WBBSE Class 8 Geography Chapter 4 Solution| Bengali Medium

Class 8 Chapter 4 Solution

চাপবলয় ও বায়ুপ্রবাহ


MCQs

1. পৃথিবীতে মোট স্থায়ী বায়ুচাপবলয়ের সংখ্যা-

(a) 3টি

(b) 5টি

(c) 7টি

(d) 9টি

উত্তর: (c) 7টি।

2. অশ্ব অক্ষাংশের অবস্থান-

(a) 0°-5° উঃ

(b) 25°-35° উঃ ও দঃ

(c) 60°-70° উঃ

(d) 80°-90° দঃ অক্ষাংশে

উত্তর: (b) 25°-35° উঃ ও দঃ অক্ষাংশে।

3. ডোলড্রামসের অক্ষাংশগত অবস্থান হল-

(a) 0°-5° উঃ ও দঃ

(b) 25°-35° উঃ ও দঃ

(c) 60°-70° দঃ

(d) 80°-90° উঃ

উত্তর: (a) 0°-5° উঃ ও দঃ।

4. বায়ুচাপ ও বায়ুপ্রবাহের পারস্পরিক সম্পর্কের সূত্রের আবিষ্কারক হলেন-

(a) ফেরেল

(b) বাইস ব্যালট

(c) কোপেন

(d) বার্কনেস

উত্তর: (b) বাইস ব্যালট।

5. বাণিজ্য বায়ুর অপর নাম-

(a) মেরু বায়ু

(b) পশ্চিমা বায়ু

(c) আয়ন বায়ু

(d) মৌসুমি বায়ু

উত্তর: (c) আয়ন বায়ু।

6. পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়-

(a) 0°-5° উঃ

(b) 25°-35° উঃ ও দঃ

(c) 35°-60° উঃ ও দঃ

(d) 70°-80° দঃ

উত্তর: (c) 35°-60° উঃ ও দঃ।

7. ক্যাটাবেটিক বায়ুপ্রবাহ হল একটি- 

(a) নিম্নগামী বায়ুপ্রবাহ 

(b) ঊর্ধ্বগামী বায়ুপ্রবাহ

(c) অনুভূমিক বায়ুপ্রবাহ

(d) নিয়ত বায়ুপ্রবাহ

উত্তর: (a) নিম্নগামী বায়ুপ্রবাহ।

৪. চিনুক যে প্রকৃতির বায়ু তা হল-

(a) উন্মু বায়ু

(b) আর্দ্র বায়ু

(c) শীতল বায়ু

(d) শীতল ও শুষ্ক বায়ু

উত্তর: (a) উন্ন বায়ু।

9. প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে থাকে-

(a) উচ্চচাপ

(b) নিম্নচাপ

(c) সাধারণ চাপ

(d) শূন্যচাপ

উত্তর: (a) উচ্চচাপ।

10. তুমি যদি মাঝসমুদ্রে একটি জাহাজে ‘ডোলড্রামস্’-এ থাকো, তাহলে তুমি-

(a) সুমেরু বৃত্তীয়

(b) মকরীয়

(c) নিরক্ষীয়

(d) সুমেরু এলাকায় আছো

উত্তর: (c) নিরক্ষীয় এলাকায় আছো।

11. ITCZ-এর অপর নাম হল-

(a) কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়

(b) নিরক্ষীয় শান্ত বলয়

(c) অশ্ব অক্ষাংশ

(d) মকরীয় উচ্চচাপ বলয়

উত্তর: (b) নিরক্ষীয় শান্ত বলয়।

12. কোরিওলিস বলের মান সর্বনিম্ন-

(a) নিরক্ষীয়

(b) ক্রান্তীয়

(c) মেরু ক্রান্তীয় ও মেরু

(d) সমুদ্রগর্ভ অঞ্চলে

উত্তর: (a) নিরক্ষীয় অঞ্চলে।

13. সমুদ্র বায়ু (ডেবরা হরিমতী সারস্বত বিদ্যামন্দির, উঃমাঃ)

(a) সকালবেলা

(c) মধ্যরাতে

(b) দুপুরবেলা

(d) বিকেলবেলায় দ্রুত প্রবাহিত হয়

উত্তর: (d) বিকেলবেলায় দ্রুত প্রবাহিত হয়।

Very Short Question Answer

1. স্থলবায়ু, সমুদ্রবায়ু, মৌসুমি বায়ু, পশ্চিমাবায়ু

উত্তর: পশ্চিমাবায়ু।

2. ফন, ব্লিজার্ড, চিনুক, আঁধি

উত্তর: ব্লিজার্ড।

3. স্তেপ, প্রেইরি, সাহারা, পম্পাস

উত্তর: সাহারা।

4. স্পেন, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, ইতালি

উত্তর: মালয়েশিয়া।

5. নট, বাত পতাকা, ব্যারোমিটার, অ্যানিমোমিটারউত্তর: নট।

6. পৃথিবীতে মোট কয়টি নিম্নচাপ বলয় আছে?

উত্তর: 3টি।

7. ‘দ্য ডক্টরস উইন্ড’ নামে পরিচিত বায়ুটির নাম কী?

উত্তর: হারমাট্টান।

8. বায়ুর চাপ পরিমাপের এককের নাম কী?

উত্তর: মিলিবার।

9. বায়ুর গতিবেগ মাপার এককের নাম কী?

উত্তর: নট। (1 নট = 1.852 km.)

10. কালবৈশাখী কী ধরনের বায়ুপ্রবাহ?

উত্তর: আকস্মিক বায়ু।

11. উত্তর গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ু কী নামে পরিচিত?

উত্তর: দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু।

12. দুটি শীতল স্থানীয় বায়ুর নাম লেখো।

উত্তর: বোরা ও মিস্ট্রাল।

13. নিরক্ষীয় অঞ্চলে কোরিওলিস বলের মান কত?

উত্তর: ০ (শূন্য)।

14. ‘ক্রান্তীয় পুবালি বায়ু’ কোন্ বায়ুর অপর নাম?

উত্তর: আয়ন বায়ু।

15. ‘ITCZ’-এর পুরো কথাটি লেখো।উত্তর: Inter Tropical Convergence Zone I

16: পোর্তুগাল, স্পেন, ইতালি ও ফ্রান্সে কোন্ বায়ুর প্রভাবে কোন্ ঋতুতে বৃষ্টিপাত হয়?উত্তর: পোর্তুগাল, স্পেন, ইতালি ও ফ্রান্সে হল দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমাবায়ুর প্রভাবে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয়।

17: মনে করো, তুমি দক্ষিণ গোলার্ধে বায়ুপ্রবাহের দিকে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছো। তোমার কোন্ দিকে বায়ুর চাপ কী রকম হবে, তা নীচের শূন্যস্থানে লিখে ফেলো।

উত্তর: আমার ডানদিকে বায়ুর চাপ কম ও বাঁদিকে বায়ুর চাপ বেশি হবে।

18. বর্ষাকালে আমাদের রাজ্যে যে বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি হয়, সেই বায়ু কোন্ দিক থেকে প্রবাহিত হয়?

উত্তর: দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে আসা দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়।

19.দক্ষিণ গোলার্ধে আয়ন বায়ু কী নামে পরিচিত?উত্তর: দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু।

উত্তর: নিম্নচাপ।

20: দক্ষিণ গোলার্ধে কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় অঞ্চল থেকে বায়ু ঊর্ধ্বগামী হয়ে কোন অঞ্চলে নেমে আসে?

উত্তর: মকরীয় উচ্চচাপ বলয় ও কুমেরু উচ্চচাপ বলয়ে নেমে আসে।

21. দুই গোলার্ধে মেরু অঞ্চলে কী ধরনের বায়ুচাপ বলয় অবস্থান করে? 

উত্তর: উচ্চচাপ বলয়। 

22. সুমেরু অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত দেশ ও সাগরের নাম লেখো।

উত্তর: দেশ: গ্রিনল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড।

সাগর: পূর্ব সাইবেরিয়ান সাগর, লাপতেভ সাগর, বিউফোর্ট সাগর, নরওয়েজীয় সাগর, ব্যারেন্টস সাগর, কারা সাগর, চুকচি সাগর ইত্যাদি।

প্রশ্তে ক-টা বায়ুচাপ বলয় আছে তাদের নাম লিগে ফেলো।
উত্তর : পৃথিবীতে মোট সাতটি বায়ুচাপ বলয় আছে, সেগুলি হল- (ⅰ) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়, (ii) কর্কটীয় উচ্চচাপ বলায় (iii) মকরীয় উচ্চচাপ বলয়, (iv) সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচ বলয়, (v) কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়, (vi) সুমেরীয় উচ্চচাপ বলয়, (vii) কুমেরীয় উচ্চচাপ বলয়।

24. নিরক্ষীয় অঞ্চলে কোন্ ধরনের (উচ্চচাপ/নিম্নচাপ) বায়ুচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে?

উত্তর: নিম্নচাপ।

25. দুটি দেশ ও দুটো মহাসাগরের নাম করো যার উপর দিয়ে এই বায়ুচাপ বলয় বিস্তৃত?

উত্তর: দুটি দেশ হল ব্রাজিল (দক্ষিণ আমেরিকা), কেনিয়া (আফ্রিকা) এবং দুটি মহাসাগর হল প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর।

Short Question Answer

প্রশ্ন 1: বায়ুচাপ বলতে কী বোঝো?

উত্তর: ভূপৃষ্ঠে নির্দিষ্ট পরিমিত বর্গ একক ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট জায়গার ওপর বায়ুমণ্ডল যে ওজন বা দেয় তাকে বায়ুচাপ বলে। বায়ুচাপকে মিলিবার এককে মাপা হয়।

প্রশ্ন 2: বাইস ব্যালট সূত্রটি বলো।

উত্তর: 1857 খ্রিস্টাব্দে ডাচ আবহবিদ্‌ বাইস ব্যালট বায়ুচাপের অবস্থানের সঙ্গে বায়ুপ্রবাহের সম্পর্ক সম্বন্ধে এক সূত্র আবিষ্কার করেন। সেটি হল-উত্তর গোলার্ধে বায়ুপ্রবাহের দিকে পিছন ফিরে দাঁড়ালে ডানদিকের বায়ুতে উচ্চচাপ এবং বামদিকের বায়ুতে নিম্নচাপ থাকে। দক্ষিণ গোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থা দেখা যায়। এই সূত্রটি বাইস ব্যালট সূত্র নামে পরিচিত।

প্রশ্ন 3: বাণিজ্য বায়ু কাকে বলে?

উত্তর: ‘আয়ন বায়ুর’ অপর নাম বাণিজ্য বায়ু। ‘আয়ন’ শব্দের অর্থ ‘পথ’। প্রাচীনকালে বাণিজ্য করার জন্য পালতোলা জাহাজগুলি আয়ন বায়ুর নির্দিষ্ট প্রবাহপথ অনুসরণ করে চলাচল করত বলে আয়নবায়ুকে বাণিজ্য বায়ু (Trade wind) বলে।

প্রশ্ন 4: প্রবল পশ্চিমা বায়ু কাকে বলে?

উত্তর: মকরীয় উচ্চচাপ বলয় (23½° দক্ষিণ) থেকে কুমেরু বৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের (66½° দক্ষিণ) দিকে প্রবাহিত পশ্চিমা বায়ু বাধাহীনভাবে দ্রুতগতিতে সমুদ্রের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তাই উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ুকে প্রবল বা সাহসী পশ্চিমা বায়ু বলে।

প্রশ্ন 5: নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়কে শান্ত বলয় বা ডোলড্রাম বলা হয় কেন? অথবা, ডোলড্রামস্ কী?

উত্তর: নাবিকদের পরিভাষায় ‘ডোলড্রামস’ এর ইংরেজি প্রতি শব্দ ‘ডিপ্রেস্ড’ (Depressed) অর্থাৎ ‘অবদমিত’ বা ‘নিশ্চল’। নিরক্ষরেখা থেকে 5° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে সারা বছর ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে আগত উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব আয়নবায়ু এসে মিলিত হয় এবং উয় ও হালকা হয়ে উপরে উঠে যায়। ফলে বায়ুর ঊর্ধ্বমুখী উল্লম্ব স্রোত পরিলক্ষিত হয়, বায়ুর অনুভূমিক প্রবাহ বোঝা যায় না। ফলে সারা বছর এই অঞ্চলে বায়ু প্রায় নিশ্চল থাকে। তাই এই অঞ্চলকে ‘শান্ত বলয়’ বা ডোলড্রাম বলে।

প্রশ্ন 6: কোরিওলিস বল কী? (চুঁচুড়া দেশবন্ধু মেমোরিয়াল হাইস্কুল)

উত্তর: ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বা অনুভূমিকভাবে প্রবাহিত বায়ু পৃথিবীর আবর্তন গতির দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়। বিশ্ব বিখ্যাত ফরাসি পদার্থবিদ গ্যাসপার্ড গুস্তাভ দ্য কোরিওলিস পৃথিবীর আবর্তনজনিত কারণে সৃষ্ট দিক বিক্ষেপক শক্তিকে বা বলকে চিহ্নিত করেন। এই শক্তির প্রভাবে স্বচ্ছন্দ, গতিশীল বস্তু যেমন- বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত প্রভৃতি উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়। সেজন্য তাঁর নামানুসারে এই বলকে কোরিওলিস বল বলা হয়।

প্রশ্ন 7: নিয়তবায়ু কাকে বলে?

উত্তর: ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে সারাবছর বায়ু নিয়মিতভাবে একটি নির্দিষ্ট উচ্চচাপ বলয় থেকে নির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করে নির্দিষ্ট নিম্নচাপ বলয়ের দিকে বায়ু প্রবাহিত হয়। তাকে নিয়তবায়ু বলে। নিয়তবায়ু তিন প্রকার, সেগুলি হল- (i) আয়ন বায়ু, (ii) পশ্চিমা বায়ু ও (iii) মেরু বায়ু।

প্রশ্ন ৪: বায়ুস্রোত বলতে কী বোঝো?

উত্তর: পৃথিবীপৃষ্ঠের উপর অবস্থিত বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থান ও বিশেষ ভূমিরূপের জন্য বায়ু যখন উপর থেকে নীচ অথবা নীচ থেকে উপরে উল্লম্বভাবে চলাচল করে, তাকে বায়ুস্রোত বলে। বায়ুস্রোতের কারণে বায়ুর শান্তভাব বিরাজ করে বলে নিরক্ষীয় অঞ্চল, কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চলে শান্তবলয় নামে পরিচিত। অন্যদিকে পার্বত্য উপত্যকায় দিনের বেলায় অ্যানাবেটিক বায়ু এবং রাত্রিবেলায় ক্যাটাবেটিক বায়ু বায়ুস্রোতের উদাহরণ।

প্রশ্ন 9: সাময়িক বায়ু কাকে বলে?

উত্তর: যে সমস্ত বায়ুপ্রবাহ সারা বছর প্রবাহিত না হয়ে কোনো দিনের বা বছরের নির্দিষ্ট সময়ে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে প্রবাহিত হয়, সেই বায়ুপ্রবাহকে সাময়িক বায়ুপ্রবাহ বলে। উদাহরণ: মৌসুমি বায়ু, স্থলবায়ু, সমুদ্র বায়ু প্রভৃতি।

প্রশ্ন 10: মেরু বায়ু কাকে বলে?

উত্তর: পৃথিবীর উভয় গোলার্ধের মেরু অঞ্চলের (সুমেরু-কুমেরু) উচ্চচাপ বলয় (80°-90° উত্তর ও দক্ষিণ) থেকে যে শুষ্ক ও শীতল বায়ু মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের (60°-70° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশ) দিকে সারাবছর নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হয়, তাকে মেরুবায়ু বলে।

প্রশ্ন 11: অ্যানাবেটিক ও ক্যাটাবেটিক বায়ু কাকে বলে? (বর্ধমান রাজ কলেজিয়েট স্কুল)উত্তর: যে উয় ও হালকা বায়ু পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উপরে ওঠে, তাকে অ্যানাবেটিক বায়ু বলে। এই বায়ুপ্রবাহ দিনের বেলা অনুভূত হয়। আর যে শীতল ও ভারী বায়ু পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নীচের দিকে নেমে আসে, তাকে ক্যাটাবেটিক বায়ু বলে। এই বায়ুপ্রবাহ রাত্রিবেলা অনুভূত হয়।

ভুল সংশোধন করো লেখো।

1. আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে উত্তুরে হাওয়া প্রবাহিত হয়।

উত্তর: আমাদের দেশে শীতকালে উত্তরে হাওয়া প্রবাহিত হয়।

2. সমুদ্র সমতলে বায়ুর স্বাভাবিক চাপ হল 1031.25 মিলিবার। 

উত্তর: সমুদ্র সমতলে বায়ুর স্বাভাবিক চাপ হল 1013.25 মিলিবার।

3. ঘূর্ণবাত এক ধরনের স্থানীয় বায়ু।

উত্তর: ঘূর্ণবাত এক ধরনের আকস্মিক বায়ু।

4. নিয়ত বায়ু প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত।

উত্তর: নিয়ত বায়ু তিনটি ভাগে বিভক্ত।

5. বসন্তকালে সাইক্লোন ‘পিলিন’ দেখা গিয়েছিল।

উত্তর: শরৎকালে সাইক্লোন ‘পিলিন’ দেখা গিয়েছিল।

12. আমি আফ্রিকার লিবিয়ার মরুভূমি থেকে উৎপন্ন একপ্রকার উয় বায়ু ও ধূলিকণা পূর্ণ স্থানীয় বায়ু। আমি কে?

উত্তর: সিরক্কো।

13. আমি একটি বায়ু। কর্কটক্রান্তি রেখা থেকে নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে সারাবছর নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হই। আমি কে?

উত্তর: উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু।

14. আমি একপ্রকার সাময়িক বায়ু। সমুদ্রোপকূলে সমভাবাপন্ন জলবায়ু তৈরিতে সাহায্য করি। আমি কে?

উত্তর: সমুদ্র বায়ু।

15. আমি একটি উপত্যকা বায়ু। পর্বতের পাদদেশীয় অঞ্চল থেকে উপরের দিকে দিনের বেলায় উঠতে থাকি। আমি কে?উত্তর: অ্যানাবেটিক বায়ু।

16. ওপরের ছবি দুটো দেখে বলো উত্তর গোলার্ধ ও দক্ষিণ গোলার্ধে প্রতীপ ঘূর্ণবাতের বায়ুর অভিমুখ কোন্ দিকে?

উত্তর: ওপরের ছবি দুটো দেখে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে প্রতীপ ঘূর্ণবাতের অভিমুখ উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে অর্থাৎ বাম দিকে।

17. নীচের ছবি দুটো দেখে বলোতো কোন্টা ঘূর্ণবাত আর কোন্টা প্রতীপ ঘূর্ণবাতের প্রভাবকে বোঝাচ্ছে? (পাঠ্যবই পৃষ্ঠা নং 41 -এর শেষ ছবিদুটো দ্যাখো)উত্তর: প্রথম ছবিটি (ক) প্রতীপ ঘূর্ণবাতের প্রাকৃতিক দৃশ্য। কারণ মেঘহীন নির্মল নীল আকাশ দেখা যাচ্ছে। স্বাভাবিক উদ্ভিদ সবুজ আছে। জলকণাহীন সাদা মেঘপুঞ্জ নীলাকাশের বুকে ভাসমান আছে। কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতির চিহ্নমাত্র নেই। অন্যদিকে, দ্বিতীয় ছবিটি (খ) ঘূর্ণবাতের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। কারণ সেখানে সর্বত্রই ধ্বংস ও ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবলীলার চিত্র ফুটে উঠেছে। একটি নদী/সমুদ্র উপকূলে নৌকাগুলি এলোমেক্সে অবস্থায় আছে। সামগ্রিকভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকা প্রাকৃতিক পরিবেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন অর্থাৎ অস্বচ্ছ হয়।

18. কোন্ বায়ু উপকূলবর্তী অঞ্চলে বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায়?

উত্তর: সমুদ্রবায়ু উপকূলবর্তী অঞ্চলে বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায়। কারণ সমুদ্রের উপর দিয়ে আসা সমুদ্রবায়ু প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে স্থলভাগের উপকূলবর্তী অঞ্চলের পাহাড়-পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায়।

উদাহরণ: ভারতের পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চলের পশ্চিম ঢাল।

19.ভোরবেলা পালতোলা নৌকা কোন্ বায়ুর প্রভাবে সমুদ্রে বা নদীতে চলবে?

উত্তর: ভোরবেলা পালতোলা নৌকা স্থলবায়ুর প্রভাবে সমুদ্রে বা নদীতে চলাচল করবে। কারণ রাত্রিবেলা স্থলভাগ জলভাগ অপেক্ষা দ্রুত তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়ে উচ্চচাপের সৃষ্টি করে। অন্যদিকে জলভাগ অপেক্ষাকৃত অধিক উষু থাকায় সেখানে নিম্নচাপ থাকে। ফলে ভোররাতে দুই অঞ্চলের মধ্যে চাপের সর্বোচ্চ পার্থক্যে স্থলভাগের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু দ্রুতগতিতে জলভাগের নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।

20.বিকেলের দিকে সমুদ্র বা নদীর পাড়ে বসলে কোন্দিক থেকে ঠান্ডা হাওয়া বইবে?

উত্তর: বিকেলে সমুদ্র বা নদীর দিক থেকে স্থলভাগের দিকে ঠান্ডা হাওয়া বইবে। কারণ দিনের বেলায় সমুদ্র সন্নিহিত স্থলভাগ বা উপকূলভাগ সূর্যতাপে দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে বায়ুতে নিম্নচাপের সৃষ্টি করে। কিন্তু ওই সময় সমুদ্র বা জলভাগ ততটা উত্তপ্ত না হওয়ায় এর উপরের বায়ু উচ্চচাপযুক্ত হয়। বিকেলের দিকে এই দুই বায়ুর চাপের সর্বোচ্চ পার্থক্যের কারণে জলভাগ বা সমুদ্রের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে ঠান্ডা বায়ু স্থলভাগের নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হবে।

21. শীতকালীন মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি প্রায় হয় না কেন?

উত্তর: ভারতের উপর দিয়ে শীতকালে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে যে মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়, এই বায়ু-স্থলভাগের উপর দিয়ে আসার জন্য বায়ুতে জলীয় বাষ্পের অভাবে বৃষ্টিপাত ঘটায় না। ফলে এই বায়ু শীতল ও শুষ্ক প্রকৃতির হয়।

22. মৌসুমি বায়ুকে সাময়িক বায়ু বলার কারণ কী?উত্তর: যে সমস্ত বায়ুপ্রবাহ সারাবছর বোঝা না গেলেও বছরের কিছু বিশেষ সময়ে বা দিনের কিছু বিশেষ সময়ে বোঝা যায়। সেই সমস্ত বায়ুপ্রবাহকে সাময়িক বায়ুপ্রবাহ বলা হয়। জুন-জুলাই-আগস্ট মাসে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু নামে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করে এবং অক্টোবর-নভেম্বর -ডিসেম্বর মাসে উত্তর-পূর্ব-মৌসুমি বায়ু নামে প্রত্যাবর্তন করে। অর্থাৎ বছরে মাত্র 3-4 মাসে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকে বলে মৌসুমি বায়ুকে সাময়িক বায়ু বলে।

23. দক্ষিণ গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ু কোন্ দিক থেকে প্রবাহিত হয় এবং এই বায়ু কী নামে পরিচিত?

উত্তর: দক্ষিণ গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ু উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় এবং এই বায়ু উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ু প্রবল গতিবেগে প্রবাহিত হয় বলে, একে ‘বহুরূপী পশ্চিমা’ বলা হয়।

24.দক্ষিণ গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ুর গতিবেগ বেশি কেন?

উত্তর: দক্ষিণ গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ুর প্রবাহপথে জলভাগ অর্থাৎ মহাসাগরের বিস্তার অধিক থাকায় বাধাহীনভাবে প্রবাহিত হয়। সুবিস্তৃত প্রবাহপথে ঘর্ষণজনিত বাধা না থাকায় উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু বহুরূপী বা প্রবল বা সাহসী পশ্চিমা বায়ু নামে পরিচিত। দক্ষিণ গোলার্ধের অক্ষাংশভেদে এই বায়ু তিনটি নামে পরিচিত। যেমন-40° দক্ষিণ অক্ষাংশের নিকট ‘গর্জনশীল চল্লিশা’ (Roaring Forties), 50° দক্ষিণ অক্ষাংশে ‘ক্রোধোন্মত্ত পঞ্চাশ’ (Howling Fifties) এবং 60° দক্ষিণ অক্ষাংশে তীক্ষ্ণ চিৎকারকারী ষাট (Screaming Sixties) বলা হয়।

25.ফেরেলের সূত্র অনুসারে দক্ষিণ গোলার্ধে মেরুবায়ু কোন্ দিক থেকে প্রবাহিত হয় এবং কী নামে পরিচিত?

উত্তর: কুমেরু উচ্চচাপ বলয় (80°-90° দঃ) থেকে কুমেরু বৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের (60°-70° দঃ) দিকে মেরু বায়ু ফেরেলের সূত্রানুসারে বায়ু বাম দিকে বেঁকে অর্থাৎ দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে দক্ষিণ-পূর্ব মেরুবায়ু নামে পরিচিত।

26. মেরুবায়ু শীতল হয় কেন?উত্তর: পৃথিবীর উভয় গোলার্ধের মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় (80°-90° উঃ/দঃ) থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ (60°-70° উঃ/দঃ) বলয়ের দিকে মেরুবায়ু প্রবাহিত হয়। পৃথিবীর দুই মেরুদেশীয় অঞ্চলে সারাবছর বরফাবৃত ভূমিভাগও সূর্যকে প্রায় ছ’মাস দেখা যায় না। যে সময় সূর্য দেখা যায়, সেই সময় অধিক তির্যকভাবে কিরণ দেওয়ার কারণে তাপমাত্রা খুব বেশি না হওয়ায় হিমশীতল পরিবেশ থেকে প্রবাহিত মেরুবায়ু অত্যন্ত শুষ্ক ও শীতল প্রকৃতির হয়।

27. পৃথিবীতে ক-টা বায়ুচাপ বলয় আছে তাদের নাম লিগে ফেলো।
উত্তর : পৃথিবীতে মোট সাতটি বায়ুচাপ বলয় আছে, সেগুলি হল- (ⅰ) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়, (ii) কর্কটীয় উচ্চচাপ বলায় (iii) মকরীয় উচ্চচাপ বলয়, (iv) সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচ বলয়, (v) কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়, (vi) সুমেরীয় উচ্চচাপ বলয়, (vii) কুমেরীয় উচ্চচাপ বলয়।

Long Question Answer

1. বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণসহ স্থানীয় বায়ুর সংজ্ঞা নির্দেশ করো।

উত্তর: সংজ্ঞা: ভূপৃষ্ঠের নির্দিষ্ট অঞ্চলে স্বল্প পরিসর স্থানে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে স্থানীয় বায়ু (Local Wind) বলে।

• বৈশিষ্ট্য: (i) একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকায় পৃথিবীর অন্য কোনো অঞ্চলে এদের উৎপত্তি হয় না।

(ii) স্থানীয় বায়ুর নামকরণ তার প্রবাহিত অঞ্চলের স্থানীয় নামে পরিচিত হয়।

(iii) এই বায়ু সাধারণত কোনো পার্বত্য অঞ্চল বা মরুভূমি অঞ্চল থেকে উৎপত্তি লাভ করে।

(iv) খুবই স্বল্প সময় ধরে এই বায়ু স্থায়ী হয়।

2. ঘূর্ণবাতের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য লেখো।

অথবা, ঘূর্ণবাত কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর: ‘ঘূর্ণ’ অর্থে ‘ঘোরা’ এবং ‘বাত’ অর্থে ‘বায়ু’। ভূপৃষ্ঠের কোনো স্বল্প পরিসর স্থানে হঠাৎ অধিক উন্নতায় গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হলে বায়ু হালকা ও ঊর্ধ্বগামী হয়। বায়ুচাপের সমতা- রক্ষার্থে চারদিক থেকে তীব্র গতিতে উচ্চ চাপযুক্ত অঞ্চল থেকে শীতল ও ভারী বায়ু নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে এবং উয় হয়ে কুণ্ডলীর মতো পাক খেয়ে কেন্দ্রমুখী ও ঊর্ধ্বগামী হয়। এইরূপ বায়ুপ্রবাহকে ঘূর্ণবাত বলে।

• বৈশিষ্ট্য: (i) ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে শক্তিশালী নিম্নচাপ (986 মিলিবারের কম) এবং ক্রমশ বাইরের দিকে উচ্চচাপ অবস্থান করে।

(ii) ঘূর্ণবাতের বায়ু উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত ও দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে কুণ্ডলাকারে ঘুরতে ঘুরতে প্রবাহিত হয়।

(iii) ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত স্বল্পস্থায়ী, বিধ্বংসী এবং স্বল্প পরিসর স্থানে প্রভাব ফেলে; নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের স্থায়িত্ব বেশি, ব্যাপক অঞ্চল জুড়ে প্রভাব বিস্তার করে এবং কম বিধ্বংসী হয়।

(iv) গ্রীষ্মকালে উৎপত্তি লাভ করে।

(v) ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের গতিপথে ঝড়, বজ্রবিদ্যুৎসহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া সৃষ্টি হয়।

3.কোরিওলিস বলের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।

উত্তর: ভূমিকা: পৃথিবীর আবর্তনের ফলে স্বচ্ছন্দ গতিশীল বস্তুর উপর যে দিক বিক্ষেপক বা পরিবর্তনের বল কাজ করে, তাকে কোরিওলিস বল বলে। 1835 খ্রিস্টাব্দে G.De. Coriolis এই শক্তির কথা প্রথম উল্লেখ করেন বলে এই শক্তির নাম হল ‘কোরিওলিস বল’। এটি আসলে বল নয় একটি প্রভাব মাত্র।

• বৈশিষ্ট্যসমূহ: (i) কোরিওলিস বল একটি দিক বিক্ষেপক ফল বা প্রভাব।

(ii) এই বল স্বচ্ছন্দ গতিশীল বস্তু (বায়ু/সমুদ্রস্রোত) যে দিক থেকে প্রবাহিত হয়, তার সঙ্গে সমকোণে কাজ করে।

(iii) কোরিওলিস বলের দিকবিক্ষেপ শক্তি নিরক্ষরেখার উপর শূন্য (০)। উভয় মেরু অঞ্চলের দিকে দিক বিক্ষেপণের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পায়।

(iv) বায়ু যত বেগে প্রবাহিত হবে দিক পরিবর্তনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলেও বায়ুর গতিবেগের কোনো পরিবর্তন হয় না।

4. প্রতীপ ঘূর্ণবাতের সঙ্গে শান্ত আবহাওয়া জড়িত থাকে কেন?

উত্তর: প্রতীপ ঘূর্ণবাতের সঙ্গে শান্ত আবহাওয়া জড়িত থাকার কারণগুলি হল-

(i) প্রতীপ ঘূর্ণবাতের ক্ষেত্রে শীতল, ভারী বায়ু উপর থেকে নীচের দিকে নেমে আসে অর্থাৎ অধোগামী হওয়ার ফলে বায়ুর উন্নতা ও জলীয় বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা ক্রমশ বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ শুষ্ক হয়। শুষ্ক বায়ু দুর্যোগ ঘটায় না।

(ii) মেঘ, ঝড়, বৃষ্টি বা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য জলীয় বাষ্পের ঊর্ধ্বগমনের পরিবর্তে শীতল, ভারী বায়ুর অধোগমন হয়।

(iii) প্রতীপ ঘূর্ণবাতে সমচাপ রেখাগুলি দূরে দূরে অবস্থান করায় বায়ুর চাপ ঢাল কম থাকার ফলে বায়ুর গতি অত্যন্ত কম হয়।

(iv) শীতল জলবায়ু অঞ্চলে উন্নতা কম থাকার কারণে প্রতীপ ঘূর্ণবাত সৃষ্টি হয়। ফলে আবহাওয়া জলীয় বাষ্পহীন শুষ্ক ও শান্ত প্রকৃতির হয়।

5. অক্টোবর মাসেও আকাশে কালো মেঘ দেখা যাচ্ছে। তোম কী মনে হয় বর্ষার সময়কাল ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে?

উত্তর: এই জাতীয় ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হল জনসংখাদ বৃদ্ধির ফলে শিল্প ও কলকারখানার প্রসার বৃদ্ধি, তৃণভূমিও বনভূমির ধ্বংসসাধন, কৃষিজমি ও জলাভূমির পরিমাণ হ্রাস জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, কংক্রিটের বাড়ি ও বহুজ নির্মাণ, ইত্যাদি। ‘গ্রিন হাউস গ্যাস সমূহ’ মাত্রাতিরিক্তভাবে বৃদি পেয়েছে। এর মারাত্মক কুপ্রভাব হল বিশ্ব উন্নায়ন (Global Warming)।

বায়ুমণ্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাসের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে স্টস্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উর্ধ্বসীমায় অবস্থিত ওজোন গ্যাসের (০) স্তরটি ক্রমশ পাতলা হয়ে গিয়ে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ওই ছিদ্রপথ দিয়ে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে। পৃথিবীর সামগ্রিক গড় উয়তা বৃদ্ধির সাথে জলবায়ুকে পরিবর্তির করছে। ফলস্বরূপ বর্ষাকালের স্বাভাবিক সময়কাল জুন-জুলাই মাস থেকে ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে। এই কারণেই অক্টোবর মাসেও আকাশে কালো মেঘ ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।

6.আয়লা, থানে, পিলিন/ফাইলিন, হেলেন, লহর, হাইয়ান- ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কীভাবে হয় জানার চেষ্টা করো।উত্তর: ঝড়ের তথ্যপঞ্জি তৈরি করার জন্য 1970 সালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) সমস্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে কয়েকটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে ভাগ করেন। এর মধ্যে উত্তর ভারত মহাসাগরকে (45 পূর্ব-100° পূর্ব) কেন্দ্র করে একটি অঞ্চল গঠন করা হয়েছে। যেখানে ৪টি দেশের ওপর ঘূর্ণির (শর্ত- ন্যূনতম ও মিনিট ঘূর্ণিঝড়ের বেগ 63 কি.মি./ঘণ্টা থাকতে হবে।) প্রভাব রয়েছে। 2004 সালে এই ৪টি দেশ প্রত্যেকে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির বহু পূর্বে ৪টি করে মোট 64টি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে। এই সিরিজেন প্রথম ঝড়টি 30 সেপ্টেম্বর 2004 সালে বাংলাদেশ নাম দেয় অনিল ও সর্বশেষটি থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম আমফান 20 মে 2020 সালে আছড়ে পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গের বুকে। ঘূর্ণিঝড় হলেই পূর্ব নির্ধারিত নাম অনুসারে ঘূর্ণিঝড়টি পরিচিতি লাভ করে।

7. জনবসতি কিছুটা বেশি দেখা যায় কেন?

উত্তর: হিমাচল প্রদেশের কুলু ও কাংড়া উপত্যকার মাঝের অংশের তুলনায় পর্বতের উঁচু ঢালে অধিক জনবসতি গড়ে উঠতে দেখা যায় এর কারণগুলি হল-

(i) শীতপ্রধান পার্বত্য অঞ্চলে দিবাভাগে সূর্যরশ্মির প্রভাবে পার্বত্য উপত্যকার নীচের অংশের তুলনায় উপরের অংশ বেশি উষ্ণ হওয়ায় মানুষের জীবনধারণের পক্ষে বেশ আরামদায়ক ও উপযুক্ত হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য, দিনের বেলা পার্বত্য অঞ্চলে ঊর্ধ্বগামী উয় ও হালকা বায়ুকে অ্যানাবেটিক বায়ু প্রবাহিত হয়।

(ii) অন্যদিকে রাত্রিবেলা পর্বতের উপরের অংশ তাপবিকিরণ করে শীতল হয়ে উচ্চচাপে পরিণত হয়। উচ্চচাপের ভারী ও শীতল বায়ু পর্বতের ঢাল বেয়ে নীচের উপত্যকার দিকে নামতে থাকে। নীচের উপত্যকা সংলগ্ন উদ্বু ও হালকা বায়ু উপরের দিকে উঠে। ফলে পর্বতের উঁচু অংশ উন্নতা বৃদ্ধি করে। পার্বত্য অঞ্চলে রাত্রিবেলা এইরূপ নিম্নগামী বায়ুপ্রবাহকে ক্যাটাবেটিক বায়ু বলে।’

8. ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের পশ্চিমদিকে পৃথিবীর অধিকাংশ মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে কেন?

উত্তর: আফ্রিকা মহাদেশের সাহারা, এশিয়া মহাদেশের থর ও আরব মরুভূমি, উত্তর আমেরিকার সোনেরান, দক্ষিণ আমেরিকার আটাকামা প্রভৃতি মরুভূমিগুলি আয়ন বায়ুর প্রবাহপথে মহাদেশের পশ্চিমদিকে গড়ে উঠেছে। এর কারণগুলি হল-

(1) আয়ন বায়ুর উষ্ণতা বৃদ্ধি: পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে ক্রান্তীয় অঞ্চলের কম উয় স্থান থেকে বেশি উয় নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে আয়ন বায়ু প্রবাহিত হওয়ায় এর উয়তা বেড়ে যায়। এছাড়া প্রায় স্থলভাগের উপর দিয়ে আয়ন বায়ু প্রবাহিত হওয়ায় উন্নতা বৃদ্ধির সাথে সাথে জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। যা বায়ু অসম্পৃক্ত করে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়।

(ii) কম জলীয় বাষ্পযুক্ত বায়ু: আয়ন বায়ু পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। তাই মহাদেশের পূর্বদিকে সমুদ্র উপকূলে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে যখন প্রায় স্থলভাগের উপর দিয়ে মহাদেশের পশ্চিমদিকের উপকূলে পৌঁছায় তখন আয়ন বায়ুতে তেমন জলীয় বাষ্প থাকে না। ফলে সেখানে জলীয় বাষ্পের অভাবে বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারে না।(iii) নিম্নগামী বায়ু: নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে ঊর্ধ্বগামী বায়ু বিক্ষিপ্ত হয়ে ক্রান্তীয় অঞ্চলে নিম্নগামী হয়। ফলে উষ্ণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এবং জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটিয়ে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে।

প্রশ্ন 9: দুই ক্রান্তীয় অঞ্চল এবং দুই মেরু অঞ্চলে বায়ুর ঘনত্ব বেশি হয় কেন? 

উত্তর: দুই ক্রান্তীয় অঞ্চলে বায়ুর ঘনত্ব বেশি হওয়ার কারণসমূহ:

(i) সারাবছর নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে উয়, আর্দ্র ও হালকা বায়ু উপরের দিকে উঠে যায় এবং পৃথিবীর আবর্তন গতির প্রভাবে উত্তর ও দক্ষিণে উভয় অঞ্চলে বিক্ষিপ্ত হয়। এই উয়-আর্দ্র বায়ু ঊর্ধ্বে বায়ুমণ্ডলের শীতলতার সংস্পর্শে এসে ঘনীভূত হয় এবং শীতল ও ভারী হয়ে উভয় গোলার্ধের ক্রান্তীয় অঞ্চলে নেমে আসে।

(ii) নিরক্ষীয় অঞ্চল অপেক্ষা উভয় ক্রান্তীয় অঞ্চলে পৃথিবীর পরিধি ও আবর্তনগতি অক্ষোকৃত কম হওয়ার কারণে এই দুই অঞ্চল থেকে বায়ুবিক্ষেপ কম ঘটে।

(iii) পৃথিবীর আবর্তন গতির প্রভাবে সুমেরু বৃত্ত ও কুমেরু বৃত্ত নিম্নচাপ বলয়ের বায়ু বিক্ষিপ্ত হয়ে নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে ধাবিত হয়, যা ক্রান্তীয় অঞ্চলে এসে অবতরণ করে।

(iv) উভয় ক্রান্তীয় অঞ্চলে মনুষ্যবাসের উপযুক্ত পরিবেশ থাকায় বিভিন্ন শিল্প-কলকারখানা ও যানবাহন থেকে নির্গত কার্বনকণা এবং মানবীয় কার্যাবলির ফলে বায়ুতে মিশ্রিত ধূলিকণা- বালুকণার কারণে বায়ুর ঘনত্ব বেশি থাকে। 

দুই মেরু অঞ্চলে বায়ুর ঘনত্ব বেশি হওয়ার কারণসমূহ :

(i) দুই মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের ঊর্ধ্বমুখী বায়ু ভারী ও শীতল হয়ে উভয়ে মেরু অঞ্চলে নেমে আসায় বায়ুর ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।

(ii) পৃথিবীর আবর্তন গতিবেগ এখানে অত্যন্ত কম থাকায় বায়ু বিক্ষিপ্ত না হওয়ায় বায়ু অধিক ঘনত্বযুক্ত হয়।

(iii) সারাবছরই সূর্যরশ্মি এখানে তির্যকভাবে পতিত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে এখানকার বায়ু শীতল ও ভারী হয়।

(iv) উভয় মেরু অঞ্চলে বাষ্পীভবনের হয় না বললেই চলে। বায়ুতে জলীয় বাষ্প খুব কম থাকার কারণে উভয় মেরু অঞ্চলে বায়ুর ঘনত্ব বেশি হয়।

10. কর্কটীয় ও মকরীয় বলয়কে শান্তবলয় বলার কারণ কী?

উত্তর: পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের 25°-35° অক্ষরেখার মধ্যবর্তী কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চলে শান্তবলয় সৃষ্টির কারণ হল নিরক্ষীয় অঞ্চলের উদ্বু, আর্দ্র ও হালকা বায়ু বিক্ষিপ্ত হয়ে ওপরের দিকে উঠে গিয়ে শীতলতার সংস্পর্শে ঠান্ডা ও ভারী হয়ে কর্কটীয় ও মকরীয় বলয়ে নীচের দিকে নেমে আসে। ফলে এই দুটি অঞ্চলে বায়ুর স্রোত উল্লম্ব প্রবাহ থাকে কিন্তু পার্শ্বপ্রবাহ বা অনুভূমিক প্রবাহ না থাকায় এখানে বায়ুপ্রবাহ অনুভূত হয় না বলে সর্বদাই শান্তভাব বিরাজ করে, সেজন্য একে শান্তবলয় বলে।

11. অশ্ব অক্ষাংশ বরাবর পালতোলা জাহাজগুলো গতিহীন হয়ে পড়ত কেন? (অনুরূপ প্রশ্ন:-অশ্ব অক্ষাংশ কাকে বলে?)
উত্তর: পৃথিবীর উভয় গোলার্ধের কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় (25°-35°) বরাবর শীতল ও ভারী বায়ু উপর থেকে নীচে নেমে আসায় এই অঞ্চলে পৃথিবীপৃষ্ঠে বায়ুর কোনো অনুভূমিক প্রবাহ বা পার্শ্বপ্রবাহ অনুভূত হয় না। এ কারণেই ষোড়শ শতকে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ থেকে আসা অশ্বভর্তি বাণিজ্যিক জাহাজগুলি পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ ও আমেরিকায় যাওয়ার সময় মাঝে মাঝে গতিহীন হয়ে পড়ত। সেজন্য নাবিকেরা জাহাজের ওজন হ্রাস ও রসদের (খাবার ও জল) অপচয় রোধ করতে কিছু জীবন্ত ঘোড়াকে সমুদ্রের জলে ফেলে দিয়ে জাহাজের ওজন হ্রাস করে জাহাজগুলিকে দ্রুতগামী করত। সেজন্য উভয় গোলার্ধের এই অঞ্চলকে ‘অশ্ব অক্ষাংশ’ (Horse Latitude) বলা হয়।

Fill in the blanks

1. বায়ুর উল্লম্ব চলাচলকে            বলে।

উত্তর: বায়ুস্রোত।

2. ধাবমান বা গতিশীল বস্তুর দিক-বিক্ষেপকারী বল হল

উত্তর: কোরিওলিস বল।

3. ফেরেল সূত্রানুসারে দক্ষিণ গোলার্ধে বায়ু              বেঁকে প্রবাহিত হয়। 

উত্তর: বামদিকে।

4. উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায়              কিমি.।

উত্তর: 16।

5. দিনের মধ্যে স্থলবায়ুর সর্বাধিক গতিবেগ থাকে              

উত্তর: ভোরবেলায়।

6. ‘তীক্ষ্ণ চিৎকারকারী ষাট’ কথাটি              বায়ুর সঙ্গে যুক্ত।

উত্তর: পশ্চিমা।

7. আমফান/উম্পুন ঘূর্ণিঝড় 2020 খ্রিস্টাব্দের                 মাসে হয়েছিল।

উত্তর: মে।

৪. বঙ্গোপসাগরে 2021 সালের মে মাসে                  ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল। 

উত্তর: যশ/ইয়াস।

9. বায়ুর চাপ                যন্ত্রের সাহায্যে পরিমাপ করা হয়।

উত্তর: ব্যারোমিটার।

10. পশ্চিমা বায়ু ও মেরুবায়ু মিলিত হয়                ঘূর্ণবাত সৃষ্টির আগে। 

উত্তর: প্রতীপ।

11. পশ্চিমা বায়ু ও মেরুবায়ু মিলিত হয়ে                ঘূর্ণবাত সৃষ্টি হয়। উত্তর: নাতিশীতোয়।

True and False

1. পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবেই বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর গায়ে আটকে আছে।

উত্তর: শুদ্ধ।

2. পৃথিবীর সর্বত্রই বায়ুর চাপ সমান।

উত্তর: অশুদ্ধ।

3. উন্নতার সাথে বায়ুচাপের সম্পর্ক সমানুপাতিক।

উত্তর: অশুদ্ধ।

4. বায়ু সর্বদা নিম্নচাপ থেকে উচ্চচাপের দিকে প্রবাহিত হয়। 

উত্তর: অশুদ্ধ।

5. নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে।

উত্তর: শুদ্ধ।

6. দুই ক্রান্তীয় অঞ্চলে বায়ুর ঘনত্ব বেশি।

উত্তর: শুদ্ধ।

7. পশ্চিমা বায়ু অনিয়মিতভাবে প্রবাহিত হয়।

উত্তর: অশুদ্ধ।

৪. বায়ুর উন্নতা কমে গেলে চাপ বেড়ে যায়।

উত্তর: শুদ্ধ। 

9. ‘গর্জনশীল চল্লিশা’ দুই গোলার্ধে 40 ডিগ্রি অক্ষরেখার আশেপাশে অবস্থান করে। 

উত্তর: অশুদ্ধ। 

10. মৌসুমি বায়ু পৃথিবীর কিছু অংশের বাইরে প্রবাহিত হয় না। বলে, এটি একটি স্থানীয় বায়ু।

উত্তর: অশুদ্ধ।

11. অ্যানাবেটিক বায়ু নিম্নগামী।উত্তর : অশুদ্ধ।