WBBSE Class 6 Bangla Chapter 19 Solution | Class 6 Sahityamela “সাহিত্যমেলা” Bengali Medium

Class 6

মোরা দুই সহোদর ভাই


Very Question Answer

Short Question Answer

২.১ “এক বৃন্তে দুটি কুসুম”-এর অর্থ কী?

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটির অর্থ হল একটি বোঁটায় ‘দুটি ফুল’, তবে কবি এখানে ভারতে অবস্থিত হিন্দু ও মুসলমান দুটি সম্প্রদায়কে দুটি ফুল বলে গণ্য করেছেন।

২.২ “সৃষ্টি যাঁর মুসলিম রে ভাই হিন্দু সৃষ্টি তাঁরই”- কবি এখানে কার কথা বলেছেন?

উত্তরঃ কবি এখানে ‘যাঁর’ আর ‘তাঁর’-এর মাধ্যমে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কথা বলেছেন, যাঁকে আমরা কেউ দেখতে পাই না, তাঁর কোনো কথাও শুনতে পাই না, শুধু এটুকু বুঝতে পারি যে, আমাদের সৃষ্টির পিছনে কেউ আছেন।

২.৩ “মোরা বিবাদ করে খোদার উপর করি যে খোদকারি।” -এখানে কবি কী বলতে চেয়েছেন?

উত্তরঃ কবি বলতে চেয়েছেন খোদা বা ঈশ্বর শুধু ‘মানুষ’ সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু আমরা নিজেরা ঝগড়া বা বিবাদ করে মানুষকে নানা জাতি ও সম্প্রদায় ইত্যাদি ভাগে ভাগ করেছি।

২.৪ “দুই জাতি ভাই সমান মরে মড়ক এলে দেশে”- এর মধ্য দিয়ে বক্তা কী ইঙ্গিত করেছেন?

উত্তরঃ বক্তা এর মধ্যে দিয়ে বলেছেন, দেশে মড়ক বা মারণরোগ দেখা দিলে, তার প্রভাব থেকে হিন্দু-মুসলমান কেউই বাদ যায় না। অর্থাৎ, মৃত্যু কখনও জাতিধর্মবর্ণ বিচার করে আসে না।

২.৫ “সব জাতিরই সকলকে তাঁর দান যে সমান করে” -‘তাঁর দান’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ ‘তাঁর দান’ বলতে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দানকে বোঝায়। তিনি সারা পৃথিবীতে মানুষের বা জীবের জন্য ফুল-ফল, খাদ্য- পানীয়, জল-আলো-বাতাস যা দিয়ে থাকেন, তা তিনি হিন্দু- মুসলমান বাছবিচার করে দান করেন না। তিনি তা সকলকেই সমানভাবে দিয়ে থাকেন।

২.৬ “বাইরে শুধু রঙের তফাত ভিতরে ভেদ নাই” – এখানে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তরঃ কবি এখানে মানুষের গায়ের রঙের ভিন্নতা এবং দেহের ভিতরে একই রঙের রক্তের কথা বলেছেন। অর্থাৎ, আমরা সবাই বাইরে থেকে আলাদা হলেও ভিতরে সকলেই এক।

Long Question Answer

৩.১ “এক বৃন্তে দুটি কুসুম এক ভারতে ঠাঁই”-পঙ্ক্তিটিতে প্রদত্ত উপমাটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ  ‘এক বৃন্তে দুটি কুসুম’ কথার অর্থ হল একই বোঁটায় ফুটে ওঠা দুটি ফুল। কবিতায় এই দুটি ফুল হল হিন্দু ও মুসলমান ধর্মাবলম্বী ভারতবাসী। কারণ, এরা সবাই ভারতবর্ষ নামক বৃত্ত-রূপ রাষ্ট্রে অবস্থান করে। ভারতীয়ত্বের বোধ এদেরকে পারস্পরিক বন্ধুত্বের আবহে অক্ষুণ্ণ রাখে। মনুষ্যত্ববোধে উদ্বুদ্ধ কবি কাজী নজরুল ইসলামও মানুষের মধ্যেকার ধর্মকেন্দ্রিক এই ক্ষুদ্র বিভাজনকে স্বীকার করেন না। বরং, তিনি ভারতীয়ত্ব ও মানবধর্মকে মেনে নেন। আর এ কারণেই কবি ভারতবাসী হিসেবে হিন্দু-মুসলমানকে ভারতবর্ষরূপ বৃন্তে ফুটে ওঠা দুটি ফুলের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

৩.২ “সব জাতিরই সকলকে তাঁর দান যে সমান করে”-কার, কোন্ দানের কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তরঃ আলোচ্য পঙ্ক্তিটিতে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের দানের কথা বলা হয়েছে। পৃথিবীর সর্বজাতি, সর্বশ্রেণির মানুষ ঈশ্বরের করুণা লাভ করে বেঁচে থাকে। তিনি যেমন চাঁদ ও সূর্যের আলো সবাইকে সমানভাবে দেন, তেমনই সবাইকে সমান পরিমাণে বৃষ্টি দান করেন। আবার মারণরোগ মড়ক, কিংবা ধ্বংসরূপ বন্যাও দেন এবং এ-দুইয়ের ভয়াবহ প্রভাবে হিন্দু-মুসলমান সমান হারে মারা যায়। ঈশ্বরের এইসব দান থেকে কেউ বঞ্চিত হয় না। হিন্দু-মুসলমান, ধনী-দরিদ্র সবাই সমানভাবে ঈশ্বরের করুণা বা ঘৃণা লাভ করে থাকে। ঈশ্বর মানুষের মধ্যে কোনো ভেদ রাখেননি। কবি ঈশ্বরের সেই ঝড়- বৃষ্টি-বন্যা-মড়ক, চাঁদ, সূর্যের আলো, ভালো-মন্দ, কল্যাণ-অকল্যাণ রূপ দানের কথা বলেছেন।

৩.৩ “চাঁদ সুরুষের আলো কেহ কম-বেশি কি পাই”- ‘চাঁদ সুরুষের আলো’ কী? কবির এই প্রশ্নটির অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ ‘চাঁদ সুরুষের আলো’ হল চাঁদ ও সূর্যের আলো। চাঁদের আলোকে আমরা জ্যোৎস্না এবং সূর্যের আলোকে রৌদ্র বলি।

বিশ্বচরাচরে চাঁদ ও সূর্য একটাই। তারা পৃথিবীর সব মানুষকে সমানভাবে আলো দেয়। পশুপাখি, গাছগাছালি থেকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কীট-কেউই এই আলো থেকে বঞ্চিত হয় না। ঈশ্বর বা খোদার কাছে জগতের সবাই সমান। হিন্দু বা মুসলমানও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু মানুষ নিজেরাই নিজেদের মধ্যে বিভেদ টেনে বিচ্ছিন্ন থাকে। কবি তাই বলতে চেয়েছেন- চাঁদ সূর্য যেমন সবাইকে সমানভাবে আলো দেয়, তারা যেমন একই আকাশে অবস্থান করে, তেমনই হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই ভারতে পারস্পরিক সহোদর ভাইয়ের মতো থাকুক। তারা দুজনে যেন একে অন্যকে পর না-ভাবে, কারণ তারা দুজনেই একই ভারতমাতার সন্তান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *