)

31. ‘কর্মের জন্য শিক্ষা’- এই উদ্দেশ্যপূরণের জন্য বিদ্যালয়ের অন্যতম কর্মসূচি কোন্টি?

(a)কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে পাঠক্রমিক এবং সহপাঠক্রমিক কর্মসূচি

(b) সমগুরুত্ব দিয়ে তাত্ত্বিক এবং কর্মশিক্ষার ব্যবস্থা করা

(c) ব্যাবহারিক প্রয়োগযোগ্যতা আছে এমন সব পাঠক্রমিক এবং সহপাঠক্রমিক কর্মসূচি গ্রহণ

(d) ওপরের সবগুলি  ✔

32. ‘একত্রে বসবাসের শিক্ষা’-এই উদ্দেশ্যপূরণের জন্য নীচের কোন্ কর্মসূচিটি গুরুত্বপূর্ণ নয়?

(a) মানবিক গুণাবলি বিকশিত করার জন্য পাঠক্রমিক ও সহপাঠক্রমিক কর্মসূচি

(b) পরিবেশ শিক্ষা

(c) সমাজসচেতনতার বিকাশ

(d) ওপরের কোনোটিই নয়  ✔

33. ‘মানুষ হওয়ার শিক্ষা’-এই উদ্দেশ্যপূরণের জন্য গৃহীত বিদ্যালয়ের অন্যতম কর্মসূচি কোন্টি?

(a) গণতান্ত্রিক আদর্শের বিকাশমূলক কর্মসূচি

(b) মূল্যবোধের বিকাশ-সংক্রান্ত কর্মসূচি

(c) জাতীয় বিকাশমূলক কর্মসূচি

(d) ওপরের সবগুলি  ✔

34. Jacques Delors কমিশন স্থাপিত হয় কত খ্রিস্টাব্দে?

(a) 1996

(b) 1896

(c) 1994

(d) 1993  ✔

35. 2000 সালে ডাকারে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিষয় ছিল- 

(a) অন্তর্ভুক্তি শিক্ষা

(b) পরিবেশ শিক্ষা

(c) প্রথাগত শিক্ষা

(d) সকলের জন্য শিক্ষা  ✔

36. শিক্ষার চারটি স্তম্ভের মূল প্রবক্ত ছিল-

(a) Salamanca Commission

(b) Delors Commission  ✔

(c) SSA

(d) Sadler Commission

37. কর্মের জন্য শিক্ষা হল-

(a) বৌদ্ধিক শিক্ষা

(b) নৈতিক শিক্ষা

(c) শিক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করা

(d) পারদর্শিতার শিক্ষা  ✔

3৪. নীচের কোন্টি জ্যাক্ ডেলরস্-এর দেওয়া শিখনের স্তম্ভ নয়?

(a) জ্ঞান অর্জনের জন্য শিক্ষা

(b) একসঙ্গে বসবাস করার শিক্ষা

(c) সকলকে সাহায্য করার শিক্ষা  ✔

(d) কর্মের জন্য শিক্ষা

39. ডেলরস্ কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়-

(a) 1990 সালে

(b) 1996 সালে  ✔

(c) 2000 সালে

(d) 2001 সালে

40. ডেলরস্ কমিশন-এর প্রতিবেদনকে বলা হয়-

(a) মানুষ হওয়ার শিক্ষা

(b) কাজের শিক্ষা

(c) জ্ঞানার্জনের শিক্ষা

(d) শিখন: অন্তরের সম্পদ  ✔

41. ডেলরস্ কমিশন তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন-

(a) 1995 খ্রি.

(b) 1996 খ্রি.  ✔

(c) 1993 খ্রি.

(d) 1994 খ্রি.

42. ‘চার স্তম্ভের শিক্ষার’ কথা প্রকাশ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে—

(a) সর্বশিক্ষা অভিযান

(b) ডেলরস্ কমিশন  ✔

(c) কোঠারি কমিশন

(d) জাতীয় শিক্ষানীতি-1986

43. যার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলন (1996) আয়োজিত হয়েছিল-

(a) UNICEF

(b) UNESCO  ✔

(c) UNO

(d) IUCN

44. UNESCO-র ব্যবহৃত ‘STM’-এর পুরো শব্দটি কী?

(a) Student-Teacher Management

(b) Science, Technology, Mathematics  ✔

(c) Student, Teaching, Management

(d) Science, Technology, Management

45. স্পেনের সালামানকা-য় (Salamanca) আন্তর্জাতিক স্তরে কী বিষয়ের ওপর আলোচনা হয়েছিল?

(a) বিশেষ শিক্ষা  ✔

(b) অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা

(c) শিশুর শিক্ষার অধিকার

(d) পরিবেশ শিক্ষা

46. সালামানকা-য় কত খ্রিস্টাব্দে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়?

(a)1993 খ্রিস্টাব্দের 7 থেকে 9 মে

(b) 1984 খ্রিস্টাব্দের 7 থেকে 9 জুন

(c) 1994 খ্রিস্টাব্দের 7 থেকে 9 জুন  ✔

(d) ওপরের কোনোটিই নয়

47. ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা’ কাদের জন্য?

(a) যারা সামান্য মাত্রার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী

(b) যারা সামান্য মাত্রার শ্রবণ প্রতিবন্ধী

(c) যারা সামান্য মাত্রার মানসিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থী

(d) যারা সামান্য মাত্রার যে-কোনো দিক থেকে প্রতিবন্ধী    ✔

48. সমগ্র বিশ্বে কোন্ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে?

(a) ইউনাইটেড নেশনস্ অর্গানাইজেশন

(b) বিশ্ব ব্যাংক

(c) ইউনাইটেড নেশনস্ চিলড্রেনস এমার্জেন্সি ফান্ড

(d) ওপরের সবগুলি  ✔

49. পরিবেশ শিক্ষার ওপর আন্তর্জাতিক সম্মেলন কী নামে পরিচিত?

(a) বেলগ্রেড সম্মেলন

(b) ডাকার সম্মেলন

(c) টিবিলিসি সম্মেলন

(d) শুধুমাত্রও   ✔

50. টিবিলিসি সম্মেলনে পরিবেশ শিক্ষার ক-টি উদ্দেশ্যের কথা উল্লিখিত হয়েছে?

(a) তিনটি

(b) চারটি

(c) পাঁচটি  ✔

(d) ছ-টি

51. টিবিলিসি সম্মেলনে পরিবেশ শিক্ষার কী কী উদ্দেশ্য ব্যক্ত হয়েছে?

(a) সচেতনতা, দক্ষতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি

(b) সচেতনতা, জ্ঞান, দক্ষতা এবং অংশগ্রহণ

(c) সচেতনতা, জ্ঞান, দৃষ্টিভঙ্গি, দক্ষতা এবং অংশগ্রহণ   ✔

(d) ওপরের কোনোটিই নয়

52. বর্তমানে শিক্ষার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে কী বোঝায়?

(a) বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

(b) দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

(c) সমগ্র বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি   ✔

(d) ওপরের কোনোটিই নয়

53. ইউনেস্কো কর্তৃক প্রকাশিত বিশ্বমানের পাঠ্যপুস্তক কোন্টি?

(a) টিচিং প্রাইমারি স্কুল ম্যাথামেটিক্স

(b) গাইডলাইনস্ ফর টেক্সট বুকস্ রাইটিং

(c) সোর্স বুক অফ জিয়োগ্রাফি টিচিং

(d) ওপরের সবগুলি   ✔

54. EFA-এর পুরো কথাটি কী?

(a) এডুকেশন ফর অ্যাডাল্ট

(b) এডুকেশন ফর অ্যাকশন

(c) এডুকেশন ফর অল  ✔

(d) এডুকেশন ফর অল টাইম

56. আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষকতাকে কী বলা হয়েছে?

(a) শিক্ষকতা অর্থ উপার্জনকারী একটি পেশা  ✔

(b) শিক্ষকতা কেবল পরিসেবামূলক পেশা

(c) শিক্ষকতা আদৌ একটি পেশা নয়

(d) শিক্ষকতা একটি পেশা কি না এ নিয়ে বিতর্ক আছে

57. ‘Strengthening of the Role of the Teacher in Changing World’ নামে আন্তর্জাতিক সম্মেলন কবে আয়োজিত হয়?

(a) 2000 খ্রিস্টাব্দে

(b) 1996 খ্রিস্টাব্দে  ✔

(c) 1998 খ্রিস্টাব্দে

 (d) 1990 খ্রিস্টাব্দে

58. সকলের জন্য শিক্ষার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক স্তরে কোন্ রিপোর্টে নির্দিষ্ট করা হয়?

(a) 1972 সালের এডগার ফাউরের নেতৃত্বের রিপোর্টে

(b) 1996 সালের ডেলরস্ কমিশনের রিপোর্টে

(c) 1997 সালের ইনটারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ক্লাসিফিকেশন অফ এডুকেশনের রিপোর্টে

(d) 2000 সালে ডাকারে অনুষ্ঠিত বিশ্বশিক্ষা ফোরামে  ✔

59. স্পেনের সালামানকা-য় বিশেষ শিক্ষার ওপর আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তটি কী?

(a) শিক্ষা প্রতিবন্ধী-সহ সব শিশুর মৌলিক অধিকার

(b) শিক্ষার্থীর সামর্থ্য, চাহিদা এবং আগ্রহ অনুযায়ী শিক্ষা কর্মসূচিগুলি প্রস্তুত করে তার বাস্তব রূপ দিতে হবে

(c) অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা সব শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করে

(d) ওপরের সবগুলি  ✔

60. 2000 সালে অনুষ্ঠিত ‘ডাকার’ সম্মেলনে আলোচনার বিষয় কী ছিল?

(a) অন্তর্ভুক্তি শিক্ষা

(b) পরিবেশ শিক্ষা

(c) সকলের জন্য শিক্ষা  ✔

(d) নিরক্ষরতা দূর করা

61. ভারতের শিক্ষাবিদদের মধ্যে কোন্ শিক্ষাবিদের বক্তব্যে শিক্ষার চারটি স্তম্ভের প্রভাব দেখা যায়?

(a) স্বামী বিবেকানন্দ-র  ✔

(b) মহাত্মা গান্ধির

(c) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের

 (d) শ্রীঅরবিন্দ-র

62. শিক্ষকের নতুন ভূমিকা পালন করার ক্ষেত্রে প্রাক্-বৃত্তি এবং বৃত্তিকালীন শিক্ষার মধ্যে নিম্নলিখিত কোল্টি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ?

(a) উভয়ের ভূমিকা সমান  ✔

(b) প্রাক্-বৃত্তি শিক্ষার ভূমিকা বৃত্তিকালীন শিক্ষার তুলনায় অধিক

(c) বৃত্তিকালীন শিক্ষার ভূমিকা প্রাক্-বৃত্তিকালীন শিক্ষার তুলনায় অধিক

(d) নির্ভর করে শিক্ষাব্যবস্থার ওপর

63. কর্মের জন্য শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষার মধ্যে কী সম্পর্ক?

(a) উভয়েরই বিষয়বস্তু এক

(b) কর্মশিক্ষা কর্মের জন্য শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত  ✔

(c) উভয়ের উদ্দেশ্য ভিন্ন

(d) ওপরের কোনোটিই সঠিক নয়

64. ইউনেস্কো প্রস্তাবিত শিক্ষার বিশ্বায়নে শিক্ষকের নতুন ভূমিকাটি কী?

(a) প্রাক্-বৃত্তি শিক্ষক শিক্ষাগ্রহণ

(b) বৃত্তিকালীন শিক্ষক শিক্ষাগ্রহণ  ✔

(c) শিক্ষক সংগঠনের সদস্য হওয়া

(d) ওপরের সবগুলি

65. শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল হিসেবে নীচের কোন্টি বিবেচিত হতে পারে?

(a) শিক্ষায় আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণ

(b) শিক্ষায় সরকারি নিয়ন্ত্রণ

(c) শিক্ষায় বেসরকারিকরণ   ✔

(d) ওপরের সবগুলি

66. শিক্ষার বিশ্বায়নের ফলে কী ঘটছে?

(a) শিক্ষা পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে  ✔

(b) শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি হয়েছে

(c) শিক্ষার প্রসার হয়েছে

(d) শিক্ষা সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছেছে

67. UNESCO দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক কমিশনের সভাপতি ছিলেন-

(a) ডেলরস্

(b) এডগার ফার   ✔

(c) স্যামুয়েল

(d) পেস্তালৎসি

68. UNESCO কোন্ সংস্থার একটি শাখা?

(a) WHO

(b) UNO   ✔

(c) UNICEF

(d) কোনোটিই নয়

2. Very Short Question Answer

1. UNESCO কবে স্থাপিত হয় এবং এর প্রধান কার্যালয়টি কোথায় অবস্থিত?

▶ 1945 খ্রিস্টাব্দের 16 নভেম্বর UNESCO স্থাপিত হয় এবং এর প্রধান কার্যালয়টি ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থিত।

2. ‘লার্নিং: দি ট্রেজার উইদিন’- রিপোর্টটি প্রতিটি ব্যক্তির নিকট কী মন্ত্র দিয়েছে?

▶ ‘লার্নিং: দি ট্রেজার উইদিন’ রিপোর্টটি প্রতিটি ব্যক্তির নিকট যে মন্ত্র দিয়েছে, সেটি হল-‘দেখো কীভাবে শেখা যায়’।

3. ডেলরস্ কমিশনের বিবরণী অনুযায়ী শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি কী? অথবা, ডেলরস্ কমিশন অনুযায়ী শিক্ষার স্তম্ভগুলি কী কী? 

▶ ডেলরস্ কমিশনের বিবরণী অনুযায়ী শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি হল-

i. জানার জন্য শিক্ষা, ii. কর্মের জন্য শিক্ষা, iii. একত্রে বসবাসের শিক্ষা এবং iv. মানুষ হওয়ার শিক্ষা।

4. ‘জানার জন্য শিক্ষা’ বলতে কী বোঝ?

▶ ব্যাপক সাধারণ জ্ঞানের সঙ্গে অল্প বিষয়ের ওপর গভীর জ্ঞানের সমন্বয়কেই ‘জানার জন্য শিক্ষা’ বলা হয়।

5. জ্যাক ডেলরস্ কমিশনে কতজন সদস্য ছিলেন?

▶ জ্যাক ডেলরস্ কমিশনে মোট 14 জন সদস্য ছিলেন।

4. দৈহিক সুস্থতা রক্ষা শিক্ষার কোন্ উদ্দেশ্যের সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত?

▶ দৈহিক সুস্থতা রক্ষার বিষয়টি কর্মের জন্য শিক্ষার সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত।

7. একত্রে বসবাসের শিক্ষা কাকে বলে?

► একত্রে বসবাসের শিক্ষা বলতে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের শিক্ষাকে বোঝায়।

8. জাতীয় সংহতি কী?

▶ জাতীয় সংহতি হল বিচ্ছিন্নতাবাদকে বর্জন করে সমগ্র দেশের প্রতি জাতির আনুগত্যের মনোভাব সৃষ্টি করা।

9. আন্তর্জাতিকতা বোধ কী?

▶ আন্তর্জাতিকতা বোধ বলতে বোঝায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বা জাতির মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা।

10. আন্তর্জাতিক বোধে সহায়ক দুটি উপাদানের নাম লেখো।

▶ আন্তর্জাতিক বোধে সহায়ক দুটি উপাদানের নাম হল-ⅰ. পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ii. বিশ্বশান্তির প্রতিষ্ঠা।

11. অর্থনৈতিক অসাম্য বলতে কী বোঝ?

▶ অর্থনৈতিক অসাম্য বলতে বোঝায় বিভিন্ন মানুষের মধ্যে আর্থিক বৈষম্য।

12. সাম্প্রদায়িকতা কী?

▶ সাম্প্রদায়িকতা হল কেবল নিজের সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরাগ এবং অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ।

13. প্রাদেশিকতা কী?

▶ প্রাদেশিকতা হল কেবল নিজের প্রদেশের প্রতি আনুগত্য এবং অন্য প্রদেশের প্রতি বিদ্বেষ।

14. জাতিগত বিদ্বেষ কী?

▶ জাতিগত বিদ্বেষ হল অন্য জাতির প্রতি অসহি তার ফলে সৃষ্ট বিদ্বেষ।

15. রাজনৈতিক একতা কী?

▶ রাজনৈতিক একতা হল ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বিভিন্নতা সত্ত্বেও রাজনৈতিক মতামতের দিক থেকে একতা।

16. মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা বলতে কী বোঝায়?

▶ মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা বলতে বোঝায় ‘মানবিক মূল্যবোধ অর্জন’।

17. শিক্ষায় সামাজিকীকরণের অর্থ কী?

▶ শিক্ষায় সামাজিকীকরণের অর্থ হল সমাজের সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনধারাকে একাত্ম করা।

18. শারীরশিক্ষার মূল লক্ষ্য কী?

▶ শারীরশিক্ষার মূল লক্ষ্য হল-শিক্ষার্থীর শারীরিক বিকাশ ও সুস্বাস্থ্য গঠনে সহায়তা করা।

19.’The International Commission on Education for the Twenty first Century’ কবে গঠিত হয়?

► ‘The International Commision on Education for the twenty first Century’ 1993 খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়।

20. 1991 খ্রিস্টাব্দে UNESCO-র আন্তর্জাতিক শিক্ষা সংগঠনের ডিরেক্টর- জেনারেল কে ছিলেন?

▶ 1991 খ্রিস্টাব্দে UNESCO-র আন্তর্জাতিক শিক্ষা সংগঠনের ডিরেক্টর- জেনারেল ছিলেন ফেডেরিকো মেয়র।

21. একবিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় শিক্ষার মূল লক্ষ্য কী?

▶ একবিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় শিক্ষার মূল লক্ষ্য হল জাতীয় উন্নয়ন।

22. কর্মদক্ষতা অর্জনের শিক্ষার উদ্দেশ্য কী?

▶ কর্মদক্ষতা অর্জনের শিক্ষার উদ্দেশ্য হল-i. দ্রুত এবং নিখুঁতভাবে কাজ করা এবং ii. কাজের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা।

23. নান্দনিক শিক্ষার উদ্দেশ্য কী?

▶ নান্দনিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন আনন্দমূলক কাজের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীর সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলির বিকাশ ঘটানো।

24. সামাজিক শিক্ষার উদ্দেশ্য কী?

▶ সামাজিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীর সামাজিক চেতনার বিকাশ ঘটানো।

25. প্রজ্ঞামূলক শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য কী?

▶ প্রজ্ঞামূলক শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীর জ্ঞান, চিন্তাশক্তি ও মনের বিকাশ ঘটানো।

26. প্রকৃত অর্থে মানবসম্পদ কী?

▶ প্রকৃত অর্থে মানবসম্পদ হল উৎপাদনশীল মানুষ।

27. প্রজ্ঞা আসলে কী?

▶ প্রজ্ঞা হল জ্ঞান যা সত্য উদ্‌ঘাটনে সাহায্য করে এবং ব্যক্তিকে সঠিক পথের সন্ধান দেয়।

28. শারীরিক কাজের মূল উদ্দেশ্য কী?

▶ শারীরিক কাজের মূল উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীর দৈহিক বিকাশসাধনে এবং সুস্বাস্থ্য গঠনে সাহায্য করা।

29. মূল্যবোধের অর্থ কী?

▶ মূল্যবোধের অর্থ হল এমন কতকগুলি গুণের সমাবেশ যা মানুষের আচরণকে সুপথে পরিচালিত করে।

30. PBL-এর পুরো কথাটি কী?

▶ PBL-এর পুরো কথাটি হল-Project Based Learning |

31. TAL-এর পুরো কথাটি কী?

▶ TAL-এর পুরো কথাটি হল-Technology Aided Learning |

32. “জ্ঞান মানুষকে অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে আলোয় আনে”-এটি কার বক্তব্য?

▶ “জ্ঞান মানুষকে অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে আলোয় আনে”-এটি কোমেনিয়াস-এর বক্তব্য।

33. সমাজে যখন দুই বা তার অধিক ব্যক্তি পরস্পর মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে, তখন তাকে কী বলে?

▶ সমাজে যখন দুই বা তার অধিক ব্যক্তি পরস্পর মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে, তখন তাকে ‘সহাবস্থান’ বলে।

34. সমাজজীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?

▶ সমাজজীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল যূথবদ্ধতা বা দলবদ্ধতা।

35. অন্যের আদর্শকে গ্রহণ করে নিজের আচরণের মধ্যে প্রকাশ করার প্রবণতাকে কী বলে?

▶অন্যের আদর্শকে গ্রহণ করে নিজের আচরণের মধ্যে প্রকাশ করার প্রবণতাকে আত্মীকরণ বলে।

36. 46 তম আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলন কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

▶ 46 তম আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলন জেনেভায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

37. 46 তম আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলন কত খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

▶ 46 তম আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলন 2001 খ্রিস্টাব্দে (5-9 সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

38.”The end of knowledge must be the building of character”-এই উক্তিটি কার?

► “The end of knowledge must be the building of character”-এই উক্তিটির প্রবক্তা হলেন গান্ধিজি।

39. ব্যক্তিত্ব কী?

▶ ব্যক্তিত্ব হল দেহমনের সমন্বয়ে গঠিত এক অনন্য বৈশিষ্ট্য।

40. শিক্ষার্থীদের প্রকল্পনির্ভর শিক্ষায় সঠিকভাবে অংশগ্রহণ করাতে পারলে তাদের মধ্যে কী অর্জিত হবে?

▶ শিক্ষার্থীদের প্রকল্পনির্ভর শিক্ষায় সঠিকভাবে অংশগ্রহণ করাতে পারলে তাদের মধ্যে জ্ঞান ও কর্মদক্ষতা অর্জিত হবে।

41. মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের মূলে কী রয়েছে?

▶ মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের মূলে রয়েছে বুদ্ধিবৃত্তি।

42. কীসের সাহায্যে আমরা সরল থেকে জটিল বিভিন্ন বিষয় উপলব্ধি করতে পারি?

▶ জ্ঞান বা প্রজ্ঞার সাহায্যে আমরা সরল থেকে জটিল বিভিন্ন বিষয় উপলব্ধি করতে পারি।

43. সংস্কৃতির কাজ কী?

▶ সংস্কৃতির কাজ হল মানুষের আচার-আচরণকে পরিমার্জিত করে তাকে সমাজের উপযোগী করে গড়ে তোলা।

44. বিশ্বশান্তি দিবস কবে উদ্যাপিত হয়?

▶ বিশ্বশান্তি দিবস 21 সেপ্টেম্বর উদ্যাপিত হয়।

45. আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস কবে উদ্যাপিত হয়?

▶ আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস 2 অক্টোবর উদ্যাপিত হয়।

46. আন্তর্জাতিক সহিতা দিবস কবে উদ্যাপিত হয়?

▶ আন্তর্জাতিক সহিমুতা দিবস 16 নভেম্বর উদ্যাপিত হয়।

47. বিশ্বমানব অধিকার দিবস কবে উদ্যাপিত হয়?

▶ বিশ্বমানব অধিকার দিবস 10 ডিসেম্বর উদ্যাপিত হয়।

48. বিশ্ব নারী দিবস কবে উদ্যাপিত হয়?

▶ বিশ্ব নারী দিবস ৪ মার্চ উদ্যাপিত হয়।

79. জ্যাক ডেলরস্ (Jacques Delors) কে ছিলেন?

▶ জ্যাক ডেলরস্ ছিলেন ফ্রান্সের প্রাক্তন অর্থনীতি ও রাজস্ব-বিষয়ক মন্ত্রী।

81. শ্রীনিকেতন কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

▶ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

82. ‘একত্রে বাঁচার শিক্ষা’র একটি উদাহরণ দাও।

▶ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বা অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব হল ‘একত্রে বাঁচার শিক্ষা’র উদাহরণ।

83. ডেলরস্ কমিশন কত সালে UNESCO-কে তাদের রিপোর্ট পেশ করে

▶ 1996 সালে ডেলরস্ কমিশন UNESCO-কে রিপোর্ট দেয়।

84. শিক্ষার চারটি স্তম্ভ কী কী?

▶ শিক্ষার চারটি স্তম্ভ হল-(1)Learning to know, (2)Learning to do, (3) Learning to live together, (4)Learning to bel

85. ডেলরস্ কমিশনের রিপোর্টের শিরোনাম কী ছিল?অথবা, ডেলরস্-এর সভাপতিত্বে গঠিত কমিশনের প্রতিবেদন কী নামে পরিচিত?

▶ ডেলরস্ কমিশনের রিপোর্ট-এর শিরোনাম ছিল-Learning: The Treasure Within |

86. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং গণিত শিক্ষার ক্ষেত্রে UNESCO-র একটি সুপারিশ উল্লেখ করো।

▶ UNESCO বিদ্যালয় স্তরে সকলের জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং গণিত শিক্ষাকে প্রধান শিক্ষণের বিষয় বলে সুপারিশ করে।

87. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং গণিত পাঠক্রম উপস্থাপনে UNESCO-র বক্তব্য কী?

▶ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং গণিত পাঠক্রম এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে যাতে বালক এবং বালিকাদের নিকট তা প্রাসঙ্গিক হয়।

88. ইউনেস্কো প্রকাশিত বিজ্ঞান শিক্ষণের ওপর বইটির নাম কী?

▶ ইউনেস্কো প্রকাশিত বিজ্ঞান শিক্ষণের বইটি হল ‘নিউ ইউনেস্কো সোর্স বুক ফর সায়েন্স টিচিং’।

89. ইউনেস্কো উল্লিখিত ICT-র একটি লক্ষ্য ব্যক্ত করো।

▶ ICT-র অন্যতম লক্ষ্য হল তথ্য, যোগাযোগ এবং সামাজিক দক্ষতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা।

90.2000 সালে ডাকার (Daker)-এ আয়োজিত ইউনেস্কোর সম্মেলনের মূল বিষয়টি কী ছিল?

▶ 2000 সালে ডাকারে আয়োজিত ইউনেস্কো সম্মেলনের মূল বিষয়টি ছিল ‘সকলের জন্য শিক্ষা’র ব্যবস্থা করা।

91. আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন 1972 খ্রিস্টাব্দে UNESCO-র কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল, তার শিরোনাম কী ছিল?

▶ আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন 1972 খ্রিস্টাব্দে UNESCO-র কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল, তার শিরোনাম ছিল-‘Learning to be l

92. ‘ICE-for the 21st Century’ কবে গঠিত হয়?

► ‘The International Commission Education (ICE)-for the 21st Century’ 1993 সালে গঠিত হয়।

93. UNESCO-এর উদ্যোগে 1996 খ্রিস্টাব্দে কোথায় আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল?

▶ UNESCO-এর উদ্যোগে 1996 খ্রিস্টাব্দে প্যারিসে আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

94. শান্তির শিক্ষা কী?

▶ শান্তির শিক্ষা হল শান্তিবিষয়ক শিক্ষা (Education about Peace) এবং শান্তির জন্য শিক্ষা (Education for peace)।

95. মালয়েশিয়া এবং ফিলিপাইনসে শান্তির শিক্ষা কী নামে পরিচিত?

▶ মালয়েশিয়া এবং ফিলিপাইনসে শান্তির শিক্ষা মূল্যবোধের শিক্ষা (Value of Education) নামে পরিচিত।

96. আমেরিকায় শান্তির শিক্ষা কী নামে পরিচিত?

▶ আমেরিকায় শান্তির শিক্ষা নাগরিকতার শিক্ষা (Citizenship Education) নামে পরিচিত।

97. আয়াল্যান্ডে শান্তির শিক্ষা কী নামে পরিচিত?

▶ আয়াল্যান্ডে শান্তির শিক্ষা পারস্পরিক বোঝাপড়ার শিক্ষা (Education for Mutual Understanding) নামে পরিচিত।

98. UNICEF শান্তির শিক্ষাকে কী নামে আখ্যায়িত করেছে?

▶ UNICEF শান্তির শিক্ষাকে উন্নয়নমূলক শিক্ষা (Development Education) নামে আখ্যায়িত করেছে।

99. শান্তির শিক্ষা ভারতবর্ষে কী নামে পরিচিত?

▶ ভারতবর্ষে শান্তির শিক্ষা ‘Education for Peace’ নামে পরিচিত।

3. Short Question Answer

1. শিক্ষায় বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গির প্রধান নিয়ন্ত্রক কে?

▶  সম্মিলিত রাষ্ট্রপুঞ্জের (UNO) একটি শাখা যা ইউনাইটেড নেশনস্ এডুকেশনাল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন বলে পরিচিত।

2. UNO-র অধীনে আরও দুটি বিভাগের নাম করো।

▶  UNO-র অধীনে আরও দুটি বিভাগ হল, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) এবং ইউনাইটেড নেশনস্ ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন্স এমারজেন্সি ফান্ড (UNICEF)।

4. UNESCO-র তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য উল্লেখ করো।

► UNESCO-র তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য হল-শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে তুলে ধরা, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও পরীক্ষণে উৎসাহদান এবং নতুন আবিষ্কার ও নীতিনির্ধারণ।

5. UNESCO-র প্রধান পাঁচটি কর্মসূচি উল্লেখ করো।

► UNESCO-র পাঁচটি কর্মসূচি হল-চিন্তাভাবনার পরীক্ষাগার, আদর্শমান নির্ধারণ, ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, তথ্যসংগ্রহ ও সরবরাহ করা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা।

6. UNESCO-র ক-টি বিভাগ আছে এবং কী কী?

► UNESCO-র পাঁচটি বিভাগ আছে, যেমন-মৌলিক শিক্ষা বিভাগ, মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ, বৃত্তি এবং কারিগরি শিক্ষা বিভাগ, উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং শিক্ষানীতি ও কৌশলের বিভাগ।

7. শিক্ষা সম্পর্কীয় ইউনেস্কোর প্রথম আন্তর্জাতিক কমিশনের নেতৃত্বে কে ছিলেন এবং তাঁর বিবরণীর নাম উল্লেখ করো।

▶ 1972 খ্রিস্টাব্দে এডগার ফাউরে (Edgar Faure)-র নেতৃত্বে ইউনেস্কোর প্রথম আন্তর্জাতিক কমিশন পরিচালিত হয় এবং তাঁর বিবরণীর নাম ছিল ‘লার্নিং টু বি: দি ওয়ার্ল্ড অফ এডুকেশন টুডে অ্যান্ড টুমরো’।

8. 1996 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত UNESCO পরিচালিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন কার নেতৃত্বে পরিচালিত হয় এবং রিপোর্টটি কী নামে প্রকাশিত হয়?

▶ 1996 খ্রিস্টাব্দের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন জ্যাক ডেলরস্-এর নেতৃত্বে পরিচালিত হয় এবং রিপোর্টটি ‘লার্নিং: দি ট্রেজার উইদিন’ নামে প্রকাশিত হয়।

9. ‘লার্নিং: দি ট্রেজার উইদিন’- রিপোর্টটির মূল বক্তব্য কী ছিল?

▶ ‘লার্নিং: দি ট্রেজার উইদিন’ রিপোর্টটির মূল বক্তব্য ছিল, শিক্ষা হল জীবনব্যাপী, যা চারটি স্তম্ভের ওপর দন্ডায়মান- জানার জন্য শিক্ষা, কর্মের জন্য শিক্ষা, একত্রে বসবাসের শিক্ষা এবং মানুষ হওয়ার শিক্ষা।

10. জ্যাক ডেলরের নেতৃত্বে কত খ্রিস্টাব্দে আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন স্থাপিত হয় এবং এর উদ্দেশ্য কী ছিল?

▶ 1993 খ্রিস্টাব্দে UNESCO-র পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার প্রসার এবং তার মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে জ্যাক ডেলরস্-এর নেতৃত্বে শিক্ষা কমিশন স্থাপিত হয়।

11. ডেলরস্ কমিশন ‘কর্মের জন্য শিক্ষা’ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছে?

▶ ডেলরস্ কমিশন তার বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছে যে, ‘কর্মের জন্য শিক্ষা’ কেবল কোনো কাজ সম্পন্ন করা নয়। এর প্রকৃত অর্থ হল কাজে উৎকর্ষ আনা, কাজে দক্ষ হওয়া এবং নতুন পরিস্থিতিতে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করা।

12. কর্মের জন্য শিক্ষাকে ক-টি দিক থেকে বিচার করা যায় এবং তা কী কী?

▶ কর্মের জন্য শিক্ষাকে চারটি দিক থেকে বিচার করা যায়, যেমন- শারীরশিক্ষা, বৌদ্ধিক শিক্ষা, সামাজিক শিক্ষা এবং নান্দনিক শিক্ষা।

13. একত্রে বসবাসের শিক্ষার তাৎপর্য উল্লেখ করো।

▶ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, ঐক্যবোধ, অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব, আন্তর্জাতিকতাবোধ, বিশ্বব্যাপী সংকট নিরসন এবং সামাজিক সমস্যার সমাধান হল একত্রে বসবাসের শিক্ষার তাৎপর্য।

14. মানুষ হয়ে ওঠার জন্য শিক্ষা বলতে কী বোঝ?

▶ শিক্ষার্থীর সহজাত গুণাবলির বিকাশ, মূল্যবোধ, নৈতিকতা, স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা ইত্যাদির শিক্ষাকেই মানুষ হয়ে ওঠার জন্য শিক্ষা বলে।

15. মানুষ হওয়ার শিক্ষার তাৎপর্য উল্লেখ করো।

▶ সহজাত সম্ভাবনাগুলির বিকাশ, জ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগ, বিজ্ঞানমনস্কতা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতার বিকাশ, নমনীয়তা, জাতীয়তা এবং আন্তর্জাতিকবোধ হল মানুষ হওয়ার শিক্ষার তাৎপর্য।

16. কীভাবে বিদ্যালয়ে শিক্ষার চারটি উদ্দেশ্যকে কার্যকরী করা যেতে পারে?

▶ বিদ্যালয়ের পাঠক্রমিক এবং সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শিক্ষার চারটি উদ্দেশ্যকে কার্যকরী করা সম্ভব।

17. রবীন্দ্রনাথের মতে, শিক্ষায় বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি কী?

▶ রবীন্দ্রনাথের মতে, শিক্ষায় বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গি হল বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যবিধানের দ্বারা বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।

18. ‘জানার জন্য শিক্ষা’ প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য কী?

▶ জানার জন্য শিক্ষা প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য হল-শিক্ষার্থীকে জ্ঞান অর্জনের জন্য উৎসাহিত করা এবং স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে শেখানো।

19. বৌদ্ধিক কাজের দুটি গুরুত্ব লেখো।

▶ বৌদ্ধিক কাজের দুটি গুরুত্ব হল।. শিক্ষার্থীর স্বাধীন চিন্তার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করা এবং ii. শিক্ষার্থীর জ্ঞান এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করা।

20. জ্ঞানার্জনের শিক্ষা ব্যক্তিকে কীভাবে প্রভাবিত করে?

▶ জ্ঞানার্জনের শিক্ষা ব্যক্তিকে উদার মনোভাবাপন্ন, কর্মদক্ষ এবং দায়িত্ববান হতে উৎসাহিত করে। এ ছাড়া তাকে সমাজের একজন সচেতন সদস্য হওয়ার প্রেরণা জোগায়।

21. আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন কী উদ্দেশ্যে গঠিত হয়?

▶ আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন শিক্ষার বিভিন্ন সমস্যা ও সেগুলির সমাধানের পথ সম্পর্কে আলোচনার জন্য এবং ভবিষ্যৎ শিক্ষা পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়।

22. যুথবদ্ধতা বা সংঘবদ্ধতা কী?

▶ যূথবদ্ধতা বা সংঘবদ্ধতা হল এমন এক প্রবৃত্তি যা মানুষকে দলবদ্ধভাবে থাকতে প্রেরণা জোগায়। এই প্রবৃত্তি মানুষকে সমাজসচেতন করে এবং সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানের রীতিনীতি আয়ত্ত করতে শেখায়।

23. সামাজিকীকরণ বলতে কী বোঝায়?

▶ সামাজিকীকরণ হল সেই প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ব্যক্তিকে সমাজের মধ্যে রেখে তার সামাজিক বৈশিষ্ট্যগুলির (যেমন-সমানুভূতি, সহানুভূতি, সহযোগিতা ইত্যাদি) বিকাশ ঘটানো হয়।

24. জ্ঞানার্জনের শিক্ষার ত্রুটি কী?

▶ জ্ঞানার্জনের শিক্ষার ত্রুটি হল-এতে শিক্ষক-শিক্ষিকার ভূমিকা প্রধান ও শিক্ষার্থীর ভূমিকা অপ্রধান। দক্ষতা ও অনুভূতির বিকাশ এই শিক্ষায় উপেক্ষিত।

25. একত্রে বসবাস করার শিক্ষার মূল কথা কী?

▶ একত্রে বসবাস করার শিক্ষার মূল কথা হল-পৃথিবী থেকে হিংসা- বিদ্বেষ দূর করে, সব মানুষের মধ্যে ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বজায় রাখা। বিশ্বের সকল মানুষকে একসূত্রে আবদ্ধ করে।

26. ব্যক্তিত্বের বিকাশ বলতে কী বোঝায়?

▶ ব্যক্তিত্বের বিকাশ বলতে বোঝায় ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্যাবলি (যেমন-দয়া, মায়া, সহানুভূতি, ভয়, ঘৃণা, মানবিক মূল্যবোধ ইত্যাদি) এবং সামাজিক বৈশিষ্ট্যের বিকাশ।

27. ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটলে কী হয়?

▶ ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটলে মানুষ উন্নত দৈহিক, মানসিক ও বৌদ্ধিক ক্ষমতার অধিকারী হয় এবং তার মধ্যে যথাযথভাবে প্রাক্ষোভিক বিকাশ ঘটে।

28. সাংস্কৃতিক সংগতিবিধান কী?

