Class 6 Chapter 19 solution
শহিদ যতীন্দ্রনাথ দাশ
MCQs
১.১ যতীন দাশ জন্মগ্রহণ করেন (শিকদার বাগান / সরকার বাগান / বাগনান) অঞ্চলে।
উত্তরঃ শিকদার বাগান
১.২ তাঁরা ভাই-বোন সবমিলিয়ে (দশ / নয়/এগারো) জন।
উত্তরঃ দশ
১.৩ যতীন্দ্রনাথের দ্বিতীয় ছদ্মনাম (কালীবাবু / রবিন/ শচীন)।
উত্তরঃ কালীবাবু
১.৪ যতীন্দ্রনাথ দাশের একমাত্র বোন লাবণ্যপ্রভা দেবীর মৃত্যু হয় (১৯২৮ / ১৯২৯ / ১৯২৭) খ্রিস্টাব্দে।
উত্তরঃ ১৯২৮
১.৫ (পাঞ্জাব / গুজরাট / মহারাষ্ট্র)-এর প্রখ্যাত বিপ্লবী ভগৎ সিং।
উত্তরঃ পাঞ্জাব
১.৬ ‘Indian Struggle’ বইটি লিখেছেন (সুভাষচন্দ্র/যতীন দাশ / জওহরলাল নেহরু)।
উত্তরঃ সুভাষচন্দ্র
১.৭ ভগৎ সিং হত্যা করেন – (মি স্যান্ডার্সকে / মি স্কটকে/ মি প্যাট্রিককে)।
উত্তরঃ মি স্যান্ডার্সকে
১.৮ যতীন দাশ অনশন করেন (৬৩ দিন / ৫৩ দিন/৫০ দিন)।
উত্তরঃ ৬৩ দিন
Very Short Question Answer
১. আশিসকুমার মুখোপাধ্যায় কোন্ খেলার ধারাভাষ্যকার ছিলেন?
উত্তরঃ আশিসকুমার মুখোপাধ্যায় ফুটবল খেলার ধারাভাষ্যকার ছিলেন।
২. তাঁর লেখা একটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ আশিসকুমার মুখোপাধ্যায়ের লেখা একটি বইয়ের নাম হল ‘ইতিহাসের পাতা থেকে’।
৩. যতীন দাশ কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন?
উত্তরঃ যতীন দাশ উত্তর কলকাতার শিকদারবাগান অঞ্চলে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
৪. যতীন দাশের পিতার নাম কী ছিল?
উত্তরঃ যতীন দাশের পিতার নাম ছিল বঙ্কিমবিহারী দাশ।
৫. যতীন দাশের পিতা কোথায় চাকরি করতেন?
উত্তরঃ যতীন দাশের পিতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে চাকরি করতেন।
৬. যতীন দাশের ছদ্মনাম কী ছিল?
উত্তরঃ বিপ্লবী দলে যোগ দেওয়ার পর প্রথমদিকে যতীন দাশের ছদ্মনাম ছিল ‘রবিন’ এবং কিছুদিন পর তাঁর দ্বিতীয় ছদ্মনাম হয় -‘কালীবাবু’।
৭. ‘হিন্দ নওজোয়ান সভা’ কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তরঃ ‘হিন্দ নওজোয়ান সভা’ ভগৎ সিং প্রতিষ্ঠা করেন।
৮. মি. প্যাট্রি কে ছিলেন?
উত্তরঃ তদানীন্তন ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ছিলেন মি. প্যাট্রি।
৯. লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের কোন্ জেলে বদলি করা হয়?
উত্তরঃ লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার আসামিদের লাহোর সেন্ট্রাল জেলে বদলি করা হয়।
১০ কারা যতীনের জামিনের প্রস্তাব ঘৃণাভরে অগ্রাহ্য করেন?
উত্তরঃ যতীনের পিতা বঙ্কিমবিহারী দাশ ও ছোটোভাই কিরণচন্দ্র ঘৃণা ভরে যতীনের জামিনের প্রস্তাব অগ্রাহ্য করেন।
১১. তাঁরা সব মিলিয়ে দশ ভাই বোন ছিলেন।
উত্তরঃ দশ-সংখ্যাবাচক শব্দ
১২. যতীন ভবানীপুরের মিত্র ইন্সটিটিউশন থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
উত্তরঃ প্রথম-পূরণবাচক শব্দ
১৩. বিচারে তাঁর ছয় মাসের জেল হয়।
উত্তরঃ ছয়-সংখ্যাবাচক শব্দ
১৪. তাঁর দ্বিতীয় ছদ্মনাম হয় ‘কালীবাবু’।
উত্তরঃ দ্বিতীয়-পূরণবাচক শব্দ
১৫. “… তোমার মতো মহান বিপ্লবীর জন্যও একটা কাজ আমায় অবশ্যই করতে হবে”-কে, কাকে এ কথা বলেছিলেন?
উত্তরঃ আলোচ্য কথাটি অমর বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ দাশ, ভগৎ সিংহকে বলেছিলেন।
১৬. কত খ্রিস্টাব্দের, কত তারিখে যতীন দাশের জন্ম হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দের ২৭ অক্টোবর যতীন দাশের জন্ম হয়েছিল।
১৭.যতীন দাশের পিতামহের নাম কী?
উত্তরঃ যতীন দাশের পিতামহের নাম মহেন্দ্রনাথ দাশ।
১৮. কত খ্রিস্টাব্দে কোন্ বিদ্যালয় থেকে যতীন দাশ প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন?
উত্তরঃ ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ভবানীপুরের মিত্র ইন্সটিটিউশন থেকে যতীন দাশ প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
১৯. তিনি কোন্ কলেজে ভরতি হন?
উত্তরঃ তিনি ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গবাসী কলেজে বিএ তৃতীয় বর্ষে-এ ভরতি হন।
২০.দেবেনবাবু কার সঙ্গে যতীন দাশের ঘনিষ্ঠতা করে দেন?
উত্তরঃ দেবেনবাবু শচীন সান্যালের সঙ্গে যতীন দাশের ঘনিষ্ঠতা করে দেন।
২১.যতীন দাশের একমাত্র ভগিনীর নাম কী?
উত্তরঃ যতীন দাশের একমাত্র ভগিনীর নাম লাবণ্যপ্রভা দেবী।
২২.পাঠ্যাংশে উল্লিখিত সুভাষচন্দ্রের লেখা বইয়ের নাম কী?
উত্তরঃ পাঠ্যাংশে উল্লিখিত সুভাষচন্দ্রের লেখা বইয়ের নাম ‘Indian Struggle’।
২৩. ববহবুবহ যতীন দাশ কবে থেকে অনশন শুরু করেন?
উত্তরঃ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ জুলাই থেকে যতীন দাশ অনশন শুরু করেন।
২৪. বিপ্লবী যতীন দাশের শবযাত্রায় কত মানুষ শামিল হয়েছিলেন?
উত্তরঃ বিপ্লবী যতীন দাশের শবযাত্রায় সরকারি হিসাবে প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ শামিল হয়েছিলেন।
২৫.শহিদ কাদের বলে?
উত্তরঃ নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে ন্যায় বা সত্যের জন্য, দেশের জন্য, বা বৃহত্তর স্বার্থের জন্য যাঁরা প্রাণদান করেন, তাঁদের শহিদ বলে।
২৬. দেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির জন্য শহিদ হয়েছেন এমন দু-জন ব্যক্তির নাম লেখো।
উত্তরঃ দেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির জন্য শহীদ হয়েছেন এমন দু-জন বিখ্যাত ব্যক্তি হলেন- ক্ষুদিরাম বসু এবং যতীন্দ্রনাথ দাশ।
২৭. ‘অনশন’ বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ ‘অনশন’ বলতে বোঝানো হয় কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ স্বরূপ নির্জলা উপবাস।
২৮. ‘লেবু’ ও ‘হাতা’ শব্দ দুটির আগে উপসর্গ যোগ করে নতুন শব্দ গঠন করে বাক্যরচনা করো।
উত্তরঃ লেবু = (পাতিলেবু) – পাতিলেবুর শরবৎ খেতে ভালো লাগে। হাতা = (ফুলহাতা) – শীতের সময় ফুলহাতা জামা পরা উচিত।
২৯.যতীন দাশ কার কাছ থেকে বোমা বানানোর শিক্ষা লাভ করেছিলেন?
উত্তরঃ যতীন দাশ বিপ্লবী শচীন সান্যাল-এর কাছ থেকে বোমা বানানোর শিক্ষা লাভ করেছিলেন।
Short Question Answer
১. কিরণ দাশকে লাহোর সেন্ট্রাল জেলে আনা হয়েছিল কেন?
উত্তরঃ একটানা কয়েকদিন অনশন করার ফলে যতীন দাশ ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে একসময়ে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তাঁর এই সংকটজনক অবস্থা উপলব্ধি করে স্বয়ং বড়োলাট লর্ড আরউইন তাঁর বিশেষ ক্ষমতাবলে যতীন দাশকে দেখাশোনা করার জন্যই তাঁর ভাই কিরণ দাশকে লাহোর সেন্ট্রাল জেলে আনানোর ব্যবস্থা করেন।
২. যতীন দাশের সহযোদ্ধারা পথ অবরোধ করে শুয়েছিলেন কেন?
উত্তরঃ যতীন দাশের সহযোদ্ধারা তাঁর সেলের চারপাশে ব্যারিকেড রচনা করে পথ অবরোধ করে শুয়েছিলেন, যাতে ডাক্তার ও জেল-সুপার যতীনের দেহকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে কোথাও নিয়ে না-যেতে পারে।
৩. বিপ্লবী যতীন দাশের মৃত্যুর খবর শোনামাত্র ক্ষোভে- দুঃখে কোন্ কবি রাত্রি জেগে কবিতা লিখেছিলেন?
উত্তরঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যতীন দাশের মৃত্যুর খবর শুনেই ক্ষোভে-দুঃখে মর্মাহত হয়ে রাত্রি জেগে কবিতা লিখেছিলেন।
৪. “ওই দিনই উনি শপথ নেন সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দেবেন।” কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে? ‘উনি’ কে?
উত্তরঃ ওই দিন বলতে ১৯০১ খ্রিস্টাব্দের দশহরার দিনটির কথা বলা হয়েছে।
‘উনি’ হলেন যতীন্দ্রনাথ দাশের বাবা বঙ্কিমবিহারী দাশ।
৫. “ওই দিনই উনি শপথ নেন সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দেবেন।” -‘উনি’ কে? তিনি কী চাকরি করতেন?
উত্তরঃ উনি হলেন যতীন্দ্রনাথ দাশের পিতা বঙ্কিমবিহারী দাশ।
তিনি কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে চাকরি করতেন।
৬. “বিচারে তাঁর ছয় মাসের জেল হয়।” তাঁর কেন জেল হয়?
উত্তরঃ ১৯১৯-১৯২০ খ্রিস্টাব্দে ১৫-১৬ বছর বয়সে যতীন দাশ বিলাতি কাপড়ের দোকানে পিকেটিং করতে গিয়ে ইংরেজদের হাতে ধরা পড়ে যান।
৭. ছয় মাস জেলে থাকাকালীন যতীন্দ্রনাথ দাশের অবস্থা কেমন হয়?
উত্তরঃ ছয় মাস জেলে থাকার সময় যতীন দাশকে জেলের অখাদ্য- কুখাদ্য খাবার খেতে দেওয়া হত। ফলে তাঁকে কঠিন আমাশয় রোগের দ্বারা আক্রান্ত হতে হয়।
৮. দক্ষিণেশ্বরের বাচস্পতিপাড়ায় বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ দাশ কী করতেন?
উত্তরঃ দক্ষিণেশ্বরের বাচস্পতিপাড়ায় বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ দাশ অন্যান্য দেশপ্রেমীদের বোমা তৈরির উন্নত প্রণালী শেখাতেন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যান্য বেশ কিছু বিষয়েও ট্রেনিং দিতেন।
৯. কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশনে কী ঘটেছিল?
উত্তরঃ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ৮ এপ্রিল দিল্লিতে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশনে সভ্যদের আসনের পাশেই হঠাৎ একটি শক্তিশালী বোমা ফাটিয়েছিলেন বিপ্লবী ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত।
Long Question Answer
১০.যতীন দাশের পিতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের স্থায়ী চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছিলেন কেন? এর ফল কী হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে দশহরার দিনে যতীন দাশের পিতা বঙ্কিমহিারী দাশ সপরিবারে গঙ্গাস্নান করে একটি ফিটন গাড়িতে চড়ে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন। তখন পথে কয়েকজন ব্রিটিশ টমি তাদের জোর করে সেই গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে নিজেরা ওই গাড়িটি নিয়ে চলে যায়। ফলে, বঙ্কিমবাবুকে তাঁর ছেলেমেয়েদের নিয়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয়। ওই দিনই তিনি শপথ করেন সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দেবেন। মূলত ইংরেজদের গোলামি করবেন না-বলেই তিনি চাকরিতে ইস্তফা দেন।
চাকরিতে ইস্তফা দেওয়ার পরে একটি স্টেশনারি দোকান খুলে সেই রোজগারের ওপর ভিত্তি করে সংসার চালাতে গিয়ে আজীবন দারিদ্র্য ও দুঃখের সঙ্গে তিনি লড়াই করে গিয়েছেন।
১১. ১৪ জুন ১৯২৯ যতীন দাশকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়?
উত্তরঃ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ৮ এপ্রিল, দিল্লিতে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার অধিবেশনে সভ্যদের আসনের পাশেই হঠাৎ একটি শক্তিশালী বোমা ফাটান বিপ্লবী ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত। বিচারে তাঁদের দুজনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। কিন্তু এই ঘটনার পিছনে ভারতব্যাপী যে এক বিশাল পরিকল্পনা আছে তা সন্দেহ করেই তদানীন্তন ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মি. প্যাট্রি নিজে পুনরায় তদন্ত শুরু করেন। এর ফলে তিরিশটি নামের একটি তালিকা তৈরি হয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন যতীন দাশ। তাই দেরি না-করে লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আসামি হিসেবে কলকাতার প্রকাশ্য রাজপথ থেকে ১৪ জুন ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে গ্রেফতার করা হয় বিপ্লবী যতীন দাশকে।
১২. ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ জুলাই অনশন শুরু হয় কেন?
উত্তরঃ লাহোর সেন্ট্রাল জেলে যতীন দাশ-সহ তাঁর পনেরো জন সহযোদ্ধার ওপর অমানুষিক পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে তাঁরা ১৩ জুলাই ১৯২৯ সকলে সমবেতভাবে অনশন শুরু করেন।
১৩.অনশন করার আগে যতীন তাঁর সহযোদ্ধাদের কী অঙ্গীকার করান? তিনি অনশন ভঙ্গ করবেন না-কেন?
উত্তরঃ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ জুলাই, অমানুষিক পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে অনশন শুরু করার দু-একদিন আগে যতীন দাশ তাঁর সহযোদ্ধাদের দিয়ে অঙ্গীকার করিয়ে নেন যে, তাঁদের যে দাবিগুলি আছে, সেগুলির যথাযথ মীমাংসা হয়ে গেলে তাঁরা অবশ্যই অনশন ভঙ্গ করবেন।
যতীন দাশ তাঁর সহযোদ্ধাদের জানিয়ে দেন, তিনি অনশন ভঙ্গ করবেন না। কারণ, তাঁর পক্ষে এই অনশনই হবে মাতৃভূমির শৃঙ্খল মোচনের এক অভাবনীয় সুযোগ। ছেলেবেলা থেকেই তিনি একটি স্বপ্ন লালনপালন করে আসছেন মনে মনে। তা হল- পলাশির প্রান্তরে মিরজাফরকৃত বিশ্বাসঘাতকতার প্রায়শ্চিত্ত করা। এটাই ছিল তাঁর সেই সুযোগ। এ ব্যাপারে তিনি তাঁর পিতার অনুমতি আগেই নিয়ে রেখেছিলেন।
১৪. জেলে অনশনের সময় যতীন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন কেন?
উত্তরঃ জেলে অনশনরত অবস্থায় নিরুপদ্রবে সাতদিন কেটে যাওয়ার পর, অষ্টম দিনের দিন ভোরবেলা জেল-সুপার, জেল- ডাক্তার ও আটজন মোটা-সোটা পাঠানকে সঙ্গে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লে সেই সুযোগে ডাক্তার হঠাৎ করে অভুক্ত দুর্বল যতীন দাশকে জোর করে ধরে-বেঁধে নাকে নল ঢুকিয়ে দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। অন্য কোনো উপায় না-দেখে যতীন দাশ ইচ্ছাকৃতভাবে জোরে জোরে কাশতে থাকেন। এর ফলে ওই নলটির মুখ খাদ্যনালি থেকে সরে গিয়ে শ্বাসনালির মধ্যে ঢুকে যায় এবং কিছুটা দুধ তাঁর ফুসফুসে ঢুকে যাওয়ায় যতীন দাশ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, টানা আটচল্লিশ ঘণ্টা অজ্ঞান অবস্থায় থাকেন।
১৫. হাড় জেলে যতীন দাশের পাশে স্লেট পেনসিল রাখা হয়েছিল কেন?
উত্তরঃ জেলে যতীন্দ্রনাথ দাশকে জোর করে দুধ খাওয়াতে গেলে ফুসফুসে দুধ ঢুকে গিয়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। আটচল্লিশ ঘণ্টা পর তাঁর জ্ঞান ফিরলে তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর গলা দিয়ে আর আওয়াজ বেরোচ্ছে না। এ ছাড়াও, যতীন দাশ লক্ষ্য করেন, তাঁর পাশে রাখা আছে, একটি স্লেট ও একটি পেনসিল। তাঁর বুঝতে বাকি থাকে না যে, জীবনে আর কোনোদিন তিনি কথা বলতে পারবেন না। এরপর যতীন দাশ যাতে তাঁর মনের ভাব, ইচ্ছা- অনিচ্ছা অন্যকে জানাতে পারেন, তার জন্য তাঁর পাশে স্লেট ও পেনসিল রাখা হয়েছিল।
১৬. যতীন দাশের মতো ভারতের অন্য কোনো স্বাধীনতা সংগ্রামীর জীবনকথা জানা থাকলে খাতায় লেখো।
উত্তরঃ দেশপ্রেমের যদি কোনো সার্থক নাম থাকে, সেই নাম হল- নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি ওড়িশার কটক শহরে। পড়াশোনায় তিনি ছোটো থেকেই ছিলেন খুব মেধাবী ছাত্র। স্বদেশপ্রেম ও পরাধীনতার জ্বালা সুভাষের মনে এতটাই তীব্র ছিল যে, তিনি দেশের সেরা চাকরি হাতের মুঠোয় পেয়েও ইংরেজদের গোলামি করবেন না-বলে চাকরি করেননি। জ্বলন্ত একটি গোলার মতো তিনি ইংরেজ শাসকদের ভীতির অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছিলেন। প্রতিটি আন্দোলনের অগ্রভাগেই তাঁকে দেখা গিয়েছিল। স্বদেশী আন্দোলন থেকে ইংরেজ ভারত ছাড়ো আন্দোলনের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত তিনি সর্বশক্তি দিয়ে নেতৃত্ব দিতে থাকেন। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র ছদ্মবেশে, গোপনে এলগিন রোডের বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। ইতিহাসে এ ধরনের নাটকীয় ঘটনা আজও বিরল। জার্মানি, জাপান, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি দেশে গিয়ে সেখান থেকে শক্তি সঞ্চয় করে তিনি ভারতের স্বাধীনতার জন্য ইংরেজ-বিরোধী লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তৈরি করেন ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি’। যদিও, ভারতবর্ষের স্বাধীনতা লাভ তিনি দেখে যেতে পারেননি। তাঁর মৃত্যু ও অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে নানা মতভেদ আছে।
১৭. যতীন দাশের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাংলার এক বিশিষ্ট কবি তাঁকে নিয়ে কবিতা লিখেছিলেন। সেই কবির পরিচয় লিখে তাঁর অন্য কোনো কবিতা তোমার ভালো লাগে কিনা এবং কেন ভালো লাগে সে সম্পর্কে লেখো।
উত্তরঃ যতীন দাশের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাংলার বিশিষ্ট কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে নিয়ে একটি কবিতা লিখেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাতা সারদা দেবী। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় অবাধে বিচরণ করেছেন।
আমাদের জীবন এবং প্রকৃতির সমস্ত কথাই যেন রবীন্দ্রনাথের কবিতার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর কবিতার মধ্যে আমরা আমাদের জীবনকে যেন খুব আপন ভাবে খুঁজে পাই।
যতীন দাশের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে নিয়ে একটি কবিতা লিখেছিলেন। কবিতাটি হল ‘সর্ব খর্ব তারে দহে …’। কবিতাটি পরবর্তীকালে গান হিসেবে তপতী নাটকের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা অন্য যে-কবিতাটি আমার ভালো লাগে সেটি হল, ‘শিশু’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত একটি কবিতা ‘বিচিত্র সাধ’। এই কবিতার শিশুটির আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে আমার নিজের ইচ্ছাগুলি যেন হুবহু মিলে যায়। তাই এই কবিতাটি এত বেশি করে আমার মনকে আকৃষ্ট করে। এই কবিতায় দেখা যায়, শিশুটি রোজ নিয়ম করে পাঠশালায় গেলেও তার মন পড়ে থাকে হাঁক পেড়ে যাওয়া ফেরিওয়ালার কাছে। চিনে পুতুল ও চুড়ি ফেরি করার জন্য সেই ফেরিওয়ালা নিজের ইচ্ছামতো যখন খুশি বিভিন্ন লোকের বাড়িতে যেতে পারে। সময় নিয়ে তার যেন কোনো ভূক্ষেপ নেই। আমারও ইচ্ছে করে, ফেরিওয়ালার মতো নতুন নতুন জায়গায় স্বাধীনভাবে যেন ঘুরে বেড়াতে পারি, নানারকম লোকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারি। শিশুটির মতো আমারও তাই “ইচ্ছে করে সেলেট ফেলে দিয়ে / অমনি করে বেড়াই নিয়ে ফেরি।” আমার মনের ইচ্ছের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় কবিতাটি আমার বেশ ভালো লাগে।
Fil in the blanks
২.১ পিতামহ জাতীয় কংগ্রেসের চরমপন্থী দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।
উত্তরঃ মহেন্দ্রনাথ দাশ।
২.২ দিনে বঙ্কিমবাবু সপরিবারে গঙ্গাস্নান করে একটা ফিটন গাড়িতে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন।
উত্তরঃ দশহরার দিনে।
২.৩ যতীন দাশ -এর অবৈতনিক শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে।
উত্তরঃ সাউথ ক্যালকাটা ন্যাশনাল স্কুল।
২.৪ ভগৎ সিং পাঞ্জাবে নামে একটি বিপ্লবী দল প্রতিষ্ঠা করেন।
উত্তরঃ হিন্দ নওজোয়ান সভা।
২.৫ সরকারি হিসেবেই মানুষ হাওড়া থেকে কেওড়াতলা পর্যন্ত শবানুগমন করেছিলেন।
উত্তরঃ পাঁচ লক্ষ।
সন্ধি বিচ্ছেদ করো:
পর্যন্ত, কিন্তু, প্রত্যক্ষ, সিদ্ধান্ত, যতীন্দ্র, ব্যগ্র।
উত্তরঃ পর্যন্ত = পরি + অন্ত। কিন্তু = কিম্ + তু।
প্রত্যক্ষ = প্রতি + অক্ষ। সিদ্ধান্ত সিদ্ধ + অন্ত।
যতীন্দ্র = যতি + ইন্দ্র। ব্যগ্র বি অগ্র।