Class 7 Chapter 33 Solution
পটলবাবু ফিল্মস্টার
Very Short Question
১১ পটলবাবু অভিনয়ের সময়ে সংলাপ হিসেবে বলেছিলেন (ওঃ/উঃ/আঃ) শব্দটি।
উত্তর: পটলবাবু অভিনয়ের সংলাপ হিসেবে বলেছিলেন আঃ শব্দটি।
১.২ অভিনয়ের সময় পটলবাবুর হাতে ছিল (আনন্দবাজার পত্রিকা/যুগান্তর/স্টেটসম্যান)।
উত্তর-অভিনয়ের সময় পটলবাবুর হাতে ছিল যুগান্তর।
১.৩ অভিনয়ের সময় পটলবাবুর নাকের নীচে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল (ঝুপো দেওয়া/বাটারফ্লাই) গোঁফ।
উত্তর: অভিনয়ের সময় পটলবাবুর নাকের নীচে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল বাটার ফ্লাই গোঁফ।
১.৪ (বরেন দত্ত/বরেন মল্লিক/বরেন চৌধুরী)-র পরিচালিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়েছিলেন পটলবাবু।
উত্তর: বরেন মল্লিক-এর পরিচালিত চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়েছিলেন পটলবাবু।
১.৫ করালীবাবুর বাড়িতে (কীর্তন/শ্যামাসংগীত/কথকতা) হয় (শনিবার বিকেলে/রবিবার সকালে/রবিবার বিকেলে)।
উত্তর: করালীবাবুর বাড়িতে শ্যামা সংগীত হয়, রবিবারে সকালে।
৫.১ বুঝতে পারছেন, ব্যাপারটা কতটা ইম্পর্ট্যান্ট?
উত্তর: বুঝতে পারছেন ব্যাপারটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
৫.২ এই, দাদুকে ডায়ালোগ লিখে দে।
উত্তর: এই দাদুকে কথোপকথন লিখে দে।
৫.৩ একজন অন্যমনস্ক, বদমেজাজি পেডেস্ট্রিয়ান…
উত্তর:একজন অন্যমনস্ক, বদমেজাজি পথচারী…।
৫.৪ তাহলে একটু ওদিকে সরে গিয়ে ওয়েট করুন।
উত্তর: তাহলে একটু ওদিকে সরে গিয়ে অপেক্ষা করুন।
৫.৫ আজ তো ট্যাগোরস বার্থ ডে।
উত্তর: আজ তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন।
৫.৬ সাইলেন্স! রোদ বেরিয়েছে।
উত্তর: চুপ। রোদ বেরিয়েছে।
৫.৭ থিয়েটার এর চেয়ে শতগুণে ভালো...
উত্তর: রক্ষঞ্চ এর চেয়ে শতগুণে ভালো।…
৫.৮ আপনি তো বেশ পাংচুয়াল দেখছি।
উত্তর: আপনি তো বেশ সময়নিষ্ঠ দেখছি।
৮.১ নিশিকান্ত ঘোষ মশাই নেপাল ভাজ্যি লেনে পটলবাবুর তিনখানা বাড়ি পরেই থাকেন।
উত্তর: তিনখানা।
৮.২ বছর ত্রিশেক বয়স, লম্বা দোহারা চেহারা।
উত্তর: বছর ত্রিশেক।
৮.৩ বাহান্ন বছর বয়সে ফিল্মে অভিনয় করার প্রস্তাব আসতে পারে এটা… অনুমান করা কঠিন বৈকি!
উত্তর: বাহান্ন বছর।
৮.৪ পটলবাবুর ন’বছরের সাধের চাকরিটি কপূরের মতো উবে গেল।
উত্তর: ন’বছরের।
৮.৫ তারপর এই দশটা বছর… কী-না করেছেন পটলবাবু।
উত্তর: দশটা বছর।
৮.৬ সেইটের সামনে ঠিক সাড়ে-আটটায় পৌঁছে যাবেন।
উত্তর: সাড়ে-আটটায়।
৮.৭….পটলবাবু দশ আনা বিরক্তির সঙ্গে তিন আনা বিস্ময় ও
তিন আনা যন্ত্রণা মিশিয়ে ‘আঃ’ শব্দটা উচ্চারণ করে… চলতে
আরম্ভ করলেন।
উত্তর: দশ আনা, তিনি আনা, তিন আনা।
১৩.৩ থিয়েটারে পটলবাবুর প্রথম পার্ট কী ছিল?
উত্তর: মৃত সৈনিকের পার্ট ছিল।
১৩.৪ উনিশশো চৌত্রিশ সালে পটলবাবু কলকাতায় বসবাস করতে এলেন কেন?
উত্তর: হাডসন অ্যান্ড কিম্বালি কোম্পানিতে আর একটু বেশি মাইনের চাকরি আর নেপাল ভট্টাচার্জ্যি একটা লেনে বাড়ি পেয়ে তিনি কলকাতায় বসবাস করতে এলেন।
১৩.৫ পাড়ায় থিয়েটারের দল গড়া আর হলো না কেন পটলবাবুর?
উত্তর: যুদ্ধের ফলে আপিসে এলো ছাঁটাই। তাই পাড়ায় থিয়েটারের দল গড়া হল না।
১৩.৬ পটলবাবু তাঁর সময়নিষ্ঠতার প্রমাণ দেওয়ার জন্য কোন্ উদাহরণ দিতে ভালোবাসতেন?
উত্তর: তিনি ন বছর হাডসন কিম্বার্লিতে চাকরি করতেন, সেই উদাহরণ দিতেন।
১৩.৭ “পটলবাবুর লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গেল”-পটলবাবু এমন লজ্জা পেলেন কেন?*
উত্তর: পটলবাবুকে অভিনয় করার কথা বলা হয়েছে তাই লজ্জা পেলেন।
১৩.৮ “গগন পাকড়াশি আজ তাঁকে দেখলে সত্যিই খুশি হতেন।”-তিনি খুশি হতেন কেন?
উত্তর: তিনি খুশি হতেন কারণ-এতদিন অকেজো হয়ে থেকেও তাঁর শিল্পীমন ভোঁতা হয়ে যায়নি।
১.১ পটলবাবু কে?
উত্তর: পটলবাবু হলেন বাহান্ন বছরের এক অভিনেতা। অভিনয় তাঁর
জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।
১.২ নিশিকান্তবাবু কে?
উত্তর: নিশিকান্তবাবুর পুরো নাম নিশিকান্ত ঘোষ। তিনি পটলবাবুর
প্রতিবেশী।
১.৩ নরেশ দত্ত কে?
উত্তর: নরেশ দত্ত হলেন নিশিকান্তবাবুর শ্যালক। তিনি ফিল্মে কাজ করেন।
১.৪ পটলবাবু কোথায় থাকেন?
উত্তর: পটলবাবু থাকেন নেপাল ভাজ্যি লেনে।
১.৫ নিশিকান্তবাবুর ছোটো শ্যালকের নাম কী?
উত্তর: নিশিকান্তবাবুর ছোটো শ্যালকের নাম নরেশ দত্ত।
১.৬ নরেশ দত্ত দেখতে কেমন?
উত্তর: নরেশ দত্ত লম্বা দোহারা চেহারার মানুষ ছিলেন।
১.৭ পটলবাবুর নাট্যগুরু কে ছিলেন?
উত্তর: পটলবাবুর নাট্যগুরু ছিলেন গগন পাকড়াশী।
১.৮ পটলবাবুর কথা অনুসারে পরিচালক তাঁকে কোন্ কাগজ
দিয়েছিলেন?
উত্তর: পটলবাবুর কথা অনুযায়ী পরিচালক তাঁকে ‘যুগান্তর’ পত্রিকাটি দিয়েছিলেন।
১.৯ সিনেমায় পটলবাবুর স্পিকিং পার্টটি কী ছিল?
উত্তর: সিনেমায় পটলবাবুর স্পিকিং পার্টটি ছিল ‘আঃ’ বলা।
১.১০ চঞ্চলকুমার কে ছিলেন?
উত্তর: পটলবাবু যে ফিল্মে অভিনয় করেছিলেন তার নায়ক ছিলেন চঞ্চলকুমার।
১.১১ থিয়েটারে পটলবাবুর প্রথম পার্ট কী ছিল?
উত্তর: থিয়েটারে পটলবাবুর প্রথম পার্ট ছিল একজন মৃত সৈনিকের।
১.১২ পটলবাবু কত বছর বয়সে ফিল্মে অভিনয়ের সুযোগ পান?
উত্তর: পটলবাবু বাহান্ন বছর বয়সে ফিল্মে অভিনয়ের সুযোগ পান।
১.১৩ ‘আমার টক করে তোমার কথা মনে পড়ে গেল’-উক্তিটির বক্তা কে?
উত্তর: আলোচ্য উক্তিটির বস্তা হলেন নিশিকান্ত ঘোষ।
১.১৪ নিশিকান্ত ঘোষ কোথায় থাকেন?
উত্তর: নিশিকান্ত ঘোষ নেপাল ভট্টাজ্যি লেনে পটলবাবুর তিনখানি বাড়ির পরেই থাকেন।
১.১৫ ‘বেশ আমুদে লোক’-কাকে আমুদে লোক বলা হয়েছে?
উত্তর: নিশিকান্ত ঘোষকে আমুদে লোক বলা হয়েছে।
১.১৬ ‘এই ধরনের একটা খবর পটলবাবু আশাই করেননি’- কোন্ খবরের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: আলোচ্য উক্তিটিতে ফিল্মের বছর পঞ্চাশ বয়সের একটি চরিত্রে অভিনয়ের কথা এখানে বলা হয়েছে। পটলবাবু আশাই করেননি এমন সুযোগ উপস্থিত হবে।
১.১৭ ‘তুমি তো অভিনয়-টভিনয় করেছ এককালে’-কে কাকে একথা বলেছেন?
উত্তর: পটলবাবুকে উদ্দেশ্য করে নিশিকান্ত ঘোষ একথা বলেছেন।
১.১৮ অভিনয়ের জন্য কোন্ পার্টটি পটলবাবুকে দেওয়া হয়েছিল?
উত্তর: একজন অন্যমনস্ক পথচারী বা পেডেস্ট্রিয়ানের পার্ট দেওয়া
হয়েছিল পটলবাবুকে।
১.১৯ পটলবাবু কখন কলকাতায় চলে আসেন?
উত্তর: ১৯৩৪ সালে কলকাতার হাডসন অ্যান্ড কিম্বার্লি কোম্পানিতে বেশি মাইনের চাকরি পেয়ে পটলবাবু কলকাতায় চলে আসেন।
১.২০ অভিনয়ের শুটিং কোথায় হয়েছিল?
উত্তর: অভিনয়ের শুটিং হয়েছিল মিশন রো আর বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের মোড়ের ফ্যারাডে হাউসের সামনে।
১.২১ মেকাপের সময় পটলবাবুকে কেমন গোঁফ দেওয়া হয়েছিল?
উত্তর: মেকাপের সময় পটলবাবুকে বাটারফ্লাই গোঁফ দেওয়া হয়েছিল।
১.২২ পটলবাবুর অভিনীত সিনেমার পরিচালক কে ছিলেন?
উত্তর: পটলবাবুর অভিনীত সিনেমার পরিচালক ছিলেন বরেন মল্লিক।
১.২৩ পটলবাবু একসময় কোথায় কোথায় অভিনয় করেছিলেন?
উত্তর: পটলবাবু একসময় যাত্রা, থিয়েটার, পুজো-পার্বণ, পাড়ার ক্লাবের অনুষ্ঠান ইত্যাদি জায়গায় অভিনয় করেছিলেন।
১.২৪ থিয়েটারে অসাধারণ অভিনয়ের জন্যে কে পটলবাবুর সঙ্গে
হ্যান্ডশেক করেছিলেন?
উত্তর: থিয়েটারে অসাধারণ অভিনয় করার জন্যে ওয়াটস সাহেব পটলবাবুর সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেছিলেন।
১.২৫ কে সত্তর বছর বয়সে চাণক্যের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন?
উত্তর: নাট্যাচার্য শিশির ভাদুড়ি সত্তর বছর বয়সে চাণক্যের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
১.২৬ নরেশ দত্ত পটলবাবুকে শুটিং করার দিন কী বলে সম্বোধন করেছিলেন?
উত্তর: নরেশ দত্ত পটলবাবুকে ‘অতুলবাবু’ বলে সম্বোধন করেছিলেন।
১.২৭ পটলবাবুর সংলাপটি কী ছিল?
উত্তর: পটলবাবুর সংলাপটি ছিল ‘আঃ’-এই শব্দটি।
১.২৮ পটলবাবুকে কে সংলাপ লিখে দিয়েছিলেন?
উত্তর: পটলবাবুকে সংলাপ লিখে দিয়েছিলেন শশাঙ্ক।
১.২৯ পরিচালকের কটি ছবি পরপর হিট করেছিল?
উত্তর: পরিচালকের পরপর তিনটি ছবি হিট করেছিল?
১.৩০ ‘এবার শট নেওয়া হবে’-বক্তা কে?
উত্তর: উক্তিটির বক্তা হলেন নরেশ দত্ত।
Short Question Answer
৪. নীচের শব্দগুলির অনুরূপ শব্দ পাঠ্যাংশটিতে পাবে। খুঁজে নিয়ে লেখো।
উত্তর: উৎসাহহীন নিরুৎসাহ, নিরালা-নির্জন, অপ্রত্যাশিত- অভাবনীয়, নিরুপদ্রব শান্তশিষ্ট, লাঞ্ছিত-অপদস্থ, সন্ধান- হদিস, প্রশংসা-তারিফ, পথিক-পথচারী।
৬. নীচের বিশেষণগুলির পরে উপযুক্ত বিশেষ্য বসিয়ে বাক্য রচনা করো।
উত্তর: দোহারা চেহারা-দোহারা চেহারা পটলবাবুর।
ব্যস্তসমস্ত লোক-নগরে সব ব্যস্তসমস্ত লোক।
অন্যমনস্ক মন-অন্যমনস্ক মন নিয়ে কাজ করা উচিত নয়।
দরকারি জিনিস-দরকারি জিনিসগুলো নিতে ভুলো না।
গম্ভীর মানুষ-গম্ভীর মানুষরা খুব ভয়ংকর হয়।
নির্জন এলাকা-নির্জন এলাকাতে একা যেতে ভয় লাগে।
আচ্ছন্ন আকাশ-মেঘে আচ্ছন্ন আকাশ।
১০. নীচের শব্দগুলি দিয়ে নতুন বাক্য রচনা করো।
উত্তর: টক করে-হাত থেকে তোমার পয়সা টক করে জলে পড়ে
গেল।
ধা করে-রাত্রি বেলায় ধা করে একটা চোর পালিয়ে গেল। তিড়িং করে-সুস্মিতা আরশোলা দেখে তিড়িং করে লাফাল। হন্তদন্ত হয়ে-সৌমেন হন্তদন্ত হয়ে স্কুলে গেল। ঠাহর করে-অন্ধকারে ঠাহর করে দূরের জিনিস দেখো। ঝিমঝিম করে-একটানা ঝিমঝিম করে বৃষ্টি হচ্ছে। ফিসফিস করে-সে ফিসফিস করে কী বলল। টুক করে-ফলটা টুক করে মাটিতে পড়ল।
১৪.৩ কার উপদেশের স্মৃতি পটলবাবুর অভিনেতা-সত্তাকে জাগিয়ে তুলল? কোন্ ‘অমূল্য’ উপদেশ তিনি দিয়েছিলেন পটলবাবুকে?
উত্তর: গগন পাকড়াশির উপদেশের স্মৃতি পটলবাবুর অভিনয় সত্তাকে জাগিয়ে তুলল। ইনি পটলবাবুর নাট্যগুরু ছিলেন।
• তিনি বলতেন-একটা কথা মনে রেখো পটল। বড়ো ছোটো
যে পার্টই তোমাকে দেওয়া হোক, তুমি জেনে রেখো তাতে কোনো অপমান নেই। শিল্পী হিসেবে তোমার কৃতিত্ব হবে সেই ছোটো পার্টটি থেকে শেষ রসটুকু নিংড়ে বার করে তাকে সার্থক করে তোলা।
১৪.৫ “এতদিন অকেজো থেকেও তাঁর শিল্পীমন ভোঁতা হয়ে যায়নি”-এই অনুভব কীভাবে জাগল পটলবাবুর মনে?*
উত্তর: পটলবাবু বরেন মল্লিকের সিনেমায় যখন একটা ছোট্ট অভিনয় করার সুযোগ পেলেন, তখন তাঁর জীবনটা ধন্য হয়ে গেল। অভিনয়ের জন্য একটা ‘আঃ’ উচ্চারণ করতে নানা ভাবনা চিন্তা করতে লাগলেন। অনেক উত্তেজনা নিয়ে যখন ‘আঃ’ শব্দটা উচ্চারণ করলেন এবং পরিচালক মশাই যখন ঠিক বললেন তখন তাঁর মন আত্মতৃপ্তিতে ভরে গেল। তিনি অনুভব করলেন তাঁর শিল্পী মন শেষ হয়ে যায়নি, ভোঁতা হয়ে যায়নি।
১৫.২ “সে কী, টাকা না নিয়েই চলে গেল নাকি লোকটা। আচ্ছা ভোলা মন তো।”-তোমার কী মনে হয়, সফলভাবে কাজ করার পরেও কেন টাকা না নিয়েই চলে গিয়েছিলেন পটলবাবু। পটলবাবু চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি কি যথার্থ বলে মনে হয় তোমার? নিজের যুক্তি দিয়ে লেখো।
উত্তর: পটলবাবুর টাকা না নিয়ে চলে যাওয়ার কারণ তাঁর কাছে টাকার চেয়ে বড়ো হল আত্মপরিতৃপ্তি।
• পটলবাবু অভিনয় করায় আত্মপরিতৃপ্তি লাভ করেছেন। যেটা একটা সবচেয়ে বড়ো সাফল্যের দিক। যেটা টাকা দিয়ে অর্জন করা যায় না। যেটাকে অন্য কোনো জিনিসের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। তিনি সামান্য কাজকে নিখুঁতভাবে করার চেষ্টা করেছেন এবং সফল হয়েছেন। তাই পটলবাবুর চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক।
২.২ বাজার করতে গিয়ে পটলবাবু সব গুলিয়ে ফেললেন কেন?
উত্তর: অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক ও চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পে পটলবাবু বাজার করতে গিয়ে গিন্নির ফরমাস গুলিয়ে ফেলেছেন। আসলে দশটা-সাড়ে দশটা নাগাদ বছর তিরিশের যুবক নরেশ দত্ত তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসবেন, এই সংবাদে তিনি অভিভূত হয়েছেন। ফলে অত্যন্ত আবেগে কালোজিরের পরিবর্তে ধানিলংকা কিনেছেন। সৈন্ধব নুনের কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছেন।
২.২ বাজার করতে গিয়ে পটলবাবু সব গুলিয়ে ফেললেন কেন?
উত্তর: অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক ও চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পে পটলবাবু বাজার করতে গিয়ে গিন্নির ফরমাস গুলিয়ে ফেলেছেন। আসলে দশটা-সাড়ে দশটা নাগাদ বছর তিরিশের যুবক নরেশ দত্ত তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসবেন, এই সংবাদে তিনি অভিভূত হয়েছেন। ফলে অত্যন্ত আবেগে কালোজিরের পরিবর্তে ধানিলংকা কিনেছেন। সৈন্ধব নুনের কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছেন।
২.৬ “কিন্তু পার্টটা কী বললেন না?”- কে কাকে উদ্দেশ্য করে এই বক্তব্য প্রকাশ করেছেন? তাঁর পার্ট কী ছিল?
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক ও বিশ্ববন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পে নরেশ দত্তকে উদ্দেশ্য করে পটলবাবু এই উক্তিটি করেছেন।
• পটলবাবুর পার্টটা ছিল একজন অন্যমনস্ক, বদমেজাজি পথচারীর। সেই পার্টে সংলাপ অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। সেটা একটি পূর্ণাঙ্গ একটি বাক্যও নয়। শুধু তাঁকে বলতে হবে- ‘আঃ’।
২.৭ ‘পটলবাবুর ধাঁ করে জরুরি প্রশ্ন মাথায় এসে গেল’-প্রশ্নটি কী ছিল?
উত্তর: ‘সন্দেশ’ পত্রিকার অন্যতম সম্পাদক সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পের মুখ্যচরিত্র পটলবাবু নরেশ দত্তের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তাঁর অভিনয়ের পার্টটায় কোনো ডায়ালগ আছে কিনা? অর্থাৎ কথা বলতে হবে কিনা? তদুত্তরে নরেশ দত্ত জানিয়েছিলেন সেটি হল স্পিকিং পার্ট।
২.৮ ‘যা বুঝছি-বুঝলে গিন্নি’-বক্তা কে? তিনি কী বুঝেছিলেন?**
উত্তর: সংগীতস্রষ্টা, প্রচ্ছদশিল্পী ও সাহিত্য রচয়িতা সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পে বক্তা হলেন পটলবাবু।
• পটলবাবু বুঝেছিলেন এই পার্টটা তেমন তিনি কিছু মনে করেন না। কেননা, ইতিপূর্বে মৃত সৈনিকের পার্ট করেছেন। শুধুমাত্র চোখ বুজে হাত-পা ছড়িয়ে পড়ে থাকা। সেখান থেকে তিনি খ্যাতির চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছেছিলেন। সুতরাং আপ্লুত পটলবাবু জানিয়েছেন, তিনি বেঁচে থাকলে মান, যশ, প্রতিপত্তি, খ্যাতি সবই লাভ করতে পারবেন।
২.৯ “এদের যে কী কাজ সেটা ঠাহর করতে পারলেন না”-বক্তা কে? তিনি কী ‘ঠাহর’ করতে পারছিলেন না?
উত্তর: চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গল্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা হলেন পটলবাবু।
• শুটিং-এর স্থানে গিয়ে পটলবাবু রীতিমতো অবাক হয়েছিলেন। তিনি দেখেছিলেন বিরাট তোড়জোড় চলেছে সেখানে। তিন-চারখানা গাড়ির মাথায় প্রচুর জিনিসপত্র। রাস্তার ধারে তেপায়া কালো যন্ত্রের মতো জিনিস। লোকজন সব প্রচণ্ড ব্যস্ত। বহু অবাঙালিও রয়েছে। কিন্তু এরা ঠিক কী কাজটি করবেন তা পটলবাবু ‘ঠাহর’ করতে পারলেন না।
Long Question Answer
২. নীচের এলেমেলো ঘটনাগুলি গল্পের ঘটনাক্রম অনুযায়ী লেখো।
উত্তর: ২.৩ পটলবাবু সবে বাজারের থলিটা কাঁধে ঝুলিয়েছেন এমন সময়ে বাইরে থেকে নিশিকান্তবাবু হাঁক দিলেন, ‘পটল আছ নাকি হে?’
২.৪ দুরুদুরু বুকে পটলবাবু এগিয়ে চললেন আপিসের গেটের দিকে।
২.২ তা আপনি তো বেশ পাংচুয়াল দেখছি।
২.৬ ঠিক আধ ঘণ্টা পরেই পটলবাবুর ডাক পড়ল, তখন আর তাঁর মনে কোনো নিরুৎসাহের ভাব নেই।
২.১ টাকার তাঁর অভাব ঠিকই কিন্তু আজকের এই যে আনন্দ, তার কাছে পাঁচ টাকা আর কী?
২.৫ সে কী, টাকা না নিয়েই চলে গেল নাকি লোকটা?
৩. গল্প থেকে এই যে অংশটি নীচে উদ্ধৃত করা হয়েছে, শুটিং-এর সেই ব্যস্ত পরিস্থিতিটি তোমার নিজের ভাষায় নতুন করে লেখো।
উত্তর: বরেন মল্লিক পটলবাবুকে রেডি হতে বললেন। পটলবাবুর মাথায় একটা নতুন আইডিয়া এসেছে, তিনি সেটি বরেনবাবুকে বললেন। পটলবাবু বললেন-তাঁর হাতে যদি একটা খবরের কাগজ থাকত তাহলে তিনি সেটা পড়তে পড়তে ধাক্কা খেতেন, তাহলে অন্যমনস্কতার ভাবটা ফুটে উঠত। তখন বরেন মল্লিক সামনের ভদ্রলোককে ‘যুগান্তর’ কাগজটা দিতে বললেন। থামের পাশে পটলবাবুকে বাঁড়াতে বললেন এবং নায়ক চঞ্চলকে রেডি আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলেন।
গাড়ির পাশ থেকে নায়ক রেডি। হঠাৎ বরেন বাইক যায় পান থেকে নায়ক উত্তর দিলেন, সেলকেকে একটা গোঁফ নিলয় আসতে বলা নিয়ে কেষ্ট নামের জারটা পুরোপুরি আসে। কেষ্ট জিজ্ঞাসা করলেন কি গোঁফ, ঝুঁপো দেওয়া না বাটারফ্লাই। রেডি আছে সব।তখন বরেন মল্লিক বললেন, বাটারফ্লাই, বাটারফ্লাই চট করে দাও দেরি করো না।
৭. নীচের বিশেষ্যগুলির আগে উপযুক্ত বিশেষণ বসিয়ে বাক্য রচনা করো।
উত্তর:
প্রস্তাব: উত্তম প্রস্তাব-সে আমাকে উত্তম প্রস্তাব দিয়েছে।
অভিনয় দক্ষ অভিনয়-ছেলেটির দক্ষ অভিনয় দেখে সবাই আনন্দিত হল।
সাধারণ ফরমাশ-সে যেটা করেছে, সেটা খুব সাধারণ ফরমাশ। ফরমাশ
ঔদ্ধত্য ভীষণ ঔদ্ধত্য-ছেলেটির ভীষণ ঔদ্ধত্যক
পরিশ্রম কঠোর পরিশ্রম-পিক্ষি কঠোর পরিশ্রম করে লেখাপড়া করছে।
সাফল্য দেখার মতো সাফল্য-ছেলেটি খেলাধুলোয় দেখবার মতোসাফল্য অর্জন করেছে।
উৎকণ্ঠা: প্রচণ্ড উৎকণ্ঠা-তার জন্য আমরা প্রচণ্ড উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকি।
আত্মতৃপ্তি: চরম আত্মতৃপ্তি-কাজটা করে আমরা খুব আত্মতৃপ্তি পেয়েছি।
১৪.১ “আমার টক করে তোমার কথা মনে পড়ে গেল”- কার মনে পড়ে গেল পটলবাবুর কথা? পটলবাবুর কথাই বিশেষ করে তাঁর মনে পড়ল কেন?**
উত্তর: নিশিকান্ত ঘোষ মহাশয়ের মনে পড়ে গেল পটলবাবুর কথা।
• কারণ পটলবাবু একসময় অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনয়ে যথেষ্ট আগ্রহ ছিল। পুজো-পার্বণ, অনুষ্ঠানে তিনি অভিনয় করতেন। ১৪.২ “গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল। সাধে কি তোমার কোনোদিন কিচ্ছু হয় না?” পটলবাবুর গৃহিণীর এই মন্তব্যের কারণ কী?
উষ্ণর: পটলবাবু বাহান্ন বছর বয়সে অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে তিড়িং করে লাফ দিয়ে উঠলেন। নাট্যকার শিশির ভাদুড়ির সঙ্গে নিজেকে তুলনা করে তিনি বলেন শিশির ভাদুড়ি সত্তর বছর বয়সে চাণক্যের পার্টে ওইভাবে লাফ দিতেন। আজ তিনি পুনর্যৌবন লাভ করেছেন। তাঁর মান, যশ, প্রতিপত্তি সব হবে। এইসব শুনে পটলবাবুর গৃহিণী এই মন্তব্য করেছিল।
১৪.৪ “ধন্যি মশাই আপনার টাইমিং! বাপের নাম ভুলিয়ে দিয়েছিলেন প্রায়-ওঃ!”-বক্তা কে? কোন্ ঘটনার ফলে তাঁর এমন মন্তব্য?***
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ নামাঙ্কিত রচনা থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি গৃহীত হয়েছে। আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন সিনেমার নায়ক চঞ্চলকুমার।
• পটলবাবু ফিল্মের যে অংশটিতে অতি সামান্য সময়ের যে অভিনয় করেছিলেন, সেখানে ফিল্মের নায়কের সঙ্গে তার একটা ধাক্কার দৃশ্য ছিল। দু’জনেই একসঙ্গে হাঁটা শুরু করলে হঠাৎই চঞ্চলকুমারের মাথার সঙ্গে পটলবাবুর কপালে ঠোকা লাগে। পটলবাবু চোখে প্রায় অন্ধকার দেখেন। একটা তীব্র যন্ত্রণা তাঁকে এক মুহূর্তের জন্য হলেও জ্ঞানশূন্য করে দেয়। নিজেকে আশ্চর্য ভাবে সামলে নিয়ে পটলবাবু দশ আনা বিরক্তির সঙ্গে তিন আনা বিস্ময় ও তিন আনা যন্ত্রণা মিশিয়ে ‘আঃ’ শব্দটি উচ্চারণ করেন। অত্যন্ত যন্ত্রণার মুহূর্তেও তিনি অভিনয়ের সঙ্গে আপস করেননি। চঞ্চলকুমার নিজের মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে এসে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন। তার এই উক্তির মধ্যে পটলবাবুর অভিনয় প্রীতির প্রশংসাটুকু চোখে পড়ার মতো।
১৪.৬ পটলবাবুর ফিল্মে অভিনয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রোডাকশন ম্যানেজার নরেশ দত্তের অনেকগুলি ব্যস্ত মুহূর্ত। টুকরো মুহূর্তগুলি জোড়া দিয়ে নরেশ দত্ত নামে মানুষটির সম্পূর্ণ ছবি নিজের ভাষায় তৈরি করো।***
উত্তর: সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ নামাঙ্কিত রচনায় নরেশ দত্ত চরিত্রটি একটি বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। তাঁর বয়স প্রায় ত্রিশ। চেহারায় তিনি বেশ লম্বা ও দোহারা। পটলবাবুকে দেখে তাঁর পছন্দ হয়েছিল। তিনি পটলবাবুকে কথাপ্রসঙ্গে বলেছিলেন, ফিল্মে একজন অন্যমনস্ক পথচারীর ভূমিকায় পটলবাবু যদি অভিনয় করেন তাহলে তিনি খুশি হবেন। বলাবাহুল্য পটলবাবুর রীতিমতো অভিনয়ের শখ ছিল। ফলেই এমন একটি কাজ পাওয়ায় তিনি অভিভূত হন।
• সঠিক সময়ে পটলবাবুকে মিশন রো আর বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের মোড়ে ফ্যারাডে হাউসের সামনে আসার কথা বলেন। নরেশ দত্ত তাঁর শুটিং-এর দিন, সময় সম্পর্কে জানিয়ে দিলেও পটলবাবুর অভিনয়টা ঠিক কী তা বিস্তৃতভাবে বলেননি। তিনি কিছুটা ইতস্তত করেছেন। অতঃপর জানিয়েছেন, ‘পাট হলো গিয়ে আপনার… একজন অন্যমনস্ক, বদমেজাজি পেডেস্ট্রিয়ান।’
শুটিং-এর দিন পটলবাবু নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে পৌঁছেছিলেন। তাতে খুশি হয়েছিলেন নরেশ বাবু। পটলবাবু লক্ষ করেছিলেন যেভাবে সঠিক নির্দেশে তিনি প্রতিটি বিষয় সুন্দরভাবে সাজিয়ে নিচ্ছিলেন তাতে তাঁর মুন্সিয়ানা ধরা পড়ে। নরেশবাবু প্রচণ্ড ব্যস্ত মানুষ। তবু তিনি পটলবাবুকে সময় দিয়েছেন, চা খাইয়েছেন। সংলাপের বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।
কর্তব্যপরায়ণ নরেশ দত্ত পটলবাবুর অভিনয় শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাঁর পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্যে খোঁজখবর নিয়েছেন। অর্থাৎ এই চরিত্রটির মধ্যে মানবিক ও সংবেদনশীল চরিত্রের সমস্ত গুণাবলী ছিল।
১৫. দশটি বাক্যের মধ্যে উত্তর দাও।
১৫.১ ‘আঃ’-এই একটিমাত্র শব্দের উচ্চারণ কৌশলে আর অভিনয় দক্ষতায় একটা আস্ত অভিধান লিখে ফেলা যায়, শব্দটি নিয়ে ভাবতে এমনটাই মনে হয়েছিল অভিনেতা পটলবাবুর। পটলবাবুর ভাবনা-ধারা কি ঠিক বলে মনে হয় তোমার? ‘আঃ’ শব্দের উচ্চারণে কত ধরনের ভাবপ্রকাশ সম্ভব বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর: চলচ্চিত্র বা থিয়েটারে শব্দ উচ্চারণের বৈচিত্র্য একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। পরিস্থিতি অনুসারে, চরিত্রের ব্যক্তিগত প্রবণতা অনুসারে, উচ্চারণের বৈচিত্র্য অনুসারে একটি শব্দ ভিন্ন ভিন্ন তাৎপর্য বহন করে। অভিনয়ের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল পটলবাবু ‘আঃ’ শব্দটি নানা দিক থেকে উচ্চারণ করে শব্দটির তাৎপর্য ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা দিয়েছেন। যেমন-
১. চিমটি খেলে মানুষ যেভাবে ‘আঃ’ বলে; সেই উচ্চারণ আমাদের যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশিত রূপ।
২. গরমে ঠান্ডা শরবত খেয়ে ‘আঃ’ বললে অদ্ভুত এক তৃপ্তির সুর
ধরা পড়ে। ৩. প্রবল হতাশায়, দীর্ঘশ্বাসে ‘আঃ’ উচ্চারণ করলে মনের
ব্যথা-বেদনা প্রকাশিত হয়।
৪. অভিমানে ‘আঃ’ বললে মানসিক কষ্টের কথা বোঝা যায়।
৫. ছোটো করে ‘আঃ’ উচ্চারণ করলে আকস্মিক ব্যক্তিগত অনুভূতিকে উপলব্ধি করা যায়।
৬. লম্বা করে ‘আঃ’ বললে গভীর এক বিস্ময়বোধ জাগ্রত হয়।
৭. মৃদুস্বরে ‘আঃ’ বললে মনের গভীর প্রশান্তি প্রকাশিত হয়।
৮. চড়া গলায় ‘আঃ’ বললে উচ্চভাবের এক গভীর আবেগময়তা ব্যস্ত হয়।
১৫.৩ কেমন করে শুটিং চলে, তার জীবন্ত কিছু টুকরো টুকরো ছবি উঠে এসেছে এই গল্পের আনাচে কানাচে। সেইসব টুকরো জুড়ে জুড়ে নিজের ভাষায় শুটিং-এর মুহূর্তগুলির একটি সম্পূর্ণ চিত্র তৈরি করো।
উত্তর: সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ নামাঙ্কিত গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ নামাঙ্কিত গল্পে শুটিং-এর নানাচিত্র উঠে এসেছে। প্রত্যেক অভিনেতার পোশাক, মেকাপ, সংলাপ ঠিক করে দেওয়ার জন্যে পৃথক পৃথক অভিজ্ঞ মানুষ থাকেন। অভিনয় শুরুর আগে পরিচালক সবার উদ্দেশ্যে জানান, ‘সাইলেন্স’। তাঁর নির্দেশ অনুসারে সমস্ত অভিনেতা চুপ হয়ে যান। কেননা, তাঁরা বুঝতে পারেন এই মুহূর্তে শুটিং-এর কাজ শুরু হতে চলেছে। তারপর পরিচালক জানান, ‘স্টার্ট সাউন্ড’। তাঁর এই নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গে যিনি সাউন্ড রেকর্ডিস্ট হিসেবে কাজ করেন তিনি বলেন ওঠেন ‘রানিং’।
ক্যামেরার কাজ শুরু হওয়ার মুহূর্তে পরিচালক বলেন, ‘অ্যাকশন’। তখন অভিনেতারা নিজেদের সংলাপ বলতে শুরু করেন। সংলাপ অনুযায়ী একটি দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি হলে এবং তা নিখুঁত শিল্প-উপযোগী হলে পরিচালক বলেন ‘কাট’। অর্থাৎ দৃশ্যগ্রহণ সমাপ্ত। এভাবেই পরিচালকের যোগ্য নেতৃত্বে আলো, মেকাপ, অভিনেতার সংলাপ, সাউন্ড, নৃত্য ইত্যাদির সমাবেশে সিনেমার শুটিং-এর কাজ সমাপ্ত হয়।
১৫.৪ অভিনয়ের নানা ধরনের প্রসঙ্গ এই গল্পে ছড়িয়ে আছে। থিয়েটার আর সিনেমার অভিনয়ের ধরনের সাদৃশ্য আর বৈসাদৃশ্যের কিছু কথা মনে এসেছিল পটলবাবুর। পটলবাবুর মতামত নিজের ভাষায় লিখে, এবিষয়ের তোমার কোনো মতামত থাকলে তাও জানাও।
উত্তর: থিয়েটার আর সিনেমার অভিনয়ের ধরনে সাদৃশ্য:
সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ নামাঙ্কিত গল্পে পটলবাবু বাহান্ন বছর বয়সে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন। প্রথম জীবনে তিনি বিভিন্ন ক্লাবে, পুজো-পার্বণ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে নিয়মিত অভিনয় করেছেন। ফলে অভিনয় বিষয়টি তাঁর কাছে একটি শিল্প। যেকোনো অভিনয়কে অসামান্য দক্ষতায় উপস্থাপন করা সম্ভব বলে তিনিমনে
সংলাচ অভিনেতং করেন। থিয়েটার ও সিনেমায় অভিনয়ের কিছু সাদৃশ্য থাকে। যেন উভয়ক্ষেত্রে বিশেষ অনুশীলন প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে উচ্চারণের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পায়। তবে উভয়ক্ষেত্রে মানসিক সক্ষমতা ও অভিনয়ের প্রতি আন্তরিকতা বড়ো বিষয়।”
- থিয়েটার আর সিনেমার অভিনয়ের ধরনে সাদৃশ্য: থিয়েটার আর সিনেমার অভিনয়ের ধরনে শুটিং–এ অনেক মানুষজন, যন্ত্রপাতি, আলো, মিউজিক, কামেরার প্রায়ঙ্ক হয়। সেখানে পরিচালক, অভিনেতা, প্রোডাকশন ম্যানেজার, প্রডিউদ্দ প্রত্যেকের বিশেষ ভূমিকা থাকে। সিনেমার শুটিং-এ সাইলেন্স, স্টাই সাউন্ড, রানিং, অ্যাকশন, কাট ইত্যাদি বিষয়গুলি পরপর থাকে। : সিনেমাজ
পটলবাবুর অবশ্য মনে হয়েছে ‘যা-না কাজ, তার বত্রিশ গুণ ফুটুমি আর ভড়ং। তাঁর মনে হয়েছে থিয়েটারের কাজ হল পাঁচজনে মিলেমিশে কাজ। সকলের সাফল্য জড়িয়েই সেই সমবেত আয়োজন সম্পূর্ণ হয়ে ওঠে। সিনেমায় কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে তা সংশোধনের সুযোগ থাকে। থিয়েটারে তা সম্ভব নয়। থিয়েটার প্রতিদিন নতুন নতুন করে ভাবনা-চিন্তা করতে শেখায়। কিন্তু সিনেমা হয়ে যাওয়ার পর নতুন কিছু। দেওয়ার থাকে না।
• পটলবাবুর বক্তব্যের সঙ্গে আমি সহমত পোষণ করি। আসলে থিয়েটারে অভিনেতাকে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হয়। সেখানে অভিনেতাকে সম্পূর্ণভাবে ‘শেষ রসটুকু নিংড়ে বার করে’ দিতে হয়। কিন্তু সিনেমায় সাউন্ড, মিউজিক, লাইট এবং শুটিং-এর ক্যানভাস অনেক বিস্তৃত বলে অভিনয় প্রদর্শনের বিষয়টি আরও সহজসাধ্য হয়।
১৫.৫ বছর পঞ্চাশের বেঁটেখাটো টাকমাথা নাট্যপ্রিয় পটলবাবুরে
তোমার কেমন লাগল নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক ও বিশ্ববন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পটির কেন্দ্রিয় চরিত্র হলেন পটলবাবু। তাঁর প্রকৃত নাম শীতলকান্ত রায়। বছর পঞ্চাশের এই মানুষটির চরিত্র আমাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। তাঁর চরিত্রের যে দিকগুলি আমার সামনে উন্মোচিত হয়েছে, তা হল-
১. শিল্পের প্রতি শ্রদ্ধা: শিল্পের প্রতি সুগভীর নিষ্ঠা ছিল পটলবাবুর। তাই বাহান্ন বছর বয়সে তিনি পরিচালক বরেন মল্লিকের সিনেমায় এক পথচারির ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে তাঁর শিল্পপ্রতিভাকে সম্পূর্ণ মেলে ধরেন। তিনি প্রমাণ করেন যেকোনো চরিত্রে অভিনয় করা
২. অভিনয় শিল্পের প্রতি নিষ্ঠা পটলবাবুর নিষ্ঠার অভাব ছিল না। অভিনয়কে তিনি জীবনের প্রথম পর্ব থেকেই ভালোবাসতেন। সুযোগ পেলেই অভিনয় করতেন। তাই অপ্রত্যাশিতভাবে অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে তিনি অভিভূত হন। আসলে যেটুকু সময় তিনি সহ অভিনেতা হিসেবে থাকুন না কেন, তাঁর কৃতিত্ব হল সেইটুকু সময়েই তাঁর সর্বস্বকে তিনি উজাড় করে দিয়েছেন।
৩. নিরন্তর সাধনা: একটিমাত্র শব্দকে কীভাবে বিভিন্নভাবে প্রকাশ করা যায়, তা ‘আঃ’ শব্দের উচ্চারণ বৈচিত্র্য ধরা পড়েছে। তিনি অনুভব করেন চিমটি খেলে, গরমে ঠান্ডা শরবত খেলে, আচমকা কানে সুরসুরি খেলে, তাচ্ছিল্যে, অভিমানে, মৃদুস্বরে, চড়া গলায়, খাদে গলায় ‘আঃ’ শব্দের উচ্চারণকে বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ করা সম্ভব।
৪. আচার্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল: পটলবাবু তাঁর নাট্যগুরু গগনপাকড়াশীর কথা স্মরণ করেছেন জীবনের এক বিশেষ লগ্নে। তাঁর মতে তিনি ছিলেন ‘ঋষিতুল্য মানুষ আর শিল্পীর সেরা শিল্পী’। প্রয়োজনে আচার্যকে স্মরণ করে তিনি জীবনের সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজেছেন।
৫. সময়নিষ্ঠতা : পটলবাবুর মধ্যে সময়নিষ্ঠতা ছিল। তিনি অভিনয়ের ঠিক সময়ের পূর্বেই উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁর এই গুণ দেখে নরেশ দত্ত অভিভূত হয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন ‘আপনি তো বেশ পাংচুয়াল দেখছি।’
৬. অভিনেতা হিসাবে মুনশিয়ানা: অভিনয় করার সময় নিজের কপালের সঙ্গে নায়কের মাথার জোর ধাক্কা লেগেছিল। একটা তীব্র যন্ত্রণা পটলবাবুকে মুহূর্তের জন্য জ্ঞানশূন্য করে দিয়েছিল। তবু প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসে দশ আনা বিরক্তির সঙ্গে তিন আনা বিস্ময় ও তিন আনা যন্ত্রণা মিশিয়ে ‘আঃ’ শব্দটি উচ্চারণ করে খবরের কাগজটা সামনে নিয়ে তিনি চলতে শুরু করেছিলেন। অভিনেতা হিসেবে এই মুনশিয়ানা চোখের পড়ার মতো।
এই কারণে পটলবাবু আমার কাছে বিশেষ শ্রদ্ধার পাত্র।
২.১ “এটা তাঁর মতো নগণ্য লোকের পক্ষে অনুমান করা কঠিন”- ‘এটা’ বলতে কীসের কথা বলা হয়েছে? কী অনুমান করা কেন কঠিন বলে মনে হয়েছে?**
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক ও বিশ্ববন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্প থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি গৃহীত হয়েছে। ‘এটা’ বলতে চলচ্চিত্রে বছর পঞ্চাশেক বয়সের ভূমিকায় অভিনয় করার কথা বলা হয়েছে।
• নরেশ বাবুর ছোটো শ্যালক এমন একজন অভিনেতা খুঁজছিলেন যাঁর বয়স হবে পঞ্চাশ বছর, বেঁটে খাটো, মাথায় টাক থাকবে। পথচারীর ভূমিকায় অভিনয় করার জন্যে এই চরিত্রটি ঠিক কাকে মানাবে তাঁর সন্ধানে নরেশ দত্তের অনুরোধে নিশিকান্ত ঘোষ পটলবাবুর কথা বলেন।
পটলবাবু নিশিকান্ত ঘোষের মুখ থেকে এমন আকাশচুম্বী প্রস্তাব শুনে অভিভূত হন। এধরনের একটা খবর পটলবাবু আশাই করেননি। তিনি অভিনয় করলেও চলচ্চিত্রে অভিনয় করার মতো যোগ্যতা তাঁর ছিল বলে তিনি মনে করেন না। তাই উদ্ধৃত উক্তিটি তাঁর মনের অবস্থাকে প্রকাশ করেছে।
২.৩ ‘এককালে পটলবাবুর রীতিমতো অভিনয়ের শখ ছিল’-পটলবাবু অভিনয়ের যে শখ তার পরিচয় দাও।
উত্তর: সংগীতস্রষ্টা, প্রচ্ছদশিল্পী ও সাহিত্য রচয়িতা সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পে পটলবাবু একজন দায়বদ্ধ অভিনেতা। অভিনয়কে তিনি অত্যন্ত শ্রদ্ধা করেন। অভিনয় ছিল তাঁর শখ। অবশ্য লেখক জানিয়েছেন, ‘শুধু শখ কেন-নেশাই বলা চলে’। যাত্রায়, শখের থিয়েটারে, পুজো-পার্বণে, পাড়ার ক্লাবের অনুষ্ঠানে তাঁর বাঁধা কাজ ছিল অভিনয় করা। হ্যান্ড বিলে অনেকবার তাঁর নাম উঠেছে। একবার বড়ো অক্ষরে প্রকাশিত হয়েছে-পরাশরের ভূমিকায় অভিনয় করছেন শ্রী শীতলাকান্ত রায় বা পটলবাবু। তাঁর নামে টিকিট বিক্রি হয়েছে বেশি, এমনও একটা সুবর্ণ যুগ গিয়েছে তাঁর জীবনে।
২.৪ পটলবাবুর থিয়েটার দল গড়ার স্বপ্ন সফল হয়নি কেন?
উত্তর: জনপ্রিয় লেখক ও সাহিত্যিক চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পে পটলবাবু অভিনয়কে প্রকৃতই ভালোবেসেছিলেন। তিনি থাকতেন কাঁচরাপাড়ায়। সেখানে রেলের কারখানায় চাকরি ছিল তাঁর। ১৯৩৪ সালে কলকাতার হাডসন অ্যান্ড কিম্বার্লি কোম্পানিতে আরেকটু বেশি মাইনের একটা চাকরি,
আর নেপাল ভাজ্যি লেনে বাড়িটা পেয়ে পটলবাবু সস্ত্রীক কলকাতায়। চলে আসেন। সেখানে কটা বছর তাঁর ভালোই কেটেছিল। অফিসের সাহেব তাঁকে পছন্দ করতেন।
১৯৪৩ সালে পটলবাবু সবে একটা পাড়ায় থিয়েটারের দল গড়বার স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু এইসময় ঘটে এক দুর্ঘটনা। ১৯৪৩-এর মহামন্বস্তরে বাংলার সর্বত্র দেখা যায় বিপর্যয়। সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। চারিদিকে খাদ্যাভাব, অর্থাভাব। ফলে অফিসে কর্মচারি ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর ফলে পটলবাবুর ৯ বছরের সাধের চাকরিটি নষ্ট হওয়ায় তাঁর থিয়েটারের
দল গড়ার স্বপ্ন ভেঙে যায়।
২.৫ “কী-না করেছেন পটলবাবু”-পটলবাবুর কাজকর্মের পরিচয় দাও।
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক ও বিশ্ববন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পটির মুখ্য চরিত্র পটলবাবু। অভিনয় তাঁর জীবনের অঙ্গ। কিন্তু অর্থাভাবে তিনি অভিনয়কে জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারেননি। ১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাঁর কাজ চলে যায়। সেই থেকে তিনি রোজগারের ধান্দায় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন। কিছুদিন একটি মনিহারি দোকান দিয়েছিলেন, কিন্তু বছর পাঁচেক চলার পর দোকান উঠে যায়।
অতঃপর পটলবাবু একটি বাঙালি অফিসে কেরানিগিরির কাজ করেন।
কিন্তু বড়োকর্তা বাঙালি সাহেব মি. মিটারের ঔদ্ধত্য আর অকারণ চোখ-রাঙানি সহ্য করতে না পেরে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। তারপর দশ বছর ইনসিওরেন্সের দালালি থেকে শুরু করে সব কাজই করেছেন। সত্যজিৎ রায় লিখেছেন-‘কিন্তু যে-অভাব, যে-টানাটানি, সে আর দূর হয়নি কিছুতেই।’ সম্প্রতি তিনি একখানি লোহালক্কড়ের দোকানে ঘোরাঘুরি করেছেন কাজের জন্যে।
২.১০ ‘থিয়েটারেও ওই নামে জানত’-এখানে কোন্ নামটির কথা বলা হয়েছে? এই প্রসঙ্গ অবতারণার কারণ কী?
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক ও বিশ্ববন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পে ‘পটলবাবু’ নামটির কথা বলা হয়েছে।
• নির্দিষ্ট সময়ে পটলবাবু পৌঁছে যান বেন্টিঙ্ক স্ট্রি ও মিশন রো-এর ফ্যারাডে হাউসে। তিনি অসংখ্য লোকের মাঝখানে নরেশ বাবুকে খুঁজতে থাকেন। নরেশ বাবু তাঁকে দেখতে পেয়ে বলেন ‘এই যে অতুলবাবু-এদিকে!’ পটলবাবু হঠাৎ নরেশ বাবুর মুখে অতুলবাবু নামটি শুনে অবাক হন। তিনি বুঝতে পারেন নরেশ বাবু তাঁর নামটি ভুলে গিয়েছেন। তিনি জানান তাঁর নাম শ্রী শীতলকান্ত রায়। অবশ্য পটলবাবু বলেই সবাই জানেন। থিয়েটারেও ওই নামে সবাই জানত।
২.১১ “ঋষিতুল্য মানুষ আর শিল্পীর সেরা শিল্পী”-কে, কার সম্পর্কে এই মন্তব্য করেছেন? তাঁকে স্মরণ করার কারণ কী?
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক ও বিশ্ববন্দিত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় প্রণীত ‘এক ডজন গপ্পো’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ গল্পের মূল চরিত্র পটলবাবু তাঁর অভিনয় জীবনের আচার্যপ্রতিম ব্যক্তিত্ব গগন পাকড়াশি সম্পর্কে এই মন্তব্য করেছেন।
• সামান্য একটি সংলাপ অনেক সময় একজন জাত অভিনেতাকে চিনিয়ে দেয়। গগন পাকড়াশি জানিয়েছিলেন, যত ছোটো পার্টই দেওয়া হোক না কেন, তাতে কোনো অপমান নেই। কেননা, শিল্পী হিসেবে সবথেকে বড়ো কৃতিত্ব হল সেই ছোট্ট পার্টটি থেকেও শেষ রসটুকু নিংড়ে বার করে তাকে সার্থক করে তোলা।
পাকড়াশি মশাইয়ের সেই উপদেশ স্মরণ করে পটলবাবু জানিয়েছেন ‘আশ্চর্য অভিনেতা ছিলেন গগন পাকড়াশি।’ তাঁর কোনো দন্ত ছিল না। তিনি ছিলেন ঋষিতুল্য মানুষ। পটলবাবুর মতে, তিনি নিঃসন্দেহে ‘শিল্পীর সেরা শিল্পী’।