WBBSE Class10 Bangla Chapter 5 হারিয়ে যাওয়া কালি কলম Solution | Bengali Medium

Class 10 Bangla Chapter 5 Solution

হারিয়ে যাওয়া কালি কলম

1. MCQs Question Answer

1. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনাটি যে গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে, সেটি হল-

(ক) যখন ছাপাখানা এলো 

(খ) কালিখ কালি আছে কাগজ আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই 

(গ) আজব নগরী 

(ঘ) বটতলা

উত্তর: (খ) কালিখ কালি আছে কাগজ আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই 

2. শ্রীপান্থের আসল নাম

ক অন্নদাশঙ্কর রায়

খ) নিখিলনাথ রায় 

গ) নিখিল সরকার 

ঘ) সুবোধ ঘোষ 

উত্তর: খ) নিখিলনাথ রায় 

3. নিখিল সরকার ওরফে ‘শ্রীপান্থ’র জন্ম হয়- 

ক) ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে 

(খ) ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে 

(গ) ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে 

(ঘ) ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে

উত্তর: (গ) ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ

4. নিখিল সরকার রচিত একটি গ্রন্থ হল- 

ক) মেটিয়াবুরুজের নবাব 

খ কঙ্কাবতী 

গ আমরা বাঙালি 

ঘ) রামায়ণ

উত্তর: ক) মেটিয়াবুরুজের নবাব

5. কথায় আছে, কালি কলম মন, লেখে জন। 

ক) এক 

খ) দুই

গ) তিন 

ঘ) চার

উত্তর:  গ) তিন

6. “কালি কলম মন, লেখে তিন জন।”-এটি হল-

ক) ধাঁধা 

খ) প্রবাদ 

গ) রূপকথা 

ঘ) উপকথা

উত্তর: (খ) প্রবাদ

7. লেখক যেখানে কাজ করেন, সেটা হল- লেখার আসর

ক) ছাপাখানা

খ) পুথি লেখার কারখানা

গ) লেখালেখির অফিস 

ঘ) গল্প

উত্তর: গ) লেখালেখির অফিস

8. লেখক যেখানে কাজ করেন সেখানে সবাই-

ক) লেখক 

খ) পুলিশ 

গ) আড্ডাবাজ 

(ঘ) চাকর

উত্তর: ক) লেখক

9. লেখক তাঁর অফিসে কোন্ জিনিসের কথা বলেছেন যা শুধু তাঁরই আছে? 

ক) একটি অভিধান

খ) একটি কম্পিউটার

গ কলম

(ঘ) বই

উত্তর: গ) কলম

10. লেখকের হাতে কলম এবং বাকিদের সামনে কী?

ক) টাইপরাইটার 

(খ) কম্পিউটার

(গ) প্রচুর বই

(ঘ) দোয়াত ও পেন

উত্তর: খ) কম্পিউটার

11. “আমি যা লিখি ওঁরা ভালোবেসে আমার লেখাকেও এভাবে ছাপার জন্য তৈরি করে দেন।” -‘ওঁরা’ বলতে লেখকের-

ক) বন্ধুরা

খ) শিক্ষক-শিক্ষিকারা

(গ) সহপাঠীরা

(ঘ) সহকর্মীরা

উত্তর: (ঘ) সহকর্মীরা

12. লেখক একদিন কলম নিয়ে যেতে ভুলে গেলেই বিপদ কেন? 

(ক) কারও কলমে কালি নেই 

(খ) কারও সঙ্গে কলম নেই 

(গ) সবার সঙ্গে কথা বন্ধ 

(ঘ) কলম চাওয়া নিষেধ

উত্তর: ঘ) সহকর্মীরা

13. “তবে তাতে লিখে আমার সুখ নেই”- কেন?

ক) গলা শুকনো ভোঁতামুখের কলম 

খ) অনেক দামি পেন 

গ) দিয়ে কালি ঝরে না 

ঘ) ভালো মনে কেউ দেয় না

উত্তর: ক) গলা শুকনো ভোঁতামুখের কলম 

14. লেখকৰ কাছে তাঁর অফিছ তাঁর–

ক) জন্মস্থান 

খ) কারাখানা 

গ) মৃত্যুস্থান 

ঘ) রান্নাঘর 

উত্তর: খ) কারাখানা 

15. বাংলায় প্রচলিত কথা “কালি নেই, কলম নেই বলে আমি”। 

ক) কবি 

খ) লেখক 

গ) মুনশি 

ঘ) কলমবিদ

উত্তর: গ) মুনশি

 16. “কালগুণে বুঝিবা আজ আমরাও তা-ই।” -আমরাও কী? 

ক) লেখক 

খ) মুনশি 

গ) কবি 

ঘ) পণ্ডিত

উত্তর:  মুনশি

17. হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনায় লেখকের বয়স কত বলে ধারণা করা হয়েছে?

ক) ৪০-৫০ বছর

খ) ৫০-৬০ বছর

(গ) ৬০-৭০ বছর

(ঘ) ৭০-৮০ বছর

উত্তর:  খ) ৫০-৬০ বছর

18. লেখক ছেলেবেলায় কলম তৈরি করতেন- 

(ক) কাশফুলের খড় দিয়ে 

(খ) রোগা বাঁশের কঞ্চি কেটে 

(গ) পেয়ারা ডাল

(ঘ) শ্যাওড়া ডাল কেটে

উত্তর:  (খ) রোগা বাঁশের কঞ্চি কেটে কেটে 

19. কলম তৈরির সময় বড়োরা শিখিয়েছিলেন-

ক) কলমের মুখটা চিরে দিতে হবে 

খ) কলমের মাথাটা ভোঁতা হতে হবেক কলমের মুখটা

গ) কলমের মাথার দুটো অংশ থাকবে 

ঘ) কলমের মুখ চেরা চলবে না

উত্তর: ক) কলমের মুখটা চিরে দিতে হবে  

20. লেখার পাত বলতে শৈশবে লেখকদের কী ছিল?

ক) কলাপাতা

খ) লাউ পাতা চিরে দিতে হবে

গ) তাল পাতা

ঘ) শাল পাতা

উত্তর: (ক) কলাপাতা

21. “আমরা তাতে হোম-টাস্ক করতাম।”-‘তাতে’ বলতে- 

(ক) বড়ো খাতায় 

খ) ব্ল‍্যাকবোর্ডে 

গ) কলাপাতায় 

ঘ) লাউ পাতায়

উত্তর: (গ) কলাপাতায়

22. কলাপাতায় হোমটাস্ক করে লেখক কোথায় নিয়ে যেতেন? 

ক) অফিসে 

খ) স্কুলে 

গ) গুরুমশায়ের কাছে

ঘ) বাবার কাছে

উত্তর: খ) স্কুলে

23. হোমটাস্ক করা কলাপাতাগুলি মাস্টারমশাইকে দেখানোর পর লেখকরা কী করতেন?

ক) বাড়িতে রেখে দিতেন

খ) বাবা-মাকে দেখাতেন 

গ) স্কুলে রেখে আসতেন 

ঘ) পুকুরে ফেলে দিতেন

উত্তর: ঘ) পুকুরে ফেলে দিতেন

24. বাইরে না ফেলে লেখক হোমটাস্কের কলাপাতাগুলি পুকুরেই ফেলতেন, কারণ বাইরে ফেললে-

(ক) গোরু খেলে ক গোরু খেলে অমঙ্গল হবে 

(খ) রাস্তার লোকে পা দিলে পাপ হবে 

(গ) বাইরের লোকে দেখে ফেলবে

(ঘ) সরস্বতী খুশি হবেন

উত্তর: (ক) গোরু খেলে ক গোরু খেলে অমঙ্গল হবে 

25. অক্ষরজ্ঞানহীনকে লোকে বলে-

ক) ওর কাছে সব অন্ধকার 

খ) ওর কাছে ক-অক্ষর গোমাংস 

গ) ও একটা গোরু 

(ঘ) ও একটা বোকা গাধা

উত্তর: খ) ওর কাছে ক- 

26. “ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।”- এখানে ‘মসি’ শব্দের অর্থ-

ক) লোহা 

খ) ধুলো 

গ) কালি 

ঘ) পেন

উত্তর: গ) কালি

27. কালি তৈরি করতে লাগে-

ক) আলু 

খ) ত্রিফলা 

গ) চুন 

ঘ) মিছরি

উত্তর: খ) ত্রিফলা

28. লেখক যখন ছোটো তখন তাদের বাড়িতে রান্না হত-

ক) গোবর গ্যাসে 

খ) কাঠের উনুনে 

গ) স্টোভে 

ঘ) গ্যাসখ কাঠের উনুনে ওভেনে

উত্তর: খ) কাঠের উনুনে রান্না হত

29. কড়াইয়ের তলায় কালি জমার কথা বলা হয়েছে। -কারণ-

ক) গোবর গ্যাসে রান্না হত 

খ) কাঠের উনুনে রান্না হত 

গ) স্টোভে রান্না হত 

ঘ) মাটি লেপে দেওয়া হত 

উত্তর: খ) কাঠের উনুনে রান্না হত 

30. কড়াইয়ের তলায় জমা কালি কী দিয়ে ঘষে তোলা হত?

(ক) কলাপাতা

(খ লাউ পাতা

(গ) শাল পাতা 

(ঘ) পেয়ারা পাতা

উত্তর: খ) লাউ পাতা

31. লেখকের ছোটোবেলায় লেখালেখির প্রথম সঙ্গী হিসেবে ছিল- 

(ক) বাঁশের কলম 

(খ) মাটির দোয়াত 

(গ) ঘরে তৈরি কালি

(ঘ) সবগুলি

উত্তর: (ঘ) সবগুলি

32. পঞ্চাশ-ষাট বছর বয়সে লেখকের কষ্ট হয়েছে কী নিয়ে? 

(ক) কলম হাতছাড়া হতে চলেছে

(খ) দোয়াত-কালি নেই

গ) ফাউন্টেন পেনের দাম বেড়েছে 

ঘ) বাঁশ গাছ কমে গেছে

উত্তর: (ক) কলম হাতছাড়া হতে চলেছে

33. নীল নদের তীর থেকে লেখক কী নিয়ে আসতেন? 

(ক) নলখাগড়া 

(খ) স্টাইলাস 

(গ) জ্ঞানাঞ্জন শলাকা 

(ঘ) ব্রোঞ্জের ক শলাকা

উত্তর: নলখাগড়া

34. লেখক কী হলে বনপ্রান্ত থেকে একটা হাড় কুড়িয়ে নিতেন? 

ক) মিশরীয় 

খ) ফিনিসীয় 

গ) ভারতীয় 

ঘ) ইরানীয়

উত্তর: (খ) ফিনিসীয়

35. “আমি যদি রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হতাম”- কোন্ অধীশ্বরের কথা বলা হয়েছে? 

ক) জুলিয়াস সিজার

(খ) আলেকজান্ডার 

গ) ফ্রেডারিক 

ঘ) নেপোলিয়ন

উত্তর: ক) জুলিয়াস সিজার

36. ব্রোঞ্জের শলাকার পোশাকি নাম হল- 

(ক) স্কাইলাস 

(খ) স্টাইলাস 

(গ) স্টাইলিস 

(ঘ) স্কাইলস

উত্তর: (খ) স্টাইলাস

37. সিজার স্টাইলাস দিয়ে কাকে আঘাত করেছিলেন? 

(ক) কাসকাকে 

(খ) মুনশিকে 

(গ) ওয়াটারম্যানকে 

ঘ) ম্যাকলানকে [চাকদহ রামলাল একাডেমি]

উত্তর: ক) কাসকাকে

38. সিজার যে কলমটি দিয়ে কাসকাকে আঘাত করেছিলেন, তার পোশাকি নাম- 

(ক) রিজার্ভার 

(খ) স্টাইলাস 

(গ) পার্কার

(ঘ) পাইলট 

উত্তর: (খ) স্টাইলাস

2. Very Short Question Answer

 1. শ্রীপান্থ কোন্ সাহিত্যিকের ছদ্মনাম?

উত্তর:  শ্রীপান্থ হল নিখিল সরকারের ছদ্মনাম।

2. “বাংলায় একটা কথা চালু ছিল।”-কোন্ কথা চালু ছিল?

উত্তর:  বাংলায় চালু কথাটি ছিল- “কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি।”

3. লেখকের জন্ম মিশরে হলে লেখক কী করতেন বলেছেন?

উত্তর:  মিশরে জন্ম হলে লেখক নীল নদের তীর থেকে নলখাগড়া ভেঙে নিয়ে কলম হিসেবে ব্যবহার করতেন।

4. প্রাচীন সুমেরীয়রা কীভাবে কলম বানাত?

উত্তর:  প্রাচীন সুমেরীয়রা নীল নদের তীর থেকে নলখাগড়া ভেঙে নিয়ে এসে সেটাকে ভোঁতা করে তুলি বানিয়ে লিখত।

5. খাগের কলমের ব্যবহার এখন কোন্ সময়ে দেখা যায়?

উত্তর:  খাগের কলমের ব্যবহার এখন সরস্বতী পুজোর সময় দেখা যায়।

6. বাঙালি সাংবাদিকদের ইংরেজি দেখে কে, কী বলতেন?

উত্তর:  বাঙালি সাংবাদিকদের ইংরেজি দেখে লর্ড কার্জন ‘বাবু কুইল ড্রাইভারস’ বলতেন।

7. পালকের কলমের ইংরেজি নাম কী?

উত্তর:  পালকের কলমের ইংরেজি নাম হল কুইল।

8. এমন দুটি চিত্রের উল্লেখ করো যাতে পালকের কলম দেখা যায়।

উত্তর: উইলিয়াম জোন্সের ও স-মুনশি কেরি সাহেবের চিত্র দুটিতে পালকের কলম দেখা যায়।

9. পালকের কলম বর্তমানে দেখার জন্য কীসের ওপর নির্ভর করতে হয়? অথবা, ‘কুইল’ এখন কোথায় দেখতে পাওয়া যায়? [সুনীতি একাডেমি, কোচবিহার]

উত্তর:  পালকের কলম বা ‘কুইল’ বর্তমানে দেখার জন্য পুরোনো দিনের তৈলচিত্র বা ফোটোগ্রাফের ওপর নির্ভর করতে হয়।

10. নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়াও হতে পারে।”- কোন্ নামের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:  ফাউন্টেন পেনের যে বাংলা নাম ঝরনা কলম একদা প্রচলিত ছিল, এখানে সেই নামের কথা বলা হয়েছে।

11. ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক কে?

উত্তর: ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক হলেন লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান।

12. “আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন পেন কেনার কথা।”- কোথায় লেখক ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন?

উত্তর:  লেখক কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের এক নামি দোকানে ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন।

13. পেনের দোকানদার লেখকের পকেটের অবস্থা বুঝতে পেরে কী পেন দিয়েছিলেন?

উত্তর:  পেনের দোকানদার লেখকের পকেটের অবস্থা বুঝতে পেরে একটি সস্তার জাপানি পাইলট পেন দিয়েছিলেন।

14. “তা লেখককে নেশাগ্রস্ত করে।”-কী, কীভাবে লেখককে নেশাগ্রস্ত করে? [আলিপুরদুয়ার নিউ টাউন গার্লস হাই স্কুল]

উত্তর:  এখানে ফাউন্টেন পেনের কথা বলা হয়েছে। এই পেন সংগ্রহের আনন্দ লেখককে নেশাগ্রস্ত করে।

15. কোন্ লেখকের ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ দেখে লেখক ‘নেশাগ্রস্ত’ হওয়ার কথাটি এনেছেন?

উত্তর:  সাহিত্যিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ দেখে লেখক ‘নেশাগ্রস্ত’ হওয়ার কথাটি এনেছেন।

 16. “জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন”-ফাউন্টেন পেনের জন্মবৃত্তান্তটি উল্লেখ করো। [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর:  লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যানের হাত ধরে ফাউন্টেন পেনের জন্ম হয়েছে

17. কলমকে কীসের চেয়েও শক্তিধর বলা হয়? [চাকদহ পূর্বাচল বিদ্যাপীঠ]

উত্তর: শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে কলমকে তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর বলা হয়েছে।

18. রবীন্দ্রনাথের চিত্রশিল্পের সূচনা হয়েছিল কীভাবে? [কারমেল হাই স্কুল]

উত্তর:  রবীন্দ্রনাথের চিত্রশিল্পের সূচনা হয়েছিল হাতে লেখা পান্ডুলিপির পাতায় অক্ষর কাটাকুটি করতে গিয়ে।

3. Short Question Answer

1. “ফাউন্টেন পেনও হয়তো আভাসে ইঙ্গিতে তাই বলতে চায়।”- আভাস ইঙ্গিতটি কীরকম? [সেন্ট জন’স ডায়াশেসন গার্লস এইচ এস স্কুল] 

উত্তর: শ্রীপান্থ তাঁর ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে মন্তব্য করেছেন, ফাউন্টেন পেন হয়তো আভাসে ইঙ্গিতে বলতে চায় যে, কলম তরোয়ালের চেয়ে শক্তিশালী।

2. কোন্ প্রবীণ কবি বা লেখক কলমের বদলে টাইপরাইটারে লিখেছেন? [বারাসাত এমজিএম হাই স্কুল]

উত্তর:  শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, অন্নদাশঙ্কর রায় কলমের বদলে টাইপরাইটারে লিখেছেন।

3. আধুনিক যুগে নিবের কলম ব্যবহার করতেন কোন্ বিখ্যাত বাঙালি লেখক?

উত্তর:  শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, আধুনিক যুগে নিবের কলম ব্যবহার করতেন সত্যজিৎ রায়।

4. এই দেখো। নিব ঠিক আছে।”-কোন্ ঘটনায় দোকানদার এরূপ বলেছিলেন?

উত্তর:  একটি কাঠের বোর্ডের দিকে একটা পাইলট পেনের খাপটি খুলে পেনটা ছুঁড়ে দিয়ে দোকানদার দেখিয়েছিলেন পেনটার নিবটা অক্ষতই আছে। এই ঘটনার পরিপেক্ষিতেই তিনি আলোচ্য মন্তব্যটি করেছিলেন।

5. কলমের দুনিয়ায় সত্যিকারের বিপ্লব কীভাবে ঘটেছে?

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় লেখক বলেছেন কলমের দুনিয়ায় সত্যিকারের বিপ্লব ঘটেছে ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারের ফলে।

 6. পাঠ্য ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনাটি কোন্ গ্রন্থের অন্তর্গত?

উত্তর:  পাঠ্য ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনাটি নিখিল সরকার রচিত কালি আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই গ্রন্থের অন্তর্গত।

7. কালি আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই গ্রন্থটি ছাড়া নিখিল সরকার রচিত অপর দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তর:  কালি আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই গ্রন্থটি ছাড়া নিখিল সরকার রচিত অপর দুটি গ্রন্থ হল যখন ছাপাখানা এলো, মেটিয়াবুরুজের নবাব।

৪. “লেখে তিন জন।”- এই ‘তিন জন’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? [হালতু আর্য্য বিদ্যালয়]

উত্তর:  শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় ব্যবহৃত উদ্ধৃতাংশে তিন জন বলতে কালি, কলম এবং মনকে বোঝানো হয়েছে।

9. লেখক যেখানে কাজ করেন সেটা কীসের অফিস এবং সবাই সেখানে কী?

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় লেখক শ্রীপান্থ যেখানে কাজ করেন সেটা লেখালেখির অফিস এবং সেখানে সবাই লেখক।

10. লেখকের অফিসে লেখক ছাড়া সকলের সামনে কী থাকে?

উত্তর:  লেখকের অফিসে লেখক ছাড়া সকলের সামনে চৌকো আয়নার মতো একটা কাচের স্ক্রিন বা পরদা অর্থাৎ কম্পিউটার থাকে।

11. “লেখকরা অনবরত তা দিয়ে লিখে চলেছেন”- ‘তা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর:  শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে ‘তা’ বলতে ছাপা হরফ-সহ কম্পিউটারের কি-বোর্ডকে বোঝানো হয়েছে।

12. লেখক একদিন অফিসে কলম নিয়ে যেতে ভুলে গেলে ‘তবেই বিপদ’ কেন বলেছেন?

উত্তর:  এক্ষেত্রে বিপদ হল লেখক ছাড়া তাঁর অফিসে কেউ লেখার কাজে

কলম ব্যবহার করেন না। এমনকি কারও কাছে কলম পাওয়া গেলেও সেই ভোঁতা মুখের কলমে লিখে লেখক সুখ পান না।

13. “দায়সারা ভাবে কোনও মতে সেদিনকার মতো কাজ সারতে হয়।” ‘দায়সারা’ কথাটি ব্যবহার করেছেন কেন?

উত্তর:  অফিসে লেখকই একমাত্র কলম ব্যবহার করতেন। তাই কোনোদিন অফিসে কলম নিয়ে যেতে ভুলে গেলে কারও ভোঁতা মুখের কলমেই অগত্যা কাজ চালাতে হত তাঁকে।

14. কালগুণে বুঝিবা আজ আমরাও তা-ই।”-‘আমরাও তা-ই’ বলতে লেখক কী বলেছেন?

উত্তর:  বাংলার এক প্রচলিত প্রবাদ ছিল ‘কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি’। কম্পিউটারের বহুল ব্যবহারের ফলে লেখক বলেছেন কালি ও কলম ছাড়া এখন সবাই মুনশি বা লেখক হয়ে উঠেছে।

15. বড়োরা শিখিয়ে দিয়েছিলেন” বড়োরা কী শিখিয়েছিলেন?

উত্তর:  ছোটোবেলায় কলম তৈরি করার সময় বড়োরা শিখিয়েছিলেন বাঁশের কঞ্চির ছুঁচোলো মুখটা চিরে দিতে, তবেই কালি একসঙ্গে না গড়িয়ে ধীরে ধীরে পড়বে।

16. লেখকদের শৈশবে লেখার পাত কেমন ছিল?

উত্তর:  শৈশবে লেখকদের লেখার পাত বলতে ছিল কলাপাতা। এটিকে কাগজের মতো ব্যবহার করে তাতে লেখক ও তাঁর সহপাঠীরা হোমটাস্ক করতেন।

17. কলাপাতায় হোমটাস্ক করার পর সেগুলি নিয়ে শৈশবে লেখকরা কী করতেন?

উত্তর:  লেখকরা কলাপাতায় হোমটাস্ক করে সেগুলি বান্ডিল বেঁধে স্কুলে নিয়ে গিয়ে মাস্টারমশাইকে দেখাতেন। মাস্টারমশাই সেগুলো দেখার পর আড়াআড়িভাবে ছিঁড়ে ফেরত দিলে তাঁরা সেটা পুকুরে ফেলে দিতেন।

18. “গোরুকে অক্ষর খাওয়ানোও নাকি পাপ।”- তাই লেখকরা শৈশবে কী করতেন?

উত্তর:  শৈশবে লেখকরা মাস্টারমশাইয়ের ফেরত দেওয়া ছেঁড়াখোঁড়া কলাপাতার টুকরোগুলি পুকুরে ফেলে দিতেন। কারণ সেযুগে মনে করা হত ওগুলো গোরু খেলে অমঙ্গল হবে।

19. কালি তৈরির উৎকৃষ্ট পদ্ধতি সম্পর্কে প্রচলিত প্রবাদটি লেখো।

উত্তর:  কালি তৈরির বিষয়ে প্রচলিত প্রবাদটি হল- “তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা/ছাগ দুগ্ধে করি মেলা/লৌহপাত্রে লোহায় ঘসি/ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।”

20. বড়োদের সাহায্য নিয়ে শৈশবে লেখকরা কীভাবে নিজেরাই কালি তৈরি করতেন?

অথবা, “আমাদের ছিল সহজ কালি তৈরি পদ্ধতি।”-সহজ পদ্ধতিটি কী ছিল?

উত্তর: কাঠের উনুনে ব্যবহার করা কড়াইয়ের নীচে জমে থাকা কালি লাউ পাতা দিয়ে ঘষে তুলে, একটা পাথরের বাটিতে জলে গুলে নিয়ে শৈশবে লেখকরা নিজেরাই কালি তৈরি করতেন।

21. “বলতে গেলে তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি।”- কী কী নিয়ে প্রথম লেখালেখি ছিল?

উত্তর:  বাঁশের কলম, মাটির দোয়াত, ঘরে তৈরি কালি এবং লেখার জন্য কলাপাতা-এগুলি নিয়েই শৈশবে লেখকের প্রথম লেখালেখি ছিল।

22. “তখন মনে কষ্ট হয় বইকী!”- কী কারণে মনে কষ্ট হয়েছে?

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনার লেখক শ্রীপান্থ কলম ক্রমশ উধাও হয়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়ায় মনে কষ্ট পেয়েছেন।

23. ফিনিসীয় হলে লেখক কী করতেন?

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় লেখক জানিয়েছেন, তিনি ফিনিসীয় হলে বনপ্রান্ত থেকে হাড় কুড়িয়ে তাকে কলম হিসেবে ব্যবহার করতেন।

24. “এমনকী আমি যদি রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হতাম।”- কোন্ রোমান অধীশ্বরের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনার আলোচ্য অংশে রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হিসেবে জুলিয়াস সিজারের কথা বলা হয়েছে।

25. স্টাইলাস কী? [বারাসাত মহাত্মা গান্ধি মেমোরিয়াল হাই স্কুল;হাওড়া যোগেশচন্দ্র গার্লস স্কুল]

উত্তর:  ব্রোঞ্জের সরু কাঠি বা শলাকার পোশাকি নাম স্টাইলাস। প্রাচীন রোমে কলম হিসেবে ব্রোঞ্জের শলাকা ব্যবহার করা হত।

26. স্টাইলাসকে ঘিরে রোমের ইতিহাসের কোন্ ঘটনার কথা লেখক বলেছেন?

উত্তর:  স্টাইলাস বা ব্রোঞ্জের এক শলাকা দিয়ে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার কাসকাকে আঘাত করেছিলেন। সে-কথাই লেখক এখানে বলেছেন।

 27. পালক কেটে কলম তৈরি করার জন্য সাহেবরা কী করেছিলেন?

উত্তর:  পালক কেটে কলম তৈরি করার জন্য সাহেবরা পেনসিল শার্পনারের মতো এক ধরনের যন্ত্র তৈরি করেছিলেন। কলম বানানোর জন্য তাতে ব্লেড ছিল।

28. “কিন্তু সে সব ফাঁকি মাত্র।” -এই উক্তির তাৎপর্য কী?

উত্তর:  পালক কলম এবং দোয়াত কলমের পরিবর্তে অফিসে ছদ্মবেশী বল- পেন সাজানো থাকে, যাকে লেখক বলেছেন ‘ফাঁকি মাত্র’।

29. “কিছুকাল আগে একজন বিদেশি সাংবাদিক লিখেছিলেন…”- কী লিখেছিলেন? [জগৎপুর আদর্শ বিদ্যামন্দির]

উত্তর:  কিছুকাল আগে একজন বিদেশি সাংবাদিক লিখেছিলেন যে, কলকাতার চৌরঙ্গিতে তিন জন ফেরিওয়ালার মধ্যে এক জন কলমবিক্রেতা।

30. “দার্শনিক তাঁকেই বলে”- দার্শনিক কাকে বলা হয়?

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় লেখকের মতে যিনি কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন তাকেই দার্শনিক বলা হয়।

31. “কেউ কেউ অবশ্য চুলেও কলম ধারণ করেন।”- এই প্রসঙ্গে শ্রীপান্থ কী উদাহরণ দিয়েছেন?

উত্তর:  আলোচ্য প্রসঙ্গে শ্রীপান্থ উদাহরণ দিয়েছেন, ভিড় ট্রাম বা বাস থেকে নামার সময় দেখা যায়, কোনো কোনো মহিলা যাত্রীর খোঁপায় কলম গোঁজা রয়েছে।

32. “কলম এখন সর্বজনীন।”- তাৎপর্য কী?

উত্তর:  সস্তা এবং সর্বভোগ্য হওয়ার ফলে ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় কলম সম্পর্কে লেখক এমন মন্তব্য করেছেন।

33. “কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য।”- অস্পৃশ্য কেন?

উত্তর:  কলম অতি সস্তা এবং সর্বভোগ্য হওয়ার ফলে পকেটমারও এখন কলম চুরি করে না। তাই বলা হয়েছে তাদের কাছে কলম অস্পৃশ্য।

34. “কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য।”- কাদের কাছে?

উত্তর: ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় লেখক বলেছেন, কলম সস্তা হয়ে যাওয়ার ফলে হাত সাফাইয়ের কাজে নিযুক্ত পকেটমারদের কাছে কলম অস্পৃশ্য হয়ে যায়।

35. প্রথমে ফাউন্টেন পেনের নাম কী ছিল? [চাকদহ রামলাল একাডেমি]

উত্তর:  শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় জানা যায় প্রথমে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল রিজার্ভার পেন।

36. “আমি ছিলাম কালি কলমের ভক্ত।”-এখানে কী বলতে চেয়েছেন লেখক?

উত্তর:  লেখক পুরোনো দিনের দোয়াত-ভরা কালি আর নিবের ভক্ত ছিলেন। আলোচ্য অংশে লেখক সেই কথাটিই বলতে চেয়েছেন।

37. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে দোয়াতে এবং বোতলে তৈরি করে রাখা কালির কী কী নাম পেয়েছ?

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে দোয়াতে এবং বোতলে তৈরি করে রাখা কালির কাজল কালি, সুলেখা ইত্যাদি নাম পেয়েছি।

38. বিদেশে উন্নত ধরনের নিব টেকসই করার জন্য কী দিয়ে বানানো হত?

উত্তর: বিদেশে উন্নত ধরনের নিব টেকসই করার জন্য গোরুর শিং অথবা কচ্ছপের খোল কেটে বানানো হত।

39. “ক্রমে হঠিয়ে দেওয়া হলো দোয়াত আর কলমকে।”- কীভাবে হঠিয়ে দেওয়া হল?

উত্তর:  ফাউন্টেন পেনের সস্তা, দামি, উন্নত নানা ধরনের সম্ভার বাজারে আসার ফলে দোয়াত এবং কলম ক্রমশ বাজার থেকে হটে গেল।

40. একসময় লেখা শুকোনো হত কী দিয়ে?

উত্তর:  শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনা থেকে জানা যায়, প্রথমে বালি এবং পরে ব্লটিং পেপারে একসময় লেখা শুকোনো হত।

41. “না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত।” -কী প্রসঙ্গে লেখক এরূপ বলেছেন?

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় দোয়াতের বৈচিত্র্য প্রসঙ্গে লেখক এ কথা বলেছেন।

42. গ্রামে কেউ দু-একটা পাস করতে পারলে বুড়োবুড়িরা কী বলে আশীর্বাদ করতেন?

উত্তর:  গ্রামে কেউ দু-একটা পাস করতে পারলে বুড়োবুড়িরা তাকে ‘সোনার দোয়াতকলম হোক’ বলে আশীর্বাদ করতেন।

43. “সোনার দোয়াত কলম যে সত্যিই হতো” তা লেখক কীভাবে জেনেছিলেন?

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনা থেকে জানা যায়, সোনার দোয়াতকলম যে সত্যিই হত তা লেখক জেনেছিলেন সুভো ঠাকুরের দোয়াতের সংগ্রহ দেখে।

44. সুভো ঠাকুরের দোয়াতের সংগ্রহ দেখে অবাক হয়ে মনে মনে লেখক কী ভেবেছিলেন?

উত্তর:  লেখক অবাক হয়ে মনে মনে ভেবেছিলেন, এই ধরনের দোয়াতের কালি ও কলম দিয়েই শেকসপিয়র, দান্তে, মিল্টন, কালিদাস, কাশীরাম, রবীন্দ্রনাথ প্রমুখ সাহিত্যিক তাঁদের অমর রচনা লিখে গিয়েছেন।

45. “ক্রমে তা-ও বুঝিবা যায় যায়।”- কেন লেখক এরূপ বলেছেন?

উত্তর: যন্ত্রযুগের উন্নতির কারণে ফাউন্টেন পেনও তার আধিপত্য এবং বাজারজোড়া সর্বজনীন রূপ হারিয়ে বল-পেনের জয় দেখতে চলেছে। সেই প্রসঙ্গেই লেখক এরূপ বলেছেন।

46. ফাউন্টেন পেন বিক্রি করে এমন একটি কোম্পানি গর্ব প্রকাশ করে কী বিজ্ঞাপন দিয়েছিল?.

উত্তর:  ফাউন্টেন পেন বিক্রি করে, এমন একটি কোম্পানি গর্ব করে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল যে, তাদের তহবিলে সাতশো রকমের নিব থাকে।

47. “যন্ত্রযুগ সকলের দাবি মেটাতেই তৈরি।”-উক্তিটির প্রসঙ্গ লেখো।

উত্তর:  গায়ক, শিল্পী, শ্রুতিলেখক, বাম হাতে লেখা লোক, এমনকি ধনী ব্যক্তি-সকলের আলাদা আলাদা নিবের চাহিদা পূরণ করা প্রসঙ্গে এরূপ বলা হয়েছে।

48. “আশ্চর্য, সবই আজ অবলুপ্তির পথে।”-কী আজ অবলুপ্তির পথে?

উত্তর: ফাউন্টেন পেন থেকে বল পয়েন্ট পেন-সবই আজ অবলুপ্তির পথে। কম্পিউটার যুগে কলমের ব্যবহার কমতে থাকায় লেখক এই কথা বলেছেন।

49. “আমার মতো আরো কেউ কেউ নিশ্চয় বিপন্ন বোধ করছেন।”- কী বিষয়ে বিপন্ন বোধের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:  লেখকের মতো যারা কলম ব্যবহার করেন তাদের বিপন্ন অবস্থা, কারণ কম্পিউটারের দৌলতে কলম আজ ক্রমশ অবলুপ্তির পথে।

50. “কিন্তু ইতিহাসে ঠাঁই কিন্তু তার পাকা।”-লেখক কী প্রসঙ্গে এরূপ বলেছেন?

উত্তর:  ইতিহাসে কলমের স্থান পোক্ত। কারণ প্রাচীন কাল থেকে কলম শিক্ষা-শিল্প-সংস্কৃতিকে ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ করেছে।

51. ক্যালিগ্রাফিস্ট বা লিপিকুশলী কাদের বলা হয়?

উত্তর:  পারদর্শী লিপিকর বা ক্যালিগ্রাফিস্টদের বলা হয় লিপিকুশলী।

52. “সমানি সম শীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ।”- বাংলা অর্থ কী?

উত্তর: শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনার অন্তর্গত থেকে প্রশ্নোদৃত উক্তিটির বাংলা অর্থ হল-“সব অক্ষর সমান, প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল, পরিচ্ছন্ন।”

4. Long Question Answer

1. “কথায় বলে-কালি কলম মন, লেখে তিন জন।”-উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:  শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে স্বয়ং লেখক অতিপ্রচলিত উদ্ধৃত প্রবাদটি উল্লেখ করেছেন। হারিয়ে যাওয়া কালি কলম সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়েই লেখকের এরূপ মনে হয়েছে। আলোচ্য প্রবন্ধে এই মন্তব্যটির একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। মানুষের মনের ভাব ও ভাবনা কলমের সাহায্যে কালির রেখায় সাদা কাগজের ওপর জীবন্তরূপ লাভ করে। সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই মানুষ তার মনের কথাকে ভবিষ্যতের মানুষের জন্য রেখে যাওয়ার উদ্দেশ্যে লেখার সামগ্রী ব্যবহার করে আসছে। এই পথ ধরেই কালি আর কলম এসেছে আমাদের সভ্য জগতে। কলম মানুষের আবেগকে প্রকাশ করে। তাকে হাতে নিয়ে মানুষ মনের নানা ভাবনাকে প্রকাশ্য করে তোলে। কলম হল তুলি, কালি হল রং আর মন হল শিল্পী। এই তিনের মিলনে মনের গোপনে জন্ম নেওয়া ভাবনা মূর্ত হয়ে ওঠে। এমনিভাবেই লেখা হয়েছে অজস্র গ্রন্থ। অর্থাৎ সাহিত্যের যে সর্বজনীন হয়ে ওঠা, তা কালি, কলম আর মন-এই তিনের মিলনের দ্বারা সম্ভব। কলমের সাহায্যে লেখার মাহাত্ম্যকে তুলে ধরতেই লেখকের এই মন্তব্যটির অবতারণা।

2. “সবাই এখানে লেখক। কিন্তু আমি ছাড়া করও হাতে কলম নেই।”-‘এখানে’ বলতে কোথাকার কথা বলা হয়েছে? লেখক হওয়া সত্ত্বেও কারও হাতে কলম নেই কেন? ১+৪ [কারমেল হাই স্কুল; বালিগঞ্জ গভঃ হাই স্কুল] 

উত্তর:  শ্রীপান্থের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনার উল্লিখিত অংশে ‘এখানে’ বলতে যে সংবাদপত্রের অফিসে লেখক কাজ করতেন সেখানকার কথা বলা হয়েছে।

 ▶ সংবাদপত্রে অফিস আসলে ‘লেখালেখির’ অফিস। সবাই সেখানে লেখার কাজই করে থাকেন। কিন্তু ‘কালি কলম মন, লেখে তিন জন’-এ কথা বলা হলেও নিজের কর্মক্ষেত্রে কলমের উপস্থিতি লেখক দেখতে পাচ্ছিলেন না। একমাত্র তিনি ছাড়া আর কেউই কলমের ব্যবহার করতেন না। কম্পিউটারই ছিল সকলের অবলম্বন। সকলের সামনে ছিল চৌকো আয়নার মতো একটা কাচের পর্দা, তার নীচে একটা কি-বোর্ড। এই বোর্ডের প্রত্যেকটি বোতামে ছাপা আছে একটি হরফ। আর লেখকের সহকর্মীরা অনবরত তার সাহায্যে লিখে চলেছেন। মাঝে মাঝে লেখা থামিয়ে সেই পর্দার দিকে তাকাচ্ছেন। যা লেখা হয়ে গিয়েছে তা সেই পর্দায় দেখা যাচ্ছে। এ এক নতুন লেখালেখির পদ্ধতি। কলম সেখানে প্রয়োজনহীন। কম্পিউটারের এই ব্যবহার এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, কোনোদিন কলম না নিয়ে গেলে একটা কলম জোগাড় করাই সমস্যার হয়ে যেত। নতুন যুগের এই লেখার পদ্ধতিকে সময়ের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সকলে গ্রহণ করে নেওয়াতেই কলম অপ্রয়োজনীয় বস্তু হয়ে পড়েছিল।

3. “তাই কেটে কাগজের মতো সাইজ করে নিয়ে আমরা তাতে ‘হোম টাস্ক’ করতাম।”-কীসে ‘হোম টাস্ক’ করা হতো? ‘হোম টাস্ক’ করার সম্পূর্ণ বিবরণ দাও। ১+৪

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক কলাপাতা কেটে তাতে হোমটাস্ক করার কথা বলেছেন।

▶ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় লেখক তাঁর শৈশবজীবনের লেখালেখির সূচনার এক চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন। গ্রামজীবনের সঙ্গে যাঁদের শৈশব যুক্ত, লেখকের সমবয়সি সেইসব মানুষ তাঁর এই বর্ণনার সঙ্গে একমত এবং একাত্ম হতে পারবেন-এই আশা প্রকাশ করে লেখক তাঁর বর্ণনাটি করেছেন। শৈশবে লেখক সরু বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করতেন। বড়োদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি কলমের মাথাটা একটু চিরে দিতেন, ফলে কালি আস্তে আস্তে গড়িয়ে পড়ত। লেখা হত কলাপাতায়। কাগজের আকৃতিতে কলাপাতা কেটে তাতে হোমটাস্ক করে মাস্টারমশাইকে দেখিয়ে তা পুকুরে ফেলে দেওয়া হত। কলম তৈরির পাশাপাশি কালিও লেখকরা নিজেরাই তৈরি করতেন। এক্ষেত্রেও তাঁরা বড়োদের সাহায্য নিতেন। কোনোরকম আয়োজন ছাড়াই এক সহজ পদ্ধতিতে তাঁরা কালি তৈরি করতেন। কাঠের উনুনে কড়াই বসিয়ে তার তলায় জমে যাওয়া কালি তাঁরা লাউ পাতা দিয়ে ঘষে তুলে জলে গুলে নিতেন। কখনো-কখনো তার সঙ্গে হরীতকীও মেশাতেন। আবার কখনও আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে তা বেটে ওই জলের সঙ্গে মেশানো হত। তারপর ওই জলে একটা খুন্ডির গোড়ার দিক পুড়িয়ে লাল টকটকে করে ছ্যাঁকা দেওয়া হত। সবশেষে ন্যাকড়ায় ছেঁকে মাটির দোয়াতে কালি ভরা হত। এইভাবেই লেখকের শৈশবজীবনে ‘লেখালেখি’র সূচনা হয়।

4. “আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই।”-লেখকরা কীভাবে কালি তৈরি করতেন তা প্রবন্ধ অনুসরণে লেখো। [রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুল; বর্ধমান টাউন স্কুল; হাওড়া যোগেশচন্দ্র গার্লস স্কুল; পাঠভবন]

উত্তর: নিখিল সরকার ওরফে ‘শ্রীপান্থ’ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে উদ্ধৃতাংশটি ব্যবহৃত হয়েছে।

আলোচ্য প্রবন্ধে লেখক তাঁর ছেলেবেলায় কালি তৈরি নিয়ে প্রচলিত ছড়ার কথা বলেছেন। ছড়াটি হল- “তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা/ছাগ দুগ্ধে করি মেলা/লৌহপাত্রে লোহায় ঘসি/ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।” ছড়াটিতে তিল, ত্রিফলা, শিমুল গাছের ছাল, ছাগলের দুধ ইত্যাদি উপকরণের কথা আছে। এতগুলি উপকরণ জোগাড় করে কালি তৈরি করা খুব সহজ কাজ ছিল না। তাই লেখক অন্য সহজ পথ ধরেন। লেখকের বাড়িতে কাঠের আগুনে রান্না হত। তাতে কড়াইয়ের তলায় প্রচুর কালি জমত। লাউ পাতা দিয়ে তা ঘষে তুলে, পাথরের বাটিতে জলে গুলে রাখা হত। যারা কালি তৈরিতে ওস্তাদ তারা এই কালো জলে হরীতকী ঘষত। কখনো-কখনো আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে এবং তা বেটে সেই জলে মেশানো হত। এইসব ভালো করে মিশিয়ে একটা খুন্তির গোড়ার দিক পুড়িয়ে লাল করে সেই জলে স্পর্শ করালে তা টগবগ করে ফুটত। তারপর ন্যাকড়ায় ছেঁকে মাটির দোয়াতে ভরে নিলেই তৈরি হয়ে যেত কালি।

5. “বলতে গেলে তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি।”-শৈশবের কোন্ বর্ণনা লেখক দিয়েছেন?

অথবা,

 “তাই দিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি”-লেখকের প্রথম লেখালেখির আয়োজনের পরিচয় দাও।

উত্তর: ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় লেখক তাঁর শৈশবজীবনের লেখালেখির সূচনার এক চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন। গ্রামজীবনের সঙ্গে যাঁদের শৈশব যুক্ত, লেখকের সমবয়সি সেইসব মানুষ তাঁর এই বর্ণনার সঙ্গে একমত এবং একাত্ম হতে পারবেন-এই আশা প্রকাশ করে লেখক তাঁর বর্ণনাটি করেছেন। শৈশবে লেখক সরু বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করতেন। বড়োদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি কলমের মাথাটা একটু চিরে দিতেন, ফলে কালি আস্তে আস্তে গড়িয়ে পড়ত। লেখা হত কলাপাতায়।

কাগজের আকৃতিতে কলাপাতা কেটে তাতে হোমটাস্ক করে মাস্টারমশাইকে দেখিয়ে তা পুকুরে ফেলে দেওয়া হত। কলম তৈরির পাশাপাশি কালিও লেখকরা নিজেরাই তৈরি করতেন। এক্ষেত্রেও তাঁরা বড়োদের সাহায্য নিতেন। কোনোরকম আয়োজন ছাড়াই এক সহজ পদ্ধতিতে তাঁরা কালি তৈরি করতেন। কাঠের উনুনে কড়াই বসিয়ে তার তলায় জমে যাওয়া কালি তাঁরা লাউ পাতা দিয়ে ঘষে তুলে জলে গুলে নিতেন। কখনো-কখনো তার সঙ্গে হরীতকীও মেশাতেন। আবার কখনও আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে তা বেটে ওই জলের সঙ্গে মেশানো হত। তারপর ওই জলে একটা খুন্তির গোড়ার দিক পুড়িয়ে লাল টকটকে করে ছ্যাঁকা দেওয়া হত। সবশেষে ন্যাকড়ায় ছেঁকে মাটির দোয়াতে কালি ভরা হত। এইভাবেই লেখকের শৈশবজীবনে ‘লেখালেখি’র সূচনা হয়।

6. “ভাবি, আচ্ছা, আমি যদি জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মাতাম!”- কোন্ প্রসঙ্গে লেখকের এই ভাবনা? জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মালে তিনি কী করতেন?

উত্তর: লেখক শ্রীপান্থ ছেলেবেলায় বাঁশের কলম, মাটির দোয়াত, ঘরে তৈরি কালি আর কলাপাতা নিয়ে লেখালেখি শুরু করেছিলেন। ফেলে আসা দিনের কথা মনে করতে গিয়ে তিনি আলোচ্য প্রসঙ্গটির অবতারণা করেছেন। কম্পিউটারের ব্যবহার অত্যন্ত বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কলমের ব্যবহার কমতে থাকে। কলমের এই দুরবস্থায় লেখকের মন ব্যথিত হয়েছে। শৈশবের লেখালেখির দিনগুলোর কথা তাঁর মনে পড়েছে। সেই সঙ্গে ইতিহাসের পথ ধরে তিনি পরিক্রমা করেছেন। এই প্রসঙ্গেই তাঁর মনে উল্লিখিত ভাবনাটি এসেছে।

▶ লেখক ভেবেছেন, তাঁর যদি প্রাচীন মিশরে জন্ম হত, তাহলে তিনি নীল নদের তীর থেকে নলখাগড়া ভেঙে নিয়ে এসে সেটিকে ভোঁতা করে তুলি বানিয়ে লিখতেন। আবার বাঙালি না হয়ে তিনি যদি হতেন প্রাচীন সুমেরীয় বা ফিনিসীয় তাহলে তাঁকে অন্যভাবে কলম বানাতে হত। ফিনিসীয় হলে হয়তো বন থেকে একটা হাড় কুড়িয়ে এনে তা-ই দিয়েই একটা কলম বানিয়ে নিতেন। লেখক ভেবেছেন, রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হলে তিনি জুলিয়াস সিজারের মতো ব্রোঞ্জের শলাকা বা স্টাইলাস ব্যবহার করতেন। সিজার যে কলমটি দিয়ে কাসকাকে আঘাত করেছিলেন, সেটি আসলে ছিল ব্রোঞ্জের ধারালো শলাকা। চিনাদের কলম অবশ্য তুলি। এইভাবে লেখক কলম আবিষ্কারের প্রাগৈতিহাসিক যুগে ফিরে যেতে চেয়েছেন।

7. “কাল গুণে বুঝি বা আজ আমরাও তা-ই।”-এখানে কোন্ বিশেষ অবস্থার কথা বলা হয়েছে? এহেন অবস্থার কারণ কী? ২+৩

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপান্থ বলেছেন- “কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি!” আধুনিক যুগেও কম্পিউটার নির্ভরতার কারণে কলম তার গুরুত্ব হারিয়েছে। কলমের সঙ্গে সংযোগহীন এই অবস্থার কথাই লেখক এখানে বলেছেন।

▶ ‘কালি কলম মন, লেখে তিন জন’-লেখক এ কথাকে মন থেকে বিশ্বাস করতেন। কিন্তু বাস্তবে কলমের অভাব তাঁকে কষ্ট দিয়েছে। সংবাদপত্র অফিসে তাঁর কাজ। কিন্তু একমাত্র প্রবন্ধকার ছাড়া আর কারও কাছেই কলম নেই। সকলের সামনেই রয়েছে কম্পিউটারের মনিটর, আর হাতের কাছে কি-বোর্ড। সেখানে বোতামে ছাপা রয়েছে একটি করে হরফ, যাতে লেখকের সহকর্মীরা হাত লাগিয়ে টাইপ করে চলেছেন আর পর্দার দিকে তাকাচ্ছেন। এরকম অবস্থায় প্রবন্ধকার যদি কোনোদিন কোনো কারণে কলম নিয়ে যেতে ভুলে যান তাহলে বিপদ, কারণ কারও কাছেই কলম চেয়ে পাওয়া যায় না। যদিও বা পাওয়া যায়, তা ব্যবহার-অযোগ্য-কোনোভাবে কাজ সারতে

হয়। অথচ তাঁদের অফিস ‘লেখালেখির অফিস’ হিসেবেই পরিচিত। অন্যভাবে এ হল ‘লেখকের কারখানা’। এই পরিবেশে লেখক নিজেকে ‘কলম ছাড়া মুনশি’র সঙ্গে তুলনা করেছেন। আজকাল মানুষের যন্ত্রনির্ভরতা তাকে তার পুরোনো অভ্যাস ও গৌরব থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে। তাই যথেষ্ট চিন্তিত এবং হতাশ হয়েই প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যটি করেছেন।

8. “আমরা এত কিছু আয়োজন কোথায় পাব।”-কোন্ কোন্ আয়োজনের কথা বলা হয়েছে? তাঁরা কীভাবে কালি তৈরি করতেন? +৩

উত্তর: প্রাচীন মানুষেরা কালি তৈরি প্রসঙ্গে বলতেন- “তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা/ছাগ দুগ্ধে করি মেলা/লৌহপাত্রে লোহায় ঘসি/ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।” কালি তৈরির এইসব আয়োজনের কথাই আলোচ্য প্রবন্ধে বলা হয়েছে। তিল, ত্রিফলা, শিমুল গাছের ছাল, ছাগলের দুধ, লৌহপাত্র ইত্যাদি উপকরণ সংগ্রহ করা তখন খুব সহজ ছিল না।

▶ আলোচ্য প্রবন্ধে লেখক তাঁর ছেলেবেলায় কালি তৈরি নিয়ে প্রচলিত ছড়ার কথা বলেছেন। ছড়াটি হল- “তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা/ছাগ দুগ্ধে করি মেলা/লৌহপাত্রে লোহায় ঘসি/ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।” ছড়াটিতে তিল, ত্রিফলা, শিমুল গাছের ছাল, ছাগলের দুধ ইত্যাদি উপকরণের কথা আছে। এতগুলি উপকরণ জোগাড় করে কালি তৈরি করা খুব সহজ কাজ ছিল না। তাই লেখক অন্য সহজ পথ ধরেন। লেখকের বাড়িতে কাঠের আগুনে রান্না হত। তাতে কড়াইয়ের তলায় প্রচুর কালি জমত। লাউ পাতা দিয়ে তা ঘষে তুলে, পাথরের বাটিতে জলে গুলে রাখা হত। যারা কালি তৈরিতে ওস্তাদ তারা এই কালো জলে হরীতকী ঘষত। কখনো-কখনো আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে এবং তা বেটে সেই জলে মেশানো হত। এইসব ভালো করে মিশিয়ে একটা খুন্তির গোড়ার দিক পুড়িয়ে লাল করে সেই জলে স্পর্শ করালে তা টগবগ করে ফুটত। তারপর ন্যাকড়ায় ছেঁকে মাটির দোয়াতে ভরে নিলেই তৈরি হয়ে যেত কালি।

9. “আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই।” কারা কালি তৈরি করতেন? তাঁরা কীভাবে কালি তৈরি করতেন?

▶ শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় লেখক ও তাঁর সহপাঠীরা কালি তৈরি করতেন।

▶ আলোচ্য প্রবন্ধে লেখক তাঁর ছেলেবেলায় কালি তৈরি নিয়ে প্রচলিত ছড়ার কথা বলেছেন। ছড়াটি হল- “তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা/ছাগ দুগ্ধে করি মেলা/লৌহপাত্রে লোহায় ঘসি/ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।” ছড়াটিতে তিল, ত্রিফলা, শিমুল গাছের ছাল, ছাগলের দুধ ইত্যাদি উপকরণের কথা আছে। এতগুলি উপকরণ জোগাড় করে কালি তৈরি করা খুব সহজ কাজ ছিল না। তাই লেখক অন্য সহজ পথ ধরেন। লেখকের বাড়িতে কাঠের আগুনে রান্না হত। তাতে কড়াইয়ের তলায় প্রচুর কালি জমত। লাউ পাতা দিয়ে তা ঘষে তুলে, পাথরের বাটিতে জলে গুলে রাখা হত। যারা কালি তৈরিতে ওস্তাদ তারা এই কালো জলে হরীতকী ঘষত। কখনো-কখনো আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে এবং তা বেটে সেই জলে মেশানো হত। এইসব ভালো করে মিশিয়ে একটা খুন্তির গোড়ার দিক পুড়িয়ে লাল করে সেই জলে স্পর্শ করালে তা টগবগ করে ফুটত। তারপর ন্যাকড়ায় ছেঁকে মাটির দোয়াতে ভরে নিলেই তৈরি হয়ে যেত কালি।

10. পালকের কলম তো দূরস্থান, দোয়াতকলমই বা আজ কোথায়!”- পালকের কলম সম্পর্কে লেখক কী জানিয়েছেন? দোয়াতকলম প্রসঙ্গে লেখক কী বলেছেন? ৩+২ [সেন্ট জন’স ডায়াশেসন গার্লস এইচএস স্কুল]

উত্তর: আজকাল কলম এবং দোয়াতের ব্যবহার কমে যাওয়া প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে লেখক শ্রীপান্থ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।

পালকের কলমকে ইংরেজিতে বলা হয় কুইল। বাঁশের কলম, খাগের কলম চলে যাওয়ার পর একসময় পালকের কলমের আধিপত্য ছিল। পাখির পালক দিয়ে তৈরি হত এই কলম। লেখক আক্ষেপ করেছেন, “পালকের কলম দেখতে হলে পুরানো দিনের তৈলচিত্র কিংবা ফটোগ্রাফ ছাড়া গতি নেই।” ঊনবিংশ শতকের প্রথমার্ধেও পালকের কলমের প্রচলন ছিল। উইলিয়াম জোন্স বা স-মুনশি কেরি সাহেবের ছবিতে দেখা যায় পালকের কলম। মিশনারিরা এবং ইংরেজ সাহেবরা পালক কেটে কলম তৈরির জন্য পেনসিল শার্পনারের মতো এক প্রকারের যন্ত্রও বানিয়েছিলেন।  

▶ লেখক দোয়াত-কলমের নানা বৈচিত্র্যের উল্লেখ করেছেন। কাচের, কাট- গ্লাসের, পোর্সেলিনের, শ্বেতপাথরের, জেডের, পিতলের, এমনকি গোরুর শিং বা সোনার দোয়াতও আগে পাওয়া যেত। লেখক নিজে সুভো ঠাকুরের দোয়াতের সংগ্রহ দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন। এমনকি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে বয়স্করা আশীর্বাদ দিতেন- “তোমার সোনার দোয়াতকলম হোক।” সেই দোয়াতকলম আজ উধাও। কোনো কোনো অফিসে গিয়ে লেখক ছদ্মবেশী দোয়াত এবং কলম টেবিলে সাজানো দেখেছেন, আসলে এই পেন হল বল- পেন।

11. ‘ফাউন্টেন পেন’ বাংলায় কী নামে পরিচিত? নামটি কার দেওয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে? ফাউন্টেন পেনের জন্ম-ইতিহাস লেখো। উত্তর ফাউন্টেন পেনের বাংলা নাম ঝরনা কলম। ১+১+৩

উত্তর: ▶ শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় নামটি সম্ভবত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

▶ পন্ডিতদের মতে, কলমের দুনিয়ায় সত্যিকারের বিপ্লব ঘটিয়েছে ফাউন্টেন পেন। কিন্তু এর জন্ম-ইতিহাসটি বেশ চমকপ্রদ।

এর আবিষ্কারক লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান। তিনি এই নতুন ধরনের কলম তৈরি করে অফুরন্ত কালির ফোয়ারা খুলে দিয়েছিলেন। সেকালের আরও

অনেক ব্যবসায়ীর মতো তিনিও দোয়াতকলম নিয়ে কাজে বের হতেন। একবার তিনি গিয়েছেন আর-একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তিপত্র সই করতে। দলিল কিছুটা লেখা হয়েছে এমন সময় দোয়াত হঠাৎ উপুড় হয়ে কাগজে পড়ে গেল। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি ছুটলেন কালির সন্ধানে। ফিরে এসে শোনেন, ইতিমধ্যে অন্য একজন তৎপর ব্যবসায়ী সইসাবুদ শেষ করে • চুক্তিপত্র পাকা করে গেছেন। এই ঘটনায় বিমর্ষ ওয়াটারম্যান মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন, এর একটা বিহিত করতেই হবে। অর্থাৎ এমন একটা পদ্ধতির খোঁজ করতে হবে যেখানে কলমের সঙ্গে কালির দোয়াত নিয়ে ঘুরতে হবে না। তারপরই আবিষ্কার করলেন ফাউন্টেন পেন। দোয়াতের যুগের অবসান ঘটিয়ে কালক্রমে এই ফাউন্টেন পেন লেখালেখির নবযুগের প্রতিষ্ঠা ঘটাল।

12. পণ্ডিতরা বলেন কলমের দুনিয়ায় যা সত্যিকারের বিপ্লব ঘটায় তা ফাউন্টেন পেন।”-ফাউন্টেন পেন কলমের দুনিয়ায় কীভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছিল তা লেখো। [উত্তরপাড়া রাষ্ট্রীয় উচ্চবিদ্যালয়] 

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে শ্রীপান্থ লেখার দুনিয়ায় ফাউন্টেন পেনের কার্যকারিতা বোঝাতে গিয়ে মন্তব্যটি করেছেন। লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান ব্যক্তিগত জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে চেয়েছিলেন দোয়াতে কলম ডুবিয়ে লেখালেখির একটা বিকল্প খুঁজে নিতে। ফাউন্টেন পেন আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে দোয়াত-কালি সঙ্গে নিয়ে ঘোরার দিনের অবসান ঘটে। এরপর দামি থেকে সস্তা-ফাউন্টেন পেনের অজস্র সংস্করণ বের হয়। ফাউন্টেন পেনের বিশেষত্বই হল তা ব্যবহারকারীকে ক্রমশ নেশাগ্রস্ত করে তোলে। লেখক শৈলজানন্দের ছিল এরকম ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা। আবার তা তিনি উত্তরাধিকারসূত্রে শরৎচন্দ্রের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। প্রথম দিকে ফাউন্টেন পেন সাধারণের নাগালের বাইরে ছিল। রকমারি চেহারার সস্তা এবং দামি ফাউন্টেন পেন বাজারে আসার পরে দোয়াতকলম ক্রমশ বাজার থেকে হটে যায়। সেগুলি হয়ে ওঠে ঘর সাজানোর উপকরণ। বাঁশের বা কঞ্চির কিংবা খাগের কলম, কালির আধার, ব্লটিং পেপার-এসব জিনিসই ক্রমে অদৃশ্য হয়ে যায়। সব পড়ুয়ার পকেটেই দেখা যায় ফাউন্টেন পেন। এভাবে একদিকে লেখা সহজসাধ্য হয়ে ওঠে, অন্যদিকে লেখার উপকরণের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়াও সম্ভব হয়। এভাবেই কলমের দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটিয়েছিল ফাউন্টেন পেন।

 13. ওয়াটারম্যান কীভাবে কালির ফোয়ারা খুলে দিয়েছিলেন?

উত্তর:  লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। অন্যান্য ব্যবসায়ীর মতো তিনিও দোয়াতকলম নিয়ে কাজে বের হতেন। একবার এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তিপত্র সই করতে গিয়ে দোয়াত থেকে কালি ফেলে দিলেন সেই দলিলে। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি শূন্য দোয়াতে কালি ভরতে ছুটলেন। কিন্তু ফিরে এসে শোনেন, ইতিমধ্যে আর-একজন ব্যবসায়ী এসে সেই চুক্তিপত্রে সই করে চুক্তি পাকা করে ফেলেছেন। হতাশ ও বিমর্ষ ওয়াটারম্যান তখনই ঠিক করলেন, তিনি এমন একটা পদ্ধতির খোঁজ করবেন যেখানে কলমের সঙ্গে কালির দোয়াত নিয়ে ঘুরতে হবে না। এইভাবেই জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন। ফাউন্টেন পেনের আগের নাম রিজার্ভার পেন। ওয়াটারম্যান তাকেই উন্নত করে তৈরি করেছিলেন ফাউন্টেন পেন। কলম হিসেবে ফাউন্টেন পেনের বিরাট প্রসার ঘটে। একটি বিজ্ঞাপনে লেখক দেখেছিলেন তাঁদের তহবিলে নাকি রয়েছে সাতশোরকম নিব। দোকানে গিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির নাম লেখক শুনেছিলেন-পার্কার, শেফার্ড, সোয়ান ইত্যাদি। লেখক উল্লেখ করেছেন, তিনি যখন কলেজে পড়তেন, তখন তাঁর সব বন্ধুর পকেটেই ছিল ফাউন্টেন পেন। সুতরাং, ওয়াটারম্যান তাঁর আবিষ্কারের পর সত্যিই যেন কালির ফোয়ারা খুলে দিয়েছিলেন।

14. . “বিমর্ষ ওয়াটারম্যান মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন-আর নয়, এর একটা বিহিত তাঁকে করতেই হবে।”-ওয়াটারম্যান কে? তিনি বিমর্ষ কেন? তাঁর প্রতিজ্ঞার ফল কী হয়েছিল?

১+২+২ [বারুইপাড়া রাখাল বিদ্যাপীঠ; রানাঘাট দেবনাথ ইন্সটিটিউশন ফর গার্লস] উত্তর লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান ছিলেন ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক।

উত্তর: ▶ ওয়াটারম্যান সেকালের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মতোই দোয়াতকলম নিয়ে কাজে বের হতেন। একবার তিনি গিয়েছিলেন অন্য একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে একটা চুক্তিপত্র সই করতে। যখন দলিল কিছুটা লেখা হয়েছে ঠিক সেই সময়ে হঠাৎই দোয়াত কাগজে উপুড় হয়ে পড়ে যায়, ফলে তাঁকে বাধ্য হয়েই

কালির সন্ধানে যেতে হয়। কালি সংগ্রহ করে ফিরে এসে দেখেন যে, অন্য একজন তৎপর ব্যবসায়ী সইসাবুদ করে চুক্তিপত্র পাকা করে চলে গেছেন। এই ঘটনাতেই ওয়াটারম্যান বিমর্ষ হয়ে যান।

▶ বিমর্ষ ওয়াটারম্যানের প্রতিজ্ঞা জন্ম দিয়েছিল ফাউন্টেন পেনের। কলমের দুনিয়ায় এই পেন বিপ্লব ঘটিয়েছিল। বাঁশের কঞ্চির কলম, খাগের কলম, পালকের কলম ইত্যাদির যুগের অবসান হল। পাশাপাশি দোয়াতে কলম ডুবিয়ে লেখার দিনও শেষ হল। ধীরে ধীরে সস্তা এবং দামি নানারকম ফাউন্টেন পেনে বাজার দখল করে নিল। সকলের কাছে এই কলম গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠল। দোয়াতকলমের যুগের অবসানে আমাদের লেখালেখি আধুনিক যুগে প্রবেশ করল। এই পরিবর্তনের মূলে ছিল ওয়াটারম্যানের প্রতিজ্ঞা।

15.. “আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন কেনার কথা।”-লেখক কোথায় ফাউন্টেন কিনতে গিয়েছিলেন? তাঁর কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল? ১+৪ [রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়, নরেন্দ্রপুর; হালতু আর্য্য বিদ্যালয়] 

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় লেখক জানিয়েছেন কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটি নামি দোকানে তিনি ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন।

▶ ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার পেনের জগতে বিপ্লব ঘটিয়ে এক অফুরন্ত কালির ফোয়ারা খুলে দিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কয়েকবছর পরে কোনো- একদিন লেখক কলেজ স্ট্রিটের একটি নামি দোকানে ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন। দোকানদার তাঁকে পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান, পাইলট হরেক রকম পেনের নাম ও তাদের দামের কথাও বলেন। লেখকের মুখের অবস্থা দেখে আর তাঁর পকেটের অবস্থা বুঝতে পেরে দোকানদার তাঁকে একটা সস্তা জাপানি পাইলট কলম কিনতে বলেন। দোকানদার পেনটির ঢাকনা খুলে একটি কাঠের বোর্ডের ওপর ছুঁড়ে দেন। সার্কাসে

যেমন জীবন্ত মানুষের দিকে ছুরি ছুঁড়ে দেওয়ার পরও সে অক্ষত থাকে, বোর্ড থেকে খুলে দোকানদারও দেখান, পেনটার নিব অক্ষত আছে। তারপর তিনি দু-এক ছত্র লিখেও দেখান। আনুমানিক পনেরো-ষোলো বছরের কিশোর লেখকের কাছে পেনটি জাদুপেন বলেই মনে হয়। লেখক পরবর্তীকালে অনেক ফাউন্টেন পেন কিনলেও বহুদিন ওই জাপানি পাইলটটি তিনি যত্ন করে রেখেছিলেন।

16. “আমি সেদিন সেই জাদু-পাইলট নিয়েই ঘরে ফিরেছিলাম”-জাদু- পাইলটের যে কাহিনি লেখক বিবৃত করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো। অথবা, “কিন্তু অনেক দিন পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছিলাম সেই জাপানি পাইলটকে” -প্রাবন্ধিকের জাপানি পাইলট কেনার কাহিনিটি নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার পেনের জগতে বিপ্লব ঘটিয়ে এক অফুরন্ত কালির ফোয়ারা খুলে দিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কয়েকবছর পরে কোনো-একদিন লেখক কলেজ স্ট্রিটের একটি নামি দোকানে ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন। দোকানদার তাঁকে পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান, পাইলট হরেক রকম পেনের নাম ও তাদের দামের কথাও বলেন। লেখকের মুখের অবস্থা দেখে আর তাঁর পকেটের অবস্থা বুঝতে পেরে দোকানদার তাঁকে একটা সস্তা জাপানি পাইলট কলম কিনতে বলেন। দোকানদার পেনটির ঢাকনা খুলে একটি কাঠের বোর্ডের ওপর ছুঁড়ে দেন। সার্কাসে যেমন জীবন্ত মানুষের দিকে ছুরি ছুঁড়ে দেওয়ার পরও সে অক্ষত থাকে, বোর্ড থেকে খুলে দোকানদারও দেখান, পেনটার নিব অক্ষত আছে। তারপর তিনি দু-এক ছত্র লিখেও দেখান। আনুমানিক পনেরো-ষোলো বছরের কিশোর লেখকের কাছে পেনটি জাদুপেন বলেই মনে হয়। লেখক পরবর্তীকালে অনেক ফাউন্টেন পেন কিনলেও বহুদিন ওই জাপানি পাইলটটি তিনি যত্ন করে রেখেছিলেন।

17. “মুঘল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির, কত না সম্মান?”- তাঁদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাঁদের খাতির ও সম্মানের পরিচয় দাও। ১+৪ [হেয়ার স্কুল]

উত্তর:  শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনার উল্লিখিত অংশে ‘তাঁদের’ বলতে লিপি কুশলী বা ক্যালিগ্রাফিস্টদের কথা বলা হয়েছে।

▶ লিপিকুশলীরা ছিলেন লেখকের কথায় ‘ওস্তাদ কলমবাজ’। তাঁদের আর্থিক অবস্থা যে সবসময় ভালো হত তা নয়। আঠেরো শতকে চারখণ্ড রামায়ণ কপি করে একজন লিপিকার পেয়েছিলেন নগদ সাত টাকা, কিছু কাপড় আর মিঠাই। এক সাহেবের লেখা থেকে জানা যায় যে উনিশ শতকে বারো আনায় বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখানো যেত। তাঁদের সামাজিক সম্মান ছিল যথেষ্টই। মুঘল দরবারে তো বটেই, সর্বত্র, এমনকি বাংলা দেশেও রাজা- জমিদাররা তাঁদের গুণীর সম্মান দিতেন, ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করতেন। সাধারণ গৃহস্থরাও এইসব লিপিকারদের ডেকে পুঁথির নকল করাতেন। সেসব পুঁথি দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যেত। প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল এবং পরিচ্ছন্ন। মুক্তোর মতো ছিল লেখা অক্ষরগুলি। সামান্য উপার্জন করলেও সম্মান ও সমাদর তাই তাঁদের যথেষ্টই ছিল। আর সেজন্য একধরনের শিল্পীসুলভ অহংকার তাঁদের মধ্যে দেখা যেত। পুঁথি যাতে কেউ চুরি না করতে পারে তাই নিয়ে ছিল সতর্ক দৃষ্টি। খাতির, সম্মান আর আত্মমর্যাদাবোধ মিলে লিপিকররা প্রায় লেখকের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।

18. . “কলমকে বলা হয় তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর।”-বিভিন্ন প্রকার কলমের পরিচয় দিয়ে লেখকের এই মন্তব্য ব্যাখ্যা করো। ২+৩ [চাকদহ রামলাল একাডেমি]

উত্তর:  ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ রচনায় শ্রীপান্থ কলম এবং লেখালেখির বিবর্তনের কাহিনি উল্লেখ করেছেন। এই প্রসঙ্গেই তিনি বিভিন্ন রকম কলমের কথা বলেছেন। একসময় কলম তৈরি হত বাঁশের সরু কঞ্চি দিয়ে। তারপরে খাগের কলম, পশুর হাড়ের কলম, পাখির পালকের কলম, ব্রোঞ্জের কলম, তুলির কলম ইত্যাদির প্রচলন হয়। তারপরে এল ফাউন্টেন পেন। ওয়াটারম্যানের এই আবিষ্কার কলমের দুনিয়ায় বিপ্লব এনে দিল। কালিতে ডুবিয়ে লেখা কলমগুলির যুগ শেষ হল। সস্তা, দামি নানারকম ফাউন্টেন পেন বাজার দখল করে নিল। পাইলট, পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান এরকম নানা ফাউন্টেন পেন বাজারে এল। সেইসব পেনের রকমারি ও আকর্ষণীয় নিব ও হ্যান্ডেল ছিল। প্ল্যাটিনাম, সোনা ইত্যাদি দিয়েও অভিজাতদের জন্য ফাউন্টেন পেন তৈরি হত। তারপর ফাউন্টেন পেনের পরিবর্তে বাজারে এল বল-পেন। কলম তখন আরও সস্তা ও সহজলভ্য হয়ে উঠল। “কলম তরোয়ালের চেয়েও শক্তিধর”- লোকসমাজে প্রচলিত এই কথাটিকে প্রথমে সাহিত্যে ব্যবহার করেছিলেন ইংরেজ নাট্যকার এডওয়ার্ড বুলওয়ার-লিটন তাঁর Richelieu; or the Conspiracy নাটকে। এই মন্তব্য স্পষ্ট করে দেয়, যুদ্ধবাজ এবং অস্ত্রনির্ভর মানুষদের চেয়ে কবি-সাহিত্যিকদের ক্ষমতা অনেক বেশি। কলমের এই ক্ষমতার অনুষঙ্গ হিসেবেই সম্ভবত ফাউন্টেন পেনে ‘ব্যারেল’ ‘কার্টিজ’ ইত্যাদি শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। একজন শাসক যুদ্ধের দ্বারা ভূখণ্ড জিতে নিলেও, মানুষের মন জিততে পারেন না। অন্যদিকে লেখক জিতে নেন মানুষের মন। প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন, ইতিহাসে অনেক পালকের

কলমধারীকে অস্ত্র হাতেও লড়াই করতে হয়েছে। তবে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য হল- তলোয়ার যে কাজ করতে পারে না, কলম তা পারে। আর সেই কাজ হল মানবজীবনকে সুন্দরতর করে তোলা।

19. কালিকলমের প্রতি ভালোবাসা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে কীভাবে ফুটে উঠেছে? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] [দক্ষিণ খেজুরি বাণীমঞ্চ হাই স্কুল]

উত্তর:   কথামুখ: ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে কলম, দোয়াত, দোয়াতের কালি-এগুলি ঘিরে লেখকের স্মৃতিমেদুর ভালোবাসা এবং সভ্যতার কালপ্রবাহে এগুলির হারিয়ে যাওয়ার বেদনা ফুটে উঠেছে। লেখাপড়ার সঙ্গী: শৈশবে লেখকের লেখাপড়ার সঙ্গী ছিল বাঁশের কলম এবং কাগজাকৃতি কলাপাতা। বাড়ির কাঠের উনুনে কড়াইয়ের নীচে জমে যাওয়া কালি লাউ পাতা দিয়ে ঘষে একটা পাথরের বাটিতে জলে গুলে নেওয়া হত। ক্রমশ বাঁশের কলম হারিয়ে খাগের কলম, পালকের কলম প্রচলিত হতে থাকে। ফাউন্টেন পেনের আগমন: এরপর কলমের জগতে বিপ্লব নিয়ে আসে ফাউন্টেন পেন। পেন হয়ে ওঠে সস্তা আর সর্বভোগ্য। ফাউন্টেন পেনকে কেন্দ্র করে বিলাসিতাও বাড়ে। বাজারে কাজল কালি, সুলেখা কালি দোয়াত ও বোতলে বিক্রি হতে থাকে। এরপর বাজারে আসে বল-পেন। কম্পিউটারের আধিপত্য: বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কম্পিউটার এসে কলমের স্থান দখল করে। বাজার থেকে সব ধরনের পেন, কালি হারিয়ে যেতে থাকলে লেখকের মতো ‘কালি কলমের ভক্ত’ মানুষের মন কেঁদে ওঠে। শেষের কথা: কম্পিউটারের আধিপত্যকে মেনে নিলেও কলমের সঙ্গে লেখকের শৈশবজীবনের স্মৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে, যা তাঁর মনকে ভারাক্রান্ত করেছে।