Class 12 Chapter 2.5 Solution
ক্রন্দনরতা জননীর পাশে
1. MCQs Question Answer
১. কবি মৃদুল দাশগুপ্তের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম-
ক) জলপাইকাঠের এসরাজ
খ) ঝরাপালক
গ) সোনার তরী
ঘ) সোনার মাছি খুন করেছি [নমুনা প্রশ্ন]
Ans. ক)
২. ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটি কোন্ কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত?
ক) আমপাতা জামপাতা
খ) সরষেক্ষেত
গ) ধানক্ষেত থেকে
ঘ) জলপাইকাঠের এসরাজ
Ans. গ)
৩. কবি যে জননীর পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন তিনি-
ক ক্রন্দনরতা
খ) স্নেহময়ী
গ) সুজলা-সুফলা
ঘ) জরাজীর্ণা (ডব্লিউবিটিএ ইনটার স্কুল টেস্ট)
Ans. ক)
৪. ‘কুন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় জননী বলতে কবি বুঝিয়েছেন-
ক) জন্মদাত্রী মাকে
খ) বিপন্ন স্বদেশকে
গ) নারীজাতিকে
ঘ) সমাজকে
Ans. খ)
৫. কবি যার পাশে থাকতে চেয়েছেন-
ক দরিদ্র মানুষের
খ) ক্রন্দনরতা জননীর
গ) অত্যাচারিতের
ঘ) সমস্ত পৃথিবীবাসীর
Ans. খ)
৬* “এখন যদি না-থাকি”-এখন বলতে কবি কোন্ সময়ের কথা বলেছেন?
ক) প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়
খ) উৎসবের সময়
গ) অসুস্থতার সময়
ঘ) নিপীড়িত, অত্যাচারিত হওয়ার সময়
Ans. ঘ)
৭. ক্রন্দনরতা জননীর পাশে না থাকলে কবির অর্থহীন মনে হয়েছে-
ক) লেখালেখিকে
খ) বেঁচে থাকাকে
গ) নাগরিক হওয়াকে
ঘ) রাজনীতিকে [এবিটিএ ইনটার স্কুল টেস্ট]
৮. “কেন তবে লেখা, কেন গান গাওয়া।”-পঙ্ক্তিটির মধ্য দিয়ে বলা হয়েছে-
ক) ভালো সাহিত্য সৃষ্টি করা প্রয়োজন
খ) ভালো গান প্রস্তুত করা প্রয়োজন
গ) ভালো চিত্রশিল্পী হয়ে ওঠা দরকার
ঘ) বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো দরকার
Ans. ঘ)
৯. “কেন গান গাওয়া”- কথাটির অর্থ হল-
ক) গান থামানো দরকার
খ) গান গাওয়ার তবে প্রয়োজন নেই
গ গান শেষ করা দরকার
ঘ) গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা প্রয়োজন
Ans. খ)
১০. “কেন তবে আঁকাআঁকি?” কথাটির অর্থ হল-
ক) না আঁকাই শ্রেয়
খ) আঁকাআঁকির অর্থ না বোঝা
গ) আঁকার অর্থ সময়ের অপচয়
ঘ) আঁকাআঁকি করাটাই অর্থহীন
Ans. ঘ)
১১. নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবির ক্রোধের কারণ-
ক) হিংসা
খ সামাজিকতা
গ) কর্তব্যবোধ
ঘ ভালোবাসা ও মূল্যবোধ
Ans. ঘ)
১২. নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবির মনে জাগে-
ক) করুণা
খ) হতাশা
গ) ক্রোধ
ঘ) আতঙ্ক
Ans. গ)
১৩). “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে/না-ই যদি হয়”-
ক) রোষ
খ) ক্ষোভ
গ) রাগ
ঘ) ক্রোধ
Ans. ঘ)
১৪. “না-ই যদি হয় ক্রোধ…”-যা দেখে ক্রোধের জাগরণ ঘটা প্রত্যাশিত-
ঘ) কবিতার না জাগা
ক) নিহত ভাইয়ের শবদেহ
খ) ক্রন্দনরতা জননী
গ) নিখোঁজ মেয়ে
Ans. ক)
১৫. কবিতায় নিখোঁজ মেয়েটির ছিন্নভিন্ন দেহ পাওয়া গিয়েছিল-
ক) পুলের নীচে
খ) মাঠের ধারে
গ) জঙ্গলে
ঘ) নদীর ধারে
Ans. গ)
১৬. ছিন্নভিন্ন দেহ পাওয়া গিয়েছে যে মেয়েটির, সে-
ক) পথ হারিয়েছিল
খ) নিখোঁজ ছিল
গ) খেলতে গিয়েছিল
ঘ) পালিয়ে গিয়েছিল
Ans. খ)
১৭. “যে-মেয়ে নিখোঁজ, ছিন্নভিন্ন”, – তার জন্য কবি কী করবেন না?
ক) বিধির বিচার চাইবেন না
খ) কবিতার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাবেন না
গ) জনতার দরবারে যাবেন না
ঘ) প্রতিহিংসা চরিতার্থ করবেন না
Ans. ক)
১৮. “যে-মেয়ে নিখোঁজ, ছিন্নভিন্ন”-মেয়েটি ছিন্নভিন্ন, কারণ-
ক) সে ছিন্নভিন্ন পোশাক পরিহিতা
খ) সে অত্যাচারিতা
গ সে সমাজ থেকে বহিষ্কৃতা
ঘ) সে ধর্মত্যাগিনী
Ans. খ)
১৯. আকাশের দিকে তাকিয়ে চাওয়া হয়-
ক) বৃষ্টি
খ) বিধির বিচার
গ) ঈশ্বরের শুভেচ্ছা
ঘ) চাঁদের টিপ
Ans. খ)
২০. ছিন্নভিন্ন মেয়েটিকে দেখে কবি তাকাতে চান না-
ক) পৃথিবীর দিকে
খ) সমাজের দিকে
গ) জঙ্গলের দিকে
ঘ) আকাশের দিকে
Ans. ঘ)
২১. ‘বিধির বিচার’ সম্বন্ধে কবি বলেছেন-
ক) বিধাতা সঠিক বিচার করেন
খ) বিধাতার বিচার অর্থহীন
গ) বিধাতা পীড়নকারীকে শাস্তি দেন
ঘ) বিধাতা নিপীড়িতের পাশে থাকেন
Ans. খ)
২২. “আমি তা পারি না।”-এখানে আমি কে?-
ক) কবি
খ) পাঠক
গ) সচেতন মানুষ
ঘ) শ্রোতা
Ans. ক)
২৩. “আমি তা পারি না।”- যা না-পারার কথা বলা হয়েছে, তা হল-
ক) বিধির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা
খ) নিজের সুখসন্ধান
গ) প্রতিবাদ-বিমুখ হয়ে থাকা
ঘ) কবিতা লেখা
Ans. ক)
২৪. কবিতায় জাগে-
ক বিবেক
খ ভাষা
গ ভাবনা
ঘ) অর্থ
Ans. ক)
২৫. কবির বিবেক জেগে ওঠার পটভূমি হল-
ক) সমাজ
খ) পরিবার
গ) কবিতা
ঘ) রাজনীতি
Ans. গ)
২৬. ‘বিবেক’ বলতে বোঝানো হয়েছে-
ক) অন্তরাত্মাকে
খ) চিন্তাধারাকে
গ) বোধকে
ঘ) মানসিকতাকে
Ans. ক)
২৭. নিজের বিবেককে কবি যার সঙ্গে তুলনা করেছেন, তা হল-
ক) ঝড়
খ বারুদ
গ) বিদ্যুৎ
ঘ) আলো
Ans. খ)
২৮. কী জেগে ওঠে ‘বিস্ফোরণের আগে’?
ক) আগ্নেয়গিরি
খ) কবির বিবেক
গ) জনগণ
ঘ) প্রতিবাদী আন্দোলন
Ans. খ)
২৯. বিধির বিচার চাওয়ার চেয়ে কবির কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল-
ক) আত্মার শান্তিকামনা
খ) প্রতিবাদ
গ) আত্মসুখ সন্ধান
ঘ) অন্য প্রসঙ্গে চলে যাওয়া
Ans. খ)
৩০. “…যা পারি কেবল সে-ই কবিতায় জাগে”- কবিতায় কী জাগে?
ক) কবির বিবেক
খ) কবির হিংসা
গ) কবির ক্রোধ
ঘ) কবির অক্ষমতা
Ans. ক)
৩১. ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় যে সমাজের ছবি ফুটে উঠেছে, তা হল-
ক) যুদ্ধ বিধ্বস্ত
খ) অবক্ষয়িত
গ) দারিদ্র্য পীড়িত
ঘ) নৈরাজ্যপূর্ণ
Ans. ঘ)
2. Short Question Answer
১. ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটির উৎস লেখো।
▶ কবি মৃদুল দাশগুপ্তের ধানক্ষেত থেকে নামক কবিতাগ্রন্থ থেকে ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটি নেওয়া হয়েছে।
২. ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটি কোন্ পটভূমিতে লেখা?
▶ ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটি ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গে সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের পটভূমিতে লেখা।
৩. ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’-এই কবিতায় কী ধ্বনিত হয়েছে?
আলোচ্য কবিতাটি একটি প্রতিবাদী কবিতা। এখানে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে।
৪. “এখন যদি না-থাকি”-বলতে কার পাশে কখন না থাকার কথা বলা হয়েছে?
অথবা, “এখন যদি না-থাকি”-কোথায় না থাকার কথা বলা হয়েছে?
< মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ভূত অংশে ক্রন্দনরতা জননী বা বিপন্ন স্বদেশের পাশে না-থাকার কথা বলা হয়েছে।
৫. ক্রন্দনরতা জননীর পাশে থাকতে না পারলে কবির কী মনে হবে?
অথবা, “এখন যদি না-থাকি”- এখন না থাকার ফল কী হবে? অথবা, ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ না থাকলে কবি কী কী ব্যর্থ বলে মনে করেছেন?
▶ দেশজননীর বিপন্নতার মুহূর্তে তাঁর পাশে না থাকলে লেখালেখি, গান গাওয়া, ছবি আঁকা সব মিথ্যা হয়ে যাবে বলে কবি মনে করেছেন।
৬. “কেন তবে……… গান গাওয়া”-এই দ্বিধার কারণ কী?
▶ দেশের মানুষ আক্রান্ত হলে কোনো শিল্পী প্রতিবাদ করতে না পারলে নিজের শিল্পীসত্তা নিয়ে তাঁর মনেই দ্বিধা সৃষ্টি হয়। কবির মনেও সেই দ্বিধাই সৃষ্টি হয়েছে।
৭. “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে”-কে এই ‘নিহত ভাই’?
• মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় উল্লেখিত ‘নিহত ভাই’ হলেন গণ-আন্দোলনের শহিদ ও কবির সহনাগরিক।
৮. ‘নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে’ কবির কী মনে হয়?
▶ নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবির মনে হয় দেশমায়ের প্রতি ভালোবাসা, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা বা মূল্যবোধের জন্যই ক্রোধের জন্ম হওয়া আবশ্যিক।
৯. “না-ই যদি হয় ক্রোধ”-কোন্ ক্রোধের কথা বলা হয়েছে?
▶ মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে কবির মনে ক্রোধের সঞ্চার হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
১০. “না-ই যদি হয় ক্রোধ”-তাহলে কী হবে?
▶ মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি বলেছেন নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে ক্রোধ না জন্মালে দেশমায়ের প্রতি ভালোবাসা, সমাজ, মূল্যবোধ সবই অর্থহীন হয়ে যাবে।
১১. “কেন ভালোবাসা, কেন-বা সমাজ/কীসের মানসিক যন্ত্রণা থেকে কবি এ কথা বলেছেন? মূল্যবোধ!”-কোন্
▶ ‘কুন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি মৃদুল দাশগুপ্ত নিহত দেশবাসী ভাইয়ের মৃতদেহ দেখে তীব্র ক্রোধ মানসিক যন্ত্রণা থেকে প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যটি করেছেন।
১২. ‘যে-মেয়ে নিখোঁজ’ তাকে কোথায় কীভাবে পাওয়া গিয়েছিল?
▶ মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় নিখোঁজ মেয়েটিকে জঙ্গলে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল।
১৩. “জঙ্গলে তাকে পেয়ে”-এই অবস্থায় কী করা উচিত নয় বলে কবি মনে করেছেন?
▶ নিখোঁজ মেয়েটিকে জঙ্গলে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পেয়েও এই নৃশংতার প্রতিবাদ না জানিয়ে ঈশ্বরের বিচারের আশায় বসে থাকা উচিত নয় বলে কবি মনে করেছেন।
১৪. “আমি কি তাকাব আকাশের দিকে”-কবি কখন এই প্রশ্ন করেছেন?
▶ মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন শরীর জঙ্গলে পেয়ে আকাশের দিকে বিধির বিচার চেয়ে তাকানো উচিত কিনা সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করতেই প্রশ্নটি করেছেন।
১৫. “আমি কি তাকাব আকাশের দিকে”-কবি কার কাছে এই প্রশ্ন করেছেন?
▶ মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটিতে কবি প্রশ্নটি করেছেন নিজের কাছেই।
১৬. “আমি কি তাকাব আকাশের দিকে”-কবির এই জিজ্ঞাসার উত্তর কী?
▶ প্রশ্নোদ্ভূত জিজ্ঞাসার উত্তরে কবি জানিয়েছেন যে, তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে বিধাতার বিচারের ভরসায় না থেকে কবিতার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাবেন।
১৭. “আমি তা পারি না।” কবি কী পারেন না?
]
▶ মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি বলেছেন নিখোঁজ ছিন্নভিন্ন মেয়েটিকে জঙ্গলে পেয়ে কবি বিধির বিচার চেয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন না।
১৮. “যা পারি কেবল”-কে, কী পারেন?
▶ মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় জঙ্গলে ছিন্নভিন্ন মেয়েটিকে দেখে কবি প্রতিবাদী কবিতার মাধ্যমে তাঁর বিবেককে জাগিয়ে রাখতে পারেন।
১৯. “সে-ই কবিতায় জাগে”-কী, কেন কবিতায় জাগে?
▶ মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবির বিবেক জাগে জঙ্গলে পাওয়া নিখোঁজ মেয়েটির ছিন্নভিন্ন করুণ অবস্থার প্রতিবাদে ফেটে পড়ার জন্য।
২০. “সে-ই কবিতায় জাগে/আমার বিবেক,”-বিবেককে কার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
▶ মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় বিবেককে বিস্ফোরণের বারুদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
২১. “আমার বিবেক, আমার বারুদ”-কবির বিবেক কী করে?
▶ মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবির বিবেক জেগে ওঠে প্রতিবাদে ফেটে পড়ার জন্য। এই অবস্থাটি বিস্ফোরণের আগে বারুদের সঙ্গেই তুলনীয়।
3. Long Question Answer
প্রশ্ন ১ “কেন তবে লেখা, কেন গান গাওয়া/কেন তবে আঁকাআঁকি?”-এই মন্তব্যটির মধ্য দিয়ে কবির কোন্ বিশেষ মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে আলোচনা করো।
উত্তর.. কবির মনোভাব: কবি মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’
কবিতাটি সামাজিক অবক্ষয়ের জ্বলন্ত স্বরূপ। দায়বদ্ধতা ও মূল্যবোধ: সমাজে ঘটে যাওয়া অজস্র ঘটনার প্রবাহকে নিজের মতো করে কবিতায় রূপ দেন কবি। কিন্তু তা শুধু ঘটনাকে তুলে ধরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, সঙ্গে যুক্ত হয় কবির নিজস্ব প্রতিক্রিয়াও। সেই প্রতিক্রিয়ায় ক্রোধ আর ঘৃণাও প্রায়ই মিশে যায়। নিহত ভাইয়ের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে তাঁর মধ্যে জন্ম নেয় ক্রোধ। মানুষের প্রতি ভালোবাসা, দায়বদ্ধতা আর মূল্যবোধই তাঁর এই ক্রোধের উৎস। প্রতিবাদী সত্তা: নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন শরীর যখন জঙ্গলে পাওয়া যায়, তখন প্রতিবাদী কবিতার মাধ্যমেই নিজের বিবেককে জাগিয়ে রাখেন কবি।
যে অনুভূতি থেকে নজরুল লিখেছিলেন, “রক্ত ঝরাতে পারি না তো একা/তাই লিখে যাই এ রক্ত লেখা”, কবি সেই একই প্রেরণা থেকেই লিখে চলেন প্রতিবাদী কবিতা, যার মধ্যে মজুত থাকে বিক্ষোভের বারুদ, সামান্য আগুনের ছোঁয়াতেই যা থেকে নিশ্চিতভাবে ঘটে যাবে প্রতিবাদের বিস্ফোরণ। কর্তব্যবোধ: এই মৃত্যু, এই নারকীয় অত্যাচার কবির দেশমাতাকে করে তোলে ‘ক্রন্দনরতা’। কবির বিশ্বাস-“সমস্ত কবিতাই জীবন ও জীবনযাপনের, তাই জীবন লাঞ্ছিত এবং রক্তাক্ত হলে দেশজননীর পাশে দাঁড়ানোই কবির ধর্ম।
প্রশ্ন ২ “নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে না-ই যদি হয় ক্রোধ…” কবি কাকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করেছেন? কবির প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করো।
উত্তর.. ‘ভাই’-এর পরিচয়: মানবিক এবং সামাজিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী
কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তাঁর ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় ‘ভাই’ বলতে কৃষিজমি রক্ষার গণ-আন্দোলনে শহিদ মানুষদের কথা বুঝিয়েছেন।
▶ কবির প্রতিক্রিয়া: ‘নিহত ভাইয়ের শবদেহ’ কবির মনে জন্ম দিয়েছে তীব্র ক্রোধের। এই অমানবিক করি হত্যা আর মানবিক লাঞ্ছনায় ব্যথিত হয়ে তিনি নিজের দেশমাতাকে কাঁদতে দেখেছেন। কবির মনে হয়েছে, এই দুঃসময়ে ক্রন্দনরতা জননীর পাশে সর্বশক্তি দিয়ে দাঁড়ানো উচিত। এখন লেখা, গান বা আঁকাআঁকি সব কিছুরই বিষয় হওয়া উচিত এই লাঞ্ছনার প্রতিবাদ। মনের মধ্যে যদি দেশমায়ের প্রতি ভালোবাসা থাকে, সামাজিক চেতনা থাকে, মূল্যবোধের অস্তিত্ব থাকে তাহলে ক্রোধ আর প্রতিবাদই হওয়া উচিত একমাত্র অস্ত্র। এভাবেই মৃদুল দাশগুপ্ত তৈরি করে নেন তাঁর নিজস্ব কবিধর্ম, যেখানে কবিতাই হয়ে ওঠে প্রতিবাদে জাগ্রত বিবেকের আত্মপ্রকাশ। সমাজের ঘটনাপ্রবাহকে অনুধাবন করে নিবিড়ভাবে তার সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন কবি। সেগুলিকে বিশ্লেষণ করে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁর কবিতায়। বাস্তব থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা নয়, এমনকি বাস্তবকে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করাও নয়, পরিবর্তে সংকটের মধ্যে দাঁড়িয়ে তার মোকাবিলা করা-মৃদুল দাশগুপ্তের প্রতিক্রিয়ার এই ধরনই স্পষ্ট হয় ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায়।
প্রশ্ন ৩ “আমি কি তাকাব আকাশের দিকে/বিধির বিচার চেয়ে?” কবির এই মন্তব্যের তাৎপর্য আলোচনা করো।
উত্তর… কবির মন্তব্যের তাৎপর্য: কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তাঁর ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় নিজের সমাজচেতনার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন। সাধারণভাবে কবি মৃদুল দাশগুপ্ত উচ্চকণ্ঠে কথা বলেন না, কিন্তু তাঁর প্রকাশভঙ্গিতে থাকে দৃঢ়তা। চারপাশের অসংগতি আর অন্যায়, ঘটে যাওয়া অজস্র ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি ক্রন্দনরতা জননীর পাশে এসে দাঁড়াতে চান। শাসকের হাতে সহনাগরিক ভাইয়ের মৃত্যু তাঁর মনে ক্রোধের জন্ম দেয়। জঙ্গলে পাওয়া নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন দেহ তাঁর প্রতিবাদী বিবেককে জাগিয়ে তোলে কবিতার মধ্য দিয়ে। এভাবেই নিজের দায়বদ্ধতা, মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং মূল্যবোধ প্রকাশ করেন কবি। কবিতাকে যখন তিনি চেতনা এবং প্রতিবাদের মাধ্যম করে তোলেন-তখন সেখানে আধ্যাত্মিকতা বা ঈশ্বরবিশ্বাসের কোনো জায়গা থাকে না। তাই নিখোঁজ মেয়ের নৃশংস মৃত্যু দেখতে দেখতে কবির মনে হয়েছে, বর্তমানের এই বিপন্ন সময়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরের কাছে বিচার চাওয়া একেবারেই অর্থহীন। ফলে, অনিবার্য হয়ে পড়েছে সমষ্টিগত ও ব্যক্তিগত প্রতিবাদ। এই বিপন্নতার সময়ে প্রতিবাদকে প্রতিষ্ঠিত করতে কবির একমাত্র অস্ত্র কবিতা। সেই কবিতার মাধ্যমেই নিজের বিক্ষোভ, প্রতিবাদকে সমস্ত স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছেন তিনি। কবির দায়বদ্ধতার যে ছবি তিনি এখানে তৈরি করে দিয়েছেন, কবিতাকে করে তুলেছেন বিবেকের বাহক, তা শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে শিল্পীসত্তার চিরকালীন প্রতিবাদের ইঙ্গিতকেই বহন করে।
প্রশ্ন ৪ “আমি কি তাকাব আকাশের দিকে/বিধির বিচার চেয়ে?” – ‘আমি’ কে? তিনি বিধির বিচার প্রত্যাশা করেন না কেন?
উত্তর… ‘আমি’-র পরিচয়: ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতার উল্লিখিত অংশে ‘আমি’ বলতে কবি মৃদুল দাশগুপ্ত নিজেকে বুঝিয়েছেন।
▶ প্রত্যাশা না করার কারণ: বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী ৩ নং প্রশ্নের উত্তর দ্যাখো।
প্রশ্ন ৫ “আমি তা পারি না।”-কবি কী পারেন না? “যা পারি কেবল”-কবি কী পারেন?
অথবা, “আমি তা পারি না।” বক্তা কী পারেন না? বক্তা কীভাবে তার কর্তব্য পালন করতে চান?
]
উত্তর.. কবির না-পারা বিষয়: কবি মৃদুল দাশগুপ্ত তাঁর ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় তাঁর স্বদেশপ্রেম এবং সমাজচেতনার স্বাক্ষর রেখেছেন। কবির মনে হয়েছে, অস্থির সময়ের সামাজিক অস্থিরতায় বিপন্ন মানুষের দুঃখে দেশমাতা কাঁদছেন। চোখের সামনে কবি দেখেন তাঁর ভাইয়ের মৃতদেহ এবং জঙ্গলে উদ্ধার হওয়া নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন দেহ। শাসকের এই অন্যায়- অত্যাচার-বর্বরতার হাত থেকে মুক্তি পেতে কবি কি বিধাতার সুবিচারের জন্য অপেক্ষা করে থাকবেন? এটাই তিনি পারেন না, কারণ, আকাশের দিকে তাকিয়ে বিধির বিচার চাওয়ার মধ্য দিয়ে যেমন নিয়তিনির্ভরতা প্রকাশ পায়, তেমনই প্রকাশিত হয় আত্মশক্তি এবং আত্মবিশ্বাসের অভাবও। মানুষের অধিকার যখন বিপন্ন হয় তখন বেঁচে থাকার সুস্থ পরিবেশ আর থাকে না। এমনকি রাষ্ট্রশক্তি যখন নিজের নিরঙ্কুশতাকে প্রকাশ করতে তার নখ-দাঁত বিস্তার করে তখন ঈশ্বরের কাছে ন্যয়বিচার চেয়ে বসে থাকা আসলে অনাবশ্যক সময়-ব্যয় ছাড়া আর কিছুই নয়।
▶ কবির কর্তব্য পালন: সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ, সহানুভূতিশীল কবি
অত্যাচারী শাসকের আনুগত্য বর্জন করতে চান। নিজের মানবিকতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং মূল্যবোধকে জাগিয়ে রাখতে কবিতাকেই হাতিয়ার করেন কবি। প্রতিবাদী কবিতার মাধ্যমেই নিজের বিবেককে জাগিয়ে রাখেন তিনি। এই জাগরণে থাকে মানবতা, আর তার কাঠামোয় থাকে রাজনীতিও। এভাবেই কবি কবিতাকে প্রতিবাদের অস্ত্র করে তোলেন। কবি হিসেবে এটাই পারেন তিনি।
প্রশ্ন ৬ “আমি তা পারি না।”- কবি কী না পারার কথা বলেছেন? কেন তিনি এ কথা বলেছেন?
উত্তর.. কবির না-পারা বিষয়: বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী ৫নং প্রশ্নের প্রথম
অংশের উত্তর দ্যাখো।
▶ কবির এ কথা বলার কারণ: আকাশের দিকে তাকিয়ে বিধির বিচার
চাওয়া একদিকে যেমন ঈশ্বরনির্ভরতার প্রকাশ ঘটায়, তেমনই অন্যদিকে তা আত্মশক্তির অভাব ও অসহায়তাকেও নির্দেশ করে। মানুষের অধিকার যখন বিপন্ন হয়, বেঁচে থাকার সুস্থ পরিবেশ যখন আর থাকে না, এমনকি রাষ্ট্রশক্তি নিজেকে নিরঙ্কুশ করতে যখন তার নখ-দাঁত বিস্তার করে-তখন ঈশ্বরের কাছে ন্যায়বিচার চেয়ে বসে থাকা আসলে অনাবশ্যক সময় নষ্ট। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ এবং সহানুভূতিশীল কবি তাই চেয়েছেন অত্যাচারীর আনুগত্য বর্জন করতে। এক-একটি অবাঞ্ছিত সামাজিক ঘটনা বা মানবিক লাঞ্ছনা কবির মধ্যে তাই তীব্র ক্রোধের জন্ম দেয়। তাঁর কাছে এই ক্রোধই হয়ে ওঠে সমাজের প্রতি ভালোবাসা, দায়বদ্ধতা আর মূল্যবোধের প্রকাশ। প্রতিবাদী কবিতায় কবি জাগিয়ে তুলতে চান নিজের বিবেককে। আধ্যাত্মিকতা বা বাস্তব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া নয়, কবি চান তাঁর কবিতাকে প্রতিবাদের অস্ত্র করে তুলতে।
প্রশ্ন ৭ “আমি তা পারি না।”-কে পারেন না? না পারার বেদনা কীভাবে কবিকে আলোড়িত করেছে তা কবিতা অবলম্বনে লেখো।
উত্তর… উদ্দিষ্ট ব্যাক্তি: ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতার কবি মৃদুল দাশগুপ্ত স্বয়ং তাঁর না-পারার কথা বলেছেন।
▶ কবির না-পারার বেদনা: সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় শোষণ-বঞ্চনার প্রতিবিধান চেয়ে ঈশ্বরের কাছে আবেদন করা অর্থাৎ হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা কবির পক্ষে সম্ভব নয়। বেদনা আর বিক্ষোভ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় তাঁর মনে। নিখোঁজ মেয়েটির ছিন্নভিন্ন শরীর জঙ্গলে পেয়ে কবির মধ্যে ক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে। এই জ্বলে ওঠাটাকেই যথার্থ কবিধর্ম বা মানবধর্ম বলে মনে করেন তিনি। দেশবাসীর এই বিপন্ন অবস্থায় ক্রন্দনরতা দেশজননীর পাশে থাকা, নিহত সহনাগরিক ভাইয়ের মৃতদেহ দেখে ক্রোধের জন্ম হওয়া-এসবই একজন কবির কাছে প্রত্যাশিত। অন্যথায় লেখা, গান গাওয়া কিংবা ছবি আঁকা অর্থাৎ শিল্পীর নান্দনিক প্রয়াসগুলি অর্থহীন হয়ে যায়। শাসকের শোষণে জীবনের অপচয় দেখে প্রতিবাদ না করলে মানুষের ভালোবাসা, দায়বদ্ধতা কিংবা মূল্যবোধ-এ সবই অর্থহীন হয়ে পড়ে। ঈশ্বরের বিচারের আশায় বসে থেকে বাস্তব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া কবির কাছে তাই অমানবিক লাগে। চারপাশের নারকীয় অত্যাচার, সন্ত্রাসের রাজত্ব কবির মনে যে বেদনার জন্ম দেয় তা ক্রোধের আগুনে রূপান্তরিত হয়-“…. কবিতায় জাগে/আমার বিবেক, আমার বাবুদ/বিস্ফোরণের আগে।” এভাবেই কবিতাটিতে আলোড়িত
কবিসত্তার বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, প্রত্যাঘাতের স্বপ্নের প্রকাশ লক্ষ করা যায়।