WBBSE Class 6 History Chapter 6 Solution | Bengali Medium

Class 6 History Solution

সাম্রাজ্য বিস্তার ও শাসন

MCQ

A. সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো

1. আলেকজান্ডার ছিলেন-

(a) ম্যাসিডনের শাসক  (b) মিশরের শাসক

(c) ব্যাকট্রিয়ার শাসক

উত্তর: (a) ম্যাসিডনের শাসক

2. সেলিউকাস নিকেটর সেনাপতি ছিলেন-

(a) বিম কদফিসেসের  (b) আলেকজান্ডারের

(c) দিয়োদোরাসের

উত্তর: (b) আলেকজান্ডারের

3. মগধের শেষ নন্দরাজা ছিলেন-

(a) মহাপদ্মনন্দ  (b) ধননন্দ

(c) চানক্য

উত্তর: (b) ধননন্দ

4. মগধকে ঘিরে প্রথম যে-সাম্রাজ্য তৈরি হয়, তা হল

(a) গুপ্ত সাম্রাজ্য  (b) সাতবাহন সাম্রাজ্য

(c) মৌর্য সাম্রাজ্য

উত্তর: (c) মৌর্য সাম্রাজ্য

5. ‘সব মুনিসে পজা মমা’ উক্তিটি করেছেন-

(a) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য   (b) সম্রাট অশোক

(c) বিন্দুসার

উত্তর: (b) সম্রাট অশোক

6. মৌর্যদের পর মগধে যে রাজবংশের শাসন শুরু হয়-

(a) শুঙ্গ  (b) কাম্ব

(c) গুপ্ত

উত্তর: (a) শুঙ্গ 

7. কুষাণ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন-

(a) বিম কদফিসেস (b) হুবিষ্ক

(c) কুজুল কদফিসেস

উত্তর: (c) কুজুল কদফিসেস

৪. ভারতীয় উপমহাদেশে সোনার মুদ্রা প্রথম চালু করেন-

(a) বিম কদফিসেস (b) কনিষ্ক

(c) বাসিক

উত্তর: (a) বিম কদফিসেস

9. সমুদ্রগুপ্ত সম্রাট হন আনুমানিক-

(a) ৩৬৫ খ্রিস্টাব্দে  (b) ৩৫৯ খ্রিস্টাব্দে

(c) ৩৩৫ খ্রিস্টাব্দে

উত্তর: (c) ৩৩৫ খ্রিস্টাব্দে

10. এলাহাবাদ প্রশস্তি রচনা করেন-

(a) কৌটিল্য  (b) হরিষেণ

(c) শূলপাণি

উত্তর: (b) হরিষেণ

11. ‘শকারি’ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন-

(a) দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত (b) স্কন্দগুপ্ত

(c) প্রথম কুমারগুপ্ত

উত্তর: (a) দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত

12. কুতুবমিনারের কাছে লৌহস্তম্ভটি প্রতিষ্ঠা করেন-

(a) প্রথম চন্দ্রগুপ্ত  (b) দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত

(c) চন্দ্রবর্মা

উত্তর: (b) দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত

13. ‘সকলোত্তরপথনাথ’ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন-

(a) রাজ্যবর্ধন (b) প্রভাকরবর্ধন

(c) হর্ষবর্ধন

উত্তর: (c) হর্ষবর্ধন

14. ‘শিলাদিত্য’ উপাধি নিয়েছিলেন-

(a) হর্ষবর্ধন (b) অশোক

(c) সমুদ্রগুপ্ত

উত্তর: (a) হর্ষবর্ধন

15. হর্ষচরিত লিখেছিলেন-

(a) বাণভট্ট (b) কৌটিল্য

(c) হরিষেণ

উত্তর: (a) বাণভট্ট

16. সুয়ান জাং-এর লেখা গ্রন্থটি হল-

(a) ইন্ডিকা  (b) অর্থশাস্ত্র

(c) সি-ইউ-কি

উত্তর: (c) সি-ইউ-কি

B. সঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো

1. সাম্রাজ্য শাসন করেন যিনি তাঁকে  বলে।

(a) সম্রাট      (b) সুলতান

(c) রাজা

উত্তর: (a) সম্রাট

2. চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজধানী ছিল                    |

(a) পাটলিপুত্র  (b) রাজগির

(c) চম্পা

উত্তর: (a) পাটলিপুত্র

3.যুদ্ধের পর সম্রাট অশোক আর যুদ্ধ করেননি।

(a) কলিঙ্গ   (b) হিদাসপিস

(c) মগধ

উত্তর: (a) কলিঙ্গ

4.-এর সাহায্যে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য নন্দ রাজাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামে।

(a) আলেকজান্ডার  (b) সেলিউকাস

(c) চাণক্য

উত্তর: (c) চাণক্য

5. গ্রিক দূত চন্দ্রগুপ্তের রাজসভায় গিয়েছিলেন।

(a) মেগাস্থিনিস      (b) ফাসিয়ান

(c) সুয়ান জাং

উত্তর: (a) মেগাস্থিনিস

6. মৌর্য আমলের জেলা প্রশাসনকে বলা হত                      |

(a) ভুক্তি     (b) দেশ

(c) আহার

উত্তর: (c) আহার

7. বিম কদফিসেসের উপাধি ছিল                   |

(a) দমঅর্ত  (b) রাজাধিরাজ

(c) মহাক্ষত্রপ

উত্তর: (a) দমঅর্ত

8. রাজধানী ছিল পুরুষপুর বা পেশোয়ার।

(a) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের   (b) কনিষ্কের

(c) সম্রাট অশোকের

উত্তর: (b) কনিষ্কের

9. হাতিগুম্ফা শিলালেখ থেকে-এর বিষয়ে জানা যায়।

(a) চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য   (b) কনিষ্ক

(c) খারবেল

উত্তর: (c) খারবেল

10. আনুমানিক খ্রিস্টাব্দে বা এর কিছু পরে সাতবাহন ক্ষমতা লোপ পায়।

(a) ২২০  (b) ২২৪

(c) ২২৫

উত্তর: (c) ২২৫

11. প্রথম স্বাধীন গুপ্তরাজা ছিলেন                    |

(a) শ্রীগুপ্ত   (b) সমুদ্রগুপ্ত

(c) প্রথম চন্দ্রগুপ্ত

উত্তর: (c) প্রথম চন্দ্রগুপ্ত

12. খ্রিস্টাব্দ থেকে ‘গুপ্তাব্দ’ গণনা শুরু হয়।

(a) ৩১৯-৩২০  (b) ৩২৪-৩২৬

(c) ৪১০-৪১১

উত্তর: (a) ৩১৯-৩২০

13. গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন  |

(a) দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত   (b) শ্রীগুপ্ত

(c) সমুদ্রগুপ্ত

উত্তর: (c) সমুদ্রগুপ্ত

14. উত্তর ভারতের  জন শাসককে সমুদ্রগুপ্ত পরাজিত করেন।

(a) ৫    (b) ৯

(c) ১২

উত্তর: (b) ৯

15. হর্ষবর্ধন খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহন করেন।

(a) ৬০২   (b) ৬৩০

(c) ৪৬০৬

উত্তর:  (b) ৬৩০

16. চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর সভাকবি ছিলেন                      |

(a) হরিষেণ  (b) বাণভট্ট

(c) রবিকীর্তি
উত্তর: (c) রবিকীর্তি

1. বিবৃতি: সম্রাট অশোক যুদ্ধবিজয় নীতি প্র্যাগ করেছিলেন

ব্যাখ্যা: A. যুদ্ধ করতে তাঁর ভয় হত।

B. তিনি বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

C. কলিঙ্গ যুদ্ধ করার পর তাঁর মনে গভীর অনুশোচনা হয়েছিল।

উত্তর: C. কলিঙ্গ যুদ্ধ করার পর তাঁর মনে গভীর অনুশোচনা হয়েছিল।

2. বিবৃতি: এলাহাবাদ পর্বত লিপিটি আসলে একটি প্রশস্তিমূলক লেখ।

ব্যাখ্যা: A. এতে সমুদ্রগুপ্তের গুণকীর্তন বর্ণিত হয়েছে।

B. এতে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজ্যবিস্তার নীতি বর্ণনা করা হয়েছে।

C. এই লেখটি লেখেন রবিকীর্তি।

উত্তর: A. এতে সমুদ্রগুপ্তের গুণকীর্তন বর্ণিত হয়েছে।

3. বিবৃতি: স্কন্দগুপ্তকে ‘ভারতের রক্ষাকারী’ বলা হয়।

ব্যাখ্যা: A. তিনি যবনদের আক্রমণ প্রতিরোধ করেছিলেন।

B. তিনি হুন আক্রমণ প্রতিরোধ করে ভারতবর্ষকে রক্ষা করেছিলেন।

C. তিনি কুষাণদের প্রতিরোধ করেছিলেন।

উত্তর: B. তিনি হুন আক্রমণ প্রতিরোধ করে ভারতবর্ষকে রক্ষা করেছিলেন।

4. বিবৃতি: হর্ষবর্ধন একজন শিক্ষানুরাগী ছিলেন।

ব্যাখ্যা: A. তার পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর নানাবিধ শিক্ষামূলক কাজে।

B. তিনি নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে অর্থ সাহায্য করতেন।

C. তিনি নিজে একটি মহাবিহারে শিক্ষকতা করতেন।

উত্তর: B. তিনি নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে অর্থ সাহায্য করতেন।

F. বেমানান শব্দটি চিহ্নিত করো

1. সাম্রাজ্য, বিরাট অঞ্চল, সম্রাট, রাজ্য

উত্তর: সম্রাট

2. মহারাজ, সম্রাজ্ঞী, সম্রাট, রাজাধিরাজ

উত্তর: সম্রাজ্ঞী

3. ম্যাসিডন, সেলিউকাস, বুকেফেলাস, পুরু

উত্তর: পুরু

4. চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য, প্রথম চন্দ্রগুপ্ত, দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত, চাণক্য

উত্তর: চাণক্য

5. বৃহদ্রথ, অশোক, কলিঙ্গ যুদ্ধ, ধম্ম

উত্তর: বৃহদ্রথ

G. সঠিক জোড়াটি খুঁজে লেখো

1. A. আলেকজান্ডার – ম্যাসিডন

B. হিন্দুকুশ – নদী

C. উপমহাদেশ – ইংল্যান্ড

D. পোরোস – কৌটিল্য

উত্তর: A.

2. A. চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য – পোরোস

B. আলেকজান্ডার – ৩২৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ

C. ধননন্দ – পুরু

D. অশোক – হাতিগুম্ফা লেখ

উত্তর: B.

3. A. নন্দরাজা – সমুদ্রগুপ্ত

B. চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য – অর্থশাস্ত্র

C. মেগাস্থিনিস – ইন্ডিকা

D. কনিষ্ক – কলিঙ্গ যুদ্ধ

উত্তর: C.

4. A. চন্দ্রগুপ্ত – বুকেফেলাস

B. বাণভট্ট – এলাহাবাদ প্রশস্তি

C. সেলিউকাস – সুয়ান জাং

D. অশোক – উপগুপ্ত

উত্তর: D.

5. A. আলেকজান্ডার সেলিউকাস

B. শেষ নন্দরাজা মহাপদ্মনন্দ

C. সেলিউকাস লেখক

D. দেবানংপিয় রাজধানী

উত্তর: A.

2.1 বিবৃতি : অশোক তাঁর সাম্রাজ্যে পশুহত্যা বন্ধ করেছিলেন।

ব্যাখ্যা: (a) তাঁর রাজ্যে পশুর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য।

(b) ধন্মের অনুসরণ করার জন্য।

© পশুবাণিজ্য বাড়ানোর জন্য।

উত্তর: (b) 

2.2 বিবৃতি : কুষাণ সম্রাটরা নিজেদের মূর্তি দেবকুলে রাখতেন।

ব্যাখ্যা: (a) তাঁরা ছিলেন দেবতার বংশধর।

(b) তাঁরা প্রজাদের সামনে নিজেদের দেবতাদের মতোই সম্মানীয় বলে হাজির করতেন।

© তাঁরা দেবতাকে খুব ভক্তি করতেন।

উত্তর: (b)

2.3 বিবৃতি: গুপ্ত সম্রাটরা বড়ো বড়ো উপাধি নিতেন।

ব্যাখ্যা: (a) উপাধিগুলি শুনতে ভালো লাগত।

(b) উপাধিগুলি প্রজারা দিত।

© সম্রাটরা এর মাধ্যমে নিজেদের বিরাট ক্ষমতাকে তুলে ধরতেন।

উত্তর: (c)

2.4 বিবৃতি: সুয়ান জাং চিন থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে এসেছিলেন।

ব্যাখ্যা: (a) ভারতীয় উপমহাদেশে বেড়ানোর জন্য।

(b) হর্ষবর্ধনের শাসন বিষয়ে বই লেখার জন্য।

© বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে আরও পড়াশোনা করার জন্য।.

উত্তর: (c)
Very Short Question Answer

1. বলি কী?
উত্তর: মৌর্য আমলে প্রচলিত এক ধরনের ভূমিরাজস্ব ছিল বলি।

2. আলেকজান্ডার কোথাকার শাসক ছিলেন? তাঁর সেনাপতি কে ছিলেন?

উত্তর: আলেকজান্ডার গ্রিসের ম্যাসিডনের শাসক ছিলেন। তাঁর সেনাপতি ছিলেন সেলিউকাস নিকেটর।

3. পৃথিবী জুড়ে একটি বিরাট সাম্রাজ্য তৈরি করতে চেয়েছিলেন কোন্ গ্রিক শাসক?

উত্তর: গ্রিক শাসক আলেকজান্ডার পৃথিবী জুড়ে একটি বিরাট সাম্রাজ্য তৈরি করতে চেয়েছিলেন।

4. কোন্ পর্বত পেরিয়ে আলেকজান্ডার ভারতে পৌঁছেছিলেন?

উত্তর: আলেকজান্ডার হিন্দুকুশ পর্বত পেরিয়ে ভারতে পৌঁছেছিলেন।

5. পুরুর রাজত্ব কোন্ কোন্ নদীর মধ্যেকার ভূখণ্ডে ছিল?

উত্তর: পুরুর রাজত্ব ঝিলাম ও চেনাব নদীর মধ্যেকার ভূখণ্ডে ছিল।

6. মগধের রাজধানী কোথায় অবস্থিত ছিল?

উত্তর: মগধের রাজধানী অবস্থিত ছিল পাটলিপুত্রে।

7. মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রথম রাজা কে ছিলেন?

উত্তর: চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ছিলেন মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রথম রাজা।

6. অর্থশাস্ত্র গ্রন্থটির রচয়িতা কে?

উত্তর: অর্থশাস্ত্র গ্রন্থটির রচয়িতা কৌটিল্য।

7. মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন?

উত্তর: সম্রাট অশোক মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন।

8. সম্রাট অশোকের শিলালেখগুলিতে বেশিরভাগ কোন্ লিপি ব্যবহার করা হয়েছে?

উত্তর: সম্রাট অশোকের শিলালেখগুলিতে বেশিরভাগ ব্রাহ্মীলিপি ব্যবহার করা হয়েছে।

9. সম্রাট অশোকের সময়ে তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতি কোথায় হয়েছিল?

উত্তর: সম্রাট অশোকের সময়ে তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতি হয়েছিল পাটলিপুত্রে।

10. ‘দেবানংপিয়’ বা ‘প্রিয়দর্শী’ উপাধি কে গ্রহণ করেছিলেন? 

উত্তর: ‘দেবানংপিয়’ বা ‘প্রিয়দর্শী’ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন মৌর্য সম্রাট অশোক।

11. ইন্ডিকা বই-এর লেখক কে?

উত্তর: ইন্ডিকা বই-এর লেখক গ্রিক দূত মেগাস্থিনিস।

12. প্রথম গুপ্তচর নিয়োগ করেন কোন্ বংশের শাসকরা? 

উত্তর: মৌর্য বংশের শাসকরা প্রথম গুপ্তচর নিয়োগ করেন।

13. মৌর্য বংশের শেষ সম্রাট কে ছিলেন?

উত্তর: মৌর্য বংশের শেষ সম্রাট ছিলেন বৃহদ্রথ।

14. কুষাণ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন কে?

উত্তর: কুষাণ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন কুজুল কদফিসেস।

15. কুষাণ বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন?

উত্তর: কুষাণ বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন প্রথম কনিষ্ক।

16. কনিষ্ক সিংহাসনে বসেন কত খ্রিস্টাব্দে?

উত্তর: কনিষ্ক সিংহাসনে বসেন ৭৮ খ্রিস্টাব্দে।

17. শকাব্দ গণনা শুরু হয় কত খ্রিস্টাব্দ থেকে?

উত্তর: ৭৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে শকাব্দ গণনা শুরু হয়।

18. কনিষ্কের রাজধানী কোথায় ছিল?

উত্তর: কনিষ্কের রাজধানী ছিল পুরুষপুর।

19. সাতবাহন বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন?

উত্তর: সাতবাহন বংশের প্রতিষ্ঠাতা বা প্রথম শাসক ছিলেন সিমুক।

20. সাতবাহন রাজ্যের শ্রেষ্ঠ শাসক কে ছিলেন?

উত্তর: সাতবাহন রাজ্যের শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন গৌতমীপুত্র সাতকর্ণি।

21. ‘দমঅর্ত’ উপাধি কে ধারণ করেন?

উত্তর: ‘দমঅর্ত’ উপাধি ধারণ করেন বিম কদফিসেস।

22. গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কে?

উত্তর: গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা হলেন প্রথম চন্দ্রগুপ্ত।

23. ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ কাকে বলা হয়?

উত্তর: সমুদ্রগুপ্তকে ‘ভারেতর নেপোলিয়ন’ বলা হয়।

24. কোন্ গুপ্ত সম্রাট হুন আক্রমণ প্রতিহত করে খ্যাতিলাভ করেন?

উত্তর: গুপ্ত সম্রাট স্কন্দগুপ্ত হুন আক্রমণ প্রতিহত করে খ্যাতিলাভ করেন।

25. ‘ভারতের রক্ষাকারী’ বলা হয় কোন্ গুপ্ত সম্রাটকে?

উত্তর: গুপ্ত সম্রাট স্কন্দগুপ্তকে ‘ভারতের রক্ষাকারী’ বলা হয়।

26. হর্ষবর্ধন কত খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন?

উত্তর: হর্ষবর্ধন ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসেন।

27. ‘শিলাদিত্য’ উপাধি কে নিয়েছিলেন?

উত্তর: ‘শিলাদিত্য’ উপাধি নিয়েছিলেন রাজা হর্ষবর্ধন।

28. আইহোল প্রশস্তি কার লেখা?

উত্তর: আইহোল প্রশস্তি চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর সভাকবি রবিকীর্তির লেখা।

29. আলেকজান্ডার কোন্ কোন্ অঞ্চল জয় করেছিলেন?
উত্তর: গ্রিসের ম্যাসিডন রাজ্যের রাজা আলেকজান্ডার মিশর এবং পশ্চিম এশিয়ার বিরাট অঞ্চল জয় করেছিলেন।

Short Question Answer

1. কলিঙ্গ যুদ্ধের পর সম্রাট অশোকের মধ্যে কীরূপ পরিবর্তন হয়েছিল?

উত্তর: কলিঙ্গ যুদ্ধ সম্রাট অশোকের জীবনে এক বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসে। কলিঙ্গ যুদ্ধের নারকীয় হত্যালীলা, স্বজনহারা মানুষের কান্না আর রক্তের স্রোত অশোকের মনে গভীর রেখাপাত করে। কলিঙ্গ যুদ্ধের পর তিনি শান্তিবাদী বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন এবং যুদ্ধ বিজয়নীতি ত্যাগ করে জনকল্যাণমূলক কর্মে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন।

2. মৌর্য সম্রাটরা গুপ্তচর কেন নিয়োগ করতেন?
উত্তর: মৌর্য সম্রাটরা সাম্রাজ্যের সমস্ত খোঁজখবর পাওয়ার জন্য গুপ্তচর নিয়োগ করতেন। সম্রাট অশোক সাম্রাজ্যের খবর সংগ্রহের জন্য প্রতিবেদক নামে একশ্রেণির রাজকর্মচারী নিয়োগ করেন। বিদেশি বা অচেনা সন্দেহজনক লোকেদের ওপর গুপ্তচরদের তীক্ষ্ণ নজর থাকত। রাজকর্মচারী ও রাজপুত্ররাও এর বাইরে ছিলেন না। এমনকি রাজপ্রাসাদেও রাজার প্রহরী হিসেবে নারী গুপ্তচরদের নিয়োগ করা হত।

3. সাম্রাজ্য বলতে কী বোঝো?
উত্তর: সাম্রাজ্য বলতে বোঝায় একটি বড়ো অঞ্চল বা রাজ্য যেখানে কয়েক হাজার জনগণ বসবাস করে। সাধারণত যুদ্ধের মধ্যদিয়ে রাজ্য জয় করে রাজারা তাদের অঞ্চল বা রাজ্য বৃহৎ করে। এই বৃহৎ অঞ্চল বা রাজ্যকে সাম্রাজ্য বলা হয়।

4. আলেকজান্ডারের অভিযানের ফল কী হয়েছিল?উত্তর: গ্রিসের ম্যাসিডনের শাসক আলেকজান্ডারের ভারতবর্ষ অভিযানের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরে অবস্থিত ছোটো ছোটো শক্তিগুলির ক্ষমতা কমে গিয়েছিল। ফলে মৌর্য বংশের উত্থানের পথ সুগম হয়েছিল।

5. মৌর্য সম্রাটরা কেন গুপ্তচর নিয়োগ করতেন?
উত্তর: মৌর্য আমলের গুপ্তচর ব্যবস্থা ছিল খুব শক্তিশালী। মৌর্য সম্রাটরা গুপ্তচর নিয়োগ করতেন সাম্রাজ্যের খোঁজখবর আনতে এবং বিদেশি বা অচেনা সন্দেহজনক ব্যক্তিদের ওপর নজর রাখতে।

6. গুপ্ত ও বাকাটক শাসনব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা করো।
উত্তর: প্রাচীন ভারতের ইতিহাস উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে উত্তর ভারতে গুপ্ত এবং দাক্ষিণাত্যের বাকাটক শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে। দুই সাম্রাজ্যের শাসনব্যবস্থার মধ্যে বেশ কিছু সাদৃশ্য চোখে পড়ে।

7.. অশোকের ধন্ম তাঁর শাসনব্যবস্থাকে কতটা প্রভাবিত করেছিল?
উত্তর: মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিল অশোক। মৌর্য সম্রাট অশোক কলিঙ্গ যুদ্ধের পর যুদ্ধনীতি ত্যাগ করে ধর্মনীতি দ্বারা জনগণকে একজোট করতে চেয়েছিলেন। বাবা-মা ও গুরুজনদের প্রতি সম্মান এবং দয়া, দান ও সত্যকথন-এর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। এ ছাড়া তিনি প্রাণীহত্যা নিষিদ্ধ করেছিলেন। এইভাবে ধম্মনীতি প্রয়োগের মাধ্যমে অশোক তাঁর সাম্রাজ্য তথা শাসনব্যবস্থাকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।

8. মৌর্য আমলে রাজস্বব্যবস্থা সম্পর্কে লেখো।উত্তর: ভারতবর্ষে প্রথম রাজস্ব বা কর ব্যবস্থার প্রচলন ঘটায় মৌর্য শাসকরা। মৌর্য আমলে বলি ও ভাগ নামক দু-রকম ভূমিরাজস্ব প্রচলিত ছিল। চাষিরা তাদের উৎপন্ন ফসলের ভাগ রাষ্ট্রকে রাজস্ব হিসেবে দিত। চাষি ছাড়াও কারিগর, ব্যাবসায়ী, বণিক শ্রেণি রাষ্ট্রকে কর দিত। যদিও কর ছাড় দেওয়ার অধিকার সম্রাটের ছিল। রাজস্বব্যবস্থা প্রচলনের উদ্দেশ্য ছিল সুষ্ঠুভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করা।

9. মৌর্য বংশের শেষ শাসক কে ছিলেন? তাঁকে কে পরাজিত করেন?

উত্তর: মৌর্য বংশের শেষ শাসক ছিলেন বৃহদ্রথ। ১৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বৃহদ্রথকে হত্যা করে পুষ্যমিত্র শুঙ্গ মগধের রাজা হন।

10. মৌর্যদের পর মগধ শাসন করেছিল এরূপ একটি রাজবংশের নাম উল্লেখ করো।

উত্তর: মৌর্যদের পর মগধ শাসন করেছিল যে দুটি রাজবংশ তাদের মধ্যে অন্যতম হল শুঙ্গ বংশ। শুঙ্গ বংশের দুজন প্রধান শাসক ছিলেন পুষ্যমিত্র শুঙ্গ এবং অগ্নিমিত্র শুঙ্গ।

11. ক্ষত্রপ কাদের বলা হত?

উত্তর: সমগ্র কুষান সম্রাটরা শাসনব্যবস্থার সুবিধার জন্য সাম্রাজ্যকে কতগুলি প্রদেশে ভাগ করেছিলেন। সেইসব প্রদেশের শাসকদের বলা হত ক্ষত্রপ।

12. সমুদ্রগুপ্তের ‘গ্রহণ’, ‘মোক্ষ’ ও ‘অনুগ্রহ’ নীতি বলতে কী বোঝো?

উত্তর: গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট সমুদ্রগুপ্ত দক্ষিণ ভারতের ১২টি রাজ্যজয়ের ক্ষেত্রে ‘গ্রহণ’, ‘মোক্ষ’ ও ‘অনুগ্রহ’ নীতি গ্রহণ করেন। গ্রহণ নীতি দ্বারা কিছু রাজ্য প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে নিয়ে আসেন। মোক্ষ নীতি দ্বারা কিছু রাজ্যকে তিনি করদ রাজ্যে পরিণত করেন। এবং অনুগ্রহ নীতি দ্বারা কিছু রাজ্যের বশ্যতা আদায় করে তাঁদের রাজ্য ফিরিয়ে দেন। আসলে দূরদর্শী সমুদ্রগুপ্ত জানতেন সুদূর পাটলিপুত্র থেকে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির ওপর প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভবপর নয়। তাই তিনি এরূপ নীতি গ্রহণ করেন।

13. কে, কেন সমুদ্রগুপ্তকে ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ বলেছেন?

উত্তর: ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ সমুদ্রগুপ্তকে ‘ভারতের নেপোলিয়ন’ বলেছেন। কারণ নেপোলিয়ন যেমন তাঁর বাহুবলে ইউরোপের বিভিন্ন রাজ্য ফরাসি সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন, তেমনই সমুদ্রগুপ্ত তাঁর প্রতিভা ও বাহুবলে ভারতের বহু রাজ্য গুপ্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন।

14. দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে ‘শকারি’ বলা হয় কেন?

উত্তর: গুপ্ত রাজা দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত গুপ্তদের দীর্ঘদিনের শত্রু সৌরাষ্ট্রের শকরাজ তৃতীয় রুদ্রসিংহকে পরাজিত করে গুপ্ত সাম্রাজ্যকে বিপদমুক্ত করেছিলেন। যেহেতু তিনি শকদের পরাজিত করেছিলেন তাই তাঁকে ‘শকারি’ বলা হয়।

15. ‘ভারতের রক্ষাকারী’ কাকে, কেন বলা হয়?উত্তর: গুপ্ত বংশীয় শাসক স্কন্দগুপ্তকে ‘ভারতের রক্ষাকারী’ বলা হয়। তিনি বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে হুনদের পরাজিত করে গুপ্ত সাম্রাজ্যকে এক চরম বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেন। তাই ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার তাঁকে ‘ভারতের রক্ষাকারী’ বলেছেন।

Long Question Answer

1. মৌর্য শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে যা জান লেখো।

উত্তর: মৌর্য শাসনব্যবস্থা সাধারণত কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক এই দুটি স্তরে বিভক্ত ছিল।

a. কেন্দ্রীয় শাসন: মৌর্য শাসনব্যবস্থায় রাজাই ছিলেন সর্বেসর্বা। তাঁকে সাহায্য করতেন একটি মন্ত্রীপরিষদ। অমাত্যরা শাসন পরিচালনা করতেন। এঁরা ছিলেন- মন্ত্রিণ, সমাহর্তা, সন্নিধাতা প্রভৃতি। এ ছাড়া ৩২ জন অধ্যক্ষের নাম পাওয়া যায়।

b. প্রাদেশিক শাসন: (i) সমগ্র সাম্রাজ্য কতকগুলি প্রদেশে বিভক্ত ছিল, প্রদেশগুলি জেলা এবং জেলাগুলি গ্রামে বিভক্ত ছিল। জেলা ও গ্রামের শাসককে বলা হত প্রাদেশিক ও গোপ। (ii) নগরগুলিতে ছিল পৌরশাসন। ৩০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হত পৌরবোর্ড।
c. অন্যান্য: (i) মৌর্য বাহিনীর ছ-টি ভাগ ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-পদাতিক, অশ্বারোহী, রথারোহী, হস্তীবাহিনী প্রভৃতি। (ii) সম্রাট স্বয়ং সর্বোচ্চ বিচারক ছিলেন। বিচারকার্য চালাতেন মহামাত্র ও রাজকগণ। সে-সময় ১৮ রকম শাস্তি ছিল। (iii) জানা যায়, তখন প্রজাদের কাছ থেকে ভূমিরাজস্ব হিসেবে অংশ ফসল নেওয়া হত।

2. সম্রাট অশোক ‘ধম্ম’ কথাটি প্রথম কোন্ লেখতে ব্যবহার করেন? তাঁর ধম্ম সম্পর্কে কী জান?

উত্তর: সম্রাট অশোকের মাস্কি লেখ-তে প্রথম ‘ধম্ম’ কথাটির উল্লেখ পাওয়া যায়।

 অশোকের ‘ধন্ম’: অহিংসা ও শান্তির বাণী ছিল অশোকের ‘ধম্ম’-এর মূলকথা। তাঁর ধম্ম ছিল সরল ও ব্যাবহারিক ধন্ম বিষয়ে তিনি সপ্তম স্তম্ভ লেখতে উল্লেখ করেছেন-

a. নীতি: সত্যবাদিতা, শুচিতা, ভদ্রতা, চারিত্রিক দোষ থেকে মুক্তি ইত্যাদি।

b. পালনীয় কর্তব্য: তাঁর ধন্মের পালনীয় কর্তব্যগুলি ছিল-প্রাণী হত্যা না করা, পিতামাতা; বয়স্ক ও গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভৃত্যদের প্রতি উদারতা, অল্প ব্যয় ও অল্প সঞ্চয় ইত্যাদি।

c. কর্মচারী নিয়োগ: তিনি ধম্মপ্রচারের জন্য যুত, রাজুক, মহামাত্র, প্রাদেশিক প্রভৃতি শ্রেণির রাজকর্মচারী নিয়োগ করেন।

d. ধর্মমহামাত্র নিয়োগ: প্রজাদের মঙ্গলসাধনের জন্য তিনি ধর্মমহামাত্র নামে এক শ্রেণির রাজকর্মচারী নিয়োগ করেন।

3. সাতবাহন শাসনব্যবস্থা কেমন ছিল?

উত্তর: খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকের দ্বিতীয় ভাগে দক্ষিণ ভারতে সাতবাহন শাসন শুরু হয়। সাতবাহনদের শাসনব্যবস্থায় প্রধান ছিলেন রাজা। তিনি সেনাবাহিনীরও প্রধান ছিলেন।

a. প্রাদেশিক বিভাজন: সাতবাহন শাসকরা শাসনব্যবস্থার সুবিধার জন্য বড়ো অঞ্চলকে ছোটো ছোটো প্রদেশে ভাগ করতেন।

b. রাজপ্রতিনিধি: সাতবাহন আমলে অমাত্য নামক একশ্রেণির রাজকর্মচারী প্রদেশ শাসন করতেন।
c. কর আদায়: সাতবাহন আমলে বলি ও ভাগ নামক দুটি কর আদায় করা হত। উৎপন্ন ফসলের অংশ ভাগ হিসেবে দেওয়া হত।

4. গুপ্ত যুগের শাসনব্যবস্থা কেমন ছিল?

উত্তর: উত্তর ভারতে কুষাণ সাম্রাজ্য লোপ পাওয়ার পর গুপ্ত রাজাদের নেতৃত্বে এক শক্তিশালী শাসনতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে ওঠে। গুপ্ত রাজারা শুধু রাজ্য বিজেতা ছিলেন না, তাঁরা ছিলেন সুশাসক। শাসনকার্যের সুবিধার জন্য সমগ্র সাম্রাজ্যকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-

a. প্রদেশ: গুপ্ত সাম্রাজ্য কয়েকটি প্রদেশ বা ভুক্তিতে বিভক্ত ছিল। যেমন-মগধভুক্তি। ভুক্তির শাসনকার্য দেখাশোনা করতেন গুপ্ত রাজপুত্রগণ।

b. জেলা: প্রদেশগুলি কতকগুলি বিষয় বা জেলায় বিভক্ত ছিল। জেলার শাসনকর্তারা বিজয়পতি নামে পরিচিত ছিল।

c. আম: বিষয়গুলি আবার গ্রামে বিভক্ত ছিল। গ্রামের শাসনকর্তাদের বলা হত গ্রামিক। প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থার মধ্যে সংযোগ রক্ষা করতেন কুমার অমাত্যগণ।
d. অন্যান্য কর: কারিগর, বণিকদের কাছ থেকে এমনকি নুনের ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও কর আদায় করা হত।

5. অশোককে মহামতি বলা হয় কেন?

অথবা, মৌর্য সম্রাট অশোকের কৃতিত্ব আলোচনা করো।

উত্তর: চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের উত্তরসূরী হিসেবে সম্রাট অশোক যেমন এক বিশাল সাম্রাজ্যের অধিকারী হয়েছিলেন তেমনই তিনি সেই সাম্রাজ্যকে অক্ষুণ্ণ রেখে যুদ্ধাভিযান বন্ধ করে শান্তি ও মৈত্রীর নীতিকে বাস্তবায়িত করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। রাজা হয়েও ঋষি সুলভ আচার-আচরণ তাঁকে স্মরণীয় তথা মহামতিতে পরিণত করে রেখেছে।

a. রাজতান্ত্রিক আদর্শ প্রতিষ্ঠা: সম্রাট অশোকের জনকল্যাণের মূলকথা ছিল প্রজাকল্যাণ। তিনি সবসময় প্রজাদের পিতার মতো নির্দেশ দিতেন এবং রক্ষা করতেন।

b. জনকল্যাণ: প্রজাকল্যাণের উদ্দেশ্যে সম্রাট অশোক রাস্তাঘাট নির্মাণ, কূপ খনন, বৃক্ষরোপণ, দাতব্য চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন, পশুদের জন্য চিকিৎসালয়, বিশ্রামাগার নির্মাণ করেন।

c. পরধর্মসহিয়তা: সম্রাট অশোক সব ধর্মের প্রতিই সমান শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তাঁর সাম্রাজ্যের সব প্রজাই নিজ নিজ ইচ্ছানুযায়ী ধর্ম পালনের অধিকারী ছিল।

d. বৌদ্ধধর্মের প্রসার: ব্যক্তিগতভাবে সম্রাট অশোক ছিলেন বৌদ্ধধর্মের অনুরাগী। বৌদ্ধধর্ম প্রসারের উদ্দেশ্যে তিনি দেশে-বিদেশে দূত প্রেরণ করেছিলেন। তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত ইচ্ছা এবং উদ্যোগে বৌদ্ধধর্ম বিশ্বধর্মে পরিণত হয়েছিল।
e. আন্তর্জাতিকতাবাদের প্রসার: মৌর্য সম্রাট অশোক ছিলেন আন্তর্জাতিকতাবাদের মূর্ত প্রতীক। বৌদ্ধধর্মকে ভিত্তি করে এবং তাঁর সূত্র ধরেই সিরিয়া, গ্রিস, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

6. মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণগুলি আলোচনা করো। 

উত্তর: চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পাটলিপুত্রকে কেন্দ্র করে যে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল ভারতের ইতিহাসে তা মৌর্য সাম্রাজ্য নামে পরিচিত। চন্দ্রগুপ্তের পরবর্তী মৌর্য সম্রাট অশোকের সময়ে মৌর্য শাসনব্যবস্থায় বেশ কিছু পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল। কিন্তু অশোকের মৃত্যুর ৫০ বছরের মধ্যে মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন ত্বরান্বিত হয়। মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনে বিভিন্ন কারণগুলি হল-

a. ব্রাহ্মণদের বিরোধিতা: ধর্মমহামাত্র নামক রাজকর্মচারী নিয়োগ, দণ্ড সমতা ও ব্যবহার সমতা নীতি প্রয়োগ করে অশোক ব্রাহ্মণদের ক্ষমতা হ্রাস করেছিলেন। অশোকের বৌদ্ধধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা ও ব্রাহ্মণ্য ধর্ম বিরোধী মনোভাবকে অনেকে মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের জন্য দায়ী করেন।

b. অশোকের অহিংস নীতি: মৌর্য সম্রাট অশোক অনুসৃত ধর্মবিজয় নীতি এবং অহিংস পররাষ্ট্রনীতিকে এই সাম্রাজ্যের পতনের অন্যতম কারণ বলে অনেকে অভিমত প্রকাশ করেছেন।

c. আঞ্চলিক বিদ্রোহ: প্রাদেশিক শাসনকর্তা ও দুষ্টামত্যদের অত্যাচারে জনগণ অতিষ্ট হয়ে পড়ে। এজন্য অশোকের সময় তক্ষশিলা ও উজ্জয়িনীতে জনবিক্ষোভ দেখা দেয়। তাঁর সময় সাম্রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল স্বাধীনতা ঘোষণা করে। অশোকের পুত্র জলৌকা কাশ্মীরে স্বাধীন রাজ্য স্থাপন করেন। ক্রমে গান্ধার, বিদর্ভ প্রভৃতি রাজ্য স্বাধীন হয়ে পড়ে।

d. অর্থনৈতিক দুর্বলতা: মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের কারণ হিসেবে অর্থনৈতিক দুর্বলতাকে দায়ী করা হয়ে থাকে। অশোক স্তূপ, বিহার ও বৌদ্ধমঠগুলি চালানোর জন্য প্রচুর অর্থ দান করতেন। ফলে অচিরেই মৌর্য অর্থনীতিতে দারুণ চাপ পড়ে।
e. প্রশাসনিক দুর্বলতা: আমলাতন্ত্র ছিল কেন্দ্রমুখী। রাজা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমলাদের আনুগত্যের পরিবর্তন ঘটত। এতে রাষ্ট্রের সংহতি ক্ষুণ্ণ হয়। যা মৌর্য সাম্রাজ্যকে অবক্ষয়ের দিকে নিয়ে যায়।

7. সমুদ্রগুপ্তও দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের কৃতিত্ব আলোচনা করো।

উত্তর: গুপ্ত শাসনব্যবস্থায় সমুদ্রগুপ্ত ও দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। তাঁদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গুপ্ত সাম্রাজ্য উন্নতির স্তরে পৌঁছায়।

a. উত্তর ভারত অভিযান: উত্তর ভারত অভিযান করে সমুদ্রগুপ্ত ন-জন রাজাকে পরাজিত করেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন-নাগসেন, মতিল, গণপতিনাগ, বলবর্মন প্রমুখ রাজন্যবর্গ।

b. দক্ষিণ ভারত অভিযান: দক্ষিণ ভারতে অভিযান চালিয়ে তিনি মোট বারোটি রাজ্য জয় করেন। যেমন-কোটুর, কাঞ্জী, অবমুক্তা, বেঙ্গী ইত্যাদি। যদিও পরবর্তীকালে তিনি এই রাজ্যের রাজাদের রাজত্ব ফিরিয়ে দিয়ে রাজ্যগুলিকে করদ রাজ্যে পরিণত করেন।

c. সীমান্তবর্তী রাজ্য অভিযান: তিনি সীমান্তবর্তী আরও পাঁচটি রাজ্য যেমন-নেপাল, সমতট, দাভক, কামরূপ ইত্যাদি জয় করেন। এ ছাড়াও তিনি ন-টি উপজাতীয় রাজ্য জয় করেন।

d. আটবিক রাজ্য অভিযান: এ ছাড়া তিনি ভারতের আঠারোটি আটবিক রাজ্য জয় করে এক বিশাল গুপ্ত সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন।

 দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত-এর কৃতিত্ব: দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের উপাধি ছিল ‘বিক্রমাদিত্য’।

a. মালব জয়: তিনি ভারতের পশ্চিমদিকে মালব জয় করেন। সৌরাষ্ট্রের শকদের পরাজিত করে তিনি ‘শকারি’ উপাধি ধারণ করেন।

b. সিন্টু ও পাঞ্জাব জয়: তিনি খুব সম্ভবত সিধু ও পাঞ্জাব জয় করেছিলেন।
c. বৈবাহিক সম্পর্ক: গুপ্ত সাম্রাজ্যের ভিত্তি মজবুত করার জন্য তিনি পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। তিনি নাগবংশীয় কুবেরনাগাকে বিবাহ করেন এবং নিজের মেয়ের সঙ্গে বাকাটক রাজার বিবাহ দেন।

8. হর্ষবর্ধনের শাসনব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তর: গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর আর্যাবর্তে হর্ষবর্ধনের নেতৃত্বে থানেশ্বর শক্তিশালী হয়ে ওঠে। একাধিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হর্ষবর্ধন একইসঙ্গে থানেশ্বর ও কনৌজের রাজা হন। 

৬০৬ খ্রিস্টাব্দে হর্ষবর্ধন সিংহাসনে বসেন। তিনি ‘শিলাদিত্য’ উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে তিনিই ছিলেন শীর্ষে। এ ছাড়া অমাত্য নামক রাজকর্মচারীরা শাসনব্যবস্থায় রাজাকে সাহায্য করত।

প্রাদেশিক শাসনের কাজে মন্ত্রীপরিষদ তাঁকে সাহায্য করত। দূরবর্তী প্রদেশগুলি শাসন করতেন সামন্তরাজা বা রাজার কোনো প্রতিনিধি। হর্ষবর্ধনের শাসনব্যবস্থায় প্রতিটি প্রদেশ বা ভুক্তি কয়েকটি বিষয় বা জেলায় বিভক্ত ছিল। শাসনব্যবস্থার সবথেকে নীচে ছিল গ্রাম। গ্রামিক নামক কর্মচারী গ্রাম শাসন করতেন। হর্ষবর্ধন যেহেতু অনেক সামরিক অভিযান করেছিলেন তাই যুদ্ধে তাঁকে সাহায্য করার জন্য ছিল বিশাল সেনাবাহিনী।

True and False

1. পাটলিপুত্রকে ঘিরেই ভারতে প্রথম সাম্রাজ্য তৈরি হয়।

উত্তর: ভুল 

2. মৌর্য সম্রাটরা প্রথম গুপ্তচর নিয়োগ করেছিলেন।

উত্তর: ঠিক

3. মৌর্য বংশের পর মগধে গুপ্ত বংশের শাসন শুরু হয়।

উত্তর: ভুল 

4. কুষাণ বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কনিষ্ক।

উত্তর: ঠিক

5. কুষাণ সাম্রাজ্যে প্রদেশের শাসককে ‘ক্ষত্রপ’ বলা হত।

উত্তর: ঠিক

6. প্রথম চন্দ্রগুপ্ত ‘গুপ্তাব্দ’ গোনা চালু করেন।

উত্তর: ঠিক

7. হর্ষবর্ধন ছিলেন শেষ মৌর্য সম্রাট।

উত্তর: ভুল 

৪. হর্ষবর্ধন ‘শিলাদিত্য’ উপাধি নিয়েছিলেন।
উত্তর: ঠিক

1.1. সেলিউকাস ও চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের মধ্যে চিরকাল শত্রুতা ছিল।

উত্তর: ভুল

1.2. মৌর্য আমলে মেয়েরাও মহামাত্যের দায়িত্ব পেতেন।

উত্তর: ঠিক

1.3. কুষাণরা এদেশেরই মানুষ ছিলেন।

উত্তর: ভুল

1.4. প্রথম চন্দ্রগুপ্ত গুপ্তাব্দ গোনা চালু করেন।

উত্তর: ঠিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *