WBBSE Class 8 Bangla Chapter 1 বোঝাপড়া Solution | Bengali Medium

Class 8 Chapter 1 Solution

বোঝাপড়া

1. Short Question Answer

1. অনেক ঝঞ্ঝা কাটিয়ে বুঝি/এলে সুখের বন্দরেতে’-‘ঝঞ্ঝা কাটিয়ে আসা’ বলতে কী বোঝো?

উত্তর: প্রশ্নোক্ত অংশটি ‘বোঝাপড়া’ কবিতা থেকে গৃহীত হয়েছে। জীবনে সুখ-দুঃখ, বিরহ-আনন্দ, ব্যর্থতা-সাফল্য সবই আসতে পারে। জীবনের পথ চলার সময় এমন ঘাত-প্রতিঘাত আসাই স্বাভাবিক। কবি মনে করেন এই বাঁধা-বিপত্তির মধ্যে দিয়েই এগিয়ে যেতে হয়। তবেই ‘ঝঞ্ঝা কাটিয়ে’ ‘সুখের বন্দরেতে’ আসা যায়।

 2. জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত কোন্ পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়মিত লিখতেন?

উত্তর : জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি ছিল উনিশ শতকের নব জাগরণের অন্যতম পীঠস্থান। এখান থেকে প্রকাশিত হয়েছিল দুটি পত্রিকা- ‘ভারতী’ ও ‘বালক’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই দুটি পত্রিকাতে নিয়মিত লিখতেন।

3. ভারতের কোন্ প্রতিবেশী দেশে তাঁর লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসাবে গাওয়া হয়?

উত্তর : ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’ গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়।

5. ‘সেইটে সবার চেয়ে শ্রেয়।’-কোন্টি সবার চেয়ে শ্রেয়

উত্তর : উদ্ধৃত অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রণীত ‘বোঝাপড়া’ কবিতা থেকে গৃহীত হয়েছে। কবি মনে করেন, জীবনে নানা প্রতিকূলতা উপস্থিত হতে পারে, কিন্তু সেই অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করা বাঞ্ছনীয়। বিপক্ষের সঙ্গে কোনো মতান্তর বা বিবাদ না করে নিজের পথে চলাই ভালো।

2. Long Question Answer

1. লো মন্দ যাহাই আসুক সত্যেরে লও সহজে’।- তুমি কি কবির সঙ্গে একমত? জীবনে চলার পথে নানা বাধাকে তুমি কীভাবে অতিক্রম করতে চাও?

উত্তরের প্রথমাংশ: আলোচ্য অংশটি বিশ্ববরেণ্য কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বোঝাপড়া’ শীর্ষক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য অংশে যে মন্তব্যটি কবি করেছেন, আমি তার সঙ্গে সহমত পোষণ করি।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: জীবন বড়ো বিচিত্র। ভালো-মন্দ, দুঃখ যন্ত্রণা, আশা-আকাঙ্ক্ষা এই সব নিয়ে মানুষকে নিরন্তর পথ চলতে হয়। ফলে অনেক ঝঞ্ঝার মধ্যে দিয়ে, অনেক দুর্যোগের রাত পার হয়ে তবে সুখের বন্দরে পৌঁছানো সম্ভব হয়। কবির মনে হয়েছে, কারও সঙ্গে বিবাদ না করে, বিতর্কে না জড়িয়ে ভালো-মন্দ যাই আসুক না কেন সত্যকে গ্রহণ করাই কাম্য। কবির এমন সিদ্ধান্তের কারণ-

তোমার মাপে হয়নি সবাই।

তুমিও হওনি সবার মাপে, 

সুতরাং, এভাবে বুঝে পথ চললে ‘সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি।’ কোনো দোহাই না দিয়ে মনের সঙ্গে একরকমের বোঝাপড়া করে নেওয়া ভালো। কবি এজন্যে লিখেছেন-

মনেরে তাই কহ যে,

 ভালো মন্দ যাহাই আসুক 

সত্যেরে লও সহজে।

2. ‘মনেরে আজ কহ যে, ভালো মন্দ যাহাই আসুক/সত্যেরে লও সহজে’। -কবির মতো তুমি কি কখনও মনের সঙ্গে কথা বলো? সত্যকে মেনে নেবার জন্য মনকে তুমি কীভাবে বোঝাবে- একটি পরিস্থিতি কল্পনা করে বুঝিয়ে লেখো।

উত্তরের প্রথমাংশ: আলোচ্য অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসাধারণ একটি কবিতা ‘বোঝাপড়া’ থেকে গৃহীত হয়েছে। কবি রবীন্দ্রনাথের মতো আমিও অনেক সময় নিভৃতে মনের সঙ্গে কথা বলি।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: সত্য বড়ো কঠিন। তাকে মেনে নেওয়াও কঠিন। তবু কঠিন হলেও তাকে মেনে নিতে হয়। এটাই স্বাভাবিক। সত্যকে মেনে নেওয়ার জন্যে আমি মনকে সবসময় বোঝাতে থাকি এই বলে যে, একদিন নতুন সকাল আমার জীবনে আসবে। ছোটোবেলায় খেলার সময় এক বন্ধু আবির ছুঁড়ে দেওয়ায় আমার চোখের সমস্যা হয়। আমি প্রায় একমাস চোখে ভালোভাবে দেখতে পাইনি। ফলে পরীক্ষার ফল যথেষ্ট খারাপ হয়েছিল। সেই বন্ধুটি আমার কাছে বারবার ক্ষমা চেয়েছিল। আমি তাকে বলেছিলাম, অন্যভাবেও এই ক্ষতিটা হতে পারত।

সে বছর আমি পরীক্ষায় প্রথম হতে পারিনি। কিন্তু আমার চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। আমি কখনও পড়াশোনায় ফাঁকি দিইনি। পরের বছর আবারও প্রথম হয়েছিলাম। আসলে রবীন্দ্রনাথের ‘বোঝাপড়া’ কবিতার মধ্যে এই কথাটা সবথেকে বেশি প্রমাণিত যে, আমাদের জীবনে ভালো-মন্দ যাই আসুক না কেন, সত্যকে মেনে নিতে হয়।

3. ‘তেমন করে হাত বাড়ালে/সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি।’- ‘তেমন করে’ কথাটির অর্থ বুঝিয়ে দাও। এখানে কবি কী ধরনের সুখের ইঙ্গিত করেছেন- লেখো।

উত্তরের প্রথমাংশ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রণীত ‘বোঝাপড়া’ কবিতা থেকে গৃহীত এই বক্তব্যের তেমন করে বলতে কবি বুঝিয়েছেন, সমস্ত দুঃখ-যন্ত্রণা, নিরাশা-ব্যর্থতা থেকে সরে আসাকে। জীবনে চলার পথে অনেক সংকট উপস্থিত হতে পারে। কিন্তু কোনো বিতর্ক-বিবাদে না গিয়ে নিজের মতো পথ চলতে পারলেই সুখ পাওয়া যাবে। এই অর্থেই কবি ‘তেমন করে’ কথাটি ব্যবহার করেছেন।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: কবি রবীন্দ্রনাথ ধ্রুবপদের মতো বার বার বলেছেন, ‘ভালো মন্দ যাহাই আসুক/সত্যেরে লও সহজে।’ আসলে কবি মনে করেন আমরা কেউ কারও মাপে হইনি। আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের মতো। ফলে কারও সঙ্গে রেষারেষি বা বিদ্বেষ না করাই ভালো। যদি তা সম্ভব হয় তাহলে দেখা যাবে, বিশ্বভুবনের সবকিছুই আমাদের কাছে মধুময় হয়ে উঠছে। আর তখনই মৃত্যুর থেকে জীবন বরণীয় হয়ে ওঠে। এজন্যে কবি আলোচ্য এই উক্তিটি করেছেন।

কখন আঁধার ঘরে প্রদীপ জ্বালানো সম্ভব?

উত্তর: ‘বোঝাপড়া’ নামাঙ্কিত কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভালো-মন্দ যা আসুক না কেন সত্যকে সহজে গ্রহণ করার কথা বলেছেন। জীবনকে তিনি বর্ণময় করে তুলতে বলেছেন। ভাগ্যের পরিহাস বলে সব কিছুকে বিচার না করে কবি সহজ সত্যকে গ্রহণ করতে বলেছেন। কবির মতে দুঃখ-যন্ত্রণা, ভুল-ভ্রান্তি ভুলে মনে আনন্দের অনুসন্ধানই হল জীবনের লক্ষ্য। তাই এখানে অন্ধকার ঘরে প্রদীপ জ্বালানোর কথা বলা হয়েছে।

4. ‘ভুলে যা ভাই, কাহার সঙ্গে/কতটুকু তফাত হলো।’ -এই উদ্ধৃতির মধ্যে জীবনের চলার ক্ষেত্রে কোন্ পথের ঠিকানা মেলে?

উত্তর: উদ্ধৃত অংশটি বিশ্ববরেণ্য কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রণীত ‘বোঝাপড়া’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। কবি মনে করেন কে আমার থেকে কতখানি এগিয়ে থাকল সেই তুলনা না করাই ভালো। বরং নিজেকে সব দিক থেকে তৈরি করে সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যেই রয়েছে পরম প্রাপ্তির আনন্দ। কবি একই সঙ্গে জানিয়েছেন, অন্যের দোষ না ধরে, অন্যের সঙ্গে বিবাদ না করে এগিয়ে যেতে পারলে প্রকৃত শান্তি পাওয়া যায়।