WBBSE Class 7 Sahityamela Chapter 3 Solution | Bengali Medium

Class 7 Chapter 3 Bengali Medium

পাগলা গণেশ

Very Short Question Answer

৪.১ ওসব অনাবশ্যক ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না।

উত্তর: ওসব অপ্রয়োজনীয় ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না।

৪.২ কেউ ঠাট্টা-বিদ্রুপ করল না।

উত্তর: কেউ ব্যঙ্গ-উপহাস করল না।

৪.৩ দুনিয়াটা বেঁচে যাবে।

উত্তর: পৃথিবীটা বেঁচে যাবে।

৪.৪ মহাসচিব তাঁর বিমান থেকে নামলেন গণেশের ডেরায়। 

উত্তর: মহাসচিব তাঁর আকাশযান থেকে নামলেন গণেশের আস্তানায়।

৪.৫ গণেশকে সসম্ভ্রমে অভিবাদন জানিয়ে বলল।

উত্তর: গণেশকে সসম্মানে অভিবাদন জানিয়ে বলল।

৪.৬ লোকে গান গাইতে লেগেছে, কবিতা মকসো করছে।

উত্তর: লোকে গান গাইতে লেগেছে, কবিতা অভ্যাস করছে।

৪.৭ হিমালয় যে খুব নির্জন জায়গা, তা নয়।

উত্তর: হিমালয় যে খুব জনহীন জায়গা, তা নয়।

৪.৮ ধুর মশাই, এ যে বিটকেল শব্দ

উত্তর: ধুর মশাই, এ যে বিকট শব্দ।

১.১. ‘পাগলা গণেশ’ একটি (বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/রূপকথা) বিষয়ক গল্প।

উত্তর: ‘পাগলা গণেশ’ একটি ‘কল্পবিজ্ঞান’ বিষয়ক গল্প।

১.২ অবজার্ভেটরি-র বাংলা প্রতিশব্দ (পরীক্ষাগার/ গবেষণাগার/ নিরীক্ষণাগার)।

উত্তর: অবজার্ভেটরির বাংলা প্রতিশব্দ নিরীক্ষণাগার।

১.৩ সভ্য সমাজ থেকে দূরে পালিয়ে গিয়ে গণেশ (হিমালয়ের গিরিগুহায়/গভীর জঙ্গলে/মহাকাশে) আশ্রয় নিয়েছিলেন।

উত্তর: সভ্য সমাজ থেকে দূরে পালিয়ে গিয়ে গণেশ হিমালয়ের গিরিগুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।

১.৪ গল্পের তথ্য অনুসারে মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কার হয়েছিল (৩৫৩৯/৩৪৩৯/৩৫০০) সালে।

উত্তর: গল্পের তথ্য অনুসারে মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কার হয়েছিল ৩৪৩৯ সালে।

২.৩ “চর্চার অভাবে মানুষের মনে আর ওসবের উদ্রেক হয় না”-মানুষের মন থেকে কোন্ কোন্ অনুভূতিগুলি হারিয়ে গেছে?

উত্তর: মানুষের মন থেকে দয়া, মায়া, করুণা, ভালোবাসা ইত্যাদি অনুভূতি হারিয়ে গেছে।

৪. অর্থ অপরিবর্তিত রেখে নিম্ন রেখাঙ্কিত শব্দগুলির পরিবর্তে নতুন শব্দ বসাও।

৪.১ ওসব অনাবশ্যক ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না।

উত্তর: ওসব অপ্রয়োজনীয় ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না।

৪.২ কেউ ঠাট্টা-বিদ্রুপ করল না।

উত্তর: কেউ ব্যঙ্গ-উপহাস করল না।

৪.৩ দুনিয়াটা বেঁচে যাবে।

উত্তর: পৃথিবীটা বেঁচে যাবে।

৪.৪ মহাসচিব তাঁর বিমান থেকে নামলেন গণেশের ডেরায়। 

উত্তর: মহাসচিব তাঁর আকাশযান থেকে নামলেন গণেশের আস্তানায়।

৪.৫ গণেশকে সসম্ভ্রমে অভিবাদন জানিয়ে বলল।

উত্তর: গণেশকে সসম্মানে অভিবাদন জানিয়ে বলল।

৪.৬ লোকে গান গাইতে লেগেছে, কবিতা মকসো করছে।

উত্তর: লোকে গান গাইতে লেগেছে, কবিতা অভ্যাস করছে।

৪.৭ হিমালয় যে খুব নির্জন জায়গা, তা নয়।

উত্তর: হিমালয় যে খুব জনহীন জায়গা, তা নয়।

৪.৮ ধুর মশাই, এ যে বিটকেল শব্দ

উত্তর: ধুর মশাই, এ যে বিকট শব্দ।

৯.৪ আজ সকালে গণেশকে কবিতায় পেয়েছে।

উত্তর: অধিকরণকারকে ‘এ’ বিভক্তি।

৯.৫ আমি পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি।

উত্তর: কর্মকারকে ‘কে’ বিভক্তি।

৯.৬ ও মশাই, এমন বিকট শব্দ করছেন কেন?

