Class 10 Bangla Chapter 10 Solution
পথের দাবী
1. MCQs Question Answer
১. ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত শরৎচন্দ্রের উপন্যাসটি হল-
(ক) পথের দাবী
(খ) শেষপ্রশ্ন
(গ) গৃহদাহ
(ঘ) চরিত্রহীনক
উওব়: (ক) পথের দাবী
২. হলঘরে মোটঘাট নিয়ে বসে আছে-
(ক) জন-পাঁচেক
(খ) জন-ছয়েক
(গ) জন-চারেক
(ঘ) জন-তিনেক
উওব়: (খ) জন-ছয়েক
৩. তেলের খনির কারখানার মিস্ত্রিরা চাকরির উদ্দেশে গিয়েছিল-
(ক) রেঙ্গুন
(খ) কলকাতা
(গ) দিল্লি
(ঘ) কোনোটাই নয় [রামকৃর মিশন বিদ্যালয়, নরেন্দ্রপুর]
উওব়: (ক) রেঙ্গুন
৪. পলিটিকাল সাসপেক্টের নাম ছিল-
(ক) অপূর্ব রায়
(খ) সব্যসাচী চক্রবর্তী
(গ) সব্যসাচী মল্লিক
(ঘ) নিমাইবাবু
উওব়: (গ) সব্যসাচী মল্লিক
৫. সব্যসাচী সন্দেহে আটক করা ব্যক্তির বয়স–
(ক) ত্রিশ-বত্রিশের অধিক নয়
(খ) ত্রিশ-বত্রিশের কম
(গ) চল্লিশের মধ্যে
(ঘ) চল্লিশের বেশি
উওব়: (ক) ত্রিশ-বত্রিশের অধিক নয়
৬. সব্যসাচী নিজের নাম কী বলেছিলেন?
(ক) সব্যসাচী মল্লিক
(খ) নিমাই মহাপাত্র
(গ) অপূর্ব রায়
(ঘ) গিরীশ মহাপাত্র
উওব়: (ঘ) গিরীশ মহাপাত্র
৭. গিরীশ মহাপাত্রের পায়ে যে ফুল মোজা ছিল, তার রং-
(ক) নীল
(খ) লাল
(গ) সবুজ
(ঘ) রামধনুর মতো
[রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুল; সুনীতি একাডেমি]
উওব়: (গ) সবুজ
৮. ‘কেবল আশ্চর্য’-আশ্চর্যের বিষয়টি ছিল-
(ক) শরীরের গঠন
(খ) মাথার পাগড়ি
(গ) বাহারের দীনতা
(ঘ) দুটি চোখের দৃষ্টি
উওব়: (ঘ) দুটি চোখের দৃষ্টি
৯. গিরীশ মহাপাত্র তার ট্যাক থেকে বার করেছিল–
(ক) একটি টাকা ও গন্ডা-ছয়েক পয়সা
(খ) পাঁচ টাকার একটি নোট
(গ) গন্ডা-ছয়েক পয়সা
(ঘ) একটা দেশলাই
উওব়: (ক) একটি টাকা ও গন্ডা-ছয়েক পয়সা
১০. গিরীশ মহাপাত্রের বুকপকেট থেকে দেখা যাচ্ছিল–
(ক) একটি রুমালের কিছু অংশ
(খ) গাঁজার কলকে
(গ) একটি টাকার নোট
(ঘ) লাল রঙের ফিতে
উওব়: (ক) একটি রুমালের কিছু অংশ
১১. গিরীশ মহাপাত্রের বুকপকেটের ব্রুমালে কোন্ প্রাণীর অবয়ব ছিল?
(ক) হরিণ
(খ) বাঘ
(গ) শেয়াল
(ঘ) হায়না
[বর্ধমান টাউন স্কুল]
উওব়: (খ) বাঘ
১২. গিরীশ মহাপাত্রের কাছ থেকে যে গাঁজার কলকে পাওয়া গিয়েছিল সেটি সে রেখেছিল-
(ক) সুটকেসে
(খ ব্যাগে
(গ) ট্যাকে
(ঘ)পকেটে
উওব়: পকেটে
১৩. “…যদি কারও কাজে লাগে তাই তুলে রেখেচি।” বক্তা তুলে রেখেছিল-
(ক) বুমাল
(খ) মোজা
(গ) টিনের বাক্স
(ঘ) গাঁজার কলকে
উওব়: (ঘ) গাঁজার কলকে
১৪. “পথে কুড়িয়ে পেলাম” বক্তা পথে কুড়িয়ে পেয়েছিল-
(ক) কিছু টাকা
(খ) একটি গাঁজার কলকে
(গ) কম্পাস
(ঘ) একটি দেশলাই
উওব়: (খ) একটি গাঁজার কলকে
১৫. নিমাইবাবু গিরীশ মহাপাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন-
(ক) সে গাঁজা খায় কি না
(খ) সে ফুটবল খেলতে জানে কি না
(গ) সে কী কী বই পড়েছে
(ঘ) সে কোথা থেকে এসেছে
উওব়: (ক) সে গাঁজা খায় কি না
১৬. “বুড়ো মানুষের কথাটা শুনো” বুড়ো মানুষটি হলেন-
(ক) জগদীশ বসু
(খ) অপূর্ব
(গ) গিরীশ মহাপাত্র
(ঘ) নিমাইবাবু
উওব়: (ঘ) নিমাইবাবু
১৭. “তুমি এখন যেতে পারো মহাপাত্র।” কথাটি বলেছেন-
(ক) জগদীশবাবু
(খ) অপূর্ব
(গ) তলওয়ারকর
(ঘ) নিমাইবাবু
[কাঁথি হাই স্কুল]
উওব়: (ঘ) নিমাইবাবু
১৮. যার গন্ধে থানাসুদ্ধ লোকের মাথা ধরে গেল-
(ক) উগ্র পারফিউমের গন্ধে
(খ) আঁশটে গন্ধে
(গ) নারকেল তেলের গন্ধে
(ঘ) লেবুর তেলের গন্ধে
উওব়: (ঘ) লেবুর তেলের গন্ধে
১৯. নিমাইবাবু জগদীশকে যে দিকে নজর দিতে বলেছিলেন-
(ক) বন্দরের দিকে
(খ) স্টেশনের দিকে
(গ) জাহাজঘাটের দিকে
(ঘ) রাত্রের মেল ট্রেনটার দিকে
[পাঠভবন]
উওব়: (ঘ) রাত্রের মেল ট্রেনটার দিকে
২০. “কিন্তু এই জানোয়ারটাকে ওয়াচ করবার দরকার নেই বড়োবাবু।”- এ কথা বলেছেন-
(ক) অপূর্ব
(খ) নিমাইবাবু
(গ) জগদীশবাবু
(ঘ) রামদাস
উওব়: (গ) জগদীশবাবু
২১. ভাঙা টিনের তোরঙ্গটি ধরে বেরিয়ে এসেছিল–
(ক) সব্যসাচী রায়
(খ) নিমাই মহাপাত্র
(গ) গিরীশ মহাপাত্র
(ঘ) অপূর্ব রায়
উওব়: (গ) গিরীশ মহাপাত্র
2. Very Short Question Answer
১. তেওয়ারি কোথায় গিয়েছিল এবং সে-সময় কী ঘটনা ঘটেছিল?
উওব়: তেওয়ারি বর্মা নাচ দেখতে ফয়ারে গিয়েছিল আর সেই সময় অপূর্বা ঘরে চুরি হয়েছিল।
২. “তারপর সকালে গেলাম পুলিশকে খবর দিতে।”-কে, কেন পুলিশকে খবর দিতে গিয়েছিল?
উওব়: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশে অপূর্বর ঘরে চুরি হয়েছিল। তাই সে পুলিশকে খবর দিতে গিয়েছিল।
3. Short Question Answer
১. তেলের খনির কারখানার মিস্ত্রিরা কেন রেঙ্গুন চলে এসেছিল?
উওব়: বর্মা অয়েল কোম্পানিতে, তেলের খনির কারখানায় মিস্ত্রিরা কাজ করত। সেখানকার জলহাওয়া তাদের সহ্য হচ্ছিল না। তাই চাকরির উদ্দেশ্যে তারা রেঙ্গুনে চলে এসেছিল।
২. কে পুলিশ স্টেশনে বসে থাকা বাঙালিদের তদন্ত করেছিলেন?
উওব়: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশে জগদীশবাবু পুলিশ স্টেশনে বসে থাকা বাঙালিদের টিনের তোরঙ্গ ও ছোটো-বড়ো পুঁটুলি খুলে তদন্ত করছিলেন।
৩. কাকে, কী সন্দেহে আটকে রাখা হয়েছিল?
উওব়: ‘পথের দাবী’ রচনাংশে পুলিশ স্টেশনের একটি ঘরে একজনকে পলিটিকাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে আটকে রাখা হয়েছিল। সে তার নাম বলেছিল গিরীশ মহাপাত্র।
৪. পলিটিকাল সাসপেক্ট বলতে কী বোঝায়?
উওব়: রাজনৈতিক দিক থেকে সন্দেহভাজন এবং ব্যবস্থার পক্ষে বিপজ্জনক ব্যক্তিকেই পলিটিকাল সাসপেক্ট বলা হয়। আলোচ্য ‘পথের দাবী’ রচনাংশে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক ইংরেজ সরকারের চোখে ছিল পলিটিকাল সাসপেক্ট।
৫. সব্যসাচীর চোখের দৃষ্টি দেখে কী মনে হয়েছিল?
উওব়: সব্যসাচীর গভীর জলাশয়ের মতো দৃষ্টির সামনে কোনোরকম খেলা বা চালাকি চলবে না। এই দৃষ্টির গভীরে যে ক্ষীণ প্রাণশক্তি লুকোনো আছে, মৃত্যুও সেখানে প্রবেশ করতে ভয় পায়।
৬. নিমাইবাবু কীসের প্রতি অপূর্বর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন?
উওব়: ‘পথের দাবী’ রচনাংশে নিমাইবাবু গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষার বাহার ও পারিপাট্যের প্রতি অপূর্বর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন।
৭. গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষার বাহার ও পারিপাট্য দেখে নিমাইবাবু কী বলেছিলেন?
উওব়: গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে নিমাইবাবু বলেছিলেন, বেশভূষা দেখে মনে হচ্ছে লোকটির স্বাস্থ্য গেলেও, তার শখ ষোলো আনাই বজায় আছে।
৮. পলিটিকাল সাসপেক্ট ব্যক্তিটি তার কী নাম বলেছিল?
উওব়: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশে নিমাইবাবু পলিটিকাল সাসপেক্ট ব্যক্তিটির নাম জিজ্ঞাসা করায়, সে তার নাম বলেছিল গিরীশ মহাপাত্র।
৯. গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাঁক ও পকেট থেকে কী বার হয়েছিল?
উওব়: গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাঁক থেকে একটি টাকা আর গন্ডা-ছয়েক পয়সা এবং পকেট থেকে একটা লোহার কম্পাস, একটা কাঠের ফুটবুল, কয়েকটা বিড়ি, একটা দেশলাই ও গাঁজার একটা কলকে বার হয়েছিল।
১০. গিরীশ মহাপাত্রকে গাঁজা খাওয়ার প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে, সে কী বলে?
উওব়: গিরীশ মহাপাত্রকে গাঁজা খাওয়ার প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, সে নিজে খায় না। কারোর কাজে লাগতে পারে এই ভেবে সে কুড়িয়ে পাওয়া কলকেটা নিজের কাছে রেখেছে।
১১. “নিমাইবাবু হাসিয়া কহিলেন”-নিমাইবাবু হেসে কী বললেন?
উওব়: গিরীশ মহাপাত্র কতটা সদাশয় ব্যক্তি যে অন্যের কাজে লাগবে বলে গাঁজার কলকেটা কুড়িয়ে পকেটে রেখেছেন-নিমাইবাবু হেসে এ কথাই বলতে চেয়েছিলেন।
১২. অপূর্ব পুলিশ স্টেশন থেকে বেরিয়ে কী দেখল?
উওব়: পুলিশ স্টেশন থেকে বেরিয়ে অপূর্ব দেখল গিরীশ মহাপাত্র একটা
ভাঙা টিনের তোরঙ্গ আর বিছানার বান্ডিল সঙ্গে নিয়ে রাস্তা ধরে চলে যাচ্ছে।.
১৩. “তুমি গাঁজা খাও?”-কে, কাকে, কেন এই প্রশ্ন করেছিলেন?
উওব়: গিরীশ মহাপাত্রের পকেট থেকে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া গিয়েছিল। তাই নিমাইবাবু তাকে উক্ত প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করেছিলেন ।
১৪. “বুড়ো মানুষের কথাটা শুনো।” বুড়ো মানুষটি কী বলেছিলেনও
উওব়: ‘বুড়ো মানুষ’ অর্থাৎ নিমাইবাবু গিরীশ মহাপাত্রকে বলেছিলেন অস্বীকার করলেও তার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার চিহ্ন স্পষ্ট। কিন্তু নিয়ে জীর্ণ শরীরের কথা ভেবে তার গাঁজা খাওয়া উচিত নয়।
১৫. “সে যে বর্মায় এসেছে এ খবর সত্য।” কার বর্মায় আসার কথার হয়েছে?
▶ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশে ভারাংয়ে মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম নেতা ও বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের বৰ্মায় আসার কথা বলা হয়েছে।
১৬. “বড়োবাবু হাসিতে লাগিলেন।” বড়োবাবুর হাসির কারণ কী?
উওব়: গিরীশ মহাপাত্র মাথায় লেবুর তেল সমস্ত লোকের মাথা ধরার উপক্রম হয়। কথা বললে বড়োবাবু হেসে ওঠেন। জগদীশবাবু বড়োবাবুকে সে
১৭.“এই জানোয়ারটাকে ওয়াচ করার দরকার নেই, বড়োবাবু।” বক্তার এমন উক্তির কারণ কী?
উওব়: বক্তা জগদীশবাবু আলোচ্য উক্তিটি করেছিলেন কারণ গিরী মহাপাত্রের মাথার চুলে লাগানো লেবুর তেলের গন্ধে থানাস লোকের মাথা ধরার উপক্রম হয়েছিল। তাঁর ধারণায় এমন লোক সব্যসাচী মল্লিক হতে পারেন না।
4. Long Question Answer
১ “পলিটিক্যাল সাসপেঞ্জ সব্যসাচী মল্লিককে নিমাইবাবুর সম্মুখে হাজির করা হইল”-‘পলিটিক্যাল সাসপেক্ট’ কথাটির অর্থ কী? এরপরে পুলিশ স্টেশনে কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা পাঠ্যাংশ অনুসরণে আলোচনা করো। ১+৪ [রানাঘাট দেবনাথ ইন্সটিটিউশন ফর গার্লস; হেয়ার স্কুল]
উত্তর: ‘পলিটিক্যাল সাসপেক্ট’ কথাটির অর্থ রাজনৈতিকভাবে সন্দেহভাজন।
▶ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ গল্পাংশে পলিটিকাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে পুলিশ স্টেশনে পুলিশের বড়োকর্তার সামনে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাকে দেখে মনে হয়েছিল তার আয়ু যেন আর বেশিদিন নেই। তার ফরসা রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে গিয়েছিল। অল্প কাশির পরিশ্রমেই সে হাঁপাতে শুরু করেছিল। পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হলে সে নিজের নাম গিরীশ মহাপাত্র বলেছিল। সে তেলের খনিতে কাজ করত বলে জানায়। বর্মা থেকে সে রেঙ্গুনে এসেছিল। তার ট্যাঁক থেকে একটা টাকা, লোহার কম্পাস, মাপ করার জন্য কাঠের ফুটবুল, কয়েকটা বিড়ি, একটা দেশলাই আর-একটা গাঁজার কলকে বার করা হয়। পুলিশের কর্তা নিমাইবাবু তাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, সে গাঁজা খায় কি না। তার উত্তরে গিরীশ মহাপাত্র বলে, গাঁজার কলকেটা সে রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছে। কারোর যদি কাজে লাগে সে দিয়ে দেবে। গিরীশ মহাপাত্রের কথাবার্তা শুনে, তার সাজপোশাক, আচার-ব্যবহার দেখে সকলেই নিশ্চিত হয় যে, এই গিরীশ মহাপাত্র কখনোই সব্যসাচী মল্লিক হতে পারে না। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, খানিকক্ষণ তার সঙ্গে তামাশা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
২ “তাহার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া মুখ ফিরাইয়া হাসি গোপন করিল।”-কে হাসি গোপন করল? তার হাসি পাওয়ার কারণ কী?
উত্তর: অপূর্ব তার হাসি গোপন করেছিল।
▶ গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা এবং পোশাক-পরিচ্ছদ ছিল অপূর্বর হাসির কারণ। গিরীশ মহাপাত্রের বয়স ত্রিশ-বত্রিশের বেশি নয়। বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে তাকে থানায় ধরে আনা হয়। রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যাওয়া লোকটি কাশতে কাশতে ভিতরে প্রবেশ করে। কাশির দমক দেখে মনে হয়েছিল তার আয়ু আর বেশিদিন নেই। মাথার সামনে বড়ো বড়ো চুল থাকলেও ঘাড় ও কানের কাছে চুল প্রায় ছিল না। আর চুল থেকে বেরোচ্ছিল লেবুর তেলের উগ্র গন্ধ। এর সঙ্গে মানানসই ছিল তার পোশাকও। গায়ে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি। তার বুকপকেট থেকে বাঘ-আঁকা একটি রুমালের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিল। পরনে ছিল বিলাতি মিলের কালো মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি। পায়ে সবুজ রঙের ফুলমোজা যেটা হাঁটুর ওপরে লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা। পায়ে ছিল বার্নিশ করা পাম্পশু, যার তলাটা আগাগোড়া লোহার নাল বাঁধানো। আর হাতে ছিল হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া একগাছি বেতের ছড়ি।
৩.“কাকাবাবু এ লোকটিকে আপনি কোনো কথা জিজ্ঞেস না করে ছেড়ে দিন, যাকে খুঁজছেন সে যে নয়, তার আমি জামিন হতে পারি। বক্তা কে? তার সম্পর্কে এ কথা কেন বলা হয়েছে?
[সারদা প্রসাদ ইন্সটিটিউশন]
উত্তর: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ গল্পাংশে উল্লিখিত মন্তব্যাটস বক্তা অপূর্ব।
▶ রেঙ্গুন পুলিশ স্টেশনে বর্মা অয়েল কোম্পানির তেলের খনির কারখানার • রেঙ্গুন মিস্ত্রিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছিল। তাদেল মধ্যে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে একটি লোককে রেখে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তিরিশ-বত্রিশ বছর বয়সি লোকটি কাশতে কাশতে আসে। কিন্তু লোকটি ছিল ভীষণ রোগা। একটু কাশির পরিশ্রমেই সে হাঁপিয়ে উঠছিল দেখে মনে হচ্ছিল, সংসারে তার মেয়াদ বোধহয় আর বেশি নেই। কোনো দুরারোগ্য অসুখ তার শরীরে যেন বাসা বেঁধেছে। এ ছাড়াও তার পোশাক- পরিচ্ছদ ছিল অদ্ভুত ধরনের। গায়ে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার- পাঞ্জাবি, তার বুক-পকেট থেকে একটা রুমালের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিল। তার পরনে বিলিতি মিলের কালো মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি, পায়ে সবুজ রঙের ফুল মোজা, হাঁটুর ওপরে লাল ফিতা বাঁধা। হয়তো সব্যসাচী বলে সন্দেহ হলেও অপূর্ব মন থেকে চাইছিল ওই লোকটি যেন পুলিশের হাতে ধরা না পড়ে। এই কারণেই অপূর্ব নিমাইবাবুকে তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল।
৪ “বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে।”- বাবুটি কে? তার সাজসজ্জার পরিচয় দাও।
অথবা, “বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলো আনাই বজায় আছে।”- বাবুটি কে? তাঁর স্বাস্থ্য ও শখের পরিচয় দাও।
উত্তর: এখানে বাবুটি বলতে শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ রচনাংশের অন্যতম চরিত্র গিরীশ মহাপাত্রের কথা বলা হয়েছে।
▶ গিরীশ মহাপাত্রের বয়স ত্রিশ-বত্রিশের বেশি নয়। বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে তাকে থানায় ধরে আনা হয়। রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যাওয়া লোকটি কাশতে কাশতে ভিতরে প্রবেশ করে। কাশির দমক দেখে মনে হয়েছিল তার আয়ু আর বেশিদিন নেই। মাথার সামনে বড়ো বড়ো চুল থাকলেও ঘাড় ও কানের কাছে চুল প্রায় ছিল না। আর চুল থেকে বেরোচ্ছিল লেবুর তেলের উগ্র গন্ধ। এর সঙ্গে মানানসই ছিল তার পোশাকও। গায়ে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি। তার বুকপকেট থেকে বাঘ-আঁকা একটি রুমালের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিল। পরনে ছিল বিলাতি মিলের কালো মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি। পায়ে সবুজ রঙের ফুলমোজা যেটা হাঁটুর ওপরে লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা। পায়ে ছিল বার্নিশ করা পাম্পশু, যার তলাটা আগাগোড়া লোহার নাল বাঁধানো। আর হাতে ছিল হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া একগাছি বেতের ছড়ি।
৫ “বাস্তবিক, এমন তৎপর, এতবড়ো কার্যকুশলা মেয়ে আর যে কেহ আছে মনে হয় না, হে তলওয়ারকর! তা-ছাড়া এত বড়ো বন্ধু!”- মেয়েটির সম্পর্কে অপূর্বর এই মন্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ গল্পাংশে অপূর্ব এই মন্তব্যটি করেছে। অপূর্বর বাড়ির ওপরের তলায় যে ক্রিশ্চান মেয়েটি থাকত তার সম্বন্ধে এই কথাটি বলা হয়েছে। অপূর্বর অনুপস্থিতিতে তার ঘরে একদিন চুরি হয়ে গিয়েছিল। ক্রিশ্চান মেয়েটির জন্যই টাকাকড়ি ছাড়া বাকি সমস্ত কিছু চুরি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। ক্রিশ্চান মেয়েটি নিজে চোরকে তাড়িয়ে অপূর্বর ঘর তালাবন্ধ করে দেয়। অপূর্ব না-ফেরা পর্যন্ত সে অপেক্ষা করে। অপূর্ব ফেরার পর সে নিজে চাবি দিয়ে সেই ঘর খুলে যা কিছু ছড়ানো জিনিসপত্র ছিল সেগুলো সব নিজের হাতে গুছিয়ে দেয়। যা চুরি গেছে আর যা যা চুরি যায়নি তার একটা নিখুঁত হিসাব সে বানিয়েছিল। সেই হিসেব দেখে অপূর্বর মনে হয়েছিল, একজন পাস করা অ্যাকাউন্ট্যান্টের পক্ষেও এমনটা সম্ভব নয়। অন্যের জন্য নিজের সবটুকু দিয়ে কীভাবে সাহায্য করা যায়, তা এই মেয়েটিকে না দেখলে অপূর্ব বুঝতেও পারত না। সব কিছু দেখে অপূর্বর তাকে একজন প্রকৃত বন্ধু বলেই মনে হয়েছিল। মেয়েটির প্রখর বুদ্ধি আর সবদিকে অদ্ভুত তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেখে অপূর্ব আশ্চর্য হয়ে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছিল।
৬ “আমার মা, আমার ভাই-বোনকে যারা এই-সব সহস্র কোটি অত্যাচার থেকে উদ্ধার করতে চায় তাদের আপনার বলে ডাকবার যে দুঃখই থাক আমি আজ থেকে মাথায় তুলে নিলাম।”-কে, কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছেন? এর মধ্যে বক্তার কোন্ মানসিকতা প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তর: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ গল্পাংশ থেকে উদ্ধৃত এই উক্তিটি করেছিল অপূর্ব। ফিরিঙ্গিদের হাতে একদিন অপূর্ব নিজে কীভাবে অপমানিত ও লাঞ্ছিত হয়েছিল সেই যন্ত্রণার কথা বর্মা
অফিসের সহকর্মী ব়মদাস তলওয়ারকরের কাছে বলতে গিয়ে সে উদ্ধৃত কথাগুলি বলেছিল।
▶ অপূর্বকে বিনা দোষেই ফিরিঙ্গি যুবকেরা লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের এর দিয়েছিল। অপূর্ব এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে সাহেব টশনমাস্টার তাকে কেবল ‘দেশি লোক’ এই অজুহাতে কুকুরের মতো দূর করে দিয়েছিল। এ অপমান পরাধীন দেশে প্রতিদিনই ঘটছে। অপূর্ব ও ঘটনায় খুব কষ্ট পায়; তার খুব রাগও হয়। সেই সঙ্গে সে স্থির সিদ্ধা আসে যে, দেশের মা-ভাই-বোনকে যারা সমস্ত অত্যাচার থেকে উদ্ধদ করতে চায়, তারাই তার সত্যকার আপনার লোক। আর সেই মানুষগুলোদে কাছের মানুষ হিসেবে গ্রহণ করার সমস্ত দুঃখই সে মাথা পেতে নিতে চায়।
এ কথায় অপূর্বর দেশপ্রেমিক সত্তাটি যেমন প্রকাশ পেয়েছে, তেমনই সাহস এবং সহমর্মিতার প্রকাশ ঘটেছে। সে কেবল নিজের সুখের জন্য ব্যস্ত নয়। বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার এক প্রবল ইচ্ছে ধরা পড়েছে তার কথায়। পাশাপাশি এক অনিশ্চিত জীবনকে গ্রহণ করার কঠিন প্রতিজ্ঞাও অপূর্বর কথায় ফুটে উঠেছে।
৭ আমাদেব় তিনি আত্মীয়, শুভাকাঙ্ক্ষ, কিন্তু তাই বলে আমাব় চেয়ে তো আপনাব়।”-কে, কাব় সম্পৰ্কে এই মন্তব্য কব়েছে এই উক্তিব় আলোকে বক্তাব় মনোভাবটি ব্যক্ত কব়ো।
উত্তর: অপূর্ব নিমাইবাবু সম্পর্কে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছে।
▶ নিমাইবাবুর সঙ্গে অপূর্ব পুলিশ স্টেশনে গেলে সেখানে তার সঙ্গে পলিটিকাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের দেখা হয়। সেখানে পুলিশ গিরীশ মহাপাত্র এবং তার সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র তদন্ত করতে গেলে এক হাস্যকর ঘটনার সৃষ্টি হয়। তলওয়ারকরের সঙ্গে এই নিয়ে কথোপকথন প্রসঙ্গে অপূর্বর মনোভাবের কয়েকটি দিক ধরা পড়েছে-
অপূর্ব সাধারণ চাকুরিজীবী হলেও পরাধীন দেশকে বিদেশি শাসনমুক্ত দেখতে চায়। দেশের কল্যাণের জন্যই আন্তরিকভাবে সে চায়, সব্যসাচী মল্লিক যেন পুলিশের হাতে ধরা না পড়েন। নিমাইবাবু অপূর্বর বাবার বন্ধু, পরম আত্মীয়। কিন্তু তিনি সুদূর বাংলা দেশ থেকে বর্মায় এসেছেন যে সব্যসাচী মল্লিককে হাজতে পুরতে, তিনি আসলে দেশপ্রেমিক, মুক্তিযোদ্ধা। তাই নিমাইবাবুর চেয়ে সব্যসাচী মল্লিকই অপূর্বর আত্মার আত্মীয়।
রামদাস অফিসের সহকর্মীমাত্র হলেও তার কাছে অপূর্ব নিজের আত্মীয় সম্পর্কে যে ভাবনা মেলে ধরেছে-তাতে সহজেই অপূর্বকে স্পষ্টবক্তা বলা যায়।
এ কথাও ঠিক, অপূর্ব আবেগপ্রবণ। তাই রামদাস যখন নিমাইবাবুর কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্তের জন্য অপূর্বর প্রতি দিনির্দেশ করেন, তখনই অপূর্ব জোর করে অনেকটা আবেগের বশে, প্রশ্নে উল্লিখিত কথাগুলো বলেছলি।