WBCHSE Class 12 Bangla Chapter 2 Solution | Bengali Medium

Class 12 Chapter 2 Solution

ভাত

MCQs

১. বুড়োকর্তার বাঁচার কথা ছিল-

ক) চুরাশি বছর 

খ) আটানব্বই বছর

গ) নব্বই বছর 

ঘ) বিরাশি বছর

২. “তুমি কী বুঝবে সতীশবাবু!”- সতীশবাবুর যা বোঝার কথা নয়, তা হল-

ক) অভাব কাকে বলে

খ) ভাত না খেতে পারার জ্বালা

গ) দুর্যোগে মানুষের কতখানি কষ্ট হয় 

ঘ) উপরের সবগুলিই 

৩. “দেহে ক্ষমতা ছিল না।”- দেহের ক্ষমতাকে ছাপিয়ে উৎসবের কাঠ কাটার কারণ-

ক) একমুঠো ভাতের আশা 

খ) সামান্য কিছু টাকা পাওয়া যাবে

গ) সে তার গ্রামে ফিরতে পারবে 

ঘ) আর কেউ এই কাজটি করতে রাজি ছিল নাম

৪. “উচ্ছবের চোখের কোলে জল গড়ায়।”-তার এমন পরিস্থিতির কারণ-

ক) সে সতীশবাবুর দুঃখের কথা শুনেছে 

খ) যজ্ঞের ধোঁয়া তার চোখে এসে লেগেছে 

গ) স্ত্রী-ছেলেমেয়ের কথা তার মনে পড়ে গেছে 

ঘ) মন্দিরের চাতালের ছেলেরা তাকে অপমান করেছে

৫. “ফোন করোচো?”-বক্তা কোথায় ফোন করার কথা বলেছেন?

ক) বড়োবাজারে

খ) শ্যামবাজারে

গ) বাগবাজারে 

ঘ) বিলেতে 

৬. যজ্ঞের জন্য উচ্ছব কাঠ কেটেছিল-

ক) পাঁচ মন

খ) আড়াই মন

গ) দেড় মন

ঘ) এক মন

৭. মন্দিরের চাতালে কতগুলি ছেলে তাস খেলছিল? 

ক) দুজন

খ) তিন জন

গ) চার জন

ঘ) পাঁচ জন

৮. “মানুষ থাকলে ও ঠিকই বুঝত যে-” কী বোঝার কথা বলা হয়েছে? 

ক) বড়ো বাড়িতে যজ্ঞের আয়োজন চলছে 

খ) বড়োপিসিমা অবিবাহিত

গ) বুড়োকর্তা মারা গেছে 

ঘ) জলের টানে মানুষ ভেসে গেছে 

৯. “একন চান করব না।”-উৎসব চান করতে চায়নি কেন? 

ক) বুড়োকর্তার দাহের পরই সে চান করবে 

খ) মাথায় জল পড়লে তার পেট মানতে চায় না

গ) অবেলায় চান করলে শরীর খারাপ হবে 

ঘ) সব কাজ সেরেই সে চান করবে।

১০. “রাতে রাতে কাজ সারতে হবে।”-কারণ- 

ক) নইলে মৃতদেহে পচন ধরবে 

খ) নইলে দোষ লাগবে

গ) নইলে সৎকারে বাধা আসবে 

ঘ) নইলে শববাহকদের পাওয়া যাবে না

১১. হোমযজ্ঞ করা সত্ত্বেও বুড়োকর্তাকে বাঁচানো না যাওয়ার কারণ হিসেবে তান্ত্রিক বলেছিল যে-

ক) বুড়োকর্তার তিন ছেলে হোম ছেড়ে উঠে গিয়েছিল

খ) হোমের আগে রান্না করা হয়েছিল 

গ) হোমের আগে অনেকেই খেয়ে নিয়েছিল

ঘ) হোমের কাঠগুলো সমানভাবে কাটা হয়নি

১২. উচ্ছব বাড়িতে ঢুকে বড়োপিসিমার কী শোনে? 

ক) খেদ 

খ) কান্না 

গ) আক্ষেপ 

ঘ) বিলাপ 

১৩. ‘অন্ন লক্ষ্মী’-এ কথা কে বলত? 

ক) পিসিমা 

খ) বাসিনী 

গ) ঠাকুমা

ঘ) বড়োবউ

১৪. “ভাত খাবে সে, ভাত।”-কে?

ক) বাসিনী 

খ) চন্নুনীর মা 

গ) বড়োবউ 

ঘ) উচ্ছব 

১৫. “তান্ত্রিকের নতুন বিধেন হল”-

ক) হোমের জন্য এক টিন গাওয়া ঘি লাগবে 

খ) হোমের সময় কেউ পিছন ফিরে তাকাতে পারবে না 

গ) হোমের আগে সব কিছু রান্না করতে হবে, হোম শেষে তবে খাওয়া যাবে 

ঘ) হোমের দিন বাড়িতে অন্ন স্পর্শ করা যাবে না

১৬. “সতীশবাবু বলেছে, উচ্ছবের মতিচ্ছন্ন হয়েছে বই তো নয়।”- তাঁর এমন মন্তব্যের কারণ-

ক) উচ্ছব তার স্ত্রী-সন্তানকে দেখার জন্য অস্থির হচ্ছিল 

খ) বড়ো বাড়ি থেকে উচ্ছবের কাজ চলে গিয়েছিল 

গ) বাড়ি ভাঙার শোকে উচ্ছব হাহাকার করছিল 

ঘ) উচ্ছব একমুঠো ভাতের জন্য পাগল হয়ে উঠেছিল 

১৭. “এসব কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়।”-কারণ-

ক) ভাত খেতে পাবে সে 

খ) স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে ফিরে পাবে সে

গ) সে বাদাটার খোঁজ পাবে 

ঘ) বাড়িতে ফিরবে সে

১৮. “.. উচ্ছব তাড়াতাড়ি হাত চালায়।”-কেন-না- 

ক) অতি দ্রুত তাকে বাইরে যেতে হবে

খ) এখনই রান্না করা প্রয়োজন 

গ) কাঠ কাটলে হোম, হোম হলে ভাত

ঘ) হোমের কাঠের তখনই প্রয়োজন

১৯. “উচ্ছব আবার কাঠ কাটতে থাকে।” –

ক) প্রতিটি কাঠ লম্বায়ক দেড় হাত 

খ) দুই হাত 

গ) আড়াই হাত

ঘ) এক হাত 

২০. বাসিনী লুকিয়ে উচ্ছবকে কী খেতে দিয়েছিল? 

ক) চিড়ে 

খ) মুড়ি 

গ) বাতাসা 

ঘ) ছাতু 

২১. “দেবতার গতিক ভালো নয়কো।”-বক্তা হলেন-

ক) বাসিনী 

খ) বড়োেবউ 

গ) উচ্ছব 

ঘ) চন্নুনীর মা 

২২. কী উচ্ছবকে বড়ো উতলা করে? 

ক) বাদার চালের গন্ধ 

খ) যজ্ঞ শেষে ভাত পাবার আশা 

গ) বউ-ছেলেমেয়ের কথা

ঘ) ফুটন্ত ভাতের গন্ধ 

প্রশ্ন ২৩. “সকালে লোকজন উচ্ছবকে সেখানেই ধরে ফেলে।”-জায়গাটি হল-

ক) রাস্তায় 

খ) স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে 

গ) পার্কে

ঘ) ট্রেনে

২৪. ট্রেন ধরে উচ্ছব প্রথমে কোথায় যাবে ভেবেছিল?

ক) সুন্দরবনে 

খ) কালীঘাটে 

গ) দেশ-গাঁয়ে 

ঘ) ক্যানিং-এ

২৫. “উচ্ছবের মাথায় এখন বুদ্ধি স্থির,…”-উচ্ছব যে বুদ্ধিটি করেছিল, তা হল-

ক) ভাতগুলোকে সে ছেলেমেয়েদের জন্য নিয়ে যাবে 

খ) ভাতগুলো দূরে ফেলার নাম করে তা নিজেই খেয়ে নেবে 

গ) অনেক না খেতে পাওয়া লোকের সঙ্গে ভাগ করে ভাতগুলো খাবে

ঘ) ভাতগুলো নিয়ে সে গ্রামে ফিরে যাবে

২৬. “ত্রস্ত বাসিনী প্রায় ছুটে আসে,”-তার এভাবে ছুটে আসার কারণ-

ক) উচ্ছব অশৌচ বাড়ির ভাত খাওয়ার উপক্রম করেছিল 

খ) কুকুরেরা উচ্ছবকে ঘিরে ধরেছিল 

গ) পুলিশ উচ্ছবকে তাড়া করে ধরতে চাইছিল 

ঘ) খালি পেটে কাঠ কাটার যন্ত্রণায় উচ্ছব চিৎকার করে উঠেছিল

২৭. “বাসিনী থমকে দাঁড়ায়।”-কারণ সে দেখল-

ক) পিছন থেকে বড়োপিসিমা তাকে ডাকছে

খ) একদল পুলিশ আসছে 

গ) উৎসব হিংস্রভাবে তার দাঁত বের করেছে 

ঘ) উৎসব বসে ভাত খাচ্ছে

২৮. “সে স্বর্গসুখ পায় ভাতের স্পর্শে।”-ভাতের স্পর্শে উচ্ছবের স্বর্গসুখ লাভের কারণ-

ক) বহুদিন সে ভাত খেতে পায়নি 

খ) এত ভালো চালের ভাত সে আগে কখনও খায়নি 

গ) সে বুটির থেকেও ভাত খেতে বেশি ভালোবাসে 

ঘ) প্রচুর খাটাখাটনির পর সে একমুঠো ভাত পেয়েছিল

২৯. “সবুস্ব রান্না পথে ঢেলে দিগে যা” বলেন-

ক) বড়োপিসিমা 

খ) বাসিনী 

গ) উচ্ছব 

ঘ) সতীশবাবু

৩০. “আসল বাদাটার খোঁজ করা হয় না আর উচ্ছবের।”-তার সেই বাদা খোঁজ না করতে পারার কারণটি হল- 

ক) তাকে পুলিশে দেওয়া হয়েছিল 

খ) সত্যিই সেরকম কোনো বাদার অস্তিত্ব ছিল না

গ) বাড়ি ফেরার তাগিদে তার হাতে সময় ছিল না

ঘ) বাসিনী তাকে বাদায় যেতে নিষেধ করেছিল

৩১. বুড়োকর্তার মৃতদেহ সৎকারে নিয়ে যাওয়া হয়-

ক) রাত একটার পর 

খ) রাত বারোটার পর 

গ) রাত ন-টার পর

ঘ) রাত দুটোর পর

৩২. “রাস্তার দোকান থেকে চা আসতে থাকে।” কারণ- 

ক) বাড়িতে চায়ের ব্যবস্থা ছিল না 

খ) বাড়িতে চা করার মতো কেউ ছিল না

গ) বাড়িতে উনুন জ্বলবে না 

ঘ) বাড়িতে সবাই কাজে ব্যস্ত ছিল

৩৩. উচ্ছব ভোরের ট্রেন ধরে কোন্ স্টেশনে যাবে? 

ক) শিয়ালদহ

খ) মগরাহাট

গ) ক্যানিং

ঘ) লক্ষ্মীকান্তপুর

প্রশ্ন ৩৪. “মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়।” কারণ

ক) পিতলের ডেকচি চুরির অপরাধে 

খ) বাবুর বাড়িতে চুরি করার মতলব আঁটার জন্য।

গ) ভাতের জন্য খুনখারাপির অপরাধে

ঘ) বউ-ছেলেমেয়েকে খেতে না দেওয়ার অপরাধে

 ১. ‘ভাত’ গল্পে মুমূর্ষু বৃদ্ধের স্ত্রীকে ভালোমন্দ রান্না করে খাওয়াচ্ছিল-

ক) বাসিনী 

খ) বামুন ঠাকুর

গ) বড়োবউ 

ঘ) মেজোবউ

২. বড়োবউ যখন বুড়োকর্তার ঘরে গিয়েছিল, তখন সে ঘরে আর কে ছিল?

ক) বড়োপিসিমা

খ) মেজোবউ

গ) বাসিনী 

ঘ) নার্স 

৩. বড়ো বাড়ির কোন্ ছেলে বিলেতে থাকে? 

ক) বড়ো ছেলে 

খ) মেজো ছেলে 

গ) সেজো ছেলে

ঘ) ছোটো ছেলে

৪. ‘ভাত’ গল্পের বড়ো বাড়ির ছেলেরা সকাল ক-টার আগে ঘুম থেকে ওঠে না? 

ক) আটটা  

খ) নন্টা

গ) দশটা

ঘ) এগারোটা

৫. ‘ভাত’ গল্পে বড়োপিসিমাদের কতগুলি দেবত্র বাড়ি ছিল? 

ক) পনেরোটা

খ) আঠারোটা

গ) বারোটা

ঘ) ষোলোটা

৬. হোমযজ্ঞের জন্য তান্ত্রিক এনেছিলেন-

ক) মেজো ছেলে 

খ) মেজোবউয়ের বাবা

গ) বড়ো ছেলের শ্বশুর 

(ঘ) ছোটোবউয়ের বাবা

৭. ‘ভাত’ গল্পে যজ্ঞের জন্য কোথা থেকে বালি আনার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল? 

ক) নদী

খ) সমুদ্র

গ) শ্মশান

ঘ) কবরখানা

৮. কোন্ গ্রন্থটি মহাশ্বেতা দেবীর লেখা নয়?

ক) অরণ্যের অধিকার

খ) হাজার চুরাশির মা 

গ) সিধু-কানুর ডাকে 

ঘ) টানাপোড়েন

৯. ‘ভাত’ গল্পটি প্রকাশিত হয়েছিল কোন্ পত্রিকায়?

ক) কল্লোল

খ) আনন্দবাজার 

গ) ম্যানিফেস্টো 

 ঘ) আজকাল

১০. “উনি হলেন দেবতার সেবিকা।” উনি বলতে যাঁর কথা বলা হয়েছে-

ক) বড়োবউ

খ) বড়োপিসিমা

গ) চলুনীর মা

ঘ) মহাশ্বেতা দেবী 

১১. “উনি আমার পতিদেবতা।” বক্তা হলেন-

ক) বড়োবউ 

খ) বড়োপিসিমা

গ) চন্নুনীর মা

ঘ) এদের কেউ নয়

১২. “বাদা থেকে চাল আসছে।”- ‘বাদা’ শব্দের অর্থ হল-

ক) পাত্র 

খ) রেশন 

গ) দোকান

ঘ) নিম্নভূমি 

১৩. কোন্ গাছের কাঠ তান্ত্রিকের যজ্ঞে লাগেনি? 

ক) অশ্বত্থ

খ) বট

গ) আম 

ঘ) তেঁতুল 

১৪. ‘ভাত’ গল্পে লোকটার চেহারা ছিল-

ক) দেহাতি

খ) বুনো-বুনো

গ) খুব লম্বা

ঘ) ভদ্র

১৫. “উনি হলেন দেবতার সেবিকা।” বড়োপিসিমাকে ‘দেবতার সেবিকা’ বলার কারণ- 

ক) তিনি প্রতিদিনই দেবতার পুজো করতেন

খ) বাড়ির গৃহদেবতা শিবের অত্যন্ত ভক্ত ছিলেন

গ) মনে করা হয় শিবঠাকুরের সঙ্গে ওঁর বিয়ে হয়েছিল 

ঘ) তিনি একজন সেবিকার মতো দেবতাকে দেখাশোনা করতেন

১৬. “সেই ডেকে আনলে।”- এখানে বাসিনী ডেকে এনেছে- 

ক) বাড়ির বুড়োকর্তাকে 

খ) বুনো-বুনো চেহারার একটা লোককে 

গ) বড়োপিসিমাকে 

ঘ) বাড়ির বড়োবউকে

১৭. “বড়ো বউ চুপ করে যায়।”-তার এই চুপ করে যাওয়ার কারণ-

ক বড়োপিসিমার ঠেস দেওয়া কথাবার্তা 

খ)বড়োপিসিমা চুপ করতে বলেছিলেন বলে

গ) আর কোনো কথা খুঁজে পায় না বলে

 ঘ) বড়োপিসিমার কথায় খুব রাগ হয়ে যায় বলে

 ১৮. “যজ্ঞি-হোম হচ্ছে।” যজ্ঞি-হোমের জন্য আনা হয়েছিল- 

ক) বেল, বেলকাঠ, ধুনো, বাতাসা

খ) আম, বেল, জাম, ক্যাওড়া গাছের কাঠ 

গ) বেল, বট, অশ্বত্থ, আম গাছের কাঠ 

ঘ) বেল, ক্যাওড়া, অশ্বত্থ, বট, তেঁতুল কাঠ 

১৯. “চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসে তার।”-বাদার লোকটির এমন অবস্থার কারণ- 

ক) সে প্রচুর কাঠ কাটার যন্ত্রণায় ছটফট করছিল

খ) সে বাবুদের বাড়িতে নানা রকমের চালের ভাত রান্না হতে দেখেছিল 

গ) সে বাবুদের বাড়ির বড়ো কর্তার ওপর রেগে গিয়েছিল

ঘ) বড়োপিসিমা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিল

 ২০. ‘কনকপানি’ চালের ভাত খান-

ক) বড়োবাবু

খ) মেজোবাবু

গ) ছোটোবাবু 

ঘ) পিসিমা

২১. বড়ো বাড়িতে মেজো আর ছোটো ছেলের জন্য বারোমাস কোন্ চাল রান্না হয়? 

ক) ঝিঙেশাল

খ) রামশাল 

গ) পদ্মজালি

ঘ) কনকপানি

২২. “সেই জন্যেই তাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি।”- কারণ-

ক) তারা ঘরজামাই থাকে

খ) তারা এগারোটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না 

গ) তারা অসুস্থ 

ঘ) তারা বাড়ির কাজে ব্যস্ত

২৩. “রেঁধে-বেড়ে শাশুড়িকে খাওয়ানো তার কাজ।”-যার কাজ সে হল- 

ক) বড়োবউ

খ) মেজোবউ 

গ) বাসিনী

ঘ) ছোটোবউ 

২৪. রামশাল চালের ভাত কীসের সঙ্গে খাওয়া হত?

ক) ডাল-তরকারি

খ) সবজি

গ) মাছ 

ঘ) মাংস

২৫. নিরামিষ তরকারির সঙ্গে যে চালের ভাত খাওয়া হত, তা হল- 

ক) কনকপানি 

খ) পদ্মজালি 

গ) রামশাল 

ঘ) ঝিঙেশাল 

২৬. “খুবই অদ্ভুত কথা”-‘অদ্ভুত কথা’-টি কী?

ক) উচ্ছব কয়েকদিন খায়নি

খ) বড়োপিসিমার বিয়ে হয়নি

গ) সবাইকে হারিয়েও উচ্ছব ভাত খেতে চেয়েছে 

ঘ) উচ্ছবকে বড়োবউয়ের পছন্দ হয়নি

২৭. বড়ো বাড়িতে মাছের সঙ্গে যে চালের ভাত রান্না হয়, তা হল-

ক) ঝিঙেশাল 

খ) কনকপানি 

গ) রামশাল

ঘ) পদ্মজালি

২৮. “ময়ূরছাড়া কার্তিক আসবে নাকি?”- কার কথাপ্রসঙ্গে এই উক্তি? 

ক) বুড়োকর্তা 

খ) উচ্ছব

গ) বুড়ো ছেলে

ঘ) মেজো ছেলে

২৯. বুড়োকর্তার ক্যানসার হয়েছিল-

ক) লিভারে

খ) ফুসফুসে 

গ) প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডে 

ঘ) গলায়

৩০. “… ভাত খাবে কাজ করবে।”-উক্তিটির বক্তা-

ক) বামুনঠাকুর

খ) বড়োপিসিমা

গ) বড়োবউ 

ঘ) বাসিনী

৩১. “… অমন বড়োলোক হয়েও ওরা মেয়ের বিয়ে দেয়নি।”- কারণ-

ক) বুড়োকর্তাকে দেখাশোনার জন্য

খ) মেয়ের বিয়েতে অনিচ্ছার জন্য

গ) সংসার সামলানোর জন্য

ঘ) দেবতার সেবা করার জন্য

৩২. “দূরদর্শী লোক ছিলেন।”-কে? 

ক) বুড়োকর্তা

খ) বড়োপিসিমা 

গ) হরিচরণ

ঘ) মহানাম

৩৩. “…বুড়ো কর্তা সংসার নিয়ে নাটা-ঝামটা হচ্ছিল।” কারণ-

ক) বুড়োকর্তার বয়স হয়ে গিয়েছিল 

খ) বুড়োকর্তার শরীর ভেঙে পড়েছিল 

গ) বুড়োকর্তার বউ মারা গিয়েছিল 

ঘ) বুড়োকর্তার অবস্থা পড়ে গিয়েছিল

৩৪. “আমাদের বাসিনীর কে হয়। সেই ডেকে আনলে।”-বাসিনী উৎসবকে ডেকে এনেছিল কেন?

 ক) ঝড়জলে লোকটির দেশ ভেসে গেছে 

 খ) লোকটি খুব পরিশ্রমী ও সৎ

 গ) লোকটির খাওয়া জুটছে না 

 ঘ) লোকটি বাসিনীর গ্রামের লোক

৩৫. “ময়ূরছাড়া কার্তিক আসবে নাকি?”- উক্তিটির বক্তা-

ক) বড়োপিসিমা 

খ) বাসিনী 

গ) বড়োবউ

ঘ) মেজোবউ

৩৬. “…তাই বড়ো বউ জানতো না।”- কী জানত না?

ক) পিসিমার বিয়ে হয়নি

খ) উৎসব কাজ করতে এসেছে 

গ) লিভারে যে ক্যানসার হয় 

ঘ) বাড়িতে হোমযজ্ঞ হচ্ছে

৩৭. মেজোবউ রান্না করছিল- 

ক) পুকুরপাড়ে 

খ) মাঠের ধারে 

গ) উনোনপাড়ে 

ঘ) রাস্তার ধারে

৩৮. বড়ো বাড়িতে কনকপানি চালের ভাত রান্না হয়-

ক) বামুন-চাকর-ঝিদের জন্যে

খ) মেজো আর ছোটোর জন্য 

গ) বড়োবাবুর জন্য

ঘ) নিরামিষ ডাল- তরকারির সঙ্গে খাবার জন্য

৩৯. “কালো বিড়ালের লোম আনতে গেছে”-

ক) ভজন চাকর 

খ) বড়োপিসিমা

গ) উচ্ছব

ঘ) বড়োবউ

৪০. উচ্ছবকে বড়োবাড়িতে কে নিয়ে এসেছিল?

ক) ভজন চাকর

খ) বাসিনী 

গ) তান্ত্রিক 

ঘ) ছোটোবউয়ের বাবা

৪১. বাসিনীর মনিববাড়ির বড়োকর্তার বয়স হয়েছিল- 

ক) বিরাশি বছর 

খ) আশি বছর 

গ) চুরাশি বছর 

ঘ) তিরাশি বছর

৪২. “বড়ো বউ কোনো কথা বলে না।”- কারণ-

ক) বড়োপিসিমার সব কথাই সত্যি 

খ) বড়োপিসিমার সব কথাই বানানো

গ) বড়োপিসিমার সব কথাই মিথ্যে

ঘ) বড়োপিসিমার সব কথাই হুল-ফোটানো

৪৩. বামুন-চাকর-ঝিদের জন্য কোন্ চাল রান্না করা হয়? 

ক) রামশাল

খ) কনকপানি 

গ) পদ্মজালি 


ঘ) মোটা-সাপ্টা

৪৪. “বড়োবউ ভাবতে চেষ্টা করে”-কী ভাবতে চেষ্টা করে?

ক) তখন আর মাছ আসবে না 

খ) কত কাজ বাকি আছে 

গ) তখনও চাঁদ সূর্য উঠবে কি না 

ঘ) তখনও সসাগরা পৃথিবীতে থাকবে কি না

৪৫. ‘ভাত’ গল্পে বুড়ো কর্তার যা রোগ হয়েছিল- 

ক) যক্ষ্মা 

খ) ম্যালেরিয়া 

গ) টাইফয়েড 

ঘ) ক্যানসার 

৪৬. বড়ো বাড়ির হোম-যজ্ঞি করতে এসেছিল-

ক) বেদজ্ঞ পণ্ডিত 

খ) শাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণ 

গ) কুল-পুরোহিত 

ঘ) তান্ত্রিক 

৪৭. “তোরেও তো টেনে নেচ্ছেল।”-বক্তা কে?

ক) বাসিনী 

খ) সাধন 

গ) ভজন

ঘ) সতীশ

৪৮. উচ্ছবের বাবার নাম ছিল- 

ক) সাধন 

খ) ভজন 

গ) হরিহর 

ঘ) হরিচরণ

৪৯. “সরকার ঘর কত্তে খরচা দেবে শুনছ না?” বক্তা কে?

ক) সাধন 

খ) ভজন 

গ) সতীশ 

ঘ) মহানাম

৫০. উচ্ছবের মেয়ের নাম

ক) চন্নুনী

খ) চন্দনা 

গ) রাধা

ঘ) চন্দ্রিকা

৫১. “টিনের বেশ একটা মুখবন্ধ কৌটো ছিল ঘরে।”- কৌটোটিতে ছিল- 

ক) বেশ পুরোনো কয়েকটি কড়ি 

খ) একটা মুখবন্ধ খাম

গ) উচ্ছব দাসের জন্মঠিকুজি 

ঘ) একটি দরখাস্তের প্রতিলিপি

৫২. “সে এটা কতা বটে।”—কথাটি হল- 

ক) সরকার ঘর করার জন্য খরচ দিতে চায়

খ) সরকার সবার জন্যই কিছু কাজের ব্যবস্থা করতে চায় 

গ) সরকার চায় সবাই এই গাঁয়েই থাকুক

ঘ) সরকার চেয়েছিল গ্রামের লোকেদের জন্য লঙ্গরখানা বানাতে

৫৩. “এ গল্প গ্রামে সবাই শুনেছে।”-গল্পটা হল-

ক) বাসিনীর মনিব বাড়িতে হেলাঢেলা ভাত

খ) বাসিনীর মনিব খুব ভালো লোক 

গ) বাসিনীর মনিব সতীশবাবুর আত্মীয়

ঘ) বাসিনীর মনিব বাড়িতে লোকের মেলা

৫৪. “… তাই রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি।”- কার? 

ক) বাসিনীর 

খ) বুড়োকর্তার 

গ) উচ্ছবের 

ঘ) পিসিমার

৫৫. উচ্ছবের ঘর ছিল-

ক) পদ্মা নদীর তীরে

খ) গঙ্গা নদীর তীরে 

গ) ভাগীরথী নদীর তীরে 

ঘ) মাতলা নদীর তীরে

৫৬. উৎসবের গ্রাম সম্পর্কিত বোনের নাম- 

ক) বাসিনী

খ) চন্নুনী 

গ) লক্ষ্মী 

ঘ) টুনু

৫৭. “যত দিন রান্না খিচুড়ি দেয়া হচ্ছিল ততদিন সে খেতে পারেনি।”-উচ্ছব রান্না খিচুড়ি খেতে পারেনি, কারণ-

ক) সে কলকাতায় গিয়েছিল

খ) সে কাঠ কাটায় ব্যস্ত ছিল 

গ) সে বউ-ছেলেমেয়েকে খুঁজছিল

ঘ) সে সতীশবাবুর কাছে ছিল

৫৮. বুড়োকর্তার তৈরি শিব মন্দিরের ত্রিশূলটি ছিল-

ক) সোনার 

খ) রুপোর 

গ) পিতলের

ঘ) তামার 

৫৯. “অ উচ্ছব, মনিবের ধান যায় তো তুই কাঁদিস কেন?”-উচ্ছব নাইয়ার মনিব ছিল-

ক) সতীশবাবু 

খ) মহানাম শতপথি 

গ) হরিচরণ নাইয়া

ঘ) সাধনবাবু

৬০. লুকিয়ে লুকিয়ে চাল বিক্রি করে-

ক) বড়োপিসিমা 

খ) বাসিনী 

গ) মেজোবউ

ঘ) বড়োবউ [

৬১. “বাসিনী বাগ্যতা করি তোর”-বক্তা কে? 

ক) সেজো বউ 

খ) উচ্ছব

গ) হরিচরণ 

ঘ) বড়োপিসিমা

৬২. ‘বাবুরা খায়’-বাবুরা কী খায়?

ক) নানাবিধ চাল 

খ) নানাবিধ ফল 

গ) নানাবিধ পানীয়

ঘ) নানাবিধ শাক

Very Short Answer Question

১. সতীশবাবু উচ্ছবকে ভাত খেতে দেননি কেন?

▶ উচ্ছবকে ভাত খেতে দিলে দলে দলে অভুক্ত মানুষ ভাতের জন্য তাঁর বাড়িতে এসে জড়ো হবে বলে সতীশবাবু উচ্ছবকে ভাত খেতে দেননি।

২. ‘প্রেত’ হয়ে থাকা উচ্ছব কীভাবে ‘মানুষ’ হবে বলে মনে করেছে?

> দীর্ঘদিন ভাত খেতে না পেয়ে ‘প্রেত’ হয়ে থাকা উচ্ছব ভাত খেলে ‘মানুষ’ হবে বলে মনে করেছে।

৩. “ভাত খেলে সে মানুষ হবে।”-মানুষ হলে সে কী করবে?

▶ উচ্ছব ভাত খেয়ে প্রেত থেকে মানুষে পরিণত হলে মৃত বউ-ছেলেমেয়ের জন্য কাঁদবে।

৪. আড়াই মন কাঠ দালানে রেখে আসার পর কী কাজ করে উচ্ছব?

▶ আড়াই মন কাঠ দালানে রেখে এসে উচ্ছব উঠোনে পড়ে-থাকা কাঠের ছোটো-বড়ো টুকরোগুলি ঝুড়িতে তুলে রেখে উঠোন ঝাঁট দেয়।

৫. তান্ত্রিক হোম শুরু করার আগে বুড়োকর্তার রোগকে কী করেন?

▶ তান্ত্রিক হোম শুরু করার আগে হঠাৎ চিৎকার করে একটা মন্ত্র পড়ে বুড়োকর্তার রোগকে দাঁড় করান এবং তারপর কালো বিড়ালের লোম দিয়ে তাকে বাঁধেন।

৬. তান্ত্রিক বুড়োকর্তার রোগকে দাঁড় করানোর জন্য কোন্ মন্ত্র আওড়েছিলেন?

▶ ‘তান্ত্রিকের আওড়ানো মন্ত্রটি হল-“ওঁং হ্রীং ঠং ঠং ভো ভো রোগ শৃণু শৃণু”।

৭. তান্ত্রিক হোম শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই কী ঘটেছিল? অথবা, হোম শুরু হতেই কী ঘটেছিল?

▶ তান্ত্রিক হোম শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই দোতলা থেকে নার্স নেমে এসে ডাক্তারকে খবর দিতে বলেছিল।

৮. “বড়ো, মেজ ও ছোটো ঘুম ভাঙা চোখে বিরস মুখে হোমের ঘর থেকে বেরিয়ে যায়…।” কখন এই ঘটনা ঘটে?

▶ তান্ত্রিক হোম শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই দোতলা থেকে নার্স নেমে এসে ডাক্তারকে কল দিতে বললে বুড়োকর্তার তিন ছেলে হোমের ঘর থেকে বিরস মুখে বেরিয়ে যায়।

৯. বাসিনী উচ্ছবকে স্নান করতে বললে উচ্ছব রাজি হয় না কেন?

▶ উচ্ছব স্নান করতে রাজি হয় না কারণ মাথায় জল পড়লে তার পেটের খিদে আর তাকে মানতে চাইবে না।

১০. নার্স ডাক্তারকে কল দিতে বলার পর উচ্ছব কোথায় যায়?

▶ নার্স ডাক্তারকে কল দিতে বলার পর উচ্ছব বাইরে গিয়ে শিবমন্দিরের চাতালে বসে।

১১. “…উচ্ছব সেই বাদাটা খুঁজে বের করবে।” -কোন্ বাদার কথা বলা হয়েছে?

 ▶ বড়ো বাড়ির অধিকৃত যে বাদায় প্রচুর ধানের ফলন হয়, সেই বাদাটার কথাই এখানে বলা হয়েছে।

34

১২. মন্দিরের চাতালে তাস পেটাতে থাকা তিনটি ছেলে কী বলেছিল?

▶ মন্দিরের চাতালে তাস পেটাতে থাকা তিনটি ছেলে বলেছিল যে, বড়ো বাড়ির বুড়োকে বাঁচানোর জন্য হোম হচ্ছে। তারা আরও বলে এসব ফালতু।

১৩. উচ্ছবের চোখে জল আসে কেন?

► দুর্যোগের রাতে মাতলা নদী পাগল হয়ে পাড়ে উঠে না আসলে উচ্ছবের বউ-ছেলেমেয়ে আরও অনেকদিন বাঁচত-এ কথা ভেবেই উচ্ছবের চোখে জল আসে।

১৪. “তাস পিটানো ছেলেগুলি অস্বস্তিতে পড়ে।”- তারা কেন অস্বস্তিতে পড়ে? [হেয়ার স্কুল; যাদবপুর বিদ্যাপীঠ]

▶ উচ্ছব যখন তাস পেটানো ছেলেদের বলে যে, ঝড়জলে তার সব কিছু, এমনকি তার ঘরের মানুষরাও চলে গেছে, তখন তারা অস্বস্তিতে পড়ে।

১৫. উচ্ছবের ঘুম কীভাবে ভেঙে যায়?

► একটা লোকের পায়ের ধাক্কা খেয়ে উচ্ছবের ঘুম ভেঙে যায়।

১৬. মন্দিরের চাতালে ঘুমোনো উচ্ছবকে উঠিয়ে একজন তাকে কী বলেছিল?

▶ উচ্ছব চুরির মতলবে মন্দিরের চাতালে শুয়ে আছে কি না জিজ্ঞাসা করেছিল।

১৭. ঘুম থেকে উঠে বড়ো বাড়িতে ঢোকার আগে কী লক্ষ করেছিল উচ্ছব?

▶ ঘুম থেকে উঠে বড়ো বাড়িতে ঢোকার আগে উচ্ছব রাস্তায় দাঁড়ানো বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং ছোটো ছোটো কয়েকটি জটলা লক্ষ করেছিল।

১৮. বুড়োকর্তা মারা যাওয়ার পর বড়োপিসিমা সেই মৃত্যুর জন্য কাকে দোষারোপ করেছিলেন?

▶ বুড়োকর্তার মৃত্যুর জন্য বড়োপিসিমা তাঁর ছোটো বেয়াইয়ের নিয়ে আসা তান্ত্রিককে দোষারোপ করেছিলেন।

১৯. “নইলে দোষ লাগবে।” কী হলে দোষ লাগবে?

▶ বুড়োকর্তার মৃতদেহ বের করে রাতারাতিই দাহকর্ম শেষ করতে না পারলে দোষ লাগবে বলা হয়েছিল।

২০. তান্ত্রিক বুড়োকর্তার মৃত্যুতে নিজের দোষ ঢাকতে কী অজুহাত দিয়েছিলেন?

▶ তান্ত্রিক বুড়োকর্তার মৃত্যুর পর নিজের দোষ ঢাকতে অজুহাত দিয়েছিলেন

যে বুড়োকর্তার তিন ছেলে হোম ছেড়ে উঠে গিয়েছিল বলেই তিনি বুড়োকর্তাকে বাঁচাতে পারেননি।

২১. মন্দিরের চাতালে কয়টি ছেলে তাস খেলছিল?

▶ বড়ো বাড়ি থেকে বেরিয়ে উচ্ছব যে শিবমন্দিরের চাতালে বসেছিল সেখানে তিনটি ছেলে তাস খেলছিল।

২২. “অন্ন লক্ষ্মী, অন্ন লক্ষ্মী, অন্নই লক্ষ্মী…”-এ কথা কে বলত?

▶ মহাশ্বেতী দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্পে উচ্ছবের ঠাকুমা এ কথা বলত।

২৩. বুড়োকর্তার মৃতদেহ বহন করে নিয়ে যাওয়ার খাট কোথায় তৈরি হয়েছিল?

▶ বুড়োকর্তার মৃতদেহ বহনের খাট বাগবাজার থেকে তৈরি হয়েছিল।

২৪. “তুমি কী বুঝবে সতীশবাবু!”- কী না বোঝার কথা বলা হয়েছে?

▶ সতীশবাবু নদীর পাড়ে, মাটির ঘরে থাকে না বলে সেখানে বাস করার যে দুঃখকষ্ট তা না বোঝার কথা বলা হয়েছে।

২৫. কীজন্য ‘হুতাশে’ ‘সেদিন’ কতটা কাঠ কেটেছিল উচ্ছব?

▶ ভাতের ‘হুতাশে’ আড়াই মন কাঠ কেটেছিল উচ্ছব।

২৬. কখন বুড়োকর্তার মৃতদেহ বের করা হয়েছিল?

▶ রাত একটার পর বুড়োকর্তার মৃতদেহ বের করা হয়েছিল।

২৭. ‘ভাত’ গল্পে শববাহকদের পেছন পেছন কারা দৌড়ে চলেছিল?

▶ ‘ভাত’ গল্পে শববাহকদের পেছন পেছন কীর্তনের দল দৌড়ে চলেছিল।

২৮. বামুন কেন বড়ো বাড়ির অশুচি হয়ে যাওয়া খাবারগুলি দূরে ফেলে দিতে বলেছিল?”

• বড়ো বাড়ির অশুচি হয়ে যাওয়া খাবারগুলি কুকুরে ছেটাবে এবং সকালে

কাকে ঠোকরাবে বলে বামুন খাবারগুলি দূরে ফেলে দিতে বলেছিল।

২৯. “বাসিনী থমকে দাঁড়ায়।”-কী দেখে বাসিনী থমকে দাঁড়ায়?

▶ উচ্ছব বাদার কামটের মতো হিংস্র চোখে দাঁতগুলো বের করে হিংস্র মুখভঙ্গিতে বাসিনীর দিকে ফিরে তাকালে বাসিনী থমকে দাঁড়ায়।

৩০. উচ্ছবকে যখন পুলিশ ধরে তখন সে কী করছিল?

▶ উচ্ছবকে যখন পুলিশ ধরে তখন সে ফাঁকা প্ল্যাটফর্মে ভাতের খালি ডেকচিটি জড়িয়ে ধরে তার কিনারায় মাথা ছুঁইয়ে ঘুমিয়েছিল।

৩১. পুলিশ কোন্ অভিযোগে উচ্ছবকে থানায় নিয়ে যায়?

 ▶ পেতলের ডেকচি চুরি করার অপরাধে উচ্ছবকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।

৩২. পেট ভরে ভাত খাওয়ার পর উচ্ছব কী পরিকল্পনা করেছিল?

▶ পেট ভরে ভাত খাওয়ার পর উচ্ছব ভোরের ট্রেনে ক্যানিং গিয়ে সেখান থেকে দেশের বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল।

৩৩. “…সে স্বর্গ সুখ পায় ভাতের স্পর্শে।”- কেন স্বর্গসুখ পায়? অথবা, “সে স্বর্গসুখ পায়…।”-কে, কীভাবে স্বর্গসুখ পায়?

• দীর্ঘদিন পর অভুক্ত উচ্ছব ভাত খেতে পেয়েছিল বলে ভাতের স্পর্শে সে স্বর্গসুখ পায়।

৩৫. ঝড়-বৃষ্টির রাতে উচ্ছব কী কী খেয়েছিল? অথবা, “সেই সন্ধ্যেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল।”- সে কী খেয়েছিল?

▶ ঝড়-বৃষ্টির সন্ধ্যায় উচ্ছব হিঞ্চে শাক সেদ্ধ এবং গুগলি সেদ্ধ, নুন ও লংকাপোড়া দিয়ে ভাত মেখে খেয়েছিল।

৩৬. “খেতে খেতে চন্নুনীর মা বলেছিল…” – চন্নুনীর মা কী বলেছিল?

▶ চন্নুনীর মা খেতে খেতে বলেছিল যে, দেবতার লক্ষণ ভালো নয় যারা নৌকা নিয়ে বেরিয়েছে তারা নৌকা-সহ না ডুবে মরে।

৩৭. “ব্যাস্, সব খোলামেলা, একাকার তারপর থেকে।” -সব একাকার হয়ে যায় কখন থেকে?

▶ ঝড়-বৃষ্টির রাতে হঠাৎ বিদ্যুতের ঝলকানিতে উচ্ছব যখন মাতাল মাতলার সফেন জলকে ছুটে আসতে দেখে তারপর থেকেই তার সব একাকার হয়ে যায়।

৩৮. “তাহলে উচ্ছবের বুকে শত হাতির বল থাকত আজ”-কী হলে এমন হত?

▶ চন্নুনীদের অর্থাৎ উচ্ছবের বউ-ছেলেমেয়েকে যদি ভগবান বাঁচিয়ে রাখতেন, তাহলে উচ্ছবের বুকে শত হাতির বল থাকত।

৩৯. বন্যায় বউ-ছেলেমেয়ে মারা না গেলে বিপর্যয়ের পর কী করত উচ্ছব?

▶ বন্যায় বউ-ছেলেমেয়ে মারা না গেলে উচ্ছবরা সবাই মিলে তাদের টিনের মুখবন্ধ কৌটোটা নিয়ে ভিক্ষেয় বেরোত।

৪০. “সতীশবাবুর নাতি ফুট খায়।” -সতীশবাবু কে ছিল?

▶ সতীশ মিস্তিরি ছিল ধনী কৃষক, যার জমিতে কাজ করে উচ্ছব দিন গুজরান করত।

৪১. মুখবন্ধ টিনের কৌটোটা কোথা থেকে পেয়েছিল উচ্ছব?

▶ সতীশবাবুর নাতির বেবি ফুডের মুখবন্ধ টিনের কৌটোটা উচ্ছবের পছন্দ হয় বলে সতীশবাবুর কাছ থেকে সে কৌটোটা চেয়ে এনেছিল।

৪২. “তান্ত্রিকের নতুন বিধেন হল…”-তান্ত্রিকের পুরোনো বিধান কী ছিল?

▶ তান্ত্রিকের পুরোনো বিধান ছিল যে, হোমে বসার আগে যেন তাড়াতাড়ি খাওয়াদাওয়া সেরে ফেলা হয়।

৪৩. “তান্ত্রিকের নতুন বিধেন হল…” – তান্ত্রিকের নতুন বিধান কী?

▶ তান্ত্রিক নতুন বিধান হল যে, হোমের আগেই সব কিছু রান্না করে রাখতে হবে, কিন্তু খেতে হবে হোমের পরে।

৪৪. বাসিনী উচ্ছবকে লুকিয়ে খাবার দিতে কী অজুহাতে উঠোনে এসেছিল?

▶ বাসিনী ঝুড়িবোঝাই শাক ধুতে আসার অজুহাতে উচ্ছবকে লুকিয়ে খাবার দিতে উঠোনে এসেছিল।

৪৫. উচ্ছবদের বাদায় কী কী পাওয়া যায়?

▶ উচ্ছবদের বাদায় গেঁড়ি, গুগলি, কচু শাক ও সুসনি শাক পাওয়া যায়।

৪৬. ছাতু খাওয়ার পর উচ্ছব কীসে করে জল খেয়েছিল?

▶ ছাতু খাওয়ার পর উচ্ছব মিষ্টির দোকান থেকে ভাঁড় চেয়ে নিয়ে তাতে করে জল খেয়েছিল।

৪৭. “কিন্তু সাগরে শিশির পড়ে।”-উচ্ছব কেন এ কথা বলেছিল?

▶ দীর্ঘদিনের উপোসের পর মাত্র এক ঠোঙা ছাতু খেয়ে খিদে মেটেনি বলেই উচ্ছব বলেছিল যে, ‘সাগরে শিশির পড়ে’।

৪৯. “আসার সময়ে গাঁ-জ্ঞেয়াতি বলেছিল…” – কী বলেছিল?

▶ আসার সময় উচ্ছবকে গ্রামের জ্ঞাতিরা বলেছিল যে, সে যখন কলকাতা যাচ্ছে, তখন কালীঘাটে গিয়ে যেন তার বউ-ছেলেমেয়ের শ্রাদ্ধ সেরে নেয়।

৫০. মহানাম শতপথি উচ্ছবদের গ্রামে এলে কী হবে?

▶ মহানাম শতপথি উচ্ছবদের গ্রামে এলে নদীর পাড়ে সারবন্দিভাবে বন্যায় মৃত মানুষদের শ্রাদ্ধ হবে।

৫১. সতীশবাবু কেন বলেছিলেন, “উচ্ছবের মতিচ্ছন্ন হয়েছে বই তো নয়।”?

▶ বউ-ছেলেমেয়ে অপঘাতে মারা যাওয়ায় উচ্ছব শোকে পাগল হওয়ার কথা। কিন্তু তার পরিবর্তে ‘ভাত ভাত’ করছিল বলে সতীশবাবু বলেছিলেন যে, উচ্ছবের মতিচ্ছন্ন হয়েছে।

৫২. যজ্ঞের জন্য উচ্ছবের কাটা কাঠগুলি কতটা লম্বা ছিল?

▶ যজ্ঞের জন্য উচ্ছবের কাটা কাঠগুলি দেড় হাত লম্বা ছিল।

৫৩. “গরিবের গতর এরা শস্তা দেকে।”-কারা গরিবের গতর সস্তা দেখে?

▶ ‘ভাত’ গল্পে বুড়োকর্তার বাড়ির লোকেরা গরিবের গতর সস্তা দেখে।

৫৪. “কত্তা মোলে পরে ওকে সাত নাতি না মেরেচি তো আমি বাসিনী নই।” কাকে ‘সাত নাতি’ মারার কথা বলা হয়েছে?

▶ ‘ভাত’ গল্পে বুড়োকর্তার মুটকি খাস ঝি-কে ‘সাত নাতি’ অর্থাৎ সাত লাথি মারার কথা বলা হয়েছে।

৫৫. “ভাত খাবে সে, ভাত।”-কার ভাত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষার কথা বলা হয়েছে?

▶ ‘ভাত’ গল্পে বহুদিন ধরে উপোসি উচ্ছবের ভাত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষার কথা

বলা হয়েছে।

৫৬. “তুমি হাত চালাও।”- কেন হাত চালাতে বলা হয়েছে?

▶ হোমযজ্ঞ করার জন্য কাঠের দ্রুত প্রয়োজন ছিল বলে পিসিমা উচ্ছবকে তাড়াতাড়ি হাত চালাতে বলেছিলেন।

৫৭. “… উচ্ছব তাড়াতাড়ি হাত চালায়।”-কেন?

▶ কাঠ কাটলে হোম হবে এবং হোম হওয়ার পর বহু আকাঙ্ক্ষিত ভাত খেতে পাবে বলেই উচ্ছব তাড়াতাড়ি হাত চালায়।

৫৮. “…দেবতার গতিক ভালো নয়কো।”-কে, কখন এ কথা বলেছিল?

▶ ঝড়-বৃষ্টির রাতে যেদিন পরিবারের সকলের সাথে উচ্ছব শেষবারের মতো খেতে বসেছিল, সেদিন চন্নুনীর মা অর্থাৎ উচ্ছবের বউ এ কথা বলেছিল।

৫৯. “বড়োপিসিমা খনখনিয়ে ওঠে।”-কী উদ্দেশ্যে বড়োপিসিমা খনখনিয়ে ওঠে?

▶ উৎসবকে দিয়ে তাড়াতাড়ি কাঠ কাটানোর উদ্দেশ্যে বড়োপিসিমা খনখনিয়ে ওঠে।

৬০. “… ফুটন্ত ভাতের গন্ধ তাকে বড়ো উতলা করে।” কাকে? [হলদিয়া গভঃ স্পনসর্ড বিবেকানন্দ বিদ্যাভবন (এইচএস)]

▶ বড়ো বাড়ির ফুটন্ত ভাতের গন্ধ উচ্ছবকে বড়ো উতলা করে।

৬১. “এসব কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়।”-কোন্ কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়? [এবিটিএ ইনটার স্কুল টেস্ট; পঞ্চসায়র শিক্ষা নিকেতন; রামকৃষ্ণ মিশন বয়েজ হোম হাই স্কুল

▶ বড়ো বাড়ির রাশি রাশি রান্না শেষ হওয়ার কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়।

৬২. “এলে পরে নদীর পাড়ে সারবন্দি ছরাদ হবে”-কাদের এভাবে শ্রাদ্ধ হবে?

▶ মাতলা নদীর বন্যায় মৃত গ্রামবাসীদের নদীর পাড়ে সারবন্দিভাবে শ্রাদ্ধ হবে।

৬৩. “লোকটার চাহনি বড়ো বাড়ির বড়ো বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি।”- কার চাহনির কথা বলা হয়েছে?

• আলোচ্য অংশে মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র উৎসব নাইয়া ওরফে উচ্চবের চাহনির কথা বলা হয়েছে।

৬৪. বড়োবউয়ের উচ্ছবকে ভালো লাগেনি কেন?

• উচ্ছবের বন্য চেহারা, উগ্র চাহনি এবং তার খাটো করে পরা নোংরা লুঙ্গি দেখে বড়োবউয়ের উচ্ছবকে ভালো লাগেনি।

৬৫. বামুন ঠাকুর বড়োবটকে কী বলেছিল।

> বামুন ঠাকুর বড়োবউকে বলেছিল যে, উচ্ছব ভাত খাওয়ার বিনিময়ে বড়ো বাড়িতে কাজ করবে।

৬৬. বড়োপিসিমা বড়ো বাড়ির কে ছিলেন?

• বড়োপিসিমা ছিলেন বাড়ির বুড়োকর্তার অবিবাহিত বৃদ্ধা বোন এবং বড়োবউমা সহ বাড়ির অন্য বউমাদের পিসিশাশুড়ি।

৬৭. বুড়োকর্তা সংসার নিয়ে ‘নাটা-ঝামটা’ হচ্ছিলেন কখন?

• অল্পবয়সে স্ত্রী মারা যাওয়ায় বুড়োকর্তা সংসার নিয়ে ‘নাটা-ঝামটা’ হচ্ছিলেন।

৬৮. বড়োপিসিমা সংসারের কোন্ কোন্ দায়িত্ব সামলাতেন?

• বড়োপিসিমা বাড়ির রান্নাঘর, ভাড়াটে বাড়িতে মিস্তিরি লাগানো, দাদা অর্থাৎ বুড়োকর্তার সেবা করা-এসব দায়িত্ব সামলাতেন।

৬৯. “সে জন্যেই হোম-যজ্ঞি হচ্ছে।”- হোম-যজ্ঞির কারণ কী?

▶ বড়ো বাড়ির বুড়োকর্তা লিভার ক্যানসারে মৃত্যু আসন্ন, তাই তাঁকে বাঁচাতেই হোমযজ্ঞ হচ্ছিল।

৭০. বুড়োকর্তার কী রোগ হয়েছিল?

▶ বুড়োকর্তার লিভার ক্যানসার অর্থাৎ যকৃতে কর্কট রোগ হয়েছিল।

৭১. মেজোবউ শাশুড়ির জন্য কী কী মাছ রান্না করছিল?

▶ মেজোবউ শাশুড়ির জন্য ইলিশ, পাকাপোনা, চিতল, ট্যাংরা এবং বড়ো ভেটকি মাছ রান্না করছিল।

৭২. বড়োবউ শ্বশুরের ঘরে কিছুক্ষণের জন্য ঢুকেছিল কেন?

▶ শ্বশুরের দেখভালে নিযুক্ত নার্স চা খেতে বাইরে গেলে শ্বশুরকে দেখাশোনার জন্য বড়োবউ তাঁর ঘরে ঢুকেছিল।

৭৩. “সেই জন্যেই তাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি।”-কী জন্য কাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি?

▶ বড়ো বাড়ির বড়ো, মেজো ও ছোটো ছেলে সকাল এগারোটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না বলেই তাদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি।

৭৪. বড়ো বাড়ির ছেলেদের চাকরি করার দরকার ছিল না কেন?

▶ আঠারোটি দেবত্র বাড়ি এবং বাদা অঞ্চলের প্রচুর উর্বর জমির মালিক হওয়ার জন্য বড়ো বাড়ির ছেলেদের চাকরি করার প্রয়োজন ছিল না।

৭৫. বড়োবউ শ্বশুরের জন্য কী কী করত?

▶ ঘরে পাতা দই ও ইসবগুল দিয়ে শরবত বানিয়ে দেওয়া, শ্বশুরের জন্য রুটি বা লুচি তৈরি করা, তাঁর বিছানা পাতা এবং তাঁর পা টেপার কাজ করত

বড়োবউ।

৭৬. বড়ো বাড়িতে তান্ত্রিক কে এনেছিলেন?

▶ বড়ো বাড়িতে ছোটো বউয়ের বাবা তান্ত্রিক ডেকে এনেছিলেন।

৭৭. যজ্ঞিহোমের জন্য কত পরিমাণ করে কাঠ লেগেছিল?

অথবা, যজ্ঞের জন্য কী কী কাঠ আনা হয়?

[অ্যান্ড্রুজ হাই স্কুল (এইচএস)] [হেয়ার স্কুল]

▶ যজ্ঞের জন্য বেল, ক্যাওড়া, তেঁতুল, বট, অশ্বত্থ প্রভৃতি গাছের আধ মন করে কাঠে লেগেছিল।

৭৮. ভজন চাকর কী করছিল?

> বড়ো বাড়ির ভজন চাকর যজ্ঞের জন্য কালো বিড়ালের লোম সংগ্রহ করতে গিয়েছিল।

৭৯. তান্ত্রিক শ্মশান থেকে কী আনার ফরমাশ করেন?

▶ তান্ত্রিক শ্মশান থেকে বালি আনার ফরমাশ করেন।

৮০. “দেখো না একতলায় গিয়ে।”-একতলায় গেলে কী দেখা যায়?

> বড়ো বাড়ির একতলায় গেলে দেখা যায় গোলায় গোলায়, স্তরে স্তরে বহু রকম চাল সাজানো রয়েছে।

৮১. হোমযজ্ঞ শুরু হওয়ার আগে তান্ত্রিক কী করছিলেন?

> হোমযজ্ঞ শুরু হওয়ার আগে তান্ত্রিক বড়ো বাড়ির নীচের হলঘরে বসেছিলেন।

৮২. বড়ো বাড়িতে কনকপানি এবং পদ্মজালি চাল রান্না হয় কী জন্য?

> বড়োবাবু কনকপানি চাল ছাড়া এবং মেজো ও ছোটোবাবু পদ্মজালি চাল ছাড়া ভাত খায় না বলে, তাদের জন্য এই দু-রকমের চাল রান্না করা হত।

৮৩. ‘ভাত’ গল্পে মোটা-সাপ্টা চাল খেত কারা?

▶ বড়ো বাড়ির বামুন এবং ঝি-চাকররা মোটা-সাপ্টা চাল খেত।

৮৪. “খুবই অদ্ভুত কথা। তাঁর বিয়ে হয়নি।”-কার বিয়ে হয়নি?

• মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পে বড়োপিসিমার বিয়ে হয়নি।

৮৫. বুড়োকর্তার বাড়িগুলির নাম কী ছিল?

▶ ‘ভাত’ গল্পে বুড়োকর্তার বাড়িগুলির নাম ছিল শিব, মহেশ্বর, ত্রিলোচন, উমাপতি ইত্যাদি।

৮৬. “শ্বশুর তার কাছে ঠাকুরদেবতা সমান।” শ্বশুর কার কাছে ঠাকুরদেবতা সমান ছিল?

▶ ‘ভাত’ গল্পের বড়ো বাড়ির বড়োবউয়ের কাছে তার শ্বশুর ঠাকুরদেবতা সমান ছিল।

৮৭. ‘ভাত’ গল্পের লেখিকা মহাশ্বেতা দেবীর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থের নাম কী?

▶ ‘ভাত’ গল্পের লেখিকা মহাশ্বেতা দেবীর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ইতিহাসনির্ভর জীবনী ঝাঁসীর রাণী।

৮৮. “সেগুলো সব এক মাপে কাটতে হবে।”- কীসের কথা বলা হয়েছে?

▶ এখানে হোমযজ্ঞের উদ্দেশ্যে যে বেল, ক্যাওড়া, অশ্বত্থ, বট ও তেঁতুল গাছের আধমন কাঠ কাটা হচ্ছিল, তার কথাই বলা হয়েছে।

৮৯. “…বড়ো বউয়ের প্রথম থেকেই ভালো লাগেনি।” কী?

▶ কাজে নতুন যোগ দেওয়া উচ্ছবের উগ্র চাহনি বড়োবউয়ের ভালো লাগেনি।

৯০. “কোথা থেকে আনলে?”-কে, কাকে, কার সম্বন্ধে এই প্রশ্ন করেছে?

> মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ গল্পে বড়ো বাড়ির বড়োবউমা বড়োপিসিমাকে। উচ্ছব সম্বন্ধে এই প্রশ্ন করেছে।

৯১. “বড়ো বাড়ির লোকরা বলে….”-কী বলে?

▶ বড়ো বাড়ির লোকেরা বলে যে, বড়োপিসিমার ঠাকুরের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে এবং তাই তিনি দেবতার সেবিকা।

৯২. “সেই ডেকে আনলে।”-কে, কাকে ডেকে এনেছিল?

▶ বাসিনী উৎসব তথা উচ্ছবকে ডেকে এনেছিল।

৯৩. “সেই ডেকে আনলে।”-সে কেন ডেকে আনল বলে বক্তা জানিয়েছেন?

▶ উচ্ছবের ঘর-সংসার এবং দেশ ঝড়জলে ভেসে গেছে বলেই বাসিনী তাকে ডেকে এনেছে বলে জানিয়েছেন বক্তা বড়োপিসিমা।

৯৪. “বড়োপিসিমা শেষ খোঁচাটা মারেন।”-খোঁচাটা কী ছিল?

▶ বড়োপিসিমা বড়োবউমাকে বলেন যে, তার শ্বশুর মরতে বসেছে বলেই হোমযজ্ঞ হচ্ছে এবং তার কাজের জন্যই একজন লোক প্রয়োজন।

৯৫. “মেজ বউ উনোন পাড়ে বসেছে।”-কী করতে মেজোবউ উনুন পাড়ে বসেছিল?

▶ শাশুড়ির বিধবা হওয়ার আশঙ্কায় তার জন্য নানারকম মাছ রান্না করার উদ্দেশ্যে মেজোবউ উনুনপাড়ে বসেছিল।

৯৬. “তার আসার কথা ওঠে না।”-কার, কেন আসার কথা ওঠে না?

▶ বৃদ্ধ বুড়োকর্তার চরম অসুস্থতার জন্য তার সেজো ছেলের বাড়িতে আসার কথা ওঠে না, কারণ সে বিলেতে থাকে।

৯৭. “বোঝা গেল যখন, তখন আর কিছু করবার নেই।”-কী বোঝা গেল এবং কী করার কিছু ছিল না?

▶ বড়ো বাড়ির কর্তামশায়ের লিভার ক্যানসার হওয়ার কথা বোঝা গিয়েছিল এবং দেরিতে ধরা পড়ার জন্য ডাক্তারদের কিছু করার ছিল না।

৯৮. “…তখনও চাঁদ সূর্য উঠবে কি না।”-উক্তিটিতে কোন্ সময়ের কথা বলা হয়েছে?

▶ বড়োবউমার কাছে তার শ্বশুর ঠাকুর-দেবতার মতো ছিল, তাই বড়োবউমা তার শ্বশুরের মৃত্যুর পর চাঁদ-সূর্য উঠবে কি না এ কথা ভেবেছিল।

৯৯. “ডাক্তাররা বলে দিয়েছে বলেই তো…..।”-ডাক্তাররা কী বলে দিয়েছে?

▶ ক্যানসারে আক্রান্ত বড়ো বাড়ির বৃদ্ধ গৃহকর্তার শেষ সময় উপস্থিত হয়েছে-এ কথাই ডাক্তাররা বলে দিয়েছিল।

১০০. “ডাক্তাররা বলে দিয়েছে বলেই তো….”-ডাক্তাররা বলে দিয়েছে বলে কী করা হচ্ছিল?

▶ ডাক্তাররা বড়ো বাড়ির গৃহকর্তার শেষ সময় এসে গেছে বলে দিয়েছে। তাই তাঁকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে সে বাড়িতে হোমযজ্ঞ হচ্ছিল।

১০১. “বাদায় থাকে, অথচ ভাতের আহিংকে এতখানি।”-বাদায় থাকা লোকদের ভাতের আকাঙ্ক্ষা সাধারণত থাকে না কেন?

▶ বাদা অর্থাৎ নিম্নভূমিতে জলের অভাব না থাকায় প্রচুর ধানের ফলন হয়। তাই বাদায় থাকা লোকেদের ভাতের আকাঙ্ক্ষা থাকে না বলে মনে করা হয়েছে।

১০২. “এসব কথা সত্যি না মিথ্যে কে জানে।”- কোন্ কথা?

▶ অবিবাহিতা বড়োপিসিমা বলেছিলেন যে, শিব তাঁর পতিদেবতা। তাই তাঁকে যেন মানুষের সাথে বিয়ে দেওয়া না হয়। এখানে এই তথ্যের সত্যতা সম্বন্ধেই বলা হয়েছে।

১০৩. “…তার কাছে ঠাকুরদেবতা সমান।”-কে, কার কাছে ঠাকুর-দেবতা তুল্য?

▶ বড়োবউয়ের কাছে তার শ্বশুরমশাই অর্থাৎ বুড়োকর্তা হলেন ঠাকুর-দেবতা তুল্য।

১০৪. “আজ এই যজ্ঞি-হোম হচ্ছে।”- হোমযজ্ঞের জন্য কোন্ কোন্ উপকরণ প্রয়োজন? [ফতেপুর শ্রীনাথ ইন্সটিটিউশন]

▶ হোমযজ্ঞ অনুষ্ঠানে বেল, ক্যাওড়া, অশ্বত্থ, বট, তেঁতুল-এই পাঁচপ্রকার গাছের আধ মন করে কাঠ, কালো বিড়ালের লোম, শ্মশানের বালি ইত্যাদি উপকরণের প্রয়োজন।

১০৫. কার নিয়মে সংসারের সব কিছুই চলে? [অ্যান্ড্রুজ হাই স্কুল (এইচএস)]

▶ বড়ো বাড়ির সংসারের সব কিছুই বড়োপিসিমার নিয়মে চলে।

১০৬. শ্বশুর বড়োবউয়ের কাছে কীসের মতো ছিল? [অ্যান্ড্রুজ হাই

স্কুল (এইচএস)] ▶ বড়োবউয়ের কাছে তার শ্বশুর ঠাকুরদেবতার মতো ছিল।

১০৭. “উনি হলেন দেবতার সেবিকা।”-কার সম্বন্ধে বলা হয়েছে?

▶ প্রশ্নোদ্ভূত উক্তিটিতে বড়োপিসিমার কথা বলা হয়েছে।

১০৮. ঝিঙেশাল চাল এবং রামশাল চাল কী কী দিয়ে খায়? 

▶ ঝিঙেশাল চালের ভাত নিরামিষ ডাল-তরকারি দিয়ে এবং রামশাল চালের ভাত মাছ দিয়ে খায়।

১০৯. “ওই পাঁচ ভাগে ভাত হয়?”- পাঁচ ভাগ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

▶ ঝিঙেশাল, রামশাল, কনকপানি, পদ্মজালি এবং মোটা-সাপ্টা ধানের চাল-এই পাঁচ ভাগে ভাত রান্না হত বড়ো বাড়িতে।

২০০. বড়ো বাড়ির চাল কে কার মাধ্যমে লুকিয়ে বিক্রি করত?

▶ বড়োপিসিমা বাড়ির পরিচারিকা বাসিনীর মাধ্যমে লুকিয়ে বড়ো বাড়ির চাল বিক্রি করত।

২০১. “পিসিমা দেকতে পেলে সব্বনাশ হবে।”-কী দেখতে পাওয়ার কথা বলা হয়েছে?

▶ খিদের জ্বালায় কাতর উচ্ছব বাসিনীকে এক মুঠো চাল খেতে দিতে বললে, বাসিনী জানায় যে বড়োপিসিমা দেখতে পেলে সর্বনাশ হবে।

২০২. “এদেরকে বলিহারি ঝাই।”-কোন্ প্রসঙ্গে কার এই উক্তি?

▶ বাসিনীর মনিবরা উৎসব ক-দিন ধরে খায়নি শুনেও তাকে আগে খেতে না দিয়ে কাজ করাচ্ছিল বলেই বাসিনী এমন উক্তি করেছিল।

২০৩. “রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি”-কার কেন খিচুড়ি খাওয়া হয়নি?

▶ বন্যায় বউ-ছেলেমেয়ে ভেসে যাওয়ার পর উৎসব তাদের খুঁজে বেড়ানোর জন্য পাগলের মতো কয়েকদিন বাড়িতেই পড়েছিল বলে রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি।

২০৪. “তখন তার বুদ্ধি হরে গিয়েছিল।” কখন, কার বুদ্ধি হারিয়ে গিয়েছিল?

▶ বন্যায় বউ-ছেলেমেয়ে ভেসে যাওয়ার পর যখন ক-দিন ধরে উৎসব তাদের খুঁজতে বাড়িতেই পড়েছিল, তখন তার বুদ্ধি হারিয়ে গিয়েছিল।

২০৫. উচ্ছবের বউ তুমুল ঝড়বৃষ্টির সময় কী করছিল?

▶ উচ্ছবের বউ তুমুল ঝড়বৃষ্টির সময় ছেলেমেয়েকে জাপটে জড়িয়ে ধরেছিল এবং ঠান্ডায় ও ভয়ে কাঁপছিল।

২০৬. উচ্ছব তুমুল ঝড়বৃষ্টির সময় কী করছিল?

▶ উচ্ছব তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে তার ঘরের মাঝখানের মাতালের মতো কাঁপতে থাকা খুঁটিটিকে মাটির দিকে চেপে ধরার চেষ্টা করছিল আর ভগবানকে ডাকছিল।

২০৭. লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী ‘ভাত’ গল্পে ভগবানকে নিয়ে কোন্ বিদ্রুপ করেছেন?

▶ ‘ভাত’ গল্পে তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে উচ্ছব ভগবানকে ডাকায় লেখিকা বলেছেন যে, দুর্যোগের মধ্যে ভগবানও বোধ হয় কাঁথামুড়ি দিয়ে ঘুমোন।

২০৮. “সাধন দাশের কথা উচ্ছব নেয় না।” -সাধন দাশ কী বলেছিল?

▶ সাধন দাশ উচ্ছবকে বলেছিল যে, তার পরিবারের লোকজনকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বানের জল উচ্ছবকেও টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, গাছে বেঁধে সে রক্ষা পেয়েছে।

২০৯. “টিনের বেশ একটা মুখবন্ধ কৌটো ছিল ঘরে।”-কৌটোটির মধ্যে কী ছিল?

▶ কৌটোটির মধ্যে ভূমিহীন উচ্ছবের সরকারের কাছে জমি চাওয়ার আবেদনপত্রের নকল কাগজ ছিল।

৩০০. “সে কৌটোটা বা কোথায়।”-কৌটোটা কেমন দেখতে ছিল?

▶ কৌটোটা ছিল টিনের তৈরি মুখবন্ধ করা চমৎকার দেখতে এবং বড়ো।

৩০১. “রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি।”-কার খাওয়া হয়নি?

> বন্যায় বউ-ছেলেমেয়ে ভেসে যাওয়ার পর ক-দিন ধরে উচ্ছবের লঙ্গরখানার রান্না খিচুড়ি খাওয়া হয়নি।

৩০২. পুরোহিত মহানাম শতপথি উৎসবদের গ্রামে আসতে দেরি করছিল কেন?

▶ পুরোহিত মহানাম শতপথির অন্য দুটো গ্রামে শ্রাদ্ধশান্তির কাজ সমাধা করছিল, তাই তার উচ্ছবদের গ্রামে আসতে দেরি হচ্ছিল।

৩০৩. “সে এটা কতা বটে” কথাটা কী?

▶ এখানে কথাটি হল-“সরকার ঘর করতে খরচা দেবে।”

৩০৪. কারা, কেন উচ্ছবদের গ্রাম থেকে কলকাতায় যাচ্ছিল?

▶ উচ্ছবদের গ্রাম থেকে বাসিনীর বোন এবং ভাজ কিছুকাল ঠিকে কাজ করার উদ্দেশ্যে কলকাতায় যাচ্ছিল।

৩০৫. উৎসব প্রথমবার কলকাতায় বাসিনীর মনিবদের বাড়ি গিয়ে কী দেখে?

▶ উৎসব প্রথমবার কলকাতায় গিয়ে বাসিনীর মনিবদের বড়ো বাড়িটা বাইরে থেকে দেখেছিল আর দেখেছিল বার-বাড়ির ঠাকুরদালান এবং শিবমন্দিরের মাথার পিতলের ত্রিশূল।

৩০৬. “এ গল্প গ্রামে সবাই শুনেছে।”-কোন্ গল্প?

▶ কলকাতায় বাসিনীর মনিবদের বাড়িতে যে ফেলা-ছড়া ভাত-সে গল্প গ্রামের সবাই শুনেছে।

৩০৭. “তা দেখে উচ্ছব মাথায় হাত দিয়েছিল।” কী দেখে উচ্ছব মাথায় হাত দিয়েছিল?

• ধানের গোছা হওয়ার আগেই ধানের সবুজ রং চলে গিয়ে কার্তিক মাসেই ধান খড়ে পরিণত হয়েছিল। এই ঘটনা দেখেই উচ্ছব মাথায় হাত দিয়েছিল।

৩০৮. সতীশ মিস্তিরির কী কী ধানে মড়ক লেগেছিল?

▶ হরকুল, পাটনাই এবং মোটা-সতীশ মিস্তিরির এই তিনপ্রকার ধানেই মড়ক লেগেছিল।

৩০৯. উচ্ছবকে কাঁদতে দেখে সাধনবাবু কী বলেছিল?

▶ উচ্ছবকে কাঁদতে দেখে সাধনবাবু জানতে চেয়েছিল, মনিবের ধান নষ্ট হওয়ায় উচ্ছব কেন কাঁদছে।

৪০০. “বাদায় এদের চাল হয়!”-‘বাদা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

▶ ‘বাদা’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল নিম্নভূমি বা জঙ্গলাকীর্ণ ভূমি।

৪০১. লোকটি কী নামে পরিচিত?

▶ মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্পে লোকটির নাম উৎসব নাইয়া হলেও সে উচ্ছব নাইয়া নামে পরিচিত ছিল।

৪০২. শ্রাদ্ধ করার জন্য কাকে খবর দেওয়া হয়েছিল?

▶ শ্রাদ্ধ করার জন্য পুরোহিত মহানাম শতপথিকে খবর দেওয়া হয়েছিল।

৪০৩. উৎসবের স্ত্রী-সন্তানরা কীভাবে মারা যায়?

▶ এক রাতে মাতলা নদীর প্রবল বন্যায় উৎসবের স্ত্রী-সন্তানরা জলে ভেসে গিয়ে মারা যায়।

৪০৪. “পিসিমা দেকতে পেলে সব্বনাশ হবে।”-কে, কখন এ কথা বলেছে?

▶ কাঠ কাটতে কাটতে দীর্ঘদিনের উপবাসী উচ্ছব বাসিনীর কাছে একমুঠো চাল চিবিয়ে খাওয়ার জন্য চাইলে তাকে নিরস্ত করতে বাসিনী এ কথা বলে।

৪০৫. “বড়োপিসিমা বেচেও দিচ্ছে নুক্কে নুক্কে।”-পিসিমা কী বেচে দিচ্ছেন?

▶ বাদায় উৎপন্ন পাহাড়প্রমাণ চালের একটা অংশ বড়োপিসিমা বাসিনীর মাধ্যমে লুকিয়ে লুকিয়ে বেচে দেন।

৪০৬. “…ধনুষ্টঙ্কার রোগীর মতো কেঁপেঝেকে উঠছিল।”-কী কেঁপে উঠছিল?

▶ উৎসবের ঘরের মাঝ-খুঁটিটি তুমুল ঝড়-বৃষ্টিতে কেঁপে উঠছিল।

৪০৭. “ওরা কিছুকাল ঠিকে কাজ করবে।”-কারা?

▶ বাসিনীর বোন এবং ভাজ অর্থাৎ ভাইবউ কিছুদিন ঠিকে কাজ করবে।

বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর [শব্দসীমা কমবেশি ১৫০]

Short Answer Question

১. ঝড়জল-বন্যার রাতের আকস্মিক আঘাত উচ্ছবের মনোজগতে কী কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল, তা ‘ভাত’ ছোটোগল্প অবলম্বনে লেখো।

উত্তর. প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে ঝড়জল- বন্যার রাতটি উচ্ছবের ঘরের সব কিছু এবং তার পরিবারকে ভাসিয়ে নিয়ে গেলেও গাছে বেঁধে কোনোক্রমে বেঁচে যায় সে। জল নেমে গেলে পরদিন সকাল থেকে উচ্ছব সব কিছু ফিরে পাওয়ার ব্যর্থ আশায় কয়েকদিন উদ্‌গ্রীব হয়ে থাকে। ঘটনার আকস্মিকতায় সাময়িকভাবে উচ্ছবের বুদ্ধি লোপ পায়। ঘরের চালের নীচ থেকে প্রিয়জনদের ডাক শোনার আশায় সে আকুল হয়ে ওঠে। সব কিছু ফিরে পাওয়ার আশায় শুনসান বাড়ি ছেড়ে কয়েকদিন কোথাও না নড়ায় তার কিছু খাওয়াও হয় না। এমনকি, লঙ্গরখানায় দেওয়া খিচুড়িও নয়।

 পরবর্তী আচরণ: যখন সে খানিকটা স্বাভাবিক হয়, তখন খিচুড়ি দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই শুকনো চাল চিবিয়েই সে কয়েকদিন কাটায়। টানা বেশ কিছুদিন ভাত না জোটায় সে ভাত খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে যায়। যার জমিতে উচ্ছব চাষ করে, সেই সতীশবাবুও তাকে ভাত দিতে অস্বীকার করলে সে অত্যন্ত দুঃখ পায়। ক্রোধও জন্ম নেয় তার মনে। দিনের পর দিন উপোসের ফলে সব হারানো উচ্ছবের মানসিক বিকৃতি ঘটতে থাকে। তার মনে হয়, দীর্ঘদিন ধরে পেটে ভাত না পড়ায় সে প্রেত হয়ে যাচ্ছে। ভাত খেলে সে মানুষ হবে এবং তখনই সে বউ ও ছেলেমেয়ের দুঃখে কাঁদবে।

২. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে যে হোমযজ্ঞ হয়েছিল, তার বর্ণনা দাও।

উত্তর. উপলক্ষ্য: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে ক্যানসারে আক্রান্ত, বিরাশি বছরের কর্তাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে শহরের বড়োবাড়িতে হোমযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছিল। বুড়োকর্তার ছোটোবউমার বাবা পরিচিত এক তান্ত্রিককে এই উপলক্ষ্যে সেই বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন।

আয়োজন: যজ্ঞের জন্য বেল, ক্যাওড়া, বট, অশ্বত্থ এবং তেঁতুল গাছের কাঠ আধ মন করে আনা হয়েছিল। সেই আড়াই মন কাঠের প্রতিটি খণ্ড দেড় হাত করে কাটতে বলা হয়েছিল গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র উচ্ছবকে। কালো বিড়ালের লোম, শ্মশানের বালি ইত্যাদি নানাপ্রকার জিনিসের ফরমাশ করেছিলেন তান্ত্রিক। প্রথমে হোমযজ্ঞের আগে রান্না এবং খাওয়া শেষ করার কথা থাকলেও, তান্ত্রিক নতুন বিধান দিয়েছিলেন যে রান্না শেষ করলেও হোম সম্পন্ন না হলে কেউ খেতে পারবে না। উচ্ছব যজ্ঞের জন্য কাটা কাঠের টুকরোগুলি পাঁচ ভাগে ভাগ করে দালানে রেখে আসার পর শুরু হয় হোমযজ্ঞ। বুড়োকর্তার খাস-ঝি হোমের জোগান দিচ্ছিল।
যজ্ঞ ও তার পরিণতি: তান্ত্রিক “ওঁং হ্রীং ঠং ঠং ভো ভো রোগ শৃণু শৃণু”- মন্ত্র বলে বুড়োকর্তার রোগকে দাঁড় করান, কালো বিড়ালের লোম দিয়ে রোগকে বাঁধেন এবং তারপর বুড়োকর্তার তিন ছেলের উপস্থিতিতে হোম শুরু করেন। যদিও এই হোমযজ্ঞ শুরু হওয়ার ঠিক পরমুহূর্তেই বুড়োকর্তা মারা যান।

৩.মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প অবলম্বন করে ঝড়জল- বন্যার রাতটির বর্ণনা দাও

উত্তর ঝড়জল-বন্যার রাতের বর্ণনা: প্রশ্নে উদ্ধৃত ঝড়জল-বন্যার রাত উচ্ছবকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছিল। সেদিন সন্ধ্যাতেই অনেকদিন পর সপরিবারে উচ্ছব পেট পুরে ভাত খেয়েছিল। খেতে খেতে চন্নুনীর মা বলেছিল যে, দেবতার গতিক ভালো নয়। নৌকা নিয়ে যারা বেরিয়েছিল, তাদের নৌকা-সহ ডুবে মরে যাওয়ার আশঙ্কাও সে প্রকাশ করেছিল। এরপরই শুরু হয় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি। ঝড়- বৃষ্টিতে উচ্ছবদের কাঁচা বাড়ির মাঝ-খুঁটিটি ‘মাতাল আনন্দে টলছিল’ ধনুষ্টংকার রোগীর মতো। তাই উচ্ছব সর্বশক্তি দিয়ে ঘরের মাঝখানের খুঁটিটা মাটির দিকে চেপে ধরে ছিল। কিন্তু তার মনে হচ্ছিল মা বসুন্ধরা যেন সেই খুঁটি রাখতে চাইছেন না, ঠেলে বের করে দিতে চাইছেন। তাই ভয়ে ভগবানের নাম নিতে থাকে সে। অন্যদিকে, ছেলেমেয়েকে জাপটে ধরে তার বউ ঠান্ডায় এবং ভয়ে |

কাঁপতে থাকে। এ সময়েই হঠাৎ বিদ্যুতের ঝলকানিতে উচ্ছব দেখতে পায় মাতাল মাতলা নদীর সফেন জল বাতাসের তোড়ে দ্রুত ছুটে আসছে। পরে একসময় জল নেমে গেলেও উচ্ছবের ঘরের সব কিছু এবং তার পরিবারকে উচ্ছব আর খুঁজে পায়নি, সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায় সেই জল। বানের জলে ভেসে যাওয়া উচ্ছব গাছে বেধে কোনোক্রমে প্রাণে বাঁচে। এভাবে ঝড়জল- বন্যার সেই রাত উচ্ছবের জীবনে সর্বনাশ ডেকে এনেছিল।

৪.”লক্ষ্মী না আসতে সেধে ভাসান যাচ্ছে তা কাঁদব না এতটুকু?”-বক্তার এই মন্তব্যের প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।

উত্তর. প্রেক্ষাপট: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে উচ্ছব নাইয়া ছিল গ্রামের এক ভূমিহীন কৃষক। সে কাজ করত সতীশ মিস্তিরির জমিতে। বন্যার জলে বাড়িঘর ও সংসার ভেসে যাওয়া উচ্ছবের মাঝেমাঝেই মনে পড়ে যায় তার কৃষকজীবনের স্মৃতি। প্রাথমিক দিশেহারা অবস্থায় সে শুধুই তার স্ত্রী আর

সন্তানদের খুঁজেছিল, কিন্তু পরে যখন তার অস্থিরতা কমে, তখনই উচ্ছবের | দেখি খিদের যন্ত্রণা তীব্রতর হয়ে ওঠে। কর্মজীবনের কথা, ফসল ফলানোর স্মৃতি, তখনকার উদ্বেগ আর অনিশ্চয়তার স্মৃতি তার মনের মধ্যে ভিড় করে আসে। মাথার ভেতরটা তার দপদপ করতে, কোনো কথা গুছিয়ে ভাবতে পারে না সে। কিছু ভাবতে গেলেই তার মনে হয় ধানের গোছা হওয়ার আগেই ধানগাছের সবুজ রং চলে যাচ্ছে; কার্তিক মাসেই ধান খড়ে পরিণত হয়ে গেল-এসব দেখে মাথায় হাত পড়ে উচ্ছবের। সে দেখল যে সতীশ মিস্তিরির হরকুল, পাটনাই এবং মোটা-এই তিনপ্রকার ধানেই মড়ক লেগেছে। সতীশ মিস্তিরির জমিতেই তো বছরের ক-মাস কাজ করে উচ্ছব। তাই উচ্ছব সতীশের খেতে হওয়া ধানের দশা দেখে কাঁদতে থাকে। সাধনবাবু উচ্ছবকে মনিবের ধান নষ্ট হওয়ায় তার কাঁদার কারণ জিজ্ঞেস করে। উচ্ছব তার উত্তরেই সাধনবাবুকে বলে যে, লক্ষ্মীর আবাহনের আগেই তার বিসর্জন হয়ে যাচ্ছে বলে সে কাঁদছে, কারণ গ্রামের মানুষদের কাছে ফসলই লক্ষ্মী।

দেখি, দুর্যোগের দিন সন্ধ্যাবেলায় চন্নুনীর মা খেতে খেতে বলছিল যে, দেবতার গতিক ভালো নয়। তারপরে রাত বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রবল দুর্যোগে উচ্ছবদের কাঁচা বাড়ির মাঝখানের খুঁটিটি ‘মাতাল আনন্দে টলছিল’ ধনুষ্টংকার রোগীর মতো। তাই ঘরের মাঝখানের খুঁটিটা উচ্ছব মাটির দিকে সর্বশক্তি দিয়ে চেপে ধরেছিল এবং ভয়ে ভগবানের নাম নিচ্ছিল। অন্যদিকে, ছেলেমেয়েদের জাপটে ধরে তার বউ ঠান্ডায় আর ভয়ে কাঁপছিল। এসময় হঠাৎ বিদ্যুতের আলোর ঝলকানিতে উচ্ছব দেখে, মাতাল মাতলা নদীর সফেন জল বাতাসের তোড়ে দ্রুত ছুটে আসছে। নিমেষের মধ্যে সেই বানের জল উচ্ছবের বউ-ছেলেমেয়েকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। গাছে বেঁধে কোনোক্রমে প্রাণে বেঁচে যায় উচ্ছব।

উচ্ছবের উপরে দুর্যোগের প্রভাব: দুর্যোগের আকস্মিকতায় সাময়িকভাবে উচ্ছবের বুদ্ধি লোপ পায়। বউ-ছেলেমেয়ে-সহ সবকিছু ফিরে পাবার আশায় শুনসান বাড়ি ছেড়ে তাই সে নড়ে না। লঙ্গরখানায় দেওয়া খিচুড়ি তাই তার খাওয়া হয় না। কয়েকদিন পর সরকার শুকনো চাল দিলে দীর্ঘদিন যাবৎ উপোসি উচ্ছব তা চিবিয়েই কয়েকদিন কাটায়। এ সময় মাঝে-মাঝেই তার মনে পড়ে সেই দুর্যোগের রাতটার কথা। তার মনে হয়, দীর্ঘদিন ধরে ভাত না খেয়ে সে ভূত হয়ে যাচ্ছে, ভাত খেলেই সে পুনরায় মানুষ হবে এবং বউ-ছেলেমেয়ের দুঃখে কাঁদতে পারবে। তাই কয়েকদিন পেট পুরে ভাত খেতে সে কলকাতা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

৫.”যা আর নেই, যা ঝড়-জল-মাতলার গর্ভে গেছে তাই খুঁজে খুঁজে উচ্ছব পাগল হয়েছিল।”-দুর্যোগটির বর্ণনা দাও। দুর্যোগটি উচ্ছবকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল?

উত্তর. দুর্যোগের বর্ণনা: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে আমরা

৬.”তারপরই মনে পড়ে যে রাতে ঝড় হয়।”-কোন্ কথার পর ঝড়ের রাতের কথা উদ্দিষ্ট ব্যক্তির মনে পড়ে? কোন্ কোন্ কথা এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে তার? ১+৪

উত্তর. মনে পড়ার পরিপ্রেক্ষিত: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প

থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিটিতে উচ্ছব নাইয়ার কথা বলা হয়েছে। ধান খেতে আগুন লাগার কথা মনে পড়ার পরে উচ্ছবের ঝড়ের রাতের কথা মনে পড়ে।

▶ প্রসঙ্গত মনে পড়া কথাগুলি: উচ্ছব নাইয়ার এ প্রসঙ্গে মনে পড়েছিল

যে, অনেকদিন পর সেই সন্ধ্যায় সে পরিবার-সহ পেটপুরে খেয়েছিল। অনেকটা হিঞ্চে শাক সেদ্ধ, গুগলি সেদ্ধ, নুন এবং লংকাপোড়া দিয়ে মেখে ভাত খেয়েছিল সে। সেদিন উচ্ছবের মতো গ্রামের সকলেই পেট পুরে খেয়েছিল। চন্নুনীর মা খাওয়ার সময় বলেছিল যে, ভগবানের লক্ষণ ভালো নয়। সে আরও বলেছিল যে, নৌকো নিয়ে যারা বেরিয়েছে, তারা নৌকা-সহ ডুবে মরতে পারে। এরপর উচ্ছবের মনে পড়ে ঘরের মাঝ-খুঁটিটা মাটির দিকে ঠেলে ধরে রাখার কথা। ধরণি যেন সেই খুঁটি উপড়ে ফেলতে চাইছিল। ভগবানের নাম নিয়েছিল উচ্ছব। তারপর বিদ্যুতের চমকে সে দেখেছিল, মাতলার সফেন জল ছুটে আসছে। তারপর আর কিছু মনে পড়ে না তার, নিজের পরিচয় পর্যন্ত। উচ্ছব ভাবে, তার কাগজ-ভরা, সুন্দর কৌটোটির কথা। আরও ভাবে, ভগবান যদি তার বউ- ছেলেমেয়েদের বাঁচিয়ে রাখত, তবে সে শত হাতির শক্তি পেত। সেই কৌটোটি নিয়ে তবে সপরিবারে সে ভিক্ষায় বেরোেত। সতীশবাবুর নাতির ফুড খাওয়ার

কৌটোটি উচ্ছব চেয়ে এনেছিল। অমন সুন্দর কৌটো থাকলে প্রয়োজনে একমুঠো চাল ফুটিয়েও নেওয়া যায়।

৭.“ফুটন্ত ভাতের গন্ধ তাকে বড়ো উতলা করে।”—কার কথা বলা হয়েছে? এই গন্ধ তাকে উতলা করে কেন? ১+৪

উত্তর. উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পে উল্লিখিত মন্তব্যে উচ্ছব নাইয়া-র কথা বলা হয়েছে।

▶ উতলা হওয়ার কারণ: বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা হলেও উচ্ছবের জীবনে ভাতের অভাব চিরকালের। শহরের বড়ো বাড়িতে বাদা থেকে আসা চালের – প্রাচুর্যে সে অবাক হয়ে যায়, কারণ তার বাদায় শুধু ‘গুগলি-গেঁড়ি-কচুশাক- – সুশনো শাক’ জন্মায়। ভূমিহীন উচ্ছব গ্রামে সতীশবাবুর জমিতে কাজ করে – কয়েকমাস খাওয়ার ব্যবস্থা করতো। কিন্তু তা সারাবছরের নয়। মাতলার বন্যায় – যেদিন তার স্ত্রী-সন্তানরা ভেসে যায় সেদিনই সন্ধ্যায় অনেকদিন পরে সে ভাত খেয়েছিল। কিন্তু ভেসে যাওয়া মানুষগুলোকে খুঁজতে গিয়ে ত্রাণের খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি। খিদের যন্ত্রণা সে সারাজীবন সহ্য করেছে। পরিবার হারানোর পরে – তা আরও তীব্র হয়েছে। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্যই সে শহরের বড়ো বাড়িতে – কাজ করতে এসেছে। সেখানে চালের বিপুল সম্ভার তার খিদেকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কষ্ট অসহনীয় হলে সে বাসিনীর কাছে জল দিয়ে খাওয়ার জন্য একমুঠো – চাল চায়। তান্ত্রিকের বিধানে খাওয়ার সময় পিছিয়ে যাওয়ায় খিদের তাড়না আরও বেড়ে যায়। রান্না হওয়া সত্ত্বেও সে খেতে পাচ্ছে না-এই অসহনীয় অবস্থায়, ক্ষুধার্ত উচ্ছব ভাতের গন্ধে উতলা হয়ে ওঠে।

৮. “সেই সন্ধেয় অনেকদিন বাদে সে পেট ভরে খেয়েছিল।”- ‘সে’ কে? কোন্ সন্ধেয় সে পেট ভরে খেয়েছিল? সেই দিনটায় কী ঘটেছিল? ১+১+৩

উত্তর উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পের উল্লিখিত অংশে ‘সে’ বলতে উচ্ছব নাইয়ার কথা বলা হয়েছে।

▶ উদ্দিষ্ট সন্ধ্যা: গল্পে বর্ণিত দুর্যোগের রাতে অর্থাৎ মাতলার বন্যায় যে রাতে উচ্ছব তার পরিবারকে হারিয়েছিল সেদিনই সন্ধেয় উচ্ছব অনেকদিন পরে পেট ভরে খেয়েছিল।

▶ ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি: হিঞ্চে সিদ্ধ, গুগলি সিদ্ধ, নুন আর লঙ্কা পোড়া

দিয়ে উচ্ছব তার অনেকদিন অপেক্ষার আহার গ্রহণ করে। খেতে খেতে তার স্ত্রী, অর্থাৎ চন্নুনীর মা দুর্যোগের প্রসঙ্গে বলে- “দেবতার গতির ভালো নয়কো।” যারা নৌকা নিয়ে নদীতে গিয়েছে তাদের জন্যও সে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে। এরই

মধ্যে দুর্যোগ যেন তার ঘরের মধ্যে চলে আসে। উচ্ছব প্রাণপণে ঘরের মাঝখুঁটিটা মাটির দিকে ধরে রাখার চেষ্টা করে, আর ভগবানকে ডেকে চলে। বিদ্যুতের চকিত আলোয় দেখা যায় মাতলার সফেন জল ঘরের ভিতর ছুটে আসছে। তারপরে সর্বনাশকে আর আটকানো যায়নি। বন্যার জলে ভেসে গেল তার স্ত্রী- সন্তানেরা। যখন জলে নেমে গেল, উচ্ছব তখন সর্বহারা। তার সংসার “মাটিতে লুটোপুটি গেল।” উচ্ছব গাছে আটকে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যায়। কিন্তু মানসিক স্থিরতা হারিয়ে কিছুদিন পাগলের মতো তার স্ত্রী-সন্তানদের খুঁজে চলে।

৯.গরিবের গতর এরা শস্তা দেখে।”-কে, কাদের সম্পর্কে মন্তব্যটি করেছে? মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো। ২+৩

উত্তর. বক্তা এবং উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পে উচ্ছব নাইয়ার গ্রাম সম্পর্কিত বোন বাসিনী তার মনিব অর্থাৎ শহরের বড়ো বাড়ির লোকদের সম্পর্কে উক্ত মন্তব্যটি করেছে।

▶ প্রেক্ষাপট: পরিবার হারানোর পর গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিব বাড়িতে উচ্ছব কাজ খুঁজতে আসে। গ্রামের বাদা অঞ্চল থেকে অভুক্ত উচ্ছব শহরের বড়ো বাড়িতে কাজ করতে এসেছিল-কাজের বদলে খেতে পাবে বলে। লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত বড়োকর্তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য তান্ত্রিক ডেকে হোমযজ্ঞের আয়োজন হলে উচ্ছবের উপরে দায়িত্ব পড়ে সেই যজ্ঞের কাঠ কাটার। আড়াই মন কাঠ কাটার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। ক্ষুধার্ত উচ্ছবের কাছে প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি ছিল যজ্ঞ শুরু হওয়ার আগেই খাওয়াদাওয়া পর্ব মিটে যাবে। কিন্তু পরে তান্ত্রিকের নতুন বিধান আসে যে, হোম শেষ হওয়ার আগে খাওয়া যাবে না। কিন্তু ফুটন্ত ভাতের গন্ধ উচ্ছবকে উতলা করে তোলে। উচ্ছব খিদের জ্বালায় বাসিনীর কাছে শুকনো চাল চায়। এই সময়ে বাসিনী শাক ধুতে উঠোনে আসে। কিন্তু বাসিনী তাকে একটি ঠোঙা দিয়ে বলে যে, ছাতুটুকু খেয়ে দ্রুত সে যেন রাস্তার কল থেকে জল খেয়ে আসে। বাড়ির মালিকদের হৃদয়হীনতা বাসিনী ভালোভাবেই জানত। পরিশ্রমের মূল্য দিতে যে তাদের প্রবল অনীহা তা সে কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেছিল। তাই মনিববাড়িকে সে ‘পিশাচের বাড়ি’ বলে সম্বোধন করে এবং উল্লিখিত মন্তব্যটি করে।

১০.মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’ ছোটোগল্পের ‘বড়ো বাড়ি’র চার পুত্র ও পুত্রবধূর পরিচয় দাও।

উত্তর. বড়ো বাড়ির চার পুত্রের পরিচয়: মহাশ্বেতা দেবী রচিত ‘ভাত’

ছোটোগল্পে ‘বড়ো বাড়ির’ যে অশীতিপর বৃদ্ধের মৃত্যু বর্ণিত হয়েছে, তাঁর ছিল চার পুত্র ও পুত্রবধূ। বড়ো, মেজো এবং ছোটো পুত্র বাড়িতে থাকলেও সেজো পুত্র বিলেতে থাকে। বাড়িতে থাকা তিন পুত্রই ছিল অত্যন্ত অলস-“এ বাড়ির ছেলেরা বেলা এগারোটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না।” যেহেতু বাড়ির জ্যেষ্ঠ বুড়োকর্তার দূরদর্শিতায় আঠারোটা দেবত্র বাড়ি এবং বাদা অঞ্চলের অনেক উর্বর জমি তাদের অধিকারে, তাই তারা ছিল ভীষণ কর্মবিমুখ এবং উপার্জনবিমুখ। 

বড়ো বাড়ির চার পুত্রবধূর পরিচয়: বড়ো বাড়ির পুত্রবধূরা ছিল অত্যন্ত কর্মপটু এবং কর্তব্যসচেতন। এ গল্পে ছোটোবউয়ের বিশেষ পরিচয় পাওয়া যায় না, কেবল তার পিতা যে বুড়োকর্তাকে সুস্থ করার জন্য তান্ত্রিক নিয়ে এসেছিলেন, সেটুকুই জানা যায়। অন্যদিকে, মেজোবউ শাশুড়ির সম্ভাব্য বৈধব্যের আশঙ্কায় তাকে বড়ো ইলিশ, বড়ো ভেটকি, চিতলের কোল, ডিমপোরা ট্যাংরা, পাকাপোনার পেটি প্রভৃতি মাছের বিভিন্ন পদ রান্না করে খাওয়ায়। আবার বড়োবউয়ের চরিত্রটি উল্লেখযোগ্য একটি চরিত্র। “শ্বশুর তার কাছে ঠাকুরদেবতা সমান” ছিল। সে শ্বশুরের জন্য প্রতিদিন দই পেতে সেই দইয়ের সঙ্গে ইসবগুল মিশিয়ে শরবত বানাত। শ্বশুর খেতে আসার পাঁচ মিনিট

আগে বড়োবউ তাঁর জন্য রুটি বা লুচি তৈরি করে দিত। এ ছাড়া, প্রতিদিন শ্বশুরের বিছানা করা এবং তাঁর পা টিপে দেওয়ার কাজও সে করত।

র বিয়ে হয়নি।”—’তাঁর’ বলতে এখানে কার কথা বলা হয়েছে? তাঁর বিয়ে না হওয়ার কারণ কী? ১+৪

উত্তর. উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতিটিতে ‘তাঁর’ বলতে বড়োপিসিমার কথা বলা হয়েছে।

▶ বড়ো পিসিমার বিয়ে না হওয়ার কারণ: বড়োপিসিমা বড়ো বাড়ির

বউদের পিসিশাশুড়ি হন। এত বড়োলোক বাড়ির মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিয়ে হয়নি। তাঁর অবিবাহিত থাকা সম্বন্ধে নানা জন নানা ব্যাখ্যা দেন। চারপাশের সবাই বলে যে, বড়ো বাড়ির সংসার সামলানোর জন্যই নাকি পয়সা থাকা সত্ত্বেও বড়োপিসিমার বিয়ে দেওয়া হয়নি। বড়োপিসিমা যখন বিয়ের উপযুক্ত হন, তখন ওই বাড়ির জ্যেষ্ঠ বুড়োকর্তার স্ত্রীর মৃত্যু ঘটে। ফলে তখন বুড়োকর্তা সংসার নিয়ে নাজেহাল হচ্ছিলেন। তাই আর তিনি কন্যার বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেননি। আবার অনেকের মতে, বড়োপিসিমা নিজেই নাকি বলেছিলেন, শিবঠাকুরই তাঁর পতিদেবতা। তাই কোনো মানুষের সঙ্গে বড়োপিসিমা তাঁর বিয়ে দিতে বারণ করেছিলেন। বড়ো বাড়ির লোকেরাও তেমনটাই বিশ্বাস করে। এসব কথা সত্যি না মিথ্যে তা কেউ জানে না।

১১.“মেজ বউ উনোন পাড়ে বসেছে।”—উনোন পাড়ে বসে মেজোবউ কোন্ কাজ করছিল এবং কেন? বাড়ির বড়োবউয়ের কাজ কী? ৩+২

উত্তর মেজোবউয়ের দায়িত্ব: মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ ছোটোগল্পে আমরা বড়ো বাড়ির মেজোবউকে দেখি উনোনের পাড়ে বসে শাশুড়ির জন্য রান্না করতে। মেজোবউয়ের বিরাশি বছরের শ্বশুরমশাই লিভারের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুপথযাত্রী। বিধবা হয়ে গেলে শাশুড়ি আর মাছ খেতে পারবেন না। এই আশঙ্কায় মেজো বউ কয়েকদিন ধরে বড়ো ইলিশ, পাকা পোনার

পেটি, চিতলের কোল, ডিমপোরা ট্যাংরা, বড়ো ভেটকি ইত্যাদি রান্না করে ও বেড়ে শাশুড়িকে খাওয়াচ্ছিল। তাই সে উনোনপাড়ে বসে রান্না করছিল।

▶ বড়োবউয়ের দায়িত্ব: বাড়ির বড়োবউ কাজকর্মে বেশ দক্ষ ছিল। আর শ্বশুর তার কাছে ছিল ‘ঠাকুরদেবতা সমান’। সে শ্বশুরের জন্য প্রতিদিন দই পেতে সেই দইয়ের সঙ্গে ইসবগুল মিশিয়ে শরবত করে দিত। শ্বশুর খেতে আসার পাঁচ মিনিট আগে তাঁর জন্য রুটি বা লুচি তৈরি করত সে প্রতিদিন। প্রতিদিন শ্বশুরের বিছানা করত, শোওয়ার আগে শ্বশুরের পা টিপে দিত। এ ছাড়াও শ্বশুরের এবং সংসারের অন্য অনেক কাজই করত এই কর্মপটীয়সী নারী। শ্বশুর মৃত্যুশয্যায় থাকায় সে শঙ্কা প্রকাশ করে- “কত কাজ করতে হত সারা জীবন ধরে। এখন সে সব কি আর করতে হবে না…।”

১২. “তুমি কী বুঝবে সতীশবাবু!”- সতীশবাবু কী বুঝবে না? সতীশবাবু উচ্ছবের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছিল? ৩+২

[মালদা উমেশচন্দ্র বাস্তুহারা বিদ্যালয়; তারাসুন্দরী বালিকা বিদ্যাভবন]

উত্তর. উদ্দিষ্ট বিষয়: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে উচ্ছব নাইয়া মন্তব্য করেছে যে, সতীশবাবু ভাত না খেতে পারার জ্বালা বুঝতে পারবে না। সতীশবাবু অবস্থাপন্ন গৃহস্থ। উচ্ছবদের মতো নদীর পাড়ে তার বাড়ি নয় আর মেটে ঘরেও সে থাকে না। প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে তার পাকা বাড়ি তাই ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা নেই। এমনকি ধান, চালও সে পাকা ঘরে রেখেছে। ফলে চোর- ডাকাতের পক্ষেও তা চুরি করা সম্ভব নয়। দেশজুড়ে যখন দুর্যোগ চলছিল, লঙ্গরখানা খোলা হয়েছিল, তখনও সতীশবাবুর ঘরে রোজ রান্না হয়েছে। তাই ঘরবাড়ি এবং স্ত্রী-পুত্র হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে-পড়া উচ্ছবদের মতো হতদরিদ্র মানুষের ক্ষুধার জ্বালা সতীশবাবুর মতো নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা লোকেরা কিছুতেই বুঝতে পারবে না।

▶ সতীশবাবুর আচরণ: মাতাল মাতলা নদীর আগ্রাসী ঢেউয়ে উচ্ছব

ভিটেমাটি, স্ত্রী-সন্তানদের হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। খিদের জ্বালায় সতীশবাবুর কাছে উচ্ছব একদিন ভাতের প্রার্থনা করে। উচ্ছবকে খেতে দিলে পঙ্গপালের মতো দলে দলে অভুক্ত মানুষ তার কাছে এসে জড়ো হবে এই বলে সতীশবাবু তাকে খাবার না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়। সতীশবাবু উচ্ছবকে জানায় যে,

ভগবানের মারের হাত থেকে সে উচ্ছবকে বাঁচাতে পারবে না। সতীশবাবু উচ্ছবের সঙ্গে একরকম অমানবিক আচরণই করেছিল।

১৩. “নইলে দেহে ক্ষমতা ছিল না।”-কার দেহে ক্ষমতা ছিল না? কেন ক্ষমতা ছিল না?

১+৪

উত্তর. উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য উক্তিটিতে উচ্ছব নাইয়ার দেহে ক্ষমতার অভাবের কথা বলা হয়েছে।

ক্ষমতা না থাকার কারণ: পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন এলাকায় মাতলা নদীর তীরবর্তী কোনো এক অঞ্চলে স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েদের নিয়ে ভরা সংসার ছিল উচ্ছবের। কিন্তু একদিন শীতের রাতে সেখানে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। মাতাল মাতলার জল ভাসিয়ে নিয়ে যায় উচ্ছবের ঘরবাড়ি এবং স্ত্রী-সন্তানদের। ঘটনার আকস্মিকতায় শোকে পাগল হয়ে পরদিন সকাল থেকে উদ্‌গ্রীব হয়ে উচ্ছব খুঁজতে থাকে তার হারিয়ে যাওয়া বউ এবং ছেলেমেয়েকে। নিজের পরিবারকে হয়রান হয়ে খোঁজার জন্য লঙ্গরখানা থেকে দেওয়া খিচুড়িও তার আর খাওয়া হয় না। তারপর যেদিন সে একটু স্বাভাবিক হয়, সেদিন থেকে খাবার দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কিছুদিন সরকার-প্রদত্ত কাঁচা চাল জল দিয়ে চিবিয়ে খেলেও ভাতের অভাবে উচ্ছবের শরীর ক্লান্ত, দুর্বল হয়ে পড়েছিল। এর ওপর স্ত্রী-সন্তানদের হারিয়ে মানসিকভাবে সে এতটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল যে, তার শারীরিক সক্ষমতা অনেকটা হ্রাস পেয়েছিল।

১৪.”কী হয়েচে বাবু?”-কে এই প্রশ্নটি করেছিল? প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। ১+৪

উত্তর বক্তা: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য উক্তিটি করেছে উচ্ছব নাইয়া।

▶ প্রসঙ্গ: মাতলা নদীর বন্যায় স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েদের হারিয়ে শোকে পাগল উচ্ছব বেশ কিছুদিন অভুক্ত থাকার পর ভাতের আশায় চলে আসে তার গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিবের বাড়ি কলকাতায়। সেখানে তাকে বাড়ির বুড়োকর্তার আয়ুবৃদ্ধির জন্য করা হোমযজ্ঞের কাঠ কাটতে হয়েছিল। ভাত খাওয়ার বিনিময়ে এই কাজ করতে সে রাজি হলেও তান্ত্রিকের বিধান অনুযায়ী,

যজ্ঞ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু খাওয়া বারণ ছিল। তাই খিদের জ্বালায় অস্থির হয়ে-পড়া সত্ত্বেও উচ্ছব ভাত খেতে পারেনি। মাঝে বাসিনীর দেওয়া ছাতু জল দিয়ে খেয়ে খিদে মেটানোর চেষ্টা করে উচ্ছব। যদিও এই সামান্য খাবারে তার পেট ভরেনি। কাঠ কাটা শেষ করে বাড়ির বাইরে গিয়ে উচ্ছব তাই শিবমন্দিরের বারান্দায় বসে। সেখানে শুয়ে ক্লান্তির ভারে, ক্ষুধার তাড়নায় এবং স্ত্রী-সন্তানের স্মৃতিতে শোকাতুর হয়ে কাঁদতে কাঁদতে একসময় সে ঘুমিয়ে পড়ে। অনেকক্ষণ পর একজনের পায়ের ধাক্কায় ঘুম থেকে জেগে উঠে সে দেখে যে, রাস্তায় বেশ কয়েকটা গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং বড়ো বাড়ির সামনে লোকের ছোটো ছোটো জটলা। এই দৃশ্য দেখে ঘাবড়ে গিয়ে সে সামনে থাকা জনৈক ব্যক্তিকে প্রশ্নোদৃত কথাটি জিজ্ঞাসা করেছিল।

১৫.ওরা’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? ওরা সব ভাত ফেলে দিতে যাচ্ছিল কেন? ‘সে’ কে? বুঝতে পেরে সে কী করেছিল? 

“সে বুঝতে পারে সব ভাত ওরা পথে ফেলে দিতে যাচ্ছে!”-

উত্তর. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পের উল্লিখিত অংশে ‘ওরা’ বলতে বাসিনীর মনিববাড়ির কথা বলা হয়েছে।

▶ বাড়ির বড়োকর্তার মৃত্যুর কারণে অশৌচ হওয়ায় বড়োপিসিমা নির্দেশ দিয়েছিলেন সব ভাত ফেলে দেওয়ার জন্য।

▶ ‘সে’ বলতে এখানে উচ্ছব নাইয়ার কথা বলা হয়েছে।

▶ ক্ষুধার্ত উচ্ছব ভাত ফেলে দেওয়ার নির্দেশ শুনে দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যায় এবং “… মাথার মধ্যে যে মেঘ চলছিল তা সরে যায়।” সে এটাকে তার ক্ষুধা- নিবৃত্তির অভাবিত সুযোগ বলে মনে করে। স্থির বুদ্ধিতে উচ্ছব বাসিনীর কাছ থেকে মোটা চালের ভাতের বড়ো ডেকচিটা চেয়ে নেয় দূরে ফেলে দিয়ে আসার জন্য। তারপরে সে দ্রুত হাঁটতে থাকে। বাসিনী তার অভিসন্ধি অনুমান করে অশৌচ বাড়ির ভাত খেতে নিষেধ করলে উচ্ছব কামটের মতো হিংস্র ভঙ্গিতে পিছনে ফিরে তাকায়। তারপরে দৌড়োতে দৌড়োতে নিরুপদ্রবে ভাত খাওয়ার স্বর্গসুখ পাওয়ার জন্য স্টেশনে পৌঁছে যায়।

১৬.”মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়।” কারা, কেন উচ্ছবকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়?

উত্তর. উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কর্তৃক উচ্ছবকে মারার কারণ: মহাশ্বেতা আশায় তার গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিবের বাড়ি কলকাতায় চলে আসে। দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে মাতলা নদীর বন্যায় সর্বস্ব-হারানো উচ্ছব ভাতের সেখানে ভাত খাওয়ার বিনিময়ে তাকে সেই বাড়ির বড়োকর্তার আয়ুবৃদ্ধির জন্য করা হোমযজ্ঞের কাঠ কাটতে হয়েছিল। এদিকে তান্ত্রিকের বিধান অনুযায়ী, যজ্ঞ শেষ না-হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু খাওয়া বারণ ছিল। তাই খিদের জ্বালায় অস্থির হয়ে-পড়া উচ্ছবও ভাত খেতে পারেনি। মাঝে বাসিনীর দেওয়া ছাতু পেট ভরেনি। তার সামনে অপ্রত্যাশিত সুযোগ চলে আসে বড়োকর্তার মৃত্যুর জল খেয়ে খিদে মেটানোর চেষ্টা করে উচ্ছব। যদিও এই সামান্য খাবারে তার পরে। বড়ো পিসিমার নির্দেশে রান্না খাবার ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে উচ্ছব ভাতের বড়ো ডেকচিটা চেয়ে নেয় ফেলে দেওয়ার জন্য। তারপরে দ্রুত হেঁটে, পরে এক দৌড়ে স্টেশনে গিয়ে মনের সুখে ভাত খায়। অনেকদিন পরে আশ মিটিয়ে ভাত খেয়ে স্টেশনেই তৃপ্ত উচ্ছব সেই পেতলের ডেকচিটি জাপটে স্টেশনেই ধরে ফেলে এবং পেতলের ডেকচি চুরির অপরাধে তাকে মারতে তার কানায় মাথা ছুঁয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন ভোরে পুলিশ ঘুমন্ত উচ্ছবকে মারতে থানায় নিয়ে যায়।

১৭. “বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন।” ‘বাদা’ কাকে বলে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এই রকম মনে হওয়ার কারণ কী?

উত্তর. বাদা: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে থাকা ‘বাদা’ শব্দটির অর্থ হল জল-জঙ্গলপূর্ণ নীচু জমি।

▶ এরকম মনে হওয়ার কারণ: ঝড়-বৃষ্টির যে রাতে উচ্ছব তার স্ত্রী ও পুত্র- কন্যাকে হারিয়েছিল, সেদিন সন্ধ্যায় উচ্ছব অনেকদিন পরে পেট ভরে সপরিবারে ভাত খেয়েছিল। তারপর সর্বস্বান্ত উচ্ছব তার বন্যাবিধ্বস্ত ভিটেতে উন্মাদের মতো কয়েকদিন পড়ে ছিল, তাই লঙ্গরখানার ‘রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি’। তার যখন সম্বিত ফেরে তখন রান্না খাবার দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। কাঁচা চাল চিবিয়েই তাই তার দিন কাটতে থাকে। উচ্ছব যার জমিতে কাজ করত, সেই সতীশ মিস্তিরিও তাকে ভাত দিতে অস্বীকার করে। ভাতের আকাঙ্ক্ষাতেই উচ্ছব কলকাতায় গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিববাড়িতে কাজ করতে আসে। সুন্দরবনের নোনা জলের বাদার অধিবাসী উচ্ছব দেখে যে, বাসিনীর মনিবদের মিষ্টিজলের বাদায় হওয়া নানাপ্রকার চালে তাদের ঘর ভরে আছে। সে-বাড়ির বড়োকর্তার মৃত্যু হলে তারা যখন বাড়ির সমস্ত ভাত এবং অন্যান্য রান্না খাবার ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে, তখন অভুক্ত উচ্ছব আর মাথা ঠিক রাখতে পারে না। বাসিনীর হাত থেকে অশৌচ বাড়ির ভাতের ডেচকিটা ছিনিয়ে নিয়ে সে স্টেশনে ছুটে আসে এবং সেখানেই ভাতে হাত দিয়ে সেস্বর্গসুখ লাভ করে উচ্ছব। তার মনে হয়, মিঠে জলের বাদার ভাত খেলেই সে ‘আসল বাদা’ অর্থাৎ ‘অন্নের দেশ’-এর খোঁজ পেয়ে যাবে।

১৮. “আসল বাদাটার খোঁজ করা হয় না আর উচ্ছবের।”- উচ্ছবের পরিচয় দাও। তার পক্ষে আসল বাদাটার খোঁজ করা হয়ে ওঠেনি কেন?

উত্তর. উচ্ছবের পরিচয়: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছব নাইয়া, মাতলার বন্যায় সর্বস্বান্ত হওয়ার পরে যে শহরে কাজ করতে চলে আসে একটু ভাতের আশায়।
▶ খোঁজ না করার কারণ: শহরের বড়োবাড়িতে কাজের বিনিময়ে খেতে পাবে বলে উচ্ছব কাজ করতে আসে। কিন্তু লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত বড়োকর্তাকে বাঁচানোর জন্য যে হোমযজ্ঞের আয়োজন হয়, তার তান্ত্রিকের নির্দেশে খাবারের সময় বারেবারে পালটে যেতে থাকে। ক্ষুধার্ত উচ্ছবের সামনে অভাবিত সুযোগ চলে আসে বড়োকর্তার মৃত্যুর পরে। বড়ো পিসিমা আদেশ দেন সমস্ত রান্না পথে ফেলে দিতে। উচ্ছব ফেলে দেওয়ার জন্য সবথেকে ভারি ডেকচিটা বাসিনীর কাছ থেকে চেয়ে নেয়। নিয়ে দ্রুত চলতে শুরু করে। বাসিনীর নিষেধ তাকে ফেরাতে পারে না। স্টেশনে পৌঁছে ভাতে হাত দিয়ে সে স্বর্গসুখ পায়। কিন্তু সেই ভাত খেয়ে সে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন পিতলের ডেকচি চুরির অপরাধে উচ্ছবকে সেখান থেকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। উচ্ছব এতদিন ভাবত যে, বাদার ভাত খেলে আসল বাদা অর্থাৎ যেখানে ফসল ফলে তার সন্ধান সে পেয়ে যাবে। কিন্তু ভাত খাওয়া হলেও শেষপর্যন্ত বাদাটার খোঁজ করা তার পক্ষে আর সম্ভব হয় না।

Long Answer Question

১. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ রচনাটি ছোটোগল্প হিসেবে কতখানি সার্থক, তা আলোচনা করো।

উত্তর: বিষয়বস্তু: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ একটি ছোটোগল্প। ঝড়জল- বন্যার এক রাতে সুন্দরবনের ভাগচাষি উচ্ছব নাইয়ার ঘরবাড়ি এবং স্ত্রী-সন্তান বানের জলে ভেসে যায়। প্রাথমিকভাবে শোক ও তারপর খিদের তাড়না তাকে পাগল করে তোলে। তার চাষ-করা জমির মালিক সতীশ মিস্তিরির কাছে ভাতের প্রার্থনা করে ব্যর্থ হয়ে ক-দিন পেটপুরে ভাত খাওয়ার আশায় সে কলকাতায় চলে যায়। গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিববাড়িতে গিয়ে পেটপুরে ভাত খাওয়ার চুক্তিতে সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে সে। কিন্তু বিকেলে সেই ‘বড়ো বাড়ি’র বৃদ্ধের মৃত্যু ঘটলে দীর্ঘদিন ধরে ভাত না খাওয়া উচ্ছব প্রমাদ গোনে। তাই যখন সেই অশৌচ বাড়ির রাঁধা ভাত ফেলে দেওয়ার উপক্রম হয়, তখন মরিয়া উচ্ছব বাসিনীর হাত থেকে ভাতের একটা পেতলের ডেকচি নিয়ে এক দৌড়ে স্টেশনে চলে যায়। সেই ভাত পেটপুরে খেয়ে সেখানেই সে শুয়ে পড়ে। ভোরে পেতলের ডেকচি চুরির অপরাধে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। যে বাদার জমির বিপুল ও উন্নত ধান ‘বড়ো বাড়ি’কে বড়ো করে তুলেছিল, সেই ‘আসল বাদাটার খোঁজ’, বন্ধ্যা বাদার অধিবাসী উচ্ছবের আর পাওয়া হয় না।

সার্থকতা: সুতরাং, উচ্ছবের ভাত খাওয়াকে কেন্দ্র করেই সুন্দরবন ও কলকাতার পটভূমিতে ‘ভাত’ ছোটোগল্পের মাত্র কয়েকদিনের কাহিনি গড়ে উঠেছে। এ গল্পে তাই স্থান-কাল-ঘটনাগত ঐক্য বজায় রাখা হয়েছে। তা ছাড়া, ‘ঘটনার ঘনঘটা’, ‘তত্ত্ব’, বা ‘উপদেশ’ও এখানে অনুপস্থিত। উচ্ছব এবং আরও চার-পাঁচটি চরিত্র নিয়েই গল্পটি বিস্তার লাভ করেছে। সমাপ্তিতে উচ্ছবের জেলে

যাওয়া এবং ‘আসল বাদাটার খোঁজ’ না পাওয়ার মধ্যে যেমন চমক রয়েছে তেমন তা গল্পটিকে চরম ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছেও দিয়েছে। ‘ভাত’ তাই নিঃসন্দেহে একটি শিল্পসার্থক ছোটোগল্প।

২. “বাসিনী এনেছে। বাদায় থাকে অথচ ভাতের আহিংকে  এতখানি।”-বাসিনী কে? ও কাকে এনেছে? তার ভাতের আহিংকে এতখানি কেন?

উত্তর:  বাসিনী: মহাশ্বেতী দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিতে উল্লিখিত বাসিনী হল বড়ো বাড়ির পরিচারিকা।

সঙ্গে আনা ব্যক্তি: বাসিনী তার গ্রাম সম্পর্কিত দাদা উচ্ছবকে তার মনিবের বাড়িতে এনেছে।

ভাতের আকাঙ্ক্ষার কারণ: ‘ভাত’ ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছবের জীবনে

এক ঝড়-বৃষ্টির রাতে চরম বিপর্যয় নেমে আসে। যেদিন মাতলার বানে তার বউ-ছেলেমেয়ে ভেসে যায়। সেদিন সন্ধ্যাতেই উচ্ছব বউ-ছেলেমেয়ে-সহ পেট পুরে ভাত খেয়েছিল বহুদিন পর। সেই বন্যার রাতের পর জল নেমে গেলেও কয়েকদিন ধরে সে তার ভিটেয় পড়েছিল প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়ার আশায়। ফলে লঙ্গরখানার ‘রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি’। তার সংবিৎ ফিরে আসলে সে দেখে রান্না খিচুড়ি দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কয়েকদিনের উপবাসের পর সে বেশ কয়েকদিন কাঁচা চাল চিবিয়েই কাটিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন

ধরে ভাত না খেতে পেয়ে দিশেহারা উচ্ছব ভেবেছিল, “পেটে ভাত নেই বলে উচ্ছবও প্রেত হয়ে আছে। ভাত খেলে সে মানুষ হবে। তখন বউ ছেলে মেয়ের

জন্য কাঁদবে।” যার জমিতে সে কাজ করে সেই সতীশ মিস্তিরি যখন তাকে একদিনের জন্যও ভাত খেতে দিতে অরাজি হয়, তখন সে পেট ভরে ভাব খাওয়ার আকাঙ্ক্ষাতেই গ্রামতুতো বোন বাসিনীর কলকাতাস্থ মনিবের বাড়িতে আসে। সুন্দরবনের বাদায় বাস করা উচ্ছবের একারণেই ‘ভাতের আহিংকে এতখানি’ ছিল।

৩.”দাঁতগুলো বের করে সে কামটের মতোই হিংস্র ভঙ্গি করে।”-কে, কার প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল? তার এরূপ আচরণের কারণ বিশ্লেষণ করো।

 [টেকনো মডেল স্কুল, সল্টলেক,সেন্ট জব্দ ডায়োসেশান গার্লস এইচএস স্কুল]

উত্তর: এরূপ আচরণকারী এবং উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পের মুখ্য চরিত্র উচ্ছব নাইয়া তার গ্রাম সম্পর্কিত বোন বাসিনীর প্রতি এরকম আচরণ করেছিল।
আচরণের কারণ: বুড়োকর্তার মৃত্যুর পরে তার মৃতদেহ শ্মশানের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার পরে বড়োপিসিমা নির্দেশ দেন বাড়ির সব রান্না ফেলে দিয়ে আসার জন্য। আর মুহূর্তের মধ্যেই মরিয়া উচ্ছব স্থির করে নেয় সে কী করবে। সে সুন্দরবন থেকে শুধুমাত্র খাবারের সন্ধানে শহরের বড়ো বাড়িতে কাজ করতে এসেছিল। কিন্তু বুড়োকর্তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য হোমযজ্ঞ শেষ না হলে খাওয়া হবে না-এই যুক্তিতে সে তার চরম আকাঙ্ক্ষিত খাবার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। এর মধ্যে সে নানারকম চালের এবং খাবারের গল্প শুনেছে ও দেখেছে। ফুটন্ত ভাতের গন্ধে সে উতলা হয়েছে কিন্তু ভাত জোটেনি তার। তাই বাসিনী ভাত ফেলতে গেলে লক্ষ্যে স্থির উচ্ছব ভাতের বড়ো ডেকচিটা নিজেই নেয় এবং দূরে ফেলে দিয়ে আসার কথা বলে। যে বাদার ভাতের জন্য তার দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষা, সেই ভাত এখন তার হাতের মুঠোয়। ডেকচি নিয়ে উচ্ছব প্রথমে দ্রুত হেঁটে, ওপরে দৌড়ে স্টেশনে পৌঁছোয়। এই সময়েই যখন বাসিনী তাকে সেই ‘অশুচ বাড়ির ভাত’ খেতে নিষেধ করে, তা সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ে উচ্ছবের পক্ষে। সে ফিরে দাঁড়ায় এবং কামটের মতো হিংস্র চোখে বাসিনীর দিকে তাকায়। তার দাঁত বের করা মুখভঙ্গি কামটের মতোই হিংস্র লাগে বাসিনীর। আসলে খিদের মতো আদিম প্রবৃত্তি মানুষকে পশুর মতোই করে তোলে। তাই অভুক্ত উচ্ছব উদ্‌বৃত্ত ভাত খাওয়ার জন্য পশুর মতোই মরিয়া হয়ে উঠেছিল।

৪.মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে উচ্ছবের চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: দুর্ভাগ্যপীড়িত: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র উৎসব নাইয়া নিম্নবর্গীয় সমাজব্যবস্থার একজন প্রতিনিধি। ভাগ্যের ফেরে মাতলার বন্যায় বউ-ছেলেমেয়েকে হারায় সে। ভেসে যায় তার মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকুও। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ উৎসবের জীবন থেকে সব কিছু কেড়ে নিলেও কেড়ে নিতে পারেনি তার আদিম প্রবৃত্তিকে, যে প্রবৃত্তির নাম খিদে। তাই প্রিয়জন হারানোর শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই তার মধ্যে জেগে ওঠে ভাতের জন্য হাহাকার।

মমতা ও ভালোবাসাপ্রিয়: হাভাতে উৎসবের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসার আগে পর্যন্ত তার মধ্যেও কোমলতার স্পর্শ ছিল। তাই সতীশ মিস্তিরির তিন

ধানে মড়ক লাগলে ধানের প্রতি পরম মমতায় কেঁদে ভাসায় এই গরিব ভাগচাষি। ভেসে যাওয়া ঘরের চালের নীচ থেকে পরিচিত স্বর শোনার আশায় নাওয়াখাওয়া ভুলে বসে থাকে উৎসব। অসম্ভব জেনেও পাগলের মতো বলতে থাকে, “রা কাড় অচল্গুনীর মা।”

মানবিকতা: পরম আকাঙ্ক্ষিত ভাতের স্পর্শে ‘প্রেত’ উচ্ছবের ভিতর থেকে জেগে ওঠে ‘মানুষ’ উৎসব। তাই বড়ো বাড়ি থেকে নিয়ে আসা ডেকচির ভাত খেতে খেতে সে মনে মনে সেই ভাত তুলে দেয় বউ-ছেলেমেয়ের মুখে… “চল্গুনী রে। তুইও খা, চরুনীর মা খাও, ছোটো খোকা খা, আমার মধ্যে বসে তোরাও খা।”
সর্বহারা বঞ্চিত: আসলে উৎসবের মতো বঞ্চিত, প্রান্তিক মানুষদের সমাজজীবনে ব্যক্তিনামেরও কোনো মূল্য নেই। তাই আমরা দেখি তার নিরুৎসব জীবনে সে আর উৎসব থাকেনি, তার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্ছব নাইয়া।

৫. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে বুড়োকর্তার মৃত্যুর পর বড়ো বাড়িতে কী কী ঘটনা ঘটেছিল?

উত্তর:  বুড়োকর্তার মৃত্যু পরবর্তী ঘটনাসমূহ: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে বর্ণিত বড়ো বাড়ির বুড়োকর্তা বিরাশি বছর বয়সে লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে যেদিন মারা যান সেদিনই তাঁকে বাঁচাতে হোমযজ্ঞ শুরু হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পর বাড়ির মহিলা এবং পরিচারিকারা স্বভাবতই কাঁদতে থাকে। বড়োপিসিমা কাঁদতে কাঁদতে তান্ত্রিককে এবং বাড়ির ছোটোবউয়ের বাবাকে দোষারোপ করতে থাকেন ‘ডাকাতে সন্নেসী’ আনার জন্য। তার ধারণা হয়েছিল। আটানব্বই বছরের পরিবর্তে বিরাশি বছরেই কর্তার মৃত্যুর কারণ তান্ত্রিকের অক্ষমতা। ঠিক হয় যে, বুড়োকর্তার মেয়েরা এবং কীর্তনের দল আসার পর সে রাতেই মৃতদেহ সৎকার করা হবে। পুরোহিতকে বলে প্রয়োজনীয় জিনিসের ফর্দ নেওয়া হয় এবং খই, ফুল, ধুতি, শববস্ত্র ইত্যাদির জোগাড় চলতে থাকে। চন্দন বাটা চলতে থাকে, খাট আনতে একজনকে বাগবাজারে পাঠানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে একটা বোম্বাই খাট এসে যায়। মহিলারা মাঝেমধ্যেই কেঁদে উঠলেও শোকের বিশেষ চিহ্ন দেখা যায় না কারও মধ্যে। বাড়ির উনুন জ্বলবে না বলে রাস্তার দোকান থেকে চা আসতে থাকে। অবশেষে রাত একটার পর বোম্বাই খাটে শুইয়ে বৃদ্ধের মৃতদেহ বের করা হয়। পেশাদারি শববাহকরা তা দ্রুতগতিতে শ্মশানে নিয়ে যেতে থাকে। পেছন পেছন দৌড়ে যায় কীর্তনের দল। বাড়ির সব রান্না ফেলে দিয়ে ঘরদুয়ার সাফ করা শুরু হয়।

৬.মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প অবলম্বনে বুড়োকর্তার চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পের ‘বড়ো বাড়ি’র দুই প্রজন্মের দুই কর্তাকেই যেহেতু লেখিকা ‘বুড়োকর্তা’ বলে অভিহিত করেছেন, তাই বুড়োকর্তার চরিত্র বলতে আমরা জ্যেষ্ঠ বুড়োকর্তা এবং কনিষ্ঠ বুড়োকর্তা-এই দু-জনের চরিত্রই বুঝব।

জ্যেষ্ঠ বুড়োকর্তার চরিত্র: প্রয়াত জ্যেষ্ঠ বুড়োকর্তা ছিলেন বড়োপিসিমার পিতা। বড়োপিসিমা যখন বিয়ের উপযুক্ত হন, তখন তাঁর মা অর্থাৎ জ্যেষ্ঠ বুড়োকর্তার স্ত্রী মারা যান। স্ত্রীবিয়োগের পর সংসার দেখার জন্যই তিনি তাঁর কন্যার বিয়ে দেননি। তবে, তিনি ‘দূরদর্শী লোক ছিলেন’, আর তাঁর জন্যই বর্তমান প্রজন্ম কোনো কাজ না করেও বহাল তবিয়তে খেয়ে-পরে ছিল। তাঁর বাড়ির রাস্তার সবগুলি বাড়িই তিনি শিব, মহেশ্বর, ত্রিলোচন, উমাপতি ইত্যাদি বহু নামে শিবঠাকুরকে দিয়ে গিয়েছিলেন। ফলে, তাঁর দৌলতেই আঠারোটা দেবত্র বাড়ি এবং বাদা অঞ্চলের বিস্তৃত, উর্বর জমি বড়ো বাড়ির অধিকারভুক্ত হয়। বড়ো বাড়ির বিশাল বসতবাড়িটা এবং বাড়ির শিব মন্দিরটাও সম্ভবত তিনিই তৈরি করিয়েছিলেন।

কনিষ্ঠ বুড়োকর্তার চরিত্র: জ্যেষ্ঠ বুড়োকর্তার পুত্র হলেন কনিষ্ঠ বুড়োকর্তা, ‘ভাত’ ছোটোগল্পে যে বৃদ্ধের মৃত্যু দেখানো হয়েছে, তিনি। চার পুত্র এবং বেশ কয়েকটি কন্যা সন্তানের পিতা ছিলেন এই মানুষটি। বড়োবউমার সঙ্গে তাঁর অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল। বিরাশি বছরে পৌঁছেও তিনি বেশ শক্তসমর্থ ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বিরাশি বছরে তাঁর মৃত্যু হয়, যদিও তাঁর নাকি আটানব্বই বছর বেঁচে থাকার কথা ছিল। বেশ সমাদরের সঙ্গেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল। গল্পটিতে তাঁর চরিত্র সম্পর্কিত আর কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।

৭. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প অবলম্বন করে বড়োপিসিমার চরিত্র আলোচনা করো।

উত্তর: বড়োপিসিমার চরিত্র: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হল বড়োপিসিমা। তাঁর প্রধান চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি হল-

ঈশ্বরভক্তি: বড়োপিসিমা হলেন এ গল্পে উল্লিখিত ‘বড়ো বাড়ির’ অবিবাহিতা, প্রৌঢ়া কন্যা। প্রয়াত জ্যেষ্ঠ বুড়োকর্তার যখন স্ত্রীবিয়োগ ঘটে, তখন তিনি সংসার সামলানোর কারণেই তাঁর এই বিবাহযোগ্য কন্যার বিয়ে দেননি। বড়োপিসিমা পিতার এই সিদ্ধান্তে অবশ্য অখুশি ছিলেন না। তিনি শিবকেই পতি হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন।

সংসার-আসক্তি ও কর্তৃত্বপরায়ণতা: পিতৃবিয়োগের আগে পর্যন্ত বড়োপিসিমা সংসারের হেঁশেল দেখেছেন, ভাড়াটে বাড়িতে মিস্তিরি লাগিয়েছেন এবং তাঁর বাবার সেবা করেছেন। পিতার মৃত্যুর পর বিবাহিত দাদা সংসারের কর্তা হলেও সে-অভ্যাস তাঁর পালটায়নি। এই আধিপত্য থেকেই বাড়ির বউদের তিনি অনায়াসে তাচ্ছিল্য করেন। বড়োবাড়ির এই অনুঢ়া প্রৌঢ়াকে আমরা লুকিয়ে বাদার চাল বিক্রি করে দিতেও দেখি। সামান্য ক্ষোভ থাকলেও এই বৃদ্ধবয়সেও তিনি তাঁর পৈতৃক বাড়ির সব কিছুর দেখভাল করতেন অত্যন্ত দায়িত্বের সঙ্গে। দাদার শেষযাত্রাকে সুসম্পন্ন করার জন্য সবদিকেই তাঁর সজাগ দৃষ্টি ছিল।

সংস্কারাচ্ছন্ন: সংস্কারাচ্ছন্ন এই প্রৌঢ়া তান্ত্রিকের হোমযজ্ঞ করাকে অনুচিত মনে করেননি। যজ্ঞ সত্ত্বেও বুড়োকর্তা মারা গেলে তাঁকে বিষোদ্গার করতে দেখা যায় তান্ত্রিক এবং বাড়ির ছোটোবউয়ের বাবার ওপর। কারণ তিনিই এই তান্ত্রিককে নিয়ে এসেছিলেন। এ ছাড়া, এ গল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছবকে তিনিই বাড়িতে কাজে লাগিয়েছেন। সুতরাং, বড়োপিসিমা এ গল্পের একটি উল্লেখযোগ্য এবং সক্রিয় চরিত্র।

৮. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে উচ্ছবের গ্রামের মানুষদের পরিচয় দাও।

উত্তর: গ্রামের তিন ব্যক্তি: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছব মাতলা নদীর পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সুন্দরবন অঞ্চলের এক দরিদ্র গ্রামে বাস করত। এ গল্পে এই গ্রামের সাধন দাশ, মহানাম শতপথি ও সতীশ মিস্তিরি-র পরিচয় পাওয়া যায়।

সাধন দাশ: সাধন দাশ উচ্ছবের বিশেষ পরিচিত ছিলেন। ঝড়-বৃষ্টির রাতে ধনে-জনে সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়া উচ্ছব যখন উন্মাদের মতো বউ-ছেলেমেয়েকে খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা করছিল, তখন সাধন দাশই তার সংবিৎ ফেরানোর উদ্দেশ্যে তাকে জানান- “তোরেও তো টেনে নেচ্ছেল। গাচে বেধে রয়ে গেলি।” এর কয়েকদিন পর উচ্ছব যখন কলকাতা যাওয়ার জন্য উদ্‌গ্রীব হয়, তখন সাধন দাশ “সরকার ঘর কত্তে খরচা দেবে” জানিয়ে তাকে গ্রাম ত্যাগ করতে নিষেধ করেন। সুতরাং সাধন ছিলেন উচ্ছবের শুভাকাঙ্ক্ষী।

মহানাম শতপথি: মহানাম শতপথি ছিলেন ব্রাহ্মণ। চারপাশের কয়েকটি গ্রামের বন্যা-মৃতদের শ্রাদ্ধের দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর।

সতীশ মিস্তিরি: জোতদার সতীশ মিস্তিরির জমিতেই বছরের কয়েকমাস চাষের কাজ করত উচ্ছব। কিন্তু ঝড়জলের রাতে সর্বস্বান্ত, উন্মাদপ্রায় হয়ে যাওয়া উচ্ছব একদিন তাঁর কাছে ভাত খেতে চাইলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। উচ্ছবকে তিনি জানান, “তোকে এগলা দিলে চলবে? তাহলেই পালে পালে পঙ্গপাল জুটবে নে?” সুতরাং, এই ধনী ব্যক্তির দয়া-মায়া-মমতা বলে কিছুই ছিল না।

৯.মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে ‘ভাত’-এর প্রসঙ্গ কীভাবে বারবার ফিরে ফিরে এসেছে, তা আলোচনা করো। গার্লস 
উত্তর। মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে ভাতের প্রসঙ্গ বারবার উঠে এসেছে। ঝড়-বৃষ্টির যে রাতে উচ্ছবের জীবনে সর্বনাশ নেমে এসেছিল, সেদিন সন্ধ্যায় উচ্ছব পরিবার-সহ পেট ভরে ভাত খেয়েছিল। তারপর সব কিছু হারিয়ে কয়েকদিন সে উন্মাদের মতো প্রিয়জনদের সাড়া পাওয়ার আশায় নিজভিটায় পড়েছিল। তাই লঙ্গরখানার ‘রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি।’ রান্না খিচুড়ি দেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে এরপর কয়েকদিন তাকে কাঁচা চাল চিবিয়েই কাটাতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে ভাত না খেতে পেয়ে দিশেহারা উচ্ছব ভাবে, ‘পেটে ভাত নেই বলে উচ্ছবও প্রেত হয়ে আছে। ভাত খেলে সে মানুষ হবে। তখন বউ ছেলে মেয়ের জন্য কাঁদবে।” শুধু ভাত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষাতেই সে কলকাতায় গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিববাড়িতে আসে। সারাদিন ধরে ভাতের আশায় উচ্ছব অমানুষিক পরিশ্রম করে বাড়ির কর্তার সুস্থতার উদ্দেশ্যে করা হোমযজ্ঞের কাঠ কাটে। তার মনে পড়ে শৈশবে শোনা ঠাকুমার কথা-“রন্ন হল মা নক্কী।” বুড়োকর্তার মৃত্যুর পরে রান্না খাবার ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা হলে আর মাথা ঠিক রাখতে পারে না অভুক্ত উচ্ছব। বাসিনীর হাত থেকে অশৌচ বাড়ির ভাতের বড়ো ডেকচিটা ছিনিয়ে নিয়ে তাই সে স্টেশনে ছুটে আসে এবং প্রাণ ভরে ভাত খেয়ে সেই ডেকচিটা জড়িয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। ফলে পেতলের ডেকচি চুরির অপরাধে থানায় যেতে হয় তাকে। সুতরাং, এ কাহিনিতে ভাতের প্রসঙ্গ শুধু বারবার আসেইনি, এই প্রসঙ্গ গল্পটিকে নিয়ন্ত্রণও করেছে। ‘আসল বাদা’ অর্থাৎ অন্নের দেশ দেখার আকুলতা আর তার ব্যর্থতাই গল্পের মূল বিষয় হয়ে থাকে।