উত্তর: কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।

৯.৭ রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব তাঁর বিমান থেকে নামলেন।

উত্তর: অপাদানকারকে ‘থেকে’ অনুসর্গ।

৯.৮ তিনজন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বসে রইল।

উত্তর: করণকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।

১. গণেশ কে?

উত্তর: গণেশ হল একজন অদ্ভুত স্বভাবের মানুষ। গভীর তার বিচক্ষণ

ক্ষমতা। সে আবেগপ্রবণ। লেখালিখি পছন্দ করে।

২. গণেশের বয়স কত?

উত্তর: গণেশের বয়স দু’শো বছর।

৩. গণেশের সন্তান ক’জন?

উত্তর: গণেশের সন্তান চারজন। তিন ছেলে ও এক মেয়ের বান

হলেন গণেশ।

৪. গণেশের বড়ো ছেলের বয়স কত?

উত্তর: গণেশের বড়ো ছেলের বয়স ১৭৪ বছর।

৫. গণেশের ছোটো ছেলের বয়স কত?

উত্তর: গণেশের ছোটো ছেলের বয়স ১৬৮ বছর।

৬. গণেশের মেয়ের বয়স কত?

উত্তর: গণেশের মেয়ের বয়স ১৬৬ বছর।

৭. গণেশের ছেলে মেয়ে কী গণেশের কাছে আসে?

উত্তর: গণেশের ছেলে মেয়ে গত একশো বছরের মধ্যে গণেশের কাছে আসেনি।

৮. ‘গণেশ তাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে’-কাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে?

উত্তর: প্রায় একশো বছর গণেশ তার সন্তানদের দেখেনি। তাই তাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে।

৯. গণেশের পত্নী কোথায় কাজ করত?

উত্তর: গণেশের পত্নী ক্যালিফোর্নিয়া মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে কাজ করত।

১০. গণেশের পত্নী এখন কোথায় থাকে?

উত্তর: গণেশের পত্নী এখন অ্যান্ড্রোমিবা নক্ষত্রপুঞ্জে থাকে।

১৩. গণেশের কাছে ‘ধামা’-র মতো আকাশযান থেকে কে নেমে এসেছিলেন?

উত্তর: গণেশের কাছে ‘ধামা’-র মতো আকাশযান থেকে এক ভদ্রমহিলা

নেমে এসেছিলেন।

১৪. গণেশের কাছে ‘পিপে’ থেকে কারা নেমে এসেছিলেন?

উত্তর: গণেশের কাছে ‘পিপে’ থেকে নেমে এসেছিলেন- একজন পুলিশম্যান ও দুজন মহিলা।

১৫. গণেশের দীর্ঘজীবী হওয়ার কারণ কী?

উত্তর: পঞ্চাশ বছর বয়সে গণেশ মৃত্যুঞ্জয় টনিক খেয়ে ফেলেছিল। তাই তার মৃত্যু বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

১৬. দেড়শো বছর আগে ঘটা কোন্ জিনিস গণেশের পছন্দ হয়নি?

উত্তর: শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় রচিত ‘পাগলা গণেশ’ নামাঙ্কিত গদ্যে দেখা যায় দেড়শো বছর আগে ঘটে যাওয়া সুকুমার শিল্প বিরোধী আন্দোলন গণেশের পছন্দ হয়নি।

১৭. ‘এটা কীসের সার্কিট ডিজাইন বলুন তো!’ বক্তা কে? কাকে উদ্দেশ্য করে এই বক্তব্য?

উত্তর: আলোচ্য উদ্ধৃতির বক্তা হল-‘ধামা’ নামাঙ্কিত আকাশযানে করে আসা এক মহিলা।

• গণেশকে উদ্দেশ্য করে এই বক্তব্য।

১৮. ‘পৃথিবী যে উচ্ছন্নে গেল!’ এই উক্তিটির বক্তা কে?

উত্তর  : আলোচ্য উক্তিটির বস্তা হলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব।

১৯. ‘কিছুই বুঝিনি স্যার।’ বক্তা কে?*

উত্তর: আলোচ্য উক্তিটির বস্তা হলেন একজন পুলিশম্যান।

২০. ‘আমি পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি’। বস্তা কে?

উত্তর: বস্তা হলেন ‘পাগলা গণেশ’ নামাঙ্কিত গদ্যের মূল চরিত্র গণেশ।

Short Question Answer

২.৫ “ও মশাই, এমন বিকট শব্দ করছেন কেন?”-কার উদ্দেশ্যে কারা একথা বলেছিল? কোন্ কাজকে তারা ‘বিকট শব্দ’ মনে করেছিল?

উত্তর: গণেশের উদ্দেশ্যে একথা বলা হয়েছে।

◆ লাসা থেকে আসা দু’জন পাখাওলা লোক একথা বলেছিল।

• গণেশের গান গাওয়াকে তারা ‘বিকট শব্দ’ মনে করেছিল।

২.৬ “গণেশ তাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে”- গণেশ কাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে? তার এই ভুলে যাওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?

উত্তর: গণেশ তার তিন ছেলে ও এক মেয়ের মুখশ্রী ভুলে গেছে। বড়ো ছেলের বয়স একশো চুয়াত্তর বছর, মেজোর একশো একাত্তর,ছোটো ছেলের একশো আটষট্টি এবং মেয়ের বয়স একশো ছেষট্টি। তারা সবাই কৃতি বিজ্ঞানী। কিন্তু তারা প্রায় একশো বছর ধরে বাপের কাছে আসে না। সেই কারণেই গণেশ তাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে। কেননা, একশো বছর আগে দেখা কোনো মুখকে মনে রাখা সম্ভব নয়।

  ২.৭ “গণেশকে সসম্ভ্রমে অভিবাদন করে বলল”-কে, কী বলেছিল? তার এভাবে তাঁকে সম্মান জানানোর কারণটি কী?**

উত্তর: একজন পুলিশম্যান গণেশকে অভিবাদন করে এ কথা বলেছিল। * পুলিশম্যান গণেশকে বলেছিল- “স্যার, এককালে আপনি যখন কলকাতার সায়েন্স কলেজে মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স পড়াতেন, তখন আমি আপনার ছাত্র ছিলাম।” এরপর সে প্রশ্ন করেছিল, গণেশবাবু এসব কী করছেন? পাহাড়ময় কাগজ ছড়াচ্ছেন কেন? এটা কি নতুন ধরনের কোনো গবেষণা?’

• তার এভাবে তাঁকে সম্মান জানানোর কারণ হল গণেশ তার শিক্ষক। তাই ছাত্র হিসেবে সে তার শিক্ষককে সম্মান জানিয়েছে।

২.৮ “আমি পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি”-বক্তা কীভাবে

পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল? তার প্রয়াস শেষ পর্যন্ত

সফল হয়েছিল কি? 

উত্তর: এখানে বক্তা গণেশ কবিতা লিখে, গান গেয়ে, ছবি এঁকে পৃথিবীকে

বাঁচানোর চেষ্টা করেছে।

• হ্যাঁ, তার প্রয়াস শেষপর্যন্ত সফল হয়েছিল। কেননা, পৃথিবীর লোক গান গাওয়া, কবিতা লেখা, ছবি আঁকা শুরু করে দিয়েছিল।

২.৯ ‘লোকটা অসহায়ভাবে মাথা নেড়ে বলল’-এখানে কার কথা বলা হয়েছে? সে কী বলল? তার অসহায়ভাবে মাথা নাড়ার কারণ কী?**

উত্তর: এখানে গণেশের কাছে আসা একজন পুলিশম্যানের কথা বলা হয়েছে, যে একসময় গণেশের ছাত্র ছিল।সে বলল, ‘কিছুই বুঝতে পারছি না স্যার। কোনো দিন এ জিনিস পড়িনি।’

• সে অসহায়ভাবে মাথা নাড়ল, কারণ-সে যে কাগজের টুকরোটি পড়ার জন্য নিয়েছিল, সেটাতে একটা কবিতা ছিল। কিন্তু কবিতা কি তা সে জানে না। তাই লেখাটির অর্থ কিছুই বুঝতে পারেনি। সেই কারণেই অসহায়ভাবে মাথা নাড়ল।

২.১০ “তিনজন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বসে রইল।”- এই তিনজন কারা? তাদের মুগ্ধতার কারণ কী?

উত্তর: এই তিনজনের একজন পুলিশম্যান যে আগের দিন গণেশের

কাছে এসেছিল, যে আবার একসময় গণেশের ছাত্র ছিল। এবং বাকি

দু’জন হল তার মা ও স্ত্রী।

তারা কবিতা শুনলো, গান শুনলো, ছবি দেখলো এবং কিছু না বুঝলেও মনের মধ্যে কেমন যেন একটা হচ্ছিল-সেই অনুভূতি তারা বোঝাতে পারেনি। তবে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, কিছুটা তারা অনুভব করতে পেরেছিল; তাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বসেছিল।

১.১. ‘পাগলা গণেশ’ একটি (বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/রূপকথা) বিষয়ক গল্প।

উত্তর: ‘পাগলা গণেশ’ একটি ‘কল্পবিজ্ঞান’ বিষয়ক গল্প।

১.২ অবজার্ভেটরি-র বাংলা প্রতিশব্দ (পরীক্ষাগার/ গবেষণাগার/ নিরীক্ষণাগার)।

উত্তর: অবজার্ভেটরির বাংলা প্রতিশব্দ নিরীক্ষণাগার।

১.৩ সভ্য সমাজ থেকে দূরে পালিয়ে গিয়ে গণেশ (হিমালয়ের গিরিগুহায়/গভীর জঙ্গলে/মহাকাশে) আশ্রয় নিয়েছিলেন।

উত্তর: সভ্য সমাজ থেকে দূরে পালিয়ে গিয়ে গণেশ হিমালয়ের গিরিগুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।

১.৪ গল্পের তথ্য অনুসারে মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কার হয়েছিল (৩৫৩৯/৩৪৩৯/৩৫০০) সালে।

উত্তর: গল্পের তথ্য অনুসারে মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কার হয়েছিল ৩৪৩৯ সালে।

২. সংক্ষেপে উত্তর দাও।

২.১ “সালটা ৩৫৮৯”- এই সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে কোন কোন নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের কথা গল্পে বলা হয়েছে?***

উত্তর: ৩৫৮৯ সালের মধ্যে পৃথিবীতে নানারকম বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার হয়েছে। যেমন-মাধ্যাকর্ষণ প্রতিরোধকারী মলম; এর আবিষ্কারের ফলে নানারকম উড়ানযন্ত্রও আবিষ্কৃত হয়েছে। আলোর চেয়ে গতিবেগ সম্পন্ন মহাকাশযান তৈরি হয়েছে। সূর্যের আরও দুটো গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। এছাড়াও মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কৃত হয়েছে।

২.২ “ওসব ‘অনাবশ্যক ভাবাবেগ’ কোনো কাজেই লাগে না”- ‘অনাবশ্যক ভাবাবেগ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তাকে সত্যিই তোমার ‘অনাবশ্যক’ বলে মনে হয় কি?***

উত্তর: ‘অনাবশ্যক ভাবাবেগ’ হল অর্থহীন আবেগ বা বিহ্বলতা, যার কোনো দরকার নেই। এখানে কবিতা, গান, ছবি আঁকা, কথাসাহিত্য, নাটক, সিনেমা এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর কথাকে ‘অনাবশ্যক ভাবাবেগ’

বলা হয়েছে।

• এগুলিকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করাকে আমার ‘অনাবশ্যক’ মনে হয় না। কেননা এগুলি মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এগুলি ছাড়া মানুষের জীবন নিরস হয়ে যায়। মানুষের হৃদয়ের অনুভূতি, আবেগ, ভালোবাসা এর মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পায়। এর মধ্যে মানুষ খুঁজে পায় পরম শান্তি।

২.৩ “চর্চার অভাবে মানুষের মনে আর ওসবের উদ্রেক হয় না”-মানুষের মন থেকে কোন্ কোন্ অনুভূতিগুলি হারিয়ে গেছে?

উত্তর: মানুষের মন থেকে দয়া, মায়া, করুণা, ভালোবাসা ইত্যাদি অনুভূতি হারিয়ে গেছে।

সকাল, কঠিন, লাভ, অনাবশ্যক, ভাবাবেগ, জন্ম, আশ্রয়, আকাশ, কৃত্রিম।

উত্তর: সকাল-সন্ধ্যা; কঠিন-নরম; লাভ-লোকসান; অনাবশ্যক- আবশ্যক; ভাবাবেগ- আবেগহীন/আবেগবর্জিত; জন্ম-মৃত্যু; আশ্রয়-নিরাশ্রয়; আকাশ-পাতাল; কৃত্রিম-অকৃত্রিম।

২. নিম্নলিখিত পদগুলির পদান্তর কর:

সংগীত, সাহিত্য, শিল্প, আগ্রহ, বিনীত, বৈজ্ঞানিক, সপ্তাহ, পৃথিবী, ব্যতিক্রম, স্থাপন, প্রকৃতি।
উত্তর: সংগীত-সাংগীতিক; সাহিত্য- সাহিত্যিক; শিল্প-শিল্পীত; আগ্রহ-আগ্রহী; বিনীত-বিনয়

২.১ “সালটা ৩৫৮৯”- এই সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে কোন কোন নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের কথা গল্পে বলা হয়েছে?***

উত্তর: ৩৫৮৯ সালের মধ্যে পৃথিবীতে নানারকম বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার হয়েছে। যেমন-মাধ্যাকর্ষণ প্রতিরোধকারী মলম; এর আবিষ্কারের ফলে নানারকম উড়ানযন্ত্রও আবিষ্কৃত হয়েছে। আলোর চেয়ে গতিবেগ সম্পন্ন মহাকাশযান তৈরি হয়েছে। সূর্যের আরও দুটো গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। এছাড়াও মৃত্যুঞ্জয় টনিক আবিষ্কৃত হয়েছে।

২.২ “ওসব ‘অনাবশ্যক ভাবাবেগ’ কোনো কাজেই লাগে না”- ‘অনাবশ্যক ভাবাবেগ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তাকে সত্যিই তোমার ‘অনাবশ্যক’ বলে মনে হয় কি?***

উত্তর: ‘অনাবশ্যক ভাবাবেগ’ হল অর্থহীন আবেগ বা বিহ্বলতা, যার কোনো দরকার নেই। এখানে কবিতা, গান, ছবি আঁকা, কথাসাহিত্য, নাটক, সিনেমা এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর কথাকে ‘অনাবশ্যক ভাবাবেগ’

বলা হয়েছে।

• এগুলিকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করাকে আমার ‘অনাবশ্যক’ মনে হয় না। কেননা এগুলি মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এগুলি ছাড়া মানুষের জীবন নিরস হয়ে যায়। মানুষের হৃদয়ের অনুভূতি, আবেগ, ভালোবাসা এর মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পায়। এর মধ্যে মানুষ খুঁজে পায় পরম শান্তি।

২.৬ “গণেশ তাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে”- গণেশ কাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে? তার এই ভুলে যাওয়ার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?

