WBCHSE Class 12 Bangla Chapter 3 Solution | Bengali Medium

Class 12 Chapter 3 Solution

ভারতবর্ষ

1. MCQs

1. বাজারের উত্তরদিকে ছিল-

ক) গ্রাম 

খ) ইটভাটা

গ) বাঁশবন

ঘ) মাঠ 

2. বাজারে জমাটিভাব থাকে-

ক) সন্ধ্যা সাতটা অবধি 

খ) রাত আটটা অবধি 

গ) রাত নটা অবধি

ঘ) রাত দশটা অবধি

3. শীতের বৃষ্টিকে ভদ্রলোকে বলে- 

ক) ডাওর 

খ) ডাক 

গ) ফাঁপি 

ঘ) পউষে বাদলা 

4. “এমনিতেই খুব জাঁকানো” যার কথা বলা হয়েছে- 

ক) রাঢ়বাংলার গরম 

খ) রাঢ়বাংলার বর্ষা 

গ) রাঢ়বাংলার শীত 

ঘ) রাঢ়বাংলার কুয়াশা

5. রাঢ় বাংলার শীতে ধারালো বৃষ্টিপাতকে ছোটোলোকে বলে- 

ক) শীতবৃষ্টি 

খ) ডাওর 

গ) বৃষ্টির ধারাপাত 

ঘ) পউষে বাদলা [কারমেল হাই স্কুল]

6. “… বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস জোরালো হলে তারা বলে”-

ক) পউষে বাদলা 

খ) ডাওর 

গ) ফাঁপি 

ঘ) ঝড়-বৃষ্টি

7. ‘ডাওর’ কথাটির অর্থ-

ক) ভদ্রলোক

খ) ছোটোলোক 

গ) শহরের লোক 

ঘ) গ্রামের লোক

8. চাষাভুষো মানুষ চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে-দিতে প্রতীক্ষা করছিল-

ক) গরম চায়ের 

খ) রোদ ঝলমল একটা দিনের

গ) নীল উর্দিপরা চৌকিদারের

ঘ) শহরে যাওয়ার বাসের 

9. চায়ের দোকানের আড্ডাবাজরা বুড়ির সঙ্গে তুলনা করেছিল-

ক) ঘোড়ার 

খ) টাট্টুর

গ) হরিণের 

ঘ) খরগোশের

10. ডাকের মতে পৌষমাসে শনিবার বৃষ্টি শুরু হলে তা থাকবে- 

ক) একদিন 

খ) তিনদিন 

গ) পাঁচদিন 

ঘ) সাতদিন 

11. ডাকপুরুষের বচন অনুযায়ী পৌষমাসে মঙ্গলবার বৃষ্টি শুরু হলে থাকবে-

ক) একদিন 

খ) তিনদিন 

গ) পাঁচদিন

ঘ) সাতদিন

12. ডাক তার বচনে বলেছেন যে, পৌষমাসে বুধবার বৃষ্টি শুরু হলে থাকবে-

ক) একদিন 

খ) তিনদিন 

গ) পাঁচদিন 

ঘ) সাতদিন

13. ডাক তার বচনে বলেছেন যে, পৌষমাসে বৃহস্পতিবার বৃষ্টি শুরু হলে থাকবে-

ক) একদিন

খ) তিনদিন 

গ) পাঁচদিন 

ঘ) সাতদিন

14. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল-

ক) সোমবার 

খ) মঙ্গলবার 

গ) বুধবার 

ঘ) বৃহস্পতিবার

15. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বৃক্ষবাসিনী বুড়ি কোথায় আশ্রয় নিলে ভালো করত বলে কয়েকজন গ্রামবাসী মনে করেছিল? 

ক) বটতলায় 

খ) চায়ের দোকানে 

গ) বারোয়ারিতলায়

ঘ) আড়তে

16.. চায়ের দোকানে হঠাৎ আসা বুড়ির হাতে ছিল- 

ক) মোটা লাঠি

খ) বেঁটে লাঠি 

গ) ন্যাকড়ার থলে 

ঘ) তুলোর কম্বল

17. বাজারে মুদিখানার সংখ্যা-

ক) এক 

খ) দুই 

গ) তিন 

ঘ) চার

18. বাজারে হাস্কিং মেশিনের পিছনে কী ছিল? 

ক) মন্দির 

খ) ইটভাটা 

গ) জলের কল

ঘ) স্কুল

19. ‘রাঢ়বাংলা’ বলতে বোঝায়-

ক) গঙ্গার পূর্ববর্তী অঞ্চল

খ) গঙ্গার পশ্চিম তীরবর্তী অঞ্চল 

গ) দামোদরের দক্ষিণ অঞ্চল

ঘ) অজয় নদের উত্তর অঞ্চল

20. আমেদাবাদ শহরটি যে রাজ্যে অবস্থিত-

ক) পশ্চিমবঙ্গ 

খ) গুজরাট

গ) রাজস্থান

ঘ) মহারাষ্ট্র

21. “… শনিতে সাত, মঙ্গলে পাঁচ, বুধে তিন বাকি সব দিন-দিন।”-এটি হল একটি 

ক) বচন 

খ) গান 

গ) উক্তি

 ঘ) ছড়া

22. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের লেখক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ যুক্ত ছিলেন-

ক) তরজার সঙ্গে 

খ) আলকাপের সঙ্গে

গ) রামযাত্রার সঙ্গে 

ঘ) থিয়েটারের সঙ্গে

23. যে গ্রন্থটি সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের লেখা নয়- 

ক) অলীক মানুষ  

খ) রণভূমি 

গ) উত্তর জাহ্নবী  

ঘ) চোখের বালি

24. হাস্কিং মেশিন থেকে কী বের হয়? 

ক) তেল 

খ) রস

গ) চাল

ঘ) গম

25. ‘সাবেককাল’ বলতে বোঝায়- 

ক) আদ্যিকাল 

খ)মধ্যকাল 

গ) আধুনিক কাল 

ঘ) অতি আধুনিক কাল

26. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পটি যে ঋতুর পটভূমিতে রচিত, তা হল

ক) গ্রীষ্ম 

খ)বসন্ত

গ) হেমন্ত

ঘ) শীত 

27. “… একঘেয়েমি দূর করতেই নানান কথা আসে।”-তাদের মধ্যে একটি হল- 

ক) বলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রী

খ) টলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রী

গ) কলকাতার অভিনেতা-অভিনেত্রী

ঘ) বোম্বাইয়ের অভিনেতা-অভিনেত্রী

28. “… সেখানেই গড়ে উঠেছে একটা ছোট্ট বাজার।”-বাজারটি গড়ে উঠেছে-

ক) পিচের রাস্তা যেখানে শেষ হয়েছে 

খ) বড়ো সড়কটি যেখানে একটি ছোটো সড়কের সঙ্গে মিশেছে 

গ) পিচের সড়ক বাঁক নিয়েছে যেখানে 

ঘ) ইটপাতা রাস্তার ধারে

29. “মাঝে-মাঝে বিমর্ষ সভ্যতার মুখ চোখে পড়ে…।”- কারণ- 

ক) গ্রামটিতে ভাঙা মন্দিরের ছড়াছড়ি 

খ) গ্রামে বিদ্যুৎ নেই 

গ)গ্রামের চারপাশে ছড়িয়ে আছে ভাঙা ইটের স্তূপ 

ঘ) গ্রামে সভ্য মানুষের বসবাস খুবই কম

30. “চারপাশের গ্রাম থেকে লোকেরা আসে।”- লোকেরা আসে- 

ক) তাই রাত নটা অবধি জোর জমাটিভাব থাকে 

খ) তাই জায়গাটিতে মেলা বসে যায় 

গ) তাই লোকেরা সবাই সবাইকে চেনে 

ঘ) তাই বাজারে বেচাকেনা হয় খুব

31. “আবার সব চুপচাপ।”-সেই স্তব্ধতার অন্তর্গত-

ক) শেয়ালের ডাক

খ) প্যাঁচার ডাক 

গ) শকুনের ডাক

ঘ) ঝিঁঝির ডাক

32. “.. লোকের মেজাজ গেল বিগড়ে।”- লোকের মেজাজ বিগড়ে যাওয়ার কারণ- 

ক) অকালবর্ষণে বাড়িঘর ডুবে যাবে 

খ) প্রচণ্ড শীতে ছেলেপিলেরা ঠান্ডায় কাঁপবে 

গ) অকাল দুর্যোগে ধানের প্রচন্ড ক্ষতি হবে 

ঘ) গরমের দাবদাহে চাষের খেত ফুটিফাটা হবে

33. “…মুণ্ডুপাত করতে থাকল আল্লা-ভগবানের।”-আল্লা-ভগবানের মুণ্ডুপাত করতে থাকার কারণ-

ক) পউষে বাদলা হয়েছিল

খ) অকাল দুর্যোগের ফলে ধানের প্রচন্ড ক্ষতি হবে 

গ) কৃষকরা ফাঁপির কবলে পড়েছিল 

ঘ) খ ও গ দুটিই ঠিক

34. “… মাথার ওপর আর কোনো শালা নেই রে-কেউ নাই।”- কথাটি বলেছিল- 

ক) গ্রামের কোনো যুবক চাষি

খ) গ্রামের মোড়লেরা 

গ) এক ভবঘুরে 

ঘ) গ্রামের এক গণ্যমান্য চাষি

35. “… তখন যা খুশি করা যায়।”-যা খুশি করা যায়, তখন, যখন কিনা-

ক) মাথার ঠিক থাকে না

খ) মাথার যখন ব্যথা থাকে না 

গ) মাথা ঘামানোর কিছু থাকে না 

ঘ) মাথার উপর কেউ থাকে না 

36. “সবাই চলে আসে”- সবাই আসে, কারণ- 

ক) একলা ঘরে বসে থাকার জো নেই 

খ) গ্রামের ঘরে বসে কারও সময় কাটে নাগ 

গ)সবাইকেই এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় 

ঘ) বাজারে ভালোমন্দ খাবার পাওয়া যায়

37. “…ধারের অঙ্ক বেড়ে চলে।”-কেন-না-

ক) লোকের হাতে পয়সা নেই 

খ) অকাল দুর্যোগে সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে

গ) আজ না-হোক, কাল পয়সা পাবেই 

ঘ) চাওয়ালা খুব দিলদরিয়া লোক ছিল [

38. “…সেটাই সবাইকে অবাক করেছিল।”-সবাই অবাক হল কারণ-

ক এই প্রবল ঝড়ে চায়ের দোকানটা কীভাবে টিকে রইল

খ) এই শুখা মরশুমে বাউরিরা নতুন বাড়ি বানাল কী করে 

গ) এই দুর্যোগে কীভাবে ভিখিরি বুড়িটা হেঁটে চায়ের দোকানে এল 

ঘ) এই অকালবর্ষণে জমির ধানগুলো অক্ষত রইল কীভাবে

39. “সে-কথায় তোমাদের কাজ কী বাছারা?”- কথাটি হল- 

ক) সে কোথা থেকে এসেছে

খ) সে কোথায় যাবে 

গ)তার সঙ্গে আর কে আছে 

(ঘ) সেকেন এখানে এসেছে 

40. “মরবে রে, নির্ঘাত মরবে বুড়িটা।”- লোকেদের এমন কথা বলে চিৎকার করে ওঠার কারণ- 

ক) হঠাৎ একটা ট্রাক এসে পড়েছিল 

খ) বুড়িটা হাত-পা সেঁকার জন্য আগুনের খুব কাছে চলে গিয়েছিল

গ) তাড়াহুড়োয় চা খেতে গিয়ে বুড়িটির বিষম লেগেছিল

 ঘ) দুর্যোগের মধ্যে বুড়ি আবার রাস্তায় গিয়ে নেমেছিল

41 “…বুড়ির এ অভিজ্ঞতা প্রচুর আছে।”- এখানে বুড়ির যে অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে, তা হল-

ক) লোকের টিটকিরি সহ্য করা 

খ) না খেয়ে থাকা

গ) গাছতলায় থাকা

ঘ) ফুটপাথে থাকা

42. “কেউ কেউ বল…”- কেউ কেউ কী বলল? 

ক) বৃষ্টির মধ্যে বুড়ির রাস্তায় নামা উচিত হয়নি

খ) বুড়ি বারোয়ারিতলায় গেলেই ভালো করত

গ) বুড়ির নিশ্চয় কোনো কুমতলব আছে 

ঘ) বুড়ির পুঁটলিতে অনেক টাকাপয়সা আছে

43. “আবার জমে গেল..।”- এক্ষেত্রে আড্ডা আবার জমে যাওয়ার কারণ- 

ক) বৃষ্টি থেমে গেল

খ) বাজারে নতুন নতুন লোক এল 

গ) বুড়ির প্রসঙ্গে কথা উঠল

ঘ) বাউরিবাড়ির মেয়েটির প্রসঙ্গ এল

44. “অন্যদিনে লাগলে একদিনের ব্যাপার।”-‘পউষে বাদলা’ প্রসঙ্গে ডাকপুরুষের বচনে না থাকা দিনগুলি হল-

ক) শনি, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি 

খ) সোম, মঙ্গল, শুক্র, শনি  

গ) রবি, সোম, বুধ, শনি 

ঘ) রবি, সোম, বৃহস্পতি, শুক্র 

45. “সবাই আবিষ্কার করল”-

(ক) ভারতবর্ষ 

(খ) বটতলায় বুড়ির অসাড় দেহ

(ন) শকুনের ঝাঁক

(ঘ) পড়ে থাকা পুঁটলি 

[নমুনা প্রশ্ন]

46. বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস জোরালো হলে বলা হয়- 

ক) পউষে বাদলা 

খ) ডাওর

গ) কালবৈশাখী

ঘ) ফাঁপি 

47. “পিচের সড়ক বাঁক নিয়েছে যেখানে, সেখানেই গড়ে উঠেছে”- 

ক) একটি মিষ্টির দোকান

খ) একটি ছোট্ট বাজার

গ) একটি শনি মন্দির 

ঘ) একাট চায়ের দোকান [

48. থুথুড়ে ভিখিরি বুড়ির গায়ে জড়ানো- 

ক) চিটচিটে তুলোর কম্বল ছেঁড়া 

খ) কাপড়

গ) নোংরা চাদর

ঘ) দামি শাল

49. “এইটুকুই যা সুখ তখন।” সুখটা হল-

ক) কম্বল মুড়ি দেওয়া

খ) উনুনের ধারে বসা 

গ) সভ্যতার উনুনে হাত-পা সেঁকা 

ঘ) লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকা

50. “তাকে দেখে সবাই তর্ক থামাল।”-কাকে দেখে? 

ক) চৌকিদারসাহেব

খ) ভট্টাজমশাই

গ) মোল্লাসাহেব

ঘ) থুথুড়ে বুড়ি 

51, চায়ের দোকানে বসে থাকা লোকটি বুড়িকে বলেছিল– 

ক) ভারি তেজি 

খ) খুব মেজাজি 

গ) বদরাগি 

ঘ) বড়ো মুখরা

52. বৃষ্টি সম্বন্ধে ডাকপুরুষের পুরোনো বচন হল-

ক) শনিতে সাত, মঙ্গলে পাঁচ, বুধে তিন বাকি সব দিন-দিন  

খ) শনিতে পাঁচ, মঙ্গলে সাত, শুক্রে তিন- বাকি সব দিন-দিন 

গ) শনিতে পাঁচ, মঙ্গলে সাত, বুধে তিন বাকি সব দিন-দিন 

ঘ) বুধে সাত, মঙ্গলে পাঁচ, শনিতে তিন-বাকি সব দিন-দিন

53. ফাঁপি হল-

ক) প্রবল বৃষ্টি 

খ) মেঘলা আকাশ 

গ) জোরালো বাতাস ও বৃষ্টি 

ঘ) প্রবল ঝড়-বৃষ্টি

54. “…কাঁচা রাস্তা ধরে সবুজ ঝোপের ফাঁকে এগিয়ে আসে কোনো যুবক বা যুবতী; …।”-তাদের পোশাক তৈরি- 

ক) আমেদাবাদে 

খ) জয়পুরে

গ) সুরাটে 

ঘ) বোম্বাইয়ে

55. “বৃষ্টিতে তা হল ধারালো।” বৃষ্টিতে যা ধারালো হল-

ক) লোকের মেজাজ 

খ) রাঢ়বাংলার শীত 

গ) বাতাসের গতি

ঘ) নদীর স্রোত

56. “… আজ না-হোক, কাল পয়সা পাবেই…।”-কারণ-

ক) গ্রামের লোকজন সৎ 

খ) গ্রামের লোকের অবস্থা ভালো 

গ) ধানের মরশুম চলছে  

ঘ) পয়সা না দিয়ে যাবে কোথায়

57. “ও বুড়ি, তুমি থাকো কোথায়…।”-বুড়ির উত্তর কী ছিল? 

ক) তোমাদের মাথায় 

খ) তোমাদের চুলোয় 

গ) তোমাদের দুয়ারে 

ঘ) জাহান্নামে

58. কোথা থেকে পয়সা নিয়ে ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বুড়ি চায়ের দাম মেটায়? 

ক) পয়সার ব্যাগ থেকে 

খ) কম্বলের ভিতরে রাখা ন্যাকড়া থেকে 

গ) বাক্স থেকে

ঘ) পেটের কাপড় থেকে

59. “মরবে রে, নির্ঘাত মরবে বুড়িটা।”-এ কথার উত্তরে বুড়ি বলেছিল-

ক) তোদের বাপ-মা মরুক 

খ) তোদের ছেলেপিলে মরুক 

গ) তোদের শতগুষ্টি মরুক 

ঘ) তোরা মর্

60. বুড়ি চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে কোথায় গিয়েছিল? 

ক) বাঁকের মুখের বটগাছতলায় 

খ) নদীর চড়ায় 

গ) পাশের জঙ্গলে 

ঘ) পাশের মাঠে

2. Very Short Answer Question

১. “… চাওলা জগা বলল-নির্ঘাত মরে গেছে বুড়িটা।” কখন বলেছিল?

▶ বটতলায় বটের গুঁড়ির কোটরে পিঠ রেখে নিঃসাড় হয়ে পড়ে থাকা বুড়িকে যখন অনেক বেলা হয়ে যাওয়ার পরও নড়তে দেখা গেল না, তখন জগা কথাগুলো বলেছিল।

২. জগার মুখে বুড়িটা মরে গেছে শুনে একজন ‘সর্বনাশ’ কথাটা উচ্চারণ করার পর আর কী বলেছিল?

▶ জগার মুখে বুড়ির মারা যাওয়ার কথা শুনে একজন ‘সর্বনাশ’ কথাটা উচ্চারণ করে বলেছিল যে, তাহলে শেয়াল-কুকুরে মৃতদেহ ছিঁড়ে খাবে এবং সেই দুর্গন্ধে টেকা দায় হবে।

৩. “…চাওলা জগা বলল…”-জগা কী বলেছিল?

▶ চাওয়ালা জগা বলেছিল যে, বুড়িটা নির্ঘাত মরে গেছে।

৪. “একজন দুজন করে ভিড় বাড়তে থাকল।”-কোথায়?

▶ বটগাছতলায় যেখানে বটের গুঁড়ির কোটরে পিঠ রেখে বুড়ি চিত হয়ে নিস্পন্দভাবে পড়েছিল, সেখানেই একজন-দুজন করে ভিড় বাড়তে থাকল।

৫. “একজন দুজন করে ভিড় বাড়তে থাকল।” -কখন?

▶ বুড়ি বটগাছতলায় মরে পড়ে রয়েছে-এ কথাটা চাওয়ালা জগার মাধ্যমে চাউর হয়ে গেলে সেখানে একজন দুজন করে ভিড় বাড়তে লাগল।

৬. “অতএব মড়াই বটে।”-কখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল?

▶ বটগাছতলায় নিঃসাড়ভাবে শুয়ে-থাকা বুড়ির কপাল প্রচণ্ড ঠান্ডা দেখে এবং নাড়ির কোনো স্পন্দন না পেয়ে বুড়িকে মড়া বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

৭. চৌকিদার বুড়ির মৃত্যুসংবাদ থানায় দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেছিল কেন?

▶ অসময়ের জলবৃষ্টিতে এক ভিখিরি বুড়ির মৃত্যু নেহাতই গুরুত্বহীন ঘটনা হওয়ায় চৌকিদার সে খবর থানায় দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেছিল।

৮. চৌকিদার কোন্ অসুবিধার জন্য থানায় বুড়ির মৃত্যুসংবাদ দিতে বারণ করেছিল?

▶ বটতলা থেকে পাঁচ ক্রোশ দূরবর্তী থানায় খবর দিয়ে এবং তা পেয়ে পুলিশ আসতে আসতে মড়ার দুর্গন্ধ ছড়াবে বলে চৌকিদার থানায় মৃত্যুসংবাদ দিতে বারণ করেছিল।

৯. চৌকিদার বুড়ির মৃতদেহের সৎকারের কী ব্যবস্থা করেছিল?

▶ চৌকিদার বুড়ির মৃতদেহ নদীতে ফেলে দিয়ে তার গতি করার ব্যবস্থা করেছিল।

১০. “বিজ্ঞ চৌকিদারের পরামর্শ মানা হল।”-পরামর্শটি কী ছিল?

▶ বিজ্ঞ চৌকিদার নদীতে বুড়ির মৃতদেহ ফেলে দিয়ে তার গতি করার পরামর্শ দিয়েছিল।

১১. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের নদীটা কোথায় ছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের নদীটা বাজার-পাশ্ববর্তী মাঠ পেরিয়ে দুই মাইল দূরে অবস্থিত ছিল।

১২. নদীর চড়ায় বুড়ির দেহটা কীভাবে পড়েছিল?

▶ নদীর চড়ায় তপ্ত বালিতে উজ্জ্বল সূর্যালোকে বুড়ির দেহটা চিত হয়ে পড়েছিল।

১৩. বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে রেখে এসে শববহনকারীরা কী করছিল?

▶ বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে রেখে এসে শববহনকারীরা দিগন্তের আকাশের দিকে তাকিয়ে ঝাঁক ঝাঁক শকুনের নেমে আসার অপেক্ষা করছিল।

১৪. বুড়ি মরে গেছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তৎক্ষণাৎ সবাই কী করেছিল?

▶ বুড়ি মরে গেছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তৎক্ষণাৎ সবাই গ্রামের চৌকিদারকে খবর দিয়েছিল।

১৫. বুড়ির দেহকে কীভাবে নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল?

▶ বুড়ির দেহকে বাঁশের চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

১৬. “হঠাৎ বিকেলে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল।”-কোন্ দৃশ্য দেখা গেল?

▶ হঠাৎ বিকেলে দেখা গেল যে, উত্তরের মাঠ অতিক্রম করে বাজারের দিকে একটা চ্যাংদোলা আসছে।

১৭. বুড়ি যে মুসলমান-তার প্রমাণস্বরূপ শববাহকরা কী বলেছিল হিন্দুদের?

▶ বুড়ি যে মুসলমান-তার প্রমাণস্বরূপ মুসলমান শববাহকরা জানিয়েছিল যে, তাদের অনেকেই বুড়িকে বিড়বিড় করে ‘আল্লা’ বা ‘বিসমিল্লা’ বলতে শুনেছিল।

১৮. “…তখন জানা গেল ব্যাপারটা।”-ব্যাপারটা কী ছিল?

▶ ব্যাপারটা ছিল যে মুসলমান পাড়ার লোকেরা নদীর চড়া থেকে বুড়ির ফেলে দেওয়া মৃতদেহ চ্যাংদোলায় করে তুলে নিয়ে এসেছে।

১৯. মোল্লাসাহেব শহরের দিকে যাওয়ার সময় বটতলায় কী শুনেছিলেন?

▶ মোল্লাসাহেব শহরের দিকে যাওয়ার সময় বটতলায় আশ্রয় নেওয়া বুড়িকে কলমা পড়তে স্পষ্ট শুনেছিলেন।

২০. মোল্লাসাহেব কখন বুড়িকে মারা যেতে দেখেন?

▶ মোল্লাসাহেব ভোরের নামাজ সেরে যখন শহরে যাওয়ার বাস ধরার উদ্দেশ্যে আসছিলেন, তখন তিনি বটতলায় মুমূর্ষু বুড়িকে দেখেছিলেন।

২১. “তাই দেখা হল না ব্যাপারটা।” বক্তার কী দেখা হল না?

▶ বটগাছতলায় পড়ে থেকে কলমা পড়তে-থাকা বুড়ি শেষপর্যন্ত মরল কি না-তা দেখা হয়নি মোল্লাসাহেবের।

২২. “তাই দেখা হল না ব্যাপারটা।”-কেন দেখা হল না ব্যাপারটা?

▶ মোল্লাসাহেব মামলা লড়তে শহরে যাচ্ছিলেন বলে বটগাছতলায় আশ্রয় নেওয়া বুড়ি মরল কি না- তা তার দেখা হয়নি।

২৩. “তা কি হয় আমরা বেঁচে থাকতে?”-কী হয় না?

মুসলমান বুড়ির মৃতদেহ কবরস্থ না করে নদীতে ফেলে দেওয়া- এখানে মোল্লাসাহেব তা না হওয়ার কথা বলেছেন।

২৪. ভটচাজমশাই বুড়িকে কী বলতে শুনেছিলেন?

▶ ভটচাজমশাই বুড়িকে ‘শ্রীহরি শ্রীহরি শ্রীহরি’ বলতে শুনেছিলেন।

২৫. বুড়িকে নদীতে ফেলে আসার দিন সকালে বটগাছতলা থেকে একই বাসে কে কে শহরে গিয়েছিলেন?

▶ বুড়িকে নদীতে ফেলে আসার দিন সকালে বটগাছতলা থেকে মোল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাই একই বাসে করে শহরে গিয়েছিলেন।

২৬. বুড়ি মারা যাওয়ার সময় কী কী উচ্চারণ করেছিল বলে হিন্দুরা জানিয়েছিল?

▶ বুড়ি মারা যাওয়ার সময় ‘শ্রীহরি’ এবং ‘হরিবোল’ উচ্চারণ করেছিল বলে হিন্দুরা জানিয়েছিল।

২৭. বুড়ি মারা যাওয়ার সময় কী কী উচ্চারণ করেছিল বলে মুসলমানরা জানিয়েছিল?

▶ বুড়ি মারা যাওয়ার সময় কলমা পড়েছিল এবং ‘আল্লা’, ‘বিসমিল্লা’, ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ উচ্চারণ করেছিল বলে মুসলমানরা জানিয়েছিল।

২৮. “চেঁচিয়ে উঠল-মিথ্যে!”-বক্তা কোন্ বিষয়কে ‘মিথ্যে’ বলেছিল?

▶ ফজলু সেখ যখন জানায় যে, সে নিজের কানে মুমূর্ষু বুড়িকে ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ বলতে শুনেছে, তখন নিবারণ বাগদি সে কথাকে ‘মিথ্যে’ বলে চেঁচিয়ে উঠেছিল।

২৯. “দেখলাম বসা যাবে না।”-কেন বসা যাবে না?

▶ বটগাছতলায় দাড়ি কামানোর উদ্দেশ্যে এসে বৃষ্টিতে সেখানকার কাদা হয়ে যাওয়া মাটির অবস্থা দেখে নকড়ি নাপিত বুঝতে পেরেছিল সেখানে বসা যাবে না।

৩০. ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ কথাটির অর্থ কী?

▶ ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ কথাটির অর্থ হল আল্লা ছাড়া অন্য উপাস্য নেই।

৩১. ‘নারায়ে তকবির’ কথাটির অর্থ কী?

▶ ‘নারায়ে তকবির’ কথাটির অর্থ হল উচ্চকণ্ঠে আল্লার প্রশংসা বা গুণকীর্তন।

৩২. ‘আল্লাহু আকবর’ কথাটির অর্থ কী?

▶ ‘আল্লাহু আকবর’ কথাটির অর্থ হল আল্লাই সর্বশ্রেষ্ঠ।

৩৩. ‘কলমা’ কাকে বলে?

▶ ইসলামধর্মের আত্মশুদ্ধি-সাধক মূল ইষ্টমন্ত্রই হল কলমা।

৩৪. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে ‘খবরদার’ কথাটা কে কে উচ্চারণ করেছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে ‘খবরদার’ কথাটা উচ্চারণ করেছিল একসময়ের পেশাদার

লাঠিয়াল করিম ফরাজি এবং এলাকার চৌকিদার।

৩৫. “ফজলু সেখ বলল।”-ফজলু সেখ কী বলেছিল?

▶ ফজলু সেখ বলেছিল যে সে নিজের কানে বুড়িকে ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ বলতে শুনেছে।

৩৬. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে নিবারণ বাগদির স্বভাবচরিত্রের কোন্ পরিচয় পাওয়া যায়?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের নিবারণ বাগদি ছিল রাগি লোক। সে একসময় দাগি ডাকাত ছিল।

৩৭. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে করিম ফরাজির স্বভাবচরিত্রের কোন্ পরিচয় পাওয়া যায়?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের করিম ফরাজি বর্তমানে নিয়ম মতো নামাজ পড়া বান্দা

মানুষ হলেও এককালে সে ছিল পেশাদার লাঠিয়াল।

৩৮. “দেখতে-দেখতে প্রচণ্ড উত্তেজনা ছড়াল চারদিকে।”-উত্তেজনা ছড়ানোর প্রতিক্রিয়া কী হল?

▶ উত্তেজনা ছড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় বাজারের দোকানগুলোর ঝাঁপ বন্ধ হতে থাকল এবং গ্রাম থেকে বহু লোক অস্ত্রশস্ত্র-সহ দৌড়ে বাজারে আসতে লাগল।

৩৯. মোল্লাসাহেব কী কী বলে নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের উত্তেজিত করেছিলেন?

▶ মোল্লাসাহেব ‘জেহাদ’ কথাটি উচ্চারণ করে এবং ‘নারায়ে তকবির- আল্লাহু আকবর।’ বলে নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের উত্তেজিত করেছিলেন।

৪০. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের শেষে দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর বুড়ি উৎসাহী জনতার উদ্দেশ্যে কোন্ তিনটি গালাগাল বর্ষণ করেছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের শেষে দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর বুড়ি উৎসাহী জনতার উদ্দেশ্যে ‘মুখপোড়া’, ‘নরকখেকো’ এবং ‘শকুনচোখো’-এই গালাগাল বর্ষণ করেছিল।

৪১. “… ভটচাজমশাই গর্জে বলছেন…”-কী বলেছিলেন?

• ভটচাজমশাই ‘জয় মা কালী’ ধ্বনি তুলে তাঁকে যবন নিধনে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

৪২. ‘ধুন্ধুমার গর্জন প্রতিগর্জন’ চলার সময় চৌকিদার প্রাথমিকভাবে কী করছিল?

▶ ‘ধুন্ধুমার গর্জন প্রতিগর্জন’ চলাকালীন চৌকিদার দু-পক্ষের মাঝখানে লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে দু-পক্ষকে নিরস্ত করার চেষ্টা করছিল।

৪৩. “যখনই মুসলিমপক্ষ এক-পা এগিয়ে আসে”-তখন চৌকিদার কী করছিল?

▶ যখন মুসলিমপক্ষ এক-পা এগিয়ে আসে তখন চৌকিদার হাতের লাঠিটা পিচরাস্তায় ঠুকে ‘সাবধান’ বলে গর্জে উঠছিল।

৪৪. হিন্দুপক্ষ যখন এক-পা এগিয়ে আসছিল, তখন চৌকিদার কী করছিল?

▶ হিন্দুপক্ষ যখন এক-পা এগিয়ে আসছিল, তখন চৌকিদার হাতের লাঠিটা পিচরাস্তায় ঠুকে ‘খবরদার’ বলে গর্জে উঠছিল।

৪৫. “দু-দিকের সশস্ত্র জনতা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে”-কী দেখছিল?

► দু-দিকের সশস্ত্র জনতা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখছিল যে, বুড়ির দেহটা নড়ছে এবং নড়তে নড়তে বুড়ি উঠে বসার চেষ্টা করছে।

৪৬. দীর্ঘ ঘুম থেকে উঠে দু-পাশের ভিড় দেখে বুড়ির কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?

• দীর্ঘ ঘুম থেকে উঠে দু-পাশের ভিড় দেখে প্রাথমিকভাবে বুড়ির মুখটা বিকৃত হয়ে গেলেও এরপর ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে উঠেছিল সে।

৪৭. চৌকিদারের কথার উত্তরে বুড়ি কী বলেছিল?

▶ চৌকিদারের কথার উত্তরে বুড়ি শতগুষ্টি-সহ চৌকিদারের মৃত্যুকামনা করে বলেছিল-“মর্, তুই মর্। তোর শতগুষ্টি মরুক।”

৪৮. বুড়িটা নড়ে ওঠার ঠিক আগে চৌকিদার কী করছিল?

▶ বুড়িটা নড়ে ওঠার ঠিক আগে চৌকিদার পালা করে হিন্দু ও মুসলিমপক্ষ- এই দু-পক্ষের দিকে একবার করে পিচে লাঠি ঠুকছিল এবং সাবধান ও খবরদার বলে চিৎকার করছিল।

৪৯. “বুড়ি খেপে গিয়ে বলল-চোখের মাথা খেয়েছিস মিনসেরা?” কখন বলেছিল?

► দু-পক্ষের বিবদমান জনতা যখন বুড়িকে জিজ্ঞাসা করেছিল বুড়ি হিন্দু না মুসলমান, তখনই বুড়ি খেপে গিয়ে কথাগুলো বলেছিল।

৫০. “আমি যাচ্ছি শহরে-মামলার দিন।”-বক্তা কে?

▶ সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে উদ্ধৃতাংশের বক্তা হলেন মোল্লাসাহেব।

৫১. “…তারপর ওনার আসতে আসতে রাত-দুপুর।”-কে, কখন এ কথা বলে?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বৃদ্ধাটির মৃত্যু হয়েছে ভেবে গ্রামবাসীরা চৌকিদারকে খবর দিলে সে এসে মৃতদেহ পরীক্ষা করে থানায় খবর না দেওয়ার যুক্তিতে কথাটি বলে।

৫২. “…তারপর ওনার আসতে আসতে রাতদুপুর।”- কেন আসতে রাত- দুপুর হবে?

▶ থানাটি বটতলা থেকে পাঁচ ক্রোশ দূরে অবস্থিত বলে সেখানে খবর দিলে থানা থেকে পুলিশের আসতে রাত-দুপুর হবে।

৫৩. “…তারপর ওনার আসতে আসতে রাত-দুপুর।”-রাত-দুপুরে ওনার আগমন ঘটলে ততক্ষণে কী ঘটে যাবে বলে মনে করেন বক্তা?

▶ বক্তা চৌকিদারের মতে, কবে-না-কবে মরা বুড়ির লাশ যেহেতু ফুলে ঢোল হয়েছে, তাই সেদিন রাত-দুপুরের মধ্যেই সেই মড়ার দুর্গন্ধ ছড়াবে বলে মনে করে সে।

৫৪. “ঠিক গতি হয়ে যাবে…”-কী করলে গতি হবে?

▶ বৃদ্ধার মৃতদেহ নদীতে ফেলে দিয়ে আসলেই তার আত্মার গতি হবে বলে। জানিয়েছে চৌকিদার।

৫৫. “বাঁশের চ্যাংদোলায় ঝোলানো হয়েছিল।”-কেন ঝোলানো হয়েছিল?

▶ বুড়ির মৃতদেহ ফেলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নদীর চড়ায় নিয়ে যেতে তাকে বাঁশের চ্যাংদোলায় ঝোলানো হয়েছিল।

৫৬. “ফিরে এসে সবাই দিগন্তে চোখ রাখল…”- কোথা থেকে ফিরল?

▶ বুড়িকে মৃত ভেবে চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে শুকনো নদীর চড়ায় ফেলে ফিরেছিল কয়েকজন হিন্দু গ্রামবাসী।

৫৭. “ফিরে এসে সবাই দিগন্তে চোখ রাখল …”-কেন?

▶ বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে বাজারে ফিরে ঝাঁক ঝাঁক শকুনের নেমে আসা দেখার অপেক্ষায় গ্রামবাসীরা দিগন্তে চোখ রেখেছিল।

৫৮. “তারপরই দেখা গেল এক অদ্ভুত দৃশ্য”-দৃশ্যটি কী? 

 ▶ অদ্ভুত দৃশ্যটি হল বুড়ির তথাকথিত মৃতদেহটি নড়ে উঠেছিল।

৫৯. “উঁকি মেরে সব দেখে-শুনে বললেন…”-কখন?

▶ বাজারে বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীর মধ্যে যখন

বচসা চলছিল, তখনই বাস থেকে নেমে ভটচাজমশাই অকুস্থলে প্রবেশ করেন।

৬০. “উঁকি মেরে সব দেখে-শুনে বললেন…”-কী বললেন?

▶ ভটচাজমশাই ‘অসম্ভব’ কথাটা বলে জানান যে, তিনি সকালে মোল্লাসাহেবের সঙ্গে একই বাসে শহরে যাবার আগে মুমূর্ষু বুড়িকে ‘শ্রীহরি শ্রীহরি শ্রীহরি’ বলতে স্পষ্ট শুনেছিলেন।

৬১. “তাঁর সপক্ষে অনেক প্রমাণ জুটে গেল।”-কার সপক্ষে?

▶ বুড়িকে যে ভটচাজমশাই মুমূর্ষু অবস্থায় ‘শ্রীহরি’ বলতে শোনেন, অর্থাৎ বুড়ি যে হিন্দু, তার সপক্ষে প্রমাণ জুটেছিল।

৬২. “তাঁর সপক্ষে অনেক প্রমাণ জুটে গেল।”-প্রমাণটা কী জুটেছিল?

▶ ভটচাজমশাইয়ের সপক্ষে নকড়ি নাপিত প্রমাণ জুগিয়েছিল যে, ক্ষৌরকর্ম করতে বটতলায় গিয়ে সে বুড়িকে ‘হরিবোল’ বলতে স্পষ্ট শুনেছে।

৬৩. “মাঝে-মাঝে মোল্লাসায়েব চেঁচিয়ে উঠছেন…”—কী বলে চেঁচিয়ে উঠছেন?

▶ মোল্লাসায়েব চেঁচিয়ে বলছিলেন-“মোছলেম ভাইসকল। জেহাদ, জেহাদ। নারায়েতকবির-আল্লাহু আকবর!”

৬৪. বুড়িকে হরিবোল বলতে স্পষ্ট শুনেছে কে?

[অ্যান্ড্রুজ হাই স্কুল (এইচএস)]

▶ বুড়িকে হরিবোল বলতে স্পষ্ট শুনেছে নকড়ি নাপিত।

৬৫. বুড়িটি ‘বিকৃত মুখে ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে’ উঠেছিল কেন?

▶ শুয়ে-থাকা মৃতদেহ মনে করে হিন্দু-মুসলমান দু-পক্ষের মানুষ তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে দেখেই বুড়িটি বিকৃত মুখে ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে উঠেছিল।

৬৬. “বচসা বেড়ে গেল।” বচসার কারণ কী?  

▶ বুড়ি হিন্দু না মুসলমান-এই বিতর্কের মাধ্যমেই দু-পক্ষের মধ্যে বচসা বেড়ে গেল।

৬৭. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বাজারটির পিছনে কী কী ছিল? 

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বাজারটির পিছনে ছিল ঘন বাঁশবনে ঢাকা একটি গ্রাম এবং ইটভাটা।

৬৮. বাজারটিতে রাতের বেলায় কী কী দেখা যেত?

• বাজারটিতে রাত্রিবেলায় দূরে শহরের দিকে চলে যাওয়া দু-একটা চলমান ট্রাক এবং নেড়িকুত্তাকে দেখা যেত।

৬৯. বাজারটিতে রাত্রিবেলায় কী শোনা যেত?

> নিস্তব্ধ বাজারটিতে রাত্রিবেলায় মাঝে মাঝে শহরের দিকে যাওয়া চলমান ট্রাকের শব্দ এবং বটগাছে পেঁচার ডাক শোনা যেত।

৭০. বাজার-পার্শ্ববর্তী গ্রামটির বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

> বাজার-পার্শ্ববর্তী গ্রামটি ছিল ঘন বাঁশবনে ঢাকা এবং সেই গ্রামে বিদ্যুৎ- সংযোগ ছিল না।

৭১. বাজারটি কোথায় গড়ে উঠেছিল?

▶ পিচের সড়ক আদ্যিকালের একটি বটগাছের পাশে যেখানে বাঁক নিয়েছিল, সেখানেই বাজারটি গড়ে উঠেছিল।

৭৩. বাজারে কোন্ কোন্ দোকান ছিল?

▶ বাজারটিতে তিনটি চায়ের দোকান, দুটো সন্দেশের দোকান, তিনটে পোশাকের দোকান, একটা মনোহারির দোকান এবং দুটি মুদিখানা ছিল।

৭৪. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে কোন্ বাংলা মাস এবং কোন্ বাংলা ঋতুর কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে?

▶ গল্পটিতে পৌষ মাস এবং ঋতু হিসেবে শীতকালের কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে।

৭৫. রাঢ়বাংলার শীতের চরিত্র কেমন?

• রাঢ়বাংলার শীত খুব জাঁকালো প্রকৃতির, বৃষ্টি হলে তা হয় ধারালো।

৭৬. “তাই লোকের মেজাজ গেল বিগড়ে।”- লোকের মেজাজ বিগড়ে গিয়েছিল কেন?

▶ পৌষের শীতে বৃষ্টির সঙ্গে জোরালো বাতাস বইতে শুরু করায় ধানের প্রচণ্ড ক্ষতি হয়ে যাবে বলে লোকের মেজাজ বিগড়ে গিয়েছিল।

৭৭. “চাষাভুষো মানুষ চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে-দিতে”-কীসের

প্রতীক্ষা করছিল?

> চাষাভুসো মানুষ চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে দিতে রোদ ঝলমলে দিনের প্রতীক্ষা করছিল।

৭৮. “চাষাভুষো মানুষ চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে-দিতে”-কার মুণ্ডুপাত করছিল?

▶ চাষাভুসো মানুষ চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে দিতে আল্লা তথা ভগবানের মুণ্ডুপাত করছিল।

৭৯. শীতের অকাল বৃষ্টিতে রাঢ়বাংলায় কীসের ক্ষতি হয়?

▶ শীতের অকাল বৃষ্টিতে রাঢ়বাংলায় ধানের ক্ষতি হয়।

৮০ . পৌষমাসের বৃষ্টি গ্রামবাংলায় কী কী নামে পরিচিত?

▶ পৌষমাসের বৃষ্টি গ্রামবাংলায় ভদ্রলোকের কাছে ‘পউষে বাদলা’ অভিধায় এবং ছোটোলোকের কাছে ‘ডাওর’ নামে পরিচিত।

৮১. ‘ফাঁপি’ কাকে বলে? [উচ্চমাধ্যমিক, ২০১৯] [এবিটিএ ইনটার স্কুল টেস্ট]

▶ শীতকালে বৃষ্টির সঙ্গে জোরালো বাতাস বইলে রাঢ়বাংলার গ্রাম্য, তথাকথিত ‘ছোটোলোকের’ ভাষায় সেই আবহাওয়াকে ‘ফাঁপি’ বলে।

৮২. চায়ের দোকানের আড্ডায় কোন্ কোন্ বিষয়ে গল্পগুজব চলছিল?

• চায়ের দোকানের আড্ডায় ‘বোমবাইয়ের’ অভিনেতা-অভিনেত্রী, গায়ক, ইন্দিরা গান্ধি, মুখ্যমন্ত্রী, বিধায়ক থেকে শুরু করে স্থানীয় লোকজনকে নিয়েও

গল্পগুজব চলছিল।

৮৩. “এইটুকুই যা সুখ তখন।”- কোন্ সুখের কথা বলা হয়েছে?

▶ পৌষমাসের অকাল-দুর্যোগে ঘরে বসে গ্রামের মানুষদের সময় না কাটায় বাজারে এসে সেখানকার সভ্যতার ছোট্ট উনোনের পাশে হাত-পা সেঁকে

নেওয়াই ছিল তাদের ‘সুখ’।

৮৪. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বুড়ির চেহারা কেমন ছিল?

 ▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বুড়িটি ছিল রাক্ষুসী চেহারার, কুঁজো এক সাদাচুলের থুথুড়ে বুড়ি। তার ক্ষয়ে-যাওয়া, ছোট্ট মুখমণ্ডলের বলিরেখাগুলি স্পষ্টভাবে তার দীর্ঘ আয়ু প্রকাশ করছিল।

৮৫. বৃদ্ধার পরনে কী ছিল?

▶ বৃদ্ধা নোংরা একটা কাপড় পরেছিল এবং তার গায়ে জড়ানো ছিল তুলোর চিটচিটে একটা কম্বল।

৮৬. বৃদ্ধার হাতে কী ছিল?

▶ বৃদ্ধার হাতে ছিল বেঁটে একটা লাঠি।

৮৭. বৃদ্ধার মুখমণ্ডল কেমন ছিল?

▶ বৃদ্ধার মুখমণ্ডল ছিল ছোটো, ক্ষয়াটে এবং স্পষ্ট বলিরেখাযুক্ত।

৮৮. “… সেটাই সবাইকে অবাক করেছিল।” কী সবাইকে অবাক

করেছিল? [সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল) অথবা, “সেটাই সবাইকে অবাক করেছিল।”-সবাই অবাক হয়েছিল কেন?  

▶ থুখুড়ে কুঁজো বৃদ্ধা পৌষমাসের তুমুল বৃষ্টির মধ্যে কীভাবে বেঁচেবর্তে থেকে চায়ের দোকানে হেঁটে হেঁটে আসতে পারল-সেই ভাবনাই সবাইকে অবাক করেছিল।

৮৯. চায়ের দোকানে ঢুকে চা খাওয়ার ঠিক পরপরই বৃদ্ধা কী করেছিল?

▶ চায়ের দোকানে ঢুকে চা খাওয়ার ঠিক পরপরই বৃদ্ধা কোনো কথা না বলে দোকানে-বসে-থাকা সবার মুখের দিকে তাকিয়েছিল।

৯০. “তখন একজন তাকে জিজ্ঞেস করল” কী জিজ্ঞাসা করেছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে চায়ের দোকানে বসে-থাকা গ্রামবাসীদের একজন সেইসময় বুড়িকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে, সে কোথা থেকে এসেছে।

৯১. “তখন একজন তাকে জিজ্ঞেস করল…”-কখন?

▶ চায়ের দোকানে চা খেয়ে বৃদ্ধাটি কোনো কথা না বলে বসে-থাকা সবার মুখের দিকে তাকালে একজন তাকে প্রশ্ন করেছিল।

৯২. “ওরা হেসে উঠল…।”- ওদের হেসে ওঠার কারণ কী?

▶ চায়ের দোকানে আসা বৃদ্ধাকে সে কোথা থেকে এসেছে জানতে চাওয়ায়

তার মেজাজি পালটা প্রশ্ন ছিল যে, তাতে তাদের কাজ কী? বুড়ির এই অস্বাভাবিক আচরণে সবাই হেসে উঠেছিল।

৯৩. “বুড়ি খেপে গেল।”- কোন্ কথা শুনে বুড়ি খেপে গিয়েছিল? [

গড়িয়া বরদা প্রসাদ হাই স্কুল]

▶ চায়ের দোকানে একজন বুড়িকে বলেছিল “ভারি তেজি দেখছি। এই বাদলায়। তেজি টাটুর মতন বেরিয়ে পড়েছে।” এই কথা শুনে বুড়ি খেপে গিয়েছিল।

৯৪. “একজন ঠান্ডা মাথায় বলল…”- কী বলেছিল?

• একজন ঠান্ডা মাথায় বুড়িকে বলেছিল যে, বুড়ি কোথায় থাকে, তারা জিজ্ঞাসা করছে।

৯৫. বুড়ি চায়ের দোকানে চা খেয়ে কীভাবে চায়ের দাম দিয়েছিল?

▶ বুড়ি চা খেয়ে তার কম্বলের ভেতর থেকে একটা ন্যাকড়া বের করে তার মধ্যে বাঁধা পয়সা বের করে চায়ের দাম দিয়েছিল।

৯৬. “লোকেরা চেঁচিয়ে উঠল…”-চেঁচিয়ে উঠল কী বলে?

▶ “মরবে রে, নির্ঘাত মরবে বুড়িটা।”-এ কথা বলেই লোকেরা চেঁচিয়ে উঠেছিল।

৯৭. “লোকেরা চেঁচিয়ে উঠল…”-কখন লোকেরা চেঁচিয়ে উঠেছিল?

▶ বুড়ি চায়ের দোকানে ঢুকে চা খেয়ে, তার দাম মিটিয়ে যখন ভরা বর্ষার মধ্যে রাস্তায় আবার নেমেছিল-তখনই লোকেরা চেঁচিয়ে উঠেছিল।

৯৮. “বুড়ি ঘুরে বলল…”-কী বলেছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বুড়িটা ঘুরে দাঁড়িয়ে চায়ের দোকানে বসে-থাকা লোকদের বলেছিল, “তোরা মর, তোদের শতগুষ্টি মরুক।”

৯৯. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বুড়ি যে বটতলায় গিয়েছিল, সেই বটতলাটা সে-সময়ে কেমন ছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে উল্লিখিত বটতলাটা সেইসময় জনহীন ছিল এবং সেখানকার মাটি ভিজে কাদা কাদা হয়ে গিয়েছিল।

১০১. “বোঝা গেল, বুড়ির এ অভিজ্ঞতা প্রচুর আছে।” বুড়ির কী অভিজ্ঞতা ছিল? [কারমেল হাই স্কুল; পণ্যসায়র শিক্ষা নিকেতন)

• বটগাছতলায় বটের গুঁড়ির কাছে থাকা একটি শিকড়ের ওপর বসে পেছনের গুড়ির কোটরে পিঠ ঠেকিয়ে পা ছড়িয়ে বসার অভিজ্ঞতার কথা এখানে বলা হয়েছে।

১০২. “কেউ কেউ বলল”-কেউ কেউ কী বলল?

• কেউ কেউ বলেছিল যে, বটগাছতলায় না গিয়ে গ্রামের বারোয়ারিতলায় গেলেই বুড়ি ভালো করত। দুর্যোগে বটগাছতলায় সে নির্ঘাত মারা পড়বে।

১০৩. বুড়িকে যখন ভালোভাবে তার নিবাস কোথায় তা জিজ্ঞাসা করা হয়, তখন চা-দোকানের লোকদের বুড়ি কী উত্তর দিয়েছিল?

• চা-দোকানের লোকদের প্রশ্নের উত্তরে বুড়ি তাদের বলেছিল যে, তার নিবাস তাদের মাথায়।

১০৪. বুড়ি কোথায় পয়সা রেখেছিল?

• কম্বলের ভেতরে একটি ন্যাকড়ার মধ্যে বুড়ি পয়সা বেঁধে রেখেছিল।

১০৫. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের গল্পকথক বুড়ির স্বভাবচরিত্র সম্বন্ধে কোন্ কোন্ বিশেষণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যবহার করেছেন?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের গল্পকথক বুড়ির স্বভাবচরিত্র সম্বন্ধে ‘বড়ো মেজাজি’ এবং ‘ভারি তেজি’-এই দুটি বিশেষণ ব্যবহার করেছেন।

১০৬. ডাকের মতে পৌষের বৃষ্টি সপ্তাহের কোন্ কোন্ বারে শুরু হলে সেইদিনই থেমে যায়?

▶ ডাকের মতে পৌষের বৃষ্টি রবিবার, সোমবার, বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার শুরু হলে সেইদিনই থেমে যায়।

১০৭. ‘ডাকপুরুষের’ পুরোনো ‘বচন’-এ পৌষের বৃষ্টি সম্বন্ধে কী বলা আছে?

▶ ‘ডাকপুরুষের’ পুরোনো ‘বচন’-এ পৌষের বৃষ্টি সম্বন্ধে বলা আছে যে, শনিবার শুরু হলে সাত দিন, মঙ্গলবার হলে পাঁচ দিন এবং বুধবার হলে তিন দিন বৃষ্টি চলবে। অন্যবারে শুরু হলে বৃষ্টি সেদিনই থামবে।

১০৮. “অন্যদিনে লাগলে একদিনের ব্যাপার।” অন্যদিন বলতে কোন্ কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে?

• অন্যদিন বলতে রবি, সোম, বৃহস্পতি ও শুক্র-এই চার দিনের কথা বলা হয়েছে।

১০৯. “… কিন্তু যেদিন ছাড়ল, সেদিন…”-কী ছাড়ার কথা বলা হয়েছে?

> ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে পৌষমাসের এক মঙ্গলবার যে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল, সেই বৃষ্টি ছাড়ার অর্থাৎ থেমে যাওয়ার কথা এখানে বলা হয়েছে।

২০০. “… কিন্তু যেদিন ছাড়ল, সেদিন…”-কী দেখা গেল?

• পৌষের বৃষ্টি যেদিন ছাড়ল সেদিন আকাশ পরিষ্কার হয়ে সূর্যের উজ্জ্বল মুখ

দেখা গেল।

২০১. “…সবাই আবিষ্কার করল…”কখন সবাই আবিষ্কার করল?

▶ পৌষের বৃষ্টি থেমে গেলে যেদিন পরিষ্কার আকাশে সূর্যের উজ্জ্বল মুখ দেখা

গেল, সেদিনই সবাই আবিষ্কার করল।

২০২. “… সবাই আবিষ্কার করল…” কী আবিষ্কার করল?

• সবাই আবিষ্কার করল যে, বটগাছের গুঁড়ির কোটরে পিঠ রেখে বুড়ি চিৎ

হয়ে অসাড়ভাবে পড়ে রয়েছে।

২০৩. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বিশাল মাঠটি কোথায় ছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বিশাল মাঠটি ছিল বাজারের উত্তরদিকে।

২০৪. ‘ডাওর’ কাকে বলে?

> রাঢ়বাংলার শীতকালে বৃষ্টি হলে সেই শীত আরও বেড়ে যায়। গ্রাম-বাংলার তথাকথিত ছোটোলোকদের ভাষায় সেই অবস্থাকে বলে ‘ডাওর’।

২০৫. “রাঢ়বাংলার শীত এমনিতেই খুব জাঁকালো।”-‘রাঢ়বাংলা’ বলতে কোন্ স্থানকে বোঝানো হয়েছে?

▶ ‘রাঢ়বাংলা’ বলতে এককথায় গঙ্গার পশ্চিম তীরবর্তী স্থানকে বোঝায়।

২০৬. কোথায় ‘গড়ে উঠেছে একটা ছোট্ট বাজার’?

► পিচের সড়ক আদ্যিকালের একটি বটগাছের পাশে যেখানে বাঁক নিয়েছে, সেখানেই ‘ছোট্ট বাজার ‘টি গড়ে উঠেছে।

২০৭. “ধানের মরশুম-আজ না-হোক, কাল পয়সা পাবেই…” -‘ধানের মরশুম’ বলতে কোন্ সময়কালকে বোঝানো হয়েছে?

• ধানের মরশুম বলতে এই গল্পে ধান কাটার সময়কে অর্থাৎ শীতকালকে বোঝানো হয়েছে।

২০৮. “…মাঝে-মাঝে বিমর্ষ সভ্যতার মুখ চোখে পড়ে…”-কখন?

▶ যখন গ্রামের কাঁচা রাস্তায় সবুজ ঝোপের ফাঁক দিয়ে বাজারের দিকে এগিয়ে আসে গ্রাম্য কোনো যুবক বা যুবতী, তখনই বিমর্ষ সভ্যতার মুখ চোখে পড়ে।

২০৯. “…এগিয়ে আসে কোনো যুবক বা যুবতী;”-এই যুবক বা যুবতী কোন্ পোশাকে সজ্জিত থাকে?

▶ প্রশ্নোক্ত যুবক বা যুবতী আমেদাবাদের মিলে তৈরি সস্তা পোশাকে সজ্জিত থাকে।

৩০০. “কিন্তু বাজারে বিদ্যুৎ আছে।”-লেখক ‘কিন্তু’ অব্যয়টি ব্যবহার করেছেন কেন?

▶ বাজারের চারপাশের গ্রামগুলিতে যেহেতু বিদ্যুৎ-সংযোগ ছিল না, সে কারণেই লেখক ‘কিন্তু’ অব্যয় ব্যবহার করে বুঝিয়েছেন যে, বাজারে বিদ্যুৎ আছে।

৩০১. “…বটগাছে পেঁচার ডাকও স্তব্ধতার অন্তর্গত মনে হয়।” বটগাছটি কোথায় অবস্থিত ছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে আমরা দেখি যে, পিচের সড়ক যেখানে বাঁক নিয়েছে, সেই বাঁকের মুখেই বাজার-পার্শ্ববর্তী বটগাছটি অবস্থিত ছিল।

৩০২. “…বটগাছে পেঁচার ডাকও স্তব্ধতার অন্তর্গত মনে হয়।”-কখন?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বটগাছ-পার্শ্বস্থ বাজারটি রাত নটার পর যখন অত্যন্ত নিস্তব্ধ হয়ে যেত, তখন বটগাছে পেঁচার ডাকও স্তব্ধতার অন্তর্গত মনে হত।

৩০৩. “বৃষ্টিতে তা হল ধারালো।”-কী ধারালো হল বৃষ্টিতে?

> রাঢ়বাংলার প্রবল জাঁকালো শীত বৃষ্টিতে ধারালো হয়েছিল।

৩০৪. ‘পউষে বাদলা’ কাকে বলে?

► পৌষমাসের বৃষ্টিকেই গ্রামবাংলার ভদ্রলোকে ‘পউষে বাদলা’ বলে।

৩০৫. কেন “সবাই চলে আসে সভ্যতার ছোট্ট উনোনের পাশে হাত-পা সেঁকে নিতে”?

▶ প্রচণ্ড শীতের প্রাকৃতিক দুর্যোগে গ্রামবাসীদের ঘরে বসে দিন কাটতে চায় না বলেই তারা বাজার-রূপ উনোনের কাছে চলে আসে।

৩০৬. “…সে-সবই এসে পড়ে।”-কোন্-সব এসে পড়ে?

▶ বোম্বাইয়ের নায়ক-নায়িকা অথবা গায়ক, বিধায়ক, মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি ইত্যাদি নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে গ্রামের সাধারণ মানুষের কথা-সবই আড্ডায় এসে পড়ে।

৩০৭. “সবাই চলে আসে সভ্যতার ছোট্ট উনোনের পাশে হাত-পা সেঁকে নিতে।”-কাকে ‘সভ্যতার ছোট্ট উনোন’ বলা হয়েছে?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে উল্লিখিত গ্রামীণ বাজারটিকেই ‘সভ্যতার ছোট্ট উনোন’ বলা হয়েছে।

৩০৮. “…আজ না-হোক, কাল পয়সা পাবেই”-এমন নিশ্চয়তার কারণ কী?

▶ সেইসময় ধান কাটার মরশুম চলছিল বলে গ্রামের মানুষদের হাতে যেহেতু টাকার জোগান ছিল, তাই চাওয়ালা টাকা পাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল।

৩০৯. “সেই সময় এল এক বুড়ি।”-কোথায়, কীভাবে এসেছিল সেই বুড়ি?

▶ পিচের রাস্তা দিয়ে ভিজতে ভিজতে একই গতিতে হাঁটতে হাঁটতে চায়ের দোকানে এসে ঢুকেছিল বুড়ি।

৪০০. “তাকে দেখে সবাই তর্ক থামাল।”-কাকে দেখে?

▶ এক থুথুরে, কুঁজো বুড়িকে চায়ের দোকানে ঢুকতে দেখে আড্ডা দেওয়া চাষাভুসো মানুষরা তাদের তর্ক থামিয়েছিল।

৪০১. “মরবে রে, নির্ঘাত মরবে বুড়িটা!”-এমন আশঙ্কার কারণ কী?

▶ প্রবল শীতের অকালবর্ষণে অপ্রতুল পোশাকে অশীতিপর বৃদ্ধাটি বাইরে বেরিয়ে বৃষ্টিতে ভিজছিল বলেই এমন আশঙ্কা করা হয়েছে।

“অর্থাৎ সে বৃক্ষবাসিনী।”-কেন তাকে ‘বৃক্ষবাসিনী’ বলা হয়েছে?

৪০২. ▶ শীতের অকালবৃষ্টিতে ভেজা বুড়িটা বটগাছের নীচে গিয়ে গুঁড়ির পাশের একটা শিকড়ের ওপর বসে গুঁড়ির কোটরে পিঠ ঠেকিয়েছিল। বুড়ি সেখানে থাকতে অভ্যস্ত ছিল বলেই তাকে ‘বৃক্ষবাসিনী’ বলা হয়েছে।

৪০৩. “…গ্রামের ‘ডাকপুরুষের’ পুরোনো ‘বচন’ আছে।”-কী সম্বন্ধে?

▶ পৌষের বৃষ্টি সম্বন্ধে গ্রামের ‘ডাকপুরুষের’ পুরোনো ‘বচন’ আছে।

৪০৪. “…গ্রামের ‘ডাকপুরুষের’ পুরোনো ‘বচন’ আছে।”-‘ডাকপুরুষ’ কে?

▶ গ্রামবাংলায় ‘ডাক’ নামক যে প্রখ্যাত গোপালক জ্ঞানীপুরুষ ছিলেন, তিনিই ‘ডাকপুরুষ’ নামে অভিহিত হন।

৪০৫. পউষে বাদলা সম্পর্কে গ্রামের ‘ডাকপুরুষের’ পুরোনো বচনে কী বলা আছে?

 ▶ পউষে বাদলা সম্পর্কে গ্রামের ‘ডাকপুরুষের’ পুরোনো বচনে বলা আছে- “শনিতে সাত, মঙ্গলে পাঁচ, বুধে তিন-বাকি সব দিন-দিন।”

৪০৬. “… চাওলা জগা বলল-নির্ঘাত মরে গেছে বুড়িটা।” কখন বলেছিল?

▶ বটতলায় বটের গুঁড়ির কোটরে পিঠ রেখে নিঃসাড় হয়ে পড়ে থাকা বুড়িকে যখন অনেক বেলা হয়ে যাওয়ার পরও নড়তে দেখা গেল না, তখন জগা কথাগুলো বলেছিল।

৪০৭. জগার মুখে বুড়িটা মরে গেছে শুনে একজন ‘সর্বনাশ’ কথাটা উচ্চারণ করার পর আর কী বলেছিল?

▶ জগার মুখে বুড়ির মারা যাওয়ার কথা শুনে একজন ‘সর্বনাশ’ কথাটা উচ্চারণ করে বলেছিল যে, তাহলে শেয়াল-কুকুরে মৃতদেহ ছিঁড়ে খাবে এবং সেই দুর্গন্ধে টেকা দায় হবে।

৪০৮. “…চাওলা জগা বলল…”-জগা কী বলেছিল?

▶ চাওয়ালা জগা বলেছিল যে, বুড়িটা নির্ঘাত মরে গেছে।

৪০৯. “একজন দুজন করে ভিড় বাড়তে থাকল।”-কোথায়?

▶ বটগাছতলায় যেখানে বটের গুঁড়ির কোটরে পিঠ রেখে বুড়ি চিত হয়ে নিস্পন্দভাবে পড়েছিল, সেখানেই একজন-দুজন করে ভিড় বাড়তে থাকল।

৫০০. “একজন দুজন করে ভিড় বাড়তে থাকল।” -কখন?

▶ বুড়ি বটগাছতলায় মরে পড়ে রয়েছে-এ কথাটা চাওয়ালা জগার মাধ্যমে চাউর হয়ে গেলে সেখানে একজন দুজন করে ভিড় বাড়তে লাগল।

৫০১. “অতএব মড়াই বটে।”-কখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল?

▶ বটগাছতলায় নিঃসাড়ভাবে শুয়ে-থাকা বুড়ির কপাল প্রচণ্ড ঠান্ডা দেখে এবং নাড়ির কোনো স্পন্দন না পেয়ে বুড়িকে মড়া বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

৫০২. চৌকিদার বুড়ির মৃত্যুসংবাদ থানায় দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেছিল কেন?

▶ অসময়ের জলবৃষ্টিতে এক ভিখিরি বুড়ির মৃত্যু নেহাতই গুরুত্বহীন ঘটনা হওয়ায় চৌকিদার সে খবর থানায় দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেছিল।

৫০৩. চৌকিদার কোন্ অসুবিধার জন্য থানায় বুড়ির মৃত্যুসংবাদ দিতে বারণ করেছিল?

▶ বটতলা থেকে পাঁচ ক্রোশ দূরবর্তী থানায় খবর দিয়ে এবং তা পেয়ে পুলিশ আসতে আসতে মড়ার দুর্গন্ধ ছড়াবে বলে চৌকিদার থানায় মৃত্যুসংবাদ দিতে বারণ করেছিল।

৫০৪. চৌকিদার বুড়ির মৃতদেহের সৎকারের কী ব্যবস্থা করেছিল?

▶ চৌকিদার বুড়ির মৃতদেহ নদীতে ফেলে দিয়ে তার গতি করার ব্যবস্থা করেছিল।

৫০৫. “বিজ্ঞ চৌকিদারের পরামর্শ মানা হল।”-পরামর্শটি কী ছিল?

▶ বিজ্ঞ চৌকিদার নদীতে বুড়ির মৃতদেহ ফেলে দিয়ে তার গতি করার পরামর্শ দিয়েছিল।

৫০৬. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের নদীটা কোথায় ছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের নদীটা বাজার-পাশ্ববর্তী মাঠ পেরিয়ে দুই মাইল দূরে অবস্থিত ছিল।

৫০৭. নদীর চড়ায় বুড়ির দেহটা কীভাবে পড়েছিল?

▶ নদীর চড়ায় তপ্ত বালিতে উজ্জ্বল সূর্যালোকে বুড়ির দেহটা চিত হয়ে পড়েছিল।

৫০৮. বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে রেখে এসে শববহনকারীরা কী করছিল?

▶ বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে রেখে এসে শববহনকারীরা দিগন্তের আকাশের দিকে তাকিয়ে ঝাঁক ঝাঁক শকুনের নেমে আসার অপেক্ষা করছিল।

৫০৯. বুড়ি মরে গেছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তৎক্ষণাৎ সবাই কী করেছিল?

▶ বুড়ি মরে গেছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তৎক্ষণাৎ সবাই গ্রামের চৌকিদারকে খবর দিয়েছিল।

৬০০. বুড়ির দেহকে কীভাবে নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল?

▶ বুড়ির দেহকে বাঁশের চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

৬০১. “হঠাৎ বিকেলে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল।”-কোন্ দৃশ্য দেখা গেল?

▶ হঠাৎ বিকেলে দেখা গেল যে, উত্তরের মাঠ অতিক্রম করে বাজারের দিকে একটা চ্যাংদোলা আসছে।

৬০২. বুড়ি যে মুসলমান-তার প্রমাণস্বরূপ শববাহকরা কী বলেছিল হিন্দুদের?

▶ বুড়ি যে মুসলমান-তার প্রমাণস্বরূপ মুসলমান শববাহকরা জানিয়েছিল যে, তাদের অনেকেই বুড়িকে বিড়বিড় করে ‘আল্লা’ বা ‘বিসমিল্লা’ বলতে শুনেছিল।

৬০৩. “…তখন জানা গেল ব্যাপারটা।”-ব্যাপারটা কী ছিল?

▶ ব্যাপারটা ছিল যে মুসলমান পাড়ার লোকেরা নদীর চড়া থেকে বুড়ির ফেলে দেওয়া মৃতদেহ চ্যাংদোলায় করে তুলে নিয়ে এসেছে।

৬০৪. মোল্লাসাহেব শহরের দিকে যাওয়ার সময় বটতলায় কী শুনেছিলেন?

▶ মোল্লাসাহেব শহরের দিকে যাওয়ার সময় বটতলায় আশ্রয় নেওয়া বুড়িকে কলমা পড়তে স্পষ্ট শুনেছিলেন।

৬০৫. মোল্লাসাহেব কখন বুড়িকে মারা যেতে দেখেন?

▶ মোল্লাসাহেব ভোরের নামাজ সেরে যখন শহরে যাওয়ার বাস ধরার উদ্দেশ্যে আসছিলেন, তখন তিনি বটতলায় মুমূর্ষু বুড়িকে দেখেছিলেন।

৬০৬. “তাই দেখা হল না ব্যাপারটা।” বক্তার কী দেখা হল না?

▶ বটগাছতলায় পড়ে থেকে কলমা পড়তে-থাকা বুড়ি শেষপর্যন্ত মরল কি না-তা দেখা হয়নি মোল্লাসাহেবের।

৬০৭. “তাই দেখা হল না ব্যাপারটা।”-কেন দেখা হল না ব্যাপারটা?

▶ মোল্লাসাহেব মামলা লড়তে শহরে যাচ্ছিলেন বলে বটগাছতলায় আশ্রয় নেওয়া বুড়ি মরল কি না- তা তার দেখা হয়নি।

৬০৮. “তা কি হয় আমরা বেঁচে থাকতে?”-কী হয় না?

মুসলমান বুড়ির মৃতদেহ কবরস্থ না করে নদীতে ফেলে দেওয়া- এখানে মোল্লাসাহেব তা না হওয়ার কথা বলেছেন।

৬০৯. ভটচাজমশাই বুড়িকে কী বলতে শুনেছিলেন?

▶ ভটচাজমশাই বুড়িকে ‘শ্রীহরি শ্রীহরি শ্রীহরি’ বলতে শুনেছিলেন।

৭০০. বুড়িকে নদীতে ফেলে আসার দিন সকালে বটগাছতলা থেকে একই বাসে কে কে শহরে গিয়েছিলেন?

▶ বুড়িকে নদীতে ফেলে আসার দিন সকালে বটগাছতলা থেকে মোল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাই একই বাসে করে শহরে গিয়েছিলেন।

৭০১. বুড়ি মারা যাওয়ার সময় কী কী উচ্চারণ করেছিল বলে হিন্দুরা জানিয়েছিল?

▶ বুড়ি মারা যাওয়ার সময় ‘শ্রীহরি’ এবং ‘হরিবোল’ উচ্চারণ করেছিল বলে হিন্দুরা জানিয়েছিল।

৭০২. বুড়ি মারা যাওয়ার সময় কী কী উচ্চারণ করেছিল বলে মুসলমানরা জানিয়েছিল?

▶ বুড়ি মারা যাওয়ার সময় কলমা পড়েছিল এবং ‘আল্লা’, ‘বিসমিল্লা’, ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ উচ্চারণ করেছিল বলে মুসলমানরা জানিয়েছিল।

৭০৩. “চেঁচিয়ে উঠল-মিথ্যে!”-বক্তা কোন্ বিষয়কে ‘মিথ্যে’ বলেছিল?

▶ ফজলু সেখ যখন জানায় যে, সে নিজের কানে মুমূর্ষু বুড়িকে ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ বলতে শুনেছে, তখন নিবারণ বাগদি সে কথাকে ‘মিথ্যে’ বলে চেঁচিয়ে উঠেছিল।

৭০৪. “দেখলাম বসা যাবে না।”-কেন বসা যাবে না?

▶ বটগাছতলায় দাড়ি কামানোর উদ্দেশ্যে এসে বৃষ্টিতে সেখানকার কাদা হয়ে যাওয়া মাটির অবস্থা দেখে নকড়ি নাপিত বুঝতে পেরেছিল সেখানে বসা যাবে না।

৭০৫. ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ কথাটির অর্থ কী?

▶ ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ কথাটির অর্থ হল আল্লা ছাড়া অন্য উপাস্য নেই।

৭০৬. ‘নারায়ে তকবির’ কথাটির অর্থ কী?

▶ ‘নারায়ে তকবির’ কথাটির অর্থ হল উচ্চকণ্ঠে আল্লার প্রশংসা বা গুণকীর্তন।

৭০৭. ‘আল্লাহু আকবর’ কথাটির অর্থ কী?

▶ ‘আল্লাহু আকবর’ কথাটির অর্থ হল আল্লাই সর্বশ্রেষ্ঠ।

৭০৮. ‘কলমা’ কাকে বলে?

▶ ইসলামধর্মের আত্মশুদ্ধি-সাধক মূল ইষ্টমন্ত্রই হল কলমা।

৭০৮. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে ‘খবরদার’ কথাটা কে কে উচ্চারণ করেছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে ‘খবরদার’ কথাটা উচ্চারণ করেছিল একসময়ের পেশাদার

লাঠিয়াল করিম ফরাজি এবং এলাকার চৌকিদার।

৭০৯. “ফজলু সেখ বলল।”-ফজলু সেখ কী বলেছিল?

▶ ফজলু সেখ বলেছিল যে সে নিজের কানে বুড়িকে ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ বলতে শুনেছে।

৮০০. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে নিবারণ বাগদির স্বভাবচরিত্রের কোন্ পরিচয় পাওয়া যায়?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের নিবারণ বাগদি ছিল রাগি লোক। সে একসময় দাগি ডাকাত ছিল।

৮০১. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে করিম ফরাজির স্বভাবচরিত্রের কোন্ পরিচয় পাওয়া যায়?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের করিম ফরাজি বর্তমানে নিয়ম মতো নামাজ পড়া বান্দা

মানুষ হলেও এককালে সে ছিল পেশাদার লাঠিয়াল।

৮০২. “দেখতে-দেখতে প্রচণ্ড উত্তেজনা ছড়াল চারদিকে।”-উত্তেজনা ছড়ানোর প্রতিক্রিয়া কী হল?

▶ উত্তেজনা ছড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় বাজারের দোকানগুলোর ঝাঁপ বন্ধ হতে থাকল এবং গ্রাম থেকে বহু লোক অস্ত্রশস্ত্র-সহ দৌড়ে বাজারে আসতে লাগল।

৮০৩. মোল্লাসাহেব কী কী বলে নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের উত্তেজিত করেছিলেন?

▶ মোল্লাসাহেব ‘জেহাদ’ কথাটি উচ্চারণ করে এবং ‘নারায়ে তকবির- আল্লাহু আকবর।’ বলে নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের উত্তেজিত করেছিলেন।

৮০৪. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের শেষে দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর বুড়ি উৎসাহী জনতার উদ্দেশ্যে কোন্ তিনটি গালাগাল বর্ষণ করেছিল?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের শেষে দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর বুড়ি উৎসাহী জনতার উদ্দেশ্যে ‘মুখপোড়া’, ‘নরকখেকো’ এবং ‘শকুনচোখো’-এই গালাগাল বর্ষণ করেছিল।

৮০৫. “… ভটচাজমশাই গর্জে বলছেন…”-কী বলেছিলেন?

• ভটচাজমশাই ‘জয় মা কালী’ ধ্বনি তুলে তাঁকে যবন নিধনে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

৮০৬. ‘ধুন্ধুমার গর্জন প্রতিগর্জন’ চলার সময় চৌকিদার প্রাথমিকভাবে কী করছিল?

▶ ‘ধুন্ধুমার গর্জন প্রতিগর্জন’ চলাকালীন চৌকিদার দু-পক্ষের মাঝখানে লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে দু-পক্ষকে নিরস্ত করার চেষ্টা করছিল।

৮০৭. “যখনই মুসলিমপক্ষ এক-পা এগিয়ে আসে”-তখন চৌকিদার কী করছিল?

▶ যখন মুসলিমপক্ষ এক-পা এগিয়ে আসে তখন চৌকিদার হাতের লাঠিটা পিচরাস্তায় ঠুকে ‘সাবধান’ বলে গর্জে উঠছিল।

৮০৮. হিন্দুপক্ষ যখন এক-পা এগিয়ে আসছিল, তখন চৌকিদার কী করছিল?

▶ হিন্দুপক্ষ যখন এক-পা এগিয়ে আসছিল, তখন চৌকিদার হাতের লাঠিটা পিচরাস্তায় ঠুকে ‘খবরদার’ বলে গর্জে উঠছিল।

৮০৯. “দু-দিকের সশস্ত্র জনতা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে”-কী দেখছিল?

► দু-দিকের সশস্ত্র জনতা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখছিল যে, বুড়ির দেহটা নড়ছে এবং নড়তে নড়তে বুড়ি উঠে বসার চেষ্টা করছে।

৯০০. দীর্ঘ ঘুম থেকে উঠে দু-পাশের ভিড় দেখে বুড়ির কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?

• দীর্ঘ ঘুম থেকে উঠে দু-পাশের ভিড় দেখে প্রাথমিকভাবে বুড়ির মুখটা বিকৃত হয়ে গেলেও এরপর ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে উঠেছিল সে।

৯০১. চৌকিদারের কথার উত্তরে বুড়ি কী বলেছিল?

▶ চৌকিদারের কথার উত্তরে বুড়ি শতগুষ্টি-সহ চৌকিদারের মৃত্যুকামনা করে বলেছিল-“মর্, তুই মর্। তোর শতগুষ্টি মরুক।”

৯০২. বুড়িটা নড়ে ওঠার ঠিক আগে চৌকিদার কী করছিল?

▶ বুড়িটা নড়ে ওঠার ঠিক আগে চৌকিদার পালা করে হিন্দু ও মুসলিমপক্ষ- এই দু-পক্ষের দিকে একবার করে পিচে লাঠি ঠুকছিল এবং সাবধান ও খবরদার বলে চিৎকার করছিল।

৯০৩. “বুড়ি খেপে গিয়ে বলল-চোখের মাথা খেয়েছিস মিনসেরা?” কখন বলেছিল?

► দু-পক্ষের বিবদমান জনতা যখন বুড়িকে জিজ্ঞাসা করেছিল বুড়ি হিন্দু না মুসলমান, তখনই বুড়ি খেপে গিয়ে কথাগুলো বলেছিল।

৯০৪. “আমি যাচ্ছি শহরে-মামলার দিন।”-বক্তা কে?

▶ সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে উদ্ধৃতাংশের বক্তা হলেন মোল্লাসাহেব।

৯০৫. “…তারপর ওনার আসতে আসতে রাত-দুপুর।”-কে, কখন এ কথা বলে?

▶ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের বৃদ্ধাটির মৃত্যু হয়েছে ভেবে গ্রামবাসীরা চৌকিদারকে খবর দিলে সে এসে মৃতদেহ পরীক্ষা করে থানায় খবর না দেওয়ার যুক্তিতে কথাটি বলে।

৯০৬. “…তারপর ওনার আসতে আসতে রাতদুপুর।”- কেন আসতে রাত- দুপুর হবে?

▶ থানাটি বটতলা থেকে পাঁচ ক্রোশ দূরে অবস্থিত বলে সেখানে খবর দিলে থানা থেকে পুলিশের আসতে রাত-দুপুর হবে।

৯০৭. “…তারপর ওনার আসতে আসতে রাত-দুপুর।”-রাত-দুপুরে ওনার আগমন ঘটলে ততক্ষণে কী ঘটে যাবে বলে মনে করেন বক্তা?

▶ বক্তা চৌকিদারের মতে, কবে-না-কবে মরা বুড়ির লাশ যেহেতু ফুলে ঢোল হয়েছে, তাই সেদিন রাত-দুপুরের মধ্যেই সেই মড়ার দুর্গন্ধ ছড়াবে বলে মনে করে সে।

৯০৮. “ঠিক গতি হয়ে যাবে…”-কী করলে গতি হবে?

▶ বৃদ্ধার মৃতদেহ নদীতে ফেলে দিয়ে আসলেই তার আত্মার গতি হবে বলে। জানিয়েছে চৌকিদার।

৯০৯. “বাঁশের চ্যাংদোলায় ঝোলানো হয়েছিল।”-কেন ঝোলানো হয়েছিল?

▶ বুড়ির মৃতদেহ ফেলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নদীর চড়ায় নিয়ে যেতে তাকে বাঁশের চ্যাংদোলায় ঝোলানো হয়েছিল।

১০০০. “ফিরে এসে সবাই দিগন্তে চোখ রাখল…”- কোথা থেকে ফিরল?

▶ বুড়িকে মৃত ভেবে চ্যাংদোলায় ঝুলিয়ে শুকনো নদীর চড়ায় ফেলে ফিরেছিল কয়েকজন হিন্দু গ্রামবাসী।

১০০১. “ফিরে এসে সবাই দিগন্তে চোখ রাখল …”-কেন?

▶ বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে বাজারে ফিরে ঝাঁক ঝাঁক শকুনের নেমে আসা দেখার অপেক্ষায় গ্রামবাসীরা দিগন্তে চোখ রেখেছিল।

১০০২. “তারপরই দেখা গেল এক অদ্ভুত দৃশ্য”-দৃশ্যটি কী? 

 ▶ অদ্ভুত দৃশ্যটি হল বুড়ির তথাকথিত মৃতদেহটি নড়ে উঠেছিল।

১০০৩. “উঁকি মেরে সব দেখে-শুনে বললেন…”-কখন?

▶ বাজারে বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীর মধ্যে যখন

বচসা চলছিল, তখনই বাস থেকে নেমে ভটচাজমশাই অকুস্থলে প্রবেশ করেন।

১০০৪. “উঁকি মেরে সব দেখে-শুনে বললেন…”-কী বললেন?

▶ ভটচাজমশাই ‘অসম্ভব’ কথাটা বলে জানান যে, তিনি সকালে মোল্লাসাহেবের সঙ্গে একই বাসে শহরে যাবার আগে মুমূর্ষু বুড়িকে ‘শ্রীহরি শ্রীহরি শ্রীহরি’ বলতে স্পষ্ট শুনেছিলেন।

১০০৫. “তাঁর সপক্ষে অনেক প্রমাণ জুটে গেল।”-কার সপক্ষে?

▶ বুড়িকে যে ভটচাজমশাই মুমূর্ষু অবস্থায় ‘শ্রীহরি’ বলতে শোনেন, অর্থাৎ বুড়ি যে হিন্দু, তার সপক্ষে প্রমাণ জুটেছিল।

১০০৬. “তাঁর সপক্ষে অনেক প্রমাণ জুটে গেল।”-প্রমাণটা কী জুটেছিল?

▶ ভটচাজমশাইয়ের সপক্ষে নকড়ি নাপিত প্রমাণ জুগিয়েছিল যে, ক্ষৌরকর্ম করতে বটতলায় গিয়ে সে বুড়িকে ‘হরিবোল’ বলতে স্পষ্ট শুনেছে।

১০০৭. “মাঝে-মাঝে মোল্লাসায়েব চেঁচিয়ে উঠছেন…”—কী বলে চেঁচিয়ে উঠছেন?

▶ মোল্লাসায়েব চেঁচিয়ে বলছিলেন-“মোছলেম ভাইসকল। জেহাদ, জেহাদ। নারায়েতকবির-আল্লাহু আকবর!”

১০০৮. বুড়িকে হরিবোল বলতে স্পষ্ট শুনেছে কে?

[অ্যান্ড্রুজ হাই স্কুল (এইচএস)]

▶ বুড়িকে হরিবোল বলতে স্পষ্ট শুনেছে নকড়ি নাপিত।

১০০৯. বুড়িটি ‘বিকৃত মুখে ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে’ উঠেছিল কেন?

▶ শুয়ে-থাকা মৃতদেহ মনে করে হিন্দু-মুসলমান দু-পক্ষের মানুষ তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে দেখেই বুড়িটি বিকৃত মুখে ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে উঠেছিল।

২০০০. “বচসা বেড়ে গেল।” বচসার কারণ কী?  

▶ বুড়ি হিন্দু না মুসলমান-এই বিতর্কের মাধ্যমেই দু-পক্ষের মধ্যে বচসা বেড়ে গেল।

২০০১. বুড়িটি ‘বিকৃত মুখে ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে’ উঠেছিল কেন?

▶ শুয়ে-থাকা মৃতদেহ মনে করে হিন্দু-মুসলমান দু-পক্ষের মানুষ তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে দেখেই বুড়িটি বিকৃত মুখে ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে উঠেছিল।

২০০২. “বচসা বেড়ে গেল।” বচসার কারণ কী?  

▶ বুড়ি হিন্দু না মুসলমান-এই বিতর্কের মাধ্যমেই দু-পক্ষের মধ্যে বচসা বেড়ে গেল।

3. Long Answer Question (5 Marks)

প্রশ্ন ১. “আবার জমে গেল।”-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আড্ডা কীভাবে আবার জমে গেল তা লেখো।

উত্তর. প্রসঙ্গ-সহ আড্ডার বিবরণ: কথামুখ: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের

‘ভারতবর্ষ’ ছোটোগল্পে আমরা দেখি যে, পৌষমাসের অকাল দুর্যোগের মধ্যে রাঢ়বাংলার এক ছোট্ট বাজারের এক চায়ের দোকানে বসে কয়েকজন অলস কর্মহীন গ্রামবাসী জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল। বুড়ির আগমন: এমন সময় এক থুথুড়ে ভিখিরি বুড়ি ভিজতে ভিজতে সেখানে এসে উপস্থিত হলে সে আড্ডায় ছেদ পড়ে। আরাম করে চা খাওয়ার পর বৃদ্ধা বসে-থাকা সকলের মুখের দিকে নিঃশব্দে চায়। একজন জিজ্ঞাসা করে যে, সে কোথা থেকে এসেছে। বুড়ি মেজাজের সঙ্গে জানায়-“সে-কথায় তোমাদের কাজ কী বাছারা?” এ কথা শুনে সবাই একসঙ্গে হেসে ওঠে এবং একজন গ্রামবাসী বুড়িকে ব্যঙ্গ করে টাট্টু ঘোড়ার সঙ্গে তুলনা করে। বৃদ্ধা তীক্ষ্ণ ভাষায় পালটা উত্তর দেয়। এরপর সে চায়ের দাম মিটিয়ে দিয়ে নড়বড় করে হাঁটতে হাঁটতে রাস্তায় নেমে যায়। আড্ডাধারীদের চিৎকার: চায়ের দোকানের আড্ডাধারীরা তখন তাকে উদ্দেশ্য করে চিৎকার করে জানায় যে, সে নির্ঘাত মরবে। এ কথা শুনে ঘুরে দাঁড়িয়ে বুড়ি তাদের এবং তাদের শতগুষ্টির মৃত্যু কামনা করে। তারপর সে বৃষ্টি- বাদলের মধ্যে বটতলায় গিয়ে আশ্রয় নিলে তা নিয়েও আলোচনা চলতে থাকে। কয়েকজন গ্রামবাসী বলে, বটগাছতলার পরিবর্তে বারোয়ারিতলায় আশ্রয় নিলেই বুড়ি ভালো করত। ইতিকথা: এইভাবে বুড়িকে নিয়ে ‘অনেক কথা’ এসে পড়ায় আড্ডা আবার জমে ওঠে।

প্রশ্ন ২. “সেখানেই গড়ে উঠেছে একটা ছোট্ট বাজার।”-বাজারটি কোথায় অবস্থিত ছিল? এই বাজারটির বর্ণনা দাও। ১+৪

উত্তর.  বাজারটির অবস্থান: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পটি

গড়ে উঠেছে রাঢ়বাংলার একটি ছোট্ট গ্রাম্য বাজারকে কেন্দ্র করে। পিচের সড়ক আদ্যিকালের এক বটগাছের পাশে যেখানে বাঁক নিয়েছে, সেখানেই গড়ে উঠেছিল বাজারটি।

▶ বাজারটির বর্ণনা: বাজারটিতে সবমিলিয়ে ছিল তিনটি চায়ের দোকান, দুটো সন্দেশের দোকান, তিনটি পোশাকের দোকান, একটা মনোহারির দোকান এবং দুটি মুদিখানা। এ ছাড়াও একটি আড়ত এবং একটি হাস্কিং মেশিনেরও দোকান ছিল সেখানে। বাজারটির উত্তরে ছিল বিরাট একটি মাঠ এবং পেছনে ছিল বাঁশবন। চারপাশের গ্রামের মানুষ প্রতিদিন এখানেই কেনাকাটা করতে আসত।

মানুষদের কাছে এটা তাই একটা আড্ডার জায়গাও ছিল। ‘সভ্যতার ছোট্ট উনোনের পাশে হাত-পা সেঁকে নিতে’ তারা প্রায়শই বাজারে আসত, বিশেষত

পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ-সংযোগ না থাকলেও বাজারে বিদ্যুৎ ছিল। সকাল থেকে শুরু করে রাত ন-টা পর্যন্ত এই বাজার খোলা থাকত। চারপাশের গ্রামের সন্ধ্যায়, যখন গ্রামগুলি প্রায় অন্ধকার থাকত। রাত নটায় বাজার ফাঁকা হয়ে। গেলে জনহীন বাজারের বৈদ্যুতিক আলোয় দু-একটা নেড়িকুত্তাকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত। একটা-দুটো ট্রাক কখনো-সখনো রাস্তা দিয়ে শহরের দিকে চলে যেত। রাতে নিস্তব্ধ বাজারের পাশের বটগাছ থেকে প্যাঁচার ডাক শোনা যেত।

প্রশ্ন ৩. ‘ভারতবর্ষ’ গল্প অবলম্বনে বাজারের চায়ের দোকানে বসে- থাকা গ্রামবাসীদের আড্ডার পরিচয় দাও।

উত্তর. বাজারের চায়ের দোকানে বসে-থাকা গ্রামবাসীদের আড্ডার পরিচয়: 

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বৈচিত্র্যহীন গ্রাম্যজীবনে অলস সময় উদ্যাপনে গ্রামের মানুষেরা প্রায়শই আসত, বাজারের চায়ের দোকানে।

অকাল দুর্যোগ: পৌষমাসের অকাল-দুর্যোগের শেষ দিনটিতে তেমনিভাবেই

বাজারের চায়ের দোকানে এসে বসেছিল কয়েকজন অলস গ্রামবাসী। অসময়ের দুর্যোগে ধানের প্রভূত ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় তাদের মেজাজ তিরিক্ষে হয়েছিল। চায়ের দোকানে বসে গল্পচ্ছলে তাই তারা রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের অপেক্ষা করছিল। ঈশ্বরের উদ্দেশে বক্তব্য: কেউ কেউ হতাশ হয়ে ঈশ্বর বা আল্লার মুণ্ডুপাতও করছিল। একজন যুবক চাষি তো চরম ক্ষোভ ও হতাশায় চিৎকার করে বলতে শুরু করল যে, তাদের মাথার ওপর ঈশ্বর বা আল্লা নামধারী কোনো নিয়ন্ত্রক নেই-কেউই নেই। আড্ডার নানান ধরন: আড্ডার কোনো নির্দিষ্ট প্রসঙ্গ ছিল না। বোম্বাইয়ের চলচ্চিত্র-জগতের গায়ক ও অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি, মুখ্যমন্ত্রী এবং বিধায়ক থেকে পাড়ার সরা বাউরির প্রসঙ্গ চলে আসে আলোচনায়। ইতিকথা: এইভাবে আড্ডা যখন জমে ওঠে, তখনই সবাইকে বিস্মিত করে দিয়ে সেখানে এক বৃদ্ধার আগমন ঘটে।

প্রশ্ন ৪. ‘ভারতবর্ষ’ ছোটোগল্পটিতে অকাল-দুর্যোগ সম্বন্ধে যে আলোচনা করা হয়েছে, তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর. অকাল-দুর্যোগ সম্বন্ধে আলোচনা: সময়কাল: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পটিতে পৌষমাসের এক মঙ্গলবার রাঢ়বাংলার একটি গ্রাম্য বাজারে হঠাৎই উত্তরের মাঠ থেকে কনকনে ঠান্ডা বাতাস ধেয়ে আসতে শুরু করেছিল। তারপরই ছাইরঙের মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। শুরু হয়ে যায় বৃষ্টি। পৌষে বাদলা ও ডাওর: রাঢ়ের প্রবল জাঁকালো শীত সেই বৃষ্টিপাতের ফলে তীক্ষ্ণতর হয়। পৌষের এই বৃষ্টিকে ভদ্রলোকে বলে ‘পউষে বাদলা’, ছোটো জাতের লোকেরা বলে ‘ডাওর’। ফাঁপি: কিন্তু যেহেতু পৌষের বৃষ্টির সঙ্গে প্রবল বাতাসও চলছিল, তাই অবস্থাটা ইতরজনের ভাষায় ছিল ‘ফাঁপি’ অর্থাৎ সংকটজনক অবস্থা। ক্ষতির আশঙ্কা: খেতের ধান তখনও যেহেতু কেটে নেওয়া হয়নি, তাই কৃষিজীবী গ্রামবাসীরা ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় তিরিক্ষে- মেজাজের হয়ে উঠেছিল। অলস সময়ের আড্ডা: অকালবর্ষণের সেই দিনগুলিতে চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে-আসা গরিব মানুষগুলি গল্পগুজব করতে করতে তাই রোদ-ঝলমল দিনের অপেক্ষা করছিল। সেখানে বসে হতাশ হয়ে কেউ কেউ ঈশ্বর বা আল্লার মুণ্ডুপাতও করছিল।

প্রশ্ন ৫. “সেই সময় এল এক বুড়ি।”-লেখক বুড়ির সম্পর্কে যে বর্ণনা দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।  

উত্তর. বুড়ির বর্ণনা: কথামুখ: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ-এর ‘ভারতবর্ষ’গল্পে আমরা এক থুথুরে বুড়ির কথা জানতে পারি। এক বৃষ্টিভেজা শীতের দিনে গ্রামের কর্মহীন মানুষেরা চায়ের দোকানে অলস সময় কাটাচ্ছিল আর নিজেদের মধ্যে নানারকম তর্কবিতর্কে মেতে উঠেছিল। সেই সময় সেখানে আগমন ঘটে থুথুড়ে কুঁজো এক ভিখিরি বুড়ির। চেহারার বর্ণনা: লেখকের কথায় তার ‘রাক্ষুসী চেহারা’। একমাথা সাদা চুল, পরনে একটা ছেঁড়া নোংরা কাপড়, গায়ে জড়ানো চিটচিটে তুলোর কম্বল, আর হাতে তার একটা বেঁটে লাঠি। পিচের রাস্তায় বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে একই তালে অবিচলিত ভঙ্গিতে হেঁটে সে চায়ের দোকানে এসে ঢুকল। তার ক্ষয়া ও খর্বাকৃতি চেহারা এবং মুখে “সুদীর্ঘ আয়ুর চিহ্ন প্রকট।” চেহারার থেকেও বিস্ময়কর ছিল তার চড়া মেজাজ। বুড়ির স্বাধীনচেতা স্বভাব: প্রবল বৃষ্টিতে তার আগমনে বিস্মিত মানুষজন জানতে চাইল যে সে কোথা থেকে এসেছে। বুড়ি তখন রাগত ভঙ্গিতে জবাব দেয়- “সে কথায় তোমাদের কাজ কী বাছারা?” তার তেজ নিয়ে উপস্থিত মানুষেরা কিছু কৌতুক করলে বৃদ্ধা আরও ঝাঁজালো উত্তর দিয়ে বলে-“তোমাদের কত্তাবাবা টাট্টু।” চায়ের দাম মিটিয়ে বৃদ্ধা যখন আবার রাস্তায় নেমে যায়, তখন তারা তার মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করলে বৃদ্ধার উত্তর ছিল “তোরা মর্, তোদের শতগুষ্টি মরুক।” গল্প শেষে যখন তার তথাকথিত মৃতদেহের অধিকার নিয়ে হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মানুষেরা সংঘাতের মুখোমুখি তখন তার নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বৃদ্ধা বলেছে-“আমি কী তা দেখতে পাচ্ছিস নে? চোখ গেলে দোবো।”ইতিকথা: নিজস্ব মেজাজে বৃদ্ধা যেন হয়ে উঠেছে ধর্মান্ধতার এক প্রবল প্রতিবাদ।

প্রশ্ন ৬. “তোরা মর্, তোদের শতগুষ্টি মরুক।”-কে মন্তব্যটি করেছে? মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো। ১+৪

উত্তর. বক্তা: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বৃষ্টি বিঘ্নিত শীতের দিনে চায়ের দোকানে আগন্তুক বৃদ্ধাটি উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।

▶ প্রেক্ষাপট: প্রবল বৃষ্টিতে গ্রামের মানুষ যখন কর্মহীন হয়ে চায়ের দোকানে আড্ডারত, সেই সময়েই সেখানে আগমন ঘটে বয়সের ভারে জীর্ণ বৃদ্ধার, যিনি প্রবল বৃষ্টিতেও চলাফেরায় সাবলীল। চায়ের দোকানে চা পান করে তিনি উপস্থিত সকলের মুখের দিকে তাকান, কিন্তু নিজে কিছু বলেন না। তখন কৌতূহলী মানুষদের মধ্যে থেকে কেউ একজন জানতে চান যে কোথা থেকে তাঁর আগমন ঘটছে। মেজাজি বৃদ্ধা রাগত ভঙ্গিতে পালটা প্রশ্ন করেন-“সে কথায় তোমাদের কাজ কী বাছারা?” উপস্থিত মানুষেরা সেই তেজ দেখে হেসে ওঠে এবং তির্যক মন্তব্য করে-“এই বাদলায় তেজি টাট্টুর মতন বেরিয়ে পড়েছে।” বৃদ্ধাও পালটা প্রতিক্রিয়া দেন-“তোমাদের কত্তাবাবা টাট্টু।” উপস্থিত জনতাকে তিনি ‘অকথাকুকথা’ বলতে নিষেধও করেন। শেষপর্যন্ত বৃদ্ধা কম্বলের ভিতর থেকে একটি ন্যাকড়ায় বাঁধা পয়সা খুলে চায়ের দাম মিটিয়ে আবার রাস্তায় নেমে যায়। যা দেখে সকলে আশঙ্কা প্রকাশ করে যে বৃদ্ধার নিশ্চিত মৃত্যু হবে। আর তা শুনতে পেয়েই বৃদ্ধা ঘুরে দাঁড়ায় এবং বলে- “তোরা মর্, তোদের শতগুষ্টি মরুক।”

প্রশ্ন ৭.”কতক্ষণ সে এই মারমুখী জনতাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারত কে জানে”-‘সে’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? জনতা মারমুখী হয়ে উঠেছিল কেন?

 উত্তর ‘সে’র পরিচয়: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের প্রশ্নোদ্ভূত অংশে ‘সে’ বলতে নীল উর্দি-পরা, এলাকার চৌকিদারের কথা বলা হয়েছে।

▶ জনতার মারমুখী হয়ে ওঠার কারণ: পৌষমাসের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে চায়ের দোকানে আগত বৃদ্ধার মৃতদেহ কয়েকদিন পরে বটগাছের খোঁদলের কাছে দেখতে পাওয়া যায় এবং তা নিয়ে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের সূচনা হয়। হিন্দুরা চ্যাংদোলা করে মৃতদেহটি নদীর চরে ফেলে এলেও মুসলিমরা সেটি গ্রামে ফিরিয়ে আনে মুসলিম মতে সৎকার করার জন্য। কারণ, গ্রামের মোল্লাসাহেব জানিয়েছেন যে, মামলার কাজে শহরের বাস ধরতে যাওয়ার সময় তিনি বুড়িকে কলমা পড়তে শুনেছেন। হিন্দুদের মধ্যে থেকে প্রতিবাদ আসে। ভটচাজমশাই জানান যে মোল্লাজির সঙ্গেই একই বাস ধরতে যাওয়ার সময় তিনি বুড়িকে শ্রীহরি বলতে শুনেছেন। এইভাবেই নকড়ি নাপিত বনাম ফজলু সেখ, নিবারণ বাগদি বনাম করিম ফরাজি, হিন্দু বনাম মুসলমান দ্বন্দ্ব তীব্রতর হয়ে ওঠে। তর্কাতর্কি, উত্তেজনার পরে বাঁশের চ্যাংদোলা নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। চারপাশের দোকানের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায়। গ্রাম থেকে ছুটে আসে সশস্ত্র মানুষেরা। বুড়ির মৃতদেহের পাশে অস্ত্রহাতে জনতা দাঁড়িয়ে যায়। উভয়পক্ষ ‘নারায়েতকবির’, ‘আল্লাহু আকবর’ আর ‘জয় মা কালী’ চিৎকার করে মৃতদেহের অধিকারের জন্য পরস্পরের প্রতি মারমুখী হয়ে ওঠে।

প্রশ্ন ৮. “বিজ্ঞ চৌকিদারের পরামর্শ মানা হল।”- চৌকিদার কী পরামর্শ দিয়েছিল? সেই পরামর্শ মেনে কী করা হয়েছিল? ৩+২

উত্তর.  চৌকিদারের পরামর্শ: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে শীতের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গ্রামের বটতলার খোঁদলে আশ্রয় নিয়েছিল যে বৃদ্ধা, পরের দিন বৃষ্টি থামলে দেখা যায় সে নিঃসাড় অবস্থায় পড়ে আছে। নাড়ি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে বৃদ্ধা মারা গেছে। এই অবস্থায় চৌকিদার পরামর্শ দেয় যে, ‘ফাঁপি’তে অর্থাৎ প্রবল শীতে বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ায় এক ভিখিরির মৃত্যুতে থানাপুলিশ করার কোনো প্রয়োজন নেই। পাঁচ ক্রোশ দূরের থানায় খবর দিলে পুলিশ আসতে যে দীর্ঘ সময় ব্যয় হবে তাতে মৃতদেহ পচে দুর্গন্ধ বেরোবে। কারণ চৌকিদারের কথায়, ইতিমধ্যে মৃতদেহ ‘ফুলে ঢোল হয়েছে’। এই অবস্থায় গ্রামের সকলে পরামর্শ চাইলে চৌকিদার মৃতদেহটি নদীর চড়ায় ফেলে দিয়ে আসতে বলে। সেখানে তার যা গতি হওয়ার তা হবে বলে মন্তব্য করে সে। এই পরামর্শই গ্রামের সকলে মেনে নিয়েছিল।

▶ পরামর্শ অনুযায়ী গ্রামবাসীদের কৃতকাজ: চৌকিদারের পরামর্শমতো গ্রামের মানুষেরা দুই মাইল দূরে অবস্থিত শীতকালে শুকিয়ে-যাওয়া নদীর চড়ায় বাঁশের চ্যাংদোলায় নিয়ে গিয়ে বুড়ির মৃতদেহ ফেলে আসে। বুড়ির শরীর উজ্জ্বল রোদে তপ্ত বালিতে চিত হয়ে পড়ে থাকে। আর গ্রামে ফিরে এসে সকলে দিগন্তে চোখ রাখে, ঝাঁকে ঝাঁকে কখন শকুন নামবে তার জন্য।

প্রশ্ন ৯. “শেষ রোদের আলোয় সে দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল।”- কার কথা বলা হয়েছে? সে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল কেন?   

উত্তর. উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে শীতের দিনে ‘ফাঁপি’র প্রতিকূল আবহাওয়ায় গ্রামে চলে-আসা বৃদ্ধা-যার মৃতদেহকে ঘিরে হিন্দু এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়েছিল-সেই বৃদ্ধার কথাই এখানে বলা হয়েছে।

▶ উদ্দিষ্ট ব্যক্তির আবছা হয়ে যাওয়ার কারণ: গ্রামের মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরা নদীর চড়ায় ফেলে আসা বৃদ্ধার মৃতদেহকে গ্রামে ফিরিয়ে আনে এবং তাকে মুসলমান দাবি করে কবরস্থ করার উদ্যোগ নেয়। এই নিয়ে হিন্দু এবং মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংঘর্ষের উপক্রম হয়। মোল্লাসাহেবের নেতৃত্বে একপক্ষ থেকে চিৎকার ওঠে “আল্লাহু আকবর”, অন্যপক্ষ থেকে ভটচাজমশাইয়ের নেতৃত্বে গর্জন শোনা যায়-“জয় মা কালী।” এই সময়েই দেখা যায় এক অদ্ভুত দৃশ্য। বুড়ির মৃতদেহটি নড়ছে এবং আস্তে আস্তে তা উঠে বসার চেষ্টা করছে। বুড়ি উঠে দাঁড়ায়, ভিড়কে দেখে এবং বিকৃত মুখে হেসে ওঠে। তারপর ধীরে ধীরে রাস্তা ধরে সে এগিয়ে যায়। যুযুধান মানুষেরা সরে গিয়ে তাকে পথ করে দেয়। দূরের দিকে ক্রমশ অস্পষ্ট হয়ে- যাওয়া বৃদ্ধা যেন ভারতবর্ষের অন্তরাত্মার প্রতীক হয়ে ওঠে, যেখানে বিদ্বেষ বা উগ্রতার কোনো জায়গা নেই।

প্রশ্ন ১০.”বচসা বেড়ে গেল।”-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বচসার কারণ আলোচনা করো।

উত্তর. প্রসঙ্গ: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ ছোটোগল্পে পৌষমাসের অকাল-দুর্যোগে আগত এক থুথুড়ে বৃদ্ধা ভিখারিনির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত বেধে যায়। সেই প্রসঙ্গেই মন্তব্যটি করা হয়েছে।

বচসার কারণ: হিন্দুরা নদীর চড়ে মৃতদেহ ফেলে এলে মুসলমানরা তা গ্রামে ফিরিয়ে আনে। হিন্দুদের কুদ্ধ প্রশ্নের উত্তরে মুসলিম শববাহকরা জানায় যে, বুড়ি মুসলমান। হিন্দুরা তার প্রমাণ চাইলে তারা জানায় যে, তাদের অনেকেই বুড়িকে বিড়বিড় করে ‘আল্লা’ বা ‘বিসমিল্লা’ বলতে শুনেছে। মোল্লাসাহেব শপথ করে জানান যে, সকালে বটতলায় যখন তিনি শহরের বাস ধরতে এসেছিলেন, তখন সেখানে মুমূর্ষু বুড়িকে কলমা পড়তে শুনেছেন। ইতিমধ্যে সেখানে এসে

উপস্থিত হওয়া ভটচাজমশাই মোল্লাসাহেবের কথার প্রতিবাদ করে জানান যে, তিনি সকালে মুমূর্ষু বুড়িকে স্পষ্ট ‘শ্রীহরি’র নাম নিতে শোনেন। তাঁর সমর্থনে নকড়ি নাপিত জানায় যে, আগেরদিন সে বটতলায় এসে বুড়িকে হরিধ্বনি দিতে শুনেছিল। ফজলু সেখ তখন তার প্রতিবাদে জানায় যে, সে নিজের কানে বুড়িকে ‘লাইলাহা ইল্লাল্ল’ বলতে শুনেছে। একসময়ের ডাকাত নিবারণ বাগদি তখন ফজলুকে চিৎকার করে মিথ্যেবাদী বললে একদা পেশাদার লাঠিয়াল করিম ফরাজি হুংকার দেয় ‘খবরদার’। বুড়ির মৃতদেহ সৎকার করার অধিকার নিয়ে এভাবেই বচসা তৈরি হয়েছিল।

প্রশ্ন ১১. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের মোল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাইয়ের চরিত্রের তুলনামূলক আলোচনা করো।

উত্তর. মোল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাইয়ের চরিত্রের তুলনামূলক আলোচনা: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের মোল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাই-এই দুজন দুই সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীদের নেতা হিসেবে উঠে এসেছেন। বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে হিন্দু-মুসলমানের যে সংঘাত হয়, তাতে মোল্লাসাহেব মুসলিম পক্ষের মুখপাত্র হন। বলেন সকালে বাস ধরতে যাওয়ার সময় তিনি মুমূর্ষু বুড়িকে স্পষ্ট কলমা পড়তে শুনেছেন। ঠিক সেই সময়েই ভটচাজমশাই সদ্য বাস থেকে নেমে সেই ভিড়ের মধ্যে ঢোকেন এবং মোল্লাসাহেবের কথার প্রতিবাদ করে জানান যে, সকালে মোল্লাসাহেবের সঙ্গে একই বাসে ওঠার আগে তিনি মুমূর্ষু বুড়িকে ‘শ্রীহরি’ জপ করতে স্পষ্ট শুনেছেন। সুতরাং এভাবেই দুই সম্প্রদায়ের দুই নেতা সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি করেন। শুধু তাই নয়, মোল্লাসাহেব এরপর নিজ-সম্প্রদায়ের মানুষকে প্ররোচিত করতে ‘জেহাদ’ অর্থাৎ ধর্মযুদ্ধের ঘোষণা করেন। উলটোদিকে ভটচাজমশাইও একইভাবে হিন্দু জনতাকে প্ররোচিত করতে যবন হত্যার উদ্দেশ্যে মা কালীর আবির্ভাব আহ্বান করতে থাকেন।

সুতরাং মোল্লাসাহেব এবং ভটচাজমশাই-দুজনেই উগ্র এবং ধর্মান্ধ হয়ে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের সহজসরল মানুষকে ভয়ংকর সংঘর্ষে প্ররোচিত করেছেন, মানবতার বিপক্ষে যাদের অবস্থান।

প্রশ্ন ১২ .’ভারতবর্ষ’ গল্পের চৌকিদারের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

উত্তর. চৌকিদারের চরিত্র: কথামুখ: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের চৌকিদার চরিত্রের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।

বাস্তব বুদ্ধিসম্পন্নতা: বাজার-পার্শ্ববর্তী বটগাছতলায় বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে ভেবে গ্রামের লোকেরা চৌকিদারকে খবর দেয়। চৌকিদার অকুস্থলে এসে গ্রামবাসীকে খবরটা থানায় দিতে বারণ করে। পৌষের অকাল-দুর্যোগে এক ভিখারিনি বুড়ির মৃত্যু থানায় খবর দেওয়ার মতো তত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তা ছাড়া, থানা যেহেতু সেখান থেকে পাঁচ ক্রোশ দূরে, তাই খবর পেয়ে থানার লোকেদের আসতে আসতে মাঝরাত্রি হয়ে যাবে। ততক্ষণে লাশের দুর্গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে। তাই সে বুড়িকে নদীর চড়ায় ফেলে আসার বাস্তবোচিত পরামর্শ দেয়। তবে বাস্তববুদ্ধির অধিকারী চৌকিদারের পর্যবেক্ষণে একটু ভুল হয়েছিল। কেন-না সে জীবন্ত বুড়িকে দেখে বলেছিল যে, লাশ ফুলে উঠেছে।

কর্তব্যসচেতনতা: বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি হলে, বিপন্ন চৌকিদার শুধুমাত্র একটি লাঠিকে সম্বল করে দু-পক্ষকে নিরস্ত করতে শেষ পর্যন্ত লড়ে যায়। সশস্ত্র কোনো পক্ষ যখনই এক কদম এগোনোর চেষ্টা করছিল, তখনই নীল-ইউনিফর্ম-পরা চৌকিদার তার লাঠিটা পিচে ঠুকে ‘সাবধান’ বা ‘খবরদার’ বলে গর্জন করে উঠছিল। বুড়ি উঠে না দাঁড়ালে সে হয়তো একা দাঙ্গা ঠেকাতে সমর্থ হত না, কিন্তু কর্তব্যসচেতন চৌকিদারের মরিয়া চেষ্টাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।

প্রশ্ন ১৩. “ফিরে এসে সবাই দিগন্তে চোখ রাখল ঝাঁকে ঝাঁকে কখন শকুন নামবে।”-সকাল থেকে ঘটা ঘটনাবলির আনুপূর্বিক বিবরণ দাও। সবাই এমনটা করেছিল কেন?  

উত্তর. আনুপূর্বিক ঘটনাবলির বিবরণ: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ ছোটোগল্পের থুথুড়ে বৃদ্ধাটি দুর্যোগময় বৃষ্টির দিনে বাজার-সংলগ্ন বটগাছতলায় আশ্রয় নিয়েছিল। পরের দিন তাকে সেখানেই চিত হয়ে অসাড়ভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায়। চাওয়ালা জগা বলে-“নির্ঘাত মরে গেছে বুড়িটা।” এরপর নিঃসাড় বুড়ির চারপাশে ক্রমশ-জড়ো-হওয়া লোকজন বুড়ির শরীরের এবং নাড়ির স্পন্দনহীনতা পরীক্ষা করে সিদ্ধান্তে আসে যে, বুড়ি মৃত। চৌকিদারকে খবর দেওয়া হলে সে এসে সব দেখেশুনে খবরটা থানায় দিতে বারণ করে। থানা যেহেতু সেখান থেকে পাঁচ ক্রোশ দূরে, তাই সেখানে খবর দিতে এবং খবর পেয়ে তারপর থানার লোকেদের অকুস্থলে আসতে মাঝরাত্রি হয়ে যাবে। ততক্ষণে লাশের দুর্গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে বলে চৌকিদার জানায়। চৌকিদারের পরামর্শ মতো উপস্থিত কয়েকজন মিলে বাঁশের মাচায় বুড়িকে ঝুলিয়ে নিয়ে দু-মাইল দূরবর্তী শুকনো নদীর চড়ায় ফেলে দিয়ে আসে। উজ্জ্বল রোদে নদীর চড়ায় গরম বালির ওপর বুড়ির দেহ চিত হয়ে পড়ে থাকে।

▶ উদ্দিষ্ট আচরণের কারণ: নদী থেকে বাজারে ফিরে এসেই সবাই দিগন্তের আকাশে চোখ রেখেছিল। বুড়ির মৃতদেহের লোভে কখন ঝাঁক ঝাঁক শকুন নেমে আসে-তা দেখার আশায়।

প্রশ্ন ১৪. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বুড়ির দীর্ঘনিদ্রাভঙ্গ কীভাবে দুই সম্প্রদায়ের মারমুখী জনতাকে শান্ত করল, তা আলোচনা করো।

উত্তর.সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের শেষদিকে বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে সশস্ত্র হিন্দু ও মুসলমান গ্রামবাসীদের মধ্যে যখন রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখনই বুড়ির দীর্ঘনিদ্রা ভঙ্গ হয়। বাঁশের মাচায় শায়িত বুড়ি হঠাৎ নড়ে উঠে বসতে চেষ্টা করে। দু-পক্ষের মারমুখী জনতা এবং চৌকিদার বিস্ময়ে সেদিকে তাকিয়ে থাকে। বুড়ি এরপর ক্রমে দাঁড়িয়ে পড়ে। তার দু-দিকে দু-দলের ভিড় দেখে তার মুখ ব্যাজার হয়ে যায়। সেই ব্যাজার মুখেই তারপর ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে ওঠে সে। চৌকিদারের “বুড়িমা! তুমি মরনি।” এই বিস্ময়সূচক প্রশ্ন শুনে এরপর সে শতগুষ্টি-সহ চৌকিদারেরই মরণ কামনা করে। সমবেত জনতাও যখন চিৎকার করে একই কথা বলতে থাকে তখন বুড়ি তাদের ‘মুখপোড়া’ বলে গালি দিয়ে শাপশাপান্ত করে। বুড়ি হিন্দু না মুসলমান-এ কথা এরপর একজন জিজ্ঞাসা করলে প্রচন্ড রেগে গিয়ে বুড়ি জনতাকে জানায় যে, তারা তাদের চোখের মাথা খেয়েছে। ‘নরকখেকো’, ‘শকুনচোখো’ ইত্যাদি গালাগাল সহযোগে সে জনতাকে জানায় যে, তারা বুড়িকে দেখে তার ধর্মপরিচয় যেহেতু বুঝতে পারছে না, তাই বুড়ি তাদের সবার চোখ গেলে দেবে। জনতাকে দূর হতেও বলে সে। কথাগুলো বলে বুড়ি নড়বড় করতে করতে সেখান থেকে বেরোলে জনতা সরে গিয়ে তাকে পথ করে দেয়। দিনের শেষ রোদ্দুরে দূরের দিকে ক্রমে অস্পষ্ট হয়ে যায় বুড়ি। এভাবেই দীর্ঘনিদ্রা-থেকে-জেগে-ওঠা বুড়ি দু-সম্প্রদায়ের মারমুখী জনতাকে শান্ত করেছিল।

প্রশ্ন ১৫. “দেখতে-দেখতে প্রচণ্ড উত্তেজনা ছড়াল চারদিকে।”- প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এই উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার বিবরণ দাও। ১+৪ [নমুনা প্রশ্ন] [মালদহ উমেশচন্দ্র বাস্তুহারা বিদ্যালয়]

ত্তর. প্রসঙ্গ: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে রাঢ়বাংলায় এক পৌষমাসের অকালদুর্যোগে মৃত এক থুথুড়ে ভিখারিনির মৃতদেহের সৎকারকে

ঘিরে হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে যে প্রবল বিরোধের সূত্রপাত হয়েছিল, সে প্রসঙ্গেই এই মন্তব্য করা হয়েছে।

▶ ঘটনার বিবরণ: বুড়িকে নিয়ে টানাপোড়েন: বৃদ্ধা ভিখারিনি প্রাণ হারিয়েছে বলে মনে করে কয়েকজন হিন্দু গ্রামবাসী তাকে শুকনো নদীর চড়ায় ফেলে আসে। কিন্তু সেদিনই বিকেলে দেখা যায় যে, কয়েকজন মুসলমান আরবি মন্ত্র পড়তে পড়তে বুড়িকে কবর দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাজারে নিয়ে আসছে। হিন্দু-মুসলিম বচসা: বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে মোল্লাসাহেবের নেতৃত্বে মুসলমানরা এবং ভটচাজমশাইয়ের নেতৃত্বে হিন্দুসম্প্রদায় প্রবল বচসায় জড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনার প্রসার: বাজারের দোকানপাট একে একে বন্ধ হতে শুরু করে। পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে দুই সম্প্রদায়ের বহু মানুষ অস্ত্রশস্ত্র-সহ অকুস্থলে জড়ো হতে শুরু করে। বুড়ির মাচার দু-পাশে জড়ো-হওয়া দু-দলের জনতা অসহায় চৌকিদারের উপস্থিতিতে পরস্পরের উদ্দেশ্যে প্ররোচনামূলক উক্তি করতে থাকে। মোল্লাসাহেব ‘নারায়েতকবির’, ‘আল্লাহুআকবর’ ইত্যাদি ধর্মীয় স্লোগান তুলে বিধর্মীদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করতে থাকেন। অন্যদিকে ভটচাজমশাই মাঝে-মাঝেই চিৎকার করে মা কালীর নামে জয়ধ্বনি দিতে লাগলেন। আইনরক্ষকের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা: এরকম দাঙ্গা-পরিস্থিতির মাঝখানেও কর্তব্য-সচেতন বিপন্ন আইনরক্ষক চৌকিদার তার লাঠিটি উঁচিয়ে দু-পক্ষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকে। কোনো পক্ষ এক কদম এগোনোর চেষ্টা করলেই সে লাঠি ঠুকে ‘সাবধান’ বা ‘খবরদার’ বলে গর্জন করতে থাকে। বালির বাঁধ: কিন্তু তার প্রচেষ্টা যখন বালির বাঁধের মতো ভেঙে পড়ার মুখে, ঠিক তখনই দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে উঠে দাঁড়িয়ে বুড়ি সেই উত্তেজনায় জল ঢেলে দেয়।

প্রশ্ন ১৬.”তারপর দেখা গেল এক অদ্ভুত দৃশ্য-অদ্ভুত দৃশ্যটি কী? কোন্ ঘটনার পর তা দেখা গেল?  

উত্তর. অদ্ভুত দৃশ্যের পরিচয়: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ ছোটোগল্প থেকে সংকলিত উদ্ধৃতিটিতে যে ‘অদ্ভুত’ দৃশ্যের কথা বলা হয়েছে,

তা হল-যার মৃতদেহের অধিকার নিয়ে হিন্দু-মুসলমান দু-পক্ষ দাঙ্গার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল, সেই আপাত-মৃত বৃদ্ধাটি হঠাৎ মাথা নাড়ায় এবং নড়তে নড়তে উঠে বসার চেষ্টা করে। ক্রমশ সে উঠে বসে এবং দাঁড়িয়েও পড়ে।

▶ অদ্ভুত দৃশ্যের পূর্ববর্তী ঘটনা: ‘অনুচ্ছেদ: ১৭-৪৮’-এর বিশ্লেষণধর্মী ও রচনাধর্মী ৯নং প্রশ্নের দ্বিতীয় অংশের উত্তর দ্যাখো।

প্রশ্ন ১৭. “আমি কী তা দেখতে পাচ্ছিস নে?”- কোন্ প্রশ্নের উত্তরে বক্তা এ কথা বলেছেন? গল্পানুসারে বক্তার স্বরূপ উদ্‌ঘাটন করো।  

উত্তর. প্রসঙ্গ: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বুড়ির ‘মৃতদেহ’ যখন নড়ে ওঠে এবং উঠে দাঁড়ায় তখন সমবেত জনতা তার কাছে জানতে চায়

যে, সে হিন্দু না মুসলমান। এই প্রশ্নের উত্তরেই বৃদ্ধা উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছে।

 ▶ বক্তার স্বরূপ উদ্‌ঘাটন: ভিখিরি এবং ভবঘুরে হিসেবে গল্পে বৃদ্ধার আবির্ভাব ঘটেছিল। প্রথম থেকেই তার মেজাজ ছিল অত্যন্ত চড়া। প্রায় কারও কথাকে গুরুত্ব না দিয়ে বৃদ্ধা গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল বটগাছের খোঁদলে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তাকে আটকাতে পারেনি। কিন্তু কয়েকদিন পরে বৃষ্টি থামলে তাকে নিঃসাড় অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপরে বৃদ্ধার মৃতদেহ সৎকার করার দাবিকে ঘিরে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও অপ্রীতিকর অবস্থা তৈরি হয়। আর তখনই কাহিনির নাটকীয় মোড় ঘুরিয়ে বৃদ্ধা উঠে দাঁড়ায়। যে জনতা পরস্পরের বিরুদ্ধে অস্ত্র উঁচু করেছিল তারা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে, পক্ষান্তরে বুড়ি সেই ভিড়ের দিকে তাকিয়ে বিকৃত মুখে হেসে ওঠে। সকলেই যখন তাঁর মৃত্যু না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে তখনও বৃদ্ধা তীক্ষ্ণকণ্ঠে বলে- “তোরা মর্। তোরা মর্ মুখপোড়ারা!” সে হিন্দু না মুসলমান-এ প্রশ্নের উত্তরেও সে বলে “চোখের মাথা খেয়েছিস মিনসেরা? দেখতে পাচ্ছিস নে?” আসলে হিন্দু বা মুসলমান ধর্মীয় বিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে মনুষ্যত্বকেই প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে বৃদ্ধা। ভিড়কে দু-পাশে সরে যেতে বাধ্য করে যেভাবে সে রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেছে তা চিরজীবী মনুষ্যত্বেরই জয় ঘোষণা করে।

প্রশ্ন ১৮. ছোটোগল্প হিসেবে ‘ভারতবর্ষ’-এর সার্থকতা বিচার করো।

উত্তর.. ছোটোগল্প হিসেবে ‘ভারতবর্ষ’-এর সার্থকতা: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ছোটোগল্প ‘ভারতবর্ষ’-এ পৌষের অকাল-দুর্যোগে রাঢ়বাংলার একটি ছোট্ট বাজারের পাশের বটগাছতলায় আশ্রয় নেয় পরিচয়হীন এক থুথুড়ে বুড়ি ভিখিরি। দুর্যোগ কাটলে সেখানে নিস্পন্দ হয়ে পড়ে-থাকা বৃদ্ধাকে হিন্দু গ্রামবাসীরা মৃত ভাবে। চৌকিদারের পরামর্শে তারা বুড়ির মৃতদেহকে বাঁশের মাচায় করে নিয়ে গিয়ে শুকনো নদীর চড়ায় ফেলে দিয়ে আসে। কিন্তু সেদিন বিকেলেই মুসলমানরা সেই মাচায় করেই বুড়ির দেহটা কবর দিতে বাজারে নিয়ে আসলে সেই শবের অধিকার নিয়ে দু-সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত বাধে। এর মধ্যে হঠাৎই দু-দলের সশস্ত্র জনতাকে হতচকিত করে বুড়ি জেগে উঠে দাঁড়ায়। একজন বুড়ির ধর্মপরিচয় জানতে চাইলে কুদ্ধ বুড়ি তাদের গাল দেয়, নড়বড় করতে করতে রাস্তা ধরে চলতে থাকে এবং ক্রমশ অদৃশ্য হয়ে যায়।

গ্রামসংলগ্ন বাজারকে কেন্দ্র করেই এ গল্পের দু-দিনের এই কাহিনি গড়ে উঠেছে বলে স্থান-কাল-ঘটনাগত ঐক্য এ গল্পে রক্ষিত হয়েছে। তা ছাড়া মাঝারি আয়তনের এ গল্পে ‘ঘটনার ঘনঘটা’, ‘অতিকথন’, ‘বহু চরিত্রের সমাবেশ’, ‘তত্ত্ব’ বা ‘উপদেশ’ অনুপস্থিত। এ গল্পের বৃদ্ধা চরিত্রের মধ্য দিয়ে লেখক ভারতমাতার প্রাচীনত্ব, দারিদ্র্য এবং অসহায়তা যেমন প্রকাশ করেছেন, তেমনই এদেশ যে শুধুমাত্র হিন্দু বা মুসলমানের নয়, বরং আপামর ভারতবাসীর সেই সত্যও উন্মোচিত করেছেন। গল্পের সমাপ্তিতে বৃদ্ধার জেগে-ওঠার মাধ্যমে লেখক পাঠকদের চমকিতও করে দিয়েছেন। সুতরাং ‘ভারতবর্ষ’ নিঃসন্দেহে একটি শিল্পসার্থক ছোটোগল্প।

প্রশ্ন ১৯. ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের ‘বুড়ি’-কে একটি উদ্দেশ্য ও আদর্শের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা যায়।-এই অভিমতের পক্ষে বা বিপক্ষে তোমার বক্তব্য যুক্তি-সহ আলোচনা করো।

উত্তর.. সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের কোলকুঁজো থুথুড়ে ভিখারিনি বৃদ্ধাটি ছিল রাক্ষসীর মতো দেখতে। তার ক্ষয়াটে ছোট্ট মুখমণ্ডলের বলিরেখাগুলি স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে, মাথা-ভরতি সাদা চুল, পরনে ছেঁড়া নোংরা একটি কাপড়, গায়ে জড়ানো তুলোর এক চিটচিটে কম্বল আর হাতে একটি বেঁটে লাঠি।

অসহায় ভিখারিনি হলেও সে অত্যন্ত তেজি, মেজাজি এবং আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন মহিলা। তার তেজ এবং চালচলন নিয়ে আড্ডাধারীরা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করলে সে তাদের তীব্রভাবে ভর্ৎসনা করে।

যখন দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর চারপাশের মারমুখী হিন্দু-মুসলিম জনতাকে দেখে-শুনে সে ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে ওঠে তখন বৃদ্ধার রসিকতাবোধের প্রমাণ পাওয়া যায়।

লেখক এই বৃদ্ধা চরিত্রের মধ্য দিয়েই ভারতমাতার প্রাচীনত্ব, দারিদ্র্য এবং অসহায়তা যেমন প্রকাশ করেছেন, তেমনই তার ধর্মনিরপেক্ষতাও প্রকাশিত হয়েছে। তাই গল্পের শেষে ভিড়ের মধ্য থেকে একজন যখন বুড়ি হিন্দু না মুসলমান তা জিজ্ঞাসা করে, তখন বুড়ি ক্ষিপ্ত হয়ে জানায়-“… চোখের মাথা খেয়েছিস মিনসেরা? … আমি কী তা দেখতে পাচ্ছিস নে?” সুতরাং বৃদ্ধার চরিত্রের মধ্য দিয়েই লেখক গল্পের জনতাকে এবং পাঠকদের এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন যে, এদেশ হিন্দুর নয়, মুসলমানের নয়, এদেশ আপামর ভারতবাসীর। সুতরাং এ গল্পের বুড়িটি একটি উদ্দেশ্য ও আদর্শের প্রতীক।

প্রশ্ন ২০.সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী গল্প হিসেবে ‘ভারতবর্ষ’ ছোটোগল্পটি কতখানি সার্থক-তা আলোচনা করো। 

উত্তর… সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী গল্প হিসেবে ‘ভারতবর্ষ’ ছোটোগল্পটির সার্থকতা: নিজ প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ এবং নিজ- সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষজন সম্বন্ধে ইতিবাচক এবং অন্যান্য ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ এবং ধর্মসম্প্রদায়ের মানুষজন সম্বন্ধে নেতিবাচক পক্ষপাতিত্ব পোষণ করার মানসিকতাকেই বলা হয় সাম্প্রদায়িকতা (Communalism)। সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে পৌষের অকাল-দুর্যোগে এক থুথুড়ে বৃদ্ধ ভিখারিনি দীর্ঘসময় ধরে মৃতের মতো হয়ে থাকলে, তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে সেই মৃতদেহের অধিকার নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীর মধ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হয়। মোল্লাসাহেবের উসকানিতে মুসলমানরা এবং ভটচাজমশাইয়ের উসকানিতে হিন্দুরা পরস্পরের বিরুদ্ধে মারমুখী হয়ে ওঠে এবং রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু ঠিক সেই সময়েই সবাইকে অবাক করে দিয়ে বুড়িটি নড়েচড়ে উঠে দাঁড়ায়। ব্যাজার মুখে দু-দিকের ভিড়ে দৃষ্টিপাত করে দুই সম্প্রদায়ের ছেলেমানুষি কাণ্ডটা বুঝতে পেরে ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে ওঠে সে। তারপর বুড়ি গালাগাল ও শাপশাপান্ত করে সেই অতি- কৌতূহলী, নির্বোধ জনতাকে। বুড়ি হিন্দু না মুসলমান-এ কথা একজন জিজ্ঞাসা করলে জনতাকে ‘নরকখেকো’, ‘শকুনচোখো’ বলে গালাগাল দিয়ে বুড়ি জানায় যে, তারা তাদের চোখের মাথা খেয়েছে। এভাবেই সেই বড়ো আকারের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনায় জল ঢেলে দিয়ে বুড়ি উধাও হয়ে যায়।

‘ভারতবর্ষ’ গল্পে লেখক নিপুণভাবে সাম্প্রদায়িকতার স্বরূপ চিত্রিত করেছেন। গল্পের শেষে তিনি গল্পের জনতা এবং পাঠককে অসাম্প্রদায়িক এক মানবিক অনুভবে উত্তীর্ণ করেছেন। সুতরাং সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী গল্প হিসেবে ‘ভারতবর্ষ’ সার্থক।

প্রশ্ন ২১. “লদীতে ফেলে দিয়ে এসো!”-উক্তিটি কার? কোন্ পরিস্থিতিতে তার এই উক্তি? ১+৪

উত্তর.. বক্তা: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ ছোটোগল্প থেকে নেওয়া ■ আলোচ্য উক্তিটি রাঢ়বাংলার একটি গ্রামের একজন চৌকিদারের।

▶ বক্তব্যের প্রেক্ষাপট: পৌষমাসের অকাল-দুর্যোগে রাঢ়বাংলার কোনো একটি বাজারের চায়ের দোকানে কয়েকজন অলস গ্রামবাসী আড্ডারত। তখন সবাইকে সচকিত করে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে সেই চায়ের দোকানে চা খাওয়ার জন্য এক থুথুড়ে বৃদ্ধা ভিখারিনির আগমন হয়। তারিয়ে তারিয়ে আরাম করে চা খেয়ে, দাম মিটিয়ে দিয়ে, চায়ের দোকানের কৌতূহলী আড্ডাধারীদের শাপশাপান্ত করে বৃদ্ধা ভিখারিনি আশ্রয় নেয় বাঁকের মুখের বটগাছতলায়। কয়েকদিন পরে বৃষ্টি থামলে বৃদ্ধাকে ওই জায়গাতেই নিঃসাড় অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। চা-বিক্রেতা জগা জানায় যে, বুড়িটা নিশ্চয়ই মরে গেছে। বুড়ির কপাল ছুঁয়ে, নাড়ি পরীক্ষা করেও প্রাণের কোনো স্পন্দন খুঁজে পাওয়া যায় না। গ্রামের চৌকিদারকে খবর দেওয়া হলে সে গ্রামবাসীদের থানায় খবর দিতে বারণ করে, কারণ খবর দেওয়ার পর পাঁচ ক্রোশ দূর থেকে থানার লোকেদের আসতে ‘রাত-দুপুর’ হয়ে যাবে। তাই হাঙ্গামা এড়ানোর জন্য এবং মৃতদেহের দুর্গন্ধের হাত থেকে গ্রামবাসীদের মুক্তি দিতে সে পরামর্শ দেয় যে, বুড়ির মৃতদেহটিকে ‘লদীতে’ অর্থাৎ নদীতে ফেলে আসতে।

প্রশ্ন ২২. “সেই সময় এল এক বুড়ি।”-বুড়িটির চেহারার পরিচয় দাও। গল্পের শেষে বুড়িটির ভূমিকা সম্বন্ধে আলোচনা করো।  

উত্তর.. বুড়িটির চেহারা: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ ছোটোগল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য উক্তিটি যে বুড়ির সম্বন্ধে করা হয়েছে সে ছিল কোলকুঁজো এক ভিখারিনি। তাকে রাক্ষসীর মতো দেখতে। একমাথা ভরতি সাদা চুল তার। বুড়িটির গায়ে ছিল একটা ছেঁড়া, নোংরা কাপড়। তার শরীরে জড়ানো ছিল তুলোর এক চিটচিটে কম্বল, হাতে ছিল একটা ছোটো লাঠি। পিচের রাস্তা থেকে ভিজতে ভিজতে চায়ের দোকানে সে প্রবেশ করলে দেখা যায় যে, তার ক্ষয়ে যাওয়া ছোট্ট মুখের বলিরেখাগুলি বেশ স্পষ্ট, যা তার বেশি বয়সের দিকে ইঙ্গিত করে।

▶ গল্পের সমাপ্তিতে বুড়ির ভূমিকা: গল্পটির শেষাংশে দেখা যায়, বুড়ির মৃতদেহটিকে নিয়ে যখন হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ই সশস্ত্র সংঘর্ষে যেতে একেবারে প্রস্তুত, তখন আশ্চর্যজনকভাবে পিচের ওপর বাঁশের মাচায় শুয়ে- থাকা তার দেহটি নড়ে ওঠে। বুড়ি উঠে বসে এবং তারপর উঠে দাঁড়িয়ে দু- দিকের ভিড় লক্ষ করে বিকৃতভাবে হেসে ওঠে। বুড়ি হিন্দু না মুসলমান-এ কথা একজন জিজ্ঞাসা করলে বুড়ি ক্ষিপ্ত হয়ে জানায়-“চোখের মাথা

খেয়েছিস মিনসেরা? দেখতে পাচ্ছিস নে?… আমি কী তা দেখতে পাচ্ছিস নে?” এই বলে সে ভিড় সরিয়ে নড়বড় করে রাস্তা দিয়ে চলে যায়। গল্পের শেষে এভাবেই বুড়ি যেন দুই সম্প্রদায়ের অসচেতন ভারতবাসীকে জাগিয়ে তোলে। ধর্মান্ধতার প্রতি তীব্র ব্যঙ্গ উগরে দিয়ে যায় সে।