Class 10 Chapter 1 Bengali Medium
পরিবেশের জন্য ভাবনা
1. MCQs Question Answer
1. কোন স্তরটিকে শান্তমন্ডল’ বলা হয়?
(i) ট্রেংশানিকয়ার
(ii) স্ট্যাসেনিয়ার
(iii) মেসেক্তিয়ার
(iv) থার্মোস্ফিয়ার
উত্তর : (ii) স্ট্যাসেনিয়ার
2. ব্যািেমস্ফিয়ারের সর্বোচ্চ উন্নতা প্রায়
(i) 50°C
(ii) 50°C
(iii) 0°C
(iv) 30°C
উত্তর : (iii) 0°C
3. বায়ুমণ্ডলের শীতলতম স্তরটি হল-
(i) স্ট্যাটোস্ফিয়ার
(ii) আয়নোস্ফিয়ার
(iii) থার্মোস্ফিয়ার
(iv) মেসোস্ফিয়ার
উত্তর : (iv) মেসোস্ফিয়ার
4. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরটির ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি?
(i) ট্রোপোস্ফিয়ার
(ii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
(iii)মেসোস্ফিয়ার
(iv) থার্মোস্ফিয়ার
উত্তর : (i) ট্রোপোস্ফিয়ার
5. বায়ুমন্ডলের কোন্ কোন্ স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে উন্নতা বৃদ্ধি পায়?
(i) ট্রোপোস্ফিয়ার এবং থার্মোস্ফিয়ার
(ii) মেসোস্ফিয়ার এবং স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
(iii) থার্মোস্ফিয়ার এবং মেসোস্ফিয়ার
(iv) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার এবং থার্মোস্ফিয়ার
উত্তর : (iv) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার এবং থার্মোস্ফিয়ার
6. বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন স্তরগুলির ক্ষেত্রে চাপের সঠিক অধঃক্রম হল-
(i) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার: > ট্রোপোস্ফিয়ার> মেসোস্ফিয়ার > থার্মোস্ফিয়ার
(ii) মেসোস্ফিয়ার থার্মোস্ফিয়ার স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার > ট্রোপোস্ফিয়ার
(iii) ট্রোপোস্ফিয়ার> স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার > মেসোস্ফিয়ার > থার্মোস্ফিয়ার
(iv) থার্মোস্ফিয়ার > মেসোস্ফিয়ার > স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার > ট্রোপোস্ফিয়ার
উত্তর : (iii) ট্রোপোস্ফিয়ার> স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার > মেসোস্ফিয়ার > থার্মোস্ফিয়ার
7. বায়ুতে যে গ্যাসটির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি তা হল-
(i) অক্সিজেন
(ii) নাইট্রোজেন
(iii) ওজোন
(iv) হাইড্রোজেন
উত্তর : (ii) নাইট্রোজেন
৪. বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে আবহাওয়াগত প্রাকৃতিক গোলযোগ ঘটে তা হল-
(i) থামোস্ফিয়ার
(ii) ট্রোপোখিমার
(iii)স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
(iv) মেসোস্ফিয়ার
উত্তর : (ii) ট্রোপোস্ফিয়ার
9. রাসায়নিক গঠন অনুসারে বায়ুমন্ডলের বিভাগ হল-
(i) 5টি
(ii) 4টি
(iii) 3টি
(iv) ২টি
উত্তর : (iv) ২ট
10. ভূপৃষ্ঠ থেকে 12km উচ্চতার মধ্যে বায়ুমন্ডলের যত শতাংশ ভর থাকে তা হল-
(i) 70
(ii) 80
(iii) 90
(iv) 75
উত্তর : 75
11. বায়ুমন্ডলের কোন্ স্তরটির আর এক নাম কেমোস্ফিয়ার?
(i) ট্রোপোস্ফিয়ারের
(ii) ওজোনোস্ফিয়ার
(iii)ম্যাগনেটোস্ফিয়ার
(iv) এক্সোস্ফিয়ার
উত্তর : (ii)ওজোনোস্ফিয়ার
12. বায়ুমণ্ডলের ওজনের মধ্যে ট্রোপোস্ফিয়ারের অন্তর্গত অংশ হল-
(i) 25 ভাগ
(ii) 55 ভাগ
(iii) 75 ভাগ
(iv) 65 ভাগ
উত্তর : (iii) 75 ভাগ
13. ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরে যতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তর হোমোস্ফিয়ারের অন্তর্গত তা হল-
(i) 70 km
(ii) 30 km
(iii)100 km
(iv) 85 km
উত্তর : (iv) 85 km
14. ভূপৃষ্ঠ থেকে 32 km উচ্চতায় বায়ুর চাপ সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুচাপের তুলনায় কত কম হয়?
(i) 1%
(ii) 10%
(iii) 20%
(iv) 30%
উত্তর : (i) 1%
15. বায়ুমণ্ডলের যে স্তরকে ‘প্রাকৃতিক সৌরপর্দা’ বলা যায় তা হল-
(i) ট্রোপোস্ফিয়ার
(ii) ওজোনোস্ফিয়ার
(iii) থার্মোস্ফিয়ার
(iv) এক্সোস্ফিয়ার
উত্তর : (ii) ওজোনোস্ফিয়ার
16. বায়ুমণ্ডলের উন্নতম স্তরটি হল-
(i) এক্সোস্ফিয়ার
(ii) ওজোনোস্ফিয়ার
(iii) আয়নোস্ফিয়ার
(iv) থার্মোস্ফিয়ার
উত্তর : (i) এক্সোস্ফিয়ার
17. বায়ুমণ্ডলের যে স্তরগুলিতে বিভিন্ন আয়ন উপস্থিত থাকে
(i) ট্রোপোস্ফিয়ার, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
(ii) ট্রোপোস্ফিয়ার, মেসোস্ফিয়ার
(iii) মেসোস্ফিয়ার, থার্মোস্ফিয়ার
(iv) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার, এক্সোস্ফিয়ার
উত্তর : (iii) মেসোস্ফিয়ার, থার্মোস্ফিয়ার
18. ওজোনমণ্ডলের ঊর্ধ্বসীমাকে কী বলে?
(i) ট্রোপোপজ
(ii) মেসোপজ
(iii) স্ট্র্যাটোপজ
(iv) ম্যাগনেটোপজ
উত্তর : (iii) স্ট্যাটোপজ
19. বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তরটি হল-
(i) ট্রোপোস্ফিয়ার
(ii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
(iii) থার্মোস্ফিয়ার
(iv) মেসোস্ফিয়ার
উত্তর:(i) ট্রোপোস্ফিয়ার
20. মেরুজ্যোতি (aurora) উৎপন্ন হয় বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে সেটি হল-
(i) ওজোনোস্ফিয়ার
(ii) আয়নোস্ফিয়ার
(iii) ট্রোপোপজ
(iv) মেসোস্ফিয়ার
উত্তর : (ii) আয়নোস্ফিয়ার
21. ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরের গড় উচ্চতা ভূপৃষ্ঠ থেকে
(i) 10 km
(ii) 15 km
(iii)12 km
(iv) 20 km
উত্তর : (iii)12 km
22. বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন উন্নতার মান-
(i)10°C
(ii) 0°C
(iii) 50°C
(iv) 95°C
উত্তর : (iv)95°C
23. বেতার তরঙ্গকে প্রতিফলিত করে বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তর?
(i) স্ট্র্যাটোপজ
(ii) ওজোনোস্ফিয়ার
(iii) মেসোস্ফিয়ার
(iv) আয়নোস্ফিয়ার
উত্তর : (iv) আয়নোস্ফিয়ার
24. বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন উন্নতা হয়
(i) ট্রোপোপজে
(ii) ওজোন স্তরে
(iii) মেসোেপজে
(iv) স্ট্র্যাটোপজে
উত্তর : (iii) মেসোপজে
25. কারম্যান রেখা যা বায়ুমণ্ডলে ও মহাকাশের মধ্যে সীমারেখা নির্দেশ করে, ভূপৃষ্ঠ থেকে তার উচ্চতা কত?
(i) 150 km
(ii) 100 km
(iii) 120 km
(iv) 50 km
উত্তর : (ii) 100 km
26. প্রতি কিলোমিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ট্রোপোস্ফিয়ারের উন্নতা কমে
(i) 5.6C
(ii) 6.5C
(iii) 3.5 C
(iv) 4.6 C
উত্তর : (ii) 6.5* C
27. বায়ুমণ্ডলের কোন্ অঞ্চলে কৃত্রিম উপগ্রহ, মহাকাশ স্টেশন থাকে?
(i) এক্সোস্ফিয়ার
(ii) থার্মোস্ফিয়ার
(iii) মেসোস্ফিয়ার
(iv) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
উত্তর : (i) এক্সোস্ফিয়ার
28. বায়ুমণ্ডলের যে স্তরটি জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ করে
(i) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
(ii) থার্মোস্ফিয়ার
(iii) ট্রোপোস্ফিয়ার
(iv) মেসোস্ফিয়ার
উত্তর : (iii) ট্রোপোস্ফিয়ার
29. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে সূর্য থেকে আগত এক্স রশ্মি শোষিত হয়?
(i) ট্রোপোস্ফিয়ার
(ii) মেসোস্ফিয়ার
(iii) আয়নোস্ফিয়ার
(iv) এক্সোস্ফিয়ার
উত্তর : (iii) আয়নোস্ফিয়ার
30. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ সর্বাধিক?
(i) ট্রোপোস্ফিয়ার
(ii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
(iii) থার্মোস্ফিয়ার
(iv) মেসোস্ফিয়ার
উত্তর : (i) ট্রোপোস্ফিয়ার
31. ‘ভ্যান অ্যালেন বিকিরণ বলয়’ বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে দেখতে পাওয়া যায়?
(i) মেসোস্ফিয়ারে
(ii) ম্যাগনেটোস্ফিয়ারে
(iii) এক্সোস্ফিয়ারে
(iv) থার্মোস্ফিয়ারে
উত্তর : ম্যাগনেটোস্ফিয়ার
32. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে ওজোন গ্যাস পাওয়া যায়?
(i) মেসোস্ফিয়ার
(ii) থার্মোস্ফিয়ার
(iii) এক্সোস্ফিয়ার
(iv)স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
উত্তর : স্ট্যাটোস্ফিয়ার
33. স্ট্র্যাটোপজের উন্নতা হল-
(i) 32* C
(ii) 32* F
(iii) 10 * C
(iv) 10 * F
উত্তর : (ii) 32* F
34. সাধারণ অবস্থায় সমুদ্রপৃষ্ঠে আদর্শ গ্যাসের বায়ুচাপের পরিমাণ প্রায়
(i) 1003 millibar
(ii)1013 millibar
(iii)1030 millibar
(iv) 1001 millibar
উত্তর :1013 millibar
35. বৈপরীত্য উত্তাপ লক্ষ করা যায়-
(i)আয়নোস্ফিয়ারে
(ii) এক্সোস্ফিয়ারে
(iii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে
(iv)ট্রোপোস্ফিয়ারে
উত্তর : স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে
36. সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে শোষিত হয় সেটি হল-
(i) ট্রোপোস্ফিয়ার
(ii) ওজোনোস্ফিয়ার
(iii) থার্মোস্ফিয়ার
(iv) মেসোস্ফিয়ার
উত্তর ওজোনোস্ফিয়ার
37. সূর্য থেকে পৃথিবীতে তাপ আসে
(i) পরিবহণ পদ্ধতিতে
(ii) বিকিরণ পদ্ধতিতে
(iii) সবকটিই ঠিক
(iv) বিকিরণ পদ্ধতিতে
উত্তর পরিচলন পদ্ধতিতে
38. আন্টার্কটিকা অঞ্চলে ওজোন স্তরের সর্বাধিক ক্ষয় হয় কোন্ মাসে?
(i) মার্চ-আগস্ট
(ii) এপ্রিল-জুন
(iii) সেপ্টেম্বর- নভেম্বর
(iv) জানুয়ারি-মার্চ
উত্তর সেপ্টেম্বর-নভেম্বর
39. যে রাসায়নিক পদার্থটি ওজোন স্তর ধ্বংসের জন্য দায়ী সেটি হল
(i) ক্লোরোফর্ম
(ii) আয়োডোফর্ম
(iii) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন
(iv) অ্যাসিটিলিন
উত্তর ক্লোরোফ্লুরোকার্বন
40. নিম্নলিখিত কোন্ রশ্মিটি তাপীয় রশ্মি?
(i) অতিবেগুনি রশ্মি
(ii) অবলোহিত রশ্মি
(iii) কসমিক রশ্মি
(iv) গামা রশ্মি
উত্তর অবলোহিত রশ্মি
41. সুপারসনিক এরোপ্লেন থেকে নির্গত নাইট্রোজেনের যে অক্সাইডটি ওজোন স্তরের ব্যাপক ক্ষতি করে সেটি হল-
(i) NO2
(ii) N2O
(iii) NO
(iv) N2O2
উত্তর (iii) NO
42. অতিবেগুনি রশ্মির ক্রিয়ায় CFC থেকে উৎপন্ন হয়-
(i) সক্রিয় কার্বন পরমাণু
(ii) সক্রিয় ক্লোরিন
(iii) সক্রিয় ফ্লুরিন পরমাণু
(iv) সক্রিয় হাইড্রোজেন পরমাণু
উত্তর সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু
43. ওজোন স্তর ক্ষয়ের ক্ষতিকর প্রভাব কোন্টি?
(i) ভূপৃষ্ঠের উন্নতা বৃদ্ধি
(ii) শস্যের উৎপাদন হ্রাস
(iii) ত্বকের ক্যানসার
(iv) সবকটিই
উত্তর সবকটিই
45. কোল্টিন্ট গ্রিনহাউস গ্যাস?
(i) O2
(ii) N2
(iii) O3
(iv) H2
উত্তর O3
46. নীচের কোল্টিন্ট গ্রিনহাউস গ্যাস নয়?
(i) মিথেন
(ii) জলীয় বাষ্প
(iii) কার্বন ডাইঅক্সাইড
(iv) অক্সিজেন
উত্তর অক্সিজেন
47. গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এ বিভিন্ন গ্রিনহাউস গ্যাসের অবদানের সঠিক ক্রম হল-
(i) CO_{2} > H_{2}*O > CH_{4} > CFC
(ii) CO_{2} > CH_{4} > CFC > H_{2}O
(iii) CO_{2} > H_{2}O > CFC > CH_{4}
(iv) CO_{2} > CFC > H_{2}*O > CH_{4}
উত্তর CO_{2} > CH_{4} > CFC >H2O
48. ওজোনোস্ফিয়ারে ওজোনের গাঢ়ত্ব মোটামুটিভাবে-
(i) 30 ppm
(ii) 10 ppm
(iii) 40 ppm
(iv) 20 ppm
উত্তর 10 ppm
49. সূর্যালোকে উপস্থিত কোন্ রশ্মি ভূপৃষ্ঠে আপতিত হলে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে?
(i) অবলোহিত রশ্মি
(ii) অতিবেগুনি রশ্মি
(iii) রেডিয়ো তরঙ্গ
(iv) কোনোটিই নয়
উত্তর (ii) অতিবেগুনি রশ্মি
50. প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস কোনটি?
(i) CFC
(ii) NO,
(iii) CO₂
(iv) CH₂
উত্তর CO₂
51. ওজোন স্তর ক্ষয় করে কোনটি?
(i) ক্লোরিন
(ii) অক্সিজেন
(iii) হাইড্রোজেন
(iv) নাইট্রোজেন
উত্তর (i) ক্লোরিন
52. কোন রশ্মিটি ওজোন স্তর গঠনের জন্য প্রয়োজন?
(i) অতিবেগুনি রশ্মি
(ii) দৃশ্যমান আলো
(iii) মাইক্রোতরঙ্গ
(iv) বিকীর্ণ তাপরঙ্গ
উত্তর (i) অতিবেগুনি রশ্মি
2. Very Short Question Answer
1. ওজোন বর্ণের, গন্ধযুক্ত একটি গ্যাস।
উত্তর নীল, আঁশটে
2. ওজোন হল গ্যাসের রূপভেদ।
উত্তর অক্সিজেন
3. পৃথিবীর ছাতা ও প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন নামে পরিচিত বায়ুমণ্ডলের স্তর।
উত্তর ওজোন
4. ওজোন গহ্বর সর্বপ্রথম লক্ষ করেন-
উত্তর জো ফোরম্যান
5. বায়ুমণ্ডলে ওজোন গ্যাসের ঘনত্বকে এককে প্রকাশ করা হয়।
উত্তর ডবসন (DU)
6. সূর্যের যে রশ্মি মহাশূন্যে ফিরে যায় তাকে বলে।
উত্তর অ্যালবেডো
7. অবলোহিত রশ্মি (Infrared Ray)-এর শক্তি হ্রাস পেলে তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য পায়।
উত্তর বৃদ্ধি
৪. CFC-এর সম্পূর্ণ কথাটি হল।
উত্তর ক্লোরোফ্লুরোকার্বন
9. সুপারসনিক বিমান নির্গত যে গ্যাস ওজোন স্তরকে ভেঙে দেয় সেই গ্যাসটি হল
উত্তর নাইট্রিক অক্সাইড
10. মন্ট্রিল প্রোটোকল সালে স্বাক্ষরিত হয়।
উত্তর
11. ওজোন স্তর সূর্য থেকে আগত রশ্মির ভূপৃষ্ঠে আপতনকে প্রতিহত করে।
উত্তর অতিবেগুনি
12. ওজোন স্তর ধ্বংসের ফলে চামড়ায় রোগ হতে পারে।
উত্তর ক্যানসার
13. একটি অজৈব গ্রিনহাউস গ্যাস হল
উত্তর কার্বন ডাইঅক্সাইড
14. বডি স্প্রে-তে থাকা
উত্তর ক্লোরোফ্লুরোকার্বন
গ্যাস হল গ্রিনহাউস গ্যাস।
15. প্রতিবছর বায়ুমণ্ডলে CFC গ্যাসগুলির বৃদ্ধির হার প্রায়
উত্তর 5%
16. CFC অণুর ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে আটকে দেওয়ার ক্ষমতা CO₂ অণুর তুলনায় প্রায় বেশি। গুণ
উত্তর 15,000-20,000
17. প্রতি অণু N₂O -এর তাপ আটকে রাখার ক্ষমতা প্রতি অণু CO₂ এর তুলনায় প্রায় গুণ বেশি।
উত্তর 200
18. প্রতি অণু মিথেনের তাপ আটকে রাখার ক্ষমতা প্রতি অণু CO₂ -এর তুলনায় প্রায় গুণ বেশি।
উত্তর 25
19. গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে N₂O ও জলীয় বাষ্পের অবদান যথাক্রমে ও
উত্তর 5%, 2%
20. গ্রিনহাউস এফেক্টের ফলে ঘটছে।
উত্তর বিশ্বউন্নায়ন
21. ‘পৃথিবীর রক্ষাকবচ’ হল বায়ুমণ্ডলের স্তর।
উত্তর ওজোন
22. বায়ুমণ্ডলে গ্যাসীয় পদার্থের সম্ভাব্য মোট ভর কত?
উত্তর : বায়ুমণ্ডলে গ্যাসীয় পদার্থের সম্ভাব্য মোট ভর প্রায় 5.5 × 1015 ton |
23. বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ স্তর দুটির নাম লেখো।
উত্তর : বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তরটি হল ট্রোপোস্ফিয়ার ও সর্বোচ্চ স্তরটি হল এক্সোস্ফিয়ার।
24. ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে ট্রোপোস্ফিয়ারের অবস্থান লেখো।
উত্তর : ভূপৃষ্ঠ থেকে 12 km উচ্চতা পর্যন্ত ট্রোপোস্ফিয়ার বিস্তৃত।
25. ট্রোপোস্ফিয়ারে উপস্থিত বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদানগুলি কী কী?
উত্তর : N2, O2, CO2, H₂O (জলীয় বাষ্প)।
26. নিরক্ষীয় অঞ্চল ও মেরু অঞ্চলে ট্রোপোস্ফিয়ারের বিস্তার কতখানি? অনুরূপ প্রশ্ন, নিরক্ষরেখার ওপর ট্রোপোস্ফিয়ারের উচ্চতা কত?
উত্তর : ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরটি মেরু অঞ্চলে প্রায় 8-9 km পর্যন্ত এবং নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় 16-18 km পর্যন্ত বিস্তৃত।
27. ট্রোপোস্ফিয়ারের সর্বনিম্ন অঞ্চলে বায়ুর চাপ কত?
উত্তর : 76 cm পারদস্তম্ভের চাপের সমান।
28. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে ঝড় ও বৃষ্টি দেখা যায়?
উত্তর : বায়ুমণ্ডলের ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরে ঝড় ও বৃষ্টি দেখা যায়।
29. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরের অপর নাম ক্ষুব্ধমন্ডল?
উত্তর : বায়ুমণ্ডলের ট্রোপোস্ফিয়ারের অপর নাম ক্ষুদ্ধধমণ্ডল।
30. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরটি আবহমণ্ডল বলে পরিচিত?
উত্তর : বায়ুমন্ডলের ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরটি আবহমণ্ডল বলে পরিচিত।
31. ট্রোপোস্ফিয়ারে উচ্চতাভেদে, উয়তার সাধারণত কীরূপ পরিবর্তন হয়?
উত্তর : উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরের উয়তা ক্রমশ হ্রাস পায়।
32. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরকে ‘ক্রমহ্রাসমান উন্নতা স্তর’ বলা হয়?
উত্তর : ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরটিকে ‘ক্রমহ্রাসমান উয়তা স্তর’ বলা হয়।
33. ট্রোপোস্ফিয়ারের সর্বনিম্ন উয়তা কোন্ অংশে দেখা যায়?
উত্তর : নিরক্ষরেখার ঊর্ধ্বে ট্রোপোপজ অংশে।
34. ট্রোপোপজ কী?অনুরুপ প্রশ্ন, ট্রোপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের সংযোগস্থলকে কী বলে?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠ থেকে 12 km উচ্চতার আশেপাশে যে অঞ্চলে ট্রোপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের সংযোগ ঘটে এবং উচ্চতার পরিবর্তনেও উন্নতা অপরিবর্তিত থাকে তাকে ট্রোপোপজ বলে।
35. ট্রোপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমায় উন্নতা কত থাকে?
উত্তর : ট্রোপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমায় উন্নতা থাকে প্রায়-56°C।
36. বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন উপাদানগুলি কোন্ স্তরে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়?
উত্তর : ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়।
37. ভূপৃষ্ঠের জীবজগৎ বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে থাকে?
উত্তর : ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে থাকে।
38. ভূপৃষ্ঠ থেকে যতই উপরে ওঠা যায় ততই লক্ষ করা যায় যে একটি নির্দিষ্ট হারে উয়তা হ্রাস পেতে থাকে, এই ঘটনাকে কী বলা হয়? অনুরূপ প্রশ্ন, ল্যাপ্স রেট কী?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরে ওঠার সময় নির্দিষ্ট হারে উয়তা হ্রাসের ঘটনাকে বলে সাধারণ তাপ হ্রাস বা নর্মাল ল্যাপ্স রেট।
39. জেট স্ট্রিম নামক প্রবল গতিপূর্ণ বায়ুস্রোত বায়ুমণ্ডলের কোন্ অঞ্চলে প্রবাহিত হয়?
উত্তর : জেট স্ট্রিম ট্রোপোপজ অঞ্চলে প্রবাহিত হয়।
40. ট্রোপোস্ফিয়ারের উপরিভাগ থেকে কত উচ্চতা পর্যন্ত স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বিস্তৃত?
উত্তর : ট্রোপোস্ফিয়ারের উপরিভাগ থেকে প্রায় 45 km উচ্চতা পর্যন্ত।
41. স্ট্যাটোপজ কী?
উত্তর : স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের সংযোগস্থলে যে অঞ্চলে উয়তার কোনো পরিবর্তন হয় না, তাকে স্ট্র্যাটোপজ বলে।
42. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরের মধ্য দিয়ে জেট বিমান চলাচল করে? অনুরূপ প্রশ্ন, প্লেন চালানো বা বেলুন ওড়ানোর জন্য বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরটি ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের মধ্য দিয়ে জেট বিমান চলাচল করে।
43. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরকে শান্তমণ্ডল বলে?
উত্তর : স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারকে শান্তমন্ডল বলে।
44. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উচ্চতা বাড়লে বায়ুর উন্নতার কী পরিবর্তন হয়?অনুরূপ প্রশ্ন, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উয়তা বাড়ে নাকমে?
উত্তর : বায়ুর উন্নতা ক্রমশ বাড়তে থাকে।
45. ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে ওজোনোস্ফিয়ারের অবস্থান লেখো।
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে 16 km থেকে 30 km উচ্চতা পর্যন্ত ওজোনোস্ফিয়ার বিস্তৃত।
25 N2, 02, 031
. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের কয়েকটি গ্যাসীয় উপাদান-এর নাম লেখো।
46. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরটি শীতলতম?
উত্তর : মেসোস্ফিয়ার হল বায়ুমণ্ডলের শীতলতম স্তর।
48. ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে মেসোস্ফিয়ারের অবস্থান লেখো।
উত্তর : মেসোস্ফিয়ার ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে 45 km থেকে 85 km উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত।
49.. মেসোপজ অংশের উন্নতা কত?
উত্তর : মেসোপজ অংশের উন্নতা – 92 deg * C ।
50. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে ‘অরোরা বোরিয়ালিস’ দেখতে পাওয়া যায়? অনুরূপ প্রশ্ন, বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে মেরুজ্যোতি দেখা যায়?
উত্তর : বায়ুমণ্ডলের থার্মোস্ফিয়ারের অন্তর্গত আয়োনোস্ফিয়ার স্তরে।
51. মেসোস্ফিয়ার ও থার্মোস্ফিয়ারের কয়েকটি উপাদানের নাম লেখো।
উত্তর : মেসোস্ফিয়ার- N_{2} , O_{2} , O_{2} ^ + , N O^ + । থার্মোস্ফিয়ার- O_{2} ^ + O ^ + N O^ +1
52. এক্সোস্ফিয়ারে মূলত কোন্ কোন্ গ্যাস অবস্থান করে?
উত্তর : হাইড্রোজেন (H_{2}) এবং হিলিয়াম (He) গ্যাস।
53. রেডিয়ো তরঙ্গের সাহায্যে যোগাযোগে কোন্ বায়ুস্তরকে কাজে লাগানো হয়?
উত্তর : থার্মোস্ফিয়ারের অন্তর্গত আয়নোস্ফিয়ার স্তরটিকে।
54. ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে থার্মোস্ফিয়ারের অবস্থান লেখো।
উত্তর : থার্মোস্ফিয়ার ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে 85 km থেকে 500 km উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত।
55. থার্মোস্ফিয়ার অংশের সর্বোচ্চ উয়তা কত হয়?
উত্তর : থার্মোস্ফিয়ার অংশের সর্বোচ্চ উয়তা হয় প্রায় 1200 deg * C |
56. থার্মোস্ফিয়ার অংশে আকাশ কালো দেখায় কেন?
উত্তর : থার্মোস্ফিয়ারে বাতাস প্রায় নেই বলে আকাশ কালো দেখায়।
57. কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপনের জন্য বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরটি উপযোগী?
উত্তর : এক্সোস্ফিয়ার স্তরটি উপযোগী।
58. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে মহাকাশ স্টেশন থাকে?
উত্তর : এক্সোস্ফিয়ার স্তরে মহাকাশ স্টেশন থাকে।
59. . বায়ুমণ্ডলের এক্সোস্ফিয়ার অংশে কোন্ কোন্ গ্যাসের প্রাধান্য দেখা যায়?
উত্তর : হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসের প্রাধান্য দেখা যায়।
60. পদার্থের কোন্ ভৌত অবস্থায় পরিচলন স্রোত সৃষ্টি হতে পারে?
উত্তর : পদার্থের গ্যাসীয় ও তরল অবস্থায় পরিচলন স্রোত সৃষ্টি হতে পারে।
61. পরিচলন স্রোতের দুটি প্রাকৃতিক উদাহরণ দাও।
উত্তর : সমুদ্রবায়ু এবং স্থলবায়ু।
62. ওজোন গ্যাসের সর্বাধিক সঞ্চয় কোন্ স্তরে দেখা যায়?
উত্তর বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে।
63. বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত মোট ওজোন গ্যাসের শতকরা কত ভাগ ওজোনোস্ফিয়ারে বিদ্যমান?
উত্তর মোট ওজোন গ্যাসের শতকরা 90 ভাগ।
64. ওজোন স্তর সূর্য থেকে আগত কোন্ রশ্মির ভূপৃষ্ঠে আপতনকে প্রতিহত করে?
উত্তর ওজোন স্তর সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মির (UV-রশ্মি) ভূপৃষ্ঠে আপতনকে প্রতিহত করে।
65. ওজোন গ্যাসের ঘনত্বকে কোন্ এককে প্রকাশ করা হয়?
উত্তর ডবসন এককে প্রকাশ করা হয়।
66. বায়ুমণ্ডলে ওজোনের পরিমাণ মাপার যন্ত্রটির নাম কী?
উত্তর ডবসন স্পেকট্রোমিটার।
67. সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি কোন্ স্তরে শোষিত হয়?
উত্তর সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ওজোন স্তরে শোষিত হয়।
3. Short Question Answer
1. পরিবেশে CFC কী কী ভাবে মিশতে পারে?
উত্তর : রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনারে হিমায়করূপে, অ্যারোসল স্প্রে- তে চালকরূপে, প্লাস্টিক উৎপাদনে ফোমিং এজেন্টরূপে, ইলেকট্রনিক যন্ত্রের পরিষ্কারকরূপে ইত্যাদি ক্ষেত্রে CFC ব্যবহৃত। এইসব দ্রব্যের প্রতিনিয়ত ব্যবহারের ফলে CFC পরিবেশে মেশে।
2. প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন বা সৌরপর্দা বা পৃথিবীর ছাতা কাকে বলে?
অনুরূপ প্রশ্ন, বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরকে ‘পৃথিবীকে নিরাপত্তা প্রদানকারী স্তর’ বলে?
উত্তর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের অন্তর্গত ওজোনোস্ফিয়ারকে ‘প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন’ বা ‘সৌরপর্দা’ বা ‘পৃথিবীর ছাতা’ বা ‘পৃথিবীকে নিরাপত্তা প্রদানকারী স্তর’ বলে।
3. UV-রশ্মির প্রভাবে ক্লোরোফ্লরোকার্বন থেকে নির্গত কোন্ পরমাণুটি ওজোন গ্যাসকে অক্সিজেনে বিয়োজিত করে দেয়?
উত্তর UV-রশ্মির প্রভাবে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) থেকে নির্গত ক্লোরিন পরমাণু (CI) ওজোন গ্যাসকে অক্সিজেনে (০₂) বিয়োজিত করে দেয়।
4. CFC-গুলি ব্যাবহারিক ক্ষেত্র থেকে মুক্ত হয়ে অবিকৃত অবস্থায় কেন স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে পৌঁছোয়?
উত্তর CFC-গুলি ট্রোপোস্ফিয়ার অঞ্চলে নিষ্ক্রিয় ও অদাহ্য হওয়ায় ব্যাবহারিক ক্ষেত্র থেকে মুক্ত হয়ে এরা অবিকৃত অবস্থায় স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে পৌঁছোয়।
5. বায়ুতে উপস্থিত একটি গ্যাসের নাম করো, যেটির পরিমাণ বাড়লে বিশ্বউয়ায়ন ঘটে? অনুরূপ প্রশ্ন, বায়ুমণ্ডলের উয়তা বৃদ্ধি করে এমন একটি গ্যাসের নামলেখো।
উত্তর বায়ুতে কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂) গ্যাসের পরিমাণ বাড়লে বিশ্বউয়ায়ন ঘটে বা বায়ুমণ্ডলের উয়তা বৃদ্ধি পায়।
6. বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির উপস্থিতির একটি সুবিধা উল্লেখ করো।
উত্তর বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির উপস্থিতির জন্য পৃথিবীতে জীবনধারণের উপযুক্ত উয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
7. ভূ-উয়তা বৃদ্ধির একটি ক্ষতিকর প্রভাব উল্লেখ করো।
উত্তর ভূ-উয়তা বৃদ্ধির ফলে মেরু অঞ্চলের বরফের স্তূপ গলে যাবে এবং উপকূলবর্তী এলাকা জল দ্বারা প্লাবিত হবে।
8. [1] মেসোস্ফিয়ার কাকে বলে? [ii] মেসোপজ কাকে বলে?1+1
উত্তর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উপরে অবস্থিত এবং ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে 45-85 km উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুমণ্ডলীয় স্তরটি মেসোস্ফিয়ার নামে পরিচিত।
ii] মেসোস্ফিয়ার স্তরের শেষ সীমায় যে অঞ্চলে উচ্চতা বৃদ্ধি পেলেও উয়তা অপরিবর্তিত থাকে (-92°C), তাকে মেসোপজ বলে।
9. . মেসোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর মেসোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল-① উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে এই স্তরের উন্নতা ও চাপ উভয়ই হ্রাস পায়। ② এই স্তরের সর্বনিম্ন উয়তা -92°C হওয়ায় এটি বায়ুমণ্ডলের শীতলতম অঞ্চল।
③ মহাকাশ থেকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করা উল্কাগুলি এই স্তরে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
10. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উন্নতা ভূপৃষ্ঠের উন্নতার তুলনায় কম হয় কেন?
উত্তর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উয়তা ভূপৃষ্ঠের উন্নতার তুলনায় কম হয় কারণ- স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে জলীয় বাষ্প ও ধূলিকণা না থাকায় এর তাপ শোষণ করার ক্ষমতা কম। ② স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে বায়ুর ঘনত্ব খুবই কম হওয়ায় এই স্তরটি সূর্য থেকে আসা যে সামান্য পরিমাণ তাপ শোষণ করে, তা সহজেই বিকিরণ করে দেয়।
11. বায়ুতে পরিচলন স্রোত কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : কোনো স্থানের বায়ু উত্তপ্ত হলে ওই বায়ুর আয়তন বৃদ্ধি পায় ও ঘনত্ব কমে যায়। এই অবস্থায় উত্তপ্ত বায়ু হালকা হয়ে ওপরে ওঠে। এর ফলে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়, তা পূরণ করতে আশেপাশের অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা ও ভারী বায়ু ওই জায়গায় ছুটে আসে। এভাবে বায়ুতে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয়।
12. ওজোন স্তরের ক্ষয় নিবারণের দুটি সম্ভাব্য উপায় উল্লেখ করো
উত্তর : ওজোন স্তরের ক্ষয় নিবারণের দুটি সম্ভাব্য উপায় হল-① এর ব্যবহার কমানো ও② ক্লোরিন-জাতীয় সমস্ত পদার্থের ব্যবহার ক এনে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা।
13. গ্রিনহাউস প্রভাব কী? বেঁচে থাকার পক্ষে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাকে গ্রিনহাউস প্রভাব
উত্তর : যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত কত গ্যাসীয় পদার্থ, যেমন-CO2, CH4, CFC, N₂O, 0₃ ও জলীয় পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপের একাংশকে মহাশূন্যে ফিরে যো দিয়ে ভূপৃষ্ঠ ও তৎসংলগ্ন বায়ুমণ্ডলকে উয় রাখে এবং ফলস্বরূপ জীবা
14. গ্লোবাল ওয়ার্মিং কাকে বলে? অথবা, বিশ্বউয়ায়ন কী?
উত্তর: বিজ্ঞাননির্ভর আধুনিক জীবনযাত্রায় মানুষের নানাবিধ ক্রিয়াকলাপের ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির পরিমাণ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এর প্রভাবে পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ ক্রমশ গরম হয়ে উঠছে। সমগ্র বিশ্বজুড়ে ক্রমাগত উন্নতা বৃদ্ধির এই ঘটনাকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং (global warming) বা বিশ্বউন্নায়ন বলে।
15. মিথেন হাইড্রেট কী?
উত্তর: মিথেন হাইড্রেট হল এক ধরনের কঠিন কেলাসাকার পদার্থ। জলের অণু দিয়ে গঠিত বরফের মতো এই ক্ল্যাথরেট কেলাসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে মিথেন আবদ্ধ হয়ে এর সৃষ্টি হয়। মিথেন হাইড্রেটের সংযুতি CH4 5.7H2O বা 4CH₁ 23H2O
16. মিথেন হাইড্রেট কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তর: পৃথিবীর কয়েকটি অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি ও পরিবেশ মিথেন হাইড্রেটের গঠন ও স্থায়িত্বের জন্য উপযুক্ত। এগুলি হল-① মেরু অঞ্চলের হিমায়িত মৃত্তিকা স্তরের (permafrost) নীচের পলি ও পাললিক শিলাস্তর। ② মহাদেশীয় প্রান্ত অঞ্চলে বৃহৎ হ্রদ ও সমুদ্রের নীচে জমে থাকা পলিস্তর।
③ মেরু অঞ্চলে জমে থাকা বরফের তলদেশ।
17. মিথেন হাইড্রেটকে ‘ফায়ার আইস’ বলে কেন?
উত্তর: মিথেন হাইড্রেট এক প্রকারের কঠিন কেলাসাকার
পদার্থ যার সংযুতি 4CH₁ 23H₂O। জলের অণুর সমন্বয়ে গঠিত বরফ-সদৃশ এই কেলাসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ মিথেন আবদ্ধ অবস্থায় থাকে। মিথেন গ্যাস দাহ্য প্রকৃতির হওয়ায় বরফের মতো দেখতে মিথেন হাইড্রেটের ক্ল্যাথরেট কেলাস আগুনের সংস্পর্শে আসলেই জ্বলতে থাকে। তাই একে ‘ফায়ার আইস’ (fire ice) বলা হয়।
4. Long Question Answer
1. বায়ুমণ্ডল কাকে বলে? এর মূল উপাদান কী কী?
উত্তর: ভূপৃষ্ঠ থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত যে অদৃশ্য গ্যাসীয় আবরণ বলয়াকারে বিস্তৃত থেকে পৃথিবীকে ঘিরে রেখেছে তাকে বায়ুমণ্ডল বলে। মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে এই আবরণ ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে থাকে।
◆ বায়ুমণ্ডলের মূল উপাদানগুলি হল নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, আর্গন, ওজোন, হাইড্রোজেন, জলীয় বাষ্প ও ধূলিকণা।
2. বায়ুমণ্ডলের হোমোস্ফিয়ার ও হেটেরোস্ফিয়ার অঞ্চল বলতে কী বোঝ?
উত্তর: রাসায়নিক গঠন অনুসারে বায়ুমণ্ডলকে দুটি ভাগে ভাগ করা
যায়, যথা-হোমোস্ফিয়ার বা সমমণ্ডল এবং হেটেরোস্ফিয়ার বা বিষমমণ্ডল।
হোমোস্ফিয়ার: বায়ুমণ্ডলের নীচের অংশে (ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 85km
পর্যন্ত বিস্তৃত) উপাদান গ্যাসগুলির (N₂, O2, Ar, CO₂, জলীয় বাষ্প ইত্যাদি) অনুপাত সর্বত্র প্রায় সমান থাকে। তাই এই অংশটিকে হোমোস্ফিয়ার বা সমমণ্ডল বলে। বায়ুমণ্ডলের ট্রোপোস্ফিয়ার, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ার স্তরগুলি এর অন্তর্গত।
হেটেরোস্ফিয়ার: হোমোস্ফিয়ারের ওপরের অংশে যেখানে বায়ুমণ্ডলের উপাদান গ্যাসীয় পদার্থগুলির অনুপাত স্থির নয়, তাকে হেটেরোস্ফিয়ার বা বিষমমণ্ডল বলে। এটি ভূপৃষ্ঠের ওপর 85km উচ্চতা থেকে প্রায় 1000km
উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত। বায়ুমণ্ডলের থার্মোস্ফিয়ার ও এক্সোস্ফিয়ার স্তর দুটি এর অন্তর্গত।
জেনে রাখো
বায়ুমণ্ডলে মোটামুটিভাবে 78% নাইট্রোজেন, 20% অক্সিজেন, 0.93% আর্গন ও 0.04% কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস উপস্থিত। বিভিন্ন জলাশয় থেকে জল বাষ্পীভূত হয়ে বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প হিসেবে থাকে। বায়ুমণ্ডলে এর পরিমাণ প্রায় 0.1-4%। মরুভূমি ও সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের সুক্ষ্ম বালিকণা, কলকারখানা থেকে নির্গত ছাই, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট ছাই প্রভৃতি ধূলিকণা-রূপে বায়ুমন্ডলে ভাসমান অবস্থায় থাকে। বায়ুমন্ডলের ওপরের স্তরের তুলনায় নীচের স্তরে ধূলিকণার পরিমাণ বেশি থাকে।
3. ট্রোপোস্ফিয়ার বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরটিকে বলে? একে ‘ক্ষুদ্রমণ্ডল’ বলার কারণ কী? 1+1
উত্তর: বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তরের নাম ট্রোপোস্ফিয়ার। এই স্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে 12 km উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে।
[*এই স্তরে বায়ুর মধ্যে ধূলিকণা, জলীয় বাষ্প, মেঘ প্রভৃতি থাকে। ফলে এই স্তরের মধ্যেই ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনাগুলি ঘটে। তাই ট্রোপোস্ফিয়ারকে ‘ক্ষুখমণ্ডল’ বলা হয়।
4. ট্রোপোস্ফিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: ট্রোপোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল-① এই স্তরের বায়ুতে
ধূলিকণা, জলীয় বাষ্প, মেঘ ইত্যাদির উপস্থিতির জন্য ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত
সমমণ্ডল বিষমমণ্ডল প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে। তাই একে ক্ষুব্ধমণ্ডল বলে। ② ট্রোপোস্ফিয়ার ভূপৃষ্ঠের উন্নতা ও জলচক্র নিয়ন্ত্রণ করে।
③ এই অঞ্চলের বায়ু সর্বদা গতিশীল এবং উচ্চতা বৃদ্ধিতে উন্নতা ও চাপ উভয়ই হ্রাস পায়। ④ অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন, জলীয় বাষ্প প্রভৃতি জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি এই অঞ্চলে থাকে।
5. ট্রোপোস্ফিয়ারকে ‘ক্রমহ্রাসমান উয়তা স্তর’ বলে কেন?
উত্তর: ভূপৃষ্ঠ থেকে ট্রোপোস্ফিয়ারের যত উর্ধ্বে যাওয়া যায় বায়ুমণ্ডলের উন্নতা ক্রমশ কমতে থাকে। ট্রোপোস্ফিয়ারে প্রতি 1 km উচ্চতা বৃদ্ধিতে প্রায় 6.5°C হারে বায়ুর উয়তা কমে। তাই এই স্তরকে ‘ক্রমহ্রাসমান উন্নতা স্তর’ বলা হয়।
6. উঁচু পর্বতচূড়াগুলি সারাবছর বরফে ঢাকা থাকে কেন?
উত্তর: বায়ুমণ্ডলের ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে উপর দিকে প্রায় 12 km পর্যন্ত বিস্তৃত। উঁচু পর্বতগুলি ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরেই সীমাবদ্ধ থাকে। ট্রোপোস্ফিয়ারে প্রতি 1000m উচ্চতা বৃদ্ধিতে উয়তা 6.5°C হারে কমতে থাকে। ফলস্বরূপ উঁচু পর্বতচূড়াগুলিতে উন্নতা হিমাঙ্কের নীচে চলে যায়। এরফলে বায়ুমণ্ডলের জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বরফে পরিণত হয় এবং পর্বতচূড়াগুলিতে জমা হয়। তাই উঁচু পর্বতচূড়াগুলি সারাবছর বরফে ঢাকা থাকে।
7. পর্বতারোহীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার সাথে নিয়ে যান কেন?
উত্তর: ভূপৃষ্ঠ থেকে যতই উপরে ওঠা যায় ততই বায়ুস্তরের ঘনত্ব কমতে থাকে ও অক্সিজেনের পরিমাণও কমতে থাকে। এর ফলে পর্বতারোহীদের শ্বাসকার্যের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন উচ্চ উন্নতায় পাওয়া যায় না। তাই স্বাভাবিক শ্বাসকার্য চালাতেই অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করতে হয়। এই কারণে পর্বতারোহীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার সাথে নিয়ে যান।
8. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার কাকে বলে? একে ‘শান্তমণ্ডল’ বলা হয় কেন? 1+1
উত্তর: ট্রোপোস্ফিয়ারের উপরে উপস্থিত এবং ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে 12km থেকে 45km উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরটি স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার নামে পরিচিত। [⇒ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অঞ্চলে বায়ুর পরিমাণ খুবই কম এবং ধূলিকণা, জলকণা না থাকায় মেঘ, ঝড়, বৃষ্টি, প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনাগুলি ঘটে না। তাই এই অঞ্চলের নাম ‘শান্তমণ্ডল’।
9. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল-(i) এই স্তরে বায়ুর পরিমাণ খুবই কম এবং ধূলিকণা ও জলীয় বাষ্প অনুপস্থিত। ফলে এই স্তরে ঝড়, বৃষ্টি ও বায়ুপ্রবাহের সম্ভাবনা নেই। তাই এই স্তরের নাম শান্তমণ্ডল।(ii) উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে এই স্তরের উয়তা বাড়লেও চাপ হ্রাস পায়।
(iii) দ্রুতগতি-সম্পন্ন জেট প্লেনগুলি এই স্তরের মধ্য দিয়েই চলাচল করে। (iv) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে অবস্থিত ওজোন গ্যাসের স্তর (ওজোনোস্ফিয়ার) সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে জীবজগতের অস্তিত্ব রক্ষা করে।
10. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অঞ্চলে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পায় কেন?
উত্তর: [স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে উপস্থিত অক্সিজেন গ্যাসের অণু (০₂) সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে অক্সিজেন পরমাণুতে (০)
বিয়োজিত হয়। এই পারমাণবিক অক্সিজেন আণবিক অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হয়ে ওজোন অণু (O₂) সৃষ্টি করে। এই রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে তাপের উদ্ভব হয়। এর ফলে দেখা যায় ট্রোপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে অবস্থিত স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অংশে (12-45 km) বায়ুর উন্নতা কমার বদলে বৃদ্ধি পায়। 45 km উচ্চতায় উন্নতা সর্বোচ্চ (0°C বা 32°F) হয়।
11. ট্রোপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্যে পার্থক্যগুলি লেখো।
উত্তর ট্রোপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল-
ট্রোপোস্ফিয়ার
(i) এটি বায়ুমন্ডলের প্রথম স্তর অর্থাৎ সর্বনিম্ন স্তর (ভূপৃষ্ঠ থেকে 12 km উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত)।
(ii) এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উন্নতা কমতে থাকে।
(iii) জলকণা, ধূলিকণার উপস্থিতির জন্য এই স্তরে মেঘ, বৃষ্টি ইত্যাদি প্রাকৃতিক ঘটনাগুলি ঘটে। তাই একে ক্ষুধমণ্ডলও বলা হয়।
স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার
(iv) এটি বায়ুমণ্ডলের দ্বিতীয় স্তর (ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে 12-45 km উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত)।
এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উয়তা বাড়তে থাকে।
ও জলকণা, ধূলিকণার অনুপস্থিতির জন্য এই স্তরে মেঘ, বৃষ্টি ইত্যাদি হয় না ও আবহাওয়া শান্ত থাকে। তাই একে শান্তমন্ডলও বলা হয়।
12. মহাশূন্য থেকে আসা জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ডগুলি মেসোস্ফিয়ারে প্রবেশ করেই ভস্মীভূত হয় কেন?
উত্তর মেসোস্ফিয়ার হল বায়ুমণ্ডলের শীতলতম অঞ্চল। এর উপরের অংশের উন্নতা প্রায়-92°C হয়। মহাশূন্য থেকে প্রচণ্ড গতিতে ছুটে আসা জ্বলন্ত ও উত্তপ্ত উল্কাপিন্ড মেসোস্ফিয়ারের এই নিম্ন উয়তাযুক্ত অঞ্চলে প্রবেশ করলে উন্নতার তারতম্যের জন্য তার বাইরের ও ভিতরের অংশের
সংকোচন-প্রসারণ বিভিন্ন মাত্রায় ঘটে। ফলে উল্কাপিণ্ড ফেটে টুকরো টুক হয়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়।
13. থার্মোস্ফিয়ার কাকে বলে? এরূপ নামকরণের কারণ কী? মেসোস্ফিয়ারের উপরে উপস্থিত এবং ভূপৃষ্ঠের। সাপেক্ষে
উত্তর থেকে 500 kim উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুমণ্ডলীয় স্তরের নামও উত্তর বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই স্তরের তাপমাত্রাও হারে বাড়তে থাকে। প্রায় 120km উচ্চতায় এই তাপমাত্রা হয় প্র 500°C, 200 km-এ প্রায় 700°C এবং 480 থেকে 500km উচ্চতা ি তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে প্রায় 1200°C হয়। উয়তা খুব বেশি থাকে বলেই এ৫ স্তরকে থার্মোস্ফিয়ার বলা হয়। থার্মোস্ফিয়ত অস্বাভারিং
85 ka
14. থার্মোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর থার্মোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল① কসমিক রশ্মি ও অন্যম রশ্মির প্রভাবে থার্মোস্ফিয়ারে উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উয়তা বৃদ্ধি পেয়ে 1200°C পর্যন্ত হয়। ② এই স্তরে বাতাস প্রায় নেই, তাই থার্মোস্ফিয়ার অঞ্চলে আকাশ কালো দেখায়।
③ এই স্তরের অন্তর্গত আয়নোস্ফিয়ার অংশে বিভিন্ন গ্যাসের অণুপুদি আয়নিত অবস্থায় থাকে। এই অংশ বেতারতরঙ্গ প্রতিফলিত করে এবং মেরুজ্যোতি এই অংশে দেখা যায়।
15. আয়নোস্ফিয়ার কাকে বলে? এরূপ নামকরণের কারণ কী?
উত্তর : থার্মোস্ফিয়ারের অন্তর্গত যে অঞ্চলটিতে বিভিন্ন গ্যাসের অণুগুরি আয়নিত অবস্থায় থাকে, সেই অঞ্চলটিকে আয়নোস্ফিয়ার বলে। 141
সূর্য থেকে বিচ্ছুরিত উচ্চ শক্তিসম্পন্ন গামা রশ্মি, X রশ্মি ও মহাজাগতির বিকিরণের (cosmic radiation) প্রভাবে এই অংশের নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন গ্যাসের অণুগুলি ভেঙে গিয়ে অসংখ্য আয়ন বা তড়িদ্গ্রস্ত কণার সৃষ্টি করে। এর পাশাপাশি অসংখ্য মুক্ত ইলেকট্রনও উৎপন্ন হয়। এর ফলে এই অংশের বায়ু আয়নিত অবস্থায় থাকে এবং এই কারণে এটিকে আয়নোস্ফিয়ার বলে।
16. [1] মেরুজ্যোতি কাকে বলে? [ABTA Inter School Test] [ii] সুদে প্রভা’ ও ‘কুমেরু প্রভা’ কাকে বলে? 1+1
উত্তর : থার্মোস্ফিয়ারের অন্তর্গত আয়নোস্ফিয়ারে থাকা অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনের অণুগুলি সূর্য থেকে বিচ্ছুরিত উচ্চ শক্তিসম্পন্ন গামা রশ্মি এব X -রশ্মির প্রভাবে আয়নিত হয়। এর ফলে বিভিন্ন আধানযুক্ত কণা এবং সেই সঙ্গে অসংখ্য মুক্ত ইলেকট্রনও উৎপন্ন হয়। এই আধানযুক্ত কণাগুলির সঙ্গে ভূচৌম্বক ক্ষেত্রের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় মেরু-অঞ্চলের আকাশে যে উজ্জ্বল আলোকপ্রভা বা ছটা সৃষ্টি হয় তাকে মেরুজ্যোতি বলে।
17. বায়ুমণ্ডলের এক্সোস্ফিয়ার স্তরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
উত্তর : ভূপৃষ্ঠ থেকে 500 km অপেক্ষা বেশি উচ্চতায় এক্সোস্ফিয়ার স্তরটি উপস্থিত। এটি মোটামুটি 1000 km উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বলে মনে করা হয়। এই স্তরে H₂ ও He গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও এদের ঘনত্ব খুব কম থাকে। এই অঞ্চলের উন্নতা 1200°C অপেক্ষা বেশি হয়। কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশ স্টেশনগুলিকে এই স্তরেই স্থাপন করা হয়।
18. জীবকূলের অস্তিত্ব রক্ষা ও জীবনধারণের ক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডলের গুরুত্ব উল্লেখ করো।
উত্তর : পৃথিবীতে জীবকুলের অস্তিত্ব রক্ষা ও জীবনধারণের ক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডল তথা বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরগুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যথা সমস্ত জীবের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য উপাদান অক্সিজেন এবং উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত অন্যতম উপাদান কার্বন ডাইঅক্সাইডের উৎস হল বায়ুমণ্ডল। ② ভূপৃষ্ঠের উন্নতা ও জলচক্র নিয়ন্ত্রিত হয় বায়ুমণ্ডলের (ট্রোপোস্ফিয়ার স্তর) দ্বারা।
③) সূর্য থেকে আগত অত্যন্ত ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মিকে ভূপৃষ্ঠে আসতে দেয় না বায়ুমন্ডলের ওজোনোস্ফিয়ার স্তর। বায়ুমণ্ডলের আয়নোস্ফিয়ার স্তর দ্বারা বেতারতরঙ্গ প্রতিফলিত হয়।
19. বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলির মধ্যে কোল্টিতে চাপ সবথেকে বেশি কারণসহ লেখো।
উত্তর : বায়ুমণ্ডলের ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরটিতে চাপ সবথেকে বেশি। বায়ুমণ্ডলের মোট গ্যাসীয় পদার্থের প্রায় 75 শতাংশ এবং সমস্ত জলীয় বাষ্প ও ধূলিকণা এই স্তরেই থাকে। তাই এই স্তরের বায়ুর ঘনত্ব সবথেকে বেশি এবং তার ফলে চাপ সবথেকে বেশি।
20. বায়ুমণ্ডলের উপস্থিতির দুটি সুবিধা উল্লেখ করো।
উত্তর : বায়ুমণ্ডলে উপস্থিতির দুটি সুবিধা হল-① বায়ুমণ্ডলের CO 2′ CH 4′ N*O_{2} CFC, জলীয় বাষ্প ইত্যাদি গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির প্রভাবে ভূপৃষ্ঠ ও তার সংলগ্ন বায়ুমণ্ডল এমন এক উন্নতা সীমার মধ্যে (গড় মান প্রায় 15 deg * C উত্তপ্ত থাকে, যা মানুষসহ সমগ্র জীবজগতের বেঁচে থাকার পক্ষে অনুকূল। এ ছাড়া বায়ুমণ্ডলের ওজোন (O_{3}) গ্যাসের স্তর সূর্য থেকে আসা জীবজগতের পক্ষে ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে পৃথিবীর
চাপ (millibar)-জীবকুলকে রক্ষা করে। ② বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে শব্দ তরঙ্গ অগ্রসর হতে পারে। বায়ুমন্ডলের উপস্থিতির জন্য আমরা কথা বলার মাধ্যমে একে অপরের মনের ভাব বুঝতে পারি বা ভাববিনিময় করতে পারি।
21. পরিচলন কাকে বলে? পরিচলন স্রোত কী?1+1
উত্তর : পরিচলন: যে প্রক্রিয়ায় তরল বা গ্যাসের উত্তপ্ত কণাগুলি নিজেরাই উন্নতর অংশ থেকে শীতলতর অংশে স্থানান্তরিত হয়ে তাপ সঞ্চালন করে, তাকে পরিচলন বলে।
পরিচলন স্রোত: তরল বা গ্যাসীয় পদার্থ উত্তপ্ত হলে তার আয়তন প্রসারণের জন্য ঘনত্ব কমে যায়। সুতরাং, উত্তপ্ত তরল বা গ্যাসীয় পদার্থ হালকা হয়ে ওপরে ওঠে ও ওপরের শীতল ভারী অংশ নীচে নেমে আসে। এর ফলে যে উল্লম্ব চক্রাকার স্রোতের সৃষ্টি হয় তাকে পরিচলন স্রোত বলে।
22. সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ু বলতে কী বোঝ?
উত্তর : সমুদ্রবায়ু: দিনের বেলায় সূর্যের তাপে ভূপৃষ্ঠের স্থলভাগ জলভাগ অপেক্ষা তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়। ফলে স্থলভাগের বায়ু গরম ও হালকা হয়ে ওপরের দিকে ওঠে। এজন্য স্থলভাগের উপর বায়ুচাপ কমে যায়। তখন সমুদ্রের ওপর থেকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা ও ভারী বায়ু স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়, যাকে ‘সমুদ্রবায়ু’ বলে। এই বায়ু দিনের বেলায় প্রবাহিত হয় এবং সন্ধ্যার দিকে এই বায়ু প্রবাহের তীব্রতা বাড়ে।
স্থলবায়ু: সূর্যাস্তের পর জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয়। এই সময় জলভাগ অপেক্ষকৃত বেশি গরম থাকে। ফলে সমুদ্রের ওপরের গরম বায়ু হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। তখন স্থলভাগের ওপর থেকে ঠান্ডা ও ভারী বায়ু সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়, যাকে ‘স্থলবায়ু’ বলে। এই বায়ু রাতে প্রবাহিত হয় এবং ভোরের দিকে এর তীব্রতা বাড়ে।
23. ঝড় কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উত্তর : বায়ু উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। কোনো কারণে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন কোনো অঞ্চলের বায়ু অধিক উত্তপ্ত হলে ওই অঞ্চলের বায়ু হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। ফলে ওই অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। তখন আশেপাশের উচ্চচাপ অঞ্চলের বায়ু ওই নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ছুটে আসে। বায়ুচাপের পার্থক্য যত বেশি হয়, বায়ুচাপ সমান করার জন্য আশেপাশের উচচ্চাপ অঞ্চল থেকে বায়ু তত বেশি গতিবেগে ওই অঞ্চলের দিকে ছুটে আসে। এভাবে ঝড়ের সৃষ্টি হয়।
24. ঝড় আসার আগে পরিবেশ শান্ত থাকে কেন?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকা বায়ু কোনো কারণে অধিক উত্তপ্ত হলে প্রসারিত হয়ে হালকা হয়ে যায়। এই হালকা বায়ু ওপরে উঠে যায় অর্থাৎ উল্লম্ব বায়ুপ্রবাহ ঘটে। এই সময় ওই অঞ্চলের বায়ুর ঘনত্ব ও বায়ুর চাপ উভয়ই কমে যায়। এরফলে আশেপাশের উচ্চ চাপযুক্ত অঞ্চল থেকে বায়ু ছুটে আসার আগে পর্যন্ত অনুভূমিক বায়ুপ্রবাহ কম থাকে। তাই ঝড় আসার আগে পরিবেশ শান্ত থাকে।
25. ওজোন স্তরকে ‘ওজোন ছত্র’ বা ‘প্রাকৃতিক সৌরপর্দা’ বলা হয় কেন?
উত্তর : বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের অন্তর্গত ওজোন স্তরকে ওজোন ছত্র বা প্রাকৃতিক সৌরপর্দা বলে। সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির বেশিরভাগ অংশই ওজোন স্তরে শোষিত হয়ে যায়। ওজোন স্তর না থাকলে এই ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি ভূপৃষ্ঠে এসে পড়ত। ছাতা বা পর্দা যেমন সূর্যালোকের সরাসরি সংস্পর্শ থেকে আমাদের রক্ষা করে, ওজোন স্তর তেমন সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মির পৃথিবীতে আগমনকে প্রতিরোধ করে। তাই ওজোন স্তরকে ‘ওজোন ছত্র’ বা ‘প্রাকৃতিক সৌরপর্দা’ বলা হয়।
26. ওজোন স্তরের সৃষ্টি এবং ধ্বংস কীভাবে হয়? (প্রয়োজনীয় বিক্রিয়াদিতে হবে)
অনুরূপ প্রশ্ন, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোন গ্যাসের পরিমাণ স্থির থাকেকীভাবে?
উত্তর : ওজোন ভরের সৃষ্টি: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে উপস্থিত অক্সিজেন অণু অতিবেগুনি রশ্মি (UV-রশ্মি) শোষণ করে অক্সিজেন পরমাণুতে বিয়োজিত হয়। O_{2} + অতিবেগুনি রশ্মি ০+০; এই পারমাণবিক অক্সিজেন আণবিক অক্সিজেনের সঙ্গে
যুক্ত হয়ে ওজোন অণু গঠন করে।
O_{2} + 0 -> O_{3} ওজোন স্তরের ধ্বংস: উৎপন্ন ওজোন অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে
অক্সিজেন অণুতে বিয়োজিত হয়।
O3 + অতিবেগুনি রশ্মি longrightarrow O_{2} + O ; O_{3} + 0 -> 2O_{2}
ওজোন অণুর উৎপাদন ও ওজোন অণুর বিয়োজন- ওজোন স্তরে এই দুটি বিপরীত প্রক্রিয়া চক্রাকারে চলতে থাকে এবং একটি সাম্যাবস্থার সৃষ্টি করে। এই সাম্যাবস্থার জন্যই স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোন গ্যাসের পরিমাণ
স্থির থাকে।
27. [1] ওজোন ছিদ্র বা ওজোন গহ্বর কী? [Inter High Madrasah Test] [iu] মানুষের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের ফলে সৃষ্ট কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থের নাম করো যেগুলি ওজোন গহ্বর সৃষ্টির জন্য দায়ী। 1 + 1
উত্তর : মানুষের কিছু ক্রিয়াকলাপের ফলে প্রাকৃতিকভাবে ওজোন তৈরির হার অপেক্ষা বিয়োজনের হার অত্যধিক বেড়ে যাচ্ছে। বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের অন্তর্গত ওজোন স্তরটি প্রায় সর্বত্র এইভাবে কম-বেশি পাতলা হয়ে যাচ্ছে। ওজোন স্তরের এই পাতলা হওয়ার ঘটনাকে ওজোন স্তরের ক্ষয় বা ওজোন ছিদ্র অথবা ওজোন গহ্বর (ozone hole) বলে। H] মানুষের নানাবিধ ক্রিয়াকলাপের ফলে পরিবেশে মুক্ত হওয়া ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) বা ফ্রেয়ন জাতীয় রাসায়নিক পদার্থসমূহ, নাইট্রিক অক্সাইড (NO), নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (N*O_{2}) ইত্যাদি গ্যাসগুলি ওজোন গহ্বর সৃষ্টির জন্য দায়ী।
28. বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর ধ্বংসের পেছনে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (ফ্রেয়ন) জাতীয় যৌগগুলির ভূমিকা আলোচনা করো।অথবা, ওজোন স্তর ধ্বংস হওয়ার একটি কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর : ওজোন স্তর ধ্বংসে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC)-জাতীয় যৌগগুলি
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে CFC বিয়োজিত
হয়ে সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু-তে পরিণত হয়।
CFCI₃ + অতিবেগুনি রশ্মি →CFCI₂ + Cl (সক্রিয়)
এই সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু ওজোন স্তরের ০₃ গ্যাসের সাথে বিক্রিয়া করে অক্সিজেন ও ক্লোরিন মনোক্সাইড (CIO) উৎপন্ন করে।
Cl+03 CIO + O2
এই ক্লোরিন মনোক্সাইড আবার ওজোনের সাথে বিক্রিয়া করে ০₂ অণু ও সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু উৎপন্ন করে।
CIO+03 20₂ + Cl (সক্রিয়)
উৎপন্ন সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু পুনরায় ০₃ -এর সাথে বিক্রিয়া করে। এইভাবে প্রক্রিয়াটি চক্রাকারে চলতে থাকে এবং এর ফলে ওজোন স্তর ক্রমশ পাতলা হতে থাকে। একটি সক্রিয় CI-পরমাণু লক্ষাধিক ওজোন অণুর বিয়োজন ঘটাতে পারে।
29. জেটপ্লেনগুলি ওজোন স্তর ধ্বংসের জন্য কীভাবে দায়ী? অনুরূপ প্রশ্ন, ওজোন স্তর ধ্বংসে নাইট্রোজেনের অক্সাইডগুলির ভূমিকা উল্লেখ করো। [ABTA Inter School Test]
উত্তর : স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে বায়ুর ঘনত্ব কম। এ কারণে জেটপ্লেনগুলি স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের মধ্য দিয়ে প্রায় বিনা বাধায় চলাচল করে। জেট বিমানগুলি প্রচুর পরিমাণে নাইট্রিক অক্সাইড (NO) গ্যাস নির্গত করে। এই নির্গত NO-এর সাথে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোন গ্যাসের বিক্রিয়ায় NO₂ (নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড) ও ০₂ উৎপন্ন হয়। আবার স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ০₃ ও ০₂ -এর বিয়োজন ঘটে সর্বদা অক্সিজেন পরমাণু সৃষ্টি হয়। এই অক্সিজেন পরমাণুর সাথে উৎপন্ন NO₂ অণু বিক্রিয়া করে পুনরায় NO-তে রূপান্তরিত হয়।
NO + 03 → NO2 + O2, NO2 + O →NO + O2
এভাবে জেট বিমানগুলি থেকে নির্গত নাইট্রোজেনের অক্সাইড দ্বারা ওজোন স্তরের ক্ষয় ঘটে।
30. মন্ট্রিল প্রোটোকল বলতে কী বোঝ? মন্ট্রিল প্রোটোকলের অঙ্গীকারগুলি লেখো।1+1
উত্তর : মন্ট্রিল প্রোটোকল: ওজোন স্তরের ক্ষয় হ্রাসের জন্য 1987 সালে কানাডার মন্ট্রিলে একটি বহুদেশীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তিটি মন্ট্রিল প্রোটোকল নামে পরিচিত।
[+ মন্ট্রিল প্রোটোকলের অঙ্গীকারসমূহ: ① 1995 সালের মধ্যে CFC- এর ব্যবহার 50% কমানো হবে। ② 2000 সাল নাগাদ CFC-এর ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ হবে। ও ক্লোরিন-জাতীয় গ্যাসের উৎপাদন ধীরে ধীরে কমানো হবে ও 2000 সাল নাগাদ তা সম্পূর্ণ বন্ধ হবে।
31. ওজোন স্তর না থাকলে কী কী হত? অনুরূপ প্রশ্ন, মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর ওজোন স্তর ক্ষয়ের দুটি ক্ষতিকারক প্রভাব লেখো।অনুরূপ প্রশ্ন, ওজোন স্তরে ছিদ্র হলে প্রাণীজগতের ওপর দুটি ক্ষতিক প্রভাব লেখো।
উত্তর : ওজোন স্তর সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির প্র থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে। ওজোন স্তর না থাকলে অতিবেগুনি সরাসরি ভূপৃষ্ঠে এসে পড়ত, যার ফলে পৃথিবীর জীবজগতের অস্তিত্ব নি হত। বর্তমানে মানুষের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের ফলে ওজোন স্তর ভ ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে এবং এর ফলস্বরূপ পৃথিবীর জীবজগৎ তথা সমগ্র পরি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। যেমন-
① জীবকূলের ওপর প্রভাব: অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে বী অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হবে, উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রা ব্যাহত হবে, শস্যের উৎপাদন হ্রাস পাবে, জলাশয়ে ফাইটোপ্ল্যাংকাউ সালোকসংশ্লেষ ব্যাহত হবে, জলজ প্রাণীদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
② রোগের প্রাদুর্ভাব: অতিবেগুনি রশ্মি বিনা বাধায় পৃথিবীতে পড়লে তার প্রভাবে ত্বকের ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগ হবে, অসময়ে ছানি পড়বে। এ ছাড়া প্রাণীদের প্রজনন ক্ষমতা এবং প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কমে যাবে।
③ পরিবেশের ওপর প্রভাব: সূর্যালোকের অতিবেগুনি রশ্মি ওজোন শোষিত না হলে তা ভূপৃষ্ঠে আপতিত হয়ে ভূপৃষ্ঠের উন্নতা বৃদ্ধি কা ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি পাল সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চল প্লাবিত হবে। এ ছাড়াও পৃথিবীর জলবায়ুর বা পরিবর্তন ঘটবে।
32. গ্রিনহাউস গ্যাস কাদের বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত কিছু গ্যাসীয় পদার্থ ভূপৃষ্ঠ থেকে বি
ইনফ্রারেড রশ্মির (দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট) কিছু অংশকে শোষণ করে অংশকে ভূপৃষ্ঠে প্রতিফলিত করে। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে কিছুটা তাপ পড়ে যার প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে ও সংলগ্ন বায়ুমণ্ডল একটি নির্দিষ্ট উন্নতা
মধ্যে উত্তপ্ত থাকে। এই গ্যাসীয় পদার্থগুলিকে গ্রিনহাউস গ্যাস বলা ভ [+ কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂), মিথেন (CH₁), ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ( ওজোন (O3), নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O), জলীয় বাষ্প (H₂O) ই
33. তুমি যেসব গ্রিনহাউস গ্যাসের কথা জেনেছ তার মধ্যে একটি গ্যাস আছে যাকে নীচের তথ্য থেকে যুক্তিসহ শনাক্ত করো: [১] গ্যাসটি জলে দ্রবীভূত হলে দ্রবণ আফ্রিক হয়। [ii] গ্যাসটি মহাসমুদ্রের জলে শোষিত না। হলে বিশ্বউয়ায়ন ত্বরান্বিত হবে। [m] বায়ুমণ্ডলে না থাকলে সারা পৃথিবীর। অসংখ্য খাদ্যজাল সম্পূর্ণভাবেই ভেঙে পড়বে। [iv] গ্যাসটি জলে দ্রাব্য বলেই শামুক, ঝিনুক, শাঁখ ইত্যাদি মোলাস্কা পর্বভুক্ত প্রাণীরা তাদের।[শিখন সেতু)খোলক তৈরি করতে পারে।
উত্তর গ্যাসটি হল কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO₂)। এর কারণ-① CO₂ । জলে দ্রবীভূত হয়ে কার্বনিক অ্যাসিড (H₂CO₃) উৎপন্ন করে। ② CO, একটি প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস যা বিশ্বউয়ায়নের জন্য সর্বাধিক দায়ী। এটি মহাসমুদ্রের জলে শোষিত হয় বলে এর দ্বারা বিশ্বউন্নায়ন কিছুটা কম হয়। ③ সবুজ উদ্ভিদ CO₂ ও জল থেকেই সূর্যালোকের উপস্থিতিতে ক্লোরোফিলের সাহায্যে শর্করা-জাতীয় খাদ্য উৎপন্ন করে যার ওপর জীবজগতের অধিকাংশ সদস্য নির্ভর করে। ④ CO₂ জলে দ্রবীভূত হয়ে বিভিন্ন কার্বনেট যৌগ গঠন করে। শামুক, ঝিনুক, শাঁখ ইত্যাদি প্রাণীদের দেহের খোলক গঠনে এইসব কার্বনেট যৌগ কাজে লাগে।
34. গ্রিনহাউস প্রভাবের উপযোগিতা উল্লেখ করো।
উত্তর: বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত CO₂, CH₁, NO₂, CFC, জলীয় বাষ্প ইত্যাদি গ্রিনহাউস গ্যাস পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে অবলোহিত রশ্মিরূপে (দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট) বিকিরিত তাপকে মহাশূন্যে বিলীন হতে দেয় না। এর ফলে ভূপৃষ্ঠ ও তার সংলগ্ন বায়ুমণ্ডল এমন এক উন্নতা সীমার মধ্যে (গড় মান প্রায় 15°C) উত্তপ্ত থাকে, যা মানুষসহ সমগ্র জীবজগতের বেঁচে থাকার পক্ষে অনুকূল। বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি না থাকলে গ্রিনহাউস প্রভাব ঘটত না। এর ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠ ও সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের গড় উয়তা খুবই কম হত (প্রায় -30°C)। এই উন্নতায় পৃথিবীপৃষ্ঠে জীবকুলের বেঁচে থাকা অসম্ভব হত। এইভাবে জীবকূলের অস্তিত্ব রক্ষায় গ্রিনহাউস প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
35. গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি বায়ুমণ্ডলের উয়তা কীভাবে বৃদ্ধি করে?
অনুরূপ প্রশ্ন, বিশ্বউয়ায়ন ও গ্রিনহাউস প্রভাব কীভাবে সম্পর্কিত?
উত্তর: সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট অবলোহিত রশিথিবীর চারপাশের গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির আচ্ছাদন ভেদ করে পৃথিবীপৃষ্ঠে আসতে পারে। ভূপৃষ্ঠ অবলোহিত রশ্মির কিছুটা শক্তি শোষণ করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বায়ুমণ্ডলের গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি ভূপৃষ্ঠ দ্বারা বিকিরিত দীর্ঘতর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অবলোহিত রশ্মির কিছু অংশ শোষণ করে উত্তপ্ত হয় এবং বাকি অংশ পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রতিফলিত করে। মানুষের বিভিন্ন কার্যকলাপের ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির পরিমাণ উত্তর:::::োত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বভাবতই ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যবিশিষ্ট অবলোহিত রশ্মির আরও বেশি অংশ বায়ুমণ্ডলে আবদ্ধ হচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর গড় উন্নতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এইভাবেই গ্রিনহাউস প্রভাব বিশ্বউয়ায়নকে ত্বরান্বিত করছে অর্থাৎ বিশ্বউন্নায়নে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির ভূমিকা অপরিসীম।
36. পৃথিবীর তুলনায় সূর্যের অপেক্ষাকৃত কাছে আছে এবং গ্যাসীয় পরিমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ পৃথিবীর তুলনায় বহুগুণ বেশি এমন একটি গ্রহ হল শুক্র গ্রহ। শুক্র গ্রহের পৃষ্ঠের গড় উন্নতা পৃথিবীর তুলনায় কম হবে না বেশি হবে? যুক্তি দাও। [শিখন সেতু)
উত্তর: শুক্র গ্রহের পৃষ্ঠের গড় উন্নতা পৃথিবীর তুলনায় অনেক বেশি হবে। এর কারণ- শুক্র গ্রহের গ্যাসীয় পরিমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বহুগুণ বেশি হওয়ায় গ্রিনহাউস প্রভাবও অনেক বেশি। ② পৃথিবীর তুলনায় শুক্র গ্রহ সূর্যের বেশি কাছে অবস্থিত।
37. বিশ্বউয়ায়নে বিভিন্ন গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির ভূমিকা উল্লেখ করো।
উত্তর: নানাবিধ প্রাকৃতিক কারণে এবং মূলত মানুষের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের ফলে বায়ুমন্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির পরিমাণ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। অর্থাৎ গ্রিনহাউস প্রভাবের ফলে বায়ুমণ্ডল নিয়ন্ত্রিত সীমার বাইরে উত্তপ্ত হচ্ছে। এই হিসেবে বলা যায় যে, পরিবেশে এই গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির বৃদ্ধি বা গ্রিনহাউস প্রভাবই বিশ্বউয়ায়নের অন্যতম কারণ। বিশ্বউয়ায়নে বিভিন্ন গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির ভূমিকা নিম্নরূপ-কার্বন ডাইঅক্সাইড: পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ
0.039% হলেও বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির মধ্যে এর উপস্থিতিই সবথেকে বেশি। তাই পৃথিবীপৃষ্ঠ দ্বারা বিকিরিত তাপকে আটকে দেওয়ার ক্ষেত্রে C*O_{2} সর্বপ্রধান ভূমিকা পালন করে এবং গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে এর অবদান প্রায় 50 শতাংশ।
মিথেন: পৃথিবীর গড় উন্নতা বৃদ্ধিতে অন্যতম ভূমিকা পালনকারী অপর একটি গ্যাস হল মিথেন। ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে আটকে দেওয়ার ক্ষমতা, প্রতি অণু CO_{2} -এর তুলনায় প্রতি অণু মিথেনের প্রায় 25 গুণ বেশি। কিন্তু বায়ুমণ্ডলে মিথেনের পরিমাণ CO_{2} -এর তুলনায় অনেক কম। এ কারণে গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে মিথেন গ্যাসের অবদান C*O_{2} -এর তুলনায় কম (প্রায় 19 শতাংশ)।
ক্লোরোফ্লুরোকার্বন: ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে আটকে দেওয়ার ক্ষমতা C*O_{2} অণুর তুলনায় ক্লোরোফ্লুরোকার্বন অণুর 15,000-20,000 গুণ বেশি। ক্লোরোফ্লুরোকার্বন অত্যন্ত স্থায়ী ও বায়ুতে দীর্ঘকাল অবিকৃত অবস্থায় থেকে যায়। গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে এর অবদান প্রায় 16 শতাংশ। তাপ শোষণের পাশাপাশি ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ওজোন গহ্বর সৃষ্টিতে পুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর ফলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীপৃষ্ঠে আসতে পারে যা বিশ্বউন্নায়নকে পরোক্ষভাবে ত্বরান্বিত করে।
নাইট্রাস অক্সাইড: বায়ুমণ্ডলে নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পৃথিবীর গড় উন্নতা বৃদ্ধির আরও একটি কারণ। ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে আটকে দেওয়ার ক্ষমতা প্রতি অণু CO_{2} এর তুলনায় প্রতি অণু নাইট্রাস অক্সাইডের প্রায় 200 গুণ বেশি। কিন্তু বায়ুতে এর পরিমাণ CO_{2} -এরতুলনায় কম। তাই গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে এর অবদান CO₂ অপেক্ষা কম (প্রায় 5%)।
38. কোন্ কোন্ উৎস থেকে নিম্নলিখিত গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি বায়ুমণ্ডলেমিশছে মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, CO₂ ও CFC।
উত্তর::::: বিভিন্ন গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি বায়ুমণ্ডলে মেশার ফলে বায়ুমণ্ডলের উয়তা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, অর্থাৎ বিশ্বউন্নায়নের মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে এবং প্রধানত মানুষের নানাবিধ ক্রিয়াকলাপের
ফলেই এই গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি বায়ুমন্ডলে মেশে।
কার্বন ডাইঅক্সাইডের উৎস: ① কলকারখানা ও মোটরগাড়ির ধোঁয়া,
② নির্বিচারে বনভূমি ধ্বংস, ③ সিমেন্ট উৎপাদন কেন্দ্র, ④ অগ্ন্যুৎপাত ও দাবানল।
মিথেনের উৎস: বায়ুর অবর্তমানে মৃত জীবদেহের পচন, ② বিভিন্ন জৈব আবর্জনা ও গবাদি পশুর মল-মূত্রের পচন, ③ আবদ্ধ বর্জ্য পদার্থ-সমৃদ্ধ ও কর্দমাক্ত জলাভূমি ও ধানখেত, ④ বিভিন্ন খনি অঞ্চল।
ক্লোরোফ্লুরোকার্বনের উৎস: ① ফোম ও প্লাস্টিক উৎপাদন, ② রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনার যন্ত্র, ও অ্যারোসল স্প্রে,
④ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র।
নাইট্রাস অক্সাইডের উৎস: ① জীবাশ্ম জ্বালানির দহন, ② বনাঞ্চলে সৃষ্ট দাবাগ্নি, ③ কৃষিজমিতে ব্যবহৃত নাইট্রোজেন-ঘটিত কৃত্রিম সার, ④ সার শিল্প ও নাইলন উৎপাদন কারখানা।
39. বিশ্বউয়ায়নের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি আলোচনা করো।অনুরূপ প্রশ্ন, ভবিষ্যতে পরিবেশের ওপর বিশ্বউয়ায়নের দুটি সম্ভাব্য
প্রভাবের উল্লেখ করো।
উত্তর::::: বিশ্বউয়ায়নের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি হল-
① গড় উন্নতা বৃদ্ধি: এই শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগাদ পৃথিবীর উন্নতা অন্ততপক্ষে 2°-4°C -এর মতো বৃদ্ধি পাবে।
② সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি: ভূপৃষ্ঠের উন্নতা বৃদ্ধির ফলে মেরু অঞ্চলের বরফের স্তূপগুলি গলে যাবে। এর ফলে উপকূলবর্তী এলাকা জল দ্বারা প্লাবিত হবে।
③ ঝড়ের প্রকোপ বৃদ্ধি: সুপার সাইক্লোন, টর্নেডো ইত্যাদি ঝড় আরও বিধ্বংসী রূপ নেবে।
④ দাবানল: উন্নতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দাবানলের দ্বারা বনভূমি ধ্বংসের আশঙ্কা বাড়বে।
⑤ বাস্তুতন্ত্রের ওপর প্রভাব: জীবকুল উচ্চ উয়তা সহ্য করতে না পেরে বিলুপ্ত হবে, ফলে বাস্তুতন্ত্র ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
⑥ রোগের প্রাদুর্ভাব: উন্নতা বৃদ্ধির ফলে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি রোগের প্রকোপ বাড়বে।
40. গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ফলে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হবে কেন? অথবা, ভূ-উন্নতা বৃদ্ধির একটি ক্ষতিকর প্রভাব উল্লেখ করো।
উত্তর::::: গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর ফলে ভূপৃষ্ঠ ও তৎসংলগ্ন অংশের উয়তা বৃদ্ধিতে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে গিয়ে সমুদ্রে জলস্ফীতি ঘটবে। এর ফলে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় মহাপ্লাবন দেখা দেবে এবং উর্বর কৃষিজমিগুলি | সমুদ্রের লবণাক্ত জলের প্রভাবে চাষের অনুপযুক্ত হয়ে পড়বে। যার পরিণতি
হিসাবে ফসলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে। এ ছাড়াও গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর জন্য জমির আর্দ্রতা কমে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হবে।
41. গ্রিনহাউস প্রভাব ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্বউয়ায়ন কমানোর সম্ভাব্য উপায়গুলি আলোচনা করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করতে কী কী উপায় অবলম্বন করা উচিত?
উত্তর সমগ্র বিশ্ব জুড়ে উন্নতা বৃদ্ধির হার প্রশমিত করার জন্য কিছু উপায় অবলম্বন করা জরুরি। এর ফলে একদিকে যেমন গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির নির্গমন হ্রাস পাবে তথা গ্রিনহাউস প্রভাবের মাত্রা কমবে তেমনি অন্যদিকে পৃথিবীর গড় উয়তা বৃদ্ধির মাত্রাও (বিশ্বউন্নায়ন) নিয়ন্ত্রিত হবে। এই উপায়গুলি নিম্নরূপ-
(i) জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস: কাঠ, কয়লা, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে বায়ুমন্ডলে CO₂ -এর অতিরিক্ত জোগান কমাতে হবে।
(ii) বনসৃজনে উৎসাহদান: চোরাই কাঠ কাটা বন্ধ করতে হবে, বনভূমিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে এবং বনসৃজন করতে হবে। এর ফলে পরিবেশে CO₂ -এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত হবে।
(iii) অপ্রচলিত শক্তি-উৎসের ব্যবহার বৃদ্ধি: সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জোয়ার-ভাটার শক্তি ইত্যাদি অপ্রচলিত শক্তি উৎসের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি কম পরিমাণে মিশবে।
(iv) ফ্রেয়ন উৎপাদন ও ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা: ফ্রেয়ন বা
ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) -এর উৎপাদন ও ব্যবহার ধাপে ধাপে বন্ধ করতে হবে।
(v) জৈব আবর্জনার প্রক্রিয়াকরণ: জৈব আবর্জনার পচনে মিথেন গ্যাস মুক্ত হয়। তাই এই আবর্জনার সঠিক প্রক্রিয়াকরণ করা দরকার যাতে পরিবেশে মিথেন গ্যাস অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় না মেশে।
(vi)নাইট্রোজেন-ঘটিত সারের ব্যবহার কমানো: কৃষিজমিতে নাইট্রোজেন-ঘটিত সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এর ফলে বায়ুতে নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইডগুলি কম মাত্রায় মিশবে।
(vii) জনসচেতনতা বৃদ্ধি: গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির নির্গমন কমানোর উদ্দেশ্যে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। এর ফলে বিশ্বউয়ায়নের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হবে।
42. শক্তি সংকট কী? এর একটি সম্ভাব্য সমাধান লেখো।1+1
উত্তর বর্তমান সভ্যতায় শক্তির বিপুল চাহিদা পূরণের জন্য প্রচলিত শক্তি উৎসগুলি যেমন-কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়ে চলেছে। তাই এইসব শক্তি উৎসগুলি দ্রুত নিঃশেষিত হচ্ছে। এর ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জীবাশ্ম জ্বালানির অপ্রাপ্যতার কারণে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে তাকেই শক্তি সংকট বলা হয়।
• এর একটি সম্ভাব্য সমাধান হল বিভিন্ন বিকল্প শক্তির উৎস যেমন- সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জোয়ার-ভাটা শক্তি, ভূতাপ শক্তি, বায়োমাস শক্তি ইত্যাদির ব্যবহার বৃদ্ধি করা ও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা।
43. স্থিতিশীল উন্নয়ন বলতে কী বোঝায়?অনুরূপ প্রশ্ন, স্থিতিশীল উন্নয়নের ধারণাটি কী?
উত্তর যে উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমিত ও যথাযথ ব্যবহার, বর্তমান জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদকে সুরক্ষিত করে মানবজাতির সার্বিক মঙ্গলসাধন করা যায়, তাকে স্থিতিশীল উন্নয়ন (sustainable development) বলে।
44. স্থিতিশীল উন্নয়নের ধারণার সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর স্থিতিশীল উন্নয়ন হল এমন একটি পদ্ধতি বা কর্মসূচি যার মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্যকে বিঘ্নিত না করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ মানবসম্পদের সার্বিক উন্নয়নকে সুনিশ্চিত করা যায়। এই ধারণার মূল ভিত্তি হল প্রাকৃতিক সম্পদ ও প্রকৃতিজাত শক্তির ভাণ্ডারকে সুরক্ষিত রেখে বৃহত্তর সমাজের উন্নতিসাধন। অর্থাৎ প্রকৃতিসম্পদ ও মানবসম্পদের পারস্পরিক সম্পর্ককে অটুট রেখে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে উপযুক্ত করে রাখার মাধ্যমেই এই ধারণার বাস্তব রূপদান সম্ভব।
45. স্থিতিশীল উন্নয়নের মূল লক্ষ্যগুলি কী কী?
উত্তর স্থিতিশীল উন্নয়নের মূল লক্ষ্যগুলি নিম্নরূপ-
① প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা: প্রাকৃতিক সম্পদের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকৃতি এবং পরিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষিত করা।
② শক্তির ভাণ্ডারের সংরক্ষণ: জীবাশ্ম জ্বালানির যথেচ্ছ ব্যবহারের মাত্রা কমিয়ে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎসগুলির ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শক্তির ভান্ডার সুরক্ষিত করা।
③ বাস্তুতান্ত্রিক ক্রমোন্নয়: পরিবেশের সজীব ও জড় উপাদানগুলির পারস্পরিক সম্পর্ককে সুদৃঢ় করার মাধ্যমে বাস্তুতন্ত্রের সামগ্রিক
উন্নতিসাধন। ④ সার্বিক মানব উন্নয়ন: পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে জনগণের চাহিদা পূরণ এবং মানুষের
জীবনযাত্রার সার্বিক উন্নয়ন।
46. পরিবেশের স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে শক্তির উৎস ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছাত্র সমাজ কী কী উপায় অবলম্বন করতে পারে?
উত্তর ছাত্র সমাজ প্রদত্ত উপায়গুলি অবলম্বন করতে পারে-① জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত যানবাহনের ব্যবহার কমিয়ে সাইকেলের মতো পরিবেশবান্ধব যান বেশি ব্যবহার করা।② বিদ্যুতের অপচয় রোধ করার জন্য বাড়িতে কিংবা স্কুলে যাতে বিনা কারণে বৈদ্যুতিক আলো, পাখা প্রভৃতি না চালানো হয়, সেদিকে লক্ষ রাখা এবং অন্যদেরকেও এই ব্যাপারে সতর্ক করা।
- ③ যেসব ক্ষেত্রে বিকল্পশক্তির উৎসগুলি ব্যবহার করা সম্ভব হবে, সেইসব ক্ষেত্রে এইসব শক্তি-চালিত যন্ত্রগুলি (যেমন- সোলার কুকার, সোলার ক্যালকুলেটর) ব্যবহার করা এবং সমাজের বাকিদেরও এই ব্যাপারে সচেতন করা।
47. চিরাচরিত শক্তির উৎস বা অনবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও। 1+1
উত্তর যেসব শক্তির উৎসগুলিকে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করার ফলে
তাদের ভান্ডার বর্তমানে নিঃশেষিত হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে এবং যেগুলি
একবার নিঃশেষিত হলে পুনরায় ফিরে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই তাদের চিরাচরিত বা অনবীকরণযোগ্য (non-renewable) শক্তির উৎস বলে।
[ কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি জীবাশ্ম জ্বালানিগুলি হল চিরাচরিত বা অনবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস।
48. বিকল্প জ্বালানি বা বিকল্প শক্তির উৎস বলতে কী বোঝায়?
উত্তর জীবাশ্ম জ্বালানিগুলির পরিমাণ খুব সীমিত হওয়ায়, এদের সঞ্চয় ও সংরক্ষণের জন্য বিকল্প হিসেবে যেসব শক্তির উৎসকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তাদের বিকল্প জ্বালানি বা বিকল্প শক্তির উৎস বলে। কয়েকটি বিকল্প শক্তির উৎস হল-সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, ভূতাপ শক্তি প্রভৃতি।
49. পুনর্নবীকরণযোগ্য বা অচিরাচরিত শক্তির উৎস কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর যেসব শক্তির উৎসগুলির ব্যবহার সাম্প্রতিককালে শুরু হয়েছে এবং যেগুলিকে নিরবচ্ছিন্নভাবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে চললেও এদের
ভান্ডার ফুরিয়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, তাদেরকেই পুনর্নবীকরণ- যোগ্য (renewable) বা অচিরাচরিত শক্তির উৎস বলে।
[ সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জোয়ার-ভাটার শক্তি, ভূতাপ শক্তি প্রভৃতি।
50. সৌরশক্তিকে কী কী কাজে ব্যবহার করা যায়?
উত্তর সূর্য থেকে আগত আলো ও উত্তাপ থেকে আহরণ করা শক্তিই হল সৌরশক্তি। এটি হল দূষণমুক্ত, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস। সৌর- শক্তিকে নিম্নলিখিতভাবে ব্যবহার করা যায়① সোলার কুকার-এর সাহায্যে রান্না করার কাজে, ② সৌরকোশ দ্বারা বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রভৃতিকে আলোকিত করতে, ও সোলার হিটারে জল গরম করতে, ④ সোলার হাউসে ঘরকে গরম করতে।
51. সৌরশক্তি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর সুবিধা: সৌরশক্তি অফুরন্ত ও পুনর্নবীকরণযোগ্য, অর্থাৎ বারবার ব্যবহারের ফলেও এই শক্তির ভান্ডার কখনও ফুরিয়ে যায় না এবং ② সৌরশক্তির ব্যবহারের ফলে পরিবেশ কোনোভাবে দূষিত হয় না।
অসুবিধা: সৌরশক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তির অভাবে অনুন্নত দেশগুলিতে এই শক্তি খুবই কম পরিমাণে উৎপাদিত হয়। ② সৌরশক্তি উৎপাদনের জন্য সৌরকোশ বসানোর প্রাথমিক খরচ অপেক্ষাকৃত বেশি। এই কারণে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এই শক্তির উৎপাদন খুবই কম হয়।
52. সৌরকোশ কী এবং এই কোশ কীভাবে গঠিত হয়?
উত্তর যে ব্যবস্থার মাধ্যমে সৌরশক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়, তাকে সৌরকোশ বা ফোটোভোল্টায়িক কোশ বলে। সৌরকোশ সিলিকন (অর্ধপরিবাহী পদার্থ) দিয়ে তৈরি হয়। সূর্যালোকের ফোটন কণা এই অর্ধপরিবাহীতে আপতিত হলে ওর মধ্যেকার ইলেকট্রনগুলি উত্তেজিত ও বিচ্যুত হয়ে তড়িৎপ্রবাহ সৃষ্টি করে। এই তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করেই সৌরকোশ গঠন করা হয়। আবার অনেকগুলি সৌরকোশকে পরপর সাজিয়ে সোলার প্যানেল গঠন করা যায়।
চিত্র 3: সৌরকোশের সমবায়ে গঠিত সোলার প্যানেল
53. সৌরকোশ বা সৌরবিদ্যুৎ কোশের ব্যবহার উল্লেখ করো।
উত্তর সৌরকোশ বা সৌরবিদ্যুৎ কোশে সৌরশক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয় এবং উৎপন্ন বিদ্যুৎকে ব্যাটারিতে সঞ্চয় করে রাখা যায় বা সরাসরি ব্যবহার করা যায়। এই বিদ্যুৎকে কাজে লাগিয়ে-① পাম্পের সাহায্যে জল তোলা যায়, ② সোলার প্যানেল বসিয়ে মোটরগাড়ি চালানো যায়, ও কৃত্রিম উপগ্রহ, মহাকাশযান, স্পেস স্টেশনগুলিতে শক্তির জোগান দেওয়া হয়, ④ রেডিয়ো স্টেশন ও TV রিলে স্টেশনে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করা যায়, ⑤ ট্রাফিক সিগনাল, সোলার ক্যালকুলেটর চালানো হয়।
54. সোলার কুকার সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর সোলার কুকার হল রান্নার কাজে ব্যবহৃত একটি সস্তা, শক্তি-সংরক্ষক দূষণমুক্ত সরঞ্জাম। ② এটি প্রকৃতপক্ষে একটি ধাতুর তৈরি বাক্স যার চারদিকে তাপ-নিরোধক আবরণ থাকে। ও কালো রং তাপের খুব ভালো শোষক হওয়ায় এর ভেতরের তলগুলিতে কালো রং করা থাকে। ④ উচ্চ উয়তা সৃষ্টির জন্য একটি প্রতিফলকের সাহায্যে সূর্যরশ্মিকে কেন্দ্রীভূত করে বাক্সের মধ্যে ফেলা হয়। কুকারের ভেতরের উয়তা বৃদ্ধির সহায়ক হিসেবে এর উপরিভাগ একটি কাচের প্লেট দ্বারা ঢাকা থাকে।
চিত্র 4: সোলার কুকার
55. সোলার ওয়াটার হিটার সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর সোলার ওয়াটার হিটারের সাহায্যে সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে জল গরম করা হয়। ② এটির ভিতরে একটি কালো রং করা ধাতব বাক্স থাকে এবং এটির মধ্যে একটি কালো রং করা তামার কুণ্ডলী প্ররেশ করানো থাকে। ও উচ্চ উয়তা সৃষ্টির জন্য সূর্যরশ্মিকে প্রতিফলকের সাহায্যে প্রতিফলিত করে বাক্সের মধ্যে প্রবেশ করানো হয়, এর ফলে অভ্যন্তরস্থ তামার কুণ্ডলীও উত্তপ্ত হয়। ④ উত্তপ্ত তামার কুন্ডলীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত জলও এইভাবে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
চিত্র 5: সোলার ওয়াটার হিটার
56. সৌরশক্তিকে চিরাচরিত শক্তির বিকল্পরূপে ভাবা হচ্ছে কেন?
উত্তর: সূর্য এক বিপুল শক্তির আধার। প্রতি ঘণ্টায় সারা পৃথিবীতে যে পরিমাণ সূর্যরশ্মি পৌঁছায়, তাকে শক্তিতে রূপান্তরিত করলে যে তাপশক্তি পাওয়া যাবে তা 21 × 1012 ton কয়লার দহনে উৎপন্ন তাপশক্তির সমান। এই শক্তির ভান্ডার অফুরন্ত অর্থাৎ বারবার ব্যবহার করলেও কোনোদিন নিঃশেষ হবে না। সূর্যের অসীম শক্তিকে পরিপূর্ণভাবে বিদ্যুতে রূপান্তরিত করার কারিগরি জ্ঞান মানুষ যেদিন আয়ত্ত করতে পারবে সেদিন পৃথিবীতেখালানির আর কোনো সমস্যাই থাকবে না। তাই সৌরশক্তিকে চিরাচরিত শক্তির বিকল্পরূপে ভাবা যায়।
57. বায়ুশক্তি ব্যবহারের সুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর:বায়ুশক্তি ব্যবহারের সুবিধাগুলি-① বায়ুশক্তি পুনর্নবীকরণযোগ্য, অর্থাৎ ক্রমাগত ব্যবহারের ফলেও এর ভাণ্ডার ফুরোবে না ও পরিবেশ দূষণ ঘটায় না। বায়ুশক্তি উৎপাদনের প্রাথমিক খরচ কিছুটা বেশি হলেও নিয়মিত ব্যবহারের খরচ অত্যন্ত কম। রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় ছাড়া বায়ুকল চালানোর জন্য অন্য কোনো ব্যয় হয় না। তা ছাড়া বায়ুশক্তি উৎপাদনের মুখ্য উপাদান বায়ুকে বিনা খরচেই আহরণ করা যায়।
58. বায়ুশক্তি ব্যবহারের অসুবিধাগুলি লেখো।
উত্তর:। বায়ুশক্তি ব্যবহারের অসুবিধাগুলি হল-(i) বায়ুশক্তি উৎপাদনের প্রাথমিক ব্যয় তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় অপেক্ষা অধিক। (ii) তাপবিদ্যুৎ বা জলবিদ্যুতের তুলনায় বায়ুশক্তি উৎপাদন কেন্দ্রগুলির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা খুবই কম।
(iii) পৃথিবীর যেসব অঞ্চলে সারাবছর ধরে প্রবল বেগে বায়ু প্রবাহিত হয়, শুধুমাত্র সেইসব অঞ্চলেই বায়ুশক্তি উৎপাদন করা সম্ভব, অন্য কোথাও নয়।
59. বায়ুশক্তিকে চিরাচরিত শক্তির বিকল্পরূপে ব্যবহার করা যাবে কি?
উত্তর:বাতাসের প্রবহমান শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে, বিশেষত সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে সারাবছর এত জোরে বাতাস প্রবাহিত হয় যে, বায়ুর শক্তিকে সহজেই মানুষ কাজে লাগাতে পারে। এ ছাড়া বায়ুশক্তি হল একটি অফুরন্ত সম্পদ। কয়লা বা খনিজ তেলের মতো বায়ুশক্তির নিঃশেষিত হওয়ার আশঙ্কা নেই এবংবায়ুশক্তি হল দূষণমুক্ত শক্তি। তাই বায়ুশক্তিকে চিরাচরিত শক্তির বিকল্পরূপে ব্যবহার করা যায়।
60. জোয়ার-ভাটার শক্তি থেকে কীভাবে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করা হয়?
উত্তর: চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণের প্রভাবে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের নদী ও সমুদ্রে প্রতিদিন দুবার করে জোয়ার-ভাটা হবেই। জোয়ার-ভাটার ফলে সমুদ্রে বা নদীতে জলস্রোতের সৃষ্টি হয়। এই জলস্রোতের গতিশক্তির সাহায্যে টারবাইনের চাকা ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
61. জোয়ার-ভাটার শক্তি ব্যবহারের সুবিধাগুলি কী কী?
উত্তর: জোয়ার-ভাটার শক্তি ব্যবহারের সুবিধাগুলি হল-(i) জলসম্পদ অফুরন্ত ও অক্ষয়িয়, তাই একে বারবার ব্যবহার করলেও নিঃশেষিত হয় না। (ii) এই শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে পরিবেশের দূষণ তেমন ঘটে না।
(iii) এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন একবার শুরু হয়ে গেলে পরবর্তীতে খরচ অনেক কম হয়।
62. জোয়ার-ভাটার শক্তি ব্যবহারের অসুবিধাগুলি কী কী?
উত্তর:। জোয়ার-ভাটার শক্তি ব্যবহারের মূল অসুবিধাগুলি হল- ① জোয়ার-ভাটার শক্তি উৎপাদনের জন্য বিশালায়তন কাঠামো ও উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োজন হয়। এজন্য জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের তুলনায় জোয়ার- ভাটার শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করার ব্যয় অনেক বেশি। ② কোনো স্থানে দিনে দুবার জোয়ার ও দুবার ভাটা হয়। তাই উৎপাদনকারী কেন্দ্রগুলিতে তাদের মোট উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র 40% পর্যন্ত জোয়ার- ভাটার শক্তি উৎপাদন করা যায়।
63. জোয়ার-ভাটার শক্তি চিরাচরিত শক্তির বিকল্প কি না ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: জোয়ার-ভাটার শক্তির সাহায্যে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। পৃথিবীতে চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ যতদিন বজায় থাকবে, ততদিন প্রাকৃতিক নিয়মে জোয়ার-ভাটা হবে। কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি জ্বালানি সম্পদের মতো জোয়ার-ভাটার শক্তি নিঃশেষিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। বর্তমানে ভারতসহ কয়েকটি দেশে চিরাচরিত শক্তির বিকল্পরূপে এই শক্তি উৎপাদনের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
64. ভূতাপ শক্তি ব্যবহারের সুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
[ii] ভূতাপ শক্তি ব্যবহারের অসুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর[১] সুবিধা: ① ভূতাপ শক্তির জোগান অফুরন্ত, অর্থাৎ বারংবার ব্যবহার করা সত্ত্বেও এর ভাণ্ডার কোনোদিন ফুরোবে না। ② এই শক্তি ব্যবহার করলে পরিবেশ দূষিত হয় না।
ii] অসুবিধা: ভূতাপ শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করা অত্যন্ত ব্যয়- বহুল এবং উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে প্রচলিত শক্তিগুলির তুলনায় এই শক্তি উৎপাদনের ইউনিট প্রতি খরচ বেশি। ② এই শক্তি উৎপাদনের সময় ভূগর্ভস্থ খনিজ পদার্থগুলির দ্বারা ভৌম জলস্তরের দূষণ ঘটতে পারে।
65. ভূতাপ শক্তিকে চিরাচরিত শক্তির বিকল্পরূপে ভাবা যায় কি?
উত্তর ভূগর্ভস্থ তাপকে কাজে লাগিয়ে শক্তি উৎপাদন করা সম্ভব। এই শক্তি একদিকে যেমন দূষণমুক্ত তেমনি অন্যদিকে কয়লা, খনিজ তেলের মতো এই শক্তি নিঃশেষ হওয়ার আশঙ্কা নেই। বৈজ্ঞানিক হিসেব অনুযায়ী, ভূ-অভ্যন্তরের 10 km গভীরতা পর্যন্ত প্রাপ্ত ভূতাপ শক্তির মোট পরিমাণ বছরে 12,000 kw-h। কয়েকটি দেশে, যেমন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, জাপান, ইটালি, আইসল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডে ভূতাপ শক্তি ব্যাপকভাবে আহরণ করা হচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে চিরাচরিত শক্তির বিকল্পরূপে এর বহুল ব্যবহার সম্ভব বলে মনে করা হয়।
66. বায়োমাস শক্তি কী? বায়োমাস ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ করো। অথবা, বায়োমাস শক্তি বলতে কী বোঝায়? এর ব্যবহারের মূল অসুবিধা কী?
উত্তর কৃষিজাত বর্জ্য, পচা গাছপালা, আখের ছিবড়ে, ধানের তুষ, রান্নাঘরের অব্যবহৃত জৈব অবশেষ, প্রাণীর মলমূত্র, মৃত প্রাণীর দেহাবশেষ প্রভৃতি বিভিন্ন কার্বনঘটিত পদার্থ তথা বায়োমাসের মধ্যে যে রাসায়নিক শক্তি সঞ্চিত থাকে, তাকে বায়োমাস শক্তি বলে।
[ বায়োমাস ব্যবহারের সুবিধা হল-① বায়োমাস একটি পুনর্নবীকরণ- যোগ্য শক্তির উৎস। ② বায়োমাস থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনের পর যে জৈব আবর্জনা পড়ে থাকে তা নাইট্রোজেন ও ফসফরাস সমৃদ্ধ হওয়ায় উত্তম সাররূপে ব্যবহৃত হয়। তা ছাড়া বায়োমাস থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনের মাধ্যমে পরিবেশ অনেকক্ষেত্রে আবর্জনামুক্ত হয়। বায়োমাস ব্যবহারের অসুবিধা হল-বায়োমাসের তাপনমূল্য কম হওয়ায় এর দহনের ফলে কম পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয়।
67, [1] মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া কাকে বলে উদাহরণসহ লেখো।
[ii] বায়ুমণ্ডলে মিথেনের পরিমাণ বৃদ্ধিতে মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা লেখো।
উত্তর [১] যেসব ব্যাকটেরিয়া বায়ুর অনুপস্থিতিতে বায়োমাসের বিয়োজন ঘটিয়ে প্রকৃতিতে মিথেন গ্যাস মুক্ত করে তাদের মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া বলে। যেমন-মিথানোকক্কাস, মিথানোব্যাকটেরিয়াম ইত্যাদি।
ii] মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়ার মূল কাজই হল বায়ুতে মিথেন গ্যাস মুক্ত করা। ধানখেত, জলাভূমি ও বর্ষা- অরণ্যের (rain forest) মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া নানাবিধ উদ্ভিজ্জ বর্জ্য পদার্থের বিয়োজন ঘটিয়ে প্রকৃতিতে মিথেন গ্যাস মুক্ত করে। এ চিত্র ৪: মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও উইপোকাদের অস্ত্র ও গবাদি পশুর পাকস্থলীর রুমেন প্রকোষ্ঠে এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত থাকে যারা মিথেন তৈরি করে বায়ুতে মুক্ত করে। এভাবে মিথানোজেনিক ব্যাকটেরিয়া বায়ুমন্ডলে মিথেনের পরিমাণ বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
68. কয়লাখনির মিথেন বা কোলবেড মিথেন বলতে কী বোঝ?
উত্তর: কয়লা উৎপত্তির সময় যে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়, তা কয়লা- গাত্রের সূক্ষ্ম ছিদ্রের মধ্যে অধিশোষিত অবস্থায় থাকে। এর পাশাপাশি কয়লার বিভিন্ন স্তরের মাঝখানে থাকা ফাঁকগুলিতেও মিথেন মুক্ত অবস্থায় বা জলের সঙ্গে সম্পৃক্ত অবস্থায় উচ্চ চাপে জমা থাকে। কয়লাখনিতে কয়লার কঠিন স্তরে অধিশোষিত এই মিথেন গ্যাসকেই কয়লাখনির মিথেন বা কোলবেড মিথেন বলে।
69. কয়লাখনির মিথেনকে কীভাবে আহরণ করা হয় তা সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর: কয়লাখনি থেকে মিথেন গ্যাস উত্তোলনের জন্য প্রদত্ত ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করা হয় কয়লা উত্তোলনের আগে লম্বভাবে বা অনুভূমিকভাবে পাথরের স্তরের মধ্য দিয়ে কয়লাস্তর পর্যন্ত কূপ খনন করা হয়। কয়লাস্তর ভূগর্ভস্থ জল দ্বারা সম্পৃক্ত অবস্থায় থাকে এবং জলের চাপেই মিথেন কয়লায় অধিশোষিত অবস্থায় থাকে। ② কয়লার স্তর থেকে পাম্প করে জল তুলে নেওয়া হতে থাকলে জলের চাপ কমে যায় এবং কয়লার মধ্যে অধিশোষিত অবস্থায় থাকা মিথেন মুক্ত হয়। ③ মুক্ত মিথেন কূপ দিয়ে ওপরে উঠে আসে এবং পাইপলাইনের সাহায্যে একে সংগ্রহ ও সরবরাহ করা হয়।
70. খনি থেকে উত্তোলিত মিথেনকে কোন্ কোন্ কাজে ব্যবহার করা যায়?
উত্তর: খনি থেকে উত্তোলিত মিথেন গ্যাসকে পাম্প করে পাইপ- লাইনের সাহায্যে গৃহস্থালিতে ও ব্যাবসায়িক প্রয়োজনে সরবরাহ করা যায়। ② শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রে টারবাইন ও গ্যাস-ইঞ্জিন চালানোর কাজে প্রচলিত প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিবর্তে খনি থেকে প্রাপ্ত মিথেন ব্যবহার করা যায়।
③ চাপ প্রয়োগে এই গ্যাসকে তরলে পরিণত করে মোটরগাড়ির জ্বালানিরূপেও ব্যবহার করা যায়।
- জেনে রাখো
খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের আগে কয়লার স্তর থেকে মিথেন গ্যাসকে যথাসম্ভব উত্তোলিত করা হয়। এর কারণ হল-① মিথেনকে উত্তোলন করা না হলে দাহ্য মিথেন গ্যাস আগুনের সংস্পর্শে এসে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। ② একে উত্তোলন না করলে অন্যতম গ্রিনহাউস গ্যাস হিসেবে এটি বায়ুতে মিশে পরিবেশ দূষণ তথা গ্রিনহাউস প্রভাবের মাত্রা বাড়াতে পারে। ③ কয়লাখনি থেকে প্রাপ্ত মিথেনকে জ্বালানিরূপে ব্যবহার করা যায়। অনেক সময় কয়লা উত্তোলন নানা কারণে সম্ভব না হলেও শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করার জন্য কয়লাখনি থেকে মিথেন উত্তোলন করা হয়।
71. মিথেন হাইড্রেট থেকে মিথেন নিষ্কাশনের পদ্ধতি উল্লেখ করো। অনুরূপ প্রশ্ন, মিথেন হাইড্রেট থেকে শক্তি আহরণের পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তর: [ উপযুক্ত পদ্ধতিতে মিথেন হাইড্রেট থেকে মিথেন গ্যাস সংগ্রহ করা
যায়। পদ্ধতিগুলি হল-① মিথেন হাইড্রেটকে উত্তপ্ত করে, ② এর কেলাসের মধ্যে CO₂ প্রবেশ করিয়ে, ও কেলাসের ওপর চাপ কমিয়ে ও ④ রাসায়নিক পদ্ধতিতে মিথেন হাইড্রেটের স্থায়ী গঠন বিনষ্ট করে। প্রতিক্ষেত্রে মিথেন হাইড্রেটের ক্ল্যাথরেট গঠন থেকে যে মিথেন গ্যাস মুক্ত হয়, তাকে অতিরিক্ত চাপে সংকুচিত করে নির্দিষ্ট পাত্রে সংগ্রহ করা হয়। এভাবে প্রাপ্ত মিথেনকে জ্বালানি হিসেবে ও অন্যান্য নানা কাজে ব্যবহার করা যায়।
72. মিথেন হাইড্রেট ব্যবহারের অসুবিধাগুলি লেখো।
উত্তর: শক্তির উৎস হিসেবে মিথেন হাইড্রেটের বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এগুলি হল-① মিথেন হাইড্রেট অন্যান্য খনিজ পদার্থের মতো স্থায়ী নয়। উয়তা বৃদ্ধি বা চাপের হ্রাস ঘটলে এটি দ্রুত বিয়োজিত হয়ে জলে পরিণত হয় ও মিথেন গ্যাস মুক্ত
করে। ফলে মাটির তলায় হঠাৎ ধস নামতে পারে ও মিথেন গ্যাস উত্তোলনের যন্ত্রপাতি ও পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ② মিথেন একটি গ্রিনহাউস গ্যাস। তাই মিথেন হাইড্রেট থেকে মিথেন উত্তোলনের সময় কোনো কারণে মিথেন বায়ুতে মিশে গেলে পরিবেশগত সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
73. শক্তির উৎস হিসেবে মিথেন হাইড্রেটকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে কেন? অথবা, মিথেন হাইড্রেট হল ভবিষ্যতের অন্যতম বিকল্প শক্তি-ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে যে পৃথিবীতে সঞ্চিত মিথেন হাইড্রেটের ভাণ্ডার অতি বৃহৎ। তাই এটিকে ভবিষ্যতে শক্তির বিরাট উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। মিথেন হাইড্রেটে 13.3% মিথেন থাকে। STP-তে 1L কঠিন মিথেন হাইড্রেট থেকে প্রায় 170 L মিথেন গ্যাস পাওয়া যায়। তাই ভবিষ্যতে শক্তির উৎস হিসেবে মিথেন হাইড্রেটকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
5. True And False
1. ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে ওঠা যায় বায়ুর উন্নতা তত বাড়তে থাকে।
উত্তর : মিথ্যা
2. হেটেরোস্ফিয়ার ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে 85 km উচ্চতা থেকে শুরু হয়।
উত্তর : সত্য
3. হেটেরোস্ফিয়ারের অন্তর্গত স্তরগুলি হল থার্মোস্ফিয়ার ও এক্সোস্ফিয়ার।
উত্তর : সত্য
4. বায়ুতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ আয়তনগতভাবে 78.09%।
উত্তর : সত্য
5. ট্রোপোস্ফিয়ারে প্রতি 1000m উচ্চতা বৃদ্ধিতে 6.4°C উয়তা হ্রাস পায়।
উত্তর : মিথ্যা
6. ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুচাপ হ্রাস পায়।
উত্তর : সত্য
7. ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরে জলীয় বাষ্প, মেঘ ইত্যাদির কোনো অস্তিত্ব নেই।
উত্তর : মিথ্যা
৪. ট্রোপোস্ফিয়ার স্তরে ধূলিকণা থাকার জন্য আকাশকে নীল দেখায়।
উত্তর : সত্য
9. বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে ভারী ও ঘন স্তর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার।
উত্তর : মিথ্যা
10. ভূপৃষ্ঠের সাপেক্ষে 30km উচ্চতায় মেসোস্ফিয়ার অবস্থিত।
উত্তর :মিথ্যা
11. মেরুপ্রভা দেখা যায় ওজোনোস্ফিয়ারে।
উত্তর : মিথ্যা
12. থার্মোস্ফিয়ারের সর্বাধিক উন্নতা 1200°C পর্যন্ত হতে পারে।
উত্তর : সত্য
13. আয়নোস্ফিয়ার থার্মোস্ফিয়ারের অংশ।
উত্তর :সত্য
14. কলকাতা অপেক্ষা দার্জিলিং-এ বায়ুচাপ বেশি।
উত্তর : মিথ্যা
15. পরিচলন স্রোত দেখা যায় পদার্থের কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থায়।
উত্তর : মিথ্যা
16. ট্রোপোস্ফিয়ারে ধূলিকণার উপস্থিতি সর্বাধিক।
উত্তর :সত্য
17. ট্রোপোস্ফিয়ারে ওজোন গ্যাসের সবচেয়ে বেশি সঞ্চয় দেখা যায়।
উত্তর : মিথ্যা
18. সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মিকে তাপীয় বিকিরণ বলা হয়।
উত্তর মিথ্যা
19. বিজ্ঞানী জো ফোরম্যান সর্বপ্রথম লক্ষ করেন আন্টার্কটিকার উপরিভাগে ওজোন স্তরটি ক্রমশ পাতলা হয়ে যাচ্ছে।
উত্তর সত্য
20. অক্সিজেন অণু UV-রশ্মির প্রভাবে বিয়োজিত হয়ে অক্সিজেন পরমাণুতে পরিণত হয়।
উত্তর সত্য
22. . এক ডবসন একক বলতে STP-তে 0.01 mm বেধবিশিষ্ট ওজোন স্তরকে বোঝায়।
উত্তর সত্য
23. অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে CFC বিভাজিত হয়ে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করে।
উত্তর মিথ্যা
24. . একটি সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু লক্ষাধিক ওজোন অণুকে ধ্বংস করতে পারে।
উত্তর সত্য
25. CFC গুলি নিষ্ক্রিয় এবং অদাহ্য পদার্থ।
উত্তর সত্য
26. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে বায়ুর ঘনত্ব কম থাকায় জেট বিমানগুলি এই বায়ুস্তরের মধ্য দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম বাধাপ্রাপ্ত হয়ে যাতায়াত করে।
উত্তর সত্য
27. . জেট বিমানের বর্জ্য গ্যাসে প্রচুর নাইট্রিক অক্সাইড থাকে।
উত্তর সত্য
28. . ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হলে চোখে ছানি পড়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
উত্তর সত্য
29. . বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি না থাকলে জীবকুলের পক্ষে বেঁচে থাকা সহজ হত।
উত্তর মিথ্যা
30. গ্রিনহাউস এফেক্টের জন্য দায়ী দুটি গ্যাস হল নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন।
উত্তর মিথ্যা
31. গ্রিনহাউস প্রভাব সৃষ্টিতে মিথেন, CFC ও ওজোন গ্যাসের অবদান যথাক্রমে 19%, 16% এবং ৪%।
উত্তর সত্য
32. গ্রিনহাউস এফেক্টের জন্য বন্যা হতে পারে।
উত্তর সত্য