WBBSE Class 7 Geography Chapter 5 Solution | Bengali Medium BM

নদী

MCQs Question Answer

1. প্রধান নদীর জলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে-

Ⓐ উপনদী,B) শাখানদী C), প্রশাখানদী, D) পৃথক নদী।

উত্তর: Ⓐ উপনদী।

2. একটি অন্তর্বাহিনী নদী হল-

A) গঙ্গা, B) ব্রহ্মপুত্র

, C) গোদাবরী,D) আমুদরিয়া।

উত্তর: D) আমুদরিয়া।

3. রাইন একটি-

Ⓐ অন্তর্বাহিনী নদী,

Ⓑ স্থানীয় নদী,

C) আন্তর্জাতিক নদী,

D)জাতীয় নদী।

উত্তর:C)আন্তর্জাতিক নদী

4. নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট একটি ভূমিরূপ হল-

Ⓐ জলপ্রপাত,

Ⓑ প্লাবনভূমি,

C) অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ,

D) বদ্বীপ।

উত্তর :A) জলপ্রপাত।

5. আন্তর্জাতিক নদী একাধিক

Ⓐ শহরের,

Ⓑ রাজ্যের,

C)দেশের,

D) মহাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।

(পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন)

উত্তর:C)দেশের।

6. নদী পথের ঢাল বাড়লে নদীর শক্তি-

Ⓐ বাড়ে, Ⓑ কমে C), ক্ষয়, D একই থাকে।

উত্তর:A) বাড়ে।

7. বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ আছে-

Ⓐ সিন্ধুতে, Ⓑ রাইনে,C) গঙ্গায়, ① নীলনদে।

উত্তর:C) গঙ্গায়।

৪. জলপ্রপাত নদীর উচ্চগতিতে-

A) ক্ষয়,

B) বহন,

C)সঞ্চয়,

D) জলপ্রবাহের ফলে সৃষ্টি হয়।

উত্তর: Ⓐ ক্ষয়ের ফলে সৃষ্টি হয়।

9. শুষ্ক অঞ্চলের সুগভীর গিরিখাতকে বলে- 

, Ⓐ ক্যানিয়ন, Ⓑ জলপ্রপাত  C)ম্যকূপ,  , ⑩ প্রপাতকূপ।

উত্তর: Ⓐ ক্যানিয়ন।

10. বদ্বীপ নেই এমন একটি নদী হল-

Ⓐ কাবেরী,

B) আমাজন,

C) ভাগীরথী-হুগলি,

D) ইয়াংসি-কিয়াং।

উত্তর:B) আমাজন।

11. প্রপাতকূপ সৃষ্টি হয়-

Ⓐ ক্যানিয়নের,

Ⓑ মন্থকূপের,

C) অশ্বক্ষুরাকৃতির হ্রদের

D) জলপ্রপাতের তলদেশে।

উত্তর: জলপ্রপাতের তলদেশে।

12. মানচিত্রে নিত্যবহ নদী দেখানো হয়-

Ⓐ লাল রঙে,

B) নীল রঙে,

© কালো রঙে,

① হলুদ রঙে।

উত্তর: (B) নীল রঙে।

13. নদীর ধারণ অববাহিকা দেখা যায়-

A মোহানায়,

Ⓑ নীচু ভূমিতে,

C) উৎসস্থলে,

D)বদ্বীপ অঞ্চলে।

উত্তর:C) উৎসস্থলে।

14. ইয়াংসি-কিয়াং নদী প্রবাহিত হয়েছে-

Ⓐ জাপানে,

B)চিনে,

C)দক্ষিণ কোরিয়ায়,

D)ভুটানে।

উত্তর: B) চিনে।

15. ভল্লা নদী প্রবাহিত হয়েছে-

Ⓐ এশিয়া মহাদেশে,

(B) আফ্রিকা মহাদেশে,

C) ওশিয়ানিয়া মহাদেশে,

D) ইউরোপ মহাদেশে।

উত্তর:ইউরোপ মহাদেশে।

16. নিম্নপ্রবাহে নদীবিন্যাস অনেকটা নীচের দিকে মুখ করা হাতের তালুর মতো হয়, কারণ –

Ⓐ এই সময় নদী সমতল অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে চলে

 B)এই সময় নদী নানা শাখায় বিভক্ত হয়

 C) এই সময় নদীখাত

D)অগভীর হয় এই সময় নদী প্লাবনের সৃষ্টি করে।

উত্তর: Ⓐ এই সময় নদী নানা শাখায় বিভক্ত হয়।

17. পৃথিবীর সর্বপ্রধান জলবিভাজিকা হল –)

Ⓐ মধ্য এশিয়ার পার্বত্যভূমি

 Ⓑ উ: আমেরিকার পশ্চিমের কর্ডিলেরা

C)দ: অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জ

D) পৃ: আফ্রিকার গ্রস্ত উপত্যকা

উত্তর: Ⓐ মধ্য এশিয়ার পার্বত্যভূমি।

Very Short Question Answer

▶ প্রশ্ন-3 জল কোথায় তাড়াতাড়ি গড়িয়ে যায়? সমতল জায়গায় না ঢালু জায়গায়।

উত্তর: সমতল জায়গায়, ঢালু জায়গায়।

▶ প্রশ্ন-4 ঢালু জায়গায় জল কখন তাড়াতাড়ি গড়িয়ে যায়?

উত্তর: জলের পরিমাণ বাড়লে, জলের পরিমাণ কমলে।

▶ প্রশ্ন-1 ছবিটাকে বুঝতে পারলে?

উত্তর: উপরের ছবিটি হল উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত একটি আদর্শ নদীর দৈর্ঘ্য বরাবর পার্শ্বচিত্র।

1. গঙ্গা নদী কোন্ হিমবাহ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে?

উত্তর: গঙ্গোত্রী হিমবাহ।

2. মিসৌরি নদীকে কোন্ মহাদেশে দেখতে পাওয়া যায়?

উত্তর: উত্তর আমেরিকা মহাদেশে।

3. যে উঁচু অঞ্চল দুটি নদীর অববাহিকাকে পৃথক করে তাকে কী বলে?

উত্তর: জলবিভাজিকা।

4. নদী যে খাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকে কী বলে?

উত্তর: নদী উপত্যকা।

5. পাঁচ নদীর মধ্যবর্তী স্থান ভারতে কী নামে পরিচিত?

উত্তর: পাঞ্জাব।

6. ভারতের একটি অন্তর্বাহিনী নদীর নাম লেখো।

উত্তর: লুনি।

7. আর্দ্র অঞ্চলে নদীর উচ্চগতিতে সৃষ্ট গভীর খাতকে কী বলে?

উত্তর: গিরিখাত।

৪. যোগ জলপ্রপাত কোন্ রাজ্যে অবস্থিত?

উত্তর: কর্ণাটক।

9. কাবেরী নদীর উপরিস্থিত জলপ্রপাতের নাম কী?

উত্তর: শিবসমুদ্রম।

10. পৃথিবীর মোট স্থলভাগের কত শতাংশ অংশে নদীর কাজ দেখা যায়?

উত্তর: 60% অংশে।

11. ফানেল আকৃতির চওড়া নদী মোহানাকে কী বলে?

উত্তর: খাড়ি।

1. ভলগা, দানিয়ুব, রাইন, নাইজার।

উত্তর: নাইজার।

2. খাঁড়ি, জলপ্রপাত, পলল ব্যজনী, । আকৃতির উপত্যকা।

উত্তর: খাঁড়ি।

3. মিয়েন্ডার, মন্থকূপ, নদীচর, প্লাবনভূমি।

উত্তর: ম্যকূপ।

4. সিন্ধু, কৃষ্ণা, রাইন, দানিয়ুব।

উত্তর: কৃষ্ণা।

5. লেভি, নদীসোপান, প্লাঞ্জপুল, পলিশঙ্কু।

উত্তর: প্লাঞ্চপুল।

1. পার্বত্য অঞ্চলে নদী শান্তভাবে প্রবাহিত হয়।

উত্তর: পার্বত্য অঞ্চলে নদী অশান্তভাবে প্রবাহিত হয়।

2. মহানন্দা যমুনার একটি উপনদী।

উত্তর: মহানন্দা গঙ্গার একটি উপনদী।

3. আদর্শ নদীর গতিপথকে 5 টি ভাগে ভাগ করা যায়।

উত্তর: আদর্শ নদী গতিপথকে 3 টি ভাগে ভাগ করা যায়।

4. লুনি দক্ষিণ ভারতের একটি নদী।

উত্তর: লুনি পশ্চিম ভারতের একটি নদী।

1. আমার গতিপথে ‘I’ আকৃতির ভূমিরূপ দেখা যায়। আমি কে?

উত্তর: কলোরাডো নদী।

2. আমার গতিপথে ‘নায়াগ্রা’ জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়েছে। আমি কে?

 উত্তর: সেন্ট লরেন্স নদী।

3. আমার আকৃতি গ্রিক অক্ষর ‘ডেল্টা’র মতো, আমি কে?

উত্তর: বদ্বীপ।

4. আমি পৃথিবীর গভীরতম নদী উপত্যকা। আমি কে?

 উত্তর: গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

5. আমি জলপ্রপাতের তলদেশে সৃষ্টি হয়ে থাকি। আমি কে?

উত্তর: প্রপাতকূপ।

Short Question Answer

• প্রশ্ন-1 আদর্শ নদী কাকে বলে? উদাহরণ দাও। (বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাই স্কুল, উঃ মাঃ)

উত্তর: উৎস থেকে মোহানা পর্যন্ত যে নদীর গতিপথে তিনটি প্রবাহ (উচ্চ, মধ্য ও নিম্ন) সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায়, তাকে আদর্শ নদী বলে। যেমন-গঙ্গা নদী।

• প্রশ্ন-2 নদী অববাহিকা কাকে বলে?

উত্তর: প্রধান নদীসহ তার উপনদী ও শাখানদীসমূহ যে অঞ্চলের জল নিষ্কাশন করে, অথবা যে অঞ্চলকে প্রত্যক্ষভাবে (পানীয় জল, কৃষিকাজ ও পশুপালনের জন্য জলসেচ, পরিবহণ) বা পরোক্ষভাবে (জলবিদ্যুৎ) উপকার করে, সেইসব অঞ্চলকে একত্রে ওই প্রধান নদীর অববাহিকা (River Basin) বলে।

• প্রশ্ন-3 ধারণ অববাহিকা সম্বন্ধে কী জানো?

উত্তর: পার্বত্য অঞ্চল বা উচ্চভূমিতে নদীর উৎস অঞ্চলে অনেক ছোটো ছোটো উপনদী বা জলধারা প্রধান নদীতে জলের জোগান দেয়, তাদের সমগ্র অববাহিকাকে ধারণ অববাহিকা বলে। যেমন-গঙ্গা নদীর উৎস অঞ্চলে পিন্ডার, অলকানন্দা, ধৌলিগঙ্গা, মন্দাকিনী প্রভৃতি উপনদীর সঙ্গে মিলিত অববাহিকাকে গঙ্গা নদীর ধারণ অববাহিক

(Catchment Area) বলে।

▶ প্রশ্ন-4 জলবিভাজিকা কাকে বলে?

উত্তর: যে উচ্চভূমি পাশাপাশি অবস্থিত দুই বা ততোধিক নদীগোষ্ঠী ও নদী অববাহিকাকে পৃথক করে, তাকে জলবিভাজিকা বলে। সাধারণত নদীর জল, জলবিভাজিকার (Watershed) অবস্থান অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন দিকে নিষ্কাশিত হয়। উদাহরণ-এশিয়া মহাদেশের মধ্যভাগের উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল হল পৃথিবীর বৃহত্তম জলবিভাজিকা অঞ্চল।

▶ প্রশ্ন-6 জলবিভাজিকা ক্ষয় হয়ে গেলে কী ঘটনা ঘটবে? (পর্ষদ নমুনা)

উত্তর: জলবিভাজিকা ক্ষয়ের ফলে মাটি, পাথর প্রভৃতি ক্ষয়জাত পদার্থ নদীগর্ভে নেমে এসে সঞ্চিত হয়ে নদীর গভীরতা হ্রাস করবে। নদীতে কোনো কারণে অতিরিক্ত যুক্ত হলে এলে বন্যার সম্ভাবনা বাড়বে এবং নদীর পার্শ্ববর্তী জলবিভাজিকা সংলগ্ন অঞ্চল ধসপ্রবণ হয়ে উঠবে।

• প্রশ্ন-7 অন্তর্বাহিনী নদী কাকে বলে?

উত্তর: যেসব নদী কোনো দেশের আন্তর্জাতিক সীমানার মধ্যে উৎপন্ন হয়ে সেই দেশের মধ্যে কোনো হ্রদ বা জলাশয়ে গিয়ে মেশে, তাকে অন্তর্বাহিনী নদী বলে। উদাহরণ-লুনি নদী ভারতের অভ্যন্তরে আনাসাগর হ্রদ থেকে উৎপন্ন হয়ে থর মরুভূমির উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কচ্ছের রণে পড়েছে।

▶ প্রশ্ন-৪ আন্তর্জাতিক নদী কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর: যে নদী একাধিক দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকে আন্তর্জাতিক নদী বলে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক নদী এক দেশ থেকে উৎপন্ন হয়ে পার্শ্ববর্তী অন্য এক বা একাধিক স্বাধীন দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। যেমন-এশিয়া মহাদেশের সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র; ইউরোপ মহাদেশের দানিয়ুব, (দীর্ঘতম আন্তর্জাতিক নদী) রাইন, আফ্রিকা মহাদেশের নীলনদ প্রভৃতি।

▶ প্রশ্ন-10 নদীদ্বীপ বা নদীচর বা বালুচর কীভাবে সৃষ্টি হয়?

উত্তর: নদীর নিম্নপ্রবাহে বা সমভূমি প্রবাহে নদীর গতি কমে যায়। ফলে বহন ক্ষমতাও অনেক কমে যায়। নদীর শক্তি বা ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার ফলে নদীবাহিত পলি, বালি, নুড়ি, কাঁকরসমূহ নদীর মাঝে সঞ্চিত হয়ে নদীচর বা বালুচর সৃষ্টি করে। এই বালুচর ক্রমশ আয়তনে ও উচ্চতায় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে নদীদ্বীপ তৈরি করে। উদাহরণ: আমাজন নদীর ইলহা-দ্য-মারাজো দ্বীপ (পৃথিবীর বৃহত্তম নদীদ্বীপ) প্রভৃতি।

• প্রশ্ন-11 জলপ্রপাত কীভাবে সৃষ্টি হয়?

উত্তর: নদীর প্রবাহপথে কঠিন ও কোমল শিলা অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে, নদী কঠিন শিলা অপেক্ষা নরম শিলাকে বেশি ক্ষয় করলে কঠিন ও কোমল শিলার মধ্যে ধাপের সৃষ্টি হয়। ফলে নদীর জলস্রোত ওপরের ধাপ থেকে নীচে সবেগে ঝাঁপিয়ে পড়ে জলপ্রপাতের সৃষ্টি করে। যেমন-নায়াগ্রা (সেন্ট লরেন্স নদী), ভিক্টোরিয়া (জাম্বেসি নদী)। পৃথিবীর উচ্চতম জলপ্রপাত সাল্টো অ্যাঞ্জেল (রিও করোনি নদী, ভেনেজুয়েলা, দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ)।

▶ প্রশ্ন-9 নদীর মধ্যপ্রবাহ বলতে কী বোঝো?

উত্তর: পার্বত্য প্রবাহের পরবর্তী পর্যায়ে যে স্থানে নদী সমভূমিতে এসে পড়ে, সেই স্থান থেকে নদীর প্রায় সমুদ্র সমতলে নেমে আসা পর্যন্ত নদীর মধ্যপ্রবাহ। এই সময় ভূমির ঢাল কমে যায় বলে জলে গতিবেগ শক্তি দুটোই কমে যায়। নিম্নক্ষয় হ্রাস ও পার্শ্বক্ষয় বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর উপত্যকা প্রশস্ত হয় ও গভীরতা হ্রাস পায়। উদাহরণ: উত্তরপ্রদেশের হরিদ্বার থেকে মুর্শিদাবাদের মিঠিপুর পর্যন্ত গঙ্গা নদীর মধ্যগতি হিসেবে চিহ্নিত।

▶ প্রশ্ন-12 বদ্বীপ সৃষ্টির পদ্ধতিটি আলোচনা করো।

 উত্তর: সংজ্ঞা: নদীর নিম্নপ্রবাহে সৃষ্ট শেষ সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ হল বদ্বীপ। নদীর মোহানা সংলগ্ন স্থানে, ভূমির ঢাল ও জলস্রোতের গতিবেগ প্রায় না থাকার জন্য নদী দ্বারা বাহিত পদার্থসমূহ সমুদ্রের লবণাক্ত জলের সংস্পর্শে জোটবদ্ধ হয়ে অগভীর সমুদ্রবক্ষে সঞ্চিত হয়ে

▶ প্রশ্ন-1 বলতে পারো, একই নদী দুটি জায়গায় দুরকম কেন?

উত্তর: (উত্তর সংকেত: গঙ্গা নদীর উদাহরণসহ লেখা হল)।

পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় গঙ্গোত্রীতে গঙ্গার গতিপথের ঢাল খুব বেশি হওয়ায় গঙ্গা নদী প্রবল গতিতে প্রবাহিত হয়। উৎস অংশে উপনদীর সংখ্যা কমের জন্য জলের প্রাপ্যতা কম থাকায় নদীতে জলের পরিমাণ কম নদী উপত্যকা অপ্রশস্ত। অন্যদিকে, গঙ্গা যতই তার মোহানার দিকে অর্থাৎ সাগরদ্বীপের দিকে সমভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ততই তার গতিপথের ঢাল মৃদু হয়েছে ও বেগ কমে গিয়েছে। প্রবাহপথে অনেক উপনদী এসে মেশায় ও বৃষ্টির জলযুক্ত হওয়ায় নদী প্রচুর জল বহন করার জন্য পার্শ্বক্ষয় বেশি হওয়ায় নদী উপত্যকা চওড়া হয়।

• প্রশ্ন-2 ভেবে দেখো নদীর ‘এত’ জল আসছে কোথা থেকে? (বরফগলা জল, বৃষ্টির জল, ঝরনার জল, হ্রদের জল নাকি অন্য কোনো নদী থেকে?)

উত্তর: প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বিভিন্ন উৎস থেকে সারাবছরই নদীতে কখনো কম, কখনো বেশি পরিমাণে জলের জোগান আসে। সেগুলি হল-(i) পার্বত্য অঞ্চলে সৃষ্ট নদীগুলিতে সারাবছরই জল থাকে কারণ

সৃষ্ট হ্রদের জল থেকে উৎপন্ন হয়। যেমন- তিব্বতের মানস সরোবর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদী। (ii) কোনো উচ্চভূমি ও পাহাড়ি মালভূমি অঞ্চল থেকে সৃষ্ট নদীগুলির জলের উৎস হল ঝরনার জল, বৃষ্টির জল। (ii) নদীর মধ্যগতিতে নদীর জলের উৎিস হল পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে আগত উপনদীর জল। (iv) নিম্নগতিতে বিস্তীর্ণ অববাহিকার জল, ছোটো ছোটো নদী, খাল, বিলের জল প্রধান নদীতে এসে পতিত হয়।

• প্রশ্ন-3 “আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে-বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে-” তোমার দেখা কোনো নদীর সঙ্গে যদি এই কবিতার মিল খুঁজে পাও, তাহলে সেই নদীটার নাম লেখো।

উত্তর: আমি এইরূপ অনেক নদী দেখেছি। যেমন-(i) হুগলি জেলার আদি সপ্তগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ‘সরস্বতী নদী’।

(ii) পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান শহরের উপর দিয়ে অত্যন্ত এঁকে বেঁকে নদী শেষে

‘বাঁকা নদী’ বয়ে গেছে। (iii) বর্ধমানের জামালপুর থেকে উৎপন্ন কানা কুন্তী

নদী নামধারণ করে ভাগীরথীতে পড়েছে।

▶ প্রশ্ন-3 বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনা বলতে কী বোঝো?

উত্তর: সংজ্ঞা: নদীর উপর বাঁধ নির্মাণের ফলে সৃষ্ট জলাধারের সাহায্যে নদী অববাহিকার অধিবাসীদের সর্বাঙ্গীণ জীবনে বহুবিধ উন্নতি সাধনের জন্য যে নদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, তাকে বহুমুখী নদী পরিকল্পনা বলে।

উদ্দেশ্যসমূহ: বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনার উদ্দেশ্যগুলি হল-(i) জলসেচ, (ii) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, (iii) বন্যা নিয়ন্ত্রণ, (iv) নৌপরিবহণ, (v) মাছ চাষ, (vi) পর্যটন, (vii) ভূমিক্ষয় নিবারণ, (viii) বাঁধকে সেতু হিসেবে ব্যবহার, (ix) মৃত্তিকা ক্ষয় নিবারণ, (x) জলসেচ, (xi) বিভিন্ন রোগ (ম্যালেরিয়া, জলবাহিত রোেগ) প্রতিরোধ করা।

Long Question Answer

প্রশ্ন নদীর উচ্চগতি বা পার্বত্যপ্রবাহে সৃষ্ট তিনটি ভূমিরূপের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। অথবা, ক্যানিয়ন ও গিরিখাত কাকে বলে?

উত্তর: উচ্চগতি বা পার্বত্যপ্রবাহে নদীর প্রধান কাজ হল নিম্নক্ষয় ও ক্ষয়ীভূত পদার্থসমূহ বহন করা। এই পর্যায়ে নদী পার্শ্বক্ষয় করতে পারে। না। নদীর উচ্চগতিতে সৃষ্ট প্রধান তিনটি ভূমিরূপ হল-

(i) গিরিখাত : বৃষ্টিবহুল পার্বত্য অঞ্চলের ভূমির ঢাল বেশি হওয়ায় নদী পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় অধিক করে থাকে। ফলে যে সংকীর্ণ ও গভীর ‘V’ আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হয়, তাকে গিরিখাত বলে। উদাহরণ: পেরুর এনা ক্যানন দ্য কলকা।

(ii) ক্যানিয়ন: শুষ্ক অঞ্চলের বৃষ্টিপাতের অভাবে নিম্নক্ষয় অধিক হওয়ায় অতি গভীর ও অতি সংকীর্ণ ‘I’ আকৃতিবিশিষ্ট যে উপত্যকা সৃষ্টি হয়, তাকে ক্যানিয়ন বলে। উদাহরণ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

(iii) জলপ্রপাত: নদীর প্রবাহপথে কঠিন ও কোমল শিলা অণুভূমিকভাবে অবস্থান করলে, নদী কোমল শিলাকে বেশি ক্ষয় করার ফলে কঠিন ও কোমল শিলার মধ্যে ধাপের সৃষ্টি হয় এবং প্রান্তভাগে অবস্থান করলে নদী উপত্যকার ভূমি ঢালের প্রভেদ ঘটে। ফলে নদীর জলস্রোত কঠিন শিলার ওপর খাড়া ঢাল বরাবর ওপর থেকে নীচে সবেগে ঝাঁপিয়ে পড়ে জলপ্রপাতের সৃষ্টি করে। উদাহরণ: আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট লরেন্স নদীর ‘নায়াগ্রা জলপ্রপাত’। যার উচ্চতা 51 মিটার বা 167 ফুট।

প্রশ্ন ২ নদীর মধ্যগতিতে সৃষ্ট তিনটি ভূমিরূপ বর্ণনা করো। উত্তর: নদীর মধ্যগতিতে সৃষ্ট প্রধান তিনটি ভূমিরূপ হল-

(i) নদী বাঁক বা মিয়েন্ডার: ভূমির ঢাল কমে গেলে নদীর স্রোতের বেগ কমে যায়। ফলে নদী সামান্য বাধা পেলেই কঠিন শিলাস্তর এড়িয়ে গিয়ে আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয়। নদীর এই আঁকাবাঁকা পথকে নদীবাঁক বা মিয়েন্ডার বলে। উদাহরণ: ভারতের গোদাবরী ও কৃষ্ণানদী এবং তুরস্কের মিয়েন্ড্রস প্রভৃতি নদীতে দেখা যায়।

(ii) নদীদ্বী প: নদীবাহিত পলি, বালি, নুড়ি, কাঁকর নদীর মধ্যে বা

দুধারে সঞ্চিত হলে জল প্রবাহের পথ আটকে যায়। নদীতে চড়া পড়ে। কখনও নদী-দ্বীপ তৈরি হয়।

(iii) অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ : নদীর বাঁকের পরিমাণ বাড়লে, বা নদীতে জল বাড়লে কখনো কখনো নদী বাঁকের একটা অংশ মূলনদী থেকে আলাদা হয়ে যায়। আলাদা বা বিচ্ছিন্ন অংশটি ঘোড়ার খুরের মতো দেখতে হয় বলে একে অক্ষুরাকৃতি হ্রদ বলে।

           উত্তর: নিম্নগতিতে নদীর সঞ্চয় কাজের পলে প্লাবনভূমি, বদ্বীপ ইত্যাদি ভূমিরূপ তৈরি হয়। (ⅰ) প্রশস্ত বা চওড়া নদী উপত্যকা : নিম্নপ্রবাহে নদীর নিম্নক্ষয় থাকে না। কেবল পার্শ্বক্ষয় হয়। ফলে নদী আরও চওড়া বা প্রশস্ত হয়ে যায়।

(ii) প্লাবনভূমি: নিম্নগতিতে বর্ষায় নদীতে নদীতে বর্ষায় বন্যা হলে প্লাবিত অঞ্চলে বালি, কাদা, পলি প্রভৃতি অতিরিক্ত জল দুকূল ছাপিয়ে সঞ্চিত করে যে নতুন পলিগঠিত সমভূমি তৈরি করে, তাকে প্লাবনভূমি বা প্লাবন সমভূমি বলে। চিনের হোয়াং নদীর নিম্নগতিতে প্লাবনভূমি দেখা যায়।

(iii) স্বাভাবিক বাঁধ বা লেভি: বদ্বীপ প্রবাহে নদীর উভয় তীর বরাবর নদীবাহিত পলি, বালি, কাঁকর সঞ্চিত হয়ে উঁচু বাঁধের সৃষ্টি করে, তাকে স্বাভাবিক বাঁধ বা লেভি বলে। উদাহরণ: সুন্দরবন অঞ্চলে নদীর দুই তীরে স্বাভাবিক বাঁধ দেখা যায়।

(iv) খাঁড়ি: নদীর মোহনায় জোয়ারের সময় সমুদ্রের লবণাক্ত জল নদীখাতে প্রবেশ করে নদী পাড়ের পার্শ্বক্ষয় করে নদীর উপত্যকাকে ফানেলের মতো চওড়া করে তোলে। এই ফানেলাকৃতির উপত্যকাকে

খাঁড়ি বলে। উদাহরণ: সুন্দরবন অঞ্চলে প্রচুর নদীতে খাঁড়ি দেখা যায়।

(v) বদ্বীপ: নদীর মোহনায় জলের গতিবেগ কম এবং ভূমির ঢাল কম থাকায় নদীবাহিত ভাসমান ও দ্রবীভূত পদার্থসমূহ নোনা জলের সংস্পর্শে অতি দ্রুত জোটবদ্ধ হয়ে মোহানার সন্নিকটে অগভীর সমুদ্রবক্ষে সঞ্চিত হয়ে মাত্রাহীন বাংলা ‘ব’ (বা গ্রিক অক্ষর ডেল্টার ‘△’ মতো) অক্ষরের

মতো যে ভূমিরূপ সৃষ্টি করে তাকে বদ্বীপ বলে। উদাহরণ: পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ হল গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর মিলিত বদ্বীপ।

প্রশ্ন-4 বদ্বীপ সৃষ্টির অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশগুলি বর্ণনা করো। (অনুরূপ প্রশ্ন সব নদীর মোহানায় ব-দ্বীপ সৃষ্টি হয় না কেন?)

উত্তর: পৃথিবীর সব নদী মোহানায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি। বদ্বীপ গঠনের অনুকূল ভৌগোলিক বা প্রাকৃতিক শর্তগুলি হল-

(i) অগভীর মোহানা: নদীর মোহানা অগভীর হওয়া একান্ত প্রয়োজন।

(ii) পলির আধিক্য: নদীবাহিত পলিরাশির পরিমাণ বেশি হলে বদ্বীপ গঠন দ্রুত হবে। কম পলি থাকলে বদ্বীপ তৈরি হবে না।

(iii) নদীর প্রবাহপথ: নদীর প্রবাহপথ সুদীর্ঘ হওয়া প্রয়োজন।

(iv) জলের গতিবেগ: নদীর মোহানার কাছাকাছি নদীর গতিবেগ কম হওয়া বাঞ্ছনীয়। নদীর বেগ বেশি হলে বদ্বীপ তৈরি হবে না।

(v) উপনদীর সংখ্যা: প্রধান নদীতে অসংখ্য উপনদী এসে মিলিত হলে, নদীতে পলির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

(vi) সমুদ্রের প্রকৃতি: মোহানায় সমুদ্রস্রোত ও জোয়ারের প্রাবল্য কম হতে হবে, যাতে পলিরাশি অপসারিত না হয়। মোহানায় প্রবল সমুদ্র

স্রোতে বদ্বীপ গড়ে তুলতে পারে না।

 (vii) স্থলবেষ্টিত সমুদ্র: উন্মুক্ত সমুদ্র অপেক্ষা আবদ্ধ সমুদ্র বদ্বীপ

গঠনের পক্ষে বিশেষ উপযোগী।

(viii) বায়ুপ্রবাহ: নদীর স্রোতের বিপরীতে বায়ু প্রবাহিত হলে বদ্বীপ গঠন ত্বরান্বিত হয়।

(x) সমুদ্রজলের ঘনত্ব: সমুদ্রের জলের ঘনত্ব বেশি হওয়া দরকার।

কারণ লবণাক্ত সমুদ্রে জল নদীবাহিত পদার্থসমূহকে দ্রুত জোটবদ্ধ করে। 

 (xii) উপকূলের ঢাল নদীর মোহনায় উপকূলের ঢাল বা মহীসোপানের ঢাল কম হওয়া ও মহীসোপানের বিস্তার বেশি হলে সেখানে বৃহৎ আকৃতির বদ্বীপ গঠিত হতে পারে।

প্রশ্ন 5 নদী কীভাবে মানুষের জীবনে প্রভাব বিস্তার করে তা তোমার অঞ্চলের কোনো নদীর উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: নদী যে-কোনো অঞ্চলের বিকাশ ও উন্নতিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে। যেমন- (ⅰ) এই নদীর শোভা দেখতে এখানে অনেক পর্যটক আসেন। তাই পর্যটকদের পরিসেবা দান করার জন্য অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। (ii) ইছামতী থেকে প্রচুর মাছ ধরে মানুষ জীবিকা অর্জন করেন। (iii) নদীর ঠান্ডা জল হাওয়া স্বস্তিদায়ক পরিবেশ তৈরি করেছে। (iv) নদীকে কেন্দ্র করে নৌ পরিবহণ ব্যবস্থার বিকাশ ঘটেছে। (v) নদীপাড়ের মাটি থেকে ইট তৈরি করা হয়। তাই এখানে অনেক ইটভাটা গড়ে উঠেছে। (vi) টাকি রেলস্টেশন থেকে ইছামতীর তীরের পর্যটন কেন্দ্রের দূরত্ব প্রায় দেড় কিমি (1.5 কিমি)। এই পথে পর্যটকদের যাতায়াতের জন্য প্রচুর ভ্যান, টোটো, চলাচল করে। যা থেকে স্থানীয় গরিব মানুষরা অর্থ উপার্জন করে থাকে। (vii) টাকি শহরের বিপরীত পাশে ইচ্ছামতির অপর তীরে বাংলাদেশের শ্রীপুর জেলার সাতক্ষীরা গ্রাম অবস্থিত। প্রতিবছর বিজয়া দশমীর দিন উভয়তীরের হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ প্রতিমা নিরঞ্জন করার জন্য ইছামতী নদীতে মিলিত হন, যা এক সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক হিসেবে বিশ্ববন্দিত হয়েছে

• প্রশ্ন-1 নদীর স্বাভাবিক ছন্দকে নষ্ট করে মানুষ কীভাবে সভ্যতার সংকট সৃষ্টি করেছে?

উত্তর: মানবজীবনে নদী অত্যন্ত প্রভাব বিস্তার করলেও মানুষের কার্যাবলি নদীর স্বাভাবিক ছন্দকে নষ্ট করছে। ফলে মানুষ নিজেই তার বিপদ ডেকে আনছে। (ⅰ) বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য নদীর ওপর কৃত্রিম বাঁধ তৈরি করে মানুষ সাময়িকভাবে কিছু সুফল পেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আরো ভয়াবহ বন্যার কারণ হয়ে উঠেছে। 2021 সালে উত্তরাখণ্ডে ও হিমাচলে একটানা হড়পাবান ঘটেছে। (ii) মাত্রাতিরিক্ত কৃষিকাজের ফলে কৃষিক্ষেত্র থেকে ধুয়ে আসা পলিতে নদী ক্রমশ ভরাট হচ্ছে। (iii) কৃষিকাজে জলসেচের পর্যাপ্ত জলের জোগান এবং শিল্পাঞ্চলে ও শহরগুলিতে পাণীয় জলের জোগানঅক্ষুণ্ণ। (iv) শিল্পাঞ্চলের বর্জ্য পদার্থ ও পরিত্যক্ত জল নদীতে অবাধে মিশে নদীর জলকে দূষিত ও বিষাক্ত করছে।

• প্রশ্ন-2 নদী ক্রমশ ভরাট হচ্ছে কেন?

উত্তর: নদী তার বোঝা (নুড়ি, বালি, পলি, কাঁকর, পলি, কাদা ইত্যাদি) বহন করতে না পারলে তা সঞ্চয় বা অবক্ষেপণ করে নদী ভরাট করে। যেমন-নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণগুলি হল-(i) নদীর বহন ক্ষমতা অপেক্ষা অধিক পরিমাণে নুড়ি, বালি, পলি, কাদা ইত্যাদি বেশি পরিমাণে আসা। (ii) নদীতে জলের পরিমাণ কমে আসা। (iii) নদী উপত্যকার ঢাল কমে আসে। (iv) নদী কোনো আবদ্ধ জলাশয়ে পড়লে। (v) গ্রাম, শহর, শিল্পাঞ্চলের নোংরা আবর্জনা বর্জ্য পদার্থ অবাধে নদীতে ফেলে দেওয়া। (v) শহরাঞ্চলগুলিতে নদীর পাড় ভরাট করে ঘরবাড়ি, সেতু নির্মাণ করা। (vii) নদীর তীরে মাছের ভেড়ি তৈরি করা। (viii) অপেক্ষাকৃত কম স্রোত বা প্রায় স্রোতহীন নদীতে কচুরিপানা, শেওলা, শালুক প্রভৃতি জলজ উদ্ভিদ জন্মায় ও নদী আবদ্ধ হয়ে পড়ে।

▶ প্রশ্ন-1 নদী কী কী কাজ করে?-আলোচনা করো।

উত্তর: নদী তার সুদীর্ঘ গতিপথে প্রধানত তিন রকমের কাজ করে

থাকে। যথা-(i) ক্ষয়সাধন, (ii) বহন ও (iii) সঞ্চয় কাজ। *

 ক্ষয়সাধন: প্রবল জলপ্রবাহের আঘাতে নদীর পাড় ও তলদেশের শিলাসমূহের স্থানচ্যুত বা চূর্ণবিচূর্ণ হওয়া প্রক্রিয়াকে নদীর ক্ষয়কাজ বলে। *

 বহন: নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট নুড়ি, কাঁকর, বালি, পাথর, পলি ইত্যাদি নদীর প্রবল জলস্রোতের টানে উৎস থেকে মোহনার দিকে প্রবাহিত হয়। একে নদীর বহন কাজ বলে। নদীর এই বহন ক্ষমতা নির্ভর  করে নদীপথের ঢাল, জলপ্রবাহের পরিমাণ ও বোঝার ওপর নির্ভরশীল।

 * সঞ্চয়কাজ: প্রধানত নিম্নগতিতে ভূমিঢাল কমে যাওয়ায় নদীর বেগ তথা বোঝা বহনের ক্ষমতা কমে যায়। নদী তার বহন ক্ষমতার অতিরিক্ত বোঝা নদীর পাশে বা খাতে তা সঞ্চয় করে থাকে। একে নদীর সঞ্চয়কাজ বলে।

• প্রশ্ন-2 নদীর শক্তির সঙ্গে নদীর কাজের কী সম্পর্ক, বুঝতে পারলে?

 তা সংক্ষেপে লেখো।

উত্তর: নদী তার গতিপথে ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয় করে-এই তিন রকম কাজ নির্ভর করে তার সামর্থ্যের (শক্তির) উপর। নদীর সামর্থ্য বা ক্ষমতা বা শক্তি মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, সেগুলি হল- (i) জলের পরিমাণ, (ii) জলের গতিবেগ, (iii) ভূমির ঢাল। এছাড়া নদীবাহিত বোঝার পরিমাণ, শিলার প্রকৃতি, নদীর উপত্যকায় মানুষের কার্যকলাপ

প্রভৃতি বিষয়ের উপর নদীর শক্তি নির্ভর করে।

 * সম্পর্ক: নদীতে জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে স্রোতের গতিবেগ বৃদ্ধির কারণে নদীর কর্মক্ষমতা বিশেষ করে ক্ষয়সাধন ও বহন অনেকাংশে বেড়ে যায়। আবার এগুলি কমে গেলে নদীর সঞ্চয় বৃদ্ধি পায়। নদীবাহিত বোঝার পরিমাণের হ্রাস বৃদ্ধি ক্ষয়কাজের বাড়ে-কমে। অন্যদিকে, নদীর উপত্যকার ভূমির ঢালের হ্রাসবৃদ্ধি ঘটলে নদীর গতিবেগের হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে।

{ নদীর বোঝা ও নদী অববাহিকায় অধিক জনঘনত্বের ফলে মানুষের নানান

ধরনের কাজের ফলে নদীতে বোঝার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে নদী ধীর গতিতে প্রবাহিত হয়।

▶ প্রশ্ন-1 মানুষের জীবনের সঙ্গে নদীর কী মিল!! তুলনা করে আলোচনা করো।

উত্তর : একটি আদর্শ নদীর সঙ্গে একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষের

জীবনযাত্রার প্রায় 100 শতাংশ মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন-(i) প্রথম ছবিতে একজন বাচ্চা ছেলে ও নদীর উচ্চপ্রবাহের ছবি পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে। একটি বাচ্চা ছেলে তার যৌবন বয়সে যেমন কর্মচঞ্চল, দৌড়ঝাঁপ করে, ছটফট করে, অফুরন্ত প্রাণশক্তিতে ভরপুর থাকে। ঠিক তেমনি নদী তার উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে প্রচণ্ড শক্তি সঞ্চয় করে অতি দ্রুতবেগে প্রবাহিত হতে থাকে। (ii) দ্বিতীয় ছবিতে একজন মধ্যবয়সী পরিণত মানুষ ও নদীর মধ্যপ্রবাহের ছবি পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে। নদীর মধ্যগতিতে নদী উপত্যকার ঢাল ও নদীর শক্তি হ্রাস পায়। ফলে নদীর ক্ষয় করার ক্ষমতা যেমন অনেকটা কমে যায়, ঠিক তেমনি একজন পরিণত মাঝবয়সী মানুষও এই সময়ে ধীর স্থির, শান্তশিষ্ট এবং কম গতিসম্পন্ন হয়ে পড়ে, (iii) তৃতীয় ছবিতে একজন মানুষের বার্ধক্য অবস্থা এবং নদীর নিম্নপ্রবাহের চিত্র দেওয়া হয়েছে। একজন মানুষের বার্ধক্য অবস্থায় সে যেমন অশক্ত, চলনশক্তি হারিয়ে ফেলে, কর্মশক্তিহীন হয়ে পড়ে, ঠিক তেমনি নদীও তার নিম্নগতিতে মোহানার কাছে তার গতি, ক্ষমতা সবই হারিয়ে ফেলে।

• প্রশ্ন-২ তোমার বাড়ির কাছাকাছি কোনো নদীকে লক্ষ করে নদীর বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে স্থারণা করো। নদীর নাম, নদীর জল (বেশি/কম), নদীর গতিবেগ (বেশি/ কম), ভূমির ঢাল (বেশি/কম)। অতএব নদীটার কোন্ প্রবাহ? (উচ্চ/মধ্য নিম্ন)।

উত্তর: নদীটার নাম: হুগলি। নদীর জল: বেশি। নদীর গতিবেগ : কম। ভূমির ঢাল : কম। অতএব নদীটার কোন্ প্রবাহ : নিম্ন প্রবাহ।

Fil In The Blanks

1. নদী একটি —- জলধারা।

উত্তর: প্রাকৃতিক/স্বাভাবিক।

2. দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের বৃহত্তম নদীটি হল——

উত্তর: আমাজন।

3. এলাহাবাদ, আগ্রা, গঙ্গা ও — নদীর দোয়াব অঞ্চলে অবস্থিত।

উত্তর: যমুনা।

4. পৃথিবীর দীর্ঘতম খাড়ি —- নদীতে দেখা যায়।

উত্তর: ওব।

5. নিম্নগতিতে নদীর প্রধান কাজ হল। —

 (জেনকিনস স্কুল কোচবিহার)

উত্তর: সঞ্চয়।

6. মিয়েন্ডার নামকরণ হয়েছে তুরস্কের অনুসারে। নদীর নাম

উত্তর: মিয়েন্ড্রস।

7. ভারতের —নদীর মোহানায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি।

উত্তর: নর্মদা-তাপ্তি।

৪. নদী যে পাড়ে ক্ষয় করে, তার — পাড়ে সঞ্চয় করে।

উত্তর: বিপরীত।

9. ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকাকে — বলে।

উত্তর: গিরিখাত।

Ture And False

1. অনেকগুলি জলধারা মিলিত হয়ে প্রধান নদী সৃষ্টি হয়।

উত্তর: শুদ্ধ

2. নদী সাধারণত নীচু জলাভূমিতে সৃষ্টি হয়।

উত্তর: অশুদ্ধ (উচ্চভূমি)

3. গোমুখ গুহা কারাকোরাম পর্বতমালায় অবস্থিত।

উত্তর: অশুদ্ধ (হিমালয়)

4. উপনদীসমূহ প্রধান নদীতে জল বৃদ্ধি করে।

উত্তর: শুদ্ধ

5. সুন্দরবনে অনেক খাঁড়ি দেখা যায়।

উত্তর: শুদ্ধ

6. নদীচর কখনোই নদী দ্বীপে পরিণত হতে পারে না।

 উত্তর: অশুদ্ধ (পারে)

7. হরিদ্বার থেকে রাজমহল পাহাড় পর্যন্ত গঙ্গার উচ্চগতি।

উত্তর: অশুদ্ধ (মধ্যগতি)

৪. পূর্বঘাট পর্বতে যোগ জলপ্রপাত অবস্থিত।                                                                                                                   

উত্তর: অশুদ্ধ (পশ্চিমঘাট)

9. বারাণসীর কাছে গঙ্গায় অনেকগুলি মিয়েন্ডার সৃষ্টি হয়েছে।

উত্তর: শুদ্ধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *