Class 12 Chapter 2.3 Solution
মহুয়ার দেশ
1. MCQs Question Answer
২১. “আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক…”-
ক) বকুল ফুল
খ) মহুয়া ফুল ✔
গ) শিউলি ফুল
ঘ) এদের কোনোটিই নয়
২২. “মেঘ-মদির মহুয়ার দেশ” আছে-
ক) খুব, খুব কাছে
খ) অনেক, অনেক দূরে ✔
গ) নিবিড় অরণ্যে
ঘ) প্রান্তরের শেষে
২৩. মহুয়ার গন্ধ অবসান ঘটাবে
ক) বিষণ্ণতার
খ) উৎকণ্ঠার
গ) আনন্দের
ঘ) ক্লান্তির ✔
২৪. “গলিত সোনার মত উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ”ক এঁকে দেয়?
ক) ডুবন্ত সূর্য
খ) অলস সূর্য ✔
গ) উদীয়মান সূর্য
ঘ) দুপুরের সূর্য
২৫. “মাঝে মাঝে শুনি”- কবি মাঝে মাঝে কী শোনেন?
(ক) মাদলের শব্দ
(খ) কয়লাখনির শব্দ ✔
(গ) জলস্রোতের শব্দ
ঘ) বঙ্কিম নিশ্বাসের শব্দ
২৬) মহুয়া বনের ধারে আছে
ক) কয়লাখনি ✔
খ) সূর্যের দেশ
গ) অবসন্ন মানুষ
ঘ) জলস্রোত
২৭. কবি কয়লা খনির শব্দ শুনতে পান-
ক) শীতের সন্ধ্যায়
খ) নিবিড় অন্ধকারে ✔
গ) নির্জন দুপুরে
ঘ) শিশির ভেজা সকালে
২৮. “…কয়লার খনির/গভীর, বিশাল শব্দ,” হয়-
ক) সমুদ্রের ধারে
খ) পাহাড়ের প্রান্তে
গ) ঘুমহীন রাতে
ঘ) মহুয়া বনের ধারে ✔
২৯. ‘সবুজ সকাল’ কীসে ভেজা?
ক) শিশিরে ✔
খ) জলে
গ) মেঘে
ঘ) ভোরের আলোয়
৩০. “অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি”। কবি কী দেখেন?
ক) ধুলোর কলঙ্ক ✔
খ) অপমানের কলঙ্ক
গ) পোড়া দাগ
ঘ) চাঁদের কলঙ্ক
৩০. “অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি ধুলোর কলঙ্ক”- কবি কখন দেখেন?
ক) সকালে ✔
খ) বিকেলে
গ) সন্ধ্যায়
ঘ) রাত্রে
৩১. মহুয়ার দেশের মানুষের চোখ
ক) লাল
খ) তন্দ্রাচ্ছন্ন
গ) ঘুমহীন ✔
ঘ) অস্থির
৩২. “ঘুমহীন তাদের চোখে হানা দেয়”-কী হানা দেয়?
ক) ধুলোর কলঙ্ক
খ) গভীর শব্দ
গ) অবসন্ন মানুষদের চোখে ঘুম
ঘ) ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন ✔
৩১. ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন হানা দেয়-
ক) মহুয়ার দেশে
খ) মানুষের হৃদয়ে
গ) ঘুমহীন চোখে ✔
ঘ) ঘুমের ঘোরে
৩৪. ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় কোন্ স্থানের নিসর্গপ্রকৃতির বর্ণনা পাওয়া যায়?
ক পুরুলিয়া
খ বাঁকুড়া
গ) সাঁওতাল পরগনা ✔
ঘ) ডুয়ার্স
2. Very Short Question Answer
১. “অলস সূর্য দেয় এঁকে”-অলস সূর্য কী এঁকে দেয়?
▶ সমর সেন রচিত ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় অলস সূর্য গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ এঁকে দেয়।
২. “অলস সূর্য দেয় এঁকে”-অলস সূর্য কখন, কোথায় এঁকে দেয়?
▶ সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় অলস সূর্য সন্ধ্যার জলস্রোতে এঁকে দেয়।
৩. “আর আগুন লাগে…”-কখন, কোথায় আগুন লাগে?
▶ সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায় আগুন লাগে।
৪. ‘ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস’ কীভাবে কবির কাছে আসে?
▶ কবিতায় ‘ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস’ কবি সমর সেনের কাছে শীতের দুঃস্বপ্নের মতো ঘুরে-ফিরে আসে।
৫. কবি কাকে ‘শীতের দুঃস্বপ্ন’ বলেছেন?
