WBBSE Class 7 Sahityamela Chapter 16 Solution | Bengali Medium

Class 7 Chapter 16 Solution

মেঘ-চোর

Very Short Question Answer

১০.১ আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সে ইতিহাস নিয়ে গবেণষা করে।

উত্তর: কর্তকারকে ‘এ’ বিভক্তি।

 ১০.২ অসীমা ইতিহাসের ছাত্রী হলেও ভূগোলও বেশ ভালোই জানে।

 উত্তর: কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।

 ১০.৩ তার মধ্যে আশি হাজার কিউবিক মাইলই যায় সমুদ্র থেকে।

উত্তর: অপাদানকারকে ‘থেকে’ অনুসর্গ।

১০.৪ সাইবেরিয়ায় বড়জোর একই ইন্যি বেশি বরফ জমে।

উত্তর: অধিকরণকারকে ‘য়’ বিভক্তি।

১০.৫ তাঁর নিজস্ব রকেটে তিনি অসীমাকে নিয়ে বহু জায়গায় বেড়াচ্ছেন।

উত্তর: করণকারকে ‘এ’ বিভক্তি।

Short Question Answer

 ১১.১ ‘মেঘ-চোর’ এর মতো তোমার পড়া দু-একটি কল্পবিজ্ঞানের গল্পের নাম বলো।

উত্তর: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রণীত ‘মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত গল্পের মতো আমার পঠিত দুটি কল্পবিজ্ঞানের গল্প হল-

১. ‘বন্ধুবাবুর বন্ধু’

২. ‘একশৃঙ্গ অভিযান’

১১.২ এই গল্পে কজন চরিত্র? তাদের নাম কী?

উত্তর: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রণীত ‘মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত গল্পে মোট চারটি চরিত্রের উল্লেখ আছে।

• এই চারটি চরিত্র হল–

১. বৃষ্টি বিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি

২. তাঁর ভাই দিক্বিক্বজয়

৩. বিজ্ঞানী কারপভ

৪. তাঁর মেয়ে অসীমা

এই প্রসঙ্গে বলাবাহুল্য যে, দিক্জিয় ও কারপভের নাম কথোপকথন প্রসঙ্গে এসেছে। তারা সরাসরি এই গল্পের চরিত্র হিসাবে

উপস্থিত হননি।

১১.৩ ‘মেঘ-চোর’ কাকে বলা হয়েছে?

উত্তর: প্রখ্যাত বৃষ্টি বিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি অন্য দেশ থেকে মেঘ ধার করে এনে সাহারাতে বৃষ্টি ঘটিয়েছেন বলে তাঁকে ‘মেঘ-চোর’ বলা হয়েছে।

১১.৪ পুরন্দরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর: পুরন্দর চৌধুরির মুখখানা ফরসা ও একেবারে গোল, প্রায় চাঁদের মতোন। তাঁর চোখের মণি দুটো নীল। তাঁর বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। বৃষ্টি বিজ্ঞানী হিসেবে সারা পৃথিবীতে তাঁর নাম। সাহারা মরুভূমিতে এক মাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে তিনি সাংঘাতিক কাণ্ড করেছেন। এজন্য তাঁর প্রশংসা যত হয়েছে, নিন্দেও হয়েছে প্রায় ততটাই।

১১.৫ অসীমা সম্বন্ধে দু-একটি বাক্য লেখো।

উত্তর: অসীমার বয়স সাতাশ। আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন। ভূগোল ও কম্পিউটারে রয়েছে তাঁর প্রবল আগ্রহ। বোস্টন শহরে আবহাওয়া বিষয়ে একটি আলোচনা-সভায় পুরন্দর চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়।

১১.৬ পুরন্দর কী সাঙ্ঘাতিক কাণ্ড করেছেন?

উত্তর: সাহারা মরুভূমিতে এক মাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে তিনি সাংঘাতিক কাণ্ড করেছেন। এই বৃষ্টিপাতের জন্যে তিনি সাইবেরিয়া

থেকে মেঘ চুরি করে এনেছিলেন সাহারায়।

১১.৭ রাষ্ট্রসংঘে বিভিন্ন দেশ কী দাবি তুলেছে?

উত্তর: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রণীত ‘মেঘ-চোর’ গল্পে প্রধান চরিত্র হলেন আবহাওয়া বিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরী। তিনি সাইবেরিয়া থেকে মেঘ নিয়ে গিয়ে সাহারা মরুভূমিতে এক মাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছিলেন। তাঁর এই অসম্ভব কান্ড করবার জন্যে রাষ্ট্রসংঘের বিভিন্ন দেশ দাবি তুলেছে যে, মেঘ-চুরি আইন করে বদলানো দরকার। কেননা-

ক।। এক দেশের মেঘকে অন্য দেশে নিয়ে গেলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য

বিঘ্নিত হতে পারে।

খ।। অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।

তাই রাষ্ট্রসংঘের বিভিন্ন দেশ বাদে-প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল।

১১.৮ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কোথায়?

উত্তর: আমেরিকায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত।

১১.৯ পুরন্দরের মুখটা হাঁ হয়ে গেল কেন? উত্তর: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রণীত ‘মেঘ-চোর’ অসাধারণ একটি কল্পবিজ্ঞানের গল্প। এই গল্পের নায়ক হলেন আবহাওয়া বিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরী। তিনি যখন জানতে পারেন, আগে থেকেই কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এর কৌশল তৈরি করে রেখেছিলেন অসীমা। এই অসীমা তাঁদের রকেটটিকে বায়ুমণ্ডলের অনেক উপরে নিয়ে গিয়েছিলেন।

উত্তরঃ খানে পারদের সঙ্গে ১১টি ধাতু মিশিয়ে তাঁর ধাতব বলটি ক্রমে ক্রমে শীতল হয়ে আসছিল। এই বিষয় দেখে পুরন্দরের বিস্ময়ের শেষ ছিল না। যে সুন্দরী মেয়েটি তাঁর ভাইঝি পরিচয়ে তাঁর রকেট যাত্রার সহযাত্রী তিনি আসলে বিজ্ঞানী কারপভের মেয়ে।

পুরন্দরের পরীক্ষাকে ব্যর্থ প্রমাণিত করতে অসীমার এ কৌশল

জানতে পেরে এবং অসীমার মাথায় বুদ্ধি দেখে পুরন্দরের মুখ হাঁ হয়েগিয়েছিল।

১১.১০ জ্ঞান ফিরে পুরন্দর অবাক হয়েছিলেন কেন?

উত্তর: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রণীত ‘মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত গল্পে দেখা যায় বৃষ্টি বিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরিকে ‘মেঘ-চোর’ অপবাদ দিয়েছেন বিজ্ঞানী কারপভ।আমেরিকার বোস্টন শহরে তখন চলছিল আবহাওয়া সংক্রান্ত ■ আলোচনা চক্র। কারপভ যখন পুরন্দরকে অপবাদ দেন, তখন পুরন্দর – উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি চিৎকার করে নিজের অভিমত প্রকাশ – করতে গেলে উত্তেজনায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

পুরন্দর জ্ঞান ফিরে দেখেছিলেন যে, তাঁর মাথার কাছে একজন ■ সুন্দরী মেয়ে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। তখন পুরন্দর ভেবেছিলেন বিদেশে তাঁর আত্মীয় স্বজন কেউ নেই, নিজে বিয়েও করেননি। তাহলে এই মেয়েটি কে? এই ভেবেই তিনি অবাক হয়েছিলেন।

 ১১.১১ দিবিজয় কে ছিলেন? 

উত্তর: দিবিজয় প্রখ্যাত বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরির নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ভাই। তিনি ২৫ বছর আগেই নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন। পুরন্দর চৌধুরির ভায়ের নাম দিকবিজয়।

১১.১২ গল্পের ঘটনা যখন ঘটেছে তখন চরিত্রগুলি কোথায় ছিল?

উত্তর: গল্পের ঘটনা যখন ঘটেছে, তখন চরিত্রগুলি ছিলেন রকেটের এ ভিতরে। আর রকেটটি ছিল আলাস্কার আকাশে।

১১.১৩ ইগলু-র পরিবর্তে সেখানে তখন কী দেখা যাচ্ছিল?

উত্তর: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রণীত ‘মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত গল্পে দেখা ■ যায়, এস্কিমোদের বাসস্থান ইগলু-র পরিবর্তে আলাস্কা অঞ্চলে তখন

বড়ো বড়ো এয়ারকন্ডিশান বাড়ি দেখা যাচ্ছিল।

১১.১৫ কে কোথা থেকে মেঘ এনেছিল?

উত্তর: বিশ্বখ্যাত বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি সাইবেরিয়া থেকে সাহারায় মেঘ এনেছিলেন। সেখানে একমাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছিলেন।

১১.১৬ তুষারযুগ কাকে বলে?***

উত্তর: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কিশোরদের উপযোগী করে ‘মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত কল্পবিজ্ঞানের গল্প লিখেছিলেন। এই গল্পে কথা প্রসঙ্গে তুষার যুগ বিষয়টি এসেছে। যে যুগে পৃথিবীর পৃষ্ঠ তুষারের চাদর আবৃত করেছিল সব কিছুকে, সেই যুগকেই তুষার যুগ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। পৃথিবীতে এরকম তুষার যুগ বেশ কয়েকবার এসেছে। আনুমানিক ১৩০০ বছর আগে পৃথিবীতে শেষ তুষার যুগ সম্পন্ন হয়েছে।

১১.১৭ পৃথিবী থেকে কত জল সারাবছর বাষ্প হয়ে মেঘে উড়ে যায়?***

উত্তর: পঁচানব্বই হাজার কিউবিক মাইল জল পৃথিবী থেকে সারাবছর বাষ্প হয়ে মেঘে উড়ে যায়।

১১.১৮ মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টি দরকার কেন?

উত্তর: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত ‘মেঘ-চোর’ গল্পপাঠে জানা যায়, মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে বলে মানুষের জন্য বৃষ্টি বেশি দরকার। পৃথিবীতে মানুষ, গাছপালা, জীব-জন্তু বেঁচে থাকার জন্যে প্রয়োজন হয় প্রতিবছর ১৫০০০ কিউবিক মাইল বৃষ্টি। কিন্তু বর্তমানে মানুষের সংখ্যা অত্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টির প্রয়োজন।

১১.১৯ আটলান্টিস কী?***

উত্তর: আটলান্টিস একটি লুপ্ত সভ্যতা। এই সভ্যতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই অনেকে মনে করেন, এটি আসলে গ্রিক লেখকদের কল্পনার ফসল।

১১.২০ পুরন্দরের মতে আটলান্টিসের অবস্থান কোথায়?

উত্তর: প্রখ্যাত বৃষ্টি বিজ্ঞানী পুরন্দরের মতে আটলান্টিসের অবস্থান আলাস্কার লেক শ্রেভারের তলাতে। মাউন্ট চেম্বারলিন পাহাড়ের বরফ গোলা জল দিয়ে এই লেক সৃষ্টি হয়েছিল। এই লেকের তলাতেই চাপা পড়েছিল আটলান্টিস।

১১.২১ সাইবেরিয়া কোথায়?

উত্তর: রাশিয়ায় সাইবেরিয়া অবস্থিত। রাশিয়ার ইউরোপীয় ও এশীয় অঞ্চল জুড়ে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন স্কোয়ার মাইলব্যাপী এই অঞ্চল। মস্কো থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল পর্যন্ত ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ে এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রসারিত হয়েছে। সাইবেরিয়া পৃথিবীর অন্যতম শীতলতম স্থান। সারাবছর এখানে বরফের চাদর বিছিয়ে থাকে।

১১.২২ অসীমা কেন পুরন্দরকে ফেরিওয়ালা বলে ব্যঙ্গ করেছে?**

 উত্তর: ফেরিওয়ালার কাজ হল বিভিন্ন জিনিসপত্র ফেরি করে বেড়ানো। বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরী তেমন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মেঘ ফেরি করে বেড়াতেন। আলাস্কার লেক শ্রেভারের জলকে শুকিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন ৯৫০০০ কিউবিক মাইল আয়তনের এক বিশাল জলভরা মেঘ তৈরি করে তা বিভিন্ন দেশে ফেরি করতে। পুরন্দর বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্টকে মেঘ বিক্রি করার কথা বলেছিল বলে অসীমা ফেরিওয়ালা বলেছিল।

১১.২৩ অ্যালয় কী?***

উত্তর: অ্যালয় এক ধরনের ধাতু-সংকর, যা জলে দিলে উত্তপ্ত হয় এবং জলকে বাষ্পে পরিণত করে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রণীত ‘মেঘ-চোর’ গল্পে পুরন্দর চৌধুরীর নির্মিত অ্যালয় বা শংকর ধাতুটি মার্কারির সঙ্গে আরও ১১টি ধাতু মিশিয়ে তৈরি করা। এই ধাতুর বিশেষত্ব হল জলের ছোঁয়া লাগলেই তা গরম হতে শুরু করে।

১১.২৪ পুরন্দরের তৈরি গোলকটিতে আছে এমন কোন ধাতুর নাম গল্পে পেলে।

উত্তর: বিশ্ববিখ্যাত বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দরের তৈরি গোলকটিতে যে ধাতু আছে তা হল মার্কারি বা পারদ।

১১.২৫ পুরন্দরের তৈরি গোলকটি এয়ারটাইট রাখতে হয় কেন?

 উত্তর: বিশ্ব বিখ্যাত বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দরের তৈরি গোলকটি জল পেলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ফলে বায়ুমন্ডল থেকে জল শোষণ করে গোলকটি উত্তপ্ত হয়ে যাবে বলে সেটিকে এয়ারটাইট করে রাখতে হয়।

 ১১.২৭ অসীমার প্রকৃত পরিচয় কী?

উত্তর: অসীমার প্রকৃত পরিচয় হল তিনি বিজ্ঞানী কারপভের মেয়ে যদিও নিজেকে প্রয়োজনে পুরন্দর চৌধুরির ভাইঝি বলে পরিচয় দিয়েছিলেন।

Long Question Answer

১১.১৪ কেন বলা হয়েছে অসীমা ‘ভূগোলও বেশ ভালো জানে’?

উত্তর: ‘মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত গল্পে দেখা যায় রকেট থেকে নীচের । দিকে তাকিয়ে তুষারাবৃত একটি পাহাড় দেখেছিলেন অসীমা। সেই

পাহাড়ের দিকে তাকিয়েই তিনি বলে দিয়েছিলেন যে-

ক।। পাহাড়টি হল মাউন্ট চেম্বারলিন।

খ।। এটি আলাস্কায় অবস্থিত।

গ।। পাহাড়ের পাশের যে হ্রদটি কুয়াশায় আবৃত, তার নাম লেক

শ্রেভার।

এভাবে বিভিন্ন পাহাড়-পর্বতের নাম অসীমা বলতে পেরেছিলেন বলে বলা হয়েছে অসীমা ‘ভূগোলও বেশ ভালো জানে’।

১১.২৬ ‘প্রকৃতিকে ধ্বংস করা একটা অপরাধ’-কে, কাকে, কখন

বলেছে?***

উত্তর: উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন, বিজ্ঞানী কারপভের যেয়ে অসীমা।

• বিশ্ববিখ্যাত বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরিকে উদ্দেশ্য করে এই বক্তব্য।

• কথা প্রসঙ্গে পুরন্দর চৌধুরী বলেছিলেন যে, তাঁর তৈরি ধাতব বলটি অনায়াসে লেক শ্রেভারের জলকে সম্পূর্ণ শুকিয়ে ফেলতে পারবে। এমনকি কৃত্রিমভাবে ৯৫০০০ কিউবিক মাইল আয়তনে এক বিশাল জলভরা মেঘ তৈরি করতে তিনি সক্ষম। পুরন্দর চৌধুরীকে এই প্রকৃতি বিনাশী ভয়ংকর পরীক্ষা থেকে বিরত থাকতে বলেছিলেন অসীমা।

অসীমা চেয়েছিলেন প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় থাকুক। এজন্যে অসীমা জানিয়েছিলেন যে, ‘প্রকৃতিকে ধ্বংস করা একটা অপরাধ।’

১১.২৮ “তাহলে আমরা গুঁড়ো হয়ে যাব”- কে, কাকে, কেন বলেছে?***

উত্তর: প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন অসীমা।

• বিশ্ববিখ্যাত বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দরকে বলেছেন।

• প্রখ্যাত বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি বৃষ্টি নিয়ে প্রতিনিয়ত নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন তাঁর কীর্তি জগতে প্রচারিত হোক। এজন্যে অসীমার হাজারতর অনুনয়-বিনয় তিনি অমান্য করেছিলেন। নিজের সৃষ্টি গোলাকৃতি ধাতব বলটিকে রকেট থেকে বাইরে ফেলতে চেয়েছিলেন।

এজন্যে রকেটের একটি অংশ তিনি খুলতে চেয়েছিলেন। এই দৃশ্য দেখে উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছিলেন। অসীমা তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন-

ওটা খুলবেন না। তাহলে আমরা গুঁড়ো হয়ে যাব।

একথা বলার কারণ তাঁরা তখন মহাশূন্যে ছিলেন। তাই রকেটের কোনো একটি অংশ খুলে দিলে মানবদেহের রক্ত ও অন্যান্য চাপ পরিবেশের থেকে অনেক বেশি হবে। সেই চাপ তারা সহ্য করতে পারবেন না। একেবারে গুঁড়িয়ে যাবেন। সেই আশঙ্কা থেকে অসীমার এই উক্তি।

১১.২৯ অসীমার বিশেষ আগ্রহ কোন বিষয়ে?

উত্তর: কম্পিউটারে অসীমার বিশেষ আগ্রহ।

১১.৩০ “পৃথিবীর জল যেমন আছে তেমনই থাকুক!”- কে, কখন এ কথা বলেছে?

উত্তর: প্রশ্নে উদ্ধৃত এই উক্তিটি করেছেন অসীমা।

• বায়ুমণ্ডলের অনেক উপরে উঠেছিল অসীমাদের রকেট। সেখানে

পুরন্দরের হাত থেকে ধাতব বলটি নিয়ে রকেটের সকেটে ফেলে দিয়েছিলেন অসীমা। এর উদ্দেশ্য ছিল বলটি যেন মহাশূন্যে বেরিয়ে যায়। এভাবে পুরন্দরকে জব্দ করতে অসীমা এই কাজটি করেছিলেন। তিনি চাননি অ্যালয়টিকে দিয়ে শ্রেভার লেক শুকিয়ে ফেলুন পুরন্দর চৌধুরি। তাই পৃথিবীর মঙ্গলের উদ্দেশ্যে তাঁর এই বক্তব্য।

১২. আট-দশটি বাক্যে উত্তর দাও :

১২.১ এই গল্পে কাকে কেন ‘মেঘ-চোর’ বলা হয়েছে? তাঁর মেঘ চুরির কৌশলটি সংক্ষেপে লেখো।

উত্তর: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রণীত ‘মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত গল্পে পুরন্দর চৌধুরিকে মেঘ চোর বলা হয়েছে। কারণ সাইবেরিয়া থেকে মেঘ চুরি করে এনে সাহারাতে একমাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছেন। এই জন্যে আমেরিকার বোস্টন শহরে আয়োজিত আবহাওয়া বিজ্ঞান বিষয়ক একটি আলোচনা চক্রে পুরন্দরকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন কারপভ।

• পুরন্দর চৌধুরি মার্কারির সঙ্গে এগারোটি ধাতু মিশিয়ে একটি অ্যালয় তৈরি করেছিলেন। সেই অ্যালয় জল পেলে উত্তপ্ত হতে শুরু করে এবং এতই দ্রুত গরম হয় যে, লেক শ্রেভারের জলকে পাঁচ মিনিটে বাষ্পে পরিণত করতে পারে। তারপর সেই বাষ্প থেকে মেঘ সৃষ্টি হয় এবং সেই মেঘকে চৌধুরি সাহেব যে দেশে ইচ্ছে পাঠাতে পারেন এবং বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারেন।

এইভাবেই এক দেশের মেঘকে অন্য দেশে চৌধুরি সাহেব চুরি করে নিয়ে যেতে পারেন। লক্ষণীয় যে, পুরন্দর চৌধুরি চেয়েছিলেন ধাতব বল দিয়ে আলাস্কার লেক শুকিয়ে ফেলতে। বরফে আবৃত সেই হ্রদে ধাতব বলটি পতনের সঙ্গে সঙ্গে ৯৫০০০ কিউবিক আয়তনের এক বিরাট জলভরা মেঘ সৃষ্টি করবে। এটিই হল পুরন্দর চৌধুরির মেঘ চুরির কৌশল।

১২.২ ‘বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে অমিত বল, কিন্তু অযোগ্য মানুষের হাতে সেই ক্ষমতা হয়ে উঠতে পারে বিপজ্জনক এবং প্রাণঘাতী’-পঠিত গল্প অবলম্বনে উপরের উদ্ধৃতিটি বিশ্লেষণ করো।***

উত্তর: প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন ‘মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত অসাধারণ একটি কল্পবিজ্ঞানের গল্প। এই গল্পে লেখক মূলত তাঁর প্রকৃতি প্রেম সম্পর্কিত বক্তব্যকেই বেশ মজা করে পরিবেশন করেছেন।

এই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষ। মানুষ তার বুদ্ধির মাধ্যমে শক্তিশালী প্রাণী তথা প্রকৃতিকেও নিজের বশে আনতে পেরেছে। যদিও তা বিজ্ঞানের দান। কিন্তু সকলে এই শক্তির সঠিক ব্যবহার করে না। এই শক্তিকে মানবজীবনের উন্নতিতে কাজে লাগায় না। বরঞ্চ মানব সমাজ তথা সৃষ্টিকে ধ্বংসের তান্ডবলীলায় মত্ত হয়ে ওঠে। পৃথিবী ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। নেমে আসে মহা বিপর্যয়।

‘মেঘ-চোর’ গল্পের পুরন্দর চৌধুরি এমনই একজন চরিত্র; যার কাছে রয়েছে বিজ্ঞানের অসীম দান, মেঘ তৈরি ও বৃষ্টি ঘটানোর ক্ষমতা। কিন্তু তার মনে দানা বেঁধেছিল কারপভের প্রতি দুর্জয় হিংসা। ফলে প্রকৃতিকে ধ্বংস করে প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে উঠেছিল তাঁর মনে; যেটা বাঞ্ছনীয় নয়। তাই এমন মানুষের হাতে যদি বিজ্ঞানের ক্ষমতা এসে পড়ে তবে তো তা বিপজ্জনক ও প্রাণঘাতীর কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এই গল্পের মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন, বিজ্ঞানকে নিজের ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে শেষপর্যন্ত প্রকৃতির ভারসাম্যকেই নষ্ট করা হয়। এরফলে কোথায় দেখা যায় অতিবৃষ্টি; কোথাও আবার অনাবৃষ্টি। লেখক বোঝাতে চেয়েছেন যে, বিজ্ঞানের

প্রভূত শক্তি ক্ষমতা লোভী ব্যক্তির হাতে পড়লে তা হয়ে ওঠে বিপজ্জনক।

 ১২.৩ পুরন্দর চৌধুরির চরিত্রটি তোমার কেমন বলে মনে

হয়েছে-বিশ্লেষণ করো।***

উত্তর: বাংলা সাহিত্যে অবিসংবাদিত লেখক হলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর অসাধারণ একটি চরিত্র হলেন পুরন্দর চৌধুরি। তিনি একজন প্রতিভাধর বিজ্ঞানী। তাঁর চরিত্র বিশ্লেষণ করলে কতকগুলি বৈশিষ্ট্য উঠে আসে। যেমন-

১. বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী: পুরন্দর চৌধুরি অত্যন্ত মেধাবী। বিশ্বজোড়া তাঁর খ্যাতি। তিনি নিজের ইচ্ছেমতো মেঘ সৃষ্টি করতে পারেন এবং ইচ্ছেমতো মেঘ উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে বৃষ্টি ঘটাতে পারেন বিভিন্ন দেশে।

২. অহংকারী ব্যক্তি: কিন্তু তিনি খুব অহংকারী ব্যক্তি। তিনি বিজ্ঞানের অপরিমেয় শক্তিকে নিজের ইচ্ছামতো কাজে লাগিয়েছিলেন। তাই দেখা যায় সাইবেরিয়া থেকে মেঘ চুরি করে এনে সাহারায়। একমাসে ১০০ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছিলেন।

৩. প্রতিশোধস্পৃহা: পুরন্দরের মধ্যে রয়েছে প্রতিশোধস্পৃহা। তিনি চান মানুষ তাঁর কাছে বৃষ্টি ভিক্ষা করুক। তিনি নিজেকে ভগবানের পরবর্তী স্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।

৪. সংবেদনশীল: পুরন্দর জানেন, জলভরা মেঘ যদি কোনোক্রমে

কলকাতায় ভেঙে পড়ে তাহলে কলকাতার অধিকাংশ বাড়িঘর বিপর্যস্ত হবে। পুরন্দর অবশ্য তা চান না। কেননা, তিনি জানিয়েছেন, ‘মানুষের ক্ষতি করতেও চাই না।’ তবে যদি ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা থাকে, তবে তিনি কী করবেন, সেই আলোচনায় বলেন-

কিন্তু সেরকম অবস্থা আমি হতেই দেবো না। মেঘটা এদিক-ওদিক গেলেই আমি ফাটিয়ে দেবো কোনো নির্জন জায়গায়।

৫. খ্যাতিমান পুরুষ: পুরন্দর চৌধুরী বেশ খ্যাতিমান পুরুষ। সারা পৃথিবীতে তাঁর নামডাক হয়েছে। তিনি নিজেও চান সারা বিশ্ব তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকুক। অর্থ, ক্ষমতা, যশ ও প্রতিপত্তির জন্যে তিনি আকুল। তাই যে কোনো মূল্যে বিজ্ঞানকে হাতের মুঠোয় আনতে চেয়েছিলেন পুরন্দর চৌধুরি।

১২.৪ গল্পটি অবলম্বনে অসীমা চরিত্রটি সম্বন্ধে তোমার মতামত জানাও।***

উত্তর: বর্তমান কথাসাহিত্যে যাঁদের নির্মাণ বৈচিত্র্য বিস্ময়ের উদ্রেক করে, তাঁদের অন্যতম হলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর লেখা একটি কল্পবিজ্ঞার কাহিনি হল ‘মেঘ-চোর’ গল্পটি। এ গল্পে অন্যতম উল্লেখযোগ্য চরিত্র অসীমা। এই চরিত্র বিশ্লেষণে যে বৈশিষ্ট্যগুলি উঠে আসে, তা হল এমন-

১. সুশিক্ষিতা: অসীমা একজন সুশিক্ষিতা ও সুন্দরী মহিলা। তাঁর বয়স ২৭। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছেন। অত্যন্ত শান্ত ও বুদ্ধিমতী। ভূগোল সম্পর্কেও যথেষ্ট জানেন। কম্পিউটারে তাঁর দখল প্রশ্নাতীত।

২. উপস্থিত বুদ্ধি: অসীমার উপস্থিত বুদ্ধি প্রবল। তাই আগে থেকেই তিনি রকেটে এমন প্রোগ্রামিং করে রেখেছিলেন যাতে রকেটটি বায়ুমন্ডলের উপরে উঠে যেতে পারে। অসীমা কখনও চাননি বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগ ঘটাতে।

৩. সুকৌশলী: বোস্টন শহরে আবহাওয়া সম্পর্কিত একটি আলোচনা চক্রে পুরন্দর চৌধুরির সঙ্গে অসীমার আলাপ হয়। অসীমা সুকৌশলী। তাই তিনি পুরন্দর চৌধুরির সঙ্গে আলাপের সময় নিজেকে ভাইঝি বলে পরিচয় দেন। প্রকৃত পক্ষে তিনি ছিলেন বিজ্ঞানী কারপভের

কন্যা।

৪. বুদ্ধিমতী: একটা সময়ে অসীমা নিজের বুদ্ধির কৌশলে

পুরন্দর চৌধুরিকে নিয়ন্ত্রণে আনেন। পুরন্দরের বিশ্বাস অর্জন করে তাঁর সমস্ত গবেষণার তথ্য হস্তগত করেন। তিনি জানতে পারেন, এই বৃষ্টি বিজ্ঞানী কারপভের উপরে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যে মাউন্ট চেম্বারলিন পাহাড়ের পাশে বরফে আবৃত লেকের জল শুকিয়ে দেবেন পুরন্দরের এই ধ্বংসাত্মক কাজ যাতে বাস্তবায়িত না হয় তার ব্যবস্থা করেন অসীমা।

৫. নীতিবোধ: নীতিবোধের কারণেই অসীমা চেয়েছিলেন,

একজন বিজ্ঞানী হয়ে উঠুন মানব দরদী ও সত্যনিষ্ঠ। এরজন্যে তিনি নানা কৌশল আয়ত্ত করেছিলেন। এককথায় অসীমা এক অনবদ্য চরিত্র।

 ১২.৫ এই গল্পে পুরন্দর এবং অসীমা আসলে দুটি পৃথক এবং পরস্পর বিরোধী বিজ্ঞান চেতনার প্রতিনিধিত্ব করেছে।কে, কোন্ ধারণার প্রতিনিধিত্ব করেছেন জানিয়ে তুমি এঁদের মধ্যে কাকে কেন সমর্থন করো বিশদে জানাও।***

উত্তর: উত্তর-আধুনিক বাংলা কথাসাহিত্যে জনপ্রিয় লেখক হলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর ‘মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত গল্পে বিজ্ঞানের ব্যবহার ও অপব্যবহার নিয়ে দুটি চরিত্র উপস্থিত হয়েছেন। এঁরা হলেন-

১. বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি

২. বিজ্ঞানী কারপভের কন্যা অসীমা

পুরন্দর প্রতিনিধিত্ব করেছেন, সেই শ্রেণির যারা মনে করেন বিজ্ঞানের শক্তির জোরে পৃথিবীতে সবকিছু করা সম্ভব। পুরন্দর মানুষ হিসাবে অত্যন্ত ক্ষমতালোভী। তিনি চেয়েছিলেন সমগ্র বিশ্বে তাঁর খ্যাতি ও প্রভুত্ব বিস্তৃত হোক। বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নিজের নামকে বিশ্বময় প্রসারিত করতে তিনি একের পর এক বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় দেখাতে চেয়েছেন, এ ধরনের বিজ্ঞাননিষ্ঠ মানুষ অনেক সময় সমস্ত মানব সমাজের কাছে ভয়ংকর হয়ে ওঠে। তার প্রমাণ স্বরূপ লেখক দেখিয়েছেন-

১. সাইবেরিয়া থেকে মেঘ চুরি করে এনে পুরন্দর চৌধুরি অনুর্বর ও উষর সাহারা মরুভূমিতে বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছেন।

২. মার্কারির সঙ্গে এগারোটি ধাতু মিশিয়ে তিনি জলশোষণকারী অ্যালয় তৈরি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন-

দশ হাজার বছর ধরে লেকটা নিজে-নিজে শুকোতই- অতদিন অপেক্ষা না করে এখনই এটাকে শুকিয়ে ফেললে কেমন হয়?

৩. তিনি আলাস্কার প্রায় বরফে নিমজ্জিত জলাশয়কে শুকিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

পুরন্দর চৌধুরী নিঃসন্দেহে মেধাবী বৈজ্ঞানিক। কিন্তু সুনীল

গঙ্গোপাধ্যায় বলতে চেয়েছেন, মেধাবী হলেই তিনি মানবিক হবেন

তা নয়। ফলে পুরন্দরের স্বার্থান্বেষী কাজকর্ম পরিবেশে ভারসাম্য নষ্ট করার পক্ষে যথেষ্ট ছিল। আসলে তিনি স্বার্থপরের মতো শুধু প্রতিপত্তি আর প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিলেন। • অসীমা প্রতিনিধিত্ব করেছেন সেই শ্রেণির, যাঁরা মনে করেন প্রকৃতির সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে কাজ করা উচিত। না হলে ঘটবে

মহা বিপর্যয়। আসলে অসীমা হলেন বিজ্ঞানের শুভঙ্করী শ্রেণির প্রতিনিধি। পুরন্দরের মেধাকে তিনি অস্বীকার করেননি। কিন্তু তিনি জানেন-

১. লেক থেকে জল শুকিয়ে গেলে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হবে।

২. বিশাল আয়তনে জলভরা মেঘ যদি কলকাতার মতো কোনো শহরে আছড়ে পড়ে, তাহলে সমূহ বিপদ হবে।

৩. অসীমার মনে হয়েছিল, পুরন্দরের পরীক্ষা আসলে বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগের চূড়ান্ত পরিণতি।

৪. এজন্যে কম্পিউটারের সাহায্যে রকেটকে তিনি বায়ুমণ্ডলের বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন। যেখানে অ্যালয়টার সমস্ত শক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

আসলে অসীমা মানুষের কল্যাণের কথা ভেবেছিলেন। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগামী পৃথিবীর শান্তি ও স্বস্তির পথ করে দিয়েছেন অসীমা।

• অবশ্যই আমি অসীমার ভাবনার সমর্থক। কারণ প্রকৃতিকে নষ্ট করে কখনই সৃষ্টিকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হলে তা পূর্বের স্থানে ফিরিয়ে আনা সহজ নয়। তাই প্রকৃতির ভারসাম্য যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ রাখা উচিত। অসীমা এদিক থেকে শুভ শক্তির বার্তাবাহক। আমি এজন্যে তাঁর চিন্তা-চেতনা ও মানব কল্যাণকারী কর্মপ্রয়াসকে সাধুবাদ জানাই।

১২.৬ গল্পটিতে যতগুলো স্থানের নাম আছে তার একটি তালিকা বানিয়ে প্রত্যেকটি স্থান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো। স্থানের নাম পরিচয়

উত্তরঃ বোস্টন হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলের ম্যাসাটুসেটস নামাঙ্কিত অঙ্গরাজ্যের রাজধানী। এটি প্রধান শিল্প বাণিজ্য কেন্দ্র। মেট্রোপলিটান সিটি হল এই বোস্টন। এর লোকসংখ্যা ৪০ লক্ষের উপরে। ব্যাঙ্কিং শিল্প, ব্যাবসা, হেল্থ সার্ভিস ইত্যাদি আদর্শ কেন্দ্র হলো বোস্টন।

২. সাহারা:

সাহারা হলো পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মরুভূমি। আফ্রিকাতে অবস্থিত। আয়তন ৯,৪০০,০০০ বর্গ কি.মি.। আলজিরিয়া, মিশর, মালি, সুদান, তিউনিশিয়া সমেত সর্বমোট ১২টি দেশ জুড়ে এই মরুভূমির প্রসার ঘটেছে। এই মরুভূমির অধিকাংশ মানুষ বোহেমিয়ান বা যাযাবর। বছরের প্রায় অধিকাংশ সময় এখানে প্রচণ্ড গরম থাকে।

৩. আলাস্কা:

আমেরিকার উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম প্রদেশ হল আলাস্কা। এর উত্তরে সুমেরু মহাসাগর। পূর্বে কানাডা এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগর। এই অঙ্গ রাজ্যের রাজধানীর নাম জুনিউ। আলাস্কা মূলত পর্বতে ঘেরা। এর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ হল মাউন্ট ম্যাকিনলে। এর প্রধান নদী ইউকোন। আলাস্কার বিশেষত্ব হল এই এখানে সোনা সহজলভ্য। এছাড়া প্রচুর প্রাকৃতিক গ্যাসও পাওয়া যায়।

৪. সাইবেরিয়া: রাশিয়ার উত্তর অংশ। উত্তর এশিয়ার উড়াল পর্বতমালা থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত সাইবেরিয়ার বিস্তৃতি চোখে পড়ার মতো। এখানে সারাবছর তাপমাত্রা শূন্যের নীচে থাকে। পৃথিবীর শীতলতম স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম। বছরের বারোমাস পুরু চাদরের মতো

 ৫. আমেরিকা:

এখানে বরফ জমে থাকে। সাইবেরিয়ার উল্লেখযোগ্য শহর হল অমস্ক, ক্রাশনো, ইয়ারস্ক ইত্যাদি।

পৃথিবীর উন্নততম মহাদেশ হল আমেরিকা। এর মোট আয়তন প্রায় ৪২,৫৪৯,০০০ বর্গকিলোমিটার। এই আয়তন এতটাই বিস্তৃত যে সারা পৃথিবীর স্থলভাগের ২৮.৪ শতাংশ। মোট ৩৫টি দেশ নিয়ে আমেরিকা গঠিত। ১৪৯২ সালে কলম্বাস সমুদ্র অভিযানের সময় ইউরোপ থেকে আমেরিকায় আসার জলপথ আবিষ্কার করেন। এই মহাদেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশগুলি হল-

১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

২. কানাডা

৩. আর্জেন্টিনা

৪. মেক্সিকো

৫. ব্রাজিল

৬. চিলি

এই মহাদেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। ভারতবর্ষ ও চিনের মতো এত লোকসংখ্যা এখানে নেই। ফলে খাদ্যের কোনো অভাব নেই। উপরন্তু রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ তেল ও সোনা-রূপায় এই মহাদেশ সমৃদ্ধ। ‘মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত গল্পে যে আমেরিকার কথা বলেছেন লেখক, তা হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

৬. মাউন্ট

চেম্বারলিন:

পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গগুলির মধ্যে অন্যতম হল মাউন্ট চেম্বারলিন। এটি আলাস্কার ব্রুকস পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। এই শৃঙ্গের উচ্চতা ২৭৪৯ মিটার। ১৯৬৩ সালে এই শৃঙ্গ জয় করেন জর্জ জি বার্নস, টেনিস বার্জস ও গ্রাহাম স্টিফেনসন।

৭. গ্রিস:

গ্রিস হল ইউরোপ মহাদেশের একটি বৃহৎ রাষ্ট্র। এই দেশ একসময় পৃথিবীর মধ্যে খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার পীঠস্থান ছিল। গ্রিসের এথেন্স ও স্পার্টার নাম একসময় সবার মুখে মুখে উচ্চারিত হতো। স্পার্টা ছিল শক্তিতে অগ্রণী; আর এথেন্স ছিল শিল্পে অগ্রণী। এই এথেন্স গ্রিসের রাজধানী। গ্রিকদের পূর্বপুরুষেরাই একসময় নির্মাণ করেছিলেন ক্রমান্বয়ে তিনটি সাম্রাজ্য। যথা-

১. প্রাচীন গ্রিক সাম্রাজ্য

২. অটোমান সাম্রাজ্য

৫. কলকাতা

৩. বাইজানটিয়ান সাম্রাজ্য

: ভারতবর্ষে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী হল কলকাতা। বঙ্গোপসাগর থেকে ১৩০ কিলোমিটার উত্তরে হুগলি নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত বৃহত্তর নগর ও বন্দর হল কলকাতা। ১৭৭৩ থেকে ১৯১১ পর্যন্ত এটি ভারতবর্ষের রাজধানী ছিল। ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যকুঠি হিসেবে এই শহরের জন্ম হয়। এই শহরের লোকসংখ্যা প্রচুর, জনসমাগমও প্রচুর। শিল্প, বাণিজ্য, ব্যাবসা, প্রশাসনিক সুযোগ সুবিধা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবই কলকাতাকে কেন্দ্র করে প্রসারিত হয়েছে।

১. “আমি হব আকাশের দেবতা ইন্দ্র।”—উক্তিটি কার? এই উক্তির কারণ কী?

উত্তর: উদ্ধৃত প্রশ্নটি গৃহীত হয়েছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মেঘ-চোর’ নামাঙ্কিত গল্প থেকে। এখানে এই উক্তিটি করেছেন বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি।

• দেবরাজ ইন্দ্রকে বলা হয় তিনি মেঘের দেবতা। তিনি বজ্রেরও দেবতা। পুরন্দর চৌধুরী বিজ্ঞানের অমিত বলকে কাজে লাগিয়ে মেঘ-বৃষ্টির খেলাকে নিজের হস্তগত করতে চেয়েছেন। শ্রেভার লেকের জল শুকিয়ে তাকে তিনি মেঘ করে দিতে চান। সেই মেঘকে ইচ্ছে মতো উড়িয়ে নিয়ে বেড়াতে পারেন এমন একটি সুবৃহৎ জল ভারাক্রান্ত মেঘ তাঁর হস্তগত হলে তিনি ইন্দ্রের মতো ক্ষমতাশালী হয়ে উঠবেন। ইন্দ্র যেমন জলদাতা, তেমনি তিনিও বিশ্বময় যেখানে খুশি জল প্রদান করতে পারবেন তাই এই উক্তি।

২. “আগে থেকে প্রোগ্রাম করে রেখেছিলাম।”-কে আগে থেকে কী প্রোগ্রাম করে রেখেছিলেন? কেন তিনি এই কর্মটি করেছিলেন, তা লেখো ****

উত্তর: ইতিহাসের গবেষক অসীমা আগে থেকে এই প্রোগ্রাম করেছিলেন, যাতে পুরন্দর চৌধুরির রকেট বায়ুমণ্ডল ছাড়িয়ে আরও উপরে উঠে যায়।

• অসীমা বুঝেছিলেন, পুরন্দর চৌধুরির মতো কিছু স্বার্থসর্বস্ব বিজ্ঞানী রয়েছেন। এঁরা বিজ্ঞানকে নিজের ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রিত করেন, এর ফলে পৃথিবীর সর্বনাশ সাধিত হয়। ক্ষতি হয় পরিবেশের ভারসাম্য। বিপর্যস্ত হন পৃথিবীর মানুষ। অসীমা জানতেন বিভিন্ন ধাতুর সংমিশ্রণে নির্মিত অ্যালয়টি বায়ুমণ্ডলের বাইরে গেলে অকেজো হয়ে পড়বে। তাই তিনি কম্পিউটারে প্রোগ্রামিং করে রেখেছিলেন রকেট যেন বায়ুমণ্ডলের বাইরে চলে যায়।