WBBSE Class 10 Bangla Chapter 7 অভিযেক Solution | Bengali Medium

Class 10 Bangla Chapter 7 Solution

অভিযেক

1. MCQs Question Answer

১. মাইকেল মধুসুদন দত্তের জীবনকাল-

(ক) ১৮০১-১৮৯১ খ্রিস্টাব্দ

(খ) ১৮৪১-১৮৬১ খ্রিস্টাব্দ

(ঘ) ১৮০০-১৮৬১ খ্রিস্টাব্দ

(গ) ১৮২৪-১৮৭৩

উত্তর: (গ) ১৮২৪-১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দ

২. মেঘনাদবধ কাব্য প্রকাশিত হয়-

ক) ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে 

খ) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে 

গ) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে 

ঘ ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে

উত্তর: ঘ) ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে

৩. মেঘনাদবধ কাব্য-এর সর্গসংখ্যা-

ক) চারটি 

খ) পাঁচটি 

গ) আটটি 

ঘ) নয়টি

উত্তর: ঘ) নয়টি

৪. ‘অভিষেক’ শীর্ষক কাব্যাংশটি মেঘনাদবধ কাব্য-এর-

ক) প্রথম সর্গের অন্তর্গত 

খ) দ্বিতীয় সর্গের অন্তর্গত 

গ) তৃতীয় সর্গের অন্তর্গত 

ঘ) ষষ্ঠ সর্গের অন্তর্গত

উত্তর: ক) প্রথম সর্গের অন্তর্গত

৫. ‘অভিষেক’ শীর্ষক কাব্যাংশটি মেঘনাদবধ কাব্য-এর যে সর্গ থেকে গৃহীত, তার নাম-

ক) অভিষেক 

খ) বধ

গ) সমাগম 

ঘ) প্রেতপুরী

উত্তর: ক) অভিষেক

৬. “কনক-আসন ত্যজি, বীরেন্দ্রকেশরী…”- ‘বীরেন্দ্রকেশরী’ হলেন-

ক) রাবণ 

খ) বিভীষণ 

গ) ইন্দ্রজিৎ

ঘ) কুম্ভকর্ণ

উত্তর: গ) ইন্দ্রজিৎ

৭. “কনক-আসন ত্যজি, বীরেন্দ্রকেশরী/ইন্দ্রজিৎ, প্রণমিয়া,..” -ইন্দ্রজিৎ কাকে প্রণাম করেছিলেন?

ক) রাবণকে 

খ) চিত্রাঙ্গদাকে 

গ) মন্দোদরীকে 

ঘ) ধাত্রীকে

উত্তর: ঘ) ধাত্রী

৮. “কি হেতু, মাতঃ, গতি তব আজি/এ ভবনে?”-ইন্দ্রজিৎ এ কথা জিজ্ঞাসা করেছেন- 

ক) মন্দোদরী দেবীকে 

খ) প্রমীলাকে 

গ) সীতাদেবীকে 

ঘ) প্রভাষাবেশী লক্ষ্মীকে

উত্তর: ঘ) প্রভাষাবেশী লক্ষ্মীকে

৯. “কি হেতু, মাতঃ, গতি তব আজি/এ ভবনে? কহ দাসে…”-ইন্দ্রজিৎ ধাত্রীর কাছে কী জানতে চেয়েছিলেন? 

ক) বীরবাহুর কথা 

খ) রাবণের নির্দেশ 

গ) লঙ্কার কুশল সংবাদ 

ঘ) প্রমীলার কুশল সংবাদ

উত্তর: গ) লঙ্কার কুশল সংবাদ

১০. “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি-সুতা/উত্তরিলা;” -‘অম্বুরাশি-সুতা’ যাঁর সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি হলেন-

ক) মায়াদেবী 

খ) চিত্রাঙ্গদা 

গ) লক্ষ্মী 

ঘ) সীতা

উত্তর: গ) লক্ষ্মী

১১. “হায়! পুত্র, কি আর কহিব/কনক-লঙ্কার দশা!” বক্তা লঙ্কার কথা বলার ক্ষেত্রে হতাশা প্রকাশ করেছেন, কারণ ঘোরতর যুদ্ধে-

ক) কুম্ভকর্ণের মৃত্যু হয়েছে 

খ) বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে 

গ) রাবণরাজার মৃত্যু হয়েছে 

ঘ) সারণের মৃত্যু হয়েছে

উত্তর: খ) বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে

১২. “ঘোরতর রণে,/হত প্রিয় ভাই তব…” – এই ‘প্রিয় ভাই’ হল-

ক) বীরবাহু 

খ) লক্ষ্মণ 

গ) কুম্ভকর্ণ

ঘ) নিশুন্ত

উত্তর: ক) বীরবাহু

১৩. “তার শোকে মহাশোকী রাক্ষসাধিপতি” রাক্ষসাধিপতি রাবণ যার শোকে কাতর, তিনি হলেন-

ক) প্রমীলাঘ 

খ) চিত্রাঙ্গদা 

গ মন্দোদরী 

ঘ) বীরবাহু

উত্তর: ঘ) বীরবাহু

১৪. “সসৈন্য সাজেন আজি যুঝিতে আপনি।”-কার কথা বলা হয়েছে?

ক) দেবরাজ ইন্দ্র 

খ) ইন্দ্রজিৎ 

গ) রাক্ষসরাজ রাবণ 

ঘ) রাঘব

উত্তর: গ) রাক্ষসরাজ রাবণ

১৫. “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া;-“-এই ‘মহাবাহু’ হলেন-

ক) রাবণ 

খ) ইন্দ্রজিৎ 

গ) রামচন্দ্র 

ঘ) বীরবাহুখ

উত্তর:  খ) ইন্দ্রজিৎ]

১৬. “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া;-“-‘মহাবাহু’র বিস্ময়ের কারণ-

ক)  তিনি তাঁর অনুজ বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ শুনেছেন 

খ)  তিনি ধাত্রীর কাছে লঙ্কার পরাজয়ের কথা শুনেছেন 

গ)  তিনি ধাত্রীর কাছে তাঁর অভিষেকের কথা শুনেছেন 

ঘ)  তিনি ধাত্রীর কাছে রাবণের যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা শুনেছেন

উত্তর: ক) তিনি তাঁর অনুজ বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ শুনেছেন

১৭. “কি কহিলা, ভগবতি?”-ভগবতি বলেছেন-

ক) ঘোরতর যুদ্ধে কুম্ভকর্ণ প্রয়াত হয়েছেন 

খ) ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাহুর মৃত্যু ঘটেছে 

গ) রাবণ ইন্দ্রজিৎকে সেনাপতি হিসেবে বরণ করতে চলেছেন 

ঘ) ইন্দ্রজিৎ যেন নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে যজ্ঞ শেষ করে যুদ্ধে যান

উত্তর: খ) ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাহুর মৃত্যু ঘটেছে

১৮. “নিশা-রণে সংহারিনু আমি…”-কাকে সংহার করার কথা বলা হয়েছে? 

ক) বীরবাহুকে

খ) রঘুবরকে 

গ) লক্ষ্মণকে 

ঘ) কুম্ভকর্ণকে

উত্তর: খ) রঘুবরকে

১৯. “…ইন্দিরা সুন্দরী/উত্তরিলা;”-ইন্দিরা সম্পর্কে যে বিশেষণ এখানে প্রযুক্ত হয়েছে, তা হল-

ক) রত্নাকর রত্নোত্তমাক 

খ) রত্নাকর প্রিয়তমা 

গ) মিতভাষী হেমবতী 

ঘ) রত্নাকর হেমলতা

উত্তর: ক) রত্নাকর রত্নোত্তমাক 

২০. “হায়! পুত্র,…/সীতাপতি; তব শরে মরিয়া বাঁচিল।”-‘সীতাপতি’ সম্পর্কে যে বিশেষণটি প্রয়োগ করা হয়েছে- 

ক) মায়াবী মানব

খ) রঘুকুলমণি 

গ) বীরবব 

ঘ) মহাবলী

উত্তর: (ক) মায়াবী মানব

২১. “যাও তুমি ত্বরা করি;”-কোথায় যাওয়ার কথা বলা হয়েছে? 

ক) প্রমীলা-সকাশে 

খ) গহন-কাননে 

গ) কালসমরে 

ঘ) গ পবন-পথে

উত্তর: কালসমরে

২২. “এ বারতা, এ অদ্ভুত বারতা, জননী/কোথায় পাইলে তুমি, শীঘ্র কহ দাসে।”-এই বার্তাকে ‘অদ্ভুত’ বলার কারণ- 

ক) ইন্দ্রজিৎ বুঝতে পারছেন না, মৃত ব্যক্তি কীভাবে পুনর্জীবিত হতে পারেন

খ) বীরবাহুর মতো বীরের মৃত্যু কীভাবে হতে পারে তা ইন্দ্রজিতের অজানা 

গ) বীরবাহু বহু আগেই মারা গেছেন 

ঘ) বীরবাহু রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছেন-ইন্দ্রজিতের কাছে এমন খবর ছিল

উত্তর: ক) ইন্দ্রজিৎ বুঝতে পারছেন না, মৃত ব্যক্তি কীভাবে পুনর্জীবিত হতে পারেন

২৩. “রত্নাকর রত্নোত্তমা ইন্দিরা সুন্দরী/উত্তরিলা;”-

ক) সীতাপতি রামচন্দ্র মায়াবী মানব, ইন্দ্রজিতের তিরে তাঁর মৃত্যু হলেও ক সীতাপতি তিনি পুনর্জীবন লাভ করেছেন 

খ) প্রকৃতই বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে 

গ) কনকলঙ্কা আজ শ্মশানে পরিণত হয়েছে। 

ঘ) তিনি ছদ্মবেশে লঙ্কাপুরীর ভাগ্য নির্ধারণ করতে এসেছেন 

উত্তর: ক) সীতাপতি রামচন্দ্র মায়াবী মানব, ইন্দ্রজিতের তিরে তাঁর মৃত্যু হলেও ক সীতাপতি তিনি পুনর্জীবন লাভ করেছেন 

২৪. “…তব শরে মরিয়া বাঁচিল।”-মরে বেঁচে উঠেছেন- 

ক) সুগ্রীব

খ) রামচন্দ্র 

গ) বিভীষণ 

ঘ) কুম্ভকর্ণ

উত্তর: খ) রামচন্দ্র

 ২৫. “ছিঁড়িলা কুসুমদাম রোষে মহাবলী”-কাকে ‘মহাবলী’ বলা হয়েছে?- 

ক) বীরবাহু 

খ) রাবণ 

গ) বিরাটপুত্র

ঘ) মেঘনাদ

উত্তর: ঘ) মেঘনাদ

২৬. “…রোষে মহাবলী/মেঘনাদ; ফেলাইলা…”-কী ফেলার কথা বলা হয়েছে?

(ক) কুসুমদাম

(খ) কনক-বলয়

(গ) শর

(খ) কনক-বলয়

উত্তর: (ঘ) রণসাজ

২৭. “যথা অশোকের ফুল অশোকের তলে/আভাময়।”-উদ্ধৃত অংশে অশোক ফুলের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে 

ক) ইন্দ্রজিতের কনক বলয়ের 

খ) ইন্দ্রজিতের কুণ্ডলের 

গ) প্রমীলার অলংকারের 

ঘ) শত্রুদলের

উত্তর:  (খ) ইন্দ্রজিতের কুণ্ডলের

২৮. “… শোভিল কুণ্ডল,”-কুণ্ডল কোথায় শোভা পাচ্ছিল? 

ক) শিরোপরে 

খ) পদতলে 

গ) শৈলশিরে 

ঘ) মেঘখণ্ডে

উত্তর:  খ) পদতলে

২৯. “ধিক্ মোরে” বক্তার আত্মধিক্কারের কারণ-

ক) তিনি যুদ্ধে না গিয়ে প্রিয় ভাইকে যুদ্ধে পাঠিয়েছেন 

খ) তিনি যুদ্ধে নাগ গিয়ে তাঁর বাবাকে যুদ্ধে পাঠিয়েছেন 

গ) শত্রুদল লঙ্কাপুরীকে ঘিরে ফেলেছে, আর তিনি নারীদের মাঝে বিলাসে ব্যস্ত

ঘ) রাজপুরীতে থেকেও তিনি যুদ্ধে যাওয়ার স্পৃহা বোধ করেননি

উত্তর: গ) শত্রুদল লঙ্কাপুরীকে ঘিরে ফেলেছে, আর তিনি নারীদের মাঝে বিলাসে ব্যস্ত

৩০. “… বেড়ে/স্বর্ণলঙ্কা,”কারা স্বর্ণলঙ্কাকে বেষ্টন করে রয়েছে?

ক) পামরদল 

খ) কপিদল 

গ) বৈরিদল 

ঘ) কর্তৃরদল

উত্তর: গ) বৈরিদল

৩১. “বৈরিদল বেড়ে/স্বর্ণলকা,…”-‘বৈরিদল’ বলতে বক্তা চিহ্নিত করেছেন- 

(ক) লঙ্কার সেনাদলকে 

(খ) রামচন্দ্রের সেনাদলকে 

(গ) বিরাটপুত্রের সেনাদলকে
(ঘ) মহাসুর তারকের সেনাদলকে

উত্তর: (খ) রামচন্দ্রের সেনাদলকে

৩২. “বৈরিদল বেড়ে/স্বর্ণলঙ্কা, হেথা আমি মাঝে?”- শূন্যস্থানের সঠিক শব্দটি হল- 

(ক) সখীদল

(খ) বামাদল

(গ) কর্তৃরদল 

(ঘ) কপিদল


উত্তর: (খ) বামাদল

৩৩. “এই কি সাজে আমারে,”-বক্তার কী সাজে না? 

(ক) কালসমরের দিনে বামাদল মাঝে বিরাজ করা 

(খ) রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করা 

(গ) বিভীষণকে নিদারুণ ভর্ৎসনা করা 

(ঘ) শুধু আত্মধিক্কার জানিয়ে কর্তব্য সমাধা হয়েছে মনে করা

উত্তর: ক) কালসমরের দিনে বামাদল মাঝে বিরাজ করা

৩৪. “আন রথ ত্বরা করি;”- বক্তা শীঘ্র রথ আনতে বলেছেন, কারণ- 

(ক) তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে শত্রুদের বধ করতে চান 

(খ) তিনি দ্রুত প্রমীলার কাছে যেতে চান 

(গ) তাঁর বাবা তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছেন

(ঘ) নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে যজ্ঞের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে

উত্তর: ক) তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে শত্রুদের বধ করতে চান

৩৫. “ঘুচাব এ অপবাদ, বধি রিপুকুলে।”-বক্তা যে ‘অপবাদ’ ঘোচাতে চান, তা হল-

(ক) লঙ্কাপুরীতে সৈন্যদল রণসজ্জা খ করছে 

(খ) তিনি বিলাসব্যসনে দিনাতিপাত করছেন 

(গ) তাঁর প্রিয় অনুজ বীরবাহু মারা গেছেন 

(ঘ) তাঁর ছোড়া বাণে মারা গিয়েও রামচন্দ্র পুনর্জীবিত হয়ে উঠেছেন

উত্তর: (খ) তিনি বিলাসব্যসনে দিনাতিপাত করছেন 

৩৬. “ঘুচাব এ অপবাদ,”- কীভাবে ইন্দ্রজিৎ অপবাদ ঘুচাতে চেয়েছেন? 

ক) রামচন্দ্রকে বধ করে 

খ) লক্ষ্মণকে বধ করে রিপুকুলকে বধ করে 

গ) রিপুকুলকে বধ করে

ঘ) আত্মবিসর্জন দিয়ে

উত্তর: গ) রিপুকুলকে বধ করে

2. Very Short Question Answer

 ১. মেঘনাদবধ কাব্যর প্রথম সর্গের নাম কী?

উত্তর:  মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত মেঘনাদবধ কাব্য-এর প্রথম সর্গের নাম ‘অভিষেক’।

২. “কি কহিলা ভগবতি”-ভগবতি কে?

উত্তর:  আলোচ্য অংশে ‘ভগবতি’ হলেন ইন্দ্রজিতের ধাইমা প্রভাষার ছদ্মবেশে আসা দেবী লক্ষ্মী।

৩. “কে বধিল কবে/প্রিয়ানুজে?”-‘প্রিয়ানুজ’ কাকে বলা হয়েছে?

উত্তর:  ‘প্রিয়ানুজ’ বলতে এখানে ইন্দ্রজিতের ছোটো ভাই অর্থাৎ বীরবাহুকে বোঝানো হয়েছে।

৪. হৈমবতীসুত কে?

উত্তর:  ‘হৈমবতীসুত’ বলতে পার্বতীর পুত্র কার্তিককে বোঝানো হয়েছে।

৫. “হৈমবতীসুত যথা…” -কীসের কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তর:  আলোচ্য অংশে দেবসেনাপতি কার্তিকের তারকাসুর বধের কথা বলা হয়েছে।

৬. “কিম্বা যথা বৃহন্নলারূপী/কিরীটী”-বৃহন্নলারূপী কিরীটী’ কাকে বলা হয়েছে?

উত্তর:  ‘অভিষেক’ পদ্যাংশে উল্লিখিত ‘বৃহন্নলারূপী কিরীটি’ হলেন মহাভারতের অন্যতম বীর যোদ্ধা অর্জুন।

৭. “সাজিলা শূর শমীবৃক্ষমূলে।”শমিবৃক্ষ কোন্ গাছকে বলা হয়?

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশে উল্লিখিত শমিবৃক্ষ হল বাকল-জাতীয় গাছ।

৮. “বিরাটপুত্র সহ, উদ্ধারিতে/গোধন,”-বিরাট কে এবং তার পুত্রগণের নাম লেখো।

উত্তর: মহাভারতের কাহিনি অনুসারে মৎস্য দেশের রাজা ছিলেন বিরাট, তাঁর তিন পুত্রের নাম শঙ্খ, শ্বেত এবং ভূমিঞ্জয় বা উত্তর।

৯. “উদ্ধারিতে/গোধন,”-কে গোধন উদ্ধার করেছিলেন?

উত্তর:  অর্জুন বিরাটপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে গোধন উদ্ধার করেছিলেন।

১০. অর্জুন কোথায় যুদ্ধসজ্জা করেছিলেন?

উত্তর:  মহাভারতের বিরাট পর্বে অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন অর্জুন বিরাটরাজের গোধন উদ্ধারের জন্য শমিবৃক্ষের মূলে দাঁড়িয়ে যুদ্ধসজ্জা করেছিলেন।

১১. “ধ্বজ ইন্দ্রচাপরূপী;”-‘ইন্দ্রচাপ’ কথার অর্থ কী?

উত্তর: উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। ‘ইন্দ্রচাপ’ কথার অর্থ হল দেবরাজ ইন্দ্রের ধনু।

১২. “হেন কালে প্রমীলা সুন্দরী,/ধরি পতি-কর-যুগ”-প্রমীলার এই আচরণকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?

উত্তর:  স্বর্ণলতা যেভাবে বিশাল বনস্পতিকে জড়িয়ে রাখে, প্রমীলাও সেভাবেই স্বামী মেঘনাদের হাত জড়িয়ে ধরেছিলেন।

১৩. “হেন কালে প্রমীলা সুন্দরী,”-‘হেন কালে’ বলতে কোন্ সময়কে বলা হয়েছে?

উত্তর:  বীরবাহুর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য ইন্দ্রজিৎ যখন রথে চড়ে বসেছেন, সেই সময়কে বোঝাতেই ‘হেনকাল’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।

১৪. “তবু তারে রাখে পদাশ্রয়ে যূথনাথ।”-‘যূথনাথ’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর:  মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত অংশে উল্লিখিত ‘যূথনাথ’ শব্দের অর্থ হল হাতির দলের প্রধান।

3. Short Question Answer

১. প্রণমিয়া, ধাত্রীর চরণে,/কহিলা,” -ইন্দ্রজিৎ কী বলেছিলেন?

উত্তর:  মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে ইন্দ্রজিৎ লঙ্কার সুসংবাদ জিজ্ঞাসা করেছিলেন এবং ধাত্রীমাতা প্রভাষার প্রমোদকাননে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেছিলেন।

২. “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি-সুতা উত্তরিলা;”-‘অম্বুরাশি-সুতা’ কে এবং কেন তাঁর এমন নাম? [সরিষা রামকৃয় মিশন শিক্ষামন্দির (এইচএস)]

উত্তর:  ‘অম্বুরাশি’ শব্দের অর্থ জলরাশি, ‘সুতা’ শব্দের অর্থ কন্যা। সমুদ্রমন্থনের সময় জল থেকে লক্ষ্মীর উত্থান হয়েছিল বলে তাঁকে ‘অম্বুরাশি-সুতা’ বা সমুদ্রের কন্যা বলা হয়েছে।

৩. “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি-সুতা”-‘অম্বুরাশি-সুতা’ কার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন?

উত্তর:  উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে নেওয়া। ‘অম্বুরাশি-সুতা’ বা লক্ষ্মী ইন্দ্রজিতের ধাইমা প্রভাষার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন।

৪. “সসৈন্যে সাজেন আজি যুঝিতে আপনি।”-কে সসৈন্যে সাজেন?

উত্তর:  উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত হয়েছে। প্রিয়পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুতে শোকার্ত রাবণ সৈন্যদল-সহ যুদ্ধসাজে সেজে উঠছেন।

৫. “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া;”-এই বিস্ময়ের কারণ কী ছিল?

উত্তর:  রামচন্দ্রকে বধ করে ও খন্ড খন্ড করে কেটে ফেলার পরেও কে বীরবাহুকে হত্যা করল-তা ভেবেই ইন্দ্রজিৎ অবাক হয়েছেন।

৬. ছদ্মবেশী দেবী লক্ষ্মী কোন্ সংবাদ নিয়ে এসেছিলেন?

উত্তর:  ছদ্মবেশী লক্ষ্মী রাবণপুত্র বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ এবং তাতে রাবণের শোকগ্রস্ত হওয়ার খবর নিয়ে এসেছিলেন।

৭. “এ অদ্ভুত বারতা,”-কোন্ ‘বারতা’-র কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:  যে রামচন্দ্রকে ইন্দ্রজিৎ নিশা-রণে হত্যা করেছেন, তাঁর দ্বারাই বীরবাহু নিহত হয়েছেন। এখানে ইন্দ্রজিৎকে দেবী লক্ষ্মীর দেওয়া এই সংবাদের কথাই বলা হয়েছে।

৮. “শীঘ্র কহ দাসে।”-শীঘ্র কী বলতে বলা হয়েছে?

উত্তর:  ছদ্মবেশী দেবী লক্ষ্মী বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ দিতে এসেছেন মেঘনাদকে। লক্ষ্মী কোথা থেকে সেই মৃত্যুসংবাদ পেয়েছেন তা ইন্দ্রজিৎ শীঘ্র জানাতে অনুরোধ করেছেন।

৯. “রত্নাকর রত্নোত্তমা ইন্দিরা সুন্দরী/উত্তরিলা;” – ‘ইন্দিরা সুন্দরী’ কে?

উত্তর:  ‘ইন্দিরা’ কথাটি এসেছে ‘ইন্দ’ ধাতু থেকে যার অর্থ ঐশ্বর্য। ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মীকেই তাই ‘ইন্দিরা সুন্দরী’ বলা হয়েছে।

১০. . “যাও তুমি ত্বরা করি;”-এই শীঘ্র যাওয়ার প্রয়োজন কী?

উত্তর:  বীরবাহুর মৃত্যুর পরে লঙ্কাকে রক্ষা করতে ও রাক্ষসকুলের মান বজায় রাখতে ইন্দ্রজিৎকে শীঘ্র যুদ্ধে যেতে বলেছেন দেবী লক্ষ্মী।

১১. “…রোষে মহাবলী/মেঘনাদ;”-মেঘনাদ রুষ্ট হয়ে কী করেছিলেন?

উত্তর: লঙ্কার এই ভীষণ বিপদের মধ্যে নিজের ভূমিকায় রুষ্ট মেঘনাদ ফুলের মালা ছিঁড়ে ফেলেছিলেন, সোনার বালা খুলে দূরে ফেলে দিয়েছিলেন। তার কুণ্ডল পায়ের কাছে পড়েছিল।

১২. “পদতলে পড়ি শোভিল কুণ্ডল,”-‘কুণ্ডল’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর:  উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। ‘কুণ্ডল’ শব্দের অর্থ কর্ণভূষণ অর্থাৎ কানের অলংকার।

১৩. “হা ধিক্ মোরে!”-বক্তা কেন নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিলেন? [পর্ষদ নমুনা] [পাঠভবন; রানাঘাট দেবনাথ ইন্সটিটিউশন ফর গার্লস]

উত্তর:  শত্রুপক্ষের সৈন্য যখন লঙ্কাকে ঘিরে ফেলেছে তখন তিনি নারীদের সঙ্গে প্রমোদকাননে বিলাসে সময় কাটাচ্ছেন-এই ভেবেই ইন্দ্রজিৎ নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিলেন।

১৪. “বৈরিদল বেড়ে/স্বর্ণলঙ্কা,” -কাদের বৈরিদল বলা হয়েছে?

উত্তর: উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। এখানে রামচন্দ্র ও তাঁর সৈন্যবাহিনীকে লঙ্কাপুরী তথা রাক্ষসকুলের বৈরিদল বলা হয়েছে।

১৫. “হেথা আমি বামাদল মাঝে?”-কখন ইন্দ্রজিৎ এ কথা বলেছেন?

উত্তর: শত্রুপক্ষের সৈন্য যখন লঙ্কাপুরীতে আক্রমণ করে বীরবাহুকে হত্যা করে ফেলেছে তখন নিজের প্রমোদকাননে বিলাসমত্ত ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইন্দ্রজিৎ এ কথা বলেছেন।

১৬. “হেথা আমি বামাদল মাঝে?”-‘হেথা’ বলতে কোন্ স্থানের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:  উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। ‘হেথা’ বলতে স্বর্ণলঙ্কার প্রমোদ উদ্যানকেই বোঝানো হয়েছে।

১৭. . “এই কি সাজে আমারে,”—কী সাজে না বলে বক্তার মনে হয়েছে?

উত্তর:  সহোদর বীরবাহুর মৃত্যু ঘটেছে এবং রামচন্দ্রের সৈন্যবাহিনী স্বর্ণলঙ্কাকে ঘিরে ফেলেছে। এরকম সময়ে তাঁর প্রমোদকাননে থাকা সাজে না বলে ইন্দ্রজিৎ মনে করেছেন।

১৮. ব্রততী বাঁধিলে সাধে করি-পদ,”-‘করি-পদ’ শব্দটির অর্থ কী?

উত্তর:  উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। উল্লিখিত ‘করি-পদ’ শব্দটির অর্থ হল হাতির পা।

১৯. . “কে পারে খুলিতে/সে বাঁধে?”-এখানে কোন্ বন্ধনের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:  মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটিতে প্রমীলার সঙ্গে ইন্দ্রজিতের সম্পর্কের অর্থাৎ স্বামী- স্ত্রীর পবিত্র বন্ধনের কথা বলা হয়েছে।

২০. . “ত্বরায় আমি আসিব ফিরিয়া…”-কোথা থেকে ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:  মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত আলোচ্য অংশে রামচন্দ্রকে হত্যা করে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে আসার কথা বলা বলেছেন।।

২১. . “বিদায় এবে দেহ বিধুমুখী”-‘বিধুমুখী’ কে?

উত্তর:  উল্লিখিত অংশে ‘বিধুমুখী’ বলতে ইন্দ্রজিৎ তাঁর স্ত্রী প্রমীলাকে বুঝিয়েছেন। ইন্দ্রজিতের কাছে প্রমীলার মুখ চাঁদের মতো সুন্দর বলেই এই নামকরণ।

২২. . “উঠিল পবন-পথে”- পবন-পথে কী ওঠার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:  উদ্ধৃত পঙ্ক্তিত্ত্বটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। এখানে পবন-পথে অর্থাৎ আকাশে মেঘনাদের রথ ওঠার কথা বলা হয়েছে।

২৩. আকাশে ইন্দ্রজিতের রথের উড়ে চলাকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?

উত্তর:  আকাশে ইন্দ্রজিতের রথের উড়ে চলাকে কবি সোনার পাখা মেলে মৈনাক পর্বতের উড়ে চলার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

২৪. “পক্ষীন্দ্র যথা নাদে মেঘ মাঝে/ভৈরবে।”-পক্ষীন্দ্র কে?

উত্তর:  ‘পক্ষীন্দ্র’ শব্দের অর্থ পক্ষীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে গৃহীত ‘পক্ষীন্দ্র’ শব্দটির মধ্য দিয়ে গরুড় পাখি-কে বোঝানো হচ্ছে।

২৫. “পক্ষীন্দ্র যথা নাদে মেঘ মাঝে/ভৈরবে।”- কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তর:  ইন্দ্রজিতের ধনুকের টংকারের শব্দ যেন গরুড় পাখির ডাকের মতোই গম্ভীর। শব্দের গভীরতা বোঝাতেই এই প্রসঙ্গ আনা হয়েছে।

4. Long Question Answer

১. “কি হেতু, মাতঃ, গতি তব আজি/এ ভবনে?”-কে, কাকে উদ্দেশ্য করে কখন মন্তব্যটি করেছিলেন? এর কোন্ উত্তর তিনি পেয়েছিলেন? ৩+২

উত্তর:  মেঘনাদবধ কাব্যর প্রথম সর্গ থেকে সংকলিত ‘অভিষেক’ শীর্ষক কবিতায় রাবণপুত্র ইন্দ্রজিৎ প্রভাষা রাক্ষসীর ছদ্মবেশে আসা দেবী লক্ষ্মীকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্যটি করেছেন।

▶ ইন্দ্রজিৎ লঙ্কার প্রমোদ উদ্যানে যখন অবসর কাটাচ্ছিলেন সেই সময় রামচন্দ্র বীরবাহুকে হত্যা করেন। এই দুঃসংবাদ ইন্দ্রজিতের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই প্রভাষার ছদ্মবেশে ইন্দ্রজিতের কাছে আসেন দেবী লক্ষ্মী। এই সময়েই প্রমোদ উদ্যানে ধাত্রীমাতার আসার কারণ জানতে চেয়েছিলেন ইন্দ্রজিৎ।

▶ দেবী লক্ষ্মী ইন্দ্রজিৎকে লঙ্কার বর্তমান অবস্থার কথা জানান। ইন্দ্রজিতের অনুপস্থিতিতে লঙ্কার উপর ঘনিয়ে এসেছে ঘোর বিপদ। রামচন্দ্রের সঙ্গে ভয়ংকর যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ইন্দ্রজিতের অনুজ বীরবাহু। রাক্ষসরাজ রাবণ প্রিয় পুত্রের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। পুত্রের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে তিনি স্বয়ং যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ কথা শুনে বিস্মিত ইন্দ্রজিৎ জানতে চান রামচন্দ্র কীভাবে পুনর্জীবিত হয়ে উঠলেন। ‘মায়াবী মানব’ রামের ছলনার কথা বলে লক্ষ্মী তাঁকে শীঘ্রই যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে অনুরোধ করেন।

২. “…এ অদ্ভুত বারতা, জননি/কোথায় পাইলে তুমি,”- কোন্ বার্তাকে কেন অদ্ভুত বলা হয়েছে? এই বার্তার পিছনে উদ্দেশ্য কী ছিল? ৩+২

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে প্রভাষা রাক্ষসীর ছদ্মবেশ ধারণ করে দেবী লক্ষ্মী প্রমোদকাননে এসে ইন্দ্রজিতকে রামচন্দ্রের দ্বারা বীরবাহুর নিহত হওয়ার সংবাদ জানান। এই দুঃসংবাদকেই ইন্দ্রজিৎ ‘অদ্ভুত’ বলে অভিহিত করেছেন। ইন্দ্রজিতের কাছে রামচন্দ্রের হাতে বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ ছিল এক বিস্ময়কর ঘটনা। কারণ, এর আগে দু-বার রামচন্দ্র তাঁর কাছে পরাজিত হয়েছেন। রাত্রিকালীন যুদ্ধে তিনি রামচন্দ্রকে বধ করেছেন। তির ছুঁড়ে রামচন্দ্রকে হত্যার পরেও কীভাবে সেই রামচন্দ্রই বেঁচে উঠে বীরবাহুকে হত্যা করেছিলেন, তা ইন্দ্রজিতের কাছে খুবই বিস্ময়ের মনে হয়েছে। তাই এই ঘটনাকে তিনি ‘অদ্ভুত’ বলেছেন।

▶ লঙ্কার চরমতম দুর্দশার সময়ে লঙ্কার রাজলক্ষ্মী ইন্দ্রজিৎকে লঙ্কায় ফেরত নিয়ে আসতে চান। নিয়তির বিধান কার্যকর করার জন্যই তাঁর এই উদ্যোগ। এই উদ্দেশ্য নিয়েই ধাত্রী প্রভাষার ছদ্মবেশে লক্ষ্মী প্রমোদ-উদ্যানে মেঘনাদের কাছে যান এবং তাঁকে বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ দেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল লঙ্কার দুর্দশা এবং ছোটো ভাই বীরবাহুর শোকে ইন্দ্রজিৎকে অস্থির করে তাঁকে লঙ্কায় আসতে বাধ্য করা।

৩. “ছিঁড়িলা কুসুমদাম রোষে মহাবলী”-‘মহাবলী’ কাকে বলা হয়েছে? তিনি কী কারণে রুষ্ট হয়েছিলেন? রোষে তিনি কী কী করলেন? ১+২+২

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশের প্রশ্নোদ্ভূত অংশে ‘মহাবলী’ বলতে রাবণপুত্র ইন্দ্রজিৎকে বোঝানো হয়েছে।

▶ প্রভাষা রাক্ষসীর ছদ্মবেশ ধারণ করে এসে দেবী লক্ষ্মী ইন্দ্রজিৎকে তাঁর ভাই বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ জানিয়েছিলেন। একইসঙ্গে বলেছিলেন যে, লঙ্কার এই বিপদের সময় শোকগ্রস্ত রাজা রাবণ সৈন্য-সহ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রমোদকাননে বিলাসমত্ত ইন্দ্রজিতের পক্ষে এ কথা সহ্য করা সম্ভব ছিল না। নিজের বংশের এই দুর্দশা তাঁকে যতটা ক্ষুব্ধ করেছিল তার থেকে

বেশি ক্ষোভ হয়েছিল তাঁর নিজের প্রতি। লঙ্কার বিপদের দিনে নিজের দায়িত্ব পালন না করতে পারাই ইন্দ্রজিতকে ক্ষুব্ধ ও রুষ্ট করে তোলে।

▶ নিজের ঔদাসীন্যে ক্রুদ্ধ হয়ে মেঘনাদ তাঁর ফুলের মালা ছিঁড়ে ফেলেন। হাতে থাকা সোনার বালা দূরে ছুঁড়ে দেন। তাঁর কুণ্ডল পায়ের কাছে পড়ে থাকে। নিজেকে ধিক্কার দিয়ে ইন্দ্রজিৎ বলেন যে, শত্রুসৈন্য যখন স্বর্ণলঙ্কা ঘিরে রেখেছে তখন তিনি রমণীসান্নিধ্যে রয়েছেন-এ দৃশ্য তাঁর মতো বীরকে মানায় না। তিনি রাবণের পুত্র। তাই শীঘ্র রথ আনার নির্দেশ দিয়ে ইন্দ্রজিৎ বলেন-“ঘুচাব এ অপবাদ বধি রিপুকুলে।” অর্থাৎ শত্রুকে বধ করেই ইন্দ্রজিৎ লঙ্কার তথা তাঁর নিজের কলঙ্ক দূর করার কথা বলেন।

৪. “এই কি সাজে আমারে, দশাননাত্মজ/আমি ইন্দ্রজিৎ?”-কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা কথাটি বলেছেন? উদ্ধৃত কথায় বক্তার চারিত্রিক কোন্ গুণের পরিচয় পাওয়া যায়? ২+৩ [এ কে ঘোষ মেমোরিয়াল হাই স্কুল]

উত্তর: লঙ্কার প্রমোদ কাননে আগতা দেবী লক্ষ্মীর থেকে ইন্দ্রজিৎ জানতে পারেন যে রামচন্দ্রের সঙ্গে যুদ্ধে তাঁর ভাই বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে এবং শোকার্ত পিতা রাবণ যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রমোদ-উদ্যানে বিলাসমত্ত ইন্দ্রজিতের মনে এই ঘটনা গভীর ক্ষোভ ও অনুশোচনা তৈরি করে। যখন শত্রুসৈন্য লঙ্কাপুরীকে ঘিরে ফেলেছে তখন তিনি বিলাসে সময় কাটাচ্ছেন-এটাই ছিল ইন্দ্রজিতের অনুশোচনার কারণ। রাজা রাবণের পুত্র হিসেবে তাঁকে যে এটা মানায় না তা ইন্দ্রজিৎ উপলব্ধি করেছিলেন।

▶ ইন্দ্রজিতের উপলব্ধি এবং আচরণের মধ্য দিয়ে তাঁর আদর্শবোধ এবং দায়বদ্ধতারই প্রকাশ ঘটে। নিজের কৃতকর্মের জন্য নিজেকে ধিক্কার জানাতে ইন্দ্রজিৎ দ্বিধা করেননি। আত্মসমালোচনার মধ্য দিয়ে ইন্দ্রজিৎ চরিত্রটিই মহান হয়ে উঠেছে। শত্রুসৈন্যদের বধ করে সমস্ত ‘অপবাদ’ দূর করতে চেয়েছেন

ইন্দ্রজিৎ। বীরধর্মের পথে তাঁর এই যাত্রা। নিজেকে ‘দশাননাত্মজ’ অর্থাৎ রাবণের পুত্র বলার মধ্যে দিয়ে পিতার প্রতি এবং নিজের রাজবংশের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধারও প্রকাশ ঘটেছে।

৫. “ঘুচাব এ অপবাদ, বধি রিপুকুলে।”-এখানে কোন্ অপবাদের কথা বলা হয়েছে? এই অপবাদ ঘোচানোর জন্য বক্তা কী প্রস্তুতি নিয়েছিলেন? ৩+২

উত্তর: মেঘনাদবধ কাব্য-র প্রথম সর্গ ‘অভিষেক’-এ ইন্দ্রজিৎ যখন প্রমোদকাননে বিলাসে মত্ত তখনই লক্ষ্মী সেখানে আসেন এবং তাঁকে বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ দেন। ইন্দ্রজিতের মনে হয়, রাক্ষসবংশের গৌরবকে বিনষ্ট করে রামচন্দ্রের সৈন্যরা যখন লঙ্কাকে ঘিরে রয়েছে, তখন তাঁর এই বিলাসে সময় কাটানোর ঘটনা ধিক্কারজনক। উপরন্তু, তিনি লক্ষ্মীর মুখ থেকে এ-ও জানতে পারেন যে, তাঁর অনুপস্থিতিতে পিতা নিজে যুদ্ধের সাজে সাজছেন। তাঁর মতো উপযুক্ত এবং বীর পুত্র বেঁচে থাকতেও রাজা রাবণকেই যদি যুদ্ধযাত্রা করতে হয়, তবে তা খুবই অপমানের। রাবণের পুত্র হিসেবে তাঁর নিজের এই আচরণ ইন্দ্রজিৎ মেনে নিতে পারেননি। একে তিনি লঙ্কার রাজবংশের ‘অপবাদ’ বলে চিহ্নিত করেছেন।

শত্রুসৈন্যদের বধ করে ইন্দ্রজিৎ এই অপবাদ দূর করতে উদ্যোগী হন। বীরের সাজে তিনি সেজে ওঠেন। মেঘবর্ণ রথ, চক্রে বিজলির দীপ্তি, ইন্দ্রধনুর ন্যায় উজ্জ্বল রথের পতাকা, দ্রুতগতির অশ্ববাহিনী-এইসব নিয়েই সেজে উঠেছিলেন ইন্দ্রজিৎ। তীব্র রাগে যখন ধনুকে টংকার দিয়েছিলেন, মনে হয়েছিল যেন মেঘের মধ্যে গরুড় পাখি চিৎকার করে উঠছে। বীরভাবের এই আদর্শ প্রকাশে এবং প্রতিশোধ গ্রহণের অঙ্গীকারে ইন্দ্রজিতের অপবাদ ঘোচানোর চেষ্টা লক্ষ করা যায়।

৬. “সাজিলা রথীন্দ্রর্ষভ বীর-আভরণে,”-এই সজ্জার বর্ণনায় কবি যে দুটি পৌরাণিক প্রসঙ্গের উল্লেখ করেছেন সেগুলির বর্ণনা দাও।

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ নামক কাব্যাংশে বীরবাহুর মৃত্যুর পরে লঙ্কার মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য ইন্দ্রজিৎ বীরের সাজে সেজে ওঠেন। ইন্দ্রজিতের যুদ্ধসজ্জার বর্ণনা দিতে গিয়ে দুটি পৌরাণিক প্রসঙ্গের উল্লেখ করেছেন কবি-

কার্তিকেয় কর্তৃক তারকাসুর বধের প্রসঙ্গ। তারকাসুরের অত্যাচারে বিপন্ন দেবতারা ব্রহ্মার শরণাপন্ন হলে ব্রহ্মা বিধান দেন যে, শিবের ঔরসজাত সন্তানই তারকাসুরকে বধ করতে পারবে। ছ-জন কৃত্তিকার গর্ভে শিবের ছয় সন্তানের জন্ম হলেও তাঁদের মিলিত করে এক পুত্র সৃজিত হয়, তাঁর নাম হয় কার্তিকেয়। দেবী বসুন্ধরা তাঁকে পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন এবং বয়ঃপ্রাপ্ত হলে তিনি দেবসেনাপতি পদে নিযুক্ত হন ও তারকাসুরকে নিহত করেন।

অর্জুনের গোধন উদ্ধারের প্রসঙ্গ। পাণ্ডবেরা যখন বিরাট রাজার গৃহে অজ্ঞাতবাসে ছিলেন, সেই সময় কৌরবরা বিরাটের গোধন হরণের জন্য তাঁর রাজ্য আক্রমণ করেন। বিরাট যুদ্ধে পরাজিত এবং বন্দি হলে বৃহন্নলারূপী অর্জুন গোধন রক্ষা করতে যান। কুরুসৈন্যের সংখ্যা দেখে ভীত উত্তর পালাতে চাইলে অর্জুন ছদ্মবেশ নেওয়ার সময়ে যে শমিবৃক্ষে অস্ত্রাদি লুকিয়ে রেখেছিলেন সেখানে তাকে নিয়ে যান এবং সেগুলি গ্রহণ করে ক্লীববেশ ত্যাগ করে বীরবেশে সজ্জিত হয়ে কৌরবদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যান। রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে মেঘনাদের যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে কবি এই দুটি প্রসঙ্গ

৭. “তবে কেন তুমি, গুণনিধি, ত্যজ কিঙ্করীরে আজি?”-কে কখন কথাটি বলেছেন? তাঁকে কী সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছিল? ৩+২

উত্তর: ছদ্মবেশী লক্ষ্মীর কাছে বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ শুনে ইন্দ্রজিৎ ক্রোধে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং যুদ্ধসাজে সজ্জিত হয়ে লঙ্কার রাজসভার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ইন্দ্রজিৎ যখন রথে আরোহণ করছেন তখনই সেখানে তাঁর স্ত্রী প্রমীলার আবির্ভাব ঘটে। তাঁকে ছেড়ে না যাওয়ার জন্য তিনি ইন্দ্রজিতকে অনুরোধ করেন। ইন্দ্রজিৎ-কে ছাড়া তাঁর পক্ষে বেঁচে থাকাই যে সম্ভব নয়, তাও বলেন। গভীর অরণ্যে হাতির পায়ে লতা জড়িয়ে গেলে তাতে হাতি মন না দিলেও লতাকে ত্যাগ করে না। তুচ্ছ হলেও হাতি তাকে পা থেকে সরিয়ে ফেলে না। তার পায়ে সেই লতার বন্ধন জড়িয়েই থাকে। অথচ ইন্দ্রজিৎ আপন স্ত্রীকে একা ফেলে রেখে যুদ্ধক্ষেত্রে চলেছেন। ইন্দ্রজিতের তাঁকে ছেড়ে যাওয়াকে অনুচিত কর্ম বলে বোঝাতে চেয়েছিলেন প্রমীলা।

▶ প্রমীলাকে সান্ত্বনা দিতে ইন্দ্রজিৎ বলেন যে, প্রমীলা তাঁকে প্রেমের যে দৃঢ় বন্ধনে বেঁধেছেন তা খোলার ক্ষমতা কারও নেই। একইসঙ্গে ইন্দ্রজিৎ এও বলেন যে প্রমীলার কল্যাণের কারণেই তিনি অতি সহজে রাঘবকে হত্যা করতে পারবেন যুদ্ধ শেষ হলেই তিনি শীঘ্র প্রমীলার কাছে ফিরে আসবেন। এই বলে ইন্দ্রজিৎ প্রমীলার কাছে বিদায় প্রার্থনা করেন।

৮. “বিদায় এবে দেহ, বিধুমুখী।”-‘বিধুমুখী’ কাকে বলা হয়েছে? তিনি বক্তাকে কী বলেছিলেন? প্রত্যুত্তরে বক্তা কী বলেছিলেন? ১২২

উত্তর:  মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ কাব্যাংশের উল্লিখিত অংশে ‘বিধুমুখী’ বলতে ইন্দ্রজিতের পত্নী প্রমীলার কথা বলা হয়েছে।

▶ সহোদর বীরবাহুর হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য ইন্দ্রজিৎ রথারোহণ করছিলেন। সেই মুহূর্তে প্রমীলা তাঁর কাছে আসেন এবং ইন্দ্রজিতের হাত ধরে তাঁকে ফেলে রেখে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ইন্দ্রজিৎকে ছাড়া তাঁর পক্ষে প্রাণ ধারণ করা যে সম্ভব নয় সে কথাও তিনি বলেন। দৃষ্টান্ত দিয়ে প্রমীলা বলেন যে, গভীর অরণ্যে লতা যদি হাতির পা-কে বেষ্টন করে তাহলে হাতি তার প্রতি মনোযোগ না দিলেও তাকে ফেলে দেয় না। ইন্দ্রজিৎ তাহলে

তাঁকে কীভাবে ত্যাগ করে চলে যেতে পারেন এই প্রশ্ন তুলে প্রমীলা বিস্ময় প্রকাশ করেন।

▶ প্রমীলার কথা শুনে ইন্দ্রজিৎ হেসে উত্তর দেন যে প্রমীলা তাঁকে ভালোবাসার যে দৃঢ় বন্ধনে বেঁধেছেন তা ছিন্ন করা কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়। এরপরে ইন্দ্রজিৎ প্রমীলাকে প্রতিশ্রুতি দেন যে রামচন্দ্রকে বধ করে তিনি অত্যন্ত দ্রুত ফিরে আসবেন। এই কথা বলে ইন্দ্রজিৎ প্রমীলার কাছে বিদায় প্রার্থনা করেন।

৯. আলিঙ্গি কুমারে, চুম্বি শিরঃ, মৃদুস্বরে/উত্তর করিলা তবে স্বর্ণ- লঙ্কাপতি;”-কে কাকে আলিঙ্গন করেছে? আলিঙ্গন করে বক্তা যা বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।২+৩ [রামকৃয় মিশন বয়েজ হোম হাই স্কুল, রহড়া]

উত্তর:  মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশের উল্লিখিত অংশে রাবণ ইন্দ্রজিৎকে আলিঙ্গন করেছেন।

▶ সহোদর বীরবাহুর মৃত্যুর পরে রামচন্দ্রের প্রতি প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য ইন্দ্রজিৎ এসেছিলেন পিতার অনুমতি নিতে। যুদ্ধ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত রাবণ প্রিয় পুত্রকে আলিঙ্গন করেন। রাবণ পুত্র ইন্দ্রজিৎকে ‘রাক্ষস-কুল-শেখর’ ও ‘রাক্ষস-কুল-ভরসা’ বলে উল্লেখ করে বলেন যে, সেই ভয়ংকর যুদ্ধে প্রিয় পুত্রকে পাঠাতে তাঁর প্রাণ চায় না। কারণ, নিয়তি তাঁর প্রতি বিরূপ, “হায়, বিধি বাম মম প্রতি”। এই বিরূপতার দৃষ্টান্ত হিসেবে রাবণ বলেন যে, শিলা যেমন জলে ভাসা অসম্ভব সেরকমই মরে গিয়ে পুনর্জীবন লাভের ঘটনাও একটি অসম্ভব বিষয়। এখানে রাবণ ইন্দ্রজিতের দ্বারা নিহত রামচন্দ্রের পুনর্জীবন লাভ করে বীরবাহুকে হত্যার ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। নিয়তির ভূমিকা ছাড়া যে এরকম অসম্ভব বিষয় হওয়া সম্ভব নয় এটাই রাবণের বলার দ্দেশ্য ছিল। আর এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে প্রিয় পুত্রকে যুদ্ধে পাঠাতে রাবণের ইচ্ছা ছিল না। পুত্র-স্নেহে আকুল একজন পিতার মানসিকতাই এখানে রাবণের মন্তব্যে প্রকাশিত হয়েছে। 

১০. ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে ইন্দ্রজিতের চরিত্রবৈশিষ্ট্য যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে, তা আলোচনা করো। [রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ, পুরুলিয়া; রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুল]

উত্তর: চরিত্র বৈশিষ্ট্য: মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশের প্রধান চরিত্র ইন্দ্রজিৎ। তাকে আশ্রয় করেই কাহিনির বিকাশ। সেখানে ইন্দ্রজিতের বেশ কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়-

বীরত্ব ও আত্মবিশ্বাস: ছদ্মবেশী দেবী লক্ষ্মীর কাছে লঙ্কার সর্বনাশ এবং বীরবাহুর মৃত্যুর খবর শুনে ইন্দ্রজিৎ বলে উঠেছিলেন, “ঘুচাব ও অপবাদ, বধি রিপুকুলে।” দু-দুবার রামচন্দ্রকে যুদ্ধে হারিয়েছেন ইন্দ্রজিৎ। তৃতীয় বারও পরাজিত করতে আত্মবিশ্বাসী ইন্দ্রজিৎ রাবণকে বলেছেন- “সমূলে নির্মূল করিব পামরে আজি।”

কর্তব্য সচেতনতা: ইন্দ্রজিৎ শুধু পিতৃভক্তই নন, নিজের কর্তব্য সম্পর্কেও তিনি অত্যন্ত সচেতন। তাই তিনি বলেন-“থাকিতে দাস, যদি যাও রণে/তুমি, এ কলঙ্ক, পিতঃ, ঘুষিবে জগতে।”

স্বদেশপ্রেম: ইন্দ্রজিৎ স্বদেশ ও স্বজাতির প্রতি একনিষ্ঠ। তাই তিনি বলে ওঠেন-“হা ধিক্ মোরে! বৈরিদল বেড়ে স্বর্ণলঙ্কা …।” আত্মমূল্যায়নের মানসিকতা: লঙ্কার দুর্দশা এবং বীরবাহুর মৃত্যুর পর তিনি নিজেকে ধিক্কার দিয়েছেন-“হা ধিক্ মোরে! বৈরিদল বেড়ে/ স্বর্ণলঙ্কা, হেথা আমি বামাদল মাঝে?” এই আত্মসমালোচনা চরিত্রটিকে মহান করে তুলেছে। পত্নীর প্রতি গভীর অনুরাগ: প্রমীলার সঙ্গে ইন্দ্রজিতের দাম্পত্য সম্পর্কটিও ছিল অত্যন্ত মধুর। প্রমীলা ইন্দ্রজিৎকে যুদ্ধে ছাড়তে না চাইলে ইন্দ্রজিৎ বলেছেন যে তাঁকে প্রমীলার ভালোবাসার দৃঢ় বন্ধন থেকে আলাদা করার ক্ষমতা কারোরই নেই।

উপসংহাব: মধুসূদনের কাছে ইন্দ্রজিৎ ছিলেন ‘favourite Indrajit’ \ সেই পক্ষপাত এবং সহানুভূতিই এখানে ইন্দ্রজিৎ চরিত্রে দেখা যায়।