▶ ‘ধোঁয়ার বাঙ্কিম নিশ্বাস’ অর্থাৎ নগরজীবনের দূষণকে কবি ‘শীতের দুঃস্বপ্ন’র সঙ্গে তুলনা করেছেন।
৬. “অনেক, অনেক দূরে আছে…”-কে বা কী অনেক দূরে আছে?
▶ ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় কবি সমর সেন বলেছেন মেঘমদির মহুয়ার দেশ অনেক দূরে আছে।
৭. মহুয়ার দেশ কবির কাছে কীভাবে উপলব্ধ হয়েছিল?
▶ মেঘমদির মহুয়ার দেশ কবির কাছে নাগরিক ক্লান্তি থেকে মুক্তির আশ্রয় হিসেবে উপলব্ধ হয়েছিল।
৮. “সমস্তক্ষণ সেখানে পথের দুধারে…”-‘সেখানে’ বলতে কোথাকার কথা বলা হয়েছে?
▶ সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় ‘সেখানে’ বলতে মহুয়ার দেশের কথা বলা হয়েছে।
৯. …দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস”-‘দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস’ কী করে?
▶ সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে।
১০. কবি সমর সেন তাঁর ক্লান্তির উপরে কার ঝরে পড়া এবং কার নেমে আসার প্রার্থনা করেছেন?
▶ কবি সমর সেন তাঁর ক্লান্তির উপরে মহুয়া ফুলের ঝরে পড়া এবং মহুয়ার গন্ধ নেমে আসার প্রার্থনা করেছেন।
১১. “এখানে অসহ্য, নিবিড় অন্ধকারে” -‘এখানে’ বলতে কোথাকার কথা বলা হয়েছে?
> সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় ‘এখানে’ বলতে শহরজীবনের কথা বলা হয়েছে।
১২. “এখানে অসহ্য, নিবিড় অন্ধকারে” – এখানে অন্ধকার নিবিড় ও অসহ্য কেন?
অথবা, “এখানে অসহ্য”-বক্তার কেন অসহ্য বোধ হয়েছে?
সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় অন্ধকার নিবিড় ও অসহ্য কারণ তা শহরজীবনের যান্ত্রিকতা আর দূষণের ইঙ্গিত দেয়।
১৩. “এখানে অসহ্য, নিবিড় অন্ধকারে/মাঝে মাঝে শুনি” বক্তা কী শোনেন? অথবা, “মাঝে মাঝে শুনি”-বক্তা কখন কী শোনেন?
▶ ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় বক্তা শহরের অসহ্য নিবিড় অন্ধকারে মাঝে মাঝে
মহুয়া বনের ধারের কয়লাখনির গভীর, বিশাল শব্দ শোনেন।
১৪. “…কয়লার খনির/গভীর, বিশাল শব্দ” কয়লাখনি কোথায়?
> সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, কয়লাখনি আছে মহুয়ার দেশে মহুয়া বনের ধারে।
১৫. ‘শিশির-ভেজা সবুজ সকালে’ কবি কী দেখেন?
▶ ‘শিশির-ভেজা সবুজ সকালে’ কবি কয়লাখনির অবসন্ন শ্রমিকদের শরীরে ধুলোর কলঙ্ক দেখেন।
১৬”অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি”-কবি কী দেখেন?
▶ কবি সমর সেন অবসন্ন মানুষের শরীরে ধুলোর কলঙ্ক দেখেন।
১৭. “অবসন্ন মানুষের শরীরে ধুলোর কলঙ্ক”। -কবি কখন দেখেন?
▶ কবি সমর সেন মহুয়ার দেশে শিশির-ভেজা সবুজ সকালে অবসন্ন মানুষের শরীরে ধুলোর কলঙ্ক দেখেন।
১৮. “ঘুমহীন তাদের চোখে হানা দেয়”- কাদের চোখে কী হানা দেয়?
• কয়লাখনির অবসন্ন শ্রমজীবী মানুষদের চোখে ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন হানা দেয়।
১৯. মহুয়ার দেশ’ কবিতায় কবি সমর সেন ‘মহুয়ার দেশ’ বলতে কোন স্থানকে বুঝিয়েছেন?
▶ ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় ‘মহুয়ার দেশ’ বলতে কবি সাঁওতাল পরগনারে বুঝিয়েছেন।
3. Short Question Answer
১. অলস সূর্য দেয় এঁকে”-সূর্যকে অলস বলার কারণ কী?
▶ সন্ধ্যার অস্তগামী সূর্য দিনের কাজ শেষ করে বিশ্রামের অপেক্ষায় থাকে বলে ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় কবি সমর সেন সূর্যকে অলস বলে সম্বোধন করেছেন।
২. “…জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায়।”-সেখানে কী ঘটে যায়?
▶ সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনা অস্তগামী সূর্যের আলোয় লাল হয়ে ওঠে। সেই দৃশ্য দেখে মনে হয় আগুন লেগেছে।
৩. “সেই উজ্জ্বল স্তব্ধতায়”-কীসের কথা বলা হয়েছে?
▶ সমর সেন রচিত ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় অস্তগামী সূর্যের আলোয় জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায় যে আগুন লাগে, ‘উজ্জ্বল স্তব্ধতা’ বলতে তার কথাই বোঝানো হয়েছে।
৪. . “সেই উজ্জ্বল স্তব্ধতায়”-‘উজ্জ্বল স্তব্ধতা’র কথা কেন বলা হয়েছে?
▶ একদিকে অস্তগামী সূর্য অন্ধকারের আগমন ঘটিয়ে স্তব্ধতা এনেছে অন্যদিকে তার রক্তিম আভা সৃষ্টি করেছে উজ্জ্বলতার-এ কারণেই উদ্ধৃত অংশে ‘উজ্জ্বল স্তব্ধতা’র কথা বলা হয়েছে।
৫. “সেই উজ্জ্বল স্তব্ধতায়”-‘উজ্জ্বল স্তব্ধতায়’ কী ঘটে?
▶ সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় উজ্জ্বল স্তব্ধতায় ধোঁয়ার বঙ্কিম নিশ্বাস শীতের দুঃস্বপ্নের মতো ঘুরে-ফিরে ঘরে আসে।
৬. . “ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ঘুরে ফিরে ঘরে আসে”-‘ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? [নমুনা প্রশ্ন]
▶ কবি সমর সেন রচিত ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় ‘ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস’ বলতে নাগরিক সভ্যতার দূষণকে বোঝানো হয়েছে।
৭. ..ঘুরে ফিরে ঘরে আসে”-কার কথা বলা হয়েছে?
▶ ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতার উদ্ধৃত অংশে ‘ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস’ অর্থাৎ শিল্পসভ্যতার দূষণের ঘুরে-ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে।
৮. . “অনেক, অনেক দূরে আছে…”-সেই অনেক দূরে কী ঘটে?
▶ ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় অনেক দূরে মহুয়ার দেশে পথের দু-ধারে দেবদারু গাছের দীর্ঘ রহস্য ছায়া ফেলে। দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস রাতের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে।
৯. মেঘ-মদির মহুয়ার দেশ’ বলার কারণ কী?
► দূষিত নাগরিক-জীবনের যান্ত্রিকতার বিপরীতে সাঁওতাল পরগনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মায়াময়তাকে ফুটিয়ে তুলতেই কবি সমর সেন এই স্থানকে ‘মেঘ-মদির মহুয়ার দেশ’-রূপে অভিহিত করেছেন।
১০. ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় কবি নিজেকে কীভাবে উপস্থাপিত করেছেন?
▶ ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় কবি নিজেকে নগরজীবনের ক্লান্ত মানুষের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত করেছেন।
১১. “দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য” বলতে কী বোঝ?
▶ সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় “দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য” বলতে দেবদারু গাছের দীর্ঘ ছায়াময় বিস্তারকে বোঝানো হয়েছে।
১২. “দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য” কোথায় ছায়া ফেলে?
▶ কবি সমর সেন রচিত ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় “দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য” সুদূর মহুয়ার দেশে পথের দু-ধারে ছায়া ফেলে।
১৩”…দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস”-‘দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? [ডব্লিউবিটিএ ইনটার স্কুল টেস্ট]
▶ সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় ‘দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস’ বলতে রাতের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করা সমুদ্রের গর্জনকে বোঝানো হয়েছে।
১৪. কয়লার খনির/গভীর, বিশাল শব্দ”-কয়লাখনির শব্দকে ‘গভীর’ ও ‘বিশাল’ বলা হয়েছে কেন?
▶ ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় মহুয়ার দেশের নিস্তব্ধতাকে যেহেতু কয়লাখনির শব্দ ভেঙে দেয়, তাই তাকে ‘গভীর’ ও ‘বিশাল’ বলা হয়েছে।
১৫ “..গভীর, বিশাল শব্দ,”-কী গভীর এবং সেখানে কীসের শব্দ হয়?
