WBBSE Class 6 Bangla Chapter 22 Solution | Sahityamela “সাহিত্যমেলা” Bengali Medium |

Class 6 Chapter 22 Solution

হাবুর বিপদ

MCQ

১.১ ‘হাবব বিপদ’ গুলটি লিখেছেন – (অজয় রায় / তপন ধর / অজেয় রায়)

উত্তরঃ অজয় রায়

১.২ লেখক অজেয় রায় আর কোন্ পরিচয়ে খ্যাতিমান ছিলেন? (আবৃত্তিকার / অভিনেতা / গীতিকার)।

উত্তরঃ অভিনেতা

১.৩ ‘হাবুর বিপদ’ গল্পে সুধীরবাবুর চেহারা কেমন ছিল? (খাটো / লম্বা / ভারিক্কি)।

উত্তরঃ ভারিক্কি

১.৪ ‘হাবুর বিপদ’ গল্পে সুধীরবাবুর চশমাটা কেমন ছিল? (মোটা ফ্রেমের / মোটা কাচের / সোনালি ফ্রেমের)।

উত্তরঃ মোটা কাচের

১.৫ ‘হাবুর বিপদ’ গল্পে হাবু কোন্ বেঞ্চে বসে? (শেষ বেঞ্চে / মাঝের বেঞ্চে / দ্বিতীয় বেঞ্চে)।

উত্তরঃ মাঝের বেঞ্চে

১.৬ “সুধীরবাবু আদেশ দিলেন।” -কাকে? (হাবুকে/ প্রফুল্লকে / হরিপদকে)।

উত্তরঃ প্রফুল্লকে

১.৭ “দে সরকারের রচনার বই থেকে হুবহু টুকে এনেছে।”-কোন্ রচনা টোকার কথা বলা হয়েছে? (বাংলার নদীনালা / বাংলার ঋতুবৈচিত্র্য / বাংলাদেশে বর্ষাকাল)।

উত্তরঃ বাংলাদেশে বর্ষাকাল

১.৮ স্কুলের নাম করা ফাঁকিবাজ (নিতাই / প্রশান্ত / হাবু)।

উত্তরঃ নিতাই

১.৯ “চাই নিজস্ব ভাব, ভাষা।” -কীসের জন্য? (আবৃত্তির জন্য / রচনার জন্য / নাটকের জন্য)।

উত্তরঃ রচনার জন্য

১.১০ “সুধীরবাবু তাড়া দেন।” -কীসের জন্য? (বাস ধরার জন্য / বিকেলে হাঁটার জন্য / রচনা পড়ার জন্য)।

উত্তরঃ রচনা পড়ার জন্য

১.১১ “সূর্যের তাপে মানুষজন পশুপাখি গাছপালা সবাই করতে থাকে।” -শূন্যস্থান পূরণ করো। (ছটফট / হাঁসফাঁস / হা-হুতাশ)।

উত্তরঃ হাঁসফাঁস

১.১২ “নাঃ, বকে বকেও হাতের লেখার উন্নতি করানো গেল না ছেলেটার।” ছেলেটি কে? (টুবলু / হাবু / ভজা)।

উত্তরঃ হাবু

১.১৩ “অনেক ফসল উঠবে ঘরে।”-উদ্ধৃতিটি কোন্ রচনা থেকে গৃহীত? (হাট / মরশুমের দিনে / হাবুর বিপদ)

উত্তরঃ হাবুর বিপদ

১.১৪ হাবু স্যারকে যে-খাতা দিয়েছিল (বীজগণিত / রচনা / ইংরেজি)।

উত্তরঃ বীজগণিত

১.১৫ কে মনে মনে জপছে, “হে ভগবান দয়া করো”। (তিনকড়ি / হাবু / নিতাই)।
উত্তরঃ হাবু

Very Short Question Answer

১. অজেয় রায়ের লেখা একটি জনপ্রিয় বইয়ের নাম লেখো। 

উত্তরঃ অজেয় রায়ের লেখা একটি জনপ্রিয় বইয়ের নাম ‘কেল্লাপাহাড়ের গুপ্তধন’।

২. তিনি কোন্ কোন্ পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন?

উত্তরঃ অজেয় রায় সন্দেশ, কিশোর ভারতী, শুকতারা পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন।

৩. প্রফুল্লর রচনা সুধীরবাবুর কেন পছন্দ হয়নি? 

উত্তরঃ প্রফুল্ল নিজের থেকে রচনা না-লিখে, দে-সরকারের বই থেকে হুবহু টুকে এনেছে বলে সুধীরবাবুর তা পছন্দ হয়নি। 

৪. নিতাই শাস্তি পেল কেন?

উত্তরঃ নিতাই রচনা লিখে আনতে না-পারার কারণ হিসেবে মায়ের অসুখের মিথ্যে অজুহাত দেখালে, সুধীরবাবু তা বুঝতে পেরে নিতাইকে শাস্তি দেন।

৫.সুধীরবাবু কোন্ অন্যায়কে ক্ষমা করেন না?

উত্তরঃ সুধীরবাবু ক্লাসের কাজে অবহেলাকে ক্ষমা করেন না।

৬. সুধীরবাবুর কপালের ভাঁজ কীসের চিহ্ন?

উত্তরঃ সুধীরবাবুর কপালের ভাঁজ অসন্তোষের চিহ্ন।

৭. হাবুর মনে কার চেহারা ভেসে উঠেছিল?

উত্তরঃ হাবুর মনে সুধীরবাবুর ভারিক্কি চেহারা ভেসে উঠেছিল। 

৮. হাবু কোথায় বসে পড়েছিল ক্লাসে?

উত্তরঃ হাবু থার্ড বেঞ্চের এক কোণে বসে পড়েছিল।

৯. সুধীরবাবু কীসের ক্লাস নেন?

উত্তরঃ সুধীরবাবু বাংলা রচনার ক্লাস নেন।

১০. সুধীরবাবুর পোশাক কী ছিল?

উত্তরঃ সুধীরবাবুর পোশাক ছিল ধুতি-পাঞ্জাবি এবং কাঁধে পাট করা সাদা চাদর।

১১. সুধীরবাবুকে কারা ভয় ও ভক্তি দুটোই করে?

উত্তরঃ সুধীরবাবুকে ছাত্ররা ভয় ও ভক্তি দুটোই করে। 

১২. অজেয় রায় কেমন ধরনের গল্প লেখায় দক্ষ ছিলেন?

উত্তরঃ অজেয় রায় শিশু-কিশোরদের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক ও দুঃসাহসিক অভিযানের গল্প লেখায় দক্ষ ছিলেন।

১৩. “অতঃপর অবধারিত মারাত্মক পরিণতির কথা ভেবে হাবু শিউরে ওঠে।” -‘অবধারিত মারাত্মক পরিণতি’টি কী? 

উত্তরঃ ‘অবধারিত মারাত্মক পরিণতি’টি হল, স্কুলে যদি হাবু না-যায়, তাহলে বাড়িতে তার বাবার হাতে তাকে প্রচণ্ড মার খেতে হবে।

১৪. “ওটার ওপর স্যারেদের চিরকাল কড়া নজর।”- ‘ওটা’ বলতে এখানে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ ‘ওটা’ বলতে এখানে হাবুর ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চের কথা বোঝানো হয়েছে।

১৫. হাবু লাস্ট বেঞ্চে না-বসে কোথায় বসেছিল?

উত্তরঃ হাবু লাস্ট বেঞ্চে না-বসে, থার্ড বেঞ্চের এক কোণে তিনকড়ির পাশে বসেছিল।

১৬.”বুকের মধ্যে কিন্তু তার হাপর পড়ছে।” -কার বুকের মধ্যে, কেন হাপর পড়ছে?

উত্তরঃ হাবুর বুকে হাপর পড়ছে, কারণ ক্লাসের চতুর্থ পিরিয়ডটি হল বাংলার কড়া শিক্ষক সুধীরবাবুর এবং তিনি আগের দিন সকলকে যে রচনা লিখতে দিয়েছিলেন, তা হাবু লিখে আনেনি।

১৭. সুধীরবাবু নিতাইয়ের মাকে আগের দিন কোথায় দেখেছেন?

উত্তরঃ সুধীরবাবু নিতাইয়ের মাকে আগের দিন গোঁসাই বাড়িতে কীর্তন শুনতে দেখেছেন।

১৮. হাবুর খাতার মলাটে চোখ বুলিয়ে সুধীরবাবু কী দেখেছিলেন?
উত্তরঃ হাবুর খাতার মলাটে চোখ বুলিয়ে সুধীরবাবু দেখেছিলেন খাতাটি ছিল বীজগণিতের খাতা।

Short Question Answer

১. “বই থেকে কপি করতে বলিনি”। – আলোচ্য অংশটি কার লেখা কোন্ গল্পের অংশ? এ কথা কে, কাকে বলেছিল?

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি অজেয় রায়ের লেখা ‘হাবুর বিপদ’ গল্পের অংশ। এ কথা সুধীরবাবু প্রফুল্লকে বলেছিল।

২. “প্রথমটা ভান করল যেন শুনতেই পায়নি।”- কে এমন ভান করেছিল? গল্পে তার সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?

উত্তরঃ ‘হাবুর বিপদ’ গল্পের এখানে নিতাই এমন ভাব করছিল। গল্পে নিতাই সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, নিতাই এখানে নামকরা ফাঁকিবাজ।

৩. “ও তোমায় বুঝি মায়ের সেবা করতে হয়েছে।”- এখানে কার মায়ের সেবার কথা বলা হয়েছে? তার মায়ের কী হয়েছিল?
উত্তরঃ এখানে নিতাই-এর মায়ের সেবার কথা বলা হয়েছে। সে বলেছিল, তার মায়ের জ্বর, সর্দিকাশি হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি।

Long Question Answer

১. স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে হাবুর কী মনে হচ্ছিল?

উত্তরঃ সুধীরবাবুর দেওয়া হোমটাস্ক করে না – আনার কারণে স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে হাবু দোটানার মধ্যে পড়ে যায়। সে ঠিক করতে পারে না-যে কী করবে! একবার ভাবে ফিরে যাবে; কিন্তু ফিরে গেলে অনুপস্থিতির কারণ দেখিয়ে বাবার সই করা চিঠি আনতে হবে। সেক্ষেত্রে পরিণতি হবে ভয়ানক। আবার সুধীরবাবুর রাশভারী চেহারা এবং তীক্ষ্ণ চাহনির কথা ভেবে হাবু স্কুলে ঢুকতে ভয় পায়। হাবু জানে, সুধীরবাবু তাকে ভালোবাসলেও পড়াশোনায় অবহেলা করা তিনি একদম ক্ষমা করেন না। তবুও শেষমেশ সে সিদ্ধান্ত নেয়-যা হওয়ার সুধীরবাবুর হাতেই হোক। তাই হাবু স্কুলেই প্রবেশ করে।

২. তার চোখে স্কুলের ভেতরের কোন্ ছবি ধরা পড়ে?

উত্তরঃ তার অর্থাৎ, হাবুর চোখে স্কুলের ভেতরে ছোটো ছোটো ছেলেদের চাঞ্চল্যের এক চিত্র ধরা পড়ে। গরমকালে সকালে স্কুল হওয়ায় সাতটার সময় স্কুল আরম্ভের ঘণ্টা পড়ে। সাতটা বাজতে তখনও কয়েক মিনিট বাকি। একতলা স্কুলবাড়ির প্রতিটি ঘরে ছেলেদের কলকাকলির ধ্বনি শোনা যাচ্ছিল। স্কুলের উঠোনে কিছু ছেলে খেলাধুলা করছিল। কিন্তু এই সমস্ত দৃশ্য ছাপিয়ে হাবুর চোখে ভেসে ওঠে সুধীরবাবুর রাশভারী চেহারা এবং তাঁর মোটা চশমা পরিহিত কাচের আড়ালে দুটি বৃহৎ চোখের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, যা তাকে রীতিমতো ঘাবড়ে দেয়।

৩. হাবু শেষের দিকের বেঞ্চে বসতে চায় না কেন? সে শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে বসে?

উত্তরঃ হাবু শেষের দিকের বেঞ্চে বসতে চায় না কারণ, ওই বেঞ্চটির ওপরে শিক্ষক মহাশয়দের সর্বদা কড়া নজর থাকে।

 হাবু ক্লাসের পড়া না-করে স্কুলে আসায় সেদিন সে সিদ্ধান্ত নেয় যে, মাঝামাঝি বেঞ্চে বসবে। কপালে থাকলে আর পাঁচজনের ভিড়ে মিশে হয়তো-বা সে এবারের মতো রেহাই পেয়ে যেতে পারে। তাই হাবু তৃতীয় বেঞ্চের এক কোণায় তিনকড়ির পাশে বসে পড়ে।

৪. “এইটাই সুধীরবাবুর মেথড”-সুধীরবাবুর মেথডটি কী? তাঁর এমন মেথড অবলম্বন করার যুক্তিটি কী?

উত্তরঃ ‘সুধীরবাবুর মেথড’ অর্থাৎ, শিক্ষণ পদ্ধতি হল-তিনি ক্লাসে ঢুকে চেয়ারে বসে ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করবেন, গতদিনে যে রচনা লিখতে দিয়েছিলেন তা সকলে তৈরি করে এনেছে কি না। এরপর সবাই সম্মতি জানালে তিনি বেছে বেছে কয়েকজনকে লেখা পড়তে বলেন এবং বাকিদের সেগুলি মন দিয়ে শুনতে বলেন। এটাই তাঁর মেথড।

 সুধীরবাবু এমন মেথড অবলম্বন করেন, কারণ তিনি চান একে অন্যের লেখা শুনে যেন শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষয় সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হয়। তিনি পরে সকলের খাতা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সংশোধন করে দেন। কিন্তু প্রত্যেকের লেখা যেহেতু প্রত্যেকে পড়ার সুযোগ পায় না, তাই অন্তত ক্লাসে কয়েকটি রচনা শুনলে শিক্ষার্থীরা নিজের লেখার মান সম্পর্কে অনেকটা ধারণা লাভ করতে পারবে। এই উদ্দেশ্যেই তিনি এই ধরনের মেথড প্রয়োগ করেন।

৫. রচনা পড়ার সময় প্রফুল্লকে সুধীরবাবু থামিয়ে দিলেন কেন? তাঁকে তিনি কোন্ পরামর্শ দিলেন?

উত্তরঃ সুধীরবাবুর হুকুমে প্রফুল্ল তার খাতা খুলে ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনাটি পড়তে শুরু করে। দু-পৃষ্ঠা শোনার পর সুধীরবাবু রেগে গিয়ে তাকে পড়া বন্ধ করতে বলেন। তিনি জানান, বই থেকে কপি করা রচনা তিনি শুনবেন না।

 সুধীরবাবু প্রফুল্লকে পরের দিন আবার রচনাটিকে নতুন করে লিখে আনতে বলেন। রচনাটি লেখার সময় সে যেন আরও একটা-দুটো বই অবশ্যই ঘাঁটাঘাঁটি করে সেই পরামর্শও দেন।

৬. “সুধীরবাবুর একটি মুদ্রাদোষ”-কী সেই ‘মুদ্রাদোষ’? কখনই বা এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল?

উত্তরঃ ‘মুদ্রাদোষ’ বলতে বোঝায়, কথা বলার বিশিষ্ট অভ্যাস বা আচরণভঙ্গি। সুধীরবাবুর মুদ্রাদোষ হল- তিনি কথা প্রসঙ্গে বারবার বলেন, ‘মনে থাকবে?’

 ক্লাসের একটি ছেলে নিতাই সুধীরবাবুর আদেশ অনুযায়ী রচনা লিখে না-এনে মায়ের শারীরিক অসুস্থতার মিথ্যা গল্প শোনায়। কিন্তু সুধীরবাবু সেটি বিশ্বাস করেননি। কারণ, তিনি আগের দিন গোঁসাইবাড়িতে নিতাইয়ের মাকে কীর্তন শুনতে দেখেছিলেন। তাই তিনি নিতাইয়ের ওপর খুব রেগে যান এবং তাকে ক্লাসে সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে বলেন। এমনকি টিফিনের সময়ও তাকে বাইরে বেরোতে নিষেধ করেন। পরের দিন তাকে রচনাটি লিখে আনার কথা বলতে গিয়ে তাঁর এই মুদ্রাদোষটি ফের প্রকাশ্যে আসে।

৭. “তবেই রচনায় প্রকৃত সাহিত্যিক মূল্য আসবে।”- সুধীরবাবুর মতে কীভাবে একটি রচনা সাহিত্যিক মূল্যে অনন্য হয়ে ওঠে?

উত্তরঃ সুধীরবাবুর মতে, একটি রচনায় তখনই প্রকৃত সাহিত্যিক মূল্য আসবে, যখন তার মধ্যে থাকবে মৌলিকত্ব। শুধুমাত্র পুথিগত বিদ্যার ওপর নির্ভর করে লিখলে চলবে না। রচনাটির মধ্যে নিজস্ব চিন্তাভাবনারও প্রকাশ ঘটানো প্রয়োজন হয়। ভাষাকে হতে হবে সহজসরল। নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাভিত্তিক ঘটনা সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখলেই, তা প্রকৃত সাহিত্যিক মূল্য পাবে- এটিই সুধীরবাবুর ধারণা।

৮. “শুনছিস? স্রেফ আবোল-তাবোল।”-হাবু ওরফে হাবুলচন্দ্রের রচনা পড়াকে প্রশান্তর ‘আবোল-তাবোল’ মনে হয়েছে কেন? তুমি কি এর সঙ্গে একমত?

উত্তরঃ হাবুর রচনা পড়াকে প্রশান্তর ‘আবোল-তাবোল’ মনে হয়েছিল। কারণ সেই রচনা হাবু কোনো সূত্রের ওপর ভিত্তি করে পড়ছিল না। তাই তার রচনাপাঠ প্রশান্তর কাছে ‘আবোল-তাবোল’ সংগতিহীন বলে মনে হয়েছিল।

 না, আমি প্রশান্তর বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই। ‘আবোল- তাবোল’ শব্দের অর্থ হল এলোমেলো বা খাপছাড়া। কিন্তু হাবুর পাঠ করা রচনাটি ছিল তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাভিত্তিক এবং বাস্তবসম্মত। আসলে প্রশান্ত কিংবা ক্লাসের অন্যান্য ছেলেরা বই থেকে রচনা টুকে বা মুখস্থ করে আনত। অন্যের ভাবনা কিংবা

ভাষা অনুকরণ করে লেখার মধ্যে স্বকীয়তা থাকে না, এমন লেখা কৃত্রিম ও জড়তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। প্রশান্ত এই ধরনের লেখা পড়ে অভ্যস্ত ছিল বলেই হাবুর নিজস্ব অভিজ্ঞতাভিত্তিক রচনাটি শুনে তার ‘আবোল-তাবোল’ বলে মনে হয়েছিল।

৯. “তাঁর কাছে রহস্য পরিষ্কার হয়ে গেল”- কোন্ রহস্যের কথা বলা হয়েছে? কীভাবে তার জট ছাড়ল?

উত্তরঃ হাবু ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ নামক রচনাটি আগাগোড়া খাতা দেখে পাঠ করেও সুধীরবাবুর কাছে তার খাতা পাঠাতে অস্বীকার করার ব্যাপারটিকে এখানে ‘রহস্য’ বলা হয়েছে।

সুধীরবাবু আদর্শ শিক্ষকের মতো ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শৃঙ্খলাবোধের জাগরণ ঘটাতে চাইতেন। তিনি চাইতেন ছাত্রছাত্রীরা যাতে সুন্দর হাতের লেখায় নির্দিষ্ট রচনার খাতাতেই রচনা লেখে। তাই তিনি সমস্ত খাতা সংশোধন করার জন্য বাড়িতে নিয়ে যেতেন। গল্পে সুধীরবাবুর নির্দেশে ক্লাসের মনিটর হরিপদ সকলের খাতা সংগ্রহ করছিল। একে একে সকলে খাতা দিতে থাকলেও হাবু তার খাতাটিকে দিতে চায়নি। হরিপদ সেটি সুধীরবাবুকে জানালে সুধীরবাবু অবাক হয়ে হাবুকে খাতা দিতে বলেন। অতঃপর তিনকড়ির সাহায্যে হরিপদ হাবুর খাতাটি নিয়ে সুধীরবাবুর কাছে দেয়। হাবুর খাতার মলাটে ‘বীজগণিত খাতা’ লেখা দেখে সুধীরবাবু মনে করেন, হাবুল যেহেতু রচনার খাতায় রচনা না-লিখে অন্য খাতায় লিখছে, তাই সে খাতা দিতে চাইছে না। আসলে এত সুন্দর রচনা পাঠ করার পরেও হাবু কেন খাতা দিতে চাইছে না, এ বিষয়ে সুধীরবাবুর সন্দেহ হচ্ছিল। খাতার মলাটটি দেখে তাঁর কাছে সেই রহস্য পরিষ্কার হয়ে যায়।

১০. “না, এতটা বাড়াবাড়ি করা ঠিক হবে না।”-কার মনে এমন চিন্তার উদয় হল? সত্যিই কি তোমার সেই চিন্তাকে বাড়াবাড়ি মনে হয়?

উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ভূত চিন্তাটির উদয় হয়েছিল শিক্ষক সুধীরবাবুর মনে।

 না, সুধীরবাবুর মনে উদ্ভূত হওয়া চিন্তাটিকে আমার বাড়াবাড়ি বলে মনে হয় না। কারণ, সুধীরবাবু চান মৌলিক এবং প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাভিত্তিক রচনা, যা হাবুর পাঠ করা রচনার মধ্যে ছিল। রচনাটি সুধীরবাবুর ভালোও লেগেছিল। তাই তিনি উৎসাহ দেওয়ার জন্য চেয়েছিলেন, হাবুর পিঠ চাপড়ে ‘সাবাস’ জানাতে। এর মধ্যে কোনো বাড়াবাড়ি থাকতে পারে না। তবে এর একটি বিরূপ দিক অবশ্যই আছে, যেটি অভিজ্ঞ শিক্ষক সুধীরবাবুর মনে হয়েছিল। রচনাটি হাবু না-লিখে এনে পুরোটাই বানিয়ে বলায় তাকে বাহবা জানালে পরবর্তীকালে সবাই না-লিখে এনে বানিয়ে বলার চেষ্টা করবে। তাতে ক্লাসের নিয়মশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। তবুও সুধীরবাবুর মনে জাগা চিন্তাটিকে আমার বাড়াবাড়ি বলে মনে হয় না। কারণ, এর ফলে হাবুর চিন্তা এবং কল্পনার মৌলিকত্ব যথাযোগ্য সমাদর লাভ করত।

১১. “তা সোজাসুজি স্বীকার করলেই পারতে”- সুধীরবাবু হাবুকে যে এ কথা বলেন, সেই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সুযোগ না থাকার জন্য তিনি নিজেই কতখানি দায়ী বলে তোমার মনে হয়?
উত্তরঃ সুধীরবাবু হাবুকে বলেছিলেন, তার অপরাধটিকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা না-করে সোজাসুজি স্বীকার করে নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু হাবু যে নিজের ত্রুটিস্বীকার করেনি, তার পিছনে শিক্ষক সুধীরবাবু নিজেই অনেকখানি দায়ী। প্রথমত, তাঁর রাশভারী চেহারা, গম্ভীর মুখ এবং মোটা কাচের চশমা পরিহিত দুটি বৃহৎ চোখের শানিত দৃষ্টি দেখলে অন্যান্য ছাত্রদের মতো হাবুও ভয় পেত, দ্বিতীয়ত, পড়াশোনায় অবহেলা তিনি সহ্য করার মতো লোক নন। সুতরাং, ছাত্ররা পড়া না-করে এসে সোজাসুজি সত্য স্বীকার করলে কেমন শাস্তি পেতে হয়, তা সকলেই বেশ ভালো-মতন জানত। তাই হাবুও সত্য কথাটি সোজাসুজি স্বীকার না-করে চেষ্টা করে যাচ্ছিল সুধীরবাবুর হাত থেকে রেহাই পেতে। সুতরাং, এ ঘটনার জন্য সুধীরবাবুর ব্যক্তিত্ব ও আচরণ অনেকটাই দায়ী।

১২. তিনকড়ি হাঁ করে হাবুর খাতার দিকে তাকিয়েছিল কেন?

উত্তরঃ হাবু সুধীরবাবুর দেওয়া রচনা লিখে আনেনি। তাই সে সুধীরবাবুর বকুনি বা প্রহারের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য বীজগণিতের খাতাটিকে সামনে ধরে ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনাটিকে নিজের মন থেকে বানিয়ে বানিয়ে বলে যাচ্ছিল। তিনকড়ি বসেছিল হাবুলের পাশে। সে জানত, হাবু রচনার খাতা আনেনি। সে বীজগণিতের খাতাটিকে সামনে ধরে রেখেছে মাত্র। তাই সে হাঁ করে হাবুর খাতার দিকে তাকিয়েছিল।

১৩. “ছেলেটা চর্চা রাখলে বড়ো হয়ে নির্ঘাত সাহিত্যিক হবে।”-ছেলেটি সম্পর্কে এ কথা বলার কারণ কী?

উত্তরঃ সুধীরবাবুর ভয়ে হাবু ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনাটি বাড়ি থেকে লিখে না-আনলেও, বীজগণিতের একটি খাতাকে সামনে ধরে শুধুমাত্র প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রচনাটির বর্ণনা দিতে থাকে। তার বর্ণনা এতটা জীবন্ত এবং প্রত্যক্ষগোচর ছিল যে, সুধীরবাবু বেশ খুশি মনে তা শুনছিলেন। সুধীরবাবুর মনে হয়েছিল, হাবু রচনাটি খুব সুন্দর লিখেছে। কোনো বইয়ের সাহায্যের ছাপ এতে নেই। পুরোটাই হাবুর নিজের অভিজ্ঞতাভিত্তিক এবং ভাষাগুলিও ছিল খুব সুন্দর ও সাবলীল। তাই সুধীরবাবু মনে মনে ভাবেন, চর্চা রাখলে হাবু অবশ্যই ভবিষ্যতে বড়ো হয়ে একজন সাহিত্যিক হবে।

১৪. “মাঝে মাঝে পাতা উলটিয়ে বলে চলে।”-পাতা ওলটানোর কারণ লেখো।

উত্তরঃ হাবু বাংলা রচনা ক্লাসে বীজগণিতের একটি খাতাকে সামনে ধরে সুন্দর ভাষায় ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনাটির বর্ণনা দিতে থাকে। সুধীরবাবু সকলকে রচনাটি বাড়ি থেকে খাতায় লিখে আনতে বলেছিলেন। তাই হাবু খাতায় লিখে না- আনলেও, মনে মনে বানিয়ে বেশ বাস্তবধর্মী বর্ণনা দিতে থাকে। আসলে হাবু খাতাটিকে সামনে ধরে সুধীরবাবুকে বোঝাতে চাইছিল যে, সে খাতাটি দেখে দেখে রচনাটি পাঠ করছে। ফলে সে কিছুক্ষণ পরপর যথারীতি খাতার পাতাও ওলটাচ্ছিল।

১৫. “বেমালুম ঠকাল আমাকে”-হাবুল কি সত্যিই মাস্টারমশাইকে ঠকিয়েছিল?

উত্তরঃ সুধীরবাবুর হুকুমে হাবু ক্লাসে ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ রচনাটির বর্ণনা দিচ্ছিল। রচনাটি বাড়ি থেকে লিখে এনে পাঠ করার কথা ছিল। হাবু তা বাড়ি থেকে লিখে আনেনি। তাই সে বাধ্য হয়ে একটি বীজগণিতের খাতাকে সামনে ধরে রচনাটির বর্ণনা দিতে থাকে। আসলে সে বোঝাতে চেয়েছিল যে, সে খাতা দেখেই রচনাটিকে পাঠ করছে। তার বর্ণনা ছিল অত্যন্ত জীবন্ত এবং সুন্দর। এই ঘটনায় আক্ষরিক অর্থে সে শিক্ষক মহাশয়কে ঠকিয়েছিল বলা যেতে পারে। কিন্তু মানবিক দৃষ্টিতে দেখলে বলা যায়, শিক্ষক মহাশয়কে ঠকানো তার উদ্দেশ্য ছিল না। শুধুমাত্র ভয় পেয়ে আত্মরক্ষার জন্যই সে এমন কাজ করেছিল এবং তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাভিত্তিক সেই বর্ণনা শিক্ষক মহাশয়কেও মুগ্ধ করেছিল। তাই শিক্ষক মহাশয় তার প্রশংসাও করেছিলেন।

১৬. হাবুলের রচনা শুনে সুধীরবাবুর হাবুলকে কী বলার ইচ্ছে হয়েছিল? শেষ পর্যন্ত সেই ইচ্ছে তিনি পূরণ করলেন না কেন?

উত্তরঃ ‘বাংলাদেশে বর্ষাকাল’ নামক দীর্ঘ রচনাটি হাবু এত সুন্দর ভাষা এবং প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে বর্ণনা করেছিল যে, সুধীরবাবু তা শুনে অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন। সুধীরবাবু অবাক হয়ে গিয়েছিলেন এই ভেবে যে, অতখানি রচনা শুধুমাত্র নিজের মন থেকে বানিয়ে বানিয়ে হাবু এত সুন্দর করে বর্ণনা দিয়ে গেল কীভাবে! তাঁর ইচ্ছে করছিল চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে হাবুর পিঠ চাপড়ে ‘শাবাশ’ বলে তাকে প্রশংসিত করে।

হাবুর বানিয়ে বানিয়ে বলা রচনাটি সুধীরবাবুর খুব ভালো লাগলেও তিনি বাইরে, সবার সামনে তা তেমনভাবে প্রকাশ করেননি। কারণ তিনি জানতেন, এর ফলে ক্লাসে নিয়মশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে। এরপর হাবুলের দেখাদেখি প্রত্যেকেই খাতায় লিখে না-এনে বানিয়ে বানিয়ে বলার চেষ্টা করবে। তাই সুধীরবাবু শেষ পর্যন্ত হাবুর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেননি।

নীচের বাক্যগুলি থেকে অনুসর্গ খুঁজে বের করো এবং নিম্নরেখ পদের বিভক্তি উল্লেখ করো:

৯.১ বাবার কাছ থেকে চিঠি আনতে হবে।

উত্তরঃ থেকে-অনুসর্গ, বাবার-‘র’ বিভক্তি।

৯.২ উঠোনে কিছু ছেলে খেলছে।

উত্তরঃ কিছু-অনুসর্গ, উঠোনে-‘এ’ বিভক্তি।

৯.৩ কয়েকজনকে বেছে বেছে পড়তে বলেন।

উত্তরঃ বেছে বেছে-অনুসর্গ, কয়েকজনকে ‘কে’ বিভক্তি।

৯.৪ দে-সরকারের রচনার বই থেকে হুবহু টুকে এনেছ। 
উত্তরঃ থেকে-অনুসর্গ, রচনার-‘র’ বিভক্তি।

ঠিক উত্তরে” চিহ্ন দাও:

৮.১ হরিপদর ডাকে সুধীরবাবু অবাক হন। (যৌগিক বাক্য সরলবাক্য)

উত্তরঃ সরলবাক্য (✔)

৮.২ গতকাল তোমার মাকে দেখেছি গোঁসাইবাড়িতে কীর্তন শুনছেন। (জটিল বাক্য/সরলবাক্য)

উত্তরঃ সরলবাক্য (✔)

৮.৩ ফের যদি রচনা আনতে ভুল হয়, তাহলে তোমার কপালে দুঃখ আছে। (সরলবাক্য/জটিল বাক্য)।
উত্তরঃ জটিল বাক্য (✔)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *