WBBSE Class Chapter 3 History Solution | Bengali Medium

ভারতের সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির কয়েকটি ধারা 

MCQs Question Answer

ক) বারাণসী

খ) কনৌজ

গ পাটলিপুত্র

(ঘ) গৌড়

উত্তর: খ) কনৌজ।

১.২ উচ্চ রাজকর্মচারীদের নগদ বেতন না দিয়ে অনেক সময় পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হত-

(ক) সোনা

(খ) ফসল

(গ) জমি

(ঘ) রুপো

উত্তর: গ) জমি।

১.৩ ভারতীয় সামন্ততান্ত্রিক কাঠামোয় সবথেকে উপরে থাকতেন-

ক) সামন্ত

খ) মহাসামন্ত

(গ) জনগণ

ঘ) রাজা

উত্তর: (ঘ) রাজা।

১.৪ চোল রাজ্যে বিখ্যাত ছিল-

(ক) ব্রোঞ্জ হস্তশিল্প

খ) মৃৎশিল্প

গ) কাষ্ঠশিল্প

(ঘ) তাঁত শিল্প

উত্তর: (ক) ব্রোঞ্জ হস্তশিল্প।

১.৫ তাঞ্জোরের মন্দির তৈরি করেন-

(ক) বল্লাল সেন

খ) লক্ষ্মণ সেন

গ) রাজরাজ চোল

(ঘ) রাজেন্দ্র চোল

উত্তর: (গ) রাজরাজ চোল।

১.৬ চোল শাসনে রাজ্যকে ভাগ করা হয়েছে কয়েকটি-

(ক) মন্ডলমে

খ) উরে

গ) নাড়ুতে

ঘ) নগরমে

উত্তর: (ক) মন্ডলমে।

১.৭ নগরম গঠিত হয়েছিল-

ক) যুদ্ধের জন্য

খ) ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষার জন্য

 গ) কৃষির জন্য

ঘ) রাজাকে সাহায্য করার জন্য

উত্তর: (খ) ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষার জন্য।

মম

উত্তর: (ঘ) বণিকদের।

১.৯ দক্ষিণ ভারতে ব্রাহ্মণদের জমি দানের ব্যবস্থাকে বলা হত-

(ক) অগ্রহার

খ) ভুক্তি

(গ) মণ্ডলম

(ঘ) ব্রহ্মদেয়

উত্তর: (ঘ) ব্রহ্মদেয়।

১.১০ পাল ও সেন যুগে জিনিস কেনা বেচার প্রধান মাধ্যম ছিল-

(ক) স্বর্ণমুদ্রা

(খ) কড়ি

গ) রৌপ্যমুদ্রা

ঘ) তাম্রমুদ্রা

উত্তর: খ) কড়ি।

১.১১ পাল ও সেন যুগে জমিতে মূল অধিকার ছিল-

ক) রাজার

(গ) সামন্তের

(খ) জমিদারের

ঘ কৃষকের

উত্তর: (ক) রাজার।

১.১২ পাল ও সেন যুগে রাজারা কৃষকদের কাছ থেকে উৎপন্ন

ফসলের যতটা পরিমাণ কর নিতেন, তা হল-

ক) ১২ ভাগ

খ) ১৬ ভাগ

গ) ভাগ

ঘ) ভাগ

উত্তর:  খ) ভাগ

১.১৩ পাল ও সেন যুগে বাংলার প্রধান ফসল ছিল-

ক) গম

গ) ধান

খ) যব

ঘ) ডাল

উত্তর: (গ) ধান।

১.১৪ ডাল খাওয়ার শিক্ষা বাঙালিরা পেয়েছিল সম্ভবত-

(ক) উত্তর ভারতীয়দের কাছ থেকে

(খ) দক্ষিণ ভারতীয়দের কাছ থেকে

(গ) পূর্ব ভারতীয়দের কাছ থেকে

(ঘ) পশ্চিম ভারতীয়দের কাছ থেকে

উত্তর: (ক) উত্তর ভারতীয়দের কাছ থেকে।

১.১৫ বাংলার বাইরে থেকে এসেছিল-

(ক) হাতি, ঘোড়া

(খ) বাঘ, হরিণ

গ) ঘোড়া, উট

ঘ) মোষ, বানর

উত্তর: (গ) ঘোড়া, উট।

১.১৬ পাল আমলে শিল্পীদের সঙ্ঘবদ্ধ গোষ্ঠীকে বলা হত-

ক) মণ্ডলম

খ) পট্টনময়ী

গ) নগরম

ঘ) নিগম

উত্তর: (ঘ) নিগম।

১.১৭ চিকিৎসা সংগ্রহ গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন-

ক) চরক

(খ) চক্রপাণি দত্ত

গ সুশ্রুত

ঘ শূলপাণি

উত্তর: (খ) চক্রপাণি দত্ত।

১.১৮ বাংলাভাষার উদ্ভবের সময়কাল-

(ক) মৌর্যযুগ

খ) কুষাণযুগ

(গ) পালযুগ

ঘ) সেনযুগ

উত্তর: গ) পালযুগ।

১.১৯ পাল-সেন যুগে সাহিত্য, ব্যাকরণ, ধর্ম, দর্শন, চিকিৎসা শাস্ত্র লেখা হত-

ক) হিন্দি ভাষায়

খ) সংস্কৃত ভাষায়

গ) বাংলা ভাষায়

(ঘ) পালি ভাষায়

উত্তর: খ) সংস্কৃত ভাষায়।

১.২০ ‘রামচরিত’ কাব্যের রচয়িতা হলেন-

(ক) সন্ধ্যাকর নন্দী

খ) তুলসিদাস

(গ) রামপাল

(ঘ) কালিদাস

উত্তর: ক) সন্ধ্যাকর নন্দী।

১.২১ ‘রামচরিত’ কাব্যে যে পাল রাজার কথা বলা হয়েছে, তিনি হলেন-

(ক) গোপাল

খ) দেবপাল

(গ) দ্বিতীয় মহীপাল

(ঘ) রামপাল

উত্তর: ঘ) রামপাল।

১.২২ পাল রাজারা ছিলেন-

(ক) ব্রাহ্মণ

খ ক্ষত্রিয়

গ) বৈশ্য

ঘ) শূদ্র

উত্তর: খ) ক্ষত্রিয়।

১.২৩ আচার্য হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ‘চর্যাপদ’-এর পুঁথি উদ্ধার করেন-

ক)ভুটান থেকে

খ) সিকিম থেকে

(গ) নেপাল থেকে

(ঘ) তিব্বত থেকে

উত্তর: গ) নেপাল থেকে।

১.২৪ বৌদ্ধ দার্শনিকদের জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র ছিল-

ক) বৌদ্ধবিহারগুলি

খ) বিভিন্ন মঠ

গ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি

ঘ) টোলগুলি

উত্তর: (ক) বৌদ্ধবিহারগুলি।

১.২৫ নালন্দা বৌদ্ধবিহার তৈরি হয়েছিল খ্রিস্টীয়-

ক) চতুর্থ শতকে

খ) পঞ্চম শতকে

(গ) ষষ্ঠ শতকে

ঘ) সপ্তম শতকে

উত্তর: (খ) পঞ্চম শতকে।

১.২৬ নালন্দা বৌদ্ধবিহার অবস্থিত ছিল-

ক) ভাগলপুরের কাছে

(খ) রাজশাহীর কাছে

(গ) বিহার রাজ্যে

ঘ) ঢাকা জেলায়

উত্তর: (গ) বিহার রাজ্যে।

১.২৭ বিক্রমশীল মহাবিহার প্রতিষ্ঠা করেন-

(ক) বিক্রমাদিত্য

খ) অতীশ দীপঙ্কর

(গ) শীলভদ্র

(ঘ) ধর্মপাল

উত্তর: (ঘ) ধর্মপাল।

১.২৮ বিক্রমশীল মহাবিহার যে বৌদ্ধ মতচর্চার জন্য বিখ্যাত ছিল, সেটি হল-

(ক) বজ্রযান

খ) হীনযান

(গ) সহজযান

(ঘ) কালচক্রযান

উত্তর: (ক) বজ্রযান।

১.২৯ পালযুগের শিল্পরীতিকে বলা হয়-

(ক) পাশ্চাত্য শিল্পরীতি

(খ) প্রাচ্য শিল্পরীতি

(গ) বৌদ্ধ শিল্পরীতি

(ঘ) গান্ধার শিল্পরীতি

উত্তর: (খ) প্রাচ্য শিল্পরীতি।

১.৩০ পাল আমলের উল্লেখযোগ্য বৌদ্ধবিহারটি হল-

(ক) নালন্দা

খ) বিক্রমশীল

গ) সোমপুরী

ঘ ওদন্তপুরী

উত্তর: গ) সোমপুরী।

১.৩১ সেনযুগে ‘সমাজপতি’ হিসেবে সুবিধা ভোগ করত-

(ক) জমিদাররা

খ) ক্ষত্রিয়রা

গ) ব্রাহ্মণরা

(ঘ) বণিকরা

উত্তর: গ) ব্রাহ্মণরা।

১.৩২ সেনযুগে অব্রাহ্মণদের সবাইকে ধরা হত-

ক) শূদ্র

(খ) আদিবাসী

(গ) উপজাতি

(ঘ) নিষাদ

উত্তর: (ক) শূদ্র।

১.৩৩ লক্ষ্মণ সেনের সভাকবির নাম-

(ক) বাণভট্ট

খ) জয়দেব

(গ) অশ্বঘোষ

(ঘ) হলায়ুধ

উত্তর: খ)  জয়দেব।

১.৩৪ ‘গীতগোবিন্দম্’ কাব্যের রচয়িতা ছিলেন-

(ক) ধোয়ী

(খ) গোবর্ধন

গ) শরণ

ঘ) জয়দেব

উত্তর: (ঘ) জয়দেব।

১.৩৫ ‘পবনদূত’ কাব্য লিখেছিলেন-

ক) ধোয়ী

(খ) গোবর্ধন

(গ) উমাপতিধর

(ঘ) শরণ

উত্তর: ক) ধোয়ী।

১.৩৬ ‘সমুক্তি কর্ণামৃত’ গ্রন্থটি সংকলন করেন-

(ক) জয়দেব

(খ) গোবর্ধন

(গ) শ্রীধর দাস

ঘ) উমাপতি ধর

উত্তর: (গ) শ্রীধর দাস।

১.৩৭ ‘ব্রাহ্মণসর্বস্ব’ নামে বইটি লিখেছিলেন-

(ক) বল্লাল সেন

খ) লক্ষ্মণ সেন

গ) শরণ

(ঘ) হলায়ুধ

উত্তর: ঘ) হলায়ুধ।

১.৩৮ লক্ষ্মণ সেনের আমলে একজন অভিধান প্রণেতা ছিলেন-

(ক) গোবর্ধন

(খ) সর্বানন্দ

গ) ধোয়ী

ঘ) শরণ

উত্তর: (খ) সর্বনিন্দ।

১.৩৯ বাঙালি বৌদ্ধ আচার্যদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত এবং শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত ছিলেন-

(ক) শীলরক্ষিত

(খ) শীলভদ্র

(গ) দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান

(ঘ) কাহ্নপাদ

উত্তর: গ) দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান।

১.৪০ তিব্বতে ‘বুদ্ধের অবতার’ হিসেবে পূজিত হন-

(ক) অতীশ দীপঙ্কর

খ) শীলভদ্র

(গ) জ্ঞানপ্রভ

(ঘ) শীলরক্ষিত

উত্তর : (ক) অতীশ দীপঙ্কর।

১.৪১ দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান অনেক সংস্কৃত গ্রন্থ অনুবাদ করেন-

(ক) চিনা ভাষায়

খ) নেপালি ভাষায়

গ) বাংলা ভাষায়

(ঘ) ভোট ভাষায়

উত্তর:(ঘ) ভোট ভাষায়।

১.৪২ খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে পৃথিবীর বৃহত্তম বৌদ্ধকেন্দ্র ছিল-

(ক) নালন্দার বৌদ্ধমন্দির

খ) সাঁচির বৌদ্ধস্তূপ

গ) বোরোবোদুরের বৌদ্ধমন্দির

ঘ) সোমপুরী বিহারের মন্দির

উত্তর : গ) বোরোবোদুরের বৌদ্ধমন্দির।

১.৪৩ বোরোবোদুরের বৌদ্ধমন্দির-

ক) শিব

খ) বিষু

গ) বুদ্ধ

ঘ) রাধা-কৃষ্ণ

উত্তর: খ) বিষু।

১.৪৪ বোরোদুরের বৌদ্ধমন্দিরটি অবস্থিত ছিল-

(ক) কম্বোডিয়ায়

খ) তিব্বতে

গ) ইন্দোনেশিয়ায়

(ঘ) থাইল্যান্ডে

উত্তর : (গ) ইন্দোনেশিয়ায়।

১.৪৫ কম্বোডিয়ার আঙ্কোরভাটের বিখ্যাত বিষ্ণুমন্দিরটি তৈরি হয়-

ক) নবম শতকের প্রথম ভাগে

(খ) দশম শতকের প্রথম ভাগে

(গ) একাদশ শতকের প্রথম ভাগে

ঘ) দ্বাদশ শতকের প্রথম ভাগে

উত্তর: (ঘ) দ্বাদশ শতকের প্রথম ভাগে।

১.৪৬ আঙ্কোরভাটের বিষ্ণুমন্দিরের গায়ে খোদিত আছে-

(ক) হর-পার্বতীর গল্প গাথা

খ) রামায়ণ ও মহাভারতের গল্প গাথা

(গ) রাধা-কৃষ্ণের গল্প গাথা

(ঘ) জাতকের কাহিনি

উত্তর : খ) রামায়ণ ও মহাভারতের গল্প গাথা।

Very Short Question Answer

১। নীচের নামগুলির মধ্যে কোন্টি বাকিগুলির সঙ্গে মিলছে না তার তলায় দাগ দাও:

(ক) নাড়ু, চোল, উর, নগরম

উত্তরের ব্যাখ্যা: চোল একটি রাজবংশ, কিন্তু বাকি তিনটি চোল আমলে স্বায়ত্ব শাসিত পরিষদ।

(খ) ওদন্তপুরী, বিক্রমশীল, নালন্দা, জগদ্দল, লখনৌতি

উত্তরের ব্যাখ্যা: লখনৌতি ছিল লক্ষ্মণ সেনের রাজধানী। বাকিগুলি ছিল বৌদ্ধ মহাবিহার।

(গ) জয়দেব, ধীমান, বীটপাল, সন্ধ্যাকর নন্দী, চক্রপাণি দত্ত

উত্তরের ব্যাখ্যা: জয়দেব সেনযুগের কবি। বাকিরা পালযুগের শিল্পী, সাহিত্যিক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানী।

(ঘ) লুইপাদ, অশ্বঘোষ, সরহপাদ, কাহ্নপাদ

উত্তরের ব্যাখ্যা: অশ্বঘোষ ছিলেন ‘বুদ্ধচরিত’ গ্রন্থের রচয়িতা। বাকি তিনজন চর্যাপদের রচয়িতা।

২.১ খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে সুয়ান জাং কোন্ কোন্ ব্যবসায়িক কেন্দ্রের নাম উল্লেখ করেছেন।

উত্তর:: খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে সুয়ান জাং থানেশ্বর, কনৌজ ও বারাণসী এই তিনটি ব্যবসায়িক কেন্দ্রের নাম উল্লেখ করেছেন।

২.২ খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কেন্দ্রের নাম লেখো।

উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের দুটি প্রশাসনিক কেন্দ্রের নাম ছিল থানেশ্বর ও কনৌজ।

২.৩ খ্রিস্টীয়, সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে সমাজের কয়েকটি গোষ্ঠীর নাম লেখো।

উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে সমাজের কয়েকটি গোষ্ঠীর নাম ছিল সামন্ত, রাজা, রৌণক প্রভৃতি।

২.৪ চোল রাজ্যে কোন্ হস্তশিল্প খুব বিখ্যাত ছিল?

উত্তর: চোল রাজ্যে ব্রোঞ্জ হস্তশিল্প খুব বিখ্যাত ছিল।

২.৫ চোল রাজ্যের রাজারা কোন কোন উপাধিতে নিজেদেরকে ভূষিত করতেন?

উত্তর: চোল রাজ্যের রাজারা নিজেদেরকে ‘মহারাজা-অধিরাজ’, ‘ত্রিভুবন-চক্রবর্তীন’ প্রভৃতি উপাধিতে ভূষিত করতেন।

২.৬ চোল রাজ্যে ব্রাহ্মণদের যে জমি দান করা হত সেই জমিকে

উত্তর: চোল রাজ্যে ব্রাহ্মণদের যে জমি দান করা হত, সেই জমিকে ব্রহ্মদেয় জমি বলা হত।

২.৭ কাবেরী উপত্যকায় নতুন নতুন গ্রামের পত্তন হয়েছিল কেন?

উত্তর: চোল শাসনকালে দক্ষিণ ভারতে ব্রাহ্মণদের ব্রহ্মদেয় জমি দেওয়ার ফলে কাবেরী উপত্যকার ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে নতুন নতুন গ্রামের পত্তন হয়েছিল।

২.৮ পাল ও সেন যুগে বাংলার রাজারা উৎপন্ন ফসলের কত অংশ কৃষকদের কাছ থেকে কর 

উত্তর।  পাল ও সেন যুগে বাংলার রাজারা উৎপন্ন ফসলের এক-ষষ্ঠাংশ (১/৬ ভাগ) কৃষকদের কাছ থেকে কর নিতেন।

২.৯ পাল-সেন যুগে বাংলার অর্থনীতির মূল ভিত্তি কী ছিল?

উত্তর পাল-সেন যুগে বাংলার অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল কৃষি-শিল্প এবং বাণিজ্য।

২.১০ বাংলার লোকেরা কোন যুগে আলু খেতে শিখেছে?

উত্তর। বাংলার লোকেরা মধ্যযুগে আলু খেতে শিখেছে।

২.১১ বাংলার লোকেরা কাদের কাছ থেকে আলু খেতে শিখেছে?

উত্তর: বাংলার লোকেরা পোর্তুগিজদের কাছ থেকে আলু খেতে শিখেছে।

২.১২ বাঙালি সমাজে কী ধরনের পানীয় চালু ছিল?

উত্তর: মহুয়া এবং আখ থেকে তৈরি পানীয় বাঙালি সমাজে চালু ছিল।

২.১৩ বাংলার শিল্পদ্রব্যের মধ্যে কোন্ শিল্প প্রধান ছিল?

উত্তর। বাংলার শিল্পদ্রব্যের মধ্যে কার্পাস বস্ত্র ছিল প্রধান।

২.১৪ কোন যুগ বাংলা ভাষার উৎপত্তির সময়কাল হিসেবে পরিচিত?

 উত্তর: পালযুগ বাংলা ভাষার উৎপত্তির সময়কাল হিসেবে পরিচিত।

২.১৫ প্রাচীন বাংলা ভাষার জন্ম হয় কত খ্রিস্টাব্দে?

উত্তর: আনুমানিক ৮০০-১১০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে প্রাচীন বাংলা ভাষার জন্ম হয়।

২.১৬ প্রাচীন বাংলা ভাষার জন্ম হয় কীভাবে?

উত্তর: মাগধী অপভ্রংশ ভাষার গৌড়-বঙ্গীয় রূপ থেকে ধীরে ধীরে প্রাচীন বাংলা ভাষার জন্ম হয়।

২.১৭ চক্রপাণি দত্ত কোন্ যুগের চিকিৎসা বিজ্ঞানী ছিলেন?

 উত্তর: পালযুগের চিকিৎসা বিজ্ঞানী ছিলেন চক্রপাণি দত্ত।

২.১৮ ‘চিকিৎসা সংগ্রহ’ গ্রন্থটি কে রচনা করেন?

উত্তর: চক্রপাণি দত্ত ‘চিকিৎসা সংগ্রহ’ গ্রন্থটি রচনা করেন।

২.১৯ ‘রামচরিত’ কাব্য কার লেখা?

উত্তর: ‘রামচরিত’ কাব্য সন্ধ্যাকর নন্দীর লেখা।

২.২০ পালযুগে কীভাবে ‘বজ্রযান’ বা ‘তন্ত্রযান’ বা ‘তান্ত্রিক’ বৌদ্ধমতের জন্ম হয়েছিল?

উত্তর: পালযুগে মহাযান বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে অন্যান্য দার্শনিক চিন্তাধারা মিলে গিয়ে ‘বজ্রযান’ বা ‘তন্ত্রযান’ বা ‘তান্ত্রিক’ বৌদ্ধমতের জন্ম হয়েছিল।

২.২১ সিদ্ধাচার্য কাদের বলা হত?

উত্তর: ‘বজ্রযান’ বা ‘তন্ত্রযান’ বৌদ্ধমতের নেতাদের বলা হতো সিদ্ধাচার্য।

২.২২ পালযুগের কয়েকজন সিদ্ধাচার্যের নাম লেখো।

উত্তর: পালযুগের কয়েকজন সিদ্ধাচার্য হলেন লুইপাদ, সরহপাদ, কাহুপাদ, ভুসুকুপাদ প্রমুখ।

২.২৩ কাহুপাদ কে ছিলেন?

উত্তর: কাহ্নপাদ ছিলেন পালযুগের একজন বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য।

২.২৪ চর্যাপদের মধ্য দিয়ে কোন্ কোন্ ছবি ফুটে ওঠে?

উত্তর: চর্যাপদের মধ্য দিয়ে পালযুগের বাংলার পরিবেশ এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ছবি ফুটে ওঠে।

২.২৫ কাদের হাত ধরে আদি বাংলাভাষার বিকাশ ঘটেছিল?

উত্তর: বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের হাত ধরে আদি বাংলাভাষার বিকাশ ঘটেছিল।

২.২৬ চর্যাপদ কী?

উত্তর: চর্যাপদ হল খ্রিস্টীয় অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতকে লেখা বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের কবিতা ও গানের সংকলন।

২.২৭ কে, কোথা থেকে চর্যাপদ’-এর পুঁথি উদ্ধার করেন?

উত্তর: আচার্য হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল থেকে ‘চর্যাপদ’-এর পুঁথি উদ্ধার করেন।

২.২৮ ‘সহজিয়া’ কী?

উত্তর: পালযুগে সহজযান বৌদ্ধ মতকে সহজিয়া বলা হয়।

২.২৯ বাইরের কোন্ কোন্ দেশ থেকে ছাত্ররা পড়াশোনার জন্য নালন্দা বৌদ্ধবিহারে আসত?

উত্তর: তিব্বত, চিন, কোরিয়া এবং মোঙ্গলিয়া থেকে ছাত্ররা পড়াশোনার জন্য নালন্দা বৌদ্ধবিহারে আসত।

২.৩০ নালন্দা বৌদ্ধবিহার তৈরি হয়েছিল কোন্ সম্রাটদের আমলে?

উত্তর: গুপ্ত সম্রাটদের আমলে নালন্দা বৌদ্ধবিহার তৈরি হয়েছিল।

২.৩১ নালন্দা বৌদ্ধবিহারে কতজন শিক্ষক এবং কতজন ছাত্র ছিল?

উত্তর: নালন্দা বৌদ্ধবিহারে ১৫০০ জন শিক্ষক এবং ৮৫০০ জন ছাত্র ছিল।

২.৩২ নালন্দা বৌদ্ধবিহারটি বর্তমান ভারতের কোন্ রাজ্যে অবস্থিত? (বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল)

উত্তর: নালন্দা বৌদ্ধবিহারটি বর্তমান ভারতের বিহার রাজ্যে অবস্থিত।

 ২.৩৩ জগদ্দল বৌদ্ধবিহারটি কোথায় অবস্থিত ছিল?

উত্তর: জগদ্দল বৌদ্ধবিহারটি উত্তরবঙ্গে অবস্থিত ছিল।

২.৩৪ পাল আমলে কেন বেশি স্তূপ বানানো হয়েছিল?

উত্তর: পাল রাজারা বৌদ্ধধর্মের অনুরাগী ছিলেন এবং সেই জন্যই পাল শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বেশি স্তূপ বানানো হয়েছিল।

২.৩৫ বিক্রমশীল মহাবিহার কোথায় অবস্থিত ছিল?

উত্তর: মগধের উত্তরভাগে গঙ্গার তীরে আধুনিক ভাগলপুর শহরের কাছে বিক্রমশীল মহাবিহার অবস্থিত ছিল।

২.৩৬ বিক্রমশীল মহাবিহার কে, কবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

■ উত্তর। পাল সম্রাট ধর্মপাল খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে বিক্রমশীল মহাবিজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

২.৩৭ বিক্রমশীল মহাবিহারের মহাচার্য কে ছিলেন?

উত্তর 1 দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান ছিলেন বিক্রমশীল মহাবিহারের অন্যজ একজন মহাচার্য।

২.৩৮ পালযুগের শিল্পরীতিকে কী বলা হয়?

উত্তর: পালযুগের শিল্পরীতিকে প্রাচ্য শিল্পরীতি বলা হয়।

২.৩৯ বিক্রমশীল মহাবিহার কত বছর টিকেছিল?

  • উত্তর: বিক্রমশীল মহাবিহার পাঁচশো বছর টিকেছিল।

২.৪০ বিক্রমশীল মহাবিহারে কতজন আচার্য ছিলেন এবং সর্বোচ্চ কতজন ছাত্র পড়াশোনা করত?

উত্তর: বিক্রমশীল মহাবিহারে একশোর বেশি আচার্য ছিলেন এক সর্বোচ্চ তিন হাজার ছাত্র পড়াশোনা করত।

২.৪১ কোন্ কোন্ অঞ্চলে পালযুগের বৌদ্ধস্তূপ পাওয়া গেছে?

উত্তর: বর্তমানে বাংলাদেশের ঢাকা জেলার আসরফপুর গ্রাম। রাজশাহীর পাহাড়পুরে, চট্টগ্রামে, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় ভরতপুর গ্রামে বৌদ্ধস্তূপ পাওয়া গেছে।

২.৪২ পালযুগের দুজন বিখ্যাত শিল্পীর নাম লেখো।

উত্তর: পালযুগের দুজন বিখ্যাত শিল্পী হলেন ধীমান ও বীটপাল।

২.৪৩ সেনযুগে কোন্ কোন্ দেবদেবীর পুজো করা হত?

উত্তর: সেনযুগে ইন্দ্র, অগ্নি, কুবের, সূর্য, বৃহস্পতি, গঙ্গা, যমুনা মাতৃকা, শিব, বিষুর পুজো করা হত।

২.৪৪ সেনযুগের রাজারা কোন্ ধর্মাবলম্বী ছিলেন?

উত্তর: সেন রাজাদের মধ্যে লক্ষ্মণসেন ছিলেন বৈষ্ণব এবং তাঁর পূর্ববর্তী রাজারা ছিলেন শৈব।

২.৪৫ লক্ষ্মণ সেনের রাজসভার সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্যিক কে ছিলেন এবং তাঁর লিখিত গ্রন্থের নাম কী?

উত্তর: লক্ষ্মণ সেনের রাজসভার সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্যিক ছিলেন। কবি জয়দেব এবং তাঁর লিখিত গ্রন্থের নাম ‘গীতগোবিন্দম্’।

২.৪৬ পবনদূত কাব্যের রচয়িতা কে? (বাঁকুড়া জেলা স্কুল)

উত্তর: পবনদূত কাব্যের রচয়িতা হলেন ধোয়ী।

২.৪৭ শ্রীনিবাস কে ছিলেন?

উত্তর: সেনযুগের গণিতজ্ঞ ও জ্যোতির্বিদ ছিলেন শ্রীনিবাস।

২.৪৮ বল্লাল সেনের লিখিত দুটি গ্রন্থের নাম কী?

উত্তর: বল্লাল সেনের লিখিত গ্রন্থ দুটির নাম হল ‘দানসাগর’ ও ‘অদ্ভুতসাগর’।

২.৪৯ সেন বংশের কোন্ রাজাকে কৃষ্ণের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

উত্তর: সেন বংশের রাজা লক্ষ্মণ সেনকে কৃষ্ণের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

২.৫০ খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যের ভারতীয় সংস্কৃতির নমুনা ভারতের বাইরে কোন্ কোন্ অঞ্চলে পাওয়া গেছে?

 উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যের ভারতীয় সংস্কৃতির

নমুনা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, তিব্বত এবং চিন প্রভৃতি অঞ্চলে পাওয়া গেছে।

২.৫১ দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান কোন্ কোন্ মহাবিহারের আচার্য ও অধ্যক্ষ ছিলেন?

উত্তর: দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান বিক্রমশীল ওদন্তপুরী এবং সোমপুরী মহাবিহারের আচার্য ও অধ্যক্ষ ছিলেন।

২.৫২ অতীশ দীপঙ্কর কীভাবে ‘দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান’ নামে পরিচিত হন?

উত্তর: অতীশ দীপঙ্কর ও দন্তপুরী বিহারের আচার্য শীলারক্ষিতের কাছে দীক্ষা নিয়ে ‘দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান’ নামে পরিচিত হন।

২.৫৩ কার বাড়ি ‘নাস্তিক পণ্ডিতের ভিটা’ নামে পরিচিত?

উত্তর: অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের বাড়ি ‘নাস্তিক পণ্ডিতের ভিটা’ নামে পরিচিত।

২.৫৪ অতীশ দীপঙ্কর কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?

উত্তর: অতীশ-দীপঙ্কর বঙ্গাল অঞ্চলের বিক্রমণিপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

২.৫৫ অতীশ দীপঙ্করের সমাধিস্থল কোথায় অবস্থিত?

উত্তর: তিব্বতের রাজধানী লাসার কাছে অতীশ দীপঙ্করের সমাধিস্থল অবস্থিত।

২.৫৬ অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে কোন্ ধর্ম প্রচার করেন?

উত্তর: অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে মহাযান বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেন।

২.৫৭ খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে পৃথিবীর বৃহত্তম বৌদ্ধকেন্দ্র কোথায় ছিল? 

উত্তর: খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে পৃথিবীর বৃহত্তম বৌদ্ধকেন্দ্র ছিল ইন্দোনেশিয়ার বোরোবোদুরের বৌদ্ধমন্দির।

২.৫৮ আঙ্কোরভাটের বিষুমন্দির কবে, কোথায় তৈরি হয়?

উত্তর: দ্বাদশ শতকের প্রথম ভাগে কম্বোডিয়ায় আঙ্কোরভাটের বিষুমন্দির তৈরি হয়।

২.৫৯ রামায়ণ ও মহাভারতের বিভিন্ন গল্প কোন্ মন্দিরের গায়ে খোদাই করা আছে?

উত্তর: রামায়ণ ও মহাভারতের বিভিন্ন গল্পগাথা আঙ্কোরভাটের বিষু মন্দিরের গায়ে খোদাই করা আছে।

২.৬০ পানপাতা কিভাবে ফলাতে হয়, তা ভারত কাদের কাছ থেকে শিখেছিল?

উত্তর: পানপাতা কিভাবে ফলাতে হয়, তা ভারত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির কাছ থেকে শিখেছিল।

Short Question Answer

৫.১ চোল শাসনব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর: ভূমিকা: খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে দক্ষিণ ভারতে চোল শক্তির অভ্যুত্থান ঘটে। প্রায় তিন শত বছর ধরে চোলরা দক্ষিণ ভারতে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছিল। চোল শাসনব্যবস্থাও ছিল বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।

৩.১ সামন্ততন্ত্র বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: মধ্যযুগের ভারতীয় সমাজে এক বিশেষ গোষ্ঠীর রাজকর্মচারীদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় তাদের নগদ বেতন না দিয়ে জমি দেওয়া হত। সেই জমির রাজস্বই ছিল ওই কর্মচারীদের আয়। এছাড়া তারা গ্রামের শাসন এবং বিচারকার্যের দেখাশোনাও করত। রাজা, গোষ্ঠীর শাসক এবং জনগণকে নিয়ে এর ফলে একটি স্তরভেদ তৈরি হয়েছিল সমাজে। এই ধরনের গড়ে ওঠা ব্যবস্থাই ‘সামন্ততন্ত্র’ নামে পরিচিত।

৩.২ ইউরোপের সামন্ততন্ত্রের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

উত্তর : ইউরোপের সামন্ততন্ত্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল- 1. সামন্তসমাজের কাঠামো ছিল ত্রিভুজের মতো। তার নানা স্তরে ছিলেন রাজা, বিভিন্ন সামন্ত এবং উপসামন্ত। সর্বনিম্নস্তরে থাকত কৃষকদের মতো সাধারণ মানুষ। 2. সামন্তপ্রভুদের ম্যানর বা খামারে ভূমিদাস বা সার্ফদের খাটিয়ে উৎপাদন করা হতো।

৩.৩ ‘নগরম’ পরিষদ গঠনের উদ্দেশ্য কী ছিল?

উত্তর : চোল শাসনকালে ‘নগরম’ নামে একটি পরিষদ গঠন করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল-

1. ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা করা।

2. বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা করা।

৩.৪ ব্রহ্মদেয় ব্যবস্থা বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: দক্ষিণ ভারতে, মূলত চোল শাসনকালে কৃষিজমির পরিমাণ বাড়ানোর জন্য ব্রাহ্মণদের অনেক সময় জমি দান করা হত। তারা অনাবাদী জমি এবং জঙ্গল পরিষ্কার করে বসতি তৈরি করতেন। ব্রাহ্মণদের কিছু জমি দেওয়া হত, যার কর নেওয়া হত না। এই জমি দানের ব্যবস্থাকে ব্রহ্মদেয় ব্যবস্থা বলা হতো।

৩.৫০ পাল-সেন যুগে বাংলার গৃহপালিত ও বন্যপ্রাণীর নাম উল্লেখ করো।

উত্তর: পাল-সেন যুগে বাংলার গৃহপালিত ও বন্যপ্রাণীর মধ্যে ছিল গোরু, বলদ, ছাগল, হাঁস, মুরগি, পায়রা, কাক, কোকিল, নানা জলচর পাখি, ঘোড়া, উট, হাতি, বাঘ, বুনো মোষ, বানর, হরিণ, শূকর, সাপ ইত্যাদি। ঘোড়া এবং উট বাংলার বাইরে থেকে এসেছিল।

৩.৬ পাল-সেন যুগে বাংলায় কী কী শিল্প গড়ে উঠেছিল?

উত্তর: পাল-সেনযুগে বাংলায় যে যে শিল্প গড়ে উঠেছিল, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

1. কার্পাস বস্ত্র শিল্প: শিল্পদ্রব্যের মধ্যে কার্পাস বস্ত্র ছিল প্রধান সামগ্রী। বাংলার সূক্ষ্ম সুতির কাপড়ের খ্যাতি দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।

2. হস্তশিল্প : হস্তশিল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কাঠ এবং ধাতুর তৈরি দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিস ও বিভিন্ন ধরনের গয়না। ঘর-বাড়ি মন্দির, পালকি, গোরুর গাড়ি, নৌকা ইত্যাদি তৈরিতে কাঠের ব্যাপক ব্যবহার ছিল। যা থেকে বোঝা যায় এই যুগে কাষ্ঠশিল্পীরাও সমাজে বিশেষ গুরুত্ব পেতেন।

৩.৭ নির্বাণ কী?

উত্তর: ‘নির্বাণ’ হল মুক্তিলাভ। বৌদ্ধ ধর্মমতে নির্বাণ বা মুক্তিলাভ করলে মানুষকে বারবার জন্মাতে হবে না।

• হীনযান পন্থী অশ্বঘোষের মতে, প্রদীপের তেল ফুরিয়ে গেলে যেমন তার শিখা নিভে যায়, তেমনি জীবনে ক্লেশ বা দুঃখের অবসান হলে চিরতরে মুক্তি বা নির্বাণ লাভ হয়।

• মহাযানপন্থীরা মনে করেন যে, নির্বাণ হল এমন একটা অবস্থা যেখানে কোনো কিছুই নেই।

৩.৮ চর্যাপদ কেন পাল আমলের বাংলার সামাজিক ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়? (পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন)

উত্তর: চর্যাপদ হল খ্রিস্টীয় অষ্টম শতক থেকে দ্বাদশ শতকে লেখা বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের কবিতা ও গানের সংকলন। এই চর্যাপদগুলি স্থানীয় ভাষায় লেখা হত।

• চর্যাপদের মধ্য দিয়ে পাল আমলের বাংলার পরিবেশ এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ছবি ফুটে ওঠে। তাই চর্যাপদগুলিকে পাল আমলের বাংলার সামাজিক ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

৩.৯ পাল রাজাদের বৌদ্ধধর্মের প্রতি অনুরাগের প্রভাব বাংলার সংস্কৃতিতে কীভাবে পড়েছিল বলে তোমার মনে হয়, তা বিশ্লেষণ করো। (পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন)

উত্তর: পাল রাজারা বৌদ্ধধর্মের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। বাংলার শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিতে তার বিশেষ প্রভাব পড়েছিল।

• এই যুগে স্থানীয় ভাষায় সিদ্ধাচার্যরা চর্যাপদ লিখতে শুরু করেছিলেন।

• বৌদ্ধ দার্শনিকদের জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল একাধিক বৌদ্ধবিহার যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল নালন্দা, বিক্রমশীল, সোমপুরী ইত্যাদি। পালরাজাদের সমর্থনে ও বৌদ্ধ

আচার্য এবং ছাত্রদের উৎসাহে এই বিহারগুলি সেকালের শিক্ষা-দীক্ষায় বড়ো ভূমিকা নিয়েছিল।

• এই যুগের শিল্প-সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও বৌদ্ধ প্রভাব লক্ষ করা যায়। পাল রাজত্বকালে বহু বৌদ্ধ স্তূপ নির্মিত হয়েছিল।

৩.১০ পালযুগের প্রধান শিক্ষাকেন্দ্র কোনগুলি? এখানে কারা শিক্ষা প্রদান করতেন? (বাঁকুড়া জেলা স্কুল)

উত্তর: পালযুগের প্রধান শিক্ষাকেন্দ্রগুলি ছিল আজকের বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশে ছড়িয়ে থাকা বৌদ্ধবিহারগুলি। নালন্দা, ওদন্তপুরী (নালন্দার কাছে), বিক্রমশীল (ভাগলপুরের কাছে), সোমপুরী (রাজশাহী জেলায় পাহাড়পুরে), জগদ্দল (উত্তরবঙ্গে), বিক্রমপুরী (ঢাকা জেলা) প্রভৃতি বিহারগুলি ছিল উল্লেখযোগ্য।

• খ্রিস্টীয় অষ্টম-নবম শতকে শান্তরক্ষিত, শান্তিদেব, কম্বলপাদ ও শবরীপাদ এবং দশম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান (অতীশ), গোরক্ষনাথ ও কাহ্নপাদ প্রমুখ আচার্যরা এখানে শিক্ষাদান করতেন।

৩.১১ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভারতীয় সংস্কৃতি বিস্তারের কী কী নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়?

উত্তর: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশে ভারতীয় সংস্কৃতি বিস্তারের নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়।

কম্বোডিয়া :

• কম্বোডিয়ায় ভারতের রামায়ণের ঘটনাবলি নিয়ে নৃত্য-গীত খুবই জনপ্রিয় ছিল।

• কম্বোডিয়ার অঙ্কোরাভাটে দ্বাদশ শতকে বিখ্যাত বিষুমন্দির তৈরি হয়।

• মন্দিরের গায়ে রামায়ণ ও মহাভারতের বিভিন্ন গল্প গাথা খোদাই করা হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়া:

• ইন্দোনেশিয়ার বোরোবোদুরের বৌদ্ধমন্দির খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। এটি ছিল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বৌদ্ধকেন্দ্র।

Long Question Answer

২। নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে তার নীচের কোন্ ব্যাখ্যাটি তোমার সবচাইতে মানানসই বলে মনে হয়?

(ক) বিবৃতি: বাংলার অর্থনীতি পাল-সেন যুগে কৃষিনির্ভর হয়ে পড়েছিল।

ব্যাখ্যা-১: পাল ও সেন যুগে বাংলার মাটি আগের থেকে বেশি উর্বর হয়ে গিয়েছিল।

ব্যাখ্যা-২: পাল ও সেন যুগে ভারতের পশ্চিম দিকের সাগরে আরব বণিকদের দাপট বেড়ে গিয়েছিল।

ব্যাখ্যা-৩: পাল সেন যুগে রাজারা কৃষকদের উৎপন্ন ফসলের উপর কর নিতেন।।

উত্তর ব্যাখ্যা-২: পাল ও সেন যুগে ভারতের পশ্চিম দিকের সাগরে আরব বণিকদের দাপট বেড়ে গিয়েছিল।

(খ) বিবৃতি: দক্ষিণ ভারতে মন্দির ঘিরে লোকালয় ও বসবাস তৈরি হয়েছিল।

ব্যাখ্যা-১: রাজা ও অভিজাতরা মন্দিরকে নিষ্কর জমি দান করতেন।

ব্যাখ্যা-২: নদী থেকে খাল কেটে সেচব্যবস্থার উন্নতি করা হয়েছিল।

ব্যাখ্যা-৩: দক্ষিণ ভারতে রাজারা অনেক মন্দির তৈরি করেছিলেন।

উত্তর: ব্যাখ্যা ১: রাজা ও অভিজাতরা মন্দিরকে নিষ্কর জমি দান করতেন।

(গ) বিবৃতি: সেন যুগে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার ও প্রসার কমে গিয়েছিল

ব্যাখ্যা-১: সেন রাজারা বৌদ্ধ ছিলেন

ব্যাখ্যা-২: সেন রাজারা ব্রাহ্মণ্য ধর্মকেই প্রাধান্য দিতেন

ব্যাখ্যা-৩: সমাজে শূদ্রদের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল

উত্তর: ব্যাখ্যা ২: সেন রাজারা ব্রাহ্মণ্য ধর্মকেই প্রাধান্য দিতেন।

৩। সংক্ষেপে (৩০-৫০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাওত্ত্ব

(ক) দক্ষিণ ভারতে খ্রিস্টীয় নবম থেকে একাদশ শতকের মধ্যে বাণিজ্যের উন্নতি কেন ঘটেছিল?

উত্তর ভূমিকা: খ্রিস্টীয় নবম থেকে একাদশ শতকের মধ্যে দক্ষিণ ভারতে বাণিজ্যের উন্নতি ঘটেছিল। এই সময়ে দক্ষিণ ভারতে বাণিজ্যের উন্নতির কারণগুলি ছিল-

1. চেট্টি বা বণিকদের ভূমিকা: এই সময় চেট্টি বা বণিকরা পণ্য সাজিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করতেন। যার ফলে ব্যাবসাবাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটে।

2. বণিক ও কারিগর সংঘ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ এবং বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলার জন্য ‘নগরম’ নামে একটি পরিষদ তৈরি হয়েছিল। এছাড়াও বিভিন্ন বণিক সংগঠন ও সময়বায়ও গড়ে উঠেছিল। ব্যাবসাবাণিজ্যের উন্নতির ক্ষেত্রে যাদের বিশেষ ভূমিকা ছিল।

3. বর্হিবাণিজ্য: দক্ষিণ ভারতের চোল রাজারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ফলে সেইসব দেশের বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ভারতীয় বণিকদের ব্যাবসাবাণিজ্য বেড়েছিল।

4. মন্দিরের অংশগ্রহণ: এই সময় দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন মন্দিরগুলিও ব্যবসায়িক কাজে অংশগ্রহণ করত। যার ফলে ব্যাবসাবাণিজ্যের প্রসার ঘটে।

(খ) পাল ও সেন যুগে বাংলায় কী কী ফসল উৎপন্ন হত? সেই ফসলগুলির কোন্ কোল্টিন্ট এখনও চাষ করা হয়?

উত্তর ভূমিকা: পাল ও সেন যুগে বাংলার অর্থনীতির অন্যতম মূল ভিত্তি ছিল কৃষিকার্য। এই যুগে বিভিন্ন ধরনের ফসল, সবজি চাষ হত। যেমন-

1. এ যুগে বাংলার প্রধান ফসল ছিল ধান, তাই ভাতই ছিল মানুষের প্রধান খাদ্য।

2. এ যুগের আর একটি প্রধান ফসল ছিল সরষে, যা প্রচুর পরিমাণে চাষ হত।

3. বেগুন, লাউ, কুমড়ো, ঝিঙে, কাঁকরোল, ডুমুর, কচু ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি এযুগে উৎপন্ন হত।

4. নানারকম ফল, যেমন-আম, কাঁঠাল, কলা, ডালিম, খেজুর, নারিকেল ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে সেই সময় বাংলায় উৎপন্ন হত।

5. এছাড়া উৎপন্ন হত কার্পাস বা তুলো, পান, সুপুরি, এলাচ, মহুয়া ইত্যাদি।

• পাল-সেন যুগে যেসব ফসল বাংলায় চাষ হত সেই সব ফসল এখনও চাষ করা হয়। বর্তমান প্রধান প্রধান ফসলগুলি হলা- ধান, সরষে, পাট, বেগুন, লাউ, কুমড়ো, ঝিঙে, কচু, কাঁকরোল প্রভৃতি।

(গ) রাজা লক্ষ্মণ সেনের রাজসভার সাহিত্য চর্চার পরিচয় দাও। 

উত্তর ভূমিকা: বাংলার সেন বংশের রাজা লক্ষ্মণ সেন ছিলেন সাহিত্যানুরাগী। অনেক কবি ও সাহিত্যিক তাঁর রাজসভা অলংকৃত করতেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন-

1. কবি জয়দেব: লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি জয়দেব ছিলেন বিখ্যাত সাহিত্যিক। তাঁর রচিত কাব্যের নাম হলো ‘গীতগোবিন্দ’। এই কাব্যের বিষয় ছিল রাধাকৃষ্ণের প্রেমের কাহিনি।

2. ধোয়ী: তাঁর রাজসভার আর এক কবি ধোয়ী লিখেছিলেন ‘পবনদূত’ কাব্য।

3. পঞ্চরত্ন: জয়দেব ও ধোয়ী সহ আরও তিনজন কবি গোবর্ধন, উমাপতি ধর এবং শরণ লক্ষ্মণ সেনের সভা অলংকৃত করেছিলেন। এই পাঁচজন কবিকে একত্রে ‘পঞ্চরত্ন’ বলা হয়।

4. এছাড়াও লক্ষ্মণ সেনের মন্ত্রী হলায়ুধ বৈদিক নিয়ম বিষয়ে ‘ব্রাহ্মণ সর্বস্ব’ নামে একটি বই লিখেছিলেন। লক্ষ্মণ সেন নিজেও পিতার অসমাপ্ত ‘অদ্ভুতসাগর’ বইটি সমাপ্ত করেন।

(ঘ) পাল শাসনের তুলনায় সেন শাসন কেন বাংলায় কম দিন স্থায়ী হয়েছিল?

উত্তর: ভূমিকা: বাংলায় পাল শাসন চারশো বছরেরও বেশি স্থায়ী হয়েছিল। অপরদিকে সেন বংশের শাসন মাত্র একশো বছরের কিছু বেশি সময় স্থায়ী হয়েছিল। তার কারণগুলি হল-

1. জনসমর্থন: বিভিন্ন সামন্তরাজাদের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে গোপাল বাংলার সিংহাসনে বসেছিলেন। তাই পাল রাজাদের রাজা হওয়ার পিছনে জনসমর্থন ছিল। কিন্তু সেন বংশের রাজা বিজয়সেন এমন কোনো জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেননি।

2. গ্রহণযোগ্যতা: পাল শাসকরা যেভাবে বাংলার সমাজে

নিজেদের শাসনকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পেরেছিলেন, সেন শাসকরা

জনগণের কাছে সেভাবে নিজেদের গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারেননি। 3. অন্যান্য বিষয়: শিক্ষাদীক্ষায়, ধর্মচর্চায়, শিল্পকলায় পাল রাজারা সেন রাজাদের থেকে অনেক এগিয়েছিল।

৪। বিশদে (১০০-১২০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও:

(ক) ভারতের সামন্ত ব্যবস্থার ছবি আঁকতে গেলে কেন তা একখানা ত্রিভুজের মতো দেখায়? এই ব্যবস্থায় সামন্তরা কীভাবে জীবিকানির্বাহ করত।

উত্তরঃ ভূমিকা: মধ্যযুগে ভারতে সামন্তব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। এই সামন্তব্যবস্থা ছিল অনেকটা ত্রিভুজের মতো।

• ত্রিভুজের সঙ্গে তুলনা ত্রিভুজের নীচের দিকে অংশটি চওড়া হয়। নীচের চওড়া অংশটি ওপরের দিকে সরু হয়ে উঠে একটি বিন্দুতে মিলিত হয়। একই রকমভাবে ভারতের সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় সবার উপরে থাকেন রাজা। তার নীচে থাকতেন রাজার অনুগ্রহভাজন কয়েকজন ‘মহাসামন্ত’। মহাসামন্তরা আবার তাঁদের জমি কয়েকজন সামন্তের মধ্যে ভাগ করে দিতেন। তাঁরা ছিলেন ‘উপসামন্ত’। এইভাবে ধাপে ধাপে নীচের দিকে নামলে একেবারে শেষ স্তরে থাকত সবথেকে শোষিত শ্রেণি ছিল এই কৃষক সম্প্রদায়।

• সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো সামন্ত পরিশ্রম করে ফসল উৎপাদন করতেন না। প্রকৃতপক্ষে, সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজা ছিলেন রাষ্টের সমস্ত জমির মালিক। তিনি তাঁর রাজকর্মচারীদের নগদ বেতনের পরিবর্তে অনেক সময় জমি দান করতেন। এই সমস্ত জমিতে অন্যের শ্রমে উৎপাদিত দ্রব্য বা রাজস্ব থেকে সামন্তপ্রভুরা নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করতেন। কৃষকদের কাছ থেকে ছোটো সামন্ত কত রাজস্ব আদায় করতেন তিনি তার কিছু অংশ নি মাঝারি সামন্তরা বাকি অংশ উ সমস্তকে দিতেন। তার ওপরের মাঝারি সামন্তরাও তাদের নিজেদের অংশ রেখে বাকি অংশ রাজাকে দিতেন।

গ)  পাল আমলে বাংলার শিল্প ও স্থাপত্যের কী পরিচয় পাওয়া যায় তা লেখো।

উত্তর: ভূমিকা: শিল্পের ইতিহাসে বাংলার পাল আমল বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছে। স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও চিত্রকলা সবক্ষেত্রেই পাল আমলের অনেক নিদর্শন পাওয়া যায়।

1. প্রাচ্য শিল্পরীতি: পালযুগের শিল্পরীতিকে প্রাচ্য শিল্পরীতি বলা হয়। এই রীতির পূর্বসূরি ছিল গুপ্তযুগের শিল্পকলা। পাল আমলের স্থাপত্যের মধ্যে ছিল স্তূপ, বিহার এবং মন্দির।

2. স্তূপ : প্রাচীন ভারতে বৌদ্ধ এবং জৈনদের মধ্যে স্তূপ নির্মাণের রীতি ছিল। পাল আমলেও স্তূপ নির্মাণের রীতি লক্ষ করা যায়। এই সময়ের স্তূপগুলি দেখতে ছিল শিখরের মতো। তবে স্তূপ নির্মাণে বাংলায় কোনো মৌলিক ভাবনার বিকাশ লক্ষ করা যায়নি।

এযুগে নির্মিত স্তূপগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

(i) বাংলাদেশের ঢাকা জেলার আসরফপুর, (ii) রাজশাহীর

পাহাড়পুর, (iii) চট্টগ্রাম এবং (iv) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার ভরতপুর গ্রামের বৌদ্ধস্তূপ।

3. বৌদ্ধবিহার: পাল আমলে নির্মিত বৌদ্ধবিহারগুলি ছিল বাংলার স্থাপত্যশিল্পের উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। এই বিহারগুলি ছিল

বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বাসস্থান এবং বৌদ্ধ জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র। পাল আমলে উল্লেখযোগ্য বিহারগুলি হল পাহাড়পুরের সোমপুরী, ওদন্তপুরী, এবং বিক্রমশীল মহাবিহার।

4. মন্দির: পাল আমলে মন্দির নির্মাণে স্থানীয় পোড়ামাটির ইট এবং কাদার গাঁথুনি ব্যবহার করা হত। মন্দিরের মধ্যে পাহাড়পুরের সোমপুরী বিহারের মন্দির ছিল উল্লেখযোগ্য। চারকোণা এই মন্দিরে গর্ভগৃহ, প্রদক্ষিণ পথ, মণ্ডপ, সুউচ্চ স্তম্ভ ইত্যাদি ছিল। প্রাপ্ত মূল মন্দিরের গায়ে, পাথরের ফলকের মধ্যে স্থানীয় রীতির প্রভাব স্পষ্ট। ফলকগুলিতে রাধাকৃষ্ণ, যমুনা, বলরাম, শিব, বুদ্ধ, অবলোকিতেশ্বরের মূর্তি আছে।

উপসংহার: পাল আমলের এই সমস্ত স্থাপত্য, ভাস্কর্যগুলি প্রকৃতির কোপে এবং মানুষের রোষে অধিকাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে।

(ঘ) পাল ও সেন যুগে সমাজ ও ধর্মের পরিচয় দাও।

উত্তর: ভূমিকা: পাল ও সেন যুগের বাংলার সমাজ ছিল সহজ, সরল ও অনাড়ম্বর। সমাজে সাধারণ মানুষের জীবন ছিল মোটামুটি স্বচ্ছল। তবে ভূমিহীন ব্যক্তি ও শ্রমিকের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল। না।

• পালযুগে বাংলার সমাজ পালযুগের সময় সমাজে বর্ণব্যবস্থা থাকলেও তার কঠোরতা ছিল না।

• সেনযুগে বাংলার সমাজ সেনযুগের ব্রাহ্মণরাই সমাজপতি হিসাবে সুবিধা ভোগ করত। আবার ব্রাহ্মণদের মধ্যে একাধিক উপবিভাগ ছিল। অ-ব্রাহ্মণদের সবাইকে ‘সংকর’ বা ‘শূদ্র’ হিসেব ধরা হত। ব্রাহ্মণরা অ-ব্রাহ্মণদের কাজ করতে পারত। কিন্তু অ-ব্রাহ্মণরা ব্রাহ্মণদের কাজগুলি করতে পারত না। এই যুগে আদিবাসী-উপজাতি মানুষদের কথাও জানা যায়। এইসময় সমাজে বর্ণব্যবস্থা কঠোর ও অনমনীয় হয়ে পড়েছিল।

• পালযুগের ধর্ম পাল রাজারা ছিলেন বৌদ্ধধর্মের অনুরাগী। পালযুগে মহাযান বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে অন্যান্য দার্শনিক চিন্তাধারা মিলে গিয়ে বজ্রযান, তন্ত্রযান ও তান্ত্রিক বৌদ্ধমতের জন্ম হয়েছিল। এই মতের নেতাদের বলা হত সিদ্ধাচার্য। এছাড়া সহজযান ও কালচক্র যান নামে আরো দু-রকমের বৌদ্ধ ধর্মমতের জন্ম হয় এই সময়ে।

• সেনযুগের ধর্ম: সেন রাজারা ব্রাহ্মণ্য ধর্মকেই প্রাধান্য দিতেন। ব্রাহ্মণ্যধর্মের মধ্যে বৈদিক ধর্ম ও পৌরাণিক ধর্ম এই দুইয়ের মিশ্রণ ঘটেছিল। ইন্দ্র, অগ্নি, কুবের, সূর্য, বৃহস্পতি, গঙ্গা, যমুনা, মাতৃকা, শিব, বিছুর পুজো করা হত। সেন রাজাদের মধ্যে লক্ষ্মণ সেন ছিলেন বৈয়ব এবং তার পূর্বসূরিরা ছিলেন শৈব।

কল্পনা করে লেখো (১০০-১৫০টি শব্দের মধ্যে)

(ক) যদি তুমি খ্রিস্টীয় দশক শতকের বাংলার একজন কৃষক হও, তাহলে তোমার সারাদিন কেমন কাটবে তা লেখো।

উত্তর: খ্রিস্টীয় দশম শতকের আমি একজন সাধারণ কৃষক।

আমার সারাদিন:

• সকালবেলা: সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে প্রথমে যাব ধানের খেতে কাজ করতে। ধানের বীজ থেকে সবে চারা বেরিয়েছে। সেগুলোতে জল দিয়ে পাশের খেতে যাব, সেখানে বেগুন, লাউ, কুমড়ো, ঝিঙে প্রভৃতি কিছু প্রয়োজনীয় সবজির চাষ করেছি। সেই জমির আগাছাগুলো পরিষ্কার করে, জল দিয়ে কিছু সবজি বাড়ির জন্য তুলে বাড়ি ফিরব।

• দুপুরবেলা: দুপুরবেলা স্নান করে জমি থেকে তুলে আনা সবজির তরকারি দিয়ে গরম গরম ভাত খেয়ে একটু বিশ্রাম নেবো। গ্রামে রাজার লোক কর নিতে আসবে, তার জন্য যা ফসল ফলেছে তার অংশ (এক-ষষ্ঠাংশ) আলাদা করে রাখব। আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য রাজাকে আলাদা কর দিতে হবে। সব হিসাব করে রাখব।

• বিকেল বেলা: বিকেলবেলা হাটে যাব। ওখান থেকে কড়ি দিয়ে আখের গুড়, দুধ, লবণ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে আনব।

বাড়িতে ফিরে বাড়ির গোরু, ছাগল, হাঁস, মুরগিগুলো বাড়িতে ফিরেছে কিনা একবার দেখে নেব।

• রাত্রিবেলা: রাত্রিবেলা সবাই একসাথে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ব।

৪.১ খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতকে দক্ষিণ ভারতের মন্দিরগুলি সমাজ ও অর্থনীতিতে কী ভূমিকা রেখেছিল?

উত্তর: ভূমিকা: দক্ষিণ ভারতের রাজশক্তিগুলি বহু মন্দির তৈরি করেছিল। দক্ষিণ ভারতের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এই মন্দিরগুলির ভূমিকা ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

1. লোকালয় প্রতিষ্ঠা: মন্দির ঘিরে লোকালয় এবং শিল্পীদের

বসবাস গড়ে উঠত। পুরোহিত, মালাকার, রাঁধুনি, গায়ক, নর্তক-নর্তকী প্রমুখ মন্দির চত্বরে বসবাস করতেন।

2. নিষ্কর জমি প্রদান: মন্দির কর্তৃপক্ষকে রাজা, ব্যবসায়ী ও অভিজাতরা নিষ্কর জমি দান করতেন। সেই জমির ফসল মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের জীবনযাপনের জন্য লেগে যেত।

৪.২  চোল শাসনব্যবস্থায় ‘উর’ ও ‘নাড়ু’ কী? এদের কাজ কী ছিল?

উত্তর: ভূমিকা: দক্ষিণভারতে চোলদের শাসনব্যবস্থায় দুটি স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনমূলক সংস্থা হল ‘উর’ ও ‘নাড়ু’।

• উর: চোল শাসনকালে কৃষকদের বসতিকে ঘিরে গড়ে ওঠা গ্রামকে শাসন করত গ্রাম-পরিষদ বা উর।

• নাড়ু: গ্রাম পরিষদ বা উর শাসিত কয়েকটি গ্রামকে নিয়ে গঠিত হত নাড়ু।

• ‘উর’ ও ‘নাড়ু’র কাজ: উর ও নাড়ুর কাজ ছিল-1. স্থানীয় অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসন পরিচালনা করা। 2. বিচার করা। 3. রাজস্ব বা কর সংগ্রহ করা।

৪.৩ খ্রিস্টীয় সপ্তম-দ্বাদশ শতকে দক্ষিণ ভারতে করব্যবস্থা কীরকম ছিল? কীভাবে রাজস্ব আদায় করা হত?

উত্তর: ভূমিকা: খ্রিস্টীয় সপ্তম-দ্বাদশ শতাব্দীতে রাজারা বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজস্ব বা কর আদায় করতেন। সেগুলি হল-

1. উৎপাদনভিত্তিক রাজস্ব কৃষকদের কাছ থেকে ভূমিরাজস্ব আদায় করা হত। এছাড়া পশুপালক ও কারিগরদের কাছ থেকেও রাজস্ব আদায় করা হত।

2. বাণিজ্য কর: ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কর হিসেবে আদায় করা হত।

3. অন্যান্য কর: অনেক সময় রাজারা, যুদ্ধ, বাঁধ নির্মাণ, মন্দির নির্মাণ ও অন্যান্য সংস্কারমূলক কাজের জন্য অতিরিক্ত কর আদায় করতেন।

• রাজস্ব আদায়: রাজা স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবারগুলোর হাতে খাজনা সংগ্রহের দায়িত্ব দিতেন। খাজনার একাংশ ওই পরিবারগুলি

নিজেদের জন্য রেখে, বাকি অংশ রাজকোশাগারে জমা দিত।

৪.৪ পাল ও সেন যুগের করব্যবস্থা কেমন ছিল?

উত্তর: ভূমিকা: পাল ও সেন যুগে রাজারা বিভিন্ন ধরনের কর সংগ্রহ করতেন।

1. কৃষি কর: রাজারা উৎপন্ন ফসলের এক-ষষ্ঠাংশ (১/৬ ভাগ) কৃষকদের কাছ থেকে কর নিতেন। তাঁরা নিজেদের ভোগের জন্য ও প্রজাদের কাছ থেকে কর হিসাবে আদায় করতেন।

ফুল, ফল, কাঠ 2. বাণিজ্য কর: বণিকরা তাদের ব্যাবসাবাণিজ্য করার জন্য রাজাকে কর দিত।

3. অন্যান্য কর: এছাড়াও প্রজারা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজাকে কর দিত। সমগ্র গ্রামের উপরেও কর দিতে হত গ্রামবাসীদের। হাট ও খেয়াঘাটের উপরে কর চাপানো হত।

৪.৫ পাল ও সেন যুগে কী কী ফসল বাংলায় উৎপন্ন হত? সেই ফসলগুলির কোন্ কোল্টি এখনও চাষ করা হয়?

উত্তর: ভূমিকা: পাল ও সেন যুগে বাংলার অর্থনীতির অন্যতম মূল ভিত্তি ছিল কৃষিকার্য। এই যুগে বিভিন্ন ধরনের ফসল, সবজি চাষ

হত। যেমন-

1. এ যুগে বাংলার প্রধান ফসল ছিল ধান, তাই ভাতই ছিল মানুষের প্রধান খাদ্য।

2. এ যুগের আর একটি প্রধান ফসল ছিল সরষে, যা প্রচুর পরিমাণে চাষ হত।

3. বেগুন, লাউ, কুমড়ো, ঝিঙে, কাঁকরোল, ডুমুর, কচু ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি এযুগে উৎপন্ন হতো।

4. নানারকম ফল, যেমন-আম, কাঁঠাল, কলা, ডালিম, খেজুর, নারিকেল ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে সেই সময় বাংলায় উৎপন্ন হত।

5. এছাড়া উৎপন্ন হত কার্পাস বা তুলো, পান, সুপুরি, এলাচ, মহুয়া ইত্যাদি।

• পাল-সেন যুগে যে সব ফসল বাংলায় চাষ হত সেই সব ফসল এখনও চাষ করা হয়। বর্তমান প্রধান প্রধান ফসলগুলি হল- ধান, সরষে, পাট, বেগুন, লাউ, কুমড়ো, ঝিঙে, কচু, কাঁকরোল প্রভৃতি।

৪.৬ পাল-সেন যুগে বাঙালির খাদ্যাভ্যাস কীরূপ ছিল?

উত্তর: ভূমিকা: সমকালীন প্রাচীন কাব্য থেকে বাঙালির খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জানা যায়।

1. প্রধান খাদ্য: পাল ও সেন যুগে বাঙালির প্রধান খাদ্য ছিল ভাত।

2. প্রাচীন কাব্যে বর্ণনা: প্রাচীন কাব্যে খাবারের যে বর্ণনা আছে তা হল গরম ভাতে গাওয়া ঘি, তার সঙ্গে মৌরলা মাছ, নালতে (পাট) শাক, সর-পড়া দুধ আর পাকা কলা।

3. গরিবদের খাবার: গরিব লোকদের খাদ্য তালিকায় নানা ধরনের শাক-সবজি থাকত।

4. বিভিন্ন ধরনের সবজি: প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন ধরনের সবজি বাঙালিদের খাদ্যতালিকায় থাকত, যেমন-বেগুন, লাউ, কুমড়ো, ঝিঙে, কাঁকরোল, ডুমুর, কচু ইত্যাদি।

5. বিভিন্ন ধরনের মাছ: বুই, পুঁটি, মৌরলা, শুকনো মাছ, শোল, ইলিশ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের মাছ খাওয়ার অভ্যেস বাঙালিদের ছিল।

6. বিভিন্ন রকম মাংস সেই সময় অনেক বাঙালি হরিণ, ছাগল, নানা রকমের পাখি ও কচ্ছপের মাংস, কাঁকড়া, শামুক ইত্যাদি খেত।

7. আলু ও ডাল: বাঙালিদের খাদ্য তালিকায় আলু ও ডাল এসেছে অনেক পরে। বাঙালিরা পোর্তুগিজদের কাছ থেকে আলু এবং উত্তর ভারতের মানুষদের কাছ থেকে ডাল খেতে শিখেছে।

৪. প্রতিদিনের খাদ্যবস্তু: বাঙালিদের প্রতিদিনের খাদ্যবস্তুর তালিকায় ছিল আখের গুড়, দুধ এবং তার থেকে তৈরি দই, পায়েস, ক্ষীর প্রভৃতি।

9. পানীয়: মহুয়া এবং আখ থেকে তৈরি পানীয় সেই সময়ে বাঙালি সমাজে চালু ছিল।

৪.৭ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কি একমুখী ছিল? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও।

উত্তর: ভূমিকা: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সাথে ভারতবর্ষের সম্পর্ক একমুখী ছিল না। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি ভারত থেকে যেমন অনেক কিছু গ্রহণ করেছিল, তেমনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি থেকে ভারতও অনেক কিছু শিখেছিল।

• ভারত থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ভারতীয় শিল্প, ভাষা এবং সাহিত্যের চর্চা ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। এছাড়া ভারত থেকে রামায়ণ-মহাভারতের ঘটনাবলি, নৃত্য-সংগীত, হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম প্রভৃতি বিষয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া শিক্ষালাভ করেছিল।

• দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ভারত: ভারত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থেকে শিখেছিল পান পাতা ও অন্যান্য বেশ কিছু ফসল কীভাবে ফলাতে হয় তার কৌশল।

Fil In The Blanks

২.১ সামন্ত সমাজের কাঠামো ছিল,——এর মতো। (ত্রিভুজ/চতুর্ভুজ/পঞ্চভুজ)

উত্তর: ত্রিভুজ।

২.২—  (ষষ্ঠ/সপ্তম/অষ্টম) শতক থেকে উত্তর ভারতের বেশ কিছু জায়গায় ব্যবসাবাণিজ্যের মন্দা দেখা দিয়েছিল। 

উত্তর: সপ্তম।

 ২.৩ —-(ফা হিয়েন/ইৎ সিং/সুয়ান জাং) সপ্তম শতকে থানেশ্বর, কনৌজ ও বারাণসীতে ব্যাবসায়িক কাজকর্মের রমরমার কথা উল্লেখ করেছেন।

উত্তর: সুয়ান জাং।

২.৪ গঙ্গাইকোল্ডচোল পুরমে চোল শাসক — (বিজয়ালয়/ রাজারাজ/রাজেন্দ্র) একটি সুন্দর মন্দির নির্মাণ করেন।

উত্তর: রাজেন্দ্র।

২.৫ তামিলনাড়ুর — (কৃষ্ণা/কাবেরী/গোদাবরী) নদী থেকে খাল কেটে সেচব্যবস্থার উন্নতি করা হয়।

উত্তর: কাবেরী।

২.৬ চোল রাজ্যের প্রধান ছিলেন—- (রাজা/মন্ত্রী/গ্রামণী)

উত্তর: রাজা।

২.৭ চোলদের গ্রাম পরিষদকে বলা হত — (উর/নাড়ু মণ্ডলম)।

উত্তর: উর।

২.৮ ‘নাড়ু’ গঠিত হতো কয়েকটি নিয়ে/পরিবারকে নিয়ে)। (শহরকে নিয়ে/গ্রামকে

উত্তর: গ্রামকে নিয়ে।

২.৯ কাবেরী উপত্যকায় (ব্রাহ্মণ/ক্ষত্রিয়/বণিক) সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে বহু নতুন নতুন গ্রামের পত্তন হয়েছিল।

উত্তর: ব্রাহ্মণ।

২.১০ বণিক সংগঠনগুলি বিভিন্ন মন্দিরকে জমি দান করতেন। তার বর্ণনা দক্ষিণ ভারতে (শিলালেখগুলিতে/তাম্রলেখ গুলিতে/বিভিন্ন গ্রন্থে) পাওয়া যায়।

উত্তর: তাম্রলেখগুলিতে।

২.১১ বাঙালিরা আলু খেতে শিখেছে।— (ইংরেজ/ফরাসি/ পোর্তুগিজদের) কাছ থেকে।

উত্তর: পোর্তুগিজদের।

২.১২ রামচরিতের কাহিনি,—– গল্প অনুসারে লেখা। (রামায়ণের/মহাভারতের/পুরাণের)

উত্তর: রামায়ণের।

২.১৩ রামচরিতের ভাষা ছিল,—– (বাংলা/পালি/সংস্কৃত)।

উত্তর: সংস্কৃত।

২.১৪ পাল রাজারা ছিলেন,—–(জৈন/বৌদ্ধ/হিন্দু) ধর্মের অনুরাগী।

উত্তর: বৌদ্ধ।

২.১৫ বজ্রযান মতের নেতাদের বলা হত — (সিদ্ধাচার্য/ তীর্থঙ্কর/খলিফা)।

উত্তর: সিদ্ধাচার্য।

২.১৬ বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যরা চর্যাপদ লিখতেন — (সংস্কৃত ভাষায়/স্থানীয় ভাষায়/বাংলা ভাষায়)।

উত্তর: স্থানীয় ভাষায়।

২.১৭ বৌদ্ধ ধর্মমতে ‘নির্বাণ’ শব্দের অর্থ হল — (ভক্তি/মুক্তি/ শক্তি)।

উত্তর: মুক্তি।

২.১৮ — (মৌর্য/পাল/গুপ্ত) তৈরি হয়েছিল। রাজাদের আমলে নালন্দা বৌদ্ধবিহার

উত্তর: গুপ্ত।

২.১৯ সুদূর সুমাত্রা দ্বীপের শাসক — (নালন্দা/বিক্রমশীল/ সোমপুরী) মহাবিহারের জন্য সম্পদ দান করেছিলেন।

উত্তর: নালন্দা।

২.২০ — (তিব্বত/চিন/কোরিয়া) দেশের ছাত্রদের শিক্ষাদানের জন্য নালন্দা বৌদ্ধবিহারে বিশেষ তহবিলের বন্দোবস্ত করাছিল।

উত্তর: চিন।

২.২১ বিক্রমশীল মহাবিহারের একজন অন্যতম মহাচার্য ছিলেন —(শীলরক্ষিত/শান্তরক্ষিত/দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান)।

উত্তর: দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান।

২.২২ পাল রাজত্বে তৈরি স্তূপগুলি দেখতে ছিল — (শিখরের মতো/গোলকের মতো/চতুর্ভুজের মতো) 

উত্তর: শিখরের মতো।

২.২৩ পাল যুগের বিখ্যাত শিল্পীরা হলেন — (চরক ও সুশ্রুত/ধীমান ও বীটপাল/জয়দেব ও ধোয়ী)।

উত্তর: ধীমান ও বীটপাল।

২.২৪ সেন যুগের রাজারা — (ব্রাহ্মণ্য/বৌদ্ধ/জৈন) ধর্মকেই প্রাধান দিতেন।

উত্তর: ব্রাহ্মণ্য।

২.২৫ ‘দানসাগর’ ও ‘অদ্ভুতসাগর’ বই দুটি লেখেন — (বল্লাল সেন/লক্ষ্মণ সেন/হলায়ুধ)।

উত্তর: বল্লাল সেন।

২.২৬ — (শীলরক্ষিত/শান্তরক্ষিত/অতীশ দীপঙ্কর)-এর বাড়ি ‘নাস্তিক পন্ডিতের ভিটা’ নামে পরিচিত।

উত্তর: অতীশ দীপঙ্কর।

২.২৭ অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে — বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেন। (হীনযান/মহাযান/বজ্রযান)

উত্তর: মহাযান।

২.২৮ — (ভারত মহাসাগরকে/বঙ্গোপসাগরকে/আরব সাগরকে) কেন্দ্র করে বাণিজ্য ও ধর্মপ্রচারের মাধ্যমে ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাংস্কৃতিক যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল।

উত্তর: ভারত মহাসাগরকে।

Ture And False

২.১ খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতকে উত্তর ভারতে ভালো মানের সোনা বা রুপোর মুদ্রার অভাব ছিল।

উত্তর: ঠিক।

২.২ অষ্টম-নবম শতকে যুদ্ধপটু উপজাতি নেতারা কোনো কোনো অঞ্চলে কর্তৃত্ব করত।

উত্তর: ঠিক।

২.৩ দক্ষিণ ভারতের মন্দিরগুলি শুধুমাত্র পুজোর জন্যই ব্যবহৃত হত।

উত্তর: ভুল।

সঠিক উত্তর: দক্ষিণ ভারতের মন্দিরগুলি শুধুমাত্র পুজোর জন্যই ব্যবহৃত হত না।

২.৪ দক্ষিণ ভারতে বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য পুকুর, বিল কাটা হতো।

উত্তর: ঠিক।

২.৫ দক্ষিণ ভারতে স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবারগুলোর হাতে খাজনা- সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হত।

উত্তর: ঠিক।

২.৬ পাল-সেন যুগে কৃষি, শিল্প এবং বাণিজ্যই ছিল বাংলার অর্থনীতির মূল ভিত্তি।

উত্তর: ঠিক।

২.৭ পাল-সেন যুগে বাংলার সূক্ষ্ম সুতির কাপড়ের খ্যাতি দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।

উত্তর: ঠিক।

২.৮ চক্রপাণিদত্তের চিকিৎসা-বিজ্ঞানের বইগুলো বাংলা ভাষায় লেখো।

উত্তর: ভুল।

সঠিক উত্তর: চক্রপাণি দত্তের চিকিৎসা-বিজ্ঞানের বইগুলো সংস্কৃত ভাষায় লেখা।

২.৯ সন্ধ্যাকর নন্দীর লেখা ‘রামচরিত’ কাব্যটি শুধুই বাল্মীকি-রামায়ণের পুনরাবৃত্তি।

উত্তর: ভুল।

সঠিক উত্তর: সন্ধ্যাকর নন্দীর লেখা ‘রামচরিত’ কাব্যটি শুধুই বাল্মীকি-রামায়ণের পুনরাবৃত্তি নয়।

২.১০ তান্ত্রিক বৌদ্ধমতে বিশ্বাসীরা গুরু এবং শিষ্যের মধ্যে গভীর যোগাযোগে বিশ্বাস করত।

উত্তর: ঠিক।

২.১১ পাল শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা এবং বিহারে শিক্ষা এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অবনতি ঘটেছিল।

উত্তর: ভুল।

সঠিক উত্তর: পাল শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা এবং বিহারে শিক্ষা এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটেছিল।

২.১২ পাল রাজাদের সমর্থনে ও বৌদ্ধ আচার্য এবং ছাত্রদের উৎসাহে বৌদ্ধবিহারগুলি শিক্ষাদীক্ষায় বড়ো ভূমিকা নিয়েছিল।

উত্তর: ঠিক।

২.১৩ মুঘলদের আক্রমণে নালন্দা মহাবিহারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল।

উত্তর: ভুল।

সঠিক উত্তর: তুর্কি অভিযানকারীদের আক্রমণে নালন্দা মহাবিহারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল।

২.১৪ পাল আমলে নির্মিত পোড়ামাটির শিল্প সামগ্রীগুলি ছিল স্থানীয় লোকায়ত শিল্পের প্রতীক।

উত্তর: ঠিক।

২.১৫ সেন রাজাদের আমলে স্থানীয় গ্রাম শাসনব্যবস্থার উন্নতি হয়েছিল।

উত্তর: ভুল।

সঠিক উত্তর: সেন রাজাদের আমলে স্থানীয় গ্রাম শাসনব্যবস্থার অবনতি হয়েছিল।

২.১৬ সেন আমলে রাজপরিবারে মহিলাদের গুরুত্ব বেড়েছিল।

উত্তর: ঠিক।

২.১৭ চারশো বছরেরও বেশি বাংলায় পাল শাসন স্থায়ী হয়েছিল।

উত্তর: ঠিক।

২.১৮ ইসলামীয় সংস্কৃতি ভারতবর্ষে আসার ফলে ভারতে জ্ঞানচর্চার লাভ হয়েছিল বেশি।

উত্তর: ঠিক।

২.১৯ তিব্বতের রাজা জ্ঞানপ্রভের অনুরোধে অতীশ দীপঙ্কর দুর্গম হিমালয় অতিক্রম করে তিব্বতে যান।

উত্তর: ঠিক।

২.২০ কম্বোডিয়ায় মহাভারতের ঘটনাবলি নিয়ে নৃত্য-সংগীত খুবই জনপ্রিয় ছিল।

উত্তর: ভুল।

সঠিক উত্তর: কম্বোডিয়ায় রামায়ণের ঘটনাবলি নিয়ে নৃত্য-সংগীত

২(গ) ‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখ

উত্তর: (A)-(3); (B)—(1); (C)——(4); (D)—(5); (E)—(2);

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *