Class 10 Bangla Chapter 6 Solution
বহুরূপী
1. MCQs Question Answer
১. জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসী কত দিন ধরে ছিলেন?
(ক) আট দিন
(খ) সাত দিন
(গ) চার দিন
(ঘ) দশ দিন
উত্তর: খ) সাত দিন
২. সন্ন্যাসী কোথায় থাকতেন?
ক) হিমালয়ের গুহাতে
খ) জঙ্গলে
গ) মানস সরোবরের কাছে
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর: ক) হিমালয়ের গুহাতে
৩. জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর বয়স আনুমানিক-
ক) একশো বছর
খ) পাঁচশো বছর
গ) হাজার বছরের বেশি
খ) হাজার বছরের বেশি
উত্তর: ঘ) দু-হাজার বছর
৪. জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসী সারা বছর কী খেতেন?
ক) একটি আমলকী
খ) একটি হরীতকী
গ) চারটি রুটি
ঘ) দুধ ও সাবু
উত্তর: খ) একটি হরীতকী
৫. “সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস”-দুর্লভ জিনিসটি হল-
ক) সন্ন্যাসীর আশীর্বাদ
খ) সন্ন্যাসীর সান্নিধ্য
গ) সন্ন্যাসীর পদধূলি
ঘ) সন্ন্যাসীর উপদেশ
উত্তর: গ) সন্ন্যাসীর পদধূলি
৬. কীসের জন্য হরিদার আক্ষেপ ছিল?
ক) সন্ন্যাসীর সঙ্গে না থাকতে পারার
খ সন্ন্যাসীকে নিজের বাড়ি এনে রাখতে
গ সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে না পারার না পারার
ঘ কোনোটাই নয়
উত্তর: গ) সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে না পারার
৭. জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর ঝোলায় ফেলেছিলেন-
ক পাঁচশো টাকা
খ) পঞ্চাশ টাকা
গ) দুশো টাকা
ঘ) একশো টাকা
উত্তর: ঘ) একশো টাকা
৮. সন্ন্যাসীকে নতুন খড়ম দিয়েছিলেন-
(ক) অনাদি
খ) জগদীশবাবু
গ) ভবতোষ
ঘ) হরিদা
উত্তর: খ) জগদীশবাবু
৯. জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর কাঠের খড়মে লাগিয়েছিলেন-
(ক) রূপোর বোল
(খ) মুক্তোর বোল
(গ) মূল্যবান রত্নের বোল
(ঘ) সোনার বোল
উত্তর: (ঘ) সোনার বোল
১০ সন্ন্যাসী নিজের পায়ের ধুলো দেন-
(ক) অনাদিকে
(খ) হরিদাকে
(গ) জগদীশবাবুকে
(ঘ) ভবতোষকে
উত্তর: (গ) জগদীশবাবুকে
১১. সন্ন্যাসীর গল্প শুনে হরিদার মুখভঙ্গি কীরকম হয়েছিল?
ক) উৎফুল্ল
খ) কৌতূহলী
গ) গম্ভীর
ঘ) কোনোটাই নয়
উত্তর: গ) গম্ভীর
১২. কথকদের আড্ডা বসত-
ক) হরিদার ঘরে
খ) জগদীশবাবুর বাড়িতে
গ রাস্তার ধারে
ঘ) ভবতোষের দালান বাড়িতে
উত্তর: ক) হরিদার ঘরে
১৩. হরিদার ঘরে আড্ডা দিতেন-
ক) চার জন
খ) পাঁচ জন
গ) সাত জন
ঘ) তিন জন
উত্তর: ক) চার জন
১৪. হরিদার অবস্থা কেমন ছিল?
ক) নিম্নমধ্যবিত্ত
খ) মধ্যবিত্ত
গ) গরিব
ঘ) বড়োলোক
উত্তর: গ) গরিব
১৫. কোন্ বিষয়ে হরিদার ভয়ানক আপত্তি ছিল?
ক) বহুরূপী সাজতে
খ) একঘেয়ে কাজ করতে
গ) অভাব সহ্য করতে
ঘ) কোনোটাই নয়
উত্তর: খ) একঘেয়ে কাজ করতে
১৬ কীভাবে হরিদা অল্প কিছু রোজগার করতেন?
ক) গান গেয়ে
খ) বহুরূপী সেজে
গ) দোকানে কাজ করে
ঘ) স্কুলে পড়িয়ে
উত্তর: খ) বহুরূপী সেজে
১৭ বিচিত্র সব ছদ্মবেশ ধারণ করে বহুরূপী সাজতেন-
ক) অনাদি
খ) জগদীশবাবু
গ) ভবতোষ
ঘ) হরিদা
উত্তর: ঘ) হরিদা
১৮. যারা বহরূপী বেশে হরিদাকে চিনতে পারে তারা কী করে?
ক) খেলা দেখাতে বলে
খ) গান শোনাতে বলে
গ) তাদের বহুরূপী সাজ শিখিয়ে দিতে বলে
ঘ) এক আনা বা দু-আনা বকশিশ দেয়
উত্তর: ঘ) এক আনা বা দু- আনা বকশিশ দেয়
১৯.পাগলকে দেখে আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল-
(ক) বাসস্ট্যান্ডের কাছে
(খ) অটোস্ট্যান্ডের কাছে
(গ) হরিদার বাড়ির কাছে
ঘ) জগদীশবাবুর দালান বাড়িতে
উত্তর: ক) বাসস্ট্যান্ডের কাছে
২০. বাস ড্রাইভারের নাম ছিল-
ক) হরি
খ) জগদীশ
গ) কাশীনাথ
ঘ) দেবনাথ
উত্তর: (গ) কাশীনাথ
২১. “খুব হয়েছে হরি, এই বার সরে পড়ো। অন্যদিকে যাও।”-এ কথা বলেছে
ক) ভবতোষ
খ) অনাদি
গ) কাশীনাথ
(ঘ) জনৈক বাসযাত্রী
উত্তর: (গ) কাশীনাথ
২২. কীসের ছদ্মবেশে হরিদার রোজগার একটু বেশি হয়েছিল?
ক) পুলিশ
খ) বাউল
গ) কাপালিক
ঘ) বাইজি
উত্তর: ঘ) বাইজি়
২৩. বাইজির ছদ্মবেশে হরিদার রোজগার হয়েছিল-
ক) বারো টাকা আট আনা
খ) দশ টাকা সাত আনা
গ) আট টাকা দশ আনা
ঘ) মাত্র পাঁচ টাকা
উত্তর: গ) আট টাকা দশ আনা
২৪. হরিদা বাইজি সাজলে তাঁকে একটা সিকি দিয়েছিল-
(ক) ভবতোষ
খ) বাসের ড্রাইভার মাস্টার
গ) দোকানদাব
ঘ) স্কুলের
উত্তর: গ) দোকানদাব
২৫. হরিদা কী সেজে লিচু বাগানে স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিলেন?
ক) স্কুলমাস্টার
খ) দারোয়ান
(গ) পুলিশ
(ঘ) কাবুলিওয়ালা
উত্তর: (গ) পুলিশ
২৬ যার লিচু বাগানে হরিদা পাগল সেজে দাঁড়িয়েছিলেন-
ক) দয়ালবাবু
খ) জগদীশবাবু
গ) ভবতোষবাবু
ঘ) অনাদি
উত্তর:(ক) দয়ালবাবুর
২৭. কে এসে স্কুলের ছেলেদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেলেন?
ক) দারোয়ান
খ) স্কুলমাস্টার
গ) হরিদা
ঘ) জগদীশবাবু
উত্তর:খ) স্কুলমাস্টার
২৮. “ঘুষ নিয়ে তারপর মাস্টারের অনুরোধ রক্ষা করেছিলেন সেই নকল-পুলিশ হরিদা”-ঘুষের পরিমাণ কত?
ক) চার আনা
খ) আট টাকা
(গ) আট আনা
ঘ পঁচিশ পয়সা
উত্তর:গ) আট আনা
২৯. “বরং একটু তারিফই করলেন”- তারিফ করার কারণ-
ক) হরিদা ভালো পাগল সেজেছিলেন
খ) হরিদা ভালো বাইজি
গ) হরিদা ভালো সন্ন্যাসী সেজেছিলেন
ঘ) হরিদা ভালো পুলিশ সেজেছিলেন
উত্তর:(ঘ) হরিদা ভালো পুলিশ সেজেছিলেন
৩০. হরিদা বহুরূপী সেজে যেতে চেয়েছিলেন-
ক) দয়ালবাবুর বাড়ি
খ) ভবতোষের বাড়ি
গ) অনাদির বাড়ি
ঘ) জগদীশবাবুর বাড়ি
উত্তর: ঘ) জগদীশবাবুর বাড়ি
৩১. “তোমরা সেখানে থেকো।”-‘সেখানে’ বলতে বোঝানো হয়েছে-
(ক) জগদীশবাবুর বাড়িতে
খ) স্টেশনে
গ) খেলার মাঠে
ঘ) বাসস্ট্যান্ডে
উত্তর: ক) জগদীশবাবুর বাড়িতে
৩২. কীসের চাঁদা নেওয়ার জন্য ছেলেদের জগদীশবাবুর বাড়িতে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে?
ক) স্পোর্টের
খ) দুর্গাপুজোর
গ) কালীপুজোর
ঘ) কোনোটাই নয়
উত্তর: ক) স্পোর্টের
৩৩. সন্ন্যাসীকে বিদায় দেওয়ার সময় জগদীশবাবু দিয়েছিলেন-
(ক) কাঠের খড়ম
(খ) সোনার আংটি
(গ) ধর্মগ্রন্থ
(ঘ) একশো টাকার নোট
উত্তর: (ঘ) একশো টাকার নোট
৩৪. সপ্তাহে হরিদা বহুরূপী সেজে বাইরে যান-
ক) এক দিন
খ) দু-দিন
গ) চার দিন
ঘ) পাঁচ দিন
উত্তর: খ) দুপুরবেলায়
৩৫. হরিদা চকের বাসস্ট্যান্ডে পাগল সেজেছিলেন-
ক) সকালবেলায়
খ) দুপুরবেলায়
গ) বিকালবেলায়
(ঘ) সন্ধেবেলায়
উত্তর: ঘ) মাস্টারমশাই
৩৬. “একটু তারিফই করলেন”-তারিফ করলেন-
ক) জগদীশবাবু
খ) দোকানদার
গ) সন্ন্যাসী
(ঘ) মাস্টারমশাই
উত্তর: (ঘ) মাস্টারমশাই
2. Short Question Answer
১. লেখক ও তাঁর বন্ধুরা হরিদার কাছে কোন্ ঘটনা শোনাতে এসেছিলেন?
উত্তর: সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে খুব উঁচুদরের এক সন্ন্যাসী এসেছিলেন এবং তিনি সাত দিন ধরে তাঁর বাড়িতে ছিলেন। এই খবরটাই লেখক ও তাঁর বন্ধুরা হরিদাকে শোনাতে এসেছিলেন।
২. “হরিদার কাছে আমরাই গল্প করে বললাম।”-কীসের গল্প?
উত্তর: বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসী এসেছিলেন। হরিদার কাছে সেই সন্ন্যাসীর গল্পই করা হয়েছিল।
৩. “সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস”-দুর্লভ জিনিসটি কী?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পের আলোচ্য অংশে দুর্লভ জিনিসটি হল জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো।
৪. হরিদা সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তাঁকে কী বলা হয়েছিল?
উত্তর: ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদা সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তাঁকে বলা হয়েছিল, সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো দুর্লভ জিনিস। একমাত্র জগদীশবাবু ছাড়া কেউই তাই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো পাননি।
৫. কীভাবে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো পেয়েছিলেন?
উত্তর: জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর জন্য একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে খড়মজোড়া সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরতেই সন্ন্যাসী বাধ্য হয়ে নিজের পা এগিয়ে দেন। সেই সুযোগে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়ে নেন।
৬. সন্ন্যাসী চলে যাওয়ার আগে জগদীশবাবু কী করেছিলেন?
উত্তর: সন্ন্যাসী চলে যাওয়ার আগে জগদীশবাবু কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে তাঁকে দিয়েছিলেন আর সন্ন্যাসীর ঝোলায় জোর করে একশো টাকার একটা নোট ফেলে দিয়েছিলেন।
৭. “সন্ন্যাসী হাসলেন আর চলে গেলেন”-সন্ন্যাসী কী দেখে হাসলেন?
উত্তর: ‘বহুরূপী’ গল্পে সন্ন্যাসীকে বিদায় দেবার সময় জগদীশবাবু একশো টাকার একটা নোট তাঁর ঝোলায় জোর করে ফেলে দিলেন-তা দেখে সন্ন্যাসী হাসলেন।
৮. হরিদার ঘরটা কীরকম ছিল এবং সেখানে কী হত?
উত্তর: শহরের সবচেয়ে সরু এক গলির মধ্যে হরিদার ছোটো একটা ঘর ছিল। সেখানে সকাল-সন্ধ্যা লেখকদের আড্ডা বসত। চা, চিনি, দুধ তাঁরাই আনতেন। হরিদা শুধু আগুনের আঁচে জল ফুটিয়ে দিতেন।
৯. কোন্ ধরনের কাজ হরিদার পছন্দ ছিল না?
উত্তর: বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদার কোনো অফিসের কাজ বা দোকানে বিক্রি করার কাজ পছন্দ ছিল না।
১০. হরিদা কীভাবে প্রতিদিনের অন্নসংস্থান করেন?
উত্তর: হরিদা বহুরূপী সেজে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। বহুরুপীর সাজ দেখে কেউ কেউ এক-আনা, দু-আনা বকশিশ দেয়। সেই রোজগারেই হরিদার দিন চলে।
১১. হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যটি কী ছিল?
উত্তর: হরিদা ছিলেন পেশায় বহুরূপী। তিনি কখনও পাগল সাজতেন, কখনও বাউল, কোনোদিন কাপালিক, কখনও-বা বোঁচকা কাঁধে বুড়ো কাবুলিওয়ালা সাজতেন। এটাই ছিল তাঁর জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য।
১২. “দুটো একটা পয়সা ফেলেও দিচ্ছে”-কারা, কীজন্য পয়সা ফেলে দিচ্ছে?
উত্তর: গল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদা একদিন দুপুরবেলায় চকের বাসস্ট্যান্ডের কাছে পাগল সাজলে বাসের যাত্রীরা দুটো-একটা পয়সা ছুড়ে দিচ্ছিল।
১৩. “এই বার সরে পড়ো”- কে, কাকে সরে পড়তে বলেছিল?
উত্তর: বাস ড্রাইভার কাশীনাথ জানত হরিদা বহুরূপী সাজে। আর তাই একদিন হরিদা পাগল সাজলে বাস ড্রাইভার হরিদাকে চিনতে পেরে তাঁকে সেখান থেকে সরে যেতে বলেছিল।
১৪. পাগলকে বহুরূপী বুঝতে পেরে লোকজন কী করে?
উত্তর: পাগল আসলে বহুরূপী তা বুঝতে পেরে বাসের যাত্রীরা কেউ হাসে, কেউ বিরক্ত হয়, আবার কেউ এই ভেবে অবাক হয় যে লোকটা এমন সেজেছে যে তাকে চেনাই যাচ্ছে না।
১৫. “কিন্তু দোকানদার হেসে ফেলে-হরির কান্ড”-হরির কাণ্ডটি কী?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে আলোচ্য অংশে হরিদার যে কান্ডের কথা বলা হয়েছে তা হল শহরের পথে বাইজি সেজে ঘুঙুরের আওয়াজ তুলে নাচতে নাচতে যাওয়া।
১৬. বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা কত টাকা উপার্জন করেছিল? [পাঠভবন]
উত্তর: বিশিষ্ট গল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পে রূপসি বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা আট টাকা দশ আনা উপার্জন করেছিলেন।
১৭. কোন্ বহুরূপীবেশে হরিদার রোজগার বেশি হয়েছিলেন?
উত্তর: ‘বহুরূপী’ গল্পে রূপসি বাইজি সেজে হরিদার রোজগার বেশি হয়েছিল। বাইজি সেজে দোকানে দোকানে ফুলসাজি এগিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। দোকানদাররা সেই সাজিতে এক সিকি করে দেওয়ায় হরিদা সেদিন মোট আট টাকা দশ আনা পেয়েছিল।
১৮. পুলিশ সেজে হরিদা কী করেছিলেন?
উত্তর: প্রখ্যাত গল্পকার সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদা একবার পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে দাঁড়িয়েছিলেন আর সেখান থেকে স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিলেন।
১৯. পুলিশ সেজে হরিদা কোথায় দাঁড়িয়েছিল? [অ্যান্ড্রুজ হাই স্কুল]
উত্তর: প্রখ্যাত গল্পকার সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে পুলিশ সেজে হরিদা দয়ালবাবুর লিচুবাগানে দাঁড়িয়েছিলেন।
২০. স্কুলের ছেলেদের পুলিশের হাত থেকে বাঁচাতে স্কুলের মাস্টার কী করেছিলেন?
উত্তর: স্কুলের মাস্টার ছেলেদের পুলিশের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য বহুরূপী বেশে নকল পুলিশ হরিদাকে আট আনা ঘুষ দিয়ে তাদেরকে ছাড়িয়ে এনেছিলেন।
২১. মাস্টারমশাই যখন জানতে পারলেন হরিদা পুলিশ সেজেছিলেন তখন তিনি কী করলেন?
উত্তর: মাস্টারমশাই যখন জানতে পারলেন যে হরিদা নকল পুলিশ সেজে ঘুষ নিয়ে ছেলেদের ছেড়েছেন তখন তিনি একটুও রাগ করলেন না বরং হরিদার বহুরূপী সাজের তারিফ করলেন।
২২. “তোমরা সেখানে থেকো”-কোথায় থাকতে বলা হয়েছে?
উত্তর: বিশিষ্ট গল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পের আলোচ্য অংশে হরিদা বহুরূপী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে যাবেন-সেখানেই কথক ও তাঁর বন্ধুদের থাকতে বলা হয়েছে।
২৩. চমকে উঠলেন জগদীশবাবু।”-জগদীশবাবুর চমকে ওঠার কারণ কী?
উত্তর: গল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পে আদুড় গা, তার উপরে সাদা উত্তরীয়; পরনে ছোটো বহরের সাদা থান পরা বিরাগীবেশী হরিদাকে দেখে জগদীশবাবু চমকে গিয়েছিলেন।
২৪. “জগদীশবাবুর দুই বিস্মিত চোখ অপলক হয়ে গেল”- কী দেখেজগদীশবাবুর এমন অবস্থা হয়েছিল?
উত্তর: জগদীশবাবু সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে যখন দেখেছিলেন আদুড় গায়ে সাদা উত্তরীয় পরা এক বিরাগী সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, তখন তিনি অপলক দৃষ্টিতে তাঁর দিকে চেয়ে রইলেন।
২৫. কোন্ সময় এবং কী বেশে হরিদা জগদীশবাবুর বাড়ি গিয়েছিলেন?
উত্তর: ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদা সন্ধ্যার সময় আদুড় গায়ে একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয় আর ছোটো থান পরে বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়ি গিয়েছিলেন।
২৬. “আমার অপরাধ হয়েছে”-বক্তার অপরাধ কী ছিল?
উত্তর: বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পের আলোচ্য অংশে বিরাগী সাজে হরিদাকে দেখে জগদীশবাবু ওপর থেকে নীচে নেমে আসেননি। এটাই ছিল তাঁর অপরাধ।
২৭. হরিদার বিরাগী মূর্তি সম্পর্কে লেখক কী মন্তব্য করেছেন?
উত্তর: বিরাগীকে দেখে লেখক মন্তব্য করেছেন সীমার ওপার থেকে তিনি যেন হেঁটে এসেছেন। তাঁর শীর্ণ শরীর যেন অশরীরী সত্তা। উদাত্ত, শান্ত ও উজ্জ্বল দৃষ্টি তাঁর চোখ থেকে ঝরে পড়ছে।
২৮. “হতেই পারে না।”—কী হতে পারে না বলে বক্তার ধারণা?
উত্তর: হরিদা বিরাগী সাজলে কথক ও তাঁর বন্ধুরা তাঁকে চিনতেই পারেননি। তাঁদের মধ্যে ভবতোষ ভেবেছিল এই বিরাগী কখনোই হরিদা হতে পারেন না।
২৯. “তিনি আপনার চেয়ে কিছু কম নয়।” -‘তিনি’ বলতে বক্তা কাকে বুঝিয়েছেন?
উত্তর: প্রখ্যাত গল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পের আলোচ্য অংশে ‘তিনি’ বলতে বক্তা পরম করুণাময় ঈশ্বরকেই বুঝিয়েছেন।
3. Long Question Answer
১. গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা।”-হরিদা কে ছিলেন? কোন্ গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে গিয়েছিল? ১+২ [তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবন]
উত্তর: ‘বহুরূপী’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা ছিলেন পেশায় বহুরূপী।
▶ লেখক ও তাঁর বন্ধুরা হরিদাকে জানিয়েছিলেন যে, জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসী সাত দিন ধরে ছিলেন। তিনি সারাবছরে একটি হরীতকী খান। তাঁর বয়স হাজার বছরেরও বেশি। সন্ন্যাসী কাউকেই তাঁর পায়ের ধুলো দেন না। জগদীশবাবু কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে তাঁর পায়ের কাছে ধরতেই সন্ন্যাসী সেই খড়ম পড়তে গেলে জগদীশবাবু তাঁর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন। সন্ন্যাসীর এই গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে গিয়েছিলেন। ৫ “খুবই গরিব
মানুষ হরিদা”-হরিদার দারিদ্র্যের পরিচয় দাও। উত্তর সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে শহরের সবচেয়ে সরু একটা গলির ভিতরে হরিদার ঘর। সময় ধরে কোনো অফিসে বা দোকানে কাজ করা তাঁর পছন্দ নয়। তাই তাঁর সংসার রোজগারহীন। তাঁর উনুনে অনেক সময় শুধু জলই ফোটে, ভাত ফোটে না। এই অভাব তিনি সহ্য করতে পারেন, কিন্তু একঘেয়ে কাজ করতে তাঁর ভয়ানক আপত্তি। বহুরূপী সেজে যেটুকু রোজগার হয় তাতেই কোনোদিন একবেলা-আধবেলা খেয়ে হরিদার দিন চলে যায়।
2. “বাঃ, এ তো বেশ মজার ব্যাপার!”-মজার ব্যাপারটি কী? তা বক্তার ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলেছিল?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে থাকার জন্য এক সন্ন্যাসী এসেছিলেন। খুব উঁচুদরের এই সন্ন্যাসী হিমালয়ের গুহাতে থাকতেন। সারাবছর একটা হরীতকী ছাড়া তিনি নাকি আর কিছুই খেতেন না। অনেকের মতে, তাঁর বয়স ছিল হাজার বছরেরও বেশি। জগদীশবাবু ছাড়া আর কাউকে তিনি পায়ের ধুলো নিতে দেননি। জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে দিয়েছিলেন। সন্ন্যাসীকে বিদায় দেওয়ার সময় জগদীশবাবু একশো টাকার একটা নোট জোর করে সন্ন্যাসীর ঝোলার মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন। এটাই ছিল মজার গল্প।
▶ সন্ন্যাসীর গল্প শুনে হরিদা প্রথমে গম্ভীর হয়ে যান। তিনি অনেকক্ষণ চুপ করে থাকেন। গরিব হরিদা নির্দিষ্ট কোনো পেশার সাথে যুক্ত ছিলেন না। তাই মাঝে মাঝে বহুরূপী সেজে তিনি পয়সা রোজগার করতেন। কিন্তু তাতে তাঁর দিন চলত না। জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা সন্ন্যাসীর কথা শুনে হরিদা চিন্তা করেন সাধুভক্ত জগদীশবাবু সন্ন্যাসীকে উদারহস্তে অনেক কিছু দান করেছেন। তাই তিনিও যদি কোনো সাধুসন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করে জগদীশবাবুর বাড়ি যান, তবে নিশ্চয় তাঁর দাক্ষিণ্য থেকে বঞ্চিত হবেন না। এই অভিপ্রায়ে হরিদা একদিন সত্যি সত্যি বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন।
৩. “গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা”- গল্পটি কী ছিল? হরিদার গম্ভীর হয়ে যওয়ার কারণ কী ছিল?
উত্তর: সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে অবস্থাপন্ন জগদীশবাবুর বাড়িতে এসে এক সন্ন্যাসী সাত দিন ধরে ছিলেন। তিনি হিমালয়ের গুহায় থাকতেন। অনেকে মনে করেন তাঁর বয়স হাজার বছরেরও বেশি। তিনি সারাবছরে একটি হরীতকী ছাড়া আর কিছুই খেতেন না। জগদীশবাবু ছাড়া আর কাউকে তিনি পায়ের ধুলো দেননি। জগদীশবাবুও তা পেয়েছিলেন কৌশল করে। একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরেন আর সন্ন্যাসী বাধ্য হয়ে তাতে পা গলাতে গেলে সেই সুযোগে জগদীশবাবু সন্ন্যসীর পায়ের ধুলো নিয়ে নেন। জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর ঝোলার ভিতরে একশো টাকার একটি নোট জোর করে ফেলে দেন। সন্ন্যাসী হেসে সেখান থেকে চলে যান। এই গল্পই হরিদাকে শোনানো হয়েছিল।
▶ সন্ন্যাসী এবং জগদীশবাবুর এই গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে যান। কথক ও তাঁর বন্ধুরা হরিদার এই গাম্ভীর্যের কারণ বুঝতে পারেন না। এই সময়েই হরিদা তাঁদের জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখাতে যাওয়ার কথা বলেন। জগদীশবাবুর কাছ থেকে সারা বছরের প্রয়োজনীয় অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। জগদীশবাবুর ধর্মের প্রতি দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েই হরিদা নিজের উদ্দেশ্য সফল করতে চেয়েছিলেন।
৪. “এবার মারি তো হাতি, লুঠি তো ভাণ্ডার”- কে, কোন্ প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করেছেন? তাঁর এই উদ্দেশ্য কী শেষ অবধি সফল হয়েছিল-গল্প অবলম্বনে আলোচনা করো। ২+৩
উত্তর: সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে মন্তব্যটি করেছেন বহুরূপী হরিদা। কথকদের কাছ থেকে হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা হিমালয়ের সাধুর কথা জানতে পারেন। জগদীশবাবু তাঁর পায়ের অতি দুর্লভ ধুলো পাওয়ার জন্য কীভাবে তাঁর খাতির-যত্ন করেছেন-তা-ও শোনেন। এইসব শুনতে শুনতেই হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে এক ‘জবর খেলা’ দেখানোর পরিকল্পনা করেন। উদ্দেশ্য ‘মোটা মতন কিছু’ আদায় করে নেওয়া। তাই কাঙালের মতো হাত পেতে বকশিশ নেওয়ার বদলে হরিদা চান জগদীশবাবুর ধর্মবিশ্বাস আর দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে সারাবছরের রোজগার একদিনে করে নিতে। এই প্রসঙ্গেই তিনি মন্তব্যটি করেছেন। ।
.▶ এক ফুরফুরে সন্ধ্যায় বিরাগীর বেশে হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে হাজির হন। আদুড় গা, ধবধবে সাদা উত্তরীয়, সাদা থান পরা হরিদার আধ্যাত্মিক এবং দার্শনিক কথাবার্তায় জগদীশবাবু মুগ্ধ হয়ে যান। তিনি বিরাগীকে তীর্থভ্রমণের জন্য একশো এক টাকা প্রণামি দিতে চান। কিন্তু হরিদাকে এখানে পাওয়া যায় সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর ভূমিকায়। সব কিছু প্রত্যাখ্যান করে তিনি চলে যান। পরে কথকদের তিনি বলেন যে বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে টাকা স্পর্শ করলে তার বহুরূপীর ‘ঢং’ নষ্ট হয়ে যেত। নিজের পেশার প্রতি সততা থেকেই হরিদা অর্থ উপার্জনের অসাধু ইচ্ছাকে ত্যাগ করেন।
৫. “চমকে উঠলেন জগদীশবাবু”-জগদীশবাবুর পরিচয় দাও। তাঁর চমকে ওঠার কারণ বর্ণনা করো। ৩+২
উত্তর: সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবু এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তিনি অবস্থাপন্ন ও জ্ঞানী মানুষ। সাদা মাথা ও সাদা দাড়িতে তাঁকে যথেষ্টই সৌম্য এবং শান্ত দেখায়। সাধু সন্ন্যাসীতেও তাঁর প্রবল ভক্তি। তবে অর্থের সাহায্যে সহজে ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভের চেষ্টাও তিনি করেছেন। হিমালয়ের গুহায় বাস করা সন্ন্যাসীর কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে যেভাবে তিনি তাঁর ‘দুর্লভ’ পায়ের ধুলো সংগ্রহ করেছেন সেখানে তাঁর সহজ ভক্তি ছিল না। বিরাগীবেশী হরিদাকে দেখেও বিচলিত হয়েছেন জগদীশবাবু। তাঁকে বাড়িতে থাকতে অনুরোধ করেছেন, তাঁর সেবা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। শেষপর্যন্ত কোনো কিছুতেই সফল না হয়ে তিনি তাঁর তীর্থ পরিক্রমার জন্য একশো এক টাকা প্রণামি হিসেবে দিতে চেয়েছেন। জগদীশবাবুর ভক্তিভাবনার সঙ্গে তাঁর সচ্ছল জীবনযাত্রার বিষয়টি এভাবেই বারেবারে যুক্ত হয়ে গেছে। তাঁর বিনয়, সাধুসঙ্গলাভের ইচ্ছা, শান্তির সন্ধান ইত্যাদি বিষয়গুলি চরিত্রটিকে আলাদা করে তুলেছে।
▶ এক মনোরম সন্ধ্যায় জগদীশবাবু বাড়ির বারান্দায় একটা চেয়ারের উপরে বসেছিলেন। সেই সময়ে সেখানে বিরাগীবেশী হরিদার আগমন ঘটে। ধবধবে সাদা উত্তরীয় গায়ে, ছোটো বহরের সাদা থান পরা হরিদাকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে হেঁটে চলে এসেছেন। তাঁকে দেখেই জগদীশবাবু চমকে যান।
৬. জগদীশবাবুর বাড়ি হরিদার বিরাগী সেজে যাওয়ার পর যে ঘটনা ঘটেছিল তা বর্ণনা করো। [শ্রীরামপুর ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন]
উত্তর: জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগী হরিদার খালি গায়ে ছিল সাদা উত্তরীয় আর পরনে ছিল সাদা ছোটো থান। তার পা ছিল ধুলোমাখা আর সঙ্গে ছিল একটা ঝোলা। সেই ঝোলার মধ্যে একটি গীতা রাখা ছিল। বিরাগী হরিদাকে দেখে জগদীশবাবু চমকে ওঠেন। জগদীশবাবুকে বিরাগী বলেন যে
তিনি নিজের সম্পত্তি আর অর্থের অহংকারে নিজেকে ভগবানের থেকেও বড়ো বলে মনে করেন। জগদীশবাবু বিরাগীকে রাগ করতে বারণ করায় বিরাগী জবাব দেন যে তিনি বিরাগী, রাগ নামে তাঁর কোনো রিপুই নেই। বিরাগীকে জগদীশবাবু তাঁর বাড়িতে থাকার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু বিরাগী তাঁকে বলেন ধরিত্রীর মাটিতেই তাঁর স্থান, তাই তিনি এই দালান বাড়িতে থাকবেন না। খাওয়ার কথা বলা হলে তিনি কোনো কিছু স্পর্শ না করে শুধু এক গ্লাস ঠান্ডা জল খান। বিরাগী জগদীশবাবুকে মোহমুক্ত হওয়ার কথা বলে জানান ধন, যৌবন সব কিছুই বঞ্চনাস্বরূপ। যাকে পেলে সৃষ্টির সব ঐশ্বর্য পাওয়া যাবে তাঁর কাছাকাছি যাওয়ার উপদেশ দিয়ে বিরাগী চলে যান। তীর্থভ্রমণের জন্য জগদীশবাবু বিরাগীকে একশো এক টাকা দিতে চাইলে বিরাগী সেই টাকা নেননি। সন্ন্যাসীর মতে, তিনি যেমন ধুলো মাড়িয়ে যেতে পারেন তেমনই অনায়াসে সোনা, টাকা এইসব মাড়িয়েও চলে যেতে পারেন। এই বলে সন্ন্যাসী সেখান থেকে চলে যান।
৭ “পরমসুখ কাকে বলে জানেন? সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া!”-হরিদার জীবনে এ সত্য কীভাবে সার্থক হয়েছে আলোচনা করো।
উত্তর: ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীবেশী হরিদা জগদীশবাবুকে উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছিলেন। আপাতভাবে বহুরূপী হরিদা নিজের ছদ্মবেশ নিখুঁত ও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য কথাটি বলেছিলেন। কিন্তু নিজের আচরণ দিয়ে এই বক্তব্যকে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জগদীশবাবুর বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণের জন্য তাঁর অনুরোধ তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। খোলা আকাশ আর মাটি ছেড়ে ‘বিষয়ীর দালান বাড়ি’- তে থাকতে তিনি নিজের আপত্তি জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন- “ধন জন যৌবন কিছুই নয় জগদীশবাবু। ওসব হলো সুন্দর এক একটি বঞ্চনা।” ঈশ্বরকে পাওয়াই জীবনের একমাত্র আকাঙ্ক্ষা হওয়া উচিত। বিরাগীবেশে হরিদার এই মন্তব্য যে কথার কথা ছিল না তা বোঝা যায় যখন জগদীশবাবুর
দেওয়া প্রণামির একশো এক টাকা তিনি ফেলে রেখে যান। যাওয়ার সময়ে বলে যান- “আমি যেমন অনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারি, তেমনই অনায়াসে সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি।” অথচ হরিদা বড়োরকম উপার্জনের জন্যই জগদীশবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন। নিজের এই আচরণের ব্যাখ্যায় হরিদা পরে জানিয়েছিলেন যে, টাকা স্পর্শ করলে তাঁর ‘ঢং’ নষ্ট হয়ে যাবে। অর্থাৎ এভাবে বিরাগী চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন হরিদা।
৮. আমি যেমন অনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারি, তেমনই অনায়াসে সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি।”-ছদ্মবেশ ধারণ করেও হরিদা কীভাবে এই কথার সত্যতা প্রমাণ করেছেন লেখো।
উত্তর: বড়ো চমকপ্রদ এবং নাটকীয় বৈচিত্র্যে ভরা হরিদার জীবন। বাঁধাধরা আর-পাঁচটা পেশায় তিনি নিযুক্ত হতে চাননি। কারণ একঘেয়ে কাজ করতে তাঁর ভয়ানক আপত্তি ছিল। বহুরূপী সেজে তিনি যা উপার্জন করতেন তাতে ঠিকমতো তাঁর দিন চলত না। এই সময় তিনি শোনেন জগদীশবাবুর বাড়িতে এক সন্ন্যাসীর আসার কথা। ধনী জগদীশবাবু সেই সন্ন্যাসীকে অর্থ- সহ নানা কিছু দান করেছিলেন।
সন্ন্যাসীর গল্প হরিদাকে উজ্জীবিত করে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়ি থেকে বেশ কিছু আদায় করবেন, যা দিয়ে তাঁর সারাবছর চলে যাবে। হরিদা বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়ি উপস্থিত হন। জগদীশবাবু তাঁকে দেখে অভিভূত এবং ভক্তিতে গদগদ হয়ে প্রথমে তাঁর বাড়িতে থাকার কথা বলেন। তারপর টাকার থলি এনে হরিদার পায়ের কাছে রাখেন। কিন্তু হরিদা প্রকৃত বিরাগীর মতো সব কিছু প্রত্যাখ্যান করেন। তাঁর লোভ ত্যাগে পরিণত হয়। বিরাগীর চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম বহুরূপী হরিদা
ঘোষণা করেন যে, তাঁর কাছে ধুলোর মতো সোনাও তুচ্ছ। চরিত্রের সঙ্গে একাত্মতা তাঁর চরিত্রকে মহনীয় করে তোলে, যার কাছে পেশাদারিত্বও পরাজিত হয়।
৯. . “সেদিকে ভুলেও একবার তাকালেন না বিরাগী।”-বিরাগী কোন্ দিকে তাকালেন না? তাঁর না তাকানোর কারণ বিশ্লেষণ করো। ১+৪
উত্তর: কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ ছোটোগল্পে বিরাগী হরিদা তাঁর পায়ের কাছে রাখা জগদীশবাবুর একশো টাকা ভরতি থলির দিকে তাকাননি।
▶ হতদরিদ্র হরিদা বহুরূপী সেজে অধিক উপার্জনের জন্য জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগী সেজে গিয়েছিল। অথচ জগদীশবাবুর দেওয়া প্রণামি হিসেবে একশো এক টাকার একটা থলি পেয়েও তিনি সেদিকে তাকাননি। গল্পের এই ঘটনা গভীর তাৎপর্য বহন করে। হরিদা বহুরূপী। এটাই তাঁর পেশা। পুলিশ, পাগল, বাইজি প্রভৃতি সেজে তিনি পয়সা রোজগার করেছেন। উক্ত পেশাগুলির সঙ্গে পয়সা নেওয়ার ব্যাপারটা খুব একটা অসংগতিপূর্ণ নয়। কিন্তু বিরাগী তো এক লোভহীন জীবানাদর্শকে মেনে চলেন। সংসারত্যাগী বিরাগীর কাছে টাকা-পয়সা, ধনদৌলত অতি তুচ্ছ বিষয়। তা গ্রহণ করলে বিরাগীর আদর্শ বা ঢং নষ্ট হয়। আসলে বহুরূপী হরিদা বাদবাকি যেসব চরিত্রের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন সেসমস্ত ক্ষেত্রেও তিনি সেরূপ আচরণ করেছিলেন। সেখানে চরিত্রগুলির গুরুত্ব বা গাম্ভীর্য কিংবা তাৎপর্য-কোনো – কিছুই বিরাগীর চরিত্রের সমান নয়। বিরাগী হিসেবে তিনি বিশ্বাস করেন যে, – ‘পরম সুখ’ হল “সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়া।” এই বোধ – | থেকেই হরিদা টাকার থলির দিকে তাকাননি।