WBBSE Class 8 Bangla Chapter 2 Solution | Bengali Medium

Class 8 Chapter 2 Solution

বনভোজনের ব্যাপার

1. Very Short Question Answer

1. বড়ো মিস বিশ্বাসের ক্লাস’- বড়ো মিস কী পড়াতেন?

উত্তর : নলিনী দাশ রচিত ‘নিখিল-বলা-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে বড়ো মিস ক্লাসে পড়াতেন সংস্কৃত ব্যাকরণ।

2. গণ্ডালু’ দলের কোনো ‘লু’-এর কাজ!” – এখানে ‘লু’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে এখানে ‘লু’ বলতে মালুর কথা বলা হয়েছে।

3. স্কুলে ভরতি হবার দিন কয়েক বাদে মালু কোথায় গিয়েছিল?

উত্তর: স্কুলে ভরতি হবার দিন কয়েক বাদে মালু তার মাসির বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল।

4. হয় যদি কবিতাটি মন্দ’-এই কথাটি কে লিখেছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃত এই উক্তিটি করেছিল মালু।

5. কার কবি খ্যাতি সারা স্কুলে ছড়িয়ে পড়েছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে দেখা যায় মালুর কবিখ্যাতি সারা স্কুলে ছড়িয়ে পড়েছিল।

 6. ‘নটি রত্নের গুণে ভরে ছিল জানি’- কোথায় নটি রত্ন ছিল?

উত্তর: রাজা বিক্রমাদিত্যের রাজসভায় নটি রত্ন ছিলেন। কালিদাস তাঁর মধ্যে অন্যতম।

7. ‘নিজ মুখে নিজ গুণ বলা নাহি যায়’- উদ্ধৃতাংশের বক্তা কে? 

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্য থেকে গৃহীত এই উক্তির বস্তা হল মালু।

8. পচা পচা ক্লাস/করে বারো মাস জীবন দুর্বিষহ।’ -এই কবিতাংশটি কার লেখা?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃত কবিতাংশটি লিখেছে মালু।

 9. সংঘ শুরু হলে বাঁচি।’ -এই কথাটি কে লিখেছে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে এই কথাটি লিখেছে বুলু।

 10. কিন্তু ছন্দ-টন্দ কিছু ঠিক থাকে না যে ছাই!’ -এই পঙক্তিটি কার লেখা?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃত পঙক্তিটি লিখেছে কালু।

11. মানে আমরা চার বন্ধু’ -এই চার বন্ধু কারা?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে চার বন্ধু হল- ১. মালু, ২. কালু ৩. বুলু, ৪. টুলু।

12. ‘গণ্ডালু-দলের’ সভাপতি কে হয়েছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে ‘গণ্ডালু-দলের’ সভাপতি হয়েছিল কালু।

13. ‘গণ্ডালু-দলের’ সহকারী সভাপতি কে হয়েছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে ‘গণ্ডালু-দলের’ সহকারী সভাপতি হয়েছিল বুলু।

14. ‘গণ্ডালু-দলের’ কোশাধ্যক্ষ কে হয়েছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে ‘গণ্ডালু-দলের’ কোশাধ্যক্ষ হয়েছিল মালু।

15. ‘গণ্ডালু-দলের’ সংঘ সম্পাদিকা কে হয়েছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে ‘গণ্ডালু-দলের’ সংঘ সম্পাদিকা হয়েছিল মালু।

16. ‘দু-ঘণ্টা সময় একসঙ্গে ফাঁক পাবে কখন শুনি?’ উদ্ধৃতাংশের বক্তা কে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গা-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃতাংশের বস্তা হল বুলু।

 17. তাহলে শনিবার বিকেলে-‘ উদ্ধৃতাংশটির বক্তা কে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃতাংশটির বক্তা হল মালু।

18. এবার আপত্তি তুলল’-কারা আপত্তি তুলেছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্য থেকে গৃহীত উদ্ধৃত এই অংশে বীণা, হাসি আর নন্দিতা আপত্তি তুলেছিল।

19. ‘কালু রেগে বলল’-কালু রেগে কী বলেছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে কালু জানিয়েছিল নাচ-গান শেখা এবং সুযোগমতো বাড়িও যাওয়া যদি নিত্য রুটিন হয়ে দাঁড়ায় তাহলে কবিতা চর্চা করতে হবে না।

20. ‘তবে অমন সভা চাই না’- কারা একথা বলেছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে কাজল আর বীণা এই কথা বলেছিল।

21. ‘মাথা গরম করিস না’-উদ্ধৃতাংশের বক্তা কে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্য থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশের বক্তা হল মালু।

22. ‘ভেবে ভেবে তো হদ্দ হলাম’- উদ্ধৃতাংশের বক্তা কে? 

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্য থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশের বস্তা হল বুলু।

23. ‘আমার কিন্তু ভাই বড্ড ভয় করছে!’ উদ্ধৃতাংশের বক্তা কে? 

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে আলোচ্য উক্তিটি করেছে বুলু।

24. ‘মণিকাদির যেন কেমন রাগ-রাগ ভাব।’- উদ্ধৃতাংশের বস্তা কে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে আলোচ্য উক্তিটি করেছে বুলু।

25. ‘ভাগ, ভীতু কোথাকার!’ -উদ্ধৃতাংশের বক্তা কে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে আলোচ্য উক্তিটি করেছে টুলু।

26. ‘সম্পাদিকার রিপোর্ট তৈরি আছে তো মালু?’ -উদ্ধৃতাংশের বক্তা কে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে আলোচ্য উক্তিটি করেছে কালু।

27. ‘এক ধাক্কায় ওকে জাগিয়ে দিলাম।’ কে কাকে জাগিয়ে দিয়েছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত। গদ্যে টুলু এক ধাক্কায় বুলুকে জাগিয়ে দিয়েছিল।

28. ‘ও বাবা- ভয় করছে!’ -উদ্ধৃতাংশের বক্তা কে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃতাংশ বক্তব্যটি করেছে বুলু।

29. ‘এসো- এসো- দাঁড়িয়ে আছ কেন?’ উদ্ধৃতাংশটির বক্তা কে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃতাংশ বক্তব্যটি করেছেন অণিমাদি।

30. মেয়েরা, খেতে শুরু করো।’ -উদ্ধৃতাংশটির বক্তা কে?.

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃত বক্তব্যটি করেছেন অণিমাদি।

31. ‘সভা আরম্ভ হোক।’ -উদ্ধৃতাংশটির বক্তা কে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃত বক্তব্যটি করেছেন মণিকাদি।

32. মণিকাদি কী প্রশ্ন করেছিলেন?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ গদ্যে মণিকাদি প্রশ্ন করেছিলেন- ‘তোমাদের সব কাজ কি কবিতায় হবে?’ 

34. . ‘আসিনি করিতে আমি মিঠে আলাপন’- উদ্ধৃতাংশ কবিতাটি কে লিখেছে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ গদ্যে উদ্ধৃতাংশ কবিতাটি লিখেছে কালু।

35. ‘পরীক্ষা পাশ করি যেন, আর মোর সাধ নেই কোনো’ -উদ্ধৃতাংশ কবিতাটি কে লিখেছে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃতাংশ কবিতাটি লিখেছে কাজল।

36. ‘রেখো গো আমারে মনে, এ মিনতি করি পদে।’ -উদ্ধৃতাংশ কবিতাটি কে লিখেছে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ গদ্যে উদ্ধৃতাংশ কবিতাটি লিখেছে বুলু। 

2. ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কোন্ কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন?

উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। 

3. তাঁর রচিত দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত দুটি গ্রন্থের নাম হলো ‘বোধোদয়’ এবং ‘কথামালা’।

 4. আরবেরা তাঁহার অনুসরণে বিরত হইলে, তিনি স্বপক্ষীয় শিবিরের উদ্দেশে গমন করিতে লাগিলেন। (জটিল বাক্যে)

উত্তর: যখন আরবেরা তাঁহার অনুসরণে বিরত হইল তখন তিনি স্বপক্ষীয় শিবিরের উদ্দেশ্যে গমন করিতে লাগিলেন।

5. আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীতে কোনও জাতিই আরবদিগের (ইতিবাচক বাক্যে) তুল্য নহে।

উত্তর: আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীতে আরবজাতি অতুলনীয়।

6. দ্বারদেশে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, তিনি সজ্জিত অশ্বের মুখরশ্মি ধারণ করিয়া দণ্ডায়মান আছেন। (যৌগিক বাক্যে)

উত্তর: দ্বারদেশে উপস্থিত হইলেন এবং দেখিলেন তিনি সজ্জিত অশ্বের মুখরশ্মি ধারণ করিয়া দন্ডায়মান আছেন।

7. এই বিপক্ষশিবির-মধ্যে, আমা অপেক্ষা আপনকার ঘোরতর (প্রশ্নবোধক বাক্যে) বিপক্ষে আর নাই।

উত্তর: এই বিপক্ষশিবির-মধ্যে আমা অপেক্ষা আপনকার ঘোরতর বিপক্ষ আর কেহ আছে কি?

8. তিনি নির্বিঘ্নে স্বপক্ষীয় শিবিরসন্নিবেশস্থানে উপস্থিত হইলেন। (না-সূচক বাক্যে)

উত্তর: তাঁর স্বপক্ষীয় শিবিরসন্নিবেশস্থানে উপস্থিত হইতে কোনো বিঘ্ন ঘটিল না।

অথবা

স্বপক্ষীয় শিবির সন্নিবেশ স্থানে উপস্থিত হইতে তিনি কোনো প্রকার বিঘ্নের সম্মুখীন হইলেন না।

  1. মধুসূদন দত্ত কোন্ কলেজের ছাত্র ছিলেন?

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত হিন্দু কলেজের ছাত্র ছিলেন।

  1. ‘পদ্মাবতী’ নাটকে তিনি কোন্ ছন্দ ব্যবহার করেছিলেন?

উত্তর: কবি মধুসূদন দত্ত তাঁর ‘পদ্মাবতী’ নাটকে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেছিলেন।

1. বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর: বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।

2. তাঁর রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তর: কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থ হল ‘গ্রহচ্যুত’ এবং ‘মানুষের মুখ’।

 3. সবুজ গাছেরা কোন্ পতঙ্গ পছন্দ করে?

উত্তর : বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ কবিতানুসারে সবুজ গাছেরা প্রজাপতি পছন্দ করে।

 4. গাছেরা কী ধরনের জামা পড়ে?

উত্তর: কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ নামাঙ্কিত কবিতায় দেখা যায় গাছেরা সবুজ রঙের জামা পরে।

5. তোতাইবাবুর পছন্দের রং কোন্টি?

উত্তর: কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ নামাঙ্কিত কবিতায় তোতাইবাবুর পছন্দের রং হল সবুজ।

6. তোতাইবাবু কী চেয়েছিল?

উত্তর: কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ নামাঙ্কিত কবিতায় তোতাইবাবু সবুজ রঙের জামা চেয়েছিল।

7. ‘ইস্কুলে যাবি’-কে কাকে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন?

উত্তর: কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ নামাঙ্কিত কবিতায় তোতাইবাবুর দাদু তোতাইবাবুকে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন।

8. গাছেরা কীভাবে দাঁড়িয়ে থাকে?

উত্তর: কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ নামাঙ্কিত কবিতায় গাছেরা একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকে।

9. তোতাইবাবু কী করতে চায় না?

উত্তর : কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ নামাঙ্কিত কবিতায় তোতাইবাবু স্কুলে গিয়ে অ-আ-ক-খ পড়তে চায় না।

10. ‘ইস্কুলে যাবে না’-কে ইস্কুলে যাবে না?

উত্তর : কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ নামাঙ্কিত কবিতায় তোতাইবাবু ইস্কুলে যাবে না।

11. তোতাইবাবু কাকে খেলা বলে মনে করে?

উত্তর: কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ কবিতায় তোতাইবাবু একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকাকে খেলা বলে মনে করে।

12. ‘চশমা ছাড়া চোখে দেখে না’-কে চশমা ছাড়া চোখে দেখেন না?

উত্তর : কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ কবিতায় তোতাইবাবুর দাদু চশমা ছাড়া চোখে দেখেন না।

2. Short Question Answer

1. ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে কোন্ কোন্ সেনাপতির প্রসঙ্গ রয়েছে?

উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে জনৈক আরব সেনাপতি এবং জনৈক মুর সেনাপতির প্রসঙ্গ রয়েছে।

2. ‘তিনি, এক আরব সেনাপতির পটমণ্ডপদ্বারে উপস্থিত হইয়া, আশ্রয় প্রার্থনা করিলেন।’-উদ্ধৃতাংশে ‘তিনি’ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিরচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটিতে ‘তিনি’ বলতে জনৈক মুর সেনাপতির কথা বলা হয়েছে।

3. ‘উভয় সেনাপতির কথোপকথন হইতে লাগিল।’- ‘উভয় সেনাপতি’ বলতে এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ‘উভয় সেনাপতি’ বলতে উদ্ধৃত প্রশ্নে আবর সেনাপতি ও মুরসেনাপতির কথা বলা হয়েছে।

4. ‘তাহা হইলে আমাদের উভয়ের প্রাণরক্ষার সম্ভাবনা’- প্রাণরক্ষার কোন্ উপায় বক্তা এক্ষেত্রে বলেছেন?

উত্তর: মুর সেনাপতি দ্রুত বেগে প্রস্থান করে সূর্যোদয়ের পূর্বেই যদি আরব সেনাপতির নাগালের বাইরে চলে যেতে পারেন, তাহলে উভয়ের সংঘর্ষের কোনো সম্ভাবনা থাকবে না, ফলে উভয়েরই প্রাণরক্ষা পাবে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরব সেনাপতি প্রাণরক্ষার এই উপায়ই ব্যক্ত করেছেন।

5. ‘আপনি সত্বর প্রস্থান করুন।’ বক্তা কেন উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে ‘সত্বর প্রস্থান’ করার নির্দেশ দিলেন?

উত্তর: ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পের আলোচ্য এই অংশে বক্তা অর্থাৎ আরব সেনাপতি তাঁর অতিথি মুর সেনাপতিকে রাতের অন্ধকারে ‘সত্বর প্রস্থান’ করার নির্দেশ দিলেন। কারণ সূর্যোদয় হলেই তিনি পিতৃহন্তা মুর সেনাপতির প্রাণনাশে প্রবৃত্ত হবেন।

7. ‘তাঁহার দিভ্রম জন্মিয়াছিল।’-এখানে কার কথা বলা হয়েছে? দিভ্রম হওয়ার পরিণতি কী হল?

উত্তরের প্রথমাংশ: বাংলা গদ্যের জনক পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে এক মুর সেনাপতির কথা এখানে বলা হয়েছে।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশঃ ‘দিভ্রম’ হওয়ার ফলে তিনি সঠিক দিনির্ণয় করতে পারলেন না। ক্ষুধায়, পিপাসায় ও ক্লান্তিতে অত্যন্ত পীড়িত অবস্থায় তিনি বিপক্ষ আরবসেনার শিবিরে উপস্থিত হলেন এবং আশ্রয় প্রার্থনা করলেন।

1. এমন চমকে গিয়েছিলাম’-চমকে যাওয়ার কারণ কী ছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে দেখা যায় ছুটির ঘণ্টার আগে ডেস্কের তলা দিয়ে একখানা দলা পাকানো কাগজ কথকের হাতে পৌঁছায়। হঠাৎ করে এমন কাগজ দেখে তিনি চমকে গিয়েছিলেন।

2. মাসির বাড়ি থেকে মালু কাকে চিঠি লিখেছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে দেখা যায়, মাসির বাড়ি থেকে মালু পদ্যে কালুকে একটি চিঠি লিখেছিল।

 3. লেখিকা তাঁদের ক্লাসে কটি মেয়ের কথা বলেছেন?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে লেখিকা তাঁদের ক্লাসে উনিশজন মেয়ের কথা বলেছেন।

4. উনিশটি মেয়েকে নিয়ে মালু যে কবিতা লিখেছিল তার নাম কী?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উনিশটি মেয়েকে নিয়ে মালু যে কবিতা লিখেছিল, তার নাম হল- ‘ঊনবিংশতি-রত্ন-কথা’।

5. সকলের মনে কবিত্ব জাগার কারণ কী বলে লেখক মনে করেছিলেন?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে দেখা যায় সকলের মনেই কবিত্ব জাগার কারণ হল বাদলা হাওয়া।

6. মালু তার কবিতার শেষে সংঘ করতে চেয়ে যে তিনটি চরণ লিখেছিল তা উদ্ধৃত করো।

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে মালু বারো মাস ক্লাসের পর ক্লাস করার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে নিখিল-বঙ্গঙ্গ কবিতা সংঘ স্থাপন করতে চেয়ে লিখেছিল-

নিখিল বঙ্গ

কবিতা সংঘ

আমরা স্থাপন করি

 7. বড়ো বড়ো হরফে লেখা’ বড়ো বড়ো হরফে কী লেখা ছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে বড়ো বড়ো হরফে লেখা ছিল- আমরা দুজন আছি দলে কাজল এবং বীণা বলে

8. অন্য কোণে কার লেখা?’ লেখাটি কার ছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে উদ্ধৃত অংশে যার লেখার কথা বলা হয়েছে, সে হল কালু। 

 9. সে নিজেই একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করল।’ উদ্ধৃত অংশে কে কার কাছে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে কালু সংস্কৃতের শিক্ষিকা মিস বিশ্বাসের কাছে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিল।

 10. দু-ঘণ্টা সময় একসঙ্গে ফাঁক পাবে কখন শুনি?’ -ফাঁক না পাওয়ার কারণ কী?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে বুলু জানিয়েছে- সকালে পড়া, বিকেলে খেলা, সন্ধ্যায় আবার পড়া; তারপরে খাওয়া আর ঘুম। এই সব কাজ করার পর দু-ঘণ্টা সময় একসঙ্গে পাওয়া কঠিন।

11. ‘বারে রবিবার তো বাড়ি যাই আমরা’ প্রশ্নোদ্ভূত অংশে ‘আমরা’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে প্রশ্নোদ্ভূত অংশে ‘আমরা’ বলতে কাজল, ললিতা আর বিজলীর কথা বলা হয়েছে।

12. এবার আপত্তি তুলল’-কারা আপত্তি তুলেছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্য থেকে গৃহীত উদ্ধৃত এই অংশে বীণা, হাসি আর নন্দিতা আপত্তি তুলেছিল।

13. ‘কালু রেগে বলল’-কালু রেগে কী বলেছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে কালু জানিয়েছিল নাচ-গান শেখা এবং সুযোগমতো বাড়িও যাওয়া যদি নিত্য রুটিন হয়ে দাঁড়ায় তাহলে কবিতা চর্চা করতে হবে না।

14. ইউরেকা’ বলে কে চেঁচিয়ে উঠেছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে কালু ‘ইউরেকা’ বলে চেঁচিয়ে উঠেছিল।

15. ‘মণিকাদিদিদের ঘর ঝাঁট দিতে এসেছে।’ -কে ঘর ঝাঁট দিতে এসেছে?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্য থেকে গৃহীত এই উদ্ধৃতাংশে দেখা যায় কেষ্ট দাসী মণিকাদিদিদের ঘর ঝাঁট দিতে এসেছে।

 16. মণিকাদি মেয়েদের কবিতা শুনে কী মন্তব্য করেছিলেন?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ গদ্যে মণিকাদি মেয়েদের কবিতা শুনে বলেছিলেন- সব সময়েই মেয়েরা যেন পরীক্ষা-বিরোধী কবিতা না লেখে।

17. ‘সভাঘর থেকে বেরিয়ে কালু কী বলেছিল?

উত্তর: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ গদ্যে সভাঘর থেকে বেরিয়ে কালু বলেছিল ‘আমাদের দিদিদের মতন ভালো টিচার কি কোনো স্কুলে আছেন।’

1. তোতাইয়ের সবুজ জামা চাই কেন?

উত্তর: তোতাইয়ের সবুজ জামা চাই কারণ, সে সবুজ জামা গায়ে পরে গাছের মতো সবুজ ও প্রাণবন্ত হয়ে প্রকৃতির মধ্যে মিশে থাকতে চায়।

2. সবুজ জামা আসলে কী?

উত্তর : বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ কবিতায় ‘সবুজ জামা’ আসলে প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর সবুজ পাতার আভরণ, যা বিশ্বপ্রকৃতির নবীন প্রাণের সংকেত বহন করে।

3. ‘এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তো খেলা।’ -এখানে কোন খেলার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ কবিতায় তোতাই-এর ভাষায় গাছের দাঁড়িয়ে থাকাকে মানুষের দু’পায়ের পরিবর্তে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার ক্রীড়ানৈপুণ্য হিসেবে তুলনা করা হয়েছে।

4. তোতাই সবুজ জামা পরলে কী কী ঘটনা ঘটবে?

উত্তর: তোতাই সবুজ জামা পরলে তার ডালে প্রজাপতি বসবে, তার কোলের ওপর টুপ করে নেমে আসবে একটা, দুটো, তিনটে লাল-নীল ফুল।

5. তোতাইবাবুকে কোথায় কী শিখতে বলা হয়েছে?

উত্তর: কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ নামাঙ্কিত কবিতায় তোতাইবাবুকে ইস্কুলে গিয়ে অ-আ-ক-খ শিখতে বলা হয়েছে।

6. ডালে প্রজাপতি বসবে’-কখন প্রজাপতি বসবে?

উত্তর : কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ কবিতায় তোতাইবাবু যখন সবুজ জামা পড়বে, তখন তার ডালে প্রজাপতি বসবে।

7. ‘কোলের ওপর নেমে আসবে’-কার কোলের ওপর কী নেমে আসবে?

উত্তর : কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ কবিতায় তোতাইবাবুর কোলের ওপর নেমে আসবে একটা, দুটো, তিনটে লাল-নীল ফুল।

3. Long Question Answer

1. আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীতে কোনও জাতিই আরবদিগের তুল্য নহে।’-এই বক্তব্যের সমর্থন গল্পে কীভাবে খুঁজে পেলে?

উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পের দ্বিতীয় স্তবকে বলেছেন, ‘আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীতে কোনো জাতিই আরবদিগের তুল্য নহে।’ আরবজাতি অত্যন্ত অতিথিবৎসল। কেউ অতিথি হিসেবে তাঁদের গৃহে উপস্থিত হলে তাঁরা সাধ্যানুসারে সেবা-যত্ন, আদর-আপ্যায়নের চেষ্টা করেন। আলোচ্য গল্পে আরব সেনাপতির দ্বারা পিতৃহন্তা মুর সেনাপতিকে আশ্রয় দান এবং যথোচিত সম্মানপূর্বক সেবা-শুশ্রুষা প্রদান- আরবজাতির সেই মহানুভবতার পরিচায়ক।

2. ‘সহসা আরব সেনাপতির মুখ বিবর্ণ হইয়া গেল।’- আরব সেনাপতির মুখ হঠাৎ বিবর্ণ হয়ে ওঠার কারণ কী?

উত্তর: পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘আতিথেয়তা বিষয়ে পৃথিবীতে কোনো জাতিই আরবদিগের তুল্য নহে।’

পথ ভুল করে শত্রুপক্ষ আরব সেনাপতির দ্বারে উপস্থিত হয়েছিলেন ক্লান্ত-শ্রান্ত-ক্ষুধার্ত মুর সেনাপতি। ইচ্ছা করলেই সেই সময় আরব সেনাপতি তাঁকে হত্যা করতে পারতেন। তিনি তা না করে অতিথি হিসাবেই আহার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন। অতঃপর বন্ধুভাবে তাঁর সঙ্গে গল্প শুরু করেন। উভয়েই নিজ পূর্বপুরুষগণের সাহস, পরাক্রম ও যুদ্ধ কৌশলের কাহিনি বলতে থাকেন। বিদ্যাসাগর লিখেছেন-

তাঁহারা, পরস্পর স্বীয় ও স্বীয় পূর্বপুরুষদিগের সাহস, পরাক্রম, সংগ্রাম কৌশল প্রভৃতির পরিচয় প্রদান করিতে লাগিলেন।

কথাপ্রসঙ্গে আরব সেনাপতি জানতে পারেন যে, আশ্রিত মুর সেনাপতি হলেন তাঁর পিতার হত্যাকারী। এই নিদারূণ সংবাদে তাঁর মনে প্রবল আক্রোশ জন্মায়। কিন্তু অতিথিবাৎসল্যের অক্ষমতায় অন্তরে যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়, তার প্রভাবেই তাঁর মুখ বিবর্ণ হয়ে ওঠে।

3. ‘সন্দিহানচিত্তে শয়ন করিলেন।’ -এখানে কার মনের সন্দেহের কথা বলে হয়েছে? তাঁর মনের এই সন্দেহের কারণ কী?

উত্তরের প্রথমাংশ: বাংলা গদ্যের পথপ্রদর্শক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে মুর সেনাপতির মনের সন্দেহের কথা বলা হয়েছে।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশঃ আশ্রয়দাতা আরব সেনাপতি বন্ধুভাবে আশ্রিত মুর সেনাপতির সঙ্গে আলাপ শুরু করেন। উভয়েই তাঁদের পূর্বপুরুষগণের সাহস, পরাক্রম ও যুদ্ধকৌশলের বীরত্বব্যঞ্জক কাহিনি

ব্যক্ত করেন। আরবসেনাপতি হঠাৎ-ই মুখ বিবর্ণ করে সেখান থেকে প্রস্থান করেন এবং কিছুক্ষণ বাদে তাঁর অসুস্থতার সংবাদ পাঠান।

আরব সেনাপতি দূত মাধ্যমে জানান-

ক) মুর সেনাপতি যেন আহারসামগ্রী গ্রহণ করেন এবং সময়মতো শয়ন করেন।

খ) মুর সেনাপতি যেন অতি প্রত্যুষে প্রস্থান করেন।

গ) একটি দ্রুতগামী তেজস্বী অশ্ব তাঁর জন্যে উপস্থিত থাকবে, তিনি যেন তা ব্যবহার করেন।

যথোপযুক্ত সুব্যবস্থা সত্ত্বেও অতিথিবৎসল আরব সেনাপতির অনুপস্থিতিতে মুর সেনাপতি কিছুটা ক্ষুণ্ণ এবং সন্দিহানচিত্ত হন।

4. ‘…তাঁহার অনুসরণ করিতেছিল…’-কে, কাকে অনুসরণ করছিলেন? তাঁর এই অনুসরণের কারণ কী?

উত্তরের প্রথমাংশ: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিরচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরব সেনাপতি মুর সেনাপতিকে অনুসরণ করেছিলেন।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: আরব সেনাপতি কথা প্রসঙ্গে জানতে পেরেছিলেন, মুর সেনাপতি হলেন আরব সেনাপতির পিতার হত্যাকারী। শর্তানুসারে পূর্বরাত্রের অতিথিই সূর্যোদয়ের সাথে সাথে আরব

সেনাপতির কাছে চরমশত্রু রূপে পরিগণিত হয়েছেন। পিতার প্রাণহন্তার শাস্তি দেওয়ার সংকল্পে আরব সেনাপতি মুর সেনাপতিকে অনুসরণ করেছেন।

5. ‘যাহাতে আপনি সত্বর প্রস্থান করিতে পারেন, তদ্বিষয়ে যথোপযুক্ত আনুকূল্য করিব।’

উত্তর: বাংলা গদ্যের জনক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিরচিত ‘আখ্যানমঞ্জুরী’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্প থেকে উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত হয়েছে।

অসুস্থ আরব সেনাপতি আশ্রিত মুরসেনাপতির আহার, বিশ্রাম ও প্রভাতে প্রস্থানের যে সুবন্দোবস্ত করেছেন সেই সংবাদ প্রদান প্রসঙ্গে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জানিয়েছেন, ‘কেহ অতিথিভাবে আরবদিগের আলয় উপস্থিত হইলে, তাঁহারা সাধ্যানুসারে তাহার পরিচর্যা করেন’। অতিথি যদি শত্রুও হন তবু বিদ্বেষ পোষণ করেন না। এ হল আরবজাতির নৈতিকতাবোধের পরিচায়ক। মুর সেনাপতিকে আহার-আশ্রয়-পালানোর সমস্ত ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন আরব সেনাপতি। আলোচ্য অংশটিতে আরবসেনাপতির মাধ্যমে আরবজাতির সেই মহানুভবতার পরিচয় আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

6. ‘এই বিপক্ষ শিবির-মধ্যে, আমা অপেক্ষা আপনকার ঘোরতর • বিপক্ষ আর নাই।’

উত্তর: বাংলা গদ্যের জনক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিরচিত ‘আখ্যানমঞ্জুরী’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্প থেকে প্রশ্নোক্ত অংশটি সংকলিত হয়েছে।

আশ্রিত মুরসেনাপতিকে বিদায়দানকালে আরব সেনাপতি উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।

কথাপ্রসঙ্গে আরব সেনাপতি জানতে পেরেছেন যে আশ্রিত মুর সেনাপতিই তাঁর পিতার প্রাণহন্তা। শোনামাত্র তাঁর অন্তরে তীব্র প্রতিশোধ স্পৃহা জাগ্রত হয়েছে। মুর সেনাপতি তাঁর আশ্রিত বলেই শুধুমাত্র তিনি নিজেকে সংযত রেখেছেন। অতিথিকে বিদায়দানকালে ও উদ্ধৃত উক্তিটির দ্বারা তাঁর অন্তরের যে বিতৃষ্ণা তার পরিচয় দিয়েছেন। এই বক্তব্যের দ্বারা তিনি শত্রুপক্ষের সেনাপতিকে শত্রুতা সম্পর্কে সচেতনও করেছেন।

7. ‘আমাদের জাতীয় ধর্ম এই, প্রাণান্ত ও সর্বস্বান্ত হইলেও, অতিথির অনিষ্ট চিন্তা করি না।’

উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘আখ্যানমঞ্জুরী’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্প থেকে উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত হয়েছে।

আশ্রিত মুর সেনাপতিই আরব সেনাপতির পিতার প্রাণহন্তা। কিন্তু আরবজাতি কোনো অবস্থাতেই অতিথি পরিচর্যার ত্রুটি করেন না। তাই মুর সেনাপতি আরব সেনাপতির শিবিরে উপস্থিত হলেও তিনি আহার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন। এমনকি তাঁকে নিরাপদে নিজের শিবিরে পৌঁছে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

উক্তিটির মধ্য দিয়ে আরবজাতির প্রবল নৈতিকতাবোধের পরিচয় হ ফুটে উঠেছে।

8. গল্পে কার আতিথেয়তার কথা রয়েছে? তিনি কীভাবে অতিথির আতিথেয়তা করেন? তাঁর সেই আতিথেয়তাকে ‘অদ্ভুত’ অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে কেন?

উত্তরের প্রথমাংশ: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরব সেনাপতির আতিথেয়তার কথা রয়েছে।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশঃ তিনি সাধ্যমতো অতিথির পরিচর্যার চেষ্টা করেছেন। অতিথি শত্রুপক্ষ হলেও কিছুমাত্র অনাদর বা বিদ্বেষ প্রকাশ করেননি। বরং বিরোধিতার কথা ভুলে গিয়ে বন্ধুভাবে কাছে টেনে নিয়েছেন।

উত্তরের তৃতীয়াংশ: আরবজাতি অত্যন্ত অতিথিবৎসল হিসাবে জগতে পরিচিত। আলোচ্য পাঠ্যাংশে তার পরিচয় পাই। আরব সেনাপতি শত্রুপক্ষের আশ্রয়প্রার্থী সেনাপতিকে প্রসন্নচিত্তে অতিথিরূপে গ্রহণ করেছেন।

আশ্রিত মুর সেনাপতিই তাঁর পিতার প্রাণহন্তা- এই তথ্য জানার পরেও আরব সেনাপতি নিজেকে সংযত রেখেছেন। এমনকি অতিথির পরিচর্যায় কোনো ত্রুটি করেননি। আবার অতিথিভাব অন্তর্হিত হলে চরম শত্রুরূপে মুর সেনাপতিকে গণ্য করেছেন। ঘোরতর শত্রুর প্রতি আরব সেনাপতির এইরূপ অস্বাভাবিক ব্যবহারকেই লেখক ‘অদ্ভুত’ আখ্যা দিয়েছেন।

9. আরব-মুর সংঘর্ষের ইতিহাসাশ্রিত কাহিনি অবলম্বনে রচিত এই আখ্যানে লেখকের রচনাশৈলীর অনন্যতার পরিচয় দাও।

উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর হলেন বাংলা গদ্যের জনক। ‘আখ্যানমঞ্জুরী’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে তিনি আরব-মুর সংঘর্ষের ইতিহাসাশ্রিত কাহিনিকে অত্যন্ত সাবলীল ও প্রাঞ্জল গদ্যে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। গদ্যকে মনের ভাব প্রকাশের যথার্থ বাহন রূপে ব্যবহার করেছেন। লক্ষণীয় যে-

ক) বিদ্যাসাগরের এই গল্পের ভাষা তৎসম শব্দ সমৃদ্ধ।

খ) সাধু ভাষায় লিখলেও এ ভাষা আন্তরিক ও সুন্দর।

গ) পাহাড়ের ছবি, আরবদের তাঁবু, সেনাপতিদের যাঁরা পূর্বপুরুষ তাঁদের বীরত্ব, দ্রুতগামী অশ্বের বর্ণনা ইত্যাদি অসাধারণ হয়েছে।

ঘ) ইতিহাসের কাহিনি এখানে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। এখানেই লেখকের রচনাশৈলীর অনন্যতা।

10. ‘আতিথেয়তা বিষয় পৃথিবীর কোনও জাতিই আরবদিগের তুল্য নহে’। গল্পের ঘটনা বিশ্লেষণ করে মন্তব্যটির যথার্থতা প্রতিপন্ন করো।

উত্তর: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পে আরব এবং মুরদের মধ্যে সংগ্রাম চলাকালীন পরিস্থিতিতে এক মুর সেনাপতি দিক্ বিভ্রান্ত হয়ে ক্ষুধা-পিপাসা-ক্লান্তিতে আরব সেনাপতির শিবিরে উপস্থিত হন এবং আশ্রয় প্রার্থনা করেন। আরব সেনাপতি সমস্ত দ্বন্দু ভুলে গিয়ে বন্ধুভাবে অতিথিকে আপ্যায়ন করেন এবং সাধ্যমতো পরিচর্যা করেন।

কথাপ্রসঙ্গে জানতে পারেন, আশ্রিত মুর সেনাপতিই তাঁর পিতার হত্যাকারী। তৎসত্ত্বেও আরব সেনাপতি নিজেকে সংযত রেখে এই ঘোরতর শত্রুকে যথোচিত মর্যাদায় পরদিন প্রভাতে বিদায় জানান। এই ঘটনা আরবজাতির অতিথিবাৎসল্যের তুলনাহীন মহিমাকেই প্রতিষ্ঠিত করে।

11. ‘বন্ধুভাবে উভয় সেনাপতির কথোপকথন হইতে লাগিল।’- কোন্ দুই সেনাপতির কথা এখানে বলা হয়েছে? তাঁদের কীভাবে সাক্ষাৎ ঘটেছিল? উভয়ের কথোপকথনের সারমর্ম নিজের ভাষায় আলোচনা করো।

উত্তরের প্রথমাংশ: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পের উদ্ধৃতাংশটিতে মুর সেনাপতি এবং আরব সেনাপতির কথা বলা হয়েছে।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: ক্ষুধায়-পিপাসায়-ক্লান্তিতে পীড়িত মুর সেনাপতি আরব সেনাপতির শিবিরে উপস্থিত হয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করলে উভয়ের সাক্ষাৎ ঘটে।

উত্তরের তৃতীয়াংশ: সমগ্র গল্পটিতে আরব সেনাপতি ও মুর সেনাপতির দু’বার কথোপকথন রয়েছে। আহার গ্রহণের দ্বারা মুর সেনাপতি কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে আরব সেনাপতি তাঁর সঙ্গে আলাপ করেন। উভয়েই নিজের এবং পূর্বপুরুষগণের সাহস, পরাক্রম ও যুদ্ধকৌশলের বীরত্বব্যঞ্জক কাহিনি পরিবেশন করেন। আরব সেনাপতি জানতে পারেন, মুর সেনাপতি হলেন তাঁর পিতার হত্যাকারী। তিনি তৎক্ষণাৎ নিজেকে সংযত করেন এবং প্রস্থান করেন। কিন্তু অতিথি আপ্যায়নের কোনো ত্রুটি রাখেননি।

শত্রুর প্রতি বিরাগ সত্ত্বেও যথোচিত সম্মানের সঙ্গে তিনি মুর সেনাপতিকে নিজ সেনানিবাসে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করেন। আরব সেনাপতি জানান-

আপনি সত্বর প্রস্থান করুন। আমাদের জাতীয় ধর্ম এই, প্রাণান্ত ও সর্বস্বান্ত হইলেও, অতিথির অনিষ্টচিন্তা করি না। শত্রুকে কাছে পেয়েও তাঁকে হত্যা না করে নিজের শিবিরে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন আরব সেনাপতি।

12. ‘তিনি নির্বিঘ্নে স্বপক্ষীয় শিবিরসন্নিবেশ স্থানে উপস্থিত হইলেন।’-কার কথা বলা হয়েছে? কীভাবে তিনি স্বপক্ষের শিবিরে নির্বিঘ্নে পৌঁছলেন? তাঁর জীবনের এই ঘটনার পূর্বরাত্রের অভিজ্ঞতার কথা নিজের ভাষায় আলোচনা করো।

উত্তরের প্রথমাংশ: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিরচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পের আলোচ্য এই অংশে মুর সেনাপতির কথা বলা হয়েছে।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: আরব সেনাপতি প্রদত্ত সুস্থ, সবল এবং দ্রুতগামী অশ্বের সহায়তার তিনি স্বপক্ষের শিবিরে নির্বিঘ্নে পৌঁছলেন।

উত্তরের তৃতীয়াংশ: দিবিভ্রান্ত হয়ে ক্ষুধা, পিপাসা ও ক্লান্তিতে অত্যন্ত পীড়িত মুর সেনাপতি আরব সেনাপতির শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। আরব সেনাপতির চরমশত্রুকেও বন্ধুভাবে গ্রহণ এবং সাধ্যমতো সেবাশুশ্রুষা দান তাঁকে মুগ্ধ করে।

আবর সেনাপতির সৌজন্যে আরবজাতির সহনশীলতা ও মহানুভবতার অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতায় তিনি ঋদ্ধ হন।

13. ‘তাঁহার অনুসরণ করিতেছিলেন…’ কার কথা বলা হয়েছে? তিনি কাকে অনুসরণ করছিলেন? তাঁর এই অনুসরণ করার কারণ কী? শত্রুকে কাছে পেয়েও তিনি ‘বৈরসাধন সংকল্প’ সাধন করেননি কেন?

উত্তরের প্রথমাংশ: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিরচিত ‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গল্পের আলোচ্য অংশে আরব সেনাপতির কথা বলা হয়েছে।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: তিনি মুর সেনাপতিকে অনুসরণ করছিলেন। উত্তরের তৃতীয়াংশ: পিতার প্রাণহন্তার বিনাশ সাধন তথা প্রতিশোধস্পৃহাই এই অনুসরণের কারণ।

উত্তরের চতুর্থাংশ: শত্রু মুর সেনাপতি অত্যন্ত পীড়িত অবস্থায় তাঁর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। অতিথির অনিষ্ট চিন্তাকে আরবজাতি গর্হিত কর্ম বলে মনে করেন। তাঁদের অতিথিবাৎসল্যহৃদয় সর্বজনবন্দিত। আশ্রিতের প্রতি যথার্থ মর্যাদাপ্রদানের কারণেই তিনি শত্রুকে কাছে পেয়েও ‘বৈরসাধন সংকল্প’ সাধন করেননি।

1. কিন্তু কার সাধ্য যে আমাদের দমিয়ে দেয়।’ বক্তা কে? কোন্ প্রসঙ্গে এই বক্তব্য এই বক্তব্যের কারণ কী?

উত্তরের প্রথমাংশ: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা- সংঘ’ গদ্যে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছে টুলু।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: প্রতিনিয়ত নিয়ম মেনে পড়া তৈরি করা যখন মেয়েদের মনকে নিরানন্দ করেছিল তখন তাদের মাথায় এসেছিল তারা ‘নিখিল বঙ্গ কবিতা সংঘ’ তৈরি করবে। সেই মতো যত পরিকল্পনা। একটা সাংঘাতিক উত্তেজনায় ক্লাসের পড়ায় অবশ্য ঘাটতি শুরু হল। সেই প্রসঙ্গে এই উক্তি।

উত্তরের তৃতীয়াংশ: বড়ো মিস বিশ্বাসের সংস্কৃত ব্যাকরণের ক্লাস বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নেহাত বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছিল। দীর্ঘ একটানা নীরস বক্তব্য শোনার ফাঁকে তাদের মন কবিতা লেখায় উদ্দীপ্ত হয়ে উঠেছিল। সেই মতো তারা কবিতা সংঘ তৈরিতে উদ্যোগী হয়। খাবার ঘরে সেই আয়োজন চলে। কয়েকদিন ধরে নানা পরিকল্পনার ছক তৈরি করা হয়। সাহিত্য সভার ব্যবস্থা হতেই অদ্ভুত এক মন্ত্রবলে সবার মন-মেজাজ ভালো হয়ে যায়। একটা সাংঘাতিক গোপন উত্তেজনা তাদের মনের মধ্যে কাজ করে। ক্লাসের পড়া ভুল হলেও তাদের সেই উৎসাহ উদ্দীপনাকে দমিয়ে রাখা যায়নি।

2. ‘এ কী সত্যি না স্বপ্ন?’ কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি? কোন্ দৃশ্য দেখে বক্তার এমনটি মনে হয়েছিল?

উত্তরের প্রমথাংশ: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা- সংঘ’ গদ্যে মাঝ রাতে খাওয়ার ঘরের দরজা খুলে মেয়েরা সবাই হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল। তারা হকচকিয়ে থমকে দাঁড়িয়েছিল। সেই প্রসঙ্গে এই উক্তি।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: ‘গণ্ডালু-দলে’র চার বন্ধু মালু, কালু, বুলু আর কথক অর্থাৎ টুলু মিলে যে কবিতা সংঘের আয়োজন করেছিল মাঝরাতে খাওয়ার ঘরে ছিল তার গোপন মিটিং। মাঝরাতে দল বেঁধে তারা ঘরে ঢুকতে দেখে রীতিমতো উৎসবের আয়োজন। যেমন-

ক। ঘরখানা আলোয় ঝলমল করছিল।

খ। বড় টেবিলে শৌখিন সাদা ফুল কাটা চাদর পাতা ছিল।

গ। পিতলের ফুলদানিতে সাজানো ছিল পদ্ম আর গোলাপ।

ঘ। কাচের বাসনে ছিল খাবারের নানা আয়োজন।

রীতিমতো চোখ জুড়ানো পোশাকে হাজির ছিল মণিকাদি, অণিমাদি, হিরণদি এমনকি বড়োমিস পর্যন্ত সবাই। অদ্ভুত এক বিস্ময়ে কথকের মনে হয় সে যেন স্বপ্ন দেখছে।

3. ‘দু-একজনের চাপা-হাসি শোনা গেল।’- কোন্ প্রসঙ্গে এই বক্তব্য? চাপা-হাসি শোনার কারণ কী?

উত্তরের প্রথমাংশ: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ- কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে সপ্রতিভ ডানপিটে মেয়ে কালু অপ্রস্তুতভাবে কাঁপা গলায় সভা আরম্ভের সূচনায় বলেছিল ‘ভদ্রমহিলা আর মহোদয়গণ!’ কিন্তু ‘মহোদয়গণ’ বলতে কারা সে বিষয়ে চাপা হাসি শোনা যেতেই আলোচ্য এই প্রসঙ্গটি এসেছে।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: মণিকাদি কালুকে বলেছিলেন সভানেত্রী অর্থাৎ কালু যেন সভার কাজ শুরু করে দেয়। স্কুলে দিদিমণিরা সমস্ত খবরই রাখেন। মেয়েরা সবাই বসে পড়ে এবং তাদেরকে উদ্দেশ্য করে অণিমাদি বলেন, সামনে যে খাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে তা যেন মেয়েরা খাওয়া শুরু করে। সামনে ছিল মস্ত বড়ো কেক, নানারকমের সন্দেশ, বিভিন্ন মিষ্টি, বড়ো বড়ো আপেল ও মর্তমান কলা। মণিকাদি নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘সভা আরম্ভ হোক’। অভিভূত কালু কাঁপা গলায় সেইসময় যে বক্তব্য রাখতে চলেছিল তারই প্রেক্ষিতে ফিসফিস করে প্রশ্ন ওঠে ‘মহোদয় কেরে?’ অর্থাৎ ডানপিটে কালুও যে উত্তেজনায়-আবেগে-বিস্ময়ে অবাক হয়ে গিয়েছিল তার প্রমাণ আলোচ্য এই বক্তব্যে উঠে এসেছে।

4. ‘আর ঢুকেই হকচকিয়ে থমকে দাঁড়ালাম।’ -কারা কোথায় প্রবেশ করে হকচকিয়ে গিয়েছিল? তাদের এমন অবস্থার কারণ কী ছিল?

উত্তরের প্রথমাংশ: সুখ্যাত লেখিকা নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ নামাঙ্কিত গদ্যে দেখা যায় ছোটো ছোটো সদস্যরা পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুসারে রাত বারোটায় বোর্ডিং-এর খাবার ঘরে প্রবেশ করে সবিস্ময়ে হকচকিয়ে গিয়েছিল।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: অধিবেশনের জন্য বোর্ডিং-এর খাবার ঘরে সবাই একত্রিত হবে এটাই ছিল পূর্ব মীমাংসিত সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে মাঝরাতে ট্রেনটা চলে যাবার পর সাবধানে খাবার ঘরের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই তারা হতভম্ব হয়ে যায়। তাদের মনে হয়, ‘একি সত্য না স্বপ্ন? ঘটনা না কল্পনা?’ তাদের এমনটি মনে হওয়ার কারণ, তারা দেখেছিল মাঝের বড়ো টেবিলে শৌখিন সাদা চাদর পাতা ছিল। বড়ো বড়ো পিতলের ফুলদানিতে ছিল অপূর্বভাবে সজ্জিত পদ্ম আর গোলাপের সারি। কাঁচের বাসনে সজ্জিত ছিল নানারকম খাদ্যের তালিকা। যেমন-

১. মস্ত বড়ো কেক

২. নানা রকম সন্দেশ

৩. বিভিন্ন মিষ্টির আয়োজন

৪. বড়ো বড়ো আপেল ও মর্তমান কলা

টেবিলের চারদিকে চেয়ার সাজানো ছিল। তারই একদিকে স্কুলের দিদিমণিরা বসেছিলেন। মণিকাদি, অণিমাদি, হিরণদি এমনকি মিস্ বিশ্বাস পর্যন্ত। এই দৃশ্য দেখে স্কুলের মেয়েরা হকচকিয়ে গিয়েছিল।

5. ‘আমাদের দিদিদের মতন ভালো টিচার কি কোনো স্কুলে আছেন?’-বক্তা কে? কোন্ প্রসঙ্গে এই বক্তব্য? এই বক্তব্যের কারণ কী?

উত্তরের প্রথমাংশ: নলিনী দাশ প্রণীত ‘নিখিল-বঙ্গ- কবিতা-সংঘ’ । গদ্যে সপ্রতিভ ডানপিটে মেয়ে কালু হল উক্তিটির বস্তা।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: মেয়েদের প্রস্তাব অনুসারে ঠিক হয়েছিল পরের সপ্তাহ থেকেই সোম-মঙ্গল-বুধ এবং বৃহস্পতিবারে সকাল-সন্ধ্যা পড়ার ঘণ্টা পনেরো মিনিট করে বাড়িয়ে দেওয়া হবে। আর তার পরিবর্তে শুক্রবার সন্ধেবেলা পড়ার ঘণ্টা থাকবে না। তখন মেয়েদের সাহিত্যসভা, গানের আসর বা অভিনয় ইত্যাদি হবে। দিদিমণিদের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচ্য এই উক্তিটি করা হয়েছে।

উত্তরের তৃতীয়াংশ: অণিমাদি মেয়েদের লেখা পড়ে উচ্চপ্রশংসা করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, মেয়েরা যেন লেখার অভ্যাস ছেড়ে না দেয়। সেইসঙ্গে মণিকাদির অনুরোধ ছিল, ‘সব সময়েই পরীক্ষা-বিরোধী কবিতা লিখো না।’ সেই প্রসঙ্গে দিদিমণিদের উদারতা, মানবিকতা ও উৎসাহপ্রদানের বিষয়টিকে দেখে অভিভূত কালু এই মন্তব্যটি করেছে।

6. ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ রচনাটির নামকরণের তাৎপর্য বিচার করো।

উত্তর: ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ রচনাটির বিষয় বলে দেয় সাহিত্য-সাংস্কৃতির আয়োজন আমাদের মনের চিন্তা-শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। পাঠ্যবই আমাদের বিদ্যাচর্চাকে অব্যাহত রাখে ঠিকই; কিন্তু নাচ-গান-কবিতা আমাদের সৃজনশীলতাকে বাঁচিয়ে রাখে। তাই ক্লাসে বসেই মেয়েরা ঠিক করে তারা ‘কবিতা সংঘ’ তৈরি করে কাব্যচর্চা করবে। 

তাদের এই সুস্থ চিন্তা-চেতনার সঙ্গে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারাও যুক্ত হন। তাঁরাও চান শিক্ষার বাইরে অন্য আর এক বিকল্প সুস্থ সংস্কৃতি গড়ে উঠুক। এই ভাবনাকেই মনে রেখে ‘নিখিল-বঙ্গ-কবিতা-সংঘ’ তৈরি হয়। কাহিনির মূল বিষয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে এই নামকরণটি যথাযথ হয়েছে বলেই মনে হয়

  1. ‘দাদু যেন কেমন, চশমা ছাড়া চোখে দেখে না।’-এই পঙ্ক্তির মধ্যে ‘যেন’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে কেন? এই রকম আর কী কী শব্দ দিয়ে একই কাজ করা যায়?

উত্তরের প্রথমাংশ: রবীন্দ্রোত্তর কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ কবিতা থেকে সংকলিত হয়েছে আলোচ্য অংশটি। গাছেরা যেমন সবুজ আচ্ছাদনে আবৃত থাকে; তেমনি তোতাইও সবুজ জামা পড়তে চায়। গাছের মতো সেও একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে চায়। কিন্তু এমন অকল্পনীয় বিষয় মেনে নিতে চায় না তোতাইয়ের দাদু।

আসলে প্রবীণ মানুষেরা দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় বাস্তবের কাঠিন্য ও জটিলতার প্রকৃত রূপটি সম্পর্কে সচেতন। তোতাইবাবুর সহজ সরল শিশুহৃদয় এত কিছু বোঝে না। তাই চশমাধারী দাদুর কর্মতৎপরতাহীন মানসিকতা তার মনে বিস্ময় ও সংশয় জাগায়। শিশুপ্রাণের এই বিস্ময় ও সংশয়ের ভাবটি পরিস্ফুটিত করবার জন্যই কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আলোচ্য পঙ্ক্তির মধ্যে ‘যেন’ অব্যয়টি ব্যবহার করেছেন।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: ‘যেন’ হল সংশয়বাচক অব্যয়। এরকম অব্যয় হল-হয়তো, বুঝি।

  1. ‘সবুজ জামা’ কবিতায় তোতাইয়ের সবুজ জামা চাওয়ার মাধ্যমে কবি কী কী বলতে চাইছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: রবীন্দ্রোত্তর কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘সবুজ জামা’ কবিতায় দুটি চরিত্র রয়েছে। যথা-

ক। তোতাইবাবু

খ। দাদু

তোতাইবাবু কল্পনাপ্রিয় বালক। সে গাছের মতো সবুজ জামা পড়তে চায়। এমনকি একপায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু তার দাদু এই ইচ্ছেকে মানতে পারেনা। তিনি বাস্তব বুদ্ধি দিয়ে অনুভব করেন-

ক। তোতাইবাবু এখন বর্ণ পরিচয়ে মন দেবে।

খ। নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাবে।

গ। সে পাঠের প্রতি একনিষ্ঠ হবে।

কিন্তু নবীন প্রজন্মের প্রতিনিধি তোতাইবাবু চায় গাছের মতো প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে। প্রকৃতির মধ্যে নিজেকে মেলে দিয়ে সে জটিলতামুক্ত পৃথিবীতে নতুনভাবে বাঁচার পথ খুঁজতে চায়। বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের এই তোতাইবাবু যেন বিভূতিভূষণের কল্পনাপ্রিয় বালক অপু।

  1. ‘ইস্কুল’ শব্দটির ধ্বনিতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা লেখো এবং একই রকম  আরও দুটি শব্দ লেখো।

উত্তরের প্রথমাংশ: কোনো শব্দের প্রথমে যদি কোনো স্বরবর্ণের আগম ঘটে তখন তাকে আদি স্বরাগম বলে। ‘স্কুল’ (School) শব্দটির প্রথমে ‘ই’ ধ্বনির আগমন ঘটেছে। তাই এটি হয়েছে আদি স্বরাগম।

অর্থাৎ-

স্কুল > ইস্কুল (‘ই’ ধ্বনির আগমন)

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ:

অনুরূপ শব্দ- ১। স্টিমার > ইস্টিমার

        ২। স্টেশন > ইস্টিশন

                   ৩। স্টেট > এস্টেট

 1. মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর ‘প্রিয় ও পুরাতন বন্ধু’ গৌরদাস বসাককে কোথা থেকে পাঠ্য চিঠিটি লিখেছিলেন? তাঁর যাত্রাপথের বিবরণ পত্রটিতে কীভাবে ধরা পড়েছে আলোচনা করো।

উত্তরের প্রথমাংশ: মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর ‘প্রিয় ও পুরাতন বন্ধু’ গৌরদাস বসাককে ইংল্যান্ড যাত্রাকালে ‘সীলোন’ নামক জাহাজ থেকে পাঠ্য চিঠিটি লিখেছিলেন।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: ‘সিলোন’ নামক জাহাজটি অত্যন্ত বিলাসবহুল ও জাঁকজমকপূর্ণ। লেখক বাইশ দিন আগে কলকাতা থেকে ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এই পত্র লেখার সময় তিনি ভূমধ্যসাগরের মধ্য দিয়ে চলেছিলেন। দূরে উত্তর আফ্রিকার পর্বতাকীর্ণ উপকূল দেখা যাচ্ছিল। মধুসূদন জানিয়েছেন-

ক। তিনি যখন স্পেনের উপকূল ছাড়িয়ে জিব্রালটারের দিকে চলেছিলেন, তখন সমুদ্র ছিল শান্ত।

খ। চিঠিতে মধুসূদন জানিয়েছেন, গৌরদাস ধারণা করতে পারবেন না ‘সমুদ্র আজ কতটা শান্ত’। মধুসূদনের মনে হয়েছে এই সমুদ্র যেন ‘আমাদের হুগলি নদীটির মতো’।

মধুসূদনের ইচ্ছা ছিল এই যাত্রাপথের একটি অসাধারণ বিবরণ প্রকাশ করবেন ‘ইন্ডিয়ান ফিল্ড’ পত্রিকায়।

  1. মধুসূদনের জীবনের উচ্চাশার স্বপ্ন কীভাবে পত্রটিতে প্রতিভাসিত হয়ে উঠেছে?

উত্তর: মধুসূদন জীবিকানির্বাহের জন্য পেশার খোঁজে ইংল্যান্ড পাড়ি দিয়েছিলেন। নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে তিনি অত্যন্ত সচেতন ছিলেন। তাই বন্ধুদের চিঠিলেখার মতো সামান্যতম সময়টুকুও নষ্ট করতে চাননি। বরং মনস্কামনা পূরণ ও সম্মান অর্জনের জন্য তিনি ছিলেন একাগ্রচিত্ত এবং দৃঢ়সংকল্প।

এভাবে সিলোন জাহাজে চেপে সুদূর ইংল্যান্ডে পাড়ি দেওয়ার সময় মধুসূদন তাঁর স্বপ্ন ও সাধনার কথা লিখেছেন গৌরদাস বসাককে। পড়াশোনায় মন দিতে গিয়ে প্রিয় বন্ধুকে বিস্তারিতভাবে চিঠি লিখতে না পারলেও মধুসূদন কথা দিয়েছেন সে বিষয়ে পড়ে তিনি লিখবেন। এখন তিনি জীবিকানির্বাহের জন্য মনোনিবেশ করবেন বলে দৃঢ়সংকল্প। আসলে মিলটনের মতো মহাকবি হওয়ার স্বপ্ন মনের মধ্যে লালন করেছিলেন বলে স্বজন-স্বজাতি-স্বদেশকে ত্যাগ করেছিলেন। গৌরদাস বসাককে লেখা এই চিঠিতে মধুসূদনের উচ্চাশার স্বপ্ন প্রতিভাসিত হয়ে উঠেছে।

  1. বিদেশে পাড়ি জমানোর সময়েও তাঁর নিজের দেশের কথা কীভাবে পত্রলেখকের মনে এসেছে?

উত্তর: পত্রলেখক মাইকেল মধুসূদন দত্ত মাত্র বাইশ দিন আগে কলকাতা থেকে ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের পথে পা বাড়িয়েও তিনি নিজ দেশের বন্ধুগোষ্ঠীর মধুর সাহচর্য ভুলতে পারেননি। তাই প্রিয় বন্ধু গৌরদাস বসাককে পত্র লিখেছেন। বন্ধু হরির সংবাদ জানতে চেয়েছেন, বন্ধুগোষ্ঠীর সাহচর্যহীনতায় ব্যথিত হয়ে দেশীয় লোকেদের নিয়ে জাহাজের মধ্যেই গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠার মনস্কামনা ব্যক্ত করেছেন।

এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে-

ক। স্বদেশের জন্যে মধুসূদন কতখানি ব্যাকুল ছিলেন।

খ। স্বদেশবাসীর প্রতি ছিল তাঁর গভীর মমত্ববোধ।

গ। বিদেশে সমুদ্রের বুকে ভাসতে ভাসতে তাঁর বারবার মনে পড়েছে শান্ত, সুন্দর হুগলি নদীটির কথা।

ঘ। বিদেশে পরিবেশ প্রসঙ্গে তাঁর মনে পড়েছে নিজের দেশের নভেম্বর মাসের কথা।

আসলে বারবার কবির মানসলোকে স্বভূমি সশ্রদ্ধার সঙ্গে উচ্চারিত হয়েছে এবং ‘ইন্ডিয়ান ফিল্ড’ পত্রিকায় সুদীর্ঘ ও বিস্তারিত একটি ভ্রমণ কাহিনি লেখার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন।

  1. …’একথা যেন আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।’- কোন্ কথা? সে-কথাকে বক্তার অবিশ্বাস্য বলে মনে হচ্ছে কেন?

উত্তরের প্রথমাংশ: কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘চিঠি’-তে ইংল্যান্ড সফরের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হওয়ার কথা পত্রলেখক বিশ্বাস করতে পারছেন না।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: মধুসূদন শৈশবকাল থেকে ইংল্যান্ড সফরের কথা চিন্তা করে এসেছেন। ধর্মান্তরিত হওয়ার মতো চরম মূল্যও তিনি সেজন্য দিয়েছেন। সেই দীর্ঘদিনের মনস্কামনা ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত হতে চলেছে। তিনি ‘সিলোন’ জাহাজে চেপে ভূমধ্যসাগরের বিস্তীর্ণ জলের ওপর দিয়ে ইংল্যান্ডের দিকে চলেছেন। তাই বিচিত্র অভিজ্ঞতা এবং আবেগের আতিশয্যে কবি বাস্তবকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। এজন্য গৌরদাস বসাককে অত্যন্ত আপ্লুত হয়ে মধুসূদন এই বক্তব্যটি লিখেছেন।

  1. প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে হৃদ্যতার ছবি পত্রটিতে কীভাবে ফুটে উঠেছে তা প্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতিসহ আলোচনা করো।

উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্ত ইংল্যান্ড সফরের স্বপ্নপূরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও প্রিয় বন্ধু গৌরদাস বসাককে ভুলে যাননি। সুযোগ

পেতেই দুস্তর অভিজ্ঞতার সংবাদ জানিয়ে চিঠি লিখতে বসেছেন এবং ভবিষ্যতে ইংল্যান্ড অভিযানের বিস্তৃত বর্ণনা দিয়ে চিঠি লেখার সংকল্পের কথাও জানিয়েছেন।

‘ইন্ডিয়ান ফিল্ড’-এ যে ভ্রমণকাহিনি লিখবেন তা যাতে বন্ধুর কাছে পৌঁছায় সেজন্যও সজাগ দৃষ্টি রেখেছেন। গৌরদাসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এতটাই গভীর যে, তিনি নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আশা-আকাঙ্ক্ষা, ভালোলাগা সমস্ত কিছুই ভাগ করে নিয়েছেন। প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে হৃদ্যতার ভাবটি ফুটে উঠেছে এই ধরনের উক্তিতে- ‘তখন তুমি তোমার প্রাণ উজাড় করে আমাকে অনবরত পত্রাঘাত করতে পারবে।’ কিংবা এই ধরনের সম্বোধন- ‘বৎস’, ‘ধৈর্য ধরো বন্ধু’, ‘ধারণ করো ধৈর্য’, ‘হে বন্ধু’, ‘তোমার অকৃত্রিম ও আন্তরিক ও চির স্নেহমুগ্ধ’। 

এই নিবিড় বন্ধুসূচক সম্বোধনগুলি প্রমাণ করে গৌরদাস বসাক কতখানি তাঁর অন্তরঙ্গ ছিলেন।

  1. রাজনারায়ণ বসুকে লেখা পত্রে লেখক তাঁর এই প্রিয় বন্ধুটির কাছে কোন্ আবেদন জানিয়েছেন?

উত্তর: রাজনারায়ণ বসুকে লেখা ‘চিঠি’ নামাঙ্কিত পত্রে মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর মেঘনাদ সম্পর্কে নিজস্ব মতামত জানাবার জন্যে অন্তরঙ্গ এই বন্ধুর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। মধুসূদনের জীবদ্দশায় এই কাব্য এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে অনেকে তাঁর কাব্যকে মিলটন, ভার্জিন, কালিদাস এমনকি তাসোর সঙ্গে তুলনা করেছেন। হাজার হাজার মানুষের জয়ধ্বনি অপেক্ষা রাজনারায়ণ বসুর অভিমত যে কবির কাছে অধিক নির্ভরযোগ্য সেই আস্থাও তিনি পত্রে প্রকাশ করেছেন। মধুসূদন লিখেছেন-

তোমার যা মনে হয়েছে তুমি তা লিখে জানাবেই। এ রকম হাজার-হাজার মানুষের জয়ধ্বনির চেয়ে তোমার অভিমত অনেক নির্ভরযোগ্য।

অশেষ বিদ্যানুরাগী রাজনারায়ণ কাব্য আস্বাদন করে যে অনুভূতির কথা ব্যক্ত করতে পারবেন, সেটাই হবে ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর প্রকৃত পাঠপ্রতিক্রিয়া।

  1. ‘এই কাব্য অদ্ভুতরকম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।’- কোন্ কাব্যের কথা বলা হয়েছে? সে কাব্যের জনপ্রিয়তার কথা বলতে গিয়ে লেখক কোন্ কোন্ প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন?

উত্তরের প্রথমাংশ: কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রণীত ‘চিঠি’ নামাঙ্কিত পত্রে মাইকেল মধুসূদন দত্ত রাজনারায়ণ বসুকে ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর কথা বলেছেন।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: ‘মেঘনাদবধ কাব্য’টি তৎকালীন পাঠক সমাজে অদ্ভুত রকম জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। কেউ কাব্যটিকে মিলটনের ‘প্যারাডাইস লস্ট’ অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর বলে মন্তব্য করেছেন। আবার কেউ কবির কাব্যপ্রতিভাকে কালিদাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অনেক মহিলা পাঠক কাব্যটির করুণরসে বিগলিত হয়ে অশ্রুবিসর্জন করেছেন বলেও কবি জ্ঞাত হয়েছেন।

মধুসূদন অবশ্য মনে করেন, ‘মিলটনের চেয়ে উৎকৃষ্টতর হতে পারে না কোনোকিছুই।’ বরং তাঁর মনে হয়েছে ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ অবশ্যই ‘কালিদাসের কাছাকাছি’। তাঁর তৃতীয় অভিমত ‘ভার্জিল, কালিদাস বা তাসো’র সমতুল্য হওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব নয়। এইভাবেই এই কাব্যের জনপ্রিয়তার কথা বলতে গিয়ে কবি নানা প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন।

  1. প্রিয় বন্ধুর প্রতি, সর্বোপরি সাহিত্যের প্রতি গভীর অনুরাগের যে পরিচয় রাজনারায়ণ বসুর লেখা পত্রটিতে পাওয়া যায়, তা বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রণীত ‘চিঠি’ নামাঙ্কিত পত্রে একাধিকবার মধুসূদন তাঁর অন্তরঙ্গ বন্ধু রাজনারায়ণের কাব্যচর্চাকে সম্মান দিয়েছেন। তাঁর মনে হয়েছে এই বন্ধুটিই পারবেন তাঁর নির্মাণের যথাযোগ্য কদর দিতে। আসলে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রাজনারায়ণ বসুর একজন শ্রেষ্ঠ অনুরাগী। রাজনারায়ণ বসুর কাব্যচর্চার প্রতি কবির গভীর আস্থা ছিল। সেই আস্থা থেকেই তিনি নিজের সবথেকে জনপ্রিয় ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ সম্পর্কে তাঁর অভিমত জানতে চেয়েছেন এবং উত্তরের আশায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছেন। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন হাজার হাজার মানুষের জয়ধ্বনি অপেক্ষা রাজনারায়ণবাবুর বিশ্লেষণ তাঁর কাছে অধিক নির্ভরযোগ্য। কেননা-

ক। ইতিমধ্যে পাঠক-পাঠকেরা তাঁকে মিলটনের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি নিজে অবশ্য মনে করেন ‘মিলটনের চেয়ে উৎকৃষ্টতর হতে পারে না কোনোকিছুই’।

খ। অনেকে বলেছেন এই কাব্য কালিদাসের কাছাকাছি, কবি একথায় আপত্তি করেননি।

গ। অনেকে আবার কবিকে ভার্জিল, তাসো প্রমুখের সমতুল্য মনে করায় কবি তাঁদের বক্তব্যকে অস্বীকার করেননি।

তবু তাঁর মনে হয়েছিল রাজনারায়ণই তাঁর সম্পর্কে সঠিক কথা বলতে পারবেন। কেননা, কবি আন্তরিকভাবে রাজনারায়ণের ‘সর্বশ্রেষ্ঠ অনুরাগী’।

  1. ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ৩ নভেম্বর ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে লেখা মধুসূদনের চিঠিটির বিষয়বস্তু সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তর: মাইকেল মধুসদন দত্ত ১৮৬৪, নভেম্বর মাসের ৩ তারিখে ফ্রান্সের ভার্সাই থেকে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে চিঠিটি লিখেছেন।

বিদ্যাসাগরের প্রতি তাঁর গভীর আস্থা, তাই নিজ সম্পত্তির তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব তিনি তাঁর উপর অর্পণ করে বিদেশে নিশ্চিন্ত হতে চেয়েছেন। বিদ্যাসাগরের প্রতি তাঁর ভক্তির পরিচয় পাওয়া যায় যখন তিনি বাধ্য ছাত্রের ন্যায় জানান- ‘আপনি মনে করবেন না যে, আমি এখানে অলসভাবে দিন কাটাচ্ছি।’ কবি যে ফ্রেঞ্চ, ইটালিয়ান প্রায় রপ্ত করে ফেলেছেন এবং শিক্ষক ছাড়াই জার্মান ভাষা চর্চা শুরু করেছেন সেই তথ্য অবহিত করেন। ভারতবর্ষ অপেক্ষা ইউরোপে শীতের প্রাবল্য সম্পর্কেও নানা তথ্য প্রদান করেন।

মধুসূদন বিশেষ বিশ্বাস রাখতেন বিদ্যাসাগরের ওপরে। কেননা, বিদ্যাসাগরের অফুরন্ত দানেই তিনি বাংলা সাহিত্য জগতে নিজের প্রতিষ্ঠাকে সুনিশ্চিত করতে পেরেছিলেন। তাই তিনি বিদ্যাসাগর সম্পর্কে অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। এজন্যে আমরা দেখি বিদ্যাসাগরকে লেখা পত্রটিতে মধুসূদন বারবার তাঁর বিদ্যাচর্চার প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন।

  1. বিদ্যাসাগরকে লেখা পত্রটিতে মধুসূদনের জীবনে তাঁর ভূমিকার যে আভাস মেলে, তা বিশদভাবে আলোচনা করো।

উত্তর: কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রণীত ‘চিঠি’ নামাঙ্কিত পত্রে সুস্পষ্টভাবে না হলেও মধুসূদন যে বিদ্যাসাগরের কাছে বিশেষভাবে ঋণী তার আভাস ৩ নভেম্বর ১৮৬৪ সালে ফ্রান্সের ভার্সাই থেকে – লেখা চিঠিটি তারই প্রমাণ। একদা মধুসূদনের বিষয়-সম্পত্তি সমস্তই বেদখল হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। বিদ্যাসাগর উদ্যোগী হয়ে – মধুসূদনকে বিপদ থেকে রক্ষা করেন। পুনরায় যাতে ঝঞ্ঝা উপস্থিত না হয় তাই বিষয়-আশয় তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব তিনি বিদ্যাসাগরকেই – দিতে চেয়েছেন এবং তিনি যাতে ভুল না বোঝেন তাই লন্ডন – অভিযানের কারণ পূর্ব চিঠিতে মাইকেল বিস্তৃতভাবে জানিয়েছেন। 

এই চিঠির শেষাংশে মধুসূদন লিখেছেন-

হে প্রিয় বন্ধু, আপনি মনে করবেন না যে, আমি এখানে অলসভাবে দিন কাটাচ্ছি।

তিনি যে অলসভাবে দিন কাটাচ্ছিলেন না তার প্রমাণ-

ক। তিনি ফ্রেঞ্চ, ইটালিয়ান প্রায় রপ্ত করে ফেলেছিলেন।

খ। মাইনে করা কোনো শিক্ষকের সাহায্য ছাড়াই জার্মানি ভাষা চর্চা করেছিলেন।

বিদ্যাসাগরকে লেখা এই পত্রটিতে মধুসূদনের জীবনে বিদ্যাসাগরের ভূমিকা যে আভাস পাওয়া যায় তা আমাদের মুগ্ধ করে।