Class 12 Educational Science Solution
কোঠারি কমিশন (1964-66) ও ভারতের আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা
1. MCQs Question Answer
1. কোঠারি কমিশনের প্রধান লক্ষ্য কী ছিল?
(a) স্বাধীনতার পর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন সম্পর্কে সুপারিশ করা
(b) সাধারণ শিক্ষা ও বৃত্তিশিক্ষার উন্নয়নে সুপারিশ করা
(c) সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা
(d) জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা ✔
2. ‘এডুকেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট’-কোন্ কমিশনের বিবরণীর নাম?
(a) সার্জেন্ট কমিশন
(b) মুদালিয়র কমিশন
(c) কোঠারি কমিশন ✔
(d) রাধাকৃয়ণ কমিশন
3. প্রাপ্রাথমিক শিক্ষার ওপরে সর্বপ্রথম কোন্ কমিশনে/ শিক্ষানীতিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়?
(a) হান্টার কমিশনে
(b) কোঠারি কমিশনে ✔
(c) জাতীয় শিক্ষানীতিতে (1986)
(d)মুদালিয়র কমিশনে
4. কোঠারি কমিশনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল-
(a) সর্বস্তরের এবং প্রায় সব ধরনের শিক্ষার ওপরে পর্যালোচনা
(b) ‘জাতীয় শিক্ষা’ কাঠামোর সুপারিশ ✔
(c) পূর্ববর্তী সমস্ত শিক্ষা কমিশনের ত্রুটিগুলি সংশোধন
(d) দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ্গণ ওই কমিশনে সক্রিয় অংশগ্রহণ
5. কোঠারি কমিশনে টাস্কফোর্সের মোট সংখ্যা কত ছিল?
(a)10
(b)12 ✔
(c) 13
(d)15
6. কমিশন সার্থক ও উদ্দেশ্যসাধক শিক্ষার ক-টি মৌলিক উপাদানের কথা বলেছেন?
(a) চারটি ✔
(b) তিনটি
(c) পাঁচটি
(d) সাতটি
7. কমিশনের মতে জাতীয় শিক্ষা কাঠামোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য কী ছিল?
(a) সকলের জন্য শিক্ষার সমসুযোগ নিশ্চিত করা
(b) জাতীয় সংহতিকে নিশ্চিত করা ✔
(c) দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা
(d) দেশের সমাজ ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে সাহায্য করা
৪. কমিশনের মতে দেশের প্রধান সমস্যাগুলির সমাধানের সর্বোৎকৃষ্ট উপায় কোন্টি?
(a) কৃষি ব্যবস্থাকে উন্নত করা
(b) শিক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা ✔
(c) অথনৈতিক উন্নয়ন
(d) দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা
9. কোঠারি কমিশনের মতে জাতীয় সংহতি নিশ্চিত করার জন্য কী প্রয়োজন?
(A) সাধারণ বিদ্যালয় (কমন স্কুল) স্থাপন
(b) বিদ্যালয়ের মধ্যে সামাজিক জীবনের ব্যবস্থা করা
(c) বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতির মধ্যে ঐক্য স্থাপন করা
(d) ওপরের সবগুলি ✔
10. শিক্ষার আধুনিকীকরণের জন্য কী প্রয়োজন বলে কমিশন মনে করে?
(a) বিজ্ঞানশিক্ষার উন্নয়ন
(b) শিক্ষার প্রতিটি স্তরের ওপর গবেষণা
(c) বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের শিক্ষার মানোন্নয়ন
(d) ওপরের সবগুলি ✔
11.কোন্ কমিশনে শিক্ষার কাঠামো 10+2 +3 +2 সুপারিশ করা হয়েছে?
(a) কোঠারি কমিশন ✔
(b) রাধাকৃয়ণ কমিশন
(c) মুদালিয়র কমিশন
(d) জনার্দন কমিশন
12. ‘ভারতবর্ষের ভাগ্য তার শ্রেণিকক্ষেই তৈরি হয়’ (The destiny of India is being shaped in her classroom) কোন্ কমিশনে উল্লেখ করা হয়েছে?
(a) মুদালিয়র কমিশন
(b) কোঠারি কমিশন ✔
(c) রাধাকৃয়ণ কমিশন
(d) জনার্দন রেড্ডি কমিশন
13. কোঠারি কমিশনের বিবরণী কবে জমা পড়েছিল?
(a) 1966 সালের 29 জুন ✔
(b) 1967 সালের 29 জুলাই
(c) 1966 সালের 2 অক্টোবর
(d) ওপরের কোনোটিই নয়
14. নীচের কোন্ সমস্যাটির ওপর কোঠারি কমিশন বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল?
(a) সাধারণ শিক্ষা
(b) বৃত্তিশিক্ষা
(c) পেশাগত শিক্ষা
(d) আধুনিকীকরণের সমস্যা ✔
15. কোঠারি কমিশনে প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত, শিক্ষার কোন্ স্তর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে?
(a) প্রাথমিক স্তর
(b) নিম্নমাধ্যমিক স্তর
(c) উচ্চপ্রাথমিক স্তর
(d) প্রারম্ভিক স্তর ✔
16. জাতীয় উন্নয়নে কোঠারি কমিশন কতগুলি প্রধান সুপারিশের কথা উল্লেখ করেছে?
(a) ষোলোটি
(b) সতেরোটি
(c) আঠারোটি ✔
(d) কুড়িটি
17. কোন্ কমিশনে/শিক্ষানীতিতে ‘ইন্ডিয়ান এডুকেশন সার্ভিস’ চালু করার কথা সুপারিশ করা হয়?
(a) কোঠারি কমিশন ✔
(b) বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন
(c) জনার্দন রেড্ডি কমিশন
(d) জাতীয় শিক্ষানীতি (1986)
18. কোঠারি কমিশনে 1985-86 সালে মোট জাতীয় সম্পদের (GNP) কত শতাংশ (%) করার সুপারিশ করেছে?
(a) 4%
(b) 6% ✔
© 8%
(d) 7%
19. কোন্ কমিশন প্রতিটি রাজ্যে ‘রাজ্য শিক্ষা পর্ষদ’ গঠনে সুপারিশ করেছে?
(a) রাধাকৃয়ণ কমিশন
(b) কোঠারি কমিশন
(c) জনার্দন কমিশন ✔
(d) মুদালিয়র কমিশন
20. সাধারণ শিক্ষার অর্থ কী?
(a) জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রচলিত বিদ্যালয়ভিত্তিক শিক্ষা
(b) সর্বসাধারণের শিক্ষা
(c) সেইসব দক্ষতা অর্জন যা ব্যক্তিকে নতুন জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে
(d) ওপরের সবগুলি ✔
21. প্রথম ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ কোন্ কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে রচিত হয়?
(a) মুদালিয়র কমিশন
(b) কোঠারি কমিশন ✔
(c) রাধাকৃষণ কমিশন
(d) 1992 সালের জনার্দন রেড্ডি কমিশন
22. আবাসিক বিদ্যালয়গুলি সম্পর্কে নীচের কোন্ বক্তব্যটি সঠিক?
(a) বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট বাসস্থানে থাকার ব্যবস্থা করা হয়
(b) থাকা এবং খাওয়া বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়
(c) থাকা, খাওয়া, পঠনপাঠন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় ✔
(d) থাকা, খাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ এবং পঠনপাঠন সবই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়
23. কোন্ কমিশনে বিদ্যালয়গুচ্ছ (স্কুল কমপ্লেক্স)-এর কথা সুপারিশ করা হয়েছে?
(a) মুদালিয়র কমিশন
(b) কোঠারি কমিশন ✔
(c) রাধাকৃয়ণ কমিশন
(d) জনার্দন রেড্ডি কমিশন
24. কমিশনের বিদ্যালয়গুচ্ছ সম্পর্কিত সুপারিশটি গুরুত্বপূর্ণ কেন?
(a) বিদ্যালয়গুলির মধ্যে সহযোগিতার সুযোগ গড়ে তোলা সম্ভব হয়
(b)দক্ষ শিক্ষকদের আরও ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়
(c)প্রয়োজনবোধে অংশগ্রহণকারী বিদ্যালয়গুলির মধ্যে ঘাটতি ও অতিরিক্ত শিক্ষকদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা যায়
(d) ওপরের সবগুলি ✔
25. নীচের কোন্টি সঠিক?
(a) কর্মশিক্ষা ও বৃত্তিশিক্ষা এক
(b) কর্মশিক্ষা ও বৃত্তিশিক্ষার লক্ষ্য ভিন্ন
(c) কর্মশিক্ষা সকলের জন্য বৃত্তিশিক্ষা নয় ✔
(d) কর্মশিক্ষা বৃত্তিশিক্ষার থেকে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের
26. কোঠারি কমিশন কোন্ স্তর থেকে সামাজিক ও জাতীয় সেবামূলক কাজ শুরু করার সুপারিশ করেছে?
(a) প্রাক্সাথমিক শিক্ষাস্তর থেকে
(b) নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষাস্তর থেকে ✔
(c) নিম্নপ্রাথমিক শিক্ষাস্তর থেকে
(d)উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষাস্তর থেকে
27. শিক্ষাকে উৎপাদনশীলতার সঙ্গে যুক্ত করতে প্রয়োজন-
(a) ইংরেজি ভাষার ওপর গুরুত্বদান
(b) সামাজিক ও জাতীয় সেবামূলক কাজ
(c) কমন স্কুল
(d) পাঠক্রমে কর্ম অভিজ্ঞতাকে গুরুত্বদান ✔
28. কোঠারি কমিশন কোন্ শ্রেণি থেকে ইংরেজি ভাষাশিক্ষা শুরু করার সুপারিশ করেছে?
(a) তৃতীয়
(b) চতুর্থ
(c) পঞম ✔
(d) ষষ্ঠ
29. কমিশনের কোন্ সুপারিশটিতে শিক্ষায় সমসুযোগের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে?
(a) বিদ্যালয়গুচ্ছের সুপারিশ
(b) প্রতিবেশী (neighbourhood) বিদ্যালয়ের সুপারিশ
(c) কমন স্কুলের সুপারিশ ✔
(d) সমাজসেবামূলক কাজের সুপারিশ
30. “ভারতের ভাগ্য নির্ধারিত হয় তার শ্রেণিকক্ষে”-এই উক্তির মধ্য দিয়ে কমিশন কী বলতে চেয়েছে?
(a) ভারতের উন্নয়ন নির্ভরশীল শ্রেণিকক্ষ শিক্ষণের ওপর
(b) ভারতের উন্নয়ন শ্রেণিকক্ষ শিক্ষকের যোগ্যতার ওপর নির্ভরশীল
(c) ভারতের উন্নয়ন সুনির্দিষ্ট শিক্ষার ওপর নির্ভরশীল ✔
(d) ভারতের উন্নয়ন শ্রেণিকক্ষ শিক্ষণের সুযোগ-সুবিধার ওপর নির্ভর করে
31. নীচের কোন্টিকে কোঠারি কমিশনের সঠিক সমালোচনা হিসেবে বিবেচনা করা যায়?
(a) কমিশনের সদস্যদের মধ্যে সমস্ত রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব ছিল না
(b) কমিশন ইংরেজি ভাষা শিক্ষাকে অবহেলা করেছিল
(c) কমিশনের সাধারণ শিক্ষার বিভাজিকরণে বিলম্ব
(d) কমিশন শিক্ষার কাঠামো নির্ধারণে সমসাময়িক পরিস্থিতিকে বিবেচনা করেনি ✔
32. কমিশন আদর্শায়িত পারদর্শিতা অভীক্ষার জন্য নীচের কোন্টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে?
(a) নির্ভরযোগ্যতা
(b) নৈর্ব্যক্তিকতা
(c) যথার্থতা
(d) ওপরের সবগুলি ✔
33. কোঠারি কমিশনের লক্ষ্য ছিল ছাত্রদের মধ্যে তৈরি করা।
(a) নেতৃত্ব ভাব
(b) সহযোগিতা
(c) বোধশক্তি
(d) বৈজ্ঞানিক মানসিকতা ✔
34. ভারতীয় শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়-
(a) 1964 সালে ✔
(b)1966 সালে
(c)1948 সালে
(d)1952 সালে
35. কোঠারি কমিশন বা ভারতীয় শিক্ষা কমিশন বিদ্যালয় শিক্ষার স্তরের কথা বলেছেন।
(a)দুইটি
(b) তিনটি
(c) চারটি ✔
(d) পাঁচটি
[HS ’16]
36. কোঠারি কমিশনের Reportটি প্রকাশিত হয়-
(a) 1966 সালের জুলাই মাসে
(b) 1967 সালের মে মাসে
(c) 1966 সালের জুন মাসে ✔
(d) 1953 সালের জুন মাসে
37. কোঠারি কমিশন গঠিত হয়-
(a) 10 জুলাই
(b) 12 জুলাই
© 14 জুলাই ✔
(d) 18 জুলাই
3৪. ভারতের ভবিষ্যৎ শ্রেণিকক্ষের মধ্যে গড়ে উঠেছে-উক্তিটি করেছেন-
(a) মুদালিয়র কমিশন
(b) কোঠারি কমিশন ✔
(c) রাধাকৃয়ন কমিশন
(d) জনার্দন রেড্ডি কমিটি
39. নীচের কোন্ কমিশন প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়ে আলোচনা করে? থেকে সর্বোচ্চ গবেষণার স্তর পর্যন্ত
(a) মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন
(b) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন
(c) কোঠারি শিক্ষা কমিশন ✔
(d) জনার্দন রেড্ডি কমিশন
40. সমাজ ও জাতীয় সেবা অবশ্যই শিক্ষার যে-কোনো স্তরে পালনীয়- সুপারিশ করেছিলেন-
(a) মুদালিয়র কমিশন
(b) রাধাকৃয়ন কমিশন
(c) কোঠারি কমিশন ✔
(d) জনার্দন রেড্ডি কমিটি
41. যে শিক্ষা কমিশন শিক্ষা কাঠামোর ক্ষেত্রে 10+2+3+2 স্তরে সুপারিশ করেছিল-
(a) মুদালিয়র কমিশন
(b) কোঠারি কমিশন ✔
(c) হান্টার কমিশন
(d) রাধাকৃয়ন কমিশন
42. কোঠারি কমিশনের অপর নাম-
(a) শিক্ষা কমিশন
(b) মাধ্যমিক কমিশন
(c) বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন
(d) ভারতীয় শিক্ষা কমিশন ✔
43. কোঠারি কমিশনের মতে শিক্ষা কাঠামোটি হল-
(a) 10+1+2+3
(b) 8+4+2
(c)10+2+3+2 ✔
(d) 10+2+3
44. কোঠারি কমিশনের সম্পাদক ছিলেন-
(a)ড. তারাচাঁদ
(b) ড. জে পি নায়েক ✔
© ড. জাকির হোসেন
(d) ড. এন কে সিদ্ধান্ত
45. কোঠারি কমিশন প্রাপ্রাথমিক শিক্ষাকে ক-টি শ্রেণিতে বিভক্ত করেছেন?
a. দুটি ✔
b. তিনটি
c. একটি
46. কমিশনের মতে প্রাপ্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য কী?
(a) পড়তে দেখা
(b) লিখতে দেখা
(c) পড়তে এবং লিখতে দেখা
(d) সুঅভ্যাস গড়ে তোলা ✔
47. কমিশন বিদ্যালয়গুলিতে কাজের দিন হিসেবে কত দিন নির্ধারণ করেছে?
(a) 216 দিন
(b) 220 দিন
(c) 243 দিন
(d) 234 দিন ✔
48. কমিশনের মতে প্রাপ্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য কী?
(a) শিশুর আত্মপ্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করা
(b) শিশুকে তার পরিবেশ সম্পর্কে আগ্রহী করে তোলা
(c) শিশুর সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা
(d) ওপরের সবগুলি ✔
49. নিম্নের কোন্ প্রাপ্রাথমিক প্রতিষ্ঠানটিকে সম্পূর্ণ ভারতীয় বলে আখ্যা দেওয়া যায়?
(a) ক্রেশ
(b) কিন্ডার গার্টেন
(c) প্রাক্-বুনিয়াদি ✔
(d) বাল শিক্ষামন্দির
50. নীচের কোন্টি প্রাপ্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ বলা যায়?
(a) জেলাভিত্তিক প্রাপ্রাথমিক শিক্ষা নিয়ন্ত্রণ-সম্পর্কিত কেন্দ্র স্থাপন
(b) বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে উৎসাহ দান
(c) প্রাক্সাথমিক শিক্ষার পাঠক্রম
(d) নমনীয়তা ✔
51. কোন্টি প্রাক্সাথমিক স্তরে গুরুত্বপূর্ণ বিচার্য বিষয় নয়?
(a) লক্ষ্য নির্ধারণ
(b) পাঠক্রম প্রস্তুত করা
(c) পাঠদান
(d) পরীক্ষা গ্রহণ ✔
52. একটি প্রাক্সাথমিক শিক্ষালয়ের নাম-
(a) নিম্ন বুনিয়াদি
(b) মাধ্যমিক বিদ্যালয়
© পলিটেকনিক
(d) মন্তেসরি স্কুল ✔
53. নিম্নলিখিত কোন্টি প্রাষ্প্রাথমিক শিক্ষালয় নয়?
(a) মন্তেসরি স্কুল
(b) নার্সীরি স্কুল
(c) কে জি স্কুল
(d) নিম্নবুনিয়াদি স্কুল ✔
54. শিক্ষার ক্ষেত্রে অপচয় এবং অনুত্তীর্ণতা, কোন্ স্তরে সবচেয়ে বেশি ঘটে থাকে বলে সমীক্ষায় দেখা গেছে?
(a) প্রাপ্রাথমিক স্তরে
(b) প্রাথমিক স্তরে ✔
(c) মাধ্যমিক স্তরে
(d) উচ্চমাধ্যমিক স্তরে
55. প্রাথমিক শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য কোন্টি?
(a) শিশুর শারীরিক, জ্ঞানমূলক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক বিকাশে সাহায্য করা
(b) ন্যায়-অন্যায়, ভালোমন্দ বিচারের জন্য নীতিবোধ গড়ে তোলা
(c) শিশুকে সঠিক ও স্পষ্ট লিখতে ও উচ্চারণ করতে সক্ষম করে তোলা
(d) ওপরের সবগুলি ✔
56. নিম্নপ্রাথমিক স্তরে ভাষাশিক্ষার ক্ষেত্রে কোঠারি কমিশন কী সুপারিশ করেছে?
(a) কেবলমাত্র মাতৃভাষা শিক্ষা
(b) কেবলমাত্র আঞ্চলিক ভাষা শিক্ষা
(c) মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা শিক্ষা ✔
(d) মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা এবং ইংরেজি ভাষাশিক্ষা
57. আমাদের দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিকে ক-টি ভাগে ভাগ করা যায়?
(a) চারটি ভাগে
(b) তিনটি ভাগে
(c) পাঁচটি ভাগে
(d) ছয়টি ভাগে ✔
58. প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশগুলির মধ্যে নীচের কোন্টি সঠিক?
(a)1975-76 সালের মধ্যে সব শিশুর জন্য 5 বছরের শিক্ষার ব্যবস্থা এবং 1985-86 সালের মধ্যে 7 বছরের
শিক্ষার ব্যবস্থা করা ✔
(b)1974-75 সালের মধ্যে 4 বছরের শিক্ষার ব্যবস্থা ও 1984-85 সালের মধ্যে 7 বছরের শিক্ষার ব্যবস্থা করা
(c)1975-76 সালের মধ্যে 5 বছরের শিক্ষার ব্যবস্থা ও 1982-83 সালের মধ্যে 7 বছরের শিক্ষার ব্যবস্থা করা
(d)1980 সালের মধ্যে 7 বছরের শিক্ষার ব্যবস্থা করা
59. কোঠারি কমিশনে প্রথাগত শিক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে ভরতির ন্যূনতম বয়স কত?
(a) 5 বছর
(b) 5 বছর+
© 6 বছর+ ✔
(d) নির্দিষ্ট করা হয়নি
60. নীচের কোন্টি নিম্নপ্রাথমিক স্তরের পাঠক্রমের অর্ন্তভুক্ত নয়?
(a) ভাষা
(b) সৃজনশীল কাজ
(c) কর্মশিক্ষা
(d) নৈতিক শিক্ষা ✔
61. কোঠারি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী উচ্চ প্রাথমিক স্তরের সময়কাল হল-
(a) 3 বছর ✔
(b) 4 বা 5 বছর
(c) 6 বছর’
(d) 7 বছর
62. কোঠারি কমিশন প্রাথমিক শিক্ষার জন্য কত বছর ধার্য করেন-
(a) 5-6 বছর
(b) 7-8 বছর ✔
(c) 6-8 বছর
(d) 7-9 বছর
63. কোঠারি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী উচ্চ প্রাথমিক স্তরের সময়কাল হল-
(a) 3 বছর
(b) 4 বা 5 বছর ✔
(c) 6 বছর
(d) 7 বছর
64. কোন্টি প্রাথমিক শিক্ষালয় নয়?
(a) নিম্নবুনিয়াদি স্কুল
(b) মুক্ত বিদ্যালয় ✔
(c) মন্ডেসরি স্কুল
(d) দিবাস্কুল
65. কোঠারি কমিশনের মতে নিম্ন প্রাথমিক শিক্ষার সময়কাল হবে-
(a) চার বছর
(b) চার-পাঁচ বছর ✔
(c) পাঁচ বছর
(d) ছয় বছর
66. কোঠারি কমিশন অনুযায়ী উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য কোন্টি?
(a) নেতৃত্ব গ্রহণের শিক্ষা
(b) জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা
(c) উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন
(d) ওপরের সবগুলি ✔
67. নীচের কোল্টিন্ট উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য প্রসঙ্গে রাধাকৃয়ণ কমিশন এবং কোঠারি কমিশন সহমত পোষণ করেন?
(a) কারিগরি শিক্ষা
(b) ধর্ম ও নীতি শিক্ষা
(c) নেতৃত্বদানের শিক্ষা ✔
(d) শিক্ষায় সমান অধিকার
68. উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ‘Major University’ স্থাপন করার সুপারিশ কোন্ কমিশনে করা হয়েছিল?
(a) বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন
(b) জনার্দন রেড্ডি কমিশন
(c) কোঠারি কমিশন
(d) মুদালিয়র কমিশন
69. উচ্চশিক্ষার মাধ্যম প্রসঙ্গে নীচের কোন্টি কমিশনের সুপারিশ ছিল?
(a) ইংরেজি ভাষা
(b) আঞ্চলিক ভাষা
(c) রাজ্যের দ্বারা নির্ধারিত হবে ✔
(d) ইউ জি সি-র দ্বারা নির্ধারিত হবে
70.কোঠারি কমিশনের কোন্ সুপারিশটি ভারত সরকার কার্যকরী করেনি?
(a) ইন্ডিয়ান এডুকেশন সার্ভিস ✔
(b) বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে আঞ্চলিক ভাষা
(c) মাধ্যমিক স্তরে বৃত্তিশিক্ষা
(d) পরীক্ষা সংস্কারে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন
71. কী কারণে কোঠারি কমিশন ‘ন্যাশনাল স্টাফ কলেজ’ স্থাপন করার সুপারিশ করেছেন?
(a) উচ্চশিক্ষায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য
(b) আন্তর্জাতিক স্তরের উচ্চশিক্ষার জন্য
(c) পেশাগত ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার জন্য
(d) শিক্ষা প্রশাসকদের বৃত্তিকালীন প্রশিক্ষণের জন্য ✔
72. 1986 সালের মধ্যে নিম্নমাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের মোট ছাত্রের মধ্যে কত শতাংশের বৃত্তিমুখী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করার কথা ছিল?
(a) যথাক্রমে 20% এবং 50% ✔
(b) যথাক্রমে 30% এবং 50%
(c) যথাক্রমে 35% এবং 45%
(d) যথাক্রমে 20% এবং 45%
73. বয়ঃসন্ধিক্ষণকালে শিক্ষার্থীরা সাধারণভাবে কোন্ শিক্ষাস্তরে পাঠরত থাকে?
(a) নিম্নপ্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক এবং নিম্নমাধ্যমিক স্তর
(b) উচ্চপ্রাথমিক এবং নিম্নমাধ্যমিক স্তর
(c) উচ্চপ্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তর ✔
(d) নিম্নমাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তর
74. শিক্ষার কোন্ স্তরে তিনটি ভাষা অবশ্যিক হবে?
(a) নিম্নপ্রাথমিক
(b) উচ্চপ্রাথমিক
(c) নিম্নমাধ্যমিক ✔
(d) উচ্চমাধ্যমিক
75. কোঠারি কমিশন কত বছরের সাধারণ শিক্ষার সুপারিশ করেছিল?
(a) আট বছরের
(b) দশ বছরের ✔
(c) এগারো বছরের
(d) বারো বছরের
76. শিক্ষার কোন্ স্তরে কোঠারি কমিশন পৃথকভাবে জ্ঞানমূলক বিষয় চর্চার সুপারিশ করেনি?
(a) প্রাক্সাথমিক স্তরে ✔
(b) প্রাক্লাথমিক এবং নিম্নপ্রাথমিক স্তরে
(c) প্রাক্সাথমিক স্তর থেকে উচ্চপ্রাথমিক স্তর পর্যন্ত
(d) ওপরের কোনো স্তরেই নয়
77. নীচের কোন্টি সঠিক নয়?
(a) প্রাথমিক শিক্ষান্তরের শেষে আবশ্যিকভাবে বহিঃপরীক্ষা থাকবে ✔
(b) পরীক্ষার উত্তরপত্র দেখার জন্য শিক্ষকদের কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া উচিত নয়
(c) পরীক্ষায় নম্বরদানের পরিবর্তে গ্রেড প্রথা চালু করা উচিত
(d) প্রথম আবশ্যিকভাবে বহিঃপরীক্ষা হবে দশম শ্রেণির পরে
78. মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে বৃত্তিশিক্ষা সম্পর্কে কী সুপারিশ করা হয়?
(a) কেবলমাত্র বালকদের জন্য এবং পূর্ণ সময়ের জন্য করা হবে
(b) কেবলমাত্র বালিকাদের জন্য এবং আংশিক সময়ের জন্য করা হবে
(c) বালক ও বালিকা উভয়ের জন্য এবং পূর্ণ সময়ের জন্য করা হবে
(d) বালক ও বালিকা উভয়ের জন্য এবং পূর্ণ আংশিক সময়ের জন্য করা হবে ✔
৪0. নীচের কোনটি সঠিক?
(a) কোঠারি কমিশনে নিম্নপ্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বাধ্যতামূলক কর্মশিক্ষা চালু করার কথা বলা হয়েছে মুদালিয়র কমিশনে তা বলা হয়নি
(b) মুদালিয়র কমিশন থেকে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ আরও শিক্ষা বিজ্ঞানসম্মত এবং আরও সময়োপযোগী
(c) কোঠারি কমিশনের সুপারিশে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। মুদালিয়র কমিশনে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের কথা বলা হয়নি
(d) ওপরের সবগুলি ✔
81. বহিঃপরীক্ষা উন্নয়নের জন্য কমিশন কী ব্যবস্থার সুপারিশ করেছে?
(a) প্রশ্নের প্রকৃতি পরিবর্তন
(b) প্রশ্নের মানের পরিবর্তন ✔
(c) বিজ্ঞানভিত্তিক নম্বরদানের ব্যবহার
(d) ওপরের সবগুলি
82. অপচয় ও অনুন্নয়ন কোন্ শিক্ষাস্তরের ওপর সর্বাধিক প্রভাব বিস্তার করে?
(a) প্রাথমিক শিক্ষা ✔
(b) মাধ্যমিক শিক্ষা
(c) প্রাক্সাথমিক শিক্ষা
(d) উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা
83. মাধ্যমিক শিক্ষায় কোন্ সুপারিশটি সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ?
(a) মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসার
(b) মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন
(c) মাধ্যমিক শিক্ষার বৃত্তিমুখীকরণ ✔
(d) বিদ্যালয়গুচ্ছ গঠন
84. ‘ত্রি-ভাষা’ সূত্রের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য কোন্ন্টি?
(a) জাতীয় সংহতি নিশ্চিত করা
(b) ভাষা সমস্যার সমাধান ✔
(c) ভারতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য স্থাপন
(d) আঞ্চলিক ভাষার ওপর গুরুত্ব দান
85. প্রতিটি রাজ্যে ‘স্টেট ইন্সটিটিউট অফ এডুকেশন’ গঠিত হবে-এটি কোন্ শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ?
(a) বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন
(b) জনার্দন রেড্ডি কমিশন
(c) মুদালিয়র কমিশন
(d) কোঠারি কমিশন ✔
86. নীচের কোন্ট্রি কোঠারি কমিশনের সুপারিশে বিবেচিত হয়নি?
(a) শিক্ষায় বেসরকারিকরণ
(b) শিক্ষা প্রযুক্তি ✔
(c) নির্দেশনা ও পরামর্শ দান
(d) প্রথাবহির্ভূত শিক্ষা
87. বিদ্যালয়ে নির্দেশনা ও পরামর্শদান বিভাগের দায়িত্ব কোন্টি?
(a) শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সমস্যাসমাধানে সাহায্য করা
(b) শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সমস্যাসমাধানে সাহায্য করা
(c) ভবিষ্যৎ শিক্ষা পরিকল্পনার ক্ষেত্রে সাহায্য করা
(d) ওপরের সবগুলি ✔
88. সাধারণভাবে কোন্ স্তরের বিদ্যালয়ের অধীনে ক-টি করে বিদ্যালয় নিয়ে বিদ্যালয়গুচ্ছ স্থাপিত হবে?
(a) প্রতিটি উচ্চপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধীনে 10টি নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিয়ে ✔
(b) প্রতিটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধীনে 10টি উচ্চপ্রাথমিক
বিদ্যালয়কে নিয়ে
(c) প্রতিটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধীনে 10টি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়কে নিয়ে
(d) প্রতিটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধীনে পরিস্থিতি অনুযায়ী কয়েকটি উচ্চপ্রাথমিক এবং কয়েকটি
নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিয়ে
90. কোঠারি কমিশন অনুযায়ী যে ক-টি ভাষা নিম্নমাধ্যমিক স্তরে শেখাতে হবে, তা হল-
(a) 1
(b) 2
(c) 3 ✔
(d) 4
91. কোঠারি কমিশন প্রস্তাবিত উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পাঠক্রমে নিম্নে প্রদত্ত বিষয়গুলির মধ্যে কোল্টি অন্তর্ভুক্ত ছিল?
(a) ধর্মশিক্ষা
(b) কর্ম অভিজ্ঞতা ✔
(c) কম্পিউটার শিক্ষা-
(d) সমাজ বিজ্ঞান
92. শিক্ষাক্ষেত্রে ‘+2’ স্তরের সুপারিশ করে-
(a) মুদালিয়র কমিশন
(b) ভারতীয় শিক্ষা কমিশন ✔
(c) রাধাকৃয়ণ কমিশন
(d) জাতীয় শিক্ষানীতি, 1986
93. স্কুলগুচ্ছ বা স্কুলজোট-এর কথা বলা হয়েছে-
(a) বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনে
(b) সার্জেন্ট রিপোর্টে
(c) কোঠারি কমিশনে ✔
(d) মুদালিয়র কমিশনে
94. কোঠারি কমিশনের প্রস্তাবমতো উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রমে যুক্ত হয়েছিল-
(a) ধর্মীয় শিক্ষা
(b) কর্ম অভিজ্ঞতা ✔
(c) কম্পিউটার শিক্ষা
(d) সমাজশিক্ষা
95. কোঠারি কমিশন কোন্ শিক্ষাস্তর থেকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু করার সুপারিশ করেছিল?
(a) নিম্ন প্রাথমিক
(b) উচ্চ প্রাথমিক
(c) নিম্ন মাধ্যমিক ✔
(d) উচ্চ মাধ্যমিক
96. বঞ্চিত ও সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের পার্থক্য দুর করার জন্য কোঠারি কমিশন যে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছে, তার প্রথম অক্ষরটি কী?
- D
- C ✔
- N
- O
97. শিক্ষাকে উৎপাদনশীলতার সঙ্গে যুক্ত করতে প্রয়োজন-
(a) ইংরেজি ভাষার ওপর গুরুত্বদান
(b) সামাজিক ও জাতীয় সেবামূলক কাজ
(c) কমন স্কুল
(d) পাঠক্রমে কর্ম অভিজ্ঞতাকে গুরুত্বদান ✔
98. বৃত্তিশিক্ষা প্রসারের অন্তরায় কোন্টি?
(a) সাধারণ শিক্ষার প্রতি জনগণের আগ্রহ
(b) বৃত্তিশিক্ষার জন্য বিদ্যালয়ের অভাব
(c) বৃত্তিশিক্ষার পর সাধারণ শিক্ষা গ্রহণে অসুবিধা
(d) ওপরের সবগুলি ✔
99. নীচের কোন্টিকে কমিশনের বিরূপ সমালোচনা বলে মনে করা হয়?
(a) শিক্ষার কাঠামো
(b) ইংরেজি শিক্ষার গুরুত্ব হ্রাস
(c) সমাজসেবামূলক কাজকে বাধ্যতামূলক করা ✔
(d) শিক্ষার ব্যয় সম্পর্কে অবাস্তব সুপারিশ
100. “আমাদের দেশে ডিপ্লোমাধারী দক্ষ কারিগরের তুলনায় ডিগ্রিধারী ইঞ্জিনিয়ারদের সংখ্যা অধিক”-উক্তিটি কোন্ কমিশন/কমিটির?
(a) অ্যাবট উড রিপোর্ট
(b) হার্টন কমিটি
(c) কোঠারি কমিশন ✔
(d) জনার্দন রেড্ডি কমিশন
101. কমিশন কোন্ স্তর থেকে ‘অ্যাডভান্স কোর্স’ চালু করার সুপারিশ করেছে?
(a) উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষাস্তর থেকে ✔
(b) মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর থেকে
(c) উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাস্তর থেকে
(d) উচ্চশিক্ষাস্তর থেকে
102. কমিশনের মতে জুনিয়ার টেক্সিক্যাল বিদ্যালয়ে ভরতি হওয়ার জন্য ন্যূনতম সাধারণ শিক্ষার মান কী?
(a) পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ
(b) অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ✔
(c) দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ
(d) দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ
103. ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসাবিদ্যা, আইন বিষয়ক শিক্ষা, শিক্ষক-শিক্ষা প্রভৃতি শিক্ষাব্যবস্থাকে কী বলা হয়?
(a) পরিসেবামূলক শিক্ষা
(b) বৃত্তিশিক্ষা
(c) কারিগরি শিক্ষা
(d) পেশাগত শিক্ষা ✔
104. স্বাধীনোত্তরকালে সর্বপ্রথম কোন্ কমিশন ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে এক নতুন দিশা তুলে ধরেছে?
(a) বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন
(b) কোঠারি কমিশন ✔
(c) জনার্দন রেড্ডি কমিশন
(d) মুদালিয়র কমিশন
105. কারিগরি শিক্ষায় সাধারণ শিক্ষার ভূমিকা প্রসঙ্গে নীচের কোন্ বক্তব্যটি সঠিক?
(a) সাধারণ শিক্ষার প্রয়োজন হয় না
(b) সামান্য সাধারণ শিক্ষার প্রয়োজন
(c) নিকৃষ্ট মানের সাধারণ শিক্ষার প্রয়োজন ✔
(d) অনেক সময় সাধারণ শিক্ষা সমস্যা সৃষ্টি করে
106. কারিগরি শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি সংস্থা হল-
- UGC
- NCERT
- NCTE
- AICTE ✔
107. নীচের কোন্ ধরনের শিক্ষায় বিজ্ঞান শিক্ষার বিশেষ প্রয়োজন?
(a) সাধারণ শিক্ষা
(b) বৃত্তিশিক্ষা
(c) কারিগরি শিক্ষা ✔
(d) ওপরের সবগুলি
2. Very Short Question Answer
1. সাধারণ শিক্ষা কাকে বলে?
▶ যে শিক্ষায় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার পরিধি সকলের কাছে একই রকমের, তাকে সাধারণ শিক্ষা বলে।
2. কমিশনের মতে মূল্যায়নের দুটি প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করো।
▶ কমিশনের মতে মূল্যায়ন একদিকে যেমন শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা পরিমাপ করে, তেমনি শিক্ষণের উন্নয়ন করে।
3. PTTI-এর পুরো কথাটি কী?
▶ PTTI-এর পুরো কথাটি হল-Primary Teachers Training Institute |
4. প্রাথমিক শিক্ষায় অনুন্নয়ন (stagnation)-এর অর্থ কী?
▶প্রাথমিক শিক্ষায় অনুন্নয়ন বলতে ‘পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার জন্য বছরের পর বছর একই শ্রেণিতে অবস্থান করাকে বোঝায়।
5. প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারের পথে একটি সমস্যা লেখো।
▶ প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারের পথে একটি সমস্যা পিতা-মাতার নিরক্ষরতা ও সচেতনতার অভাব।
6. প্রাথমিক শিক্ষা সমাধানের একটি উপায় লেখো।
▶ প্রাথমিক শিক্ষা সমাধানের একটি উপায় হল ‘বিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি করা’।
7. পুথিগত শিক্ষা কী প্রকৃতির?
▶ পুথিগত শিক্ষা হল সাধারণধর্মী প্রকৃতির।
8. স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি বলতে কোন্ ধরনের শিক্ষাকে বোঝায়?
▶ স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি বলতে সাধারণধর্মী শিক্ষাকে বোঝায়।
9. প্রাক্সাথমিক শিক্ষা কী?
▶ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভরতি হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে প্রাক্সাথমিক শিক্ষা বলা হয়।
10. ‘কাসাদাই বামবিনি’-এর অর্থ কী?
▶ ‘কাসাদাই বামবিনি’-এর অর্থ হল ‘শিশু নিকেতন’।
11. ম্যাকমিলান ভগিনীদ্বয় কত সালে লন্ডনে প্রথম নার্সারি বিদ্যালয় স্থাপন করেন?
▶ ম্যাকমিলান ভগিনীদ্বয় 1909 সালে লন্ডনে প্রথম নার্সারি বিদ্যালয় স্থাপন করেন।
12. কিন্ডার গার্টেন বিদ্যালয়ের জনক কে?
▶ কিন্ডার গার্টেন বিদ্যালয়ের জনক হলেন-ফ্রয়েবেল।
13. শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য ফ্রয়েবেল যে দুই ধরনের উপকরণের সাহায্য গ্রহণ করেন, তার নাম কী?
▶ ফ্রয়েবেল যে দুই ধরনের উপকরণের সাহায্য গ্রহণ করেন, তার নাম ‘উপহার ও বৃত্তি’।
14. ICDS-এর পুরো নাম কী?
▶ ICDS-এর পুরো নাম হল-Integrated Child Development Scheme
15. ECCE-এর পুরো নাম কী?
▶ ECCE-এর পুরো নাম হল-Early Childhood Care and Education |
16. কোন্ ধরনের বিদ্যালয়ে ডাইড্যাকটিক অ্যাপারেটার্স ব্যবহৃত হয়?
▶ মন্ডেসরি বিদ্যালয়ে ডাইড্যাকটিক অ্যাপারেটার্স ব্যবহৃত হয়।
17. ফ্রয়েবেল প্রণীত কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়ে বৃত্তি বলতে কী বোঝায়?
▶ ফ্রয়েবেল প্রণীত কিন্ডার গার্টেন বিদ্যালয়ে বৃত্তি বলতে বোঝায় বালি, কার্ডবোর্ড, মাটি ইত্যাদি।
18. বালশিক্ষামন্দিরে কোন্ কোন্ শিক্ষাব্যবস্থার সংমিশ্রণ দেখা যায়?
▶ বালশিক্ষামন্দিরে প্রাব্বুনিয়াদি ও মন্ডেসরি শিক্ষাব্যবস্থার সংমিশ্রণ দেখা যায়।
19. ফ্রয়েবেল স্থাপিত কিন্ডার গার্টেন বিদ্যালয়ে ‘উপহার’ বলতে কী বোঝানো হয়?
▶ ফ্রয়েবেল স্থাপিত কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়ে উপহার বলতে বিভিন্ন রং
ও আকৃতির কাঠের টুকরো, উডওয়ার্ক ইত্যাদির সেটকে বোঝানো হয়।
20. কোন শিক্ষাবিদ তাঁর প্রস্তাবিত বুনিয়াদি শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাবুনিয়াদি শিক্ষাস্তরের কথা উল্লেখ করেছেন?
▶ মহাত্মা গান্ধি তাঁর প্রস্তাবিত বুনিয়াদি শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাব্বুনিয়াদি শিক্ষাস্তরের কথা উল্লেখ করেছেন।
21. প্রাক্সাথমিক শিক্ষার দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করো।
▶ প্রাক্সাথমিক শিক্ষার দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হল কিন্ডার গার্টেন বিদ্যালয় এবং মন্ডেসরি বিদ্যালয়।
22. গণতন্ত্রকে সফল করার জন্য প্রতিটি নাগরিকের কোন্ শিক্ষার প্রয়োজন হয়?
▶ গণতন্ত্রকে সফল করার জন্য প্রতিটি নাগরিকের সাধারণ শিক্ষার প্রয়োজন হয়।
23. ব্যক্তিত্বের সার্বিক বিকাশে সাহায্য করে কোন্ প্রকার শিক্ষা?
▶ সাধারণ শিক্ষা ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।
24. কোন্ শিক্ষা মূল্যবোধ গঠনে সাহায্য করে?
▶ সাধারণ শিক্ষা মূল্যবোধ গঠনে সাহায্য করে।
25. সমাজমনস্কতা গঠনে সাহায্যকারী শিক্ষা কোন্টি?
▶ সমাজমনস্কতা গঠনে সহায়ক শিক্ষা হল সাধারণধর্মী শিক্ষা।
26. কোঠারি কমিশনের ভিত্তিতে কত সালে জাতীয় শিক্ষানীতি রচিত হয়?
▶ কোঠারি কমিশনের ভিত্তিতে 1968 সালে জাতীয় শিক্ষানীতি রচিত হয়।
27. কোন্ শিক্ষাবিদ সর্বপ্রথম ‘সাধারণধর্মী শিক্ষা’ কথাটি ব্যবহার করেন?
▶ শিক্ষাবিদ জে বি কোনান্ট সর্বপ্রথম ‘সাধারধর্মী শিক্ষা’ কথাটি ব্যবহার করেন।
28. পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা বলতে কী বোঝ?
▶ সাধারণধর্মী ও বৃত্তিমুখী কারিগরি শিক্ষার সমন্বয় হল পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা।
29. সংগতিবিধানে সহায়ক শিক্ষা বলতে কী বোঝ?
▶ যে শিক্ষা শিক্ষার্থীকে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে তাকে সংগতিবিধানে সহায়ক শিক্ষা বলে।
30. RTE বা শিক্ষার অধিকার Act-টি কবে থেকে পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর হয়েছে?
▶ RTE বা শিক্ষার অধিকার Act-টি 2010 খ্রিস্টাব্দের 1 এপ্রিল থেকে
কার্যকর হয়েছে।
31. উদারধর্মী শিক্ষার বিষয়গুলি কী কী?
▶ উদারধর্মী শিক্ষার বিষয়গুলি হল-ছন্দ, ব্যাকরণ, তর্কবিদ্যা, জ্যামিতি, সংগীত, গণিত ও জ্যোতিবিদ্যা।
32. 1964 সালের 14 জুলাই কোন্ শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়?
▶ 1964 সালের 14 জুলাই ভারতীয় শিক্ষা কমিশন বা কোঠারি কমিশন গঠন করা হয়।
33. কোঠারি কমিশনের মূল প্রতিবেদনটি কত পৃষ্ঠার ছিল?
▶ কোঠারি কমিশনের মূল প্রতিবেদনটি 489 পৃষ্ঠার ছিল।
34. কোঠারি কমিশনের প্রতিবেদনটি কী নামে সরকারের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল?
▶ কোঠারি কমিশনের প্রতিবেদনটি ‘Education and National Development’ (শিক্ষা ও জাতীয় উন্নয়ন) নামে পেশ করা হয়েছিল।
35. SUPW পশ্চিমবঙ্গে কোন্ পাঠ্যবিষয়ের সঙ্গে যুক্ত?
▶ SUPW পশ্চিমবঙ্গে কর্মশিক্ষা পাঠ্যবিষয়ের সঙ্গে যুক্ত।
37. “The destiny of India is now being shaped in her classrooms’-এই উক্তিটি কোন্ কমিশনের?
► ‘The destiny of India is now being shaped in her classrooms’ উক্তিটি কোঠারি কমিশনের।
38. ড. জে পি নায়েক কোন্ শিক্ষা কমিশনের সম্পাদক ছিলেন?
▶ ড. জে পি নায়েক কোঠারি কমিশনের সম্পাদক ছিলেন।
39. সমাজবিজ্ঞানের অন্তর্গত প্রধান তিনটি বিষয় কী কী?
▶ সমাজবিজ্ঞানের অন্তর্গত প্রধান তিনটি বিষয় হল ইতিহাস, ভূগোল ও পৌরবিজ্ঞান।
40. কোঠারি কমিশনের মতে চারুকলার বিষয়গুলি কী কী?
▶ কোঠারি কমিশনের মতে চারুকলার অন্তর্গত বিষয়গুলি হল চিত্রকলা, অঙ্কন, ভাস্কর্য প্রভৃতি।
41. IES-এর পুরো কথাটি কী?
▶ IES-এর পুরো কথাটি হল-Indian Education Service |
42. GNP-এর পুরো কথাটি কী?
► GNP-এর পুরো কথাটি হল-Gross National Product।
43. শিক্ষাক্ষেত্রে 10+2+3 পরিকাঠামো কোন্ কমিশন সুপারিশ করে?
▶ শিক্ষাক্ষেত্রে 10+2+3 পরিকাঠামো কোঠারি কমিশন সুপারিশ করে।
44. কোঠারি কমিশন প্রস্তাবিত প্রতিবেদনটি কত পৃষ্ঠার ছিল?
▶ কোঠারি কমিশন প্রস্তাবিত প্রতিবেদনটি ৬৯২ পৃষ্ঠার ছিল।
45. CABE-এর পুরো নাম লেখো।
▶ CABE-এর পুরো নাম সেন্ট্রাল অ্যাড্ডাইসারি বোর্ড অব এডুকেশন।
46. কোঠারি কমিশনের সদস্য সংখ্যা কত?
▶ কোঠারি কমিশনের সদস্য সংখ্যা ছিল সতেরো জন।
47. কোঠারি কমিশন কখন রিপোর্ট পেশ করেছিল?
▶ ১৯৬৬ সালের জুন মাসে কোঠারি কমিশন রিপোর্ট পেশ করেছিল।
48. কোঠারি কমিশন কবে গঠিত হয়?
▶ কোঠারি কমিশন 1964 সালে 14 জুলাই গঠিত হয়।
49. মূল্যায়নের কৌশলগুলির আবশ্যিক শর্ত কী?
▶ মূল্যায়নের কৌশলগুলি অবশ্যই যথার্থ, নির্ভরযোগ্য, নৈর্ব্যক্তিক এবং ব্যবহারোপযোগী হবে।
50. কমিশন মূল্যায়নের জন্য কী কী কৌশল ব্যবহার করার সুপারিশ করেছে?
▶ কমিশন মূল্যায়নের জন্য লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক পরীক্ষা এবং ব্যাবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করার কথা বলেছে।
3. Short Question Answer
1. কোঠারি কমিশনের গঠনের কারণ কী?
▶ স্বাধীনতার পর প্রথম ও দ্বিতীয় শিক্ষা কমিশন যথাক্রমে উচ্চশিক্ষা এবং মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু জাতীয় বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন শিক্ষার সর্বস্তরে এবং সবক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা। এরজন্যই কোঠারি কমিশন গঠিত হয়।
2. কোঠারি কমিশন কবে কাজ শুরু করে এবং কবে ও কী নামে তা প্রকাশ করে?
► কমিশন 1964 সালের 2 অক্টোবর কাজ শুরু করে এবং 1966 সালের 29 জুন ‘এডুকেশন অ্যান্ড ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট’ নামে রিপোর্টটি প্রকাশ করে।
3. সার্থক ও উদ্দেশ্যসাধক শিক্ষায় কমিশন যে চারটি মৌলিক উপাদানের কথা উল্লেখ করেছে, সেগুলি উল্লেখ করো।
▶ সার্থক ও উদ্দেশ্যসাধক শিক্ষায় কমিশন-উল্লেখিত চারটি মৌলিক উপাদান হল সাক্ষরতা, গাণিতিক দক্ষতা ও বিজ্ঞান বিষয়ক অধ্যয়ন, উৎপাদন কর্মদক্ষতা এবং সামাজিক দক্ষতা।
4. নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের শিক্ষা প্রসঙ্গে কমিশনের বক্তব্য উল্লেখ করো।
▶ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে সমস্ত সরকারি ও সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ সম্পর্কিত বিষয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিও এই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়।
5. কোঠারি কমিশনের ভারতীয় সদস্যদের নামগুলি উল্লেখ করো।
▶ কোঠারি কমিশনে ভারতীয় সদস্যগণের নাম হল জি পি নায়েক, ড. কে জি সঈউদ্দীন, ড. ত্রিগুণা সেন, মিস. এস পানান্ডিকর, অধ্যাপক এম ভি মাথুর এবং আর এ গোপালস্বামী।
6. কমিশন সুপারিশগুলি সম্পর্কে আলোচনা করার আগে ভারতবর্ষের যে সমস্যাগুলি উল্লেখ করেছে, সেগুলি কী?
▶ কমিশন যে সমস্যাগুলির উল্লেখ করেছে, সেগুলি হল খাদ্য, অর্থনৈতিক অনগ্রসরতা ও বেকারিত্ব, জাতীয় ও সামাজিক সংহতিসাধন, বিজ্ঞান ও কারিগরি বিদ্যায় অনগ্রসরতা এবং আধুনিকীকরণের সমস্যা।
7. শিক্ষা সংস্কার সম্পর্কে কমিশনের কী অভিমত?
▶ কমিশন মনে করে, শিক্ষা সংস্কারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল জনগণের জীবন, চাহিদা এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে শিক্ষাকে যুক্ত করা।
৪. শিক্ষায় উৎপাদনশীলতার জন্য কমিশনে কী কর্মসূচি গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে?
▶ শিক্ষায় উৎপাদনশীলতার জন্য কমিশন নীচের কর্মসূচিগ্রহণের কথা
বলেছে-
(1) বিজ্ঞানশিক্ষা: বিদ্যালয়ের অপরিহার্য অংশ হবে বিজ্ঞানশিক্ষা, যা অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার অংশ হবে।
(2) কর্ম-অভিজ্ঞতা: সমস্ত স্তরের শিক্ষার ক্ষেত্রে কর্ম-অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং এটি সাধারণ শিক্ষার অপরিহার্য অংশ হবে।
9. কমিশনের মতে শিক্ষার মান ক-টি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে এবং সেগুলি কী কী?
▶ কমিশনের মতে শিক্ষার মান নির্ভর করে চারটি বিষয়ের ওপর- ① সমগ্র শিক্ষা কাঠামোয় ক-টি স্তর এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, ② প্রতিটি স্তরের শিক্ষাদান ও মোট শিক্ষাদান, ও শিক্ষার বিভিন্ন উপাদান ও শিক্ষাপোকরণ এবং ④ প্রাপ্ত সুযোগের সদ্ব্যবহার।
10. কমিশনের ত্রিভাষাসূত্রটি কী?
▶ কমিশনের ত্রিভাষাসূত্র হল-① মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা, ② রাষ্ট্রভাষা (হিন্দি) বা সহকারী ভাষা (ইংরেজি), ③ একটি আধুনিক ভারতীয় ভাষা বা আধুনিক বিদেশি ভাষা যা ① বা ②-এর অন্তর্ভুক্ত নয়।
12. শিক্ষা কমিশন কীভাবে শিক্ষার্থীদের ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন করার সুপারিশ করেছে?
▶ শিক্ষা কমিশন মনে করে, শিক্ষার মধ্য দিয়ে ভারতীয় ভাষা, দর্শন, ধর্ম,
ইতিহাস শিল্পসৃষ্টি, সংগীত, নৃত্য ইত্যাদি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে হবে।
13. ধর্মশিক্ষা সম্পর্কে কমিশনের বক্তব্য কী?
▶ কমিশনের মতে, আমাদের মতো বহু ধর্মাবলম্বী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজন হল, এমন শিক্ষাব্যবস্থা যার সাহায্যে অন্য ধর্মের প্রতি সহিষ্কৃতা এবং সমস্ত ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব তৈরি করা যায়।
14. কমন স্কুল’ কাকে বলে?
▶ যে বিদ্যালয়ে জাতি, ধর্ম, সম্প্রদায়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে সকলেই শিক্ষার সুযোগ পায়, তাকে ‘কমন স্কুল’ বলে।
17. শিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগ প্রসঙ্গে কমিশনের বক্তব্য কী?
▶ কমিশন বেসরকারি উদ্যোগ প্রসঙ্গে মনে করে, শিক্ষার প্রসার এবং পরিচালনার জন্য বেসরকারি উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।
18. হিন্দি ভাষার গুরুত্ব প্রসঙ্গে কমিশনের বক্তব্য কী?
▶ কমিশন মনে করে, যেহেতু হিন্দি রাষ্ট্রভাষা এবং অধিকাংশ জনগণের যোগাযোগের ভাষা, তাই এই ভাষা প্রচারের জন্য সর্বতোভাবে সচেষ্ট হতে হবে।
19. বিদ্যালয় প্রশাসনে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশ উল্লেখ করো।
▶ বিদ্যালয় প্রশাসনে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের ভূমিকা প্রসঙ্গে কমিশনের সুপারিশ হল, বিদ্যালয় পরিচালনা এবং আর্থিক সহযোগিতার জন্য গ্রামের পঞ্চায়েত এবং শহরাঞ্চলের পৌরসভা বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।
20. ‘শিক্ষাবিপ্লব’ এই শব্দগুচ্ছটির দ্বারা কোঠারি কমিশন কী বুঝিয়েছেন?
▶ ‘শিক্ষাবিপ্লব’ এই শব্দগুচ্ছটির দ্বারা কোঠারি কমিশন এই কথাই বলতে চেয়েছে যে, স্বাধীন ভারতের জাতীয় প্রয়োজন মেটাতে হলে শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে হবে যার প্রভাবে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সূচনা হবে।
21. প্রাথমিক শিক্ষাকে কমিশন ক-টি ভাগে ভাগ করে এবং তার অন্তর্ভুক্ত শ্রেণিগুলি কী কী?
▶ কমিশন প্রাথমিক শিক্ষাকে দুটি ভাগে ভাগ করেছে—- (a) নিম্নপ্রাথমিক স্তর (প্রথম থেকে চতুর্থ
শ্রেণি) এবং (2) উচ্চ-প্রাথমিক স্তর (পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি)।
22. কমিশন নিম্নপ্রাথমিক শিক্ষাস্তরের পাঠক্রমে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে?
▶ কমিশন নিম্নপ্রাথমিক স্তরের পাঠক্রমে একটি ভাষা (মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা), গণিত, পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা, সৃজনশীল কাজ, কর্মশিক্ষা ও সমাজসেবা এবং স্বাস্থ্যশিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে।
23. প্রাপ্রাথমিক স্তরের শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কমিশনের দুটি সুপারিশ উল্লেখ করো।
▶ শিশুদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা এবং ব্যক্তিগত অভিযোজনের জন্য, যেমন-পোশাক পরিধান, টয়লেটের অভ্যাস ইত্যাদির জন্য মৌলিক দক্ষতা গড়ে তোলা। ② প্রয়োজনীয় সামাজিক অভ্যাস, দলগত কাজে উৎসাহ দান করা এবং অন্যদের অধিকার ও সুযোগসুবিধার প্রতি অনুভূতিশীল করে গড়ে তোলা।
24. প্রাপ্রাথমিক শিক্ষা কাকে বলে?
▶ প্রথাগত প্রাথমিক শিক্ষার আগে যে শিক্ষা, তাকে প্রাপ্রাথমিক শিক্ষা বলে। সাধারণত পাঁচ বা ছয় বছর বয়সের আগের শিক্ষাকেই প্রাক্সাথমিক শিক্ষা বলে।
25. ভারতবর্ষে প্রচলিত প্রাপ্রাথমিক শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলির নাম উল্লেখ করো।
▶ ভারতবর্ষে প্রচলিত প্রাপ্রাথমিক শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলি হল ক্রেস, নার্সারি বিদ্যালয়, কিন্ডার গার্টেন বিদ্যালয়, মন্ডেসরি বিদ্যালয়, প্রাক্- বুনিয়াদি বিদ্যালয় এবং বাল শিক্ষামন্দির।
26. প্রাপ্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণের জন্য কমিশনের দুটি সুপারিশ উল্লেখ করো।
▶ কমিশন প্রাক্সাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্যভিত্তিক কেন্দ্রীয় প্রাপ্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং জেলাভিত্তিক প্রাক্সাথমিক শিক্ষা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত কেন্দ্র স্থাপন করার সুপারিশ করে।
27. বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার দুটি সমস্যা লেখো।
▶ বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার দুটি সমস্যা হল-① বৃত্তিমূলক শাখার পাঠক্রমটিকে মাত্র কয়েকটি বৃত্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। ② উচ্চশিক্ষার কারিগরি ও বৃত্তি শিক্ষার পাঠক্রম মূলল তত্ত্বগত। ফলে তত্ত্ব ও প্রয়োজন সমন্বয়হীনতা আর-এক সমস্যা।
4. Long Question Answer
1. কোঠারি কমিশন কেন গঠন করা হয়? এই কমিশনের গঠন সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: কোঠারি কমিশন গঠনের কারণ—
1964 খ্রিস্টাব্দের 14 জুলাই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ড. ভি এস কোঠারির নেতৃত্বে 17 জন সদস্যের একটি শিক্ষা কমিশন নিয়োগ করা হয়। এই কমিশনটি ‘কোঠারি কমিশন’ নামে অধিক পরিচিত। এই কমিশন গঠনের কারণগুলি ছিল-
[1] পূর্বের কমিশনগুলির সীমাবদ্ধতা: 1948 সালের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের দায়িত্ব উচ্চশিক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। 1952 খ্রি. গঠিত শিক্ষা কমিশনের এক্তিয়ার ছিল শুধু মাধ্যমিক শিক্ষার পর্যালোচনা এবং সুপারিশ করা।
[2] পূর্বের কমিশনের সুপারিশগুলি পূরণে ব্যর্থতা: উপরিউক্ত দুটি কমিশনের সুপারিশসমূহ পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ার ফলে শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিগুলি থেকেই যায়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিসমূহ দূর করার উদ্দেশ্যে ভারত সরকার 1964 সালের 16 জুলাই ড. ভি এস কোঠারির নেতৃত্বে একটি ‘এডুকেশন কমিটি’ নিয়োগ করে।
কোঠারি কমিশন গঠন
17 জন সদস্য নিয়ে গঠিত কোঠারি কমিশন 1964 খ্রিস্টাব্দের ২ অক্টোবর থেকে
কাজ শুরু করে।
[1] কমিশনের প্রধান লক্ষ্য: কমিশনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় স্তরে
শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিক্ষার সর্বস্তরে ও সর্বদিকে উন্নতির জন্য সাধারণ ব্যবস্থা ও নীতিসমূহ সম্পর্কে সরকারকে পরামর্শ দান। অতীতে বিভিন্ন কমিটি এবং কমিশনগুলিতে শিক্ষার নির্দিষ্ট স্তরে এবং নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর পর্যালোচনা করা হয়। এই কমিশনে সামগ্রিকভাবে এবং শিক্ষার সমস্ত দিক পর্যালোচনা করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। তবে আইন এবং চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কিত শিক্ষাব্যবস্থা
কমিশনের আওতাভুক্ত হবে না বলে স্থির হয়।
[2] শিক্ষার ভূমিকা সম্পর্কে কমিশনের বিশ্বাস: কমিশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, জাতীয় বিকাশের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী হাতিয়ার হল শিক্ষা। সেই কারণেই কমিশন তার রিপোর্টের নামকরণ করে ‘Education and National
Development’ (শিক্ষা এবং জাতীয় বিকাশ)।
[3] কমিশনের অন্তর্ভুক্ত সদস্যবৃন্দ: কমিশনে দেশ ও বিদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদগণ সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। সদস্যদের মোট সংখ্যা ছিল সতেরো। শ্রী জে পি নায়েক ছিলেন সদস্য সম্পাদক (মেম্বার সেক্রেটারি) এবং মি. জি এফ ম্যাকডুগাল ছিলেন সহ-সম্পাদক। ভারতীয় সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ড. কে জি সঈউদ্দীন, ড. ত্রিগুণা সেন, কুমারী এস পানান্ডিকর, অধ্যাপক এম ভি মাথুর, আর এ গোপালাস্বামী প্রমুখ। বিদেশিদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক এইচ এল এলভিন (ইংল্যান্ড), জাঁ টমাস (ফরাসি), রজার রিভেলি (আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র), সাদাতোশি ঝোডা (জাপান) প্রমুখ।
[4] কমিশনের কর্মপদ্ধতি: কমিশন প্রায় 90,000 মহিলা এবং পুরুষদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল। এদের মধ্যে ছিলেন জনজীবনে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি, শিক্ষাবিদ, বৈজ্ঞানিক, শিল্পবিদ, বিভিন্ন বিষয়ের পণ্ডিত ব্যক্তিসকল এবং শিক্ষা সম্পর্কে আগ্রহী ব্যক্তিগণ। কমিশন 2,400 মেমোরেন্ডা এবং লিখিত বক্তব্য পেয়েছিল, যেগুলিকে তারা পর্যালোচনা করে। কমিশন বিগত 20 বছরের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর দীর্ঘ 21 মাসব্যাপী কাজ করেছিল। 1964 সালের 2 অক্টোবর (মহাত্মা গান্ধির জন্মদিন) কমিশনের কাজ শুরু হয় এবং 1966 সালের 29 জুন কমিশনের বিবরণী জমা পড়ে।
[5] কমিশনের আলোচ্য বিষয় এবং টাস্ক ফোর্স গঠন: কমিশনের রিপোর্টে প্রাপ্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ স্তর ও শিক্ষার বিভিন্ন দিকের ওপর পূর্ণাঙ্গ আলোচনা করা হয়েছে। আইন ও চিকিৎসাবিদ্যা এই কমিশনের সুপারিশের আওতায় ছিল না। তবে সুপারিশে এর সমস্যাগুলির দিক নির্দেশ করা হয়েছে।
এই কমিশন 12টি টাস্ক ফোর্স গঠন করে। এগুলি হল-ⅰ. স্কুলশিক্ষা, ii. উচ্চশিক্ষা, iii. টেকনিকালশিক্ষা, iv. কৃষিশিক্ষা, v. বয়স্কশিক্ষা, vi. বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা, vii. শিক্ষক শিক্ষা ও শিক্ষকের মর্যাদা, viii. ছাত্র কল্যাণ, ix. নতুন শিক্ষা কৌশল ও পদ্ধতি, x. জনশক্তি, xi. শিক্ষা প্রশাসন এবং xii. শিক্ষার অর্থনীতি। এ ব্যতীত 7টি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে। এগুলি হল- i. নারীশিক্ষা, ii. পশ্চাত্পদ সম্প্রদায়ের জন্য শিক্ষা, iii. স্কুল বিল্ডিং, iv. বিদ্যালয় ও সমাজের সঙ্গে সম্পর্ক, v. স্ট্যাটিস্টিক্স, vi. প্রাক্সাথমিক শিক্ষা এবং vii. বিদ্যালয়ের পাঠক্রম।
এই টাস্ক ফোর্স ও ওয়ার্কিং গ্রুপগুলি বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করে। সেই রিপোর্ট অনুসারেই কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ এডুকেশনাল অ্যান্ড ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট-এ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
2. পরীক্ষাব্যবস্থা সংস্কারে কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ উল্লেখ করো।
উত্তর : পরীক্ষাব্যবস্থা সংস্কারে কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ
কোঠারি কমিশন পরীক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারে একাধিক সুপারিশের কথা ব্যক্ত করে, যা এখানে উল্লেখ করা হল-
[1] নিম্নপ্রাথমিক স্তরের মূল্যায়নের উদ্দেশ্য হবে শিশুদের মধ্যে সাধারণ দক্ষতা, সঠিক অভ্যাস এবং আগ্রহ গড়ে উঠেছে কি না তা পরিমাপ করা। নিম্নপ্রাথমিক স্তরের জন্য অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে।
[2] উচ্চপ্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে থাকবে মৌখিক পরীক্ষা। এই পরীক্ষাগুলি হবে অভ্যন্তরীণ। শিক্ষক নিজেই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করবেন।
[3] প্রাথমিক স্তরের শেষে শিক্ষার্থীরা জাতীয় মানে পৌঁছেছে কি না তা জানার জন্য পরীক্ষার প্রয়োজন। শিক্ষার মান বজায় রাখার জন্য বিদ্যালয়-পরিদর্শকগণ মাঝে মাঝে রাজ্য মূল্যায়ন সংস্থার তৈরি প্রশ্নপত্রের দ্বারা সমীক্ষা করতে পারেন।
[4] প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির মধ্যে তুলনা করার জন্য প্রাথমিক স্তরের শেষে বিভিন্ন জেলায় আদর্শায়িত পারদর্শিতা অভীক্ষা (Standardised Achievement Test)-এর মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। তবে এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হবে না।
[5] কমিশন বহিঃপরীক্ষার মানকে উন্নত করার জন্য কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। যেমন- প্রশ্ন প্রস্তুতকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, নম্বর দেওয়ার পদ্ধতিকে বিজ্ঞানভিত্তিক করা ইত্যাদি।
[6] কয়েকটি নির্বাচিত বিদ্যালয়কে তাদের নিজেদের ছাত্রদের মূল্যায়নের দায়িত্ব এবং দশম শ্রেণির পর চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার অধিকার দেওয়া উচিত। এর মান হবে স্টেট বোর্ড অব্ স্কুল এডুকেশনের সমান।
[7] প্রতিটি শিক্ষাস্তরে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের পরিমাপের ব্যবস্থা থাকা উচিত।
[৪] উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কমিশনের সুপারিশ হল, দশম শ্রেণির পাঠ শেষ হওয়ার পর প্রথম বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে এবং দ্বাদশ শ্রেণির শেষে দ্বিতীয় বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
[9] উচ্চশিক্ষার মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বহিঃপরীক্ষার পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ ও নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
[10] সর্বস্তরের শিক্ষকদের আধুনিক ও উন্নত মূল্যায়ন ব্যবস্থা সম্বন্ধে ধারণা দেওয়ার জন্য সেমিনার, আলোচনা, ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করতে হবে।
[11] পরীক্ষার খাতা দেখার জন্য কোনো অর্থ দেওয়া উচিত নয়।
[ 12] নম্বরের পরিবর্তে গ্রেড প্রথা চালু করা উচিত (যা ইতিমধ্যে চালু হয়েছে)।
[13] মূল্যায়নের জন্য প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কয়েকটি সুপারিশ করা হয় যেমন-ⅰ. রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে
মূল্যায়নের জন্য সুসংগঠিত সংস্থার প্রয়োজন। রাজ্যস্তরে এই সংস্থাটি হবে ‘স্টেট বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন’, যা মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করবে। জাতীয় স্তরে থাকবে ‘ন্যাশনাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন’ যা জাতীয় স্তরে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করে। ii. ইউ জি সি ‘সেন্ট্রাল এন্জামিনেশন রিফর্ম ইউনিট’ (Central Examination Reform Unit) নামে একটি বিভাগ স্থাপন করবে, যেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মূল্যায়নের ব্যাপারে সংযোগ রাখবে এবং কতকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার জন্য বিশেষ ইউনিট খুলবে।
3.বিজ্ঞানশিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: বিজ্ঞানশিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ
কোঠারি কমিশন বিজ্ঞানশিক্ষার ক্ষেত্রে একাধিক সুপারিশ করেছে। এখানে সুপারিশগুলি উল্লখ করা হল-
[1] সাধারণ শিক্ষায় বাধ্যতামূলকভাবে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞান শেখানো হবে।
[2] বিজ্ঞানশিক্ষা এমনভাবে সংগঠিত হবে যাতে বিজ্ঞান তার উপযুক্ত উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্যে পৌঁছোতে পারে। এজন্য বিভিন্ন শিক্ষাস্তরে বিজ্ঞানের কী কী বিষয়ে শিক্ষাদান করা প্রয়োজন, তা উল্লিখিত হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষাস্তর
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভৌতবিজ্ঞান ও জীবনবিজ্ঞান সম্পর্কিত বিভিন্ন ধারণা, ঘটনা, পদ্ধতি ও নীতি জানানো প্রয়োজন।
নিম্নপ্রাথমিক স্তরে সামাজিক, ভৌতবিজ্ঞান ও জীবনবিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদান করতে হবে।
[1] Class I-II: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাস ও পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বাড়ানো ইত্যাদি শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন।
[2] Class III-IV: সমস্ত বিষয়কে আরও ব্যাপকভাবে শিক্ষা দিতে হবে। এই স্তরে গাছপালা, প্রাণী, বায়ু, জল, আবহাওয়া প্রভৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান দেওয়া প্রয়োজন। বাগান তৈরি ইত্যাদির মাধ্যমে বিজ্ঞানশিক্ষা দানের ব্যবস্থা করতে হবে।
[3] Class IV: এই স্তরে Roman Alphabet শেখাতে হবে, কারণ বিভিন্ন প্রতীকচিহ্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এগুলি অত্যন্ত প্রয়োজন।
[4] Class V: এই স্তরে পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা ও জীববিদ্যা পড়ানোর ব্যবস্থা করতে হব।
[5] Class VI: এই স্তরে পদার্থবিদ্যা, রাসায়নবিদ্যা ও জীববিদ্যা পড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
[6] Class VII: এই স্তরে পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, জীববিদ্যা ও জ্যোতির্বিদ্যা পড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
Class V থেকে আলাদা পর্যবেক্ষণ শেখানো দরকার। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে Science Corner থাকবে। পড়াবার ক্ষেত্রে বিভিন্ন চার্ট, মডেল ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্তত একটি পরীক্ষাগার কাম শ্রেণিকক্ষ থাকা দরকার।
মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞানশিক্ষা
[1] নিম্নস্তরে বিজ্ঞান অঙ্গন (Science Corner)-এর ব্যবস্থা করতে হবে।
[2] প্রতিভাবান ছেলেমেয়েদের জন্য নির্ধারিত নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নত বিজ্ঞানের পাঠক্রম অনুসরণ করা দরকার।
[3] গ্রামীণ অঞ্চলে কৃষির সঙ্গে ও শহরাঞ্চলে কারিগরি শিক্ষার সঙ্গে বিজ্ঞানশিক্ষাকে যুক্ত করতে হবে।
[4] বিজ্ঞানশিক্ষা পদ্ধতির উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
নিম্নমাধ্যমিক স্তর হবে উচ্চশিক্ষায় বিজ্ঞানশিক্ষার সোপান। এই স্তরে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যা, ভূমিবিদ্যা আবশ্যিক হিসেবে থাকবে।
ভূমিবিদ্যা (earth science)-এ, ভূবিদ্যা (geology) ও ভূগোল (geography)-কে অভিন্ন বিষয় হিসেবে পড়ানোর ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষা আবশ্যিক হবে না। বিজ্ঞান
বিভাগের তিনিটি বিষয়কে শিক্ষার্থীরা ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে নিতে পারবে। এই বিভাগের মধ্যে রয়েছে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীবনবিজ্ঞান, নৃতত্ত্ব বিদ্যা ও গণিত ইত্যাদি।
তবে শিক্ষার্থীরা দুটি বিজ্ঞানের বিষয়ের সঙ্গে একটি কলা বিষয়কে বা দুটি
কলা বিষয়ের সঙ্গে একটি বিজ্ঞান বিষয়কে ঐচ্ছিক হিসেবে নিতে পারবে। কমিশন মনে করে, বিজ্ঞানশিক্ষার ক্ষেত্রে গণিতের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হয়। সেজন্য গতানুগতিক বিষয়গুলিকে বাদ দিয়ে গণিতের বিভিন্ন শাখাগুলিকে সুসমন্বিতভাবে পাঠ্যসূচিতে গ্রহণ করতে হবে।
উচ্চশিক্ষা স্তরে বিজ্ঞানশিক্ষা
কমিশন উচ্চশিক্ষা স্তরে বিজ্ঞানশিক্ষা সম্পর্কে সুপারিশ করতে গিয়ে বলেন, কলা বিষয়ের মতোই বিজ্ঞান বিষয়েও প্রথম ডিগ্রি স্তর 3 বছরের কম হবে না। দ্বিতীয় ডিগ্রি স্তরের স্থিতিকাল হবে 2 বা 3 বছরের। কলা বিষয়ের মতোই বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে 2 বছরের MSc ডিগ্রি চালু করা যেতে পারে। সুপরিকল্পিত উপায়ে যদি এই ডিগ্রি স্তরে মেধাবী ছাত্র ভরতি করা যায়, তাহলে সুদক্ষ ও যোগ্য নাগরিক সৃষ্টি করা যেতে পারে। উচ্চশিক্ষায় বিজ্ঞানের গবেষণার ক্ষেত্রে অনুসন্ধান, মৌলিক নীতি উপলব্ধির প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে সংকেত, চার্ট, মানচিত্র এবং পরিসংখ্যান সংক্রান্ত টেবল্-এর ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
4. কমিশন কী উদ্দেশ্যে সাধারণ বিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করে? এ ধরনের বিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো। কমিশন কেন বিদ্যালয়গুচ্ছ স্থাপনের সুপারিশ করে? 1+2+5
উত্তর: সাধারণ বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্দেশ্য জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, আর্থসামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে সমাজের সকল অংশ যাতে শিক্ষায় সমসুযোগ পায়, তারই জন্য কমিশন সাধারণ বিদ্যালয়ের (common school) সুপারিশ করে।
সাধারণ বিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্যাবলি
এই বিদ্যালয়গুলির বৈশিষ্ট্য হল-
[1] জাতি-ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায়, আর্থিক অবস্থা, সামাজিক মর্যাদা নির্বিশেষে সকলে বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষার সুযোগ পাবে।
[2] সাধারণ বিদ্যালয় ব্যবস্থায় উন্নতমানের শিক্ষা মেধাভিত্তিক হবে, অর্থ, ধর্ম বা সম্প্রদায় ভিত্তিক নয়।
[3] শিক্ষার উপযুক্ত মান সাধারণ বিদ্যালয়ে রক্ষিত হবে এবং শিক্ষা হবে অবৈতনিক।
[4] এই ধরনের বিদ্যালয়ে অধিকাংশ অভিভাবকের মতামতের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
[5] সাধারণ বিদ্যালয়ের সুযোগসুবিধা এমন হওয়া প্রয়োজন যাতে অভিভাবকগণ ব্যয়বহুল বেসরকারি বিদ্যালয়ে প্রেরণ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করবেন না।
বিদ্যালয়গুচ্ছ তৈরির উদ্দেশ্য
কোঠারি কমিশনের সুপারিশে বিদ্যালয়গুচ্ছের কথা বলা হয়। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, কাছাকাছি তিন অথবা চারটি উচ্চপ্রাথমিক বিদ্যালয় এবং 10-20টি নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয় একসঙ্গে করে স্কুলজোট বা বিদ্যালয়গুচ্ছ তৈরি করা হবে। বিদ্যালয় জোটের উদ্দেশ্য হল-
[1] সহযোগিতার মনোভাব তৈরি করা: বিদ্যালয়গুলির মধ্যে বিচ্ছিন্ন প্রথম এবং প্রধান উদ্দেশ্য।
মনোভাব দূর করা এবং সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলাই বিদ্যালয় জোটের
[2] মূল্যায়নের সঠিক পদ্ধতি: আলোচনার মাধ্যমে মূল্যায়নের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে সিদ্ধান্তগ্রহণ এবং বিদ্যালয়গুলিতে তার প্রয়োগ পদ্ধতি নিরূপণ করা।
[3] শিক্ষকের মান: অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকদের উপযুক্ত যোগ্যতা অর্জনে সাহায্য করবে বিদ্যালয়গুচ্ছ।
[4] বিদ্যালয়ের উন্নতিসাধন: প্রতিটি বিদ্যালয়ে বার্ষিক শিক্ষা-সংক্রান্ত পরিকল্পনা তৈরির ক্ষেত্রে জোট অন্তর্ভুক্ত বিদ্যালয়গুলির প্রধান শিক্ষকগণ আলোচনার মাধ্যমে করণীয়গুলি স্থির করবেন। তাঁরা একত্রে বিদ্যালয়ের উন্নতিবিধানে চিন্তাভাবনা করবেন।
[5] শিক্ষকের অভাবপূরণ: বিদ্যালয়গুচ্ছ তৈরি করে দু-একজন অতিরিক্ত (রিজার্ভ) শিক্ষকের ব্যবস্থা রাখতে হবে যাঁরা প্রয়োজনমতো বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অস্থায়ী অনুপস্থিতিতে সাহায্য করতে পারেন।
[6] পাঠ্যপুস্তকের মূল্যায়ন: বিদ্যালয়গুচ্ছ নতুন পাঠ্যপুস্তকের মূল্যায়ন করবে এবং বিভিন্ন শিক্ষা সহায়ক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য পাঠক্রম পরিবর্তনে
দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে প্রয়োজনমতো পরামর্শ দেবে।
[7] বিদ্যালয় পরিদর্শন: উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান ও সহশিক্ষক প্রতি মাসে অন্তত একবার নিকটবর্তী বিদ্যালয়গুলি পরিদর্শন করবেন। একইভাবে উচ্চপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন।
[৪] ভ্রাম্যমান পাঠাগার: প্রতি গুচ্ছের শিক্ষকদের জন্য ভ্রাম্যমান পাঠাগার থাকবে। মাঝে মাঝে গুচ্ছের শিক্ষকদের আলোচনা সভা ও শিক্ষকতাকালীন শিক্ষা দ্বারা শিক্ষামানের উন্নতি করা সম্ভব হবে।
বিদ্যালয় জোটের পরিকল্পনা কোঠারি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ। এর মাধ্যমে নিকটবর্তী বিভিন্ন নিম্নপ্রাথমিক ও উচ্চপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে সমন্বয় সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এবং শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই ধরনের সুপারিশ কার্যকর করলে নিঃসন্দেহে শিক্ষাক্ষেত্রে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসা সম্ভবপর হবে।
5. ভাষানীতি এবং ভাষাশিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ উল্লেখ করো।
উত্তর: ভাষানীতি ও ভাষাশিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ
শিক্ষায় ভাষার গুরুত্বকে কখনোই অস্বীকার করা যায় না। নিম্নপ্রাথমিক শিক্ষাস্তর থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত, প্রতিটি স্তরেই ভাষাশিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ স্থান আছে। তাই কোঠারি কমিশনের রিপোর্টেও ভাষানীতি ও ভাষাশিক্ষা সম্পর্কে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে।
ভাষানীতি সম্পর্কে সুপারিশ
কমিশন মনে করে সামাজিক এবং জাতীয় সংহতির জন্য সঠিক ভাষানীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
[1] মাতৃভাষা ও আঞ্চলিক ভাষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব: বিদ্যালয় শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে, এমনকি কলেজ শিক্ষার ক্ষেত্রেও, শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষার দাবিকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। আঞ্চলিক ভাষায় গ্রন্থ, সাহিত্য, বিশেষ করে বিজ্ঞান ও কারিগরি বিদ্যা বিষয়ক গ্রন্থ রচনার ক্ষেত্রে UGC ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সক্রিয় হওয়া বিশেষ প্রয়োজন।
[2] ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব: সর্বভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে ইংরেজি মাধ্যমই চালু থাকা উচিত। কারণ উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণার বিভিন্ন কাজে এটি এখনও পর্যন্ত যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। ইংরেজি ভাষাশিক্ষা শুরু হবে পঞ্চম শ্রেণি থেকে।
[3] হিন্দি ভাষার গুরুত্ব: অহিন্দি ভাষাভাষী এলাকায় হিন্দি ভাষা প্রসারের চেষ্টা করতে হবে। হিন্দি ছাড়াও অন্যান্য আধুনিক ভারতীয় ভাষায় আন্তঃপ্রাদেশিক যোগাযোগ রক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এরজন্য বিদ্যালয় ও কলেজে আধুনিক ভারতীয় ভাষাশিক্ষার ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
ভাষাশিক্ষা সম্পর্কে সুপারিশ
ভাষাশিক্ষা সম্পর্কে কমিশন 1956 সালের CABE কর্তৃক গৃহীত ত্রিভাষা সূত্র বিগত 10 বছরের অভিজ্ঞতাকে পাথেয় করে সংশোধিত আকারে সুপারিশ করেছে। সংশোধিত সূত্রটি হল-[1] মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা, [2] রাষ্ট্রভাষা বা সহকারী রাষ্ট্রভাষা (যতদিন পর্যন্ত আছে) এবং [3] আধুনিক ভারতীয় ভাষা বা বিদেশি ভাষা যা [1] বা [2]-এ নেই এবং যে ভাষায় পাঠদান করা হয়, তার বাইরের ভাষা। এ সম্পর্কে কমিশন বিশদভাবে তার সুপারিশে উল্লেখ করেছে-
[1] নিম্নপ্রাথমিক স্তর (প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি): একটি ভাষা- মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা।
[2] উচ্চপ্রাথমিক স্তর (পঞ্চম শ্রেণি থেকে সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণি): দুটি ভাষা হবে আবশ্যিক-
i) মাতৃভাষা অথবা আঞ্চলিক ভাষা,
ii) হিন্দি অথবা ইংরেজি। এ ছাড়া একজন শিক্ষার্থী ইংরেজি, হিন্দি, আঞ্চলিক ভাষার মধ্যে যে-কোনো একটি ভাষাকে তৃতীয় ভাষা ঐচ্ছিক হিসেবে নিতে পারে।
[3] নিম্নমাধ্যমিক স্তর (অষ্টম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি): তিনটি ভাষা আবশ্যিক যা অহিন্দি ভাষাভাষী অঞ্চলের শিশুদের পড়তে হবে। এগুলি হল-
i. মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা,
ii. উচ্চ অথবা নিম্নস্তরের হিন্দি,
iii. উচ্চ অথবা নিম্নস্তরের ইংরেজি হিন্দি ভাষাভাষী অঞ্চলের শিশুদের পড়তে হবে-① মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা, ② ইংরেজি অথবা হিন্দি (যদি ইংরেজি মাতৃভাষা হয়), ③ হিন্দি ব্যতীত অন্য আঞ্চলিক ভারতীয় ভাষা।
[4] উচ্চমাধ্যমিক স্তর (একাদশ শ্রেণি এবং দ্বাদশ শ্রেণি): মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা, ইংরেজি, যে-কোনো আধুনিক ভারতীয় ভাষা, যে-কোনো আধুনিক বিদেশি ভাষা, যে-কোনো প্রাচীন ভারতীয় ভাষা-এর মধ্যে যে- কোনো দুটি। এ ব্যতীত তিনটি ঐচ্ছিক বিষয়ের মধ্যে একটি ভাষাও হতে পারে।
[5] উচ্চশিক্ষা: উচ্চশিক্ষার স্তরের কোনো ক্ষেত্রে ভাষাশিক্ষা বাধ্যতামূলক নয়। তবে আঞ্চলিক ভারতীয় ভাষা বা প্রাচীন ভাষা ঐচ্ছিক হিসেবে এই স্তরে থাকবে। ভাষাশিক্ষা প্রসঙ্গে কমিশন সুপারিশ করে যে, উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হিসেবে আগামী 10 বছরের মধ্যে ইংরেজি ভাষা থেকে ধীরে ধীরে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করতে হবে।
6. স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে কোঠারি কমিশনের অভিমত কী? সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ গঠনে কোঠারি কমিশনের সুপারিশ ব্যক্ত করো।
উত্তর : স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে কোঠারি কমিশনের অভিমত
কোঠারি কমিশন লক্ষ করেছে যে, মেয়েদের শিক্ষাগ্রহণের হার ছেলেদের – তুলনায় খুবই কম। তাই নিম্নমাধ্যমিক স্তরে মেয়েদের শিক্ষার প্রতি কমিশন বিশেষ গুরুত্ব দেয়। স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে কমিশনের অভিমত উল্লেখ করা হল-
[1] পৃথক বিদ্যালয় গঠন: কমিশন মেয়েদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় গড়ার সুপারিশ করে। কমিশন আরও সুপারিশ করে যে, যদি আর্থিক কারণে বা স্থানাভাবে মেয়েদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় নির্মাণ করা না যায়, তাহলে বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষিকা ও মহিলা শিক্ষাকর্মীর ব্যবস্থা করতে হবে।
[2] ছাত্রীনিবাস গঠন: মেয়েদের শিক্ষার উন্নতি করার জন্য ছাত্রীনিবাসের ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব ছাত্রীর বাড়ি বিদ্যালয় থেকে অনেক দূরে, তারা ছাত্রীনিবাসে থেকে পড়াশোনা করবে। –
[3] বৃত্তির ব্যবস্থা: অধিক সংখ্যক ছাত্রীকে শিক্ষায় আগ্রহী করার জন্য বৃত্তি – বা স্কলারশিপের ব্যবস্থা করতে হবে।
[4] আংশিক সময়ের শিক্ষা: কমিশন মেয়েদের জন্য আংশিক সময়ের শিক্ষা
শিক্ষারও সুপারিশ করেছে। পুরো সময়ের শিক্ষাগ্রহণ করতে না পারা মহিলাদের জন্য আংশিক সময়ের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
[5] বৃত্তিমুখী শিক্ষা: যেসব মেয়েরা আর্থিক দুরবস্থার কারণে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষের আগেই বৃত্তিমুখী শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হয়, তাদের জন্য বৃত্তিমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোেধ গঠনে কমিশনের সুপারিশ
সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের বিকাশে শিক্ষাব্যবস্থাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন হল-
[1] রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা: রাধাকৃয়ণ কমিশন ও ধর্মীয় ও নৈতিক উপদেষ্টা কমিশনের সুপারিশ মতো কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে সমস্ত সরকারি ও সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ে সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ সম্পর্কিত বিষয়ে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বেসরকারি বিদ্যালয়গুলি এই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়।
[2] নির্দিষ্ট সময়তালিকা: এই বিষয়ে শিক্ষাদানের জন্য বিদ্যালয়ের সময়তালিকায় প্রতি সপ্তাহে কয়েকটি পিরিয়ড বরাদ্দ থাকবে, তবে এরজন্য পৃথক – শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন নেই। সহশিক্ষকগণই এই দায়িত্ব পালন করবেন। এরজন্য বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষকগণকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।
[3] ধর্ম সম্পর্কে শিক্ষা: বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক ধর্ম বিভাগ বিভিন্ন ধর্মের মূল নীতিসমূহের ওপর ভিত্তি করে কীভাবে কার্যকরী শিক্ষা দেওয়া যায়, সেই উদ্দেশ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য পুস্তক রচনার ব্যবস্থা করবেন। বহু ধর্মাবলম্বী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজন এমন শিক্ষা, যার সাহায্যে অন্য ধর্মের প্রতি সহিষ্ণুতা এবং সমস্ত ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব তৈরি করা যায়।
7. প্রাথমিক শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলিকে কী কী ভাগে ভাগ করা যায়? ওই স্তরের শিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশসমূহ ব্যক্ত করো। 4+4
উত্তর: প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিভাগ
প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে কমিশন প্রাথমিক শিক্ষা হিসেবে বিবেচনা করেছে। আমাদের দেশে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান দেখা যায়। এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে সামগ্রিকভাবে নিম্নলিখিত উপায়ে ভাগ করা যায়-
[1] সরকারি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: এই ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমস্ত
দায়দায়িত্ব সরকার বহন করে। নিয়মকানুন, পাঠক্রম, পুস্তক ইত্যাদি সবই সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের বেতন দিতে হয় না। বইপত্র বিনাপয়সায় সরকার সরবরাহ করে।
[2] বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: এই ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকার কোনো
আর্থিক সাহায্য করে না। বিদ্যালয় পরিচালনার ওপর সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করে না। বিদ্যালয় পরিচালনার যাবতীয় খরচ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হয়। শিক্ষার্থীদের বেতন দিয়ে পড়তে হয়।
[3] এক-শিক্ষক পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: এই ধরনের প্রাথমিক শিক্ষা- প্রতিষ্ঠানে একজন মাত্র শিক্ষক বিশেষ পদ্ধতির সাহায্যে বা বিশেষ কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নিয়ে পড়ান। গ্রামাঞ্চলে এই ধরনের বিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রচুর।
[4] বুনিয়াদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: এখানে বুনিয়াদি পাঠক্রমকে অনুসরণ করা হয়। শিক্ষার্থীকে কোনো বেতন দিতে হয় না। বর্তমানে এই ধরনের বিদ্যালয়ের সংখ্যা খুব কম।
[5] ধর্মীয় সংস্থা পরিচালিত প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান: বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্থা শিক্ষার মাধ্যমে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করে। ধর্মীয় সংস্থা হিসেবে এগুলি সংবিধান স্বীকৃত কিছু সুবিধা পেয়ে থাকে।
[6] প্রথামুক্ত প্রাথমিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: এই ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন সময়ে পাঠাদানের ব্যবস্থা থাকে, শিক্ষার্থীরা নিজেদের সুযোগমতো সময়সূচি স্থির করার সুযোগ পায়। বিভিন্ন সাক্ষরতাকেন্দ্র এবং নৈশ বিদ্যালয় এই ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদাহরণ।
প্রাথমিক শিক্ষার প্রতিষ্ঠান |
সরকারি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | এক-শিক্ষক পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | ধর্মীয় সংস্থাপরিচালিত প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান |
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | বুনিয়াদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | প্রথামুক্ত প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান |
আমাদের দেশে ওপরে উল্লিখিত প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের স্বায়ত্তশাসনমূলক প্রতিষ্ঠান (যেমন-কর্পোরেশন) এবং বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান তাদের কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করে থাকে।
প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশ
প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে কমিশনের প্রধান প্রধান সুপারিশগুলি হল-
[1] সাংবিধানিক নির্দেশ পালন করা
i. সাংবিধানিক নির্দেশমতো 14 বছর পর্যন্ত প্রতিটি শিশুর বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা রাষ্ট্র করবে।
ii. অনুন্নয়ন ও অপচয় এমনভাবে কমিয়ে আনতে হবে যাতে বিদ্যালয়ে যারা ভরতি হয় তাদের মধ্যে শতকরা ৪০ জন শিশু সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পৌঁছোতে পারে। সপ্তম শ্রেণির শিক্ষা শেষে যাদের বয়স 14 বছর পূর্ণ হয়নি এবং যারা বৃত্তিশিক্ষা গ্রহণ করতে চায়, তাদের জন্য সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
iii. যেসব ছেলেমেয়ের বয়স 11 থেকে 14 বছরের মধ্যে, তারা যদি কোনো কারণে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা শেষ করতে না পারে, তাহলে তাদের জন্য কমপক্ষে এক বছরের সাক্ষরতা শিবিরের ব্যবস্থা করতে হবে। এই ক্লাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।
iv. নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা এমনভাবে করা হবে যাতে কোনো শিক্ষার্থীকে নিম্নপ্রাথমিক শিক্ষার জন্য এক মাইলের বেশি দূরে যেতে না হয়। উচ্চপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব শিক্ষার্থীর বাসস্থান থেকে 1-3 মাইলের মধ্যে হবে। একে সর্বজনীন বিদ্যালয় ব্যবস্থা বলা হবে।
[2] অপচয় ও অনিয়ন্ত্রণ হ্রাস করা: পরবর্তী দশ বছরের শিক্ষা পরিকল্পনায়
সবচেয়ে জরুরি কার্যসূচি হবে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার অপচয় ও অনুন্নয়ন রোধ করা। এরজন্য—
i. প্রথম শ্রেণিতে অপচয় রোধ করার জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিকে একটি ‘ইউনিট’ হিসেবে গণ্য করা হবে। একে ‘ungraded teaching’ ইউনিট বলা হবে। প্রথম শ্রেণিতে খেলার মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হবে।
ii. অন্যান্য শ্রেণিতে অপচয় রোধের জন্য বিদ্যালয়গুলির শিক্ষামানের উন্নতি, আংশিক সময়ের শিক্ষা ও অভিভাবকদের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
[3] আংশিক সময়ের শিক্ষা: যেসব শিশু নিম্নপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা
শেষ করে আরও পড়তে চায়, কিন্তু আর্থিক বা অন্য কোনো কারণে পুরো সময়ের শিক্ষাগ্রহণ করতে পারছে না, তাদের জন্য আংশিক সময়ের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
[4] নারীশিক্ষার প্রসার: নারীশিক্ষার দিকে কমিশন বিশেষ দৃষ্টি দিতে বলেছে। তাদের জন্য সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্পর্কেও নজর রাখতে হবে।
[5] ভাষা সংক্রান্ত সুপারিশ: ভাষা প্রসঙ্গে কমিশনের বক্তব্য, প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা হবে শিক্ষার মাধ্যম। কোনো শ্রেণিতে দশজন এবং বিদ্যালয়ে মোট চল্লিশ জন ভিন্নভাষী ছাত্র থাকলে তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা দিতে হবে। পঞ্চম অথবা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে মাতৃভাষার সঙ্গে রাষ্ট্রভাষা (হিন্দি) অথবা ইংরেজি শিক্ষা দেওয়া হবে।
[6] সর্বাত্মক পরিচয়পত্র চালু করা: কমিশন উচ্চপ্রাথমিক স্তরে মৌখিক ও লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের সুপারিশ করে প্রতিটি ছাত্রের জন্য সর্বাত্মক পরিচয়পত্র (Cumulative Record Card) রাখার প্রস্তাব করেছে।
[7] কর্ম অভিজ্ঞতা ও সমাজসেবা: সমগ্র প্রাথমিক স্তরে সমাজসেবার কর্মসূচি গ্রহণ এবং শিক্ষার্থীর কর্ম-অভিজ্ঞতার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
8. মাধ্যমিক শিক্ষা কাকে বলে? মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও পাঠক্রম সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের বক্তব্য আলোচনা করো।
উত্তর: মাধ্যমিক শিক্ষা
সাধারণভাবে মাধ্যমিক শিক্ষা বলতে বোঝায় নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষা। তবে অনেক ক্ষেত্রে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে মাধ্যমিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, সম্প্রতি মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক শিক্ষার কাঠামো নির্ধারণের ক্ষেত্রে নবম-দশম শ্রেণিকেই মাধ্যমিক শিক্ষা বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য ও পাঠক্রম সম্পর্কে কমিশনের বক্তব্য
কোঠারি কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষাকে নতুন আঙ্গিকে রূপদানের জন্য বিশেষভাবে পর্যালোচনা করে বহু পরিবর্তন করে।
লক্ষ্য
কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত সুপারিশগুলি করেছে-
[1] গণতান্ত্রিক নাগরিক তৈরি করার উদ্দেশ্যে শক্তিশালী সাধারণ শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
[2] সাহিত্য, কলা, শিল্প ও সাংস্কৃতিক দিকের প্রতি শিক্ষার্থীদের উৎসাহ সৃষ্টি করা।
[3] শিক্ষার্থীরা যাতে সার্থকভাবে সামাজিক অভিযোজনে সক্ষম হয়, সে ব্যাপারে তাদের সাহায্য করা।
[4] শিক্ষার্থীদের কায়িক শ্রমের প্রতি মর্যাদার মনোভাব গড়ে তোলা এবং তাদের প্রত্যেকের ক্ষমতানুযায়ী উপযুক্ত কর্মমূলক দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা।
[5] শিক্ষার্থীদের নৈতিক, আধ্যাত্মিক এবং মূল্যবোধের বিকাশ ঘটানো।
[6] শিক্ষার্থীর নেতৃত্বের বিকাশে, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে এবং সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দেওয়া।
[7] মাধ্যমিক শিক্ষার সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে কমিশন কতকগুলি উপায়ের কথা বলেছে। যেমন- প্রত্যেকটি জেলার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন পরিকল্পনা করে পরবর্তী দশ বছরে তা কার্যকর করতে হবে ii. প্রতিটি নতুন বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান যাতে উন্নত হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে এবং চালু বিদ্যালয়গুলির শিক্ষার মান উন্নত করতে হবে।
[৪] মাধ্যমিক শিক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হবে শিক্ষার সঙ্গে বৃত্তি উৎপাদন ব্যবস্থাকে যুক্ত করে দেশের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা।
[9] কমিশনের মতে, মাধ্যমিক শিক্ষার আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক ও জাতীয় সংহতি বোধের বিকাশ ঘটানো।
পাঠক্রম (IX-X)
মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরের পাঠক্রম সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি নীচে উল্লেখ করা হল-
[1] ভাষা: তিনটি ভাষা আবশ্যিক মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা; হিন্দি ও ইংরেজি। যাদের মাতৃভাষা হিন্দি, তারা যে-কোনো একটি ভারতীয় ভাষা শিখবে। এ ছাড়া আরও একটি প্রাচীন ভাষাকে ঐচ্ছিক হিসেবে নেওয়া যাবে।
[2] গণিত: প্রচলিত গণিতের মধ্যে,যেমন—পাটিগণিত, জ্যামিতি, বীজগণিত, রাশিবিজ্ঞান, ক্যালকুলাস ও স্থানাঙ্ক জ্যামিতি ইত্যাদি বিভাগ আছে, এইগুলিকে সাম্প্রতিক করতে হবে। পুরোনো পাঠ্যসূচির অনেক বিষয়, যেমন-সরল, উৎপাদক ইত্যাদিকে বাতিল করতে হবে। অভেদ, ত্রিভুজের সমাধান ইত্যাদিও বাতিল করতে হবে। Set ভাষার সাহায্যে জ্যামিতি, পাটিগণিত এবং বীজগণিতের মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব।
[3] বিজ্ঞান: পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীবনবিজ্ঞান ও ভূ-বিজ্ঞান আবশ্যিক হিসেবে পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
[4] সমাজবিজ্ঞান: ইতিহাস, ভূগোল ও পৌরবিজ্ঞান-এইসব শিক্ষার ক্ষেত্রে আগের তুলনায় গভীরতা আনতে হবে। বর্তমানের সমস্যার সঙ্গে সামঞ্জস্যরেখে এবং প্রয়োজনে এই বিষয়গুলিকে পৃথক বিষয় রূপে পড়াতে হবে।
[5] চারুকলা বা হস্তশিল্প: এই পাঠক্রমের মধ্যে থাকবে চিত্রকলা, অঙ্কন, ভাস্কর্য প্রভৃতি বিষয়।
[6] কর্মশিক্ষা ও সমাজসেবা: কর্মশিক্ষার মধ্যে থাকবে কাঠের কাজ, ধাতুর কাজ, চামড়ার কাজ, সেরামিক, সাবান তৈরি, সেলাই, ইলেকট্রিক্যাল রিপেয়ারিং, মডেল তৈরি, সরল বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম তৈরি, ক্লাসঘর সাজানো, বই বাঁধানো, কার্পেট তৈরি, দর্জির কাজ প্রভৃতি।
9. মাধ্যমিক শিক্ষা কাকে বলে? মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো এবং বিভিন্ন প্রকারের মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: মাধ্যমিক শিক্ষা
মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো ও বিভিন্ন প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
কোঠারি কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো এবং মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির প্রকারভেদ সম্পর্কেও তার মতামত ব্যক্ত করেছে।
কাঠামো
কোঠারি কমিশন প্রস্তাবিত মাধ্যমিক শিক্ষার স্তরকে দুটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে- [i] নিম্নমাধ্যমিক স্তর ও [2] উচ্চমাধ্যমিক স্তর। নীচের একটি ছকে এটি দেখানো হল-
শিক্ষার স্তর | শ্রেণির নাম | শিক্ষার্থীর বয়স |
নবম | 14+ বছর | |
নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষা | দশম | 15+ বছর |
একাদশ | 16+ বছর | |
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা | দ্বাদশ | 17+ বছর |
বিভিন্ন প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়-[1] শিক্ষার্থীদের
দায়িত্বগ্রহণভিত্তিক, [2] লিঙ্গভিত্তিক, [3] সময়কালভিত্তিক, [4] মাধ্যমভিত্তিক এবং [5] অন্যান্য
বিষয়ভিত্তিক।
মাধ্যমিক শিক্ষালয় | |||||
(ক) শিক্ষার্থীদের দায়িত্বগ্রহণ- ভিত্তিক বিভাগ | (খ)লিঙ্গভিত্তিক বিভাগ | (গ)সময়কালভিত্তিক বিভাগ | (ঘ)মাধ্যমভিত্তিক বিভাগ | (ঙ) অন্যান্য বিষয়ভিত্তিক | |
(১) দিবা বিদ্যালয় | (১)পুরুষ-শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় | (১) জুনিয়র বিদ্যালয় | (১) ইংরেজি মাধ্যম | (১) পাবলিক স্কুল | |
(২) আবাসিক বিদ্যালয় | (২)মহিলা-শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় | (২) মাধ্যমিক বিদ্যালয় | (২)বাংলা বা আঞ্চলিক ভাষা মাধ্যম | (২) সরকার পরিচালিত বিদ্যালয় | |
(৩)সহ-শিক্ষা বিদ্যালয় | (৩)উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় | (৩) সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়। | |||
(৪) বেসরকারি বিদ্যালয় | |||||
(৫)ধর্মীয় সংস্থা পরিচালিত বিদ্যালয়ধর্মীয় সংস্থা পরিচালিত বিদ্যালয় | |||||
[1] দায়িত্বগ্রহণভিত্তিক: এই বৈশিষ্ট্যের প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক শিক্ষা- প্রতিষ্ঠানগুলিকে দু-ভাগে ভাগ করা যায়-
i. দিবা বিদ্যালয়: এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি থেকে যাতায়াত ক’রে বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।
ii. আবাসিক বিদ্যালয়: এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট বাসস্থানে থাকতে হয়। তাদের থাকা, খাওয়া, পঠনপাঠন সবই বিদ্যালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়।
[2] লিঙ্গভিত্তিক: এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিদ্যালয়গুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা-
i. বালকদের বা পুরুষ-শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়: এই প্রকারের বিদ্যালয়ে কেবলমাত্র বালকের পঠনপাঠনের সুযোেগ থাকে।
ii. বালিকাদের বা মহিলা-শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়: এসব বিদ্যালয়ে কেবলমাত্র বালিকাদের পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করা হয়।
iii. সহশিক্ষা বিদ্যালয়: এইসব বিদ্যালয়ে বালক ও বালিকা উভয়ই ভরতি হতে পারে এবং পঠনপাঠন করতে পারে।
[3] সময়কালভিত্তিক: শিক্ষার সময়কালকে ভিত্তি করে এই বিভাগ করা হয়, যেমন-
1. জুনিয়ার বিদ্যালয়: এখানে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার ব্যবস্থা থাকে।
ii. মাধ্যমিক বিদ্যালয়: এখানে সাধারণত পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠনের ব্যবস্থা থাকে।
iii.উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়: এখানে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠনের ব্যবস্থা থাকে।
[4] মাধ্যমভিত্তিক: শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান সঞ্চারণ মিথস্ক্রিয়ার ক্ষেত্রে কী ভাষা ব্যবহৃত হবে, তার ভিত্তিতে বিদ্যালয়গুলিকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়।
i. ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়: এইসব বিদ্যালয়ের পঠনপাঠনে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।
ii . বাংলা মাধ্যম বা আঞ্চলিক ভাষা মাধ্যম: যেসব বিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের জন্য বাংলা ভাষা ব্যবহার করা হয়, তাকে বাংলা মাধ্যমের বিদ্যালয় বলা হয়। আবার যেসব বিদ্যালয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ইংরেজি বা বাংলা ভাষা ছাড়া অন্যান্য ভাষায় পঠনপাঠন করে, সেগুলি হল অন্যান্য ভাষার মাধ্যম বিদ্যালয়। যেমন-হিন্দি, গুজরাটি, পাঞ্জাবি ইত্যাদি।
[5] অন্যান্য বিষয়ভিত্তিক: উপরিউক্ত বিদ্যালয়গুলি ছাড়াও আরও মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। যেমন-
i. পাবলিক স্কুল: ইংল্যান্ডের পাবলিক স্কুলের অনুকরণে এই বিদ্যালয় গঠিত। এখানে জ্ঞানের বিকাশ ছাড়াও অন্যান্য গুণের বিকাশের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
ii. সরকার পরিচালিত বিদ্যালয়: এই সমস্ত বিদ্যালয় সম্পূর্ণভাবে সরকার দ্বারা পরিচালিত। আর্থিক দায়দায়িত্ব, প্রশাসনিক নিয়মকানুন ইত্যাদি সব সরকার নিয়ন্ত্রিত।
iii. সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়: এক্ষেত্রে সরকার আর্থিক সাহায্য করলেও বিদ্যালয়ের দৈনন্দিন প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করে না। এরজন্য আলাদা বিদ্যালয় পরিচালন সমিতি আছে।
iv. বেসরকারি বিদ্যালয়: এই ধরনের বিদ্যালয়ে সরকার কোনো আর্থিক সাহায্য করে না। ব্যয়ের জন্য আর্থিক সংস্থান বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই করতে হয়। শিক্ষক নিয়োগ এবং যাবতীয় প্রশাসনিক নিয়মকানুন কর্তৃপক্ষই স্থির করে।
v. ধর্মীয় সংস্থা পরিচালিত বিদ্যালয়: বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দ্বারা স্থাপিত এবং পরিচালিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শি ব্য়বস্থাও দেখা যায়।
10. মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশ
মাধ্যমিক শিক্ষার ওপর কমিশনের সুপারিশগুলিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়-
[1] মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসার: মাধ্যমিক শিক্ষার প্রসার সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশগুলি হল-
i. ছাত্রসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ: আগামী কুড়ি বছরের মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষাগ্রহণকারী ছাত্রসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য-(1) মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলির অবস্থান সম্পর্কে উপযুক্ত পরিকল্পনা গ্রহণ, (2) শিক্ষার মানোন্নয়নের ব্যবস্থা এবং (3) যোগ্যতম শিক্ষার্থী নির্বাচন করা একান্ত প্রয়োজন।
ii. শিক্ষার মানোন্নয়ন: প্রত্যেকটি জেলার জন্য একটি মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন সংক্রান্ত পরিকল্পনা রচনা করে পরবর্তী দশ বছরের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে।
iii. যোগ্য শিক্ষার্থী ভরতি: বহিস্থ পরীক্ষার ফলাফল ও বিদ্যালয়ের রেকর্ডের ভিত্তিতে যাতে যোগ্যতম শিক্ষার্থীকে মাধ্যমিক স্তরে ভরতি করা যায়, তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
iv. বিদ্যালয়গুচ্ছ গঠন: একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সমস্ত বিদ্যালয়ের মধ্যেসহযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে তোলার জন্য এবং শিক্ষার মানের উন্নতি ঘটানোর উদ্দেশ্যে কয়েকটি বিদ্যালয় নিয়ে একটি করে বিদ্যালয়গুচ্ছ (School Complex) গড়ে তুলতে হবে।
[2] মাধ্যমিক শিক্ষার বৃত্তিমুখীকরণ: মাধ্যমিক শিক্ষার বৃত্তিমুখীকরণ প্রসঙ্গে কমিশনের মূল বক্তব্যগুলি হল-
i. নিম্ন ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তিশিক্ষা: মাধ্যমিক স্তর থেকেই বৃত্তিশিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। নিম্নমাধ্যমিক স্তরে 20% এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরে 50% ছাত্র যাতে 1986-র মধ্যে বৃত্তিশিক্ষার সুযোগ পায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
ii. আংশিক ও পূর্ণ সময়ের বৃত্তিশিক্ষা: গ্রাম ও শহরের ছেলেমেয়ে, উভয়ের প্রয়োজন মেটাবার উপযোগী নানা ধরনের আংশিক সময় ও পুরো সময়ের বৃত্তিশিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। মাধ্যমিক শিক্ষাকে বৃত্তিমুখী করবার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে সাহায্য করবে।
[3] স্ত্রীশিক্ষার প্রসার: মাধ্যমিক স্তরে বালিকাদের শিক্ষার প্রতি কমিশন বিশেষ গুরুত্ব দেয়। স্ত্রীশিক্ষা প্রসারে কমিশনের অভিমত নীচে উল্লেখ করা হল-
i. আগামী কুড়ি বছরের মধ্যে বালিকা ও বালকদের অনুপাত নিম্নমাধ্যমিক স্তরে 1:2 ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে 1:3 করতে হবে।
ii. কমিশন বালিকাদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় গড়ার সুপারিশ করে। কমিশন আরও সুপারিশ করে যে, যদি আর্থিক কারণে বা স্থানাভাবে বালিকাদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় নির্মাণ করা না যায়, তাহলে বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষিকা ও মহিলা শিক্ষাকর্মীর ব্যবস্থা করতে হবে।
iii. বালিকাদের শিক্ষার উন্নতি করার জন্য ছাত্রাবাসের ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব ছাত্রীর বাড়ি বিদ্যালয় থেকে অনেক দূরে, তারা ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করবে।
iv. অধিক সংখ্যক ছাত্রীকে শিক্ষায় আগ্রহী করে তোলার জন্য বৃত্তি বা স্কলারশিপের ব্যবস্থা করতে হবে।
v. কমিশন বালিকাদের জন্য আংশিক সময়ের শিক্ষা এবং বৃত্তিমুখী শিক্ষারও সুপারিশ করেছে।
[4] মাধ্যমিক স্তরে ভাষাশিক্ষা: নিম্নমাধ্যমিক স্তরে (নবম ও দশম শ্রেণি) তিনটি ভাষাশিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। যথা-মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা, রাষ্ট্রভাষা (হিন্দি) বা সহযোগী ভাষা (ইংরেজি) এবং উপরিউক্ত দুটির মধ্যে নেই তেমন একটি আধুনিক ভারতীয় বা ইউরোপীয় ভাষা, যা শিক্ষার মাধ্যমরূপে ব্যবহৃত হয়নি। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি) দুটি ভাষা বাধ্যতামূলক হবে, যথা-মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা এবং রাষ্ট্রভাষা বা সহযোগী ভাষা।
[5] মাধ্যমিক শিক্ষার গুরুত্ব: কমিশনের মতে-
i. শিক্ষার্থীর বয়ঃসন্ধিকাল মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরের অন্তর্ভুক্ত। জীবনের বিকাশগত এবং শিক্ষাগত, উভয়দিক থেকে এই শিক্ষাকালটিকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে ধরা হয়। মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে বহু শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ করে, আবার বহু শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়। তাই এই স্তরটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
ii. মাধ্যমিক শিক্ষা শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশের প্রতি নজর দেয় যাতে তারা যোগ্য, সক্ষম ও সুনাগরিক হয়ে ওঠে।
iii. এই শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মধ্যে বৃত্তিমূলক ও উৎপাদন ক্ষমতার বিকাশ ঘটানো হয়। এর ফলে তারা দেশের পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারে।
iv. এই শিক্ষায় শিক্ষার্থীকে আগামী দিনে নেতৃত্বদানের জন্য প্রস্তুত করা হয়।
v. এই শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা ও সৌন্দর্যবোধের বিকাশ ঘটানো হয়। এগুলি ব্যক্তির আত্মপ্রকাশ এবং ব্যক্তিত্বের বিকাশের জন্য অত্যাবশ্যক।
[6] অন্যান্য সুপারিশ: উপরিউক্ত সুপারিশগুলি ছাড়াও কমিশন মাধ্যমিক স্তরে আরও কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করে। যথা-
i. নিম্নমাধ্যমিক স্তরে গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। বাধ্যতামূলকভাবে সমাজসেবাকেও গ্রহণ করতে হবে।
ii. কমিশন সুপারিশ করে-দশম শ্রেণির পাঠ শেষ হলে প্রথম বহির্বিভাগীয় পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে এবং দ্বাদশ শ্রেণির শেষে দ্বিতীয় বহির্বিভাগীয় পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
11. উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা কী? উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য, কাঠামো, পাঠক্রম সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের বক্তব্য উল্লেখ করো। ছকের সাহায্যে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিভাগ দেখাও।
উত্তর: উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা মাধ্যমিক শিক্ষারই একটি অংশ। বিদ্যালয়ে দশ বছরের শিক্ষা শেষ হবার পর একটি বহিঃপরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ওই বহিঃপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর শিক্ষার্থী তার আগ্রহ ও সামর্থ্য অনুযায়ী দুই বছরের শিক্ষা গ্রহণ করে-এটাই হল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাস্তর (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি)।
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য, কাঠামো, পাঠক্রম সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের বক্তব্য
কোঠারি কমিশনের রিপোর্টে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য, কাঠামো ও পাঠক্রম সম্পর্কে বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে।
[1] লক্ষ্য: উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার লক্ষ্যগুলি নীচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল-
i. নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষাকে দৃঢ়তর করা, প্রসারিত করা এবং সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিষয় নির্বাচনের সুযোগ দিয়ে তাদের বিশেষীকরণমুখীনতা বৃদ্ধি করা। কিন্তু এক্ষেত্রে চরম বিশেষীকরণ কখনোই কাম্য নয়।
ii. দশ বছর স্কুল শিক্ষার পর প্রথম বহিঃপরীক্ষা দিয়ে শিক্ষার্থী স্থির করবে তার ভবিষ্যৎ জীবনে সে কী শিক্ষা গ্রহণ করবে। শিক্ষার্থীর আগ্রহ, যোগ্যতা, রুচি প্রভৃতি বিচার করে তার পরিচালনা ও নির্দেশনা দানের ব্যবস্থা থাকবে।
iii. এই স্তরে 50% শিক্ষার্থীর পুরো বা আংশিক সময়ের জন্য বৃত্তিশিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বাকি 50%-এর জন্য থাকবে সাধারণ শিক্ষার ব্যবস্থা। বাণিজ্য, কৃষি ও কারিগরি বিদ্যা বৃত্তিশিক্ষার মধ্যে গণ্য করা হবে।
[2] কাঠামো: মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরের কাঠামো আলোচনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এটি দুটি ভাগে বিভক্ত-।. নিম্নমাধ্যমিক এবং ii. উচ্চমাধ্যমিক। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা দুই বছরের-একাদশ শ্রেণি এবং দ্বাদশ শ্রেণি। এই স্তরে, শিক্ষার্থীর বয়স হবে যথাক্রমে 16+ এবং 17+ বছর।
[3] পাঠক্রম: উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রম সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি হল-
i. যে-কোনো দুটি ভাষা। যার মধ্যে থাকবে একটি আধুনিক ভারতীয় ভাষা, আধুনিক বিদেশি ভাষা এবং প্রাচীন ভাষা।
ii. নীচের মধ্য থেকে যে-কোনো তিনটি elective বিষয় হিসেবে তারা বেছে নিতে পারবে। এগুলি হল যথাক্রমে-
(1) একটি অতিরিক্ত ভাষা,
(2) ইতিহাস,
(3) ভূগোল, (4) অর্থনীতি,
(5) তর্কবিদ্যা,
(6) মনোবিজ্ঞান,
(7) সমাজবিজ্ঞান,
(8) চারুকলা,
(9) পদার্থবিদ্যা,
(10) রসায়ন,
(11) গণিত,
(12) জীববিজ্ঞান,
(13) ভূতত্ত্ব এবং
(14) গার্হস্থ্যবিজ্ঞান।
iii. কর্মশিক্ষা ও সমাজসেবা।
iv. শারীরশিক্ষা।
v. চারুকলা বা হস্তশিল্প।
vi. নৈতিক বা আধ্যাত্মিক শিক্ষা।
[4] পাঠক্রম সম্পর্কে কমিশনের বিশেষ বক্তব্য: বিভিন্ন শিক্ষাস্তরের উল্লিখিত পাঠক্রম কমিশনের সুপারিশমাত্র। এই পাঠক্রম স্থির করবে বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাদেশিক সরকারের স্কুলশিক্ষা বোর্ডগুলি, প্রাদেশিক সরকারের শিক্ষা ডিপার্টমেন্টের প্রতিনিধিদের তৈরি একটি এক্সপার্ট বডি।
[5] অ্যাডভান্স কোর্স সম্বন্ধে কমিশনের সুপারিশ: প্রাদেশিক সরকারের শিক্ষা ডিপার্টমেন্ট বিভিন্ন বিদ্যালয়ের বিষয়গুলি নিয়ে অ্যাডভান্স কোর্স (Advanced course) চালু করতে পারে। প্রথমে কয়েকটি উত্তম বিদ্যালয়ে এই ধরনের অ্যাডভান্স কোর্স চালু করা যেতে পারে।
i. সপ্তম শ্রেণি থেকে এটা শুরু হবে। তবে এটি গ্রহণ করা বা না-করা শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।
ii. নিম্নমাধ্যমিক স্তরে গণিত, বিজ্ঞান ও ভাষার ওপর অ্যাডভান্স কোর্স চালু করা যেতে পারে।
iii. উচ্চমাধ্যমিক স্তরে এই অ্যাডভান্স কোর্স প্রতিটি বিশেষ বিষয়ের জন্য করা দরকার। তবে শেষের দিকে দুই-এর বেশি বিষয়ে অ্যাডভান্স কোর্স এর ব্যবস্থা থাকবে না।
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিভাগও
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকে সাধারণত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়।
উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় |
(ক) শিক্ষার্থীদের দায়িত্বগ্রহণ- ভিত্তিক বিভাগ | (খ) লিঙ্গভিত্তিক বিভাগ | (গ) মাধ্যমভিত্তিক বিভাগ | (ঘ) অন্যান্য বিষয়ভিত্তিক | |||
(১) দিবা বিদ্যালয় | (১) পুরুষ-শিক্ষার্থীদের বিভাগ | (১) ইংরেজি মাধ্যম | ||||
(২) আবাসিক বিদ্যালয় | (২)মহিলা-শিক্ষার্থীদের বিভাগ | (২) বাংলা, হিন্দি ও অন্যান্য ভাষার মাধ্যম | ||||
(৩) পাবলিক স্কুল | (৩) সহ-শিক্ষা বিদ্যালয় |
পাবলিক স্কুল | সরকার পরিচালিত বিদ্যালয় | সরকারি সাহায্যপ্ত বিদ্যালয় | বেসরকরি বিদ্যালয় | ধর্মীয় সংস্থা পরিচালিত বিদ্যালয় | CBSE/ICSE দ্বারা অনুমোত বিদ্যালয় | রাজ্য বোর্ড দ্বারা অনুমোদিত বিদ্যালয় | |
12. উচ্চশিক্ষা কাকে বলে? উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য ও কাঠামো সম্পর্কে কমিশনের বক্তব্য উল্লেখ করো। উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি কী?
উত্তর: উচ্চশিক্ষা
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার পর শিক্ষার্থীরা যে শিক্ষা গ্রহণ করে তাকে উচ্চশিক্ষা বলে। শিক্ষার্থীরা এই স্তরে নিজস্ব আগ্রহ ও সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষাগ্রহণে অগ্রসর হয়।
উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য ও কাঠামো সম্পর্কে কমিশনের বক্তব্য
শিক্ষার অন্যান্য স্তরের মতো উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য ও কাঠামো কী হবে, সে সম্পর্কেও কোঠারি কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
লক্ষ্য
কমিশন উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত লক্ষ্যগুলি স্থির করে-
[1] উন্নত জ্ঞানের সন্ধান, দৃঢ় ও নির্ভীকভাবে সত্যের সন্ধানে নিয়োজিত থাকা এবং প্রাচীনকালের জ্ঞান ও বিদ্যার্জন নতুন আবিষ্কারের আলোকে ব্যাখ্যা করা।
[2] জীবনের সর্বক্ষেত্রে নির্ভুল নেতৃত্ব গ্রহণের শিক্ষা দেওয়া, প্রতিভাবানকে খুঁজে বের করা, শিক্ষার্থীদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশের সঙ্গে নৈতিক ও বৌদ্ধিক দিক থেকে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে সাহায্য করা। শিক্ষাকে সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য দূর করে সামাজিক ন্যায় ও ঐক্য স্থাপন করা।
[3] জাতীয় চেতনায় উদবদ্ধ
[4] উচ্চশিক্ষার ও গবেষণার মানোন্নয়ন।
কাঠামো
উচ্চশিক্ষাস্তর হবে তিন ধরনের- [1] প্রথম ডিগ্রি স্তর (স্নাতক স্তর), [2] দ্বিতীয় ডিগ্রি স্তর (স্নাতকোত্তর স্তর) এবং [3] গবেষণা স্তর।
[1] প্রথম ডিগ্রি স্তর: এই স্তরের শিক্ষা হবে তিন বছরের। শিক্ষার্থীর বয়স হবে 18-21 বছর পর্যন্ত।
[2] দ্বিতীয় ডিগ্রি স্তর: এই স্তরের শিক্ষা হবে দু-বছরের। শিক্ষার্থীর বয়স হবে 21-23 বছর। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ বিষয়ে ও বছরের MA, MSc, MCom ডিগ্রি কোর্স চালু করতে পারে। এইসব কোর্সের অনার্স অথবা যে- কোনো নামকরণ করা যেতে পারে। এ ছাড়াও কমিশন বলে, কোনো কোনো নির্বাচিত বিষয়ে বিশেষ শিক্ষাদানের জন্য 4 বছরের প্রথম ডিগ্রি কোর্স চালু করা যুক্তিযুক্ত। এই নতুন কোর্সের প্রথম বছরের পাঠক্রম তিন বছরের ডিগ্রি কোর্সের প্রথম বছরের পাঠক্রমের মতো হবে।
[3] গবেষণা স্তর: স্নাতকোত্তরের শেষে থাকবে গবেষণা স্তর। এক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা স্তরে কমিশনের ‘Major University’ সংক্রান্ত সুপারিশটি উল্লেখযোগ্য। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে প্রথম শ্রেণির স্নাতকোত্তর পঠন ও গবেষণা হবে। এদের মান হবে বিশ্বের যে-কোনো উন্নতমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনীয়।
এ ছাড়া প্রতিটি মেজর ইউনিভারসিটিতে থাকবে কতকগুলি অ্যাডভান্সড সেন্টার। এই কেন্দ্রগুলি একে অপরকে বিভিন্ন দিকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করবে এবং এরা বিভিন্ন ধরনের ‘ইনটার- ডিসিপ্লিনারি’ (Interdisciplinary) গবেষণা করবে। সারা দেশে এই ধরনের 50টি কেন্দ্র গড়ে তোলা দরকার। এদের মধ্যে অন্তত একটি বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষা-সংক্রান্ত গবেষণার সঙ্গে যুক্ত হবে। এ ছাড়াও এগুলিতে কৃষি, কারিগরি ও ডাক্তারি শাখার গবেষণার ব্যবস্থা থাকবে। বিজ্ঞান ও গণিতের জন্য ‘অ্যাডভান্সড স্টাডি সেন্টার’ (Advanced Study Centre)-এর কথা বলা হয়েছে।
উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশ
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কমিশন শিক্ষার সময়কাল, ভাষাশিক্ষা, পাঠক্রমের পুনর্নবীকরণ প্রভৃতি বিষয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছে। এগুলি সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল-
[1] সময়কাল: প্রথম ডিগ্রি স্তর তিন বছরের কম হবে না। দ্বিতীয় ডিগ্রি স্তরের স্থিতিকাল হবে দুই বা তিন বছর।
[2] ভাষাশিক্ষা: উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন স্তরে ভাষাশিক্ষা সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশগুলি হল-
i. উচ্চশিক্ষার স্তরের কোনো ক্ষেত্রে ভাষাশিক্ষা বাধ্যতামূলক নয়। তবে
আঞ্চলিক ভারতীয় ভাষা বা প্রাচীন ভাষা ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে উচ্চশিক্ষার স্তরে থাকবে।
ii. বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ধীরে ধীরে আঞ্চলিক ভাষায় পড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। প্রথম দিকে প্রথম ডিগ্রি স্তরে আঞ্চলিক ভাষায় পড়ানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে, তবে দ্বিতীয় ডিগ্রি স্তরে শিক্ষার মাধ্যম হবে ইংরেজি।
iii. উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিটি শিক্ষককে যথাসম্ভব দুটি ভাষা জানা দরকার (আঞ্চলিক ভাষা ও ইংরেজি), দ্বিতীয় ডিগ্রি স্তরের শিক্ষার্থীদর দুটি ভাষা জানা দরকার।
iv. এই স্তরে ইংরেজি ভাষা ছাড়াও অন্যান্য বিদেশি ভাষা, বিশেষ করে, রাশিয়ান ভাষাশিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
[3] পাঠক্রমের পুনর্নবীকরণ: মাস্টার্স ডিগ্রি স্তরে পাঠক্রমের পুনর্নবীকরণ প্রয়োজন। পাঠক্রম হওয়া উচিত ‘জেনেরাল বেস্ড’ (General based) অথবা একটি বা দুটি বিশেষ ক্ষেত্রে ‘ইনটারভিউইং ট্রেনিং’ (Interviewing training)-এর ব্যবস্থা প্রয়োজন।
[4] বিষয় নির্বাচনে শিথিলতা: প্রথম ডিগ্রি স্তরে কলা, বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান কোর্সে বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিথিলতা প্রয়োজন।
[5] বিজ্ঞানশিক্ষায় ব্যাবহারিক কাজের গুরুত্ব: বিজ্ঞানশিক্ষার ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক ও ব্যাবহারিক কাজের মধ্যে সমতা বিধান করা প্রয়োজন। পদার্থবিদ্যা ও সমাজবিজ্ঞান কোর্সে বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে শি [5] বিজ্ঞানশিক্ষায় ব্যাবহারিক কাজের গুরুত্ব: বিজ্ঞানশিক্ষার ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক ও ব্যাবহারিক কাজের মধ্যে সমতা বিধান করা প্রয়োজন। পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন বিষয়ের ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলক কাজের প্রতি দৃষ্টি আরোপ করতে হবে। জীবনবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ‘মাইক্রো অরগানিজম’ অধ্যয়ন এবং সে ক্ষেত্রে ওষুধের ভূমিকার ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। জ্যোতির্বিদ্যায় (astronomy) ও জ্যোতির্পদার্থবিদ্যায় (astrophysics) গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
13. বৃত্তিমুখী এবং কারিগরি শিক্ষার ধারণা ব্যক্ত করো। এই প্রসঙ্গে ওই শিক্ষার পাঠক্রম ও কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষার ধারণা
স্বাধীনতার আগে ভারতে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার ওপর তেমন গুরুত্ব আরোপ করা হয়নি। স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশের আর্থিক উন্নয়নের জন্য বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়।
যে শিক্ষা কোনো শিক্ষার্থীকে বিশেষ বৃত্তি সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে, সেই শিক্ষাকে বৃত্তিমুখী শিক্ষা বলে। উদাহরণস্বরূপ- কম্পিউটারের সাহায্যে বিভিন্ন কাজ করার জন্য বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থা, যেমন- DOS, WINDOWS, BASIC, LOGO ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা।
যে শিক্ষার দ্বারা কোনো শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নানান বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব প্রয়োগ করে শিল্প, বাণিজ্য, কৃষি বা কলকারখানার যন্ত্রপাতির ব্যবহার সম্পর্কে অবহিত করানো হয়, সেই শিক্ষাকে বলে কারিগরি শিক্ষা। যেমন লেদ মেশিন চালানো, ওয়েল্ডিং ইত্যাদি।
বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার পাঠক্রম ও কোঠারি কমিশনের সুপারিশ
কোঠারি কমিশনের মতে, শিক্ষার সঙ্গে উৎপাদন ক্ষমতার সামঞ্জস্যবিধানের প্রধান উপায় হল মাধ্যমিক শিক্ষার বৃত্তিমুখীকরণ। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয় যে, 1986 সালের মধ্যে নিম্ন-মাধ্যমিক স্তরে মোট ছাত্রসংখ্যার 20% ও দশম শ্রেণির মোট ছাত্রসংখ্যার 50%-এর পুরো বা আংশিক সময়ের বৃত্তি বা কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার পাঠক্রম
এই শিক্ষাক্রমে রয়েছে ভাষা বিভাগ, বিজ্ঞান বিভাগ, সাধারণ নির্বাচনীয় বিষয় বিভাগ, বৃত্তিমূলক নির্বাচনীয় বিষয় বিভাগ এবং সক্রিয়তা বিভাগ। ভাষা বিভাগে রয়েছে মাতৃভাষা এবং ইংরেজি। সক্রিয়তা বিভাগে শিক্ষার্থীরা একটি সক্রিয়তামূলক কার্যসূচিতে অংশগ্রহণ করে। এই বিভাগে কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষা, এনসিসি এবং সমাজসেবাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে এই বিভাগের পরিবর্তে পরিবেশবিজ্ঞানকে বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়। শিক্ষার মাধ্যম হবে আঞ্চলিক ভাষা, তাই ওই আঞ্চলিক ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তৈরির জন্য ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য নিকটবর্তী কলকারখানায় শিক্ষানবিশির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
কোঠারি কমিশনের সুপারিশ
কোঠারি কমিশনের সুপারিশগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-
[1] 1986 সালের মধ্যে নিম্নমাধ্যমিক স্তরে মোট ছাত্রসংখ্যার 20% ও দশম শ্রেণির মোট ছাত্রসংখ্যার 50%-এর পুরো বা আংশিক সময়ের বৃত্তি বা কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
[2] অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষা সম্পর্কে সচেতন করা প্রয়োজন এবং এই সম্পর্কে তাঁদের উৎসাহিত করে তোলা প্রয়োজন।
[3] স্কুল স্তরে শিক্ষা হবে চূড়ান্ত ধরনের (terminal in character)। বিশেষ কৃতিত্ব যারা দেখাবে, তারাই শুধু পরবর্তী উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে।
[4] দক্ষ ও কুশলী কর্মীসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ITI-গুলিতে শিক্ষার সুযোগ বাড়াতে হবে। তাই চতুর্থ পরিকল্পনার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির আসন সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
[5] যারা স্কুল ছেড়ে কাজ করতে বাধ্য হয়, তাদের আংশিক বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
[6] জুনিয়ার টেকনিকাল স্কুলগুলির নাম টেকনিকাল হাইস্কুল দিতে হবে।
[7] ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষা ব্যাবহারিক কাজের ভিত্তিতে হবে ও শিল্প অভিজ্ঞতা শিক্ষার অঙ্গরূপে যুক্ত হবে।
[৪] পলিটেকনিকগুলি শিল্পাঞ্চলে প্রতিষ্ঠা করতে হবে ও গ্রামাঞ্চলের পলিটেকনিকগুলিতে কৃষিবিদ্যা ও কৃষির সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার ব্যবহার করতে হবে।
[9] পলিটেকনিকগুলিতে শিক্ষক কলকারখানা থেকে নিয়োগ করতে হবে। এরজন্য প্রয়োজনে শিক্ষা-সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করতে হবে।
[10] শিক্ষাকে উৎপাদনমুখী করতে হলে ছুটির সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের ব্যবহারের জন্য বা বিক্রির জন্য সাধারণ যন্ত্রপাতি তৈরি করবেন।
[11] পলিটেকনিকে গণিত ও বিজ্ঞান শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন।
[12] যেখানে যে শিল্প আছে সেই অঞ্চলে সেইরকম পলিটেকনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
[13] মেয়েদের যেসব বিষয়ে উৎসাহ আছে, নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষায় মেয়েদের সেইসব বিষয়ে ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্স পড়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
[14] বাছাই করা পলিকেটনিকগুলিতে শিক্ষা দেওয়ার জন্য দক্ষ টেকনিশিয়ানদের নিযুক্ত করতে হবে।
[15] ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষার মানোন্নয়নের প্রয়োজন। ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কয়েকটি নির্দিষ্ট শাখা যেমন Electronics ও Instrumentation-এ মেধাবী ছাত্রদের সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
[16] ওয়ার্কশপের কাজ হবে উৎপাদনভিত্তিক। বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ব্যাবহারিক শিক্ষাদান কারখানার সহযোগিতায় করতে হবে।
[17] শিক্ষার পাঠক্রম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়মিত পরিবর্তন করা প্রয়োজন।
[18] এই শিক্ষার মাধ্যম হবে আঞ্চলিক ভাষা ও ওই ভাষাতে পাঠ্যপুস্তক তৈরির জন্য লেখকদের উৎসাহিত করতে হবে।
[19] কলকারখানাতে ব্যাবহারিক শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো দরকার। যেসব কারখানায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষাগ্রহণ করছে, তাদের কেন্দ্র থেকে সাহায্য দেওয়া হবে।
শুধুমাত্র শিল্পকেন্দ্রিক কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করলে হবে না, আমাদের দেশে কৃষি বিষয়ক শিক্ষার দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। এই বিষয়ে সুপারিশগুলি হল-
[1] আমাদের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় কৃষিবিদ্যা শিক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার।
[2] কৃষিবিদ্যা শিক্ষার ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রযুক্তিবিদ্যার ব্যবহার ও গবেষণা এবং কৃষকদের মধ্যে প্রযুক্তিবিদ্যার বিস্তারের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত কৃষি শিক্ষাব্যবস্থা।
[3] কৃষি বিষয়ক টেকনিশিয়ানদের জন্য কৃষি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
[4] প্রগতিশীল কৃষকদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বা কলেজের সঙ্গে এবং কৃষি বিষয়ক ও পলিটেকনিক কলেজগুলির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
[5] কৃষি বিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণার উন্নতি প্রয়োজন।
14. বৃত্তিমুখী শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার সম্পর্ক লেখো। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলি উল্লেখ করো। 4+4
উত্তর: বৃত্তিমুখী শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার সম্পর্ক
বৃত্তিমুখী শিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষার ধারণার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও অনেক বিষয়ে উভয়ের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য দেখা যায়। যেমন-
[1] সর্বজনীনতার অভাব: উভয় ধরনের শিক্ষাই সর্বজনীন নয়। ফলে সমাজের সব শিক্ষার্থী এই শিক্ষায় অংশ নিতে পারে না।
[2] লক্ষ্য: উভয় শিক্ষার লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের কোনো বৃত্তিলাভে পারদর্শিতা অর্জনে সাহায্য করা।
[3] সাধারণ পাঠক্রমবিহীন: উভয় শিক্ষার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সাধারণ পাঠক্রম থাকে না। তবে কিছু পরিমাণে সাধারণ শিক্ষার প্রয়োজন হয়।
[4] প্রয়োগযোগ্যতা: উভয় প্রকারের শিক্ষার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল ব্যাবহারিক জ্ঞানার্জন এবং বাস্তবক্ষেত্রে তার প্রয়োগ।
[5] সৃজনশীলতার সুযোগ: বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষা ব্যক্তির সৃজনশীলতা ও আত্মবিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করে।
[6] কাজের সুযোগ সৃষ্টি: উভয় শিক্ষাই তুলনামূলকভাবে ব্যক্তির কাজের সুযোগ তৈরি করে।
[7] কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষা: উভয় শিক্ষা নির্দিষ্ট কর্মক্ষেত্রকে সামনে রেখে পরিচালিত হয়।
[৪] জ্ঞানের বিশেষীকরণ: এই দুই শিক্ষায় কোনো একটি বিষয়ে সম্পূ বিষয়গত জ্ঞানের পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট অংশের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণের সুযোগ ঘটে
[9] আর্থিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা: উভয় ধরনের শিক্ষাই আর্থিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।
[10] চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা: এই ধরনের শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশে চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা করা হয়। চাহিদা কম বা বেশি হলে সমস্যার সৃি হয়।
এই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য করা যায় যে, বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষা পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। প্রক্রিয়াগত কিছু পার্থক্য থাকলেও উভয়েরই লক্ষ্য প্রায় এক।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানসমূহ
আমাদের দেশে সাধারণ শিক্ষার মতো বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষারও স্তরভেদ আছে।
[1] মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলি
i. জুনিয়ার টেকনিকাল বিদ্যালয়: প্রধানত সরকার দ্বারা পরিচালিত এই বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণরাই ভরতি হতে পারে। নানারকমের বৃত্তি, যেমন-ফিটার, ব্ল্যাকস্মিথ, টার্নার, ওয়েল্ডিং ইত্যাদির কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
ii. ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট: ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট বা ITI হল সরকার পরিচালিত বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলি সাধারণত শহরে বা মফস্সলে স্থাপিত হয়। অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণরাই এখানে ভরতি হতে পারে। এখনে ফিটার, টার্নার, কার্পেন্টার, ওয়েল্ডার প্রভৃতি কাজের শিক্ষা দেওয়া হয়।
[2] উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ: উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম হল পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল, ইনফরমেশন টেকনোলজি, মাইনিং ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়।
15. বৃত্তিমূলক শিক্ষার উপযোগিতাগুলি বর্ণনা করো।
অথবা,
বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করো। ভারতবর্ষে কারিগরি শিক্ষার সমস্যাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: বৃত্তিমূলক শিক্ষার উপযোগিতা বা বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
ব্যক্তির জীবিকা অর্জনের সঙ্গে এই শিক্ষা বিশেষভাবে জড়িত। উপযুক্ত জীবিকা অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীকে বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষায় অংশ নিতে হয়। হার্টস্রোন এই প্রকার শিক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেছেন-Vocational education is an education of most effective kind, for lack of which, those who merely go to school, suffer all their lives. অর্থাৎ বৃত্তিমূলক শিক্ষা হল এমনই এক ধরনের কার্যকরী শিক্ষা যা গ্রহণ না করলে শিক্ষার্থীকে সারাজীবন দুঃখ ভোগ করতে হয়। এই শিক্ষার গুরুত্ব বা উপযোগিতাগুলি নীচে আলোচনা করা হল-
[1] শিক্ষার্থীকে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করে: বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা শিক্ষার্থীকে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে হাতেকলমে কাজ করার সুযোগ করে দেয়, যার ফলে সে ওই বিশেষ বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠে। ফলে ভবিষ্যৎ জীবনে সে ওই বিষয়ে চাকরি করতে পারে বা স্বনিযুক্ত কাজে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। অর্থাৎ, এই ধরনের শিক্ষাগ্রহণের ফলে শিক্ষার্থী স্বনির্ভর হতে পারে।
[2] শিক্ষার্থীকে আর্থিক স্বচ্ছলতা দান করে: এই শিক্ষা উৎপাদনের পরিমাণ ও গুণগত মান বৃদ্ধি করে। অধিক উৎপাদন কেবলমাত্র ব্যক্তির স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি করে তাই নয়, সমাজ ও দেশের আর্থিক উন্নয়নেও সাহায্য করে।
[3] শ্রমের প্রতি মর্যাদাদানে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেয়: বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা শিক্ষার্থীদের শ্রমের প্রতি মর্যাদা উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। সমাজের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে অভিযোজনে এবং নৈতিক চরিত্র গঠনেও এইপ্রকার শিক্ষার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
[4] শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সাহায্য করে: পুঁথিগত, নিরস সাধারণ শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক ক্লান্ডি এনে দেয়। বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষায় ব্যাবহারিক এবং হাতেকলমে কাজ করার সুযোগ থাকায় তা সহজে একঘেয়ে হয়ে যায় না।
[5] বৃত্তিশিক্ষা গ্রহণকালে অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দেয়: অনেকক্ষেত্রে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা গ্রহণকালে কিছু অর্থ উপার্জন করা যায়। ওই অর্থ পড়ার খরচ চালাতে সাহায্য করে। সেই দিক থেকে এইপ্রকার শিক্ষার উপযোগিতা সাধারণ শিক্ষার তুলনায় অনেক বেশি।
[6] ব্যতিক্রমী শিক্ষার্থীদের জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভে সাহায্য কবে: ব্যতিক্রমী টিউট বা প্রতিষ্ঠান। । অষ্টম টার্নার বা প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য বৃত্তিমূলক শিক্ষা বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়। এদের মধ্যে অনেকেই সাধারণধর্মী শিক্ষায় খুব একটা পারদর্শিতা অর্জন করতে পারে না। এর পরিবর্তে কোনো বিশেষ বৃত্তিমূলক শিক্ষা নিলে হাতেকলমে তারা কিছু উৎপাদন করতে পারে এবং অর্থউপার্জনে সক্ষম হয়ে ওঠে।
[7] কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি কবে: বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত কর্মপ্রার্থীদের চাকরির বাজার অপেক্ষাকৃত ভালো। দক্ষ ব্যক্তির চাকরির কোনো অভাব নেই। চাকরি না পেলেও ব্যক্তি নিজেই নিজের কর্মসংস্থান করতে পারে।
[৪] জাতির উন্নয়নে সাহায্য কবে: শিল্পের জন্য প্রয়োজন হয় দক্ষ কারিগরের। বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমেই দক্ষ কারিগর তৈরি করা সম্ভব।
ভারতবর্ষে কারিগরি শিক্ষার সমস্যা
আমাদের দেশে স্বাধীনতার পর দ্রুত শিল্প প্রসারের লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষার বিকাশ ঘটলেও সমস্যাও অনেক আছে। কারিগরি শিক্ষার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নীচে আলোচনা করা হল-
[1] পরিকল্পনার অভাব: ভারতে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা চার অপরিকল্পিতভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কী পরিমাণ দক্ষ শ্রমিক বা কারিগর প্রয়োজন তার সঙ্গে সংগতি রেখে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা উচিত। কিন্তু এ বিষয়ে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে যে পরিমাণ ইনস্ট্রাকটর, ডিপ্লোমাধারী, এমনকি ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থী প্রতি বছর উৎপন্ন হচ্ছে তাদের সকলের চাকরির সুযোগ নেই। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনের তুলনায় কম সংখ্যায় কারিগর তৈরি হওয়ায় সে ক্ষেত্রে চাহিদা থেকেই যাচ্ছে।
[2] সংযোগের অভাব: কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অনেকক্ষেত্রেই শিল্পমহলের সরাসরি সংযোগ না থাকায় কী ধরনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী শিল্পের জন্য প্রয়োজন তা জানা সম্ভব হয় না। ফলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হলেও চাকরির জগতে অনেকেই ব্রাত্য থেকে যায়।
[3] সুষ্ঠু পরিচালনার অভাব: ভারতে এ যাবৎ বহুসংখ্যক কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও পরিচালন ব্যবস্থা বা প্রশাসনিক ত্রুটির ফলে সেগুলি বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগছে। যেমন-যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ইত্যাদি।
[4] উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব: বর্তমানে উচ্চ বেতন এবং অন্যান্য সুযোগসুবিধার আশায় কারিগরি বিদ্যায় উচ্চশিক্ষিত ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকতা বা প্রশিক্ষণ দানের কাজে যুক্ত না থেকে, বৃহৎ কলকারখানা বা শিল্প সংস্থায় যোগদান করছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি উপযুক্ত প্রশিক্ষক বা শিক্ষকের অভাবে ভুগছে। উপযুক্ত শিক্ষকের অভাবে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।
[5] অর্থাভাব: কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে তত্ত্বগত জ্ঞানের সঙ্গে প্রয়োজন বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যাবহারিক জ্ঞান। এর জন্য দরকার উন্নতমানের ওয়ার্কশপ ও উপযুক্ত মানের ল্যাবরেটরি। কিন্তু আজকের দিনে আমাদের দেশের বহু কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত মানের যন্ত্রপাতি নেই। অর্থের অভাবে ওইসব যন্ত্রপাতি নিয়ে উপযুক্ত ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা তত্ত্বমূলক জ্ঞান পেলেও ব্যাবহারিক জ্ঞানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এটি এই শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা।
স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষার দ্রুত অগ্রগতি ঘটলেও নানা কারণে আজও এই শিক্ষা সমস্যা-জর্জরিত। এই সব সমস্যার সমাধান করতে না পারলে ভবিষ্যতে এই শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা পিছিয়ে থাকব।