WBBSE Class 8 Bangla Chapter 9 Solution | Bengali Medium

Class 8 Chapter 9 Bengali Medium

পরাজয়

1. Very Short Question Answer

1. শান্তিপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম বইয়ের নাম লেখো।

উত্তর: শান্তিপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম বইয়ের নাম হলো ‘ফেরারি’।

2. এত দুঃখ এত ব্যথা সে কখনও পায়নি।”-এখানে কার দুঃখ-বেদনার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: উদ্ধৃত প্রশ্নে অত্যন্ত কৃতি ফুটবলার রঞ্জন সরকারের দুঃখ-বেদনার কথা বলা হয়েছে।

2. Short Question Answer

1. রঞ্জনদা তুমি কাল ক্লাবে যাওনি?”-এই প্রশ্নের উত্তরে রঞ্জন কী বলেছিল?

উত্তর: এই প্রশ্নের উত্তরে অত্যন্ত ব্যথিত হয়ে রঞ্জন বলেছিল যে, সে ক্লাবের বার পুজোয় যেতে পারেনি। কারণ, আগের দিন সকালেই তাকে কলকাতার বাইরে যেতে হয়েছিল।

2. গঙ্গার পাড়ে গিয়ে কোন্ দৃশ্য রঞ্জনের চোখে ভেসে উঠল?

উত্তর: ব্যথিত মন নিয়ে গঙ্গার পারে গিয়ে রঞ্জন দেখেছিল-জলের ছোটো ছোটো ঢেউ, দূরে নোঙর করা কয়েকটা ছোটো-বড়ো জাহাজ, অনেকগুলো নৌকা, ফেরি-স্টিমার রয়েছে।

3. “সিদ্ধান্তটা নেওয়ার পর রঞ্জনের মন অনেকটা শান্ত হলো।”-এখানে রঞ্জনের কোন্ সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: রঞ্জন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ক্লাব থেকে কোনো ডাক না এলে দু-দিন অপেক্ষার পর সে নিজেকে প্রমাণ করতে বিপক্ষ দলে যোগদান করবে। 

4. “ঘোষদা একটা বড়ো খবর আছে।”-কী সেই ‘বড়ো খবর’।

উত্তর: স্বপনদা যে বড়ো খবরটি ঘোষদাকে দিয়েছিলেন তা হলো-তাঁদের বিপক্ষ ক্লাবের বিখ্যাত ফুটবলার রঞ্জন সরকার নিজের চায়। ক্লাব ত্যাগ করে এই ক্লাবেই যোগ দিতে

5. “রঞ্জনের দলবদল করার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে টনক নড়েছিল ক্লাবকর্তাদের।”- কীভাবে ক্লাবকর্তাদের যে টনক নড়েছে তা বোঝা গেল?

উত্তর: ক্লাব কর্তারা রঞ্জনের ক্লাব বদলের খবর পেয়ে রঞ্জনকে ফোন করতে থাকেন। শুধু তাই নয়, কনিষ্ঠ সহখেলোয়াড়দের মাধ্যমে রঞ্জনের মত পরিবর্তনের জন্যে অনুরোধ করেন।

6. “ব্যাপারটা কী হলো বুঝতে একটু সময় লাগল সমর্থকদের।” -এখানে কোন্ ব্যাপারটার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে রঞ্জন সরকারের ব্যাকভলিতে করা গোলের বিষয়টি বুঝতে একটু সময় লেগেছিল দর্শকদের।

7. “দুহাতে মুখ ঢেকেশুয়ে পড়ল একটা বেঞ্চিতে।”- স্ট্রাইকার রঞ্জন সরকারের এমনভাবে শুয়ে পড়ার কারণ কী?

উত্তর: নিজের প্রিয় ক্লাব ছেড়ে অন্য ক্লাবে যোগদানের জন্যে রঞ্জনের যে কষ্ট হয়েছিল, তা অন্যদের কাছ থেকে আড়াল করার জন্যে দু-হাতে মুখ ঢেকে যন্ত্রণাকাতর এই মানুষটি বেঞ্চিতে শুয়ে পড়েছিল।

8. রঞ্জন নামগুলো পড়ার চেষ্টা করে।”-রঞ্জন কোন্ নামগুলি পড়ার চেষ্টা করে?

উত্তর: অফিস থেকে গঙ্গার ধারে এসে গঙ্গার ঢেউয়ে ভাসতে থাকা কয়েকটি ছোটো বড়ো জাহাজ দেখতে পায় রঞ্জন সরকার। সেই জাহাজের নামগুলোই সে পড়ার চেষ্টা করে।

9. “রঞ্জন টেলিফোনটা রেখে দিলো।”- কোন্ কথা শুনে রঞ্জন টেলিফোনটা রেখে দিলো?

উত্তর: রঞ্জন ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর অন্য বড়ো ক্লাবের সেক্রেটারি স্বপনদা রঞ্জনকে ফোন করে জানান, তিনি আধ ঘণ্টার মধ্যে রঞ্জনের বাড়িতে পৌঁছে যাবেন। এই কথা শুনে রঞ্জন টেলিফোনটা রেখে দেয়।

10. “সত্যি ওরা তোমার সঙ্গে উচিত কাজ করেনি!”- কোন্ অনুচিত কাজের প্রতি নির্দেশ করা হয়েছে?

উত্তর: ক্লাব কর্তৃপক্ষ পয়লা বৈশাখের বারপুজোয় রঞ্জনকে মৌখিকভাবে কোনোকিছুই জানায়নি। তাকে রীতিমতো অবহেলা ও অবজ্ঞা করেছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষের এই ব্যবহারকে স্বপনদা অনুচিত কর্ম বলে চিহ্নিত করেছেন।

11. “আপনি সব ব্যবস্থা করুন।”- কোন্ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে?

উত্তর: রঞ্জন যাতে তার পুরোনো ভালোবাসার ক্লাব ছেড়ে নতুন ক্লাবে যোগদিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে বলেছে স্বপনবাবুকে। অপমানিত রঞ্জন আর কোনো ভাবেই নিজের ক্লাবে থাকতে চায় না।

3. Long Question Answer

 1. “একটু আগে ও সবকটা কাগজে বারপুজোর রিপোর্ট পড়েছে।”-এখানে ‘ও’ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে? সে সবকটা কাগজে একই বিষয়ের রিপোর্ট পড়ল কেন?

উত্তর: উদ্দিষ্ট ব্যক্তি = উদ্ধৃত এই উক্তিতে ‘ও’ বলতে ফুটবলার রঞ্জন সরকারের কথা বলা হয়েছে।

সবকটা কাগজ পড়ার কারণ = বারপুজোর দিন রঞ্জন ক্লাবে যাওয়ার অনুমতি পায়নি। এদিন ক্লাবের অনুষ্ঠানে কারা কারা উপস্থিত ছিলেন, তা জানার জন্যে রঞ্জনের মন ব্যাকুল হয়েছিল। এজন্যে সবকটা কাগজে বারপুজোর রিপোর্ট পড়েছিল। অত্যন্ত কষ্ট পেয়ে রঞ্জন দেখতে চেয়েছিল কারা কারা ক্লাবের এই অনুষ্ঠানে যোগদান করার সুযোগ পেয়েছে।

2. “ওকে নিয়ে মাতামাতিটা ঠিক আগের মতো আর নেই।”- আগে ‘ওকে’ নিয়ে কী ধরনের মাতামাতি হতো?

উত্তর: ‘ওকে’ বলতে রঞ্জন সরকারের কথা বলা হয়েছে। একজন খেলোয়াড় ক্লাবের কাছ থেকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু পাবে, এটাই ■ স্বাভাবিক। কিন্তু দেখা যায়, ক্লাবের জন্যে নিজেকে সমর্পণ করার পরেও ■ রঞ্জন সরকার যোগ্যতা অনুসারে সম্মান পায়নি। ক্লাবের বারপুজোয় উপস্থিত থাকার নিমন্ত্রণও তাকে করা হয়নি। অনুষ্ঠানের দিন তাকে – আনার জন্যে গাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হতো। কিন্তু এবছর সামান্য সম্মানটুকুও তাকে দেয়া হয়নি। তাই রঞ্জন বুঝতে পেরেছিল, ওকে নিয়ে আগের মতো আর মাতামাতিটা নেই।

3. “ঠিক এক বছর আগের ঘটনা।”-একবছর আগে কোন্ ঘটনা ঘটেছিল?

উত্তর: ‘ঠিক এক বছর আগের ঘটনা’ বলতে ক্লাবের সম্পাদক ও কোচ কীভাবে দল গঠন করবে সেই আলোচনা করার কথা বলা হয়েছে। তাঁরা একবছর আগেও জানতে চেয়েছিলেন, দলে কারা কারা থাকবে। অর্থাৎ স্পষ্টই রঞ্জন সরকার উপলব্ধি করতে পারে, একবছর আগেও তাকে ক্লাব কতখানি গুরুত্ব দিত।

4. “রঞ্জন সারাটি দিন আর বাড়ি থেকে বোরোয়নি।” – কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: এখানে পয়লা বৈশাখের কথা বলা হয়েছে। দীর্ঘ পনেরো বছর ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিল রঞ্জন সরকার। ক্লাবের স্বার্থে নিজের সর্বস্ব উৎসর্গ করেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় এবার বারপুজোর দিনে ক্লাব তাকে নিমন্ত্রণটুকুও করেনি। তাই অত্যন্ত আহত হয়ে রঞ্জন সারাদিন বাড়ি থেকে বেরোয়নি।

 5. “মন স্থির করে ফেলেছে তো?”-উদ্দিষ্টব্যক্তি কোন্ বিষয়ে মনস্থির করে ফেলেছে?

উত্তর: অনেক কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা সত্ত্বেও রঞ্জন সরকার কখনো ক্লাব ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতেও পারেনি। কিন্তু ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে ইদানীং এমন ব্যবহার করতে থাকে যে, তারা যেন তাকে চেনেই না। ব্যথিত রঞ্জন স্বপনবাবুদের ক্লাবে যোগদেওয়ার সিদ্ধান্ত জানালে স্বপনবাবু তার কাছে জানতে চান রঞ্জন মনস্থির করে এই কথাগুলি বলছে, কি না।

6. “রাগে ফুঁসছিল রঞ্জন।”-তার এই রাগের কারণ কী?

উত্তর: ‘পরাজয়’ গল্পে দেখা যায় ক্লাবের জন্যে আত্মসমর্পিত রঞ্জন তার সর্বস্ব বিসর্জন দিলেও একটা সময়ে ক্লাব তাকে বোঝেনি। ক্লাবের বার পুজোতে তাকে কোনোভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সকালে খবরের কাগজে চোখ রেখে সে দেখতে চেয়েছিল, ক্লাবের এই মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে কারা উপস্থিত ছিলেন। তখনই রঞ্জন ক্ষোভে-কষ্টে-রাগে ফুঁসছিল।

7. “এত দুঃখ, এত ব্যথা সে কোথাও পায়নি।”-এই দুঃখ-যন্ত্রণার দিনে কীভাবে অতীতের সুন্দর দিনগুলির কথা রঞ্জনের মনে এসেছে?

উত্তর: দুঃখ কষ্টের দিনে রঞ্জনের অতীতের দিনগুলির কথা মনে পড়ছিল। প্রতিবছর বার পুজোর সময় তার কাছে ফোন আসত। ফোন করতেন ক্লাবের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি ও পদস্থ সদস্যরা। ভোরবেলাতেই তার বাড়ির সামনে গাড়ি এসে দাঁড়াতো তাকে মাঠে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। রঞ্জন গাড়ি এলেই মাঠের দিকে রওনা হতো। এভাবে অতীতের সেই মধুর দিনগুলি তার মনে পড়েছিল।

8. রঞ্জনের ক্লাবের সঙ্গে তার পনেরো বছরের সম্পর্ক কীভাবে ছিন্ন হলো? এই বিচ্ছেদের জন্য কাকে তোমার দায়ী বলে মনে হয়? 

উত্তর: ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন ও শান্তিপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত ‘পরাজয়’ গল্পে ক্লাবের সঙ্গে রঞ্জনের দীর্ঘ ভালোবাসার সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত ছিন্ন হয়ে যায়। ক্লাবে নতুন ছেলেদের আগমনের ফলে তার গুরুত্ব কমে যায়। নববর্ষের দিনে বার পুজোয় তাকে আমন্ত্রণ পর্যন্ত জানানো হয় না। এতে রঞ্জন অত্যন্ত অপমানিত, ব্যথিত ও মানসিকভাবে বিপন্ন বোধ করে।

প্রকৃত দোষি = রঞ্জনের সঙ্গে ক্লাব যে আচরণ করেছে তা মানা যায় না। সবসময় মনে রাখা প্রয়োজন মানুষের জীবনে ভালো-মন্দ, সুদিন-দুর্দিন আসতেই পারে। কিন্তু কখনও তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ঠিক নয়। রঞ্জনের সঙ্গে কোনোরকম যোগাযোগ রাখেনি ক্লাব কর্তৃপক্ষ। নিতান্তই স্বার্থপরের মতো রঞ্জনকে সরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং, ক্লাবের সঙ্গে রঞ্জনের বিচ্ছেদের জন্যে ক্লাবকেই আমি দায়ি করবো। 

9. “কী করবে ও ঠিক করে ফেলেছে।”-এখানে কার কথা বলা হয়েছে? সে কী ঠিক করে ফেলেছে? তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সে পরবর্তী সময়ে চলতে পারল কি?

উত্তর : উদ্দিষ্ট ব্যক্তি = এখানে ‘পরাজয়’ গল্পের মূল চরিত্র রঞ্জনের কথা বলা হয়েছে।

যা ঠিক করেছে = রঞ্জন ঠিক করেছে, ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে যোগাযোগ না করলে পুরোনো ক্লাব ছেড়ে সে নতুন ক্লাবে যোগ দেবে। তার মনে হয়েছে, এখন তার প্রমাণ করার সময় এসেছে যে, প্রকৃত খেলোয়াড়ের কখনও মৃত্যু হয় না।

তার সিদ্ধান্ত = নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকে পুরোনো ক্লাবের কাছে অত্যন্ত অপমানিত রঞ্জন অন্য ক্লাবে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। সেই জন্যে অন্য ক্লাবের সেক্রেটারিকে ফোন করেছে। দল বদলের মরসুমে নতুন ক্লাবে যোগদান করেছে। আগের ক্লাবের সঙ্গে যখন বর্তমান ক্লাবের প্রতিযোগিতামূলক খেলা হয়েছে, তখন একটি অনবদ্য, অভাবনীয় গোল করে রঞ্জন সরকার প্রমাণ করেছে, তার খেলোয়াড় জীবন নষ্ট হয়ে যায়নি।

10. “তৃতীয় দিন রাত্তিরে টেলিফোন করল অন্য বড়ো ক্লাবের সেক্রেটারিকে।”-কোন্ দিন থেকে ‘তৃতীয় দিন’-এর কথা হয়েছে? এই দিন তিনেক সময় তার কীভাবে কেটেছে? টেলিফোনটি করায় কোন্ পরিস্থিতি তৈরি হলো?

উত্তর : তৃতীয় দিন = বার পুজোর দিন অর্থাৎ নতুন বছরের প্রথম দিনের পর থেকে তৃতীয় দিনের রাতের কথা বলা হয়েছে। 

সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা = ক্লাব থেকে যে তিনদিন দূরে সরে এসেছিল রঞ্জন, সেই তিনটে দিন তার খুব কষ্টে কেটেছে। সে অপমানিত হয়েছে। তীব্র দুঃখে নববর্ষের দিন বাড়ি থেকে বের হয়নি। পরের দিন অফিসে গিয়ে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। অফিস থেকে ফেরার পথে গঙ্গার ঘাটে এসে উপস্থিত হয়েছে। পরের দুটো দিনও অত্যন্ত খারাপ কাটিয়েছে। কারও সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলতেও পারেনি। ক্লাব থেকে ফোনের প্রত্যাশায় বাড়িতেই সময় কাটিয়েছে।

কোন্ পরিস্থিতি = নিজেকে সবার সামনে প্রমাণ করার জন্যে বাধ্য হয়ে রঞ্জন অন্য একটি ক্লাবে যোগাযোগ করে। সেই ক্লাবের সেক্রেটারি ক্লাবে যোগদান করার জন্যে সম্মতি জানায়। পনেরো বছরের পুরোনো ক্লাবের সঙ্গে তার গভীর আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। ফলে সে মনে মনে বিপর্যস্ত জেনে স্বপনদা জানিয়েছেন, আধ ঘণ্টার মধ্যে তিনি রঞ্জনের বাড়ি পৌঁছে যাবেন।

11. “দুই প্রধানের লড়াইকে কেন্দ্র করে অনেক বছর পরে কলকাতা আবার মেতে উঠেছে।”-গল্প অনুসরণে সেই লড়াইয়ের উত্তেজনাপূর্ণ ফুটবল ম্যাচের বিবরণ দাও।

উত্তর: ফুটবল ম্যাচের বিবরণ রঞ্জন তার ভালোবাসার ক্লাব ছেড়ে চলে আসার পর সেই ক্লাবের সঙ্গে নতুন যোগ দেওয়া ক্লাবের খেলা হয়। সল্টলেক যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এক লক্ষ কুড়ি হাজার দর্শকের বসার আসন ছিল। তবু বাইরে ছিল প্রচুর মানুষের প্রতীক্ষা। প্রত্যেকের লক্ষ্য ছিল রঞ্জনের দিকে।

রঞ্জনকে সামলাতে হিমসিম খেয়েছে তার পুরোনো দলের খেলোয়াড়রা। কিন্তু রঞ্জন চেষ্টা করেও প্রথমার্ধে গোল করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে রঞ্জন অত্যন্ত দ্রুত গতিতে বল নিয়ে এগিয়ে যায়। কেউ বুঝতে পারেনি কী গভীর দক্ষতায় রঞ্জন বল নিয়ে তিরের মতো গতিতে গোলের দিকে এগিয়ে যায়।

রঞ্জন বলটা ধরে তিনজনকে কাটিয়ে পেনাল্টি সীমানার কাছাকাছি এসেই সমরের মাথা লক্ষ্য করে বল পাঠায়। সমর হেড দিয়ে পুনরায় বলটি ফিরিয়ে দিলে রঞ্জন বলটাকে বুলেটের মতো পাঠিয়ে দেয় গোলের দিকে।

বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে দর্শকরা বুঝতে পারে ব্যাপারটা কি হয়েছে। তারপর সারা মাঠ ফেটে পড়ে উল্লাসে। দলের খেলোয়াড়রা রঞ্জনকে নিয়ে মেতে ওঠে। যুবভারতীর গ্যালারি বাজি ও পটকার শব্দে গমগম করে ওঠে।

12. “বলটা বুলেটের মতো ছুটে গিয়ে ঢুকে গেল গোলে।”-এরপর সমর্থক আর সহ-খেলোয়াড়দের উল্লাসের বিপ্রতীপে রঞ্জনের বিষণ্ণতার কোন্ রূপ গল্পে ফুটে উঠেছে?

উত্তর: রঞ্জনের বিষণ্ণতার রূপ নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়ে রঞ্জন সমস্ত দর্শকের মন জয় করে নিয়েছিল। তার পূর্বের ক্লাবের অহংকার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছিল। অগণিত দর্শক তাকে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছিল। মাঠের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল উল্লাস।

এত আনন্দ, হইচই, আবেগ-উল্লাস-উৎসাহ ও অভিনন্দনের মধ্যেও রঞ্জনের মন বিষণ্ণতায় ভরে ওঠে। সে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চায় না। নতুন যোগ দেওয়া ক্লাবের সেক্রেটারি স্বপনদাকে বলে পাশের ঘরে চলে যায়। একসময় আবিষ্কার করে তার দুচোখ জলে ভরে উঠেছে। বোঝা যায়, পুরোনো ক্লাবের প্রতি তার কী গভীর মমতা এখনও সে বুকের মধ্যে অনুভব করে।

মাসিপিসি

1. Very Short Question Answer

1. জয় গোস্বামীর লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম লেখো।

উত্তর : জয় গোস্বামীর লেখা দুটি কবিতার বইয়ের নাম হলো- ‘ভূতুম ভগবান’, ‘ঘুমিয়েছো ঝাউপাতা?’

2. জয় গোস্বামীর লেখা একটি উপন্যাসের নাম লেখো।

উত্তর: জয় গোস্বামীর লেখা একটি উপন্যাসের নাম হলো-‘সুড়ঙ্গ ও প্রতিরক্ষা’।

2. Short Question Answer

1. অনেকগুলো পেট বাড়িতে…” ‘পেট’-এর আভিধানিক অর্থ কী? এখানে কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?

উত্তর: আভিধানিক অর্থ হলো-‘উদর’। ‘পেট’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ ব্যবহৃত অর্থ ‘পেট’ শব্দটি শেষপর্যন্ত আভিধানিক অর্থকে অতিক্রম করেছে। এর বর্তমান অর্থ দাঁড়িয়েছে ‘সংসারের সদস্য’।

2. “সাত ঝামেলা জোটায়”-এখানে ‘সাত’ শব্দটির ব্যবহারের কারণ কী?

উত্তর : ‘সাত’ শব্দটি ‘বহু’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। রেলবাজারের হোমগার্ডদের সঙ্গে বহু বা নানা ঝামেলার কথা বোঝাতে গিয়ে ‘সাত’ শব্দটির ব্যবহার করা হয়েছে।

3. কোনো শব্দ থেকে এবং কী করে ‘জষ্টি শব্দটি এসেছে?

উত্তর: শব্দটির উৎস কবি জয় গোস্বামী প্রণীত ‘মাসিপিসি’ কবিতায় ‘জষ্টি’ শব্দটি মৌখিক প্রচলিত শব্দ। এই শব্দটি এসেছে ‘জ্যৈষ্ঠ’ শব্দ থেকে। ধ্বনি পরিবর্তনের সূত্র অনুযায়ি শব্দটির বিবর্তন এমন-জ্যৈষ্ঠ্য > জইষ্ট > জষ্টি।

 4. “শুকতারাটি ছাদের ধারে, চাঁদ থামে তালগাছে’- এই পঙ্ক্তিটির মাধ্যমে দিনের কোন্ সময়ের কথা বলা হয়েছে? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর: দিনের সময় এই পঙ্ক্তির মাধ্যমে ভোরের আলো পরিস্ফুট হওয়ার সময়কে নির্দেশ করা হয়েছে।

উত্তরের পক্ষে যুক্তি = ভোরের আকাশে শুকতারার মুখ তখনও জ্বলজ্বল করতে দেখা যাচ্ছে। আকাশের চাঁদ তখনও স্নিগ্ধ আলো দান করে চলেছে। আকাশে সূর্য ওঠেনি। তাই এখানে ভোরের ছবি ফুটে ওঠাই স্বাভাবিক।

3. Long Question Answer

1. দু একটা ফোঁটা শিশির তাকায় ঘাসের থেকে ঘাসে”-এই পঙ্ক্তিটিতে যে ছবিটি ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর: বর্ণিত ছবি ‘মাসিপিসি’ কবিতায় ভোরের একটি অপূর্ব চিত্র ফুটে উঠেছে। তখন শীতকাল। শিশির পড়ছে। ঘাসের মাথায় শিশির জমেছে। দেখে মনে হচ্ছে, শিশির যেন একে অন্যের দিকে কৌতুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সূর্য ওঠার আগে মাসিপিসিরা কাজে বেড়িয়ে যাবে। মাঠের শিশির যেন সেই ঘটনারই সাক্ষী হয়ে থাকবে। এমন একটি চমৎকার ছবি এই পঙ্ক্তিতে ফুটে উঠেছে।

2. “মাস মাহিনার হিসেব তো নেই”-মাস মাহিনার হিসেব নেই কেন?

উত্তর: মাস মাহিনার হিসেবে না থাকার কারণ যে মানুষ সারাক্ষণ কর্মে ব্যস্ত থাকে, জীবন-জীবিকা নিয়ে অত্যন্ত সংকটে থাকে, সেই মানুষের জীবনে মাস-মাহিনা হিসেব না থাকাই স্বাভাবিক। এরা প্রতিদিন একই কর্মের বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। সে জীবনে কোনো আড়ম্বর নেই। শ্রমজীবী, দরিদ্র, লাঞ্ছিত মানুষরা সারাদিন কর্মে-ধর্মে একাত্ম থাকে। সুতরাং তাদের কাছে মাস-মাহিনার কোনো গুরুত্ব নেই।

3. শতবর্ষে এগিয়ে আসে-শতবর্ষ যায়”-এই পঙ্ক্তিটির মধ্যে দিয়ে কবি কী বলতে চেয়েছেন আলোচনা করো।

উত্তর: জয় গোস্বামীর ‘মাসিপিসি’ কবিতায় দরিদ্র, ক্ষুধা-তৃয়ায়, কাতর মাসিপিসিদের নিত্য লাঞ্ছিত জীবনের কথা শুনিয়েছেন। এদের জীবন একঘেয়েমিপূর্ণ। সে জীবন যেন কোথাও থমকে দাঁড়িয়ে আছে। কোনো উন্নতি নেই। কোনো আনন্দ নেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা কাজ করে চলে। একমুঠো খাবারের সংগ্রহে অমানুষিক শ্রম দান করে। পোঁটলা-পুঁটলি নিয়ে কখনও বাজারে হোমগার্ডের সঙ্গে ঝগড়া করে। তারা কখনও বৈশাখ কি জ্যৈষ্ঠের হিসেব রাখে না। কোলে-কাঁখে চালের বস্তা নিয়ে এগিয়ে যায়। এদের জীবনে শতবর্ষ এগিয়ে আসে,

4. ‘মাসিপিসি’ কবিতায় এই মাসিপিসি কারা? তাঁদের জীবনের কোন্ ছবি এই কবিতায় তুমি খুঁজে পাও?

উত্তর: মাসিপিসি = মাসিপিসি বলতে দরিদ্র, অসহায়, ক্ষুধিত শ্রমজীবী মহিলাদের বোঝানো হয়েছে।

জীবনের ছবি কবি জয় গোস্বামী কর্মমুখর জীবনের কথা শুনিয়েছেন। অনেক রাত থাকতে এই মাসিপিসিরা ঘুম থেকে ওঠে। সমস্ত মানুষ যখন গভীর তন্দ্রায় আচ্ছন্ন, তখনও তাদের কাজ-কর্ম থামতে চায় না। এরা ভোরবেলা ট্রেন ধরতে আসে। তাদের পরিবারের লোকসংখ্যা অনেক। একমুঠো রোজগারের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিদিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে। কখনও রেলবাজারের হোমগার্ডরা ঝামেলা করে। তবু তাদের কাজ করতেই হয়। এরা কখনও মাস-মাহিনার হিসাব রাখে না। কোলে-কাঁখে চালের বস্তা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলে। তাদের জীবন একপ্রকার মন্থরভাবে চলে।

5. মাসিপিসি’ কবিতার এই মাসিপিসিদের মতো আর কাদের কথা তুমি বলতে পারো যাঁদের ট্রেনের উপর নির্ভর করে জীবিকা অর্জন করতে হয়?

উত্তর: ‘মাসিপিসি’ কবিতায় যে শ্রমজীবী মহিলাদের কথা বলা হয়েছে, তাদের পাশাপাশি আরও অনেকেই আছে যারা নিত্য ঠিক এইভাবেই কষ্ট করে জীবন-জীবিকা অতিবাহিত করে। এদের মধ্যে রয়েছে, ফলওয়ালা, ফেরিওয়ালা, চানাচুর-লজেন্স-বাদাম বিক্রেতা, খেলনা বিক্রেতা, চা বিক্রেতা, জুতো পালিশওয়ালা। কখনও দেখা যায় কিশোরকণ্ঠী, লতা-আশাকণ্ঠী গায়করা বক্স খাটিয়ে গান গাইতে থাকে। এদের বিচিত্র কর্মপ্রয়াস। এরাও ট্রেনের উপর নির্ভর করে জীবনের অনেকগুলি বসন্ত কাটিয়ে দেয়।

6. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ওরা কাজ করে’ কবিতাটি তুমি পড়ে নাও। ‘মাসিপিসি’ কবিতার সঙ্গে ‘ওরা কাজ করে’ কবিতার কোন্ সাদৃশ্য তোমার চোখে পড়ল তা আলোচনা করো।
উত্তর: জীবনের শেষ প্রান্তে উপনীত হয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লেখেন অসামান্য একটি কবিতা ‘ওরা কাজ করে’। এই কবিতাটি ‘আরোগ্য’ কাব্যের অন্তর্ভুক্ত। মাটির পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে কবি রবীন্দ্রনাথ উপলব্ধি করেছিলেন, অসংখ্য মানুষ রাত-দিন কাজ করে চলেছে। তারা দাঁড় টানে। হাল ধরে। মাঠে মাঠে বীজ বোনে। ‘অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গের সমুদ্র-নদীর ঘাটে’ নিরন্তর কাজ করে চলে। সে কাজ কখনই থামে না। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, ‘মাসিপিসি’ কবিতার সঙ্গে ‘ওরা কাজ করে’ কবিতার কোথাও যেন একটা গভীর সাদৃশ্য রয়েছে।

টিকিটের অ্যালবাম

1. Very short Question Answer

1. সুন্দর রামস্বামী কোন্ ভাষার লেখক?

উত্তর: সুন্দর রামস্বামী তামিল ভাষার লেখক।

2. তিনি কোন্ ছদ্ম নামে লিখতেন?

উত্তর: সুন্দর রামস্বামী ‘পদুবিয়া’ ছদ্মনামে লিখতেন।

3. নীচের প্রশ্নগুলির একটি বাক্যে উত্তর দাও :

4. ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পের লেখক কে?

উত্তর: ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পের লেখক হলেন-সুন্দর রামস্বামী।

5. মূল গল্পটি কোন্ ভাষায় রচিত?

উত্তর: টিকিটের অ্যালবাম তামিল ভাষায় রচিত।

 6. মেয়েদের পক্ষ থেকে কে নাগরাজনের থেকে অ্যালবামটি চেয়ে নিয়ে যেত?

উত্তর: মেয়েদের পক্ষ থেকে পার্বতী নাগরাজনের কাছ থেকে অ্যালবামটি চেয়ে নিয়ে যেত।

7. রাজাপ্পা কীভাবে তার অমূল্য ডাকটিকিটগুলি সংগ্রহ করত?

উত্তর: রাজাপ্পা অনেক খোঁজ-খবর নিয়ে অত্যন্ত কষ্টস্বীকার করে তার অমূল্য ডাকটিকিটগুলি সংগ্রহ করত।

8. নাগরাজনের অ্যালবামটি তাকে কে উপহার দিয়েছিলেন? 

উত্তর: নাগরাজনের অ্যালবামটি তার কাকা উপহার দিয়েছিলেন।

2. Short Question Answer

 1. গল্পটিতে মোট কটি চরিত্রের দেখা পাওয়া যায়?

উত্তর: টিকিটের অ্যালবাম গল্পে সর্বমোট ৯টি চরিত্র রয়েছে। এরা হলো-রাজাপ্পা, নাগরাজন, কৃষ্ণান, কামাক্ষী, আপ্পু, রাজাপ্পার মা, নাগরাজনের বাবা, কাকা এবং পার্বতী।

 2. সেই অ্যালবামের প্রথম পাতায় কী লেখা ছিল?

উত্তর: নাগরাজনের অ্যালবামের প্রথম পাতায় লেখা ছিল তার নাম-এস নাগরাজন। তার নীচে লেখা ছিল-এই অ্যালবামটা চুরি করতে চেষ্টা করছ যে নির্লজ্জ হতভাগা, তাকে বলছি-ওপরে আমার নামটা দেখেছ? এটা আমার অ্যালবাম। এটা আমার এবং যতদিন ঘাসের রং সবুজ আর পদ্মফুল লাল, সূর্য পূর্বে উঠবে আর পশ্চিমে অস্ত যাবে একমাত্র আমারই থাকবে।

3. নাগরাজনের অ্যালবামের প্রতি সকলে আকৃষ্ট হয়ে পড়ল কেন?

উত্তর: নাগরাজনের অ্যালবামটি সিঙ্গাপুর থেকে আনা। এই অ্যালবামটি অত্যন্ত সুন্দর। তাছাড়া এটি যথেষ্ট বড়ো। স্থানীয় কোনো দোকানে এমন অপূর্ব সুন্দর অ্যালবাম পাওয়া যাবে না। তাই নাগরাজনের অ্যালবামের প্রতি সকলে আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিল।

 4.

নীচে তোমাদের জন্য কয়েকটি ভারতীয় ডাকটিকিটের ছবি দেওয়া রইল। তোমরা এমনই অনেক ভারতের কিংবা অন্যান্য দেশের ডাকটিকিট সংগ্রহ করে একটি অ্যালবাম তৈরি করো।

উত্তর : পাঠ্য বইয়ে দেওয়া ডাকটিকিটের ছবিগুলি দেখে নেবে এবং তার সঙ্গে নিজের সংগৃহীত অন্যান্য ছবি একত্রিত করে নিজেরা একটি সুন্দর অ্যালবাম তৈরি করে নেবে।

3. Long Question Answer

1. ‘কেটে পড় হিংসুটে পোকা।’-বক্তা কে? কাকে সে এমন কথা বলেছে? তুমি কি এই কথার মধ্যে কোনো যুক্তি খুঁজে পাও?

উত্তর: বক্তা = কাকে বলেছে যৌক্তিকতা বিচার এখানে বক্তা হলো কুয়ান। 

রাজাপ্পাকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেছে। রাজাপ্পা অ্যালবাম বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। সে চাইত তার অ্যালবাম সম্পর্কে সবাই ভালো কিছু মন্তব্য করুক। সিঙ্গাপুর থেকে নাগরাজনের কাকার পাঠানো অ্যালবামটি ক্লাসের ছেলেমেয়েদের খুব পছন্দ হয়েছিল। এর ফলে নাগরাজনের মনে প্রতিহিংসার আগুন জমেছিল। রাজাপ্পার সেই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হিংসুটে পোকা বলেছিল কৃয়ান। কৃয়ানের এই বক্তব্যটি অযৌক্তিক নয়।

2. ‘এদের সঙ্গে তর্ক করে লাভ নেই।’- উপলব্ধিটি কার? কী বিষয়ে তর্কের প্রসঙ্গ এসেছে? তর্ক করে লাভ নেই কেন?

উত্তর: কার উপলব্ধি = এই উপলব্ধিটি হলো রাজাপ্পার। তর্কের প্রসঙ্গ ক্লাসের ছেলেদের মধ্যে কার ডাকটিকিটের অ্যালবামটি সর্বাধিক সুন্দর-নাগরাজনের না রাজাপ্পার?-তা নিয়ে তর্কের প্রসঙ্গ উঠেছিল।

লাভ না থাকার কারণ = রাজাপ্পার অ্যালবামটি নিশ্চয় খুব সুন্দর। কিন্তু নাগরাজনের অ্যালবামটি বেশ বড়ো এবং ছবিগুলোও চমৎকার। ফলে রাজাপ্পার অ্যালবাম সম্পর্কে ছেলেমেয়েদের আগের মতো আর উৎসাহ থাকে না। এতে ক্ষুণ্ণ হয় রাজাপ্পা। কৃয়ান রাজাপ্পাকে জানায় তার অ্যালবামটি এখন ডাস্টবিনে রাখার যোগ্য। কৃষ্ণানের বক্তব্যকে অন্য সহপাঠীরা সমর্থন করলে রাজাপ্পার মনে হয়, তাদের সঙ্গে তর্ক করে কোনো লাভ নেই।

3. ‘হঠাৎ যেন ওর জনপ্রিয়তা কমে গেছে’- কার এমন মনে হয়েছে? এই ‘জনপ্রিয়তা’ হঠাৎ কমে যাওয়ার কারণ কী? 

উত্তর: উদ্দিষ্ট ব্যক্তি = এখানে ডাকটিকিটের সংগ্রাহক রাজাপ্পার এমনটি মনে হয়েছে।

‘জনপ্রিয়তা’ কমে আসার কারণ = এতদিন রাজাপ্পার অ্যালবাম নিয়ে প্রত্যেকে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিল। কিন্তু সহসা নাগরাজনের অ্যালবাম দেখে সবাই অবাক হয়। এমন অ্যালবাম সচরাচর চোখে মেলে না। ফলে সেই অ্যালবামের প্রতি সবাই দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। তাছাড়া নাগরাজন নিজে এই অ্যালবামটি উৎসাহের সঙ্গে বন্ধুদের দেখাত। ক্লাসের অন্যতম সহপাঠিনী পার্বতী নিজে সেই অ্যালবামটি চেয়ে নিয়ে দেখেছিল। ফলে একটা সময় দেখা যায় রাজাপ্পার অ্যালবামটি আর কেউ দেখছে না। সুতরাং বিগত দিনের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, রাজাপ্পার জনপ্রিয়তা হঠাৎ কমে গিয়েছিল।

4. ‘কেউ রাজাপ্পার অ্যালবামের কথা উল্লেখও করত না, তাকে পাত্তাও দিত না।’-সকলের এমন আচরণের কারণ গল্প অনুসরণে আলোচনা করো।

উত্তর: এমন আচরণের কারণ অ্যালবাম নিয়ে রাজাপ্পার মনে যথেষ্ট অহংকার ছিল। তার মনে হয়েছিল এমন অ্যালবাম আর কারও নেই। কিন্তু নাগরাজনের অ্যালবামটি দেখার পর সবাই সেই অ্যালবামের | প্রশংসা করতে শুরু করে। ক্লাসের সহপাঠী কৃয়ান ঠাট্টা করে জানায়  রাজাপ্পার অ্যালবামটা এখন ডাস্টবিনে রাখার যোগ্য। তার কথার সমর্থন জানিয়ে ক্লাসের বন্ধুরা সমস্বরে চিৎকার জানায়, অ্যালবামটি সত্যিই বাজে-“বাজে অ্যালবাম!” ফলে রাজাপ্পার মন খারাপ হয়ে যায়। সে স্পষ্টই অনুভব করে তার অ্যালবাম সম্পর্কে কেউ কোনো উৎসাহ দেখায় না।

এই প্রসঙ্গে স্মরণীয় যে, নাগরাজনের ব্যবহার ছিল অত্যন্ত মধুর। সে প্রত্যেককে অ্যালবাম ডেকে ডেকে দেখাত। বন্ধুরা মুগ্ধ হয়ে সেই ছবিগুলি দেখত। ফলে তাদের আর নতুন করে রাজাপ্পার কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হতো না। তাই কেউ রাজাপ্পাকে পাত্তাই দিত না।

5. স্কুলের ছেলেমেয়েদের নাগরাজন কীভাবে তার নিজের অ্যালবামটি দেখতে দিত?

উত্তর: নাগরাজন তার কাকার কাছ থেকে একটি অপূর্ব সুন্দর অ্যালবাম উপহার পেয়েছিল। সেই অ্যালবামটি সে ক্লাসের প্রত্যেক ছেলেমেয়েকে ডেকে দেখাত। এমনকি সন্ধ্যেবেলায় তার বাড়িতে গিয়ে বন্ধুরা অ্যালবামটি দেখত। নাগরাজন এতে কোনো রাগ বা অসন্তোষ প্রকাশ করত না। পরম যত্নে অ্যালবামটি সে রাখত। স্কুলের সহপাঠিনী পার্বতী নিজেও এই অ্যালবামটি বাড়িতে নিয়ে দেখে পুনরায় নাগরাজনকে ফিরিয়ে দিত। এভাবে স্কুলের ছেলেমেয়েদের নাগরাজন নিজের অ্যালবামটি দেখাত।

6. ডাকটিকিট সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে রাজাপ্পার তীব্র আকর্ষণের যে পরিচয় গল্পে রয়েছে তা আলোচনা করো।

উত্তর: সুন্দর রামস্বামী প্রণীত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পের মূল বিষয় হলো অপূর্ব সুন্দর ডাকটিকিট সংগ্রহ করার ইচ্ছা। রাজাপ্পা যেভাবে ডাকটিকিট সংগ্রহ করত, তার সেই আগ্রহের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে মৌমাছির মধু সংগ্রহের সঙ্গে।

বহু দূর দূরান্তে গিয়ে রাজাপ্পা ডাকটিকিট সংগ্রহ করত। বিকালে স্কুলে থেকে ফিরে এসেই বইপত্র বাড়িতে রেখে বেড়িয়ে পড়ত অনেক দূরে। এমনও হয়েছে প্রায় চার মাইল দূরে থাকা একটি ছেলের কাছে সে পৌঁছে গিয়েছিল কানাডার ডাকটিকিট সংগ্রহ করার ইচ্ছাতে।

7. ‘চোরাদৃষ্টিতে অ্যালবামটা দেখত’- সেই চোরাদৃষ্টিতে দেখা অ্যালবামটির কোন্ বিশেষত্বের কথা গল্পে রয়েছে?

উত্তর: অ্যালবামটির বিশেষত্ব প্রখ্যাত ভারতীয় লেখক সুন্দর রামস্বামী প্রণীত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ নামাঙ্কিত গল্পে রাজাপ্পার চোরা দৃষ্টির কথা বলা হয়েছে।

সিঙ্গাপুর থেকে যে অ্যালবামটি নাগরাজনের কাকা নাগরাজনকে দিয়েছিল সেই অ্যালবামটি ছিল অত্যন্ত সুন্দর। ক্লাসের সমস্ত ছেলেমেয়ে সেই অ্যালবাম দেখার জন্যে বিপুল উৎসাহে একত্রিত হতো। রাজাপ্পার অ্যালাবামটি কেউ দেখত না। ফলে রাগে ও ঈর্ষায় সে চোরা দৃষ্টিতে অ্যালবামটি দেখার চেষ্টা করত। কোনো স্থানীয় দোকানে এমন সুন্দর অ্যালবাম পাওয়া সম্ভব নয়। রাজাপ্পার মনে হয়েছিল, এই অ্যালবামটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অর্থাৎ, অ্যালবামটি একেবারেই স্বতন্ত্র। তার চোরা দৃষ্টিতে অ্যালবামের অপূর্ব সৌন্দর্য ধরা পড়েছে।

8. নাগরাজনের প্রতি রাজাপ্পা কীভাবে ক্রমশ ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েছিল?

উত্তর: ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে সুন্দর রামস্বামী দুই বন্ধুর অ্যালবামকে কেন্দ্র করে পারস্পরিক ঈর্ষার দিকটি দেখাতে চেয়েছেন। নাগরাজনের অ্যালবাম অপূর্ব সুন্দর। সেই অ্যালবামের সঙ্গে কোনোমতেই রাজাপ্পার অ্যালবামের তুলনা চলে না। সবাই যখন নাগরাজনের অ্যালবামের প্রশংসা করে, তখন মনে মনে ঈর্ষা প্রকাশ করে রাজাপ্পা। রাজাপ্পার মনোভাবকে ব্যাখ্যা করে কৃষ্ণান তাকে হিংসুটে পোকা বলে চিহ্নিত করেছে। তার অ্যালবামটি যে মোটেই নাগরাজনের অ্যালবামের সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে না-এই বিষয়টি রাজাপ্পা নিজেও উপলব্ধি করেছে। একসময় তার মনে হয়েছে নাগরাজনের অপূর্ব অ্যালবামটির সঙ্গে তার অ্যালবামটি যেন ছেঁড়া ন্যাকড়ার মতো বেমানান।

9. ‘সন্ধ্যাবেলা রাজাপ্পা নাগরাজনের বাড়ি গেল।’- কোন্ উদ্দেশ্য নিয়ে রাজাপ্পা নাগরাজনের বাড়িতে গিয়েছিল? এর মধ্যে দিয়ে তার চরিত্রের কোন্ দিকটি ধরা পড়ে?

উত্তর: রাজাপ্পার উদ্দেশ্য রাজাপ্পা যখন দেখেছিল তার অ্যালবামের তুলনায় অনেক সুন্দর অ্যালবাম নাগরাজনের কাছে আছে তখন সে মনে মনে ঈর্ষা প্রকাশ করেছিল। সেই ঈর্ষার কারণে সে পৌঁছে গিয়েছিল নাগরাজনের বাড়ি। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল অ্যালবামটি তার কাছে নিয়ে আসা।

চারিত্রিক দিক রাজাপ্পা যে মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে, তার মধ্যে মানবিকতা বোধ নেই। বরং তার মধ্যে রয়েছে হিংসা ও পরশ্রীকাতরতা। সে অন্যের জিনিস দেখে মনে মনে ঈর্ষান্বিত হয়েছে। এই কারণে সে সহজ-সরল ও অপূর্ব সুন্দর ব্যবহারের অধিকারী নাগরাজনের অ্যালবামটি চুরি করেছে। এর মধ্যে দিয়ে তার শঠতা, হিংসা, দ্বেষ ও মানবিক মূল্যবোধহীন, অবিবেচক দৃষ্টিভঙ্গীটি প্রকাশিত হয়।

10. ‘রাজাপ্পার চোখ জলে ভরে গেল।’- কোন্ পরিস্থিতিতে রাজাপ্পার চোখ জলে ভরে উঠল?

উত্তর: কোন্ পরিস্থিতি রাজাপ্পা অবশেষে তীব্র হিংসার বসে নাগরাজনের অ্যালবামটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। সৌন্দর্যের এই ধ্বংস দেখে তার মনে গভীর এক অনুশোচনাবোধ তৈরি হয়। সেই পরিস্থিতিতে রাজাপ্পার চোখ জলে ভরে ওঠে।

ক্লাসের সমস্ত ছেলেমেয়ে নাগরাজনের অ্যালবামের প্রতি মুগ্ধ হলে রাজাপ্পা মনে মনে অভিমান করে। সেই অভিমান একসময় বিদ্বেষে পরিণত হয়। সে যে-কোনোভাবে নাগরাজনের অ্যালবামটি দেখার চেষ্টা করে। একসময় তার বাড়ি গিয়ে অ্যালবামটি চুরি করে আনে। কিন্তু চুরি করার পরে অদ্ভুত এক সমস্যা তার মনের মধ্যে তৈরি হয়। সে কোনোভাবে রাতে ঘুমাতে পারে না। তার মধ্যে অস্থিরতা দেখা যায়। ফালে সে বাধ্য হয়ে অ্যালবামটি পুড়িয়ে দেয়।

যখন নাগরাজন রাজাপ্পার সামনে দাঁড়িয়ে মনের কষ্ট প্রকাশ করে, তখন সহপাঠীর সেই ব্যথা-বেদনাবোধ রাজাপ্পাকে পীড়িত করে। অপূর্ব ও মূল্যবান অ্যালবামটি নষ্ট করার কারণে এক তীব্র অনুশোচনাবোধ থেকে রাজাপ্পার চোখ জলে ভরে ওঠে।

11. ‘নাগরাজন হতবুদ্ধি হয়ে গেল।’-তার হতবুদ্ধি হয়ে পড়ার কারণ কী?

উত্তর: হতবুদ্ধি হয়ে পড়ার কারণ সুন্দর রামস্বামী প্রণীত ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পটি আসলে অ্যামবামকে কেন্দ্র করে সহপাঠীদের মধ্যে যে উত্তেজনা-উৎসাহ-আগ্রহ দেখা যেত, তার অপূর্ব শিল্পরূপ। এই গল্পের মূল চরিত্র দুটি। রাজাপ্পা ও নাগরাজন দুই সহপাঠী। রাজাপ্পা যে অ্যালবামটি সবাইকে দেখাত, সেই অ্যালবামের থেকে অনেক সুন্দর হলো নাগরাজনের অ্যামবামটি। একটা সময় দেখা যায়, সেই অ্যালবামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রত্যেকে নাগরাজনের অ্যালবামটি দেখতে থাকে। ঈর্ষাপরায়ণ রাজাপ্পা তখন নাগরাজনের বাড়ি থেকে অ্যালবামটি চুরি করে আনে।

একসময় মানসিকভাবে ভীতিগ্রস্ত হয়ে নাগরাজনের সেই মূল্যবান অ্যালবামটি অগ্নিদগ্ধ করে। নাগরাজন যখন রাজাপ্পার বাড়িতে এসে ভাঙা গলায় জানায়, “আমার টিকিটের অ্যালবাম হারিয়ে গেছে”, তখন প্রাথমিক কথা বলার পর ক্রন্দনরত নাগরাজনকে স্বান্তনা দিয়ে বলে-“কাঁদিস না।” নাগরাজন যখন রাজাপ্পার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে, তখন রাজাপ্পা নিজের অ্যালবামটি নাগরাজনকে দেওয়ার কথা বলে। এই কথা শুনে নাগরাজন হতবুদ্ধি হয়ে যায়।

12. কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনার আগুনে দগ্ধ হয়েই ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পে রাজাপ্পার আত্মশুদ্ধি ঘটেছে।’ – গল্পের ঘটনা বিশ্লেষণ করে উদ্ধৃতির যথার্থতা প্রতিপন্ন করো।

উত্তর : উদ্ধৃতিটির যথার্থতা বিচার = ভারতীয় কথাসাহিত্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন লেখক হলেন সুন্দর রামস্বামী। তাঁর ‘টিকিটের অ্যালবাম’ গল্পের প্রধান দুটি চরিত্র হলো-রাজাপ্পা ও নাগরাজন। রাজাপ্পার অ্যালবাম অপেক্ষা যখন নাগরাজনের অ্যালবামটি নিয়ে সবাই মুগ্ধ হয়, তখন রাজাপ্পা মনে মনে ঈর্ষান্বিত হয়। সে ঈর্ষার বশে নাগরাজনের বাড়িতে পৌঁছে যায় এবং তার অ্যালবামটি চুরি করে আনে।

একসময় মূল্যবান এই অ্যালবামটি সে অগ্নিদগ্ধ করে। অত্যন্ত বিষণ্ণ মন নিয়ে নাগরাজন রাজাপ্পার বাড়িতে উপস্থিত হয়। রাজাপ্পা যতই ক্রন্দনরত নাগরাজনকে স্বান্তনা দেয়, ততই নাগরাজন কাঁদতে থাকে। রাজাপ্পার বাড়ি থেকে যখন সে বেরিয়ে যায়, তখন রাজাপ্পা নিজের অ্যালবামটি দেওয়ার কথা বলে।

আসলে রাজাপ্পার মনের মধ্যে ছিল তীব্র অনুশোচনাবোধ। সেই অনুশোচনাবোধ থেকে তার আত্মশুদ্ধি ঘটে। অর্থাৎ তার মনের মধ্যে গভীর এক পরিবর্তন দেখা যায়।

লোকটা জানলই না

1. Very Short Question Answer

1. কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কি?

উত্তর: কবি মুখোপাধ্যায় প্রণীত প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম হলো- ‘পদাতিক’ (১৯৪০)।

2. বাঁদিকে বুক পকেটটা সামলাতে সামলাতে…’- এখানে ‘বাঁদিকের বুক পকেট’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: আলোচ্য অংশে ‘বাঁদিকের বুক পকেট’ বলতে টাকা-পয়সার কথা বোঝানো হয়েছে।

3. ‘ইহকাল পরকাল’-এই শব্দদ্বয় এখানে কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?

উত্তর: ‘ইহকাল পরকাল’ এই শব্দদ্বয় এখানে লৌকিক জগৎ ও পরলৌকিক জগৎ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

2. Short Question Answer

 1. কবিতায় লোকটির দু-আঙুলের ফাঁক দিয়ে কী খসে পড়ল?

উত্তর: কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘লোকটা জানলই না’ কবিতায় লোকটার দু-আঙুলের ফাঁক দিয়ে কখন খসে পড়ল তার জীবন।

2. ‘আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ’ আসলে কী? তাকে এরকম বলার কারণ বুঝিয়ে দাও?

উত্তরের প্রথমাংশ: ‘আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ’ রূপকথার বিচিত্র জগৎকে মনে করিয়ে দেয়। এখানে অবশ্য এই কথার মাধ্যমে হৃদয়ের সুখ-আনন্দ-শান্তিকেই বোঝানো হয়েছে।

উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: তাকে এরকম বলার কারণ, লোকটা জানলই না শুধু অর্থ-প্রাচুর্য সন্ধানেই জীবনের আনন্দ নেই। সে শুধুমাত্র বাঁ দিকের বুক-পকেটটা সামলাতে সামলাতে ইহকাল-পরকাল নষ্ট করেছে। নিজের হৃদয়কে সে বুঝতে পারেনি।

3. Long Question Answer

1. লোকটা জানলই না’ পঙ্ক্তিটি দুবার কবিতায় আছে। একই পঙ্ক্তিটি একাধিকবার ব্যবহারের কারণ কী?

উত্তর : কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় একটি মানুষের অকালে নিঃশেষিত হওয়ার সংবাদ জ্ঞাপন করে জানিয়েছেন, লোকটা জীবনের প্রকৃত অর্থ, বেঁচে থাকার সার্থকতা- এসব কিছুই জানল না। ফলে ‘তার কড়িগাছে কড়ি হলো’ ঠিকই কিন্তু হৃদয়ের কোনো খবর সে পেল না। এই কথাটুকু অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বোঝানোর জন্যে ‘লোকটা জানলই না’ পঙ্ক্তিটি একাধিকবার ব্যবহৃত হয়েছে।

2. কবি ‘হায়-হায়’ কোন্ প্রসঙ্গে বলেছেন? কেন বলেছেন?

উত্তর: প্রসঙ্গ = কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় ‘লোকটা জানলই না’ কবিতায় সেই মানুষটির কথা বলেছেন, যে বাঁ দিকের বুক-পটেকটা সামলাতে সামলাতে হৃদয়ের কথা শোনেনি। সেই প্রসঙ্গে অত্যন্ত আক্ষেপ থেকে ‘হায়-হায়’ কথাটি উচ্চারণ করেছেন।

উত্তটির কারণ = নাম-গোত্রহীন লোকটা শুধু অর্থ চিন্তা করতে গিয়ে জীবনের সহজ আনন্দকে নষ্ট করে ফেলেছে। বন্ধু-বান্ধব, স্বজন-পরিজনহীন জীবন অতিবাহিত করে সে শুধুমাত্র অর্থ সংগ্রহের বাসনায় জীবনের সমস্ত আনন্দকেই বিসর্জন দিয়েছে। তাই কবি ‘হায়-হায়’ এই বিস্ময়বোধক পদ ব্যবহার করেছেন।

3. কবিতাটির নামকরণ যদি হতো ‘হৃদয়’ বা ‘আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ’ তাহলে তা কতটা সার্থক হতো?

উত্তর: নামকরণের নেপথ্যে লেখকের নিজস্ব বোধ-মেধা-যুক্তি কাজ করে। ‘লোকটা জানলই না’ কবিতার নামকরণ হতে পারত ‘হৃদয়’। কেননা, আলোচ্য কবিতার মানুষটি কারও হৃদয় পায়নি। ফলে সে শুধু নিরানন্দময় জীবন অতিবাহিত করেছে। আলোচ্য কবিতার নাম অনুরূপে ‘আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ’ হতে পারতো। কেননা, কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় হৃদয়কে তুলনা করেছেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের সঙ্গে।

কিন্তু কবি সচেতনভাবেই তাকে বিশ্বময় ব্যাপ্ত আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকতে দেখেছেন। তাই বাইরের জগৎ এমনকি তার অন্তর্জগৎও শূন্য হতে দেখেছেন। এজন্যে কবি আলোচ্য যে নামকরণ করেছেন, কবির অভিপ্রায় অনুসারে তা যথার্থ।