উত্তর: গণেশ তার তিন ছেলে ও এক মেয়ের মুখশ্রী ভুলে গেছে। বড়ো ছেলের বয়স একশো চুয়াত্তর বছর, মেজোর একশো একাত্তর,ছোটো ছেলের একশো আটষট্টি এবং মেয়ের বয়স একশো ছেষট্টি। তারা সবাই কৃতি বিজ্ঞানী। কিন্তু তারা প্রায় একশো বছর ধরে বাপের কাছে আসে না। সেই কারণেই গণেশ তাদের মুখশ্রী ভুলে গেছে। কেননা, একশো বছর আগে দেখা কোনো মুখকে মনে রাখা সম্ভব নয়।

  ২.৭ “গণেশকে সসম্ভ্রমে অভিবাদন করে বলল”-কে, কী বলেছিল? তার এভাবে তাঁকে সম্মান জানানোর কারণটি কী?**

উত্তর: একজন পুলিশম্যান গণেশকে অভিবাদন করে এ কথা বলেছিল। * পুলিশম্যান গণেশকে বলেছিল- “স্যার, এককালে আপনি যখন কলকাতার সায়েন্স কলেজে মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স পড়াতেন, তখন আমি আপনার ছাত্র ছিলাম।” এরপর সে প্রশ্ন করেছিল, গণেশবাবু এসব কী করছেন? পাহাড়ময় কাগজ ছড়াচ্ছেন কেন? এটা কি নতুন ধরনের কোনো গবেষণা?’

• তার এভাবে তাঁকে সম্মান জানানোর কারণ হল গণেশ তার শিক্ষক। তাই ছাত্র হিসেবে সে তার শিক্ষককে সম্মান জানিয়েছে।

২.৮ “আমি পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি”-বক্তা কীভাবে

পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল? তার প্রয়াস শেষ পর্যন্ত

সফল হয়েছিল কি? 

উত্তর: এখানে বক্তা গণেশ কবিতা লিখে, গান গেয়ে, ছবি এঁকে পৃথিবীকে

বাঁচানোর চেষ্টা করেছে।

• হ্যাঁ, তার প্রয়াস শেষপর্যন্ত সফল হয়েছিল। কেননা, পৃথিবীর লোক গান গাওয়া, কবিতা লেখা, ছবি আঁকা শুরু করে দিয়েছিল।

২.৯ ‘লোকটা অসহায়ভাবে মাথা নেড়ে বলল’-এখানে কার কথা বলা হয়েছে? সে কী বলল? তার অসহায়ভাবে মাথা নাড়ার কারণ কী?**

উত্তর: এখানে গণেশের কাছে আসা একজন পুলিশম্যানের কথা বলা হয়েছে, যে একসময় গণেশের ছাত্র ছিল।

  • সে বলল, ‘কিছুই বুঝতে পারছি না স্যার। কোনো দিন এ জিনিস পড়িনি।’

• সে অসহায়ভাবে মাথা নাড়ল, কারণ-সে যে কাগজের টুকরোটি পড়ার জন্য নিয়েছিল, সেটাতে একটা কবিতা ছিল। কিন্তু কবিতা কি তা সে জানে না। তাই লেখাটির অর্থ কিছুই বুঝতে পারেনি। সেই কারণেই অসহায়ভাবে মাথা নাড়ল।

২.১০ “তিনজন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বসে রইল।”- এই তিনজন কারা? তাদের মুগ্ধতার কারণ কী?

উত্তর: এই তিনজনের একজন পুলিশম্যান যে আগের দিন গণেশের

কাছে এসেছিল, যে আবার একসময় গণেশের ছাত্র ছিল। এবং বাকি

দু’জন হল তার মা ও স্ত্রী।

  • তারা কবিতা শুনলো, গান শুনলো, ছবি দেখলো এবং কিছু না বুঝলেও মনের মধ্যে কেমন যেন একটা হচ্ছিল-সেই অনুভূতি তারা বোঝাতে পারেনি। তবে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, কিছুটা তারা অনুভব করতে পেরেছিল; তাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বসে

Long Question Answer

২.৪ “ব্যতিক্রম অবশ্য এক আধজন আছে।”- ‘ব্যতিক্রমী’ মানুষটি কে? কীভাবে তিনি ব্যতিক্রমী হয়ে উঠেছিলেন?***

(বহরমপুর কে.এন. কলেজ স্কুল, উ.মা)

উত্তর: ব্যতিক্রমী মানুষটি হল দু’শো বছর বয়স্ক পাগলা গণেশ।

সমগ্র জগৎ যখন বিজ্ঞানের চর্চায় মত্ত, যখন সবাই শিল্প-সংগীত-

সাহিত্যের প্রয়োজন ভুলে গেছে; তখন পাগলা গণেশ সভ্যসমাজ থেকে

দূরে হিমালয়ের গৃহায় বসে কবিতা লিখে, গান গেয়ে, ছবি

এঁকে-পৃথিবীতে এগুলোর প্রচলন করতে চেয়েছে। কেননা, তার মতে

পৃথিবীটা তাহলে বেঁচে যাবে। আর এভাবেই সে ব্যতিক্রমী হয়ে উঠেছে।

৩. ‘পাগলা গণেশ’ গল্পের মুখ্যচরিত্র গণেশকে তোমার কেমন লাগল?**

উত্তর: পাগলা গণেশ খুবই পণ্ডিত একজন মানুষ। সে ছিল দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ। তাই সে অনুভব করেছিল শুধু বিজ্ঞানচর্চার বাড়াবাড়িরফলে মানুষ হারিয়ে ফেলছে তার আবেগ, ভালোবাসা, দয়া-মায়া। তার। মনে হয়েছে, এর ফলে একদিন পৃথিবীটা মরে যাবে। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে জীবনের এই ঘনিষ্ঠ উপাদানগুলি।

তাই সে অনেক ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ সহ্য করেও পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল। আপাত অর্থে মজার চরিত্র পাগলা গণেশ, কিন্তু সত্যিকারের অর্থে সে পাগল নয়; আসলে সবচেয়ে বোধ সম্পন্ন মানুষ সে। জগতের কল্যাণে নিজেকে সঁপে দিয়েছিল। আর তাই সে একদিন সবার মন জয় করে নিয়েছিল। আমাদের সবার কাছে পাগলা গণেশ একজন আকর্ষণীয় চরিত্র।

১. ‘পাগলা গণেশ’ গল্পটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো। 

অথবা

‘পাগলা গণেশ’ গল্পের এই নামকরণ কতখানি যুক্তিসংগত বলে মনে করো।

উত্তর: গল্পের নামকরণ হয়ে থাকে কখনও চরিত্রকে কেন্দ্র করে, কখনওবা ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ‘পাগলা গণেশ’ নামাঙ্কিত এই গল্পের নামকরণ হয়েছে মূল চরিত্র গণেশকে কেন্দ্র করে। গণেশের যে পরিকল্পনা, তার যে আচার-আচরণ, ভাবনা-চিন্তা তা কখনোই বাস্তব সম্মত নয়। কালের বিচারে তাই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় তাঁকে ‘পাগলা’ বিশেষণে চিহ্নিত করেছেন।

৩৫৮৯ সালে জগৎ যখন উত্তর-আধুনিক হয়ে আরও নতুন পথে চলেছে, তখন গণেশ দিব্যি কবিতা নিয়ে ব্যস্ত। বিজ্ঞানের প্রাণহীন গবেষণা তার পছন্দ নয়। বরং সে শিল্পকে বাঁচাতে ব্যস্ত। কলকাতার সায়েন্স কলেজের শিক্ষক হয়েও শুধুমাত্র বিজ্ঞানকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়নি। বরং দেখতে চেয়েছিল-পৃথিবীটা যেন সুন্দর হয়ে ওঠে। তার জন্যে গান চাই, কবিতা চাই, ছবি চাই। এজন্যে গণেশের শিল্প সাধনাকে তার সময়ের প্রেক্ষিতে অন্যদের মনে হয়েছে পাগলের কার্যকলাপ। এই জন্যে তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘পাগলা গণেশ’ নামে। এদিক থেকে এ গল্পের নামকরণ সময়ের প্রেক্ষিতে, লেখকের উদ্দেশ্য অনুসারে সার্থক হয়েছে।

____________________________________________________________________________

২. “গণেশ খুব খুশি।”-গণেশের খুশি হওয়ার কারণ কী?

____________________________________________________________________________

উত্তর: ‘পাগলা গণেশ’ নামাঙ্কিত গল্পে গণেশ চরিত্রটি তার যুগের মধ্যে ব্যতিক্রম। সে গান করে। তার সেই গানকে বলা হয়েছে ‘বিটকেল শব্দ’। পাহাড়ের গায়ে বাটালি চালিয়ে সে ছবি আঁকে। সেই ছবিকে বলা হয়েছে ‘সার্কিট ডিজাইন’। গণেশ অসাধারণ সব কবিতা লিখেছে। তার সেই কবিতা লেখার উদ্দেশ্য ‘পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা’। যদিও তাঁর কবিতা অনেকেই বুঝতে পারেনি। এজন্যে ‘গণেশ হতাশ হলো’। পরে অবশ্য পুলিশম্যানের চারজন সহকর্মী গণেশের গান ও ছবির ব্যাপারটা বুঝতে চেয়েছিল। ফলে গণেশ খুব খুশি হয়েছিল।

__________________________________________________________বৈজ্ঞানিক-বিজ্ঞান; সপ্তাহ- সাপ্তাহিক; পৃথিবী—পার্থিব; ব্যতিক্রম-ব্যতিক্রমী; স্থাপন-স্থাপিত; প্রকৃতি- প্রাকৃতিক।বিজ্ঞান ছাড়া অন্য কোনো চর্চাই নেই।”-মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

___________________________________________________________________________

উত্তর: শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ‘পাগলা গণেশ’ নামাঙ্কিত গল্পটিতে গণেশের চিন্তা-ভাবনার যে পরিচয় দিয়েছেন তা একেবারেই অন্যরকম। সালটা তখন ৩৫৮৯। তখন চন্দ্র, মঙ্গল এবং শুক্র গ্রহে মানুষ ল্যাবরেটরি স্থাপন করেছে। মানুষ তার গবেষণার মাধ্যমে অমরত্ন পেয়েছে। ঘরে ঘরে চলেছে বিজ্ঞানের সাধনা। চিরতরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে কবিতা, গান, ছবি। কেউ খেলাধুলো করে না। খেলার সমস্ত আয়োজন বন্ধ। গোলাপের সৌন্দর্য নিয়ে কথা বলার লোক নেই। যন্ত্র তখন গ্রাস করেছে মানুষের শিল্প-সাধনাকে। মানুষ তখন যন্ত্রবৎ। সেই প্রসঙ্গে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য। মানুষ কীভাবে বিজ্ঞান নির্ভর যান্ত্রিকতায় আচ্ছন্ন-এই বক্তব্য তারই প্রমাণ।

৪. “ওসব অনাবশ্যক ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না।”- অনাবশ্যক ভাবাবেগ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তা কাজে লাগে না কেন?***

উত্তর: ‘পাগলা গণেশ’ নামাঙ্কিত গল্পে ‘অনাবশ্যক ভাবাবেগ’ বলতে কবিতা, গান, ছবি আঁকা, কথাসাহিত্য, নাটক, সিনেমা ইত্যাদিকে বোঝানো হয়েছে।

◆ তখন ৩৫৮৯ সাল। পৃথিবীর বুকে ঘটে গেছে নানা পরিবর্তন। বিজ্ঞানের জয়যাত্রা তখন সর্বত্র। চন্দ্র, মঙ্গল, শুক্র গ্রহে পরীক্ষা-নিরীক্ষার শেষ নেই। সূর্যের আরও দুটি গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। বিজ্ঞানের জয়যাত্রায় মানুষের আয়ু বেড়েছে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় লিখেছেন-সেই এক দেড়শো বছর আগে যারা জন্মেছিল, তারা সকলেই সশরীরে বর্তমান। আজকাল পৃথিবীতে মানুষ মরে না।

বিজ্ঞানের চর্চা এতটাই বেড়েছে যে, প্রতিঘরের প্রত্যেকেই কোনো না কোনো বিজ্ঞানের বিজ্ঞানী। সুতরাং, দেখা যাচ্ছে- “বিজ্ঞান ছাড়া অন্য কোনো চর্চাই নেই।” এর ফলে পৃথিবীর কোথাও আনন্দ নেই। কোথাও শিল্পের অবশিষ্ট নেই। ফলে অনাবশ্যক ভাবাবেগও কোথাও নেই। মানুষ শুধু যন্ত্রে পরিণত হয়েছে।

৫. “এই মৃত্যুহীন জীবন, এই অন্তহীন আয়ু কি এভাবেই যন্ত্রণার মধ্যে কাটাতে হবে?”- পাগলা গণেশের কেন একথা মনে হয়েছিল?**

উত্তর: ‘পাগলা গণেশ’ নামাঙ্কিত গল্পের মূল চরিত্র গণেশ। পরিবর্তিত বিশ্বে বিজ্ঞানের বিবর্তন দেখে সে বিস্মিত হয়েছিল। বিব্রত গণেশ হিমালয়ের নির্জন স্থানে জায়গা খুঁজেছিল। সে চেয়েছিল নির্জনে শিল্প সাধনা করতে। তার মনে হয়েছিল-ভূগর্ভে, ভুপৃষ্ঠে এবং অন্তরীক্ষে কোথাও নিপাট নির্জনতা নেই। আসলে নির্জনতা খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন কাজ।

সে নিজের মতো করে গাইতে থাকে। ছবি আঁকতে থাকে। কিন্তু তার সেই শিল্প সাধনার অর্থ কেউ বুঝতে চায় না। আকাশযান যাত্রীদের মনে হয় সে গাইছে না, শুধু ‘বিটকেল শব্দ’ করছে। তাঁর ছবি আঁকাকে তাঁরা মনে করেন-‘সার্কিট ডিজাইন’।

অবাক হয় গণেশ, তিনি হতাশ হন। সেই হতাশা থেকে আলোচ্য এই বক্তব্য।

৬. “…তাহলে আর ভয় নেই। দুনিয়াটা বেঁচে যাবে…”- কার কখন একথা মনে হয়েছে?**

উত্তর: উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছে, ‘পাগলা গণেশ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র গণেশ।

• রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব তাঁর বিমানে চেপে হাজির হয়েছিলেন হিমালয়ের গিরিগুহায়। সেখানে ছিল গণেশের ঠিকানা। তিনি অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে গণেশকে জানিয়েছিলেন যে, পৃথিবীর লোক এখন গাইতে শুরু করেছে। তারা কবিতা নিয়েও আলোচনা করছে। এখানেই শেষ নয়, তারা হিজিবিজি ছবি আঁকছে। সুতরাং, বিজ্ঞান ভুলে যত সব বাজে কাজে অভ্যস্ত হয়েছে। মহাসচিবের ধারণা এর ফলে একদিন পৃথিবী উচ্ছন্নে যাবে।

মহাসচিবের কথা শুনে সহসা হেসে ওঠে গণেশ। মনে হয় যদি এর ফলে পৃথিবী উচ্ছন্নে যায়, তাহলে আর ভয় নেই। পৃথিবী সত্যিই তখন সুন্দর হয়ে উঠবে।

৭. পাগলা গণেশ চরিত্রটি কেমন। তা আলোচনা করো।++

উত্তর: একালের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক হলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। কথাসাহিত্যের সর্বত্র তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ। ‘পাগলা গণেশ’ শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের অসাধারণ একটি শিল্প সফল রচনা। এটি তাঁর কল্পবিজ্ঞানধর্মী লেখা। এ গল্পের মূল চরিত্র গণেশ। তার চরিত্র বিশ্লেষণ করলে যে বৈশিষ্ট্যগুলি উঠে আসে, তা নিম্নরূপ-

১. কল্পনাপ্রিয় মানুষ গণেশ : পরিবর্তিত বিশ্বে সেই মানুষ, যে বিজ্ঞান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। বিজ্ঞান শুধু তথ্য ও গবেষণায় ভারাক্রান্ত। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, সেই সময় মানুষ বিজ্ঞান ছাড়া অন্য কোনো কিছুর চর্চা করেনি। অবশ্য, ব্যতিক্রম বলে একজন ছিল। সে হল আমাদের আলোচ্য গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র গণেশ। সে কল্পনাপ্রিয় মানুষ।

২. নির্জনতার অনুসন্ধানী : গণেশ নির্জনতা চেয়েছিল। সে দেখেছিল পৃথিবী বড্ড বেশি জটিল। মানুষ সেখানে অত্যন্ত কর্মব্যস্ত। গণেশ এদের থেকে স্বতন্ত্র হতে চেয়েছিল। তাই হিমালয়ের নির্জন গিরিগুহায় আশ্রয় নিয়েছিল। সাধকের মতো শিল্প সাধনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল।

৩. শিল্প সাধক মানুষ : গণেশ ছিল যথার্থই শিল্পী। মানুষ তখন ভুলে গিয়েছিল শিল্প, সাহিত্য, সংগীত, কেননা শীর্ষেন্দু লিখেছেন- বিজ্ঞান ছাড়া অন্য কোনো চর্চাই নেই।… ওসব অনাবশ্যক ভাবাবেগ কোনো কাজেই লাগে না।

তখন খেলাধুলোর পাঠ চুকে গিয়েছে। উঠে গিয়েছে অলিম্পিক। বিলুপ্ত হয়েছে বিশ্বকাপ। আছে শুধু বিজ্ঞান আর বিজ্ঞান। পূর্ণিমার চাঁদ দেখলে কারও মনে কবিতা আসে না। কোকিলের ডাক শুনলে কেউ সাড়া দেয় না। একমাত্র গণেশ বাঁচিয়ে রেখেছিল শিল্প-সাহিত্যকে।

৪. গণেশের স্বপ্ন: গণেশ চেয়েছিল, আবার পৃথিবী শিল্পীত হয়ে উঠুক। সুন্দর হয়ে উঠুক। তাই সে ছবি এঁকেছিল। গান গেয়েছিল। কবিতা লিখেছিল। আসলে গণেশ স্বপ্ন দেখেছিল পৃথিবী আবার সুন্দর হয়ে উঠবে। তাঁর নিজের ভাষায়-‘দুনিয়াটা বেঁচে যাবে।’ সুতরাং, বিবর্তিত বিশ্বে গণেশ অসাধারণ এক শিল্পীত চরিত্র।

২.৪ “ব্যতিক্রম অবশ্য এক আধজন আছে।”- ‘ব্যতিক্রমী’ মানুষটি কে? কীভাবে তিনি ব্যতিক্রমী হয়ে উঠেছিলেন?*** (বহরমপুর কে.এন. কলেজ স্কুল, উ.মা)

উত্তর: ব্যতিক্রমী মানুষটি হল দু’শো বছর বয়স্ক পাগলা গণেশ।

সমগ্র জগৎ যখন বিজ্ঞানের চর্চায় মত্ত, যখন সবাই শিল্প-সংগীত-

সাহিত্যের প্রয়োজন ভুলে গেছে; তখন পাগলা গণেশ সভ্যসমাজ থেকে

দূরে হিমালয়ের গৃহায় বসে কবিতা লিখে, গান গেয়ে, ছবি

এঁকে-পৃথিবীতে এগুলোর প্রচলন করতে চেয়েছে। কেননা, তার মতে

পৃথিবীটা তাহলে বেঁচে যাবে। আর এভাবেই সে ব্যতিক্রমী হয়ে উঠেছে।

৩. ‘পাগলা গণেশ’ গল্পের মুখ্যচরিত্র গণেশকে তোমার কেমন লাগল?**

উত্তর: পাগলা গণেশ খুবই পণ্ডিত একজন মানুষ। সে ছিল দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষ। তাই সে অনুভব করেছিল শুধু বিজ্ঞানচর্চার বাড়াবাড়িরফলে মানুষ হারিয়ে ফেলছে তার আবেগ, ভালোবাসা, দয়া-মায়া। তার। মনে হয়েছে, এর ফলে একদিন পৃথিবীটা মরে যাবে। অর্থাৎ পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে জীবনের এই ঘনিষ্ঠ উপাদানগুলি।

তাই সে অনেক ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ সহ্য করেও পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল। আপাত অর্থে মজার চরিত্র পাগলা গণেশ, কিন্তু সত্যিকারের অর্থে সে পাগল নয়; আসলে সবচেয়ে বোধ সম্পন্ন মানুষ সে। জগতের কল্যাণে নিজেকে সঁপে দিয়েছিল। আর তাই সে একদিন সবার মন জয় করে নিয়েছিল। আমাদের সবার কাছে পাগলা গণেশ একজন আকর্ষণীয় চরিত্র।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *