WBBSE Class 7 Sahityamela Chapter 27 Solution | Bengali Medium

Class 7 Chapter 27 Solution

স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী

Very Short Question Answer

২.৮ পুলিশ কোন্ অভিযোগে দু’কড়িবালা দেবীকে গ্রেপ্তার করেন? বিচারে তাঁর কী শাস্তি হয়?

উত্তর: অস্ত্র রাখার অপরাধে দু’কড়িবালা দেবীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

• বিচারে তাঁর দু’বছর জেল হয়।

১.১ ননীবালা দেবী বিপ্লবের দীক্ষা পেয়েছিলেন (অমরেন্দ্র চ্যাটার্জী/যদুগোপাল মুখার্জী/ভোলানাথ চ্যাটার্জী)-এর কাছ থেকে।

উত্তর: অমরেন্দ্র চ্যাটার্জী।

১.২ ননীবালা দেবী (রিষড়াতে/চুচুঁড়াতে/চন্দননগরে) অমর চ্যাটার্জী ও তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে আশ্রয় দেন।

উত্তর: রিষড়াতে।

১.৩ চন্দননগর থেকে পালিয়ে ননীবালা দেবী যান (পেশোয়ারে/কাশীতে/রিষড়াতে)

উত্তর: পেশোয়ারে।

১.৪ কাশীর ডেপুটি পুলিশ সুপার (জিতেন ব্যানার্জী/হিতেন ব্যানার্জী/যতীন ব্যানার্জী) ননীবালা দেবীকে জেরা করতেন।

উত্তর: জিতেন ব্যানার্জী।

১.৫ পুলিশ সুপার গোল্ডির কাছে ননীবালা দেবী (সারদামণি দেবী/ভগিনী নিবেদিতা/দুকড়িবালা দেবী)-র কাছে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

উত্তর: সারদামণি দেবী।

১.৬ দুকড়িবালা দেবী বিপ্লবের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন (বোনপো/ভাইপো/ভাই) নিবারণ ঘটকের কাছে।

উত্তর: বোনপো।

১.৭ বিপ্লবী হরিদাস দত্ত (গাড়োয়ান/পুলিশ/খালাসির) ছদ্মবেশে পিস্তল চুরি করেন।

উত্তর: গাড়োয়ান।

২.১ বিপ্লবী রামচন্দ্র মজুমদারের ‘মসার’ (পিস্তল)-এর খোঁজ নেওয়ার জন্য ননীবালা দেবী কী কৌশল অবলম্বন করেছিলেন?

উত্তর: রামচন্দ্র মজুমদারের স্ত্রী সেজে তাঁর সঙ্গে প্রেসিডেন্সি জেলে দেখা করে পিস্তলের খোঁজ নিয়েছিলেন ননীবালা দেবী।

Short Question Answer

২.১ বিপ্লবী রামচন্দ্র মজুমদারের ‘মসার’ (পিস্তল)-এর খোঁজ নেওয়ার জন্য ননীবালা দেবী কী কৌশল অবলম্বন করেছিলেন?

উত্তর: রামচন্দ্র মজুমদারের স্ত্রী সেজে তাঁর সঙ্গে প্রেসিডেন্সি জেলে দেখা করে পিস্তলের খোঁজ নিয়েছিলেন ননীবালা দেবী।

২.২ ‘এঁদের সকলেরই মাথায় অনেক হাজার টাকার হুলিয়া ছিল’-‘হুলিয়া’ শব্দটির অর্থ কী? এঁরা কারা? এঁদের আশ্রয়দাত্রী কে ছিলেন? হুলিয়া থাকার জন্য এঁরা কীভাবে চলাফেরা করতেন?***

উত্তর: ‘হুলিয়া’ শব্দের অর্থ হল আসামীকে গ্রেপ্তারের জন্য তার মাথার দাম হিসাবে ঘোষিত অর্থমূল্য সহ বিজ্ঞাপন।

