Class 10 Chapter 13 Solution
অেস্ত্রর বিরুদ্ধে গান
1. MCQs Question Answer
১. ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতাটি যে কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত, সেটি হল–
(ক) ঘুমিয়েছ, ঝাউপাতা?
(খ) প্রত্নজীব
(গ) ভুতুম ভগবান
(ঘ) পাতার পোশাক
উত্তর: (ঘ) পাতার পোশাক
২. পাতার পোশাক কাব্যগ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়-
(ক) ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ২০০০ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে
উত্তব়: (ক) ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে
৩. পাতার পোশাক কাব্যগ্রন্থটি কবি উৎসর্গ করেন–
(ক) শক্তি চট্টোপাধ্যায়কে
(খ) সব মৃত বন্ধুকে
(গ) অনুপ আর মঞ্জুকে
(ঘ) সাগরময় ঘোষকে
উত্তব়:(গ) অনুপ আর মঞ্জুকে
৪. পাতার পোশাক কাব্যগ্রন্থের
(ক) দুটি অংশ
(খ) তিনটি অংশ
(গ) চারটি অংশ
(ঘ) পাঁচটি অংশ
উত্তব়:(খ) তিনটি অংশ
৫. ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতাটি পাতার পোশাক কাব্যগ্রন্থের যে অংশে রয়েছে, সেটি হল-
(ক) পাতার পোশাক
(খ) সেতু, শ্রম, অভিজ্ঞতা
(গ) কবিকাহিনী
(ঘ) সেতু, অভিজ্ঞতা, শ্রম
উত্তব়:(ক) পাতার পোশাক
৬. ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় অস্ত্র রেখে দিতে বলা হয়েছে-
(ক) বনে-বাদাড়ে
(খ) কবির কাছে
(গ) গানের পায়ে
(ঘ) দেশগাঁয়ে
উত্তব় (গ) গানের পায়ে
৭. “আমি এখন হাজার হাতে পায়ে এগিয়ে আসি,”-এখানে ‘আমি’ হল-
(ক) কবি
(খ) গান
(গ) দেশবাসী
(ঘ) সৈন্য
উত্তব়: (ক) কবি
৮. “গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে”-গানকে ‘বর্ম’ বলা হয়েছে, কারণ-
(ক) কবি একটা-দুটো গান জানেন
(খ) গান গাইলে মন খারাপ হয় না
(গ) গান গাইলে অন্যায়ের মুখোমুখি দাঁড়ানোর সাহস জাগে
(ঘ) গান গাইলে কোনো চিন্তা থাকে না
উত্তব়: (গ) গান গাইলে অন্যায়ের মুখোমুখি দাঁড়ানোর সাহস জাগে
৯. “আঁকড়ে ধরে সে-খড়কুটো”-উদ্ধৃতাংশে ‘খড়কুটো’ হল
(ক) গান
(খ) অস্ত্র
(গ) বাড়িঘর
(ঘ) পোশাক-পরিচ্ছদ
উত্তব়: (ক) গান
১০. কবি গানের গায়ে কী মোছেন?
(ক) অশ্রু
(খ) ঘাম
(গ) রক্ত
(ঘ) কান্না
উত্তব়: (গ) রক্ত
১১. “রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে”-উদ্ধৃতাংশে গানের গায়ে রক্ত মোছার অর্থ-
(ক) কবি গান গেয়ে রক্তপাত ঘটাতে চান
(খ) অকারণ রক্তপাতে কবি গান বন্ধ করে দিতে চান
(গ) রক্তপাতের কথা ভেবে কবি সেই শোককে গানে পরিণত করতে চান
(ঘ) কবি মনে করেন গান রক্তপাত বন্ধ করতে পারে না
উত্তব়: (গ)রক্তপাতের কথা ভেবে কবি সেই শোককে গানে পরিণত করতে চান
১২. “মাথায় কত শকুন বা চিল”-মাথায় শকুন বা চিল ওড়ার অর্থ-
(ক) চারিদিকে পাখিদের ভিড়
(খ) সমাজটা যেন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে
(গ) তারা কোকিলকে আক্রমণ করতে চায়
(ঘ) কবি শিকারি পাখিদের পোষ মানিয়েছেন
উত্তব়: (খ) সমাজটা যেন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে
১৩. “আমার শুধু একটা কোকিল…”-এই কোকিলটি হল-
(ক) কবির অনুভূতির জগৎ
(খ) বসন্তের দূত
(গ) একক ঋষিবালক
(ঘ) একটি গ্রামের মানুষ
উত্তব়: (ক)কবির অনুভূক্তি জগৎ
১৪. “গান বাঁধবে সহস্র উপায়ে”-সহস্র উপায়ে গান বাঁধবে-
(ক) চিল
(খ) শকুন
(গ) কোকিল
(ঘ) ঋষিবালক
উত্তব়: (গ) কোকিল
১৫. “গানের আজ পরেছি গায়ে”। –
(ক) বুলেট
(খ) পোশাক
(গ) পালক
(ঘ) বর্ম
উত্তব়: (ঘ) বর্ম
১৬. “আমি এখন হাতে পায়ে এগিয়ে আসি।”-:
(ক) চারটি
(খ) ন্যুব্জ
(গ) অজস্র
(ঘ) হাজার
উত্তব়: (ঘ) হাজার
১৭. “গান তো জানি ”
(ক) হাজার হাজার
(খ) সহস্রটা
(গ) একটা দুটো
(ঘ) কয়েকশো
উত্তব়: (গ) একটা দুটো
১৮. “আঁকড়ে ধরে -রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে”-
(ক) সে-বর্মটা
(খ) সে-খড়কুটো
(গ) নদী-দেশগাঁ
(ঘ) আদুড়-গা
উত্তব়: (খ) সে-খড়কুটো
১৯. কবি কীভাবে এগিয়ে আসেন?-
(ক) হাজার হাতে পায়ে
(খ) গান গেয়ে
(গ) দু হাত তুলে
(ঘ) মানুষের সাথে
উত্তব়: (ক) হাজার হাতে পায়ে
২০. হাত নাড়িয়ে কবি কী তাড়ান?
(ক) শত্রু
(খ) কান্না
(গ) ভয়
(ঘ) বুলেট
উত্তব়: (ঘ) বুলেট
২১. “গান তো জানি একটা দুটো”-সেই গানকে কার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
(ক) ইট-কাঠের
(খ) খড়কুটোর
(গ) পাথরের
(ঘ) সোনাব়
উত্তব়: (খ) খড়কুটোর
২২. কবি গায়ে কী পরেছেন?-
(ক) লোহার বর্ম
(খ) গানের বর্ম
(গ) রক্তমাখা জামা
(ঘ) শান্তির নামাবলি
উত্তব়:(খ) গানের বর্ম
২৩. কবি কোথায় রক্ত মোছেন?-
(ক) দেয়ালে
(খ) জামায়
(গ) শরীরে
(ঘ) গানের গায়ে
উত্তব়: (ঘ) গানের গায়ে
২৪. মাথার উপরে কবি কী দেখেছেন?-
(ক) নতুন সূর্য
(খ) শকুন-চিল
(গ) নক্ষত্র
(ঘ) নীল আকাশ
উত্তব়: (খ) শকুন-চিল
২৫. কবির শুধু কী আছে?-
(ক) একটা কোকিল
(খ) একটা মানুষ
(গ) একটা ঘর
(ঘ) একটা গাছ
উত্তব়: (ক) একটা কোকিল
২৬. ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় কোকিল কীভাবে গান বাঁধে?-
(ক) সহস্র উপায়ে
(খ) লাখো উপায়ে
(গ) একটি সুরে
(ঘ) লক্ষ সুরে
উত্তব়: (ক) সহস্র উপায়ে
2. Very Short Question Answer
১. ‘অস্ত্র রাখো’ বলার অর্থ কী?
উত্তব়: ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় ‘অস্ত্র রাখো’ কথাটি বলার মাধ্যমে কবি অস্ত্র সমর্পণের কথা বলেছেন।
২. কবি অস্ত্রকে কোথায় সমর্পণ করতে বলেছেন?
উত্তব়: কবি জয় গোস্বামী গানের পায়ের কাছে অস্ত্রকে সমর্পণ করতে বলেছেন।
৩. কবি গানকে কীভাবে ব্যবহার করেন?
উত্তব়: কবি সমস্ত অশান্তি ও অশুভ শক্তিকে পরাজিত করতে গানকে বর্মের মতো শরীরে পরে থাকেন।
৬.”আঁকড়ে ধরে সে-খড়কুটো”-কবি ‘খড়কুটো বলতে কি বুঝিয়েছেন?
উত্তব়: কবি ‘খড়কুটো’ বলতে তাঁর জানা একটা-দুটো গানের কথা বলেছেন।
৭. “মাথায় কত শকুন বা চিল”—শকুন এবং চিলেরা কীসের প্রতীক?
উত্তব়: ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় উল্লেখিত শকুন এবং চিলেব়া যুদ্ধবাজদের হিংস্রতা এবং নৃশংসতার প্রতীক।
৮. “আমার শুধু একটা কোকিল”-কোকিল কীসের প্রতীক?
উত্তব়: জয় গোস্বামী রচিত ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় কোকিল মানুষে অন্তর্গত সৃজনশীলতার প্রতীক।
৯. গানের গায়ে কবি কী করেন?
উত্তব়: গানের গায়ে কবি রক্ত ও যাবতীয় হিংস্রতা মোছেন।
3. Short Question Answer
1. হাজার হাতে পায়ে কবি কী করেন?
উত্তব়: হাজার হাতে পায়ে অর্থাৎ হাজার হাজার মানুষের সাথে দলবদ্ধ হয়ে কবি এগিয়ে আসেন, উঠে দাঁড়ান, লড়েন অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে।
2. গানের বর্ম পরিধান করে কবি কোন্ কাজ করতে সক্ষম? অথবা, “গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে”-গানের বর্ম পরিধান করে কবি কোন্ কাজ করতে পারেন?
উত্তব়: ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় কবি জানিয়েছেন যে, গানের বর্ম পরে তিনি হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াতে পারেন।
3. আমার শুধু একটা কোকিল”-কোকিলটি কী করে?
উত্তব়: বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে চারপাশের নৃশংসতা ও হিংস্রতার মধে কোকিলটি হাজার উপায়ে গান বাঁধে, শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেয়।
4. Long Question Answer
১ আমি এখন হাজাব় হাতে পায়ে/ এগিয়ে আসি, উঠে দাঁড়াই”-কে, ১+২
উত্তর ‘অস্ত্রের বিরদ্ধে গান’ কবিতায় শান্তিকামী, যুদ্ধবিরোধী সাধারণ মানুষের এগিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে।
▶ অস্ত্রের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী মানুষের প্রতিবাদের ভাষা। মানুষের মিলিত প্রতিরোধ যে-কোনো অস্ত্রকে আটকাতে পারে। যে মানুষেরা অস্ত্রের উপর নির্ভরশীল তাদের কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে, অস্ত্র
আসলে মানবতার বিরোধী। অস্ত্র নয়, মানুষের সঙ্গে মানুষের সুসম্পর্কই এই পৃথিবীর শেষ এরা। সেই সমাজত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের শক্তিতেই তিনি শক্তিশালী শেষ এগিয়ে আসেন।
২ “হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াই”-হাত নাড়িয়ে কবি কীভাবে বুলেট তাড়ান?
উত্তরঃ যুদ্ধবাজ মানুষের নেশা মানুষকে হত্যা করা, মানবিকতাকে ধ্বংস কবে ক্ষমতা দখল করা। কবি গানকে সম্বল করে সেই অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে মুখে দাঁড়াতে চান। গান মানুষের শুভচেতনার বিকাশ ঘটায়, সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে, বিভেদ ভুলিয়ে একতার মন্ত্রে দীক্ষিত করে। মিলিত শুভচেতনার কখনও পরাজয় হয় না। তাই কবি গানকে হাতিয়ার করে সহজেই হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়ান।
৩ “গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে”- কবির এই মন্তব্যের তাৎপর্য আলোচনা করো।
উত্তরঃ ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতার আলোচ্য অংশে বলা হয়েছে, অস্ত্রের ভয় আর পেশিশক্তির হুংকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বর্ম হয়ে উঠতে পারে মানুষের শুভবোধ এবং শুভচেতনা। যে-কোনো অশুভ প্রচেষ্টার প্রতিরোধের এই কাজে সংগীত একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। গানের মধ্য দিয়ে যেমন আনন্দ আর সুন্দরের বিকাশ ঘটে, মন শুদ্ধ হয়ে ওঠে, ঠিক সেরকমই গান হয়ে উঠতে পারে প্রতিবাদের বাহনও। তাই বুলেট অর্থাৎ যুদ্ধকে বাধা দিতে কবি গানকেই বর্মের মতো ব্যবহার করেন।
৪ “আঁকড়ে ধরে সে-খড়কুটো”-কবি কাকে ‘খড়কুটো’ বলেছেন? তাকে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছেন কেন?
উত্তরঃ অস্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গানকে কবি আঁকড়ে ধরতে চেয়েছেন। বিশ্বজুড়ে চলতে থাকা হিংসা ও হানাহানির বিরুদ্ধে কবির সম্বল মাত্র একটি- দুটি গান। এই স্বল্পতা বোঝাতেই কবি ‘খড়কুটো’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
▶ ডুবন্ত মানুষ কিছু আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়। যদি সেটা খড়কুটোও হয়, তবে তাকেই সে অবলম্বন ভেবে আঁকড়ে ধরে। কবিও মনে করেছেন, গানই হল হিংস্রতার এই পৃথিবীতে মানুষের চেতনা বদলানোর মাধ্যম। এই গান আদতে জীবনের গান। কবির কাছে মাত্র একটা-দুটো গান আছে, যাদের আঁকড়ে ধরেই বাঁচতে চান তিনি।
৫ “রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে”-এ কথার মধ্য দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: গানের মধ্য দিয়ে অস্ত্রের আতঙ্ককে মুছে ফেলতে চেয়েছেন কবি। যাবতীয় সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এবং হিংসা যে রক্তপাতের সৃষ্টি করে, তৈরি করে সভ্যতার সংকট, তা থেকে কবি মুক্তি খুঁজেছেন শুধু গানকে অবলম্বন করেই। তাই কবি যখন ‘গানের গায়ে’ রক্ত মোছার কথা বলেন, তখন আসলে সংগীতকে অবলম্বন করে বাস্তব জীবনের সব হিংসা এবং রক্তাক্ততাকে মুছে দিতে চান তিনি।
৬ “মাথায় কত শকুন বা চিল”-উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তর যুদ্ধবাজ আগ্রাসী মানুষদের কথা বলতে গিয়েই কবি আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন। কবি দেখেছেন, স্বার্থপর মানুষেরা যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলায় মেতে উঠেছে। মনুষ্যত্বকে ধ্বংস করে তারা নিজেদের ক্ষমতা ও স্বার্থকে প্রতিষ্ঠা করতে সবসময় উদ্যোগী। লোভী চিল-শকুনের মতো তারা সমাজের মাথার ওপরে ঘুরে বেড়ায়। এই শকুন বা চিলরূপী যুদ্ধবাজ শক্তিগুলির বিরুদ্ধেই কবি গানের অস্ত্র ধারণ করেছেন।
৭ “আমার শুধু একটা কোকিল” বক্তা কে? এ কথার মধ্যে দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর: উল্লিখিত অংশটির বক্তা ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতার কবি জয় গোস্বামী স্বয়ং।
▶ কবি তাঁর মাথার উপরে চিল শকুনের উড়ে চলা দেখেছেন। তার মধ্যে ‘একটা কোকিল’, যা আসলে কবির সৃজনশীল সত্তা, তা ধ্বংসের মধ্যে সৃষ্টির গান গাইতে পারে। ‘সহস্র উপায়ে’ তার গান, প্রেম বা প্রতিবাদ বা যে ধারাতেই তৈরি হোক না কেন, তা আসলে সুন্দরেরই প্রতিষ্ঠা ঘটায়।
৮ “গান বাঁধবে সহস্র উপায়ে”-কে গান বাঁধবে? সহস্র উপায়ে গান বাঁধার তাৎপর্য কী?
উত্তর: কবি বলেছেন, তাঁর শুধু একটা কোকিল আছে। এই কোকিলই গান বাঁধবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
▶ মধুর কণ্ঠের কোকিল সৌন্দর্যের প্রতীক। কোকিলের রূপক ব্যবহার করে কবি নিজের ভিতরের সৃজনশীল সত্তাকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। যে গানকে তিনি জীবনযুদ্ধের বর্ম করতে চেয়েছেন, নানান উপায়ে সেই গান বাঁধবে এই কোকিল। তা হতে পারে প্রেম অথবা প্রতিবাদ-যে-কোনো ধারাতেই। যাবতীয় অস্ত্রের হুংকারকে স্তব্ধ করে তা পৃথিবীতে শান্তির বার্তা নিয়ে আসবে।
9″আমি এখন হাজার হাতে পায়ে/এগিয়ে আসি, উঠে দাঁড়াই”- জার হাতে পায়ে’ এগিয়ে আসার তাৎপর্য কী? এখানে কবির যে মনোভাবেব় প্রকাশ ঘটেছে, তা আলোচনা করো। ৩+২
উওব়: ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় কবি জয় গোস্বামী অস্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়েব় জন্য সংগীতের ক্ষমতার কথা বলেছেন। রাষ্ট্র হোক কিংবা কোনো সন্ত্রাস-সৃষ্টিকারী শক্তি-মানুষের বিক্ষোভে, প্রতিবাদে গানই হয়ে উঠেছে তার বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। কবির কথায় গান শুধু আনন্দের উৎস নয়, লড়াই-সংগ্রামেও গান হয়ে উঠতে পারে ‘বর্ম’। এই ‘গানের বর্ম’ পরেই কবি বন্দুকের বিরুদ্ধে লড়াইতে নেমেছেন। বুলেটকে প্রতিহত করেছেন। আর সেই সংগ্রামেও কবি দেখেছেন তিনি একা নন, অসংখ্য মানুষ একই পথের পথিক। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম কিংবা পৃথিবীর বিভিন্ন গণ-আন্দোলনের ইতিহাস প্রমাণ করে যে, যুগে যুগে মানুষের প্রতিবাদের অস্ত্র হয়েছে গান। সকলের মিলিত কণ্ঠে প্রতিবাদের গান হয়ে উঠেছে অস্ত্রের থেকেও শক্তিশালী। গানের এই শক্তি এবং শুভবুদ্ধি-সম্পন্ন মানুষদের একত্রিত করার ক্ষমতার কথাই কবি বলেছেন।
▶ কবি জয় গোস্বামীর কাছে গান হল বেঁচে থাকার যে অন্তহীন লড়াই, তার অবলম্বন। ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় কবি উদ্যত বন্দুকের সামনে গানকে বর্ম এবং প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। গানই হয়ে উঠেছে মানুষে-মানুষে বেঁধে বেঁধে থাকার অন্যতম ভিত্তি। শিল্প-সাহিত্যকে অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে এখানে এক প্রতিরোধ হিসেবে দেখতে চেয়েছেন কবি।
10 “আমার শুধু একটা কোকিল/গান বাঁধবে সহস্র উপায়ে”-শুধু একটা কোকিল’ আসলে কী? এই গান বাঁধার প্রয়োজনীয়তা কী? ২+৩
উত্তর: জয় গোস্বামী তাঁর ‘অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান’ কবিতায় পৃথিবী জুড়ে চলতে থাকা হিংসা ও হানাহানির প্রতিবাদ করেছেন। মাথার ওপরে ‘শকুন’ এবং ‘চিল’ অর্থাৎ যুদ্ধবাজ শক্তিকে দেখেও ভরসা রেখেছেন নিজের শুভবোধে, যা সামাজিক বিশৃঙ্খলা, ধ্বংস এবং হত্যার উন্মাদনাকে করতে পারে। এই শুভবোধ এবং সৃজনশীল সত্তাকেই কবি ‘শুধু একাটা কোকিল’ বলে অভিহিত করেছেন।
▶ ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কবি সৃষ্টিকেই প্রতিরোধের একমাত্র উপায় করে তুলতে চেয়েছেন। সৃজনশীল সত্তারই আনন্দময় প্রকাশ হল সংগীত। এই সংগীতই তার অপূর্ব আবেশের মাধ্যমে মানুষকে পৃথিবীর যাবতীয় জ্বালা, যন্ত্রণা ভুলিয়ে দেয়, ভুলিয়ে দেয় সভ্যতার ওপরে নেমে আসা অস্ত্রের অভিশাপ। যেসব যুদ্ধপ্রিয় বন্দুকবাজরা পৃথিবীকে ধ্বংস করতে চায়, তাদের আগ্রাসী হিংসার ওপরে শান্তির এক প্রলেপ দিয়ে যায় সংগীত। তাই, গানকে কবি ব্যবহার করেছেন অস্ত্রের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেরে। ‘গানের বর্ম’ পরে কবি সহজেই বুলেটকে প্রতিহত করতে পারেন। এই গানই তাঁকে হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে যুক্ত করে। তাঁকে এগিয়ে খাওয়ার, উঠে দাঁড়ানোর শক্তি জোগায়। যাবতীয় রক্তাক্ততাকে ভুলে যোতে সাহায্য করে এই গান। এই কারণেই সহস্র উপায়ে গান বাঁধা প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।