Class 10 Life Sciences Chapter 5 Solution
জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়
1. MCQs Question Answer
1. পরিবেশের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন শনাক্ত করে, সেই অনুযায়ী জীবের সাড়া প্রদানের ক্ষমতাই হল-
(i) উপযোজন
(ii) উদ্দীপক
(iii) সংবেদনশীলতা
(iv) আত্তীকরণ
উত্তর: (iii) সংবেদনশীলতা
2. পরিবেশের যেসব পরিবর্তন শনাক্ত হয় এবং সাড়াপ্রদানে সাহায্য করে তাদের বলে-
(i) শক্তি
(ii) বল
(iii) উদ্দীপক
(iv) অভিযোজন
উত্তর: (iii) উদ্দীপক
3. উদ্দীপক হল এক ধরনের-
(i) সংবেদন
(ii) প্রত্যক্ষণ
(iii) সাড়া
(iv) শক্তি
উত্তর: (i) সংবেদন
4. সংবেদনশীলতা দেখা যায়-
(i) কেবল প্রাণীতে
(ii) কেবল উদ্ভিদে
(iii) প্রাণী এবং উদ্ভিদ উভয়েই
(iv) এদের কোনোটিতেই নয়
উত্তর: (iii) প্রাণী এবং উদ্ভিদ উভয়েই
5. একটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপনার উদাহরণ হল-
(i) কোশের রসস্ফীতিজনিত চাপের পরিবর্তন
(ii) আলোর তীব্রতার পরিবর্তন
(iii) অভিকর্ষ
(iv) স্পর্শ
উত্তর: (i) কোশের রসস্ফীতিজনিত চাপের পরিবর্তন
6. একটি জানালা দিয়ে ঘরে রোদ এসে ইনডোের প্ল্যান্ট-এ পড়েছে। ফলে গাছে ফুল ফুটেছে। এক্ষেত্রে উদ্ভিদটির ফুল ফোটাকে বলা যায়—
(i) উদ্দীপক
(ii) সাড়াপ্রদান
(iii) পরিবেশগত পরিবর্তন
(iv) উদ্দীপনা
উত্তর: (ii) সাড়াপ্রদান
7. উদ্ভিদের সাড়া পরিমাপক যন্ত্রটি হল-
(i) ক্রেসকোগ্রাফ
(ii) আর্কমিটার
(iii) সিসমোগ্রাফ
(iv) হাইগ্রোমিটার
উত্তর: (i) ক্রেসকোগ্রাফ
৪. জগদীশ চন্দ্র বসু ব্যবহৃত উদ্ভিদের চলন পরিমাপক যন্ত্রটির নাম-
(i) সিসমোগ্রাফ
(ii) থার্মোগ্রাফ
(iii) ক্রেসকোগ্রাফ
(iv) সেন্টিগ্রাফ
উত্তর: (iii) ক্রেসকোগ্রাফ
9. বনচাঁড়ালের পার্শ্বপত্রে দেখা যায়-
(i) জিওট্রপিক চলন
(ii) ফোটোন্যাস্টিক চলন
(iii) প্রকরণ চলন
(iv) সিসমোন্যাস্টিক চলন
উত্তর: (iii) প্রকরণ চলন
10. ইন্ডিয়ান টেলিগ্রাফ নামে পরিচিত-
(i) লজ্জাবতী
(ii) মটর
(iii) কুমারিকা
(iv) বনচাঁড়াল
উত্তর: (iv) বনচাঁড়াল
11.বহিস্থ উদ্দীপক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উদ্ভিদের সামগ্রিক চলন বা গমনকে বলে-
(i) প্রকরণ চলন
(ii) ন্যাস্টিক চলন
(iii) ট্রপিক চলন
(iv) ট্যাকটিক চলন
উত্তর: (iv) ট্যাকটিক চলন
12. নীচের কোন্ উদ্ভিদে তুমি গমন লক্ষ করবে?
(i) প্যারামেসিয়াম
(ii) ইউপ্লিনা
(iii) ক্ল্যামাইডােমানাস
(iv) স্পঞ্জ
উত্তর: (iii) ক্ল্যামাইডােমানাস
13. ফোটোট্যাকটিক চলনের উদাহরণ হল-
(i) ভলভক্স
(ii) মসের শুক্রাণু
(iii) পাতাশ্যাওলা
(iv) সূর্যমুখী
উত্তর: (i) ভলভক্স
14. সূর্যোদয়ের পর ক্ল্যামাইডোমোনাস উদ্ভিদের জলের তলদেশ থেকে ওপরে উঠে আসা যে প্রকারের চলন তা হল-
(i) ফোটোট্রপিক
(ii) ফোটোন্যাস্টিক
(iii) থার্মোন্যাস্টিক
(iv) ফোটোট্যাকটিক
উত্তর: (iv) ফোটোট্যাকটিক
15. ম্যালিক অ্যাসিডের প্রভাবে ফার্নগাছের শুক্রাণু ডিম্বাণুর দিকে ধাবিত হয়। এটি একপ্রকারেরー
(i) ট্যাকটিক চলন
(ii) কেমোট্রপিক চলন
(iii) কেমোন্যাস্টিক চলন
(iv) কেমোেট্যাকটিক চলন
উত্তর: (iv) কেমোেট্যাকটিক চলন
16. ট্রপিক চলন সম্পর্কিত নীচের কোন্ বক্তব্যটি সঠিক তা নির্বাচন করো।
(i) এটি উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত
(ii) উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ-অঙ্গের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন হয়
(iii) ভলভক্স নামক শ্যাওলায় এই চলন দেখা যায়
(iv) এটি উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আবিষ্ট বক্র চলন
উত্তর: (iv) এটি উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আবিষ্ট বক্র চলন
17. উদ্ভিদের কাণ্ড আলোর দিকে বেঁকে যায়-এটি কাণ্ডের-
(i) হাইড্রোট্রপিক চলন
(ii) ফোটোট্রপিক চলন
(iii) ফোটোন্যাস্টিক চলন
(iv) সিসমোন্যাস্টিক চলন
উত্তর: (ii) ফোটোট্রপিক চলন
18. সূর্যালোকের দ্বারা প্রভাবিত ট্রপিক চলনকে বলে-
(i) হাইড্রোট্রপিক চলন
(ii) কেমোট্রপিক চলন
(iii) জিওট্রপিক চলন
(iv) ফোটোট্রপিক চলন
উত্তর: (iv) ফোটোট্রপিক চলন
19. কোন্ প্রকার চলনকে হেলিওট্রপিক চলন বলে?
(i) ফোটোট্রপিক
(ii) জিওট্রপিক
(iii) কেমোেট্রপিক
(iv) থিগমোট্রপিক
উত্তর: (i) ফোটোট্রপিক
20. অভিকর্ষের গতিপথ অনুসারে নিয়ন্ত্রিত উদ্ভিদ-অঙ্গের চলনকে বলা হয়-
(i) হাইড্রোট্রপিক চলন
(ii) জিওট্রপিক চলন
(iii) ফোটোট্রপিক চলন
(iv) কেমোট্রপিক চলন
উত্তর: (ii) জিওট্রপিক চলন
21. উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত চলনকে বলা হয়-
(i) ট্রপিক চলন
(ii) ট্যাকটিক চলন
(iii) ন্যাস্টিক চলন
(iv) কেমোট্যাক্সিস
উত্তর: (iii) ন্যাস্টিক চলন
22. আলোক তীব্রতায় সংঘটিত উদ্ভিদের আবিষ্ট বক্রচলনটি হল-
(i) ফোটোট্যাকটিক
(ii) ফোটোট্রপিক
(iii) ফোটোন্যাস্টিক
(iv) কোনোটিই নয়
উত্তর: (iii) ফোটোন্যাস্টিক
23. নিম্নলিখিত কোন্টি ট্রপিক চলনের বৈশিষ্ট্য তা নির্বাচন করো-
(i) উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নির্দিষ্ট উদ্ভিদ অঙ্গের আবিষ্ট চলন
(ii) এটি এক ধরনের রসস্ফীতিজনিত চলন
(iii) উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উদ্ভিদ অঙ্গের আবিষ্ট বক্রচলন
(iv) অক্সিনের প্রভাবে ঘটে না
উত্তর: (i) উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নির্দিষ্ট উদ্ভিদ অঙ্গের আবিষ্ট চলন
24. পদ্ম, সূর্যমুখীর প্রস্ফুটনে যে প্রকার চলন দেখা যায়, তা হল-
(i) কেমোন্যাস্টিক
(ii) ফোটোন্যাস্টিক
(iii) সিসমোন্যাস্টিক
(iv) থার্মোন্যাস্টিক
উত্তর: (ii) ফোটোন্যাস্টিক
25. সূর্যশিশির নামক পতঙ্গভুক উদ্ভিদের পাতার কর্ষিকাগুলি পতঙ্গদেহের সংস্পর্শে আসামাত্র বেঁকে গিয়ে পতঙ্গকে চেপে ধরে। এটি হল-
(i) সিসমোন্যাস্টি
(ii) থার্মোন্যাস্টি
(iii) ফোটোন্যাস্টি
(iv) কেমোন্যাস্টি
উত্তর: (iv) কেমোন্যাস্টি
26. লজ্জাবতী-কে স্পর্শ করলে পাতার পত্রকগুলি তৎক্ষণাৎ মুড়ে যায়, একে বলে-
(i) নিক্সিন্যাস্টিক চলন
(ii) হাইপোন্যাস্টিক চলন
(iii) সিসমোন্যাস্টিক চলন
(iv) কেমোন্যাস্টিক চলন
উত্তর: (iii) সিসমোন্যাস্টিক চলন
27. উদ্ভিদে রসস্ফীতিজনিত চলন যে ক্ষেত্রে দেখা যায়-
(i) ট্যাকটিক
(ii) ন্যাস্টিক
(iii) ট্রপিক
(iv) কোনোটিই নয়
উত্তর: (ii) ন্যাস্টিক
28. জুঁই ফুলের পাপড়ি রাতের বেলায় প্রস্ফুটিত হয়—এটি কোন্ প্রকার চলন?
(i) ফোটোন্যাস্টিক চলন
(ii) কেমোন্যাস্টিক চলন
(iii) থার্মোন্যাস্টিক চলন
(iv) সিসমোন্যাস্টিক চলন
উত্তর: (i) ফোটোন্যাস্টিক চলন
29. কিছু ফুল সূর্যোদয়ের পরে ফোটে। কিন্তু সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বুজে যায়, এটি হল-
(i) ফোটোন্যাস্টি
(ii) সিসমোন্যাস্টি
(iii) কেমোন্যাস্টি
(iv) থার্মোন্যাস্টি
উত্তর: (i) ফোটোন্যাস্টি
30. স্পর্শ, ঘর্ষণ প্রভৃতি বাহ্যিক উদ্দীপক দ্বারা প্রভাবিত উদ্ভিদ অঙ্গের সঞ্চালন হল-
(i) থার্মোন্যাস্টি
(ii) নিক্টিন্যাস্টি
(iii) কেমোন্যাস্টি
(iv) সিসমোন্যাস্টি
উত্তর: (iv) সিসমোন্যাস্টি
31. আমরুলের পাতায় যে চলন দেখা যায়-
(i) ফোটোন্যাস্টি
(ii) নিক্সিন্যাস্টি
(iii) থার্মোন্যাস্টি
(iv) সিসমোন্যাস্টি
উত্তর: (ii) নিক্সিন্যাস্টি
32. নিদ্রাচলন হল-
(i) ফোটোন্যাস্টিক চলন
(ii) থার্মোন্যাস্টিক
(iii) নিক্সিন্যাস্টিক চলন
(iv) সিসমোন্যাস্টিক চলন
উত্তর: (iii) নিক্সিন্যাস্টিক চলন
33. ক্রকাস এবং টিউলিপ ফুলের উন্মোচন হল একপ্রকার-
(i) ফোটোন্যাস্টিক চলন
(ii) থার্মোন্যাস্টিক চলন
(iii) নিক্সিন্যাস্টিক চলন
(iv) কেমোন্যাস্টিক চলন
উত্তর: (ii) থার্মোন্যাস্টিক চলন
34. ক্ল্যামাইডোমোনাস বা ভলভক্স-এর আলোর দিকে দেহের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন বা গমনকে বলে-
(i) জিওট্রপিক চলন
(ii) ফোটোট্যাকটিক চলন
(iii) ফোটোট্রপিক চলন
(iv) ফোটোন্যাস্টিক চলন
উত্তর: (ii) ফোটোট্যাকটিক চলন
35. যে জোড়টি সঠিক নয়, তা শনাক্ত করো-
(i) কেমোন্যাস্টিক চলন-
(ii) সূর্যশিশির ফোটোন্যাস্টিক চলন
(iii) সূর্যমুখী থার্মোন্যাস্টিক চলন-
(iv) টিউলিপ সিসমোন্যাস্টিক চলন—পদ্ম
উত্তর: (iv) টিউলিপ সিসমোন্যাস্টিক চলন—পদ্ম
2. Very Short Question Answer
1. পরিবেশের বা বাহ্যিক উত্তেজনায় জীবের সাড়া দেওয়ার ধর্মকে কী বলে?
উত্তর: উত্তেজিতা।
2. পরিবেশের যে অবস্থাগত পার্থক্য জীবদেহে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে, তাকে কী বলে?
উত্তর: উদ্দীপক।
3. উদ্দীপক কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তর: উদ্দীপক দুই প্রকার-বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ।
4. একটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের নাম লেখো।
উত্তর: উদ্ভিদকোশে জলের ঘাটতি।
5. বাহ্যিক উদ্দীপকের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: আলো।
6. প্রাণীর দুটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের নাম লেখো।
উত্তর: খিদে ও তৃয়া।
7. দুটি উদ্ভিদের নাম লেখো যাদের ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতার প্রকাশ ভালোভাবে ঘটে।
উত্তর: বনচাঁড়াল ও লজ্জাবতী।
৪. বাহ্যিক উদ্দীপকের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উদ্ভিদ-অঙ্গের বক্রচলনকে কী বলে?
উত্তর: আবিষ্ট বক্রচলন।
9. মাটিতে আবদ্ধ অবস্থায় উদ্ভিদের অঙ্গ সঞ্চালনকে কী বলে?
উত্তর: বক্রচলন।
10. প্রকরণ চলন কোন্ উদ্ভিদে দেখা যায়?
উত্তর: বনচাঁড়াল উদ্ভিদের উপপত্রকে প্রকরণ চলন দেখা যায়।
11. ইন্ডিয়ান টেলিগ্রাফ উদ্ভিদে কী ধরনের চলন দেখা যায়?
অথবা, ডেসমোডিয়াম গাইর্যান্স উদ্ভিদের উপপত্রকে কোন্ চলন দেখা যায়?
উত্তর: প্রকরণ চলন।
12. বনচাঁড়ালের পার্শ্বীয় উপপত্রকের বোঁটার গোড়ার কোন্ কোশের রসস্ফীতি তারতম্যে উপপত্রকের চলন ঘটে থাকে?
উত্তর: পালভিনি বা পালভিনাস (একবচন) কোশের রসস্ফীতির তারতম্যে।
13. কোন্ বিজ্ঞানী প্রথম প্রমাণ করেন যে, বিনা আঘাতেও উদ্ভিদে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়?
উত্তর: বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু।
14. বাহ্যিক স্পর্শ, ঠান্ডা, পটাশিয়াম সায়ানাইড-জাতীয় বিষের প্রভাবে উদ্ভিদের সাড়াদান প্রথম কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর: বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু।
15. রেজোন্যান্ট রেকর্ডার কী?
উত্তর: বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু নির্মিত যে যন্ত্রের সাহায্যে উদ্ভিদদেহের প্রতিবর্ত পথের সন্ধান করা যায়, তাকে রেজোন্যান্ট রেকর্ডার বলে।
16. প্রোটোপ্লাজমের আবর্তনজনিত গতি বা সারকুলেশন প্রথম কোথায় দেখা যায়?
উত্তর: প্রোটোপ্লাজমের আবর্তনজনিত গতি বা সারকুলেশন প্রথম দেখা যায় Tradescantia (ট্রাডেসক্যানশিয়া) নামক উদ্ভিদের পাতায়।
17. উদ্ভিদের ক্ষেত্রে উদ্দীপক নিয়ন্ত্রিত চলন প্রধানত কয় প্রকারের হয় ও কী কী?
উত্তর: উদ্ভিদের ক্ষেত্রে উদ্দীপক নিয়ন্ত্রিত চলন প্রধানত তিন প্রকারের হয়। এগুলি হল ট্যাকটিক চলন, ট্রপিক চলন এবং ন্যাস্টিক চলন।
18. সপুষ্পক উদ্ভিদের ডিম্বাশয়ের অভিমুখে পরাগনালিকার চলন কী প্রকার চলন?
উত্তর: কেমোট্যাকটিক চলন।
19. সামগ্রিক চলন বা গমনে সক্ষম দুটি উদ্ভিদের নাম লেখো। অথবা, ট্যাকটিক চলন দেখা যায় এমন দুটি উদ্ভিদের নাম লেখো।
উত্তর: Chlamydomonas (ক্ল্যামাইডােমানাস) ও Volvox (ভলভক্স)।
20. ফার্ন উদ্ভিদের শুক্রাণু ম্যালিক অ্যাসিডের প্রভাবে ডিম্বাণুর দিকে অগ্রসর হয়। এটি কোন্ প্রকার সাড়া প্রদান বলে তুমি মনে করো?
উত্তর: কেমোট্যাকটিক চলন।
21. জলস্রোতের অভিমুখে উদ্ভিদের সামগ্রিক চলনকে কী বলে?
উত্তর: রিওট্যাকটিক চলন।
22. গাছের কান্ডের আলোর দিকে অগ্রসর হওয়া কোন্ প্রকার চলনের উদাহরণ?
উত্তর: গাছের কাণ্ডের আলোর দিকে অগ্রসর হওয়া ফোটোট্রপিক চলনের একটি উদাহরণ।
23. উদ্ভিদের পাতায় কোন্ প্রকার চলন দেখা যায়?
উত্তর: তির্যক আলোকবর্তী চলন।
24. অভিকর্ষ-প্রতিকূলবর্তী বা নেগেটিভ জিওট্রপিক চলন কোন্ গাছের মূলে দেখা যায়?
উত্তর: লবণাম্বু গাছের শ্বাসমূলে।
25. উদ্ভিদের পার্শ্বীয় মূল ও পার্শ্বীয় শাখা অভিকর্ষের গতিপথের সমকোণে বর্ধিত হয়, এটি কী ধরনের চলন?
উত্তর: তির্যক অভিকর্ষবর্তী চলন।
26. উদ্ভিদের দেহের কোন্ অংশে নেগেটিভ জিওট্রপিক চলন দেখা যায়?
উত্তর: কাণ্ড।
27. ‘মূল মাটির মধ্যে জলের উৎসের অভিমুখে বাড়তে থাকে’-এটি কী ধরনের চলন?
উত্তর: জল অনুকূলবর্তী চলন।
28. আলোর তীব্রতার প্রভাবে যে চলন ঘটে তাকে কী বলে?
উত্তর: ফোটোন্যাস্টিক চলন।
29. লক্ষ করে দেখেছো কি কৃষ্ণচূড়া, শিরীষ পাতা বা তেঁতুলপাতার পত্রকগুলি প্রখর আলো ও অধিক উয়তায় খুলে যায় এবং কম আলো ও কম তাপে মুদে যায়। এটি কী প্রকার চলন বলে তুমি মনে করো?
উত্তর: নিক্সিন্যাস্টি।
30. মটরজাতীয় লেগুমিনাস উদ্ভিদের পাতায় কোন্ চলন দেখা যায়?
উত্তর: তাপব্যাপ্তি বা থার্মোন্যাস্টি।
31. মাইমোসা পুডিকা-তে কী প্রকার চলন তুমি লক্ষ করবে?
অথবা,
তুমি লজ্জাবতীর পাতা ছুঁলে, পাতাগুলি সঙ্গে সঙ্গে মুড়ে গেল-এটি কী ধরনের চলন?
উত্তর: সিসমোন্যাস্টিক চলন।
32. কেমোন্যাস্টিক চলনের একটি উদাহরণ দাও।[Uttarpara Govt. High School]
উত্তর: কেমোন্যাস্টিক চলনের একটি উদাহরণ হল পতঙ্গের সংস্পর্শে এলে সূর্যশিশিরের কর্ষিকা গুটিয়ে পতঙ্গকে আবদ্ধ করা।
33. বনচাঁড়ালের পার্শ্বীয় উপপত্রকের দ্রুত চলনের কারণ কী?
উত্তর: বনচাঁড়ালের পার্শ্বীয় উপপত্রকের দ্রুত চলনের কারণ পতঙ্গের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা।
34. ড্রসেরা উদ্ভিদে কী প্রকারের চলন দেখা যায়?
উত্তর: থিগমোন্যাস্টিক চলন।
35. হেলিওট্রপিজম কাকে বলে?
উত্তর: সূর্যের আলোর দিক পরিবর্তন অনুযায়ী, সর্বাধিক আলো পাওয়ার উদ্দেশ্যে উদ্ভিদের অংশগুলির (ফুল বা পাতা) দৈনিক বা ঋতুগত গতি হল হেলিওট্রপিজম।
36. NAA-এর পুরো নামটি কী?
উত্তর: ন্যাপথালিন অ্যাসেটিক অ্যাসিড।
37. দুটি কৃত্রিম বা সংশ্লেষিত অক্সিনের নাম লেখো।
অথবা,
দুটি কৃত্রিম হরমোনের নাম লেখো।
উত্তর: ইনডোল প্রোপিওনিক অ্যাসিড বা IPA এবং ইনডোল বিউটাইরিক অ্যাসিড বা IBA।
38. কৃত্রিম সাইটোকাইনিনের উদাহরণ দাও।
উত্তর: বেনজাইল অ্যামিনো পিউরিন
39. 2, 4-D-এর সম্পূর্ণ নাম বলো।
উত্তর: 2, 4-ডাইক্লোরোফেনক্সিঅ্যাসিটিক অ্যাসিড।
40. প্রাকৃতিক পার্থেনোেকাপি কোন্ ফলে দেখা যায়?
উত্তর: কলা।
41. দুটি সবজির নাম লেখো যাতে পার্থেনোেকাপি করা হয়।
উত্তর: বীজবিহীন বেগুন ও টম্যাটো।
42. অ্যাপোমিক্সিস কী?
উত্তর: যৌন জনন ছাড়াই বীজ সৃষ্টি হওয়াকে অ্যাপোমিক্সিস বলে।
3. Short Question Answer
1. উদ্দীপক ও উদ্দীপনা বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যেসব বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা বা শর্ত বা পদার্থ জীবদেহে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে, তাদের উদ্দীপক বলে। যেমন-আলো, তাপ হরমোন ইত্যাদি।
.উদ্দীপকের উপস্থিতির কারণে সৃষ্ট একপ্রকার প্রতিক্রিয়া যা জীব অনুভব করতে পারে, তাকে উদ্দীপনা বলে।
2. উদ্দীপক ও উদ্দীপনার সম্পর্ক কী? উদ্দীপক কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর: উদ্দীপক ও উদ্দীপনার সম্পর্ক: উদ্দীপকের উপস্থিতিতেই জীবদেহে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। পরিবেশের সমস্ত জীবই কম-বেশি উদ্দীপকের উদ্দীপনায় সাড়া দেয়। অর্থাৎ, উদ্দীপক কারণ হলে উদ্দীপনা তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া।
উদ্দীপকের প্রকারভেদ: উৎস অনুযায়ী উদ্দীপক দুই প্রকার-বাহ্যিক উদ্দীপক ও অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক।
3. বাহ্যিক উদ্দীপক ও অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক কাকে বলে?
উত্তর: যে উদ্দীপক জীবদেহের বাইরে বা বাহ্যিক পরিবেশে উৎপন্ন হয়ে জীবদেহে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে, তাকে বাহ্যিক উদ্দীপক বলে। আলো, উয়তার তারতম্য, স্পর্শ প্রভৃতি বাহ্যিক উদ্দীপক।
জীবদেহের অভ্যন্তরীণ পরিবেশে সৃষ্ট উদ্দীপক যা জীবদেহে উদ্দীপনা সৃষ্টি করে, তাকে অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক বলে। যেমন-হরমোন, রসস্ফীতির তারতম্য প্রভৃতি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক। স্পর্শ উদ্দীপকের উদ্দীপনায় রোহিণীর অবলম্বন জড়িয়ে বৃদ্ধি
4. সংবেদনশীলতা বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: সংবেদনশীলতা: পরিবেশের বিভিন্ন পরিবর্তনগুলি শনাক্ত করে সেই অনুযায়ী সাড়াপ্রদানের ধর্ম বা ক্ষমতাকেই সংবেদনশীলতা (sensitivity) বলে।
[+ উদাহরণ: লজ্জাবতীর পাতাকে স্পর্শ করলে পত্রকগুলি নুয়ে পড়ে। এটি উদ্ভিদের সংবেদশীলতার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
5. একটি উদাহরণের মাধ্যমে উদ্ভিদের সাড়াপ্রদানের ঘটনাটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: উদ্ভিদের সংবেদনশীলতার বা সাড়াপ্রদানের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হল লজ্জাবতী উদ্ভিদ। লজ্জাবতী উদ্ভিদের পাতাকে স্পর্শ করলে, তার পত্রকগুলি নুয়ে পড়ে। এটি স্পর্শ উদ্দীপনায় সাড়াপ্রদানের ঘটনা।
6. উদ্ভিদ কীভাবে সাড়াপ্রদান করে?
উত্তর: উদ্ভিদ বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের প্রভাবে সৃষ্ট উদ্দীপনায় সাড়াপ্রদান করে। সাধারণত এই সাড়াপ্রদান অত্যন্ত ধীর এবং তা মূলত বৃদ্ধিঘটিত বা রসস্ফীতিজনিত হয়ে থাকে। উদ্ভিদের ক্ষেত্রে দ্রুত সাড়াপ্রদানের ঘটনা প্রায় বিরল (ব্যতিক্রম-লজ্জাবতী, বনচাঁড়াল)।
অধিকাংশ উদ্ভিদ একটি নির্দিষ্ট স্থানে আবদ্ধ থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন বা চলনের মাধ্যমে সাড়াপ্রদান করে।
7. ক্রেসকোগ্রাফ কী ও কী কাজে ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: ক্রেসকোগ্রাফ (crescograph) হল বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু আবিষ্কৃত একপ্রকার অত্যন্ত সুবেদী যন্ত্র, যার সাহায্যে উদ্ভিদের সামান্য সাড়াপ্রদানের ঘটনাও পরিমাপ করা যায়।
বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু এই ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্রের সাহায্যে লজ্জাবতী এবং বনচাঁড়াল নামক উদ্ভিদের সাড়াপ্রদান-সংক্রান্ত পরীক্ষা- নিরীক্ষা করেন।
৪. চলন বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় জীব এক জায়গায় স্থির থেকে উদ্দীপকের প্রভাবে সাড়া দিয়ে বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেহের কোনো অংশ সঞ্চালন করে, তাকে চলন বলে।
9 চলনের উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: চলনের উদ্দেশ্যগুলি হল-① উদ্ভিদের মূলের অগ্রভাগে জলের অন্বেষণের জন্য চলন দেখা যায়। ② সূর্যালোক, বাতাস ইত্যাদির সন্ধানে উদ্ভিদের কাণ্ড ও শাখাপ্রশাখার চলন ঘটে। ③ মাটি থেকে জল ছাড়াও খনিজ লবণের সন্ধানে মূলের বিভিন্ন দিকে চলন দেখা যায়।
10. উদ্ভিদ চলন কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তর: উদ্ভিদ চলন তিনপ্রকার যথা-① ট্যাকটিক চলন, ② ট্রপিক চলন, ও ন্যাস্টিক চলন।
উদ্ভিদ চলন প্রক্রিয়াকে প্রাথমিকভাবে দুইভাগে ভাগ করা যায়- ① সামগ্রিক চলন বা গমন এবং ② বক্রচলন। এই দুইপ্রকার চলনই স্বতঃস্ফূর্ত এবং আবিষ্ট বা বাহ্যিক উদ্দীপনা-নির্ভর হতে পারে।। সামগ্রিক চলন আবার দুইপ্রকার-স্বতঃস্ফূর্ত (প্রোটোপ্লাজমীয় চলন) এবং আবিষ্ট (ট্যাকটিক চলন)। বক্রচলনও আবার দুইপ্রকার-স্বতঃস্ফূর্ত (বৃদ্ধিজ চলন, প্রকরণ চলন) ও আবিষ্ট (ট্রপিক চলন, ট্যাকটিক চলন)।
11. উদ্ভিদের সামগ্রিক চলন বা গমন বলতে কী বোঝ?
উত্তর: স্বতঃস্ফূর্ত বা বহিস্থ উদ্দীপকের প্রভাবে সমগ্র উদ্ভিদ বা উদ্ভিদদেহের কোনো অংশের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন করাকে সামগ্রিক চলন বা গমন বলে। যেমন- Volvox (ভলভক্স), Chlamydomonas (ক্ল্যামাইডোমোনাস) প্রভৃতি শৈবালের চলন।
12. “উদ্ভিদের সামগ্রিক চলন একপ্রকার গমন”-উদাহরণসহ ব্যাখ্যা
উত্তর: উদ্ভিদের সামগ্রিক চলনে স্থান পরিবর্তন ঘটে থাকে। যেমন-
ফোটোট্যাকটিক চলনে শৈবাল স্বল্প আলোর দিকে গমন করে। অঙ্গ সঞ্চালন দ্বারা স্থান পরিবর্তনকেই গমন বলে। তাই উদ্ভিদের সামগ্রিক চলন হল একপ্রকারের গমন।
13. বজ্রচলন কাকে বলে?
উত্তর: [ মাটিতে আবদ্ধ অবস্থায় একস্থানে স্থির থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা বহিস্থ উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রকার অঙ্গ সঞ্চালনকে বজ্রচলন বলে। যেমন-ট্রপিক চলন, ন্যাস্টিক চলন, প্রকরণ চলন ইত্যাদি।
14. বৃদ্ধিজ চলন কাকে বলে?
উত্তর: উদ্ভিদের বর্ধিষ্ণু অংশের অসমান বৃদ্ধির ফলে উদ্ভিদ অঙ্গের যে চলন হয় তাকে বৃদ্ধিজ চলন বলে। যেমন-রোহিনী জাতীয় উদ্ভিদে দেখা যায়।
15. প্রকরণ চলন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: প্রকরণ চলন: কোশের রসস্ফীতির তারতম্যের জন্য উদ্ভিদ- অঙ্গের যে স্বতঃস্ফূর্ত বক্রচলন দেখা যায়, তাকে প্রকরণ চলন বলে।
◆ উদাহরণ: বনচাঁড়ালের যৌগপত্রের পার্শ্বীয় পত্রক দুটি স্বতঃস্ফূর্তভাবে পর্যায়ক্রমে ওপরে ও নীচে ওঠানামা করে। এটি একপ্রকার রসস্ফীতিজনিত প্রকরণ চলন।
16. স্বতঃস্ফূর্ত চলন কাকে বলে? আবিষ্ট চলন কাকে বলে?
উত্তর: স্বতঃস্ফূর্ত চলন: অভ্যন্তরীণ উদ্দীপনার প্রভাবে সংঘটিত সামগ্রিক বা বজ্রচলনকে স্বতঃস্ফূর্ত চলন বলে। যেমন-প্রকরণ চলন।
[ আবিষ্ট চলন: বাহ্যিক উদ্দীপকের প্রভাবে সংঘটিত সামগ্রিক বা বক্রচলনকে আবিষ্ট চলন বলে। যেমন-ট্যাকটিক চলন, ট্রপিক চলন।
22. দিক্মিণীত চলন বা ট্রপিক চলন কাকে বলে?
উত্তর: [ উদ্ভিদ-অঙ্গের বক্রচলন যখন বহিস্থ উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তখন তাকে ট্রপিক চলন বা দিনির্ণীত বজ্রচলন বলে। যেমন- কান্ডের আলোক উৎসের দিকে চলন।
23. ফোটোট্রপিক চলন কাকে বলে?
উত্তর: উদ্ভিদ অঙ্গের বক্র চলন যখন আলোক উৎসের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন তাকে ফোটোট্রপিক চলন বা আলোকবৃত্তীয় চলন বলে। যেমন-আলোক উৎসের দিকে উদ্ভিদের কান্ডের বৃদ্ধি, অর্থাৎ কান্ড আলোক অনুকূলবর্তী।
24. হাইড্রোট্রপিক চলন কাকে বলে?
উত্তর: উদ্ভিদ-অঙ্গের বক্রচলন যখন জলের উৎসের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন তাকে হাইড্রোট্রপিক চলন বা জলবৃত্তীয় চলন বলে। যেমন-উদ্ভিদের মূল সর্বদা জলের উৎসের দিকে বৃদ্ধি পায়, অর্থাৎ মূল জল অনুকূলবর্তী।
25. জিওট্রপিক চলন কাকে বলে?
উত্তর: উদ্ভিদ অঙ্গের বক্রচলন যখন অভিকর্ষ বল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন তাকে জিওট্রপিক চলন বা অভিকর্ষবৃত্তীয় চলন বলে। যেমন- উদ্ভিদের মূল অভিকর্ষজ টানে পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হয় অর্থাৎ মূল অভিকর্ষ অনুকূলবর্তী।
26. একটি টবের লম্বা একক বিটপযুক্ত উদ্ভিদকে ভূমির সমান্তরাল অবস্থায় সাত দিন রাখা হল। সাত দিন পর বিটপ অংশ বেঁকে ভূমির সঙ্গে লম্বভাবে সোজা হয়ে উঠেছে দেখা যাবে। এর কারণ উল্লেখ করো।
উত্তর: উদ্ভিদের বিটপে আলোক অনুকূলবর্তী চলন ও অভিকর্ষ প্রতিকূলবর্তী চলনের কারণে বিটপ অংশ বেঁকে ভূমির ওপরে লম্বভাবে সোজা হয়ে উঠে যাবে।
27. ব্যাপ্তি বা ন্যাস্টিক চলন কাকে বলে?
উত্তর: [ উদ্ভিদ-অঙ্গের বক্র চলন যখন উদ্দীপকের গতিপথ অনুসারে না হয়ে উদ্দীপকের তীব্রতার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তখন তাকে ব্যাপ্তি বা ন্যাস্টিক চলন বলে। যেমন-সূর্যালোকের তীব্রতায় সূর্যমুখী ফুলের প্রস্ফুটন।
28. সিসমোন্যাস্টিক চলনের সংজ্ঞা উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর: উদ্ভিদ অঙ্গের বক্রচলন যখন স্পর্শ, কম্পন, ঘর্ষণ বা আঘাত প্রভৃতি উদ্দীপকের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে, তখন তাকে স্পর্শ ব্যাপ্তি চলন বা সিসমোন্যাস্টিক চলন বলে। স্পর্শের কারণে লজ্জাবতীর পাতার পত্রকগুলি মুদে যাওয়া এইপ্রকার চলনের উদাহরণ।
4. Long Question Answer
1. উদ্ভিদ কীভাবে পরিবেশ-পরিবর্তন শনাক্ত করে? উদাহরণের মাধ্যমে উদ্ভিদের সাড়াপ্রদানের বিষয়টি বুঝিয়ে লেখো। 2+3
উত্তর: উদ্ভিদের পরিবেশ-পরিবর্তন শনাক্তকরণ: সকল জীবই উদ্দীপনার প্রভাবে কম-বেশি সংবেদনশীলতা দেখায়। আগে মনে করা হত যে, পরিবেশের কোনো পরিবর্তনই উদ্ভিদ শনাক্ত করে না। কিন্তু বাস্তবে উদ্ভিদও প্রাণীর মতোই পরিবেশের পরিবর্তন শনাক্ত করে ও তাতে সাড়াপ্রদান করে। যদিও উদ্ভিদের ক্ষেত্রে উদ্দীপকের প্রভাবে সাড়াপ্রদানের ঘটনা প্রাণীদের তুলনায় অনেক কম দেখা যায়। অধিকাংশ উদ্ভিদ একটি নির্দিষ্ট স্থানে আবদ্ধ থাকায় অর্থাৎ গমনে অক্ষম হওয়ায়, তারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন বা চলনের মাধমে সাড়াপ্রদান করে।
⇒ উদ্ভিদের সাড়াপ্রদানের উদাহরণ: উদ্ভিদের সাড়াপ্রদান সাধারণত অত্যন্ত ধীর ঘটনা এবং তা মূলত উদ্ভিদ-অঙ্গের বৃদ্ধিজনিত বা রসস্ফীতিজনিত হয়ে থাকে। উদ্ভিদজগতে দ্রুত সাড়াপ্রদানের ঘটনা অত্যন্ত বিরল। উদ্ভিদের দ্রুত সাড়াপ্রদান বা সংবেদনশীলতার দুটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হল-① লজ্জাবতী বা Mimosa pudica (মাইমোসা পুডিকা) গাছের পক্ষল যৌগিক পত্রগুলি স্পর্শ করলে তার পত্রকগুলি গুটিয়ে যায় ও নুয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে স্পর্শ বা ছোঁয়ার ফলে পত্রকের উপাধানের কোশগুলির রসস্ফীতি-জনিত পরিবর্তন হওয়ায় বা রসস্ফীতি চাপ হ্রাস পাওয়ায় পত্রকগুলি পত্রকঅক্ষ বা র্যাচিস বরাবর নুয়ে যায়। এক্ষেত্রে স্পর্শ হল উদ্দীপক; এবং পত্রকের নুয়ে যাওয়া হল সাড়াপ্রদান। ② বনচাঁড়াল বা Desmodium gyrans (ডেসমোডিয়াম গাইর্যান্স) নামক গাছের ত্রিফলকযুক্ত পাতার বৃন্তের পাশের ছোটো পত্রক দুটি ক্রমাগত ওঠানামা করতে থাকে। এই চলনটি শুধুমাত্র দিনের বেলায় অভ্যন্তরীণ উদ্দীপনার প্রভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে।
2. উদ্ভিদের চলন কাকে বলে? উদ্ভিদের বিভিন্নপ্রকার উদ্দীপক নিয়ন্ত্রিত চলন একটি ছকের সাহায্যে দেখাও।
উত্তর: উদ্ভিদের চলন: যে প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ বিভিন্ন উদ্দীপকের প্রভাবে বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এক স্থানে স্থির থেকে তার দেহের কোনো অংশ সঞ্চালন করে, তাকে উদ্ভিদের চলন বলে।
উদ্ভিদের ক্ষেত্রে চলন হল সাড়াপ্রদানের একটি মাধ্যম। প্রায় সমস্ত উদ্ভিদের ক্ষেত্রে চলন দেখা যায়। তবে কিছু নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদের ক্ষেত্রে সমগ্র উদ্ভিদেহের বা দেহাংশের সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন ঘটে বা গমন ঘটে।
উদ্ভিদের উদ্দীপক নিয়ন্ত্রিত চলনের প্রকারভেদ: উদ্দীপক নিয়ন্ত্রিত উদ্ভিদ চলন প্রধানত তিনপ্রকার, যথা-ট্যাকটিক চলন, ট্রপিক চলন এবং ন্যাস্টিক চলন। এই তিনপ্রকার চলনের মধ্যে ট্যাকটিক চলন হল সামগ্রিক চলন এবং ট্রপিক ও ন্যাস্টিক চলন হল বজ্রচলন।
উদ্দীপক নিয়ন্ত্রিত উদ্ভিদ চলনের প্রকারভেদগুলি নীচে ছকের সাহায্যে দেখানো হল-
3. ট্যাকটিক চলনের বৈশিষ্ট্য লেখো। ফোটোট্যাকটিক চলন বলতে কী বোঝ উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর: ট্যাকটিক চলনের বৈশিষ্ট্য: ট্যাকটিক চলনের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল- এইপ্রকার চলনে উদ্ভিদের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন
ঘটে, অর্থাৎ গমন সম্পন্ন হয়। ② ট্যাকটিক চলন কোনো বহিস্থ উদ্দীপক ও তার উৎসের অভিমুখ বা গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ও সাধারণত অনুন্নত জলজ উদ্ভিদে ও উদ্ভিদের জননকোশে এই চলন ঘটে। ④ সিলিয়া বা ফ্ল্যাজেলা ট্যাকটিক চলনে সহায়তা করে।
⇨ ফোটোট্যাকটিক চলন: বাহ্যিক আলোক উদ্দীপক দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যখন কোনো উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ-অংশ সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন করে, তখন সেই চলনকে ফোটোট্যাকটিক চলন বলে। বিভিন্ন নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদে এইপ্রকার চলন দেখা যায়। উদাহরণ-Chlamydomonas (ক্ল্যামাইডোমোনাস) ও Volvox (ভলভক্স) আলোর স্বল্প তীব্রতায় আলোক-উৎসের দিকে অগ্রসর হয়, কিন্তু উয়তা বৃদ্ধির কারণে তীব্র আলো থেকে দূরে সরে যায়।
4. উদ্ভিদের যে-কোনো দু-ধরনের ট্রপিক চলন উদাহরণসহ আলোচনা করো। অথবা, উদ্ভিদের ফোটোট্রপিক চলন পরীক্ষাসহ আলোচনা করো।
উত্তর: উদ্ভিদের ট্রপিক চলন: উদ্ভিদের ট্রপিক চলন মূলত তিন প্রকার। যথা-① ফোটোট্রপিক চলন, ② জিওট্রপিক চলন ও ③ হাইড্রোট্রপিক চলন। বিভিন্ন ধরনের ট্রপিক চলন উদাহরণ সহযোগে আলোচনা করা হল।
① ফোটোট্রপিক চলন: উদ্ভিদ-অঙ্গের বক্রচলন যখন আলোর উৎসের গতিপথ বা অভিমুখ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন তাকে ফোটোট্রপিক বা আলোক-বৃত্তীয় চলন বলে। উদ্ভিদের কাণ্ড, শাখাপ্রশাখা আলোর উৎসের দিকে বৃদ্ধি পায়। তাই কাণ্ডকে আলোক-অনুকূলবর্তী বলে। অন্যদিকে, মূল আলোর উৎসের বিপরীত দিকে বৃদ্ধি পায়। তাই মূলকে আলোক-প্রতিকূলবর্তী বলে। আবার, পাতা আলোর উৎসের সাথে তির্যকভাবে বা লম্বভাবে বৃদ্ধি পায় বলে পাতাকে আলোক-তির্যকবর্তী বলা হয়।
উদাহরণ: একটি জলপূর্ণ কাচের বোতলে কর্কের সাহায্যে একটি চারাগাছ লাগানো হল। এবার বোতলসহ চারাগাছটি যদি অন্ধকার ঘরে একটি জানালার পাশে রেখে জানালার একটি পাল্লা খুলে রাখা হয় তবে কয়েকদিন পর দেখা যাবে চারাগাছের ডালপালা জানালার দিকে অর্থাৎ, আলোক-উৎসের দিকে বেঁকে গেছে। একইসঙ্গে লক্ষ করা যাবে যে, চারাগাছের মূল নীচের দিকে অর্থাৎ আলোক-উৎসের বিপরীতে বৃদ্ধি পায়। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, বিটপ অংশ আলোক-অনুকূলবর্তী ও মূল আলোক-প্রতিকূলবর্তী।
② জিওট্রপিক চলন: উদ্ভিদ-অঙ্গের বক্রচলন যখন অভিকর্ষের গতিপথ বা অভিমুখ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তখন তাকে জিওট্রপিক বা অভিকর্ষবৃত্তীয় চলন বলে। উদ্ভিদের মূল অভিকর্ষের দিকে এবং বিটপ অভিকর্ষের বিপরীত দিকে বৃদ্ধি পায়। তাই মূলকে অভিকর্ষ-অনুকূলবর্তী ও বিটপকে অভিকর্ষ-প্রতিকূলবর্তী বলে।
উদাহরণ: একটি ভিজে ব্লটিং পেপারে একটি অঙ্কুরিত বীজকে পিনের সাহায্যে আটকে ব্লটিং পেপারটিকে একটি দড়ির সাহায্যে অন্ধকার ঘরে খাড়াভাবে ঝুলিয়ে রেখে দেওয়া হল। এর কয়েকদিন পরে দেখা যাবে অঙ্কুরিত বীজের ভূণমূল নীচের দিকে ও ভ্রূণমুকুল ওপরের দিকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরীক্ষা থেকে প্রমাণিত হয় যে, ভ্রূণমূল অভিকর্ষের অনুকূলবর্তী এবং ভূণমুকুল অভিকর্ষের প্রতিকূলবর্তী।
③ হাইড্রোট্রপিক চলন: উদ্ভিদ-অঙ্গের বক্রচলন যখন জলের উৎসের গতিপথ বা অভিমুখ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখন তাকে হাইড্রোট্রপিক চলন বা জলবৃত্তীয় চলন বলে। উদ্ভিদের মূলের চলন জলের উৎসের দিকে হয়। তাই মূলকে জল-অনকূলবর্তী এবং বিটপ জলের উৎসের বিপরীত দিকে বৃদ্ধি পায়। তাই বিটপকে জল-প্রতিকূলবর্তী বলে।
উদাহরণ: একটি চালুনিতে কাঠের ভিজে গুঁড়োর ওপর কতকগুলি সতেজ ছোলার বীজ রেখে ঝুলিয়ে দিলে কয়েকদিন পর বীজগুলি অঙ্কুরিত হয়ে অভিকর্ষবৃত্তির কারণে ভ্রূণমূলগুলিকে চালুনির বাইরে বেরিয়ে আসতে দেখা যাবে। এভাবে আরও কয়েকদিন রেখে দিলে দেখা যাবে, ভ্রূণমূলগুলি আবার চালুনির ভিতর ঢুকে যায়। এর থেকে প্রমাণিত হয়, ভ্রূণমূলগুলি প্রথমে চালুনির বাইরে অভিকর্ষের টানে নীচের দিকে ঝুলতে থাকে এবং পরে সেগুলি জলের উৎসের দিকে বেঁকে আবার চালুনির ভিতর প্রবেশ করে। অর্থাৎ প্রমাণিত হয় যে, মূলের মধ্যে অনুকূল জলবৃত্তীয় চলন দেখা যায়।
[শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এখানে তিনপ্রকার ট্রপিক চলনই উদাহরণ সহযোগে আলোচনা করা হল। পরীক্ষায় এই প্রশ্নের উত্তরে শুধুমাত্র দুইপ্রকার ট্রপিক চলন সম্পর্কে লিখতে হবে।]
5. আলো ও অভিকর্ষ বল উদ্ভিদের চলনকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে?
উত্তর: আলো ও অভিকর্ষ বল দ্বারা উদ্ভিদের চলন নিয়ন্ত্রণ: উদ্ভিদ- চলন নিয়ন্ত্রণকারী দুটি অন্যতম উদ্দীপক হল আলো ও অভিকর্ষ বল। নীচে এই দুটি উদ্দীপকের ভূমিকা উল্লেখ করা হল। আলোর দ্বারা উদ্ভিদের চলন নিয়ন্ত্রণ: উদ্ভিদ-অঙ্গের ট্রপিক চলন আলোক- উৎসের দিক-নির্ভর হয়। এই ধরনের চলনকে আলোকবর্তী চলন বা ফোটোট্রপিজম বলে। উদ্ভিদের কাণ্ড ও শাখাপ্রশাখা আলোর উৎসের দিকে বৃদ্ধি পায়। তাই উদ্ভিদের কাণ্ডকে আলোক-অনুকূলবর্তী বলে। অপরদিকে, উদ্ভিদের মূল আলোক-উৎসের বিপরীত দিকে বৃদ্ধি পায়, তাই মূলকে আলোক-প্রতিকূলবর্তী বলে। উদ্ভিদের পাতা আলোক-উৎসের সাথে লম্বভাবে বৃদ্ধি পায়, তাই এদের আলোক-তির্যকবর্তী বলা হয়। অক্সিন নামক উদ্ভিদ-হরমোন এই ধরনের চলন নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া Chlamydomonas (ক্ল্যামাইডোমোনাস), Volvox (ভলভক্স) প্রভৃতি নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদের ক্ষেত্রে আলোক-উৎসের অভিমুখে সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন ঘটে, যা ফোটোট্যাকটিক চলন নামে পরিচিত। আবার, আলোর তীব্রতার দ্বারাও উদ্ভিদ চলন নিয়ন্ত্রিত হয় এবং এইপ্রকার চলনকে ফোটোন্যাস্টিক চলন বলে। পদ্ম, সূর্যমুখী প্রভৃতি ফুলের তীব্র আলোতে ফোটা ও সূর্যাস্তের সাথে সাথে বুজে যাওয়া এই ধরনের ফোটোন্যাস্টিক চলনের উদাহরণ।
অভিকর্ষ বল দ্বারা উদ্ভিদের চলন নিয়ন্ত্রণ: অভিকর্ষ বলের প্রভাবে উদ্ভিদ- অঙ্গের চলনকে অভিকর্ষবৃত্তীয় চলন বা জিওট্রপিজম বলে। উদ্ভিদের মূল অভিকর্ষের দিকে এবং বিটপ অভিকর্ষের বিপরীত দিকে ধাবিত হয়। এই কারণে মূলকে অভিকর্ষ-অনুকূলবর্তী ও কাণ্ডকে অভিকর্ষ-প্রতিকূলবর্তী বলা হয়। এ ছাড়া, উদ্ভিদের পার্শ্বীয় মূল পৃথিবীর ভরকেন্দ্র বা অভিকর্ষের উৎসের সাথে লম্বভাবে বৃদ্ধি পায়, তাই এদের অভিকর্ষ-তির্যকবর্তী বলা হয়। এইপ্রকার চলনেও অক্সিনের ভূমিকা অপরিসীম।
6. ট্রপিক চলনের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী? ন্যাস্টিক চলনের বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: [ ট্রপিক চলনের বৈশিষ্ট্য: ট্রপিক চলনের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল-① এইপ্রকার চলন উদ্ভিদ-অঙ্গের বক্রতা সৃষ্টির মাধ্যমে ঘটে। ② বিভিন্ন প্রকার বহিস্থ উদ্দীপক, যেমন-আলো, জল, অভিকর্ষ প্রভৃতির গতিপথ বা উৎস দ্বারা এই চলন নিয়ন্ত্রিত হয়। ও ট্রপিক চলন উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গ, যেমন-মূল, কাণ্ড, শাখাপ্রশাখা প্রভৃতিতে ঘটে থাকে। ④ ট্রপিক চলনে হরমোনের প্রভাবে উদ্ভিদ-অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটে, তাই একে বৃদ্ধিজনিত আবিষ্ট বক্রচলন বলে।
⇒ ন্যাস্টিক চলনের বৈশিষ্ট্য: ন্যাস্টিক চলনের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল-① এইপ্রকার চলন বহিস্থ উদ্দীপকের প্রভাবে রসস্ফীতি জনিত তারতম্যের দ্বারা উদ্ভিদ-অঙ্গের বক্রতা সৃষ্টির মাধ্যমে ঘটে। ② আলো, উন্নতা, স্পর্শ বা আঘাত, রাসায়নিক পদার্থ প্রভৃতি উদ্দীপকের প্রভাবে এইপ্রকার চলন ঘটে। ③ ন্যাস্টিক চলন উদ্দীপকের তীব্রতার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
7. উদ্ভিদের বিভিন্নপ্রকার ন্যাস্টিক চলন সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
উত্তর: [ ন্যাস্টিক চলনের প্রকারভেদ: ন্যাস্টিক চলন বিভিন্ন প্রকারের হয়। যেমন-① ফোটোন্যাস্টিক, ② থার্মোন্যাস্টিক, ③ সিসমোন্যাস্টিক, ④ কেমোন্যাস্টিক ও⑤ নিক্সিন্যাস্টিক চলন। প্রধান পাঁচপ্রকার ন্যাস্টিক চলন সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল।
① ফোটোন্যাস্টিক চলন: আলোকের তীব্রতার হ্রাস-বৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে উদ্ভিদ-অঙ্গের যে বজ্রচলন হয়, তাকে ফোটোন্যাস্টি বা ফোটোন্যাস্টিক চলন বলে। যেমন-সূর্যমুখী ফুল দিনের বেলায় আলোর তীব্রতার পরিপ্রেক্ষিতে দিক পরিবর্তন করে। আবার, বেল ফুল সূর্যালোকে বুজে যায় এবং রাতে ফোটে।
② থার্মোন্যাস্টিক চলন: তাপমাত্রার তীব্রতার ওপর নির্ভর করে উদ্ভিদ- অঙ্গের যে বজ্রচলন হয়, তাকে থার্মোন্যাস্টি বা থার্মোন্যাস্টিক চলন বলে। যেমন-টিউলিপ ফুল স্বাভাবিক উয়তায় ফোটে, কিন্তু উয়তা
হ্রাস পেলে ফুলের পাপড়ি বন্ধ হয়ে যায়। ③ সিসমোন্যাস্টিক চলন: স্পর্শ, কম্পন, ঘর্ষণ, আঘাত প্রভৃতির মতো বিভিন্ন উদ্দীপকের তীব্রতার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উদ্ভিদ-অঙ্গের বজ্রচলনকে
সিসমোন্যাস্টি বা সিসমোন্যাস্টিক চলন বলে। যেমন-লজ্জাবতীর পাতার পত্রকগুলি আলতোভাবে স্পর্শ করলে তা বন্ধ হয়ে যায় এবং স্পর্শ জোরালো হলে সমগ্র পাতা নুয়ে পড়ে। আবার, স্পর্শ সরিয়ে নিলে লজ্জাবতীর পত্রক খুলে যায়।
④ কেমোন্যাস্টিক চলন: রাসায়নিক পদার্থের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে উদ্ভিদ-অঙ্গের যে বজ্রচলন সম্পন্ন হয়, তাকে কেমোন্যাস্টি বা কেমোন্যাস্টিক চলন বলে। যেমন-ইথার, ক্লোরোফর্ম প্রভৃতি রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে উদ্ভিদের কচি আকর্ষ বেঁকে যায়। সূর্যশিশিরের পত্রফলকের ওপর পতঙ্গ বসলে কর্ষিকাগুলি বেঁকে গিয়ে পতঙ্গকে ঘিরে ফেলে।
⑤ নিক্সিন্যাস্টিক চলন: উদ্ভিদ-অঙ্গের বজ্রচলন যখন আলোক ও উন্নতা উভয়ের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে, তখন তাকে নিক্টিন্যাস্টিক চলন বলে। যেমন-আমরুল, বাবলা, শিরিষ প্রভৃতি গাছের পাতার পত্রকগুলি দিনের বেলা আলো ও তাপের প্রভাবে খুলে যায় ও বিকেল থেকে সন্ধ্যার অন্ধকারে ও নিম্ন তাপমাত্রায় বন্ধ হয়ে যায়। [নিটিন্যাস্টিক চলন সিলেবাস বহির্ভূত। শিক্ষার্থীদের জ্ঞাতার্থে এখানে উল্লেখ করা হল।]
8. উদ্ভিদদেহে হরমোনের সাধারণ কাজগুলি সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: উদ্ভিদদেহে হরমোনের কাজ: হরমোন উদ্ভিদদেহে শারীরবৃত্তীয় কার্য নিয়ন্ত্রকরূপে বিশেষত বৃদ্ধি সহায়করূপে যেসব ভূমিকা পালন করে তা নীচে আলোচিত হল।
অগ্র ও পার্শ্বীয় বৃদ্ধি: উদ্ভিদের প্রাথমিক বৃদ্ধি বলতে প্রধানত কাণ্ড ও মূলের অগ্রভাগের বৃদ্ধিকেই বোঝানো হয়। অগ্রস্থ ভাজক কলার কোশের বিভাজনের দ্বারাই এই বৃদ্ধি ঘটে থাকে। একে অগ্রস্থ বৃদ্ধিও বলা হয়। এ ছাড়া, পার্শ্বীয় ভাজক কলার বিভাজনের মাধ্যমে উদ্ভিদ প্রস্থে বৃদ্ধি পায়, যা পার্শ্বীয় বৃদ্ধি নামে পরিচিত। এইভাবে ভাজক কলার বিভাজনের মাধ্যমে উদ্ভিদের বৃদ্ধি হরমোনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
যেমন-অক্সিনের প্রভাবে উদ্ভিদের অগ্রমুকুলের বৃদ্ধি ঘটে।
ফুলের প্রস্ফুটন: উদ্ভিদের জননাঙ্গ হল ফুল। পুষ্পমুকুলের পরিস্ফুটনের মাধ্যমে ফুল ফোটে। উদ্ভিদদেহে পুষ্পমুকুলের সৃষ্টি ও তার থেকে ফুল ফোটার ক্ষেত্রে উদ্ভিদ হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন-জিব্বেরেলিন হরমোনটি ক্যামেলিয়া, জেরানিয়াম প্রভৃতি ফুল ফুটতে সাহায্য করে। চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া প্রভৃতি ফুল ফুটতে অ্যাবসিসিক অ্যাসিড সাহায্য করে।
মুকুলোদ্গম: কিছু উদ্ভিদ হরমোনের প্রভাবে কাণ্ড ও পাতার শীর্ষে থাকা অগ্রমুকুলের বৃদ্ধি হয় ও গাছটি লম্বায় বাড়ে। যেমন- অক্সিন। আবার অগ্রমুকুলের অনুপস্থিতিতে উদ্ভিদ হরমোন পাতার কক্ষে উপস্থিত কাক্ষিক মুকুলের বৃদ্ধি ঘটায় ও নতুন শাখাপ্রশাখা সৃষ্টি করে।
বীজের অঙ্কুরোদ্গম: বীজের সৃষ্টির পর কিছুদিন তা সুপ্ত অবস্থায় থাকে। উপযুক্ত বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ শর্তের উপস্থিতিতে এই সুপ্তাবস্থা ভঙ্গ হয় অর্থাৎ, অঙ্কুরোদ্গম ঘটে। যেমন- জিব্বেরেলিন।
ট্রপিক চলন: উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রকার ট্রপিক চলন, প্রধানত ফোটোট্রপিক ও জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে হরমোন প্রধান ভূমিকা পালন করে। যেমন-অক্সিন ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ করে।
9. উদ্ভিদ হরমোনের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উত্তর: উদ্ভিদ হরমোনের বৈশিষ্ট্য: উদ্ভিদ হরমোনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ।
উৎস: উদ্ভিদের কাণ্ড ও মূলের অগ্রভাগে উপস্থিত ভাজক কলার কোশগুলি উদ্ভিদ হরমোনের অন্যতম প্রধান উৎসস্থল। এ ছাড়া বীজপত্র, মুকুলিত কচি পাতা, ভ্রূণমূল, ভ্রূণমুকুল, বর্ধনশীল পাতার কোশ থেকেও হরমোন ক্ষরিত হয়।
পরিবহণের ধরন: উদ্ভিদ হরমোনগুলি উৎপত্তি স্থানের নিকটবর্তী ও দূরবর্তী স্থান উভয় অঞ্চলেই কার্যকরী হয়। উদ্ভিদ হরমোন উৎসস্থল থেকে প্রধানত ব্যাপন প্রক্রিয়ায় সংবহন কলার মাধ্যমে কার্যস্থলে পরিবাহিত হয়।
কাজ: অগ্র ও পার্শ্বীয় বৃদ্ধি, ফুলের পরিস্ফুটন, বীজের অঙ্কুরোদ্গম, মুকুলোদ্গম, সংবেদনশীলতা, জরারোধ প্রভৃতিতে হরমোন সাহায্য করে।
পরিণতি: কাজের পর উদ্ভিদ হরমোনগুলি বিনষ্ট হয়। বিভিন্ন হরমোন বিভিন্ন উৎসেচক বা অন্য কোনো শর্তের প্রভাবে বিনষ্ট হয়। যেমন, অক্সিন হরমোনটি আলোর প্রভাবে বা ইনডোল অ্যাসিটিক অ্যাসিড অক্সিডেজ নামক উৎসেচকের ক্রিয়ায় বিনষ্ট হয়। জিব্বেরেলিন, জিব্বেরেলিন অক্সিডেজের ক্রিয়ায় ও সাইটোকাইনিন, সাইটোকাইনিন অক্সিডেজের ক্রিয়ায় বিনষ্ট হয়।
10. অক্সিনের সংজ্ঞা লেখো। অক্সিনের বৈশিষ্ট্যগুলি কী?
উত্তর: অক্সিন: উদ্ভিদের অগ্রস্থ ভাজক কলা থেকে উৎপন্ন নাইট্রোজেনযুক্ত (ইনডোল বর্গযুক্ত) অম্লধর্মী বৃদ্ধি সহায়ক যে উদ্ভিদ হরমোন, মূলত নিম্নাভিমুখে পরিবাহিত হয় এবং উদ্ভিদের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে, তাকে অক্সিন বলে।
অক্সিনের বৈশিষ্ট্য: অক্সিন হরমোনের বৈশিষ্ট্যগুলি নীচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।
① অক্সিন উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সহায়তাকারী একপ্রকার হরমোন। ② এটি প্রধানত কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন নিয়ে গঠিত একপ্রকার জৈব অ্যাসিড। ③ ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে অক্সিন সংশ্লেষিত হয়। ④ এটি উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গ, প্রধানত ভূণমুকুলাবরণী, কাণ্ড ও মূলের অগ্রস্থ ভাজক কলা থেকে উৎপন্ন হয়ে ফ্লোয়েম কলার মাধ্যমে সাধারণত নিম্নাভিমুখে পরিবাহিত হয়। তবে মূলের অগ্রভাগে উৎপন্ন অক্সিন নীচ থেকে কিছুটা ওপরের দিকে পরিবাহিত হয়। ⑤ এই হরমোনের সংশ্লেষ সাধারণত আলোক উৎসের বিপরীতে হয়। ⑥ এর ক্রিয়া প্রধানত মেরুবর্তী এবং এটি ক্রিয়ার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ⑦ এটি জলে দ্রবণীয় হওয়ার ফলে ব্যাপন ক্রিয়ার মাধ্যমে সহজেই পরিবাহিত হয়। ⑧ আলোকের উৎসের বিপরীতে অর্থাৎ অন্ধকারে অক্সিনের ক্রিয়া সর্বাধিক। মূলের ক্ষেত্রে স্বল্প ঘনত্বে এবং কাণ্ডের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে অধিক ঘনত্বে অক্সিন কাজ করে।
11. উদ্ভিদদেহে অক্সিনের ভূমিকা লেখো। অনুরূপ প্রশ্ন,① অগ্রস্থ প্রকটতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে যে উদ্ভিদ হরমোন তার তিনটি ভূমিকা লেখো। ② উদ্ভিদের বৃদ্ধি সংক্রান্ত কোন্ কোন্ কাজ অক্সিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তার একটি তালিকা তৈরি করো।
উত্তর: অক্সিনের ভূমিকা: উদ্ভিদদেহে অক্সিন নিম্নলিখিত ভূমিকাগুলি পালন করে।
অগ্রস্থ প্রকটতা ও পার্শ্বীয় মুকুলের বৃদ্ধি হ্রাস: অক্সিনের প্রভাবে উদ্ভিদের কান্ডের অগ্রমুকুল বৃদ্ধি পায় ও পার্শ্বীয় বা কাক্ষিক মুকুলগুলির বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পার্শ্বীয় মুকুলের ওপর অগ্রমুকুলের এই প্রাধান্যকে অগ্রস্থ প্রকটতা বলে। এর ফলে কান্ড দৈর্ঘ্যে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, যদি অগ্রমুকুল কেটে ফেলা হয় সেক্ষেত্রে কাক্ষিক মুকুল দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে গাছটিকে ঝোপের আকৃতি দেয়।
কোশ বিভাজন ও কোশের আকার বৃদ্ধি: অক্সিন কোশে DNA-র পরিমাণ বৃদ্ধি করে কোশের বিভাজনে সাহায্য করে এবং কোশ বিভাজনের দ্বারা কোশের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া অক্সিন
কোশপ্রাচীরকে নমনীয় করে কোশের আকার ও আয়তন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই হরমোনের প্রভাবে পরিণত কোশে কোশ গহ্বরের সৃষ্টি হয় যার ফলে কোশ আয়তনে বৃদ্ধি পায়।
ফলের বৃদ্ধি: নিষেকের পর ডিম্বাশয়ে অক্সিনের পরিমাণ বাড়ে। এর প্রভাবে ডিম্বক বীজে এবং ডিম্বাশয় ফলে পরিণত হয়। অনেকসময় নিষেকের পূর্বেই ডিম্বাশয়ে অক্সিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তখন ডিম্বাশয় নিষেক ছাড়াই ফলে পরিণত হয়। কিন্তু নিষেক না হওয়ায় ডিম্বক বীজে পরিণত হয় না, ফলে বীজবিহীন ফল উৎপন্ন হয়। এইভাবে নিষেক ছাড়া ফল উৎপাদনকে পার্থেনোকার্পি বলা হয়। পার্থেনোকার্পিক ফল উৎপাদনে অক্সিনের ভূমিকা আছে।
মূলের বৃদ্ধি: অক্সিন উদ্ভিদের মূলের সৃষ্টি ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। উদ্ভিদের মূল স্বল্প পরিমাণ অক্সিনে অধিক সংবেদনশীল, অর্থাৎ অক্সিনের স্বল্প ঘনত্বে মূলের বৃদ্ধি অধিক হয়। বেশি ঘনত্বে অক্সিন মূলের বৃদ্ধি ব্যাহত করে। যে ঘনত্বের অক্সিনে মূলের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, সেই ঘনত্বের অক্সিনে কান্ডের পর্ব ও গোড়া থেকে অস্থানিক মূল সৃষ্টি হয়।
ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ: উদ্ভিদের ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদ্ভিদের ফোটোট্রপিক চলন এবং জিওট্রপিক চলন অক্সিনের অসম বণ্টনের ফলে সম্পন্ন হয়।
12. উদ্ভিদের ফোটোট্রপিক চলন এবং জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিনের ভূমিকা চিত্রসহ আলোচনা করো। [WBBSE Sample Paper] অথবা, উদ্ভিদের ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিন হরমোনের ভূমিকা লেখো।
উত্তর: ফোটোট্রপিক ও জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিনের ভূমিকা: উদ্ভিদের ফোটোট্রপিক চলন এবং জিওট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণে অক্সিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রধানত আলোক ও অভিকর্ষের প্রভাবে অক্সিনের অসম বণ্টনের দ্বারাই ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রিত হয়। বিজ্ঞানী ওয়েন্ট ও কোলোনি পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ করেছেন, আলোর প্রভাবে অক্সিনের কার্যকারিতা হ্রাস পায়। অর্থাৎ অক্সিন আলোক-সংবেদনশীল। এই কারণে সর্বদা আলোর উৎসের বিপরীতে বা অন্ধকারের দিকে অক্সিনের ঘনত্ব বেশি হয়। কাণ্ডের ক্ষেত্রে বেশি ঘনত্বের অক্সিনে, আলোর বিপরীত দিকে বৃদ্ধি অর্থাৎ অন্ধকারের দিকে কোশের বিভাজন বেশি হয়। ফলে কান্ড আলোর দিকে এবং অভিকর্ষের বিপরীতে বেঁকে যায়। অর্থাৎ কাণ্ডে আলোক-অনুকূলবর্তী ও অভিকর্ষ-প্রতিকূলবর্তী চলন ঘটে। মূল অক্সিনের স্বল্প ঘনত্বে অধিক সংবেদনশীল। ফলে মূলের ক্ষেত্রে অক্সিনের কম ঘনত্বের দিকে, অর্থাৎ আলোর দিকে কোশ বিভাজন হার বেশি হয়। তাই মূল আলোর বিপরীত দিকে তথা অভিকর্ষের দিকে বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ মূলে আলোক- প্রতিকূলবর্তী ও অভিকর্ষ-অনুকূলবর্তী চলন দেখা যায়। এইভাবে অক্সিনের অসম বণ্টনের দ্বারা উদ্ভিদের ফোটোট্রপিক বা আলোকবৃত্তি চলন এবং জিওট্রপিক বা অভিকর্ষবৃত্তি চলন নিয়ন্ত্রিত হয়।
5. Fill in The Blanks
1. সকল জীবই কোনো না কোনো উদ্দীপনায় ———————-দেয়।
উত্তর: সাড়া
2. লজ্জাবতী ———————–উদ্দীপনায় সাড়া দেয়।
উত্তর: স্পর্শ
3. বনচাঁড়াল উদ্ভিদে চলন দেখা যায়।
উত্তর: প্রকরণ
4. নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদে সামগ্রিক চলন বা দেখা যায়।
উত্তর: গমন
5. বাহ্যিক উদ্দীপক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উদ্ভিদ অঙ্গের বক্রচলনকে ———————-বলে। [Birbhum Zilla School]
উত্তর: ট্রপিক চলন
6. আলোক উৎসের বিপরীত দিকে উদ্ভিদের প্রধানমূলের আলোকবৃত্তি চলন দেখা যায়।
উত্তর: প্রতিকূল
7. অক্সিন হরমোন দ্বারা ———————- চলন নিয়ন্ত্রিত হয়।
উত্তর: ট্রপিক
৪. ট্রপিক চলন বাহ্যিক উদ্দীপকের অনুসারে ঘটে।
উত্তর: গতিপথ
9. চলনের ফলে উদ্ভিদ-অঙ্গের স্থায়ী বৃদ্ধি ঘটে।
উত্তর: ট্রপিক
10. সুন্দরী গাছের শ্বাসমূলের চলন হল ————————— ।
উত্তর: নেগেটিভ জিওট্রপিক চলন
11. উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বজ্রচলনকে ———————- চলন বলা হয়।
উত্তর: ন্যাস্টিক
12. ফোটোন্যাস্টিক ও ফোটোট্যাকটিক উভয়ক্ষেত্রে বাহ্যিক উদ্দীপক হল ——————————- ।
উত্তর: আলো
13. ন্যাস্টিক চলন বহিঃস্থ উদ্দীপকের ————————– দ্বারা প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়।
উত্তর: তীব্রতা
14. শিমগাছের পাতা অধিক —————————– বুজে যায়।
উত্তর:
15. আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু লজ্জাবতী এবং বনচাঁড়াল উদ্ভিদে বৈদ্যুতিক উদ্দীপনা পাঠিয়ে উদ্ভিদের ————————– ধর্মটি প্রমাণ করেন। সংবেদনশীলতা
উত্তর: তাপমাত্রায়