▶ আধুনিক কবি সমর সেন রচিত ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় মহুয়ার দেশের নৈঃশব্দের পটভূমিতে কয়লাখনির শব্দ ছিল গভীর এবং সেখানে কয়লাখনির গভীর, বিশাল শব্দ হয়।
4. Long Question Answer
প্রশ্ন ১ “মাঝে মাঝে সন্ধ্যার জলস্রোতে/অলস সূর্য দেয় এঁকে”- ‘অলস সূর্য’ কী এঁকে দেয়? মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো। এই দৃশ্য কবিচেতনায় কোন্ ভাবনার জন্ম দেয়? ১+২+২
উত্তর অঙ্কিত বিষয়: কবি সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় ‘অলস
▶ মন্তব্যের ব্যাখ্যা: সন্ধ্যার অস্তগামী সূর্য কবির কল্পনায় হয়েছে ‘অলস সূর্য’।
সূর্য’ সন্ধ্যার জলস্রোতে এঁকে দেয় গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ। কবির মনে হয়েছে দিনের অবসান যেন সূর্যের আলস্যকেই নিশ্চিত করেছে। নদীর জলে প্রতিফলিত সূর্যের রশ্মিকে কবির মনে হয়েছে গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ। সূর্যের এই আলো যেন জলের অন্ধকারের ধূসর ফেনায় আগুন লাগিয়ে দেয়। এইভাবে নাগরিক জীবনের ধূলিধূসর পরিবেশেও অস্তগামী সূর্য সৌন্দর্যের মায়াময় আবেশ তৈরি করে।
▶ কবির ভাবনা: শহরজীবনে সৌন্দর্যের এই আবহ দীর্ঘস্থায়ী হয় না। দূষণক্লান্ত শহরে তাই ধোঁয়ার বঙ্কিম নিশ্বাস শীতের দুঃস্বপ্নের মতো ঘুরে-ফিরে
আসে। আর এর সূত্র ধরেই কবির মন পৌঁছে যায় অনেক, অনেক দূরে মেঘমদির মহুয়ার দেশে। সেখানে পথের দু-ধারে ছায়া-ফেলা দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য আর রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করা দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস কবিকে আচ্ছন্ন করে রাখে। নগরজীবনে ক্লান্ত-অবসন্ন কবি কামনা করেন-“আমার
ক্লান্ডির উপরে ঝরুক মহুয়া-ফুল,/ নামুক মহুয়ার গন্ধ।”
প্রশ্ন ২ “আর আগুন লাগে জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায়।”- কীসের কথা বলা হয়েছে? এর ফলে কী ঘটে? এই অবস্থায় কবি কীসের প্রত্যাশা করেন?
উত্তর.. উদ্দিষ্ট কথা: সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় প্রশ্নোদ্ভূত অংশে অস্তগামী সূর্যের কথা বলা হয়েছে। কবির কথায়, অলস সূর্য সন্ধ্যার জলস্রোতে যে ‘গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ’ আঁকে, তারই আগুন লাগে জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায়।
▶ পরিণতি: সন্ধ্যার জলস্রোতে অস্তগামী সূর্যের আলো তৈরি করে দেয় এক
উজ্জ্বল স্তব্ধতা। একদিকে সূর্যের বিদায়মুহূর্তে অন্ধকারের আগমন স্তব্ধতা ডেকে আনে, অন্যদিকে তার রক্তিম আভা সৃষ্টি করে এক মায়াময় উজ্জ্বলতার। কিন্তু সেই মায়াময়তার আবেশ যেন ছিন্ন হয়ে যায় নাগরিক পরিবেশের প্রতিকূলতায়। শীতের দুঃস্বপ্নের মতো সেখানে ঘুরে-ফিরে আসে ধোঁয়ার বঙ্কিম নিশ্বাস। নগরজীবনের বিষাক্ত পরিবেশে খন্ডিত হয় সৌন্দর্যের বাতাবরণ।
▶ কবির প্রত্যাশা: এই অবস্থায় কবির চেতনায় আসে অনেক দূরের
মেঘমদির ‘মহুয়ার দেশ’। সেখানে সারাক্ষণ পথের দু-ধারে ছায়া ফেলে দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য আর দূর সমুদ্রের গর্জন রাত্রের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে। সেই নির্মল প্রকৃতির সান্নিধ্যে কবি নাগরিক জীবনের অবসাদ থেকে মুক্তি চান। তাই কবি কামনা করেন-“আমার ক্লান্ডির উপরে ঝরুক মহুয়া- ফুল,/নামুক মহুয়ার গন্ধ।” কবি চান তাঁর শরীরে মহুয়ার মাদকতা আবেশ ছড়াক, চেতনায় থাক মহুয়ার গন্ধ।
প্রশ্ন ৩ “সেই উজ্জ্বল স্তব্ধতায় / ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস ঘুরে ফিরে ঘরে আসে/শীতের দুঃস্বপ্নের মতো।”-মন্তব্যটির তাৎপর্য আলোচনা করো।
উত্তর তাৎপর্য: কথামুখ: সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতা নগরজীবনের ধূসর পটভূমিতে শান্তির নিশ্চিত আশ্রয়-সন্ধানের কথাই তুলে ধরেছে। প্রকৃতির অসামান্য প্রকাশ: এই নগরজীবনের চারপাশেও সূর্য অস্ত যাওয়ার সময়ে প্রকৃতির অসামান্য প্রকাশ ঘটে। সন্ধ্যার জলস্রোতে তখন অলস সূর্য এঁকে দেয় ‘গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল আলোর স্তম্ভ’। জলের অন্ধকারে ধূসর ফেনায় অস্তগামী সূর্যের মৃদু আলো যেন আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে যায়। সৌন্দর্যের স্থায়িত্ব: কিন্তু নগরজীবনের ধূসর পরিবেশে এই সৌন্দর্য চিরস্থায়ী হয় না, অত্যন্ত ক্ষণিকের এই মায়াময় পরিবেশের পরেই সেখানে ঘুরে-ফিরে আসে বিষাক্ত ধোঁয়ার আবরণ। কবির কাছে তা ‘শীতের দুঃস্বপ্নের মতো’। এই নগরজীবনের ভয়াবহতা থেকে কবি মুক্তি চান। মুক্তির সন্ধান: এই মুক্তির সন্ধানেই কবি তাঁর চেতনার মধ্যে মহুয়ার দেশকে খোঁজেন। তিনি প্রার্থনা করেন- “আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়া-ফুল।” কিন্তু এই প্রার্থনা তাঁর জীবনের বাস্তবতাকে পালটায় না। সর্বগ্রাসী যন্ত্রসভ্যতা মহুয়ার দেশেও প্রভাব ফেলে। শিশিরভেজা সকালে মানুষের শরীরে লেগে থাকে ধুলোর কলঙ্ক। ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন ঘিরে থাকে তাদের। শেষের কথা: এভাবেই কবি ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় নাগরিক জীবনের বিবর্ণতা আর হতাশার ছবি তুলে ধরেছেন। কল্পনাবিলাস আর স্বপ্নময়তা এভাবেই রুক্ষ বাস্তবের আঘাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
প্রশ্ন ৪ “অনেক, অনেক দূরে আছে মেঘ-মদির মহুয়ার দেশ”-কবি ‘মহুয়ার দেশ’-এর কী বর্ণনা দিয়েছেন? এই ‘মহুয়ার দেশ’ কীভাবে কবির চেতনাকে প্রভাবিত করেছে, তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো। ২+৩
উত্তর… কবি প্রদত্ত মহুয়ার দেশের বর্ণনা: অন্য একটি কবিতায় সমর সেন লিখেছিলেন চায় “বৃষ্টির আভাসে করুণ পথে ধুলো উড়ছে, এমন দিনে সে- ধুলো মনে শুধু আনে/সাঁওতাল পরগণার মেঘমদির আকাশ।” আলোচ্য কবিতাতেও দেখা যায় কবির কাছে ‘মহুয়ার দেশ’ হল ‘মেঘমদির’। সেখানে সবসময় পথের দু-পাশে ছায়া ফেলে রহস্যময় দেবদারু গাছেরা। রাত্রির নিঃসঙ্গ নির্জনতাকে আলোড়িত করে ‘দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাস’।
▶ কবির চেতনায় ‘মহুয়ার দেশ’: অবসন্নতা থেকে মুক্তি: ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় কবি সমর সেন নগরজীবনের ক্লান্তিকর অবসন্নতা থেকে মুক্তি খোঁজেন। কবির চেতনায় আসে মেঘমদির সুদূর মহুয়ার দেশ। প্রকৃতির অনুষঙ্গ: গ্রামজীবনের নির্মল প্রকৃতির অনুষঙ্গ হিসেবে কবির কল্পনায়
মাদকতাময় মহুয়া ফুলের আকাঙ্ক্ষা জেগে ওঠে। যে কবি লিখেছিলেন “একদা শালবনে কেটেছে রোমান্টিক দিন”, তাঁর কবিতায় ‘মহুয়ার দেশ’ হয়ে ওঠে বিবর্ণ শহরজীবনে ক্লান্ত মানুষের বেঁচে থাকার আশ্রয়। তাঁর ক্লান্ডির উপরে মহুয়া ফুল ঝরে পড়ুক, “নামুক মহুয়ার গন্ধ”-এটাই কবির আকাঙ্ক্ষা হয়ে ওঠে। যন্ত্রসভ্যতার বিপন্নতাই: কিন্তু তাঁর স্বপ্নের মহুয়ার দেশেও হানা দেয় যন্ত্রসভ্যতা। কবির কানে আসে মহুয়া বনের ধারের কয়লাখনির প্রবল শব্দ, শিশিরভেজা সবুজ সকালেও কবি দেখতে পান মানুষের শরীরে ধুলোর কলঙ্ক। নিদ্রাহীন এইসব মানুষের চোখে ভিড় করে আসা যন্ত্রসভ্যতার বিপন্নতাই কবির কাছে চূড়ান্ত সত্য হয়ে দেখা দেয়। লেগে-থাকা
প্রশ্ন ৫ “সমস্তক্ষণ সেখানে পথের দুধারে ছায়া ফেলে/দেবদারুর দীর্ঘ রহস্য”-কোন্ জায়গার কথা বলা হয়েছে? মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো। এ প্রসঙ্গে কবির মনোভাব কী? ১+২+২
উত্তর.. উদ্দিষ্ট জায়গা: সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতার প্রশ্নোদৃত অংশে কবি অনেক অনেক দূরের ‘মহুয়ার দেশ’-এর কথা বলেছেন।
▶ মন্তব্যের ব্যাখ্যা: নাগরিক জীবনের ‘শীতের দুঃস্বপ্নের মতো’ ধোঁয়ার বিষাক্ত
নিশ্বাস থেকে অনেক দূরে আছে কবিকল্পনার মেঘমদির মহুয়ার দেশ। প্রকৃতি
সেখানে বাধাহীনভাবে নিজেকে মেলে দেয়। সেখানে পথের দু-ধারে যেমন
দেবদারু গাছের ছায়া রহস্যময়তার সৃষ্টি করে, ঠিক তেমনই ‘দীর্ঘশ্বাস’-এর মতো
দূর সমুদ্রের গর্জন রাতের নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে। এভাবেই কবি নাগরিক জীবনের ক্লান্তির বিপরীতে প্রকৃতির অবাধ উন্মোচনকে খুঁজে পান।
▶ কবির মনোভাব: ‘মহুয়ার দেশ’-এর সন্ধান: নাগরিক জীবনের অবসাদ ও ক্লান্তির বিপরীতে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে কবি সমর সেন এই ‘মহুয়ার দেশ’-এর সন্ধান করেছেন। প্রকৃতির মায়াময় আবেশ: অস্তগামী সূর্যের আলো সন্ধ্যার জলস্রোতে যখন গলিত সোনার মতো উজ্জ্বল স্বর্ণালি আভা রচনা করে, তখন সাময়িকভাবে শহুরে প্রকৃতিতেও মায়াময় আবেশ তৈরি হয়। কিন্তু তা চিরস্থায়ী হয় না। নাগরিক জীবনের দূষণের বিষাক্ত ধোঁয়ার নিশ্বাসে সেই সৌন্দর্য হারিয়ে যায়। প্রিয়তম আশ্রয়স্থল: সেইসময় মহুয়ার দেশের শান্ত নির্মলতাকেই কবি আশ্রয় করতে চান। তিনি চান তাঁর ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়ার ফুল, আবেশ ছড়াক মহুয়ার গন্ধ। মহুয়ার দেশের সজীবতার স্পর্শে তিনি নিজেকে প্রাণবন্ত করে তুলতে চান। তাই নগরজীবন থেকে দূরবর্তী ‘মহুয়ার দেশ’ হয়ে ওঠে কবির আকাঙ্ক্ষিত প্রিয়তম আশ্রয়স্থল।
প্রশ্ন ৬ “আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়া-ফুল,/নামুক মহুয়ার গন্ধ।”-‘আমার’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? এমন কামনার কারণ কী?
উত্তর ‘আমার’ পরিচয়: ‘আমার’ বলতে ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতার কবি সমর সেনের কথা বলা হয়েছে।
▶ কামনার কারণ: মুক্তির নিশ্বাস: কবি সমর সেন নাগরিক ক্লান্তি থেকে মুক্তির জন্য ‘মহুয়ার দেশ’-এর কথা ভেবেছেন। প্রকৃতির সেই বাধাহীন বিস্তারে মেঘমদিরতায় কবি ‘শীতের দুঃস্বপ্নের মতো’ নগরজীবনের দূষণ ‘ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস’-কে ভুলে থাকতে চেয়েছেন। প্রকৃতির নির্মলতা: মহুয়ার দেশে পথের দু-ধারে ছায়া ফেলা দেবদারু গাছের রহস্যময়তা বা দূর সমুদ্রের দীর্ঘশ্বাসরূপী গর্জন কবিকে আকৃষ্ট করে। প্রকৃতির এই নির্মলতাকে আশ্রয় করেই কবি নাগরিক অবসন্নতা থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছেন। তাই হৃদয়ের গভীরতম আকাঙ্ক্ষায় তিনি উচ্চারণ করেন- “আমার ক্লান্তির উপরে ঝরণ মহুয়া-ফুল,/নামুক মহুয়ার গন্ধ।” ইচ্ছাপূরণের অপূর্ণতা: কিন্তু কবির এই ইচ্ছাপূরণের আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণ থেকে যায়। নগরজীবনে বসে রাত্রির অসহা নিবিড় অন্ধকারে কবি শোনেন মহুয়া বনের ধারের কয়লাখনির গভীর বিশায়া
শব্দ। নাগরিক যন্ত্রসভ্যতার শব্দনিনাদ মহুয়ার দেশের মেঘমদির রহস্যময়তার অবসান ঘটিয়ে কয়লাখনির শব্দকে মনে করায়। যন্ত্রসভ্যতা এভাবেই সর্বগ্রাসী রূপে ধরা দেয় কবির চেতনায়। যন্ত্রসভ্যতার আগ্রাসন: এ কথা হয়তো ঠিক
যে, ‘ক্লান্ডির উপরে ঝরুক মহুয়া-ফুল’-এটাই কবির নিবিড় চাওয়া। কিন্তু বাস্তব হল যন্ত্রসভ্যতার আগ্রাসন, বিবর্ণতার সীমাহীন বিস্তার, যা কবির স্বপ্নের মহুয়ার দেশকেও নিস্তার দেয় না।
প্রশ্ন ৭ “ঘুমহীন তাদের চোখে হানা দেয়/কীসের ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন।” – মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।
উত্তর…. মন্তব্যের প্রেক্ষাপট: কথামুখ: সমর সেন তাঁর ‘মহুয়ার দেশ’
কবিতায় নগরজীবনের ধূসরতা ও যান্ত্রিকতায় ক্লান্ত মানুষের যন্ত্রণাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রকৃতির রহস্যময়তা: প্রকৃতির নির্মল পটভূমিকে এখানে বিবর্ণ করে দেয় ‘ধোঁয়ার বঙ্কিম নিঃশ্বাস’। এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই কবিকে আকর্ষণ করে মেঘমদির মহুয়ার দেশ, যেখানে পথের দু-পাশে ছায়া ফেলে রহস্যময় দেবদারু গাছের সারি। কবি আকাঙ্ক্ষা করেন যে, তাঁর ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়া ফুল। তাঁর চেতনায় ছড়াক স্নিগ্ধ আবেশ। যন্ত্রসভ্যতার বিপন্নতা: কিন্তু নগরজীবনের সর্বগ্রাসী যান্ত্রিকতায় তার কোনো সন্ধানই পান না কবি। বরং তাঁর কানে আসে মহুয়া বনের ধারে কয়লাখনির প্রবল শব্দ। শিশিরে ভেজা সবুজ সকালেও মহুয়ার দেশের অবসন্ন মানুষদের শরীরে লেগে থাকে ধুলোর কলঙ্ক। তাদের ঘুমহীন চোখে আজও ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন জেগে থাকে। ‘কীসের’ শব্দটি উল্লেখের দ্বারা কবি অনিশ্চয়তাকে বোঝাতে চাইলেও এটা স্পষ্ট যে, তাঁর স্বপ্নের মহুয়ার দেশও আজ যন্ত্রসভ্যতার শিকার। আর তারই বিপন্নতা হানা দেয় সেখানকার মানুষদের দুঃস্বপ্নে। মুক্তিহীন জীবন: যন্ত্রসভ্যতার ক্ষয়, বিকৃতি আর যান্ত্রিকতার ক্লান্তি থেকে মুক্তি পায় না স্বপ্নের মহুয়ার দেশও। সেই পরিত্রাণহীন জীবনকেই সমর সেন তাঁর ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় তুলে ধরেছেন।
প্রশ্ন ৮ “ঘুমহীন তাদের চোখে হানা দেয়/কিসের ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন।” -কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের ঘুমহীন চোখে ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন হানা দেয় কেন?
উত্তর…. উদ্দিষ্ট ব্যক্তিসমূহ: সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতা থেকে উদ্ধৃত এই উক্তিটিতে মহুয়ার দেশের কয়লাখনির অবসন্ন শ্রমিকদের কথা বলা হয়েছে।
▶ ঘুমহীন চোখে ক্লান্ত দুঃস্বপ্নের হানা দেওয়ার কারণ: নগরজীবন
থেকে মুক্তি: সমর সেন তাঁর ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতায় নগরজীবনের ধূসরতা ও যান্ত্রিকতায় ক্লান্ত মানুষের যন্ত্রণাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই কবিকে আকর্ষণ করে মেঘমদির মহুয়ার দেশ, যেখানে পথের
দু-পাশে ছায়া ফেলে রহস্যময় দেবদারু গাছের সারি। প্রকৃতির বুদ্ধে যন্ত্রসভ্যতা: কবি আকাঙ্ক্ষা করেন যে, তাঁর ক্লান্ডির উপরে মহুয়া ফুল বস্তু পড়ুক। তাঁর চেতনায় ছড়াক স্নিগ্ধ আবেশ। কিন্তু এখানকার সর্বগ্রাসী তার কোনো সন্ধানই পান না কবি। বরং তাঁর কানে আসে মহুয়া বনের ধারে কয়লাখনির প্রবল শব্দ। শিশিরে ভেজা সবুজ সকালে মহুয়ার দেশের অবস মানুষদের শরীরেও লেগে থাকে ধুলোর কলঙ্ক। তাঁর স্বপ্নের মহুয়ার দেশও টে আজ যন্ত্রসভ্যতার শিকার। আর তারই বিপন্নতা হানা দেয় সেখানকার মানুষদের। দুঃস্বপ্নে। যন্ত্রসভ্যতার ক্ষয়, বিকৃতি আর যান্ত্রিকতার ক্লান্ডি থেকে মুক্তি পায়ন স্বপ্নের মহুয়ার দেশও। একারণেই তাদের ঘুমহীন চোখে ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন হানা দেয়। যান্ত্রিকতায়
প্রশ্ন ৯ “অবসন্ন মানুষের শরীরে দেখি ধুলোর কলঙ্ক”-এখানে কোন্ মানুষের কথা বলা হয়েছে? তাঁরা অবসন্ন কেন? ‘ধুলোর কলঙ্ক’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর…. সমর সেনের ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতার উল্লিখিত অংশে কবির প্রি মহুয়ার দেশের মানুষদের কথা বলা হয়েছে।
▶ মহুয়ার দেশ কবির কাছে নাগরিক সভ্যতার দূষণ থেকে মুক্তি পাওয়াঃ একমাত্র আশ্রয়। ‘মেঘ-মদির’ মহুয়ার দেশ, পথের দু-ধারে দেবদারু বন্যে রহস্যময়তা, রাত্রের নির্জনতা, আলোড়িত করা সমুদ্রের গর্জন কবিকে মু করে। নাগরিক ক্লান্তিতে মহুয়ার দেশকেই কবি নিজের আশ্রয় ভাবেন। কিন্তু সেই মহুয়ার দেশেও যন্ত্রসভ্যতার আগ্রাসন কবি লক্ষ করেন। কয়লাখনির শব্ প্রকৃতির নির্মল বিস্তারে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কঠিন শ্রম আর তার একঘেয়েমি অবসন্ন করে রাখে মানুষদের।
▶ ‘ধুলোর কলঙ্ক’ এখানে দূষণের প্রতীক। প্রকৃতির সহজ বিস্তারের মধে কীভাবে যন্ত্রসভ্যতা তাকে মলিন করে তুলেছে তা বোঝাতেই শব্দবন্ধটি ব্যবহার করা হয়েছে। কয়লাখনি যন্ত্রসভ্যতার প্রতীক হয়ে এসেছে মহুয়ার দেশে। অর তার সৃষ্ট দূষণের ইঙ্গিত নিয়ে এসেছে ‘ধুলোর কলঙ্ক’; যা নিদ্রাহীন মহুয়া দেশের মানুষদের চোখে ‘ক্লান্ত দুঃস্বপ্ন’ তৈরি করে দিয়েছে।