Class 10 Life Sciences Chapter 2 Solution
জীবনের প্রবহমানতা
1. MCQs Question Answer
1. ক্রোমোজোম শব্দটি প্রথম প্রবর্তন করেন-
(i) ফ্লেমিং
(ii) ওয়াটসন ও ক্রিক
(iii) ওয়ালডেয়ার
(iv) ল্যামার্ক
উত্তর: (iii) ওয়ালডেয়ার
2. বংশগতির ধারক ও বাহক হল-
(i) মেসোজোম
(ii) পলিজোম
(iii) ক্রোমোজোম
(iv) রাইবোজোম
উত্তর: (iii) ক্রোমোজোম
3. 1909 খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম ‘জিন’ শব্দটির প্রচলন করেন বিজ্ঞানী-
(i) রিম্যাক
(ii) ফারমার
(iii) জোহানসেন
(iv) পাস্তুর
উত্তর: (iii) জোহানসেন
4. DNA-তে অবস্থিত প্রোটিন সংশ্লেষের সংকেত বহনকারী উপাদান হল-
(i) ক্রোমোজোম
(ii) লোকাস
(iii) জিন
(iv) অ্যালোজোম
উত্তর: (iii) জিন
5. মানব দেহকোশে ক্রোমোজোম থাকে-
(i) 4n
(ii) 3n
(iii) 2n
(iv) n
উত্তর: (iii) 2n
6. স্ত্রীলোকের দেহকোশে অটোজোম ও X ক্রোমোজোমের অনুপাত-
(i) 44:1
(ii) 44:2
(iii) 23:1
(iv) 23:0
উত্তর: (ii) 44:2
7. স্ত্রীলোকের দেহকোশে অটোজোম ও Y ক্রোমোজোমের অনুপাত-
(i) 44:0
(ii) 44:1
(iii) 44:2
(iv) 23:1
উত্তর: (i) 44:0
৪. পুরুষের দেহকোশে অটোজোম ও X ক্রোমোজোমের অনুপাত-
(i) 44:0
(ii) 44:1
(iii) 44:2
(iv) 23:1
উত্তর: (ii) 44:1
9. মানুষের দেহকোশে অটোজোমের সংখ্যা-
(i) 44
(ii) 46
(iii) 23
(iv) 22
উত্তর: (i) 44
10. মানুষের জননকোশে অটোজোম সংখ্যা-
(i) 44
(ii) 23
(iii) 22
(iv) 46
উত্তর: (iii) 22
11. মানুষের জননকোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা-
(i) 46
(ii) 50
(iii) 23
(iv) 10
উত্তর: (iii) 23
12. মানুষের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিতগুলির মধ্যে কোন্ট্রি একজন স্বাভাবিক পুরুষের পক্ষে প্রযোজ্য?
(i) 44A + XX
(ii) 44A + XY
(iii) 44A + XXY
(iv) 44A + XYY
উত্তর: (ii) 44A + XY
13. মানুষের জননক্রোমোজোম হল-
(i) XX-XO
(ii) XX-YY
(iii) XX-XY
(iv) XO-XY
উত্তর: (iii) XX-XY
14. মানুষের ক্ষেত্রে সঠিক জোড়টি নির্বাচন করো-
(i) ডিম্বাণুর স্বাভাবিক ক্রোমোজোম বিন্যাস 22A + XX
(ii) ডিম্বাণুর স্বাভাবিক ক্রোমোজোম বিন্যাস 22A + Y
(iii) ডিম্বাণুর স্বাভাবিক ক্রোমোজোম বিন্যাস 22A + Y
(iv) ডিম্বাণুর স্বাভাবিক ক্রোমোজোম বিন্যাস 22A + XY
উত্তর: (iii) ডিম্বাণুর স্বাভাবিক ক্রোমোজোম বিন্যাস 22A + Y
15. ক্রোমোজোমের দৈর্ঘ্য বরাবর অবস্থিত তন্তু দুটির প্রত্যেকটিকে বলে-
(i) ক্রোমাটিড
(ii) ক্রোমোজোম
(iii) ক্রোমোনিমা
(iv) ক্রোমোমিয়ার
উত্তর: (i) ক্রোমাটিড
16. প্রতিটি ক্রোমোজোমে ক্রোমাটিডের সংখ্যা-
(i) 4
(ii) 2
(iii) 6
(iv) 8
উত্তর: (ii) 2
17. প্রতিটি ক্রোমাটিড লম্বালম্বিভাবে বিস্তৃত যে সূক্ষ্ম তন্তু দ্বারা গঠিত, তাকে বলে-
(i) ক্রোমাটিড
(ii) ক্রোমোজোম
(iii) ক্রোমোনিমা
(iv) ক্রোমোমিয়ার
উত্তর: (iii) ক্রোমোনিমা
18. সেন্ট্রোমিয়ার ক্রোমোজোমের যে অংশে থাকে তা হল-
(i) মুখ্য খাঁজে
(ii) গৌণ খাঁজে
(iii) টেলোমিয়ারে
(iv) স্যাটেলাইটে
উত্তর: (i) মুখ্য খাঁজে
19. ক্রোমোজোমের অধিক ঘনত্বযুক্ত, পুঁতির মতো অংশগুলিকে বলে-
(i) ক্রোমোনিমা
(ii) ক্রোমোমিয়ার
(iii) ক্রোমাটিড
(iv) সেন্ট্রোমিয়ার
উত্তর: (ii) ক্রোমোমিয়ার
20. স্যাটেলাইট থাকে ক্রোমোজোমের –
(i) ক্রোমাটিডে
(ii) গৌণ খাঁজে
(iii) সেন্ট্রোমিয়ারে
(iv) মুখ্য খাঁজে
উত্তর: (iv) মুখ্য খাঁজে
21. কোশ বিভাজনের সময়ে ক্রোমোজোমের মুখ্য খাঁজস্থিত যে অংশের সঙ্গে বেমতন্ডু যুক্ত হয়, তা হল-
(i) ক্রোমোমিয়ার
(ii) সেন্ট্রোমিয়ার
(iii) ক্রোমাটিড
(iv) সেন্ট্রোজোম
উত্তর: (ii) সেন্ট্রোমিয়ার
22. যে ক্রোমোজোমের মাঝখানে সেন্ট্রোমিয়ার অবস্থিত সেটি হল-
(i) টেলোসেন্ট্রিক
(ii) অ্যাক্রোসেন্ট্রিক
(iii) মেটাসেন্ট্রিক
(iv) সাবমেটাসেন্ট্রিক
উত্তর: (iii) মেটাসেন্ট্রিক
23. ইংরেজি ‘V’ আকৃতির ক্রোমোজোমকে বলে-
(i) মেটাসেন্ট্রিক
(ii) টেলোসেন্ট্রিক
(iii) অ্যাক্রোসেন্ট্রিক
(iv) সাবমেটাসেন্ট্রিক
উত্তর: (i) মেটাসেন্ট্রিক
24. ‘J’ আকৃতির ক্রোমোজোমকে বলা হয়-
(i) টেলোসেন্ট্রিক
(ii) অ্যাক্রোসেন্ট্রিক
(iii) সাবমেটাসেন্ট্রিক
(iv) মেটাসেন্ট্রিক
উত্তর: (ii) অ্যাক্রোসেন্ট্রিক
25. যে ক্রোমোজোমের শেষপ্রান্তে সেন্ট্রোমিয়ার থাকে, তাকে বলে-
(i) মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম
(ii) সাবমেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম
(iii) অ্যাক্রোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম
(iv) টেলোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম
উত্তর: (iv) টেলোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম
26. যে ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ার থাকে না, তাকে বলে-
(i) মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম
(ii) সাব-মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম
(iii) আসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম
(iv) টেলোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম
উত্তর: (iii) আসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম
27. সেন্ট্রোমিয়ারের উপস্থিতি অনুসারে ক্রোমোজোমের বিভিন্ন গঠন দেখা যায় যে দশায়, তা হল-
(i) প্রোফেজ
(ii) মেটাফেজ
(iii) টেলোফেজ
(iv) অ্যানাফেজ
উত্তর: (ii) মেটাফেজ
28. সেন্ট্রোমিয়ারযুক্ত মুখ্য খাঁজ ছাড়া ক্রোমোজোমে অন্য যে-কোনো খাঁজ থাকলে তাকে বলে-
(i) গৌণ খাঁজ
(ii) প্রথম খাঁজ
(iii) প্রাথমিক খাঁজ
(iv) দ্বিতীয় খাঁজ
উত্তর: (i) গৌণ খাঁজ
29. গৌণ খাঁজ বা NOR পরবর্তী ক্রোমোজোমীয় অংশকে বলে-
(i) স্টেম বডি
(ii) সেন্ট্রোমিয়ার
(iii) SAT-বডি
(iv) সেন্ট্রোজোম
উত্তর: (iii) SAT-বডি
30. ক্রোমোজোমের প্রান্তদ্বয়ের নাম হল-
(i) সেন্ট্রোমিয়ার
(ii) টেলোমিয়ার
(iii) নিউক্লিওলার অর্গানাইজার
(iv) স্যাটেলাইট
উত্তর: (ii) টেলোমিয়ার
31. NOR ক্রোমোজোমের যে অংশে বিন্যস্ত থাকে-
(i) প্রাথমিক খাঁজ
(ii) গৌণ খাঁজ
(iii) নিউক্লিওলাস
(iv) নিউক্লিওপ্লাজম
উত্তর: (ii) গৌণ খাঁজ
32. কাইনেটোকোর যা দিয়ে গঠিত তা হল-
(i) ফ্যাট
(ii) শর্করা
(iii) ফসফরাস
(iv) প্রোটিন
উত্তর: (iv) প্রোটিন
33. ক্রোমোজোমে DNA-র শতকরা মাত্রা-
(i) 50
(ii) 90
(iii) 33.3
(iv) 100
উত্তর: (iii) 33.3
34. প্রতিটি রাইবোনিউক্লিক ও ডি-অক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড অণু বহু- সংখ্যক যে উপাদানটি দ্বারা তৈরি, তা হল-
(i) ফসফেট
(ii) N₂-ক্ষারক
(iii) নিউক্লিওসাইড
(iv) নিউক্লিওটাইড
উত্তর: (iv) নিউক্লিওটাইড
35. DNA ও RNA-এর গঠনগত এককটি হল-
(i) পেন্টোজ শর্করা
(ii) ফসফেট
(iii) অ্যামিনো অ্যাসিড
(iv) নিউক্লিওটাইড
উত্তর: (iv) নিউক্লিওটাইড
36. নীচের কোন্টি DNA-এর গঠনগত উপাদান নয়?
(i) ডিঅক্সিরাইবোজ শর্করা
(ii) উরাসিল ক্ষারক
(iii) থাইমিন ক্ষারক
(iv) ফসফোরিক অ্যাসিড
উত্তর: (ii) উরাসিল ক্ষারক
37. নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষার + পেন্টোজ শর্করা হল-
(i) RNA
(ii) নিউক্লিওটাইড
(iii) নিউক্লিওসাইড
(iv) DNA
উত্তর: (iv) DNA
38. নিউক্লিওটাইডের রাসায়নিক উপাদান সংক্রান্ত নীচের কোন্টি সঠিক-
(i) 5-C যুক্ত শর্করা + ফসফরিক অ্যাসিড = নিউক্লিওটাইড
(ii) N₂ যুক্ত শর্করা + ফসফরিক অ্যাসিড = নিউক্লিওটাইড
(iii) 5-C যুক্ত শর্করা + N2 যুক্ত ক্ষারক = নিউক্লিওটাইড
(iv) 5-C যুক্ত শর্করা + N2 যুক্ত ক্ষারক + ফসফরিক অ্যাসিড
উত্তর: (iii) 5-C যুক্ত শর্করা + N2 যুক্ত ক্ষারক = নিউক্লিওটাইড
39. DNA-তে গুয়ানিনের পরিপূরক ক্ষার মূলকটি হল-
(i) ইউরাসিল
(ii) অ্যাডেনিন
(iii) সাইটোসিন
(iv) থাইমিন
উত্তর: (iii) সাইটোসিন
40. DNA-র শর্করাটির নাম-
(i) ইবোজ
(ii) গ্যাল্যাকটোজ
(iii) ডিঅক্সিরাইবোজ
(iv) গ্লুকোজ
উত্তর: (iii) ডিঅক্সিরাইবোজ
41. নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারগুলির মধ্যে যেটি DNA-তে থাকে না, কিন্তু RNA-তে থাকে, সেটি হল-
(i) ইউরাসিল
(ii) সাইটোসিন
(iii) অ্যাডেনিন
(iv) থাইমিন
উত্তর: (i) ইউরাসিল
42. অ্যাডেনিন, থাইমিনের সঙ্গে কয়টি বন্ড দ্বারা যুক্ত থাকে?
(i) 3টি
(ii) 2টি
(iii) 4টি
(iv) 5টি
উত্তর: (ii) 2টি
43. গুয়ানিন সাইটোসিনের সঙ্গে কয়টি বন্ড দ্বারা যুক্ত থাকে?
(i) ২টি
(ii) 3টি
(iii) 1টি
(iv) 4টি
উত্তর: (ii) 3টি
44. DNA অণুর দ্বিতন্ত্রী নকশা প্রণয়ন করেন-
(i) ল্যামার্ক
(ii) হ্যালডেন
(iii) ওয়াটসন ও ক্লিক
(iv) ফ্লেমিং
উত্তর: (iii) ওয়াটসন ও ক্লিক
45. দ্বিতন্ত্রী DNA অণুর একটি সম্পূর্ণ প্যাঁচের মধ্যেকার দূরত্ব হল-
(i) 3.4Å
(ii) 34Å
(iii) 20Å
(iv) 10Å
উত্তর: (ii) 34Å
46. নন্-জেনেটিক RNA যতপ্রকার, তা হল-
(i) তিনপ্রকার
(ii) চার- প্রকার
(iii) পাঁচপ্রকার
(iv) ছয়প্রকার
উত্তর: (i) তিনপ্রকার
47. প্রোটিন সংশ্লেষে প্রত্যক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করে-
(i) mRNA
(ii) tRNA
(iii) rRNA
(iv) SRNA
উত্তর: (i) তিনপ্রকার
48. নিউক্লিয়াসে কোন্ প্রোটিনটি সর্বাধিক পাওয়া যায়?
(i) নন্-হিস্টোন প্রোটিন
(ii) হিস্টোন প্রোটিন
(iii) প্রশম প্রোটিন
(iv) সর্বপ্রকারের প্রোটিন
উত্তর: (ii) হিস্টোন প্রোটিন
49. ক্রোমোজোমের হিস্টোন প্রোটিন হল-
(i) দুইপ্রকার
(ii) তিনপ্রকার
(iii) পাঁচপ্রকার
(iv) ছয়প্রকার
উত্তর: (iii) পাঁচপ্রকার
50. ক্রোমোজোমের আম্লিক প্রোটিনে কোন্ অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে না?
(i) ভ্যালিন
(ii) ট্রিপটোফ্যান
(iii) লাইসিন
(iv) লিউসিন
উত্তর: (iii) লাইসিন
51. ইউক্যারিওটিক কোশের ক্রোমোজোম সংগঠক প্রধান প্রোটিনটি হল-
(i) লাইসিন
(ii) হিস্টোন
(iii) লিউসিন
(iv) ভ্যালিন
উত্তর: (ii) হিস্টোন
2. Very Short Question Answer
1. ক্রোমোজোম নামকরণ কে করেন?
উত্তর: ভন ওয়ালডেয়ার এবং হার্জ।
2. ক্রোমোজোম কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর: শ্লেইডেন, ভিরচো ও বাটসলি বিজ্ঞানীগণ ক্রোমোজোম অবিষ্কার করেন।
3. মানুষের সবগুলি ক্রোমোজোমে মোট কত জিন আছে?
উত্তর: মানুষের ক্রোমোজোমে সবগুলি প্রায় 21,000 জিন আছে।
4. জিন কাকে বলে?
উত্তর: জিন হল ক্রোমোজোমে অবস্থিত DNA-র একটি অনুক্রম যা কার্যকরী প্রোটিন সংশ্লেষ দ্বারা বংশগত বৈশিষ্ট্য ও কোশীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।
5. কোশের কোন্ অংশে জিন অবস্থিত?
উত্তর: কোশের মধ্যে ক্রোমোজোমে জিন অবস্থিত।
6. ক্যারিওটাইপ কাকে বলে?
উত্তর: কোনো জীবের ক্রোমোজোমগুলির একত্রিত ছবিকে তার ক্যারিওটাইপ বলে।
7. মানুষের দেহকোশে কী কী প্রকারের যৌন ক্রোমোজোম দেখা যায়?
উত্তর: মানুষের দেহকোশে দুই প্রকারের যৌন ক্রোমোজোম দেখা যায়, এগুলি হল X এবং Y।
৪ . একটি হ্যাপ্লয়েড কোশের উদাহরণ দাও।
উত্তর: একটি হ্যাপ্লয়েড কোশের উদাহরণ হল জননকোশ অর্থাৎ শুক্রাণু ও ডিম্বাণু (n)।
9. মানুষের দেহকোশে ক্রোমোজোমের সংখ্যা কত?
উত্তর: 461
10. মানুষের শুক্রাণুতে অবস্থিত অটোজোমের সংখ্যা কত?
উত্তর: 221
11. ক্রোমোজোম জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করে কোন্ ধরনের কোশে?
উত্তর: ডিপ্লয়েড কোশে।
12. একটি ট্রিপ্লয়েড কোশের উদাহরণ দাও।
উত্তর: একটি ট্রিপ্লয়েড কোশের উদাহরণ হল গুপ্তবীজী উদ্ভিদের সস্য নিউক্লিয়াস (3n)।
13. ক্রোমোজোমের দৈর্ঘ্য বরাবর অবস্থিত দুটি তত্ত্বর প্রত্যেকটিকে কী বলে? অথবা, সেন্ট্রোমিয়ারের দুইপাশের ক্রোমোজোমীয় অংশদ্বয়কে কী বলে?
উত্তর: ক্রোমাটিড।
14. প্রতিটি ক্রোমাটিড, লম্বালম্বিভাবে বিস্তৃত যে সূক্ষ্ম তন্তু দ্বারা গঠিত হয়, তাকে কী বলে?
উত্তর: ক্রোমোনিমা।
15. কীসের সাহায্যে ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোম বেমতত্ত্ব বা স্পিন্ডল ফাইবার-এর সঙ্গে যুক্ত থাকে?
উত্তর: সেন্ট্রোমিয়ার বা কাইনেটোকোরের সাহায্যে ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোম বেমতন্তু বা স্পিন্ডল ফাইবার-এর সঙ্গে যুক্ত থাকে।
16. সেন্ট্রোমিয়ার কোথায় থাকে?
উত্তর: সেন্ট্রোমিয়ার ক্রোমোজোমের প্রাথমিক খাঁজ অংশে থাকে।
17. NOR কোথায় থাকে?
উত্তর: মানুষের 13, 14, 15, 21 ও 22 নং ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ার ও টেলোমিয়ারের মধ্যবর্তী স্থানে NOR অবস্থান করে।
18. ক্রোমোজেমের কোন্ অংশ বার্ধক্য ও মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ করে?
উত্তর: টেলোমিয়ার।
19. নিউক্লিক অ্যাসিডের গঠনগত একক কোন্টি?
উত্তর: নিউক্লিওটাইড।
20. DNA-তে দুটি নিউক্লিওটাইডের মধ্যে দূরত্ব কত?
উত্তর: 3.4 Å
21. RNA-এর সম্পূর্ণ নাম লেখো।
উত্তর: RNA-এর সম্পূর্ণ নাম হল রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড।
22. কোন্ উপাদানটি নিউক্লিওটাইডে থাকলেও নিউক্লিওসাইডে থাকে না?
উত্তর: ফসফেট-মূলক।
23. ক্রোমোজোমে কী কী প্রোটিন থাকে?
উত্তর: ক্রোমোজোমে প্রধানত দুই ধরনের প্রোটিন থাকে-হিস্টোন প্রোটিন (যেমন-H1, H2A, H2B, H3 ও H4) এবং নন্-হিস্টোন প্রোটিন (যেমন-প্রোটামিন)।
24. ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমে উপস্থিত ক্ষারীয় প্রোটিন হিস্টোনে
উত্তর: লাইসিন, আরজিনিন।
25. মানুষের ক্রোমোজোম সেটে তুমি কীভাবে ক্রোমোেজাম চিনবে?
উত্তর: ① ক্রোমোজোমের আকার ও আকৃতি দেখে। ② গৌণ খাঁজের সংখ্যা ও অবস্থান দেখে।
26. ক্রোমাটিন কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর: ক্রোমাটিন দু-প্রকারー① ইউক্রোমাটিন এবং ② হেটেরোক্রোমাটিন।
27. ইউক্রোমাটিনের কাজ কী?
উত্তর: ইউক্রোমাটিন অংশে বেশি পরিমাণ DNA থাকায়, এটি প্রজননিক পদার্থ বা জিন ধারণ করে।
28. ক্রোমোজোমের জিনগতভাবে নিষ্ক্রিয় গাঢ় রঞ্জিত অংশকে কী বলে?
উত্তর: হেটেরোক্রোমাটিন।
29. হেটেরোক্রোমাটিনের কাজ কী?
উত্তর: হেটেরোক্রোমাটিনে কম পরিমাণে DNA থাকায় এটি জিনের সংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় ছেদ অংশ হিসেবে কাজ করে, এ ছাড়া এই অংশ রাইবোজোম সংশ্লেষে অংশ নেয়।
30. ক্রোমোজোমের গঠনগত একক কী?
উত্তর: নিউক্লিওজোম।
3. Short Question Answer
1. ক্রোমোজোম ও জিনের সম্পর্ক কী?
উত্তর: ক্রোমোজোমে অবস্থিত DNA- তে সরলরৈখিক সজ্জাক্রমে জিন পরপর সজ্জিত থাকে। ② একটি ক্রোমোজোমে নির্দিষ্ট সংখ্যক জিন থাকে। ③ ক্রোমোজোমে জিনগুলির প্রকৃতিও নির্দিষ্ট থাকে। ④ ক্রোমোজোমীয় অংশ বিলুপ্ত হলে ওই অংশের জিনও বিলুপ্ত হয়। ফলে নানা মিউটেশন-জনিত সমস্যা দেখা দেয়।
2. ক্রোমাটিন জালিকা ও ক্রোমোজোমের সম্পর্ক কী?
উত্তর: DNA ও প্রোটিন সংগঠনের দুটি রূপ হল ক্রোমাটিন জালিকা এবং ক্রোমোজোম। কোশের ইনটারফেজ দশায় লম্বা সুতোর মতো কম ঘনত্বের গঠনকে বলে ক্রোমাটিন জালিকা। পক্ষান্তরে, কোশ বিভাজন দশায় দণ্ডাকার, বেশি ঘনত্বের পাকানো (coiled) গঠনকে বলে ক্রোমোজোম। অর্থাৎ, একই উপাদানের দুটি ভিন্ন দশা হল ক্রোমাটিন জালিকা ও ক্রোমোজোম।
3. ক্রোমোজোম কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর: কাজের ভিত্তিতে ক্রোমোজোম প্রধানত দুই প্রকার-অটোজোম
বা দেহ ক্রোমোজোম এবং সেক্স ক্রোমোজোম বা যৌন ক্রোমোজোম বা অ্যালোজোম।
4. অটোজোম বলতে কী বোঝ? মানুষের কয়টি অটোজোম আছে?
উত্তর: অটোজোম: নিউক্লিয়াসে অবস্থিত দেহজ বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী ক্রোমোজোমগুলিকে অটোজোম বলে। [ মানুষের অটোজোম: মানুষের দেহকোশের 23 জোড়া ক্রোমোজোমের মধ্যে 22 জোড়া হল অটোজোম।
5. অ্যালোজোম বা সেক্স ক্রোমোজোম বলতে কী বোঝ? মানুষের অ্যালোজোম কোনগুলি?
উত্তর: অ্যালোজোম: যেসব ক্রোমোজোম প্রাণীদেহের লিঙ্গ নির্ধারণ করে তাদের সেক্স ক্রোমোজোম বা অ্যালোজোম বলে।
[ মানুষের অ্যালোজোম: মানুষের দেহকোশে একজোড়া অ্যালোজোম বর্তমান। মানুষের অ্যালোজোম দুই প্রকার, যেমন-X এবং Y।
6. হ্যাপ্লয়েড কোশ কী?
উত্তর: যে সকল জীবকোশে ডিপ্লয়েড সংখ্যার অর্ধেক ক্রোমোজোম থাকে, তাদের হ্যাপ্লয়েড কোশ বলে। উদাহরণ-মানুষের শুক্রাণু বা ডিম্বাণুতে ক্রোমোজোম সংখ্যা দেহকোশের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়, এদেরকে হ্যাপ্লয়েড কোশ বলে, অর্থাৎ জননকোশ হল হ্যাপ্লয়েড ক্রোমোজোমযুক্ত কোশ।
7. ডিপ্লয়েড কোশ কী?
উত্তর: যে সকল জীবকোশে বিভিন্ন রকমের ক্রোমোজোম জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করে, তাদের ডিপ্লয়েড (2n) কোশ বা ডিপ্লয়েড ক্রোমোজোমযুক্ত কোশ বলে।
8. 44 XY এবং 44 XX ক্রোমোজোম বলতে কী বোঝ?
উত্তর: মানুষের ক্ষেত্রে 46টি ক্রোমোজোম থাকে। এর মধ্যে পুরুষের দেহে 44টি অটোজোম এবং XY নামে দুটি যৌন ক্রোমোজোম এবং মহিলার দেহে 44টি অটোজোম এবং XX নামে দুটি যৌন ক্রোমোজোম থাকে। সুতরাং, 44A + XY বলতে পুরুষ ও 44A + XX বলতে মহিলাকে বোঝায়।
9. ক্রোমাটিড কাকে বলে?
উত্তর: কোশ বিভাজনের মেটাফেজ দশায় প্রতিটি ক্রোমোজোমে দুটি অনুদৈর্ঘ্য প্রতিসম অর্ধাংশ পাওয়া যায়। এরা ক্রোমোজোমের মাঝে অবস্থিত বিশেষ খাঁজ তথা সেন্ট্রোমিয়ার নামক অংশে পরস্পর যুক্ত থাকে। এদের প্রতিটিকে ক্রোমাটিড বলে।
10. ক্রোমোমিয়ার কাকে বলে?
উত্তর: ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমে বিন্যস্ত নিষ্ক্রিয় কুণ্ডলীত DNA ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত দানাদার গঠনকে ক্রোমোমিয়ার বা ইডিওমিয়ার (idiomere) বলে। এগুলি মিয়োসিস ও মাইটোসিসের প্রোফেজ দশায় দেখতে পাওয়া যায়।
11. প্রাথমিক খাঁজ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: সেন্ট্রোমিয়ার-যুক্ত, ক্রোমোজোমের অরঞ্জিত সংকুচিত স্থান, যেখানে ক্রোমোজোম বাহু ভাঁজ হয়, তাকে প্রাথমিক খাঁজ বা মুখ্য সংকোচন বলে।
12. সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে ক্রোমোজোম কত প্রকারের ও কী কী?
উত্তর: সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে ক্রোমোজোম চার প্রকারের, যথা-① টেলোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম, ② অ্যাক্রোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম, ③ সাবমেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম, ④ মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম।
13. টেলোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম কাকে বলে?
উত্তর: যে ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ারটি ক্রোমোজোমের একেবারে প্রান্তে অবস্থান করে তাকে টেলোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে। অ্যানাফেজীয় চলনকালে এই ক্রোমোজোম দেখতে ‘I’ আকৃতি মতো হয়।
14. অ্যাক্রোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম কাকে বলে?
উত্তর: যে ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ারটি ক্রোমোজোমের মধ্যবিন্দু থেকে দূরে কিন্তু কোনো একটি প্রান্তের কাছাকাছি থাকে তাদের অ্যাক্রোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে। এর ফলে ক্রোমোজোমের একটি বাহু বেশ বড়ো এবং অন্য বাহুটি বেশ ছোটো হয়। অ্যানাফেজীয় চলনকালে এই ধরনের ক্রোমোজোম দেখতে অনেকটা ‘J’ আকৃতির মতো হয়।
15. সাবমেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম কাকে বলে?
উত্তর: যে ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ারটি ক্রোমোজোমের মধ্যবিন্দু থেকে সামান্য দূরে অবস্থান করে এবং এর ফলে ক্রোমোজোমের বাহুদুটি পরস্পর অসমান হয় তাকে সাবমেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে। অ্যানাফেজীয় চলনকালে এই ধরনের ক্রোমোজোম দেখতে অনেকটা ‘L’ আকৃতির হয়।
16. মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম কাকে বলে?
উত্তর: যে ক্রোমোজোমে সেন্ট্রোমিয়ারটি ক্রোমোজোমের প্রায় মাঝখানে অবস্থান করে এবং এর ফলে ক্রোমোজোমের বাহুদুটি পরস্পর প্রায় সমান হয়, তাকে মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে। অ্যানাফেজীয় চলনকালে এই প্রকার ক্রোমোজোম দেখতে অনেকটা ‘V’ আকৃতির মতো হয়।
17. গৌণ খাঁজ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ক্রোমোজোমে মুখ্য খাঁজ ছাড়াও এক বা একাধিক অরঞ্জিত অংশ থাকলে তাকে গৌণ খাঁজ বলা হয়। এই স্থানে নিউক্লিওলাস যুক্ত থাকে এবং স্থানটি নিউক্লিওলাসের গঠনে সাহায্য করে।
18. . NOR-এর কাজ লেখো। অথবা, NOR-এর গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: NOR গৌণ খাঁজের অন্তর্গত ক্রোমোজোমীয় অংশ যা রাইবোজোমাল RNA তৈরির জিন বহন করে। ② এই অংশ থেকে টেলোফেজ দশায় নিউক্লিওলাস গঠিত হয়।
19. স্যাটেলাইট কাকে বলে?
উত্তর: গৌণ খাঁজের পরবর্তী ক্ষুদ্র ক্রোমোজোমীয় খণ্ডকটিকে স্যাটেলাইট বলে। মানুষের 13, 14, 15 প্রভৃতি ক্রোমোজোমে গৌণ খাঁজ থাকে বলে ওইগুলিতে প্রান্তীয় স্যাটেলাইট দেখা যায়।
20. স্যাট ক্রোমোজোম কাকে বলে?
উত্তর: যেসব ক্রোমোজোমে গৌণ খাঁজ দ্বারা পৃথকীকৃত প্রান্তীয় খণ্ডক অংশ দেখা যায় তাকে স্যাটেলাইট ক্রোমোজোম বা স্যাট ক্রোমোজোম বলে। NOR পরবর্তী অংশটিই হল স্যাটেলাইট।
4. Long Question Answer
1 ক্রোমোজোম কাকে বলে?
ক্রোমোজোম, DNA ও জিনের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ব্যাখ্যা করো।
অনুরূপ প্রশ্ন, ক্রোমাটিন জালিকা ও ক্রোমোজোমের মধ্যে সম্পর্ক উল্লেখ করো।
উত্তর: ক্রোমোজোম: ইউক্যারিওটিক কোশের নিউক্লিয়াসে অবস্থিত DNA অণু ও প্রোটিন দ্বারা গঠিত সূত্রাকার বা দণ্ডাকার আত্মপ্রজননশীল যে সজীব সংগঠন জীবের যাবতীয় বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারক, বাহক ও নিয়ন্ত্রকরূপে কাজ করে তাকে ক্রোমোজোম বলে।
[⇨ ক্রোমোজোম, DNA ও জিনের আন্তঃসম্পর্ক: কোশের নিউক্লিয়াসের কতকগুলি সূক্ষ্ম সুতোর মতো জালকাকার গঠন দেখা যায়। এগুলি হল প্যাঁচানো সিঁড়ির মতো দ্বিতন্ত্রী গঠন যারা পরস্পরকে জড়িয়ে থাকে। এই গঠনগুলি হল DNA যা একটি বৃহৎ জৈব অণু। নিউক্লিয়াসে তারা সম্পূর্ণ কুণ্ডলীকৃত অবস্থায় থাকে। কোশ যখন বিভাজিত হয় না, তখন আংশিক উন্মুক্ত অবস্থায় বিন্যস্ত DNA-কে নিউক্লীয় জালিকা বা ক্রোমাটিন জালিকা বলে। কোশ বিভাজনের সময় DNA কুণ্ডলিত হয়। DNA তন্ত্রী বিভিন্ন প্রোটিনকে দৃঢ়ভাবে পাকিয়ে লুপ তৈরি করে ঘন কুণ্ডলী গঠন করে। এই কুণ্ডীলকৃত গঠনকে ক্রোমোজোম বলে। অর্থাৎ, ক্রোমাটিন জালিকা ও ক্রোমোজোম হল একই DNA-এর যথাক্রমে স্বল্প ও অধিক কুণ্ডলীকৃত অবস্থা। আবার, ক্রোমোজোমে যে DNA থাকে, তার নির্দিষ্ট অংশ নির্দিষ্ট প্রোটিন সংশ্লেষের সংকেত বহন করে। DNA-এর এই এক-একটি অংশই হল জিন, যা জীবের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য বহন করে।
2. আদর্শ ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের অঙ্গসংস্থানিক বা ভৌত গঠন আলোচনা করো।
অথবা, ইউক্যারিওটিক কোশের ক্রোমোজোমের বহির্গঠন উল্লেখ করো।
উত্তর: ক্রোমোজোমের ভৌত গঠন: কোশ বিভাজনের মেটাফেজ দশায় ক্রোমোজোমের বিভিন্ন অংশ সবচেয়ে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। এই দশায় ক্রোমোজোমের যেসব অংশ দেখা যায়, সেগুলি হল-
① ক্রোমাটিড: কোশ বিভাজনের মেটাফেজ দশায় প্রতিটি ক্রোমোজোমে লম্বালম্বিভাবে (অনুদৈর্ঘ্যভাবে) যে দুটি সমান (সমতুল) অংশ দেখা যায়, তাদের প্রতিটিকে ক্রোমাটিড বলে।
② ক্রোমোনিমা: প্রতিটি ক্রোমাটিড যে সূক্ষ্ম তন্তু দ্বারা গঠিত, তাদের ক্রোমোনিমা (একবচনে ক্রোমোনিমাটা, বহুবচনে ক্রোমোনিমা) বলে।
③ ক্রোমোমিয়ার: ক্রোমোনিমা সূত্রে পুঁতির মতো সারিবদ্ধভাবে সজ্জিত গোলাকার সংগঠনকে ক্রোমোমিয়ার বলে।
④ মুখ্য খাঁজ ও সেন্ট্রোমিয়ার: প্রত্যেক ক্রোমোজোমে একটি নির্দিষ্ট রঞ্জিত সংকোচন স্থান থাকে, তাকে মুখ্য খাঁজ বা প্রাথমিক খাঁজ বলে। ক্রোমোজোমের মুখ্য খাঁজ অংশে অবস্থিত যে গঠন ক্রোমাটিড দুটিকে পরস্পর সংলগ্ন করে রাখে ও কোশ বিভাজনকালে ক্রোমোজোমকে বেমতন্ডুর সঙ্গে যুক্ত করে, তাকে সেন্ট্রোমিয়ার বলে। সেন্ট্রোমিয়ারের চাকতির মতো গঠন যা বেম সংলগ্ন হয়, তাদের কাইনেটোকোর বলে। সেন্ট্রোমিয়ারের দুই পাশে ক্রোমাটিডের দুটি অংশকে ক্রোমোজোমের বাহু (arm) বলে। এর ছোটো বাহুটিকে p বাহু ও বড়ো বাহুটিকে ৭ বাহু বলে।
⑤ গৌণ খাঁজ: অনেক সময় প্রাথমিক খাঁজ ছাড়াও ক্রোমোজোমে অপর এক বা একাধিক খাঁজ দেখা যায়। একে গৌণ খাঁজ বলে। এই অংশে নিউক্লিওলাস যুক্ত থাকে। এই অংশটি কোশ বিভাজনের টেলোফেজ দশায় নিউক্লিওলাসের পুনর্গঠনে সাহায্য করে বলে একে নিউক্লিওলাস সংগঠক অঞ্চল বা নিউক্লিওলার অর্গানাইজার রিজিওন (NOR) বলে।
⑥ স্যাটেলাইট: গৌণ খাঁজ পরবর্তী ক্রোমোজোমীয় অংশকে স্যাটেলাইট বা SAT বডি বলে।
⑦ টেলোমিয়ার: ক্রোমোজোমের প্রান্ত দুটিকে টেলোমিয়ার বলে। এটি ক্রোমোজোমের নিষ্ক্রিয় অংশ। কোশের অবিভাজন দশায় DNA প্রতিলিপি গঠনে টেলোমিয়ার সাহায্য করে। এ ছাড়া নিকটবর্তী দুটি ক্রোমোজোমের প্রান্ত জুড়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে এবং প্রয়োজনমতো কোশের বার্ধক্য ও মৃত্যু ঘটায়।
3. একটি আদর্শ ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের অংশগুলির নাম লেখো। সেন্ট্রোমিয়ার ও টেলোমিয়ারের কাজ কী কী? 3+2
উত্তর: আদর্শ ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের অংশ: একটি আদর্শ ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের অঙ্গসংস্থানে প্রাপ্ত অংশগুলি হল- ① ক্রোমাটিড, ② মুখ্য খাঁজ ও সেন্ট্রোমিয়ার ও গৌণ খাঁজ, ④ স্যাটেলাইট এবং টেলোমিয়ার।
[→ সেন্ট্রোমিয়ার ও টেলোমিয়ারের কাজ: এই অংশের জন্য ‘রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর’-এর 2 নং প্রশ্নের উত্তরের ‘মুখ্য খাঁজ ও সেন্ট্রোমিয়ার’ এবং ‘টেলোমিয়ার’ অংশ দ্রষ্টব্য।
4. ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠন সম্পর্কে আলোচনা করো।
অথবা, ক্রোমোজোমের রাসায়নিক উপাদানগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।অনুরূপ প্রশ্ন, ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠন একটি ছকের সাহায্যে দেখাও।
উত্তর: ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠন: ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোম রাসায়নিকভাবে নিউক্লিক অ্যাসিড (DNA ও RNA), প্রোটিন (ক্ষারীয় এবং আম্লিক) এবং ধাতব আয়ন থাকে। সমস্ত ইউক্যারিওটিক কোশে ক্রোমোজোমের 90% হল DNA ও ক্ষারীয় (হিস্টোন) প্রোটিন, বাকি 10% হল RNA ও আম্লিক প্রোটিন (নন্-হিস্টোন) থাকে।
① ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (DNA): DNA হল, ডিঅক্সিরাইবোজ শর্করা, ফসফেট ও নাইট্রোজেন-ঘটিত ক্ষার নির্মিত স্বপ্রজননক্ষম যে দ্বিতন্ত্রী নিউক্লিক অ্যাসিড অণু কোশীয় কাজের নিয়ন্ত্রক এবং বংশগতি বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক। দ্বিতন্ত্রী DNA অণু লোহার প্যাঁচানো সিঁড়ির মতো বা হেলিক্সের আকৃতির হয়। এই সিঁড়ির হাতল শর্করা দ্বারা নির্মিত ও ধাপগুলি নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষার দ্বারা গঠিত। এই ক্ষার আবার দুই প্রকার, যথা [i] পিউরিন-অ্যাডেনিন (A) ও গুয়ানিন (G) এবং [ii] পিরিমিডিন-থাইমিন (T) ও সাইটোসিন
(C)। অ্যাডেনিন, থাইমিনের সাথে ও গুয়ানিন, সাইটোসিনের সাথে যথাক্রমে দুটি ও তিনটি হাইড্রোজেন বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে।
② রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (RNA): RNA হল, DNA থেকে সংশ্লেষিত রাইবোজ শর্করা, ফসফেট ও নাইট্রোজেন-ঘটিত ক্ষার নিয়ে গঠিত একতন্ত্রী গঠন। RNA-এর ক্ষারগুলি DNA-এর মতোই, কেবল RNA-তে থাইমিনের (T) পরিবর্তে ইউরাসিল (U) নামক পিরিমিডিন থাকে।
③ হিস্টোন প্রোটিন: ক্রোমোজোমে অবস্থিত ক্ষারীয় প্রোটিনগুলিকে হিস্টোন বলে। ক্ষারীয় প্রকৃতির হওয়ায় এরা সহজেই আম্লিক DNA-এর সাথে যুক্ত হতে পারে। এগুলি পাঁচ প্রকার, যথা-H1, H2A, H2B, H3 এবং H4।
④ নন্-হিস্টোন প্রোটিন: ক্রোমোজোমে কিছু আম্লিক প্রোটিন থাকে যাদের নন্-হিস্টোন প্রোটিন বলে।
5. ক্রোমোজোম ও DNA-এর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক কী?
উত্তর: অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে কোশকে পর্যবেক্ষণ করলে নিউক্লিয়াসের ভিতর সূক্ষ্ম জালকাকার গঠন দেখা যায়। লক্ষ করলে বোঝা যায় যে, এগুলি প্যাঁচানো সিঁড়ির মতো দ্বিতন্ত্রী গঠন-এগুলিই হল DNA। এরা বৃহৎ অণু, তাই নিউক্লিয়াসে কুণ্ডলীকৃত অবস্থায় থাকে। বিভাজনের সময়ে DNA আরও কুণ্ডলীকৃত হয় ও বিভিন্ন প্রোটিনকে দৃঢ়ভাবে পেঁচিয়ে লুপ তৈরি করে। কুণ্ডলীকৃত এই গঠনকে ক্রোমোজোম বলা হয়। অর্থাৎ, প্রোটিন সমন্বিত কুণ্ডলীকৃত DNA-এই হল ক্রোমোজোম।
5. Fill in The Blanks
1. জীবদেহ গঠিত হয় একটি মাত্র ———————— থেকেই।
উত্তর: কোশ
2. জীবদেহের বংশগত বৈশিষ্ট্য একটি জনু থেকে পরবর্তী জনুতে বহন করে ————————-
উত্তর: DNA
3. DNA-র কার্যকারী অংশ হল ——————— ।
উত্তর: জিন
4. ———————- অণুর ঘন কুণ্ডলীতে গঠনই হল ক্রোমোজোম।
উত্তর: DNA
5. ক্রোমোজোমের যে নির্দিষ্ট বিন্দুতে জিন থাকে, তাকে —————————-বলে।
উত্তর: লোকাস
6. মানুষের প্রতিটি দেহকোশে সেক্স ক্রোমোজোম থাকে ———————– টি।
উত্তর: 2
7. Y ক্রোমোজোমে —————————- জিন থাকে।
উত্তর: হোলানড্রিক
৪. লিঙ্গ নির্ধারণকারী সেক্স ক্রোমোজোমকে ————————- বলে।
উত্তর: অ্যালোজোম
9. জননকোশ ———————— প্রকৃতির হয়।
উত্তর: হ্যাপ্লয়েড
10. দেহকোশ————————- প্রকৃতির হয়।
উত্তর: ডিপ্লয়েড
11. দুটি ক্রোমাটিডের সংযোগস্থলে ————————— অবস্থিত।
উত্তর: সেন্ট্রোমিয়ার
12. স্যাটেলাইটযুক্ত ক্রোমোজোমকে ————————— বলে।
উত্তর: স্যাট ক্রোমোজোম
13. ক্রোমোজোমের প্রান্তদ্বয়কে ———————– বলে।
উত্তর: টেলোমিয়ার
14. RNA-তে থাইমিনের পরিবর্তে ————————— থাকে।
অথবা, শুধুমাত্র RNA-তে উপস্থিত নাইট্রোজেনঘটিত ক্ষারকটি হল
উত্তর: ইউরাসিল
15. ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের উপাদানগুলি হল DNA, RNA এবং ———————— ।
উত্তর: হিস্টোন ও নন্-হিস্টোন প্রোটিন
16. অ্যাডেনিন ও গুয়ানিন বেসকে একত্রে ———————- ক্ষার বলে।
উত্তর: পিউরিন
17. নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষার+ ফসফেট + পেন্টোজ শর্করা = —————————– ।
উত্তর: নিউক্লিওটাইড
18. নিউক্লিওটাইড = নিউক্লিওসাইড + —————————- ।
উত্তর: ফসফেট
19. পিরিমিডিন জাতীয় নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারকের উদাহরণ হল ————————-।
উত্তর: ইউরাসিল/সাইটোসিন
20. RNA-তে পেন্টোজ শর্করার ————————— প্রকৃতির।
উত্তর: রাইবোজ
21. নিউক্লিওসাইড ও ফসফোরিক অ্যাসিড একত্রে —————— গঠন করে।
উত্তর: নিউক্লিওটাইড
22. জিন দ্বারা গঠিত।
উত্তর: নিউক্লিওটাইড
23. DNA তন্ত্রীর একটি প্রান্ত ——————– (5 প্রাইম) হলে ওপর প্রান্তটি হবে
উত্তর: 3′
24. DNA-র দুটি শৃঙ্খলের দূরত্ব ———————– ।
উত্তর: 10Å
25. নিউক্লিওপ্রোটিন = ——————-+—————- ।
উত্তর: নিউক্লিক অ্যাসিড; হিস্টোন প্রোটিন
26. নন্-হিস্টোন প্রোটিনে ————————- অ্যামিনো অ্যাসিড বেশি থাকে।
উত্তর: আম্লিক
27. মানুষের জিনোমে ইউক্রোমাটিনের পরিমাণ প্রায় ———————- ।
উত্তর: 92%
6. True And False
1. DNA হল একটি ক্ষুদ্র জৈব অণু।
উত্তর: মিথ্যা [সূত্র-DNA বৃহৎ জৈব অণু।]
2. নিউক্লিয়াসের মধ্যে DNA সরলরৈখিকভাবে থাকে।
উত্তর: মিথ্যা [সূত্র-ক্রোমাটিন জালিকায় DNA কুণ্ডলীত অবস্থায় থাকে।]
3. ক্রোমাটিন জালিকা ও ক্রোমোজোম হল প্রকৃতপক্ষে DNA অণুর কুণ্ডলীকরণের পৃথক পৃথক অবস্থা।
উত্তর: সত্য [সূত্র-ক্রোমাটিন জালিকা জলত্যাগ করে কুণ্ডলীত হয়ে ক্রোমোজোম সৃষ্টি করে।]
4. প্রতিটি প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা অনির্দিষ্ট প্রকৃতির হয়।
উত্তর: মিথ্যা [সূত্র-ক্রোমোজোম সংখ্যা প্রতি প্রজাতির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট থাকে।]
5. মানুষের দেহকোশে অটোজোমের সংখ্যা 44।
উত্তর: সত্য [সূত্র-অটোজোমের সংখ্যা 22 জোড়া বা 44।]
6. মানুষের দেহকোশে সেক্স ক্রোমোজোমের সংখ্যা 2।
উত্তর: সত্য [সূত্র-পুরুষদের XY(2) ও মহিলাদের XX(2) নামক সেক্স ক্রোমোজোম থাকে।]
7. মানুষের শুক্রাণু ডিপ্লয়েড প্রকৃতির।
উত্তর: মিথ্যা [সূত্র-শুক্রাণুতে 1 সেট ক্রোমোজোম থাকে তাই তা হ্যাপ্লয়েড প্রকৃতির।]
৪. মানুষের ডিম্বাণু হ্যাপ্লয়েড প্রকৃতির।
উত্তর: সত্য [সূত্র-ডিম্বাণু । সেট ক্রোমোজোম বিশিষ্ট, অর্থাৎ হ্যাপ্লয়েড প্রকৃতির।]
9. সেন্ট্রোমিয়ারের DNA নিষ্ক্রিয় প্রকৃতির হয়।
উত্তর: সত্য [সূত্র সেন্ট্রোমিয়ারের কাজ হল মূলত বেম সংলগ্ন হওয়া।]
10. প্রতিটি নিউক্লিওসাইডে নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারক ও ফসফোরিক অ্যাসিড থাকে।
উত্তর: মিথ্যা [সূত্র-প্রতিটি নিউক্লিওটাইডে নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষারক ও ফসফোরিক অ্যাসিড থাকে।]
11. ক্রোমোজোমের গঠনে নন্-হিস্টোন প্রোটিনের কোনো ভূমিকা নেই।
উত্তর: মিথ্যা [সূত্র-হিস্টোন ও নন্-হিস্টোন প্রোটিন DNA সংলগ্ন হয়ে ক্রোমোজোম গঠন করে।]
12. RNA ও DNA-উভয় গঠনেই নিউক্লিওটাইড থাকে।
উত্তর: সত্য [সূত্র-RNA গঠনে রাইবোজ শর্করা থাকে, তাই তা রাইবোনিউক্লিওটাইড একক দ্বারা গঠিত হয়। পক্ষান্তরে DNA গঠনে ডিঅক্সিরাইবোজ শর্করা থাকে, তাই তা ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিওটাইড একক দ্বারা গঠিত হয়।]
13. যে নাইট্রোজেন বেসটি RNA-তে থাকে না, সেটি হল সাইটোসিন।
উত্তর: মিথ্যা [সূত্র-RNA-তে থাইমিন বেসটি থাকে না, পরিবর্তে ইউরাসিল থাকে।]
14. DNA-তে অ্যাডেনিন হাইড্রোজেন বন্ধনী দিয়ে গুয়ানিনের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
উত্তর: মিথ্যা [সূত্র-অ্যাডেনিন হাইড্রোজেন বন্ধনী দ্বারা থাইমিনের সঙ্গে যুক্ত থাকে।]
15. নন্-হিস্টোন প্রোটিনে আর্জিনিন, হিস্টিডিন, লাইসিন প্রভৃতি অ্যামিনো অ্যাসিড বেশি থাকে।
উত্তর: মিথ্যা [সূত্র-এই অ্যামিনো অ্যাসিডগুলি হিস্টোন প্রোটিনে বোশ থাকে।]
16. ক্রোমাটিনের ইউক্রোমাটিন অংশটি ইনটারফেজ দশায় প্রসারিত থাকে ও হালকা রঙে রঞ্জিত হয়। Haree
উত্তর: সত্য [সূত্র-এই অংশে সক্রিয় জিন থাকে।]
17. হেটেরোক্রোমাটিন অঞ্চলে ক্রসিং ওভার ঘটে।
উত্তর: মিথ্যা [সূত্র-ক্রসিং ওভার ইউক্রোমাটিন অঞ্চলে ঘটে।]
1. MCQs Question Answer
1. যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় জীব নিজের প্রতিরূপ গঠন করে, তাকে বলে-
(i) শ্বসন
(ii) সংবহন
(iii) রেচন
(iv) জনন
উত্তর: (iv) জনন
2. গ্যামেট উৎপাদন ছাড়াই শুধুমাত্র দেহকোশ বিভাজিত হয়ে অপত্য সৃষ্টি হয়-
(i) যৌন জননে
(ii) অঙ্গজ জননে
(iii) অযৌন জননে
(iv) অপুংজনিতে
উত্তর: (iii) অযৌন জননে
3. অযৌন জননের একক হল-
(i) গ্যামেট
(ii) রেণু
(iii) পরাগ
(iv) স্টক ও সিয়ন
উত্তর: (ii) রেণু
4. যে জননে মিয়োসিস অবশ্যম্ভাবী তা হল-
(i) অঙ্গজ বিস্তার
(ii) অযৌন জনন
(iii) যৌন জনন
(iv) মাইক্রোপ্রোপাগেশন
উত্তর: (iii) যৌন জনন
5. দুটি সমগোত্রীয় গ্যামেটের সম্পূর্ণ ও স্থায়ী মিলনকে বলে-
(i) আইসোগ্যামি
(ii) অ্যানাইসোগ্যামি
(iii) সিনগ্যামি
(iv) হেটেরোগ্যামি
উত্তর: (iii) সিনগ্যামি
6. হ্যাপ্লয়েড গ্যামেটের মিলনকে বলে-
(i) সাইটোসিস
(ii) সিনগ্যামি
(iii) কোশচক্র
(iv) মিয়োসিস
উত্তর: (ii) সিনগ্যামি
7. দুটি গ্যামেটের মিলনকে বলে-
(i) সংশ্লেষ
(ii) নিষেক
(iii) অপুংজনি
(iv) অযৌন জনন
উত্তর: (ii) নিষেক
৪. নিষিক্ত ডিম্বাণু হল-
(i) এমব্রায়ো
(ii) জাইগোট
(iii) স্পোর
(iv) মরুলা
উত্তর: (ii) জাইগো
9. সম-আকৃতির দুটি জননকোশের মিলন পদ্ধতিকে বলে-
(i) আইসোগ্যামি
(ii) অ্যানাইসোগ্যামি
(iii) উগ্যামি
(iv) কোনোটিই নয়
উত্তর: (i) আইসোগ্যামি
10. অযৌন ও যৌন জননের মধ্যে নীচের পার্থক্যগুলি বিবেচনা করো এবং কোগুলো সঠিত তা বেছে নাও-
(i) I,V
(ii) II,III
(iii) III, IV
(iv) I, II
উত্তর: (ii) II , II
11. উন্নত জীবের যৌন জননকালে পুং ও স্ত্রীগ্যামেটের নিষেক প্রক্রিয়ার নাম হল-
(i) আইসোেগ্যামি
(ii) অ্যানাইসোগ্যামি
(iii) উগ্যামি
(iv) সিনগ্যামি
উত্তর: (iii) উগ্যামি
12. যৌন জনন সম্পর্কিত নীচের কোন্ বক্তব্যটি সঠিক?
(i) যৌন জননে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট উৎপাদন অপরিহার্য
(ii) যৌন জনন কেবলমাত্র মাইটোসিস নির্ভর
(iii) যৌন জননে একটিমাত্র জনিতৃ জীব থেকেই অপত্য জীব সৃষ্টি হতে পারে
(iv) যৌন জননের ফলে উৎপন্ন অপত্য জীব জিনগতভাবে হুবহু জনিতৃ জীবের মতো হয়
উত্তর: (i) যৌন জননে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট উৎপাদন অপরিহার্য
13. নীচের কোন্ বক্তব্যটি সঠিক নয়-
(i) কিছু কিছু ক্ষেত্রে অযৌন জনন অ্যামাইটোসিস নির্ভর
(ii) অযৌন জননে জনিতৃ জীবের সংখ্যা একটি
(iii) যৌন জননে গ্যামেট উৎপাদন প্রক্রিয়াটি মিয়োসিস নির্ভর
(iv) যৌন জননে অপত্য জীবের মধ্যে প্রকরণ সৃষ্টি হয় না
উত্তর: (iv) যৌন জননে অপত্য জীবের মধ্যে প্রকরণ সৃষ্টি হয় না
14. অ্যামিবা-তে লক্ষ করা যায়-
(i) বিভাজন
(ii) কোরকোম
(iii) খণ্ডীভবন
(iv) রেণু উৎপাদন
উত্তর: (i) বিভাজন
15. বিভাজন পদ্ধতিতে জনন সম্পন্ন করে-
(i) প্লাসমোডিয়াম
(ii) হাইড্রা
(iii) ফার্ন
(iv) প্ল্যানেরিয়া
উত্তর: (i) প্লাসমোডিয়াম
16. বহুবিভাজন পদ্ধতিতে অযৌন জনন সম্পন্ন করে এমন জীব হল-
(i) স্পাইরোগাইরা
(ii) প্লাসমোডিয়াম
(iii) হাইড্রা
(iv) ঈস্ট
উত্তর: (ii) প্লাসমোডিয়াম
17. যে প্রক্রিয়াটি প্লাসমোডিয়াম-এর সাইজন্ট দশায় দেখা যায়-
(i) দ্বিবিভাজন
(ii) খণ্ডীভবন .
(iii) বহুবিভাজন
(iv) স্পোরোগনি
উত্তর: (iii) বহুবিভাজন
18. যে প্রক্রিয়ায় ব্যাকটেরিয়ার অযৌন জনন ঘটে তার নাম-
(i) দ্বিবিভাজন
(ii) খণ্ডীভবন
(iii) বহুবিভাজন
(iv) মাইটোসিস
উত্তর:(i) দ্বিবিভাজন
19. টবুলা দশা দেখা যায় কোন্ জীবে?
(i) ঈস্ট
(ii) মস
(iii) ফার্ন
(iv) সাইকাস
উত্তর: (i) ঈস্ট
20. কোরকোদ্গম বা বাডিং পদ্ধতিতে বা কোরকের সাহায্যে জনন সম্পন্ন করে –
(i) অ্যামিবা
(ii) প্লাসমোডিয়াম
(iii) হাইড্রা
(iv) প্ল্যানেরিয়া
উত্তর: (iii) হাইড্রা
21. খন্ডীভবন পদ্ধতি দেখা যায়-
(i) হাইড্রা-তে
(ii) ঈস্ট-এ
(iii) প্লাসমোডিয়াম-এ
(iv) স্পাইরোগাইরা-তে
উত্তর: (iv) স্পাইরোগাইরা-তে
22. পুনরুৎপাদন পদ্ধতিতে জনন সম্পন্ন করে-
(i) ইউপ্লিনা
(ii) স্পাইরোগাইরা
(iii) প্ল্যানেরিয়া
(iv) অ্যামিবা
উত্তর: (iii) প্ল্যানেরিয়া
23. প্ল্যানেরিয়া, চ্যাপটাকৃমি এবং নীচের যে প্রাণীতে পুনরুৎপাদন প্রক্রিয়া ঘটে, তা হল-
(i) স্পঞ্জিলা
(ii) অ্যামিবা
(iii) প্লাসমোডিয়াম
(iv) প্যারামেসিয়াম
উত্তর: (i) স্পঞ্জিলা
24. রেণু উৎপাদন পদ্ধতিতে জনন সম্পন্ন করে না-
(i) মস
(ii) প্ল্যানেরিয়া
(iii) ফার্ন
(iv) ছত্রাক
উত্তর: (ii) প্ল্যানেরিয়া
25. স্পোরানজিয়ামে যেটি উৎপন্ন হয়-
(i) স্পোরানজিওস্পোর
(ii) অ্যাপ্লানোস্পোর
(iii) জুস্পোর
(iv) জাইগোস্পোর
উত্তর: (i) স্পোরানজিওস্পোর
26. অযৌন জননে উৎপন্ন রেণুগুলি অসম আকারের হলে, তাদের বলে-
(i) অপুংজনি
(ii) পুংকেশর
(iii) সমরেণু
(iv) অসমরেণু
উত্তর: (iv) অসমরেণু
27. রেণু উৎপাদন পদ্ধতিতে জনন সম্পন্ন করে-
(i) ছত্রাকজাতীয় উদ্ভিদ
(ii) প্ল্যানেরিয়া
(iii) হাইড্রা
(iv) অ্যামিবা
উত্তর: (i) ছত্রাকজাতীয় উদ্ভিদ
28. নীচের কোন্ জোড়টি সঠিক?
(i) কোরকোদ্গম-ঈস্ট
(ii) খন্ডীভবন-কেঁচো
(iii) রেণু উৎপাদন- অ্যামিবা
(iv) পুনরুৎপাদন-ড্রায়োপটেরিস
উত্তর: (i) কোরকোদ্গম-ঈস্ট
29. নীচের কোন্ জোড়টি সঠিক?
(i) খন্ডীভবন-ঈস্ট
(ii) কোরকদ্গম- প্ল্যানেরিয়া
(iii) পুনরুৎপাদন-ফার্ন
(iv) উৎপাদন-ছত্রাক রেণু
উত্তর: (iv) উৎপাদন-ছত্রাক রেণু
30. সঠিক জোড়টি নির্বাচন করো এবং লেখো।
(i) বহুবিভাজন-হাইড্রা
(ii) খন্ডীভবন- স্পাইরোগাইরা
(iii) পুনরুৎপাদন-ফার্ন
(iv) কোরকোদ্গম- প্ল্যানেরিয়া
উত্তর: (ii) খন্ডীভবন- স্পাইরোগাইরা
31. মূলজ মুকুল দ্বারা বংশবৃদ্ধি করে-
(i) গোলাপ
(ii) ডালিয়া
(iii) পটল
(iv) পাথরকুচি
উত্তর: (iii) পটল
32. কান্ড স্টোলন প্রকৃতির যে উদ্ভিদে, তার নাম-
(i) মিষ্টি আলু
(ii) স্ট্রবেরি
(iii) কচুরিপানা
(iv) পাথরকুচি
উত্তর: (ii) স্ট্রবেরি
33. কচুরিপানার যে পরিবর্তিত অর্ধবায়বীয় কাণ্ডের মাধ্যমে অঙ্গজ জনন ঘটে, তার নাম
(i) ঊর্ধ্বধাবক
(ii) খর্বধাবক
(iii) বজ্রধাবক
(iv) ধাবক
উত্তর: (ii) খর্বধাবক
34. বুলবিল গঠনের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে
(i) রাঙা আলু
(ii) আমরুল
(iii) চুপড়ি আলু
(iv) ডালিয়া
উত্তর: (iii) চুপড়ি আলু
35. কোন্ উদ্ভিদ ভূনিম্নস্থ কান্ডের মাধ্যমে অঙ্গজ জনন সম্পন্ন করে?
(i) মেন্থা
(ii) পাথরকুচি
(iii) বিগোনিয়া
(iv) ওল
উত্তর: (i) মেন্থা
36. আদা কীসের সাহায্যে জনন করে?
(i) ধাবক
(ii) টিউবার
(iii) রাইজোম
(iv) কন্দ
উত্তর: (iii) রাইজোম
37. আলুচাষের সময় আলু কাক্ষিক মুকুলসহ কেটে মাটিতে লাগানো হয়। এটি একপ্রকারের
(i) অপুংজনি
(ii) যৌন জনন
(iii) দাবাকলম পদ্ধতি
(iv) অঙ্গজ জনন
উত্তর: (iv) অঙ্গজ জনন
38. বিগোনিয়া ও পাথরকুচির জননে সাহায্য করে যে অংশ-
(i) পত্রাশ্রয়ী মুকুল
(ii) পরাশ্রয়ী মুকুল
(iii) স্থানিক মুকুল
(iv) কোনোটিই নয়
উত্তর: (i) পত্রাশ্রয়ী মুকুল
39. কোন্ জোড়াটি সঠিক?
(i) ডালিয়া-পত্রজ মুকুল
(ii) পটল-কাণ্ডজ মুকুল
(iii) স্পাইরোগাইরা খন্ডীভবন
(iv) স্পঞ্জ-দ্বিবিভাজন
উত্তর: (iii) স্পাইরোগাইরা খন্ডীভবন
40. তুমি একটি নতুন উদ্ভিদ কলম পদ্ধতিতে তৈরি করলে। এই পদ্ধতিতে উদ্ভিদের জনন হল-
(i) কৃত্রিম অঙ্গজ জনন
(ii) অযৌন জনন
(iii) যৌন জনন
(iv) প্রাকৃতিক অঙ্গজ জনন
উত্তর: (i) কৃত্রিম অঙ্গজ জনন
41. কাটিং কোন্ উদ্ভিদে ব্যবহৃত হয়?
(i) কচুরিপানা
(ii) গাঁদা
(iii) ডালিয়া
(iv) আম
উত্তর: (iv) আম
42. মূলের শাখাকলম দেখা যায়-
(i) গোলাপে
(ii) আপেলে
(iii) কমলালেবুতে
(iv) আখে
উত্তর: (iii) কমলালেবুতে
43. আখ যে প্রকার শাখাকলমের সাহায্যে অঙ্গজ বংশবিস্তার করে, তা হল-
(i) মূলের
(ii) কান্ডের
(iii) পাতার
(iv) সবকটি
উত্তর: (ii) কান্ডের
44. জবা ও গাঁদার ক্ষেত্রে সাধারণত যে কৃত্রিম অঙ্গজ জনন ঘটানো হয়, তার নাম-
(i) শাখাকলম
(ii) গুটিকলম
(iii) দাবাকলম
(iv) জোড়কলম
উত্তর: (i) শাখাকলম
45. জোড়কলম একপ্রকার
(i) যৌন জনন
(ii) অযৌন জনন
(iii) অঙ্গজ জনন
(iv) অপুংজনি
উত্তর: (iii) অঙ্গজ জনন
46. জোড়কলমের ক্ষেত্রে যে উদ্ভিদের কাণ্ডে নতুন উন্নত উদ্ভিদ জুড়ে দেওয়া হয়, তাকে বলে-
(i) বল্কল
(ii) স্টেম
(iii) স্টক
(iv) কন্দ
উত্তর: (iii) স্টক
47. স্টক ও সিয়নের যে অংশ জোড়া লাগে তা হল-
(i) জাইলেম- জাইলেম
(ii) ফ্লোয়েম-ফ্লোয়েম
(iii) জাইলেম-ফ্লোয়েম
(iv) ক্যামবিয়াম- ক্যামবিয়াম
উত্তর: (iv) ক্যামবিয়াম- ক্যামবিয়াম
48. সবচেয়ে উন্নত ধরনের কলম হল-
(i) শাখাকলম
(ii) দাবাকলম
(iii) গুটিকলম
(iv) জোড়কলম
উত্তর: (iv) জোড়কলম
49. জোড়কলমে উদ্ভিদের কোন্ কলা অংশ পর্যন্ত চেঁছে ফেলা হয়?
(i) জাইলেম
(ii) ফ্লোয়েম
(iii) ক্যামবিয়াম
(iv) মজ্জা
উত্তর: (iii) ক্যামবিয়াম
50. যে-কোনো কলাকোশের কোশ বিভাজন দ্বারা সম্পূর্ণ উদ্ভিদ সৃষ্টির ক্ষমতাকে বলে-
(i) জনুক্রম
(ii) অপুংজনি
(iii) টোটিপোটেন্সি
(iv) কোনোটিই নয়
উত্তর: (iii) টোটিপোটেন্সি
51. দীর্ঘ সুপ্তদশা আছে এমন বীজযুক্ত উদ্ভিদের কম সময়ে বংশবিস্তার করতে তুমি কোন্ পদ্ধতির সাহায্য নেবে?
(i) যৌন জনন
(ii) খণ্ডীভবন
(iii) পুনরুৎপাদন
(iv) মাইক্রোপ্রোপাগেশন
উত্তর: (iv) মাইক্রোপ্রোপাগেশন
52. ক্লোন সৃষ্টির পদ্ধতি হল-
(i) মাইক্রোপ্রোপাগেশন
(ii) জেনেটিক
(iii) ইঞ্জিনিয়ারিং
(iv) জৈবপ্রযুক্তি সবকটি
উত্তর: (iv) জৈবপ্রযুক্তি সবকটি
53. কর্ষণ দ্রবণ লাগে যে প্রকার কৃত্রিম জননে, তা হল-
(i) শাখাকলম
(ii) গ্রাফটিং
(iii) অণুবিস্তারণ
(iv) সবকটি
উত্তর: (iii) অণুবিস্তারণ
54. কর্ষণ মাধ্যমে ব্যবহৃত উদ্ভিদ হরমোনটি হল-
(i) থাইরক্সিন
(ii) অক্সিন
(iii) ইনসুলিন
(iv) গ্লুকাগন
উত্তর: (ii) অক্সিন
55. মাইক্রোপ্রোপাগেশনে উদ্ভিদ দেহাংশ বা এক্সপ্ল্যান্ট থেকে সর্বপ্রথমে গঠিত হয়-
(i) ক্যালাস
(ii) স্টক
(iii) সিয়ন
(iv) সবকটি
উত্তর: (i) ক্যালাস
56. ক্যালাসের বৃদ্ধি ঘটিয়ে প্রথমে পাওয়া যায়-
(i) প্ল্যান্টলেট
(ii) এমব্রিঅয়েড
(iii) উদ্ভিদ
(iv) কোশ
উত্তর: (ii) এমব্রিঅয়েড
2. Very Short Question Answer
1. প্রজনন কাকে বলে?
উত্তর: কোনো একটি প্রজাতির নতুন অপত্য বংশ উৎপাদনকে প্রজনন বলে।
2. প্রজননের উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: প্রজননের মূল উদ্দেশ্য হল পৃথিবীতে কোনো জীবপ্রজাতির অস্তিত্ব রক্ষা করা।
3. উদ্ভিদের অযৌন জননে রেণু কোন্ অঙ্গে তৈরি হয়?
উত্তর: উদ্ভিদের অযৌন জননে রেণু থলির মতো আকৃতির রেণুস্থলীতে বা স্পোরানজিয়ামে তৈরি হয়।
4. অযৌন জননের ক্ষেত্রে অপত্য জনুর প্রকৃতি কেমন তা লেখো।
উত্তর: অযৌন জননের ক্ষেত্রে অপত্য জনু জিনগতভাবে জনিতৃ জনুর অনুরূপ হয়, অর্থাৎ এক্ষেত্রে কোনো প্রকরণ ঘটে না।
5. অযৌন জনন কী ধরনের কোশ বিভাজনের ওপর নির্ভরশীল?
উত্তর: অযৌন জনন প্রধানত মাইটোসিস ও কিছুক্ষেত্রে অ্যামাইটোসিস কোশ বিভাজনের ওপর নির্ভরশীল।
6. যৌন জননের একটি গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: যৌন জননে অপত্যের দেহে নতুন বৈশিষ্ট্য প্রকাশের সম্ভাবনা থাকে।
7. যৌন জনন আরও কী কী নামে পরিচিত?
উত্তর: যৌন জনন অ্যাম্ফিমিক্সিস, সিনজেনেসিস প্রভৃতি নামেও পরিচিত।
৪. যৌন জননের একক কী?
উত্তর: গ্যামেট।
9. গ্যামেটের ক্রোমোজোম সংখ্যা কত?
উত্তর: হ্যাপ্লয়েড (n)।
10. গ্যামেট গঠনের প্রক্রিয়াকে কী বলে?
উত্তর: গ্যামেটোজেনেসিস।
11. শুক্রাশয়ের মধ্যে যে পদ্ধতিতে শুক্রাণু উৎপন্ন হয়, তাকে কী বলে?
উত্তর: স্পার্মাটোজেনেসিস।
12. ডিম্বাশয়ের মধ্যে যে পদ্ধতিতে ডিম্বাণু উৎপন্ন হয় তাকে কী বলে?
উত্তর: উজেনেসিস।
13. একই জীবদেহে উৎপন্ন গ্যামেটের মধ্যে নিষেক প্রক্রিয়াটির কী নাম?
উত্তর: স্বনিষেক।
14. ভিন্ন জীবদেহে উৎপন্ন গ্যামেটের মধ্যে নিষেক প্রক্রিয়াটির কী নাম?
উত্তর: পরনিষেক।
15. অন্তঃনিষেক কোথায় দেখা যায়?
উত্তর: পাখি, গোরু ইত্যাদি প্রাণীর দেহে অন্তঃনিষেক দেখা যায়।
16. জীবদেহের বাইরে, উন্মুক্ত পরিবেশে নিষেক ঘটলে তাকে কী বলে?
উত্তর: বহিঃনিষেক।
17. জননাঙ্গ ছাড়া অন্যান্য বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য দেখে একলিঙ্গ প্রাণীর পুরুষ ও স্ত্রীকে আলাদা করা যায়। একে কী বলে?
উত্তর: যৌন দ্বিরূপতা।
18. যৌন জননে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনে কী উৎপন্ন হয়?
উত্তর: জাইগোট বা ভ্রুণাণু।
19. কোন্ প্রকার জনন প্রকরণ সৃষ্টিতে সাহায্য করে?
উত্তর: যৌন জনন।
20. হেটেরোগ্যামি কাকে বলে?
উত্তর: দুটি ভিন্ন আকার, আয়তন ও স্বভাববিশিষ্ট পুং এবং স্ত্রীগ্যামেটের মিলনকে হেটেরোগ্যামি বলে।
21. দুটি গ্যামেটের সম্পূর্ণ ও স্থায়ী মিলনকে কী বলে?
উত্তর: সিনগ্যামি।
22. সংযুক্তি পদ্ধতিতে জনন সম্পাদন করে, এমন একটি জীবের নাম লেখো।
উত্তর: প্যারামেসিয়াম।
23. স্পাইরোগাইরা নামক শৈবাল কোন্ প্রক্রিয়ায় জনন সম্পন্ন করে?
উত্তর: খণ্ডীভবন (অযৌন জনন), সংযুক্তি (যৌন জনন)।
24. কোন্ আদ্যপ্রাণীর অযৌন ও যৌন জনন দেখা যায়?
উত্তর: প্যারামেসিয়াম, এরা দ্বিবিভাজন পদ্ধতিতে অযৌন জনন ও কনজুগেশন পদ্ধতিতে যৌন জনন সম্পন্ন করে।
25. অ্যামিবা-তে কী ধরনের জনন সংঘটিত হয়?
উত্তর: অযৌন জনন (দ্বিবিভাজন)।
26. দ্বিবিভাজন পদ্ধতিতে জনন করে এমন একটি আদ্যপ্রাণীর নাম বলো।
উত্তর: অ্যামিবা।
27. ম্যালেরিয়া রোগসৃষ্টিকারী প্রোটোজোয়ার দেহে কোন্ কোন্ ধরনের অযৌন জনন দেখা যায়?
উত্তর: বহুবিভাজন।
28. কোরকোদ্গম হয় এমন একটি অমেরুদণ্ডী প্রাণীর নাম লেখো।
উত্তর: হাইড্রা।
29. কোরকের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি ঘটে কোন্ ছত্রাকের?
উত্তর: ঈস্ট।
30. গেমিউল কী?
উত্তর: স্পঞ্জের দেহাভ্যন্তরে অবস্থিত যে কোরক অযৌন জননে সাহায্য করে তাকে গেমিউল বলা হয় (এটি থেকে সম্পূর্ণ নতুন অপত্য স্পঞ্জ সৃষ্টি হতে পারে)।
31. টরুলা দশা কী?
উত্তর: ঈস্টের কোরকের গঠন টরুলা প্রাণীর মতো দেখায় যায় বলে, এই দশাকে টবুলা দশা বলে।
32. প্ল্যানেরিয়া-র ক্ষেত্রে যে খন্ডীভবন ঘটে, তাকে কী বলে?
উত্তর: পুনরুৎপাদন।
33. পুনরুৎপাদন ঘটে এমন একটি প্রাণীর নাম লেখো।
উত্তর: হাইড্রা।
34. জীবদেহের কোনো খণ্ডিত অংশ থেকে পূর্ণাঙ্গ অপত্য জীবের উৎপত্তিকে কী বলে?
উত্তর: পুনরুৎপাদন।
35. চলরেণুর সাহায্যে অযৌন জনন দেখা যায় কোন্ জীবে?
উত্তর: ক্ল্যামাইডোমোনাস।
36. অচলরেণু দেখা যায় এমন একটি জীবের নাম লেখো।
উত্তর: মিউকর।
37. কনিডিয়ার সাহায্যে বংশবিস্তার করে কোন্ ছত্রাক?
উত্তর: পেনিসিলিয়াম।
38. একটি রসালো মূলের নাম করো যা অঙ্গজ বংশবিস্তারে সাহায্য করে।
উত্তর: রাঙা আলু।
39. উদ্ভিদের একটি প্রাকৃতিক অঙ্গজ বিস্তার পদ্ধতির উদাহরণ দাও।
উত্তর: উদ্ভিদের একটি প্রাকৃতিক অঙ্গজ বিস্তার পদ্ধতির উদাহরণ হল- রাঙা আলুর রসালো মূল দ্বারা বংশবিস্তার।
40. সুসনি যে পরিবর্তিত কাণ্ডের উদাহরণ তাকে কী বলে?
উত্তর: ধাবক বা রানার।
41. খর্বধাবকের সাহায্যে অঙ্গজ জনন হয় কোন্ উদ্ভিদে?
উত্তর: কচুরিপানা।
42. স্টোলন কোন্ উদ্ভিদের অঙ্গজ বংশবিস্তারে সাহায্য করে?
উত্তর: মেন্থা।
43. ‘টেরর অফ বেঙ্গল’ বা ‘বাংলার আতঙ্ক’ কোন্ উদ্ভিদকে বলে ও কেন?
উত্তর: কচুরিপানা খর্বধাবক দ্বারা দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে জলাশয়ের ভারসাম্য বিনষ্ট করে, তাই কচুরিপানাকে এই নামে অভিহিত করা হয়।
44. পাতার সাহায্যে অঙ্গজ জনন হয় কোন্ উদ্ভিদে?
উত্তর: পাথরকুচি।
45. কোন্ প্রাণীতে অঙ্গজ, অযৌন ও যৌন তিন প্রকারের জনন প্রক্রিয়া ঘটে?
উত্তর: হাইড্রা।
46. দুটি কৃত্রিম অঙ্গজ জননের নাম ও উদাহরণ লেখো।
উত্তর: শাখাকলম, যেমন-গোলাপের কান্ড ও জোড়কলম, যেমন-আম।
47. গ্রাফটিং নির্বাচিত উন্নত বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ শাখাকে কী বলে?
উত্তর: সিয়ন।
48. যে পদ্ধতিতে একই প্রজাতিভুক্ত দুটি ভিন্ন উদ্ভিদের শাখা জোড়া দেওয়া হয় তাকে কী বলে?
উত্তর: গ্রাফটিং বা জোড়কলম।
49. মাইক্রোপ্রোপাগেশন কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর: মাইক্রোপ্রোপাগেশন আবিষ্কার করেন ফ্রেডেরিক ক্যামপিয়ন স্টিউয়ার্ড নামক উদ্ভিদবিদ্।
50. উদ্ভিদ কলাকর্ষণে কোন্ কলা অংশ ব্যবহার সাফল্য প্রদান করে?
উত্তর: উদ্ভিদ কলাকর্ষণে ভাজক কলা সমৃদ্ধ অংশ, যেমন-কাণ্ড, মূলপ্রান্ত ও মুকুল অংশের ব্যবহার সাফল্য প্রদান করে।
51. অণুবিস্তারণ কোন্ কোশধর্মের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর: টোটিপোটেন্সি।
52. কর্ষণ মাধ্যমের কাজ কী?
উত্তর: এক্সপ্ল্যান্টগুলি থেকে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টির সময় পুষ্টি উপাদানের জোগান দেওয়া কর্ষণ মাধ্যমের কাজ।
53. কর্ষণ মাধ্যমে শক্তির জোগান দেয় কোন্ উপাদান?
উত্তর: কর্ষণ মাধ্যমে শক্তির জোগান দেয় সুক্রোজ-নামক শর্করা।
54. মাইক্রোপ্রোপাগেশনে ব্যবহার্য দুটি হরমোনের নাম লেখো।
উত্তর: অক্সিন (IAA, IBA) ও সাইটোকাইনিন।
55. ক্যালাসে মূল সৃষ্টির পদ্ধতিকে কী বলে?[
উত্তর: রাইজোজেনেসিস।
56. প্ল্যান্টলেট কাকে বলে?
উত্তর: অণুবিস্তারণের দ্বারা সৃষ্ট ছোটো চারাগাছগুলিকে প্ল্যান্টলেট বলে।
57. যে উদ্ভিদে স্বল্পবীজ তৈরি হয় অথবা যে উদ্ভিদ বন্ধ্যা বীজ তৈরি করে তাদের ক্ষেত্রে কোন্ কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিতে নতুন উদ্ভিদ তৈরি করা যায়?
উত্তর: মাইক্রোপ্রোপাগেশন।
58. অঙ্গজ জননের সাহায্যে বংশবিস্তার করে এমন একটি উদ্ভিদের নাম লেখো।
উত্তর: গোলাপ ও লেবুর কিছু প্রজাতি অঙ্গজ জননের সাহায্যে বংশবিস্তার করে।
59. জনুক্রমে কোন্ দশা দুটির পুনরাবৃত্তি ঘটে?
উত্তর: জনুক্রমে রেণুধর (2n) ও লিঙ্গধর (n) দশা দুটির পুনরাবৃত্তি ঘটে।
60. জনুক্রম দেখা যায় এমন একটি উদ্ভিদের নাম লেখো।
উত্তর: Selaginella [সেলাজিনেল্লা (ফার্ন)]।
61. জনুক্রম দেখা যায় এমন একটি প্রাণীর নাম লেখো।
উত্তর: Obelia (ওবেলিয়া) নামক নিডারিয়া পর্বভুক্ত প্রাণীতে জনুক্রম দেখা যায়।
3. Short Question Answer
1. জননের সাধারণ বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: জননের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল-① মাইটোসিস, মিয়োসিস অথবা উভয় পদ্ধতিতেই কোশ বিভাজনের মাধ্যমে জননের বিভিন্ন পর্যায় সম্পন্ন হয়। জননকালে জননকোশ তথা গ্যামেট সৃষ্টি থেকে শুরু করে ভ্রুণের উৎপত্তি তথা অপত্য জীব সৃষ্টি, প্রতিক্ষেত্রেই কোশ বিভাজন ঘটে। ② জননের আণবিক ভিত্তি হল DNA-র প্রতিলিপিকরণ বা রেপ্লিকেশন। ③ জননকোশ বা গ্যামেট অথবা রেণু থেকে অপত্য জীব সৃষ্টি হয়।
2. অযৌন জনন কাকে বলে?
উত্তর: যে জনন প্রক্রিয়ায় গ্যামেট উৎপাদন ছাড়াই শুধুমাত্র দেহকোশ বিভাজিত হয়ে অথবা রেণু উৎপাদনের মাধ্যমে জনিতৃ জীবের মতো অপত্য জীব সৃষ্টি হয়, তাকে অযৌন জনন বলে। যেমন-ঈস্ট-এর কোরকোম পদ্ধতি।
3. অযৌন জননকে রাসায়নিক প্রতিলিপিকরণ বলা হয় কেন?
উত্তর: অযৌন জননের সময় ক্রোমোজোমগুলি মাইটোসিস প্রক্রিয়ার দ্বারা বিভক্ত হয়, যার ফলে দুটি অপত্য কোশের নিউক্লিয়াসে জেনেটিক উপাদানের (DNA) সঠিক প্রতিলিপিকরণ ঘটে। যেহেতু DNA প্রতিলিপি গঠন রাসায়নিক উপায়ে সম্পাদিত হয়, তাই অযৌন জননকে রাসায়নিক প্রতিলিপিকরণ বলা হয়।
4. যৌন জনন কাকে বলে?
উত্তর: জনন কোশাধারে বা জনন-অঙ্গে সৃষ্ট দুটি ভিন্ন জননকোশ, অর্থাৎ পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেটের মিলনের মাধ্যমে সংঘটিত উন্নততম জনন প্রক্রিয়াকে যৌন জনন বলে। যেমন-মানুষ, খরগোশ, হরিণ প্রভৃতি উন্নত প্রাণীর জনন।
5. একটি জনিত জীবের তুলনায় দুটি জনিত জীবের মাধ্যমে সম্পন্ন জনন গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর: একটি জনিতৃ জীবের তুলনায় দুটি জনিত্ব জীবের মাধ্যমে সম্পন্ন জনন গুরুত্বপূর্ণ কারণ দুটি জনিত্ব জীবের মাধ্যমে সম্পন্ন জননে দুটি ভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জননকোশ বা গ্যামেটের মিলন ঘটে, তাই এই প্রকার জননে উৎপন্ন অপত্য জীবে বিভিন্ন বিশিষ্ট্যের আগমন ঘটে ও প্রকরণ সৃষ্টি হয়। এই প্রকরণ বিবর্তনের পথ সুগম করে। এই প্রকরণের ফলে প্রতিকূল পরিবেশে অপত্য জীবের অভিযোজন ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
যৌন জননের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: যৌন জননের দুটি বৈশিষ্ট্য হল-① যৌন জননে দুইপ্রকার গ্যামেট, যথা-শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনের ফলে অপত্যের সৃষ্টি হয়। ② এইপ্রকার জননের মাধ্যমে ভেদ বা প্রকরণ সৃষ্টি হয়, যা নতুন প্রজাতি সৃষ্টিতে তথা জীবের বিবর্তনে সাহায্য করে।
9. যৌন জনন ও মিয়োসিসের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করো।
উত্তর যৌন জননের ক্ষেত্রে হ্যাপ্লয়েড ক্রোমোজোমবিশিষ্ট (n) দুটি ভিন্নধর্মী (পুং গ্যামেট ও স্ত্রী গ্যামেট) জনন কোশের মিলনের ফলে ডিপ্লয়েড ক্রোমোজোমবিশিষ্ট (2n) অপত্য উৎপন্ন হয়। অন্যদিকে ডিপ্লয়েড (2n) জনন মাতৃকোশ থেকে মিয়োসিস পদ্ধতিতে হ্যাপ্লয়েড (n) জননকোশ উৎপন্ন হয়। মিয়োসিসের দ্বারা হ্যাপ্লয়েড জননকোশ গঠিত না হলে নিষেকের পর দেহকোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়ে যেত।
10. সিনগ্যামি কী?
উত্তর: যে যৌন জননে জনন কোশাধার (gametangium)-এর বাইরে পুং ও স্ত্রীগ্যামেটের মিলন সম্পূর্ণভাবে এবং স্থায়ীরূপে সংঘটিত হয়, তাকে সিনগ্যামি বলে। যেমন- Chlamydomonas (ক্ল্যামাইডোমোনাস)-এ এই ধরনের জনন দেখা যায়।
11. আইসোগ্যামি কাকে বলে?
উত্তর: যে যৌন জননে পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেট অঙ্গসংস্থানগতভাবে ও শারীরবৃত্তীয়ভাবে একই রকমের হয়, তাদের মিলনকে আইসোগ্যামি বলে। যেমন-ক্ল্যামাইডোমোনাস নামক শৈবাল, Monocystis (মনোসিস্টিস) নামক প্রোটোজোয়া ইত্যাদিতে প্রধানত আইসোগ্যামি দেখা যায়।
12. অ্যানাইসোগ্যামি কাকে বলে?
উত্তর: যে যৌন জননে পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেটের, আকার, আয়তন ও আকৃতি সমান হয় না এবং গ্যামেটের মিলন জনন-অঙ্গের বাইরে ঘটে, তাকে
অ্যানাইসোগ্যামি বলে। যেমন-ক্ল্যামাইডোমোনাস নামক শৈবালে এই পদ্ধতি দেখা যায়।
13. উগ্যামি কাকে বলে?
উত্তর: যে যৌন জননে পুংগ্যামেটটি ক্ষুদ্র ও সচল প্রকৃতির হয় এবং স্ত্রীগ্যামেটটি বড়ো ও নিশ্চল প্রকৃতির হয়, তাদের মিলনকে উগ্যামি বলে। যেমন-Oedogonium (ইডোগোনিয়াম) ও Volvox (ভলভক্স) নামক শৈবাল এবং উন্নতশ্রেণির সমস্ত উদ্ভিদ ও প্রাণী এইপ্রকার জনন সম্পন্ন করে।
যৌন জননের অসুবিধাগুলি লেখো।
উত্তর যৌন জননের অসুবিধাগুলি হল-① এটি ধীর গতির প্রক্রিয়া তাই যৌন জননের মাধ্যমে বংশবিস্তারের জন্য বেশিমাত্রায় সময় ব্যয়িত হয়। ② এই পদ্ধতিতে দুটি ভিন্ন লিঙ্গের জীবের (পুরুষ ও স্ত্রী) প্রয়োজন হয়, যা সর্বদা পাওয়া নাও যেতে পারে। ③ এই পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল ও অসংখ্য গ্যামেটের অপচয় ঘটে, ফলে সাফল্যলাভের সম্ভাবনাও কম থাকে।
16. বহুবিভাজন কাকে বলে?
উত্তর এককোশী জীবকোশ যে অযৌন জনন পদ্ধতিতে বিভক্ত হয়ে বহুসংখ্যক অপত্য সৃষ্টি করে, তাকে বহুবিভাজন বলে। উদাহরণ- Plasmodium (প্লাসমোডিয়াম), সাইজোগনি ও স্পোরোগনি দ্বারা অসংখ্য অপত্য প্লাসমোডিয়াম তৈরি করে।
17. ‘এককোশী জীবের ক্ষেত্রে কোশ বিভাজন ও জনন পরস্পর সমার্থক’-উক্তিটির যথার্থতা নির্ণয় করো।
উত্তর: ‘এককোশী জীবের ক্ষেত্রে কোশ বিভাজন ও জনন পরস্পর সমার্থক’-এই উক্তিটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বক্তব্যটি অনেকাংশেই সঠিক। কেননা এককোশী জীবের দেহ পরিণত হলে এতে ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিস ঘটে এবং দুটি অপত্য জীব সৃষ্টি হয়। ফলে এককোশী জীবের জননও সম্পন্ন হয়।
18. বাডিং বা কোরকোদ্গম কাকে বলে?
উত্তর: যে বিশেষ ধরনের অযৌন জনন পদ্ধতিতে জনিতৃ জীবদেহের কোনো প্রবর্ধিত দেহাংশ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিচ্যুত হয়ে অপত্য জীবদেহ সৃষ্টি করে তাকে কোরকোদ্গম বা বাডিং বলে। ঈস্ট-এর ক্ষেত্রে বাডিং দেখা যায়।
19. টরুলা দশা ও টরুলেশন কী?
উত্তর: [ ঈস্টের কোরকোদ্গম নামক অযৌন জনন পদ্ধতিতে নতুন উৎপন্ন কোরকটি মাতৃদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্বেই পুনরায় কোরক তৈরি করা শুরু করে এবং ছদ্ম মাইসেলিয়াম গঠন করে। এই অবস্থাটি টরুলা নামক জীবের মতো হওয়ায় একে টরুলা দশা বলা হয়। কোরকোদ্গম পদ্ধতিতে ছদ্ম মাইসেলিয়াম গঠনের মাধ্যমে জনন প্রক্রিয়াকে টরুলেশন বলে।
20. খণ্ডীভবন কাকে বলে?
উত্তর: যে অযৌন জনন পদ্ধতিতে জনিতৃ জীবের দেহ দুই বা ততোধিক খণ্ডে ভেঙে যায় ও প্রতিটি খণ্ড অপত্যের সৃষ্টি করে, তাকে খন্ডীভবন বলে। স্পাইরোগাইরা নামক শৈবালে খন্ডীভবন দেখা যায়।
21. উদ্ভিদের একটি উপযুক্ত উদাহরণের সাহায্যে খণ্ডীভবন প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: স্পাইরোগাইরা নামক শৈবালের ক্ষেত্রে খন্ডীভবন প্রক্রিয়া লক্ষ করা যায়। এদের সূত্রাকার দেহটি জলস্রোতের প্রভাবে বা আঘাতজনিত কারণে খণ্ডিত হয়ে যায় এবং প্রতিটি দেহাংশ নতুন অপত্য সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে মাইটোসিস কোশ বিভাজন পদ্ধতির দ্বারা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে অপত্য জীব উৎপন্ন হয়।
22. স্পাইরোগাইরাও প্ল্যানেরিয়ার অযৌন জনন কোন্ কোন্ পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়? [Madhyamik ’18]
উত্তর: স্পাইরোগাইরার অযৌন জনন খন্ডীভবন পদ্ধতিতে ও প্ল্যানেরিয়ার অযৌন জনন পুনরুৎপাদন পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়।
23. যদি কোনো একটি জীব রেণু উৎপাদনের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে তবে জীবটি কীভাবে উপকৃত হবে?
উত্তর: যদি কোনো একটি জীব রেণু উৎপাদনের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে, তবে কম সময়ে বেশি সংখ্যক অপত্য জীব সৃষ্টিতে সমর্থ হবে। এতে সময় ও শক্তি দুই-এরই সাশ্রয় হবে। এ ছাড়া পিতৃ প্রজন্মের বৈশিষ্ট্যগুলির বিশুদ্ধতা অপত্যে বজায় থাকবে। অপত্যগুলি তাদের পরিচিত পরিবেশে সহজে মানিয়ে নিতে পারবে।
24. চলরেণু বা জুস্পোর কাকে বলে?
উত্তর: উদ্ভিদের অযৌন জননের রেণুগুলি সিলিয়া বা ফ্ল্যাজেলাযুক্ত হলে তা গমনে সক্ষম হয়। এদের চলরেণু বা জুস্পোর বলে। যেমন-Volvox (ভলভক্স), ক্ল্যামাইডোমোনাস প্রভৃতি শৈবালের চলরেণু।
25. সোরাস ও অ্যাপ্লানোস্পোর কী? কোথায় দেখা যায়?
উত্তর: সোরাস: ফার্ন ও ছত্রাকে যে গুচ্ছাকার স্পোর বা রেণুপূর্ণ স্পোরানজিয়া বা রেণুস্থলী দেখা যায় তাকে সোরাস বলে। যেমন- Dryopteris (ড্রায়োপটেরিস) নামক ফার্ন।
[⇒ অ্যাপ্লানোস্পোর: ছত্রাকে যে বিশেষ ফ্ল্যাজেলাবিহীন, প্রাচীরযুক্ত, হ্যাপ্লয়েড অচলরেণু দেখা যায় তাকে অ্যাপ্লানোস্পোর বলে। যেমন- Penicillium (পেনিসিলিয়াম), Agaricus (অ্যাগারিকাস)।
26. জাইগোস্পোর (zygospore) কাকে বলে?
উত্তর: নিম্নশ্রেণির জীবের দুটি গ্যামেটের সংযুক্তি পদ্ধতিতে মিলনের ফলে যে ডিপ্লয়েড কোশের সৃষ্টি হয়, তাকে জাইগোস্পোর বা ভ্রূণরেণু বলে। যেমন-স্পাইরোগাইরার দেহে জাইগোস্পোর দেখা যায়।
27. পত্রজ মুকুলের সাহায্যে বাংশবিস্তার পদ্ধতিতে অপত্য জনুগুলিতে বংশগত বৈশিষ্ট্যের বিশুদ্ধতা বজায় থাকে কেন-তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: পত্রজ মুকুলের সাহায্যে বংশবিস্তার পদ্ধতিতে অপত্য জনুগুলিতে বংশগত বৈশিষ্ট্যের বিশুদ্ধতা বজায় থাকে। তার কারণ অযৌন জনন পদ্ধতিতে এই জনন সম্পন্ন হয়। মাইটোসিস কোশ বিভাজন পদ্ধতিতে পাতার কিনারায় অস্থানিক মুকুল তৈরি হয়। মুকুল থেকে শিশু উদ্ভিদ সৃষ্টি হয় এবং তা জনিতৃ উদ্ভিদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন স্বতন্ত্র উদ্ভিদে পরিণত হয়। অপত্য জনুর কোনো প্রকার প্রকরণ ঘটে না।
28. কৃষিকাজে এবং উদ্যানবিদ্যায় অঙ্গজ জনন বেশি সুবিধাজনক কেন?
উত্তর: কৃষিকাজে এবং উদ্যানবিদ্যায় অঙ্গজ জনন বেশি সুবিধাজনক কারণ-① বছরের যে-কোনো ঋতুতে অঙ্গজ জনন প্রক্রিয়ায় নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি করা যায়। ② অঙ্গজ জননের দ্বারা জনিতৃ উদ্ভিদের দেহ বা দেহাংশ থেকে অতি কম সময়ে অতিদ্রুত অধিক সংখ্যক উদ্ভিদ সৃষ্টি করা যায়, যা কৃষিকাজ ও উদ্যানপালন-কে লাভজনক করে তোলে।
29. মিষ্টি আলুর মূল কী প্রকৃতির হয় ও তার কাজ কী রাতে
উত্তর: মিষ্টি আলুর মূল রসালো প্রকৃতির কন্দাল মূল। এটি প্রকৃতপক্ষে অস্থানিক মূল। এটি খাদ্য সঞ্চয়ের ফলে স্ফীত হয়ে কন্দের আকার ধারণ করে। ব্রততী শ্রেণির উদ্ভিদের ক্ষেত্রে এই মূল উৎপন্ন হয়। এই মূল উদ্ভিদের অঙ্গজ বংশবিস্তারে সহায়তা করে।
30. কলাগাছ কোন্ পদ্ধতিতে সহজে জনন করে এবং কেন?
উত্তর: কলাগাছ অঙ্গজ বংশবিস্তার পদ্ধতিতে সহজে জনন সম্পন্ন করে। কারণ কলাগাছের ভূনিম্নস্থ কাণ্ডের নীচের দিকে রাইজোম নামক অংশ থেকে অসংখ্য মুকুল উৎপন্ন হয়। ওই মুকুল থেকে ছদ্মকাণ্ড ও নতুন কন্দাকার রাইজোম উৎপন্ন হয়। ওই রাইজোম থেকেই নতুন নতুন কলা চারা পাওয়া যায়।
31. একটি প্রাকৃতিক ও একটি কৃত্রিম অঙ্গজ জনন পদ্ধতির উদাহরণ দাও।
উত্তর: প্রাকৃতিক অঙ্গজ জনন পদ্ধতির একটি উদাহরণ হল পত্রাশ্রয়ী মুকুল দ্বারা পাথরকুচির অঙ্গজ জনন।
[• কৃত্রিম অঙ্গজ জনন পদ্ধতির উদাহরণ হল অণুবিস্তারণ বা মাইক্রোপ্রোপাগেশন।
32. ‘তোমাকে একটি বাগানের মধ্যে শাখাকলম থেকে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টির জন্য বলা হয়’-এক্ষেত্রে তুমি কোন্ কৃত্রিম হরমোন প্রয়োগ করবে এবং কেন?
উত্তর: এক্ষেত্রে আমি কৃত্রিম অক্সিন (IBA, NAA) প্রয়োগ করব। কারণ এই হরমোন প্রয়োগ করে কাটা অংশ থেকে তাড়াতাড়ি মূল উৎপন্ন করানো যায়।
33. শাখাকলম থেকে জোড়কলম উন্নত কেন?
উত্তর: শাখাকলম থেকে জোড়কলম উন্নত কারণ শাখাকলমের ক্ষেত্রে অপত্য উদ্ভিদ এবং মাতৃ উদ্ভিদ একই গুণবিশিষ্ট হলেও জোড়কলমের ক্ষেত্রে মূলযুক্ত স্টক-এর সাথে সিয়ন অংশ জোড়া দিয়ে মিশ্র বৈশিষ্ট্যের উদ্ভিদ সৃষ্টি করা হয়। ফলে বৈচিত্র্যপূর্ণ অপত্য উদ্ভিদ পাওয়া যায়।
34. স্টক ও সিয়ন কাকে বলে?
উত্তর: গ্রাফটিং বা জোড়কলমের ক্ষেত্রে যে গাছের কাণ্ড কেটে ফেলে শুধু তার মূল অংশ ব্যবহৃত হয়, তাকে স্টক বলে। পক্ষান্তরে যে উন্নত ও অভিপ্রেত উদ্ভিদের শাখা স্টকের সঙ্গে সংযোজিত করা হয়, তাকে সিয়ন বলে।
35. ‘ধান বা ভুট্টাগাছে (একবীজপত্রী) জোড়কলম বা গ্রাফটিং সম্ভব নয়’-ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: একবীজপত্রী উদ্ভিদ, যেমন-ধান, গম, ভুট্টা, তাল বা নারকেল-এর ক্যামবিয়াম কলা থাকে না। ক্যামবিয়াম কলা বৃদ্ধি পেয়ে জোড়কলমে নতুন জাইলেম ও ফ্লোয়েম কলা সৃষ্টি করে দুটি উদ্ভিদের সংযোগ তৈরি করে। ক্যামবিয়াম কলা থাকে না বলে সমস্ত একবীজপত্রী উদ্ভিদের জোড়কলম সম্ভব হয় না।
36. কৃত্রিম অঙ্গজ জননের প্রয়োজন হয় কেন? অথবা, কলম প্রস্তুতির সার্থকতা কী?
উত্তর: কৃত্রিম অঙ্গজ জননের প্রয়োজন হয়, কারণ-① বীজবিহীন উদ্ভিদ, যেমন-কলা, আনারস, আঙুর প্রভৃতি উদ্ভিদের সহজে নতুন উদ্ভিদ করা যায়। ② নির্দিষ্ট ও অভিপ্রেত বৈশিষ্ট্যের উদ্ভিদ চারা তৈরি এই পদ্ধতিতে পাওয়া সম্ভব হয়। ③ দ্রুত, কম খরচে চারা উদ্ভিদ কৃত্রিম অঙ্গজ জনন তথা কলম প্রস্তুতি দ্বারা পাওয়া সম্ভব হয়।
37. স্টক, সিয়ন ও গ্রাফটিং শব্দগুলির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করো।
উত্তর: গ্রাফটিং বা জোড়কলম হল একপ্রকার কৃত্রিম অঙ্গজ জনন। এক্ষেত্রে একটি অভিপ্রেত উদ্ভিদের কাণ্ড বা শাখা অর্থাৎ সিয়ন নিয়ে, অপর একটি একই প্রজাতি বা সমগোত্রীয় কোনো উদ্ভিদের কাণ্ড বা শাখা কেটে অর্থাৎ স্টক, এর ওপর জুড়ে দেওয়া হয়।
38. টোটিপোটেন্সি কী? একটি টোটিপোটেন্ট কোশের নাম লেখো। 1+1
উত্তর: টোটিপোটেন্সি: বিচ্ছিন্ন দেহকোশের উপযুক্ত পরিবেশে সম্পূর্ণ জীবদেহে পরিণত হওয়ার ক্ষমতাকে টোটিপোটেন্সি বা পূর্ণত্বক্ষমতা বলে। [+ টোটিপোটেন্সি কোশের নাম: একটি টোটিপোটেন্ট কোশের নাম হল স্টেম কোশ।
41. কলোজেনেসিস ও রাইজোজেনেসিস কী?
উত্তর: [ মাইক্রোপ্রোপাগেশন পদ্ধতিতে ক্যালাস কলা থেকে প্রাথমিক মূল বা বিটপ সৃষ্টি হওয়াকে বলা হয় অরগ্যানোজেনেসিস। ক্যালাস কলা থেকে প্রাথমিক বিটপ সৃষ্টি হওয়াকে বলে কলোজেনেসিস (caulogenesis) এবং প্রাথমিক মূল সৃষ্টি হওয়াকে বলে রাইজোজেনেসিস (rhizogenesis)।
43. মাইক্রোপ্রোপাগেশনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: মাইক্রোপ্রোপাগেশনের দুটি বৈশিষ্ট্য হল① মাইক্রোপ্রোপাগেশন কলাকর্ষণ বা টিস্যু কালচার পদ্ধতির একটি বিশেষ প্রকার যার মাধ্যমে কম সময়ে উদ্ভিদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি করা হয়। ② এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভিদের পছন্দমাফিক ভ্যারাইটির দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটানো হয়।
মাইক্রোপ্রোপাগেশনের অসুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: [ মাইক্রোপ্রোপাগেশনের অসুবিধাগুলি হল-① মাইক্রোপ্রো- পাগেশনে জিনগত প্রকরণ ঘটে না বলে উদ্ভিদটির অভিযোজন ক্ষমতা কম হয়। ② এটি অভিব্যক্তিতে সহায়তা করে না।
56. কিছু উদ্ভিদের ক্ষেত্রে অঙ্গজ জনন আবশ্যিক কেন? অনুরূপ প্রশ্ন, উদ্ভিদদেহে প্রাকৃতিক অঙ্গজ জননের গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: কিছু উদ্ভিদের ক্ষেত্রে অঙ্গজ জনন আবশ্যিক, কারণ- ① কলা, গোলাপ প্রভৃতি উদ্ভিদে যৌন জনন হয় না। এইসব ক্ষেত্রে অঙ্গজ জনন হল জননের একমাত্র উপায়। ② যৌন জনন সময়সাপেক্ষ, জটিল ও বাহক নির্ভর, অন্য দিকে অঙ্গজ জনন সরল ও দ্রুত প্রজনন পদ্ধতি। তাই বহু উদ্ভিদ এই পদ্ধতিতে প্রজননে অভিযোজিত হয়।
. জনুক্রমের গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: কোনো জীবের হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড জনু চক্রাকারে আবর্তিত হলে তার জেনেটিক বস্তুর ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হয় জনুক্রমের মাধ্যমে।
60. স্পোরোফাইট কাকে বলে?
উত্তর: ফার্ন-জাতীয় উদ্ভিদে ডিপ্লয়েড জাইগোট মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে যে বহুকোশী ডিপ্লয়েড উদ্ভিদ সৃষ্টি করে, তাকে স্পোরোফাইট বা রেণুধর উদ্ভিদ বলে।
4. Long Question Answer
1. জনন কাকে বলে? কোনো জীবের জন্য প্রজনন গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর: জনন: যে জৈবনিক পদ্ধতিতে জীব নিজ আকৃতি ও প্রকৃতিবিশিষ্ট এক বা একাধিক অপত্য জীব সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের প্রজাতির অস্তিত্ব পৃথিবীতে বজায় রাখে, তাকে জনন বলে।
[+ জননের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব: জীবজগতে জননের গুরুত্ব অপরিসীম। এগুলি নিম্নরূপ-
① অস্তিত্ব রক্ষা করা: জননের সাহায্যে জীব নতুন অপত্য সৃষ্টি করে। ফলে, তার নিজ প্রজাতির সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং প্রজাতির অস্তিত্ব বজায় থাকে।
② বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারাবাহিকতা অটুট রাখা: জননের ফলে নতুন অপত্য জীব সৃষ্ট হয়। এর ফলে জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্যের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।
③ জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষা: জীবের মৃত্যুর ফলে জীবের সংখ্যার হ্রাস ঘটে। জননের ফলে নতুন জীব সৃষ্টির মাধ্যমে মৃত্যুজনিত সংখ্যাহ্রাস পূরণ হয়। এর ফলে পৃথিবীতে জীবের ভারসাম্য তথা বাস্তুতান্ত্রিক সাম্য বজায় থাকে।
④ জৈব অভিব্যক্তি: যৌন জননের দ্বারা জীবদেহে মিউটেশন বা পরিব্যক্তি ঘটে। আবার, মিউটেশনের ফলে জীবদেহের মধ্যে নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য বা ভেদ বা প্রকরণের উদ্ভব হয়। প্রকরণ জীবের অভিযোজন ও অভিব্যক্তিতে সহায়তা করে।
2. জননের প্রকারভেদ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। অথবা, বিভিন্ন প্রকার জনন পদ্ধতির নাম, সংজ্ঞা ও উদাহরণ লেখো।
উত্তর: [ জননের প্রকারভেদ: জীবজগতে প্রধানত দুইপ্রকার জনন দেখা যায়, যথা-① অযৌন জনন এবং ② যৌন জনন। এ ছাড়া উদ্ভিদজগতে বিশেষ ধরনের অযৌন জনন বা অঙ্গজ জনন দেখা যায়।
① অযৌন জনন: যে জনন প্রক্রিয়ায় জননকোশ বা গ্যামেট উৎপন্ন না হয়ে রেণুর সাহায্যে বা সরাসরি দেহকোশ বিভাজনের মাধ্যমে অপত্য জীবের সৃষ্টি হয়, তাকে অযৌন জনন বলে। এক্ষেত্রে একটিমাত্র জনিতৃ জীবের প্রয়োজন হয়। অপত্যগুলি জিনগতভাবে জনিতৃ জীবের সমপ্রকৃতির হয়। অপুষ্পক উদ্ভিদের ক্ষেত্রে অযৌন জননের একক হল হ্যাপ্লয়েড (n) রেণু। এই পদ্ধতিতে স্বল্প সময়ে বেশি সংখ্যক জীব সৃষ্টি হয়। যেমন-অ্যামিবা (Amoeba), ব্যাকটেরিয়া, মিউকর (Mucor) প্রভৃতির জনন পদ্ধতি।
② অঙ্গজ বংশবিস্তার: যে বিশেষ প্রকার অযৌন জনন পদ্ধতিতে উদ্ভিদদেহের যে-কোনো অঙ্গ বা তার অংশবিশেষ জনিতৃ উদ্ভিদদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পুনরুৎপাদনের দ্বারা নতুন অপত্যের সৃষ্টি করে, তাকে অঙ্গজ বংশবিস্তার বলে। উদ্ভিদ প্রাকৃতিক অঙ্গজ বংশবিস্তারের দ্বারা প্রাকৃতিক উপায়ে অনুকূল পরিবেশে মূল, কাণ্ড ও পাতার মাধ্যমে বংশবিস্তার করে। কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার শাখাকলম, জোড়কলম, অণুবিস্তারণের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে।
③ যৌন জনন: যে জনন পদ্ধতিতে দুটি ভিন্নধর্মী গ্যামেট বা জননকোশ মিলিত হয়ে অপত্যের সৃষ্টি করে, তাকে যৌন জনন বলে। এইপ্রকার জননে একই প্রজাতির দুটি জীবের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে দুটি ভিন্নধর্মী গ্যামেট বা জননকোশের মিলন হয়, অর্থাৎ পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেটের মিলন ঘটে। পুংজনন মাতৃকোশ বা স্ত্রীজনন মাতৃকোশে মিয়োসিস পদ্ধতিতে হ্যাপ্লয়েড (n) পুং বা স্ত্রী জননকোশ তৈরি করে। যেমন- ব্যাং, মানুষ, সপুষ্পক উদ্ভিদ প্রভৃতির জনন পদ্ধতি।
3. অযৌন জননের সুবিধা ও অসুবিধা লেখো।
উত্তর: অযৌন জননের সুবিধা: ① অযৌন জনন পদ্ধতিতে কেবলমাত্র একটি জীব অংশগ্রহণ করে, ফলে সহজে জনন সম্ভব হয়। ② এই পদ্ধতিতে একসঙ্গে বহু অপত্য জীব সৃষ্ট হয়। ও অযৌন জননে কম শক্তি ব্যয়িত হয়। ④ এই পদ্ধতি সরল, নিশ্চিত এবং এতে সময় কম লাগে। ⑤ অপত্য জীবে বর্তমান কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যাবার আশঙ্কা থাকে না। অপত্যগুলি তাদের পরিচিত পরিবেশে সহজে মানিয়ে নিতে পারে।
অযৌন জননের অসুবিধা: ① অযৌন জননে প্রকরণের (variation) কোনো সম্ভাবনা থাকে না। ② এই পদ্ধতিতে সৃষ্ট অপত্য জীবের মধ্যে অভিযোজন ক্ষমতা কমে আসে এবং ফলে অবলুপ্তির সম্ভাবনা থাকে। ও এই জননে গ্যামেট বা জননকোশের প্রয়োজন হয় না, তাই গ্যামেট গঠনকালে মিয়োসিসের মাধ্যমে নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হয় না।
4. উপযুক্ত উদাহরণসহ অযৌন জননের পাঁচটি পদ্ধতি বর্ণনা করো।
উত্তর: [ অযৌন জনন পদ্ধতিসমূহ: জীবদেহে যেসব অযৌন জনন পদ্ধতি দেখা যায়, সেগুলি হল-
① বিভাজন: অধিকাংশ এককোশী জীবে মাইটোসিস বা অ্যামাইটোসিস কোশ বিভাজন পদ্ধতিতে দুই (দ্বিবিভাজন) বা দুইয়ের অধিক (বহুবিভাজন) নতুন অপত্য সৃষ্টি হয়। উদাহরণ-ঈস্ট, ব্যাকটেরিয়া প্রভৃতিতে দ্বিবিভাজন সম্পন্ন হয়। আবার অ্যামিবা-তে অনুকূল পরিবেশে দ্বিবিভাজন এবং প্রতিকূল পরিবেশে বহুবিভাজন ঘটে।
② কোরকোদ্গম: এককোশী উদ্ভিদের দেহের কোনো বিশেষ অংশ স্ফীত হয়ে কোরক সৃষ্টি করে। পরে কোরক মাতৃকোশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি করে। উদাহরণ-ঈস্টের ক্ষেত্রে কোরকোদ্গম লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া হাইড্রার দেহেও কোরকোম লক্ষ করা যায়। তবে হাইড্রা-তে দেহের বাইরে বাড বা কোরক সৃষ্টি করে।
③ খন্ডীভবন: এই প্রকার অযৌন জননে জনিতৃ জীবের দেহ দুই বা তার বেশি খণ্ডে ভেঙে যায় এবং প্রতিটি খণ্ড থেকে অপত্য সৃষ্টি হয়। উদাহরণ-স্পাইরোগাইরা নামক শৈবালে খন্ডীভবন ঘটে। এ ছাড়া প্ল্যানেরিয়া, হাইড্রা প্রভৃতি প্রাণীতেও খন্ডীভবন ঘটে।
④ পুনরুৎপাদন: এই জাতীয় অযৌন জনন পদ্ধতিতে জনিত্ব জীবের সামান্য দেহাংশ সম্পূর্ণ নতুন জীব সৃষ্টি করে। উদাহরণ- প্ল্যানেরিয়া নামক চ্যাপটাকৃমিতে এইপ্রকার জনন দেখা যায়। এ ছাড়া হাইড্রা ও স্পঞ্জেও পুনরুৎপাদন ঘটে থাকে।
⑤ রেণু উৎপাদন: এই ধরনের অযৌন জনন পদ্ধতিতে জনিতৃদেহে এককোশী রেণু উৎপাদিত হয়। ওই রেণু আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে, নতুন অপত্য জীব সৃষ্টি করে। উদাহরণ-মস, ফার্ন, ছত্রাক (কনিডিয়া), ব্যাকটেরিয়া (অন্তঃরেণু) প্রভৃতিতে রেণু উৎপাদন বা স্পোরুলেশন দেখা যায়।
5. চিহ্নিত চিত্রের সাহায্যে ঈস্ট ও হাইড্রার কোরকোদ্গম পদ্ধতি বর্ণনা করো। অথবা, ঈস্টের কোরকোদগম পদ্ধতি কীভাবে ঘটে?
উত্তর: [ ঈস্ট-এর কোরকোেড়্গম: ঈস্ট মাতৃকোশের অসমান বিভাজনের ফলে ক্ষুদ্র প্রবর্ধকের মতো কোরক সৃষ্টি হয়, যার মধ্যে জনিতৃ নিউক্লিয়াস বিন্যস্ত থাকে। পরবর্তীকালে মাতৃদেহ থেকে কোরকটি বিচ্ছিন্ন হয় ও নতুন অপত্য ঈস্ট তৈরি করে। বিশেষ ক্ষেত্রে, টবুলা দশায় ঈস্টের কোরকটি টবুলেশন পদ্ধতিতে বার বার বিভাজিত হয়ে ছদ্ম মাইসেলিয়াম গঠন করে।
[⇨ হাইড্রা-এর কোরকোদ্গম: Hydra (হাইড্রা)-র কোরক জনিতুর দেহের বাইরে সৃষ্টি হয় (এক্সোজেনাস বাড)। প্রথমে প্রবর্ধকরূপে সৃষ্টি হওয়ার পর অপত্য হাইড্রা-র মুখছিদ্র, কর্ষিকা প্রভৃতির গঠন সম্পূর্ণ হয় এবং সেটি মাতৃদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়।
6. উপযুক্ত উদাহরণসহ খণ্ডীভবন ও পুনরুৎপাদন ব্যাখ্যা করো। অনুরূপ প্রশ্ন, উদাহরণসহ অযৌন জননের দুটি পদ্ধতির নাম লেখো।
উত্তর: [ খণ্ডীভবন: এই পদ্ধতিতে জনিতৃ জীবের দেহ দুই বা ততোধিক খণ্ডে ভেঙে যায় ও প্রতিটি খণ্ড থেকে নতুন অপত্যের সৃষ্টি হয়। উদাহরণ- Spirogyra (স্পাইরোগাইরা) নামক শৈবালের সূত্রাকার দেহটি জলস্রোতের প্রভাবে বা আঘাতজনিত কারণে খণ্ডিত হয়ে যায়। প্রতিটি দেহাংশ মাইটোসিস কোশ বিভাজন পদ্ধতি দ্বারা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে নতুন অপত্য জীব সৃষ্টি করে।
[ পুনরুৎপাদন: এই অযৌন জনন পদ্ধতিতে জনিত্ব জীবের সামান্য দেহাংশ সম্পূর্ণ নতুন জীব সৃষ্টি করে। এইপ্রকার অযৌন জনন পদ্ধতিকে মরফাল্যাক্সিস বলে। উদাহরণ-Planaria (প্ল্যানেরিয়া) নামক চ্যাপটা কৃমির দেহের যে-কোনো অংশ বিচ্ছিন্ন হলে, প্রতিটি বিচ্ছিন্ন অংশ থেকে নতুন অপত্যের সৃষ্টি হয়। প্ল্যানেরিয়া ছাড়া স্পঞ্জ, Hydra (হাইড্রা)-তেও পুনরুৎপাদন দেখা যায়।
7. স্পোরুলেশন বা রেণু উৎপাদন বলতে কী বোঝ? ছত্রাক এবং মস ও ফার্নের রেণু উৎপাদন পদ্ধতি আলোচনা করো।
উত্তর: স্পোরুলেশন বা রেণু উৎপাদন: যে অযৌন জনন পদ্ধতিতে মস, ফার্ন ও ছত্রাকদেহে সৃষ্ট এককোশী রেণু জনিতৃ দেহ থেকে আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং নতুন অপত্য সৃষ্টি করে, তাকে রেণু উৎপাদন বা স্পোরুলেশন বলে।
[+ ছত্রাকের স্পোরুলেশন: ছত্রাকে বিভিন্নরকম গঠনের এবং গমন ক্ষমতাযুক্ত বা গমন ক্ষমতাবিহীন রেণু দেখা যায়, যা উপযুক্ত পরিবেশে অঙ্কুরিত হয়ে অপত্য ছত্রাক গঠন করে। এই বিভিন্ন ধরনের রেণুগুলি হল- চলন ক্ষমতাযুক্ত জুস্পোর, চলন ক্ষমতাবিহীন অ্যাপ্লানোস্পোর, পুরু প্রাচীরযুক্ত ক্ল্যামাইডোস্পোর, অণুসূত্র খন্ডীভবনের দ্বারা সৃষ্ট ওইডিয়া ও কনিডিয়া, স্পোরানজিয়ামে উৎপন্ন স্পোরানজিওস্পোর।
মস ও ফার্ন-এর স্পোরুলেশন: মসের রেণুধর উদ্ভিদের রেণুধর কলা থেকে রেণুর সৃষ্টি হয়। ফার্নের রেণুধর উদ্ভিদের রেণুস্থলীতে সমআকৃতির রেণু বা বিষম আকৃতির রেণু উৎপন্ন হয়।
৪. চিহ্নিত চিত্রের সাহায্যে অ্যামিবা ও প্লাসমোডিয়াম-এর বিভাজন পদ্ধতি বর্ণনা করো।
উত্তর: অ্যামিবার বিভাজন পদ্ধতি: Amoeba (অ্যামিবা) একটি স্বাধীনজীবী আদ্যপ্রাণী, অ্যামিবা-র নিউক্লিয়াসটি অ্যামাইটোসিস পদ্ধতিতে দ্বিবিভাজিত হয়। এইসময় সমগ্র কোশটি এবং নিউক্লিয়াস-দুই-ই লম্বায় বেড়ে যায়। নিউক্লিয়াস লম্বায় বিবর্ধিত হয়ে ডাম্বেল-এর আকার ধারণ করে। এরপর কোশপর্দা ও নিউক্লিয়াসের মাঝ বরাবর খাঁজ (furrow) সৃষ্টির মাধ্যমে বিভাজনরত নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম লম্বতলে (90°) বিভাজিত হয়ে দুই অপত্য অ্যামিবা তৈরি করে।
প্লাসমোডিয়াম-এর বিভাজন পদ্ধতি: Plasmodium (প্লাসমোডিয়াম) একটি এককোশী পরজীবী। এটি মানবদেহে ম্যালেরিয়া রোগের জন্য দায়ী। এটি মানুষের যকৃতে সাইজোগোনি নামক বহুবিভাজন পদ্ধতি সম্পন্ন করে ও বেশ কয়েকটি দশার মধ্যে দিয়ে নিজের জীবনচক্র অতিবাহিত করে। – সাইজন্ট নামক দশায়, মাইটোসিসের ক্যারিওকাইনেসিস বিভাজন দ্বারা দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস সৃষ্টি করে। এরপর কোশের মধ্যে একাধিকবার ক্যারিওকাইনেসিস ক্রিয়া সম্পন্ন করে অসংখ্য অপত্য নিউক্লিয়াস তৈরি হয়। পরবর্তী পর্যায়ে সাইটোকাইনেসিস পদ্ধতি দ্বারা অসংখ্য মেরোজয়েট উৎপন্ন হয়। এইভাবে প্লাসমোডিয়াম-এ বহুবিভাজন পদ্ধতিটি সম্পন্ন হয়। এই মেরোজয়েটগুলি নতুন কোশকে আক্রমণ করে ও একই পদ্ধতিতে আরও বেশি সংখ্যক মেরোজয়েট উৎপন্ন করে। উসিস্ট বা স্পোরন্ট দশায় বহুবিভাজন ঘটলে তা থেকে স্পোরোজয়েট সৃষ্টি হয়। এই প্রক্রিয়াকে স্পোরোগোনি বলে।
9. অঙ্গজ বংশবিস্তার বা অঙ্গজ জনন কাকে বলে?
অঙ্গজ বংশবিস্তারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: অঙ্গজ বংশবিস্তার বা অঙ্গজ জনন: যে অযৌন জনন পদ্ধতিতে উদ্ভিদদেহের যে-কোনো অঙ্গ বা তার অংশবিশেষ জনিতৃ উদ্ভিদদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোশ বিভাজন ও বৃদ্ধির দ্বারা নতুন অপত্যের সৃষ্টি করে, তাকে অঙ্গজ বংশবিস্তার বা অঙ্গজ জনন বলে।
[• অঙ্গজ বংশবিস্তারের সুবিধা: ① অঙ্গজ বংশবিস্তারে একই রকম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উদ্ভিদ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়। ② এইপ্রকার বংশবিস্তারে একটি উদ্ভিদ থেকেই অনেক উদ্ভিদ সৃষ্টি করা যায়। ③ কম সময়ের মধ্যে অপত্য সৃষ্টি করা যায়। ④ বছরের যে-কোনো ঋতুতে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি করা যায়। ⑤ অপত্যদেহে কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্য অপরিবর্তিত থাকে।
অঙ্গজ বংশবিস্তারের অসুবিধা: ① অঙ্গজ বংশবিস্তারে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উন্নত উদ্ভিদ পাওয়া যায় না। ② এইপ্রকার বংশবিস্তারে অভিব্যক্তি ঘটা সম্ভব নয়। ③ অপত্য উদ্ভিদগুলির অভিযোজন ক্ষমতা কমে যায় বলে অবলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
10. অঙ্গজ জনন অভিব্যক্তির সহায়ক নয় কেন? মূলজ মুকুল ও পত্রাশ্রয়ী মুকুলের মাধ্যমে কীভাবে উদ্ভিদের প্রাকৃতিক অঙ্গজ জনন বা অঙ্গজ বংশবিস্তার ঘটে, তা সংক্ষেপে আলোচনা করো। অংশ প্রশ্ন, পাথরকুচি অস্থানিক মুকুলের সাহায্যে কীভাবে প্রাকৃতিক অঙ্গজ বংশবিস্তার করে, তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: অঙ্গজ জনন অভিব্যক্তির সহায়ক নয় কারণ: অঙ্গজ জনন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন অপত্যগুলি জিনগতভাবে জনিতৃ জীবের সমপ্রকৃতির হয়। গ্যামেট সৃষ্টি ও ক্রসিং ওভারের সুযোগ না থাকায় অপত্য জীবে কোনো নতুন বৈশিষ্ট্য বা প্রকরণ সৃষ্টি হয় না। অপত্য জীবের অভিযোজন ক্ষমতাও বাড়তে পারে না। ফলে অঙ্গজ জনন অভিব্যক্তির সহায়ক হয় না।
[* মূলজ মুকুলের মাধ্যমে বা মূলের মাধ্যমে: কিছুকিছু উদ্ভিদে, যেমন-মিষ্টি আলু বা রাঙা আলু, পটল প্রভৃতি উদ্ভিদের রসালো মূল থেকে অস্থানিক মুকুল জন্মায়। একে মূলজ মুকুল বলে। পরে এই মুকুলসহ মূল খন্ড খন্ড করে মাটিতে রোপণ করলে নতুন উদ্ভিদ জন্মায়।
পত্রাশ্রয়ী মুকুলের মাধ্যমে বা পাতার মাধ্যমে: কিছুকিছু উদ্ভিদের ক্ষেত্রে, যেমন-পাথরকুচি, Begonia (বিগোনিয়া) প্রভৃতি উদ্ভিদের পাতার কিনারা থেকে অস্থানিক মুকুল জন্মায়। একে পত্রাশ্রয়ী মুকুল বলে। এই পত্রাশ্রয়ী মুকুলের নীচের দিক থেকে আবার প্রচুর অস্থানিক মূল বের হয়। পরে মূলসহ প্রতিটি পাতা বিচ্ছিন্ন হয়ে অনুকূল পরিবেশে নতুন উদ্ভিদের জন্ম দেয়।
11. পরিবর্তিত কাণ্ডের মাধ্যমে উদ্ভিদের অঙ্গজ জনন উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তর: পরিবর্তিত কাণ্ডের মাধ্যমে: পরিবর্তিত কাণ্ডের দ্বারা অঙ্গজ জনন দু-ভাবে সম্পন্ন হয়। এগুলি হল-① মৃদ্গত কাণ্ডের সাহায্যে: আদা, পেঁয়াজ, আলু প্রভৃতি উদ্ভিদের কাণ্ড মাটির নীচে খাদ্য সঞ্চয় বা প্রতিকূল পরিবেশের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পরিবর্তিত হয়ে বিশেষ আকার ধারণ করে। একে মৃদ্গত কাণ্ড বলে। এই মৃদ্গত কাণ্ডের গা থেকে মুকুল উৎপন্ন হয় এবং উৎপন্ন মুকুল অঙ্গজ জননের মাধ্যমে নতুন উদ্ভিদের জন্ম দেয়। বিভিন্ন প্রকারের মৃদ্গত কাণ্ড হল-আলুর স্ফীতকন্দ, আদার গ্রন্থিকাণ্ড, পেঁয়াজের কন্দ এবং ওলের গুঁড়িকন্দ। ② অর্ধবায়বীয় কাণ্ডের সাহায্যে: কচুরিপানা উদ্ভিদের কান্ডে বায়ু ও জলের সংলগ্ন স্থান দিয়ে ছোটো অর্ধবায়বীয় কাণ্ড অনুভূমিকভাবে বিস্তৃত হয়। এইপ্রকার কান্ডকে খর্ব-ধাবক বলে। এই অংশ থেকে অস্থানিক মূল, কাণ্ড ও পাতা সৃষ্টি হয় ও পরে এই অংশে মাতৃদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি করে।
12. কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার বলতে কী বোঝ লেখো। উদ্ভিদের কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তারের শাখাকলম, জোড়কলম পদ্ধতিগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
উত্তর: কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার: হর্টিকালচার বা উদ্যানপালন বিদ্যায় ব্যবহৃত মানবসৃষ্ট অঙ্গজ বংশবিস্তারের পদ্ধতিসমূহকে কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার বা কৃত্রিম অঙ্গজ জনন বলে।
[⇨ কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তারের পদ্ধতি: উদ্ভিদের কৃত্রিম অঙ্গজ বংশবিস্তার বিভিন্ন পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। যথা-
① কাটিং বা শাখাকলম দ্বারা: যে কৃত্রিম অঙ্গজ জনন পদ্ধতিতে উদ্ভিদের শাখা কেটে ভিজে মাটিতে রোপণ করা হয়, প্রয়োজনমতো জল দিতে থাকলে পর্ব থেকে নতুন অস্থানিক মূল বের হয় এবং ক্রমশ ওই শাখা থেকেই একটি পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদের জন্ম হয়, তাকে কাটিং বা শাখাকলম বলে। গোলাপ, জবা, গাঁদা, সজনে ইত্যাদি উদ্ভিদে এইভাবে। জনন সম্ভব।
② গ্রাফটিং বা জোড়কলম দ্বারা: যে কৃত্রিম অঙ্গজ জনন পদ্ধতিতে দুটি ভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদকে বা উদ্ভিদের দুটি শাখাকে পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে কয়েক মাস রেখে দিলে সেই জোড়া অংশ মিশে যায় এবং নতুন ধরনের উদ্ভিদের সৃষ্টি হয়, তাকে গ্রাফটিং বা জোড়কলম বলে। এই পদ্ধতিতে উন্নততর যে উদ্ভিদটিকে জোড়া লাগানো হয়, তাকে সিয়ন বলে এবং যার ওপর জোড়া লাগানো হয় তাকে স্টক বলে। সিয়ন সাধারণত স্টক অপেক্ষা উন্নতমানের হয়। সিয়ন ও স্টক-এর সংযোগস্থলটিকে মাটি দিয়ে আবৃত করে কাপড় বা খড়ের সাহায্যে বেঁধে দেওয়া হয়। উন্নতমানের উদ্ভিদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। আম, জাম, লেবু, কুল প্রভৃতি উদ্ভিদে এইভাবে জনন সম্ভব।
13. মাইক্রোপ্রোপাগেশনের নীতি কী? অযৌন ও যৌন জননের পার্থক্য লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, অযৌন ও যৌন জননের মধ্যে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে পার্থক্য নিরূপণ করো। ① জনিত জীবের সংখ্যা, ② অপত্য জনুর প্রকৃতি 2+3
উত্তর: মাইক্রোপ্রোপাগেশনের নীতি: উদ্ভিদকোশের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, এইপ্রকার কোশ যে-কোনো কলাকোশ থেকে কোশ বিভাজন দ্বারা সম্পূর্ণ উদ্ভিদ সৃষ্টি করতে পারে। একে কোশের টোটিপোটেন্সি ধর্ম বলে। ‘মাইক্রো’ শব্দের অর্থ হল ক্ষুদ্র। অর্থাৎ, উদ্ভিদের মূল, কাণ্ড বা পাতার ছোটো টুকরো উপযুক্ত কর্ষণ মাধ্যম (culture medium)-এ রেখে বিভাজিত হতে দিলে, তা অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি করে।
14. মাইক্রোপ্রোপাগেশন কীভাবে সম্পন্ন করা হয়? এর সুবিধা কী?
অথবা, মাইক্রোপ্রোপাগেশন বা অণুবিস্তারণ পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা দাও।
অনুরূপ প্রশ্ন, মাইক্রোপ্রোপাগেশনের মাধ্যমে কীভাবে পছন্দমাফিক ভ্যারাইটির দ্রুত বংশবিস্তার সুনিশ্চিত করা যায়?
উত্তর: মাইক্রোপ্রোপাগেশন: মাইক্রোপ্রোপাগেশন বা অণুবিস্তারণ পদ্ধতির ধারাবাহিক পর্যায়গুলি হল-① এই পদ্ধতিতে প্রথমে উপযুক্ত এক্সপ্ল্যান্ট বা উদ্ভিদ দেহাংশ নির্বাচন করা হয়, যা পুরোপুরি প্রজাতিনির্ভর। ② নির্বাচিত এক্সপ্ল্যান্টটিকে প্রথমে 70% অ্যালকোহলে 1 মিনিট ধুয়ে, পরে 10% হাইপোক্লোরাইট দ্রবণে 15 মিনিট রেখে নির্বীজ বা স্টেরিলাইজ করা হয়। এরপর এক্সপ্ল্যান্টটিকে কর্ষণ মাধ্যমে স্থাপন করা হয়। ③ এই কর্ষণ মাধ্যমে শক্তির উৎসরূপে সুক্রোজ ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রকরূপে কৃত্রিম অক্সিন, সাইটোকাইনিন এবং বিভিন্ন পরিপোষক ব্যবহৃত হয়। ④ প্রথমে উদ্ভিদ দেহাংশ থেকে একগুচ্ছ অবিভেদিত কোশ বা ক্যালাস সৃষ্টি হয়। এটি পরে বিভেদিত হয়ে বিভিন্ন কলা সৃষ্টির মাধ্যমে অসংখ্য এমব্রিঅয়েড (embrioid) গঠন করে। এমব্রিঅয়েড ক্রমে বিভেদিত হয়ে অপত্য উদ্ভিদ বা প্ল্যান্টলেট (plantlet) সৃষ্টি করে।
[+ মাইক্রোপ্রোপাগেশনের সুবিধা: মাইক্রোপ্রোপাগেশনের সুবিধাগুলি হল-① এই পদ্ধতিতে কম জায়গায় দ্রুত ও অধিক সংখ্যক চারা তৈরি করা যায়। ② এর দ্বারা রোগমুক্ত চারাগাছ তৈরি করা সম্ভব হয়। ও পছন্দমাফিক উদ্ভিদ ভ্যারাইটির উৎপাদন সম্ভব হয়। বন্ধ্যা উদ্ভিদের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করা যায়। ④ এই পদ্ধতির সাহায্যে বছরের যে-কোনো সময়ে চারা উৎপন্ন করা যায়। ⑤ এই পদ্ধতির সাহায্যে যৌন জননে অক্ষম উদ্ভিদের ক্ষেত্রে বংশবিস্তার সম্ভব।
15. রেখাচিত্রের সাহায্যে ফার্ন-এর জনুক্রম প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করো ও তার পর্যায় চিত্র আঁকো।
অথবা, ফার্নের জনুক্রম একটি শব্দচিত্রের মাধ্যমে দেখাও।
উত্তর: ফার্ন-এর জনুক্রম প্রক্রিয়া: যৌন জননকারী জীবের জীবনচক্রে হ্যাপ্লয়েড (n) জনু এবং ডিপ্লয়েড (2n) জনুর চক্রাকার আবর্তনকে জনুক্রম বলা হয়। ফার্নের ক্ষেত্রে ডিপ্লয়েড (2n) রেণুধর জনু এবং হ্যাপ্লয়েড (n) লিঙ্গধর জনু চক্রাকারে আবর্তিত হয়। ফার্নের যে উদ্ভিদদেহটির রেণু ধারণ করে, তাকে রেণুধর উদ্ভিদ বা স্পোরোফাইট বলে। এই দশাটিকে লিঙ্গধর জনু বলে। মিয়োসিস পদ্ধতিতে ফার্নের রেণুধর জনুর রেণুমাতৃকোশ থেকে হ্যাপ্লয়েড (n) রেণু উৎপন্ন হয়। এরপর এই রেণু, পরিবেশে মুক্ত হয়ে এবং অঙ্কুরিত হয়ে অপরিণত লিঙ্গধর উদ্ভিদ বা প্রোটোনিমা তৈরি করে। এই প্রোটোনিমা থেকে লিঙ্গধর উদ্ভিদ বা গ্যামেটোফাইট সৃষ্টি হয়। গ্যামেটোফাইট দশাটিকে লিঙ্গধর জনু বলে এবং ফার্নের এই লিঙ্গধর দশাটিকে প্রোথ্যালাস বলে। গ্যামোটোফাইটের অ্যানথেরিডিয়ামে উৎপন্ন শুক্রাণু (n), আর্কিগোনিয়ামে উৎপন্ন ডিম্বাণুকে (n) নিষিক্ত করে এবং ডিপ্লয়েড জাইগোট (2n) সৃষ্টি করে। সেই জাইগোট থেকে পুনরায় রেণুধর বা স্পোরোফাইট উদ্ভিদ সৃষ্টি হয়।
16. ফার্নের জনুক্রমকে ডিপ্লোবায়োন্টিক জনুক্রম বলা হয় কেন? ফার্নের জনুক্রমে যৌন ও অযৌন জননের পর্যায়ক্রম গুরুত্বপূর্ণ কেন? 2+3
উত্তর: + ডিপ্লোবায়োন্টিক জনুক্রম: পর্যায়ক্রমে রেণুধর ও লিঙ্গধর উদ্ভিদ জনুর আবর্তন দ্বারা ফার্নের জনুক্রম সম্পন্ন হয়ে থাকে। ফার্নের জীবনচক্রে হ্যাপ্লয়েড জনু ও ডিপ্লয়েড জনু প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে এই ধরনের জনুক্রমকে ডিপ্লোবায়োন্টিক জনুক্রম বলা হয়।
[ ফার্নের জনুক্রম: ফার্নের মূল উদ্ভিদদেহ রেণুধর এবং ডিপ্লয়েড প্রকৃতির। রেণুধর উদ্ভিদের রেণুস্থলীতে রেণু উৎপন্ন হয়। ডিপ্লয়েড রেণু মাতৃকোশ (2n) মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় হ্যাপ্লয়েড (n) সংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট রেণু সৃষ্টি করে। রেণু অঙ্কুরিত হয়ে লিঙ্গধর দেহ গঠন করে।
সহবাসী লিঙ্গধর জনুতে (n) পুংধানী ও স্ত্রীধানী উভয়ই উৎপন্ন হয়। পুংধানীতে পুং জননকোশ (শুক্রাণু) ও স্ত্রীধানীতে স্ত্রী জননকোশ (ডিম্বাণু) গঠিত হয়। শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর যৌন মিলনে জাইগোট (2n) উৎপন্ন হয়। পলে জাইগোট থেকে ভ্রুণ ও ভ্রুণ থেকে রেণুধর দেহ (2n) সৃষ্টি হয়। মোট কথা ফার্নের জীবনচক্রে হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড জনু প্রায় সমান গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণে ফার্নের জনুক্রমে অযৌন জনন ও যৌন জননের পর্যায়ক্রমও গুরুত্বপূর্ণ।
5. Fill in The Blanks
1. যে জীব থেকে নতুন জীব সৃষ্টি হয়, তাকে ————————- জীব বলে।
উত্তর: জনিতৃ
2. মাতৃজনু থেকে সৃষ্ট নতুন জীবটিকে ———————– জীব বলে।
উত্তর: অপত্য
3. অযৌন জননে———————- মাত্র জনিতৃ জীবের প্রয়োজন হয়।
উত্তর: একটি
4. যৌন জনন ———————- কোশ বিভাজনের ওপর নির্ভরশীল।
উত্তর: মিয়োসিস
5. নিষেকের ফলে উৎপন্ন ডিপ্লয়েড কোশকে ————————বলে।
উত্তর: জাইগোট
6. গ্যামেটের আকৃতির ওপর নির্ভর করে যৌন জনন ————————- প্রকারের হয়।
উত্তর: তিন
7. সিনগ্যামিতে একই আকার ও আয়তনের দুটি গ্যামেট জনন কোশাধারের মধ্যে মিলিত হলে, তাকে ———————- বলা হয়।
উত্তর: আইসোগ্যামি
৪. যে যৌন জননে পুরুষ ও স্ত্রী গ্যামেটের আকৃতি অসমান হয়, তাকে ———————– বলে।
উত্তর: অ্যানাইসোগ্যামি
9. যে যৌন জননে পুংগ্যামেট আকৃতিতে ছোটো এবং স্ত্রীগ্যামেট আকৃতিতে বড়ো হয়, তাকে —————————– বলে।
উত্তর: উগ্যামি
10. স্তন্যপায়ীর যৌন জনন ————————– প্রকৃতির।
উত্তর: উগ্যামি
11. অযৌন জনন সম্পন্নকারী একটি প্রাণী হল ———————————— ।
উত্তর: অ্যামিবা
12. স্পোরোগনি দ্বারা সৃষ্ট অপত্য প্লাসমোডিয়াম-দের ————————- বলে।
উত্তর: স্পোরোজয়েট
13. মসের রেণুধর উদ্ভিদের রেণুধর কলা থেকে ———————– সৃষ্টি হয়।
উত্তর: রেণু
14. রেণুর বিকাশ যার মধ্যে ঘটে থাকে সেটি হল ———————- ।
উত্তর: রেণুস্থলী
15. রাঙাআলুর ——————— মুকুল অঙ্গজ বিস্তারে সাহায্য করে।
উত্তর: মূলজ
16. পাথরকুচি পাতা ——————- মুকুলের দ্বারা জনন সম্পন্ন করে।
উত্তর: পত্রাশ্রয়ী
17. কোরকোদ্গমের দ্বারা অযৌন জনন সম্পন্ন করে এমন একটি বহুকোশী প্রাণী হল ———————।
উত্তর: হাইড্রা
18. কলাকর্ষণের মাধ্যমে উদ্ভিদের বংশবিস্তারের পদ্ধতিকে ———————— বলে।
উত্তর: মাইক্রোপ্রোপাগেশন
19. যে-কোনো কলাকোশ থেকে কোশ বিভাজন দ্বারা সম্পূর্ণ উদ্ভিদ সৃষ্টির ক্ষমতাকে ————————– ধর্ম বলা হয়।
উত্তর: টোটিপোটেন্সি
20. জীবের জীবনচক্র হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড জনুর চক্রাকার আবর্তনকে ————————– বলে।
উত্তর: জনুক্রম
21. জনুক্রম দেখা যায় ——————– উদ্ভিদে।
উত্তর: ফার্ন-জাতীয়
22. যে উদ্ভিদটি রেণু ধারণ করে, তাকে ———————— বলে।
উত্তর: স্পোরোফাইট/রেণুধর
23. উদ্ভিদের জীবনচক্রে হ্যাপ্লয়েড দশার প্রাধান্য থাকলে, তাকে ——————— জীবনচক্র বলে।
উত্তর: হ্যাপ্লন্টিক
1. MCQs Question Answer
1. জননের জন্য পরিবর্তিত, সীমিত বৃদ্ধিসম্পন্ন এবং ফল ও বীজ সৃষ্টিকারী বিটপকে বলে-
(i) সম্পূর্ণ ফুল
(ii) ফুল
(iii) বিটপ
(iv) ফল
উত্তর: (ii) ফুল
2. ফুল হল একপ্রকার রূপান্তরিত
(i) মূল
(ii) বিটপ
(iii) পাতা
(iv) পুষ্পবিন্যাস
উত্তর: (iv) পুষ্পবিন্যাস
3. একটি সম্পূর্ণ ফুলের স্তবক সংখ্যা হল-
(i) 3টি
(ii) 4টি
(iii) 5টি
(iv) 6টি
উত্তর: (ii) 4টি
4. যেসব ফুলের পুষ্পাক্ষের ওপর বৃতি, দলমণ্ডল, পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক এই চারটি স্তবক সাজানো থাকে, তাকে বলে-
(i) সমাঙ্গ ফুল
(ii) সম্পূর্ণ ফুল
(iii) পুষ্পবিন্যাস
(iv) অসম্পূর্ণ ফুল
উত্তর: (ii) সম্পূর্ণ ফুল
5. ফুলের সর্বাপেক্ষা বাইরের স্তবক হল-
(i) বৃতি
(ii) পুষ্পাক্ষ
(iii) দলমণ্ডল
(iv) পুংস্তবক
উত্তর: (i) বৃতি
6. ফুলে বৃতি ও দলমণ্ডল না থাকলে, তাকে বলে-
(i) একলিঙ্গ পুষ্প
(ii) উভলিঙ্গ পুষ্প
(iii) নগ্ন পুষ্প
(iv) আদর্শ পুষ্প
উত্তর: (iii) নগ্ন পুষ্প
7. কোনো পুষ্পে বৃতি ও পাপড়ি এই দুই স্তবকের পরিবর্তে একটি স্তবক থাকলে, তাকে বলে-
(i) পুষ্পাক্ষ
(ii) পুষ্পপুট
(iii) নগ্ন পুষ্প
(iv) পুষ্পপত্র
উত্তর: (ii) পুষ্পপুট
৪. পুংস্তবক এবং স্ত্রীস্তবক জননে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে, তাই এদের বলা হয়-
(i) সাহায্যকারী স্তবক
(ii) আনুষঙ্গিক স্তবক
(iii) অপরিহার্য স্তবক
(iv) অপ্রয়োজনীয় স্তবক
উত্তর: (iii) অপরিহার্য স্তবক
9. পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবকের মধ্যে যে-কোনো একটি অনুপস্থিত থাকলে, সেই ফুলকে বলে-
(i) উভলিঙ্গ ফুল
(ii) সমাঙ্গ ফুল
(iii) অনাবর্ত ফুল
(iv) একলিঙ্গ ফুল
উত্তর: (iv) একলিঙ্গ ফুল
10. পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক উভয়ই উপস্থিত থাকলে, সেই ফুলকে বলে-
(i) একলিঙ্গ ফুল
(ii) উভলিঙ্গ ফুল
(iii) বহুপ্রতিসম ফুল
(iv) সমাঙ্গ ফুল
উত্তর: (ii) উভলিঙ্গ ফুল
11. নীচের যেটি সমাঙ্গ পুষ্প, সেটি হল-
(i) মটর
(ii) ধুতরো
(iii) অপরাজিতা
(iv) বক
উত্তর: (ii) ধুতরো
12. একটি অসমাঙ্গ ও উভলিঙ্গ ফুল হল-
(i) অপরাজিতা
(ii) কুমড়ো
(iii) ধুতরো
(iv) জবা
উত্তর: (i) অপরাজিতা
13. একটি অসম্পূর্ণ, সমাঙ্গ, একলিঙ্গ ফুল হল-
(i) জবা
(ii) ধুতরো
(iii) কুমড়ো
(iv) অপরাজিতা
উত্তর: (iii) কুমড়ো
14. মটর ফুল হল-
(i) উভলিঙ্গ
(ii) একলিঙ্গ
(iii) অসম্পূর্ণ ফুল
(iv) কোনোটিই নয়
উত্তর: (i) উভলিঙ্গ
15. একই উদ্ভিদে পুংপুষ্প, স্ত্রীপুষ্প এবং উভলিঙ্গ পুষ্প জন্মালে, তাকে বলে-
(i) সহবাসী উদ্ভিদ
(ii) ভিন্নবাসী উদ্ভিদ
(iii) মিশ্রবাসী উদ্ভিদ
(iv) প্রবাসী উদ্ভিদ
উত্তর: (iii) মিশ্রবাসী উদ্ভিদ
16. একই প্রজাতির কোনো উদ্ভিদের একটিতে পুংপুষ্প এবং অপর একটি উদ্ভিদে স্ত্রীপুষ্প জন্মালে, তাকে বলে-
(i) একপ্রতিসম
(ii) সহবাসী
(iii) উভলিঙ্গ
(iv) ভিন্নবাসী
উত্তর: (iv) ভিন্নবাসী
17. নীচের যেটি পুংকেশর চক্র বা পুংস্তবকের অংশ নয়, সেটি হল-
(i) পরাগধানী
(ii) পুংদণ্ড
(iii) ডিম্বক
(iv) পরাগ
উত্তর: (iii) ডিম্বক
18. নীচের যেটি স্ত্রীস্তবকের বা গর্ভকেশর চক্রের অংশ নয়, সেটি হল-
(i) গর্ভমুণ্ড
(ii) গর্ভদণ্ড
(iii) পরাগ
(iv) ডিম্বক
উত্তর: (iii) পরাগ
19. জবা ফুলের গর্ভমুণ্ডের সংখ্যা-
(i) 2টি
(ii) 3টি
(iii) 5টি
(iv) অসংখ্য
উত্তর: (iii) 5টি
20. পরাগযোগ বলতে বোঝায়-
(i) ডিম্বকের মধ্যে পরাগনালীর বৃদ্ধি
(ii) পতঙ্গের বিভিন্ন ফুলে বসা
(iii) পরাগরেণুর অঙ্কুরণ
(iv) পরাগধানী থেকে গর্ভমুণ্ডে পরাগরেণুর স্থানান্তরণ
উত্তর: (iv) পরাগধানী থেকে গর্ভমুণ্ডে পরাগরেণুর স্থানান্তরণ
21. কোন্ উদ্ভিদে স্বপরাগযোগ লক্ষ করা যায়?
(i) পেঁপে
(ii) লাউ
(iii) শিম
(iv) তাল
উত্তর: (iii) শিম
22. কোন্টি স্বপরাগী উদ্ভিদ?
(i) তাল
(ii) লাউ
(iii) পেঁপে
(iv) সন্ধ্যামালতী
উত্তর: (iv) সন্ধ্যামালতী
23. একই উদ্ভিদের একই ফুলের মধ্যে পরাগযোগকে বলে-
(i) অটোগ্যামি
(ii) গেইটোনোগ্যামি
(iii) হেটেরোগ্যামি
(iv) কোনোটিই নয়
উত্তর: (i) অটোগ্যামি
24. একই উদ্ভিদের দুটি ভিন্ন পুষ্পের মধ্যে স্বপরাগযোগ ঘটলে, তাকে বলে-
(i) হোমোগ্যামি
(ii) ক্লিস্টোগ্যামি
(iii) গেইটোনোগ্যামি
(iv) জেনোগ্যামি
উত্তর: (iii) গেইটোনোগ্যামি
25. একই প্রজাতিভুক্ত দুটি উদ্ভিদের ফুলের মধ্যে ইতর পরাগযোগ ঘটলে, তাকে বলে-
(i) হোমোগ্যামি
(ii) ক্লিস্টোগ্যামি
(iii) গেইটোনোগ্যামি
(iv) জেনোগ্যামি
উত্তর: (iv) জেনোগ্যামি
26. প্রদত্ত কোন্টি ইতর পরাগযোগের বৈশিষ্ট্য তা নির্বাচন করো-
(i) একই গাছের একটি ফুলের মধ্যেই ঘটে
(ii) বাহকের প্রয়োজন হয় না
(iii) নতুন বৈশিষ্ট্য সঞ্চার হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে
(iv) পরাগরেণুর অপচয় বেশি ঘটে
উত্তর: (iv) পরাগরেণুর অপচয় বেশি ঘটে
27. কোন্ পরাগযোগের ফলে অপত্য উদ্ভিদে প্রকরণের সম্ভাবনা থাকে?
(i) ইতর পরাগযোগ
(ii) স্বপরাগযোগ
(iii) (i) ও (ii) উভয়ই
(iv) কোনোটিই নয়
উত্তর: (i) ইতর পরাগযোগ
28. নীচের কোন্ উদ্ভিদটি সবচেয়ে উন্নত বলে তুমি মনে কর?
(i) স্বপরাগযোগী উদ্ভিদ
(ii) ইতর পরাগযোগী উদ্ভিদ
(iii) একই সঙ্গে স্বপরাগযোগ ও ইতর পরাগযোগে সক্ষম উদ্ভিদ
(iv) কোনোটিই নয়
উত্তর: (iii) একই সঙ্গে স্বপরাগযোগ ও ইতর পরাগযোগে সক্ষম উদ্ভিদ
29. নিম্নলিখিত কোন্টি ইতর পরাগযোগের বৈশিষ্ট্য নয়?
(i) এটি কেবলমাত্র একলিঙ্গ ফুলেই ঘটে
(ii) এখানে বাহকের প্রয়োজনীয়তা একেবারেই নেই
(iii) কোনো ক্ষেত্রে পুরুষ ফুল আগে আবার কখনও স্ত্রী ফুল আগে পরিণত হয়
(iv) অপত্য উদ্ভিদের প্রকরণ সৃষ্টি হয়
উত্তর: (ii) এখানে বাহকের প্রয়োজনীয়তা একেবারেই নেই
30. মধুগ্রন্থি কোন্ পরাগযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়?
(i) এন্টোমোফিলি
(ii) অরনিথোফিলি
(iii) হাইড্রোফিলি
(iv) (i) ও (ii) উভয়ই
উত্তর: (iv) (i) ও (ii) উভয়ই
31. অ্যানিমোফিলির ক্ষেত্রে যার দ্বারা পরাগযোগ ঘটে, তা হল-
(i) জল
(ii) পতঙ্গ
(iii) বাতাস
(iv) পোকা
উত্তর: (iii) বাতাস
32. বায়ুপরাগী পুষ্প হল-
(i) ধান
(ii) পাতাশ্যাওলা
(iii) আম
(iv) শিমুল
উত্তর: (i) ধান
33. প্রদত্ত কোন্ বাক্যটি সঠিক?
(i) পতঙ্গরা, পাতাঝাঁঝি ও পাতাশ্যাওলা উদ্ভিদের পরাগযোগে সহায়তা করে।
(ii) পাখি, গোলাপ ও আম উদ্ভিদের পরাগযোগে সহায়তা করে।
(iii) জল, শিমুল ও পলাশ উদ্ভিদের পরাগযোগে সহায়তা করে।
(iv) বায়ু, ধান ও ভুট্টা উদ্ভিদের পরাগযোগে সহায়তা করে।
উত্তর: (iv) বায়ু, ধান ও ভুট্টা উদ্ভিদের পরাগযোগে সহায়তা করে।
34. ধান গাছের ফুলে কোন্ বৈশিষ্ট্যটি অনুপস্থিত?
(i) মকরন্দযুক্ত
(ii) গন্ধহীন
(iii) মসৃণ পরাগযোগ
(iv) শাখান্বিত গর্ভমুণ্ড
উত্তর: (i) মকরন্দযুক্ত
35. নীচের কোল্টি বায়ুপরাগী ফুলের একটি বৈশিষ্ট্য?
(i) ফুলগুলি উজ্জ্বল বর্ণের হয়
(ii) ফুলগুলি সুমিষ্ট গন্ধযুক্ত হয়
(iii) ফুলে মকরন্দ থাকে
(iv) ফুলগুলি আকারে ক্ষুদ্র হয়
উত্তর: (iv) ফুলগুলি আকারে ক্ষুদ্র হয়
36. জলপরাগী পুষ্প হল-
(i) আখ
(ii) পাতাঝাঁঝি
(iii) আম
(iv) শিমুল
উত্তর: (ii) পাতাঝাঁঝি
37. নীচের যেটির পরাগযোগে জলের প্রয়োজন হয় না, তা হল-
(i) পাতাঝাঁঝি
(ii) ভুট্টা
(iii) সেলাজিনেল্লা
(iv) পাতাশ্যাওলা
উত্তর: (ii) ভুট্টা
38. কীটপতঙ্গের সাহায্যে পরাগযোগকে বলে-
(i) অরনিথোফিলি
(ii) ম্যালাকোফিলি
(iii) অ্যানথ্রোপোফিলি
(iv) এন্টোমোফিলি
উত্তর: (iv) এন্টোমোফিলি
39. পতঙ্গপরাগী পুষ্প হল-
(i) ভুট্টা
(ii) ঝাঁঝি
(iii) আম
(iv) শিমুল
উত্তর: (iii) আম
40. পলাশ, শিমুল, মাদার প্রভৃতি উদ্ভিদ হল-
(i) বায়ুপরাগী
(ii) পক্ষীপরাগী
(iii) জলপরাগী
(iv) পতঙ্গপরাগী
উত্তর: (ii) পক্ষীপরাগী
41. পিঁপড়ে মাধ্যমে পরাগযোগ ঘটে যে উদ্ভিদে
(i) পাতা শ্যাওলা
(ii) শিমুল
(iii) পলাশ
(iv) আম
উত্তর: (iv) আম
42. পাখির সাহায্যে পরাগযোগকে বলে-
(i) এন্টোমোফিলি
(ii) অরনিথোফিলি
(iii) সাইকোফিলি
(iv) অ্যানথ্রোপোফিলি
উত্তর: (ii) অরনিথোফিলি
43. শামুকের দ্বারা পরাগযোগকে বলে-
(i) অ্যানিমোফিলি
(ii) এন্টোমোফিলি
(iii) হাইড্রোফিলি
(iv) ম্যালাকোফিলি
উত্তর: (iii) হাইড্রোফিলি
44. ইতর পরাগযোগ সম্পর্কিত প্রদত্ত কোন্ বক্তব্যটি সঠিক নয় তা শনাক্ত করো-
(i) বাহকের প্রয়োজন হয়
(ii) বংশধারায় নতুন বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব হয়
(iii) প্রজাতির বিশুদ্ধতা বজায় থাকে
(iv) বীজের অঙ্কুরণ হার বেশি হয়।
উত্তর: (iii) প্রজাতির বিশুদ্ধতা বজায় থাকে
45. ইতর পরাগযোগের পদ্ধতির ক্ষেত্রে নীচের কোন্ জোড়টি সঠিক?
উত্তর: (iv) পক্ষীপরাগী — পলাশ
46. সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন-
(i) নাওয়াসিন
(ii) মহেশ্বরী
(iii) ক্যামেরারিয়াস
(iv) স্ট্রাসবার্জার
উত্তর: (iv) স্ট্রাসবার্জার
47. পরাগরেণু সৃষ্টি হয়-
(i) গর্ভমুণ্ডে
(ii) পুংকেশরে
(iii) গর্ভকেশরে
(iv) পরাগধানীতে
উত্তর: (iv) পরাগধানীতে
48. ভূণস্থলী যার অন্তর্গত, তা হল-
(i) পরাগধানী
(ii) পরাগনালী
(iii) ডিম্বক
(iv) সবকটি
উত্তর: (iii) ডিম্বক
49. নীচের যেটি থেকে সপুষ্পক উদ্ভিদের ভূণস্থলী তৈরি হয়, তা হল-
(i) ভ্রূণ
(ii) মেগাস্পোর
(iii) জাইগোট
(iv) নিউসেলাস
উত্তর: (ii) মেগাস্পোর
50. ডিম্বকে সবচেয়ে বড়ো কোশটি হল-
(i) মেগাস্পোর মাতৃকোশ
(ii) প্রতিপাদ কোশ
(iii) কেন্দ্রীয় কোশ
(iv) সহকারী কোশ
উত্তর: (iii) কেন্দ্রীয় কোশ
51. পোলার নিউক্লিয়াসের অবস্থান-
(i) পুষ্পাক্ষতে
(ii) ডিম্বাণুতে
(iii) পরাগনালীতে
(iv) ভূণস্থলীতে
উত্তর: (iv) ভূণস্থলীতে
2. Very Short Question Answer
1. উদ্ভিদের জনন অঙ্গ কোন্টি?
উত্তর: ফুল।
2. বিটপের কোন্ অংশ থেকে ফুল উৎপন্ন হয়?
উত্তর: বিটপের অন্তর্গত পুষ্পমুকুল থেকে ফুল উৎপন্ন হয়।
3. বৃন্তের শীর্ষে পুষ্পস্তবকগুলি যে অংশে সাজানো থাকে তাকে কী বলে?
উত্তর: পুষ্পাক্ষ।
4. সম্পূর্ণ ফুলে কতগুলি স্তবক থাকে?
উত্তর: চারটি।
5. কোন্ প্রকার ফুলকে বহুপ্রতিসম ফুল বলা হয়?
উত্তর: সমাঙ্গ ফুলকে বহুপ্রতিসম ফুল বলা হয়।
6. বৃতির প্রতিটি খণ্ডাংশকে কী বলে?
উত্তর: বৃত্যংশ।
7. ফুলের পাপড়ির কাজ কী?
উত্তর: পরাগযোগে সাহায্য করা ও পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবককে বাহ্যিক পরিবেশ থেকে রক্ষা করা।
৪. দলমণ্ডল কাকে বলে?
উত্তর: পাপড়ি বা দলাংশ দ্বারা গঠিত ফুলের বৃতির ভিতরের দিকে থাকা রঙিন বা সাদা দ্বিতীয় স্তবককে দলমণ্ডল বা করোলা বলে।
9. দলমণ্ডলের প্রত্যেকটি অংশকে কী বলে?
উত্তর: দলাংশ বা পাপড়ি।
10. পুংদণ্ড ও পরাগধানী নিয়ে গঠিত পুংস্তবকের প্রতিটি অংশকে কী বলে?
উত্তর: পুংকেশর।
11. ফুলের পুংজননকোশ কোন্ অংশ থেকে উৎপন্ন হয়?
উত্তর: ফুলের পুংজননকোশ পরাগরেণু থেকে উৎপন্ন হয়।
12. পাতাঝাঁঝি নামক জলজ উদ্ভিদের পুংপুষ্পে কতগুলি পুংকেশর থাকে?
উত্তর: 30-40টি।
13. ফুলের প্রতিটি গর্ভপত্রের কয়টি অংশ থাকে?
উত্তর: ফুলের প্রতিটি গর্ভপত্রে তিনটি অংশ থাকে, যথা-গর্ভমুণ্ড, গর্ভদণ্ড ও গর্ভাশয় বা ডিম্বাশয়।
14. ডিম্বাশয়ের সঙ্গে যুক্ত যে সরু দণ্ডটি গর্ভমুণ্ডকে ধারণ করে তাকে কী বলে?
উত্তর: গর্ভদণ্ড বা স্টাইল।
15. গর্ভপত্রের মধ্যে ডিম্বক কোথায় থাকে?
উত্তর: গর্ভপত্রের মধ্যে ডিম্বক ডিম্বাশয়ে থাকে।
16. একটি ক্লীব পুষ্পের উদাহরণ দাও।
উত্তর: কচু ফুল।
17. অটোগ্যামি কী?
উত্তর: একই জীবের দুটি গ্যামেটের মিলন বা স্বনিষেককে অটোগ্যামি বলে উদ্ভিদের স্বপরাগযোগ হল অটোগ্যামির উদাহরণ।
18. পরাগযোগের অজৈব বাহকের নাম লেখো।
উত্তর: বায়ু এবং জল।
19. পরাগযোগের দুটি জৈব বাহকের নাম লেখো।
উত্তর: পতঙ্গ ও পাখি।
20. একটি বায়ুপরাগী বা অ্যানিমোফিলাস উদ্ভিদের সাধারণ নাম ও বিজ্ঞানসম্মত নাম লেখো।
উত্তর: একটি বায়ুপরাগী উদ্ভিদের সাধারণ নাম হল ধান এবং বিজ্ঞানসম্মত নাম হল Oryza sativa (ওরাইজা স্যাটাইভা)।
21. গম ও নারকেল গাছের পরাগযোগের বাহকের নাম লেখো।
উত্তর: বায়ু।
22. একটি জলপরাগী বা হাইড্রোফিলাস উদ্ভিদের সাধারণ নাম ও বিজ্ঞানসম্মত নাম লেখো।
উত্তর: একটি জলপরাগী উদ্ভিদের সাধারণ নাম হল পাতাঝাঁঝি এবং বিজ্ঞানসম্মত নাম Hydrilla verticillata (হাইড্রিলা ভার্টিসিলাটা)।
23. একটি পতঙ্গপরাগী বা এন্টোমোফিলাস উদ্ভিদের সাধারণ নাম ও বিজ্ঞানসম্মত নাম লেখো।
উত্তর: একটি পতঙ্গপরাগী উদ্ভিদের সাধারণ নাম হল আম এবং বিজ্ঞানসম্মত নাম Mangifera indica (ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা)।
24. জুফিলি কাকে বলে?
উত্তর: কোনো প্রাণী দ্বারা পরাগযোগ ঘটলে সেই পরাগযোগকে জুফিলি বলে। যেমন-শিমুলের পরাগযোগ।
25. একটি পক্ষীপরাগী বা অরনিথোফিলাস উদ্ভিদের সাধারণ নাম ও বিজ্ঞানসম্মত নাম লেখো।
উত্তর: একটি পক্ষীপরাণী বা অরনিথোফিলাস উদ্ভিদের সাধারণ নাম হল শিমুল ও বিজ্ঞানসম্মত নাম হল Bombax ceiba (বমব্যাক্স সিবা)।
26. নিষেক বা গর্ভাধান কাকে বলে?
উত্তর: উদ্ভিদের পুংজননকোশ বা পরাগরেণু ও স্ত্রীজননকোশ বা ডিম্বাণুর মিলনকে নিষেক বা গর্ভাধান বা ফার্টিলাইজেশন বলে।
27. রেণু মাতৃকোশ কোন্ প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে পরাগরেণু গঠন করে?
উত্তর: রেণু মাতৃকোশ মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে পরাগরেণু গঠন করে।
28. পুংলিঙ্গধরের প্রথম কোশের নাম কী?
উত্তর: পরাগরেণু।
29. পরাগধানীতে অবস্থিত পরাগরেণুর হ্যাপ্লয়েড নিউক্লিয়াসটি বিভাজিত হয়ে কী কী উৎপন্ন করে?
উত্তর: জেনেরেটিভ বা জনন নিউক্লিয়াস ও একটি নালিকা নিউক্লিয়াস।
30. পুংজননকোশ এবং স্ত্রীজননকোশের মিলনকে কী বলে?
উত্তর: নিষেক বা ফার্টিলাইজেশন।
31. নির্ণীত নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম সংখ্যা কত?
উত্তর: 2n
32. কোনো ভূণস্থলীর প্রতিপাদ কোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা n হলে নির্ণীত নিউক্লিয়াসে ক্রোমোজোম সংখ্যা কত?
উত্তর: 2nl
33. সস্য নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম সংখ্যা কত?
উত্তর: 3n
34. নিষেকের পরে সস্য নিউক্লিয়াস বিভাজিত হয়ে কীসে পরিণত হয়?
উত্তর: নিষেকের পরে সস্য নিউক্লিয়াস বিভাজিত হয়ে সস্যে পরিণত হয়।
35. জাইগোট মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে কী উৎপন্ন করে?
উত্তর: ভ্রূণ বা এমব্রায়ো।
36. নিষেকের ফলে ডিম্বকত্বক কীসে পরিবর্তিত হয়?
উত্তর: নিষেকের ফলে ডিম্বকত্বক বীজত্বকে পরিবর্তিত হয়।
37. ফুলের কোন্ দুটি অংশ রূপান্তরিত হয়ে যথাক্রমে ফল ও বীজ সৃষ্টি হয়?
উত্তর: ফুলের ডিম্বাশয় ও ডিম্বক অংশ দুটি রূপান্তরিত হয়ে যথাক্রমে ফল ও বীজ সৃষ্টি করে।
38. নিষেকের পর ফুলের কোন্ অংশ সস্য গঠন করে?
উত্তর: নির্ণীত নিউক্লিয়াস।
39. ভ্রূণাক্ষ কী?
উত্তর: ভ্রুণের যে দণ্ডাকার অংশ থেকে ভ্রূণমূল ও ভ্রূণমুকুল গঠিত হয়, তাকে ভ্রূণাক্ষ বলে।
40. পরাগনালিকা কী?
উত্তর: পরাগরেণু গর্ভমুণ্ডে আবদ্ধ হওয়ার পর তা অঙ্কুরিত হয়ে সৃষ্ট যে নলাকার গঠন দ্বারা পুংগ্যামেট ডিম্বকের মধ্যে পৌঁছোয় তাকে পরাগনালিকা বলে।
41. মেসোগ্যামি কাকে বলে?
উত্তর: সপুষ্পক উদ্ভিদে ডিম্বকত্বক ভেদ করে পরাগনালী ডিম্বকে প্রবেশ করে নিষেক ঘটালে, তাকে মেসোগ্যামি বলে। যেমন-কুমড়ো।
42. . পোরোগ্যামি কাকে বলে?
উত্তর: সপুষ্পক উদ্ভিদে ডিম্বকরন্দ্রের মধ্যে দিয়ে পরাগনালী ডিম্বকে প্রবেশ করে নিষেক সম্পন্ন করলে, তাকে পোরোগ্যামি বলে। যেমন-লিলি।
43. চ্যালাজোগ্যামি কাকে বলে?
উত্তর: সপুষ্পক উদ্ভিদে ডিম্বকমূলের মধ্যে দিয়ে পরাগনালী ডিম্বকে প্রবেশ করে নিষেক ঘটালে, তাকে চ্যালাজোগ্যামি বলে। যেমন- Casuarina (ক্যাসুয়ারিনা)।
3. Short Question Answer
1. বৃতি কাকে বলে?
উত্তর ফুলের সর্বাপেক্ষা বাইরের বা নীচের দিকে অবস্থিত স্তবক যা ফুলকে কুঁড়ি অবস্থায় ঢেকে রাখে এবং তাকে রক্ষা করে, তাকে বৃতি বা ক্যালিক্স বলে। বৃতির প্রতিটি একককে বৃত্যংশ বলা হয়। কিছুকিছু ফুলে বৃতির ঠিক নীচে উপবৃতি থাকে। পরাগমারী
19. পুংকেশর চক্র গর্ভকেশর চক্র কাকে বলে?
উত্তর: পুংকেশর চক্র পুংদণ্ড ও পরাগধানী সমন্বিত পুংকেশর নিয়ে গঠিত, দলমণ্ডলের ভিতরের দিকে
অবস্থিত, ফুলের তৃতীয় এবং অপরিহার্য স্তবককে পুংকেশর – | চক্র বা অ্যান্ড্রোসিয়াম বলে। গর্ভকেশর চক্র: গর্ভাশয়, গর্ভদণ্ড এবং গর্ভমুণ্ড নিয়ে গঠিত, ফুলের সব থেকে ভিতরে অবস্থিত, ফুলের চতুর্থ এবং অপরিহার্য স্তবককে গর্ভকেশর চক্র বা গাইনোসিয়াম বলে।
20. পরাগযোগ কাকে বলে?
উত্তর: যে পদ্ধতিতে ফুলের পরাগধানী থেকে পরাগরেণু একই ফুলের বা একই গাছের অন্য কোনো ফুলের বা
একলিঙ্গ ফুল কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: একলিঙ্গ ফুল: যেসব ফুলে পুংস্তবক এবং স্ত্রীস্তবকের মধ্যে যে-
কোনো একটি উপস্থিত থাকে, তাদের একলিঙ্গ ফুল বলে। শুধুমাত্র পুংস্তবক থাকলে তাকে পুরুষ ফুল বলে এবং শুধুমাত্র স্ত্রীস্তবক থাকলে তাকে স্ত্রী ফুল বলে।
[ উদাহরণ: কুমড়ো ফুল।
14. দ্বিলিঙ্গ ফুল বা উভলিঙ্গ ফুল বলতে কী বোঝ? উদাহরণ দাও।
উত্তর: উভলিঙ্গ ফুল: যেসব ফুলে পুংস্তবক এবং স্ত্রীস্তবক উভয়ই থাকে, তাদের দ্বিলিঙ্গ (বাইসেক্সুয়াল) ফুল বা উভলিঙ্গ ফুল বলে।
[ উদাহরণ: জবা ফুল, ধুতরো ফুল।
গেইটোনোগ্যামি কাকে বলে? এটি একলিঙ্গ উদ্ভিদে সম্ভব কি?
উত্তর: যে স্বপরাগযোগ পদ্ধতিতে কোনো উদ্ভিদের দুটি ভিন্ন ফুলের মধ্যে স্বপরাগযোগ ঘটে, তাকে গেইটোনোগ্যামি বলে। যেমন-ভুট্টা-জাতীয় উভলিঙ্গ উদ্ভিদে গেইটোনোগ্যামি দেখা যায়।
[একলিঙ্গ উদ্ভিদে কেবলমাত্র একপ্রকার পুরুষ অথবা স্ত্রী ফুল ফোটায়, গেইটোনোগ্যামি সম্ভব হয় না।
23. পরাগযোগের গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: উদ্ভিদের জননের জন্য পরাগযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরাগমিলন হলে ফল তৈরি হয় এবং ফলের বীজ থেকে নতুন উদ্ভিদ তৈরি সম্ভব হয়। ② অধিকাংশ খাদ্যশস্য ও ফল উৎপাদন পরাগযোগের ওপর নির্ভর করে।
24. ‘স্বপরাগযোগের থেকে ইতর পরাগযোগ বেশি সুবিধাজনক’- ব্যাখ্যা করো। অনুরূপ প্রশ্ন, ইতর পরাগযোগ স্বপরাগযোগ অপেক্ষা উন্নততর কেন?
উত্তর: স্বপরাগযোগের থেকে ইতর পরাগযোগ বেশি সুবিধাজনক, কারণ-① ইতর পরাগযোগে দুটি পৃথক উদ্ভিদের জিনগত উপাদানের সমন্বয় ঘটে বলে অধিক প্রকরণ সৃষ্টি হয়। ফলে অপত্য উদ্ভিদ উন্নত গুণমান সম্পন্ন হয়ে থাকে। এগুলির রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, কষ্টসহিষুতা ও উৎপাদন ক্ষমতা বেশি হয়। স্বপরাগযোগে সেই সুবিধা নেই। ② জিনগত প্রকরণ ঘটে বলে উদ্ভিদটি প্রজাতিটির অভিব্যক্তিতেও সাহায্য করে।
25. ‘ইতর পরাগযোগ একটি অনিশ্চিত প্রক্রিয়া’-বক্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ করো।
উত্তর: ইতর পরাগযোগের ক্ষেত্রে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে পরাগরেণুর স্থানান্তরনের জন্য জল, বায়ু, পতঙ্গ, পাখি প্রভৃতি বাহকের প্রয়োজন হয়। উপযুক্ত বাহকের অনুপস্থিতি ঘটলে, ইতর পরাগযোগ সম্পন্ন হতে পারে না। তাই ‘ইতর পরাগযোগ একটি অনিশ্চিত প্রক্রিয়া’-বক্তব্যটি যুক্তিসঙ্গত ও যথার্থ।
26. সাধারণত একলিঙ্গ ফুলে ইতর পরাগযোগ ঘটে-কথাটির সত্যতা বিচার করো।
উত্তর: যেসব ফুলের দুটি জনন স্তবকের মধ্যে একটি উপস্থিত তাকে একলিঙ্গ ফুল বলে। একলিঙ্গ ফুলে যেহেতু পুং এবং স্ত্রী জনন স্তবক দুটি একসঙ্গে থাকে না, তাই এতে স্বপরাগযোগ ঘটবার কোনো অবকাশ থাকে না। তাই ‘সাধারণত একলিঙ্গ ফুলে ইতর পরাগযোগ ঘটে’- কথাটি সত্য ও যুক্তিপূর্ণ।
27. বায়ুপরাগী বা অ্যানিমোফিলাস ফুলের বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: বায়ুপরাগী ফুলের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল-① বায়ুপরাগী ফুল সাধারণত সাদা, অনুজ্জ্বল এবং ক্ষুদ্রাকার হয়। এইজাতীয় ফুল দৃষ্টি আকর্ষী হয় না।② পরাগরেণু যাতে বাতাসে সহজে উড়তে পারে, তার জন্য পরাগ খুবই হালকা হয়। উদাহরণ-ধান। ও দীর্ঘ পুংদণ্ডের উপস্থিতির জন্য দোদুল্যমান পরাগধানী দলমণ্ডলের বাইরে বেরিয়ে আসে। ④ বায়ু দ্বারা বাহিত হওয়ার সময় পরাগরেণু অপচয় হয়, তাই অধিক পরিমাণে পরাগরেণু উৎপন্ন হয়। ⑤ এই জাতীয় ফুলে মকরন্দ সঞ্চিত হয় না এবং ফুল সাধারণত গন্ধহীন হয়।
28. বায়ুপরাগী বা অ্যানিমোফিলাস ফুলের পরাগরেণু ও গর্ভমুণ্ড কেমন হয়?
উত্তর: বায়ুপরাগী ফুলের পরাগরেণু: বর্ণহীন, গন্ধহীন, অনুজ্জ্বল ও ক্ষুদ্র হয়। বায়ুপরাগী ফুলের গর্ভমুণ্ড: শাখান্বিত, রোমশ ও আঠালো প্রকৃতির হয় ও তা দলমণ্ডলের বাইরে বেরিয়ে থাকে।
29. জলপরাগী বা হাইড্রোফিলাস ফুলের বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: জলপরাগী ফুলের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল-(1) জলপরাগ। ফুলের আকৃতি ক্ষুদ্র হয় এবং ফুলগুলি অনুজ্জ্বল প্রকৃতির। ② জলের তলায় যে ফুলের পরাগযোগ সম্পন্ন হয়, সেই ফুলের পরাগরেণু অপেক্ষাকৃত ভারী হয়। ও রেণুগুলির বাইরের ত্বকে – মোমজাতীয় পদার্থের আস্তরণ থাকে। ④ কিছুসংখ্যক জলপরাগী ফুলের গর্ভকেশর এবং পুংকেশর দলাংশ দিয়ে ঢাকা থাকে না। ⑤ পরাগরেণুগুলি ক্ষুদ্র ন হয় এবং সহজে জলের মাধ্যমে জলপরাগী ফুল-পাতাঝাঁঝি • একস্থান থেকে অন্যস্থানে স্থানান্তরিত হতে পারে। উদাহরণ- পাতাঝাঁঝি।
30. পতঙ্গপরাগী বা এন্টোমোফিলাস ফুলের বৈশিষ্ট্য লেখো।
অনুরূপ প্রশ্ন, পতঙ্গপরাগী ফুল চিনবে কী করে?
উত্তর: পতঙ্গপরাগী বা এন্টোমোফিলাস ফুলের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য- গুলি হল- পতঙ্গপরাগী ফুলগুলি সাধারণত বড়ো ও উজ্জ্বল বর্ণের হয়। ② ফুলগুলি সুগন্ধযুক্ত হয় এবং ফুলে অনেক সময় মকরন্দ সঞ্চিত থাকে। ③ এইজাতীয় ফুলে পরাগরেণুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হয়। ④ পরাগরেণু অপেক্ষাকৃত বড়ো, আঠালো এবং খসখসে হয়, যাতে সহজে পতঙ্গের গায়ে আটকে যেতে পারে। ⑤ এইপ্রকার ফুলের গর্ভমুণ্ড সাধারণত ক্ষুদ্রাকার, আঠালো এবং খসখসে হয়। উদাহরণ-আম।
31. পাখিপরাগী বা অরনিথোফিলাস ফুলের বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: পাখিপরাগী ফুলের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল-① এই ধরনের ফুলগুলি আকারে বেশ বড়ো হয়। ② এই ফুলগুলির বর্ণ উজ্জ্বল প্রকৃতির হয়, এতে পাখিরা সহজে আকৃষ্ট হয়। ③ এইজাতীয় ফুলে যথেষ্ট পরিমাণে মকরন্দ সঞ্চিত থাকে। ④ অনেকক্ষেত্রে এই ফুলের পরাগধানীগুলি পাখির খাদ্য হিসেবে গৃহীত হয়। উদাহরণ-শিমুল।
32. ফুলের কোন্ কোন্ বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন প্রাণীদের আকৃষ্ট করে পরাগযোগে সাহায্য করে?
উত্তর: ফুলের যে সকল বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন প্রাণীদের আকৃষ্ট করে, পরাগযোগে সাহায্য করে, সেগুলি হল-① ফুলগুলি আকারে বেশ বড়ো হবে। ② ফুলের বর্ণ বেশ উজ্জ্বল হবে। ও ফুলগুলি মিষ্ট রস সমৃদ্ধ ও গন্ধযুক্ত হবে। ④ ফুলের মধ্যে মকরন্দ থাকবে।
33. সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জননের পর্যায়গুলি কী কী?
উত্তর সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জননের পর্যায়গুলি হল- ① পরাগযোগ: পুংকেশর থেকে গর্ভমুণ্ডে পরাগরেণুর স্থানান্তর। ② নিষেক ও জাইগোট গঠন: পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেটর মিলনে ভ্রুণাণু বা জাইগোট সৃষ্টি। ও ফল ও বীজ গঠন: ভূণাণুর বৃদ্ধির ফলে বীজ তৈরি হয়, একই সঙ্গে তাকে ঘিরে ফলও গঠিত হয়। ④ বীজের অঙ্কুরোদ্গম: বীজ বিস্তারলাভ করলে অনুকূল পরিবেশে তার অঙ্কুরোদ্গম ঘটে। ফলে নতুন অপত্য উদ্ভিদ তৈরি হয়।
34. নিষেকের গুরুত্ব লেখো।
উত্তর: নিষেকের গুরুত্বগুলি হল-① পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেটের মিলন বা নিষেক না হলে যৌন জননে জাইগোট সৃষ্টি হতে পারবে না। ② দ্বিনিষেকে উৎপন্ন সস্যতে ভ্রুণের জন্য সস্য সঞ্চিত থাকে। ③ নিষেকের
ফলে জাইগোট তৈরি হলে তা থেকে নতুন অপত্য জীব সৃষ্টি হয়। ফলে যৌন জননের উদ্দেশ্য সাধিত হয়।
. একটি গাছের পাতার কোশের ক্রোমোজোম সংখ্যা 12 হলে- ① পরাগরেণু, ② ডিম্বাণু, ও পুংদণ্ডকোশ ও ④ সস্য-এর ক্রোমোজোম সংখ্যা কত?
উত্তর: পাতার কোশ, অর্থাৎ দেহকোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা 2n = 12 হলে-① পরাগরেণুতে রেণুমাতৃকোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা 2n = 12 হবে, এখানে মিয়োসিস দ্বারা উৎপন্ন পুংগ্যামেট বা শুক্রাণুর ক্রোমোজোম সংখ্যা একক সেট, অর্থাৎ n = 6 হবে। ② ডিম্বাণুতে ক্রোমোজোম সংখ্যা একক সেট, অর্থাৎ n = 6 হবে। ③ পুংদণ্ডকোশে (দেহকোশে) ক্রোমোজোম সংখ্যা 2 সেট (2n) হবে, অর্থাৎ 2n = 12 হবে। ④ সস্যে ও সেট ক্রোমোজোম, অর্থাৎ 3n = 18 থাকে।
48. একটি সপুষ্পক উদ্ভিদের ক্রোমোজোম সংখ্যা 2n = 18 হলে নালিকা নিউক্লিয়াস ও গর্ভদণ্ডের কোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা কত?
উত্তর: সপুষ্পক উদ্ভিদের দেহজ নিউক্লিয়াসে ক্রোমোজোম সংখ্যা 2n = 18 হলে, নালিকা নিউক্লিয়াসে ক্রোমোজোম সংখ্যা হবে n = 9 এবং গর্ভদণ্ডের কোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা 2n = 18 হবে।
49. নীচের কোশগুলিতে ক্রোমোজোম সেট কয়টি তা লেখো- ① সহকারী কোশদ্বয়, ② ডিম্বাণু, ③ নির্ণীত নিউক্লিয়াস এবং ④ প্রতিপাদ কোশত্রয়।
উত্তর: সহকারী কোশদ্বয়ের ক্রোমোজোম সংখ্যা-হ্যাপ্লয়েড (n), ② ডিম্বাণুর ক্রোমোজোম সংখ্যা-হ্যাপ্লয়েড (n), ③ নির্ণীত নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম সংখ্যা-ডিপ্লয়েড (2n) এবং ④ প্রতিপাদ কোশত্রয়ের ক্রোমোজোম সংখ্যা-হ্যাপ্লয়েড (n)।
4. Long Question Answer
1. স্বপরাগযোগ কাকে বলে? উদাহরণসহ লেখো।
স্বপরাগযোগের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: স্বপরাগযোগ: কোনো ফুলের পুংকেশরের পরাগধানী থেকে পরাগরেণু সেই ফুলের বা সেই গাছের অন্য কোনো ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হওয়ার পদ্ধতিকে স্বপরাগযোগ বলে। শিম, ধুতরো, মটর ইত্যাদি উদ্ভিদে স্বপরাগযোগ ঘটে।
[* স্বপরাগযোগের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য: স্বপরাগযোগের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল- এইজাতীয় পরাগযোগ সহবাসী উদ্ভিদে সম্পন্ন হয়। ② এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ফুলের পরাগধানী ও গর্ভদণ্ড একই সময়ে পরিণত হয়। ③ এইজাতীয় পরাগযোগ একই ফুলেও ঘটে (অটোগ্যামি), আবার একই উদ্ভিদের দুটি ফুলের মধ্যেও সম্পন্ন হতে পারে (গেইটোনোগ্যামি)। ④ সাধারণত উভলিঙ্গ ফুলের ক্ষেত্রে স্বপরাগযোগ ঘটে। এক্ষেত্রে ফুলের পরাগরেণুর অপচয় অনেক কম হয়। ⑥ এইজাতীয় পরাগযোগের ফলে সংশ্লিষ্ট উদ্ভিদ থেকে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উদ্ভিদ পাওয়া যায় না। ⑦ অপত্য উদ্ভিদের গুণগত মান একই থাকে অথবা কমতে থাকে। ৪ এই প্রকার পরাগযোগে বাহকের প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক নয়।
2. ইতর পরাগযোগ কাকে বলে? উদাহরণসহ লেখো।
ইতর পরাগযোগের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: ইতর পরাগযোগ: কোনো একটি ফুলের পুংকেশরের পরাগধানী থেকে উৎপন্ন পরাগরেণু একই প্রজাতিভুক্ত বা অন্য প্রজাতিভুক্ত অপর একটি গাছে উৎপন্ন ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হওয়ার পদ্ধতিকে ইতর বা বিপরীত পরাগযোগ বলে। যেমন-তাল, পেঁপে, আম, পটল, কুমড়ো ইত্যাদি উদ্ভিদে ইতর পরাগযোগ ঘটে।
[ ইতর পরাগযোগের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য: ইতর পরাগযোগে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যথা-① একলিঙ্গ ফুলের ক্ষেত্রেই কেবল ইতর পরাগযোগ হয়। ② এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ফুলগুলির বিষম পরিণতি দেখা যায়। অর্থাৎ, পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক একসাথে পরিণত না হয়ে ভিন্ন সময়ে পরিণত হয়। ③ ফুলের গঠনগত প্রতিবন্ধকতার বা বাধার জন্য অনেকক্ষেত্রে স্বপরাগযোগ সম্ভব হয় না। ④ এক ফুল থেকে অন্য ফুলে পরাগরেণুর স্থানান্তরণের জন্য বিভিন্ন বাহকের (বায়ু, জল, পতঙ্গ) প্রয়োজন হয়। ⑤ একই প্রজাতির বা অন্য প্রজাতির দুটি ভিন্ন বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদের দুটি ভিন্ন ফুলের মধ্যে পরাগযোগ সম্পন্ন হয় বলে অপত্য উদ্ভিদে প্রকরণের সৃষ্টি হয়।
3. স্বপরাগযোগ ও ইতর পরাগযোগের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো।
অংশ প্রশ্ন, স্বপরাগযোগের সুবিধা ও অসুবিধা লেখো।
উত্তর: স্বপরাগযোগের সুবিধা ও অসুবিধা:
সুবিধা: ① এক্ষেত্রে বাহকের প্রয়োজনীয়তা না থাকায় পরাগযোগের নিশ্চয়তা বেশি। এক্ষেত্রে পরাগরেণুর অপচয় কম হয়। ② স্বপরাগযোগে উৎপন্ন বীজ তথা অপত্য উদ্ভিদ একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হওয়ায় প্রজাতির বিশুদ্ধতা বজায় থাকে।
অসুবিধা: ① নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত অপত্য উদ্ভিদ উৎপন্ন হতে পারে না। অর্থাৎ, প্রকরণ ঘটে না ফলে অবলুপ্তির সম্ভবনা থাকে। ② স্বপরাগযোগে উৎপন্ন বীজ নিম্নমানের হয় ও অঙ্কুরণের হার কম হয়।
4. ইতর পরাগযোগ সুবিধা ও অসুবিধা:
সুবিধা: ① এক্ষেত্রে উন্নত বৈশিষ্ট্যযুক্ত অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ, প্রকরণ ঘটে যা প্রতিকূল পরিবেশে উদ্ভিদকে অভিযোজিত হতে সাহায্য করে। ইতর পরাগযোগে উৎপন্ন বীজ তথা অপত্য উদ্ভিদ উন্নতমানের বৈশিষ্ট্যযুক্ত হয় ও এদের বীজের অঙ্কুরণের হার বেশি হয়।
অসুবিধা: ① ইতর পরাগযোগ বাহক-নির্ভর হওয়ায় এদের ক্ষেত্রে পরাগযোগের নিশ্চয়তা কম। ② ইতর পরাগযোগের ক্ষেত্রে পরাগরেণুর অপচয়ের মাত্রা অনেক বেশি হয়।
5. ডিম্বক বলতে তুমি কী বোঝ? লম্বচ্ছেদে ডিম্বকের চিহ্নিত চিত্র অঙ্কন করে তার গঠন বর্ণনা করো। অনুরূপ প্রশ্ন, লম্বচ্ছেদে ডিম্বকের নানা অংশগুলির চিহ্নিত চিত্র আঁকো।
উত্তর: ডিম্বক: ত্বকবেষ্টিত গর্ভকেশরের যে অংশ থেকে বীজ গঠিত হয় ও যা স্ত্রীরেণুকে ধারণ করে, তাকে ডিম্বক বলে।
[ ডিম্বকের গঠন: ডিম্বকের বিভিন্ন অংশগুলি নীচে উল্লেখ করা হল।
① ডিম্বকবৃত্ত: পরিণত ডিম্বকের একটি ছোটো বৃত্ত থাকে, যা ডিম্বককে অমরার সাথে সংযুক্ত রাখে। একে ডিম্বকবৃন্ত বলে।
② ডিম্বকমূল: ডিম্বকের যে অংশ থেকে ডিম্বকত্বক উৎপন্ন হয়, তাকে ডিম্বকমূল বলে।
③ ডিম্বকনাভি: ডিম্বকবৃন্তের সঙ্গে ডিম্বকমূলের সংযোগস্থলকে ডিম্বকনাভি বলে।
④ ডিম্বকত্বক: ডিম্বকের আবরণীকে ডিম্বকত্বক বলে।
⑤ ভ্রূণপোষক কলা: ডিম্বকত্বকের নীচে অবস্থিত যে কলা ডিম্বকের ভূণস্থলীকে ঘিরে রাখে, সেই কলাগুচ্ছকে ভ্রূণপোষক কলা বলে।
⑥ ডিম্বকরন্দ্র: ডিম্বকত্বক ভ্রূণপোষক কলাকে সম্পূর্ণভাবে আবৃত রাখে না। এই অনাবৃত অংশকে ডিম্বকরন্দ্র বলে।
⑦ ভূণস্থলী: ভূণপোষক কলার ভিতরে একটি বৃহৎ থলির মতো কোশ থাকে, যাকে ভূণস্থলী বা ঘৃণাধার বলে। এটি ডিম্বকের প্রধান কোশ। প্রতিটি ভ্রুণস্থলীতে ৪টি হ্যাপ্লয়েড (n) নিউক্লিয়াস বিশেষভাবে বিন্যস্ত থাকে, যার মধ্যে 3 টি ডিম্বকরন্দ্রের দিকে অবস্থিত। এদের একত্রে গর্ভযন্ত্র বলে। এই তিনটির মধ্যে একটিকে ডিম্বাণু ও বাকি দুটিকে সহকারী কোশ বলে। ভূণস্থলীর মাঝে দুটি নিউক্লিয়াস যুক্ত হয়ে ডিপ্লয়েড (2n) ক্রোমোজোম-বিশিষ্ট নির্ণীত নিউক্লিয়াস গঠন করে। ডিম্বকরন্দ্রের বিপরীত দিকে বর্তমান 3 টি নিউক্লিয়াসকে একত্রে প্রতিপাদ কোশসমষ্টি বলে।
6. চিত্রসহ একটি সপুষ্পক উদ্ভিদের নিষেক এবং নতুন উদ্ভিদ গঠন পদ্ধতি বর্ণনা করো।
① জনন কোশ বা গ্যামেট উৎপাদন, ② নিষেক, ③ সৃষ্টি ও নতুন উদ্ভিদ উৎপাদন।
অংশ প্রশ্ন, সপুষ্পক উদ্ভিদের দ্বিনিষেক প্রক্রিয়া চিহ্নিত চিত্রসহ বর্ণনা করো।
অংশ প্রশ্ন, সপুষ্পক উদ্ভিদের নিষেক বা দ্বিনিষেক পদ্ধতির চিহ্নিত চিত্র অঙ্কন করো।
উত্তর: সপুষ্পক উদ্ভিদের নিষেক ও নতুন উদ্ভিদ গঠন: সপুষ্পক গুপ্তবীজী উদ্ভিদের নিষেক পদ্ধতির বিভিন্ন ধাপগুলি নীচে বিশদে বর্ণনা করা হল।
① পরাগরেণু সৃষ্টি: ফুলের পুংকেশরের পরাগধানীর মধ্যে অবস্থিত পরাগরেণু মাতৃকোশ ডিপ্লয়েড (2n) প্রকৃতির হয়। এই পরাগরেণু মাতৃকোশের মিয়োসিস বিভাজনের ফলে অসংখ্য পরাগরেণু উৎপন্ন হয়, যেগুলি হ্যাপ্লয়েড (n) প্রকৃতির হয়ে থাকে। পরাগরেণুর হ্যাপ্লয়েড নিউক্লিয়াসটি বিভাজিত হয়ে দুটি নিউক্লিয়াস গঠন করে। এগুলি হল নালিকা নিউক্লিয়াস এবং জেনেরেটিভ বা জনন নিউক্লিয়াস।
② ডিম্বাণু বা স্ত্রীগ্যামেট সৃষ্টি: উদ্ভিদের ফুলের ডিম্বাশয়ের মধ্যে এক বা একাধিক ডিম্বক বর্তমান। এই ডিম্বকের ভূণস্থলীর মধ্যে পরিস্ফুটনের মাধ্যমে স্ত্রীগ্যামেট উৎপন্ন হয়। প্রাথমিক অবস্থায় ভূণস্থলীর মধ্যে একটি হ্যাপ্লয়েড (n) নিউক্লিয়াস অবস্থান করে। এই নিউক্লিয়াসটি মাইটোসিস কোশ বিভাজনের দ্বারা বারবার বিভাজিত হয় এবং ৪টি হ্যাপ্লয়েড (n) নিউক্লিয়াস গঠন করে। এদের মধ্যে ওটি নিউক্লিয়াস ভ্রুণস্থলীর এক মেরুতে একত্রে অবস্থান করে। এদের প্রতিপাদ কোশ (antipodal cells) বলে। অপর 3টি নিউক্লিয়াস ভূণস্থলীর বিপরীত মেরুতে আসে। এদের মধ্যে দুটি নিউক্লিয়াস সহকারী কোশ (synergids)-রূপে এবং একটি নিউক্লিয়াস ডিম্বাণু (egg) বা স্ত্রীগ্যামেট-রূপে অবস্থান করে। অবশিষ্ট যে ২টি নিউক্লিয়াস থাকে, তারা পরস্পর মিলিত হয়ে একটি নির্ণীত নিউক্লিয়াস (definitive nucleus, 2n) গঠন করে, যা ভ্রূণস্থলীর কেন্দ্রে অবস্থান করে।
③ পরাগযোগ: এই পর্যায়ে স্বপরাগযোগ বা বাহক দ্বারা ইতর পরাগযোগের মাধ্যমে পুংকেশরের পরাগধানী থেকে পরাগরেণু, গর্ভকেশরের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়। পরাগরেণু ফুলের গর্ভমুণ্ডে আবদ্ধ হওয়ার পর তা থেকে একটি পরাগনালী সৃষ্টি হয়।
④ নিষেক ও জাইগোট গঠন: জেনেরেটিভ নিউক্লিয়াসটির বিভাজন ও পরিস্ফুরণ ঘটে এবং ২টি হ্যাপ্লয়েড (n) পুংগ্যামেট উৎপন্ন হয়। নালিকা নিউক্লিয়াসটি এবং পুংগ্যামেট দুটি পরাগনালীতে প্রবেশ করে। নালিকা নিউক্লিয়াসটি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায় ও পুংগ্যামেট দুটি পরাগনালীর অগ্রভাগে অবস্থান করে। পরাগনালী ক্রমশ দীর্ঘ হয় এবং তার অগ্রপ্রান্ড ডিম্বকরন্দ্র বা ডিম্বকমূল বা ডিম্বকত্বক ভেদ করে ডিম্বকে প্রবেশ করে। পরাগনালী ভূণস্থলীর প্রাচীর ভেদ করে ভূণস্থলীতে প্রবেশ করে।
ক্রমে পরাগনালীর অগ্রপ্রান্ত বিদীর্ণ হয়ে ২টি পুংগ্যামেট ভ্রুণস্থলীতে মুক্ত হয়। অবশেষে একটি পুংগ্যামেট ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়ে নিষেক ঘটায়, যার ফলস্বরূপ ডিপ্লয়েড (2n) ভ্রুণাণু বা জাইগোট গঠিত হয়। অপর পুংগ্যামেটটি (n) নির্ণীত নিউক্লিয়াসকে (2n) নিষিক্ত করে সস্য নিউক্লিয়াস (3n) তৈরি করে। এই ঘটনাকেই দ্বিনিষেক বলা হয়।
⑤ ভ্রূণ গঠন: নিষিক্ত এককোশী ভ্রুণাণু বা জাইগোটটি বারবার বিভাজিত হয়ে বহুকোশী ভূণ গঠন করে।
⑥ ফল ও বীজ গঠন: নিষেকের পরে ভূণসহ ডিম্বক বীজে ও বীজসহ সমগ্র ডিম্বাশয় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে ফলে রূপান্তরিত হয়।
⑦ বীজের অঙ্কুরোদ্গম এবং নতুন উদ্ভিদ গঠন: বীজের মধ্যে ভবিষ্যতের গাছ বা ভ্রুণ অবস্থান করে। অনুকূল পরিবেশ, অর্থাৎ যথাযথ আলো, উয়তা, আর্দ্রতা, অক্সিজেন ও অভ্যন্তরীণ শর্তের উপস্থিতিতে বীজের অঙ্কুরোদ্গম ঘটে। এর ফলে বীজ থেকে নতুন অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি হয়। ভ্রূণমুকুল নামক অংশ থেকে অপত্য উদ্ভিদের বিটপ এবং তৃণমূল থেকে মূলতন্ত্র গঠিত হয়।
ফল গঠনে গর্ভমুণ্ডের ভূমিকা লেখো।
উত্তর: ফল গঠনের ক্ষেত্রে গর্ভমুণ্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরাগযোগের মাধ্যমে পরিণত পরাগরেণু পরাগধানী থেকে গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়। গর্ভমুণ্ড থেকে নিঃসৃত রস শোষণ করে পরাগরেণু স্ফীত হয় এবং তা থেকে একটি পরাগনালী সৃষ্টি হয়। এই পরাগনালীর মাধ্যমে পরাগরেণু ডিম্বাশয়ে প্রবেশ করে। পরাগরেণুর নিউক্লিয়াসটি পরাগনালীতে এসে দুটি পুংগ্যামেট গঠন করে। এদের একটি ডিম্বকের ভূণস্থলীতে এসে ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে জাইগোট উৎপন্ন করে। অপরটি নষ্ট হয়ে যায়। সপুষ্পক উদ্ভিদের ক্ষেত্রে নির্ণীত নিউক্লিয়াসের (2n) সাথে যুক্ত হয়ে সস্য (3n) গঠন করে। জাইগোট থেকে ভ্রুণ সৃষ্টি হয়। নিষেকের পর ডিম্বকটি বীজ তৈরি করে এবং ডিম্বাশয় ফল গঠন করে।
Fill in The Blanks
1. ফুলকে উদ্ভিদের ———————– অঙ্গ বলে।
উত্তর: জনন
2. ফুলকে গাছের শাখাপ্রশাখার সঙ্গে যুক্ত রাখে ——————-।
উত্তর: পুষ্পবৃন্ত
3. বৃতি ও দলমণ্ডল হল ফুলের ———————– স্তবক।
উত্তর: সাহায্যকারী
4. পুংকেশর চক্র ও গর্ভকেশর চক্র হল ফুলের ——————– স্তবক।
উত্তর: জনন
5. বৃতির পাতার মতো অংশকে ——————— বলে।
উত্তর: বৃত্যংশ
6. দলমণ্ডলের প্রতিটি অংশগুলিকে ———————- বলে।
উত্তর: দলাংশ
7. পুংস্তবকের নীচের দিকের দন্ডাকার অংশকে ———————— বলে।
উত্তর: পুংদণ্ড
৪. পুংদণ্ডের মাথায় অবস্থিত অংশকে ——————– বলে।
উত্তর: পরাগধানী
9. পরাগরেণু বিভাজিত হয়ে ——————- গঠন করে।
উত্তর: পুংগ্যামেট
10. স্ত্রীস্তবকের প্রতিটি একক অংশকে ———————- বলে।
উত্তর: গর্ভপত্র
11. গর্ভদণ্ডের মাথায় সামান্য স্ফীত অংশকে —————————– বলে।
উত্তর: গর্ভমুণ্ড
12. পরাগরেণু ফুলের ———————— স্থাপিত হয়।
উত্তর: গর্ভমুণ্ডে
13. একই উদ্ভিদের দুটি ফুলের মধ্যে পরাগযোগকে ———————— বলে।
উত্তর: গেইটোনোগ্যামি
14. একলিঙ্গ ফুলের স্বপরাগযোগ ঘটে যদি উদ্ভিদটি ————————- হয়।
উত্তর: সহবাসী
15. —————————- পরাগযোগে পরাগরেণুর স্থানান্তকরণের জন্য বাহকের প্রয়োজন আবশ্যিক।
উত্তর: ইতর
16. জেনোগ্যামি ————————- পরাগযোগের অন্তর্গত।
উত্তর: ইতর
17. বাদুড়ের দ্বারা পরাগযোগকে বলা হয় ——————————- ।
উত্তর: স্ব
18. ইতর পরাগযোগের জন্য ————————- ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর করতে হয়।
উত্তর: কাইরোপটেরোফিলি
19 . বৈশিষ্ট্যের বিশুদ্ধতা বজায় থাকে ————————– পরাগযোগে।
উত্তর: বাহকের
20. দুটি হ্যাপ্লয়েড গ্যামেটের মিলনে ডিপ্লয়েড ————————- গঠিত হয়।
উত্তর: জাইগোট
21. পরাগনালী ডিম্বকরন্দ্র পথে ডিম্বকে প্রবেশ করলে, তাকে ———————— বলে।
উত্তর: পোরোগ্যামি
22. পরাগনালী ডিম্বকমূল পথে প্রবেশ করলে, তাকে —————– বলে।
উত্তর: চ্যালাজোগ্যামি
23. সপুষ্পক উদ্ভিদের সক্রিয় ——————- কোশ থেকে ভূণস্থলী গঠিত হয়।
উত্তর: সক্রিয় স্ত্রীরেণু
24. সক্রিয় স্ত্রীরেণু মাইটোসিস পদ্ধতিতে —————————- নিউক্লিয়াসযুক্ত ভূণস্থলী গঠন করে।
উত্তর: ৪টি
25. সপুষ্পক গুপ্তবীজী উদ্ভিদের ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণুর দু-পাশে —————————কোশ থাকে।
উত্তর: সহকারী
26. দুটি পোলার নিউক্লিয়াস (n) ভূণস্থলীতে মিলিত হয়ে ————————– নিউক্লিয়াস (2n) তৈরি করে।
উত্তর: নির্ণীত
27. পুং-জননকোশ ও স্ত্রী-জননকোশের মিলনকে ————————বলে।
উত্তর: নিষেক
28. নিষিক্ত নির্ণীত নিউক্লিয়াস থেকে ———————– গঠিত হয়।
উত্তর: সস্য
29. নির্ণীত নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোম সংখ্যা ———————–।
উত্তর: 2n
30. বীজপত্র, ভূণমুকুল ——————- ও ঘৃণমূল থেকে গঠিত হয়।
উত্তর: ভ্রূণ
31. ডিম্বক নিষেকের পর ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে —————————– সৃষ্টি করে।
উত্তর: বীজ
32. ————————- মধ্যে ভবিষ্যতের গাছ বা ভ্রুণ অবস্থান করে।
উত্তর: বীজের
33. ভূণমূল থেকে ————————- গঠিত হয়।
উত্তর: মূলতন্ত্র
34. ভূণমুকুল থেকে ————————— গঠিত হয়।
উত্তর: বিটপ