> ‘এরা হলেন বিপ্লবী যদুগোপাল মুখার্জী, অমর চ্যাটার্জী, অতুল ঘোষ, ভোলানাথ চ্যাটার্জী, নলিনীকান্ত কর, বিনয়ভূষণ দত্ত ও বিজয় চক্রবর্তী। এঁদের আশ্রয়দাত্রী ছিলেন ননীবালা দেবী।

> হুলিয়া থাকার জন্য এঁরা সারাদিন দরজা বন্ধকরে ঘরে থাকতেন, এবং সুবিধামতো শুধু রাতে বেরিয়ে পড়তেন।

২.৩ “ননীবালা দেবী পলাতক হলেন” ননীবালা দেবী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন কেন? তিনি পালিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন? সেখানে তিনি কোন অসুখে আক্রান্ত হন?***

উত্তর: পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য তৎপর হয়ে উঠলে, তিনি পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তিনি পালিয়ে পেশোয়ারে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কলেরা রোগে আক্রান্ত হলেন।

২.৫ কাশীর জেলের ‘পানিশমেন্ট সেল’-টির অবস্থা কেমন ছিল? সেখানে ননীবালা দেবীর ওপর কী ধরনের অত্যাচার করা হত?***

উত্তর: ‘পানিশমেন্ট সেল’টি ছিল প্রাচীরের বাইরে মাটির নীচে। তাতে একটাই দরজা ছিল। কিন্তু আলোবাতাস প্রবেশ করবার জন্য কোনো জানালা দরজা ছিল না।

• সেখানে ননীবালা দেবীকে আধঘণ্টা করে দুই দিন বন্দি করে রাখা হয়েছিল। তৃতীয় দিন প্রায় ৪৫ মিনিট তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়। এই ভয়ঙ্কর পরিবেশে বন্দি অবস্থায় কখনো জ্ঞানশূন্য হতেন কখনও অর্ধমৃত হয়ে পড়ে থাকতেন।

৩.২ ননীবালা দেবী ও দুকড়িবালা দেবীর অনমনীয় বৈপ্লবিক মনোভাব কীভাবে পরবর্তীকালের বিপ্লবী নারীকে পথ দেখিয়েছে পাঠ্য-গদ্যাংশ অবলম্বনে তোমার মতামত জানাও।

উত্তর: ননীবালা দেবী ও দুকড়িবালা দেবী যেভাবে নিজেদের ভালো-মন্দের কথা না ভেবে দেশের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তা চিরকালই অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ভবিষ্যৎকালের নারীরা তাঁদের কাছ থেকে এই শিক্ষা পেয়েছে যে, শত অত্যাচার সহ্য করেও কীভাবে নিজের আদর্শে অটল থাকা যায়। তাঁদের তেজোদৃপ্ত সংগ্রামী মানসিকতা, অটল ধৈর্য পরবর্তীকালের নারী বিপ্লবীদের প্রেরণা দিয়েছে, উৎসাহ জুগিয়েছে।

১.১ ননীবালা দেবী কার কাছে বিপ্লবের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছিলেন?

উত্তর: বিপ্লবী অমরেন্দ্র চ্যাটার্জির কাছে বিপ্লবের মন্ত্রে দীক্ষা পেয়েছিলেন ননীবালা দেবী।

১.২ কাদের মাথায় অনেক টাকার হুলিয়া ছিল?

উত্তর: কমলা দাশগুপ্ত প্রণীত ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী’ নামাঙ্কিত গদ্যে বিপ্লবী নেতা যাদুগোপাল মুখার্জী, অমর চ্যাটার্জী, অতুল ঘোষ, ভোলানাথ চ্যাটার্জী, নলিনীকান্দ কর, বিনয়ভূষণ দত্ত ও বিজয় চক্রবর্তীর মাথায় অনেক হাজার টাকার হুলিয়া ছিল।

১.৩ “পুলিশ ক্রমে জানতে পারল”-পুলিশ ক্রমে কী জেনেছিল?

উত্তর: পুলিশ ক্রমে জানতে পেরেছিল ননীবালা দেবী রামবাবুর স্ত্রী নন।

১.৪ ননীবালা দেবীকে কাশীর জেল থেকে কোথায় আনা

হয়েছিল?

উত্তর: ননীবালা দেবীকে কাশীর জেল থেকে কলকাতা প্রেসিডেন্সী জেলে আনা হয়েছিল।

১.৫ ননীবালা দেবী কতদিন বন্দি জীবন কাটিয়েছিলেন?

উত্তর: ননীবালা দেবী দীর্ঘ দু’বছর বন্দি জীবন কাটিয়েছিলেন।

১.৬ “পুলিশ হয়রান হয়ে ফিরত”-পুলিশের হয়রান হয়ে ফেরার কারণ কী? **

উত্তর: বিপ্লবীরা সারাদিন ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকতেন। রাতে সুবিধামতো বেরিয়ে পড়তেন। নিষ্ঠুর শিকারীর মতো পুলিশ এসে হাজির হলেই বিপ্লবীরা নিমেষে অদৃশ্য হয়ে যেতেন। এরফলে পুলিশ হয়রান হয়ে ফিরে যেত।

১.৭ “পুলিশ তৎপর হয়ে উঠল তাঁকে গ্রেপ্তার করতে”-কাকে কেন গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর হয়ে উঠেছিল? *

উত্তর: ননীবালা দেবীকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর হয়ে উঠেছিল।

চন্দননগরের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি বাড়িতে তল্লাশি ও বিপ্লবীদের নিমেষে পলায়নের পর ননীবালা দেবীকে আর চন্দননগরে রাখা নিরাপদ বলে মনে হয়নি পুলিশের। তারা বুঝতে পেরেছিল বিপ্লবীদের গোপনে সাহায্য করে চলেছেন তিনি। তাই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে তৎপর হয়।

১.৮ কে, কাকে পিস্তল লুকিয়ে রাখতে দিয়েছিলেন?

উত্তর: কমলা দাশগুপ্ত প্রণীত ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী’ নামাঙ্কিত এই গদ্যে দেখা যায় বোনপো নিবারণ ঘটক তাঁর মাসিমা দুকড়িবালা দেবীকে রডা কোম্পানি থেকে চুরি করে আনা সাতটি মসার পিস্তল লুন্সির রাখতে দিয়েছিলেন।

১.৯ দুকড়িবালা দেবীর কতদিনের সাজা হয়েছিল?

উত্তর: বিপ্লবী দলের কর্মী কমলা দাশগুপ্ত প্রণীত ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী’ নামাঙ্কিত গদ্য থেকে জানা যায়, স্পেশাল ট্রাইবুনালের রায়ে দু’বছর সশ্রম কারাদন্ড হয়েছিল দুকড়িবালা দেবীর।

১.১০ দুকড়িবালা দেবী বোনপোর নাম কী ছিল?

উত্তর: বিপ্লবী দলের কর্মী কমলা দাশগুপ্ত প্রণীত ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে। নারী’ নামাঙ্কিত গদ্যে দুকড়িবালা দেবীর বোনপোর নাম ছিল নিবারণ। ঘটক।

Long Question Answer

২.৪ “ননীবালা দেবী সবই অস্বীকার করতেন”-ননীবালা দেবী কোন্ কথা অস্বীকার করতেন? তার ফলশ্রুতিই বা কী হত?***

উত্তর: বিপ্লবী দলের কর্মী কমলা দাশগুপ্ত প্রণীত ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী’ নামাঙ্কিত গদ্য থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি গৃহীত হয়েছে। ননীবালা দেবী গ্রেপ্তার হওয়ার পর কাশীর ডেপুটি পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট জিতেন ব্যানার্জীর জেরায় তিনি বিপ্লবীদের সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যকে অস্বীকার করেন। জানিয়েছিলেন, কোনো বিপ্লবীকে তিনি চেনেন না, কারও সম্পর্কে কোনো তথ্য জানেন না।

• বিপ্লবীদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য গোপন করার কারণে ননীবালা দেবীকে মাটির নিচে আলো-বাতাসহীন দুর্ভেদ্য অন্ধকার সেলে আটকে রাখা হয়। অর্ধমৃত অবস্থাতেও তাঁর মুখ থেকে একটি কথাও বের করতে পারেনি পুলিশ-প্রশাসন। সেলের তালা খুলে দেখা যায় তিনি জ্ঞানশূন্য অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন।


২.৬ “ননীবালা দেবী তখুনি দরখাস্ত লিখে দিলেন”- ননীবালা দেবী কাকে দরখাস্ত লিখে দিয়েছিলেন? দরখাস্তের বিষয়বস্তু কী ছিল? শেষপর্যন্ত সেই দরখাস্তের কী পরিণতি হয়েছিল?***

উত্তর: ননীবালা দেবী পুলিশের স্পেশাল সুপারিটেন্ডেন্ট গোল্ডিকে দরখাস্ত লিখে দিয়েছিলেন।

বাগবাজারে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের স্ত্রী সারদামণি দেবীর কাছে থাকবার প্রার্থনা ছিল দরখাস্তের বিষয়বস্তু। শেষপর্যন্ত গোল্ডি সেটা ছিঁড়ে দলা পাকিয়ে ছেঁড়া কাগজের টুকরিতে ফেলে দিয়েছিল। ২.৭ “এবার আমায় দলে নিয়ে নাও”-কে, কাকে এই অনুরোধ

জানিয়েছিলেন? তিনি কেন, কোন্ দলে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক ছিলেন?***

উত্তর: দুকড়িবালা দেবী, বোনপো নিবারণ ঘটককে এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

• তিনি দেশকে ইংরেজ শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য, বিপ্লবীদের দলে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক ছিলেন।

৩.১ স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী স্বনামধন্য খ্যাতনামা

বিপ্লবীদের তুলনায় ননীবালা দেবী ও দুকড়িবালা দেবীর অবদান সামান্য নয়-এ বিষয়ে তোমার মতামত জানাও।

উত্তর: সেই সময়কার আর পাঁচজন সাধারণ মহিলাদের থেকে অনেকাংশেই আলাদা ছিলেন ননীবালা দেবী ও দুকড়িবালা দেবী। ননীবালা দেবী নিজের কথা না ভেবে বিপ্লবীদের আশ্রয় দিতেন। নানাভাবে সাহায্য করতেন। বিধবা হয়ে অন্যের স্ত্রী সেজে জেল থেকে খবর আনার ঘটনাটিও দুঃসাহসিক। সেই সময়কার মেয়েদের কাছে এটা ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশ তাঁর উপর নানারকম অকথ্য অত্যাচার চালালেও তিনি বিপ্লবীদের সম্পর্কে একটি কথাও বলেননি।

দুকড়িবালা দেবী নিজের ঘর-সংসারের কথা ভুলে দেশের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। বিপ্লবীদের আশ্রয়দান, তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা ইত্যাদি নানাবিধ কাজ তিনি করতেন। জেলের মধ্যে অকথ্য অত্যাচার সহ্য করেও মুখ খোলেননি তিনি।

ইতিহাস হয়তো তাঁদের আত্মত্যাগকে ততোটা গুরুত্ব দেয়নি, যতোটা দেওয়া উচিত ছিল। অনেক স্বনামধন্য বিপ্লবীদের ভীড়ে হয়তো তাঁরা হারিয়ে যান। কিন্তু একথা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে তাঁদের চেয়ে এঁদের কৃতিত্ব, অবদান কোন অংশেই কম নয়।

৪. ননীবালা দেবী এবং দুকড়িবালা দেবী ছাড়া তুমি আর কোন্ কোন্ মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীর কথা জানো? তাঁদের অবদানের কথা শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছ থেকে জেনে নাও এবং খাতায় লেখো।

উত্তর: ননীবালা দেবী ও দুকড়িবালা দেবী ব্যতিত উল্লেখযোগ্য মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামী হলেন-প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ও মাতঙ্গিনী হাজরা।

• প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার: ভারতবর্ষের স্বাধীনতার ইতিহাস

যাঁদের ত্যাগদীপ্ত কাহিনিতে মুখর তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (৫.৫.১৯১১-২৪.৯.১৯৩২)। ইনি হলেন ভারতের প্রথম বিপ্লবী মহিলা শহিদ। ঢাকা বোর্ডের আই.এ. পরীক্ষায় মেয়েদের মধ্যে তিনি প্রথম হন। এই মেধাবী ছাত্রী পুনরায় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.এ পরীক্ষায় ডিস্টিংশন-সহ অসাধারণ ফল করেন। চট্টগ্রামের

নন্দনকানন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার পদ অলংকৃত করেন প্রীতিলতা। এই সময় চট্টগ্রাম বিপ্লবী দলের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ হয়। বিপ্লবী ক্রিয়াকর্মে তিনি নিয়মিত অর্থপ্রদান করেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার আক্রমণে অংশগ্রহণ করেন। এরপর প্রত্যক্ষভাবে বৈপ্লবিক কাজকর্মে যুক্ত হন। ক্রমে মাস্টারদা সূর্য সেনের সান্নিধ্যে

আসেন এবং তাঁর আত্মগোপন কেন্দ্র ধলঘাটে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব পান। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে মিলিটারির সঙ্গে সংঘর্ষে সরকার

পক্ষের ক্যাপ্টেন ক্যামেরুন এবং বিপ্লবী দলের নির্মল সেন ও অপূর্ব সেনের মৃত্যু হয়। সূর্য সেন ও প্রীতিলতা কোনোভাবে দুর্ভেদ্য জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশ করে মুক্তি পান। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্যে ব্রিটিশ সরকার বদ্ধপরিকর হন। পুলিশ তাঁকে ধরতে না পেরে চট্টগ্রামের অতি সাধারণ মানুষজনের ওপর অকথ্য অত্যাচার শুরু করেন। প্রীতিলতা এর প্রতিবাদে চারজন সঙ্গীকে নিয়ে ১৯৩২, সেপ্টেম্বর মাসের ২৪ তারিখে ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ করেন। ইংরেজদের হাতে ধরা পড়বেন না সেই প্রতিজ্ঞা থেকে পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে শহিদ হন বঙ্গের বীরাঙ্গনা প্রীতিলতা। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।

• মাতঙ্গিনী হাজরা ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে

অন্যতম এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন মাতঙ্গিনী হাজরা (১৭.১১.১৮৭০-২৯.৯.১৯৪২)। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ঠাকুরদাস মাইতি। স্বামী ত্রিলোচন হাজরা। মাত্র আঠারো বছর বয়সে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। গান্ধিজির আইন অমান্য আন্দোলনে তাঁর গভীর শ্রদ্ধা ছিল। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি ‘গান্ধি বুড়ি’ নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে মহকুমা কংগ্রেস সম্মেলনে এবং ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস মহিলা সম্মেলনে তিনি যোগদান করেন।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে তিনি সরাসরি যোগদান করেন। বিপুল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী নিয়ে তিনি থানা দখল করতে এগিয়ে এলে এই বাহিনীকে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে নির্বিচারে গুলি চালায়। মাতঙ্গিনী কোনো কিছু গ্রাহ্য না করে এগিয়ে গেলে তাঁকে নির্বিচারে গুলিবিদ্ধ করা হয়। ফলে স্বাধীনতা সংগ্রামের এই দীপ্ত কণ্ঠস্বর শেষ পর্যন্ত রুদ্ধ

হয়ে যায়। 

৫. ঘটনার ক্রম অনুসারে সাজিয়ে লেখো:

৫.১ চন্দননগরে যদুগোপাল মুখার্জী, অমর চ্যাটার্জী, অতুল ঘোষ প্রমুখ বিপ্লবীকে আশ্রয়দান ও সেখান থেকে পলায়ন করলেন ননীবালা দেবী।

৫.২ পেশোয়ার থেকে গ্রেপ্তার করে কাশীতে পাঠানো হল ননীবালা দেবীকে এবং আলো বাতাসহীন বদ্ধ ঘরে তালা বন্ধ করে শাস্তি দেওয়া হত।

৫.৩ বাগবাজারে মা সারদার কাছে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে দরখাস্ত লিখলেন ননীবালা দেবী।

৫.৪ আই. বি. পুলিশের স্পেশাল সুপারিনটেন্ডেন্ট গোল্ডি ননীবালা দেবীকে জেরা করতেন।

৫.৫ অমর চ্যাটার্জী ও তাঁর সহকর্মীকে রিষড়াতে দুই মাস আশ্রয় দিলেন ননীবালা দেবী।

৫.৬ পুলিশ সুপার গোল্ডি দরখাস্ত ছিঁড়ে ফেলায় ক্ষিপ্ত ননীবালা দেবী এক চড় বসিয়ে দিলেন গোল্ডির মুখে।

৫.৭ ভাইপো অমরেন্দ্র চ্যাটার্জীর কাছে বিপ্লবের দীক্ষা পেলেন ননীবালা দেবী।

৫.৮ রামচন্দ্র মজুমদারের স্ত্রী সেজে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ননীবালা দেবী সংগ্রহ করলেন পিস্তলের গুপ্ত খবর।

উত্তর: ৫.৭ ভাইপো অমরেন্দ্র চ্যাটার্জীর কাছে বিপ্লবের দীক্ষা পেলেন ননীবালা দেবী।

৫.৫ অমর চ্যাটার্জী ও তাঁর সবকর্মীকে রিষড়াতে দুই মাস আশ্রয় দিলেন ননীবালা দেবী।

৫.৮ রামচন্দ্র মজুমদারের স্ত্রী সেজে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ননীবালা দেবী সংগ্রহ করলেন পিস্তলের গুপ্ত খবর।

৫.১- চন্দননগরে যদুগোপাল মুখার্জী, অমর চ্যাটার্জী, অতুল ঘোষ প্রমুখ বিপ্লবীদের আশ্রয়দান ও সেখান থেকে পলায়ন করলেন ননীবালা দেবী।

৫.২ পেশোয়ার থেকে গ্রেপ্তার করে কাশীতে পাঠানো হল ননীবালা দেবীকে এবং আলো বাতাসহীন বদ্ধ ঘরে তালাবন্ধকরে শাস্তি দেওয়া হত।

৫.৪ আই. বি. পুলিশের স্পেশাল সুপারিনটেন্ডেন্ট গোল্ডি ননীবালা দেবীকে জেরা করতেন।

৫.৩ বাগবাজারে মা সারদার কাছে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে দরখাস্ত লিখলেন ননীবালা দেবী।

৫.৬ পুলিশ সুপার গোল্ডি দরখাস্ত ছিঁড়ে ফেলায় ক্ষিপ্ত ননীবালা দেবী এক চড় বসিয়ে দিলেন গোল্ডির মুখে।

 ২.১ “অমনি যেন বারুদে আগুন পড়ল”- কখন, কেন বারুদে আগুন পড়েছিল?**

উত্তর: বিপ্লবী দলের কর্মী কমলা দাশগুপ্ত প্রণীত ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী’ নামাঙ্কিত গদ্যে দেখা যায়, জেলের দুর্ভেদ্য অন্ধকারে আটকে থেকে জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে রয়েছে ননীবালা দেবী। পুলিশ তাঁকে কাশী থেকে নিয়ে আসেন কলকাতা প্রেসিডেন্সী জেলে। সেখানে এসে তিনি খাওয়া বন্ধ করে দিলে পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট মি. গোল্ডি তাঁর কাছে জানতে চান কী করলে তিনি খাবেন?

তদুত্তরে তিনি সারদামণির কাছে তাঁকে পাঠানোর কথা বললে সুপারিনটেন্ডেন্ট তাঁকে একটি লিখিত দরখাস্ত দিতে বলেন। সেইমতো তিনি দরখাস্ত লেখেন। কিন্তু গোল্ডি সেটি ছিঁড়ে দলা পাকিয়ে ছেঁড়া কাগজের টুকরিতে ফেলে দিলে অমনি যেন বারুদে আগুন হয়ে পড়ল। তিনি আহত ও ক্ষিপ্ত বাঘের মতো লাফিয়ে উঠে এক চড় বসিয়ে দেন গোল্ডির মুখে।

২.২ “এই মহীয়সী ছিলেন সেই পরিণতিসম্ভবা মেঘ”-‘মহীয়সী’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? এই উক্তির কারণ ব্যাখ্যা করো।**

উত্তর: বিপ্লবী দলের কর্মী কমলা দাশগুপ্ত প্রণীত ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী’ নামাঙ্কিত গদ্যে ‘মহীয়সী’ বলতে ননীবালাকে দেবীকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

• ননীবালা দেবী কখনও মাথা নিচু করে থাকেননি। তাই অপমানিত হয়ে তিনি ক্ষিপ্ত বাঘের মতো পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্টের মুখে চড় বসিয়ে দিতেও ভয় পান না। দীর্ঘ দু’বছর কারাগারে বন্দিজীবন কাটিয়ে ১৯১৯ সালে তিনি মুক্তি পান।

সকলেই তখন পুলিশকে ভয় পায় বলে তাঁকে কেউ নিজেদের কাছে রাখতে দিতে চায়নি। ফলে একটি প্রায় জীর্ণ ঘর ভাড়া নিয়ে জীবনের নানা ভাঙন-গড়নের বিপর্যস্ত দিনগুলি তিনি কাটিয়েছেন। তবু তিনি কারও কাছে মাথা নত করেননি। সেই প্রসঙ্গে লেখিকা জানিয়েছেন, যে মেঘের আত্মদানে পরবর্তীকালে শ্রাবণ বর্ষণের মতো ঝরে পড়েছিল অসংখ্য কর্মী ও কর্মপ্রেরণা; ননীবালা দেবী ছিলেন সেই পরিণতিসম্ভবা মেঘ।

২.৩ “শুধু বাচ্চাদের যেন তাঁরা দেখেন, শিশুরা যেন না কাঁদে”-কে, কাকে উদ্দেশ্য করে এই উক্তিটি করেছেন? এই উক্তির মধ্যে বিপ্লবের জন্যেই একজন বিপ্লবীর যে আত্মত্যাগের কাহিনিটি রয়েছে, তা লেখো।***

উত্তর: বিপ্লবী দলের কর্মী কমলা দাশগুপ্ত প্রণীত ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী’ নামাঙ্কিত গদ্যে দুকড়িবালা দেবী তাঁর বাবাকে চিঠিতে এই বক্তব্যটি লিখেছিলেন।

• দুকড়িবালা দেবী খুব স্নেহ করতেন তাঁর বোনপো নিবারণ ঘটককে। বোনপো প্রায়ই তাঁর বাড়িতে বিপ্লবীদের নিয়ে আসতেন। বোনপোর এই কাজকর্ম দেখে দুকড়িবালা দেবী উৎসাহিত হন বিপ্লবে যোগদান করতে।

বোনপো নিবারণ সাতটা মসার পিস্তল এনে লুকিয়ে রাখেন মাসিমার কাছে। ১৯১৪, আগস্ট মাসের ২৬ তারিখে রডা কোম্পানির জেটি-সরকার শ্রীশ মিত্র বড়োসাহেবেরে হুকুম মতো মালপত্র খালাস করতে জাহাজঘাটে যান। তিনি ২০২টি অস্ত্রপূর্ণ বাকসো খালাস করে সাতটি গোরুর গাড়ি বোঝাই করে নিয়ে আসতে থাকেন। ছখানা গাড়ি তিনি রডা কোম্পানিতে পৌঁছে দেন। একটি গাড়ির গাড়োয়ান ছদ্মবেশী বিপ্লবী হরিদাস দত্ত গাড়িটিকে নিয়ে পালিয়ে যান।

এই ঘটনায় দুকড়িবালা দেবীর বাড়িতে তল্লাশি চলে। কিন্তু শত চেষ্টাতেও তাঁর মুখ থেকে কোনো কথা বের হয় না। বন্দি জীবনের অসহ্য পরিবেশের মধ্যে থেকে তিনি বাবাকে উদ্ধৃত চিঠিটি লেখেন। এই চিঠির মধ্যে একজন বিপ্লবীর স্বদেশের প্রতি সুগভীর ভালোবাসা ব্যক্ত হয়েছে।.