Class 8 History Chapter 9 Solution
ভারতীয় সংবিধান: গণতন্ত্রের কাঠামো ও জনগণের অধিকার
1. MCQs Question Answer
1. স্বাধীন ভারতের সংবিধানের মূল রূপকার
(a) জওহরলাল নেহরু
(b) রাজেন্দ্রপ্রসাদ
(c) বি আর আম্বেদকর
(d) মহাত্মা গান্ধি
উত্তর: (c) বি আর আম্বেদকর।
2. গণপরিষদ গঠিত হয়-
(b) 1947 খ্রিস্টাব্দে
(a) 1946 খ্রিস্টাব্দে
(d) 1944 খ্রিস্টাব্দে।
(c) 1945 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (a) 1946 খ্রিস্টাব্দে।
3. প্রস্তাবনার মূল পৃষ্ঠাটির অলংকরণ করেন-(বেহালা হাইস্কুল)
(a) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(b) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(c) সত্যেন্দ্রনাথ বসু
(d) নন্দলাল বসু
উত্তর: (d) নন্দলাল বসু।
4. ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান হলেন- (আড়িয়াপাড়া হাইস্কুল)
(a) প্রধানমন্ত্রী
(b) রাষ্ট্রপতি
(c) রাজ্যপাল
(d) সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি
উত্তর: (b) রাষ্ট্রপতি
5. রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করতে পারেন- (পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন)
(a) 12 জন সদস্যকে
(b) 10 জন সদস্যকে
(c) 2 জন সদস্যকে
(d) ৪ জন সদস্যকে
উত্তর: (a) 12 জন সদস্যকে।
6. লোকসভায় সভাপতিত্ব করেন-
(a) রাষ্ট্রপতি
(b) প্রধানমন্ত্রী
(c) স্পীকার
(d) উপরাষ্ট্রপতি
উত্তর: (c) স্পীকার।
7. রাজ্যসভায় সভাপতিত্ব করেন-
(a) রাষ্ট্রপতি
(b) উপরাষ্ট্রপতি
(c) প্রধানমন্ত্রী
(d) স্পীকার
উত্তর: (b) উপরাষ্ট্রপতি।
8. পশ্চিমবঙ্গে বিধান পরিষদ লুপ্ত হয়- (মালদা জেলা স্কুল)
(a) 1747 খ্রিস্টাব্দে
(b) 1967 খ্রিস্টাব্দে
(c) 1972 খ্রিস্টাব্দে
(d) 1970 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (b) 1967 খ্রিস্টাব্দে।
9. রাজ্যমন্ত্রীসভার প্রধান হলেন-
(a) প্রধানমন্ত্রী
(b) মুখ্যমন্ত্রী
(c) রাষ্ট্রপতি
(d) রাজ্যপাল
উত্তর: (b) মুখ্যমন্ত্রী।
10. পশ্চিমবঙ্গে পৌরবিল তৈরি হয়েছিল- (বড়িশা হাইস্কুল)
(a) 1993 খ্রিস্টাব্দে
(b) 1973 খ্রিস্টাব্দে
(c) 1983 খ্রিস্টাব্দে
(d) 1919 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর: (a) 1993 খ্রিস্টাব্দে।
11. তেভাগা আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল- (বারাসাত হাইস্কুল)
(a) ময়মনসিংহ
(b) দার্জিলিং
(c) বারাসাত
(d) পুরুলিয়া
উত্তর: (a) ময়মনসিংহ।
12. তেলেঙ্গানার ভূস্বামীদের বলা হত- (কাওয়ালী হাইস্কুল)
(a) জোতদার
(b) পাতিদার
(c) দোরা
(d) ঘোড়াদার
উত্তর: (c) দোরা।
13. সাইলেন্ট ভ্যালি আন্দোলন হয়েছিল-
(a) পূর্ব ভারতে
(b) দক্ষিণ ভারতে
(c) পশ্চিম ভারতে
(d) উত্তর ভারতে
উত্তর: (b) দক্ষিণ ভারতে।
14. সিঙ্গুর আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন-
(a) মমতা ব্যানার্জি
(b) মেধা পাটেকর
(c) বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
(d) বুদ্ধদেব বসু
উত্তর: (a) মমতা ব্যানার্জি।
Very Short Question Answer
1. সংবিধান কাকে বলে?
উত্তর: সংবিধান হল কোনো দেশের সংকলিত আইনগুলি, যার উপর ভিত্তি করে প্রশাসন পরিচালিত হয়।
2. ভারতীয় সংবিধান কবে গণপরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয়?
উত্তর: 1949 খ্রিস্টাব্দের 26 নভেম্বর গৃহীত হয়েছিল।
3. সংবিধানসভার প্রধান কাজ কী ছিল?
উত্তর: সংবিধান সভার প্রধান কাজ ছিল ভারতের জন্য একটি সংবিধান প্রস্তুতকরণ।
4. ভারতীয় গণপরিষদের সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : ভারতীয় গণপরিষদের অস্থায়ী সভাপতি সচ্চিদানন্দ সেন। স্থায়ী সভাপতি ছিলেন ড. রাজেন্দ্রপ্রসাদ।
5. সাধারণতন্ত্র দিবস কোন্ দিনটিতে পালন করা হয়?
উত্তর : প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি দিনটি সাধারণতন্ত্র দিবস হিসাবে পালিত হয়।
6. কাকে সংবিধানের বিবেক বলা হয়? (রাণী বিনোদ মঞ্জুরী গভ: গার্লস স্কুল)
উত্তর : প্রস্তাবনাকে সংবিধানের বিবেক বলা হয়।
7. সংবিধানের আত্মা কোন্টি?
উত্তর: প্রস্তাবনাকে সংবিধানের আত্মা বলা হয়।
8. পৃথিবীর বৃহত্তম সংবিধান কোনটি?
উত্তর : ভারতের সংবিধান হল পৃথিবীর বৃহত্তম সংবিধান।
9. অনুযায়ী ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান কে?
উত্তর: সংবিধান অনুযায়ী ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান হলেন রাষ্ট্রপতি।
10. সংবিধান অনুযায়ী ভারতের প্রকৃত শাসক কে?
উত্তর : সংবিধান অনুযায়ী ভারতের প্রকৃত শাসক প্রধানমন্ত্রী।
11. ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভা কটি কক্ষ বিশিষ্ট?
উত্তর: ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভা দুটি কক্ষবিশিষ্ট। লোকসভা ও রাজ্যসভা।
12. ভারতের আইনসভার উচ্চকক্ষ কী নামে পরিচিত?
উত্তর: ভারতের আইনসভার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা নামে পরিচিত।
13. ভারতে উচ্চকক্ষে কে সভাপতিত্ব করেন?
উত্তর: ভারতে উচ্চকক্ষে উপরাষ্ট্রপতি সভাপতিত্ব করেন।
14. ভারতে উচ্চকক্ষের মোট সদস্য সংখ্যা কত জন?
উত্তর: ভারতে উচ্চকক্ষের মোট সদস্য 250 জন।
15 উচ্চকক্ষে কত জন মনোনীত সদস্য আছেন?
উত্তর: উচ্চকক্ষে মোট 12 জন মনোনীত সদস্য আছেন।
16. মনোনীত সদস্যদের কে মনোনীত করেন?
উত্তর: মনোনীত সদস্যদের রাষ্ট্রপতি মনোনীত করেন।
17. ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভার নিম্নকক্ষের নাম কী?
উত্তর: ভারতে কেন্দ্রীয় আইনসভার নিম্নকক্ষ হলো লোকসভা।
18. ভারতে নিম্নকক্ষে কে সভাপতিত্ব করেন?
উত্তর: ভারতে নিম্নকক্ষে সভাপতিত্ব করেন স্পীকার।
19. নিম্নকক্ষের সদস্যসংখ্যা কত? (রায়গঞ্জ করনেশন হাইস্কুল)
উত্তর: নিম্নকক্ষের সদস্যসংখ্যা 550 জন।
20. রাষ্ট্রপতি নিম্নকক্ষে কতজনকে মনোনীত করেন?
উত্তর: ২ জন অ্যাংলো ইন্ডিয়ানকে মনোনীত করতে পারেন।
21. রাজ্যসভার সদস্যরা কত বছরের জন্য নির্বাচিত হন?
উত্তর: 6 বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
22. লোকসভার সদস্যরা কত বছরের জন্য নির্বাচিত হন?
উত্তর: ১ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
23. লোকসভার নেতা কাকে বলা হয়? (উচ্চবালিকা বিদ্যাপীঠ)
উত্তর: প্রধানমন্ত্রীকে লোকসভার নেতা বলা হয়।
24. প্রধানমন্ত্রীকে কে নিয়োগ করেন?
উত্তর: রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করেন।
25. প্রধানমন্ত্রী কীভাবে নির্বাচিত হন?
উত্তর: লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বা নেত্রীকে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ করেন।
26. ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তর: জওহরলাল নেহরু ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।
27. ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন?
উত্তর: ড. রাজেন্দ্রপ্রসাদ ছিলেন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি।
28. ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি কে ছিলেন?
উত্তর: সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন ছিলেন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি।
29. পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তর: প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ ছিলেন পশ্চিম বাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী।
30. পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে কে নিয়োগ করেন?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল নিয়োগ করেন।
31. রাজ্য বিধানসভা কটি কক্ষবিশিষ্ট?
উত্তর: 2টি কক্ষ বা এক কক্ষবিশিষ্ট হয়ে থাকে।
32. পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা কটি কক্ষবিশিষ্ট?
উত্তর: বর্তমানে এককক্ষবিশিষ্ট।
33. পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য সংখ্যা কত?
উত্তর: 294 জন।
34. পুনা চুক্তি কাদের মধ্যে হয়েছিল? (পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন)
উত্তর: ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ-এর মধ্যে সম্প্রসারিত হয়েছিল।
35. ফ্লাউড কমিশন কবে গঠিত হয়?
উত্তর: ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে ফ্লাউড কমিশন গঠিত হয়।
36. ফ্লাউড কমিশনের রিপোর্ট কবে প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে ফ্লাউড কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
37. তেভাগা আন্দোলনের সূচনা কোথায় হয়?
উত্তর: দিনাজপুর জেলার রামচন্দ্রপুর অঞ্চলের তেপা গ্রামে।
38. তেভাগা আন্দোলনের স্লোগান কী ছিল?
উত্তর: ‘নিজ খামারে ধান তোলো, আধি নয়, তেভাগা চাই’।
39. তেভাগা আন্দোলনের নেতা কে ছিলেন?
উত্তর: তেভাগা আন্দোলনের নেতা ছিলেন চারু মজুমদার।
40. তেলেঙ্গানা কৃষক আন্দোলন কবে হয়?
উত্তর: 1946 খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল।
41. বেট্টি প্রথা কী?
উত্তর: বিনা পারিশ্রমিকে ভূস্বামীর জমিতে কাজ করাকে বেট্টি প্রথা বলে।
42. চিপকো কথার অর্থ কী?
উত্তর: চিপকো কথার অর্থ জড়াও বা জড়িয়ে ধরো।
43. গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে কী বলে?
উত্তর: গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে গ্রামপ্রধান বলে।
44. পঞ্চায়েতের সদস্যরা কত বছরের জন্য নির্বাচিত হন?
উত্তর: পঞ্চায়েতের সদস্যরা ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
45. পৌরসভা কী?
উত্তর: পৌর এলাকার নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে গঠিত কাউন্সিলার পরিষদকেই পৌরসভা বলে।
46. পশ্চিমবঙ্গের কোন কোন জেলায় জেলা পরিষদ নেই? (হিন্দু স্কুল)
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা এবং দার্জিলিং জেলায় জেলাপরিষদ নেই।
3. Short Question Answer
1. স্বাধীনতা প্রাপ্তির সময় ভারতের সংবিধান রচনার তাগিদ দেখা দিয়েছিল কেন?
উত্তর : স্বাধীনতালাভের পূর্বে ভারতের শাসনতান্ত্রিক কাজকর্ম পরিচালিত হতো ইংল্যান্ডের আইন দ্বারা। ব্রিটিশ সরকারের আইনগুলি ছিল ঔপনিবেশিক স্বার্থে রচিত।
এই কারণেই স্বাধীন ভারতের নিজস্ব সংবিধানের প্রয়োজন দেখা দেয়, যেখানে শাসনতান্ত্রিক কাঠামো হবে ভারতীয় এবং ভারতীয়দের স্বার্থ সুরক্ষিত করা হবে তার প্রধান উদ্দেশ্য।
2. ভারতীয় সংবিধানে গণতান্ত্রিক শব্দটির তাৎপর্য কী?
উত্তর : ভারতীয় সংবিধানে গণতান্ত্রিক শব্দটির অর্থ হলো জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার গঠন। সংবিধান অনুযায়ী ভারতের 21 বছর বয়সি যেকোনো নাগরিক ভোটদানের মাধ্যমে সরকার গঠনের অধিকারী। বর্তমানে ভোটদানের বয়স 21 থেকে কমিয়ে 18 বছর করা হয়েছে।
3. ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলা হয়েছে কেন?
উত্তর : ধর্মনিরপেক্ষ কথার অর্থ কোনো ধর্মকেই প্রাধান্য না দেওয়া। ভারতে সকল ধর্মের মানুষ নিজ নিজ রীতিনীতি আচার-আচরণ অনুযায়ী নিজ নিজ ধর্ম পালন করার অধিকারী। তাই ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলা হয়েছে।
4. মহাত্মা গান্ধি দলিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কী উদ্যোগ নিয়েছিলেন?
উত্তর: ভারতে আর্থিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় দলিত নামে পরিচিত। গান্ধিজি এদের নাম দেন হরিজন। এই সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য তিনি অস্পৃশ্যতা বর্জন কর্মসূচি গ্রহণ করেন, মন্দিরে তাদের প্রবেশের অধিকার আদায় করার জন্য সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করেন। তবে গান্ধিজি দলিতদের পৃথক রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার বিরোধী ছিলেন।
5. সিঙ্গুরের কৃষি উৎপাদন বিষয়ে একটি টীকা লেখো।
উত্তর: সিঙ্গুরের কৃষি উৎপাদনে বৈচিত্র্য দেখা যায়। এখানকার উর্বর দোআঁশ মাটিতে প্রধানত ধান, পাট, আলু উৎপাদিত হয়। এছাড়া শাকসবজি তৈলবীজের পাশাপাশিউদ্যান পালনেও সিঙ্গুরের অগ্রগতি দেখা যায়। সারাবছর ধরে সিঙ্গুরে চাষের কাজ হয়।
6. সংবিধান কাকে বলে?
উত্তর: দেশ শাসনের জন্য ও রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে আইন সংহিতা সংকলিত করা হয়, এককথায় তাকেই সংবিধান বলা হয়। সংবিধান অমান্য করা যায় না।
7. ১৯৫০ এর ২৬ জানুয়ারি গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর: ১৯৫০-এর ২৬ জানুয়ারি ভারতের সংবিধান জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়েছিল। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস বা সাধারণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
8. টীকা লেখো: ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা।
উত্তর: ভারতীয় সংবিধানে প্রস্তাবনা অংশটি আমেরিকার সংবিধান এর আদর্শে সংযোজিত হয়েছে। প্রস্তাবনার মধ্য দিয়ে সংবিধানের প্রকৃত আদর্শ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমরা জানতে পারি বলে প্রস্তাবনাকে সংবিধানের বিবেক বা আত্মা বলা হয়।
9. কেন্দ্রীয় আইনসভা সম্পর্কে কী জানো? (আড়িয়াপাড়া হাইস্কুল)
উত্তর: ভারতীয় কেন্দ্রীয় আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। যার উচ্চকক্ষে লোকসভার সদস্য সংখ্যা 250 জন। রাষ্ট্রপতি এদের মধ্যে 11 জনকে মনোনীত করেন। এরা ৬ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। লোকসভার সদস্যসংখ্যা 550 জন। এরা ৫ বছরের জন্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসেন। উচ্চকক্ষে উপরাষ্ট্রপতি, নিম্নকক্ষে স্পীকার সভাপতিত্ব করেন।
10. ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা কী?
উত্তর: রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হতে গেলে-(1) প্রার্থীকে ভারতীয় নাগরিক হতে হয়। (2) ন্যূনতম 35 বছর বয়স্ক হতে হবে। (3) কোনো লাভজনক বা সরকারি পদে বহাল থাকা যাবে না।
11. ইমপিচমেন্ট বলতে কী বোঝো?
উত্তর: ইমপিচমেন্ট কথার অর্থ অপসারণ। ভারতের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রভৃতিরা যদি সংবিধানকে অমান্য বা অন্যায় কাজ করে থাকেন, তাহলে তাদের যে পদ্ধতিতে অপসারণ করা হয়, তাকে ইমপিচমেন্ট বলা হয়।
12. রাজ্য আইনসভা কীভাবে গঠিত হয়?
উত্তর: রাজ্যের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের বিধানসভা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে রাজ্য বিধানসভা গঠিত হয়। বিধান পরিষদের সদস্যরা হন মনোনীত। রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ করেন।
13. স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন বলতে কী বোঝো?
উত্তর: স্থানীয় স্তরে গ্রামীণ বা পৌরসভা কেন্দ্রিকশাসন ব্যবস্থাকে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন বলা হয়। ভারতে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা দু-ধরনের। গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন ও পৌরশাসন, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ নিয়ে গ্রামীণ শাসনব্যবস্থা গঠিত।
14. বি আর আম্বেদকর স্মরণীয় কেন?
উত্তর: ড. বি. আর আম্বেদকর ছিলেন একজন দলিত নেতা। নিজ যোগ্যতাবলে তিনি সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি হয়েছিলেন। তিনি সংবিধানের রূপকার হিসাবে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
15. টাকা লেখো: সামাজিক উন্নয়নে সংবিধানের ভূমিকা।
উত্তর: সংবিধানে সামাজিক উন্নয়নের জন্য কিছু স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া আছে। যেমন-(i) নারীদের অধিকারগুলি সংরক্ষিত ও বলবৎ করতে হবে, (ii) বিশেষ ক্ষেত্রে নারীপুরুষ, জাতি, বর্ণ, ভাষা ভেদাভেদ চলবে না, (iii) চাকুরি ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতি মেনে চলতে হবে এবং যোগ্য ব্যক্তিকে সুযোগ দিতে হবে।
16. ভারতীয় সংবিধান কবে গৃহীত হয়? কবে এটি জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়? (বজবজ পিকে হাইস্কুল)
উত্তর: ভারতীয় সংবিধান 1949 খ্রিস্টাব্দের 26 নভেম্বর গণপরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয়। 1950 খ্রিস্টাব্দের 26 জানুয়ারি জাতির উদ্দেশ্যে তা উৎসর্গ করা হয়।
17. টীকা লেখো: পারিবারিক হিংসা রোধ আইন।
উত্তর: 2005 খ্রিস্টাব্দে পারিবারিক হিংসা রোধ আইন পাশ হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী-(ⅰ) মানসিক লাঞ্ছনা, অত্যাচার ও আর্থিক পীড়ন থেকে মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়া হবে। (ii) জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মহিলাদের বিনা খরচে বিচারের সুযোগ দেওয়া হবে। পারিবারিক হিংসা রোধ আইনের অপব্যবহার মাঝে মাঝে পরিলক্ষিত হয়।
18. তেভাগা আন্দোলনের গুরুত্ব কী ছিল?
উত্তর: তেভাগা আন্দোলনের মাধ্যমে- (i) বাংলায় কৃষক আন্দোলন শক্তিশালী হয়ে ওঠে, (ii) হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে কৃষকেরা এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল, (iii) শহরের সংগ্রামী ছাত্রসমাজ এই আন্দোলনকে সমর্থন করেন। (iv) আন্দোলনের প্রাথমিক পর্ব অর্থনৈতিক হলেও পরে তা রাজনৈতিক আন্দোলনের চরিত্র লাভ করেছিল।
19. তেলেঙ্গানা আন্দোলনের দুটি কারণ লেখো।
উত্তর: তেলেঙ্গানা আন্দোলনের কারণ হলো- (i) মুসলমান ও উচ্চবর্ণের হিন্দুদের দ্বারা কৃষক শ্রেণি অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছিল, (ii) কৃষকদের উপর নানাধরনের অতিরিক্ত কর আরোপ করা হয়েছিল, (iii) বেট্টি প্রথার দ্বারা কৃষকদের বেগার খাটানো হতো, (iv) নিজামের রাজাকার বাহিনীর অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।
20. তেলেঙ্গানা আন্দোলনের ফল কী হয়েছিল?
উত্তর: তেলেঙ্গানা আন্দোলনের ফলে- (i) সামন্ততান্ত্রিক শাসকের পতন ঘটে, (ii) বেট্টি প্রথা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়, (iii) 1949 খ্রিস্টাব্দে এই অঞ্চলে প্রচলিত জায়গির দ্বারা এই ব্যবস্থার অবসান ঘটানো হয়।
21. চিপকো আন্দোলন কী? (উচ্চ বালিকা বিদ্যাপীঠ, বড়িশা)
উত্তর: হিমালয়ের ঘন অরণ্য অঞ্চলের মানুষের জঙ্গলের অধিকার যা দিয়ে এখানে খাল খনন ও রাস্তা নির্মাণের জন্য ব্যাপকভাবে বৃক্ষচ্ছেদন পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে গাছকে চিপো, বা জড়িয়ে থাকেন আন্দোলনকারীরা। এটিই চিপকো আন্দোলন নামে পরিচিত।
22. চিপকো আন্দোলনের দাবি কী ছিল? (বারাসাত হাইস্কুল)
উত্তর: চিপকো আন্দোলনের দাবি ছিল- (i) বাণিজ্যিক স্বার্থে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে, (ii) অরণ্যের প্রসারে সচেষ্ট হতে হবে, (iii) গ্রাম-সমিতির উপর অরণ্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিতে হবে, (iv) অরণ্য অঞ্চলে কুটির শিল্পে উৎসাহ দিতে হবে।
23. নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন কেন হয়েছিল?
উত্তর: গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশ সরকার যৌথভাবে নর্মদা নদী উপত্যকায় সর্দার সরোবর বাঁধ নির্মাণে সচেষ্ট হলে এই অঞ্চলের মানুষ জীবন ও জীবিকা হারানোর ভয়ে শুরু করে নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন।
24. আপ্পিকো আন্দোলন কী?
উত্তর: কর্ণাটকের পশ্চিমঘাট পর্বতমালার ঘন অরণ্য অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে গাছ কাটার প্রতিবাদে এই অঞ্চলের মানুষ যে আন্দোলন শুরু করে তা আপ্পিকো আন্দোলন নামে পরিচিত।
25. সিঙ্গুর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর নাম লেখো।
উত্তর: সিঙ্গুর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী করেছিলেন-মহাশ্বেতা দেবী, অরুন্ধতী রায়, মেধা পাটেকর, যোগেন চৌধুরী, শুভাপ্রসন্ন, অম্লান দত্ত, জয় গোস্বামী প্রমুখ বুদ্ধিজীবী।
26. সিঙ্গুর আন্দোলনের ফল কী হয়েছিল?
উত্তর: আন্দোলনের ফলে সিঙ্গুর ছেড়ে টাটা গোষ্ঠীকে চলে যেতে হয়েছিল। আদালতের রায়ে সিঙ্গুরের কৃষকরা তাদের জমি ফেরত পেয়েছিল।
27. সিঙ্গুর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন মহিলার নাম লেখো।
উত্তর: সিঙ্গুর আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন-মহাশ্বেতা দেবী, অরুন্ধতী রায়, মেধা পাটেকর, শাঁওলি মিত্র, অপর্ণা সেন এবং মমতা ব্যানার্জি। ঐতিহাসিক রোমিলা থাপারও আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
28. সিঙ্গুরে কোন্ কারখানা হওয়ার কথা ছিল?
উত্তর: সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার রতন টাটা তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প ছোটো ও স্বল্প দামের ন্যানো গাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। এটির নাম ছিল একলাখি গাড়ি কারখানা।
29. সিঙ্গুরের জমি কীভাবে চাষযোগ্য করে তোলা হয়?
উত্তর : সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর সিঙ্গুরের জমিতে থাকা টাটা কোম্পানির পাকা সেড ভেঙে ফেলা হয়। বুলডোজার দিয়ে পাথর তুলে ফেলে সেখানে নতুন করে মাটি ফেলে তাকে চাষযোগ্য করে তোলা
Long Question Answer
1. ভারতের সংবিধানে নাগরিকদের কী কী মৌলিক অধিকারের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অংশ 12 থেকে 35 নং ধারায় নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী ভারতীয় নাগরিকরা বর্তমানে ৬টি মৌলিক অধিকার ভোগ করে। এগুলি হল-1. সাম্যের অধিকার, 2. স্বাধীনতার অধিকার, 3. শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার, 4. ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার, 5. সংস্কৃতি ও শিক্ষা বিষয়ক অধিকার এবং 6. সাংবিধানিক ও প্রতিবিধানের অধিকার। পূর্বে থাকলেও বর্তমানে সম্পত্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাটি ব্যাখ্যা করো। প্রস্তাবনায় বর্ণিত সাধারণতন্ত্র শব্দটি কীভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর : ভূমিকা : ভারতীয় সংবিধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের অনুকরণে একটি প্রস্তাবনার অংশ যোগ করা হয়েছে। একে সংবিধানের মুখবন্ধ বলা হয়। এটি সংবিধানের ক্ষুদ্রতর সংস্করণ।
প্রস্তাবনার ব্যাখ্যা: ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় অঙ্গীকার করা হয়েছে যে,
সার্বভৌম : রাষ্ট্র হিসাবে ভারত অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সমস্ত ক্ষেত্রে চূড়ান্ত ক্ষমতা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী।
সমাজতান্ত্রিক : ভারতে সরকারি ও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন মিশ্র অর্থনীতি গড়ে তোলা হলেও সমাজতান্ত্রিক আদর্শ অর্থাৎ জনকল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে ভারতকে গড়ে তোলা হবে।
ধর্মনিরপেক্ষতা: ভারত রাষ্ট্রের নিজস্ব কোনো ধর্ম নেই। অর্থাৎ সকল ভারতীয় নাগরিক অন্য ধর্মকে কোনো রূপ আঘাত না করে নিজ নিজ ধর্মমত অনুসরণ ও পালন করতে পারবে।
গণতন্ত্র : ভারতে সার্বিক প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ভোটদানের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা শাসনকার্য চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নামে পরিচিত।
সাধারণতন্ত্রের বাস্তবায়ন :
1. সাধারণতন্ত্রের অর্থ : সাধারণতন্ত্র বলতে বোঝায়, ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতা লাভ করেন না, তিনি জনগণের পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। এখানে রাজা বা রাজতন্ত্রের কোন স্থান নেই। ভারতের সংবিধান অনুযায়ী শাসনতন্ত্রের উৎস ও রক্ষ হল ভারতের জনগণ, তাই সংবিধানে সাধারণতন্ত্রের উল্লেখ আছে।
2. সাধারণতন্ত্রের বাস্তবায়ন: ভারতীয় সংবিধান মেনেই ভারতে সাধারণতন্ত্র বা প্রজাতন্ত্রের অস্তিত্ব বর্তমান, এই ব্যবস্থায় জনগণের ভোটের মাধ্যমেই সংখ্যাগরিষ্ঠ দল শাসন ক্ষমতায় আসে। এই দলের নেতা বা নেত্রী হন দেশের প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া, ভারতীয় শাসনব্যবস্থার শীর্ষে রয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তিনিও ভারতীয় জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা ভোটে পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন।
তাই বলা যায় ভারতে সাধারণতন্ত্র শব্দটি বাস্তবায়িত হয়েছে।
2. ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব বিষয়ে আলোচনা করো। যথাক্রমে রাষ্ট্র ও রাজ্য পরিচালনায় এঁদের ভূমিকা কী?
উত্তর : ভূমিকা : স্বাধীন ভারতের সংবিধান অনুযায়ী ভারতে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্তরে প্রধানমন্ত্রী এবং প্রাদেশিক স্তরে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীপরিষদ শাসনকার্য পরিচালনা করে।
প্রধানমন্ত্রী: ভারতের সংবিধান অনুযায়ী এদেশের শাসন বিভাগের প্রধান হলেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য থাকেন বলে প্রকৃত শাসন ক্ষমতা ভোগ করেন এদেশের প্রধানমন্ত্রী।
নিয়োগ: সংবিধানের 75 (11) ধারা অনুসারে লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বা নেত্রীকে রাষ্ট্রপতি প্রধান মন্ত্রী পদে নিয়োগ করেন।
কার্যকাল: সাধারণত প্রধানমন্ত্রীর কার্যকলাপের মেয়াদ ৫ বছর।
রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা: রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি যে কাজগুলি করেন, সেগুলি হলো-
লোকসভার নেতা বা নেত্রী: পার্লামেন্ট এর নিম্নকক্ষে লোকসভার নেতা বা নেত্রী হিসাবে প্রধানমন্ত্রী লোকসভার অধিবেশন আহ্বান করেন, লোকসভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করতে পারেন, নতুন নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করতে পারেন।
ক্যাবিনেট এর নেতা বা নেত্রী: ক্যাবিনেট এর প্রধান হিসাবে প্রধানমন্ত্রী-(i) অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগের সুপারিশ করেন। (ii) নীতি নির্ধারণের জন্য ক্যাবিনেট-এ আলোচনা করতে পারেন। (iii) কোনো মন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দিতে পারেন। (iv) মন্ত্রীসভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করতে পারেন।
জাতির নেতা বা নেত্রী: নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হলেন সমগ্র জাতির নেতা বা নেত্রী। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তিনি হলেন ভারতের প্রধান মুখ। তিনি-(i) বিভিন্ন দেশে কূটনীতিকদের নিয়োগের সুপারিশ করেন। (ii) বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর বা আলোচনা করেন। (iii) পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ভারতের নীতি ও আদর্শ প্রচারের পাশাপাশি ভারতীয়দের শক্তিশালী জাতি রূপে গড়ে উঠতে সাহায্য করেন।
■ রাষ্ট্রপতির প্রধান পরামর্শদাতা: প্রধানমন্ত্রী হলেন রাষ্ট্রপতির প্রধান পরামর্শদাতা। তাছাড়া তিনি হলেন রাষ্ট্রপতি ও পার্লামেন্টের সংযোগ রক্ষাকারী। আইন ও শাসন সংক্রান্ত যাবতীয় সংবাদ প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে জানিয়ে থাকেন।
■ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের
■ অধিবেশনে, সার্ক-এর অধিবেশনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন। জোট নিরপেক্ষ দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
উপরিউক্ত আলোচনায় একথা স্পষ্ট যে ভারতের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী। জরুরি অবস্থা জারি করা হলে তিনি স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারেন।
মুখ্যমন্ত্রী: প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থার প্রধান হলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
নিয়োগ: বিধানসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা বা নেত্রীকে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ করে থাকেন।
কার্যকাল: সাধারণত পাঁচ বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী স্বপদে বহাল থাকেন।
রাজ্য পরিচালনায় মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা: রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। যেমন-
বিধানসভার নেতা বা নেত্রী: রাজ্য বিধানসভার নেতা বা নেত্রী হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী-(ⅰ) বিধানসভার অধিবেশন আহ্বান করেন। (ii) বিধানসভার মেয়াদ কতদিন হবে তা স্থির করেন। (iii) অধিবেশনের আলোচ্য বিষয় ঠিক করার দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী পালন করেন।
মন্ত্রীসভা গঠন: রাজ্যমন্ত্রীসভা গঠনের পূর্ণ দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীর। তার নির্দিষ্ট করে দেওয়া ব্যক্তিদের মন্ত্রী হিসাবে রাজ্যপাল নিয়োগ করেন।
রাজ্যর নেতা বা নেত্রী: মুখ্যমন্ত্রী যে দলেরই নেতা বা নেত্রী হোননা কেন, তিনি রাজ্যের প্রধান হিসাবে বিবেচিত হন। অন্যান্য রাজ্য বা কেন্দ্রীয় স্তরে তিনিই রাজ্যের মুখ্য হিসাবে বিবেচিত হন।
রাজ্যপালের পরামর্শদাতা: রাজ্যবিধানসভার নিয়মতান্ত্রিক শাসক রাজ্যপালের প্রধান পরামর্শদাতা হলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণত মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ অনুসরণ করেই রাজ্যপাল প্রশাসনিক কাজকর্ম করেন।
আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে মুখ্যমন্ত্রী: রাজ্যবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এজন্য তিনি নিয়মিত জনসংযোগ রক্ষার মাধ্যমে তাদের সমস্যাবলি সম্পর্কে অবহিত হন।
রাজ্য আইনসভার প্রধান হলেও রাজ্যপালের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার নানাভাবে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করে থাকে।
মূল্যায়ন : প্রধানমন্ত্রী দেশের ক্ষেত্রে যেসকল ক্ষমতা ভাগ করেন, রাজ্যের ক্ষেত্রে প্রায় তেমন ক্ষমতা ভোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভা বা বিধানসভার আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হলে উভয়কেই পদত্যাগ করতে হয়।
3. পশ্চিমবঙ্গে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে কীভাবে গণতন্ত্রের ধারণা বিস্তৃত হয়? তোমার স্থানীয় অভিজ্ঞতার নিরিখে আলোচনা করো।
উত্তর: ভূমিকা : ভারতীয় সংবিধানে যেমন কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের অস্তিত্ব রয়েছে, তেমনি প্রাদেশিক শাসনকে তৃণমূল স্তরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে স্থানীয় স্বায়ত্বশাসন ব্যবস্থা।
বিভাজন: স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থাকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা ও পৌরশাসন।
গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা: গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা তিনটি স্তরে বিভক্ত। এগুলি হলো-
(i) গ্রাম পঞ্চায়েত: ত্রিস্তর গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের প্রথম স্তর হলো গ্রাম পঞ্চায়েত। 1973 খ্রিস্টাব্দে আইন অনুযায়ী গ্রাম পঞ্চায়েত গঠিত হয়।
গঠন: জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিটি গ্রাম থেকে এক বা দুজন সদস্য নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত গড়ে ওঠে। সর্বোচ্চ সংখ্যা 30 জন। সদস্যদের মধ্যে থেকে একজন প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন করা হয়। নির্বাচন: গ্রাম পঞ্চায়েত এর প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ভোটে সদস্যরা নির্বাচিত হয়।
সংরক্ষণ: বর্তমানে মোট সদস্যের এক তৃতীয়াংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
মেয়াদ: গ্রাম পঞ্চায়েত এর সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ ৫ বছর।
কার্যাবলি: গ্রাম পঞ্চায়েত এর প্রধান-(i) প্রতি মাসে একবার করে গ্রাম পঞ্চায়েত এর সভা আহ্বান করেন। (ii) সরকারি অনুদান ব্যয় এর পরিকল্পনা বা বাজেট তৈরি করেন। (iii) সদস্যদের বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করেন। (iv) প্রতি 6 মাস অন্তর গ্রামসভার সভা আহ্বান করেন। (v) ইন্দিরা আবাস যোজনা, প্রধানমন্ত্রী গৃহনির্মাণ যোজনা, মহাত্মা গান্ধি রোজগার যোজনা, একশো দিনের কাজ পরিচালনা করেন।
বর্তমানে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের অন্যতম প্রাতিষ্ঠানিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
(ii) পঞ্চায়েত সমিতি : গ্রামীণ পঞ্চায়েত ব্যবস্থার দ্বিতীয় স্তর হলো পঞ্চায়েত সমিতি।
এলাকা: কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতি গড়ে ওঠে। সাধারণত এক-একটি ব্লক নিয়ে এক-একটি পঞ্চায়েত সমিতি গড়ে ওঠে।
গঠন: প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে 2 বা 3 জন সদস্য নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতি গঠিত হয়। তফশিলি জাতি, উপজাতি ও মহিলাদের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা বা আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রশাসক: পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন সভাপতি, একজন সহসভাপতি এবং বেশ কয়েকজন কর্মাধ্যক্ষ বেছে নেওয়া হয়। সাধারণত সদস্যদের ভোটে এরা নির্বাচিত হন।
মেয়াদ: গ্রাম পঞ্চায়েত এর সদস্যরা 5 বছরের জন্য নির্বাচিত হন। 6 মাস এর জন্য তাদের মেয়াদ সরকার বৃদ্ধি করতে পারে।
কার্যাবলি: পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি- (i) তিন মাস অন্তর সমিতির সভা আহ্বান করেন। (ii) ব্লক উন্নয়নের সার্বিক পরিকল্পনা করেন। (iii) সরকারি অনুদানের ব্যয় বরাদ্দ সংক্রান্ত বাজেট তৈরি করেন। (iv) বিভিন্ন কর্মাধ্যক্ষদের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করেন। (v) বিডিওর সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলেন। প্রায় 200 গ্রামের সমষ্টি পঞ্চায়েত সমিতি ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের গুরুত্বপূর্ণ একক। (iii) জেলা পরিষদ:
এলাকা: সংশ্লিষ্ট জেলার সবকটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি নিয়ে জেলা পরিষদ গঠিত হয়।
ব্যতিক্রম: কলকাতা ও দার্জিলিং জেলার জেলা পরিষদ নেই।
গঠন: প্রতিটি পঞ্চায়েত সমিতি থেকে দুজন করে সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠিত হয়।
প্রশাসক: জেলা পরিষদের সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে একজন জেলা সভাধিপতি এবং একজন সভাধিপতি নির্বাচন করা হয়। একইভাবে বেশ কয়েকজন জেলা কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন।
সংরক্ষণ: সরাসরি নিয়ম অনুযায়ী জেলা পরিষদ এর মোট সদস্যের এক তৃতীয়াংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। এছাড়া তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কার্যকাল: জেলা পরিষদের সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ ৫ বছর। প্রয়োজনে 6 মাস তাদের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
কার্যকলাপ: জেলা পরিষদের সভাধিপতি-(i) প্রতি তিনমাস অন্তর জেলা পরিষদের সভা আহ্বান করেন। (ii) জেলার সার্বিক উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করেন। (iii) সরকারি অনুদানের ব্যয় বরাদ্দের জন্য বাজেট প্রস্তুত করেন। (iv) পঞ্চায়েত সমিতিগুলির কাজকর্মের তদারকি করেন। (v) জেলা শাসকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। জেলা পরিষদের মাধ্যমে সরকার গ্রামীণ স্বায়ত্ত শাসন ব্যবস্থার রূপরেখা তৈরি করে বলে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের ক্ষেত্রে জেলা পরিষদ সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্থানীয় অভিজ্ঞতা: আমাদের সাতগাছিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। একটি আদর্শ গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়মিতভাবে গ্রামসভা ও গ্রামসংসদের সভা ডেকে গ্রামের অধিবাসীদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে গ্রামপঞ্চায়েত পরিচালিত হয় বলে কোনো ক্ষোভবিভোক্ষ দেখা যায় না।
আমার মতে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ নীতি আমার অঞ্চলে অন্তত সার্থক হয়েছে।
4. ভারতের সংবিধানে নারীদের অধিকার কীভাবে সুরক্ষিত করা হয়েছে? নারীদের সম্পর্ককে ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থনৈতিক স্বাধীনতা কতটা জরুরি বলে তোমার মনে হয়? যুক্তি দিয়ে লেখো।
উত্তর: ভূমিকা : আধুনিক পৃথিবীতে নারী হলো অর্ধেক আকাশ। তার নিজের ভাগ্য নিজেকে গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ট সুযোগসুবিধা দেওয়া প্রয়োজন। ভারতীয় সংবিধান এই প্রয়োজন সঠিকভাবেই উপলব্ধি করেছে।
নারী অধিকার রক্ষায় সংবিধান: নারীদের অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য সংবিধানের-(i) নারী পুরুষের সমান অধিকার এ স্বীকৃতি দিয়েছে। (ii) নারীদের সুরক্ষা প্রদান ও তাদের বিরুদ্ধে ঘটমান অমানবিক ঘটনার প্রতিবিধানের ব্যবস্থা করেছে। (iii) পরিবার ও সমাজ জীবনে যাতে অবহেলার স্বীকার না হয় সে ব্যাপারে সচেষ্ট হয়েছে। (iv) সদ্যোজাত কন্যা ও তার মায়ের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। (v) নারী পাচার ও পণপ্রথাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। (vi) পিতার সম্পত্তিতে নারীর অধিকার প্রদান করা হয়েছে। (vii) শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। (viii) গ্রামীণ ও পৌর স্বায়ত্তশাসনে নারী অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করার জন্য এক তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষিত করা হয়েছে। -ix) পারিবারিক হিংসারোধ আইন পাশ করে মহিলাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা: নারীদের সামাজিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের আর্থিক স্বাধীনতা প্রদানের ব্যবস্থা করা দরকার। অনেকক্ষেত্রেই কন্যাসন্তান এর পঠন পাঠনের ক্ষেত্রেও উদাসীনতা লক্ষ করা যায়।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা প্রদানের ফলে নারীরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া অত্যাচারের প্রতিবিধানের জন্যও অর্থ দরকার। এজন্য চাকুরিক্ষেত্রে সমতা বা সংরক্ষণ প্রয়োজন।
মূল্যায়ন : বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুর মতো কিছু রাজ্যে নারীদের শিক্ষার সুযোগ প্রদানের জন্য নানাবিধ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্প রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে যথেষ্ট প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হয়েছে।
5. তফশিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর নাগরিকদের উন্নয়নে সংবিধান কী ভূমিকা পালন করেছে?
উত্তর: ভূমিকা: ভারতীয় সংবিধান আর্থ-সামাজিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া শ্রেণিদের তথা তফশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর নাগরিকদের জন্য বিশেষ কিছু ভূমিকা পালন করে চলেছে।
সংবিধানের ভূমিকা: সংবিধান অনুযায়ী তফশিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য যেসকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলি হল-
সংরক্ষণ : প্রথম পর্বে সংবিধানে শিক্ষা, সরকারি চাকরি প্রভৃতি ক্ষেত্রে 10 শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল। পরে অর্থনৈতিক দিক থেকে অনগ্রসর শ্রেণিও সংরক্ষণের আওতায় আসে।
বর্তমানে তপশিলি জাতি 15 শতাংশ, উপজাতি 7 শতাংশ ও অর্থনৈতিক অনগ্রসর শ্রেণির ১ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা ভোগ করে।
উন্নয়ন: অনগ্রসর শ্রেণির মানুষদের উন্নয়নের জন্য ইন্দিরা আবাস যোজনা, রাজীব গান্ধি বিদ্যুৎ যোজনা, মহাত্মা গান্ধি কর্মসংস্থান প্রকল্প ইত্যাদি 20 দফা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
অস্পৃশ্যতা: অস্পৃশ্যতাকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে সংবিধান পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের সামাজিক মেলামেশাকে অবাধ করতে সচেষ্ট হয়েছে।
মূল্যায়ন : ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী তফশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য রক্ষাকবচ এর ব্যবস্থা করা হলেও এখনো ভারতে অস্পৃশ্যতার অভিশাপ দূর হয়নি। সেই অর্থে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উন্নতি সম্ভব হয়নি।
6. তোমার স্থানীয় অঞ্চলের বাসিন্দারা তোমায় গ্রাম পঞ্চায়েত বা পৌরসভায় নির্বাচন করে পাঠালেন। তোমার এলাকার উন্নতির জন্য তুমি কী কী ব্যবস্থা নেবে?
উত্তর : আমি পূর্ণিমা মন্ডল, সাতগাছিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এর নব নির্বাচিত সদস্যা। প্রাথমিক আনন্দের ঘোর কেটে যেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। এখন আমার উপর পাহাড়প্রমাণ চাপ, আমার গ্রামের মানুষের অভাব অভিযোগ মেটানোর দায়িত্ব আমার মাথায়।
নির্বাচনী প্রচারে আমার মেয়ে তুহিনা সবসময় আমার সঙ্গে ছিল। একটা ডায়েরি আর পেন ছিল ওর নিত্যসঙ্গী। সাধারণ মানুষ যেসব ক্ষোভ, অভাব অভিযোগ জানাতো, তুহিনা সবসময় তা ডায়েরিতে টুকে নিত। এখন সে নাম ও স্থান ধরে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমস্যাগুলি লিখে দিয়েছে। আমার দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলিও নোট আকারে উল্লেখ করে দিয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী যেসকল ব্যবস্থাগুলি আমায় নিতে হবে সেগুলি হলো-(1) আমার বুথের দুটি পাড়া, মালিপাড়া ও প্রামাণিক পাড়া। মালিপাড়ায় আর্সেনিক মুক্ত জলের বড়ো অভাব। আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা আমার প্রাথমিক দায়িত্ব হবে। (2) প্রামাণিক পাড়ায় এখনো প্লাস্টারের রাস্তা হয়নি। মাঝেমাঝে ইট উঠে গেছে। রাস্তায় যাতে ঢালাই ফেলা যায়, তার ব্যবস্থা খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। (3) গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলায় গাঁথুনি শেষ হলেও এখনো তাতে ছাদ পড়েনি। ছেলেমেয়েদের বাথরুমের সংখ্যাও কম। এইদিকে লক্ষ্য আমাকে দিতেই হবে। (4) সাতগাছিয়া শ্মশান সংলগ্ন জমিতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হয়ে গেলেও তা এখনও চালু হয়নি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটিকে চালু করার উদ্যোগ নিতে হবে।
আমার এই সিদ্ধান্তগুলি গ্রামসংসদ এর সভায় সকলের সামনে পেশ করবো। তারা যদি সম্মতি দেয় তাহলে পঞ্চায়েতে বিষয়গুলি তুলবো। নতুন কোনো পরামর্শ দিলে তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবো।
7. ধরো তুমি একজন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তোমার বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে কী কী কর্মসূচির মাধ্যমে সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক কর্তব্যগুলি সবাই মিলে পালন করবে? কর্মসূচিগুলির একটি খসড়া তৈরি করো।
উত্তর : আমি একজন শিক্ষিকা, নাম সুচেতা পাল, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক অঞ্চলের কুম্ভচক পল্লিশ্রী বিদ্যাভবন এর একজন শিক্ষিকা আমি অষ্টম শ্রেণির শ্রেণিশিক্ষিকাও বটে।
ইতিহাসের শিক্ষিকা হিসাবে আমার দায়িত্ব সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক কর্তব্যগুলি সম্পর্কে আমার ছাত্রছাত্রীদের অবহিত করা। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনার পর এ ব্যাপারে একটি অবশ্য পালনীয় কর্মসূচির একটা খসড়া তৈরির ভার আমার উপর অর্পিত হয়। নিম্নলিখিত দিনগুলিকে কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করে মৌলিক কর্তব্যগুলি তুলে ধরার চেষ্টা করবো বলে একটি খসড়া কর্মসূচি প্রধান শিক্ষককে প্রদান করলাম।
6-14 বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের স্কুলে আসা নিশ্চিত করার জন্য ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি দল গঠন করবো। বাৎসরিক পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোনোর দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত অভিভাবক অভিভাবিকাদের এ ব্যাপারে অনুরোধ জানাবো। প্রয়োজন হলে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বিদ্যালয়ে না আসা শিশুদের বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করবো।
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনকে সবধর্মসমন্বয় দিবস হিসাবে পালনের পাশাপাশি মিশ্র সংস্কৃতির অতীত ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনকে স্বাধীনতা আন্দোলনের মহান আদর্শ স্মরণ করিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে পালন করা হবে।
প্রজাতন্ত্র দিবসকে বেছে নেবো সংবিধানের প্রতি আনুগত্য ও জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কর্মসূচি হিসেবে। জাতীয় স্তোত্রের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রয়োজনীয়তা বোঝাবো।
ভারতের পরিবেশ, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সব প্রাণীর প্রতি ভালোবাসার মর্ম বোঝানোর জন্য বিশ্বপরিবেশ দিবস বা 15 জুলাইকে বেছে নেবো।
স্বাধীনতা দিবস পালনের মধ্য দিয়ে ভারতের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও সংহতি রক্ষার শপথ নেওয়া হবে।
শিক্ষকরাই দেখাবে নতুন প্রভাতের স্বপ্ন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত নাগরিক তৈরি করেন যারা সেই শিক্ষকদের শ্রদ্ধা পালনের জন্য বেছে নেওয়া হবে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন 5 সেপ্টেম্বরকে। এই দিন বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও নারীর মর্যাদা রক্ষা বিষয়ক আলোচনার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
গান্ধিজির জন্মদিনকে অহিংসা দিবস হিসাবে পালন করা হবে। জাতীয় সম্পত্তি রক্ষার বিষয়ে আলোচনা করা হবে। জাতীয় উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এর সন্ধান করা হবে।
8. ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।
উত্তর: ভূমিকা : স্বাধীন ভারতের শাসন সংক্রান্ত আইনবিধি সম্বলিত গ্রন্থ সংবিধান নামে পরিচিত। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সংবিধানের থেকে ভারতীয় সংবিধান-এর কিছু বৈশিষ্ট্য আছে।
বৈশিষ্ট্য: ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলি হলো-
সংবিধানের বিশালতা: পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যেমন আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশ এর সংবিধানের শ্রেষ্ঠ অংশগুলিকে ভারতীয় সংবিধানে যুক্ত করা হয়েছে বলে আকৃতি ও প্রকৃতিতে এই সংবিধান বিশ্বের বৃহত্তম সংবিধানে পরিণত হয়েছে।
ভারতীয় সংবিধানে বর্তমানে 448টি ধারা অসংখ্য উপধারা ও 12টি তফশিল রয়েছে।
নমনীয়তা ও কঠোরতা: ভারতীয় সংবিধানের কিছু অংশ পরিবর্তন করা খুবই সহজ। আবার বেশ কিছু অংশ যথেষ্ট জটিল পদ্ধতিতে পরিবর্তন করতে হয়। এজন্য বলা হয় ভারতীয় সংবিধান সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয়তার সংমিশ্রণে তৈরি।
নির্দেশমূলক নীতি : আয়ারল্যান্ডের সংবিধানের অনুকরণে ভারতীয় সংবিধানে বেশ কিছু নির্দেশমূলক নীতির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে। এগুলি আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য না হলেও রাষ্ট্র- পরিচালনার দিক নির্দেশ করতে সাহায্য করে।
মৌলিক অধিকার: ভারতীয় সংবিধানে নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য ৭টি নির্দেশ বা নীতি সংরক্ষিত করা হয়েছিল। বর্তমানে সম্পত্তির অধিকার বাদ দিয়ে ৬টি অধিকার রাখা হয়েছে। মৌলিক অধিকারগুলি আদালত কর্তৃক বলবৎযোগ্য।
সংসদীয় গণতন্ত্র: ভারতে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। এখানে রাষ্ট্রপতি শাসনতান্ত্রিক প্রধান হলেও প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় পার্লামেন্ট লোকসভা, রাজ্য সভা ও রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে গঠিত।
যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো : ভারতের সংবিধানে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রাদেশিক সরকারের অস্তিত্ব রয়েছে।
ক্ষমতা বিভাজন: ভারতে তিনটি তালিকার মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে ক্ষমতা বণ্টিত হয়েছে। সেগুলি হলো কেন্দ্রীয় তালিকা, রাজ্য তালিকা ও যুগ্ম তালিকা।
একক নাগরিকত্ব : ভারতে নাগরিকদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দ্বৈত নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি।
অখণ্ড বিচারব্যবস্থা: ভারতে বিচার ব্যবস্থার শীর্ষে রয়েছে সুপ্রিমকোর্ট। তার অধীনে হাইকোর্ট ও অধস্তন আদালতগুলি কাজ করে।
মূল্যায়ন : ভারতীয় সংবিধান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবিধানের সমাহার বলে প্রায় প্রতিদিন দেশের সংবিধানের কিছু বৈশিষ্ট্য ভারতীয় সংবিধানে প্রত্যক্ষ করা যায়।
9. ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের গঠন সম্পর্কে কী জানা যায়? (নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন) অথবা ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভার গঠন সম্পর্কে কী জানা যায়?
উত্তর : ভূমিকা : রাষ্ট্রপতি লোকসভা ও নিয়ে ভারতীয় পার্লামেন্ট গঠিত। আইন রাজ্যসভা এই অবত শাসনসংক্রান্ত কাজকর্ম পার্লামেন্ট দ্বারা পরিচালিত হয়। রাজ্যসভা এই
■ রাষ্ট্রপতি: রাষ্ট্রপতি হলেন কেন্দ্রীয় আইনসভার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি পার্লামেন্টের উভয়কক্ষ এবং বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিধানসভার সদস্যদের ভোটে নির্বাচিন হন।
সাধারণত পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। একই পদ্ধতিতে একই সময়ের জন্য উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
রাজ্যসভা: কেন্দ্রীয় আইনসভার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা নামে নি পরিচিত।
সদস্য সংখ্যা: রাজ্যসভার সদস্য সংখ্যা মোট 250। এর মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বিধানসভা থেকে মোট 238 জন নির্বাচিত হন। বাকি 12 জনকে রাষ্ট্রপতি শিল্প, সাহিত্য, কলা, বিজ্ঞান, বিনোদন প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে মনোনীত করেন।
যোগ্যতা: রাজ্যসভার পদপ্রার্থী হতে গেলে-(i) প্রার্থীকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। (ii) অন্তত ৩০ বছর বয়স্ক হতে হবে। (iii) কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কোনো লাভজনক পদে তিনি নিযুক্ত থাকতে পারবেন না।
বৈশিষ্ট্য: রাজ্যসভা একটি স্থায়ী কক্ষ। এখানকার সদস্যরা 6 বছরের জন্য নির্বাচিত হন এবং প্রতি 2 বছর অন্তর এক তৃতীয়াংশ সদস্য অবসর নেন।
লোকসভা: কেন্দ্রীয় আইনসভার নিম্নকক্ষ হলো লোকসভা। সদস্য সংখ্যা: লোকসভার মোট সদস্য সংখ্যা ৫৫০ জন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি যদি মনে করেন, যথেষ্ট সংখ্যক ইঙ্গ-ভারতীয় প্রতিনিধি নেই, তাহলে এই সম্প্রদায় থেকে ২ জনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করতে পারেন।
যোগ্যতা: লোকসভার প্রার্থী হতে গেলে-(i) প্রার্থীকে অন্তত ২৫ বছর বয়স্ক হতে হবে। (ii) ভারতের নাগরিক হতে হবে। (iii) তিনি কেন্দ্র বা রাজ্যসরকারের কোনো পদে নিযুক্ত থাকতে পারবেন না।.
পরিচালনা: পদাধিকার বলে উপরাষ্ট্রপতি রাজ্যসভা পরিচালনা করেন। লোকসভা পরিচালনা করার জন্য একজন স্পিকার ও একজন ডেপুটি স্পীকার থাকেন। অধিবেশন চলাকালীন উপরাষ্ট্রপতি ও স্পীকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
মূল্যায়ন: লোকসভার কার্যকাল এর মেয়াদ 2 বছর। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শাসকদল যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় তাহলে তারা লোকসভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করতে পারে। কোনো দলই যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, তাহলে পুনরায় নির্বাচন হতে পারে।
10. ভারতের রাষ্ট্রপতির নির্বাচন, ক্ষমতা ও পদমর্যাদা সম্পর্কে কী জানা যায়? (বড়িশা হাইস্কুল)
উত্তর: ভূমিকা : ভারতের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি হলেন শাসনতান্ত্রিক প্রধান। তিনি জাতির প্রতিনিধিত্ব করেন।
যোগ্যতা: রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হতে গেলে-(i) ভারতের নাগরিক হতে হবে। (ii) অন্তত 35 বছর বয়স হতে হবে। (iii) কোনো লাভজনকপদে অধিষ্ঠিত থাকা চলবে না।
নির্বাচন: পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের সদস্য, এবং রাজ্য বিধানসভার সদস্যদের গোপন ভোটের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
কার্যকাল: রাষ্ট্রপতির কার্যকালের মেয়াদ 5 বছর।
ক্ষমতা: রাষ্ট্রপতি যেসকল ক্ষমতা ভোগ করেন, সেগুলি হলো-
শাসনসংক্রান্ত ক্ষমতা: ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রীদের, রাজ্যপাল, স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানদের নিয়োগ ও পদচ্যুত করতে পারেন। যুদ্ধ ও শান্তি ঘোষণা করার ক্ষমতাও তাঁরই।
আইনসংক্রান্ত ক্ষমতা: পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের অধিবেশন আহ্বান করা, স্থগিত রাখা, লোকসভা ভেঙে দেওয়ার বিলে স্বাক্ষর করার অধিকার রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
অর্থসংক্রান্ত ক্ষমতা: রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ছাড়া অর্থ বিল আইনসভায় পেশ করা যায় না।
বিচারসংক্রান্ত ক্ষমতা: রাষ্ট্রপতি সুপ্রিমকোর্ট, হাইকোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগ করেন, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সাজা হ্রাস বা মুকুব করতে পারেন।
জরুরিকালীন ক্ষমতা: রাষ্ট্রপতি তিন ধরনের জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। এগুলি হল-জাতীয় জরুরি অবস্থা, সাংবিধানিক অচলাবস্থাজনিত জরুরি অবস্থা এবং আর্থিক জরুরি অবস্থা।
পদমর্যাদা: রাষ্ট্রপতি সংবিধান অনুযায়ী ভারতের প্রধান শাসক, তাঁর নামেই যাবতীয় শাসনকার্য পরিচালনা করা হয়। যুদ্ধ ঘোষণা, শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর প্রভৃতি সবকিছুই তাঁর নামে হয়ে থাকে।
মূল্যায়ন: সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সকল ক্ষমতার উৎস হলেও তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য থাকেন। বলা যায় রাষ্ট্রপতি হলেন নিয়মতান্ত্রিক প্রধান।
Fill In The Blanks
1. ভারতীয় সংবিধানের সময় কমিটির সভাপতি ছিলেন |
উত্তর: বি আর আম্বেদকর
2. ভারতে আইন রচনা ও সংবিধান সংশোধন করে |
উত্তর: আইনসভা
3. ভারত রাষ্ট্রের প্রকৃত পরিচালক হলেন |
উত্তর: প্রধানমন্ত্রী
4. পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হলেন |
উত্তর: প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ
5. পঞ্চায়েত সদস্যরা বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
উত্তর: 5
6. রাজ্যপালকে নিয়োগ করেন ।
উত্তর: রাষ্ট্রপতি
7. তেলেঙ্গানার চাষিরা গ্রামের গুলিতে সংগঠিত হয়।
উত্তর: সংগম
8. নর্মদা বাঁধ প্রকল্পের ফলে লক্ষ মানুষ জীবন ও জীবিকা হারাতে বসেছিল।
উত্তর: 21
2.9 সিঙ্গুরের মূল ফসল হলো |
উত্তর: ধান
True And false
1. সংবিধান হল বিচার বিভাগের আইন সংকলন।
উত্তর: ভুল।
2. ভারতীয় সংবিধানের প্রধান রূপকার বি আর আম্বেদকর।
উত্তর: ঠিক।
3. ভারতের রাষ্ট্রপতিই প্রকৃত শাসক।
উত্তর: ভুল।
4. রাজ্যসভায় সভাপতিত্ব করেন মুখ্যমন্ত্রী।
উত্তর: ভুল।
5. পশ্চিমবঙ্গে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা আছে।
উত্তর: ঠিক।