Class 7 Chapter 1 Solution
ছন্দে শুধু কান রাখো
Very Short Question Answer
১. ছন্দ আছে ঝড়-বাদলে।
উত্তর: ঝড়-বাদলে ছন্দ আছে।
২. ছন্দে বাঁধা রাত্রি-দিন।
উত্তর: দিন-রাত্রি ছন্দে বাঁধা।
৩. কিচ্ছুটি নয় ছন্দহীন।
উত্তর: কোনো কিছু ছন্দহীন নয়।
৪. চিনবে তারা ভুবনটাকে ছন্দ সুরের সংকেতে।
উত্তর: ছন্দ ও সুরের সংকেতে তারা ভুবনটাকে চিনবে।
৫. কান না দিলে ছন্দে জেনো/পদ্য লেখা সহজ নয়।
উত্তর: ছন্দে কান না দিলে পদ্য লেখা সহজ নয়।
৬. ‘ঝড়-বাদল’-এমনই সমার্থক বা প্রায় সমার্থক দিয়ে পাঁচটি শব্দ লেখো।
উত্তর: ঘর-বাড়ি, খাল-বিল, নদী-নালা, টাকা-পয়সা, রাস্তা-ঘাট, কায় মাঠ-ঘাট, গাড়ি-ঘোড়া, গাছ-পালা।
৭. তোমার পরিচিত আর কোন্ কোন্ যানবাহনের চলার মধ্যে নির্দিষ্ট ছন্দ রয়েছে?
উত্তর: আমার পরিচিত যে সব যানবাহনের শব্দের মধ্যে ছন্দ রয়েছে তারা হল- পালকি, গোরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।
৮. দেখবে তখন তেমন ছড়া/কেউ লেখেনি আর কোথাও।
উত্তর: উদ্দেশ্য-তেমন ছড়া বিধেয়-দেখবে তখন কেউ লেখেনি আর কোথাও।
৯. জলের ছন্দে তাল মিলিয়ে/নৌকো জাহাজ দেয় পাড়ি।
উত্তর: উদ্দেশ্য-নৌকা জাহাজ বিধেয়-জলের ছন্দে তাল মিলিয়ে/দেয় পাড়ি।
১০. চিনবে তারা ভুবনটাকে/ছন্দ সুরের সংকেতে।
উত্তর: উদ্দেশ্য-তারা বিধেয়-চিনবে ভুবনটাকে/ছন্দ সুরের সংকেতে।
১১. নিম্নরেখ অংশগুলির কারকবিভক্তি নির্দেশ করো।
১২. ছন্দে শুধু কান রাখো।
উত্তর: অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি।
১৩. ছন্দ আছে ঝড়-বাদলে
উত্তর: অধিকরণকারকে ‘এ’ বিভক্তি
১৪. দিন-দুপুরে পাখির ডাকে।
উত্তর: অধিকরণকারকে ‘এ’ বিভক্তি।
১৫. ছন্দে চলে রেলগাড়ি।
উত্তর: কর্মকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
১৬. চিনবে তারা ভুবনটাকে।
উত্তর: কর্তৃকারকে ‘শূন্য’ বিভক্তি।
Short Question Answer
১. ‘মন্দ কথায় কান দিয়ো না’-মন্দ, কথার প্রতি কবির কীরূপ মনোভাব কবিতায় ব্যক্ত হয়েছে?
উত্তর: মন্দ কথায় কান দিলে জীবনের যে অপূর্ব অনুভূতি রয়েছে, যে অপূর্ব ছন্দের দোলা রয়েছে তাকে বোঝা যায় না। তাই কবি অজিত দত্ত মন্দ কথার প্রতি বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করেছেন।
২.’কেউ লেখেনি আর কোথাও’- কোন্ লেখার কথা এখানে বলা হয়েছে?
উত্তর: কবি অজিত দত্ত প্রণীত ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ নামাঙ্কিত কবিতায় কবি ছন্দময় বিশ্ব-প্রকৃতির অপূর্ব ছবি তুলে ধরেছেন। নদীর বহমান জলের স্রোতে যে কলধ্বনি সৃষ্টি হয়, তার মধ্যে রয়েছে ছড়ার ছন্দ। এমন ছড়া কেউ কখনও লেখেনি।
৩. ‘চিনবে এরা ভুবনটাকে’- তারা কীভাবে ভুবনটাকে চিনবে?
উত্তর: রবীন্দ্র-পরবর্তী কবি অজিত দত্ত ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ নামাঙ্কিত কবিতায় দেখিয়েছেন, সমগ্র বিশ্বভুবন ছন্দের দোলায় দোলায়িত। অর্থাৎ কোনো কিছু ছন্দহীন নয়। পৃথিবীর সমস্ত কিছুর মধ্যে রয়েছে প্রাণময় ছন্দের স্পন্দন। এই ছন্দকে মন দিয়ে উপলব্ধি করতে হয়। মন্দ কথা ভুলে ছন্দে কান রাখলে জগতের প্রকৃত সত্যকে চেনা যায়। এই ছন্দে যারা মন দিতে পারে, তারাই ছন্দের তাল ও দোলকে ঠিক মতো অনুভব করতে পারে। আর তখন তারা এই ভুবনটাকে ঠিক মতো চিনতে পারে।
৪. ‘পদ্য লেখা সহজ নয়’-পদ্য লেখা কখন সহজ হবে বলে কবি মনে করেন?
উত্তর: আধুনিক কবিদের মধ্যে অন্যতম অজিত দত্ত ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ কবিতায় জানিয়েছেন, জীবনের সবকিছুর মধ্যে ছন্দের চলন রয়েছে। শুধু কবিতার মধ্যে নয়, আমাদের জীবনের সর্বত্র রয়েছে অদৃশ্য ছন্দের বন্ধন। যারা সেই ছন্দকে উপলব্ধি করতে পারেন, তাঁরাই শুধুমাত্র পদ্য বা কবিতা লিখতে সক্ষম হন। যখন ছন্দ ও সুরের সংকেতে ভুবনটাকে ঠিকমতো চিনে নেওয়া সম্ভব হবে, তখনই পদ্য লেখা সহজ হবে।
৫.’কান’ শব্দটিকে পাঁচটি বিশেষ অর্থে ব্যবহার করে বাক্য লেখো।
কান : কান কাটা লোকেদের লজ্জা থাকে না। (নির্লজ্জ)
কান : কান টানলে মাথা আসে। (গৌণ)
কান : চোখ-কান খোলা রেখে রাস্তায় চলা উচিত। (সতর্ক)
কান : সুব্রত বাড়ির কোনো কিছুতেই কান দেয় না। (দৃষ্টি)
কান : কানের সাহায্যে আমরা শুনতে পাই। (অঙ্গ)
৬.কবি কেন বলেছেন পদ্য লেখা সহজ নয়?
উত্তর: কবি অজিত দত্ত ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ নামাঙ্কিত কবিতায় জানিয়েছেন, সকলেই পদ্য লিখতে পারে না। গদ্য লেখা সহজ। কিন্তু অসাধারণ পদ্য লেখা বেশ কঠিন। কেননা, তার জন্যে ছন্দ সম্পর্কে সহজ অনুভূতি থাকা দরকার। ছন্দের তাল সম্পর্কে বোধ দরকার। আর সেই জন্যে পদ্য লেখা সহজ নয়।
৬. জীবন কীভাবে পদ্যময় হয়ে ওঠে বলে কবি মনে করেন?
উত্তর: রবীন্দ্রোত্তর কবি অজিত দত্ত মনে করেন, জগতের সবকিছুতেই ছন্দ রয়েছে। আপাতভাবে যাকে ছন্দহীন বলে মনে হয়, তারও একটি ছন্দ থাকে। পৃথিবীর সমস্ত কিছুর মধ্যেই রয়েছে ছন্দের দোলা। জগতের কোনোকিছুই ছন্দহীন নয়। ছন্দ এবং সুরের সমন্বয়ে জীবন পদ্যময় হয়ে ওঠে।
৭. ‘নয় ছন্দহীন’-কী ছন্দহীন নয়?
উত্তর: কবি অজিত দত্ত ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ কবিতায় পৃথিবীকে ছন্দময় দেখেছেন। তাঁর মনে হয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে যাকে দেখে মনে হয় এর মধ্যে কোনো ছন্দ নেই, তার মধ্যেও অসাধারণ ছন্দের দোলা আছে। ঘড়ির কাঁটা ছন্দ মেনে চলে। দিন-রাত্রি বাঁধা আছে আবর্তনের ছন্দে। কান পেতে আমরা কত কী অনুভব করি, সে সব ছন্দের কারসাজি।
৮. ‘চিনবে তারা ভুবনটাকে’- ‘ভুবন’ শব্দের অর্থ কী? ‘ভুবনটাকে’ কীভাবে চেনা সম্ভব?
উত্তর: প্রথম প্রশ্নের উত্তর: ‘ভুবন’ কথাটির অর্থ হল- আমাদের এই পৃথিবী।
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর: পৃথিবীর সবকিছুতেই ছন্দ আছে। পৃথিবী ছন্দহীন নয়। সেই সব ছন্দকে মন-প্রাণ দিয়ে উপলব্ধি করতে হয়। আমাদের শ্রবণযন্ত্র যে কোনো অনুভূতিকে ধরতে পারে। আসলে মানুষ যদি মন দিয়ে শোনে এবং উপলব্ধি করে তবে তারা যে কোনো বিষয়ের মধ্যেই ছন্দের অস্তিত্ব অনুভব করতে পারে। আর তখন ‘ভুবনটাকে’ চেনা সম্ভব হয়।
৯. ‘কিচ্ছুটি নয় ছন্দহীন’- কথাটির মধ্যে দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?***
উত্তর: জগতের কোনোকিছুই ছন্দহীন নয়। কবি অজিত দত্ত মনে করেন, আমাদের জীবন নিয়ন্ত্রিত হয় অদ্ভুত এক ছন্দের দোলায়। জীব জগতের মধ্যে রয়েছে অদ্ভুত এক ছন্দের দোলা। এমনকি জড় জগতের মধ্যেও রয়েছে ছন্দের খেলা। কবি বিষয়টিকে বোঝাতে গিয়ে জানিয়েছেন-পাখির ডাকের যেমন ছন্দ আছে; নদীর বয়ে চলার মধ্যেও তেমন সহজ ছন্দ রয়েছে। তাই কবি বলেছেন, কোনোকিছুই ছন্দহীন নয়।
৬. জীবন কীভাবে পদ্যময় হয়ে ওঠে বলে কবি মনে করেন?
উত্তর: রবীন্দ্রোত্তর কবি অজিত দত্ত মনে করেন, জগতের সবকিছুতেই ছন্দ রয়েছে। আপাতভাবে যাকে ছন্দহীন বলে মনে হয়, তারও একটি ছন্দ থাকে। পৃথিবীর সমস্ত কিছুর মধ্যেই রয়েছে ছন্দের দোলা। জগতের কোনোকিছুই ছন্দহীন নয়। ছন্দ এবং সুরের সমন্বয়ে জীবন পদ্যময় হয়ে ওঠে।
৭. ‘নয় ছন্দহীন’-কী ছন্দহীন নয়?
উত্তর: কবি অজিত দত্ত ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ কবিতায় পৃথিবীকে ছন্দময় দেখেছেন। তাঁর মনে হয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে যাকে দেখে মনে হয় এর মধ্যে কোনো ছন্দ নেই, তার মধ্যেও অসাধারণ ছন্দের দোলা আছে। ঘড়ির কাঁটা ছন্দ মেনে চলে। দিন-রাত্রি বাঁধা আছে আবর্তনের ছন্দে। কান পেতে আমরা কত কী অনুভব করি, সে সব ছন্দের কারসাজি।
৮. ‘চিনবে তারা ভুবনটাকে’- ‘ভুবন’ শব্দের অর্থ কী? ‘ভুবনটাকে’ কীভাবে চেনা সম্ভব?
উত্তর: প্রথম প্রশ্নের উত্তর: ‘ভুবন’ কথাটির অর্থ হল- আমাদের এই পৃথিবী।
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর: পৃথিবীর সবকিছুতেই ছন্দ আছে। পৃথিবী ছন্দহীন নয়। সেই সব ছন্দকে মন-প্রাণ দিয়ে উপলব্ধি করতে হয়। আমাদের শ্রবণযন্ত্র যে কোনো অনুভূতিকে ধরতে পারে। আসলে মানুষ যদি মন দিয়ে শোনে এবং উপলব্ধি করে তবে তারা যে কোনো বিষয়ের মধ্যেই ছন্দের অস্তিত্ব অনুভব করতে পারে। আর তখন ‘ভুবনটাকে’ চেনা সম্ভব হয়।
৯. ‘কিচ্ছুটি নয় ছন্দহীন’- কথাটির মধ্যে দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?***
উত্তর: জগতের কোনোকিছুই ছন্দহীন নয়। কবি অজিত দত্ত মনে করেন, আমাদের জীবন নিয়ন্ত্রিত হয় অদ্ভুত এক ছন্দের দোলায়। জীব জগতের মধ্যে রয়েছে অদ্ভুত এক ছন্দের দোলা। এমনকি জড় জগতের মধ্যেও রয়েছে ছন্দের খেলা। কবি বিষয়টিকে বোঝাতে গিয়ে জানিয়েছেন-পাখির ডাকের যেমন ছন্দ আছে; নদীর বয়ে চলার মধ্যেও তেমন সহজ ছন্দ রয়েছে। তাই কবি বলেছেন, কোনোকিছুই ছন্দহীন নয়।
১০. ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’- এখানে ‘কান রাখো’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: কবি অজিত দত্ত ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ কবিতায় ছন্দের প্রতি কানকে সজাগ রাখতে বলেছেন। এর ফলে বিশ্বময় প্রাণী ও জড়ের মধ্যে ছন্দের যে খেলা চলেছে, তাকে বোঝা সহজ হবে।
১১. ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ কবিতায় কবি ছন্দ বলতে কীসের কথা বুঝিয়েছেন?
উত্তর: ছন্দ হল শৃঙ্খলিত নিয়ম। সেই নিয়মের ব্যতিক্রম হলে বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। অর্থাৎ ছন্দ পতন হয়। প্রাণী জগতের মতো জড় জগতেও ছন্দের অস্তিত্ব রয়েছে। এই ছন্দ উপলব্ধি করার মন চাই। যাদের সেই মন আছে তারাই পারে দৃশ্যময় জগতের ছন্দকে চিহ্নিত করতে। এই ছন্দ হল সবকিছুর মধ্যে চলমানতার ধ্বনি উপলব্ধি করা।
উত্তর: জীবন কখনও ছন্দহীন নয়। প্রকৃতিও ছন্দময়। দিন ও রাতের পরিবর্তনের রয়েছে ছন্দের সামঞ্জস্য। না হলে একটানা দীর্ঘদিন রাত কিংবা দিন হতো। এরফলে প্রকৃতিতে ছন্দপতন দেখা যেত।
১৩. ‘কেউ লেখেনি আর কোথাও’- এখানে কোন্ বিষয়ের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ নামাঙ্কিত কবিতায় কবি অজিত দত্ত লিখেছেন, সমস্ত দ্বেষ ভুলে গিয়ে ছন্দের খেলায় মন দিলে অনেক কিছু বোঝা যায়। বৃষ্টি-ঝড়-বাদল, জোছনা, পাখির ডাক, ঝিঁঝির ডাক সবকিছুর মধ্যে ছন্দ আছে। নদীর আপন মনে বয়ে চলার মধ্যে যে ছন্দ আছে, তা অপূর্ব। এর আগে এমন ছন্দ, এমন ছড়া আর কেউ লেখেনি।
১৪. কবির কেন মনে হয়েছে সব সময় ছন্দ উপলব্ধি করা যায় না?
উত্তর: কবি অজিত দত্তের মনে হয়েছে-সমস্ত দ্বন্দু, বিবাদ, হিংসা, দ্বেষ ভুলে না গেলে মন দিয়ে ছন্দ শোনা যায় না।
১৫. ‘কান পেতে আর মন পেতে’-কবি কান পেতে ও মন পেতে কী শুনতে বলেছেন?
উত্তর: কবি অজিত দত্ত বলেছেন, কান পেতে ও মন পেতে সব রকম ছন্দ শুনতে হবে। যারা তা পারে তারাই ভুবনটাকে চিনতে পারে। প্রকৃত আনন্দ উপলব্ধি করতে পারে।
১৬. ‘জীবন হবে পদ্যময়’- কীভাবে জীবন পদ্যময় হবে?