▶ সাংস্কৃতিক সংগতিবিধান হল এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পাওয়া রীতিনীতি, ধ্যানধারণা, বিশ্বাস- অবিশ্বাস, আচার-আচরণ প্রভৃতির সঙ্গে পরিচিত হই এবং সেগুলিকে অনুসরণ করি।

29. প্রকৃত জ্ঞানী মানুষের দুটি গুণ উল্লেখ করো।

▶ প্রকৃত জ্ঞানী মানুষের দুটি গুণ হল – i জাতিধর্মবর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার চেষ্টা করা এবং ii. সামাজিক ও মানসিক মূল্যবোধের প্রতি আস্থাবান হওয়া।

31. সংস্কৃতি বা কালচার বলতে কী বোঝায়?

▶ সংস্কৃতি বা কালচার হল পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত কতকগুলি রীতিনীতি, ধ্যানধারণা, আচার-আচরণ, বিশ্বাস-অবিশ্বাস প্রভৃতি যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানবজীবনকে প্রভাবিত করে।

32. ডেলরস্ কমিশনে ফ্রান্স ছাড়া আর কোন্ কোন্ দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল?

▶ ডেলরস্ কমিশনে ফ্রান্স ছাড়া, জার্মান, জর্ডন, পোর্তুগাল, ভেনেজুয়েলা, সেনেগাল, জাপান, ভারত, জিম্বাবোয়ে প্রভৃতি দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।

33. জাতীয় শিক্ষানীতিতে কত খ্রিস্টাব্দের মধ্যে 25% উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তিবিদ্যায় দক্ষ করে তোলার জন্য সুপারিশ করা হয়?

▶ জাতীয় শিক্ষানীতিতে 1995 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে 25% উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তিবিদ্যায় দক্ষ করে তোলার জন্য সুপারিশ করা হয়।

34.UNESCO-র অধীনে কোন্ সম্মেলনে এবং কবে ‘অন্তর্ভুক্তি শিক্ষা’ সম্পর্কে ব্যাপক পর্যালোচনা করা হয়?

▶ 1994 সালে স্পেনের সালামানকা-য় (Salamanca) বিশেষ শিক্ষার ওপর এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজিত হয়, যেখানে ‘অন্তর্ভুক্তি শিক্ষা’ সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা হয়।

35. অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা কী?

▶ সকলের জন্য শিক্ষা কার্যকরী করার উদ্দেশ্যে সাধারণ বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের একই সঙ্গে পঠনপাঠনের সুযোগকে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা বলে।

36. অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরে কোন্ প্রতিষ্ঠানগুলি সহযোগিতা করে?

▶ ইউনাইটেড নেশনস্ অর্গানাইজেশন, ইউনাইটেড নেশনস্ ইনটারন্যাশনাল চিলড্রেন্স এমার্জেন্সি ফান্ড, ইউনাইটেড নেশনস্ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, বিশ্ব ব্যাংক প্রমুখ সংস্থা অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে।

37. পরিবেশ শিক্ষার ওপর আন্তর্জাতিক সম্মেলন কোথায় কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?

▶ 1976 এবং 1977 সালে যথাক্রমে বেলগ্রেড এবং টিবিলিসিতে পরিবেশ শিক্ষার ওপর আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

38. টিবিলিসি সম্মেলনে পরিবেশ শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কী বলা হয়?

▶ টিবিলিঙ্গি সম্মেলনে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা, জ্ঞান, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং পরিবেশ সম্পর্কে দক্ষতা ও অংশগ্রহণই পরিবেশ শিক্ষার উদ্দেশ্য বলে উল্লেখ করা হয়।

39. Stapp এবং Cox পরিবেশ শিক্ষায় ক-টি ধারণার উল্লেখ করেন এবং সেগুলি কী?

▶ Stapp এবং Cox পরিবেশ শিক্ষায় পাঁচটি ধারণার উল্লেখ করেন, যেমন- বাস্তুতন্ত্র, জনসংযোগ, অর্থনীতি ও প্রযুক্তি, পরিবেশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এবং পরিবেশ নৈতিকতা।

40. ইউনেস্কোর প্রস্তাবিত শিক্ষাক্ষেত্রে ICT-র একটি লক্ষ্য উল্লেখ করো।

▶ ইউনেস্কোর প্রস্তাবিত শিক্ষাক্ষেত্রে ICT-র অন্যতম লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা পরিমাপে বিভিন্ন কৌশলের ব্যবহার। যেমন-পোর্টফোলিও অ্যাসেসমেন্ট, নির্ণায়কমূলক, চূড়ান্ত মূল্যায়ন ইত্যাদি।

41. ইউনেস্কো আয়োজিত কোন্ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শিক্ষকতাকে একটি পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়?

▶ 1966 সালের অক্টোবর মাসে আয়োজিত ‘স্পেশাল ইনটার- গভর্নমেন্টাল কনফারেন্স’-এ শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গণ্য করা হয়।

42. শিক্ষার বিশ্বায়নকে সামনে রেখে কোন্ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শিক্ষকের নতুন ভূমিকা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়?

▶ 1996 খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো আয়োজিত ‘স্ট্রেনদেনিং অফ দি রোল অফ দি টিচার ইন চেঞ্জিং ওয়ার্ল্ড’ নামে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শিক্ষকের নতুন ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়।

43. শিক্ষকদের নতুন ভূমিকা সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষার ক্ষেত্রে কী প্রস্তাব করা হয়েছে?

▶ শিক্ষকদের নতুন ভূমিকা সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাক্- বৃত্তিশিক্ষা এবং বৃত্তিকালীন শিক্ষাকে একই ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

44. ডাকারে ‘সকলের জন্য শিক্ষা’ সম্মেলনে শিক্ষা পুনর্গঠনে ক-টি নীতির কথা বলা হয় এবং সেগুলি কী?

▶ ডাকারে ‘সকলের জন্য শিক্ষা’ সম্মেলনে শিক্ষা পুনর্গঠনে 6টি নীতির কথা বলা হয়। এগুলি হল-প্রাক্-শৈশব শিশুদের জন্য যত্ন ও শিক্ষা, 2015 সালের মধ্যে সকলের জন্য অনৈতিক শিক্ষা, জীবনশৈলী শিক্ষা, বয়স্ক সাক্ষরতা, শিক্ষার লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ এবং শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি।

45. UNICEF-এর মতে শান্তির শিক্ষা কী?

▶ UNICEF-এর মতে, শান্তির শিক্ষা হল একটি প্রক্রিয়া যা শিশু, যুব সম্প্রদায় এবং পরিণত মানুষদের নিজ অন্তরের, বাইরের, সামাজিক, দেশের এবং বিশ্বের দ্বন্দ্ব, হিংসা ও সমস্যাগুলি নিরসনের জন্য উদ্বুদ্ধ করে এবং প্রয়োজনীয় জ্ঞান দান, দক্ষতা বৃদ্ধি ও দৃষ্টিভঙ্গি গঠনের মাধ্যমে আচরণের পরিবর্তন আনে।

4. Long Question Answer

1.জ্যাক ডেলরস্-এর মতানুযায়ী শিক্ষার চারটি স্তম্ভ সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তর: শিক্ষার চারটি স্তম্ভ

জ্যাক ডেলরস্ (Jacques Delors)-এর নেতৃত্বে ডেলরস্ কমিশনের পক্ষ থেকে একুশ শতকের শিক্ষার ওপর প্রকাশিত Learning: The Treasure Within নামে প্রতিবেদনটিতে শিক্ষার চারটি উদ্দেশ্য বা শিখনের চারটি স্তম্ভের উল্লেখ করা হয়। এগুলি হল-

i. জানার জন্য শিক্ষা (Learning to know), ii. কর্মের জন্য শিক্ষা (Learning to do), iii. একত্রে বসবাসের শিক্ষা (Learning to live together), iv. মানুষ হওয়ার শিক্ষা (Learning to be) ।

জানার জন্য শিক্ষা

জানার জন্য শিক্ষা বলতে সেই শিখন প্রক্রিয়াকে বোঝায় যা শিক্ষার্থীকে বিশ্বজগতের নানান বস্তু সম্পর্কে জানতে সহায়তা করে। জ্ঞান যে-কোনো মানুষকে বিকাশের পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করে। অনেকের মতে, জ্ঞানার্জন মানে কেবল সুসংগঠিত জ্ঞান আহরণই নয়, বরং জ্ঞান আহরণের কৌশল ও পদ্ধতিগুলিকেও সঠিকভাবে আয়ত্ত করা।

কর্মের জন্য শিক্ষা

জীবনব্যাপী শিক্ষার দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হল কর্মের জন্য শিক্ষা। কর্মের জন্য শিক্ষার অর্থ শুধুমাত্র কাজ সম্পন্ন করা নয়। এর অর্থ কাজে উৎকর্ষ আনা, কাজে দক্ষ হওয়া এবং নতুন পরিস্থিতিতে দলবদ্ধভাবে কাজ করা। শিক্ষাগ্রহণের সময়ে শিক্ষার্থীকে যদি কর্ম অভিজ্ঞতার বা সামাজিক কাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া যায়, তাহলে কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ তৈরি হয়। তারা নিজের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা ব্যবহারের সুযোগ পায় যার ফলে তাদের কাজে দক্ষতা অর্জনের পরিবেশ গড়ে ওঠে। কর্মদক্ষতা অর্জন করতে না পারলে কারও পক্ষে ব্যক্তিজীবনে ও সমাজজীবনে সার্থকভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।

একত্রে বসবাসের শিক্ষা

একত্রে বসবাস করার শিক্ষা বলতে পরস্পর মিলেমিশে থাকার শিক্ষাকে বোঝানো হয়। বিশ্বের সমস্ত মানুষকে একসূত্রে বাঁধার আদর্শে গঠিত এই শিক্ষা মানুষের মন থেকে হিংসা, বিদ্বেষ দূর করে তাকে বিশ্বভ্রাতৃত্বের পথে অগ্রসর ■ হওয়ার প্রেরণা জোগায়। এই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হল সম্প্রদায় ও জাতিগত – ক্ষুদ্রতা থেকে ব্যক্তিকে মুক্ত করে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। একত্রে বসবাসের শিক্ষার এই উদ্দেশ্যকে বাদ দিলে অন্যান্য শিক্ষা অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পায়।

মানুষ হওয়ার শিক্ষা

মানুষ হয়ে ওঠার জন্য শিক্ষা বলতে বোঝায় সেই শিক্ষা যার মাধ্যমে বিবেক, মনুষ্যত্ব, নৈতিকতা, পারস্পরিক সহযোগিতা প্রভৃতি গুণের বিকাশ ঘটে। এই শিক্ষার মূল কথা হল ‘মূল্যবোধ গড়ে তোলা’। যথাযথ মানবিক মূল্যবোধ গড়ে উঠলে মানুষ সহজে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। প্রকৃত মানুষ নিজের স্বার্থের কথা ভুলে দেশের এবং দশের উপকারে নিজেকে উৎসর্গ করে।

তাই শিক্ষার্থীদের এমন পরিবেশ ও পরিস্থিতির সম্মুখীন করতে হবে যাতে তারা নিত্যনতুন মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয় এবং উৎপাদনশীল, দায়িত্বসম্পন্ন নাগরিকে পরিণত হতে পারে। একেই প্রগতিবাদীরা মানুষ হওয়ার শিক্ষা বলে উল্লেখ করেছেন।

2.শিক্ষার উদ্দেশ্যের প্রেক্ষিতে শিখন কী কী? ‘জানার জন্য শিক্ষা’ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করো।

অথবা, জানার জন্য শিক্ষার মূল বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

উত্তর: শিক্ষার উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে শিখন

1993 খ্রিস্টাব্দে জ্যাক ডেলরস্-এর 7 নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন দীর্ঘ তিন বছর ধরে বিশ্বজুড়ে আলোচনা-পর্যালোচনার পর UNESCO-র কাছে Learning: The Treasure Within শীর্ষক প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে বিশ্বের প্রায় চোদ্দোজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ছিলেন। তাঁরা শিক্ষার উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে চারপ্রকার শিখনের কথা উল্লেখ করেছেন। সেগুলি হল-ⅰ. জ্ঞানের জন্য শিখন (Learning to know), ii. কাজ করার জন্য শিখন (Learning to do), iii. একত্রে বাঁচার জন্য শিখন (Learning to live together), iv. মানুষ হয়ে ওঠার জন্য শিখন (Learning to be)।

জানার জন্য শিক্ষা

‘জানার জন্য শিক্ষা’ বলতে সেই শিখন প্রক্রিয়াকে বোঝায় যা শিক্ষার্থীকে বিশ্বজগতের নানান বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে সহায়তা করে। জ্ঞান যে-কোনো মানুষকে বিকাশের পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করে। শিক্ষার প্রথম উদ্দেশ্যই হল শিক্ষার্থীকে জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করা। অনেকের মতে, জানতে চাওয়া বা জ্ঞানার্জন মানে কেবল সুসংগঠিত জ্ঞান আহরণই নয়, বরং জ্ঞান আহরণের কৌশল ও পদ্ধতিগুলিকেও সঠিকভাবে আয়ত্ত করা।

আধুনিক শিক্ষাবিদ স্ব-শিক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তারা বলে যে, প্রতিটি ব্যক্তিকে কীভাবে শিখতে হয়, সে সম্পর্কে জ্ঞাত করা হল জানার জ শিক্ষার একটি বিশেষ দিক।

জানার জন্য শিক্ষা বা জ্ঞানার্জনের শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীর একাগ্রতা, স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাশক্তির বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। এই জন্য শিক্ষার এই উদ্দেশ্যের মূল উপাদানগুলি হল-

[1] একাগ্রতা বা মনঃসংযোগ: জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর মনঃসংযোগ অনুশীলন করার প্রয়োজন হয়। বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক কাজের মধ্য দিয়েই শিক্ষার্থীর মধ্যে একাগ্রতা বা মনঃসংযোগ আনা যায়। ধ্যান, যোগ ও আগ্রহ সঞ্চারমূলক বিভিন্ন কাজ মনঃসংযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।

[2] স্মৃতি: জানার জন্য শিক্ষার ক্ষেত্রে আর-একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল স্মৃতির অনুশীলন। নানা উৎস থেকে তথ্যসংগ্রহ করে মনে রাখার কৌশলগুলি প্রয়োগের মাধ্যমে স্মৃতির উন্নতি ঘটানো যায়। স্মৃতি মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়জীবন থেকে শুরু করে কর্মজীবন, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই উন্নত স্মৃতির প্রয়োজন হয়।

[3] চিন্তনক্ষমতা: জানতে চাওয়ার জন্য শিক্ষার আর- একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল চিন্তনক্ষমতা। শিক্ষার্থী শৈশবে তার পারিবারিক পরিবেশ থেকেই চিন্তনশক্তি বিকাশের প্রশিক্ষণ পেতে শুরু করে। বিদ্যালয়জীবনে পঠনপাঠনের মধ্য দিয়ে এই প্রক্রিয়াটি আরও সক্রিয় হয়। নানারকম সমস্যামূলক পরিস্থিতি শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করলে সেগুলির সমাধান করতে গিয়ে তাদের চিন্তনশক্তির উন্নতি ঘটে।

জানতে চাওয়ার জন্য শিক্ষার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা গ্রহণ করা প্রয়োজন। যেমন-

i. এক্ষেত্রে তথ্যে যেন কিছু ভ্রান্তি বা অসম্পূর্ণতা না থাকে।

ii. বিভিন্ন বিষয় বা ঘটনা সম্পর্কিত সাম্প্রতিকতম তথ্যসংগ্রহ করা উচিত।

iii. কেবল জ্ঞান অর্জনই যথেষ্ট নয়, তার যথাযথ প্রয়োগের দিকেও লক্ষ রাখতে হবে।

3 .কর্মের জন্য শিক্ষা বলতে কী বোঝ? এই ধরনের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করো। শিক্ষা কীভাবে এই উদ্দেশ্যসাধনে সহায়তা করে?

অথবা, 

কর্মসম্পাদনের শিক্ষা কাকে বলে?

উত্তর: কর্মের জন্য শিক্ষা

জীবনব্যাপী শিক্ষার দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হল কর্মের শিক্ষা। কর্মের শিক্ষার অর্থ শুধুমাত্র কাজ সম্পন্ন করা নয়, কাজে উৎকর্ষ আনা, কাজে দক্ষ হওয়া এবং নতুন পরিস্থিতিতে দলবদ্ধভাবে কাজ করা। শিক্ষাগ্রহণের সময়ে শিক্ষার্থীকে যদি কর্ম অভিজ্ঞতার বা সামাজিক কাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া যায়, তাহলে কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ তৈরি হয়। তারা নিজের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা ব্যবহারের সুযোগ পায় ও কাঁজে দক্ষতা অর্জনের পরিবেশ গড়ে ওঠে। কর্মদক্ষতা অর্জন করতে না পারলে কারও পক্ষে ব্যক্তিজীবনে ও সমাজজীবনে সার্থকভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।

কর্মের জন্য শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

কর্মের জন্য শিক্ষা অর্থাৎ, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা নিম্নলিখিত কারণে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

[1] কর্মজগৎ সম্পর্কে ধারণা দান: এই শিক্ষা শিক্ষার্থীকে বর্তমান বিশ্বের কর্মজগৎ এবং তার বিবর্তন সম্পর্কে ধারণা দেয়।

[2] সামাজিক সমস্যাসমাধানে সহায়তা: এই শিক্ষা শিক্ষার্থীকে একদিকে যেমন বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সমস্যা জানতে এবং বুঝতে সাহায্য করে অন্যদিকে সেইসব সমস্যাসমাধানে অগ্রসর হতে উদ্বুদ্ধ করে।

[3] দলগতভাবে কাজের অভ্যাস গঠন: এই শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এর ফলে পারস্পরিক সহযোগিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, ঐক্য প্রভৃতি গুণের বিকাশ ঘটে।

[4] মানবসম্পদ উন্নয়নে সহায়তা: কর্মের জন্য শিক্ষা মানুষকে উৎপাদনশীল হতে সাহায্য করে। উৎপাদনশীল মানুষই প্রকৃত অর্থে মানবসম্পদ। সুতরাং, এই শিক্ষা মানবসম্পদ বিকাশে সাহায্য করে এবং উৎপাদন বৃদ্ধির দ্বারা দেশকে প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।

[5] সৃজনশীল খুণের বিকাশে সহায়তা: এই শিক্ষা শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল গুণের বিকাশ ঘটায়।

[6] ব্যক্তিত্বের বিকাশে সহায়তা: এই শিক্ষা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটায়, যার ফলে তারা যে-কোনো ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করার আত্মবিশ্বাস অর্জন করে।

[7] কৌতূহল বৃদ্ধিতে সহায়তা: এই শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা ধরনের কৌতূহল সৃষ্টি করে। শিক্ষার্থীরা কৌতূহল নিবারণে সক্রিয় হয়।

[৪] বৃত্তি নির্বাচনে সহায়তা: এই শিক্ষা শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যৎ জীবনে বৃত্তি নির্বাচনে সহায়তা করে এবং উপার্জনক্ষম করে তোলে।

[9] গ্রমের প্রতি মর্যাদাদান: এই শিক্ষা শিক্ষার্থীকে হাতেকলমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে শেখায়। ফলে শিক্ষার্থী কাজকে ভালোবাসতে শেখে ও শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়।

[10] দৈহিক বিকাশে সহায়তা: এই শিক্ষা শিক্ষার্থীর দৈহিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। কর্মের জন্য শিক্ষার উদ্দেশ্যসাধনে সহায়তা

কর্মের জন্য শিক্ষার উদ্দেশ্যসাধনে গৃহীত বিদ্যালয়ের কর্মসূচিগুলি হল-

[1] কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক কর্মসূচি: পাঠক্রমিক ও সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্যে এমন কিছু কাজ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যা কর্মশিক্ষা ও কর্মদক্ষতা বিকাশে সাহায্য করে।

[2] প্রবণতা ও কর্মভিত্তিক কর্মসূচি: শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের প্রবণতা ও আগ্রহ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের কর্মভিত্তিক কাজ করতে পারে, সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে।

[3] তাত্ত্বিক শিক্ষা ও কর্মশিক্ষার সমন্বয়সাধন: তাত্ত্বিক শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা যাতে সমান গুরুত্ব পায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

[4] ব্যাবহারিক প্রয়োজনভিত্তিক কর্মসূচি: শিক্ষার্থীদের এমন সব কাজ করতে উৎসাহ দিতে হবে ব্যাবহারিক জীবনে যার মূল্য আছে।

4 .যুথবদ্ধভাবে বসবাসের জন্য শিখন বলতে কী বোঝ? শিক্ষাব্যবস্থা কীভাবে এই শিখনে সহায়তা করে? অথবা, শিক্ষার একটি উদ্দেশ্য হল ‘একত্রে বসবাসের জন্য শিক্ষা’ কীভাবে শিক্ষা দ্বারা এই উদ্দেশ্যপূরণ সম্ভব?

‘ অথবা,  ‘একত্রে বসবাসের উদ্দেশ্যে শেখা’-ধারণাটি আলোচনা করো।

 উত্তর: যূথবদ্ধভাবে বসবাসের জন্য শিখন

যূথবদ্ধভাবে বসবাস করার শিক্ষা বলতে পরস্পর মিলেমিশে থাকার শিক্ষাকে বোঝানো হয়। এই শিক্ষা বিশ্বের সমস্ত মানুষকে একসূত্রে বাঁধার আদর্শে গঠিত। এই শিক্ষা মানুষের মন থেকে হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা দূর করে তাকে বিশ্বভ্রাতৃত্বের পথে অগ্রসর হওয়ার প্রেরণা জোগায়। এই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হল সম্প্রদায় ও জাতিগত ক্ষুদ্রতা থেকে ব্যক্তিকে মুক্ত করা এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

যূথবদ্ধভাবে বসবাসের শিখনে শিক্ষাব্যবস্থার সহায়তা

সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি সহ পাঠক্রমিক বিভিন্ন কাজের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কমিউনিটি সচেতনতা, জাতীয়তা ও আন্তর্জাতিকতাবোধ জাগ্রত করতে ক হবে। এর মাধ্যমে জীবনব্যাপী শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্যরূপে একত্রে বেঁচে থাকার শিক্ষার কার্যকারিতা শিক্ষার্থীরা উপলব্ধি করবে। ওই ধরনের কিছু বং কর্মসূচির উল্লেখ করা হল-

[1] মানবিক গুণাবলির বিকাশ: একত্রে বেঁচে থাকতে হলে সহানুভূতি, পরার্থপরতা, ধৈর্য, গণতান্ত্রিক চেতনা, সহমর্মিতা, ত্যাগ ইত্যাদি বিভিন্ন চারিত্রিক গুণের প্রয়োজন। বিভিন্ন পাঠক্রমিক ও সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্য দিয়ে এই সমস্ত গুণের বিকাশ ঘটাতে হবে।

[2] সাংগঠনিক কাজের মাধ্যমে গোষ্ঠীমানসিকতার বিকাশ: বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজ সংগঠন এবং কার্যকরীকরণে শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো-না- কোনোভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, সে ব্যাপারে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সচেষ্ট হতে হবে। ওই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী দলগত কাজের সুফল এবং ওই ধরনের কাজের রীতিনীতি, শর্ত ইত্যাদি অনুশীলনে রপ্ত হবে। এগুলি তাকে সকলকে নিয়ে চলতে সাহায্য করবে।

[3] সমাজসচেতনতার বিকাশ: বিদ্যালয় এমন সব কর্মসূচি গ্রহণ করবে যার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কমিউনিটির যোগাযোগ ঘটানো সম্ভব। যেমন-পরিবেশ সংরক্ষণ, পরিবেশদূষণ প্রতিরোধ, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কাজ সংগঠন ইত্যাদি।

[4] বিশ্ব ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতনতার প্রসার: বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, সেখানকার মানুষজন, তাদের জীবনযাত্রা প্রণালী, ইতিহাস, সংস্কৃতি, সমস্যা ও প্রগতি ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবহিত করা প্রয়োজন।

[5] মানবিক ভূগোলের ওপর গুরুত্ব প্রদান: ভূগোল, বিশেষ করে মানবিক ভূগোলের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ব্যাবসাবাণিজ্য, শিল্প ও উৎপাদন, যাতায়াত ও যোগাযোগ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পৃথিবীর দেশগুলি যে পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল, সেইসব তথ্য শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

[6] আন্তর্জাতিক শান্তিসংস্থাগুলি সম্পর্কে সচেতনতার প্রসার: বিশ্বশান্তি ও বিশ্বভ্রাতৃত্ব গড়ে তুলতে যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা স্থাপিত হয়েছে, তাদের পশ্চাৎপট ও কার্যকারিতা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তুলতে হবে।

[7] সমমানের শিক্ষালাভের সুযোগ দান: জাতিধর্ম, অঞ্চল, স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকেই সমমানের শিক্ষালাভের সুযোগ করে দিতে হবে। 1968 সালের শিক্ষানীতিতে যে ‘কমন স্কুল’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে, ‘তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

[৪] জাতীয় সংহতির প্রচার: বিদ্যালয়ে বিনোদনমূলক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি, যেমন-আঞ্চলিকতাবাদ, প্রাদেশিকতা, সাম্প্রদায়িকতা, ভাষা-ধর্ম-গোষ্ঠীগত বিভেদ দূর করে জাতীয় সংহতিকে নিশ্চিত করতে হবে।

5. ‘মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা’ বলতে কী বোঝ? প্রকৃত মানুষ হওয়ার গুণাবলি কী?

উত্তর: মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা

মানুষ হয়ে ওঠার জন্য শিক্ষা বলতে সেই শিক্ষাকে বোঝায় যার মাধ্যমে বিবেক, মনুষ্যত্ব, নৈতিকতা, পারস্পরিক সহযোগিতা প্রভৃতি গুণের বিকাশ ঘটে। এই শিক্ষার মূল কথা হল ‘মূল্যবোধ গড়ে তোলা’। যথাযথ মানবিক মূল্যবোধ গড়ে উঠলে মানুষ সহজে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। প্রকৃত মানুষ নিজের স্বার্থের কথা ভুলে দেশের এবং দশের উপকারে নিজেকে উৎসর্গ করে।

প্রকৃত মানুষের গুণাবলি

প্রকৃত মানুষ হওয়ার গুণাবলি নীচে উল্লেখ করা হল-

[1] শারীরিকভাবে সুস্থ: প্রকৃত মানুষেরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শারীরিক দিক থেকে সুস্থ হন।

[2] স্বাভাবিক মনবিকাশ: এঁদের মনের বিকাশ স্বাভাবিক।

[3] সংগতিবিধানে সক্ষম: এঁরা সহজেই সমাজের সব ধরনের পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারেন। অর্থাৎ এঁদের সামাজিক বিকাশও যথাযথভাবে ঘটে থাকে।

[4] নীতিবোধ ও আধ্যাত্মিক চেতনা: এঁদের নীতিবোধ যেমন প্রবল হয়, তেমনই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এঁদের মধ্যে আধ্যাত্মিক চেতনারও প্রকাশ দেখা যায়।

[5] সুনাগরিক: এঁরা সুনাগরিক হন এবং রাষ্ট্রের আইনকানুন ও সংবিধান মেনে চলেন।

[6] জ্ঞানী ও পথপ্রদর্শক: এঁরা বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান সঞ্চয় করে থাকেন। এঁরা মনে করেন, জ্ঞান অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করে মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের আলোর পথে পরিচালিত করে।

[7] সহানুভূতিশীল: এঁরা সহানুভূতিশীল হন।

[৪] উৎপাদনশীল: প্রকৃত মানুষ জ্ঞানসঞ্চয় এবং কর্মদক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করেন।

[9] ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক: এঁরা একদিকে যেমন সামাজিক ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন, অন্যদিকে ঐতিহ্যের সংরক্ষণ ও উন্নয়নে সাহায্য করেন।

[10] উদার ও মানবপ্রেমী: প্রকৃত মানুষেরা উদার মনের অধিকারী হন। তাঁরা মানবকল্যাণকে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেন।

[11] একত্রে বসবাসকারী: এঁরা স্বার্থপরতা দূর করে জাতিধর্মবর্ণভাষা নির্বিশেষে একসঙ্গে মিলেমিশে বাঁচার আদর্শে অনুপ্রাণিত হন।

[12] সুব্যক্তিত্বের অধিকারী: প্রকৃত মানুষ শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি সুব্যক্তিত্বের অধিকারী হন।

6 ‘.জানার জন্য শিক্ষা’ কাকে বলে? জানার জন্য শিক্ষার তাৎপর্য উল্লেখ করো। 

অথবা, 

‘জানার জন্য শিক্ষা’ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করো।

উত্তর: জানার জন্য শিক্ষার তাৎপর্য

‘জ্ঞান অর্জন’ শিক্ষার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। শিক্ষার উদ্দেশ্য হিসেবে জ্ঞানার্জনের তাৎপর্য নীচে আলোচনা করা হল-

[1] জ্ঞানার্জন ও শিক্ষাবিদদের বক্তব্য: সব দেশের মহান শিক্ষাবিদরা সর্বকালের শিক্ষাদর্শন আলোচনা করতে গিয়ে জ্ঞানার্জনের কথা বলেছেন।

প্রাচীনকালের শিক্ষার লক্ষ্য ছিল আত্মোপলব্ধি। আর এই আত্মোপলব্ধির জন্য প্রয়োজন হল জ্ঞান। স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর শিক্ষাচিন্তায় ব্যক্তির সম্ভাবনার ওপর অগাধ আস্থার কথা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ব্যক্তির মধ্যেই জ্ঞান বিদ্যমান। শিক্ষার কাজ হল সেই জ্ঞানের প্রকাশ ঘটানো।

[2] জ্ঞানার্জন ও শিক্ষার অন্যান্য উদ্দেশ্য: প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার অন্যান্য উদ্দেশ্যপূরণে (যেমন-কর্মের জন্য শিক্ষা, একত্রে বেঁচে থাকার শিক্ষা, মানুষ হওয়ার শিক্ষা) আবশ্যিক উপাদান হল জ্ঞান অর্জন বা জ্ঞানলাভ। এর মধ্যে দিয়েই ব্যক্তি কর্মের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে সচেতন হয়, কর্মে প্রবৃত্ত হয় এবং কর্মের উন্নতিসাধনে সক্ষম হয়। জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমেই ব্যক্তি একত্রে বেঁচে থাকার সুবিধা, সার্থকতা ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন হয় ও তার জন্য সক্রিয় হয়।

[3] জ্ঞানার্জন ও অভিযোজন: শিক্ষা হল অভিযোজন। জৈবিক, প্রাকৃতিক,সামাজিক, বৌদ্ধিক প্রভৃতি বিভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনের জন্য প্রয়োজন পরিবেশ সম্পর্কিত সঠিক জ্ঞান অর্জন। পরিবেশের উপাদানগুলি সম্পর্কে সঠিক তথ্য না জানলে সার্থক অভিযোজন সম্ভব নয়।

[4] জ্ঞানার্জন ও পরিবর্তনশীল বিশ্ব: প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তন এবং নতুন ধরনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক গঠনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য, মানবজাতির কাছে জ্ঞানার্জনের শিক্ষাগত তাৎপর্য অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে আমরা যদি নতুন বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত না হই তাহলে আমরা পিছিয়ে পড়ব।

[5] জ্ঞানার্জন ও মানসিক বৈশিষ্ট্য: বিভিন্ন সামাজিক জ্ঞানার্জনের ফলে ব্যক্তির মানসিক প্রক্রিয়াগুলি, যেমন- স্মৃতি, যুক্তি নির্ণয়, বিচারবোধ, সংবেদন, প্রত্যক্ষণ, বুদ্ধি ইত্যাদির বিকাশ ও অনুশীলন হয়।

[6] জ্ঞান আহরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি: ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন জ্ঞানার্জনের ফলেই সম্ভব হয়। জ্ঞানের অভাবে মানুষ ধর্মান্ধ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অন্ধবিশ্বাসে আক্রান্ত হয়। জ্ঞানই মানুষের সঠিক ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলে।

[7] জ্ঞান ও আত্মপ্রত্যয়: জ্ঞান ব্যক্তির আত্মপ্রত্যয় বৃদ্ধি করে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তি যে-কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে দ্বিধাবোধ করে না। যে-কোনো অবস্থায় মতামত ব্যক্ত করতে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

[৪] জ্ঞানের প্রসার: জ্ঞান ব্যক্তিকে আরও জ্ঞান অর্জনের প্রেরণা দেয়, জ্ঞানের গভীরে প্রবেশ করতে উৎসাহ জোগায়।

ওপরের আলোচনা থেকে এই সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, জ্ঞান শিক্ষার অন্যান্য উদ্দেশ্যপূরণ করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন পরিবেশে সার্থক অভিযোজনের ক্ষেত্রে জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক শক্তিগুলির অনুশীলনের মাধ্যমে জ্ঞান তাদের বিকাশ ঘটায় এবং পরিবর্তনশীল বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের অবহিত হতে সাহায্য করে। জ্ঞান এই পরিবর্তনের ইতিবাচক দিকগুলিকে যেমন ব্যবহার করে, তেমনই এর ক্ষতিকর দিকগুলি সম্পর্কে ব্যক্তিকে সচেতন করে তার মোকাবিলায় প্রস্তুত করে।

7 .’কর্মের জন্য শিক্ষা’ কী? এর তাৎপর্য উল্লেখ করো।

 উত্তর: কর্মের জন্য শিক্ষার তাৎপর্য

কর্মের জন্য শিক্ষার তাৎপর্যগুলি নীচে উল্লেখ করা হল-

[1] শিক্ষাবিদগণ ও কর্মের শিক্ষা: বিশ্বের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদরা শিক্ষার লক্ষ্য আলোচনা করতে গিয়ে কর্মশিক্ষার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেছেন। রুশো (Rousseau) শিশুকে সক্রিয় করে তোলার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, শিশুকে তার কর্মেন্দ্রিয়গুলির পরিচালন ক্ষমতা অর্জনে এবং শিশুকে তার দৈহিক ক্ষমতাগুলির যথোপযুক্ত ব্যবহার করতে সহায়তা করতে হবে। উন্মুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে শিশু দৌড়ঝাঁপ, খেলাধুলার মধ্যে দিয়েই শিখবে। এর ফলে শিশুর কর্মের প্রতি আগ্রহ এবং কর্মদক্ষতা বিকশিত হবে।

[2] কর্মমূলক মাত্রার বিকাশ: কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষার ফলেই ব্যক্তিসত্তার কর্মমূলক মাত্রার (psychometer) বিকাশ এবং দক্ষতা অর্জনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। নির্দিষ্ট বিষয়ে পাঠদানের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর কী ধরনের বিকাশ ঘটবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তা পাঠদানের উদ্দেশ্য বিবৃত করতে গিয়ে বলা হয়।

[3] অনুভূতিমূলক মাত্রার বিকাশ: কর্মসম্পাদনের ফলে কর্মশিক্ষায় নির্দিষ্ট শিক্ষার্থী তৃপ্তি অনুভব করে। তার মধ্যে সাফল্যের আনন্দ দেখা দেয়। এইভাবে অনুভূতির বিকাশ ঘটার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

[4] বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কর্মসম্পাদনের যোগ্যতা অর্জন: কর্মশিক্ষার মধ্যে দিয়ে ব্যক্তি জীবনের অন্যান্য কর্মমূলক পরিস্থিতিতে সফলতা অর্জন করার প্রশিক্ষণ পায়।জ্যাক ডেলরস্ (Jacques Delors)-এর মতে, সকলকে নিয়ে কাজ করার সুযোগ কর্মমূলক শিক্ষায় থাকে, শিক্ষার অন্যান্য ক্ষেত্রে যার অভাব দেখা যায়।

[5] সামাজিক বিকাশ: কর্মমূলক শিক্ষার মধ্যে দিয়ে সমাজে প্রয়োজনীয় উৎপাদনমূলক দ্রব্য উৎপন্ন হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীর মধ্যে সমাজচেতনা জাগ্রত হয়, যা সামাজিক বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

[6] মানবসম্পদের ব্যবহার: প্রতিটি শিক্ষার্থী কমবেশি কাজ করার সামর্থ্য নিয়ে জন্মায়। কর্মমূলক শিক্ষা এই সামর্থ্যকে কাজে লাগিয়ে মানবসম্পদের ব্যবহার করে। ফলে ব্যক্তি ও সমাজ উভয়ই উপকৃত হয়।

পূর্বোক্ত আলোচনা থেকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছোনো যায় যে, জীবনব্যাপী শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হল কর্মের শিক্ষা। মানুষের জীবনের প্রয়োজনীয় দিকগুলি, যেমন-কর্ম ও অনুভূতিমূলক মাত্রার বিকাশ, কর্ম সম্পাদনে যোগ্যতা অর্জন, দলের সঙ্গে কাজ করা, সামাজিক বিকাশ, সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ, মানবসম্পদের ব্যবহার, শ্রমের মর্যাদা দান, কর্মে নৈপুণ্য অর্জন, বৃত্তি পরিকল্পনা, দৈহিক সুস্থতা ইত্যাদি কর্মমূলক শিক্ষার মাধ্যমেই পূর্ণতা লাভ করে।

8. একত্রে বসবাসের শিক্ষা বলতে কী বোঝ? এর তাৎপর্য উল্লেখ করো।

অথবা,

 একত্রে বসবাসের জন্য শিক্ষা’র তাৎপর্য আলোচনা করো।

অথবা, 

একত্রে বসবাসের জন্য শিক্ষা’ আলোচনা করো।

উত্তর: একত্রে বসবাসের শিক্ষা

একত্রে বসবাস করার শিক্ষা বলতে পরস্পর মিলেমিশে থাকার শিক্ষাকে বোঝানো হয়। বিশ্বের সমস্ত মানুষকে একসূত্রে বাঁধার আদর্শে গঠিত এই শিক্ষা মানুষের মন থেকে হিংসা, বিদ্বেষ দূর করে তাকে বিশ্বভ্রাতৃত্বের পথে অগ্রসর হওয়ার প্রেরণা জোগায়। এই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হল সম্প্রদায় ও জাতিগত ক্ষুদ্রতা থেকে ব্যক্তিকে মুক্ত করে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই উদ্দেশ্যকে বাদ দিলে অন্যান্য শিক্ষা অর্থহীন। এর অভাবে মানুষে মানুষে সংঘাত, গৃহযুদ্ধ, মানবিকতার অবক্ষয় এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পায়।

একত্রে বসবাসের শিক্ষার তাৎপর্য

একত্রে বসবাসের বা বেঁচে থাকার শিক্ষার তাৎপর্য নীচে উল্লেখ করা হল-

[1] শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান: হিংসা, পরশ্রীকাতরতা, আত্ম- সর্বস্বতা, অসুস্থ প্রতিযোগিতা ইত্যাদিকে দূর করে প্রেম, ভালোবাসা, সহযোগিতা, সহমর্মিতাকে জাগ্রত করা এবং সহাবস্থানের মানসিকতাকে বিকশিত করা-পৃথিবীতে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন। একত্রে বেঁচে থাকার শিক্ষা এই মানসিকতাকেই উৎসাহিত করে।

[2] ঐক্যবোধ : ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ, ভাষাগত পার্থক্য সত্ত্বেও মানুষের মধ্যে যে ঐক্য বর্তমান তার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’-এই দর্শনই জীবনে চলার পথে দিশা হবে। [3] অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব: সার্থক এবং লাভজনকভাবে বেঁচে থাকতে হলে পারস্পরিক নির্ভরশীলতাকে বুঝতে হবে। এর মধ্যে দিয়ে আমরা একে অন্যের প্রয়োজনীয়তাকে বুঝতে পারব এবং পরস্পরকে শ্রদ্ধা করতে শিখব।

[4] আন্তর্জাতিকতাবোধ: দুটি বিশ্বযুদ্ধের বীভৎসতা, নির্মমতা, লোকক্ষয়,আর্থিক ক্ষয় দেখে সভ্য মানুষ শিউরে ওঠে। যুদ্ধের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে আন্তর্জাতিকতাবোধ অর্থাৎ বিশ্বশান্তি, বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ, বিশ্বনাগরিকতা ইত্যাদি গুরুত্ব পেতে থাকে। আন্তর্জাতিকতাবোধের বিকাশের জন্য যে সমস্ত গুণের প্রয়োজন, যেমন- মানবিকতা, সামাজিক ন্যায়বিচার, শান্তি, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ইত্যাদির বিকাশ শিক্ষার মধ্যে দিয়েই সম্ভব আর এই শিক্ষা হল একত্রে বেঁচে থাকার শিক্ষা।

ওপরের আলোচনা থেকে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, জীবনব্যাপী শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হল ‘একত্রে বেঁচে থাকার শিক্ষা’ বা একত্রে বসবাসের শিক্ষা।

9 .জ্ঞানার্জনের শিক্ষা এবং কর্মের জন্য শিক্ষার বাস্তবিকীকরণে বিদ্যালয়ের কর্মসূচি আলোচনা করো।

উত্তর: জ্ঞানার্জনের শিক্ষা ও কর্মের জন্য শিক্ষার বাস্তবিকীকরণে বিদ্যালয়ের কর্মসূচি

ডেলরস্ কমিশন প্রস্তাবিত জীবনব্যাপী শিক্ষার স্তম্ভ বা উদ্দেশ্যগুলি পরস্পর নির্ভরশীল। এই উদ্দেশ্যগুলিকে মেনেই বিদ্যালয়ের পাঠক্রমিক ও সহপাঠক্রমিক কর্মসূচিগুলি নির্ধারিত হয়।

জ্ঞানার্জনের শিক্ষা এবং বিদ্যালয়ের কর্মসূচি

জ্ঞানার্জনের শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যালয়ের কর্মসূচিগুলি সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল-

[1] সাধারণ শিক্ষা ও সীমিত বিষয়ে জ্ঞানের সমন্বয়সাধন: সাধারণ শিক্ষা ব্যক্তিকে জীবনব্যাপী অভিযোজনে সাহায্য করবে, দৈনন্দিন সাধারণ সমস্যাসমাধানে সক্ষম করে তুলবে এবং জ্ঞানের যে-কোনো শাখায় বিচরণ করতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, সীমিত বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান শিক্ষার্থীকে বিষয় সম্পর্কিত গভীর অনুসন্ধানে উদ্বুদ্ধ করবে এবং জ্ঞানের প্রসার ঘটাবে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে যে পারস্পরিক সম্পর্ক আছে শিক্ষার্থীকে তা অনুসন্ধানে সাহায্য করবে।

[2] জ্ঞানের মৌলিক উপাদানগুলির অনুশীলন: জ্ঞানের মৌলিক উপাদানগুলি, যেমন-স্মৃতি, মনঃসংযোগ এবং ক্ষমতার অনুশীলনের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে জীবনব্যাপী জ্ঞানার্জনের শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় এই মানসিক প্রক্রিয়াগুলি সাবলীলতা ও উৎকর্ষের সঙ্গে কাজ করবে। স্মৃতির কৌশলগুলি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবহিত করতে হবে। মনঃসংযোগের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ধ্যান, যোগ ইত্যাদিকে বিদ্যালয়ের কর্মসূচির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। চিন্তনক্ষমতা অনুশীলনের জন্য সমস্যামূলক পদ্ধতি, আবিষ্কারমূলক পদ্ধতি এবং আরোহ ও অবরোহ পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে সমস্যাসমাধানে সচেষ্ট হয়, তাদের সেদিকে উৎসাহিত করতে হবে। এই সমস্যাসমাধানে তারা যাতে আরোহী ও অবরোহী চিন্তনের আশ্রয় নেয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

[3] কৌতূহল বৃদ্ধি: শিক্ষার্থীদের কৌতূহলকে জ্ঞানার্জনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে, যাতে জ্ঞানার্জনের ইচ্ছা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়।

কর্মের জন্য শিক্ষা এবং বিদ্যালয়ের কর্মসূচি

কর্মের শিক্ষা সংক্রান্ত বিদ্যালয়ের কর্মসূচিগুলি নীচে আলোচনা করা হল-

[1] কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক কর্মসূচি: পাঠক্রমিক ও সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্যে এমন কাজ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যা কর্মশিক্ষা ও কর্মদক্ষতা বিকাশে সাহায্য করে।

[2] প্রবণতা ও কর্মভিত্তিক কর্মসূচি: শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের প্রবণতা ও আগ্রহ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের কর্মভিত্তিক কাজ করতে পারে, সেই সুযোগ তৈরি করতে হবে।

[3] তাত্ত্বিক শিক্ষা ও কর্মশিক্ষার সমন্বয়সাধন: তাত্ত্বিক শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা যাতে সমান গুরুত্ব পায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

[4] ব্যাবহারিক প্রয়োজনভিত্তিক কর্মসূচি: শিক্ষার্থীদের এমন সব কাজ করতে উৎসাহ দিতে হবে ব্যাবহারিক জীবনে যার মূল্য আছে।

10.’মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা’র উদ্দেশ্যকে কার্যকরী করতে বিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা করো।

উত্তর: প্রকৃত মানুষ সৃষ্টিতে বিদ্যালয়ের ভূমিকা

[1] মানসিক বিকাশে সহায়তা: বিদ্যালয়ে শিক্ষণ ও শিখনের ফলে শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশ ঘটে। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়েই শিক্ষার্থীর বিকশিত মানসিক ক্ষমতাগুলির অনুশীলন হয়। পরবর্তীকালে সেগুলি সমাজ ও জাতির কল্যাণে শিক্ষার্থী প্রয়োগ করে থাকে।

[2] সংগতিবিধানে সহায়তা: বিদ্যালয় পরিবেশে শিক্ষা-শিখনের মধ্য দিয়ে সংগতিবিধানের অনুশীলন হয়। ফলে শিক্ষার্থী নিজেকে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সার্থকভাবে মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়ে ওঠে।

[3] সামাজিক প্রতিষ্ঠালাভে সহায়তা: বিদ্যালয়জীবনে বিভিন্ন ধরনের দলগত কাজের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে এমন কয়েকটি দক্ষতা আসে যা ভবিষ্যৎ জীবনে তাকে সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভে, সুনাম অর্জনে এবং সামাজিকভাবে সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করে।

[4] আর্থিক সাফল্য অর্জনে সহায়তা: বিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষার্থীকে বৃত্তিমূলক শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া হয়, যাতে শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে সেই বৃত্তি গ্রহণ করে, উপার্জনক্ষম হয়ে উঠতে পারে।

[5] গণতান্ত্রিক আদর্শের বিকাশ: বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান ও শিক্ষামূলক কার্যসূচির মধ্য দিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনা জাগ্রত করে। গণতান্ত্রিক চেতনা প্রকৃত মানুষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য বলে বিবেচিত হয়।

[6] মূল্যবোধের বিকাশ: বিদ্যালয় পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির সাহায্যে মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ তৈরি করার চেষ্টা করে। বিবেক, মনুষ্যত্ব, নৈতিকতা প্রভৃতি গুণ শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রবেশ করে এবং তাকে প্রকৃত মানুষে পরিণত করে।

[7] জাতীয় বিকাশে সহায়তা: জাতীয় উন্নয়ন সম্পর্কিত বিভিন্ন পাঠক্রমিক ও সহপাঠক্রমিক কর্মসূচি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

[৪] আন্তর্জাতিক বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে সহায়তা: বিদ্যালয়ে পঠনপাঠন ও অন্যান্য কাজের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক চেতনা গড়ে ওঠে।

11. ‘কর্মের জন্য শিক্ষা’র উদ্দেশ্যগুলি পূরণে বিদ্যালয়ের ভূমিকা সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তর: আধুনিক সমাজব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রিত বা প্রথাগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হল বিদ্যালয়। কর্মের জন্য শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি পূরণে বিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখানে কয়েকটি ভূমিকা উল্লেখ করা হল-

[1] কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক কর্মসূচি গ্রহণ: বিদ্যালয়ের পাঠক্রমিক ও সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির মধ্যে এমন কিছু কাজ অন্তর্ভুক্ত করা হবে যা শিক্ষার্থীর কর্মশিক্ষা ও কর্মদক্ষতা বিকাশে সাহায্য করবে।

[2] প্রবণতা ও কর্মভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ: শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের প্রবণতা ও আগ্রহ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের কর্মভিত্তিক কাজ করতে পারে, বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সেই সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

[3] তাত্ত্বিক শিক্ষা ও কর্মশিক্ষার সমন্বয়সাধনের ব্যবস্থা: বিদ্যালয়ের আর- একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হল তাত্ত্বিক শিক্ষা ও কর্মশিক্ষার মধ্যে সমন্বয় সাধন করা। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের পাঠক্রমিক ও সহপাঠক্রমিক কর্মসূচিতে তাত্ত্বিক শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা যাতে সমান গুরুত্ব পায়, সেদিকে নজর দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

[4] ব্যাবহারিক প্রয়োজনভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ: বিদ্যালয়ের অপর একটি ভূমিকা হল ছাত্রছাত্রীদের এমনসব কাজ করতে উৎসাহ দিতে হবে, যে কাজগুলির ব্যাবহারিক জীবনে মূল্য রয়েছে।

[5] সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে উৎসাহিত করা: আধুনিক শিক্ষা বিদ্যালয়ের চার দেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকে না। আধুনিক শিক্ষার সামাজিক লক্ষ্য এবং কর্মের জন্য শিক্ষার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত করার জন্য শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। সেবামূলক কাজের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীরা সামাজিক দায়বদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন হবে। সমাজের সঙ্গে একাত্ম হবে। সমাজের ভালোমন্দের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার মানসিকতা তৈরি হবে। বিদ্যালয়ই শিক্ষার্থীদেরকে সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উদ্দীপিত করতে পারে।

[6] ব্যক্তিসত্তার বিকাশে সহায়তাদান: বিভিন্ন পরিবার থেকে ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা, সামর্থ্য, রুচি ও আগ্রহ নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসে। বিদ্যালয়ের কর্মদক্ষতা অর্জনে সহায়ক বিভিন্ন কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাহিদার পরিতৃপ্তি ঘটিয়ে তাদের দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক ও নৈতিক বিকাশে সহায়তা করে। এই বিকাশগুলি ছাত্রছাত্রীদের ব্যক্তিত্বকে উপযুক্ত মাত্রা দান করে

এই নির্দেশ স্পেনের সালামানকা-য় (Salamanca) বিশেষ শিক্ষার ওপরে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে (1994-এর 7-9 জুন) বিবেচিত হয় এবং নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তগুলি গৃহীত হয়।

12.অন্তর্ভুক্তি শিক্ষা সম্পর্কে ইউনেস্কোর ভূমিকা আলোচনা করো।

উত্তর: অন্তর্ভুক্তি শিক্ষা সম্পর্কে ইউনেস্কোর ভূমিকা

বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও পরিবেশ শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। এ ধরনের শিক্ষার ক্ষেত্রে ইউনেস্কোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

অন্তর্ভুক্তি শিক্ষা সম্পর্কে ইউনেস্কোর ভূমিকা

সম্প্রতি সর্বশিক্ষা অভিযানে কিছু মাত্রায় অক্ষম (Some Marked Degree of Disability) শিশুরা সাধারণ বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পায়। এই ধরনের সন্তানদের শিক্ষার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে বলে তাদের বাবা-মায়েরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এই নির্দেশ স্পেনের সালামানকা-য় (Salamanca) বিশেষ শিক্ষার ওপরে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে (1994-এর 7-9 জুন) বিবেচিত হয় এবং নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তগুলি গৃহীত হয়।

[1] শিক্ষা শিশুর মৌলিক অধিকার: শিক্ষা প্রতিটি শিশুর মৌলিক অধিকার। শিক্ষা অর্জনে তাকে সব রকমের সুযোগ দিতে হবে যাতে সে নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত শিক্ষালাভ করে।

[2] শিক্ষার্থীর আগ্রহ ও চাহিদা অনুযায়ী: প্রতিটি শিশুর নিজস্ব বেশিষ্ট্য, আগ্রহ ও চাহিদা থাকে। এই বৈশিষ্ট্য এবং চাহিদাগুলিকে ভিত্তি করেই শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিক্ষা কর্মসূচিগুলি প্রস্তুত করে তা বাস্তবায়িত করতে হবে।

[3] বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু: বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে ভরতি হবার সুযোগ পাবে।

[4] অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা সকলের জন্য শিক্ষাব্যৱস্থা কার্যকরী করে: স্বাভাবিক এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের প্রতি যে পার্থক্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার সুযোগ-সহ নিয়মিত বিদ্যালয়গুলি তার মোকাবিলায় কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করতে সক্ষম। বিদ্যালয়গুলি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের স্বাগত জানায় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন করে, যার ফলে তারা সকলের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করতে পারে।

বর্তমানে সমগ্র বিশ্বে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। UNO, UNICEF, UNDP, World Bank প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি প্রয়োজনীয় অর্থ এবং অন্যান্য শিখন উপকরণগুলি সরবরাহ করছেন।

13 .পরিবেশ শিক্ষা সম্পর্কে UNESCO-এর ভূমিকা আলোচনা করো।

উত্তর: পরিবেশ শিক্ষা সম্পর্কে ইউনেস্কোর ভূমিকা

বর্তমানে অধিকাংশ বিদ্যালয়ের পাঠক্রমে ‘পরিবেশ শিক্ষা’ অপরিহার্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। 1976 সালে UNESCO কর্তৃক আয়োজিত বেলগ্রেড সম্মেলনে ‘পরিবেশ কর্মসূচি’ এবং 1977 সালে 14-26 অক্টোবরে USSR-এ Tbilsi ঘোষণার ফলেই পরিবেশ শিক্ষা বিশেষ গুরুত্ব পায়। নীচে Tbilsi ঘোষণায় পরিবেশ শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে যেসব কথা ব্যক্ত হয়েছে, তা নীচে উল্লেখ করা হল-

[1] সচেতনতা: পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা ও অনুভূতিশীলতা গড়ে তুলতে এবং সেই সম্পর্কে সমস্যাগুলিকে তুলে ধরতে সামাজিক গোষ্ঠী এবং ব্যক্তিদের সাহায্য করা।

[2] জ্ঞান: পরিবেশের বৈচিত্র্য সম্পর্কে অভিজ্ঞতা এবং এর সম্পর্কযুক্ত সমস্যাগুলিকে সামাজিক গোষ্ঠী ও ব্যক্তি সকলকে বুঝতে সাহায্য করা।

[3] দৃষ্টিভঙ্গি: নির্দিষ্ট মূল্যবোধ, পরিবেশের প্রতি অনুভূতি, পরিবেশের উন্নয়ন এবং পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি আগ্রহ সহকারে অংশগ্রহণ করতে ব্যক্তিসকল এবং সামাজিক দলকে সাহায্য করা।

[4] দক্ষতা: ব্যক্তিসকল এবং সামাজিক দলগুলিকে পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যা নির্ধারণ ও সমাধানে দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করা।

[5] অংশগ্রহণ: প্রতিটি স্তরে পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যাসমাধানে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে যেসব আলোচনা হয় সেখানে ব্যক্তিসকল ও সামাজিক দলগুলির সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, Stapp & Cox (1974) পরিবেশ শিক্ষায় পাঁচটি ধারণার কথা উল্লেখ করেন। এই পাঁচটি ধারণা হল বাস্তুতন্ত্র, জনসংখ্যা, অর্থনীতি ও প্রযুক্তি, পরিবেশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তসমূহ এবং পরিবেশগত নৈতিকতা।

14.বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গণিত শিক্ষা এবং বিশ্বের শ্রেণিকক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে ইউনেস্কোর ভূমিকা উল্লেখ করো।

উত্তর: বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গণিতশিক্ষায় এবং বিশ্বের শ্রেণিকক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ইউনেস্কোর ভূমিকা

ডেলরস্ কমিশন ছাড়াও বিশ্বব্যাপী শিক্ষার পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনেস্কোর অন্যান্য অবদানকেও অস্বীকার করা যায় না। এগুলির মধ্যে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গণিত শিক্ষা এবং বিশ্বের শ্রেণিকক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এই সংস্থার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।

ইউনেস্কো এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গণিত শিক্ষা

ইউনেস্কো বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং গণিতের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। এই বিষয়ে UNESCO কতকগুলি রূপরেখা নির্দেশ করে, এগুলি হল-

[1] বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গণিত বিদ্যালয় শিক্ষার মূল বিষয়: বিদ্যালয় স্তরে সকলের জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং গণিত শিক্ষা মূল শিক্ষণের বিষয় হবে।

[2] স্বয়ং শিখনে উৎসাহদান: শিক্ষার্থীরা যাতে স্বয়ং শিখনে অংশগ্রহণ করে এবং বিজ্ঞান, গণিত ও প্রযুক্তি সম্পর্কে নিজে বুঝতে সচেষ্ট হয়, সে ব্যাপারে উৎসাহ দিতে হবে।

[3] STM এবং দূরশিক্ষা: বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং গণিত (STM-Science, Technology, Mathematics) শিখনে দূরশিক্ষা পদ্ধতিকে এক বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।

[4] STM-এর প্রাসঙ্গিক পাঠক্রম: STM-এর পাঠক্রম এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে যাতে সকলের সঙ্গে সমতা দেখা যায়। পাঠক্রম এমনভাবে উপস্থাপন করা হবে যাতে তা বালক এবং বালিকাদের নিকট প্রাসঙ্গিক হয়।

[5] STM পাঠক্রম এবং মূল্যবোধ: STM শিক্ষণের মধ্য দিয়ে যাতে নৈতিকতা, মানব অধিকার এবং সর্বত্র শান্তি উৎসাহিত হয়, সে ব্যাপারে শিক্ষককে নিশ্চিত হতে হবে।

‘ইউনেস্কো এবং বিশ্বের শ্রেণিকক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

সম্প্রতিকালে, বিশ্বের শ্রেণিকক্ষে ‘কম্পিউটার’ এবং বিশ্বব্যাপী ‘ওয়েবসাইট’-এর ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পাঠদানের আবহাওয়া যথেষ্ট পরিবর্তিত হয়েছে। এই নতুন প্রযুক্তির নাম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (Information and Communication Technology বা ICT)। UNESCO, ICT-র লক্ষ্য এবং বিষয় সম্পর্কে নিম্নলিখিত সুপারিশসমূহ উল্লেখ করেছে-

[1] তথ্য, যোগাযোগ এবং সামাজিক দক্ষতা ইত্যাদির ওপর বিশেষ গুরুত্বদান: তথ্য, অনুসন্ধান, যোগাযোগ এবং সামাজিক দক্ষতা এবং তৎসহ অধিজ্ঞান সম্পর্কীয় (metacognitive) দক্ষতাগুলির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

[2] বিদ্যালয়ের বিষয়গুলি সীমা (boundary) দূর করে: বিদ্যালয়ের বিষয়গুলি এবং তার অংশগুলিকে পরস্পর যুক্ত করতে হবে যাতে বিষয়ের সীমাগুলি দূর হয়।

[3] শিখনের বিষয়বস্তুর প্রাসঙ্গিকতা: শিখনের বিষয়বস্তু যেন প্রাসঙ্গিক এবং জীবনের সঙ্গে যুক্ত হয়।

[4]শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতা পরিমাপে বিভিন্ন কৌশল: শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতা পরিমাপে বৈচিত্র্যপূর্ণ কৌশলের ব্যবহার করা হয় (যেমন- খোলা বই পদ্ধতি বা মুক্ত পরীক্ষা পদ্ধতি, পোর্টফোলিও অ্যাসেসমেন্ট, নির্ণায়কমূলক এবং চূড়ান্ত মূল্যায়ন পদ্ধতি)।

বর্তমানে ICT শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ ও পরিমাপে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

15. শিক্ষার দিক ও শিক্ষকের অবস্থান সম্পর্কে ইউনেস্কোর বক্তব্য লেখো।

উত্তর: শিক্ষার দিক এবং শিক্ষকের অবস্থান সম্পর্কে ইউনেস্কোর বক্তব্য

সমাজে শিক্ষকের স্থান সম্পর্কে বহু সমালোচনা হয়েছে এবং শিক্ষকতা আদৌ একটি পেশা কি না তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে ইউনেস্কো এবং এর অধীনস্থ সংস্থাগুলি এ বিষয়ে বহুপূর্বেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 1966 সালের অক্টোবরে ইউনেস্কো আয়োজিত শিক্ষকের অবস্থানের ওপর এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে (স্পেশাল ইনটার-গভর্নমেন্টাল কনফারেন্স) নিম্নলিখিত প্রস্তাবসমূহ গৃহীত হয়-

[1] শিক্ষক এবং শিক্ষার অগ্রগতি: শিক্ষার অগ্রগতি প্রধানত নির্ভর করে শিক্ষকগণের যোগ্যতা, ক্ষমতা এবং শিক্ষাদান সম্পর্কিত বিজ্ঞানের দক্ষতার ওপর।

[2] স্বতন্ত্র পেশা হিসেবে শিক্ষকতা: শিক্ষকতাকে একটি স্বতন্ত্র পেশা হিসেবে গণ্য করতে হবে।

[3] শিক্ষক সংগঠন এবং শিক্ষকতা পেশা: কার্যকরী শিখনের জন্য অনুকূল পরিবেশ গঠনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষক যাতে তাঁর পেশার প্রতি মনোনিবেশ করতে পারেন এবং শিক্ষার অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন, সেজন্য শিক্ষক সংগঠনগুলি নীতি নির্ধারণ করবেন। 

পরবর্তী পর্যায়ে (1996 সালে) ইউনেস্কো আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে (Strengthening of the Role of the Teacher in Changing World নামে পরিচিত) শিক্ষার বিশ্বায়ন এবং নতুন চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে শিখনের সহায়ক হিসেবে শিক্ষকগণকে নতুন ভূমিকা গ্রহণের প্রস্তাব উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল-

[1] প্রাক্-বৃত্তি এবং বৃত্তিকালীন শিক্ষক-শিক্ষাব্যবস্থার গুরুত্ব: শিক্ষক- শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাক্-বৃত্তি শিক্ষা এবং বৃত্তিকালীন শিক্ষাকে একই ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা। বৃত্তিকালীন শিক্ষার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে বিষয়ের পান্ডিত্য অর্জন করা, দলগতভাবে কাজ করা, পেশাকে আরও শক্তিশালী করা, নতুন চিন্তা এবং পরীক্ষা করা, মানবাধিকার, শান্তি এবং গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা স্থাপন করা।

[2] বৃত্তিকালীন শিক্ষা শিক্ষকদের অধিকার: বৃত্তিকালীন শিক্ষা শিক্ষাবিদগণের নিকট অধিকার এবং কর্তব্য বলে বিবেচিত হবে।

[3] বৃত্তিকালীন শিক্ষায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষা-ব্যবস্থাপক, তত্ত্বাবধায়ক ইত্যাদির বিশেষ ভূমিকা: যেসব শিক্ষাবিদ শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, তত্ত্বাবধান এবং শিক্ষায় মূল্যায়নের সঙ্গে যুক্ত আছেন, বৃত্তিকালীন শিক্ষায় তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। বৃত্তিকালীন শিক্ষাগ্রহণের পর এইসব ব্যক্তি কেবল প্রশাসনিক এবং তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকা পালন করবেন না; তাঁরা শিক্ষাবিজ্ঞান সম্পর্কিত নির্দেশদান, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণদান প্রভৃতি কাজও করবেন। আমাদের দেশের 1986 সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে এই বিষয়ে বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *