Class 7 Chapter 9 Solution
আজকের ভারত
MCQs Question Answer
১.১ ‘সরকার শব্দটি এসেছে-
(ক) ফারসি থেকে
গ) হিন্দি থেকে
খ) আরবি থেকে
(ঘ) বাংলা থেকে
উত্তর: (খ) ফারসি থেকে।
১.২ ‘Govern’-কথাটির অর্থ হলো-
(ক) ব্যবস্থা করা
(খ) শাসন করা
গ) নির্বাচন করা
ঘ) মনোনীত করা
উত্তর: (খ) শাসন করা।
১.৩ প্রত্যেক দেশ যে নিয়মকানুন দ্বারা পরিচালিত হয়, সেই নিয়মকানুনকে বলা হয়-
(ক) ভোট
খ) গণতন্ত্র
(গ) সংবিধান
(ঘ) প্রস্তাবনা
উত্তর: (গ) সংবিধান।
১.৪ পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড়ো সংবিধান হলো-
(ক) ইংল্যান্ডের সংবিধান
খ) ফ্রান্সের সংবিধান
(গ) রাশিয়ার সংবিধান
(ঘ) ভারতের সংবিধান
উত্তর: (ঘ) ভারতের সংবিধান।
১.৫ ভারতীয় সংবিধানের প্রধান রূপকার ছিলেন-
ক) ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ
(খ) ড. বি. আর আম্বেদকর
গ) মহাত্মা গান্ধি
(ঘ) জওহরলাল নেহরু
উত্তর: (খ) ড. বি. আর আম্বেদকর।
১.৬ ভারতীয় সংবিধান গৃহীত হয়-
ক) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট
ঘ) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারী
গ) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ সেপ্টেম্বর
(ঘ) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর
উত্তর: (ঘ) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর।
১.৭ ভারতীয় সংবিধান কার্যকর হয়-
ক) ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট
খ) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর
গ) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি
ঘ) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি
উত্তর: (খ) ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি
১.৮ ‘স্বতন্ত্রীকরণ’ নীতির কথা বলেন-
(ক) মহাত্মা গান্ধি
(খ) জওহরলাল নেহেরু
(গ) বুশো
(ঘ) মস্তেস্ক
উত্তর: (খ) মন্তেস্কু।
১.৯ সংস্কৃতে ‘পুর’ শব্দের অর্থ হলো-
(ক) কেল্লা
(খ) দুর্গ
(গ) নগর
(ঘ) প্রাচীর
উত্তর: (গ) নগর।
১.১০ ব্লক তৈরি হয় অনেকগুলি-
(ক) জেলা নিয়ে
(খ) পৌরসভা নিয়ে
(গ) গ্রাম নিয়ে
(ঘ) জেলাপরিষদ নিয়ে
উত্তর: (গ) গ্রাম নিয়ে।
১.১১ শহরে যেমন পৌরসভা রয়েছে, তেমনি গ্রামে রয়েছে-
ক) গ্রামসভা
(খ) মিউনিসি প্যালিটি
গ) গ্রাম পঞ্চায়েত
ঘ) সমিতি
উত্তর: (গ) গ্রাম পঞ্চায়েত।
১.১২ গ্রামের সব ধরনের উন্নতির কাজ করে-
(ক) পৌর সভা
(খ) ব্লক
(গ) গ্রাম পঞ্চায়েত
(ঘ) সমিতি
উত্তর: (গ) গ্রাম পঞ্চায়েত
Very Short Question Answer
২.১ ভারতের সংবিধান হলো -(লিখিত/অলিখিত/সম্পূর্ণ) সংবিধান।
উত্তর: লিখিত।
২.২ ভারতে নির্বাচন হয় প্রতি (৩/৪/৫) বছর অন্তর।
উত্তর: ৫।
২.৩ দেশের নির্বাচন হওয়াকে চলতি কথায় বলা হয় (ভোট/শাসন/বিধান)।
উত্তর: ভোট।
২.৪ প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হয় ২৩ জানুয়ারি/২৬ জানুয়ারি)। (১৫ আগস্ট/
উত্তর:ৱ২৬ জানুয়ারি।
২.৫ ভারত সরকারের প্রধান বিভাগের সংখ্যা (৩টি) ৫টি/৭টি)।
উত্তর: ৩টি।
২.৬ সব দেশেই -(বিচার/আইন/শাসন) বিভাগকে আলাদা করে রাখা হয়।
উত্তর: বিচার।
২.৭ গ্রামের সব ধরনের উন্নতির কাজ করে পঞ্চায়েত/পঞ্চায়েত সমিতি/জেলা পরিষদ) (গ্রাম
উত্তর: গ্রাম পঞ্চায়েত।
২ (খ) ঠিক না ভুল লেখো:
২.১ মধ্যযুগে ভারতে ‘সরকার’ শব্দটির মানে শাসনকর্তা বা শাসনব্যবস্থা-দুই হতো।
উত্তর: ঠিক।
২.২ সব স্বাধীন দেশে সরকার থাকে না।
উত্তর: ভুল।
সঠিক উত্তর: সব স্বাধীন দেশে সরকার থাকে
২.৩ কোনো কোনো দেশে লিখিত সংবিধান নেই, সেখানে বহু বছর ধরে চলে আসা নিয়ম গুলোই মেনে নেওয়া হয়।
উত্তর: ঠিক।
২.৪ ভারতীয় সংবিধানের মতো এত ধারা-উপধারা আর কোনো দেশের সংবিধানে নেই।
উত্তর: ঠিক।
২.৫ প্রায় পাঁচ বছর আলোচনা-বিতর্কের পরে ভারতের সংবিধান তৈরি হয়।
উত্তর: ভুল।
সঠিক উত্তর: প্রায় তিনবছর আলোচনা-বিতর্কের পরে ভারতের সংবিধান তৈরি হয়।
২.৬ রাজ্য সরকারকে নির্বাচন করেন দেশের সমস্ত জনগণ।
উত্তর: ভুল।
সঠিক উত্তর: রাজ্য সরকারকে নির্বাচন করেন ঐ রাজ্যের বাসিন্দারা।
২.১ মধ্যযুগে ভারতে ‘সরকার’ বলতে কি বোঝায়?
উত্তর: মধ্যযুগে ভারতে ‘সরকার’ বলতে বোঝাত শাসনকর্তা বা শাসনব্যবস্থাকে।
২.২ রাজতন্ত্র কাকে বলে?
উত্তর: রাজা, সুলতান, সম্রাট, বাদশাহ প্রমুখের দ্বারা পরিচালি বংশানুক্রমিক শাসনব্যবস্থা হলো রাজতন্ত্র।
২.৩ সংবিধান কি?
উত্তর: প্রত্যেক দেশ কিভাবে চলবে, তার নিয়মকানুনকে ‘সংবিধ বলা হয়।
২.৪ পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় সংবিধান কোন দেশের সংবিধাম।
উত্তর: ভারতের সংবিধান পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড়ো সংবিধান।
২.৫ ভারতের সংবিধানের প্রধান রূপকার কে ছিলেন?
উত্তর: ভারতীয় সংবিধানের প্রধান রূপকার ছিলেন ড. বি. অদ আম্বেদকর।
২.৬ কত বছর অন্তর ভারতে নির্বাচন হয়?
উত্তর: পাঁচ বছর অন্তর ভারতে নির্বাচন হয়।
২.৭ দেশের নির্বাচন হওয়াকে চলতি কথায় কি বলে?
উত্তর: দেশের নির্বাচন হওয়াকে চলতি কথায় বলা হয় ‘ভোট হওয়া
২.৮ কেন্দ্রীয় সরকারকে কারা নির্বাচন করেন?
উত্তর: কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্বাচন করেন দেশের সমস্ত জনগণ।
২.৯ শহর বা নগরের স্বায়ত্তশাসনব্যবস্থা কি নামে পরিচিত?
উত্তর: শহর বা নগরের স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা পৌরসভা নামে পরিচিত।
২.১০ ‘স্বতন্ত্রীকরণ’ শব্দের অর্থ কি?
উত্তর: ‘স্বতন্ত্রীকরণ’ শব্দের অর্থ হলো আলাদা করা।
২.১১ পৌরসভার সদস্যদের কি বলা হয়?
উত্তর: পৌরসভার সদস্যদের পৌরপ্রতিনিধি বলা হয়।
২.১২ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির কথা কে প্রথম বলেছিলেন?
উত্তর: ফ্রান্সের দার্শনিক মন্তেস্কু প্রথম ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির কথ বলেন।
২.১৩ গ্রামের স্বায়ত্তশাসনমূলক সংস্থাকে কি বলা হয়?
উত্তর: গ্রামের স্বায়ত্তশাসনমূলক সংস্থাকে বলা হয় গ্রাম পঞ্চায়েত।
২.১৪ ব্লকের স্বায়ত্তশাসনের ভার কার উপর থাকে?
উত্তর: ব্লকের স্বায়ত্তশাসনের ভার পঞ্চায়েত সমিতির উপর থাকে।
২.১৫ জেলার স্বায়ত্তশাসনের ভার কার উপর থাকে?
উত্তর: জেলার স্বায়ত্তশাসনের ভার জেলা পরিষদের উপর থাকে।
Short Question Answer.
৩.১ ‘সরকার’ বলতে কি বোঝায়?
উত্তর: ‘সরকার’ শব্দটা ফারসি থেকে এসেছে। মধ্যযুগে ভারতে এই শব্দটির মানে শাসনকর্তা বা শাসনব্যবস্থা-দুটি অর্থে ব্যবহার
করা হতো। ইংরেজিতে এর সমান শব্দ হলো Government (গভর্নমেন্ট)। Govern মানে শাসন করা।
৩.২ ‘গণতন্ত্র’ কাকে বলে?
উত্তর: নিজেরা নিজেদের মধ্যে থেকে শাসক বেছে নেওয়ার পদ্ধতিকে বলা হয় ‘গণতন্ত্র’। ‘তন্ত্র’ মানে ব্যবস্থা। দেশের লোকজন বা জনগণ নিজেরাই দেশের তন্ত্র বা ব্যবস্থা ঠিক করেন বলে এটা।
‘গণতন্ত্র’।
৩.৩ ভারতে ২৬ জানুয়ারির গুরুত্ব কি?
উত্তর: ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি ভারতের সংবিধান আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। তাই এই দিনটি প্রতিবছর ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। তাই এই দিনটি গুরুত্বপূর্ণ।
৩.৪ কেন্দ্রীয় সরকার কি?
উত্তর: দেশের সমস্ত জনগণ (ভাটাধিকারপ্রাপ্ত) দেশ পরিচালনার জন্য যে সরকার নির্বাচন করেন, তা হলো কেন্দ্রীয় সরকার।
৩.৫ রাজ্য সরকার কি?
উত্তর: এক-একটি রাজ্যের প্রতিটি জনগণ (ভোটাধিকারপ্রাপ্ত) নিজ নিজ রাজ্য পরিচালনার জন্য যে সরকার নির্বাচন করেন তা হলো রাজ্য সরকার।
৩.৬ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ কাকে বলে?
উত্তর : সব দেশেই বিচার বিভাগকে আইন ও শাসন বিভাগ থেকে আলাদা করে রাখা হয়। কোনোভাবেই যাতে সুবিচারের পথ বন্ধ না হয়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা। এক কথায় একে বলে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি’। গণতন্ত্র যাতে বলবৎ থাকে, তার জন্যই নীতি গ্রহণ করা হয়।
৩.৭ ব্লক ও জেলা কিভাবে গঠিত হয়?
উত্তর: অনেকগুলি গ্রাম নিয়ে গড়ে ওঠে ব্লক।
• কয়েকটি ব্লক নিয়ে গঠিত হয় জেলা।
8 চার/পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও:
৪.৩ সরকারের কাজ কি কি?
উত্তর: দেশের জনগণ নির্বাচনে ভোট দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য সরকার বেছে নেন।
• সরকারের কাজ:
(i) দেশে শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করা।
(ii) জনগণের কল্যাণ করা অর্থাৎ জনগণ যাতে ভালো থাকে তার উদ্যোগ নেওয়া।
(iii) দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করা।
(iv) কর সংগ্রহ করা।
(v) দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও উন্নতির জন্য কাজ করা।
(vi) সংবিধান মেনে দেশ শাসন করা।
৪.৪ স্বায়ত্তশাসন বলতে তুমি কি বোঝো?
উত্তর: যে শাসনে জনগণ সরাসরি অংশ নিয়ে নিজেদের শাসন নিজেরা পরিচালনা করে, তাকে স্বায়ত্তশাসন বলে। ‘স্বায়ত্ত’ শব্দের অর্থ হলো স্ব বা নিজের, আয়ত্ত বা অধীন। জনগণ যেখানে নিজেই নিজের অধীন সেই শাসনব্যবস্থাকে বলে ‘স্বায়ত্তশাসন’। পশ্চিমবঙ্গে এই স্বায়ত্তশাসন দু-ভাবে দেখা যায়।
(i) শহর বা নগরের ক্ষেত্রে পৌরসভা।
(ii) গ্রামের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত।
৪.৫ নির্বাচনকে সাধারণভাবে কি বলে? ভারতে কত বছর অন্তর সরকার নির্বাচন হয়? সরকার নির্বাচনের সঙ্গে গণতন্ত্রের কি সম্পর্ক?
উত্তর: নির্বাচনকে সাধারণভাবে বলে ‘ভোট হওয়া।’
• ভারতে পাঁচ বছর অন্তর সরকার নির্বাচন হয়।
• দেশের জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ চালাবার জন্য যাদের বেছে নেন তারা মিলেই গঠিত হয় সরকার। দেশের লোকজন
বা জনগণ নিজেরাই দেশের তন্ত্র বা ব্যবস্থা ঠিক করেন বলেই এটা গণতন্ত্র।
৪.৬ ভারতের সংবিধান বৃহত্তর হওয়ার কারণগুলি কি কি?
উত্তর: ভারতের একটি লিখিত সংবিধান আছে। ভারতীয় সংবিধান পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড়ো সংবিধান। ভারতের সংবিধানে প্রচুর ধারা এবং উপধারা আছে। এই সংবিধানে লিখিত আকারে সরকার নির্বাচন, দেশ পরিচালনার আইন এবং জনগণের স্বার্থরক্ষার জন্য বিভিন্ন নিয়মকানুন আছে। তাই ভারতের সংবিধান বৃহত্তর হয়ে উঠেছে।
৪.৭ ‘পঞ্চায়েত সমিতি বলতে কি বোঝায়? ‘জেলা পরিষদ’
উত্তর: পঞ্চায়েত সমিতি: কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে নিয়ে এ ‘ব্লক’ গঠিত হয়। ব্লকের স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা জন্য থাকে পঞ্চায়েত সমিতি। পঞ্চায়েত সমিতির প্রবন সভাপতি বলা হয়। পরিচজন
• জেলা পরিষদ : কয়েকটি ব্লক নিয়ে গঠিত হয় জেলা। জে স্বায়ত্তশাসনের ভার থাকে জেলা পরিষদের উপর। ছে পরিষদের প্রধানকে সভাধিপতি বলা হয়।
৫ আট/দশটি বাক্যে উত্তর দাও:
Long Question Answer
৪.১ বর্তমান ভারতে শাসনব্যবস্থার কি কি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়?
উত্তর • ভারতবর্ষে বর্তমান শাসনব্যবস্থার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়।
• ভারতে শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য:
(i) গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা: ভারতবর্ষের শাসনব্যবস্থা গণতান্ত্রিক কারণ এখানে জনগণ নিজেদের ভোটাধিকারের মাধ্যমে শাসক বেছে নেয়।
(ii) লিখিত সংবিধান: ভারতে সংবিধান মেনে শাসনব্যবস্থা চলে। ভারতের সংবিধান লিখিত সংবিধান এবং পৃথিবীর বৃহত্তম সংবিধান।
(iii) যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার: ভারতীয় শাসনব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা কারণ এখানে দু-ধরনের সরকার আছে-
(a) একটি কেন্দ্রীয় সরকার।
(b) প্রত্যেক রাজ্যে রাজ্য সরকার।
(iv) নির্বাচিত সরকার: প্রতি পাঁচ বছর অন্তর জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার ভারতীয় শাসনব্যবস্থা পরিচালনার সুযোগ পান।
৪.২ যুক্তরাষ্ট্র ও সংবিধান কাকে বলে?
উত্তর: যুক্তরাষ্ট্র: যে দেশে সংবিধান অনুসারে একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করে শাসন-ব্যবস্থা পরিচালিত হয়, তাকে যুক্তরাষ্ট্র বলে। ভারত একটি যুক্তরাষ্ট্র। ভারতে একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং ২৯টি রাজ্য সরকার আছে।
• সংবিধান : দেশ কিভাবে চলবে তার নিয়মকানুনকে সংবিধান বলে। সাধারণভাবে সংবিধানকে দু-ভাগে ভাগ করা যায়-
(i) লিখিত সংবিধান: ভারতের সংবিধান।
(ii) অলিখিত সংবিধান: ইংল্যান্ডের সংবিধান।
(ক) বর্তমান ভারতে শাসনব্যবস্থার কী কী বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়?
উত্তর: ভারতবর্ষে বর্তমান শাসনব্যবস্থার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়।
• ভারতে শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
(i) গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা: ভারতবর্ষের শাসনব্যবস্থা গণতান্ত্রিক কারণ এখানে জনগণ নিজেদের ভোটাধিকারের মাধ্যমে শাসক বেছে নেয়।
(ii) লিখিত সংবিধান: ভারতে সংবিধান মেনে শাসনব্যবস্থা চলে। ভারতের সংবিধান লিখিত সংবিধান এবং পৃথিবীর বৃহত্তম সংবিধান।
(iii) যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার: ভারতীয় শাসনব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা কারণ এখানে দু-ধরনের সরকার আছে-
(a) একটি কেন্দ্রীয় সরকার।
(b) প্রত্যেক রাজ্যে রাজ্য সরকার।
(iv) নির্বাচিত সরকার: প্রতি পাঁচ বছর অন্তর জনগণের ভোটে
নির্বাচিত সরকার ভারতীয় শাসনব্যবস্থা পরিচালনার সুযোগ পান।
(গ) সরকারের কাজ কী কী?
উত্তর: দেশের জনগণ নির্বাচনে ভোট দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য সরকার বেছে নেন।
• সরকারের কাজ:
(i) দেশে শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করা।
(ii) জনগণের কল্যাণ করা অর্থাৎ জনগণ যাতে ভালো থাকে তার উদ্যোগ নেওয়া।
(iii) দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করা।
(iv) কর সংগ্রহ করা।
(v) দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও উন্নতির জন্য কাজ করা।
(vi) সংবিধান মেনে দেশ শাসন করা।
(ক) ভারতকে কেন গণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় বলা হয়? দেশ পরিচালনায় সংবিধানের ভূমিকা কী বলে তুমি মনে করো?
উত্তর ভারতবর্ষকে গণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় বলার কারণ-
• গণতান্ত্রিক: যে শাসনব্যবস্থায় জনগণ নিজেদের মধ্যে থেকে শাসক বেছে শাসন পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে, তাকে গণতন্ত্র বলে। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ কারণ ভারতে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সের নাগরিক গণ ভোট দিয়ে নিজেরাই শাসক নির্বাচন করতে পারে।
• যুক্তরাষ্ট্রীয়: যে দেশে সংবিধান অনুসারে একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করে শাসন পরিচালিত হয়, তাকে যুক্তরাষ্ট্র বলে। ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা আছে কারণ ভারতে একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রতি রাজ্যে একটি করে রাজ্য সরকার আছে।
• দেশ পরিচালনায় সরকারের ভূমিকা: সরকার দেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করে। সরকার দেশের জনগণকে ভালো রাখার জন্য এবং দেশের শান্তি ও উন্নতির জন্য কাজ করে। আর সরকারকে সংবিধান মেনেই সব কাজ করতে হয়। তাই বলা যায় দেশ পরিচালনায় সংবিধান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(খ) সরকারের কয়টি ভাগ? ওই ভাগগুলি কোনটি কী কাজ করে? বিচার বিভাগকে কেন আলাদা করে রাখা হয়?
উত্তর: সরকারের কাজ: ভারত সরকারের তিনটি ভাগ-(1) আইন বিভাগ (2) শাসন বিভাগ (3) বিচার বিভাগ
• সরকারের বিভাগগুলির কাজ: ভারত সরকারের তিনটি বিভাগের কাজ হলো-
(1) আইন বিভাগ: আইন বিভাগের কাজ হলো দেশ পরিচালনার জন্য আইন তৈরি করা।
(ii) শাসন বিভাগ: শাসনবিভাগের কাজ হলো আইন অনুসারে দেশ পরিচালনা করা।
(iii) বিচার বিভাগ: বিচার বিভাগের কাজ হলো সংবিধান অনুসারে দেশ শাসন হচ্ছে কিনা দেশের জনগণের স্বার্থরক্ষা হচ্ছে কিনা তা দেখা এবং এই নিয়ম মেনে না চললে বা নিয়ম ভাঙলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
• বিচার বিভাগকে আলাদা রাখার কারণ: দেশের বিচার বিভাগকে বাকি দুটো বিভাগ-আইন ও শাসন বিভাগ থেকে আলাদা রাখা হয়। কারণ দেশের সমস্ত নাগরিক যাতে সুবিচার পায়। দেশের আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। দেশের আইন বা শাসনবিভাগের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও যদি সংবিধান মেনে না চলেন তবে তাঁদের বিরুদ্ধেও বিচার বিভাগ ব্যবস্থা নিতে পারে।
(গ) পৌরসভা ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি কী কী কাজ করে?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনমূলক প্রতিষ্ঠানগুলিকে
দুটি ভাগে ভাগ করা যায়-
(i) শহরে বা নগরের ক্ষেত্রে পৌরসভা।
(ii) গ্রামের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত।
• পৌরসভার কাজ:
(ⅰ) পৌরসভার এলাকায় বসবাসকারী জনগণের মধ্যে সেবামূলদ কাজ করা।
(ii) জনগণের স্বাস্থ্য বিষয়ে দায়িত্ব পালন করা।
(iii) শহরের উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা দেখাশোনা করা।
(iv) শহরে পানীয় জল সরবরাহ করা, রাস্তাঘাট বানানো, দুদ্ধ রোধ করা শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা প্রভৃতি।
(v) বিদ্যালয়, হাসপাতাল প্রভৃতি বানিয়ে শিক্ষার প্রসারে ও স্বাম উন্নয়নে পৌরসভাগুলিকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
• গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ:
(i) গ্রামের সবরকম উন্নতি করা।
(ii) গ্রামে পানীয় জলের সরবরাহ করা, গ্রামকে পরিষ্কার-পরিচ্ছ রাখা, পথঘাট নির্মাণ করা।
(iii) শিক্ষাদানের জন্য বিদ্যালয় তৈরি করা, চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করা, বনসৃজন করা প্রভৃতি।
(iv) গ্রামের জনগণের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করা।
(ঘ) পশ্চিমবঙ্গের স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা বিষয়ে একটি টীকা লেখে
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। এই স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা দুই ভাগে বিভক্ত-(i) পৌর (ii) গ্রামীণ।
(i) পৌর: ছোটো ও মাঝারি শহরে পৌরসভা বা মিউনিসিপ্যালিটি এবং বড়ো বড়ো শহর কলকাতা, হাওড়া, শিলিগুড়ি প্রভৃতিতে পৌরনিগম বা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন থাকে।
(ii) গ্রামীন: পশ্চিমবঙ্গের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থার তিনটি স্তর হলো-
(a) গ্রামে-গ্রাম পঞ্চায়েত।
(b) ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতি।
(c) জেলায়-জেলা পরিষদ।
• নির্বাচন: পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের নির্বাচনে ওই এলাকার ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স্ক নাগরিকগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের সদস্যরা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
• পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের কাজ পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের কাজ হলো-
(a) এলাকায় জনগণের সেবামূলক কাজ করা।
(b) এলাকার উন্নয়ন করা ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা।
(c) এলাকার স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানীয় জল, পরিচ্ছন্নতা, বনসৃজন • প্রভৃতি বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
(ঙ) প্রাচীনকালে ভারতে ও অন্য কোথাও গণতন্ত্রের কথা জানা যায় কী? সেই গণতন্ত্র কেমন ছিল বলে তুমি মনে করো?
উত্তর: প্রাচীন ভারতে গণতন্ত্র: প্রাচীন ভারতে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার কথা জানা যায়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ষোড়শ মহাজনপদের মধ্যে বৃজি ও মল্ল রাজ্যে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু ছিল। এছাড়া শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বাংলায় চূড়ান্ত রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তার থেকে রক্ষা পাবার জন্য বাংলার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সর্বসম্মতিক্রমে ‘গোপাল’ নামে এক সামন্তকে বাংলার রাজা হিসেবে মনোনীত করেন। গোপাল এভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাংলায় সিংহাসনে বসেন।
• প্রাচীনকালে ভারতে বাইরে গণতন্ত্র প্রাচীনকালে গ্রিস দেশের এথেন্সে গণতন্ত্র ছিল। এথেন্স ছিল গণতন্ত্রের জন্মভূমি। এক্ষেত্রে এথেন্সবাসীরা অভিনব পদ্ধতিতে তাদের শাসক নির্বাচন করত। তারা ভাঙা কলসির টুকরোর উপর পছন্দের চিহ্ন এঁকে একটি বড়ো কলসির মধ্যে ফেলে দিত। যার পক্ষে বেশি কলসির টুকরো জমা হতো, তিনিই হতেন শাসক।
কল্পনা করে লেখো (১০০-১৫০টি শব্দের মধ্যে)
(ক) ধরো তুমি একজন পৌর প্রতিনিধি/পঞ্চায়েত সদস্য। তোমার স্থানীয় অঞ্চলের উন্নতি করার জন্য তুমি কী কী কাজ করবে। শ্রেণিকক্ষে যুক্তিসহ একটি বক্তৃতা পেশ করো।
উত্তর: আমি একজন পৌরপ্রতিনিধি বা পঞ্চায়েত সদস্য হলে আমার এলাকায় উন্নতির জন্য আমি বিভিন্ন জনসেবামূলক কাজ করতাম।
• উন্নতির জন্য বিভিন্ন কাজ:
(i) জনকল্যাণ: আমার এলাকার বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগের সুবিধার জন্য রাস্তাঘাট নির্মাণ ও মেরামত করতাম। এছাড়া পুকুর খনন ও সংস্কার, শ্মশানঘাট ও কবরখানা রক্ষণাবেক্ষণ করতাম।
(ii) জল সরবরাহ এলাকার সব জায়গায় যাতে পানীয়জল সরবরাহ করা যায় তার ব্যবস্থা করতাম। এছাড়া জলাধার পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখার ব্যবস্থা করতাম।
(iii) জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণ আমি ম্যালেরিয়া, গুটি বসন্ত, কলেরা, ডেঙ্গু ইত্যাদি মহামারি হাত থেকে আমার এলাকার মানুষদের রক্ষা করার জন্য হাসপাতালগুলির উন্নতি করার চেষ্টা করতাম। এলাকার সব মানুষকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা করতাম।
(খ) ধরো তুমি ভারতের একজন সাধারণ মানুষ। তুমি তোমার অঞ্চলের উন্নতি করতে চাও। কী কী ভাবে তুমি সেই উন্নতির পরিকল্পনা করবে। শ্রেণিকক্ষে যুক্তিসহ একটি বিতর্কের আয়োজন করো।
উত্তর: আমি ভারতের একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার অঞ্চলের উন্নতি করার জন্য কিছু পরিকল্পনা তৈরি করব। এই পরিকল্পনাগুলি সার্থকভাবে রূপায়িত হলে আশা করি আমার অঞ্চলের উন্নতি হবে।
• উন্নতির পরিকল্পনাসমূহ:
(i) যোগাযোগ ব্যবস্থা সবার আগে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করব। প্রথমেই আমার এলাকায় যে সমস্ত কাঁচা রাস্তাগুলি আছে সেগুলি পাকা করার চেষ্টা করব। সরু রাস্তাগুলিকে আরও চওড়া করব। পুরোনো রাস্তাগুলি মেরামত করার পাশাপাশি আরও নতুন নতুন রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেবো।
(ii) শিক্ষাব্যবস্থা: জীবনের উন্নয়নের প্রধান সোপানই হলো শিক্ষা। আমার এলাকার ছাত্রছাত্রীদের উপযুক্ত রূপে শিক্ষিত করার জন্য আরও প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেবো। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে এবং এলাকার বিত্তবান মানুষদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানাবো।
(iii) স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: আমার অঞ্চলের সমস্ত মানুষ যাতে সুস্থ থাকে তার জন্য সরকারি স্বাস্থ্যবিধির প্রচার চালাবো। শিশুরা যাতে টীকাকরণ ও পোলিও কর্মসূচিতে অংশ নেয় সেই বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলবো। ডেঙ্গু, কলেরা, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি যেন ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য এলাকার সমস্ত জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা করবো। সরকারের কাছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার আবেদন রাখবো। পাশাপাশি পুরোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যাতে সঠিক পরিসেবা মেলে সেই ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।
(গ) ধরো পাল যুগের বাংলার একজন সাধারণ লোকের সঙ্গে তোমার হঠাৎ দেখা হয়ে গিয়েছে। তোমারা রাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এসব নিয়ে গল্প করছ। তোমাদের সেই কথাবার্তা নিয়ে সংলাপ লেখো।
উত্তর: পালযুগে বাংলার একজন সাধারণ লোকের সঙ্গে আমার কথোপকথন:
• স্থান: প্রাচীন বাংলা।
• সময় পাল রাজা গোপালের আমল।
• আমি: আপনাদের রাজ্যের কি খবর? এতদিন ধরে যে বিশৃঙ্খল
অবস্থা চলছিল তাকি শান্ত হয়েছে।
• প্রাচীন বাংলার লোক আমাদের বাংলার পরিবেশ এখন অনেক শান্ত। বাংলার সকল গণ্যমান্য সামন্ত, প্রজা সবাই মিলে গোপাল নামে এক সামন্তকে বাংলার রাজা হিসেবে সিংহাসনে বসিয়েছেন। বাংলার সিংহাসনে গোপালের এই নির্বাচন এক গণতান্ত্রিক পদ্ধতির ফল।
• আমি: হ্যাঁ সেটা ঠিক। কারণ এর আগে আমরা দেখেছি যে শাসক নির্ধারণে ক্ষমতা প্রজাদের ছিল না।
• প্রাচীন বাংলার লোক: আপনি ঠিকই বলেছেন, এতদিন পর্যন্ত আমরা রাজতন্ত্রের কথা শুনে এসেছি। অর্থাৎ একজন, রাজা মারা যাবার পর তাঁর বংশধরেরা উত্তরাধিকার সূত্রে সিংহাসন লাভ করতেন। এভাবেই চলে এসেছে শাসক নির্বাচন প্রক্রিয়া।
• আমি: আপনার মতে কোন আদর্শটি বেশি গ্রহণযোগ্য-রাজতন্ত্র, না গণতন্ত্র।
• প্রাচীন বাংলার লোক: আমার মতে রাজতন্ত্র অপেক্ষা গণতন্ত্রই অধিক গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত।
• আমি: আপনি কেন গণতন্ত্রকেই অধিক গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন?
• প্রাচীন বাংলার লোক আসলে গণতন্ত্রের মাধ্যমে প্রজারা, নিজেরাই নিজেদের মধ্যে থেকে শাসক বেছে নেওয়ার সুযোগ পায়। সমস্ত জনগণের মতামত প্রতিফলিত হয় গণতন্ত্রের মাধ্যমে। তাই রাজতন্ত্র অপেক্ষা গণতন্ত্রই অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য।
৫.১ ভারতকে কেন গণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় বলা হয়? দেশ পরিচালনায় সংবিধানের ভূমিকা কি বলে তুমি মনে করো?
উত্তর • ভারতবর্ষকে গণতান্ত্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় বলার কারণ-
• গণতান্ত্রিক: যে শাসনব্যবস্থায় জনগণ নিজেদের মধ্যে থেকে শাসক বেছে শাসন পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে, তাকে গণতন্ত্র বলে। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ কারণ ভারতে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সের নাগরিক গণ ভোট দিয়ে নিজেরাই শাসক নির্বাচন করতে পারে।
• যুক্তরাষ্ট্রীয়: যে দেশে সংবিধান অনুসারে একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতা ভাগ করে শাসন পরিচালিত হয়, তাকে যুক্তরাষ্ট্র বলে। ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা আছে কারণ ভারতে একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রতি রাজ্যে একটি করে রাজ্য সরকার আছে।
• দেশ পরিচালনায় সরকারের ভূমিকা: সরকার দেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করে। সরকার দেশের জনগণকে ভালো রাখার জন্য এবং দেশের শান্তি ও উন্নতির জন্য কাজ করে। আর সরকারকে সংবিধান মেনেই সব কাজ করতে হয়। তাই বলা যায় দেশ পরিচালনায় সংবিধান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫২ সরকারের কয়টি ভাগ? ঐ ভাগগুলি কোন্টি কি কাজ করে? বিচার বিভাগকে কেন আলাদাকরে রাখা হয়?
উত্তর : সরকারের কাজ: ভারত সরকারের তিনটি ভাগ-(1) আইন বিভাগ (2) শাসন বিভাগ (3) বিচার বিভাগ
• সরকারের বিভাগগুলির কাজ: ভারত সরকারের তিনটি বিভাগের কাজ হলো-
(i) আইন বিভাগ: আইন বিভাগের কাজ হলো দেশ পরিচালনার জন্য আইন তৈরি করা।
(ii) শাসন বিভাগ: শাসনবিভাগের কাজ হলো আইন অনুসা দেশ পরিচালনা করা।
(iii) বিচার বিভাগ: বিচার বিভাগের কাজ হলো সংবিধান অনুসা দেশ শাসন হচ্ছে কিনা দেশের জনগণের স্বার্থরক্ষা হচ্ছে সি তা দেখা এবং এই নিয়ম মেনে না চললে বা নিয়ম ভাঙায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
• বিচার বিভাগকে আলাদা রাখার কারণ: দেশের বিজ বিভাগকে বাকি দুটো বিভাগ-আইন ও শাসন বিভাগ থে আলাদা রাখা হয়। কারণ দেশের সমস্ত নাগরিক যাতে সুবিচা পায়। দেশের আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। দেশের আইন শাসনবিভাগের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও যদি সংবিধান মেনেন চলেন তবে তাঁদের বিরুদ্ধেও বিচার বিভাগ ব্যবস্থা নিয়ে পারে।
৫.৩ পৌরসভা ও গ্রামপঞ্চায়েতগুলি কি কি কাজ করে?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনমূলক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়-
(i) শহরে বা নগরের ক্ষেত্রে পৌরসভা।
(ii) গ্রামের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত।
• পৌরসভার কাজ:
(i) পৌরসভার এলাকায় বসবাসকারী জনগণের মধ্যে সেবামূলক কাজ করা।
(ii) জনগণের স্বাস্থ্য বিষয়ে দায়িত্ব পালন করা।
(iii) শহরের উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা দেখাশোনা করা।
(iv) শহরে পানীয় জল সরবরাহ করা, রাস্তাঘাট বানানো, দূফা রোধ করা শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা প্রভৃতি।
(v) বিদ্যালয়, হাসপাতাল প্রভৃতি বানিয়ে শিক্ষার প্রসারে ও স্বাসা উন্নয়নে পৌরসভাগুলিকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।
• গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ:
(i) গ্রামের সবরকম উন্নতি করা।
(ii) গ্রামে পানীয় জলের সরবরাহ করা, গ্রামকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, পথঘাট নির্মাণ করা।
(iii) শিক্ষাদানের জন্য বিদ্যালয় তৈরি করা, চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করা, বনসৃজন করা প্রভৃতি।
(iv) গ্রামের জনগণের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করা।
৫.৪ পশ্চিমবঙ্গের স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা বিষয়ে একটি টীকা লেখো।
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। এই স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা দুই ভাগে বিভক্ত- (i) পৌর
(ii) গ্রামীন।
(i) পৌর: ছোটো ও মাঝারি শহরে পৌরসভা বা মিউনিসিপ্যালিটি এবং বড়ো বড়ো শহর কলকাতা, হাওড়া, শিলিগুড়ি প্রভৃতিতে পৌরনিগম বা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন থাকে।
(ii) গ্রামীন : পশ্চিমবঙ্গের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থার তিনটি স্তর হলো-
(a) গ্রামে-গ্রাম পঞ্চায়েত।
(b) ব্লকে-পঞ্চায়েত সমিতি।
(c) জেলায়-জেলা পরিষদ।
• নির্বাচন: পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের নির্বাচনে ওই এলাকার ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স্ক নাগরিকগণ ভোট দিয়ে তাদের • প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের সদস্যরা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
• পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের কাজ: পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের কাজ হলো-
(a) এলাকায় জনগণের সেবামূলক কাজ করা।
(b) এলাকার উন্নয়ন করা ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা।
(c) এলাকার স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানীয় জল, পরিচ্ছন্নতা, বনসৃজন প্রভৃতি বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৫.৫ প্রাচীনকালে ভারতে ও অন্য কোথাও গণতন্ত্রের কথা জানা যা কি? সেই গণতন্ত্র কেমন ছিল বলে তুমি মনে করো।
উত্তর: প্রাচীন ভারতে গণতন্ত্র : প্রাচীন ভারতে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার কথা জানা যায়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ষোড়শ মহাজনপদের মধ্যে বৃজি ও মল্ল রাজ্যে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু ছিল। এছাড়া শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বাংলায় চূড়ান্ত রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তার থেকে রক্ষা পাবার জন্য বাংলার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সর্বসম্মতিক্রমে ‘গোপাল’ নামে এক সামন্তকে বাংলার রাজা হিসেবে মনোনীত করেন। গোপাল এভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাংলায় সিংহাসনে বসেন।
• প্রাচীনকালে ভারতে বাইরে গণতন্ত্র : প্রাচীনকালে গ্রিস দেশের এথেন্সে গণতন্ত্র ছিল। এথেন্স ছিল গণতন্ত্রের জন্মভূ মি। এক্ষেত্রে এথেন্সবাসীরা অভিনব পদ্ধতিতে তাদের শাসক নির্বাচন করত। তারা ভাঙা কলসির টুকরোর উপর পছন্দের চিহ্ন এঁকে একটি বড়ো কলসির মধ্যে ফেলে দিত। যার পক্ষে বেশি কলসির টুকরো জমা হতো, তিনিই হতেন শাসক। ৬আট দশটি বাক্যের মধ্যে লেখো
(ক) ধরো তুমি একজন পৌর প্রতিনিধি/পঞ্চায়েত সদস্য। তোমার স্থানীয় অঞ্চলের উন্নতি করার জন্য তুমি কি কি কাজ করবে, শ্রেণিকক্ষে যুক্তিসহ একটি বক্তৃতা পেশ করো।
উত্তর: আমি একজন পৌরপ্রতিনিধি বা পঞ্চায়েত সদস্য হলে আমার এলাকায় উন্নতির জন্য আমি বিভিন্ন জনসেবামূলক কাজ করতাম।
• উন্নতির জন্য বিভিন্ন কাজ :
(i) জনকল্যাণ : আমার এলাকার বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগের সুবিধার জন্য রাস্তাঘাট নির্মাণ ও মেরামত করতাম। এছাড়া পুকুর খনন ও সংস্কার, শ্মশানঘাট ও কবরখানা রক্ষণাবেক্ষণ করতাম।
(ii) জল সরবরাহ : এলাকার সব জায়গায় যাতে পানীয়জল সরবরাহ করা যায় তার ব্যবস্থা করতাম। এছাড়া জলাধার পরিষ্কার ও জীবানুমুক্ত রাখার ব্যবস্থা করতাম।
(iii) জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণ : আমি ম্যালেরিয়া, গুটি বসন্ত, কলেরা, ডেঙ্গু ইত্যাদি মহামারি হাত থেকে আমার এলাকার মানুষদের রক্ষা করার জন্য হাসপাতালগুলির উন্নতি করার চেষ্টা করতাম। এলাকার সব মানুষকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা করতাম।
(iv) পরিবেশ সুরক্ষা: আমি পরিবেশের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করতাম, যেমন-সমস্ত জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা করতাম, জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতাম, বৃক্ষরোপণ উৎসবের মাধ্যমে আমার এলাকার মানুষদের গাছ লাগানোতে উৎসাহ দিতাম।
(v) বৈদ্যুতিকরণ: এলাকার প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিতাম এবং রাস্তায় আলো লাগাতাম।
(vi) দুস্থদের সেবা : অসুস্থ ও অনাথদের তত্ত্বাবধান করতাম। বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করতাম।
(vii) স্বনির্ভরতার ব্যবস্থা গ্রহণ: স্থানীয় কৃষিজাত ও হস্তশিল্পজাত সামগ্রীর বাজার তৈরির জন্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতাম।
এছাড়াও বাজার, মেলা, হাট স্থাপন ও সেগুলি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গ্রামের মানুষদের স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ করে দিতাম।
(viii) অন্যান্য: পতিত জমি উদ্ধার করে, সেগুলিকে ব্যবহারযোগ্য করার উদ্যোগ নিতাম। গ্রামীণ গৃহনির্মাণ কর্মসূচি গ্রহণ ও কৃষিসমবায় ব্যবস্থা গড়ে তুলতাম।
(খ) ধরো তুমি ভারতের একজন সাধারণ মানুষ। তুমি তোমার অঞ্চলের উন্নতি করতে চাও। কি কিভাবে তুমি সেই উন্নতির পরিকল্পনা করবে, শ্রেণিকক্ষে যুক্তিসহ একটি বিতর্কের আয়োজন করো।
উত্তর: আমি ভারতের একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার অঞ্চলের উন্নতি করার জন্য কিছু পরিকল্পনা তৈরি করব। এই পরিকল্পনাগুলি সার্থকভাবে রূপায়িত হলে আশা করি আমার অঞ্চলের উন্নতি হবে।
• উন্নতির পরিকল্পনাসমূহ:
(i) যোগাযোগ ব্যবস্থা সবার আগে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করব। প্রথমেই আমার এলাকায় যে সমস্ত কাঁচা রাস্তাগুলি আছে সেগুলি পাকা করার চেষ্টা করব। সরু রাস্তাগুলিকে আরও চওড়া করব। পুরোনো রাস্তাগুলি মেরামত করার পাশাপাশি আরও নতুন নতুন রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেবো।
(ii) শিক্ষাব্যবস্থা: জীবনের উন্নয়নের প্রধান সোপানই হলো শিক্ষা। আমার এলাকার ছাত্রছাত্রীদের উপযুক্ত রূপে শিক্ষিত করার জন্য আরও প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেবো। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে এবং এলাকার বিত্তবান মানুষদের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানাবো।
(iii) স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: আমার অঞ্চলের সমস্ত মানুষ যাতে সুস্থ থাকে তার জন্য সরকারি স্বাস্থ্যবিধির প্রচার চালাবো। শিশুরা যাতে টীকাকরণ ও পোলিও কর্মসূচিতে অংশ নেয় সেই বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলবো। ডেঙ্গু, কলেরা, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি যেন ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য এলাকার সমস্ত জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা করবো। সরকারের কাছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার আবেদন রাখবো। পাশাপাশি পুরোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যাতে সঠিক পরিসেবা মেলে সেই ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করব।
(গ) ধরো, পাল যুগের বাংলার একজন সাধারণ লোকের সঙ্গে তোমার হঠাৎ দেখা হয়ে গিয়েছে। তোমরা রাজতন্ত্র, গণছ এসব নিয়ে গল্প করছো। তোমাদের সেই কথাবার্তা নিয়ে সংলাপ লেখো।k
উত্তর: পালযুগে বাংলার একজন সাধারণ লোকের সঙ্গে আমাদ কথোপকথন:
• স্বান: প্রাচীন বাংলা।
• সময়: পাল রাজা গোপালের আমল।
• আমি: আপনাদের রাজ্যের কি খবর? এতদিন ধরে যে বিশৃঙ্খ অবস্থা চলছিল তাকি শান্ত হয়েছে।
• প্রাচীন বাংলার লোক: আমাদের বাংলার পরিবেশ এখ অনেক শান্ত। বাংলার সকল গণ্যমান্য সামন্ত, প্রজা সবাই মিলে গোপাল নামে এক সামন্তকে বাংলার রাজা হিসেবে সিংহাসনে বসিয়েছেন। বাংলার সিংহাসনে গোপালের এই নির্বাচন এর গণতান্ত্রিক পদ্ধতির ফল।
• আমি: হ্যাঁ সেটা ঠিক। কারণ এর আগে আমরা দেখেছি যে শাসক নির্ধারণে ক্ষমতা প্রজাদের ছিল না।
• প্রাচীন বাংলার লোক: আপনি ঠিকই বলেছেন, এতদিন পর্যন্ত আমরা রাজতন্ত্রের কথা শুনে এসেছি। অর্থাৎ একজন, রাজ মারা যাবার পর তাঁর বংশধরেরা উত্তরাধিকার সূত্রে সিংহাসন
লাভ করতেন। এভাবেই চলে এসেছে শাসক নির্বাচন প্রক্রিয়
• আমি: আপনার মতে কোন আদর্শটি বেশি গ্রহণযোগ্য-রাজতন্ত্র
না গণতন্ত্র।
• প্রাচীন বাংলার লোক: আমার মতে রাজতন্ত্র অপেক্ষা গণতন্ত্র অধিক গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত।
• আমি: আপনি কেন গণতন্ত্রকেই অধিক গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন?
• প্রাচীন বাংলার লোক: আসলে গণতন্ত্রের মাধ্যমে প্রজার নিজেরাই নিজেদের মধ্যে থেকে শাসক বেছে নেওয়ার সুযোগ পায়। সমস্ত জনগণের মতামত প্রতিফলিত হয় গণতন্ত্রের মাধ্যমে। তাই রাজতন্ত্র অপেক্ষা গণতন্ত্রই অনেক বেশি