উত্তর: কবি অজিত দত্ত বলেছেন, ছন্দের সুর প্রবাহে মনের মধ্যে আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায়। তখনই জীবন ছন্দময় হয়ে ওঠে। অর্থাৎ জীবন হয়ে ওঠে পদ্যময়।
Long Question Answer
১.’ছন্দ শোনা যায় নাকো’- কখন কবির ভাবনায় আর ছন্দ শোনা যায় না?
উত্তর: রবীন্দ্র-পরবর্তী কবিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কবি হলেন অজিত
দিয়েছেন-
দত্ত। তিনি ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ নামাঙ্কিত কবিতায় প্রথমেই শুনিয়ে
মন্দ কথায় মন দিয়ো না
ছন্দে শুধু কান রাখো,
দ্বন্দ্ব ভুলে মন না দিলে
ছন্দ শোনা যায় নাকো।
এখানে কবি অজিত দত্ত স্পষ্টই বলেছেন, মন্দ কথায় কান দিলে কোনো ছন্দ শোনা যায় না। তা ছাড়া মনের দ্বিধা-দ্বন্দু ত্যাগ না করলে ছন্দের সহজাত সুর উপলব্ধি করা যায় না।
ব্যাকরণের সহজপাঠ
১. বিপরীত শব্দ লেখো:
মন্দ, দ্বন্দু, তাল, ছন্দহীন, পদ্য, সহজ, কিচ্ছুটি, মজা, সুর। উত্তর: মন্দ-ভালো, দ্বন্দু-নির্দ্বন্দু, তাল-বেতাল, ছন্দহীন- ছন্দময়, পদ্য-গদ্য, সহজ-কঠিন, কিচ্ছুটি-সবকিছু, মজা-নিরানন্দ, সুর-বেসুর।
২. বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণে ও বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে পরিবর্তন করো এবং বাক্য রচনা করো।
ঝড় (বি)-ঝোড়ো (বিণ): আজ সকাল থেকেই ঝোড়ো হাওয়া বইছে।
মন (বি)-মানসিক (বিণ): আজ কমলবাবুর মানসিক অবস্থা ভালো নেই।
ছন্দ (বি)-ছান্দসিক (বিণ): সাহিত্যিক মহলে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ছান্দসিক হিসেবে প্রসিদ্ধ।
দিন (বি)-দৈনিক (বিণ): ছাত্রছাত্রীদের দৈনিক রুটিন অনুসারে পড়াশোনা করা উচিত।
সুর (বি)-সুরেলা (বিণ): শিপ্রার সুরেলা গলার গানে আমরা অবাক হয়ে গেলাম।
সংকেত (বি)-সাংকেতিক (বিণ): সাংকেতিক চিহ্ন অনুসরণ করে আমরা অবশেষে গন্তব্যস্থলে পৌঁছালাম।
দ্বন্দু (বি) দ্বান্দ্বিক (বিণ): অবশেষে সেই দ্বান্দ্বিক মনোভাবের সমাধান হল।
মন্দ (বিণ)-মন্দত্ব (বি): ক্রমেই মন্দত্ব অনুভব করা গেল।
ছন্দহীন (বিণ)- ছন্দহীনতা (বি): ছন্দহীনতা কবিতার ক্ষেত্রে একটি অন্যতম ত্রুটি।
পদ্যময় (বিণ)-পদ্য (বি): পদ্য লিখতে গেলে অবশ্যই ছন্দজ্ঞান থাকা দরকার।
সহজ (বিণ)-সহজতা (বি): পদ্য রচনায় ভাষার সহজতা একটি বড়ো গুণ।
৩. নীচের শব্দগুলিকে আলাদা আলাদা অর্থে ব্যবহার করে দুটি করে বাক্য লেখো।
মন্দ : মন্দ কথায় কান দিলে ছন্দ শোনা যায় না। (খারাপ) মৃদুমন্দ বাতাস বইছে। (ধীর)
দ্বন্দু : দ্বন্দু মানুষের সংযমে ব্যাঘাত ঘটায়। (ঝগড়া) দ্বন্দু ছাড়া জয়ী হওয়া যায় না। (প্রতিযোগিতা)
তাল: স্বর ও তাল ঠিক থাকলে তবেই গান শুনতে ভালো লাগে। (ছন্দ) তাল নবমী বাঙালির একটি অন্যতম উৎসব। (উৎসব)
ডাক: কোকিলের ডাক খুব সুন্দর। (স্বর) ডাকের ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে। (ডাকঘর)
বাজে : ঘড়িতে এখন দুপুর বারোটা বাজে। (সময়) লেবুটা খেতে বড্ড বাজে। (স্বাদ)
ছড়া : এক ছড়া কলার দাম কত? (একগুচ্ছ) ছড়া শুনতে আমার খুব ভালো লাগে। (কবিতা)
মজা : অন্যকে নিয়ে মজা করা ঠিক নয়। (তাচ্ছিল্য) দুর্গা পুজোতে আমি খুব মজা করেছি। (আনন্দ)
নয় :নয় দিন ধরে পরীক্ষা চলছে। (সংখ্যা) মিথ্যা কথা বলা উচিত নয়। (নিষেধ)
৪. ‘মনের মাঝে জমবে মজা’- কীভাবে ‘মনের মাঝে’ ‘মজা’ জমবে বলে কবি মনে করেন?**
উত্তর: কবি অজিত দত্ত ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ কবিতায় জানিয়েছেন, আমাদের জীবন হল ছন্দময়। জীবনের এই সহজ ছন্দকে বুঝতে হলে কানকে সজাগ রাখতে হয়। এই প্রসঙ্গে তিনি কয়েকটি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন, যাদের মধ্যে অপূর্ব ছন্দের দোলা আছে। যেমন-
১. নদীর আপন বেগে বয়ে চলা।
২. পাখির অপূর্ব গান।
৩. সন্ধ্যাবেলা ঝিঁঝিপোকার ডাক।
এদের মধ্যে রয়েছে ছন্দের অপূর্ব খেলা। যে মানুষ তার কানকে সজাগ রাখতে জানে, সেই মানুষ পারে ছন্দের এই খেলাকে উপলব্ধি করতে। আর সেটি সম্ভব হলে মনের মধ্যে অদ্ভুত এক মজা বা আনন্দ জেগে ওঠে।
৫. ‘দ্বন্দ্ব ভুলে মন না দিলে/ছন্দ শোনা যায় নাকো।’ কবির একথা বলার কারণ কী?
উত্তর: কবি অজিত দত্ত মনে করেন, আমাদের এই পৃথিবী ছন্দময়। সেই চলমান ছন্দকে উপলব্ধি করতে হলে কানকে সদাসতর্ক রাখতে হয়। এই প্রসঙ্গে কবির বক্তব্য হল-
১. ছন্দহীন কুকথায় কান দিতে নেই।
২. পৃথিবীতে রয়েছে অসংখ্য মতান্তর-মনান্তর। রয়েছে কলহ- কোন্দল। এ সবে মন দিতে নেই।
পারস্পরিক বিবাদ-বিতর্ক থেকে দূরে না থাকলে ছন্দের সহজ সুর উপলব্ধি করা যায় না। এ জন্যে কবি অজিত দত্ত ‘দ্বন্দু ভুলে’ ‘ছন্দ শোনা’র কথা বলেছেন।
৬. প্রকৃতির মধ্যে কোথায় কোথায় ছন্দ আছে বলে কবি মনে করেন?
উত্তর: কবি অজিত দত্ত প্রণীত ‘ছন্দে শুধু কান রাখো’ কবিতায় জানিয়েছেন, মন্দ কথায় কান না দিয়ে ছন্দের প্রতি কান রাখা ভালো। প্রকৃতির মধ্যে কবি দেখেছেন ছন্দের দোলায়িত রূপ। এই ছন্দ প্রকৃতির বিচিত্র রূপের মধ্যে ধরা দিয়েছে। যেমন-
১. ঝড় বাদলের মধ্যে
২. পাখির ডাকের মধ্যে
৩. গভীর রাতে ঝিঁঝির ডাকের মধ্যে
৪. নদীর স্রোতের বহমানতার মধ্যে কান আর মন এক হলে তবে সবকিছুর মধ্যে ছন্দের সুর উপলব্ধি করা সম্ভব।