Class 7 Chapter 7 Solution
একুশের তাৎপর্য
Very Short Answer Question
১. মানুষকে মানুষ করে তোলে কে?
উত্তর: আবুল ফজল বলেছেন, ভাষা মানুষকে মানুষ করে তোলে।
২. ভাষা ছাড়া মানুষ কী কী করতে পারে না?
উত্তর: ভাষা ছাড়া মানুষ ভাবতে পারে না, কল্পনা করতে পারে না, চিন্তা করতে পারে না। এমনকী নিজেকে প্রকাশ করতেও পারে না।
৩. জাতীয় সত্তা কাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে?
উত্তর: ভাষাকে কেন্দ্র করে জাতীয় সত্তা গড়ে ওঠে।
৪. কীসের বিনিময়ে মাতৃভাষার দাবি প্রতিষ্ঠা করতে হয়?
উত্তর: প্রাণ আর রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষার দাবি প্রতিষ্ঠা করতে হয়।
৫. কারা আমাদের গর্ব?
উত্তর: একুশে ফেব্রুয়ারির শহিদরা আমাদের গর্ব।
Short Answer Question
১. “ভাষা ছাড়া জাতিও জাত হয়ে উঠতে পারে না।”- ‘জাতি’ ও
‘জাত’ সম্পর্কে এ কথা বলার কারণ কী?***
উত্তর: ‘জাতি’ ও ‘জাত’ শব্দ দুটি একাত্মবোধক নয়। একটি ‘জাতি’কে ‘জাত’ হয়ে উঠতে গেলে তার অবশ্যই মাতৃভাষার প্রতি আবেগ ও শ্রদ্ধা থাকা আবশ্যক। কেননা, জাতীয় সত্তা গড়ে তুলতে হলে ভাষা সেখানে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ইতালির ঐক্য আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল ভাষার মাধ্যমে। আসলে ভাষা হলো জাতীয় চেতনার প্রকাশের মাধ্যম।
২. “মাতৃভাষার ইজ্জত আর অস্তিত্ব নিয়ে কোনো আপস চলে না।”-এই উক্তির তাৎপর্য লেখো।***
উত্তর: ‘একুশের তাৎপর্য’ কত গভীর, সেই আলোচনায় আবুল ফজল জানিয়েছেন, ‘ভাষাই মানুষকে মানুষ করে তোলে।’ ভাষা ছাড়া মানুষ নিজেকে প্রকাশ করতে ব্যর্থ। ব্যক্তিত্ব ও ব্যক্তিজীবনের বিকাশ ঘটে ভাষার মাধ্যমে।
লেখকের মনে হয়েছে, ‘ভাষা ছাড়া জাতিও জাতি হয়ে উঠতে পারে না।’ জন্মসূত্রে আমরা এই ভাষাকে পাই। ভাষা আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। মাতৃভাষাকে রক্ষা করা আমাদের একমাত্র কর্তব্য। তাই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে, তার ইজ্জত রক্ষা করতে কোনো আপসের প্রশ্ন ওঠে না।
৩. “মাতৃভাষার দাবি স্বভাবের দাবি, মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকা দাবি”-বক্তব্যটির মূল বিষয় বুঝিয়ে দাও।**
উত্তর: মাতৃভাষা আমাদের জন্মসূত্রে অর্জিত। মাতৃভাষাকে রবীন্দ্রনাথ তুলনা করেছিলেন মাতৃদুগ্ধের সঙ্গে। এর কারণ মাতৃদুগ্ধ যেমন আমাদের বেঁচে থাকার উপাদান, মাতৃভাষা তেমন বেঁচে থাকার উপায়। এই ভাষা আমাদের অন্যের থেকে স্বতন্ত্র করে রাখে। এর মাধ্যমে আমরা নিজেদের চিন্তা-চেতনা, আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ব্যক্ত করি। জন্মসূত্রে পাওয়া মাতৃভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার দাবি তাই স্বাভাবিক। – এজন্যে আবুল ফজল এই দাবিকে ‘স্বভাবের দাবি’ বলে চিহ্নিত করেছেন।
৪. একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি কেন পালন করা হয়?
উত্তর: একুশে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’। সেদিনমাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য আত্মবলি দিয়েছিলেন ভাষাপ্রেমিকরা। মাতৃভাষাকে তারা মর্যাদা দিয়েছেন। প্রমাণ করেছেন মাতৃভাষা হল আমাদের মায়ের মতো। এই দিনটি আমাদের কাছে গৌরবের, তাই এই দিনটিকে পালন করা হয়।
৫. “ব্যক্তির ব্যক্তি হয়ে উঠতেই চাই ভাষা।” -এই কথার মমার্থ বিচার করো।
উত্তর: আবুল ফজল মনে করেন, ‘ভাষাই মানুষকে মানুষ করে তোলে।’ ভাষা ছাড়া মানুষ ভাব বিনিময় করতে পারে না। নিজেকে বিকশিত করতে পারে না। মানুষের সর্বাঙ্গীন বিকাশে ভাষা অপরিহার্য। তাই লেখকের মনে হয়েছে ব্যক্তির ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে মাতৃভাষা একমাত্র অবলম্বন।
৬. “মানুষ একই সঙ্গে প্রকাশ আর বিকাশধর্মী জীব”-একথা বলার কারণ কী?***
উত্তর : পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর মধ্যে মানুষ শ্রেষ্ঠ। এই শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম কারণ, সে নিজেকে প্রকাশ করতে পারে। অর্থাৎ তার ভাষা জ্ঞান আছে। তবে মানুষকে শুধু বেঁচে থাকলেই চলে না। তাকে সবার থেকে শ্রেষ্ঠ বলে প্রমাণ করতে হয়। আর এজন্যে প্রয়োজন নিজেকে প্রকাশ করা। যাঁরা প্রকাশ করতে পারেন তাঁরাই হলেন ‘বিকাশধর্মী জীব’।
৭. “মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকার দাবি”- কোন্ দাবিকে কেন বেঁচে থাকার দাবি বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।***
উত্তর: ‘একুশের তাৎপর্য’ কত গভীর সে কথা বোঝাতে আবুল ফজল অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। তিনি মনে করেন, মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার দাবি কত গভীর তা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন একুশে ফেব্রুয়ারির আন্দোলনের প্রাণদানকারী ভাষাপ্রেমীরা। তাঁরা প্রমাণ করে দিয়েছেন মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার শর্তই হল ভাষাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসা।
৮. একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটিতে কারা শহিদ হয়েছিলেন?
উত্তর: একুশে ফেব্রুয়ারির পাঁচজন ভাষা শহিদ হলেন- ১. আব্দুল সালাম, ২. রফিকউদ্দীন আহমেদ, ৩. সফিউর রহমান, ৪. আবদুল
বরকত ৫. আব্দুল জব্বার।
Long Question Answer
১. “এমন অনন্য দৃষ্টান্ত পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই।”- কোন্ দৃষ্টান্তের কথা বলা হয়েছে? সেই দৃষ্টান্ত ‘অনন্য’ কেন?***
উত্তর: মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার জন্যে একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাঙালি জাতি প্রতিবাদে-প্রতিরোধে এবং প্রাণের বিনিময়ে প্রমাণ করেছিলেন মাতৃভাষা হল জাতির অস্তিত্ব রক্ষার মূল চাবিকাঠি। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় এভাবে প্রাণের বিনিময় অন্য কোথাও দেখা যায়নি। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্ত বিরল।
• একুশে ফেব্রুয়ারির দৃষ্টান্ত পৃথিবীর কোথাও পাওয়া যায় না। আবুল ফজল লিখেছেন- একুশে ফেব্রুয়ারির শহিদেরা প্রাণ দিয়েছিলেন-প্রাণ দিয়ে তাঁরা শুধু আমদের মাতৃভাষা বাংলাকেই বাঁচাননি, আমাদেরও বাঁচার পথ করে দিয়েছেন।
এজন্যে ‘একুশের তাৎপর্য’ বোঝাতে গিয়ে আবুল ফজল জানিয়েছেন, এই সব বরেণ্য ভাষাপ্রেমীদের স্মৃতি আজও অমর হয়ে থাকবে। তাই এই দৃষ্টান্ত হলো ‘অনন্য’ দৃষ্টান্ত।
ব্যা ক র ণে র স হ জ পা ঠ
১. নিম্নলিখিত বিশেষ্য পদগুলিকে বিশেষণে এবং বিশেষণ পদগুলিকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত করো:
কেন্দ্র, সার্থক, সংস্কৃতি, জাত, সর্বাঙ্গীন, স্মরণীয়, সিক্ত, সচেতন।
উত্তর: কেন্দ্র (বি)-কেন্দ্রীয় (বিণ)
• সার্থক (বিণ)-সার্থকতা (বি)
• সংস্কৃতি (বি)-সাংস্কৃতিক (বিণ)
• জাত (বি) জাতীয় (বিণ)
• সর্বাঙ্গীণ (বিণ) সর্বাঙ্গ (বি)
স্মরণীয় (বিণ) স্মরণ (বি)
• সিক্ত (বিণ)-সিক্ততা (বি)
• সচেতন (বিণ)-সচেতনতা (বি)
২. নিম্নলিখিত শব্দগুলির বিপরীতার্থক শব্দ লেখো এবং সেই শব্দগুলি নিয়ে এক-একটি বাক্য রচনা করো: মানুষ, বাঁচা, গৌরব, সচেতন, স্মরণ, অক্ষম।
উত্তর: : অমানুষ = মেয়েটি সঙ্গ দোষে অমানুষে পরিণত হয়েছে।
মানুষ : মরা = গ্রামে ডাক্তারের অভাবে রোগীটি মারা গেল। বাঁচা
গৌরব : অগৌরব = বিদেশিদের কাছে খেলায় হেরে যাওয়া আমাদের অগৌরব। সচেতন: অচেতন = শিক্ষিত ব্যক্তিরা সময় সম্পর্কে অচেতন থাকেন
না।
স্মরণ : বিস্মরণ = সবকিছুই মনে আছে কোনো কিছুই বিস্মরণ
হয়নি।
অক্ষম : সক্ষম = পড়াশুনো করলে সবাই একদিন সক্ষম হবে।
৩. কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো।
৩.১ ভাষাই মানুষকে মানুষ করে তোলে।
উত্তর: কর্মকারকে ‘কে’ বিভক্তি।
৩.২ মানুষ একই সঙ্গে প্রকাশ আর বিকাশধর্মী জীব।
উত্তর: কর্তৃকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
৩.৩ মাতৃভাষার দাবি স্বভাবের দাবি।
উত্তর: সম্বন্ধপদে ‘এর’ বিভক্তি।
৩.৪ আমাদের সচেতন থাকতে হবে বছরের শুধু একদিন নয় সারা বছর ধরেই।
উত্তর : অধিকরণ কারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
৪. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো: প্রশ্ন, মানুষ, অপরিহার্য, আপস, স্মৃতি, গৌরব, সক্ষম, স্মরণ।
উত্তর : প্রশ্ন-উত্তর, মানুষ-অমানুষ, অপরিহার্য-পরিহার্য, আপস-দ্বন্দু, স্মৃতি-বিস্মৃতি, গৌরব-অগৌরব, সক্ষম-অক্ষম, স্মরণ-বিস্মরণ।